Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.53 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance বজ্রাঘাত (সমাপ্ত)
#81
এই গল্পটি খুব ধৈর্য ধরে এবং যথেষ্ঠ details এ বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে যেন সব কিছু চোখের সামনে ঘটছে। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো এই গল্পটির যদি এখনো কপি রাইট না নিয়ে থাকেন তো শীঘ্রই নিয়ে নেবেন।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
দারুন
Like Reply
#83
(03-01-2019, 10:12 PM)Odrisho balok Wrote: Opekhay roilam next update er jonne??

আজকে দুটো পর্বের আপডেট দেবো, তার পর আগামী সোমবার পরবর্তি আপডেট আসবে... 
Like Reply
#84
(03-01-2019, 10:14 PM)ronylol Wrote: dada arek tu boro update cai

আজকে দুটো পর্বের আপডেট এক সাথেই পাবে...
Like Reply
#85
(04-01-2019, 05:59 AM)naag.champa Wrote: এই গল্পটি খুব ধৈর্য ধরে এবং যথেষ্ঠ details এ বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে যেন সব কিছু চোখের সামনে ঘটছে। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো এই গল্পটির যদি এখনো কপি রাইট না নিয়ে থাকেন তো শীঘ্রই নিয়ে নেবেন।

ইরো গল্পের কপি রাইট হয় কি না জানি না... সম্ভবতঃ হয় না... তবুও আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো... এটাই আমাদের মত অ্যামেচার লেখকদের একান্ত পাওনা বলা যেতে পারে... অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে... 
Like Reply
#86
(04-01-2019, 08:37 AM)sphulinga Wrote: দারুন

ধন্যবাদ ভাইটু... তোমাদের মত স্ফুলিংগ থাকলেই না গল্পে আগুন লাগাতে পারি...


রেপু রইল ভালোবাসার... Heart Heart Heart
Like Reply
#87
২৯।।


সামান্য ঝুকে বিছানার ওপরে আলতো করে মেলে দেয় পৃথার শরীরটাকে অর্নব... প্রেমাস্পদের কাছ থেকে সম্ভাব্য আদরের অভিলাশে একটা সদ্য ঝরা পাতের মত বিছানার ওপরে শুয়ে তিরতির করে কাঁপতে থাকে পৃথার মেদহীন পেলব মেয়েলী সম্পদে পরিপূর্ণ দেহটা... নিজের চোখগুলোকে চেপে বন্ধ করে রাখে সে... চোখ মেলে দেখার কিছু নেই... অনুভব করতে চায় নিজের শরীরের ওপরে একটা দুর্দান্ত পুরুষালী দেহের পরশ শুধু... অভিষ্ট সুখানুভূতির পরশ পেতে নরম বুকদুটো পাতলা স্লিপএর আড়ালে ওঠে, পড়ে... উঁচিয়ে, প্রস্ফুট হয়ে থাকে উত্তেজিত স্তনবৃন্তদুটি... একান্ত পেষনের কামনায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে যেন স্বকিয়তায়...

নিজের হাতদুখানি তুলে, মেলে ধরে দুই দিকে... প্রকৃষ্ট আহ্বানের ইঙ্গিত সেখানে... তিরতির করে কাঁপে বন্ধ চোখের পাতা... ফাঁক হয়ে থাকে পাতলা অধর... প্রেমিকের অধরের সাথে মিলিত হবার পরম প্রেরণায়... ঘাম জমে নাকের পাটার দুই পারে... উত্তেজনায় রাঙা হয়ে ওঠে নাকের পাটা, কানের লতি... উষ্ণ বাতাস পৃথার নিঃশ্বাসে...

অর্নব এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে চোখের সামনে শুয়ে থাকা পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর মেয়েটির পানে... তার দেখা সব চেয়ে সুন্দর পবিত্র নিষ্পাপ অথচ অসম্ভব কামুকি মেয়ে... নারী সে এই প্রথম দেখছে না... আজ তার বয়সের মধ্য গগনে দাঁড়িয়ে বিশ্বের বহু ধরনের নারী দেখার সৌভাগ্য হয়েছে... গ্রাম্য, শহুরে, দেশি, বিদেশী, শান্ত, অশান্ত, কামুক, শৈতী, কি নয়? সে নিজে অপত্নিক... যৌনতা তার কাছে নতুন কিছু নয়... নিজের স্ত্রীকে নিয়ে বিশ্বের বহু বহু জায়গায় সঙ্গমের আনন্দে মেতেছে কত যে বার, তার কোন ইয়ত্তাই নেই হয়তো... কোথায় নয়? শৈলাবাসে, সমুদ্র সৈকতে, নির্জন বনভূমির অভ্যন্তরে আবার কখনও বা ব্যস্ত শহরের নির্জন কোন রাত্রিবাসের নিভৃত একান্ত ঘরের আড়ালে... কখনো কানাডার প্রচন্ড শীতের মধ্যে আবার কখনো বা মরুভূমির প্রচন্ড তাপপ্রবাহ গায়ে না মেখে... লিন্ডা তাকে যৌনসুখের শিখরে পৌছিয়ে দিয়েছিল... তার শরীর থেকে টেনে বার করে নিয়েছিল যৌনসুখের অপার নির্যাস... অস্বীকার করে না সে, তার স্ত্রীই শিখিয়েছিল একটা নারী শরীরকে কি ভাবে একটু একটু করে উত্তেজিত করে তুলতে হয়... প্রতি পল ধরে ধরে সেই নারী শরীরটাকে তুলে নিয়ে যেতে হয় শারিরীয় সুখের একেবারে শীর্ষে... ভরিয়ে দিতে হয় কি ভাবে আদর আর সোহাগে সেই নারীর দেহের প্রতিটা ইঞ্চি বাই ইঞ্চি... তাই লিন্ডাকে হারাবার পর আর কখনও সে কল্পনাতেও আনে নি অপর কোন নারীকে তার জীবনে... কিন্তু এই মেয়েটা কি ভাবে তার সব সেই প্রতিজ্ঞা গুলো নিমেশে ভাসিয়ে উড়িয়ে দিয়ে গেলো... কবে? কি করে? কখন? দৃষ্টির আড়াল থেকে নিজের কায়াহীনতার সুযোগ নিয়ে সে শুধু এই মিষ্টি মেয়েটার উচ্ছলতা, প্রাণবন্ততা, তারুণ্যে ভরা দেহটাকে দেখে গিয়েছে... আর একটু একটু করে কখন যে এতটা আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিল, নিজেই সম্ভবত জানে না অর্নব... যেদিন তার উপস্থিতি, তার অবয়বহীন দেহটার প্রমাণ পেয়ে গেল... আপন করে নিলো এক ডাকে... পারে নি সে... পারে নি সেই ডাকে না সাড়া দিয়ে... মনে মনে শঙ্কা থাকা সত্বেও, অনেক অনিচ্ছা থাকা সত্বেও ধরা দিতে বাধ্য হয়েছিল মেয়েটির বাহুডোরে... শুধু কি এই মোহময়ীর ডাক শুনেই? তারও কি প্রবল ইচ্ছা জন্মায় নি মেয়েটিকে প্রথম দিন দেখেই, তাকে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরতে? তার শরীরের ওম নিজের দেহের ওপরে গ্রহণ করতে... আজ সে কথা অস্বীকার করে কোন মুখে? ইচ্ছা ছিলো ষোল আনাই, কিন্তু সেই সাথে ভয়ও ছিল তার... ভয় ছিল যদি তার এই কায়াহীনতা মেয়েটি মেনে না নিতে পারে? ভয়, আতঙ্কে সরে যায় তার থেকে? পালিয়ে যায় এই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়ে... তাই যথা সম্ভব, সর্বদা চেষ্টা করে গেছে মেয়েটির থেকে দূরে দূরে থাকতে... কিন্তু অসুস্থ মেয়েটিকে না ছুঁয়ে থাকবে কি করে সে? তাই সেদিন আর দূরে থাকতে পারে নি... এগিয়ে এসে বুকে তুলে নিয়েছিল সে... শুশ্রষা করেছিল রাতের গভীরে... ভোর হতেই প্রনবকে ফোন করে ডাক্তার আনার কথা বলে দিয়েছিল... কিন্তু তখন কি জানতো মেয়েটি এই ভাবে তাকে নিজের করে টেনে নেবে? না, ভাবে নি... শুধু ভেবেছিল প্রণব এসে গেলেই আবার সে লুকিয়ে থাকবে তার প্রিয়ার চোখের আড়ালে... ধরা ছোঁয়ার বাইরে... কারণ মন চাইলেও সে নিজেকে বার বার বুঝিয়েছিল যে এ হয় না... অনেক ছোট মেয়েটি তার থেকে... কি করে এই প্রাণচ্ছল মেয়েটির জীবন তার মত এক অবয়বহীনের কাছে টেনে নেবে সে? তাই পৃথা যখন ওকে নিজের কাছে টানতে চেয়েছিল, জানাচ্ছিল নিজের প্রাণের কথাগুলো... বারংবার তাকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করে গিয়েছিল... বোঝাবার চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখে নি অর্নব... কিন্তু পেরেছিল কি? না, পারে নি... হেরে গিয়েছিল মেয়েটির বুকভরা ভালোবাসার কাছে... শুধু তাই কেন? সে হেরে গিয়েছিল নিজের প্রতিজ্ঞার কাছে... দুহাত বাড়িয়ে টেনে নিয়েছিল পৃথাকে নিজের বুকের মাঝে... স্নিগ্ধ হয়ে গিয়েছিল তার এতদিনকার কায়াহীন একাকিত্বের জীবনটা... কিন্তু এরপর?

‘কোই... কি হোলো? আসলে না এখনও?’ পৃথার প্রশ্নে চিন্তায় ছেদ পড়ে অর্নবের... দেখে পৃথা তখন দুহাত তুলে মেলে রেখেছে তাকে নিজের বুকের সান্নিদ্ধে পাবার প্রতিক্ষায়...

বাড়িয়ে দেওয়া একটা হাতকে নিজের হাতের মধ্যে ধরে পৃথার পাশে বিছানায় বসে পড়ে অর্নব, তারপর পৃথার অপর হাতটাকে তার ধরা অন্য হাতটার সাথে মিলিয়ে দুটোকে পৃথার বুকের ওপরে জড়ো করে ধরে তার মুখের ওপরে একটু ঝুঁকে বসে সে... গাঢ় গলায় বলে, ‘আজ তোমার ঘুমের বড়ো দরকার তিতির... আজ সারাটাদিন তুমি একটুও দুচোখের পাতা এক করো নি... এখন একটু ঘুমাও... লক্ষ্মীটি...’

পট করে পৃথার দুচোখের পাতা খুলে যায়... কুঁচকে যায় নাকটা সামান্য... অর্নবের অবয়বহীন মুখটার দিকে পলক খানেক এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে সে... ‘আমি এমনি বলেছি জ্যাঠামশাই?’ চোয়াল চেপে বলে ওঠে সে... পরক্ষনেই... বুকের ওপরে তার হাতদুটো মুঠোয় ধরে থাকা অর্নবের হাতটাকে ছাড়িয়ে নিয়ে দূরে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে সরে যায় বিছানার আরো ভিতর দিকে, অর্নবের শরীরের গা বাঁচিয়ে... মুখ ঘুরিয়ে পেছন ফিরে শুয়ে থাকে সে... গজগজ করতে থাকে অস্ফুট স্বরে, ‘হু... কাকে বলেছি কি করতে... এমনি বলেছি একটা অসভ্য, বিচ্ছিরি লোক... আমার জীবনেই এসে জুটেছে... আসতে হবে না আমার কাছে... চাই না ওই বিচ্ছিরি লোকটাকে... একবার আসুক... ডাকুক তিতির বলে... দেখবে তখন তিতির কি রকম... ঠিক আছে... কথাই বলবো না... ছোবও না কোনদিন... ছুঁতেও দেবো না আমাকে... দেখবে তখন কেমন লাগে... চাই না... চাই না ওই বাজে লোকটাকে... ইশ... মুখ দেখতেও ইচ্ছা করে না... এক গাল দাড়ি... গায়ে লাগলে খালি সুড়সুড় করে... আসুক না আমার কাছে... কামড়ে দেবো ঠিক...’ গজগজ করে যায় পাশ ফিরে শুয়ে সে।

অর্নব একটা কথাও বলে না... চুপ করে হাসি মুখে দেখতে থাকে তার প্রেয়সীর পেছন ফিরে শুয়ে থাকা অভিমানী শরীরটাকে... পৃথার কথায় রাগ তো দূরের কথা আরো মজা পায় সে... পৃথার বুকের মধ্যের এখন বর্তমান ছেলেমানুষীটা দেখে ভালো লাগে তার... আস্তে আস্তে পৃথার গা বাঁচিয়ে সেও শুয়ে পড়ে কাত হয়ে বিছানায়... তারপর খুব ধীরে নিজের শরীরটাকে ঘসে সরিয়ে নিয়ে যায় পৃথার পানে... একদম কাছে সরে গিয়ে আলতো করে একটা হাত ঘুরিয়ে জড়িয়ে ধরে পৃথার শরীরটাকে পেছন থেকে... তার নিতম্বটাকে টেনে নেয় নিজের কোলের মধ্যে...

ঝটকা মেরে অর্নবকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘যাও... আসতে হবে না আমার কাছে... একদম ছোঁবে না আমাকে...’

বলিষ্ঠ হাতের আলিঙ্গনে চেপে রাখে পৃথাকে নিজের বুকের মধ্যে সে... আরো বেশি করে টেনে নেয় নিজের বুকের মধ্যে তাকে... মুখটা গুঁজে দেয় পৃথার মসৃণ কাঁধ আর গলার মাঝখানটায়...

‘উউউউ... হি হি হি...’ সুড়সুড়ি লেগে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে পৃথা... ‘এখন এসেছ কেন? হু? করতে হবে না আদর... আমি ঘুমাবো এখন...’ ফের মনে পড়ে যেতে রাগটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে সে।

‘এই মেয়েটার এত্তো অভিমান?’ ছোট করে পৃথার গলায় চুমু খেয়ে বলে অর্নব।

সিরসির করে ওঠে পৃথার সারা দেহ... ‘আহহহহ... কি করো...’ নিমেশে যেন শিথিল হয়ে যায় শরীরটা পৃথার...

‘আমার তিতিরকে আদর করছি...’ ফিসফিসিয়ে উত্তর দেয় অর্নব।

‘যাও... চাই না তোমার আদর...’ গাল ভারী করে বলে ওঠে পৃথা।

‘সত্যিই চাই না... একটুও না...’ পৃথার গলার ওপরে ছোট ছোট চুমু খেতে খেতে বলে অর্নব...

কাঁধ কুঁচকে তুলে ধরে পৃথা... ‘চাই নাই তো... একদম করবে না আমাকে আদর... আমি তোমার কেউ নই...’ মুখ বলে, কিন্তু নিজের শরীরটাকে আরো চেপে ধরে পেছন দিকে অর্নবের বুকের সাথে... নিতম্বটাকে ঠেলে দেয় অর্নবের জঙ্ঘার দিকে।

হাতের তালুর মধ্যে মুঠো করে ধরে পৃথার নরম একটা স্তনকে... হালকা হাতের চাপ দেয় মুঠোয়... ‘আহহহ... উমমমম...’ গুঙিয়ে ওঠে পরম আবেশে পৃথা... হাত তুলে নিজের বুকের সাথে অর্নবের হাতটাকে আরো ভালো করে চেপে ধরে সে... ‘ইশশশশসসস... কি করছ...’ গুনগুনিয়ে বলে ওঠে মৃদু স্বরে...

‘আদর...’ ফিসফিসায় অর্নব... গলার চামড়ায় হালকা দাঁত বসিয়ে চাপ দেয়...

‘ওমমম... মাআহহহ...’ নিজের হাতের মুঠো আরো শক্ত করে পৃথা... অর্নবের হাতটাকে ধরে রগড়ায় নিজের বুকের ওপরে... ‘অসভ্য লোক একটা...’ ফিসফিস করে সেও বলে ওঠে... সারা শরীরের মধ্যে তখন আলোড়ন উঠছে যেন তার... পা দুটোকে ঘসে একে অপরে সাথে নিজের নিতম্বটাকে বারে বারে পেছন দিকে চেপে ধরে...

অর্নব ঘাড়ের ওপর থেকে মুখটাকে তুলে এনে চুমু খায় কানের পেছনে... ‘উউউমমম...’ কানে আসে চাপা গোঙানি পৃথার... আরো শক্ত করে ধরে তার হাতটাকে নিজের নরম হাতের মুঠোয়... কানের লতিটায় জিভ বের করে ঠেকায় সে... জিভের ডগায় তুলতুলে নরম কানের লতিটা ধরে নাড়িয়ে দেয় অল্প অল্প... ‘ইশশশশ... কি করছহহহ...’ ফের গুনগুনিয়ে ওঠে পৃথা... কোমর কুঁচকে নিতম্বটাকে ঘসার চেষ্টা করে অর্নবের কোলের মধ্যে... একটু একটু করে কি ভিষন ভাবে সে ভিজে উঠছে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না তার... দেহের দুষিত রক্ত আর শরীরের কামজ রস মিলে মিশে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসছে তার শরীরের ফাটল বেয়ে... সাংঘাতিক ভাবে ভিজে উঠছে প্যান্টির ওই বিশেষ জায়গাটা... কিন্তু সে দিকে তার এখন কোন হুস নেই... ভিজে যাক যত পারে... কেয়ার করে না সে... দূরন্ত গতিতে তৈরী হতে থাকা ওই ভিষন ভালোলাগাটাকে সে হারাতে চায় না এক মুহুর্তের জন্যও... আর এক হাত তুলে এনে দুইহাতের মুঠোয় চেপে ধরে অর্নবের হাতটাকে নিজের নরম বুকের ওপরে... মাথাটাকে আরো কাত করে দেয় অর্নবের মুখের সামনে... ‘আহহহহ... কি করছহহহহ...’ শিৎকার বেরিয়ে আসে তার মুখ থেকে... চোখ বন্ধ হয়ে যায় পরম আবেশে...

কানের লতি চুষতে চুষতে জিভটাকে ঢুকিয়ে দেয় পৃথার কানের মধ্যে... ঘোরাতে থাকে হাল্কা ভাবে সেখানে রেখে... কানের মধ্যের ভেজা অনুভুতিটা পাগল করে তোলে পৃথাকে... ‘ওওওহহহ মাহহহহ... ইশশশ...’ ফের গুঙিয়ে ওঠে সে... আর তার শরীর যেন নিতে পারে না এই শিহরণ... ঝট করে ঘুরে শোয় অর্নবের দিকে ফিরে... এক রাশ ভালোবাসা মাখা চোখ তুলে তাকায় কায়াহীন অর্নবের মুখের পানে... পলক খানেক তাকিয়ে থাকে সে... তারপর গুঁজে দেয় নিজের মুখটাকে ভালোবাসার মানুষটার লোমশ বুকের মধ্যে... ‘একটা বিচ্ছিরি লোক... অসভ্য একটা...’ ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে... দুহাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে না দেখতে পাওয়া অথচ ছুঁয়ে থাকতে পারা অর্নবের শরীরটাকে... অর্নব হাতের আলিঙ্গনে আরো টেনে নেয় তার আদরের তিতিরকে নিজের বুকের মধ্যে... পৃথার মাথার ওপরে চিবুকটা রেখে হাত বোলায় প্রেয়শীর পীঠের ওপরে... ‘আদর খাওয়া হয়েছে তো? এবার ঘুমাবে তো আমার সোনা?’

