04-12-2019, 11:08 PM
হাওড়া স্টেশনে নেমে প্রথমে চমকে গেলাম আমি, লোক আর লোক, লোকে লোকারণ্য, একটার পর একটা ট্রেন আসছে আর যাচ্ছে। এর আগে আমি একবারই কলকাতা এসেছি, মেজকাকার বিয়ের বাজার করতে, আমি মা আর ঠাকুমা। ইশ বঙ্কুটা যদি সঙ্গে থাকতো কত ভালো হতো। আমি বড় ঘড়ি কোথায় জানি না, একটা কুলি কে জিজ্ঞাসা করতেই দেখিয়ে দিলো। আমি পিসিকে বলে এসেছি বই কিনতে যাচ্ছি, ফেরার অঙ্ক স্যার এর বাড়ী হয়ে আসবো, ৪-৫ ঘন্টা লাগবে। কলকাতা বললে আসতেই দিতো না।
বড় ঘড়ির নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম, সামনে একটা টিভিতে শুধু এড চলছিল আমি তন্ময় হয়ে দেখছিলাম। কাল সারারাত ঘুম হয়নি। একটা চাপা উত্তেজনা ছিল। মনে হচ্ছিল কখন কাকীর সঙ্গে দেখা হবে, কি বলবো, কোথায় কোথায় যাবো এই সব ভাবছিলাম খালি।
"টুকুন এই টুকুন" একটা মেয়েলি আওয়াজে আমার হুশ ফিরলো। ঘুরে দেখি কাকী দাঁড়িয়ে। একটা সবুজ শাড়ি আর ম্যাচিং ব্লাউজ পড়েছে। বুকদুটো যেন ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে, পাছাটাও বেশ মোটা। খুব সুন্দর লাগছিলো কাকী কে। কতই বা বয়স, ২৭-২৮, এর মধ্যেই বিধবা বেচারী। এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম মুখের দিকে। কাকী বুঝতে পেরে যেন লজ্জা পেলো, একটু হেসে মুখ নামিয়ে নিলো। আমিই হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, "কেমন আছো?"
"ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?"
"আমিও ভালো আছি।"
"এখানে এত ভিড়ে কথা বলা যাবে না। চল ভিক্টরিয়া যাবো, কতদিন যাইনি, সেই ইকলেজে পড়ার সময় মামার বাড়ী আসতাম তখন গেছি।"
দুই
মনে পড়ে গেল কাকীর মামার বাড়ী। আমি কিছুই জানি না কলকাতার তাই "হুঁ" বলে কাকীর পিছনে পিছনে চলতে লাগলাম। কাকী বেড়িয়ে এসে একটা ট্যাক্সি ধরলো হলুদ ট্যাক্সি। ঢুকেই বললো "ভিক্টরিয়া, মিটারে যাবো।" আমি তো শুনে থ, কাকী এ সব জানে কিভাবে? মেজোকাকা বেঁচে থাকার সময় ঠাকুমার সঙ্গে রোজ ঝগড়া করতো কাকী। তবে মাকে খুব ভালোবাসতো, মাও ঝুমা বলতে পাগল ছিল। ঠিক দুই বোনের মতো। আমার হাসি পেলো, কদিন পড়েই কাকী মার বৌমা হবে।
"কিরে হাসছিস কেন?" কাকী জিজ্ঞাসা করলো।
আমরা পাশাপাশি বসেছিলাম, আমি একটু জানলার দিকে সরে বসে বললাম "এমনি।" ট্যাক্সি হাওড়া ব্রিজ পেরোচ্ছিলো। দুজনের মধ্যেই জড়তা ছিল, টুকটাক কথা হচ্ছিল। গাড়ীটা কিছুক্ষনের মধ্যেই ভিক্টরিয়ার সামনে নামিয়ে দিল। কাকী পয়সা মিটিয়ে দিলো। একে রোববার তার উপর শেষ শীতের নরম রোদ, ভিক্টরিয়ার নীচে যেন মিলনমেলা লেগেছে। জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে প্রচুর লোক। আমরা হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে নিরিবিলি দেখে এক যায়গায় বসলাম।
আমি বললাম "কাকী তুমি কলকাতার এত সব কি করে জানলে?"
