12-01-2019, 06:33 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance বজ্রাঘাত (সমাপ্ত)
|
12-01-2019, 06:34 PM
12-01-2019, 06:34 PM
12-01-2019, 06:37 PM
৩৭।।
কাজল থাকতেই তাড়াতাড়ি করে স্নান সেরে নিয়েছিল পৃথা, অর্নব আজকে আর ঠান্ডা জলে স্নান করতে দেয়নি ওকে, বারবার করে গিজারের জলে স্নান করতে বলে দিয়েছিল, করেও ছিল ও, অন্যথা করেনি অর্নবের কথার, শুনেছিল... আর শুনবে নাই বা কেন... আজ সকালটা যে বড়ই মধুর করে শুরু হয়েছে তার... ঘুম ভেঙেছে নববধূর মত সারা শরীরে আদর মেখে... কাজল বেরিয়ে যেতেই আর সময় নষ্ট করে নি পৃথা, তৈরী হতে থেকেছে অফিস যাবার জন্য... আয়নার সামনে দাড়িয়ে তম্বী দেহের ওপরে শাড়ীর প্লিটটাকে ঠিক করতে অর্নবের উদ্দেশ্যে মুখ না তুলেই বলে ওঠে, ‘এই, আমার ফোনটা একটু অন করে দাও না গো... সেই কাল আসার সময় বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তারপর ভুলেই গিয়েছি অন করতে, চার্জেও বসাই নি, কে জানে চার্জ আছে কি না...’ অর্নব এক মনে চুপ করে বিছানায় বসে পৃথার শাড়ী পরা দেখছিল... সুঠাম শরীরটায় কি অদ্ভুত ভাবে পেঁচিয়ে ধরেছে গাঢ় সবুজ রঙের শাড়ীটা... ফর্সা দেহে গাঢ় সবুজ রঙটা খুব ভালো মানিয়েছে... তারিয়ে তারিয়ে পৃথার তারুণ্যে ভরা শরীরটাকে চোখ দিয়ে উপভোগ করছিল অর্নব... মনে পড়ে যাচ্ছিল এই কিছু ঘন্টা আগেও ওই নরম শরীরটাকে নিজের দেহের নীচে নিয়ে নিষ্পেশিত করেছে মনের সুখে... শাড়ী পরার সময় পৃথা কখনো পাশের দিকে ফিরে দাঁড়াচ্ছে, আবার কখনও পেছন ফিরে, অথবা সাজের প্রয়োজনে তারই সামনে... তাই বিছানায় বসেই সে পৃথার দেহের প্রতিটা ভঙ্গিমার রূপ মনের ফ্রেমে আটকিয়ে নিচ্ছিল অপলক চোখে... হিলহিলে চেহারাটাকে শাড়ীটা সাপের মত পেঁচিয়ে ধরে রেখেছে যেন... আর ওই ভাবে টাইট করে শাড়ী পরার কারণে শাড়ীর ওপর দিয়েই দেহের প্রতিটা চড়াই উৎরাই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে... কল্পনার কোন অবকাশই রাখে নি কোথাও... স্ফিত উত্তল নিতম্ব, সঠিক পরিমাপের বুক, আর সেই সাথে গাঢ় রঙের সাথে ফর্সা চামড়ার অদ্ভুত কন্ট্রাস্ট... চোখ সরানোই যেন সম্ভব নয় এই দেহের ওপর থেকে... শাড়ীর কুঁচিটা নাভীর ঠিক নীচে, দুই পাশ থেকে শাড়ীর পাড়টা একটু তেরচা হয়ে কোনাকুনি হারিয়ে গিয়েছে সেই গভীর নাভীর তলা দিয়ে, শাড়ীর কুঁচির মধ্যে... প্লিট করে রাখা আঁচলের তলা থেকে উঁকি দিচ্ছে ব্লাউজের মধ্যে আবধ্য সুগোল একটা স্তনের পার্শদিক... ব্লাউজটার পীঠের দিকে খুব বেশী কাটা না হলেও, পীঠের তিলটা এমন জায়গায় পড়েছে, যে ওটার ফলে যেন আরো বেশি করে লোভনীয় হয়ে উঠেছে ফর্সা মসৃণ গোটা পীঠটাই... ‘কোই... মোবাইলটা অন করলে? নাকি হাঁ করে আমাকেই শুধু গিলে যাবে?’ ট্যারা চোখে অর্নব যেখানটায় বসে থাকতে পারে, সেই দিকটার দিকে আন্দাজ করে তাকিয়ে বলে পৃথা... ‘অ্যা... হ্যা... এই তো... দিচ্ছি অন করে...’ পৃথার তাড়া খেয়ে তাড়াতাড়ি করে বিছানার থেকে নেমে দাঁড়ায় অর্নব... ‘কোথায় রেখেছ তোমার মোবাইলটা?’ প্রশ্ন করে সে... শাড়ীর আঁচলটাকে কোমর থেকে পেঁচিয়ে ঘুরিয়ে গুঁজে দেয় কোমরের মধ্যে... আয়নায় শেষ বারের মত ভালো করে নিজের সাজটা দেখে নিতে নিতে বলে, ‘দেখই না... মনে হয় ব্যাগের মধ্যেই রয়েছে, কালকে তো আর ফেরার পরে বেরও করি নি...’ ‘তোমার ব্যাগের মধ্যে?... হাত দেবো?’ ইতস্থত করে অর্নব। কথাটা শুনে মুখ তোলে পৃথা... বক্র ভুরুতে কপট রাগ ফুটিয়ে বলে ওঠে, ‘বাব্বা, আমার ব্যাগে হাত দেবে, তাতেও বাবুর এত কুন্ঠা... অন্য কোন পেত্নীর ব্যাগ বললে এক্ষুনি ছুটে গিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিতো...’ কাঁচুমাচু মুখ করে জবাব দেয় অর্নব, ‘মেয়েদের ব্যাগ বলেই ইতস্থত করছিলাম... এখানে অন্যের ব্যাগের কথা কোথা থেকে এলো?’ ‘জানি জানি... সুযোগ পেলেই আর একটা পেত্নীকে চাইবে তখন... চিনি না আবার?’ ছদ্ম রাগ সরায় না মুখ থেকে পৃথা... মজা লাগে অর্নবের পেছনে লাগতে... ‘মোটেই না... আমাকে কি সেই রকম মনে হয় নাকি তোমার?’ অর্নবের গলার স্বরটা ভেসে আসে ড্রইংরুমের থেকে... সেটা শুনে গলা তুলে পৃথা বলে ওঠে, ‘সেটা তো আমি এসে পড়েছি বলে আর হলো না, নয়তো কোন পেত্নীকে ফ্ল্যাটটা ভাড়া দিতে, আর তারপর তার ঘাড়ে চেপে বসতে...’ এবার আর কোন জবাব আসে না ও ঘর থেকে... তাতে পৃথা এবার সত্যিই ক্ষেঁপে যায়, উত্তর না পেয়ে... ‘কি হলো? মনের মত কথা বললাম বলে কি চুপ করে গেলে?’ বলে ওঠে সে। তাও কোন উত্তর নেই... তা দেখে এবার নিজেই এগিয়ে যায় ড্রইংরুমের দিকে... দরজা পেরোতেই চোখে পড়ে ঘরের মাঝে তার ফোনটাকে শূণ্যে ভাসতে... অন্য কেউ হলে নির্ঘাত আঁতকে উঠতো... ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা, ভেতরে জমা বিরক্তিটা উধাও হয়ে যায় সেই সাথে... পৃথাকে বেডরুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে বলে ওঠে অর্নব, ‘তুমি একবার বাড়িতে ফোন করো তো!’ হটাৎ করে অর্নবের গলার স্বর সিরিয়াস হয়ে যেতে ভুরু কুঁচকে যায় পৃথার, উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করে, ‘কেন গো? এনিথিং রং?’ ‘বুঝতে পারছি না... প্রায় গোটা চল্লিশেক মিসড্ কল... তোমার বাপীর... একবার ফোন করো তো...’ ফোনটা পৃথার দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলে অর্নব। তাড়াতাড়ি করে ফোনটা হাতে তুলে নেয় পৃথা, কল লিস্টএ দেখে সত্যিই চল্লিশটা মিসড্ কল দেখাচ্ছে... ভয় পেয়ে যায় সে... ত্রস্ত চোখে তাকায় অর্নবের পানে... ভীত গলায় জিজ্ঞাসা করে, ‘এতবার ফোন করেছে বাপী... কোন বিপদ হলো না তো?’ ‘সেই জন্যই তো বলছি, আগে টেনশন না করে ফোনটা করো... দেখো কেন এত বার ফোন করেছে...’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করে অর্নব পৃথাকে। ‘বড্ডো ভুল হয়ে গেছে গো... আমি সাধারণতঃ ফোন কখনো বন্ধ করি না, কালকেই বন্ধ করে দিয়েছিলাম... কি হলো বলো তো...’ বাবার নাম্বার ডায়াল করতে করতে বলে পৃথা, গলার স্বরে উদ্বেগ মিশে থাকে... ফোনের মধ্যে বীপ...বীপ... শব্দ শোনা যায়, কল লাগে না কিছুতেই... আরো টেনশনে পড়ে যায় পৃথা... বার বার করে ট্রাই করে ফোন লাগাবার... যত সময় গড়ায়, ততই যেন মলিন হয়ে ওঠে তার মুখ। হটাৎ করেই কল লেগে যায়... রিং হয় ফোনের ওই প্রান্তে... তাড়াতাড়ি করে পৃথা বলে ওঠে, ‘হ্যালো বাপী?’ ওপাশ থেকে উত্তর আসে, ‘নারে... আমি ছোটকা বলছি...’ ‘ও তুমি? আমি আসলে বাপীর মিসড্ কল দেখে রিং ব্যাক করলাম... কেমন আছো ছোটকা? তোমার সাথে কতদিন কথা হয়নি... ভালো আছো তো? তাও তো বাপী মায়ের সাথে রোজ কথা হয় আমার, তোমার সাথে তো কথাই হয় না... করতে পারো তো ফোন মাঝে মাঝে... ইশ... ভুলেই গেছ তিতিরকে, না?’ অভিমান ঝরে পৃথার গলার স্বরে। ‘না রে... সেটা নয়... আসলে বুঝিস তো, আমি একটু অন্য ধরণের মানুষ, ওই সব লোকলৌকিকতা ঠিক আসে না আমার... যাক, তোর শরীর কেমন আছে... বৌদির কাছে শুনেছিলাম তোর নাকি জ্বর হয়েছিল... এখন ভালো আছিস তো?’ প্রশ্ন করেন পৃথার ছোট কাকা। ‘হ্যা গো... এক দম ফিট এখন... এই তো অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলাম...’ উত্তর দেয় পৃথা, মনে মনে বলে তোমার জামাই আমাকে এত যত্নে রেখেছে, সেখানে আমি ফিট না থেকে পারি? ভাবতেই হাসি খেলে যায় ঠোঁটে, লালের আভা লাগে গালের ওপরে... মনে পড়ে যায় ভোরের আদর... ভাবতে ভাবতেই ফিরে মনে পড়ে যায় পৃথার... ঠোঁটের ওপর থেকে লেগে থাকা স্মিত হাসিটা মুছে যায় তার... ‘আচ্ছা ছোটকা, তোমার কাছে বাপীর ফোনটা কেন? আর বাপীই বা এতবার ফোন করেছিল কেন গো?’ উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করে সে। ‘হ্যা... মানে তোকে বলার জন্যই ফোন করেছিলাম... আসলে কি হয়েছে জানিস...’ বলতে বলতে চুপ করে যান পৃথার ছোট কাকা... তাকে এই ভাবে কথার মাঝে চুপ করে যেতে মনের মধ্যে একটা শঙ্কা চেপে বসে যেন... বুকের মধ্যেটায় ধকধক করে ওঠে তার... হাতের মুঠোয় মোবাইলটাকে আঁকড়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে, ‘কি হয়েছে ছোটকা... চুপ করে গেলে কেন?’ সাথে সাথে উত্তর আসে না কোন... বোঝাই যায় একটু ইতস্তত করছে পৃথার কাকা উত্তর দিতে গিয়ে... তারপর ধীর কন্ঠে বলেন, ‘আসলে ফোনটা কাল আমিই তোকে করেছিলাম... বড়দাকে গতকাল রাতে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়েছে...’ কথাটা শুনেই শেষ করতে দেয় না পৃথা, চেঁচিয়ে ওঠে প্রায় ফোনের মধ্যেই... ‘কী? বা... বাপীর কি হয়েছে বললে? নার্সিংহোম... কেন?’ থরথর করে কেঁপে ওঠে পৃথার শরীরটা অজানা ভয়ে... ‘না, না, এত ব্যস্ত হোস না... এখন ঠিক আছে... আসলে...’ বোঝাতে যান উনি। প্রায় ছিনিয়ে নেয় কথাটা কাকার মুখ থেকে পৃথা... কাঁদো কাঁদো গলায় বলে সে, ‘কি হয়েছে আমার বাপীর... বলো না গো ছোটকা... আমার বাপী কি নেই?...’ বলতে বলতে হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে সে... পৃথাকে এই ভাবে ভেঙে পড়তে দেখে তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে অর্নব... টেনে নেয় তাকে নিজের বুকের মধ্যে... হাত রাখে পীঠের ওপরে... পৃথা মুখ তুলে তাকায় অর্নবের না দেখা মুখের পানে... চোখ ভর্তি জল টলটল করে তার... অর্নবের বুকের মধ্যে ফোঁপায় সে... কানে আসে তার ছোটকাকার কন্ঠস্বর... ‘দূর বোকা মেয়ে... এত ভেঙে পড়ছিস কেন? আমি কি তাই বললাম... আগে থাকতে বাজে বাজে কথা ভেবে বসিস... আরে এখন তো আর বিপদ নেই... ঠিক আছে বড়দা...’ এক হাত দিয়ে মোবাইলটাকে কানে ধরে অন্য হাত দিয়ে খামচে ধরে অর্নবের হাত... ভাঙা গলায় প্রশ্ন করে পৃথা, ‘ঠিক বলছো ছোটকা... বাপী ঠিক আছে... কিচ্ছু হয় নি তো বাপীর... তুমি ঠিক বলছো তো?’ প্রশ্ন করার ফাঁকে মুখ তুলে তাকায় সে, যেন মনের মানুষটার কাছ থেকেও আস্বস্থ হতে চাইছে... যেন ওই মানুষটাই ঠিক বলতে পারবে যে ভয়টা তার অমূলক কিনা... ‘হ্যা রে তিতির, বললাম তো... তোর বাপী এখন ঠিক আছে... তবে হ্যা, এখনও ICCUতে আছে, তবে আগের বিপদটা আর নেই...’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করেন ভদ্রলোক। ‘কি... কি হয়েছিল বাপীর?’ অর্নবের হাত ছেড়ে চোখ মুছতে মুছতে প্রশ্ন করে পৃথা, প্রথম দিকের ঝটকাটা খানিকটা সে কাটিয়ে ওঠে বাপী ভালো আছে শুনে... ‘একটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট মত হয়েছিল কাল রাতে... আমরা সাথে সাথেই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে বড়দাকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাই এই যাত্রায় তেমন কোন খারাপ কিছু ঘটে যায় নি...’ বলেন পৃথার ছোটকাকা... তারপর একটু থেমে প্রশ্ন করেন উনি, ‘তুই কি একবার আসতে পারবি? না, না, তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই... জানি এক্ষুনি আসা সম্ভবও নয়, টিকিটই বা পাবি কি করে, তবে পারলে দেখ যদি আসতে পারিস... তোর কথা বলছিল খুব...’ তার কথা বলছিল শুনে ফের বুকের ভেতরটা টনটন করে ওঠে পৃথার... বলে সে, ‘আমি দেখছি ছোটকা... দেখছি আমি... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি আসছি... তুমি বাপীর সাথে থেকো, হ্যা... দেখো বাপী কে... আমি আসছি...’ তারপরই হটাৎ করে মনে পড়ে যেতে জিজ্ঞাসা করে, ‘ছোটকা, মা... মা কেমন আছে গো... মা ঠিক আছে তো?’ ‘হ্যা রে মা, বৌদি ঠিক আছে... বাড়িতেই আছে, আর তাছাড়া তোর কাম্মাও তো রয়েছে বৌদির সাথে, তুই ভাবিস না কিছু...’ আস্বস্থ করেন ফের পৃথাকে... ‘তাহলে ছাড়ি তিতির... তুই সাবধানে আসিস... আর আসার ঠিক হলে একবার আমাকে ফোন করে দিস, কেমন?’ ‘আ...আচ্ছা ছোটকা... আমি দেখছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি আসছি... তুমি একটু বাপীকে দেখো, কেমন?’ বলতে বলতে চিন্তায় পাংশুটে হয়ে যায় তার মুখ... শোনে ওপাশ থেকে তার ছোটকাকার ফোন কেটে দেবার আওয়াজ। ফোনটাকে হাতের মুঠোয় ধরে রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে অর্নবের বুকের মধ্যে মাথা রেখে... চোখ দিয়ে সরু ধারায় জল গড়ায়... অন্য হাতে খামচে ধরে রাখে অর্নবের হাতটাকে... অর্নব হাতের আলিঙ্গনে ধরে রাখে পৃথাকে নিজের বুকের সাথে সাঁটিয়ে... যেন তার ভেতরের প্রাণশক্তিটাকে ঢেলে দেবার চেষ্টা করে পৃথার বুকের মধ্যে... ‘হ্যা গো... বাপী ঠিক আছে... তাই না গো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা, প্রশ্নের মধ্যেও যেন একটা অজানা আশঙ্কা মিশে থাকে তার... ‘কিচ্ছু হবে না তোমার বাপীর... দেখো... একদম ভালো আছেন উনি... তুমি কিচ্ছুটি চিন্তা করো না...’ আশ্বাস দেয় অর্নব পৃথার মাথার চুলে চুমু খেয়ে... তারপর পৃথাকে ধরে সোফার ওপরে বসিয়ে দিয়ে বলে, ‘তুমি অফিসে একটা ফোন করো... বলো আজই তুমি বাড়ি যাচ্ছ... তোমার বাপীর ব্যাপারটা খুলে বলো... বলে ছুটি নাও বেশ কয়’একদিনের...’ ভেজা চোখে মুখ তুলে তাকায় পৃথা... ‘কি করে? কি করে যাবো আমি?’ অসহায়এর মত প্রশ্ন করে সে... পৃথার মাথাটা টেনে নেয় নেয় অর্নব নিজের কোলের ওপরে... বলে, ‘আমি আছি তো... চিন্তা করছো কেন... তুমি অফিসে ফোন করে বলে দাও শুধু যে আজকেই তুমি বাড়ি চলে যাচ্ছ...’ ‘কিন্তু কি করে অর্নব? আমি যে সেই রকম কিছু জানি না এখানকার... কোথায় টিকিট কাটবো, কিসে যাবো...’ হতাশ গলায় বলে পৃথা। ‘আমি আছি তো!’ পৃথার কাঁধে হাতের চাপ দিয়ে ভরসা দেয় অর্নব, ‘তুমি অফিসে শুধু ফোনটা করো, আমি এদিকটা দেখছি... এত ভেঙে পড়ো না...’ ‘অর্নব...’ ধরা গলায় ডাক দেয় পৃথা... ‘বলো না সোনা... কি হয়েছে?’ হাত রাখে মাথার ওপরে পৃথার... ‘বাপী...’ আর কিছু বলতে পারে না সে, গলা বুজে যায় আবেগে... পৃথার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে অর্নব... দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘কেন এখনই এই সব আজে বাজে চিন্তা করছো বলো তো... তোমার বাপীর কিছু হতেই পারে না... গিয়ে দেখবে সব ঠিক আছে...’ ‘তুমি যাবে না আমার সাথে?’ শূন্যের পানে হাত বাড়ায় পৃথা... খামচে ধরে অর্নবের কাঁধটাকে... ‘তোমার আগে যাবার ব্যবস্থাটা করি, তারপর আমার কথা...’ বলতে বলতে ফের উঠে দাঁড়ায় সে... ‘তুমি ফোনটা করো, আমি আসছি...’ ‘আমায় ছেড়ে যেও না গো... আমার কাছেই থাকো না...’ কাতর মুখে তাকায় পৃথা... খানিক আগের করা মুখের সব মেকাপ ততক্ষনে একেবারে ঘেঁটে গিয়েছে চোখের জলে... চোখ মুখ শুকিয়ে গিয়েছে এই কয়’এক মুহুর্তেই উদ্বিগ্নতায়... ‘আমি আছি তো সোনা... আমি আছি... ঘরেই আছি...’ আস্বস্থ করে অর্নব তার প্রিয়াকে... আর কথা বাড়ায় না পৃথা, মোবাইলটা তুলে ডায়াল করতে থাকে অফিসের নাম্বারে... অর্নবও ওর থেকে সরে গিয়ে এগিয়ে যায় টেবিলের দিকে, যেখানে ওর মোবাইলটা রাখা আছে, ডায়াল করে প্রণবকে... ক্রমশ...
12-01-2019, 06:52 PM
(12-01-2019, 06:43 PM)ronylol Wrote: আপনি যা বলছেেন এ তো রিতি মত অন্যায় দাদা আমার মনে হয় লেখকের উপর একটু আস্থা রাখা দরকার। (অযাচিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।)
BEAUTY LIES IN THE EYES OF THE BEHOLDER
12-01-2019, 10:35 PM
Bohudin bade kono lekha pore montromugdho holam..
12-01-2019, 11:57 PM
(This post was last modified: 13-01-2019, 12:02 AM by naag.champa.
Edit Reason: spelling
)
(12-01-2019, 06:37 PM)bourses Wrote: ‘হ্যা রে তিতির, বললাম তো... তোর বাপী এখন ঠিক আছে... তবে হ্যা, এখনও ICCUতে আছে, তবে আগের বিপদটা আর নেই...’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করেন ভদ্রলোক। ফোনে এই রকম কথা শুনলে কার মাথা ঠিক থাকে? এটা আমার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা... আমিও ছিলাম তখন হায়দ্রাবাদে যখন আমার কাছে এরকম একটা ফোন এসেছিল... আমার বয়স তখন সবে 21- পড়া শোনা করছি, বন্ধু-বান্ধবের সাহায্যে টাকা পয়সা জোগাড় হয়ে গিয়েছিল... একা একা ফ্লাইটে করে বাড়ি ফিরলেও, আমার বাড়ি আসতে আসতে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল... আমি এসে দেখি তিনি আর নেই... ক্ষমা করবে ভাই, এই আপডেটটা পড়ে চোখে জল এসে গেল- কারন একটা পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল... আশা করি পৃথার বাবা ভালো আছেন। Big Hugs *Stories-Index* New Story: উওমণ্ডলীর লৌন্ডিয়া
13-01-2019, 12:50 PM
পরীক্ষা থাকায় মাঝের আপডেট মিস করলাম । কিন্তু বলতেই হবে এমন সুন্দর বর্ণনা আর কারো পক্ষে দেওয়া আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়।এই না হলে morning সেক্স
14-01-2019, 02:41 PM
তুমি তো একেবারে কাঠালি কলা ইন অল ঘট
14-01-2019, 04:15 PM
(12-01-2019, 06:43 PM)ronylol Wrote: আপনি যা বলছেেন এ তো রিতি মত অন্যায় দাদা । কেন ভাইটু... আমি আবার কি অন্যায় করলাম... এটাই তো জীবন... কেউ কি বলে দিতে পারে কখন কি ঘটবে? সব সময় যে সুখই থাকবে তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? এই রকম অনিশ্চয়তা ঘটে বলেই না সুখানুভুতির মর্ম অনুভূত হয়... মূল্যায়িত হয় সুখের সময়ের... তাই না?