প্রায় খামচে ধরে অর্নবের উদলা পীঠটাকে... নিজের জঙ্ঘায় অনুভব করে স্ফিত হয়ে ওঠা তার প্রেমিকের পৌরষ... চেপে এগিয়ে দেয় সর্টস প্যান্টের আড়ালে ঢাকা নিজের জঙ্ঘটাকে আরো... ‘আমার সোনা...’ বিড়বিড় করে বলে সে অর্নবের বুকের মধ্যে... তারপর চোখ বন্ধ ঢলে পড়ে ঘুমের কোলে, পরম নিশ্চিন্তে।
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
#88
৩০।।


‘কখন উঠলে?’ কানের পাশে মৃদু স্বরে অর্নবের গলা পেয়ে চিন্তার জাল ছেঁড়ে পৃথার... জানলা দিয়ে ভোরের আলো তখন সবে ফুটে উঠে উঁকি মারছে ঘরের মধ্যে... বিছানা থেকেই চোখে পড়ে আকাশের গায়ে বেগুনি রঙের ছোঁয়া...

‘উম?... এই তো... খানিক আগেই... চেঞ্জ করে এলাম... প্রথম দুটো দিন বড্ড হয়... বারে বারে চেঞ্জ না করলে ভেসে যায় একেবারে...’ নিজের শরীরটাকে আরো অর্নবের কোলের মধ্যে ঠেলে দিয়ে উত্তর দেয় পৃথা, আড়মোড়া ভাঙে হাত তুলে।

‘কি চিন্তা করছিলে শুয়ে শুয়ে?’ প্রশ্ন করে অর্নব, ডান হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে প্রেয়শীকে।

‘কতওওওও কি...’ মৃদু হেসে উত্তর দেয় পৃথা... না দেখা অর্নবের দিকে ফিরে শোয় সে... হাত তুলে রাখে অর্নবের দাড়িভরা গালের ওপরে... ‘গুড মর্নং সোনা...’ বলে ঠোঁটটা এগিয়ে রাখে অর্নবের দাড়ির আড়ালে থাকা ঠোঁটের ওপরে... হাল্কা করে চুমু খায়।

‘কি ভাবছিলে, কই, বললে না তো?’ পৃথার এলোমেলো চুলের মধ্যে বিলি কাটতে কাটতে ফের জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘তোমার কথা...’ ফিসফিসিয়ে উত্তর দেয় সে।

‘আমার কোন কথা? সবই তো শুনেছ প্রণবের কাছ থেকে... কিছুই তো বাকি নেই আর... তাহলে?’ ফের জিজ্ঞাসা করে অর্নব... চুলের থেকে হাত নামিয়ে খেলা করে কানের লতি নিয়ে।

সিরসির করে ওঠে পৃথার শরীরটা কানের লতিতে হাত পড়তে... ঘাঁড় কাত করে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে সে... ‘ইশশশ... সুড়সুড়ি লাগছে তো...’

কান ছেড়ে পীঠের ওপর হাত রেখে আরো ঘন করে টেনে নেয় পৃথার শরীরটাকে নিজের বুকের মধ্যে অর্নব... লোমশ আদুল বুকের মধ্যে মুখ গোঁজে পৃথা... মুখ ঘষে... আহ... কি নিশ্চন্তের পরশ এখানে... মনে মনে ভাবে সে।

পৃথার চুলের মধ্যে মুখ রেখে ফের প্রশ্ন করে অর্নব, ‘কই... বলো... কি ভাবছিলে?’

‘তুমি খারাপ ভাববে না?’ জিভ তুলে আলতো করে ঠেকায় মুখের সামনে লোমের আড়ালে থাকা ছোট্ট বুকের বোঁটাটায়...

এ ভাবে বুকের বোঁটায় ভেজা জিভের ছোঁয়া পড়তে অর্নবের শরীরও সিরসিরিয়ে ওঠে, কিন্তু চুপ করে থাকে সে, কিছু বলে না, পৃথার মাথার মধ্যে মুখ গুঁজে প্রশ্রয়ে হাসি হাসে নিঃশ্বব্দে...

পৃথাকে চুপ করে থাকতে দেখে অর্নব বলে, ‘তোমার কি জিজ্ঞাস্য, সেটা জানি আমি... তুমি ভাবছ যে আমাকে ছুঁতে পারছ, অথচ আমি জীবত না মৃত সেটাই এখন তোমার কাছে পরিষ্কার নয়... তাই তো? অনেকদিন ধরেই প্রশ্নটা তোমার মাথার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে... ঠিক কি না?’

অর্নবের কথা শুনে বুকের মধ্যেটা মুচড়ে ওঠে পৃথার... এটাই তার জিজ্ঞাস্য ঠিকই, কিন্তু সেটা জিজ্ঞাসা করে অর্নবকে হারাতেও যে সে চায় না কোন মতেই... তাই তো এত দ্বন্দ তার মনের মাঝে... প্রশ্নটা বার বার উঠে এলেও পরিস্থিতির চাপে হয়তো চাপা পড়ে গিয়েছে... সেও আর চাপ দেয় নি প্রশ্নটাকে নিয়ে... আগে যখন অর্নবকে পায় নি, তখন তার বিচরণ ছিল কল্পনার জগতে, নিজের মত করে সাজিয়ে নিয়েছে তার প্রেমিককে... কিন্তু আজ সেই মানুষটার বুকের মধ্যে ঢুকে থাকার সময় কেমন যেন মাঝে মধ্যেই সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায় তার... তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যত ভাবতেই কেমন দিশেহারা ঠেকে সব কিছু... কি করে বোঝাবে তার প্রেমাষ্পদকে মনের মধ্যে গড়ে ওঠা অনুভূতিটাকে?

‘আমি তোমার মতই একেবারে জীবত একটা মানুষ, তিতির...’ পৃথার মুখটাকে হাতের আঁজলায় নিজের পানে তুলে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে অর্নব... ‘তুমি যাকে ছুঁয়ে আছো... সে মৃত কোন ব্যক্তি নয়... রক্তমাংসে গড়া একটা মানুষ... কিন্তু আজ আমি কায়াহীন... শরীরটা পড়ে রয়েছে... কিন্তু কেউ আমাকে দেখতে পায় না... কিন্তু তোমার মত কেউ যদি এসে ছোঁয়... আমার স্পর্শ পেতে পারে সে... বুঝতে পারে আমার অস্তিত্ব...’ বলে চুপ করে অর্নব।

‘কি...কিন্ত... কি করে?’ ধরা গলায় প্রশ্ন করে পৃথা... চোখে ভাসে অপরিসীম জিজ্ঞাসা... ‘তবে যে সেদিন প্রণবদা বললো তোমার গাড়ি...’ আর শেষ করতে পারে না সে বাক্যটাকে... গলার মধ্যে দলা পাকিয়ে ওঠে...

‘কি বলেছিল প্রণব... আমার গাড়িটা জ্বলে গিয়েছিল... তাই তো? আমাকে তারপর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি... আমি নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলাম সেদিনের পর থেকে... তাই না?’ নিচু গলায় বলে অর্নব।

ইতিবাচক মাথা নাড়ে পৃথা... প্রণবদার কাছ থেকে কথাটা শোনার পর তার মনের কি অবস্থা হয়েছিল সেটা ভুলতে পারে নি, এখনও...  

পৃথার মাথাটাকে ফের নিজের বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নব... চিবুকটা তার মাথার চুলে রেখে বলে... ‘হুম... ঠিকই বলেছিল প্রণব... ঠিক সেটাই হয়েছিল... কিন্তু সবটা বলে নি সেদিন, অবস্য ওরও দোষ নেই, আমারই বারণ ছিল, না বলার... তাই সে আর তোমার কাছে খুলে ধরে নি বাকিটা’...

‘কি হয়েছিল?’ নিজের গালটা বুকের ওপরে রেখে প্রশ্ন করে পৃথা... ডান হাতের বেড় থাকে অর্নবের শরীরটাকে জড়িয়ে... আঙুলগুলো খেলা করে বেড়ায় তার প্রেমিকের পীঠের ওপরে।

‘সব ঠিকঠাকই চলছিল সেদিন... বেশ ভালোই যাচ্ছিলাম বর্ধমানের দিকে... মোটামুটি দূর্গাপুর হাইওয়ের রাস্তাও খারাপ নয়, আর আমি গাড়িটা বেশ ভালোই চালাই...’ পৃথার মাথায় চিবুক রেখে বলে চলে অর্নব... ‘তখন বৃষ্টিটা একটু ধরেও এসেছিল... টিপটিপ করে পরছিল... গাড়ির উন্ডস্ক্রিন সেই ঝিরঝিরে বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে উঠলেও, চালাতে কোন অসুবিধাই হচ্ছিল না আমার...’ বলতে বলতে থামে সে... পৃথা চুপ করে এক মনে শুনে চলে অর্নবের কথা... কথার মাঝে কোন ডিস্টার্ব করে না সে...

‘সেদিন তাড়াহুড়োয় বেরুবার সময় বোধহয় টয়লেট করতে ভুলে গিয়েছিলাম, তাই বেশ অনেকক্ষন ধরেই টয়লেট পাচ্ছিল, কিন্তু ওই ফাঁকা হাইওয়েতে কোথায় টয়লেট পাই... ভাবতে ভাবতে হটাৎ মাথায় এলো, এই বৃষ্টির মধ্যে একটা ফাঁকা জায়গা দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টয়লেট করে নিলেই হলো, কে আর কি বলবে? তাই যেমন ভাবা তেমন কাজ, গাড়িটাকে লেন থেকে সরিয়ে এনে দাঁড় করিয়ে দৌড়োই কাছেই থাকা একটা গাছ লক্ষ্য করে... নিশ্চিন্তে হাল্কা হই ওটার আড়ালে... তারপর ফিরেই আসছিলাম... কিন্তু গাড়ির প্রায় কয়’এক গজ বাকি থাকতেই আমার মনে হল যেন পুরো পৃথিবীটাই ঝলসে উঠল... আর সেই সাথে একটা কান ফাটানো আওয়াজ... আমি ছিটকে পড়লাম রাস্তার পাশের অগভীর খালটায়... প্রায় সাথে সাথেই জ্ঞান হারালাম... আর কিচ্ছু জানি না...’ ফের থামে অর্নব... বুকের মধ্যে থাকা পৃথা অনুভব করে সেদিনের কথা বলতে বলতে উত্তেজনায় তার হৃদপিন্ডটা কি অস্বাভাবিক ভাবে দ্রুত চলছে... যেন বুকের মধ্যে কেউ হাতুড়ি পেটাচ্ছে... আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে নিজের মুখটাকে চেপে রাখে প্রেমাষ্পদের বুকের মধ্যে সে।

‘যখন জ্ঞান ফিরলো, দেখি আমি তখনও পড়ে আছি ওই খালটার জলের মধ্যেই... মাথার মধ্যেটায় তখনও যেন ঝিমঝিম করছে আমার... সারা গায়ে হাতে কি অসহ্য যন্ত্রনা... অনেক কষ্টে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালাম আমি... প্রায় টলতে টলতে ঢাল বেয়ে এগোতে থাকলাম রাস্তার দিকে... গাড়িটা যেখানে দাঁড় করিয়েছিলাম...

কিন্তু একি!... গাড়িটা পুড়ে একেবারে ছারখার হয়ে গিয়েছে... একটা কালো অঙ্গারে পরিণত হয়েছে সেটা... আর সেটাকে ঘিরে শ’খানেক লোকের জটলা... সবাই মিলে কি যেন খুজছে আতিপাতি করে... চতুর্দিকে চিৎকার চ্যাঁচামিচি... ওদের চিৎকারটা যেন আমার মাথার মধ্যে তখন হাতুড়ি পেটার মত দুমদুম করে লাগছে... কোন রকমে দুহাত কানের ওপরে চেপে আরো এগিয়ে গেলাম গাড়িটার কাছটায় টলতে টলতে... কিন্তু যাবো কি, কাউকে ঠেলে এগোতেই পারছি না, এতো ভীড় করে দাঁড়িয়ে রয়েছে... তাও চেষ্টা করলাম সামনের লোকটাকে সরিয়ে এগোবার... কিন্তু লোকটা কি অদ্ভুতভাবে আমাকে সরিয়ে দিল... এমন ভাবে পেছন না ফিরেই হাতের ধাক্কা দিল, যেন আমাকে দেখতেই পেল না সে... আমি ঘুরে আর একদিক দিয়ে গাড়ির কাছে পৌছবার চেষ্টা করলাম... কিন্তু সেখানেও সেই একই ব্যাপার... কেউ আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না... আমি যে ওদের পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করছি সেটাই যেন কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনছে না... আমি যে আদৌ ওখানে আছি সেটাই যেন কেউ বুঝতে চাইছে না অদ্ভুতভাবে... কি মনে হলো আমার তখন, সামনের যে লোকটার কাঁধের ওপরে হাতটা রেখেছিলাম, সেই হাতের দিকে নজর করলাম... আর যা দেখলাম, তাতে প্রায় হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম আমি... একি! আমার হাত কই... আমি তো সামনের লোকটাকে পুরোটাই দেখতে পাচ্ছি... তার দেহের কোন অংশই তো আমার হাতের আড়ালে চলে যায় নি! তবে!... তাড়াতাড়ি লোকটার কাঁধ থেকে হাতটাকে তুলে নিজের সামনে মেলে ধরলাম... না! নেই তো! কিচ্ছু নেই! সব ফাঁকা! সব... সব ফাঁকা... একেবারে স্বচ্ছ... হাতটার মধ্যে দিয়ে আরপার সব কিছু দেখা যাচ্ছে... কেমন শিউরে উঠলাম একটা অচেনা ভয়ে... ভয় জিনিসটা কোনদিনই আমার মধ্যে ছিল না... কিন্তু সেদিন ভয় কি, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করলাম যেন... থরথর করে আমার সারা শরীরটা কাঁপছিল... একি দেখছি আমি?... না, না... দেখছি না, দেখছি না... আমি কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না... সব একেবারে ট্রান্সপারেন্ট... স্বচ্ছ... যত দেখছিলাম, তত যেন আরো ভয় চেপে ধরছিল আমাকে... এ আমার কি হলো? অনেক ইতস্তত করে ধীরে ধীরে মুখ নামিয়ে নিজের শরীরটার দিকে তাকালাম আমি... আঁৎকে উঠলাম... আমি নেই!... আমি আছি অথচ আমি নেই... সেদিন যে আমার কি অবস্থা হয়েছিল আজ মুখের কথায় সবটা হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না আমি... তখন নিজেকে সত্যিই মৃত মনে হচ্ছিল আমার... মনে হচ্ছিল যে তবে কি মৃত্যুর পর মানুষের এই অবস্থাই হয়? কিন্তু পরক্ষনেই ভেবেছি, তাই বা কি করে হবে? মরেই যদি যাই, তাহলে আমি লোকগুলোকে ছুঁলাম কি করে?... হ্যা, তাই তো... তাড়াতাড়ি নিজেরই একটা হাত আর একটা হাত দিয়ে চেপে ধরলাম... এই তো... ধরতে পারছি তো আমার হাতটাকে... দুহাত বোলাতে লাগলাম নিজের শরীরের ওপরে... ঠিক যেমন ছিল তেমনই রয়েছে... মুখ, গাল, চোখ, গলা, বুক, কোমর, পা... হাতের মধ্যে স্পর্শ পাচ্ছি ছেঁড়া ছেঁড়া জামা কাপড়গুলোও... সব... সব... তাহলে কেন আমি নিজেকে দেখতে পাচ্ছি না!... শুধু কি আমিই আমাকে দেখতে পাচ্ছি না? নাকি কেউই দেখতে পাচ্ছে না আমায়? ভয়ে গলা শুকিয়ে উঠল আমার... এক পা দু পা করে পিছিয়ে এলাম আমি ভীড়টার থেকে... যেন ওখানে থাকলে সবাই দেখে ফেলবে আমায়... হাসবে আমার দিকে তাকিয়ে... কিম্বা ভয় পাবে হয়তো আমার একটা বিভৎস মুর্তি দেখে... জামা কাপড় পরা অথচ কায়াহীন মানুষটাকে দেখে... জানি না... ভাবতেও পারছিলাম না কি করবো আমি তখন... হটাৎ মাথায় খেলে গেলো কথাটা... তাড়াতাড়ি করে ফের ঢাল বেয়ে নেমে যেতে লাগলাম ওই খালটার দিকে... নামতে গিয়ে পা হড়কে গেলো আমার... হুমড়ি খেয়ে পড়লাম বৃষ্টি ভেজা কাদা মাটির ওপরে... প্রায় গড়িয়ে, হিঁচড়ে নেমে গেলাম ওপর থেকে একেবারে নীচের দিকে... খালে ধারে গিয়ে... হয়তো ছড়ে কেটে গেলো কত জায়গায়তেই আমার... কিন্তু সেই দিকে তখন কোন হুস নেই... যা খুশি হয় হয়ে যাক... হামা দিয়ে এগিয়ে গেলাম জলটা লক্ষ্য করে... হুমড়ি খেয়ে পড়লাম জলের ঠিক ওপরটায়... নিজেকে দেখবো বলে... কিন্তু না... আমি নেই... জলের ওপরে আমার কোন ছায়া নেই... জলের ওপরে তখন মেঘলা আকাশের প্রতিচ্ছবি... কিন্তু আমার কোন প্রতিচ্ছবির চিহ্ন পর্যন্ত নেই সেই নোংরা খালের জলটার ওপরে... ওই জলের মধ্যেই চিৎ হয়ে শুয়ে রইলাম আমি... নির্নিমেশ তাকিয়ে রইলাম খোলা মেঘলা আকাশটার দিকে... মাথার মধ্যে তখন আর কিচ্ছু নেই... সব শূণ্য... খালি... আমার শরীরের সমস্ত অনুভূতিগুলো যেন লোপ পেয়ে গিয়েছে... মনে হচ্ছিল চতুর্দিকে শুধু মাত্র শশানের নিরাবতা... রাস্তার ধারে আমার গাড়ীটা ঘিরে ধরে এত হইচই... তখন কিছুই আর আমার কানে এসে পৌছাচ্ছে না... খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তখন শুধু একজনকেই মনে পড়ছিল বার বার... লিন্ডা... শুধু লিন্ডার মুখটা ভেসে উঠছিল আমার চোখের সামনে।

লিন্ডার কথা মনে আসতেই যেন সমস্ত আড়গল ভেঙে গেলো... উঠে বসে মুখ ঢেকে হাউহাউ করে কাঁদতে লাগলাম আমি... বারে বারে ভগবানের কাছে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম, কেন ভগবান, কেন? কেন তুমি আমার থেকে লিন্ডাকে কেড়ে নিলে... তা না হলে তো আজ আমাকে এই ইন্ডিয়াতে ফিরেও আসতে হতো না, আর এই দুর্বিশহ অবস্থার মধ্যেও পড়তে হতো না... ইচ্ছা করছিল চিৎকার করে লিন্ডার নাম ধরে ডাকি... কিন্তু সেখানেও তো ভয়... ওরা... ওই ওরা, যারা আমার গাড়ি ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তারা যদি শুনতে পায়... শুনতে পাবে অথচ দেখতে পাবে না... ছেঁড়া জামা কাপড় পরা শরীরহীন লোকটাকে দেখে... হয়তো ডাইন ভেবে ঢিল ছুড়লো... আমার সেই মুহুর্তের যা অবস্থা, তাতে তাড়াতাড়ি পালাতেও তো পারবো না... নীরবে, নিঃশব্দে কেঁদেছিলাম আমি ওই খালের ধারে বসে, এক নাগাড়ে... সকলের দৃষ্টির আড়ালে...’ বলতে বলতে থামে অর্নব... প্রায় হাঁফাতে থাকে সে যেন সেদিনের সেই বিভৎস কথার পুণরাবৃত্তি করতে করতে।

পৃথা মুখে কিছু না বলে নিরবে অর্নবের বুকের মধ্যে থেকে বেরিয়ে উঠে বসে, তারপর ধীরে বিছানার থেকে নেমে গিয়ে টেবিলের ওপরে রাখা জলের বোতলটা তুলে নিয়ে ফিরে আসে বিছানায়... এগিয়ে দেয় অর্নবের পানে... অর্নব উঠে বসে পৃথার হাত থেকে বোতলটা নিয়ে ঢকঢক করে প্রায় পুরো বোতলের জলটাই খেয়ে শেষ করে দেয়... তারপর পৃথার হাতে বোতলটা ফিরিয়ে দিতে দিতে বলে... ‘থ্যাঙ্কস্‌...’