কাকী ঝাঁজিয়ে উঠে বললো "আ মরণ, কাল বাদ পরশু যার সঙ্গে বিয়ে হবে তাকে কাকী কাকী করছে দেখো।"
আমি থতমত খেয়ে বললাম "এতদিন তো তাই ডাকতুম, তুমিই বলো কি বলে ডাকবো।"
"জানিস টুকুন মানুষের কত ইচ্ছা থাকে, আমারও ছিল কিন্তু পোড়ার কপাল ২০ না পেরোতেই বাবা বিয়ে দিলো একটা গ্রামের চাষীর সঙ্গে। যাও বা সংসার হলো সেটাও গেল ২৫ না পেরোতেই। সব কপাল।" ধরা গলায় বললো কাকী।
আমিও আবেগে বলে উঠলাম "আমি তোমার সব শখ পূরণ করবো কাকী।"
"প্লিজ কাকী বলিস না, অন্য যা খুশী বল"
"তাহলে তোমায় আমি নাম ধরে ডাকবো, মায়ের সামনে লজ্জা লাগবে, বাড়ীতে ডাকবো না।"
"তোর মা-ই তো চায় আমাদের বিয়ে, দিদি তো জোয়ান নাগর পেয়ে খুব আমোদে, ৯ মাস বিয়ের মধ্যেই ৭ মাসের পোয়াতি।" বলে ফিক করে হাসলো কাকী। তারপর আবার বললো "তুই আমাকে একটু সুখ দিস টুকুন, আমি তোর সঙ্গে গাছতলাতেও থাকতে রাজী যদি তুই একটু সুখ দিস।"
"আমি তোমাকে রানী বানিয়ে রাখবো ঝুমা।" আবেগ মথিত গলায় বললাম।
"খুব পাকা হয়েছিস না!" কাকীর গলায় যেন রাজ্যের লজ্জা।
আমি সাহস করে কাকীর হাতে হাত রাখলাম, কাকী হাতটা সরিয়ে নিতে গিয়েও নিলো না, লজ্জায় ফর্সা মুখটা যেন রাঙা হয়ে গেল। দূরে একটা জোড়া বসে চুমু খাচ্ছিল, সেই দিকে তাকাতেই কাকী বললো "ওদিকে দেখিস না আমার লজ্জা লাগে।"
আমি সুযোগ পেয়েই বললাম "কদিন পরে আমি তোমার স্বামী হবো আর তুমি কি আমায় তুই করে বলবে?"
"ধ্যাৎ এখন লজ্জা লাগে, তুমি করেই বলবো।" বলে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
"ঝুমা তুমি না খুব সুন্দর লাগছো।" আমি হাতে চাপ দিলাম।
"ধ্যাৎ, আমি বুড়ি হয়ে গেছি, তুমিও অনেক হ্যান্ডসাম লাগছো।" আমার বুকের বাঁ দিকটা চিনচিন করে উঠলো। এই প্রথম আমায় কাকী তুমি করে বললো, আমাকে এই কাকীই সাবান মাখিয়ে স্নান করিয়ে দিতো, ইকলেজের ড্রেস পড়িয়ে দিতো একদিন। বললাম "আমরা আবার কবে দেখা করবো?"