14-01-2019, 04:16 PM
14-01-2019, 04:18 PM
14-01-2019, 04:19 PM
(12-01-2019, 11:57 PM)naag.champa Wrote: ফোনে এই রকম কথা শুনলে কার মাথা ঠিক থাকে? এটা আমার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা... আমিও ছিলাম তখন হায়দ্রাবাদে যখন আমার কাছে এরকম একটা ফোন এসেছিল... আমার বয়স তখন সবে 21- পড়া শোনা করছি, বন্ধু-বান্ধবের সাহায্যে টাকা পয়সা জোগাড় হয়ে গিয়েছিল... একা একা ফ্লাইটে করে বাড়ি ফিরলেও, আমার বাড়ি আসতে আসতে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল... আমি এসে দেখি তিনি আর নেই... ক্ষমা করবে ভাই, এই আপডেটটা পড়ে চোখে জল এসে গেল- কারন একটা পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল... আশা করি পৃথার বাবা ভালো আছেন।
14-01-2019, 04:21 PM
(13-01-2019, 12:50 PM)Odrisho balok Wrote: পরীক্ষা থাকায় মাঝের আপডেট মিস করলাম । কিন্তু বলতেই হবে এমন সুন্দর বর্ণনা আর কারো পক্ষে দেওয়া আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়।এই না হলে morning সেক্স বলছ তাহলে... হে হে... তবে পরীক্ষা কি শেষ, নাকি পরীক্ষার মধ্যেই উঁকি মারতে এসেছ? যদি তাই হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা একটুও ভালো নয়... গল্প পরেও পড়া যাবে, কিন্তু পরীক্ষাটা খারাপ হলে কিন্তু সেই সময়টা আর ফিরে আসবে না...
14-01-2019, 04:23 PM
(14-01-2019, 02:41 PM)TumiJeAmar Wrote: তুমি তো একেবারে কাঠালি কলা ইন অল ঘট কি যে বলো স্বপনদা... ঘট থাকবে আর কলা রাখবো না... সে যে ঘটই হোক না কেন... কলা তো আমারও রয়েছে... তাই না? তবে তোমাকে এখানে পেয়ে হেব্বি লাগলো কিন্তু... শুধু পিনুর আসার আশায় রয়েছি... তাহলেই ষোলকলা পূর্ণ হয়... তোমার রেপুটা দিয়ে রাখলাম...
14-01-2019, 04:26 PM
৩৮।।
বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে পৃথা একটা গাড়ি ভাড়া করে সোজা পৌছে যায় বাড়ি... দরজায় বেল টিপে অপেক্ষা করতে থাকে সে... মনের মধ্যে নানান আশঙ্কা ছেয়ে থাকে তার... প্রণবকে বলে অর্নব ওর জন্য ফ্লাইটের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল সকালেই... ওদের অফিসের এজেন্টকে দিয়ে, তাই কোন অসুবিধাই হয়নি সন্ধ্যের ফ্লাইট ধরতে... প্রণব আর অর্নব পৃথাকে কলকাতার এয়ারপোর্টএ পৌছিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়ে গিয়েছে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে... পৃথা চেয়েছিল অর্নবও ওর সাথেই ফ্লাইটে আসুক, কিন্তু শেষে বুঝেছিল যে সেটা সম্ভব নয়, অর্নব এই ভাবে ঢুকবে কি করে এয়ারপোর্টের মধ্যে? তাই শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছিল প্রণব আর অর্নব গাড়িতে শিলিগুড়ি পৌছাবে, আর পৃথা তার আগেই ফ্লাইটে বাড়ি চলে আসবে... কারণ পৃথার পৌছানোটার প্রয়োজন অনেক বেশি... সুশান্ত পৃথার বাবার কথাটা শুনে একবার চেষ্টা করেছিল বলতে যে সে সাথে যাবে, কিন্তু যখন দেখে যে পৃথা রাজি নয় তাকে সঙ্গে নেবার, আর দ্বিরুক্তি করে নি সে, পিছিয়ে গিয়েছে... শুধু বন্ধুত্বর খাতিরে বলেছিল, ‘যদি দরকার লাগে, সাথে সাথে আমাকে একটা ফোন করে দিস, আমি যা হোক করে পৌছে যাবো তোর ওখানে...’ মাথা নেড়ে শায় দিয়েছিল পৃথা... কারণ সে জানতো অর্নব থাকার পর আর কারুর তার পাশে থাকার প্রয়োজন হবে না... বাড়ি আসার পর থেকে কোথা থেকে যেন ঝড়ের মত সময় বয়ে যায় পৃথার... দিনরাত এক হয়ে যায় নার্সিংহোম বাড়ি আর বাড়ি নার্সিংহোম করে... জলের মত টাকা খরচ হতে থাকে... কিন্তু তার এতটুকুও আঁচ লাগে না পৃথার বা তার বাড়ির কারুর গায়ে... ঢালের মত তাকে আগলে রাখে প্রণবেকে সামনে রেখে সেই অদৃশ্য মানুষটা... এতটুকুও খামতি হতে দেয় না পৃথার বাবার চিকিৎসায়... একটু একটু করে সুস্থ হয়ে ওঠেন পৃথার বাবা... হাঁফ ছাড়ে সকলে। প্রণবরা এই ক’দিন একটা হোটেলের ডবল বেডেড রুম বুক করে নিয়েছিল, সেখানেই ছিল দুই