খালি বোতলটা ফের টেবিলের ওপরে রেখে বিছানায় ফিরে উঠে বসে পৃথা... আন্দাজে হাত বাড়ায় সামনের পানে... হাত রাখে অর্নবের বুকের ওপরে... তারপর ওর শরীরটা ছুঁয়ে থেকে আরো ঘন হয়ে এসে বসে সে... ‘তারপর?’ ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞাসা করে... আজ চায় ও অর্নব সব বলুক, বলে হাল্কা হোক... কারণ সে বুঝতে পারে একটা ভারী পাথর অর্নবের বুকের মধ্যে চেপে বসে রয়েছে, সেটা তাকে না বলা অবধি হাল্কা হতে পারবে না...

খানিক চুপ করে থাকে অর্নব... তারপর ধীর গলায় বলতে শুরু করে... ‘কতক্ষন ওই ভাবে ওই খানে শুয়ে ছিলাম জানি না... কখন দিনের আলো ঢলে গিয়ে রাত নেবে এসেছিলো, তারও খেয়াল করি নি... একটু একটু করে নিজের মধ্যে ফিরে এলাম আমি... উঠে বসলাম মাটির ওপরে... কেউ কোথাও নেই... ফাঁকা প্রান্তরের মধ্যে আমি একা... ছায়াহীন কায়াহীন এক অদ্ভুত জীব... দ্য ইনভিজিবিল ম্যান... সিনেমায় সে চরিত্র কত মজাদার... কত রোমান্টিক... কত সুবিধার হয় তো... কিন্তু বাস্তবের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সে অভিজ্ঞতা যে কি ভয়ঙ্কর... ভাষায় প্রকাশ করা যায় না... আরো খানিক চুপ করেই বসে রইলাম ওখানটায়... ভাবতে লাগলাম, কি করব এবার আমি... গাড়ির মধ্যেই আমার পার্স আর মোবাইলটা ফেলে এসেছিলাম, তাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সমস্ত দিক দিয়ে... সাথে এক কানাকড়িও নেই... কপর্দক শূণ্য যাকে বলে... 

কি মনে হতে গায়ে পরা জামা কাপড় গুলো খুলে ছেড়ে রাখলাম... তারপর ফের নিজের দিকে ঝুঁকে দেখার চেষ্টা করলাম নিজেকে... নাহ!... কিচ্ছু নেই... সম্পূর্ণ অদৃশ্য একটা মানুষ... চুপ করে বসে ভাবতে লাগলাম, কি করবো এবার...

হটাৎ দেখি একটা নেড়ি কুকুর আমার দিকে এগিয়ে আসছে... প্রথমটায় ও আমাকে খেয়াল করে নি বোধহয়... কিন্তু একটু কাছাকাছি আসতেই থমকে দাঁড়ায়... নাঁক তুলে ঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করে খানিক... আর তারপরই শুরু করে দেয় চিলচিৎকার... এক নাগাড়ে ঘেউ ঘেউ করে চেঁচাতে থাকে আমাকে লক্ষ্য করে... দূর থেকেই... আমি প্রমাদ গুনলাম... এই ভাবে যদি কুকুরটা চিৎকার করতে থাকে তাহলে বিপদে পড়বো আমি... মাটির থেকে একটা ঢেলা তুলে ছুঁড়ে মারলাম ওর দিকে... একেবারে অব্যর্থ টিপ... গিয়ে লাগলো সজোরে কুকুরটার পায়ে... কেঁউ কেঁউ করে দৌড়ে পালিয়ে গেল ওটা... আমিও আর না বসে থেকে উঠে দাঁড়ালাম... হাঁটা দিলাম কলকাতার দিকে... শুধু যাবার সময় একবার করুন চোখে আমার পরে থাকা পোড়া গাড়িটার দিকে নজর দিলাম।’

পুরানো কথা বলতে বলতে চুপ করে অর্নব, পৃথা তাকে না দেখতে পেলেও উপলব্ধি করে এই মুহুর্তে সেই ভয়ানক স্মৃতিগুলো মনে পড়তে ভিষন ভাবে অস্বস্থির মধ্যে রয়েছে অর্নব... হাত তুলে রাখে তার বুকের ওপরে... মৃদু স্বরে বলে, ‘থাক সোনা... আর বলতে হবে না... আমি বুঝেছি... আর আমার কোন জিজ্ঞাস্য নেই...’

‘না তিতির... আমাকে শেষ করতে দাও... অনেক দিন পর আমার বুকের ভেতরে জমে থাকা না বলতে পারা কথাগুলো বলে আমাকে একটু হাল্কা হতে দাও... ভিষন ভাবে দরকার সেটার...’ উত্তর দেয় অর্নব।

আর বাধা দেয় না পৃথা... অর্নবের কাছে আরো ঘন হয়ে সরে বসে... মাথাটাকে হেলাতে গিয়ে অনুভব করে তার চওড়া বুকের পেশিটাকে... অক্লেশে নিজের মাথা হেলিয়ে রেখে বলে, ‘বেশ... তুমি বলো, আমি শুনবো... তোমার সব কথা শুনবো আমি... তুমি বলো...’

‘ঠিক কোন জায়গায় ঘটনাটা ঘটেছিল বলতে পারবো না, কিন্তু সেখান থেকে সম্পূর্ণটা পায়ে হেঁটে যখন কলকাতায় পৌছলাম, তখন পরের দিন দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে... খিদে, তেষ্টায় ক্লান্ত আমি... একটা কাউকে ফোন করবো, তারও কোন উপায় নেই... সত্যি বলতে আরামে বড় হয়েছি, তাই ওই ভাবে না খেয়ে দেয়ে, এক নাগাড়ে হেঁটে ক্লান্ত বিদ্ধস্থ সম্পূর্ণ ভাবে... কোন রকমে প্রণবের বাড়ি পৌছে দরজায় বেল টিপলাম... আর বেল টিপে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না, ওর দোরগোড়াতেই বসে পড়লাম হতদ্যম হয়ে... যখন দেখলাম দরজা খুলে প্রণব আমাকে না দেখতে পেয়ে ফের দরজা বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে, ওর নাম ধরে বাধ্য হয়ে ডেকে উঠলাম।

প্রথমটায় ও বিশ্বাসই করতে চাইছিল না... অনেক কষ্টে ওকে সমস্ত ঘটনাটা বুঝিয়ে বললাম... ও আমাকে তাড়াতাড়ি ধরে নিয়ে গেল ওর ফ্ল্যাটের ভেতরে... ওর আর ওর স্ত্রীর একান্ত শুশ্রষায় একটু একটু করে আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠলাম... তাও প্রায় ছিলাম ওদের বাড়ি অনেকদিন... শেষে যখন মোটামুটি বেশ ভালো হয়ে উঠেছি, তখন ওকে বলেই আমি আবার ফিরে এলাম আমার এই ফ্ল্যাটে... সেদিন থেকেই আমি এই ভাবেই ভূতের মত রয়েছি... একা... কায়াহীন...

প্রণবকে আমিই বলেছিলাম যে সবাইকে বলতে যে আমি নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছি... আসলে আমি চাইনি কারুর সামনে এসে দাঁড়াতে... এই ভাবেই সবার আড়ালে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।’ চুপ করে অর্নব... বড় বড় নিঃশ্বাস পড়ে তার... পৃথার ছুয়ে থাকা গালটা ওঠা পরা করে শ্বাস নেবার তালে তাল মিলিয়ে।

‘তাহলে ফ্ল্যাট রেন্টএ কেন দিতে চাইলে তুমি?’ মৃদু স্বরে প্রশ্ন করে পৃথা... মুখটাকে অর্নবের বুকের মধ্যে রেখে।

হাত তুলে পৃথার মাথার ওপরে রাখে অর্নব, ‘ভালো প্রশ্ন করেছ... তা না হলে তোমায় কি করে পেতাম সোনা?’

‘কিন্তু সে তো পরে, আমি তো এসেছি অনেক পরে, তার আগেও তো শুনেছি আরো খান দুয়েক ফ্যামেলি এসেছিল এখানে থাকতে... কিন্তু থাকতে পারে নি... কেন?’ বুকের লোম গুলো আঙুলে পাকাতে পাকাতে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘হুম... আসলে কি জানো... একা থাকতে থাকতে না কেমন হয়ে পড়েছিলাম আমি... যদিও প্রণব, বৌদি, ওরা প্রায় আসতো আমার কাছে, প্রণব তো প্রতিদিন এসে আমায় খাবার দিয়ে যেতো... কিন্তু তাও... কতক্ষন একটা মানুষ চার দেওয়ালের মধ্যে নির্বান্ধ পড়ে থাকতে পারে? তুমিই বলো... তাই প্রণবের সাথে পরামর্শ করেই ঠিক করেছিলাম ফ্ল্যাটটা রেন্টএ দেবো... আমি না হয় রাতের দিকে কোন রকমে সোফার ওপরে ঘুমিয়ে থাকবো... কেউ তো আর দেখতে পাবে না আমায়... আর সকাল বেলা ঠিক ম্যানেজ করে নেবো... সিগারেট খাই না, মদও কতদিন খাই নি তার ঠিক নেই... তার ইচ্ছাও চলে গিয়েছে...’ বলে অর্নব।

‘তারপর...’ গুনগুনায় পৃথা।

‘তারপর আর কি... এলো একটা ফ্যামিলি... আগে থেকেই আমাদের ঠিক করা ছিল এমন কাউকে দেবো ভাড়া যারা সারাদিন ফ্ল্যাটে থাকবে না... তাতে আমিও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবো। সেই মতই একটা ফ্যামিলি এল... স্বামী আর স্ত্রী... দিন দুয়েক ছিল বেশ... তারপর দেখি, ও বাবা, ওরা আসলে স্বামী স্ত্রীই নয়... এখানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছে মেয়েছেলের কারবার ফাঁদার জন্য... বাইরে থেকে মেয়েরা আসতো, আসতো আরো খদ্দের, আর তাদের চলতো লীলাখেলা, এই ঘরের মধ্যে...’ বলতে থাকে অর্নব।

‘আর তুমি ওদের ওই সব দেখতে?’ ঝট করে অর্নবের বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে তাকায় পৃথা... সরু হয়ে ওঠে চোখ...

‘ওই দেখ... মেয়ের কি হিংসা... তা আমার সামনে যদি কেউ ওই সব করে তা দেখবো না?’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব।

‘না... দেখবে না...’ চোয়াল শক্ত করে বলে ওঠে পৃথা, তারপরই হাত দিয়ে দুমদুম করে অর্নবের বুকের ওপরে কিল মারতে থাকে... ‘কেন? কেন দেখছে ওদের ওই সব করতে... ইশ... এমনি বলেছি একটা অসভ্য লোক... ছি ছি... কত মেয়েকে ন্যাংটো দেখেছে... একদম কথা বলবে না আমার সাথে...’ বলে উঠে নেবে যেতে যায় বিছানা ছেড়ে...

অর্নব তাড়াতাড়ি খপ করে পৃথার হাত ধরে নিজের দিকে টেনে নেয়... ‘দূর পাগলী... দেখেছি সেটাও যেমন সত্যি, তেমনি ওদের তো তাড়িয়েও দিয়েছি... তার বেলায়?’

‘সত্যিই তুমি তাড়িয়ে দিয়েছিলে?’ একটু শান্ত হয় পৃথার অভিমান।

‘হ্যা তো... এমন ভূতের ভয় দেখিয়েছি যে বাপ বলে দুই দিনেই পালিয়ে গিয়েছে ফ্ল্যাট ছেড়ে...’ হা হা করে হাসতে হাসতে বলে অর্নব।

পরম ভালোবাসায় দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবকে পৃথা... ‘আমার সোনাটা তো... তাই...’ চুমু খায় দাড়ি ভরা গালের ওপরে... পরক্ষনেই কি মনে হতে ফের প্রশ্ন করে, ‘তুমি ওই সব মেয়েদের একেবারে ন্যাংটো দেখেছো?’

‘রাগ করবে না?’ ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘করবই তো! তাও বলো... বলো না... তুমি ওদের সবাইকে একেবারে ন্যাংটো দেখেছো?’ আদুরে সুর মেখে যায় পৃথার গলার স্বরে।

‘হুম... দেখেছি... সব দেখেছি ওদের...’ উত্তর আসে অর্নবের।

‘ওরা আমার থেকেও ভালো ছিল?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা... ‘আমার যা আছে, তার থেকেও ওদেরটা ভালো ছিল?’

পৃথাকে নিজের বুকের মধ্যে টেনে নেয় অর্নব, নীচু হয়ে ওর গালের ওপরে চুমু খেয়ে বলে, ‘ইশ... আমার তিতির সব থেকে সুন্দরী... সব থেকে মিষ্টি... আমার তিতিরের যা আছে, তা কারুর নেই... কারুর না...’

‘সত্যিই?’ প্রশ্ন করে পৃথা... গলার স্বরে ভালোবাসা ঝরে পড়ে...

‘হুম... একেবারে সত্যি...’ পৃথার কপালে চুমু খেয়ে বলে অর্নব...

‘আই লাভ ইয়ু সোনা... লাভ ইয়ু...’ হাঁটুতে ভর রেখে উঠে বসে দুহাত দিয়ে অর্নবের গলাটাকে জড়িয়ে ধরে বলে পৃথা... অর্নবের ঘাড়ের ওপরে ঠোট রাখে গুঁজে... নিজের নরম বুকটাকে ঠেলে চেপে ধরে অর্নবের ছাতির ওপরে... একেবারে পিশে দেয় নিজের বুকটাকে সেখানে... ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে, ‘আমায় প্রথম যখন দেখলে... ভালো লেগেছিল?’

‘তোমায় দেখে মহিত হয়ে গিয়েছিলাম... একটা মেয়ে এত সুন্দর, এত নিষ্পাপ, এত প্রাণবন্ত হতে পারে, জানতাম না... লিন্ডাও তোমার মত এত প্রাণবন্ত কিন্তু ছিল না...’ বলে অর্নব, হাত রাখে পৃথার পীঠের ওপরে।

‘সত্যিই বলছো... আমাকে দেখেই তোমার ভালো লেগেছিলো?’ ফের যেন নিজেকেই সংশা দেবার প্রয়াশ করে পৃথা।

‘হ্যা সোনা... প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম তোমায়... তাই তো সব সময় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম তোমাকে...’ আরো ঘন করে নিজের বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে বলে অর্নব।

হটাৎ করে ভিষন লজ্জা করতে থাকে পৃথার... মুখটাকে আরো ভালো করে অর্নবের ঘাড়ের মধ্যে গুঁজে দিয়ে বলে, ‘ইশশশশ... আমাকেও তো ন্যাংটো দেখেছো!’

‘শুধু কি তাই? নিজে নিজে কত দুষ্টুমী করতে সেটাও তো দেখতাম...’ হাসে অর্নব।

‘ইশশশশ মা... তুমি আমাকে মাস্টার্বেট করতেও দেখতে? ইশশশশ... তুমি একটা ভিষন বাজে লোক...’ গাঢ় গলায় বলে পৃথা... বলে, কিন্তু ওর ভেতরটা যেন ভালোবাসায় ভরে উঠতে থাকে... ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞাসা করে, ‘দেখে তোমার ইচ্ছা করতো না আমায় আদর করার?’

‘করতো তো... ভিষন করতো...’ উত্তর দেয় অর্নব।

‘করো নি কেন? কেন আসো নি আরো আগে আমার কাছে... আদরে আদরে ভাসিয়ে দাও নি কেন আমায়?’ মুখ ঘসে পৃথা অর্নবের ঘাড়ে... দুহাত দিয়ে খামচে ধরে অর্নবের পীঠটাকে...

‘তুমি ভয় পেতে, তখন কাছে এলে, তাই তো দূর থেকেই তোমায় দেখতাম... আর...’ বলতে গিয়ে থমকায় অর্নব...

‘আর?’ জিজ্ঞাসা করে পৃথা... ‘আর কি?’

‘আর কিছু না...’ তাড়াতাড়ি উত্তর দেয় অর্নব।

‘আমি জানি...’ ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা...

‘জানো? কি জানো?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করে অর্নব।

‘আমাকে মাস্টার্বেট করতে দেখে তুমিও নিজেকে ঠিক রাখতে পারতে না... তুমিও মাস্টার্বেট করতে... ঠিক কি না? বলো?’ পৃথার দুটো চোখ চকচক করে ওঠে দুষ্টুমীতে।

‘ক...কে বললো সেটা?’ এবার অপ্রস্তুত হবার পালা অর্নবের।

‘আমি জানি মশাই... তোমার সামনে একটা মেয়ে মাস্টার্বেট করবে, আর তুমি কি সাধু পুরুষ? দেখেও চুপ করে তাকিয়ে থাকবে? হুম? আমি সব বুঝি... বুঝেছ?’ পৃথার ঠোঁটে দুষ্টুমীর হাসি মেখে থাকে।

‘পাজি মেয়ে... সব বোঝে...’ হাসতে হাসতে পৃথার পীঠের ওপর থেকে হাতটা নামিয়ে ওর নরম পাছার দাবনাদুটোকে দুই হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে চটকে দেয় একবার... পরক্ষনেই হাতটাকে সরিয়ে নেয় সেখান থেকে...