"তোর পরীক্ষা হয়ে যাক, তারপর তুই ও বাড়ীতে চলে যাস, আমিও ওখানেই ফিরবো। তখন দেখা হবে। তার আগে ভালো করে পরীক্ষা দে। তোর পরীক্ষা তো শুধু তোর নয় আমারও যে।" কাকী আবার তুইতে ফিরে গেল।
"আমি পড়তে চাই। বিয়ের পরেও, আমি চাকরী করবো, চাষবাস আমার দ্বারা হবে না।"
"আমিও তাই চাই, তোমার আমার সংসার হবে, বড়দি আর তোর ছোটকাও থাকবে।"
"মা তোমার শাশুড়ি হবে আর ছোটকা শ্বশুর।"
"ধ্যাৎ" বলে কাকী আবার অন্য দিকে মুখ ফেরালো।
আমি এই সুযোগে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে, কাকীর হাতটা আরো কোলে টেনে নিলাম। কাকী যেন শিউরে উঠলো। একটু নীরবতার পরে বললো "ছাড়ো না। চলো উঠতে হবে আমার কাছে যা আছে তাই দিয়ে কিছু খেয়ে নিয়ে ফিরতে হবে, আমি কিন্তু মিথ্যা বলে এসেছি।"
"আর একটু বসি, এখন আড়াইটে বাজছে, ৩.৪৫ এর ট্রেনটা ধরলে আরামসে পৌঁছে যাবো সাড়ে পাঁচটার আগে। তোমার সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগছে ঝুমা।"
"আমারও" বলে ফিক করে হেসে ফেললো কাকী।
আমরা একটু বসে, ঝালমুড়ি খেলাম। নিজেকে অনেক বড় মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কোনো ঝড় ঝাপটা জীবনে কাকীকে সহ্য করতে দেবো না। সব আমি সামলে নিয়ে আমার ঝুমাকে একটা সুখের জীবন উপহার দেবো। এই সব ভাবতে ভাবতে লঞ্চ ঘাট অবধি পৌঁছে গেলাম দুজনে। লঞ্চে আমি আগেও চেপেছি আমাদের গ্রামের নদীতে। লঞ্চে কাকী বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে বসেছিল। হটাৎ "এই যা, ভুলেই গেছি।" বলে জিভ কেটে একটা মোবাইল বের করলো, মেজোকাকার পুরোনো মোবাইলটা, আর কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, "যখন তোমার আমার কথা খুব মনে পড়বে তখন ফোন করবে, আমিও করবো, কিন্তু লুকিয়ে রেখো, তোমার পিসি দেখতে পেলে লজ্জার শেষ থাকবে না। আর এই নাও, ৫০০ টাকা, দরকার পড়লে বোলো আরো দেবো। শুধু ভালো করে পড়াশোনা কোরো। তোমাকে ভালো রেজাল্ট করতেই হবে।" আমি মোবাইলটা নিলেও টাকাটা ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম। নিজের হবু বউএর থেকে টাকা নিতে সম্মানে লাগছিলো।
কাকী বললো "সময় আসলে সুদে আসলে ফেরৎ দিয়ো। তোমাকে দিতে হবে না আমিই নিয়ে নেবো।"
মনে হলো বিশ্বের সবচেয়ে সেরা মেয়েটা আমার বৌ। নিজেকে রাজা রাজা মনে হচ্ছিল।
কাকী স্টেশনে নেমে আমায় ট্রেনে তুলে দিয়ে তারপর নিজের ট্রেন ধরতে চলে গেল। চলে যাওয়ার সময় চোখ চিকচিক করছিল কি? বুঝতে পারলাম না।
ট্রেনে বসে আমার বারবার মনে হচ্ছিল, আমি কি মেজো কাকীর প্রেমে পড়লাম। মোবাইলটা বের করে বুক পকেটে রাখলাম। আমার ঝুমা দিয়েছে, আমার একান্ত আপন ঝুমা।
বড় ঘড়ির নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম, সামনে একটা টিভিতে শুধু এড চলছিল আমি তন্ময় হয়ে দেখছিলাম। কাল সারারাত ঘুম হয়নি। একটা চাপা উত্তেজনা ছিল। মনে হচ্ছিল কখন কাকীর সঙ্গে দেখা হবে, কি বলবো, কোথায় কোথায় যাবো এই সব ভাবছিলাম খালি।
"টুকুন এই টুকুন" একটা মেয়েলি আওয়াজে আমার হুশ ফিরলো। ঘুরে দেখি কাকী দাঁড়িয়ে। একটা সবুজ শাড়ি আর ম্যাচিং ব্লাউজ পড়েছে। বুকদুটো যেন ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে, পাছাটাও বেশ মোটা। খুব সুন্দর লাগছিলো কাকী কে। কতই বা বয়স, ২৭-২৮, এর মধ্যেই বিধবা বেচারী। এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম মুখের দিকে। কাকী বুঝতে পেরে যেন লজ্জা পেলো, একটু হেসে মুখ নামিয়ে নিলো। আমিই হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, "কেমন আছো?"
"ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?"