বন্ধু... ছিল বলতে এক প্রকার এসে স্নান করে খেয়ে যাওয়া... তা নয়তো রাতদিন থেকেছে দুই জনেই পৃথার সাথে, নার্সিংহোমে... দিন সাতেক পর ছাড়া পান পৃথার বাপী নার্সিংহোম থেকে, পৃথারা তাকে বাড়ি নিয়ে আসে... ডাক্তার বারবার করে তাদের সাবধান করে দিয়েছে কোন ভাবেই যেন বেশি স্ট্রেসড্ না নিতে হয় তাঁকে... সেই মতই তাকে খুব সাবধানে রাখা হয়েছে নিজের ঘরে... একান্ত প্রিয়জন ছাড়া কাউকেই খুব একটা আসতে দেওয়া হচ্ছে না দেখা করতে... শুধু শুধু যাতে ধকল না পড়ে ওনার ওপরে... বাবাকে গুছিয়ে দিয়ে মায়ের কাছে যায় পৃথা... ‘এবার তুমিও একটু রেস্ট নাও তো... অনেক ধকল গেলো তোমার ওপর দিয়ে...’ এই কয় দিন সত্যিই ভদ্রমহিলার ওপর দিয়ে যথেষ্ট ধকল গিয়েছে... সন্তান দূরে থাকলে যে কি হয়, সেটা উনি বুঝে গেছেন... তাই সেটা ভেবে আরো বেশি উদ্বিগ্ন তিনি... ধীরে ধীরে বয়স বাড়ছে তাদের... তাই আজ না হয় সামলে নিয়েছেন সবাইকে পাশে পেয়ে, কিন্তু ভবিষ্যতেও যে এই ঘটনা ঘটবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কি? এবারে যেমন ঠিক সময় পৃথাকে ফোনে পাওয়া যায় নি... তবুও পাশে তাঁর ছোট দেওয়র ছিল, তাই রক্ষে পেয়েছে পৃথার বাবা এ যাত্রায়, কিন্তু যদি না থাকত? তখন কি করতেন উনি? ভাবতেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে যেন ওনার... পৃথা কাছে এসে বসতেই ধীর স্বরে বলেন, ‘তুই আর ফিরে যাস না তিতির... দেখলি তো কি কান্ডটা ঘটে গেলো... এর পরও আমাদের ফেলে চলে যাবি?’ চিন্তার ছাপ পড়ে ওনার মুখে। পৃথা এগিয়ে গিয়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসে, হাতের মধ্যে মায়ের হাতটাকে তুলে ধরে বলে, ‘কিন্তু মা, এই ভাবে এখানে বসে থেকেও তো চলবে না আমার... না গেলে হবে বলো?’ ‘কেন যাবি? কিসের জন্য? টাকার কি দরকার আমাদের? তোর বাবার কি অভাব পড়েছে যে তোকে চাকরি করে আমাদের খাওয়াতে হবে?’ অভিমান মেশানো গলায় বলেন পৃথার মা। ‘আমি কি টাকার জন্য চাকরী করতে গিয়েছি মা? বাপীর যা আছে, আমি জানি তাতে আমার চাকরী করার কোন প্রয়োজনই নেই... কিন্তু সেটা তো বড় কথা নয়... আমারও স্বনির্ভরতা থাকার দরকার, তাই না? বলো তুমি?’ মায়ের হাতের ওপরে চাপ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা। ‘আমি ওসব স্বনির্ভরতা টিরভরতা বুঝি না... বাড়ির মেয়ে বাড়ি থাকবে না, সেটাই আমার কাছে সব থেকে বাজে ব্যাপার... কি ভাবে থাকিস বলতো মা... কে জানে ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করিস কিনা, এই তো শুনলাম জ্বরে পড়েছিলিস... তুই বল, মায়ের মন শায় দেয় এই সব দেখে?’ বলতে বলতে মুখ ভার হয়ে ওঠে পৃথার মায়ের... ‘এবার তোর একটা বিয়ে দিয়ে দেবো আমি... তোর বাপী একটু সুস্থ হোক, আমি ঠিক তোর বিয়ে দিয়ে দেবো...’ ‘আমি কি বিয়ে করে বর নিয়ে তোমার কাছেই থাকবো?’ হাসতে হাসতে বলে পৃথা... হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মাকে নিজের বুকের মধ্যে... ‘না, তা নয়...’ আমতা আমতা করেন উনি। ‘তাহলে? তাহলে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিলে তো সেই অন্য জায়গাতেই গিয়ে থাকবো, তাতে আর তোমাদের কি সুরাহা হবে, হু?’ মায়ের চিবুকটা আঙুলে তুলে বলে সে। ‘জানি যা...’ পৃথার হাত থেকে মুখটা সরিয়ে নেন... ‘তবুও তো জানবো যে আমাদের মেয়ে কারুর হাতে রয়েছে, ভালো রয়েছে, তাতেও তো খানিকটা নিশ্চিন্দে থাকতে পারবো...’ ‘এখনই যে নেই, তাই বা কে বললো তোমায়?’ চোখের তারায় কৌতুক ঝরে পড়ে পৃথার... মনের মধ্যে অর্নবের নামটা ভেসে ওঠে তার... বুকের মধ্যেটায় কেমন ঢিপঢিপ করে ওঠে অকারণেই... ‘সে যাই বল, একা তো থাকিস... তাই কতটা ভালো থাকতে পারিস সে আমার জানা আছে...’ মুখে ফেরে আদরের মেয়ের জন্য চিন্তার ছায়া... ‘আমি একা থাকি কে বলল তোমায়?’ হাসে পৃথা মিটি মিটি... ‘মানে? আমি তো জানি তুই একাই থাকিস... একলা একটা ফ্ল্যাটে... সেই রকমই তো শুনেছিলাম... আবার কে জুটেছে?’ চিন্তা বাড়ে মায়ের মুখে। ‘আরে, কাজল আছে তো...’ তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে পৃথা, বুঝতে পারে মায়ের মন চিন্তায় আরো বেশি করে উতলা হয়ে উঠছে... ‘খুব ভালো মেয়েটা, জানো মা, আমার হাতে হাতে সব কাজ করে দেয়... ওকে তো প্রণবদাই এনে দিয়েছে, আগেও ওই ফ্ল্যাটেই কাজ করতো, খুব বিশ্বাসী মেয়েটা... আর ভিষন ভালো...’ ‘সেটা কথা নয় মা, একটা কাজের লোকের হাতে আমি আমার মেয়েকে ছেড়ে রাখবো, সেটা হয়? তুই কি সেই ভাবে মানুষ হয়েছিস? বলতো তিতির? শেষে আমার এত আদরের মেয়ে কাজের লোকের ভরসায় দিন কাটাবে, আমি বেঁচে থাকতে? না, না, এটা হয় না... আমি তোর বাপীর সাথে কথা বলবো, এর একটা বিহিত করতেই হবে আমায়...’ মাথা নেড়ে বলে ওঠেন পৃথার মা... মুখ পরিষ্কার চিন্তার ছায়া ঘনায় আরো... ‘আরে, তুমি এত ভাবছ কেন আমায় নিয়ে, আমি ঠিক আছি ওখানে... আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না... তুমি বিশ্বাস করো...’ মাকে বোঝাবার আপ্রাণ চেষ্টা করে পৃথা... ‘সে তুই যাই বল, আমি এবার তোর একটা বিয়ে দেবোই... আমি দেখছি তোর ছোটকার সাথে কথা বলে, তোর মামাকেও বলবো একটা ছেলে দেখতে...’ হাত নেড়ে বলে ওঠেন উনি। ‘আচ্ছা, মা, বাপীর এখন এই অবস্থা, এখনই তোমার এই সব চিন্তা মাথায় এলো? কি যে করো না...’ মায়ের কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘না, না, সে তুই যাই বলিস তিতির, আমি তোর বাপীর সাথে কথা বলেছি আগেই... উনিও রাজি আমার সাথে, তোর এবার একটা বিয়ে দেবার দরকার... আর তোকে একা একা আমি ফেলে রাখতে চাই না...’ জেদ ধরে রাখেন ভদ্রমহিলা। ‘উফ... তুমি চাইলেই কি হবে নাকি... আমি এক্ষুনি বিয়ে করতে চাই না যে... এই তো সবে চাকরীতে জয়েন করলাম...’ ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘এই তিতির, তুই একটা আমাকে সোজা সাপটা কথা বলতো... তুই কি কাউকে পছন্দ করেছিস নাকি? তা সেটাই বল... তাকেই না হয় নিয়ে আয়... দেখি কে... এই ভাবে না না বলে যাচ্ছিস কেন?’ চেপে ধরার চেষ্টা করেন পৃথার মা মেয়েকে... মায়ের কথায় সহসা কাল লাল হয়ে যায় যেন পৃথার... গালের ওপরে লালীমার আভা লাগে... মাথা নীচু করে নেয় সে... মায়ের নজর এড়ায় না... মেয়ের দিকে ভালো করে ঘুরে বসে হাত রাখেন পৃথার কাঁধে, ‘কে রে তিতির? তোর ব্যাঙ্কেরই কেউ? তা এতদিন বলিস নি কেন? আমরা কি সেই রকম বাবা মা তোর?’ বলতে বলতে মেয়ের চিবুক ধরে মুখটা তুলে ধরেন ওপর দিক করে... মায়ের চোখে চোখ রাখতে লজ্জা লাগে পৃথার, ঢোক গেলে সে... ‘না, মানে সেটা নয়...’ ‘সেটা যে নয়, সেটা তো আমি বুঝছি... কিন্তু কোনটা... সেইটা তো আমায় বল...’ গলার স্বরে স্নেহ ঝরে পড়ে ভদ্রমহিলার... ‘আচ্ছা মা, তোমার জামাইয়ের যদি আগে একটা বিয়ে হয়ে থাকে, তুমি মেনে নিতে পারবে?’ চোখ ভরা ভীতি নিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা। ‘আমার মেয়ে যদি তাকে নিয়ে সুখি হয়, না মেনে নেবার কি আছে রে? আমার কাছে আমার মেয়ের সুখটাই বড়, আর কিছু লাগে না আমার... সে গরীব না বড়লোক, তার আগে বিয়ে হয়েছে কি হয়নি সেটা আমার কাছে প্রয়োজনীয় নয়... যেটা প্রয়োজনীয় সে আমার মেয়েকে সুখি রাখতে পারবে কি না... সেটাই জানার দরকার...’ পৃথার কপালে স্নেহের চুম্বন এঁকে দিয়ে বলেন ভদ্রমহিলা। ‘ওহ! মা গো... তুমি কি ভালো... তুমি আমার বেস্ট মা ইন দ্য ওয়ার্ল্ড...’ মা কে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে পৃথা... সারা মুখটা খুশিতে ঝলমল করে ওঠে তার... পৃথার মাও পৃথাকে জড়িয়ে রাখেন নিজের বুকের মধ্যে... পীঠের ওপরে হাত বোলান আদরের... ‘তা হ্যা রে মা, কি করে ছেলেটা?’ প্রশ্ন করেন তিনি। ‘ব্যবসা... খুব বড় একটা ফ্যাক্টারী আছে কেমিকালএর... ও এখানকার ছেলে নয়, ওর বাড়ি ছত্তিসগড়ে... কিন্তু জানো মা, ওর না কেউ নেই... আগে কানাডায় থাকতো, ওখানেই বিয়ে করেছিল, কিন্তু ওর আগের বউএর ক্যান্সার হয়েছিল, মারা গিয়েছিল, তারপর থেকে ও এখানে, মানে কলকাতাতেই থাকে... আমি তো ওর ফ্ল্যাটেই থাকি ভাড়া...’ আবেগে যেন সব বলতে ইচ্ছা করে পৃথার, তার মাকে... এতদিন এই সব বলতে না পেরে যেন হাঁফিয়ে উঠেছিল সে মনে মনে... আজ সব উগরে দিতে চায় মায়ের কাছে... ‘কেউ নেই বলছিস... সব দিক দেখে নিয়েছিস তো... আর কিছুই না, আজকাল যা সব শুনি...’ মনের মধ্যে একটু শঙ্কার বাসা বাঁধে কোথাও... ‘হ্যা মা, আমি সব দিক দেখে শুনে তবেই এগিয়েছি... বড্ডো ভালো ছেলে... একটু বয়স বেশি ঠিকই, কিন্তু আমাকে ভিষন সামলে রাখে... এই যে বাপীর চিকিৎসার টাকা, সব তো ওই দিয়েছে, ওর বন্ধুর হাত দিয়ে...’ মাকে বলতে পেরে যেন নিজেকে খুব হাল্কা লাগে পৃথার। ‘ও... ওই ছেলেটি... প্রণবদা প্রণবদা করছিলিস যাকে?’ জিজ্ঞাসা করেন পৃথার মা... ‘হ্যা... ওই তো অর্নবের বন্ধু... ওর ব্যবসার পার্টনারও... আমাকে এখানে আসার টিকিট যোগাড় করে আমাকে প্লেনে তুলে দিয়ে শিলিগুড়ি চলে এসেছে, যাতে বাপীর চিকিৎসার কোন অসুবিধা না হয় দেখতে...’ উজ্জল মুখে উত্তর দেয় পৃথা। ‘তা অর্নব... হ্যা অর্নবই তো বললি নামটা... তা অর্নব আসে নি?’ প্রশ্ন করেন ভদ্রমহিলা। ‘হ্যা এসে...’ বলতে গিয়েই থমকায় পৃথা... তাড়াতাড়ি সামলে নেয় কথা... এসেছে বললে সে জানে মা বলবেন তাকে নিয়ে আসার জন্য, তখন তো আর এক বিপদ হবে, কাকে আনবে সে? একটা কায়াহীন মানুষকে? ‘না, মানে ও আসতে পারে নি, একটু আটকে গেছে, তাই তো বন্ধুকে পাঠিয়েছে এখানে...’ তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে সে। ‘ওহ! তা এখন একবার বলে দে আসতে... তুই এখানে থাকতে থাকতেই আমরা কথা বলে নিই ওর সাথে...’ বলে ওঠেন পৃথার মা। ‘এ...এখানে আসতে বলবো?’ ঢোক গেলে পৃথা... কি করে পরিস্থিতি সামলাবে বুঝতে পারে না... অর্নবকে এদের সামনে হাজির করবে সে কি করে? সেটা যে একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার একটা... মা যদি অর্নবকে এই অবস্থায় দেখে, তবে তো ভিমরি খাবে, তখন মাকে রাজি করানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে তার কাছে, যতটা সহজে মা মেনে নিয়েছে অর্নবকে, তখন ততটাই বেঁকে বসবে যে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না... ‘হ্যা... এখানে... আমাদের তো একবার কথা বলতে হবে ছেলেটির সাথে... বিয়ে বলে কথা, আর চারপাঁচটা আত্মীয় সজনের সাথে আলাপ পরিচয় হবে, তবেই না জিনিসটা একটা জায়গায় পৌছাবে... তুই এখানে থাকতেই বরং ওকে আসতে বলে দে... ততদিন না হয় তুই আমাদের কাছেই থাক...’ স্বাভাবিক স্বরে কথা বলে উঠে দাঁড়ান পৃথার মা, ‘নাঃ একবার যাই তোর বাবার কাছে, মানুষটা ঘরে একা আছে, আর তাছাড়া ওনাকেও কথাটা জানিয়ে রাখি...’ বলতে বলতে পা বাড়ান ঘরের বাইরে। ‘এবার কি হবে?’ মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে পৃথা... ‘দুম করে আনন্দের মধ্যে বলে তো দিলাম অর্নবের কথাটা মায়ের কাছে, কিন্তু এখানে যে ডেকে পাঠাবে মা, সেটা তো মাথায় ছিল না... এখন?’ ক্রমশ...
14-01-2019, 07:35 PM
আবার একটা মন ভালো করে দেওয়া আপডেট। ধন্যবাদ দাদা।
BEAUTY LIES IN THE EYES OF THE BEHOLDER
14-01-2019, 08:54 PM
আমারে রেখেছি গোপন
দেখা হীন অদেখায়, কথাহীন না বলায় । আমি রয়েছি তোমার কাছাকাছি তবুও যে আমি অনেক দূর দুরান্তে । পথহীন পথের দিশায় , ঠিকানাহীন আপনের সন্ধানে । হোক সে কায়াহীন , তবুও স্বপ্নিল অবস্থানে, ভাসবে সমাজ গন্ডির এ কূল বৃথা। উদ্বেলিত উচাটনে উন্মাদনা এ প্রানে, সে যে আজন্ম লালিত হে পৃথা।
14-01-2019, 09:43 PM
সপ্তপদী, ছদ্মবেশী, মৌচাক, জমালয়ে জীবন্ত মানুষ ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি...... কতবার, মনে নেই। কিন্তু যতবারি দেখিনা কেন দেখতে শুরু করলে ঠিক প্রথমবারের মতই ভালোবাসায় ভরে ওঠে মনটা। ঠিক সেই অনুভূতিটা তোমার গল্পগুলোতেও পাচ্ছি।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 4 Guest(s)