‘উমমম... টেপো না... চটকাও না ওখানটায়...’ অর্নবের ঘাড়ের মধ্যে গুনগুনিয়ে ওঠে পৃথা।

‘কথায় কথায় অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে... সে খেয়াল আছে... এখন এই সব করলে হবে? এক্ষুনি হয়তো কাজল এসে যাবে... নাও, চলো ওঠো...’ বলে তাড়া দেয় অর্নব।

‘না... আগে ওখানটায় টেপো... চটকে দাও ভালো করে একবার, তারপর ছাড়বো তোমায়...’ নিজেকে অর্নবের কাছে আরো ঘন করে এগিয়ে ধরে বলে পৃথা।

‘কিন্তু...’ ফের ইতস্থত করে অর্নব...

ধৈর্য হারায় পৃথা... ঝট করে অর্নবের গলা ছেড়ে পেছনে নিয়ে গিয়ে অর্নবের হাতদুটোকে ধরে, তারপর নিজের গোল গোল পাছার দাবনার ওপরে চেপে ধরে বলে, ‘এই নাও... তোমার হাতের মধ্যে তুলে দিলাম... এবার টিপে টিপে চটকাও এই দুটোকে... আরো নরম করে দাও চটকে...’

হাতের মধ্যে ধরা নরম তাল দুটোর স্পর্শে নিজের পৌরষে কাঁপন ধরে অর্নবের... আলতো করে চাপ দেয় পাছার নরম দাবনায়... ফের হাত তুলে অর্নবকে শক্ত করে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে পৃথা, ‘এত আলতো করে নয়... আরো জোরে... চেপে ধরো...’

এবার আর বলতে হয় না অর্নবকে... হাতের মধ্যে তুলে দেওয়া পৃথার ওই নরম নিতম্বের তালদুটোকে শক্ত করে খামচে ধরে... চটকে ধরে দুই হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে... আর সেই সাথে খুজে নেয় পৃথার ঠোটটাকে... নিজের ঠোট চেপে ধরে সেখানে... চুষতে থাকে পৃথার পাতলা ঠোঁটের ওপরেরটাকে নিজের মুখের মধ্যে নিয়ে... ‘উমমমম...মমমম...’ অর্নবের মুখের মধ্যে গুনগুনায় পৃথা পরম আবেশে... সে জানে, আজ আর কিছুই হবে না শরীর খারাপের কারনে, তবুও... যতটা আদর পাওয়া যায়, সেটাই নিংড়ে বের করে নিতে চায় অর্নবের থেকে... ভরে নিতে চায় তার শরীরের মধ্যে...

ক্রমশ...
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#89
(04-01-2019, 04:53 PM)bourses Wrote: ইরো গল্পের কপি রাইট হয় কি না জানি না... সম্ভবতঃ হয় না... তবুও আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো... এটাই আমাদের মত অ্যামেচার লেখকদের একান্ত পাওনা বলা যেতে পারে... অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে... 

Please refer http://copyright.gov.in

তবে হ্যাঁ, আপনার লেখা গল্পে বেশ কিছু explicit content আছে । এই রকম গল্প আমিও লিখি। 

আমিও খোঁজ নেব নেব ভেবে আর সময় করে উঠতে পারেনি। কিছূ জানতে পারলে অপনাকে  contact করে email করে দেব।
Like Reply
#90
(04-01-2019, 11:46 PM)naag.champa Wrote: Please refer http://copyright.gov.in

তবে হ্যাঁ, আপনার লেখা গল্পে বেশ কিছু explicit content আছে । এই রকম গল্প আমিও লিখি। 

আমিও খোঁজ নেব নেব ভেবে আর সময় করে উঠতে পারেনি। কিছূ জানতে পারলে অপনাকে  contact করে email করে দেব।

Thanks a lot for your support. .. Plz let us read your stories too...
Like Reply
#91
খুব ভালো এগোচ্ছে। পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায় রইলাম
Like Reply
#92
(04-01-2019, 04:56 PM)bourses Wrote: ৩০।।
... একি! আমার হাত কই... আমি তো সামনের লোকটাকে পুরোটাই দেখতে পাচ্ছি... তার দেহের কোন অংশই তো আমার হাতের আড়ালে চলে যায় নি! তবে!... তাড়াতাড়ি লোকটার কাঁধ থেকে হাতটাকে তুলে নিজের সামনে মেলে ধরলাম... না! নেই তো! কিচ্ছু নেই! সব ফাঁকা! সব... সব ফাঁকা... একেবারে স্বচ্ছ... হাতটার মধ্যে দিয়ে আরপার সব কিছু দেখা যাচ্ছে... কেমন শিউরে উঠলাম একটা অচেনা ভয়ে... ভয় জিনিসটা কোনদিনই আমার মধ্যে ছিল না... কিন্তু সেদিন ভয় কি, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করলাম যেন... থরথর করে আমার সারা শরীরটা কাঁপছিল... একি দেখছি আমি?... না, না... দেখছি না, দেখছি না... আমি কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না... সব একেবারে ট্রান্সপারেন্ট... স্বচ্ছ... যত দেখছিলাম, তত যেন আরো ভয় চেপে ধরছিল আমাকে... এ আমার কি হলো? অনেক ইতস্তত করে ধীরে ধীরে মুখ নামিয়ে নিজের শরীরটার দিকে তাকালাম আমি... আঁৎকে উঠলাম... আমি নেই!... আমি আছি অথচ আমি নেই...

আপডেটের এই অংশটা পড়বে সত্যি কথা বলতে গেলে আমিও একবারে আঁতকে উঠেছিলাম... এতক্ষণ ধরে আমি ভাবছিলাম যে অর্ণব একটা ভূত কিন্তু গল্পের এই অংশটা পড়ে সত্যি কথা বলতে গেলে আমি আপনার একেবারে বিগ ফ্যান হয়ে গেছি... চালিয়ে যান...  আমি সঙ্গে আছি... Heart Heart Heart Heart

Hats off!
Like Reply
#93
(05-01-2019, 11:57 AM)bourses Wrote: Thanks a lot for your support. .. Plz let us read your stories too...

উপস্থিত আমি হিন্দি ফ্রম একটা গল্প লিখেছি সময় হলে নিশ্চয়ই করে পড়ে দেখবেন আর নিজের মূল্যবান মন্তব্য দেবেন Heart
https://xossipy.com/thread-1200.html
Like Reply
#94
dada apni kotahy gelen
Like Reply
#95
(06-01-2019, 10:50 PM)ronylol Wrote: dada apni kotahy gelen

তোমাদের ছেড়ে আর কোথায় যাবো ভাই...
Like Reply
#96
৩১।।


‘অফিসে গিয়ে সুশান্তের কি ভাবে মুখোমুখি যে হবো... কি বিচ্ছিরি একটা কান্ড ঘটে গেলো কাল।। কিন্তু আমার কি দোষ... সে যদি নিজের থেকেই মন গড়া কিছু স্বপ্ন দেখে থাকে... আমি কি করতে পারি... ভাজ্ঞিস অর্নব ছিল... তা নয় তো অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো... যাকে সে এতটা বিশ্বাস করেছিল... বন্ধু ভেবেছিল... তার থেকে এই ব্যবহার পাবে... আশা করেনি কখনো... তবে... তবে সম্পূর্ন দোষ কি সুশান্তকে দেওয়া যায়? না বোধহয়... ঠিক যায় না... এখনও আমাদের সমাজ সেই জায়গায় পৌছাতে পারেনি... পারে নি একটা মেয়ের সহজ আচরণকে সহজ ভাবে মেনে নিতে পারাকে... এটা অবস্য আমাদের এই আর্থসামাজিক ব্যবস্থাই দায়ী... দায়ী এখন আমাদের সমাজে ছেলেদের কলেজ আর মেয়েদের কলেজ আলাদা থাকার ফলে... আমি নিজে কনভেন্টে পড়েছি, তাই আমার ওপজিট জেন্ডারের সাথে মিশতে কোনো অসুবিধা হয় না, সহজ ভাবেই মানিয়ে নিতে পারি... কিন্তু, হয়তো সুশান্ত সেই সুযোগ পায় নি, তাই আমার সাবলীলতাকে, সহমর্মীকতাটাকে অন্য মানে করে বসেছিল... দুম করে শুধু শুধু অপরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটা উচিত নয়... দেখি... অফিসে গিয়ে সুশান্তর সাথে খোলাখুলিই কথা বলবো... কে জানে আবার, আমার সাথে কথা আদৌ বলবে কি না... অর্নব যে রকম ধরে পিটিয়েছে... ইশ... তখন আমি খেয়াল করি নি... কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বেশ ভালোই মেরেছে... জানি তো... আমার সোনাটা... ওর তিতিরের গায়ে কেউ হাত তুললে কি করবে... ইশ... বাপীকে কবে যে জানাতে পারবো অর্নবের কথা... মনে হচ্ছে এক্ষুনি ছুটে গিয়ে জানিয়ে দিই আমার সোনাটার কথাটা... আচ্ছা... বাপী শুনলে কি বলবে? মা তো জানি শুনেই ভিমরী খাবে... ইশ... মায়ের মুখটা কেমন হবে শুনে ভাবলেই হাসি পাচ্ছে... হয়তো শুনে বিছানা নেবে মা... নাঃ... আমি কিছু বলবো না বাবা মাকে... ও সব বাপীর ওপরেই ছেড়ে দেবো... আমার বাপী ঠিক করে দেবে সব কিছু... মাই কিং...’ গাড়ির জানলার বাইরে মুখ রেখে চুপ করে ভাবতে ভাবতে চলে পৃথা।

গাড়িটা হটাৎই ব্যবস্থা হয়েছে... বরং আরো ভালো করে বলা ভালো এটা অর্নবের হুকুম, পৃথাকে আর এই ভাবে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলা ফেরা নাকি করা চলবে না। ঘটনাটা ঘটেছিল সকালেই। অর্নবের কাছে আদর খাচ্ছিল পৃথা তাদের কথার শেষে... অবস্য অর্নব যে খুব একটা অ্যাকটিভ ছিল তা নয়, বরং নিজের পিরিয়েড হওয়া সত্বেও, ইন্টারেস্টটা ছিল পৃথারই বেশি... ইন্টারকোর্স করা যাবে না জেনেও এতটুকুও ছাড়তে চায়নি অর্নবকে নিজের শরীরের থেকে দূরে... যতটা আদর খাওয়া সম্ভব সেটা আদায় করে নিচ্ছিল ভোরের আলো গায়ে মেখে... কিন্তু বাধ সাধে কাজলের আবির্ভাবে... প্রায় বাধ্য হয়েই অর্নবকে ছেড়ে দরজা খুলতে উঠে যায় বেজার মুখে... যেতে যেতে কানে আসে অর্নবের খুকখুক হাসি... তাতে আরো মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল যেন তার... দরজাটা খুলেই কড়া চোখে তাকিয়েছিল কাজলের দিকে...

‘আজ একটু সকাল সকাল এলুম... বুজলে...’ ঘরে ঢুকেই বলে কাজল।

আরো যেন খিঁচড়ে যায় মেজাজটা কাজলের কথায়... তার থেকে বাবা কেউ ছিল না, সেটাই ভালো ছিল, প্রণবদা ঘাড়ের ওপরে একটা জ্বালা গছিয়ে দিলো আমার, মনে মনে গজগজ করে পৃথা... ‘তা হটাৎ করে তাড়াতাড়ি আসতে কে বলেছিল? আমি?’ কোমরে হাত রেখে প্রশ্ন করে পৃথা... শেষ না হওয়া আদরটা যেন তখন তাকে শান্তি দিচ্ছে না...

‘ও মা... তুমি রাগ কচ্চো... আমি তো ভাবলুম তুমি খুশি হবে... যা বাওয়া...’ পৃথার মেজাজ দেখে অবাক হয় কাজল।

সাথে সাথে নিজেকে সংযত করে পৃথা... ছি ছি... এই ভাবে সে কাজলের ওপর রাগ দেখাচ্ছে কেন? সত্যিই তো, ওর কি দোষ... বরং ওর জন্যই তো বেচারী তাড়াতাড়ি এসেছে... ও জানবে কি করে একটা বদমাইশ লোক তাকে আদর করছিল?... মনে মনে ভাবে সে... ‘না, না, রাগ কোথায় করলাম, এসে তো ভালই করেছিস... আমাকেও তো আজ অফিস যেতে হবে... কাল যায় নি... কত কাজ পড়ে আছে...’ বলে পৃথা কাজলকে।

‘তোমার না কাল জ্বর হয়েচিলো? আজ আপিস যাবে, মানে?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে কাজল পৃথাকে... ভাব দেখে পৃথার মনে হয় বাড়ির কত্রী ও নয়, কাজলই।

‘আমার কি মুখ দেখে অফিস পয়সা দেয়? জ্বর হয়েছে বলে বাড়ি বসে থাকলে চলবে? হু?’ বাথরুমের দিকে ফিরে যেতে যেতে উত্তর দেয় পৃথা।

‘অ... বাব্বা... সত্যিই বাবা... মেয়েটার সলিল খারাপ, তাও আপিস যেতে হবে... এই আপিসের লোকগুলোর না একটুও মন নেই, জানো... এত খাটায় কেউ...’ বলতে বলতে খেয়াল করে যাকে উদ্দেশ্য করে সে বলে চলেছে, সেই দিদিমনি বাথরুমের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে, তার কথা আদৌ শুনেছি কি শোনে নি বুঝতে পারে না সে... তাই আর অপেক্ষা না করে কিচেনে ঢুকে কাজে লেগে পড়ে।

অর্নবও বারন করেছিল তাকে আজ অফিস যেতে, বুঝিয়েছিল আজকের দিনটা বাদ দিতে, কিন্তু ওই বা কি করে, ওর’ও কি ইচ্ছা করছিলো নাকি অর্নবকে ছেড়ে অফিসের কচকচানির মধ্যে ঢুকতে, কিন্তু ও জানে, যতই সে ন্যাশানালাইজড ব্যাঙ্কএ চাকরী করুক না কেন, লোকে হয়তো ভাবে যে সরকারী ব্যাঙ্ক মানেই সেখানে লোকে শুধু শুধু সময় কাটায় আর মাসের শেষে টাকা গুনে বাড়ি নিয়ে আসে, কিন্তু বাস্তবে যে কি ভিষন চাপের মধ্যে থাকতে হয় তা পৃথা চাকরী জয়েন করার পর হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে... সকাল থেকে সন্ধ্যে অবধি হাঁফ ফেলার ফুরসৎ থাকে না এক একদিন... কতদিন হয়েছে, কাস্টমারের চাপে লাঞ্চ পর্যন্ত স্কিপ করতে হয়েছে নির্দিধায়... ম্যানেজারের ঘরের সিসি টিভি ক্যামেরার চোখ সারাক্ষন তাদের ওপরে তাকিয়ে রয়েছে... এতটুকু গল্প করা দূর অস্ত, নিজের মোবাইলের মেসেজ চেক করবে, তারও সুযোগ হয়নি কতদিন... তাই অনেক কষ্টে অর্নবকে বুঝিয়েছে সে... শেষে তাকে দিয়ে বলিয়ে নিয়েছে অর্নব যে প্রতি দু-ঘন্টা অন্তর সে ফোন করে জানাবে যে কেমন আছে... অর্নবের ছেলেমানুষি দেখে মনে মনে হেসেছে... নাঃ... শুধু হাসেই নি সে... খুশিতে মনটা ভরে গিয়েছিল... মা এই রকম ছেলেমানুষি করে, তার প্রতিটা খেয়াল রাখে, সেটা যেন খুবই স্বাভাবিক... সেখানে কোন অস্বাভাবিকত্ব নেই, কিন্তু এই অজানা, অচেনা শহরে তাকে এই ভাবে যত্নে ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখার লোক রয়েছে, সেটা ভাবতেই যেন প্রজাপতির মত হাওয়ায় ডানা মেলতে ইচ্ছা করে... ভেসে বেড়াতে ইচ্ছা করে ছোট্ট ডানায় ভর মেলে... আহহহ... এযে কি পরম পাওয়া, যে না পেয়েছে সে এর মর্ম উপলব্ধি করতে পারবে না... এই ভাবে বিরক্ত হতে সে হাজার সহস্রবার রাজি... রাজি এই ভাবে শাসনের মধ্যে থাকতে... নিজের সব কিছু উজার করে তুলে দিতে এই লোকটার হাতের মধ্যে।

সাতটার মধ্যেই কাজ সেরে চলে গিয়েছিল কাজল, আর সেও অর্নবের তত্বাবধানে গিজারের গরম জল মিশিয়ে, ছদ্ম রাগ দেখাতে দেখাতে স্নান সেরে তৈরী হয়েছিল অফিসের জন্য... হ্যাঙ্গার থেকে সালওয়ার কামিজ নামিয়ে তৈরী হচ্ছিল সে, আর তার খাবার নিয়ে পেছন পেছন ঘুরছিল অর্নব, থেকে থেকে খাইয়ে দিচ্ছিল তাকে... নিজেকে কেমন রানীর মত লাগছিল আজ তার... ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা আনমনে... গাড়ির সিটে মাথাটা হেলিয়ে ভাবতে থাকে সে।

হাতে নেওয়া সালওয়ার কামিজটা পছন্দ হয় নি অর্নবের... বলেছিল, ‘এটা কেন পরছ? এটা তো কাচা নয়? এখন জ্বরের সময় কাচা পোষাক পরাই তো ভালো...’ অবাক হয়েছিল পৃথা... কোনটা তার পরা আর কোনটা নয়, সেটাও খেয়াল রেখেছে মানুষটা? যদি সত্যিই দেখতে পেতো লোকটাকে চোখে, তাহলে ওর চোখের মধ্যে চোখ রেখে দেখতো সে, কত ভালোবাসা লুকিয়ে আছে তার ওই চোখ জোড়ায়... ভালো লেগেছিল তার ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ করেনি মুখে... বলেছিল... ‘আচ্ছা, তুমি কি আমার সব জানো?’

অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল অর্নব, ‘কেন? তোমার আবার না জানা কি আছে আমার?’

‘দূর বোকা... আমার শরীর খারাপ হয়েছে জানো না? আবার কাচা একটা জামা ভাঙবো নাকি? এটাই পরে চালিয়ে দিই... সেই তো কাচতেই হবে এগুলো... তখন না হয় অন্য পরা যাবে’খন...’ হাসতে হাসতে বোঝাবার চেষ্টা করেছিল সে।

‘শরীর খারাপ হওয়ার সাথে পোষাকের কি রিলেশন?’ জিজ্ঞাসা করেছিল তার প্রিয়তম।

‘হ্যা, মশাই... রিলেশন আছে বৈকি... শরীর খারাপ হলে আর নতুন কিছু ভাঙিনা তখন... পরা ড্রেস পরেই চালিয়ে দিই... বুঝলে বুদ্ধুরাম...’ উত্তর দিয়েছিল পৃথা।

‘এটা মানতে পারলাম না আমি... এ আবার হয় নাকি? পিরিয়েড হলে আবার কেউ পুরোনা না কাচা ড্রেস পরে নাকি আবার? এ সব যত কুসংস্কার...’ বলেছিল অর্নব... বলার সময় ভুরু কুঁচকেছিল কি না কে জানে?