"আমিও ভালো আছি।"
"এখানে এত ভিড়ে কথা বলা যাবে না। চল ভিক্টরিয়া যাবো, কতদিন যাইনি, সেই ইকলেজে পড়ার সময় মামার বাড়ী আসতাম তখন গেছি।"
দুই
মনে পড়ে গেল কাকীর মামার বাড়ী। আমি কিছুই জানি না কলকাতার তাই "হুঁ" বলে কাকীর পিছনে পিছনে চলতে লাগলাম। কাকী বেড়িয়ে এসে একটা ট্যাক্সি ধরলো হলুদ ট্যাক্সি। ঢুকেই বললো "ভিক্টরিয়া, মিটারে যাবো।" আমি তো শুনে থ, কাকী এ সব জানে কিভাবে? মেজোকাকা বেঁচে থাকার সময় ঠাকুমার সঙ্গে রোজ ঝগড়া করতো কাকী। তবে মাকে খুব ভালোবাসতো, মাও ঝুমা বলতে পাগল ছিল। ঠিক দুই বোনের মতো। আমার হাসি পেলো, কদিন পড়েই কাকী মার বৌমা হবে।
"কিরে হাসছিস কেন?" কাকী জিজ্ঞাসা করলো।
আমরা পাশাপাশি বসেছিলাম, আমি একটু জানলার দিকে সরে বসে বললাম "এমনি।" ট্যাক্সি হাওড়া ব্রিজ পেরোচ্ছিলো। দুজনের মধ্যেই জড়তা ছিল, টুকটাক কথা হচ্ছিল। গাড়ীটা কিছুক্ষনের মধ্যেই ভিক্টরিয়ার সামনে নামিয়ে দিল। কাকী পয়সা মিটিয়ে দিলো। একে রোববার তার উপর শেষ শীতের নরম রোদ, ভিক্টরিয়ার নীচে যেন মিলনমেলা লেগেছে। জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে প্রচুর লোক। আমরা হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে নিরিবিলি দেখে এক যায়গায় বসলাম।
আমি বললাম "কাকী তুমি কলকাতার এত সব কি করে জানলে?"
কাকী ঝাঁজিয়ে উঠে বললো "আ মরণ, কাল বাদ পরশু যার সঙ্গে বিয়ে হবে তাকে কাকী কাকী করছে দেখো।"
আমি থতমত খেয়ে বললাম "এতদিন তো তাই ডাকতুম, তুমিই বলো কি বলে ডাকবো।"
"জানিস টুকুন মানুষের কত ইচ্ছা থাকে, আমারও ছিল কিন্তু পোড়ার কপাল ২০ না পেরোতেই বাবা বিয়ে দিলো একটা গ্রামের চাষীর সঙ্গে। যাও বা সংসার হলো সেটাও গেল ২৫ না পেরোতেই। সব কপাল।" ধরা গলায় বললো কাকী।
আমিও আবেগে বলে উঠলাম "আমি তোমার সব শখ পূরণ করবো কাকী।"
"প্লিজ কাকী বলিস না, অন্য যা খুশী বল"
"তাহলে তোমায় আমি নাম ধরে ডাকবো, মায়ের সামনে লজ্জা লাগবে, বাড়ীতে ডাকবো না।"
"তোর মা-ই তো চায় আমাদের বিয়ে, দিদি তো জোয়ান নাগর পেয়ে খুব আমোদে, ৯ মাস বিয়ের মধ্যেই ৭ মাসের পোয়াতি।" বলে ফিক করে হাসলো কাকী। তারপর আবার বললো "তুই আমাকে একটু সুখ দিস টুকুন, আমি তোর সঙ্গে গাছতলাতেও থাকতে রাজী যদি তুই একটু সুখ দিস।"
"আমি তোমাকে রানী বানিয়ে রাখবো ঝুমা।" আবেগ মথিত গলায় বললাম।
"খুব পাকা হয়েছিস না!" কাকীর গলায় যেন রাজ্যের লজ্জা।
আমি সাহস করে কাকীর হাতে হাত রাখলাম, কাকী হাতটা সরিয়ে নিতে গিয়েও নিলো না, লজ্জায় ফর্সা মুখটা যেন রাঙা হয়ে গেল। দূরে একটা জোড়া বসে চুমু খাচ্ছিল, সেই দিকে তাকাতেই কাকী বললো "ওদিকে দেখিস না আমার লজ্জা লাগে।"
আমি সুযোগ পেয়েই বললাম "কদিন পরে আমি তোমার স্বামী হবো আর তুমি কি আমায় তুই করে বলবে?"