‘হয়তো তাই... কুসংস্কারই হবে, কিন্তু কি করবো সোনা... বরাবর এটাই দেখে এসেছি যে... মা কে ও তো দেখছি এটাই করতে, তাই নতুন করে আর সংস্কার ভাঙার কথা মনে আসে নি কখনও...’ বলার ফাঁকে ততক্ষনে প্যান্টি পরে ব্রায়ের স্ট্র্যাপে হাত গলিয়ে দিয়েছে সে... ‘একটু লাগিয়ে দাও তো স্ট্র্যাপটা...’ ব্রায়ের কাপটা নিজের সুগোল বুকের ওপরে চেপে ধরে কাঁধের ওপর দিয়ে ঘাড় তুলে বলেছিল পৃথা... ঘাড়ের ওপরে গরম নিঃশ্বাসের অনুভূতিতে সিরসির করে উঠেছিল শরীরটা তার... অক্লেশে হেলিয়ে দিয়েছিল দেহটাকে পেছনদিকে, অর্নবের চওড়া ছাতির ওপরে... ঘন আলিঙ্গনে টেনে নিয়েছিল তাকে অর্নব... জড়িয়ে ধরেছিল পেছন থেকে... প্যান্টি পরিহিত নরম বর্তুল নিতম্বের ওপরে তখন ইষৎ স্ফিত হয়ে ওঠা অর্নবের পৌরষের ছোয়া... আপনা থেকেই চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পৃথার... আবেশে... পুরুষালী কর্কশ হাতের ছোয়া নগ্ন তলপেটের, প্যান্টির ইলাস্টিক ব্যান্ডটার ওপরে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে দিয়েছিল... ‘আহহহহ... প্লিজ অর্নব... এরকম করলে অফিস যাবো কি করে?’ গুনগুনিয়ে উঠেছিল সে তার ইষৎ ফাঁক হয়ে যাওয়া ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে... ‘এমন ভাবে আদর করলে যে আর অফিস যেতে ইচ্ছা করবে না সোনা...’ ফিসফিসিয়ে উঠেছিল আদরে গলে যেতে যেতে... তার মনে হচ্ছিল যেন সমস্ত শরীরটা একটু একটু করে শিথিল হয়ে যাচ্ছে... অবস হয়ে পড়ছিল হাতগুলো... বুঝতে পারছিল বুকের ওপরে ধরে রাখা ব্রা সমেত হাতটা এক্ষুনি নেমে যাবে হয়তো তার বুকটাকে অর্নবের হাতের জন্য ছেড়ে দিয়ে... ‘প্লিজ... সোনা... এমন কোরো না এখন... প্লিজ...’ মুখ বলেছিল, কিন্তু মন চেয়েছিল আরো, আরো আদর... ভেসে যেতে চেয়েছিল সে আদরের সমুদ্রে... কানে এসেছিল অর্নবের গাঢ় কন্ঠস্বর... ‘তোমাকে এই ভাবে দেখে ছাড়তে ইচ্ছা করছে না যে...’ দুটো তপ্ত ঠোটের স্পর্শ এসে লেগেছিল তার নগ্ন ঘাড়ের ওপরে... তলপেটের ওপরে ঘুরে বেড়ানো হাতটা আরো উঠে এসেছিল ওপর পানে... সুগোল স্তনদুটোর তলায় খেলা করে বেড়াচ্ছিল সে হাতের পাঞ্জাদুটো... ‘মমমম... আহহহহ... প্লিজ... এখন না... পরে... প্লিজ...’ গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা সম্ভাব্য আদর পাবার প্রবল আকাঙ্খায়... অনুভব করেছিল হাতের পাঞ্জাদুটো তার ধরে রাখা ব্রায়ের কাপের তলা দিয়ে বেয়ে উঠে আসছে আরো ওপর দিকে... তার নরম স্তনের দিকে... নিজের হাতের চাপ আলগা করে জায়গা করে দিয়েছিল অর্নবের হাতকে... চোখ বন্ধ করে আরো এলিয়ে দিয়েছিল শরীরটাকে পেছন পানে... বুঝতে পেরেছিল তার হাঁটু তার সাথে সহযোগীতা করছে না... কতক্ষন তার পক্ষে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয়ে সে জানে না... সে ভিজে উঠছিল... ভিষন দ্রুত... তার প্যান্টির মধ্যে থাকা স্যানিটারী ন্যাপকিনটা ভরে যাচ্ছিল যত না শারীরিয় দূষিত রক্তে, তার অধিক বেশি দেহের কামঘন রসের আধিক্যে... নাঃ... আর নয়... এবার পাগলটাকে থামাতেই হবে... তা না হলে আর অফিস যেতে পারবে না সে... প্রায় জোর করেই নিজের মনকে বোঝায় সে... ঘুরে দাঁড়িয়েছিল অর্নবের মুখোমুখি... মুচকি হেসে বলেছিল, ‘পাগল একটা... এখন এই রকম দুষ্টুমী করলে হবে? হু? আমাকে যেতে দেবে না?’

মুখে কোন উত্তর দেয়নি অর্নব... ঘাড় কাত করে মুখটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরেছিল নিজের তপ্ত ঠোট জোড়া পৃথার পাতলা ঠোটের ওপরে... মুখের মধ্যে জিভটা পুরে দিয়েছিল সে... খুঁজে নিয়েছিল প্রিয়ার জিভটাকে... খুজে পেতে খেলা করে বেড়াতে শুরু করেছিল জিভদুটো একে অপরে সাথে... পৃথার প্যান্টি ঢাকা নরম বর্তুল পাছার দাবনাদুটোকে দুই হাতের তেলোয় খামচে ধরেছিল প্রায়... তুলতুলে নরম সুগোল দাবনাদুটো নিষ্পেশিত হচ্ছিল অর্নবের পুরুষালী কড়া হাতের তালুর মধ্যে... সেই ভাবে ধরেই পৃথার শরীরটাকে টেনে চেপে ধরেছিল সে নিজের দৃঢ় হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গের ওপরে... দুটো মসৃণ উরুর মাঝে প্রায় সেঁদিয়ে গিয়েছিল সেই শক্ত হয়ে এগিয়ে বাড়িয়ে থাকা অর্নবের পৌরষটা... ‘উমমমম...’ অর্নবের মুখের মধ্যে গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা... নির্দিধায় নিজের থেকেই ঠেসে এগিয়ে দিয়েছিল আপন জঙ্ঘাটাকে প্রেমিকের কোলের দিকে... হাত তুলে জড়িয়ে ধরেছিল প্রিয় মানুষটাকে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে... চোখ বন্ধ করে নিজেকে সমর্পিত করেছিল প্রিয়তমের ছাতির পরে... ঘর্ষন খাচ্ছিল লোমশ ছাতির ওপরে ব্রা খসে পড়া বুক দুটো... ‘নাহহহ... আহহহ... এবার ছাড়ো প্লিজ... আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না এরপরে আর... প্লিজ সোনা... আর নআআআআহহহ...’ ঠোটের ওপরে থেকে নিজের ঠোটটা ছাড়িয়ে নিয়ে কোনরকমে অনুনয় করে উঠেছিল পৃথা... মন তখন দূরন্ত গতিতে আরো মিলে যেতে চাইছিল তার প্রিয়তমের দেহের সাথে... কিন্তু বাস্তবিক সেটা সম্ভব নয় সে জানতো... একে তার শরীরের বাধা, তার ওপরে অফিসের তাড়া... শেষে প্রায় বেরসিকের মতই জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে সরিয়ে নিয়েছিল অর্নবের থেকে তফাতে... আলমারীর গায়ে হেলান দিয়ে প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে না দেখা প্রেমিকের পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠেছিল, ‘ডাকাত একটা... সব লুঠ করে নেবার তাল...’ বলতে বলতেই অনুভব করে উষ্ণ নিঃশ্বাস অর্নবের, নিজের মুখের ওপরে... ‘এই না... আর না... লক্ষ্মী সোনা... আর তো দুটো দিন... তারপর তুমি যেমন খুশি তেমনি আদর কোরো তোমার তিতিরকে... তখন আর কোন বাধা থাকবে না... প্লিজ সোনা... আজকে ছেড়ে দাও...’ কাতর কন্ঠে বলে উঠেছিল সে... বলেছিল ঠিকই মুখে, কিন্ত হাত বাড়িয়ে ফের আলিঙ্গনের বেঁধে নিয়েছিল তার প্রিয়তমকে... নিজের নরম বুকটাকে চেপে ধরেছিল অর্নবের পুরষালী লোমশ বুকের ওপরে... ‘আমাকে অফিস যেতে দেবে না সোনা?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল পৃথা... প্রশ্ন করলেও, নিজের ঠোটটাকে এগিয়ে দিয়েছিল শূণ্যপানে... অর্নবের অবস্থান বুঝে... আর তখনই বাইরের দরজায় অনাহুতের মত বেলের আওয়াজ কানে আসে... টিং টং... টিং টং...

একরাশ বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে গিয়েছিল পৃথার... কাজল তো নিজের কাজ করে চলে গিয়েছে... তবে আবার কে? প্রশ্ন বহুল চোখে তাকিয়েছিল নিরাকার অর্নবের পানে... তারপর তাড়াতাড়ি হাউসকোটটা হ্যাঙ্গার থেকে টেনে নিয়ে গায়ে পড়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়েছিল দরজা খুলতে।

আই হোলে চোখ রেখে এক অপরিচিত অল্প বয়সি যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল পৃথা... দেখে ইতঃস্থত করেছিল খানিক, তারপর মনে পড়ে গিয়েছিল যে সে একা নয়, তার সাথে অর্নবও রয়েছে... তাই নির্দিধায় দরজা খুলে মেলে ধরেছিল সে... ‘কাকে চাই?’ গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করেছিল আগুন্তুকের দিকে তাকিয়ে।

‘মিস মুখার্জি...’ ইতস্থত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেছিল আগুন্তক।

‘আমি... কি চাই?’ ফের প্রশ্ন করেছিল পৃথা।

‘আজ্ঞে, আমি ইসমাইল, আমাকে সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন...’ উত্তর এসেছিল আগুন্তুকের থেকে।

‘সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন মানে? কোন গাড়ি? কার গাড়ি? কোন সাহেব পাঠিয়েছেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না...’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘না... মানে কর্মকার স্যর গাড়ি পাঠিয়েছেন... আপনার কাছে...’ ফের ইতস্থত উত্তর এসেছিল ছেলেটির কাছ থেকে।

আরো কিছু হয়তো প্রশ্ন করত পৃথা, কিন্তু তার আগেই ভেতরের ঘর থেকে অর্নবের গলা ভেসে এসেছিল, ‘ওকে বলো নীচে ওয়েট করতে...’

অর্নবের গলার স্বরে পৃথা একবার ঘাড় ফিরিয়ে পেছন পানে ঘরের দিকে তাকিয়ে নিয়ে, কি ভেবে আগুন্তুকের উদ্দেশ্যে সে বলে উঠেছিল, ‘আচ্ছা, তুমি নীচে ওয়েট করো...’

ছেলেটিও আর অপেক্ষা করে নি, তরতর করে নেমে গিয়েছিল সিড়ি বেয়ে... পৃথা দরজা বন্ধ করার আগে একবার নজর বুলিয়ে নিয়েছিল পাশের ফ্ল্যাটের দিকে... দেখে মনে মনে নিশ্চিন্ত হয়েছিল সে, ‘নাঃ, আজ আর দরজা খুলে দেখছে না... নিশ্চয় অন্য কাজে ব্যস্ত আছে... তা না হলে এতক্ষনে দরজা খুলে মুখটা উঁকি মারতোই...’ ভাবতে ভাবতে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সে।

‘তোমার গাড়ি এসে গিয়েছে... তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও...’ প্রায় ঘাড়ের কাছে অর্নবের গলা পেয়ে ফিরে দাঁড়ায়।

‘এই দাঁড়াও... দাঁড়াও... আমার গাড়ি মানে? এ সব আবার কি?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল পৃথা।

‘তোমার গাড়ি মানে তোমার গাড়ি...’ হাসতে হাসতে উত্তর এসেছিল অর্নবের কাছ থেকে।

ঘরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে গায়ের থেকে হাউসকোটটা খুলে ফেলতে শুরু করেছিল সে... সাথে প্রশ্ন করেছিল, ‘আরে ব্যাপারটা তো খুলে বলবে? হটাৎ আমার জন্য প্রণবদা আবার গাড়ি পাঠালো কেন? আমার আবার কবে থেকে গাড়ির প্রয়োজন হলো?’ কথা শেষে ততক্ষনে সে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল... তাদের খানিক আগের আদরের ঠেলায় হাত থেকে খসে পড়ে থাকা ব্রাটা মাটির থেকে তুলে নিয়ে পড়তে শুরু করে দিয়েছিল ফের।

এবার আর দুষ্টুমী করে নি অর্নব... পেছন থেকে পৃথার মসৃণ পীঠের ওপরে ব্রায়ের হুকটা লাগিয়ে দিতে দিতে উত্তর দিয়েছিল, ‘আমার তিতিরের শরীর খারাপ, আর সে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অফিস যাবে? আর আমি ঘরে বসে সেটা দেখবো?’

ব্রায়ের হুকটা লাগানো হলে ফিরে দাড়িয়েছিল সে, ‘এ বাবা, এটা ঠিক নয়... আমার জন্য প্রণবদা অফিসের গাড়ি পাঠিয়ে দেবে... ছি ছি... এটা যেন কেমন...’ বিব্রত মুখে বলে উঠেছিল পৃথা।

‘প্রণবদা কি নিজের গাড়ি পাঠিয়েছে?’ চোখের সামনে শুধু মাত্র ব্রা আর প্যান্টি পরিহিত পৃথার তম্বী শরীরটা দেখতে দেখতে কয়’একপা এগিয়ে এসেছিল অর্নব... সেটা অনুভব করে তাড়াতাড়ি মুচকি হেসে হাত তুলে তাকে আটকে বলে উঠেছিল পৃথা, ‘এই... আর দুষ্টুমী নয় কিন্তু...’

‘তোমাকে কি অসম্ভব সেক্সি দেখতে লাগছে, সেটা তুমি জানো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।

‘বদমাইশ ডাকাত একটা...’ খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছিল পৃথা অর্নবের কথায়... মনে মনে ভিষন খুশি হয়েছিল সে... তাড়াতাড়ি করে নিজের বুকের ওপরে হাত চাপা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল অর্নবের নাগাল থেকে... বিছানার ওপরে পড়ে থাকা কুর্তিটা তুলে গলিয়ে নিয়েছিল গলার থেকে... ‘পাজি, অসভ্য বুড়ো একটা...’ হাসতে হাসতে বলে উঠেছিল পৃথা পরণের পোষাকটাকে ভালো করে নিজের শরীরের ঢাকতে ঢাকতে।

‘কোই... বললে না তো... প্রণবদা হটাৎ কেন আমার জন্য গাড়ি পাঠালো? এই ভাবে অন্য লোকের গাড়ি ব্যবহার করতে কিন্তু আমার একদম ভালো লাগে না... আর তাছাড়া আমাকে তো সেই পাবলিক ট্রান্সপোর্টেই যাতায়াত করতে হবে বলো... সেখানে একদিন দু-দিন এই ভাবে গাড়ি চড়ে লাভ কি?’ বিছানায় বসে পা’টাকে লেগিংসের মধ্যে গলিয়ে দিয়ে বলে উঠেছিল পৃথা।

‘একদিন দুই-দিনএর জন্য কে বললো তোমায়?’ অর্নবের প্রশ্ন ভেসে এসেছিল বিছানার ওই ধার থেকে।

বিছানার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে লেগিংসটাকে কোমরের কাছে টেনে ঠিক করতে করতে প্রশ্ন করেছিল, ‘সে আবার কি? আমি কি সারা জীবনই প্রণবদার অফিসের গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবো?’

হাল্কা হাসির আওয়াজ কানে আসতে মুখ তুলে তাকিয়েছিল পৃথা... ‘প্রথমত হ্যা... তুমি এবার থেকে গাড়িতেই যাতায়াত করবে... আর দ্বিতীয়তঃ গাড়িটা আমার... বুঝেছ? তাই তুমি চড়বে না তো কে চড়বে? হু?’ উত্তর দিয়েছিল অর্নব।

‘তোমার গাড়ি?’ একটু অবাকই হয়েছিল পৃথা।

‘কেন? আমার গাড়ি থাকতে নেই?’ ফিরিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।

‘না... তা বলছি না...’ আমতা আমতা করেছিল পৃথা।

‘বলছো না... কিন্তু মনের মধ্যে থেকে দ্বিধাটাও তো যাচ্ছে না...’ বলেছিল অর্নব।

‘না... মানে...’ তাও ইতস্থত করেছিল পৃথা।

‘আরে বাবা, প্রণবের অফিস মানে তো আমারও অফিস, নাকি? আর আমার তো আরো একটা গাড়ি ছিল, আগের গাড়িটা পুড়ে যাওয়া সত্তেও, এই গাড়িটা ওর কাছেই রাখা থাকতো, আমার বেরোনোর প্রয়োজন হলে প্রণব নিয়ে চলে আসতো, এখন থেকে তুমি এটায় চড়বে... এখানে এতো সংশয়ের কি, সেটাই তো বুঝতে পারছি না... নিজের বরের গাড়ি কি অন্য লোকে চড়বে?’ এবার একটু বিরক্তির সুরেই বলেছিল অর্নব।

অর্নবের কথায় থমকে গিয়েছিল পৃথা, তারপর ফিক করে হেসে ফেলেছিল... বিছানা ঘুরে এগিয়ে গিয়েছিল অর্নবের গলার স্বর লক্ষ্য করে... দুহাত বাড়িয়ে অর্নবের গলাটা জড়িয়ে ধরে বলে উঠেছিল... ‘ইশ... এই লোকটাই আগে তো আমাকে নিজের বলে মানতেই চাইছিল না... আর এখন দেখো... বিয়ের আগেই বউকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে...’

পৃথার কথায় দুজনেই এক সাথে হেসে উঠেছিল...

গাড়ির বন্ধ কাঁচের এপার থেকে বাইরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওঠে পৃথা, সকালের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে।

ক্রমশ...
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#97
তারপর কি হল দাদা । জানতে চাই
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply
#98
৩২।।


‘এখন কি রকম আছিস পৃথা?’ অফিসে ঢোকার মুখেই অভিজিতদার সাথে দেখা... অভিজিত হালদার, ওদের ব্রাঞ্চএর হেড ক্যাশিয়র... প্রশ্ন শুনে হাসি মুখে তাকায় পৃথা... ‘ভালো আছি অভিজিতদা... ওই একটু ঠান্ডা লেগে জ্বর মত হয়েছিলো আর কি...’ বলতে বলতে এগিয়ে যায় বায়োম্যাট্রিক অ্যাটেন্ডেন্সএর মেশিনটা দিকে।

আঙুল ছুইয়ে ঘুরে দাড়াতে অপর্নার সাথে মুখোমুখি... অপর্না, সুশান্তের সাথেই মার্কেটিং ডিপার্টেমেন্টএ রয়েছে, ওকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করে, ‘এই সুশান্ত এসেছে রে অফিসে?’

‘হ্যা, এই খানিক আগেই দেখলাম তো সুশান্তকে... ওই দিকেই আছে বোধহয়... আরে জানিস, কে জানে কি করে ও মুখটুখ একেবারে ফাটিয়ে এসেছে... বেশ ফুলে আছে... তুই তো ছিলিস না কাল, থাকলে হয়তো জানতে পারতিস... তোর সাথে তো ভালো বন্ধুত্ব ওর...’ খবর দেয় অপর্না।

‘হ্যা... সেটাই... দেখি জিজ্ঞাসা করে... তুই জানতে চাস নি?’ তৈরী হয়ে নিতে চায় পৃথা, সুশান্তের মুখোমুখি হবার আগেই।

‘জিজ্ঞাসা করেছিলাম তো... বললো যে কোথায় পড়ে গিয়েছিল... কে জানে বাবা... দেখ অফিসের পর কার পেছনে লাগতে গিয়েছিল, দিয়েছে কেলিয়ে...’ বলেই শরীর দুলিয়ে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে, পরক্ষনের সাবধান হয়ে যায়, যতই হোক, অফিস তো... মুখ চাপা দিয়ে হাসতে হাসতে নিজের কাজে চলে যায় অপর্না। ওর ‘কেলিয়ে দিয়েছে’ কথাটা শুনেই অর্নবের সাথে ঘটনাটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে যেন... তাড়াতাড়ি করে সামলে নেয় নিজেকে... এগিয়ে যায় নিজের টেবিলের দিকে।

টেবিলে দাঁড়িয়ে কাঁধ থেকে ব্যাগটা নামাতে গিয়ে চোখে পড়ে দূরের কিউবিকিল্‌এর মধ্যে বসে সুশান্ত মাথা নিচু করে কিছু লিখছে... সম্ভবত কোন রিপোর্ট বা ওই ধরনের কিছু হবে... পৃথার খুব ইচ্ছা করে গিয়ে সুশান্তর সামনে দাঁড়ায়... প্রতিদিনকার মত হাই বলে আসে... কিন্তু নিজেকে সংযত করে সে... মনে মনে ভাবে, ‘না... এখন নয়...’ কারণ সে জানে না তাকে দেখে সুশান্তর কি রিঅ্যাকশন হবে... তার থেকে আর একটু সময় নেওয়া উচিত বলে মনে করে পৃথা... চেয়ারে বসে জলের বোতল খুলে গলা ভেজায়।

‘এখন কেমন বোধ করছেন, মিস মুখার্জি?’ ঘাড়ের কাছে ম্যানেজারের গলার আওয়াজে তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ায় পৃথা... ‘এই তো স্যর... এখন আগের থেকে অনেকটাই ভালো... সরি... কাল হটাৎ করে জ্বর এসে যাওয়াতে আসতে পারলাম না...’ সাওয়াল করে পৃথা স্বপক্ষে।

‘না, না, ইটস্‌ ওকে, শরীর খারাপ হলে আসবেন কি করে... আমি রতনের হাত দিয়ে কিছু ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছি, কয়এক’টা ক্লায়েন্টের লোন অ্যাপ্রুভ করে দিয়েছি আমি, সে গুলো একটু দেখে নিয়ে প্রসেসএ ফেলে দিবেন...’ অবাঙালী ম্যানেজার সহায় পৃথাকে বলে আর দাঁড়ান না... এগিয়ে যান নিজের কেবিনের দিকে... সেই দিকে তাকিয়ে একবার দেখে নিয়ে হাঁফ ছাড়ে পৃথা... ‘যাক... ম্যানেজার খচে যায় নি তার এই রকম ভাবে হটাৎ কামাই করাতে...’ মনে মনে ভাবে সে।

প্রথম হাফটা কোথা দিয়ে উড়ে গেলো, সেটার আর খেয়াল থাকে না পৃথার... একটা পর একটা লোন এগ্রিমেন্ট চেক করে সেটাকে প্রসেসএ ফেলতেই কখন লাঞ্চএর সময় হয়ে গেছে জানতেই পারে নি সে... সম্বিত হয় কাকলির ডাকে... ‘কি রে পৃথা, লাঞ্চ করবি না? নাকি কাজ খাবি আজ?’

হেসে মুখ তুলে তাকায় সহকর্মীনির পানে... ‘না রে, এই তো... তুই কি লাঞ্চ এনেছিস?’

আরো বেশ কয়একজন জুটে যায় তাদের সাথে... এক সাথে বেরিয়ে যায় ব্রাঞ্চ থেকে যেখান থেকে ওরা সাধারণতঃ লাঞ্চ করে থাকে সেই দিকে... অন্য দিন ওদের সাথে সুশান্তও থাকে, কিন্তু আজ সে আর সঙ্গ নেই নি তাদের... দেখতো পায় নি সে... কখন কাজের অজুহাতে বেরিয়ে গিয়েছে অফিস থেকে কে জানে।

সুশান্তের সাথে অবশেষে দেখা হয় পৃথার একেবারে শেষ বেলায়, অফিস ছুটির সময় বেরিয়ে এসে... বিল্ডিংএর পোটিকোর থেকে তখন সবে গাড়িতে উঠতে যাবে, দেখে লিফটের থেকে সুশান্ত বেরিয়ে আসছে... মুখ নীচু করে ড্রাইভার ছেলেটিকে গাড়িটাকে একটু সাইড করে রাখতে বলে সে এগিয়ে যায় সুশান্তের দিকে... একেবারে সামনে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়ায় সে... ‘তুমি আজ সারাদিন আমাকে এ্যাভোয়েড করে চলছো কেন বলো তো?’ চোখে পড়ে বাঁ চোখের নীচে কালশিটের দাগটা... ঠোটের কোনাতেও খানিকটা কেটে গিয়েছে...

‘নাঃ... কোথায় এ্যাভোয়েড করলাম, কাজ ছিল তাই হয়তো কথা হয় নি... ক্লায়েন্ট ভিজিট ছিল, তাই বেরোতে হয়েছিল...’ না চাইলেও সুশান্তের চোখ ঘুরে যায় পৃথার বুকের ওপর দিয়ে... কামিজের আড়াল থেকে দুটো গোলাকৃত মুঠিভর স্তনের আভাস স্পষ্ট সেখানে... আর সেই সাথে দিব্বি ফুটে রয়েছে কাপড় ভেদ করে স্তনবৃন্তের ইষৎ আভাস... তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়... চোখের নীচের কালশিটের জায়গাটা কেমন টনটন করে ওঠে তার... তাড়াতাড়ি পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে যায় সে...

খপ করে হাত বাড়িয়ে সুশান্তের সার্টের স্লীভটা ধরে টান দেয় পৃথা... ‘এই ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছ যে?’ প্রায় জোর করেই সুশান্তকে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়... ঘাড় তুলে তাকায় তার মুখের দিকে... ‘তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে...’

পৃথার ওই কটা চোখের মণির মধ্যে কেমন সন্মোহন আছে যেন... মুহুর্তের জন্য সুশান্ত কেমন বিহবল হয়ে পড়ে... বুকের মধ্যেটায় দুলে ওঠে তার... জোর করে নিজের চোখদুটোকে সরিয়ে নেয় পৃথার ওই রকম সন্মোহীনি চোখের নজর থেকে... মুখটাকে অন্য দিকে ফিরিয়ে বলে, ‘আমার সাথে আবার কি কথা... আমি তো...’

সুশান্তের কথা শেষ করতে দেয় না পৃথা... ওই ভাবেই তার সার্টের শ্লিভটা ধরে রাখে হাতে মুঠোয়... টান দিয়ে বলে, ‘এখানে, এই ভাবে পোর্টিকোয় দাঁড়িয়ে কথা হয় না, চলো, ওই দিকটায় যাই...’ বলে শার্টের শ্লিভ ছেড়ে ঘুরে হাঁটতে শুরু করে গাড়ির দিকে।

দু-পা হেঁটেই ঘাড় ফেরায় সে... দেখে সুশান্ত তখনও সেই জায়গাতেই দাড়িয়ে রয়েছে... দেখে ফের তাড়া দেয়, ‘কোই... এসো... ওই দিকটায় যাবো...’ বলে ফিরে আবার হাঁটা লাগায় পৃথা।

অনিচ্ছা সত্তেও আর কথা বাড়ায় না সুশান্ত... ধীর পদক্ষেপে পা বাড়ায় পৃথাকে অনুসরণ করে... যেতে গিয়ে চোখ আটকে যায় সামনে হেঁটে চলা পৃথার দুলদলিয়মান পাছার দাবনা দুটোর ওপরে... বুকটা ধড়াস করে ওঠে তার... দেহের সাথে চেপে বসা গাঢ় রঙের কামিজটা যেন পৃথার পাছার দাবনাদুটোকে আরো বেশি করে প্রস্ফুটিত করে তুলেছে... তার প্রতিটা পদক্ষেপের সাথে পাছার দাবনা দুটো গভীর এক বিভাজিকায় ভাগ হয়ে গিয়ে তলতলে নরম দুটো চর্বির তাল নিজস্ব ছন্দে ছলকে ছলকে উঠছে... কি অপূর্ব তাদের গঠন... সাদা লেগিংসে মোড়া দুটো পুরুষ্টু থাইয়ের সাথে একেবারে সামাঞ্জস্য ভাবে দুটো বর্তুল নিতম্ব... প্যাসেজ ওয়ের এলিডি আলো পড়ে লেগিংস কুর্তির ওপর দিয়েও সুস্পষ্ট প্যান্টি লাইনটা, ওই দুই নরম চর্বির পিন্ডের ওপরে যেন নক্সা কেটে সাজিয়ে তুলেছে। 

পৃথা চলতে চলতেই একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয় সুশান্তকে... তার নজর যে কোন খানে সেটাও বুঝে যায় ওই এক লহমাতেই... মুখ ফিরিয়ে মুচকি হেসে ফেলে সে... নাঃ মেন উইল বি অলওয়েজ মেন... মনে মনে ভাবে সে... তারপর খানিক ইচ্ছা করেই আরো একটু নিজের পাছাটা দুলিয়ে হাঁটতে থাকে... হাঁটার তালে তালে ঝটকা দেয় নিজের পাছার দাবনায়... মাথার মধ্যে দুষ্টুমীর পোকাটা কিলবিলিয়ে ওঠে যেন...

একেবারের গাড়ির সামনে এসে ঘুরে দাঁড়ায় পৃথা, ‘নাও... ওঠো... আমরা বরং একটা কফি শপে গিয়ে বসি... কি বলো? একটু নিশ্চিন্তে কথা বলা যাবে...’

‘উঠবো মানে? এ... এটা কার গাড়ি? তোমার?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘হুমমমম... বলতে পারো... আমি যখন তোমায় উঠতে বলছি... তখন ধরেই নাও না আমারই গাড়ি... নাও... ওঠো...’ বলে নিজে ঘুরে গাড়ির বাঁদিকের দরজা লক্ষ্য করে এগিয়ে যায়... ইসমাইল ছেলেটি দৌড়ে এগিয়ে এসে পৃথার দিকের দরজা খুলে ধরে... পৃথা ভেতরে ঢুকে ইসমাইলের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে ‘থ্যাঙ্কস্‌’ তারপর খেয়াল করে সুশান্ত তখনও অবাক চোখে তাকিয়ে রয়েছে এদিকেই... গলা তুলে তার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, ‘কি হোলো, ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে, না কি উঠবে?’

সম্বিৎ ফেরে সুশান্তের, ধীর পায়ে এগিয়ে এসে গাড়ির ওপর দিকের দরজা খুলে উঠে বসে ভেতরে... ইসমাইল নিজের সিটে ফিরে গিয়ে প্রশ্ন করে, ‘ম্যাডাম, কোথায় যাবেন? বাড়ি?’

‘না, এক্ষুনি বাড়ি যাবো না... তুমি বরং এই কাছেই একটা সিসিডি আছে, ওখানেই চলো আগে...’ বলতে বলতে ব্যাগ খুলে মোবাইলটা বের করে নেয় হাতে... ডায়াল প্যাডে নাম্বার টিপে কল লাগায়... অপেক্ষা কর খানিক, তারপর বলে ওঠে... ‘হ্যা... আমি বলছি... আমার ফিরতে একটু দেরী হবে... হ্যা হ্যা... গাড়ি আছে সঙ্গে... চিন্তা করো না... না, না... খুব দেরী হবে না... ওই একটু কাছেই একটা সিসিডি আছে, সেখানেই যাচ্ছি... ফেরার সময় তোমার কিছু আনতে হবে?... আচ্ছা... ঠিক আছে... বাই... রাখছি...’ বলে ফোনটা কেটে ফের নিজের ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে সে।

পুরো ফোনালাপটা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে সুশান্ত... ফোনের ওপারের কথা শুনতে না পেলেও, স্বরের খানিকটা কানে এসে পৌছানোর ফলে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে ওপারের কন্ঠটি কোন পুরুষের... এবং যথেষ্টই ভরাট সে স্বর... মানে কোন পরিণত বয়সের পুরুষই হওয়া সম্ভব... পৃথার কথা শেষ হতে দেখে মুখ ফিরিয়ে বাইরের দিকে তাকায় সে... গাড়ি ততক্ষনে চলতে শুরু করে দিয়েছে... সন্ধ্যের অন্ধকার সরিয়ে রাস্তা আলোকিত হয়ে উঠেছে আশপাশের দোকানের থেকে উপচে পড়া নানা রঙের বৈদ্যুতিক আলোয়...

গাড়ির এসির ঠান্ডা পরিবেশে বসে হাজারটা প্রশ্ন ভীড় করে আসে সুশান্তের মনের মধ্যে... কার গাড়ি?... কার সাথে কথা বললো পৃথা?... কথার ধরণ শুনে মনে হয় ফোনের ওই পারে যে রয়েছে, সে পৃথার খুবই কাছের... তবে কি?... কিন্তু?... পৃথাই বা কি বলতে চায় তাকে? গতকাল সন্ধ্যেবেলায় যে ঘটনা সে ঘটিয়েছে, তারপর সত্যিই বলতে মুখ নেই পৃথার সামনে দাঁড়াবার... পৃথা যদি নিজের থেকে এগিয়ে এসে ওর সাথে কথা বলতো, ওর সাহস হতো না আর কোনদিন পৃথার সামনে মাথা তুলে দাঁড়াবার... আবার অন্য দিকে দেখতে গেলে গতকাল ওর সাথেও যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার ব্যাখ্যাও কিছুতেই খুঁজে পায় নি সে, সারাটা রাত হাজার ভেবেও... কে তাকে আঘাত করল?... নাঃ... সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে... নিশব্দে মাথা নাড়ে সুশান্ত।

পৃথা কোন কথা বলে না... সেও উল্টোদিকের জানলার ভেতর দিয়ে বাইরের পানে চেয়ে থাকে চুপ করে... নিজেকে গুছিয়ে নিতে চায় কথা শুরুর আগে... সুশান্তকে সামনে দেখে দুম করে বলে ফেলেছে সে ঠিকই, যে সে ওর সাথে কথা বলতে চায়, কিন্ত আসলে কি বলবে সেটাই তো জানা নেই তার... তাই কি ভাবে শুরু করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না... গতকাল সন্ধ্যেবেলায় যেটা ঘটেছে, তারপর অন্য কোন মেয়ে হলে হয়তো আর কোনদিন সুশান্তকে তার চোখে চোখ তুলে তাকানো দূর অস্ত, হয়তো তার পরিধীর মধ্যেই আসতে দিতো না কোনমতেই... কিন্তু সে সেই ধরণের মেয়ে নয়... আবেগপ্রবণতায় সে বাস্তব পরিস্থিতি ভোলে না, সে জানে, আজকে তার পাশে যতই অর্নব থাকুক না কেন, অর্নবের গন্ডীটা সীমিত... তার শারীরিক অক্ষমতায় হুট করে লোক সমাজে বেরিয়ে এসে তাকে সাহায্য করা সম্ভব নয়, তাই সেখানে তার কর্মক্ষেত্রে একটা অস্বস্থিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়ে থাকুক, সেটা সে কোন মতেই চায় না... বরং সুশান্তের সাথে ব্যাপারটাকে মিটিয়ে নিয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে অটুট রাখতেই হবে...

‘ম্যাডাম... সিসিডি এসে গেছে...’ ইসমাইলের গলার স্বরে সম্বিৎ ফেরে পৃথার... ‘ও, ঠিক আছে, তুমি পার্কিং দেখে গাড়ি রাখো, আমরা একটু আসছি...’ বলে সুশান্তর দিকে ফেরে... ‘চলো... গিয়ে বসি একটু...’

‘হু... চলো...’ ছোট্ট উত্তর দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায় সুশান্ত।

ইসমাইল তাড়াতাড়ি ঘুরে এসে পৃথার দিকের দরজা খুলে ধরে, পৃথা নেমে গেলে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ফের ফিরে যায় নিজের সিটের দিকে... গাড়ি চালিয়ে চলে যায় পার্কিং লটের পানে, পৃথা আর সুশান্ত ঢোকে সিসিডির মধ্যে।

সামনের একটা ফাঁকা টেবিল দেখে দুজনে গিয়ে বসে, শপের ছেলেটি এগিয়ে এসে মেনু কার্ড বাড়িয়ে দেয়... পৃথা মেনু কার্ডটা সুশান্তের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘কি খাবে?’

‘যা হোক একটা কিছু বলে দাও না...’ দায়সারা উত্তর দেয় সুশান্ত... রুমাল দিয়ে নিজের চোখের নিচের কালশিটেটাকে আড়াল করে শপের ছেলেটির সামনে... এই ভাবে খুলে রাখতে অস্বস্থি হয় তার।

‘তাও... কিছু তো বলো...’ বলে নিজে ঝুঁকে পড়ে মেনু কার্ডের ওপরে... ভালো করে দেখে নিয়ে ছেলেটির উদ্দেশ্যে বলে, ‘আই’ল টেক আ ট্রপিকাল আইসবার্গ...’

ছেলেটি শুনে ঘাড় হেলায়... তারপর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সুশান্তের দিকে তাকায় সে...

সুশান্ত একবার মেনু কার্ডের ওপরে চোখ রেখেই বলে ওঠে, ‘আই’ল হ্যাভ ওয়ান ক্যাপুচিনো... লার্জ...’

‘ওকে স্যর... এনিথিং এলস্‌ ইয়ু ওয়ান্ট টু অর্ডার?’ প্রশ্ন করে ছেলেটি...

মাথা নাড়ে দুজনেই এক সাথে প্রায়... ‘নো নো... দ্যটস্‌ অল...’