"ধ্যাৎ এখন লজ্জা লাগে, তুমি করেই বলবো।" বলে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
"ঝুমা তুমি না খুব সুন্দর লাগছো।" আমি হাতে চাপ দিলাম।
"ধ্যাৎ, আমি বুড়ি হয়ে গেছি, তুমিও অনেক হ্যান্ডসাম লাগছো।" আমার বুকের বাঁ দিকটা চিনচিন করে উঠলো। এই প্রথম আমায় কাকী তুমি করে বললো, আমাকে এই কাকীই সাবান মাখিয়ে স্নান করিয়ে দিতো, ইকলেজের ড্রেস পড়িয়ে দিতো একদিন। বললাম "আমরা আবার কবে দেখা করবো?"
"তোর পরীক্ষা হয়ে যাক, তারপর তুই ও বাড়ীতে চলে যাস, আমিও ওখানেই ফিরবো। তখন দেখা হবে। তার আগে ভালো করে পরীক্ষা দে। তোর পরীক্ষা তো শুধু তোর নয় আমারও যে।" কাকী আবার তুইতে ফিরে গেল।
"আমি পড়তে চাই। বিয়ের পরেও, আমি চাকরী করবো, চাষবাস আমার দ্বারা হবে না।"
"আমিও তাই চাই, তোমার আমার সংসার হবে, বড়দি আর তোর ছোটকাও থাকবে।"
"মা তোমার শাশুড়ি হবে আর ছোটকা শ্বশুর।"
"ধ্যাৎ" বলে কাকী আবার অন্য দিকে মুখ ফেরালো।
আমি এই সুযোগে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে, কাকীর হাতটা আরো কোলে টেনে নিলাম। কাকী যেন শিউরে উঠলো। একটু নীরবতার পরে বললো "ছাড়ো না। চলো উঠতে হবে আমার কাছে যা আছে তাই দিয়ে কিছু খেয়ে নিয়ে ফিরতে হবে, আমি কিন্তু মিথ্যা বলে এসেছি।"
"আর একটু বসি, এখন আড়াইটে বাজছে, ৩.৪৫ এর ট্রেনটা ধরলে আরামসে পৌঁছে যাবো সাড়ে পাঁচটার আগে। তোমার সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগছে ঝুমা।"
"আমারও" বলে ফিক করে হেসে ফেললো কাকী।
আমরা একটু বসে, ঝালমুড়ি খেলাম। নিজেকে অনেক বড় মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কোনো ঝড় ঝাপটা জীবনে কাকীকে সহ্য করতে দেবো না। সব আমি সামলে নিয়ে আমার ঝুমাকে একটা সুখের জীবন উপহার দেবো। এই সব ভাবতে ভাবতে লঞ্চ ঘাট অবধি পৌঁছে গেলাম দুজনে। লঞ্চে আমি আগেও চেপেছি আমাদের গ্রামের নদীতে। লঞ্চে কাকী বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে বসেছিল। হটাৎ "এই যা, ভুলেই গেছি।" বলে জিভ কেটে একটা মোবাইল বের করলো, মেজোকাকার পুরোনো মোবাইলটা, আর কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, "যখন তোমার আমার কথা খুব মনে পড়বে তখন ফোন করবে, আমিও করবো, কিন্তু লুকিয়ে রেখো, তোমার পিসি দেখতে পেলে লজ্জার শেষ থাকবে না। আর এই নাও, ৫০০ টাকা, দরকার পড়লে বোলো আরো দেবো। শুধু ভালো করে পড়াশোনা কোরো। তোমাকে ভালো রেজাল্ট করতেই হবে।" আমি মোবাইলটা নিলেও টাকাটা ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম। নিজের হবু বউএর থেকে টাকা নিতে সম্মানে লাগছিলো।
কাকী বললো "সময় আসলে সুদে আসলে ফেরৎ দিয়ো। তোমাকে দিতে হবে না আমিই নিয়ে নেবো।"
মনে হলো বিশ্বের সবচেয়ে সেরা মেয়েটা আমার বৌ। নিজেকে রাজা রাজা মনে হচ্ছিল।
কাকী স্টেশনে নেমে আমায় ট্রেনে তুলে দিয়ে তারপর নিজের ট্রেন ধরতে চলে গেল। চলে যাওয়ার সময় চোখ চিকচিক করছিল কি? বুঝতে পারলাম না।
ট্রেনে বসে আমার বারবার মনে হচ্ছিল, আমি কি মেজো কাকীর প্রেমে পড়লাম। মোবাইলটা বের করে বুক পকেটে রাখলাম। আমার ঝুমা দিয়েছে, আমার একান্ত আপন ঝুমা।