ছেলেটি চলে যেতে পৃথা চুপচাপ মেনু কার্ডের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে... সুশান্তও কোন কথা বলে না আগ বাড়িয়ে।

নাঃ... এই ভাবে চলবে না... একটা কিছু বলতেই হবে... শুরুটা আমাকেই করতে হবে বুঝতে পারছি... ভাবে পৃথা মনে মনে... তারপর মুখ তুলে তাকায় সুশান্তের দিকে... সবে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই সুশান্তই কথা শুরু করে... ‘সরি... আই অ্যাম রিয়েলি সরি ফর ইয়েস্টার্ডেজস ইন্সিডেন্স...’ বলে চুপ করে।

পৃথা নিজের হাতটা তুলে আলতো করে টেবিলের ওপরে রাখা সুশান্তের হাতের ওপরে রাখে... রেখে মৃদু চাপ দেয় সেই হাতে... ‘ইটস্‌ ওকে... আই আন্ডার্স্ট্যান্ড... ওটা নিয়ে ভেবো না... ওটা আমিও জানি যে হটাৎ করেই আবেগের বশে ঘটে গিয়েছে... আই ক্যান ফিল ইট...’

এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘটনাটা পৃথা দেখবে, সেটা আশা করেনি সুশান্ত... ‘তুমি... তুমি আমাকে খুব খারাপ ভেবেছ... না?’

‘উ... হু... খারাপ?... হ্যা... অস্বীকার করবো না... কালকে তুমি চলে যাবার পর সত্যিই আমি ভিষন ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম... আসলে জানো সুশান্ত... এই শহরে আসার পর থেকে তোমাকে ভিষন ভাবে একজন ভালো বন্ধু বলে মেনে এসেছিলাম... তাই সেখানটায় আঘাত পড়তে, খারাপ তো লাগবেই? তাই না?’

‘এখন আর আমাকে বন্ধু ভাবতে পারছো না... তাই না?’ ধরা গলায় মৃদু স্বরে প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘ভাবছি সুশান্ত... তোমাকে এখনও আমার বন্ধুই ভাবছি... আর ভাবছি বলেই না তোমায় ধরে নিয়ে এলাম...’ সুশান্তের হাতের পীঠে নখ দিয়ে আকিবুকি কাটে পৃথা... ‘আসলে...’

‘আমি আর কক্ষনও এই ধরণের ব্যবহার করবো না কোনদিন... ঠিক...’ পৃথা কথা থামিয়ে বলে ওঠে সুশান্ত... ‘আমিও তোমাকে হারাতে চাই না... হারাতে চাই না তোমার বন্ধুত্ব...’

সুশান্তের হাতটাকে নিজের মুঠোয় ধরে চাপ দেয় পৃথা... ‘থ্যাঙ্কস্‌... আমিও তোমাকে চাই... বন্ধু হিসাবে... আমার পাশে...’

সুশান্তের বুক থেকে একটা যেন বিরাট বোঝা নেবে যায় পৃথার আশ্বাসে... মৃদু হাসি ফুটে ওঠে ঠোটের কোনে... ‘থাকবো পৃথা... তবে আজ থেকে আর তুমি নয়... তুই করে বলতে হবে দুজন দুজনকে... বন্ধুরা কি তুমি করে বলে?’

সুশান্তের কথায় পৃথাও এবার হেসে ফেলে... ‘বেশ তো... তাহলে তুই করে বললেই হয়... যাই বলো... তুইটা কিন্তু আরো আপন শোনায়... তাই না?’

‘আবার বলো?’ শুধরে দেয় সুশান্ত... তাতে দুজনেই হেসে ওঠে এক সাথে।

এর মাঝেই ওদের কফি সার্ভ করে দিয়ে যায় ছেলেটি... দুজনেই খানিক চুপ করে থাকে সেই সময়টায়... তারপর ছেলেটি চলে গেলে সুশান্ত বলে ওঠে, ‘আসলে কি হয়েছে জানিস তো...’ বলতে গিয়ে থমকায় সে।

পৃথা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।

‘না... হটাৎ করে তুই করে বলছি তো... তাই কেমন খট করে লাগলো কানে...’ হেসে বলে সুশান্ত।

পৃথা হাসে, কিন্তু কিছু বলে না উত্তরে।

‘যাক... যেটা বলছিলাম... আসলে কি হয়েছে জানিস তো... এই বাংলা মিডিয়ামে পড়েই এই অবস্থাটা হয়েছে... আগে তো কখনও কোন মেয়ের এতটা সান্নিধ্যে আসিনি... তাই তোর এতটা খোলামেলা ব্যবহার দেখে গুলিয়ে ফেলেছিলাম, কোনটা প্রেম আর কোনটা বন্ধুত্ব... সরি রে... প্লিজ ক্ষমা করে দিস আমায়...’ বলে সুশান্ত... এবার নিসংকোচে পৃথার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় তুলে নিয়ে।

‘আর এতো বার সরি সরি বলতে হবে না... ছাড় তো...’ কাঁছ শ্রাগ করে বলে ওঠে পৃথা।

‘একটা প্রশ্ন করবো... যদি কিছু মনে না করিস...’ ইতস্থত করে সুশান্ত।

‘বন্ধুত্বের মধ্যে আবার কিন্তু কিন্তু হয় নাকি? বল না?’ সহজ গলায় জানতে চায় পৃথা।

‘তুই হটাৎ করে গাড়ি পেলি কোথা থেকে? মানে এটা কার গাড়ি?’ সসঙ্কোচে প্রশ্ন করে সুশান্ত।

ওর প্রশ্নের ধরনে ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা, সে ইতিমধ্যেই অপেক্ষায় ছিল এই প্রশ্নটা আসবে জেনে... তাই শুনে মুখ তুলে তাকায় সুশান্তের দিকে, তারপর, একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে, ‘ওটা... ওটা আমার বরের গাড়ি...’

‘বরের...’ কথাটায় হোঁচট খায় যেন সুশান্ত... জিজ্ঞাসু চোখে তাকায় পৃথার পানে।

‘হুম... বরের... ঠিকই শুনেছো... সরি শুনেছিস...’ নিজের ভুলেই হেসে ফেলে পৃথা।

কিন্তু পৃথার ভুলের ধার দিয়ে যায় না সুশান্ত... ‘কিন্তু...’ ফের প্রশ্ন করে সে।

‘আর কোন কিন্তু নয়... ছাড় এসব কথা... এখন বল তুই কি বাড়ি ফিরবি?’ কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘হ্যা, বাড়িই ফিরবো... তবে... তার মানে তুই যে বলেছিলিস যে তুই কমিটেড...’ ফের প্রশ্ন করে সুশান্ত... ব্যাপারটা কিছুতেই ওর মাথা থেকে যায় না... মনের মধ্যে আরো অনেক ধরনের প্রশ্ন ভীড় করে থাকে।

নিজের গ্লাসের শেষ আইসক্রীমটুকু খেয়ে চেয়ারের ব্যাকরেস্টএ গা এলিয়ে দেয় পৃথা... ‘হু... ঠিকই শুনেছিস... আমি যার সাথে কমিটেড... তারই গাড়ি এটা... আর সেই আমার বর... আমি তো তোকে আগেই তাই বলে রেখেছিলাম... তুই’ই তো বিশ্বাস করতে চাইছিলিস না...’

‘ওহ!...’ বলে একটু থামে সুশান্ত... তারপর সসঙ্কোচে প্রশ্ন করে, ‘তুই তোর ফ্ল্যাটে কি সেফ? না, মানে বলছিলাম যে...’ কথা বলতে বলতে নিজের ডান হাতটা টেবিলের ওপর থেকে উঠে এসে ছোয় চোখের নীচে পড়া কালশিটেটায়... ব্যথাটা এখনও রয়েছে ওখানটায়... হয়তো সময়ের সাথে দাগ মুছে যাবে ঠিকই... কিন্তু বুকের মধ্যের দাগটা? সেটা কি কখনও মুছবে? সম্পর্কের ডাকটা তুমি থেকে তুইতে বদলে গেলেও... আর কালকের ঘটনাটা? সেটারই বা কি ব্যাখ্যা? কে ছিল ওখানে? পৃথাকি জানে সেটা? নাকি জানে না? সব গুলিয়ে যায় সুশান্তের মাথার মধ্যে... কোন সঠিক উত্তর খুঁজে পায় না সে হাজার ভেবেও... গতকাল থেকে ক্রমাগত সে ভেবেই চলেছে এটাকে নিয়ে, কিন্তু এখন অবধি তার কোন সদুত্তর সে বের করতে পারে নি...

সুশান্তের কথা শেষ করতে দেয় না পৃথা, ফ্ল্যাটের কথা উঠতেই তার মুখের রঙ কেমন যেন বদলে যায়... সেখানে যেন হাজারটা রামধনূ খেলা করতে শুরু করে... উজ্জল হয়ে ওঠে পুরো মুখটা... হাসি মুখে বলে সে... ‘দুশো শতাংশ সেফ... তুই এ নিয়ে কিছু ভাবিস না...’ বলেই তাকায় সুশান্তের কাপের দিকে, ততক্ষনে কথায় কথায় সুশান্তেরও কফি খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছে, তাই ঝট করে উঠে দাঁড়ায় পৃথা... আর বেশি ওকে এই ব্যাপারটা নিয়ে ময়না তদন্ত করতে দেওয়া উচিত হবে মনে মনে করে না সে... ব্যাগ খুলে টাকা বের করে টেবিলের ওপরে রেখে দিয়ে বলে, ‘নে... আর বসে থাকতে হবে না, এবার চল, যাওয়া যাক... আমাকেও ফিরতে হবে...’ ইচ্ছা করেই প্রসঙ্গের ইতি টানতে চায় সে... নতুন করে আর অপ্রস্তুত হতে রাজি নয় পৃথা।

পৃথাকে টাকা দিতে দেখে হাঁ হাঁ করে ওঠে সে, ‘আরে তুই পেমেন্ট করছিস কেন?’

‘তো? আমি তোকে ডেকে এনেছি, তুই নস... তাই আমি পেমেন্ট করবো, যেদিন তুই আমাকে নিয়ে আসবি সেদিন তুই দিবি... সিম্পল্‌...’ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে ওঠে পৃথা।

আর কথা বাড়ায় না সুশান্ত... এতদিনে বুঝে গিয়েছে, এই মেয়ের সাথে তার পেরে ওঠা সাধ্য নয়... তাই হাল ছেড়ে দেয়... ওরা দুজনেই বেরিয়ে আসে সিসিডি থেকে... পৃথা এদিক ওদিক মুখ তুলতেই রাস্তার উল্টো দিক থেকে ইসমাইল চেঁচিয়ে বলে, ‘এই যে ম্যাডাম, এখানে, আপনি দাঁড়ান, আমি গাড়ি ঘুরিয়ে আসছি...’

পৃথা, সুশান্তের সাথে ফুটপাতে এসে দাঁড়ায়... সুশান্ত বলে, ‘আমি বরং এখান থেকে চলে যাবো, তোকে আর আমার সাথে যেতে হবে না, তোর রাস্তাটা তো একেবারে উল্টোদিকে... তুই বরং চলে যা...’

‘ঠিক... আমার পথ তোর উল্টো দিকেই বটে’, অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে পৃথা... যাতে সুশান্তর কানে না পৌছায়, সেই ভাবে...

গাড়িটা ঘুরিয়ে ওর কাছে আসতে সুশান্তই এগিয়ে গিয়ে পৃথার জন্য দরজাটা খুলে ধরে... পৃথা গাড়ির মধ্যে উঠে বসলে, দরজাটা ঠেলে বন্ধ করে দিয়ে জানলা কাছে মুখটা এনে নীচু স্বরে বলে সে, ‘একটা অনুরোধ করবো... রাখবি?’

চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকায় পৃথা সুশান্তের দিকে...

একটু ইতস্থত করে কথাটা বলার আগে, তারপর গলা নামিয়ে বলে সে, ‘মৌসুমীকে গতকালকের ব্যাপারে কিছু বলিস না...’

তাড়াতাড়ি হাত তুলে সুশান্তের হাতটা ধরে নেয় পৃথা... ‘ছি ছি... তুই ভাবলি কি করে যে এসব আমি মৌসুমীকে বলবো... ডোন্ট ওয়োরি... কেউই জানবে না... আই প্রমিস...’

ম্লান হাসে সুশান্ত... ‘থ্যাঙ্কস্‌’... বলে সোজা হয়ে দাঁড়ায়... ইসমাইল হুস করে গাড়ি চালিয়ে ওর সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়... যতক্ষন গাড়িটা দেখা যায়, সেই দিকেই চুপ করে তাকিয়ে থাকে সে, মনের মধ্যে লক্ষ প্রশ্ন নিয়ে।

ক্রমশ...
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
#99
বেচারা সুশান্তের কপালে কি আছে কে জানে। তবে একটা অন্য রকম গন্ধ পাচ্ছি। আবার ভুল ও হতে পারে।
Like Reply
৩৩।।


বেশ ভালোই বৃষ্টি নেমেছে... বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আজ প্রায় সারাটা দিনই অঝোর ধারায় ঝরে চলেছে... এটা নাকি নিম্নচাপের বৃষ্টি, তাই হয়তো বেশ কিছুদিন টানা চলবে... অন্য সময় হলে কি হতো জানে না সে, বাড়ি ফিরতে নিশ্চয়ই খুব অসুবিধায় পড়তে হতো, কিন্তু এখন পৃথা গাড়িতেই ফেরে, তাই বৃষ্টি পড়া নিয়ে আর তার কোন দুশ্চিন্তা হয় না আজকাল।

অফিস থেকে প্রায় উড়তে উড়তে ফিরেছে পৃথা... অফিসেও সারাদিন কাজে মন দিতে পারে নি... আজ সকালেই নিজেকে ভালো করে পরিষ্কার করে স্নান সেরেছিল, মাথায় শ্যাম্পু করেছিল প্রায় দিন চারেক পর... প্রায় রোজই শ্যাম্পু করে চুলে সে, কিন্তু শরীর খারাপের ক’দিন আর মাথায় সাবান লাগায় না, কি করবে, মায়ের বারণ যে... সেই ভাবেই বড় হয়েছে।

আজ সে অফিসে ট্রাউজার পরে গিয়েছিল, গায়ে একটা ট্যাঙ্ক টপ আর তার সাথে পাতলা শাগ চাপিয়ে নিয়েছিল নিজের লোভনীয় বুকদুটোকে লোকচক্ষুর সামনে থেকে আড়াল করার প্রচেষ্টায়... অফিসে তো সবাই তাকে খুব খেঁপাচ্ছিল, ডেটিং আছে বলে, ও শুধু মনে মনে হেসেছে... হুম... ডেটিংই বটে... আজ দীর্ঘ দিন বাদে সে নিজেকে উজাড় করে দেবে তার সব থেকে প্রিয় মানুষটার কাছে... মিশে যাবে ওই কায়াহীন অস্তত্বটার বুকের মধ্যে... যত ভেবেছে ততই ভিজে গিয়েছে সে... ক্ষণে ক্ষণে রসক্ষরণে ভিজে গিয়েছে তার প্যান্টির ওই বিশেষ জায়গাটা... তাই অফিস থেকে বেরুবার আগে ব্যাগের মধ্যে রাখা ভি-ওয়াশ দিয়ে নিজের যোনিটাকে ধুয়ে নিতে ভোলেনি...

আজ কি ভিষন হাল্কা লাগছে নিজেকে পৃথার... আর সেই সাথে পেটের মধ্যে কেমন যেন হাজারটা প্রজাপতি বিনবিন করে উড়ে বেড়াচ্ছে সর্বক্ষন... আজ সে জীবনের প্রথমবার মিলিত হবে, সেটা নয়... কিন্তু আগের আর আজকের মধ্যে বিস্তর ফারাক... প্রথমবারেরটা ছিল অজাচিত, নিছক মজা করার ছলে, আর দ্বিতীয়বারের যেটা ঘটেছিল, সেখানে সেটা এতটাই আকস্মিক, যে ভালো করে উপলব্ধি করার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল সমস্ত ব্যাপারটাই... নিছক ভালো লাগাটুকুও তৈরী হওয়ার আগে... তাই আজকে যদি কিছু হয়, সেটা হবে তার জীবনের একটা বৈশিষ্টপূর্ণ ঘটনা... আর সেইটার জন্যই তার অধীর অপেক্ষা... যত সময় গড়িয়েছে, ততই উতলা হয়ে উঠেছে তার মন... বার বার ঘড়ির কাটার দিকে নজর দিয়েছে সে... অপেক্ষা করেছে কখন সে বাড়ি ফিরতে পারবে সেই আশায়... আজ সে ফেরার পথে গাড়ির মধ্যে বসেই মায়ের সাথে যা কথা বলার সেরে নিয়েছে... বাড়ি ফিরে যাতে আর কেউ ডিস্টার্ব করতে পারে তাকে, কোনভাবেই... তারপর সুইচ টিপে বন্ধ করে দিয়েছে মোবাইলটাকে... আজ পৃথিবী একদিকে, আর সে আর দিকে... শুধু তার প্রেমাষ্পদকে সাথে নিয়ে...

অর্নবের সাথে পরিচিত হবার পর সাধারনতঃ আজকাল অফিস থেকে ফিরে বেল টেপে দরজায়, চাবি খুলে ঢোকার প্রয়োজন হয় না, কিন্তু আজ সেটা করে না, চুপিচুপি চাবি ঘোরায় দরজার ফুটোয়... কিন্তু নাঃ... নিরাশ হয় সে... দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধই রয়েছে, চাবি ঘুরিয়ে খোলার উপায় নেই... প্রথম প্রচেষ্টাটা বিফলে যেতে একটু খারাপ লাগে তার ঠিকই, কিন্তু দমে না, নেলপালিশ পরা সরু আঙুল তুলে চাপ দেয় ফ্ল্যাটের কলিং বেলে আলতো ভাবে... টিং টং... কানে ভেসে আসে দরজার ওপারে বেজে ওঠা দরজার ঘন্টি... আজ এই শব্দটাও যেন তার মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত ভালো লাগার রেশ ছড়িয়ে দিচ্ছে... কেন জানে না সে, বুকের মধ্যেটায় কেমন ধক ধক করে ওঠে তার... কেন যে অকারণেই কানের লতিটা গরম হয়ে উঠছে আজ দরজাটার সামনে দাঁড়িয়ে... ভাবতেই কেমন লজ্জা ঘিরে ধরে মুখটায়... আরো কি বেশি লাল হয়ে উঠেছে মুখটা? দরজা খোলার অপেক্ষায় দাড়িয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে জুতোটাকে আড়াআড়ি সোজা করে আঁচড় কাটে মেঝেতে...

দরজার পাল্লা খুলে মেলে যায় একপাশে... ধক করে ওঠে পৃথার বুকটা... ঢোক গিলে নেয় ঘরের মধ্যে ঢোকার আগে... অন্য দিনে মাথা সোজা রেখেই সে ঢুকে যেত হয়তো ঘরের মধ্যে, কিন্তু আজ কেন সে কিছুতেই তুলতে পারে না মাথাটা তার? কেন এত লজ্জা লাগছে তার মনের মানুষটার না দেখা চোখে চোখ রাখতে? নাকের পাটাতেও কি লালিমার ছোয়া পড়েছে? সসংকোচে ভাবে পৃথা... দরজার পাশে নিজের পায়ের জুতো খুলে রাখতে রাখতে... তার ওই জায়গাটা আবার ভিজে উঠছে? কি রকম অদ্ভুত অস্বস্থি হয় পৃথার... মন থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে বুকের মধ্যে ভীড় করে আসা সম্ভাব্য আদরের সম্ভাবনাটাকে... প্রথম যেদিন অর্নবকে পেয়েছিল... সেদিন তো কই নিজের এত লজ্জা লাগে নি... ঘটনার স্রোতে গা ভাসিয়ে খুলে ফেলে দিয়েছিল পরনের পোষাক অবলীলায়... অর্নবের চওড়া লোমশ ছাতিতে চেপে ধরেছিল নিজের নরম মুঠিভর বুকদুটোকে... তখন? তখন স্বাভাবিকই তো লেগেছিল তার নিজের আচার আচরণ... তারপর সেই চান করার মুহুর্তে বাথরুমের মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে যখন অর্নবের পৌরষের মুখোমৈথুন করে দিয়েছিল, তখন তো কই, এত লজ্জা মেখে থাকেনি তার আচরণে... তবে আজ কেন বুকের মধ্যে মনে হচ্ছে যেন হাজারটা পায়রা এক সাথে ঝটপট করছে বাইরে মুক্তি পাবার আশায়?

‘তোমার কি শরীরটা খারাপ লাগছে?’ আপন কল্পনায় মজে থাকা পৃথা, ঘাড়ের কাছে অর্নবের গলার স্বরে প্রায় চমকে ওঠে...

‘অ্যাঁ?... কিছু বললে?’ গোলা পায়রার মত ঘাড় বেঁকিয়ে প্রশ্ন করে সে।

‘বলছি, তোমার কি শরীরটা খারাপ? কি ভাবছ বলতো আসার পর থেকে?’ ফিরিয়ে জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

ফর্সা গালদুটো আরো লাল হয়ে ওঠে পৃথার... সে যে আজ পরম মিলনের আশায় বুক বেঁধেছে... ‘কই? কিছু না তো...’ তাড়াতাড়ি উত্তর দেয় সে... তারপর দ্রুত অর্নবের সামনে থেকে সরে যায়, প্রায় দৌড়িয়েই ঢুকে যায় বাথরুমে... অর্নব অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে পৃথার এই ভাবে পালিয়ে যাওয়ার দিকে... এই ক’দিনের দেখা তার তিতিরের ব্যবহারের সাথে আজকে পৃথাকে যেন মেলাতে অসুবিধা হয় অর্নবের... কি হলো মেয়েটার? মনে মনে ভাবে সে।

বাথরুমে ঢুকে আলোটা জ্বেলে ছিটকিনিটা আটকে দেয় দরজার... সাধারনতঃ অন্য দিন দরজাটা সে ভিজিয়েই দেয় বাথরুমে ঢুকে, লক করার দরকার পড়ে না... কিন্তু আজ বড্ডো লজ্জা করছে দরজা খুলে রাখতে...

বাথরুমের বেসিনের ওপরে রাখা আয়নার মধ্যে দিয়ে নিজের পানে তাকায়... তাকিয়ে থাকে প্রায় কয়’এক সেকেন্ড একই ভাবে নিজের প্রতিকৃতির পানে... তারপর জিভ বের করে ভেঙচায় নিজেকে, আয়নার মধ্যে দিয়ে... হেসে ফেলে আয়নার প্রতিফলনে নিজের মুখের বিকৃত মুখাবয়ব দেখে... হাসতে হাসতেই গায়ের থেকে শাগটা খুলে রডে ঝুলিয়ে রাখে... ট্রাউজারের বোতাম খুলে শরীর থেকে নামিয়ে দেয়... সেটারও জায়গা হয় শাগটার পাশে, রডের ওপরে... হাত তুলে এক টানে পরে থাকা ট্যাঙ্ক টপটাও সরিয়ে দেয় সে দেহের থেকে... তারপর ফের আয়নার মধ্যে দিয়ে নিজের শরীরটার দিকে তাকায়... ফর্সা সুঠাম দেহে স্ট্র্যাপহীন প্যাডেড ব্রা আর ছোট্ট একফালি প্যান্টিতে তার শরীরটা যেন কামনার জ্বলন্ত উদাহরণ... শরীরের নিরাবরণ ত্বকে বাথরুমের বৈদ্যুতিক আলো পিছলিয়ে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে... মনে মনে নিজের ত্বকের চিকণতায় কেমন গর্ব অনুভব করে... মুখ নামিয়ে তাকায় নিজের শরীরের দিকে... ভালো করে দেখতে থাকে ব্রায়ের আড়ালে থাকা উন্নত বুক, নির্মেদ পেট, সুগভীর নাভী, পুরুষ্টু উরু, আর সেই দুই উরুর মাঝে প্যান্টির ত্রিকোণাকৃত সাটিনের কাপড়ে আড়ালে থাকা স্ফিত জঙ্ঘা... উমমম... নিজেই নিজেকে দেখতে দেখতে কেমন কামনামেদুর হয়ে ওঠে সে... ডান হাতটা তুলে বোলায় অর্ধনগ্ন গায়ে... পিচ্ছিল দেহের ওপরে হাতটা অবলীলায় ঘুরে বেড়ায় নরম শরীরের এধার থেকে ওধারে... কোমর থেকে দেহটাকে বেঁকিয়ে ধরে সামান্য... আয়নায় প্রতিফলিত হয় প্যান্টি পরিহিত উত্তল নিতম্বের খানিকটা... প্যান্টি তার সেই সুগোল নিতম্বের সবটাকে ঢেকে উঠতে পারে নি... দাবনার খানিকটা মাত্র ঢেকেই ছেড়ে দিয়েছে বাকি অংশটাকে উন্মক্ত করে... সেই উন্মক্ত অংশটার ফর্সা চামড়ার সাথে প্যান্টির গাঢ় রঙের অদ্ভুত সুন্দর বৈপরিত্য... পৃথা মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে বাঁ হাতটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে রাখে নিতম্বের ওপরে... আলতো করে হাত বোলায় সেখানটায়... তারপর হাতের চাপে একটু নাড়া দেয়... দুলে ওঠে নিতম্বের দাবনাটা ওই সামান্য চাপেই... উমমম... ভালো লাগার অভিব্যক্তি বেরিয়ে আসে পৃথার ঠোঁটের ফাঁক গলে...

সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাতের আঙুল গলিয়ে দেয় প্যান্টির ব্যান্ডের মধ্যে... এক লহমায় সেটিকে খুলে নামিয়ে দেয় শরীর থেকে... পুরুষ্ট দুই থাইয়ের মাঝে হাল্কা কালো লোমে ঢাকা ফর্সা যোনিদেশ প্রস্ফুটিত হয় আয়নার ভেতর দিয়ে চোখের সম্নুখে... ডান হাতের চেটোটা রাখে... হাত বোলায় নরম যোনিকেশে... সিরসির করে ওঠে নিজের শরীরটা আপনা থেকে... পা দুটোকে সামান্য ফাঁক করে দেয় সে... হাতটাকে নামিয়ে দেয় দুই উরুর সন্ধিস্থলে একেবারে... মুঠোর মধ্যে চলে আসে পুরো যোনিটাই... হাল্কা মুঠোয় রেখে চাপ দেয়... আঙুলে শরীর নিসৃত দেহরস লেগে যায়... পরোয়া করে না... আয়নার মধ্যে দিয়ে তাকায় নিজের জঙ্ঘার দিকে... মনে মনে ভাবে, এই ভাবেই কি মুঠোয় ধরবে অর্নব আজকে এটা? ভাবতেই যেন একটা শিহরণ বয়ে যায় তার সারা শরীর বেয়ে... হাতের লোমে কাঁটা দেয় কেমন... চোখ বন্ধ করে নেয় সে... মনে মনে কল্পনা করার চেষ্টা করে এই মুহুর্তে যেন তার হাত নয়, ওটা অর্নবের হাত... ইশশশশ... চাপা শিৎকার বেরিয়ে আসে তার মুখ থেকে... মুঠো করা হাতের একটা আঙুল তুলে ছোঁয়া দেয় যোনির মুখটায়... আহহহহ... সিরসির করে ওঠে তার শরীরটা ফের... ইশশশ... আরো যেন রস বেরুচ্ছে ওখানটা দিয়ে... অনুভব করে পৃথা... হাতের আঙুলে রসের পরিমান বেড়ে যাওয়া উপলব্ধি করে সে...

হাতটা যোনির ওপর থেকে চট করে সরিয়ে বুকের ওপর থেকে ব্রাটা খুলে ফেলে দেয় পাশে... নিমেশে ব্রা মুক্ত হয়ে যেন চলকে ওঠে দুটো সুগঠিত মুঠিভর বুকের মাংসপিন্ড... মুখ নামিয়ে তাকায় পৃথা নিজের বুকের দিকে... উত্তেজিত হয়ে বুকের বোঁটাগুলো কি রকম উঁচিয়ে রয়েছে... আঙুলের বেড়ে চেপে ধরে ইশৎ লালচে বাদামী রঙের শক্ত হয়ে ওঠা বোঁটাদুটোকে... আলতো টানে টেনে ধরে বুকের থেকে... ইশশশশ... শরীরটা কেমন করে যেন এই ভাবে টান দিতে... মুঠোয় কাঁচিয়ে ধরে দুটো নরম স্তনকেই নিজের দুই হাতের মুঠোয়... চাপ দেয়... চটকায়... শিহরিত হয় শরীর... উমমম... মৃদু শিৎকার করে ওঠে আয়না ভেতর দিয়ে মুঠোয় ধরে রাখা বুকের দিকে তাকিয়ে... আহহহহ... এই ভাবেই হয়তো অর্নব ওর বুক গুলো নিয়ে খেলা করবে... টিপবে ওর কড়া হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে... উফফফ... চোখ বন্ধ করে ফেলে এই কথা ভেবেই, আমেজে... সড়সড় করে ওঠে যোনির ভেতরটা বড্ডো... ডান হাতটাকে বুকের ওপর থেকে নামিয়ে ফের মুঠো করে ধরে যোনিটাকে... চাপ দেয় মুঠোয় পুরে... হাতের একটা আঙুল ফের বাড়িয়ে দেয় যোনির মুখের দিকে... ঠেকায় যোনির ঠিক মুখটায় থাকা ভগাঙ্কুরটার ওপরে... উফফফফ মাহহহহ... চাপা গলায় গুঙিয়ে ওঠে আরামে... আঙুলটাকে আরো চেপে ধরে ভগাঙ্কুরটার ওপরে... চক্রাকারে ধীরে ধীরে ঘোরায় সেখানে... পা দুটো যেন আপনা থেকেই আরো খানিকটা সরে গিয়ে মেলে যায় নিজের উরুসন্ধিটা... কোমর ঠেলে খানিক এগিয়ে, বাড়িয়ে ধরে সামনের পানে... বাঁহাতের তালুতে ধরা সুগঠিত স্তনটায় চাপ বাড়ায় সে... মাথা নিচু করে তাকায় নিজের যোনির পানে... আঙুলটাকে ভগঙ্কুর থেকে সরিয়ে রাখে যোনির মুখটায়... তারপর আলতো হাতের চাপে ম্যানিকিওর করা নেলপালিশ রাঙানো আঙুলটা ঢুকিয়ে দেয় নিজের যোনির মধ্যে... উফফফফফ... মাগোওওও... ফের চাপা শিৎকার বেরিয়ে আসে তার মুখ দিয়ে... মনে মনে ছবি আঁকে এই ভাবেই হয়তো অর্নব তার ভগাঙ্কুর নিয়ে খেলা করবে, তারপর তার শক্ত হয়ে ওঠা পৌরষটা ঢুকিয়ে দেবে তার শরীরের মধ্যে... এই ভাবে... ভাবতে ভাবতেই আরো ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয় নিজের আঙুলটাকে... আঙুলের ফাঁক গলে দেহের উষ্ণ রস গড়িয়ে বেরিয়ে আসে চেটোর মধ্যে... বাথরুমের আলো পড়ে হাতের সেই খানটা কেমন চকচক করে ওঠে যেন... আবেশে চোখ যেন বুঝে আসে পৃথার... ফাঁক হয়ে যায় পাতলা ঠোঁটের পাতা... ইশশশশ... কি আরাম... আসতে আসতে হাতের আঙুলটাকে নাড়াতে থাকে যোনির মধ্যে পুরে রেখে... একটু করে বের করেই পরক্ষনেই ফের ঢুকিয়ে দেয় শরীরের আরো গভীরে... মাহহহহ... মুখ থেকে বেরিয়ে আসে আরামে শিৎকার... চাপা স্বরে...

‘করোহহহহ সোনাআআআহহহহ... করোহহহহ...’ ফিসফিস করে বলে ওঠে পৃথা... হাতের আঙুলটার গতি বেড়ে যায় থেকে থেকে... সেই সাথে পুরো শরীরটাকেই নামিয়ে দিতে থাকে হাতের ওপরে... যেন নীচ থেকে আর যোনির মধ্যে তার আঙুল নয়, অর্নবের দৃঢ় পুরুষাঙ্গটাই যাতায়াত করছে রসে মাখামাখি হয়ে... মাথা নামিয়ে সেই দিকে তাকিয়ে থাকে সে... বাঁ হাতটা বুক ছেড়ে খামচে ধরে সামনে থাকা বেসিনের ধারটাকে নিজের দেহের ভার সামলাবার তাগিদে... নিজের শরীরটাকে আরো জোরে জোরে ওঠা নামা করায় নিজের হাতের ওপরে হাতের ছন্দে... গুঁজে গুঁজে দেয় আঙুলটাকে বেশ জোরে জোরে... ‘ইশশশশশ... কি আরাআআআমমম হচ্ছেএএএ...’ ফের ফিসফিসায় পৃথা... দাঁত দিয়ে দাঁত চেপে ধরে রাখে বাথরুমের বাইরে যাতে তার এই শিৎকার বেরিয়ে না যায়, সেই প্রচেষ্টায়... কিন্তু যে ভাবে থেকে থেকে ঝিনিক দিয়ে উঠছে যোনিটা... উফফফফ... এই সুখটা কতক্ষন সে চেপে রাখতে পারবে, সেটারই ভয় পায় ... আরামে মাথা হেলিয়ে দেয় পেছনে... বন্ধ করে নেয় চোখ দুটো চেপে... ‘ওহহহ... হুমমম... আসছেএএএএ... আর একটু করো না সোনাআআআহহহহ...’ ফের ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে নিজেকে... স্বমৈথুনের তাড়শে... তলপেটটা যে ভাবে কাঁপছে তার, আর বেশিক্ষন নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব হবে না বোঝে পৃথা... আরো গতি বাড়িয়ে দেয় আঙুলের... বেসিনের ধারটা খামচে ধরে এবার প্রায় প্রবল গতিতে চালাতে থাকে হাতটাকে নিজের যোনির মধ্যে... আজ সে সেফ... হয়তো তার দেহের মধ্যেই অর্নব ওর তপ্ত লাভার মত বীর্য ঢেলে দেবে... ভরিয়ে দেবে তার এই যোনিটা... চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছবিতে দেখা অর্নবের ভুরুর ওপরের কাটা দাগটা... আর সেটা মনে পড়তেই মাথার মধ্যে হাজার ওয়াটের বিদ্যুৎ খেলে যায় যেন পৃথার... নাক কান দিয়ে গরম হল্কা বেরিয়ে আসতে থাকে... যোনির দেওয়ালে থাকা শিরা উপশিরা গুলো ঘসা খায় আঙুলের সাথে... কেঁপে ওঠে পুরো শরীরটাই থরথর করে... যোনি দিয়ে প্রায় কামড়ে ধরে নিজের আঙুলটাকে যথাসম্ভব... ‘ওহহহ মাআআহহহহ... উহহহ...’ এবার আর চাপা নয়... প্রবল শিৎকার দিয়ে ওঠে সে... যোনিটা বার দুয়েক খাবি খেয়ে ওঠে হাতের চেটোর মধ্যে... একরাশ ঘন আঠালো ফেনিত রস আঙুল বেয়ে বেরিয়ে এসে ভরিয়ে তোলে হাতের তালু... কিছুটা রস ছিটকে গিয়ে লাগে মসৃণ সুঠাম থাইয়ের ওপরে...

‘তুমি ঠিক আছো?’ বাইরে থেকে অর্নবের উদ্বিগ্ন গলার স্বর ভেসে আসে...

রসঙ্খলনে ক্লান্ত পৃথা প্রথমে উত্তর দিতে পারে না... হাতটাকে ওই ভাবে যোনির মধ্যে রেখেই হাঁফাতে থাকে অন্য হাতে বেসিনটাকে ধরে... মাথাটা ঝুলে যায় বুকের ওপরে... ঝরে পড়ে মাথার খুলে রাখা ঝাঁকড়া চুলের রাশি, মুখের চারপাশ... যেন জাল বিস্তার করে তার মুকটাই ঢেকে দিতে চায় তারা...

‘কি হোলো, তিতির... তুমি ঠিক আছো?’ ফের প্রশ্ন করে অর্নবে... গলার স্বরে উদ্বেগ স্পষ্ট বোঝা যায়...

ধীরে ধীরে মাথা তুলে আয়নার মধ্যে দিয়ে তাকায় নিজের দিকে পৃথা... চুলগুলো আলুথালু হয়ে একটা অদ্ভুত চেহারা তৈরী হয়েছে যেন তার... চোখগুলো লাল, কপালের ওপরে ঘামের প্রলেপ... বড় বড় নিঃশ্বাস নেবার ফলে ফুলে ফুলে উঠতে থাকা নাকের পাটা... গলাটা ভেতরটাও শুকিয়ে গিয়েছে একেবারে... অনেক কষ্টে গলা খেকারি দিয়ে বলে ওঠে সে... ‘হ্যা... হ্যা... এই তো... ঠিক আছি আমি...’

‘না কেমন যেন জোরে চিৎকার করে উঠলে, তাই ভাবলাম...’ দরজার ওপাশ থেকে ফের প্রশ্ন করে অর্নব।

অর্নবের উদ্বিগ্ন স্বরে মৃদু হেসে ফেলে পৃথা... মনে মনে বলে, তুমি তো আমায় আরাম দিচ্ছিলে সোনা... চিৎকার করবো না? মুখে বলে, ‘না, ও কিছু না... আমি ঠিক আছি...’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়ায়... যোনির মধ্যে থাকা আঙুলটাকে নিজের নাকের কাছে এনে গন্ধ শোঁকে... তারপর শাওয়ারের কলটা খুলে জলের নীচে গিয়ে দেহটাকে মেলে দেয়... সুঠাম শরীরটা বেয়ে জলের ধারা নেবে যায় মেঝের দিকে... একটু একটু করে শান্ত হতে থাকে উতপ্ত দেহটা...

ক্রমশ... 
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply




Users browsing this thread: