Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.53 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance বজ্রাঘাত (সমাপ্ত)
#61
Wow! Fantastic updates. Please continue.
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
How to give repu?can anyone tell me.I just opened a new acc
Like Reply
#63
Akono majhe akta din...ar para jai na...
Like Reply
#64
Thumbs Up 
(28-12-2018, 09:40 AM)Odrisho balok Wrote: How to give repu?can anyone tell me.I just opened a new acc

Go to the post of the writer you want give reps to... click on the "rate" button (thumbs up sign)
Like Reply
#65
(29-12-2018, 09:58 PM)naag.champa Wrote: Go to the post of the writer you want give reps to... click on the "rate" button (thumbs up sign)

Thanks for information
Like Reply
#66
Hopefully kal ei somoi update pae. Jabo amra...
Like Reply
#67
২৫।।


খাটের ব্যাকরেস্টে বালিশটা রেখে হেলান দিয়ে বসে পৃথা... ‘আমার গায়ে একটু চাঁদরটা টেনে দেবে?’ অর্নবের উদ্দেশ্যে বলে সে।

অর্নব চাদরটা পৃথার গায়ে টেনে দিতে গিয়ে খেয়াল করে চোখদুটো ফের একটু লালচে হয়ে উঠেছে... দেখে উদবিগ্ন হয়... পৃথার কপালে হাত রেখে বলে ওঠে, ‘দেখছো... তোমার দুষ্টুমীর জন্য ফের মনে হচ্ছে জ্বর আসছে... তখন বারণ করেছিলাম ওই রকম অতক্ষন বাথরুমে আদুর গায়ে না থাকতে...’

অর্নব তার প্রতি এতটা কন্সার্নড দেখে খুশি হয় মনে মনে পৃথা, ম্লান হেসে বলে, ‘আহা... সব দোষ আমার, না? আর বাবুর যে আরামে চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেটার বেলায়?’

‘তুমি দেখেছিলে যে আমার চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কি না? হু?’ ফিরিয়ে প্রশ্ন করে অর্নব।

‘না মশাই... এ সব চোখে দেখতে লাগে না... বোঝা যায়... বুঝেছ?’ হেসে উত্তর দেয় পৃথা।

‘হু, বুঝলাম...’ বলে অর্নব।

‘কি বুঝেছ?’ জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘বুঝলাম যে আমার তিতির সব থেকে বুদ্ধিমতি... মাথার মধ্যে গিজগিজ করছে রাজ্যের দুষ্টুমী...’ হেসে উত্তর দেয় অর্নব... তারপর বলে, ‘তুমি চুপটি করে শুয়ে থাকো... আমি তোমার খাবারটা নিয়ে আসি... এবার না খেলে অসুধ খেতে দেরী হয়ে যাবে...’ বলে আর দাঁড়ায় না, কিচেনের দিকে চলে যায়... পৃথাও বোঝে ঘরে অর্নব আর নেই, তাই চোখ বন্ধ করে চুপ করে শুয়ে থাকে।

কিছুক্ষন আগেই যেটা ঘটল সেটাই একা বিছানায় চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকে পৃথা... তাকে পাঁজাকোলা করে বাথরুম থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে বিছানার ওপরে শুইয়ে দিয়েছিল অর্নব... ওর তাকে এই ভাবে সন্তর্পনে বিছানায় শুইয়ে দেওয়ার মধ্যেও যেন অফুরাণ ভালোবাসা মেখে ছিল, ছিল তার প্রতি সতর্কতা, যত্ন আর সেই সাথে প্রগাঢ় ভালোবাসা... কত যত্নে আর সাবধানে ধীরে ধীরে নামিয়ে দিয়েছিল তাকে বিছানায় ও... মনের মধ্যে ভালো লাগাটা যেন আরো বেশি করে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার... কি করেই না ভালো লেগে পারে? সে ভুল করে নি... এটা ঠিক যে প্রথম যখন সে ছবিতে অর্নবকে দেখে, তখন তাকে দেখে যেটা এসেছিল মনের মধ্যে, সেটা ক্ষনিকের মুগ্ধতা, নিছক একটা আকর্ষণ... কিন্তু সেটা কখন যে একটু একটু করে ভালোবাসায় বদলে গেল তা সে নিজেই হয়তো জানে না... সেটা সে প্রথম উপলব্ধি করে যেদিন প্রণববাবুর কাছ থেকে অর্নবের কথা শোনে... অর্নবের ওই পরিণতি শুনে বুকের মধ্যেটায় কেমন ভেঙে চুড়ে গুঁড়িয়ে যাচ্ছিল তার... একটা চাপা কান্না বুকের মধ্যে থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছিল, তাও কার জন্য, না যে লোকটিকে ছবিতে ছাড়া এক লহমার জন্যও কখনও সামনে চোখের দেখাও দেখিনি... সেদিন রাতে প্রণববাবু চলে যাবার পর বিছানায় শুয়ে সারা রাত শুধু কেঁদেছিল সে... একটুকরো খাবারও দাঁতে কাঁটতে পারে নি... মনে হচ্ছিল যেন একটা ভালো লাগা শুরু হবার আগেই ভদ্রলোক এসে টেনে হিঁচড়ে তাকে বাস্তবের মাটিতে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলেন... হ্যা... সেদিনই ও বুঝেছিল অর্নবকে সত্যি সত্যিই মনে মনে ভালোবেসে ফেলেছিল, তার ভালোবাসাটা শুধু মাত্র ছবি দেখে মোহো নয়, কিন্তু ভালোবেসেও যে সে ভালোবাসা পেলো না। সব বুঝেও মন তার কিছুতেই মানতে চাইছিল না... কেন জানে না সে, মনের কোথাও, কোন এক কোনায় তার তখনও বিশ্বাস ছিল যে এতটা অভাগী সে হতে পারে না... জীবনে কোনদিন সে কখনও কারুর থেকে এতটুকুও আঘাত পায় নি... ভিষন আদরে বড় হয়েছে... বাড়ীর সকলের নয়নের মণি ছিল... তার বাবা, মা, আত্মীয় সজন, সবাই তিতির বলতে অজ্ঞান... আর সেই পৃথা জীবনে প্রথমবার কারুকে ভালোবাসলো আর সেটা সে এই ভাবে হারালো? এটা হয় না... হতে পারে না... সে যে কারুকে কখনও কোনদিনও জ্ঞাতার্থে আঘাত করে নি... তাহলে ভগবান কেন তাকে এ সাজা দেবে? না, মানতে পারেনি সে... আর পরবর্তি কালে একটু একটু করে উপলব্ধি করতে শুরু করেছিল যে এই ফ্ল্যাটে কারুর উপস্থিতি... প্রথম প্রথম যে একেবারে ভয় পায় নি তা নয়... পেয়েছে... ভিষন ভাবেই পেয়েছে... ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতো সে একা, একদম একা ফ্ল্যাটে থাকতে, কিন্তু মুখে প্রকাশ করতো না। পরে বুঝল যে, যেই থাকুক, সে তার কোন ক্ষতি চায় না। নিশ্চিন্ত হল পৃথা, বরং বলা যেতে পারে, সেটা বোঝার পর থেকে আরো নিশ্চিন্তে থাকতে শুরু করল সে... সে বুঝেছিল তার বিপদে আপদে এই বিদেহীই হতে পারে তার সাহারা। কিন্তু কি করে বুঝল যে এ আর কেউ না, অর্নব? সেটা বুঝতে পারে গতকাল... শুধু বোঝেই না, একেবারে একশ শতাংশ সুনিশ্চিত হয়... অর্নব ছাড়া তার অসুস্থতায় এই ভাবে সেবা আর কেউ করবে না... তার মনের ভালোবাসা যে ততদিনে প্রশারিত হয়ে গিয়েছে অর্নবের মধ্যেও... তাকে না ভালোবেসে থাকতে পারে অর্নব? নাকি না ভালোবেসে থাকা যায়?

‘কি ভাবেই না হুকুম চালাই লোকটার ওপরে... বেশ করি... চালাবো না কেন শুনি? অর্নব আমার, আমার সব... তার ওপরে আমি যেমন খুশি হুকুম চালাবো... ইশ... শুনবে না বললেই হবে নাকি? দেখি কেমন না বলে?’... ভাবে মনে মনে... এ ঘরে ওকে নিয়ে আসার পর ওকে অর্নব বলেছিল তাড়াতাড়ি গায়ে কিছু পড়ে নিতে, নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে... উত্তরে চুপ করে বসেছিল সে বিছানার ওপরে। ওকে এই ভাবে চুপ করে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব, ‘কি হোলো? চুপ করে গেলে যে? বলছি গায়ে কিছু পড়ে নাও... ঠান্ডা লেগে যাবে তো!’

গম্ভীর হয়ে উত্তর দিয়েছিল পৃথা, ‘না এনে দিলে কি করে পড়বো?’

পৃথার কথায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল অর্নব, ‘ও, হ্যা, তাই তো... তা কি পড়বে?’

‘তুমি যে ভাবে আমাকে দেখতে চাও, সেটাই...’ গলায় গাম্ভীর্য ধরে রেখে উত্তর দিয়েছিল পৃথা।

আলমারী খুলে পৃথার একটা ফ্রেশ গোল গলার গেঞ্জি আর পাতলা ঢলা সর্স্টস্‌ এনে তুলে ধরে বলেছিল, ‘নাও, এই দুটো পড়ে ফেলো... আমি...’

‘জানো না আমি অসুস্থ... না পড়িয়ে দিলে পড়বো কি করে?’ গম্ভীর গলায় বলেছিল পৃথা, বলেছিল আর মনে মনে উপভোগ করছিল অর্নবের অবস্থার।

‘আ...আমি পড়াবো?’ মৃদু গলায় বলে অর্নব।

‘হুম... আর কে আছে ঘরে? শুনি?’ সোজা সাপটা জবাব আসে পৃথার থেকে।

অর্নবের বুঝতে বাকি থাকে না, পৃথার মাথায় তখনও বদমাইশী গিজগিজ করছে, তাই আর কথা না বাড়িয়ে বলেছিল, ‘বুঝলাম, তা মহারানীর একটু উঠে দাঁড়ানো হোক...’

তড়াক্‌ করে লাফ দিয়ে উঠে দাড়িয়েছিল পৃথা বিছানার ওপরে... নিজের সম্পূর্ণ নগ্ন শরীরটাকে অর্নবের চোখের সামনে দোলাতে শুরু করে দিয়েছিলে ডাইনে বাঁয়ে... মুখের ওপরে লেগেছিল বিজয়ীনির হাসি।

অর্নব সেটা দেখে মুচকি হেসেছিল কি না জানে না পৃথা, তার ভালো লেগেছিল কিনা, সেটাও সে বলতে পারবে না হয়তো, কিন্তু ওর এই ধরনের ছেলেমানুষী লোকটা যে ভাবে বর্দাস্ত করে, ওর সব রকম আবদার যে ভাবে মেনে নিচ্ছে, তাতে পৃথা যে মনে মনে ভিষন খুশি, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। গেঞ্জী পড়িয়ে, সর্স্টস্‌ পড়াবার পর পৃথার ইচ্ছা ছিল একটু আদর করে তার অর্নবকে, কিন্তু সেটা বোধহয় আগেই আন্দাজ করেছিল অর্নব, তাই তাড়াতাড়ি করে তাকে বিছানায় শুইয়ে চাঁদর ঢেকে দিয়ে খাবার আনার বাহানায় পালিয়ে গিয়েছিল কিচেনের দিকে... খিল খিল করে হেসে উঠেছিল পৃথা, অর্নবের ওই ভাবে পালিয়ে যাওয়া দেখে... মনে পড়তেই মিচকি হাসতে থাকে সে।

‘খাবার হাজির...’ অর্নবের গলার স্বরে ছেদ পড়ে পৃথার ভাবনায়... ‘কি ভেবে মিচকি মিচকি হাঁসা হচ্ছে শুনি?’

‘ওহঃ... এনেছ?’ চোখ খুলে তাকায় পৃথা... ‘একি? শুধু আমার এনেছ কেন? তোমার?’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করে সে, বিছানার ওপরে কাগজ পেতে রেখে তার ওপরে একটা প্লেটে খানিকটা ভাত আর ধোঁয়া উঠতে থাকা মাংসের স্ট্যুএর বাটি দেখে... মনে মনে খুশি হয় কি সুন্দর ভাবে গরম করে তার খাবারটা নিয়ে এসেছে বলে।

‘আর জেদাজেদি করবে না এখন... চুপচাপ লক্ষ্মী মেয়ের মত আগে তুমি খেয়ে নেবে, তারপর আমি খাবো... আমার খাওয়া নিয়ে তোমাকে এখন ভাবতে হবে না... বুঝছ? তোমার খাওয়া হলে অসুধ খেতে হবে, সেটা মাথায় রেখো...’ অর্নবের গলার স্বরে একটা বেশ অভিভাকত্ব মিশে থাকার দরুন আর কথা বাড়ায় না পৃথা... বাধ্য মেয়ে মত মাথা নিচু করে বলে, ‘আচ্ছা, দাও...’

‘দাও আবার কি? দিয়েছি তো... খেতে শুরু করো...’ বলে অর্নব।

ওই ভাবেই চুপ করে বসে থাকে খাটের ওপরে বাবু হয়ে পেছনের বালিশে হেলান দিয়ে... উত্তর দেয় না কোন।

‘কি হলো আবার... খাও...’ তাড়া দেয় পৃথাকে অর্নব।

মুখটা ভার করে বলে পৃথা, ‘আমি খাবো?’

‘হ্যা... তুমিই তো খাবে, আর কে খাবে আবার?’ ঠিক ঠাওর করতে পারে না অর্নব পৃথার কথার।

ফের চুপ করে বসে থাকে পৃথা হাত গুটিয়ে।

তাড়া লাগায় অর্নব, ‘আরে ঠান্ডা হয়ে যাবে তো খাবারটা... খেতে শুরু করো...’

মুখের ভারটাকে ধরে রেখে আদুরে সুরে বলে ওঠে পৃথা, ‘আমি তো অসুস্থ... নিজের হাতে খাবো কি করে?’

‘তিতির... তুমি এতটাও অসুস্থ নও যে নিজের হাতে খেতে পারবে না... এটা কি ঠিক হচ্ছে?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

গাল ভারী করে পৃথা বলে, ‘আমার একটু হোক কি বেশী, শরীর খারাপ হলেই মা খাইয়ে দিতো আমাকে... ভাল্লাগে না...’

‘হু... বুঝলাম গাল ভারী করার কারণটা... আদর দিয়ে দিয়ে মেয়েকে কি করেছে বাবা মা, সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে... তা আমাকে এখন কি করতে হবে শুনি? খাইয়ে দিতে হবে, তাই তো?’ বলে ওঠে অর্নব।

ঢকঢক করে ঘাড় নাড়ে পৃথা... তারপর ঘাড় বেঁকিয়ে প্রশ্ন করে, ‘আমাকে আদর দিয়ে বাবা মা কি করেছে? হু?’

‘রীতিমত প্যাম্পার করেছে... এ ছাড়া আর কি?’ বলে অর্নব... উঠে আসে বিছানায় পৃথার পাশে।

‘ইশ... তুমি জানো না... আমি বাপীর প্রিন্সেস... আর বাপী আমার কিং... বুঝেছ? আর মায়ের কাছে আমি এখনও সেইইইই ছোট্ট তিতির... তুমি জানো?’ বলতে বলতে চোখ চকচক করে ওঠে পৃথার... ‘না বলবো না, লজ্জা করছে...’ গালের ওপরে লালের আভা পড়ে তার।

‘কি? শুনিই না...’ বলে পৃথার পেছনে রাখা বালিশটাকে একটু ঠিক করে দেয় অর্নব...

ভালো করে হেলান দিয়ে বলে পৃথা, ‘তুমি আমাকে খেঁপাবে না তো পরে?’   

কপালের ওপরে ঝরে পড়া কিছু চুলগুলো সরিয়ে দিতে দিতে বলে অর্নব, ‘না, খেঁপাবো না, বলো...’

‘হি হি... আমি এখনও বাপী আর মায়ের কাছে রোজ আদর খাই... না... ভুল বললাম, এখন না... এখন তো এখানে চলেই এসেছি... কিন্তু জানো, এখনে আসার আগে অবধি... রোজ... রোজ আদর খেতাম... সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমাতে যাবার আগে... নয়তো আমার ঘুমই আসতো না... রোজ শুতে যাবার আগে, মা আমার ঘরে এসে ড্রেস চেঞ্জ করিয়ে দিয়ে, আদর করে দিয়ে গেলে তবে আমি ঘুমাতাম...’ আদুরে গলায় বলে পৃথা।

‘মা ড্রেস চেঞ্জ করিয়ে দিতো মানে?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

‘দিতোই তো... আমিতো শুতে যাবার আগে গা ধুতাম, অবস্য শীত কালে গায়ে জল লাগাতাম না, আমি আবার ভিষন শীতকাতুরে... কিন্তু অন্য সময় শুতে যাবার আগে গা ধুয়ে ঘরে এসে, মা, মা, বলে চেঁচাতাম, মা হাতের কাজ ফেলে আগে আমার কাছে আসতো। তারপর আমি চুপ করে বসে থাকতাম, আর মা আমাকে ড্রেস পরিয়ে দিয়ে, বিছানা ঠিক করে শুইয়ে দিত, তারপর আদর করে তবে যেতে পারতো ঘর থেকে। বুঝেছ মোশাই... কেমন আদরে মানুষ আমি?’ বলতে বলতে হেলান দেয় অর্নবের দেহের ওপরে... প্রায় ঢুকে যায় ওর বুকের মধ্যে।

‘হু... সে তো দেখতেই পাচ্ছি... মা বাবার দুলালী...’ বলতে বলতে খাবারের প্লেটটা টেনে নেয় সামনে... পৃথা এক মনে তাকিয়ে দেখে কেমন অদ্ভুত ভাবে না দেখা হাতের সাহায্যে তরকারীর সাথে ভাত মাখা হয়ে যাচ্ছে... তারপর গ্রাস তৈরী হয়ে গেল... প্লেট থেকে হাওয়া ভেসে উঠে এলো তার মুখের সামনে... লক্ষ্মী মেয়ের মত হাঁ করে সে... ভাতের গ্রাসটা ঢুকে যায় তার মুখের মধ্যে।

‘কিন্তু... এখন তো আর সে আদর পাবে না... এখন তাহলে কি হবে তিতিরের?’ ফের গ্রাস তৈরী করতে করতে বলে অর্নব।

‘ইশ... কে বলে পাবো না... তুমি আছো না?’ গোলা পায়রার মত ঘাড় বেঁকায় পৃথা।

‘আমি আছি তো কি?’ ফের আরো একটা গ্রাস তুলে মুখের সামনে ধরে অর্নব।

খাবারটা মুখে পুরে উত্তর দেয় পৃথা, ‘তুমি আদর করবে আমাকে... রোজ... তুমি ঘুম পাড়িয়ে দেবে...’ বলতে বলতে মুখ ঘোরায়... মুখটা গুঁজে দেয় অর্নবের অদৃশ্য লোমশ পেশল বুকের মধ্যে... মুখ ঘসে বুকের লোমের ওপরে...

‘ইশশশ... দেখেছ বদমাইশী... এঁটো মুখটা ঘসে দিল আমার গায়ে... কি পাজি রে বাবা...’ বলে ওঠে অর্নব।

হি হি করে হেসে ওঠে পৃথা নিজের দুষ্টুমীতে... মাথাটাকে বুকের ওপরে কাত করে রেখে খেতে থাকে অর্নবের হাত থেকে সে।

ক্রমশ...
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#68
অশরীরী আদর নিচ্ছে তিতির । অপেক্ষায় রইলাম অশরীরী আর তিতিরের পরবর্তীতে কি হয় তা জানার জন্য ।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply
#69
(31-12-2018, 02:16 PM)ronylol Wrote: অশরীরী আদর নিচ্ছে তিতির । অপেক্ষায় রইলাম অশরীরী আর তিতিরের পরবর্তীতে কি হয় তা জানার জন্য ।

Thanks for your comments...

Rep added... Heart Heart
Like Reply
#70
২৬।।


‘এই, বললে না তো আমাকে কেমন দেখাচ্ছে!’... ড্রইং রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে পৃথা। গাঢ় নীল রঙের লম্বা প্রায় পায়ের গোছ অবধি ঝোলা কুর্তি পরনে। কুর্তির বুকের কাছে কমলা সুতোর কাজ করা, সামনে তিনটে বোতাম, যার মধ্যে দুটো খোলা রয়েছে, যেখান দিয়ে শরীরের ফর্সা চামড়ার খানিকটা উঁকি মারছে আর তার সাথে গলায় ঝুলতে থাকা সরু সোনার একটা চেন চিকচিক করছে ঘরের আলোয়... চেনের অংশটা গলার দুই পাশ থেকে বাঁক খেয়ে নেমে হারিয়ে গিয়েছে পরনের কুর্তির বুকের আড়ালে। পুরুষ্টু পায়ের সাথে চেপে বসে আছে কুর্তির বুকের ওপরে থাকা নক্সার রঙের সাথে মেলানো কমলা লেগিংস। অবাধ্য চুলগুলোকে একটা ক্লিপ দিয়ে পেছনে আটকানো... প্রসাধন যতসামান্যই... যতটুকু না করলে নয়... ঠোঁটের ওপরে হাল্কা লিপস্টিকের পরশ, আর কপালের ওপরে দুই ভুরু মাঝে ছোট্ট একটা কমলা রঙের টিপ... এতেই যেন কোন এক মোহিনীর মত ড্রইংরুমের মধ্যে ঢুকলো সে... মুগ্ধ দৃষ্টিতে পৃথার দিকে তাকিয়ে থাকে অর্নব... কে বলবে মেয়েটা আজ সকালেও এত অসুস্থ ছিল!

‘ভালো...’ ছোট্ট করে উত্তর দেয় অর্নব।

গলার স্বরে পৃথা বোঝে এখন অর্নব সোফায় বসে তার দিকেই নিশ্চয় তাকিয়ে রয়েছে... ওকে দেখছে ভেবে মনে মনে খুশি হয় সে। কিন্তু অর্নবের উত্তরে মোটেও খুশি হয় না পৃথা, ঠোঁট ওল্টায়... ‘শুধু ভালো? ব্যস?’ মনে মনে আরো কিছু শোনার অপেক্ষা করে সে।

‘সুন্দরীকে যতই প্রশংসা করো না কেন, সে প্রশংসা কুলায় না... সেটা জানো না?’ মৃদু গলায় বলে অর্নব।

‘ইশ... সুন্দরী না ছাই... আমাকে তো পেত্নী বলেছিলে সকালে, ভুলে গেছ?’ গাল ফুলে ওঠে তার।

‘আমি?’ আশ্চর্য হয় অর্নব... ‘আমি আবার কখন তোমায় পেত্নী বললাম? এত সাহস আমার আছে নাকি?’ অর্নবের স্বরে মজা মেখে থাকে।

‘বলোনি? তখন বাথরুমের আমাকে চান করাবার সময় বললেনা আমি পেত্নী? এখন কথা ঘোরানো হচ্ছে না?’ বলতে বলতে এগিয়ে যায় সোফার দিকে... হাত বাড়িয়ে খপ করে হাতের মুঠোয় ধরে নেয় অর্নবের গালের ওপরে থাকা লম্বা দাড়ির খানিকটা... নিয়েই টান মারে একটু... ‘আ...আ...আ...’ ব্যথায় কোঁকিয়ে ওঠে অর্নব... দাড়ি ছেড়ে দিয়ে কোমরে হাত রেখে দাঁড়ায় পৃথা।

‘উফ... কি ডাকাত মেয়ে রে বাবা... এই রকম স্যাডিস্ট জানলে...’ বলতে গিয়ে থমকায় অর্নব।

‘কি? আমি স্যাডিস্ট? বোলতে পারলে?’ অভিমানে গাল ভারী হয় পৃথার।

‘এটাকে স্যাডিসিজম্‌ ছাড়া আর কি বলবো? হ্যা? এই ভাবে কেউ দাড়ি টানে?’ নিজের গালে হাত বোলাতে বোলাতে উত্তর দেয় অর্নব।

‘বেশ করবো... আমার অর্নবকে নিয়ে আমি যা খুশি তাই করতে পারি... বুঝেছ?’ কোমরে হাত রেখে বাচ্ছা মেয়ের মত শরীর দোলায় সে।

‘তাহলে আমিও বেশ করেছি পেত্নী বলেছি... পেত্নী কে পেত্নী বলবো না তো কি অপ্সরা বলতে হবে?’ রাগায় অর্নব পৃথাকে।

‘ভালো হবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি... ভূত একটা...’ বলে আবার মুখটা আন্দাজ করে হাত বাড়াতে যায় সে...

তাড়াতাড়ি করে ওর হাতটা নিজের হাতের মধ্যে ধরে ফেলে অর্নব... ‘এই আর নয়... খুব লেগেছে...’ বলে ওকে একটু টান দেয় সামনের পানে হাতটা ধরেই।

নিজের শরীরটাকে নির্দিধায় এগিয়ে দেয় পৃথা... সোফার আরো কাছে এগিয়ে গিয়ে অর্নবের মাথাটাকে ধরে নিজের বুকের ওপরে চেপে ধরে... বলে, ‘ইশ... সরি সোনা... খুব লেগেছে না...’

পৃথার নরম বুকের ছোয়া পেতেই অর্নব নিজেকে তাড়াতাড়ি ওর বুকের ওপর থেকে সরিয়ে নেয় মাথাটা। পৃথাকে টেনে পাশে সোফায় বসায় ও হাতের মুঠোয় তখন শক্ত করে ধরে রাখে ওর হাতটাকে নিজের হাতের মধ্যে। শরীর এলিয়ে দিয়ে অর্নবের অদৃশ্য কাঁধের ওপরে মাথা রাখে পৃথা... ‘আদর খেতে ইচ্ছা করছে ভিষন...’ ফিসফিসিয়ে বলে অর্নবের কানের মধ্যে।

‘সেটা তো সব সময়ই করে চলেছে... কখন করে না? শুনি?’ হেসে উত্তর দেয় অর্নব।

‘উমমম্‌, ইচ্ছা করলে আমি কি করবো?’ আদুরে গলার জবাব আসে পৃথার কাছ থেকে।

‘হুম... সে তো বুঝলাম... কিন্তু একটু পরেই তো তোমার কলিগ আসবে ওর বৌকে নিয়ে, তখন?’ হাতটাকে পৃথার পেছন দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে টেনে নেয় ওকে নিজের বুকের ওপরে... একটু একটু করে নিজের ওপর থেকে সেল্‌ফ কন্ট্রোলটা যে অর্নব হারিয়ে ফেলছে তাতে বোঝার বাকি থাকে না আর।

অর্নবের বুকের মধ্যে আরো সেঁদিয়ে যায় পৃথা, গুনগুনিয়ে বলে, ‘আসুক না, যখন আসবে তখন দেখা যাবে...’ আলতো করে মুখটাকে কাত করে রাখে বুকের ওপরে... কানে শোনে না দেখা শরীরের হৃদ্‌ স্পন্দন... বুকের লোমগুলো আঙুলের ফাঁকে আলতো করে পাকাতে পাকাতে প্রশ্ন করে পৃথা, ‘একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো? কিছু মনে করবে না?’

‘কি কথা? আমি জীবিত না মৃত? সেটা?’ মৃদু হেসে প্রশ্ন করে অর্নব ফিরিয়ে।

অর্নবের হাসি অনুভব করে পৃথা, লজ্জা পায় সে, ‘ইশ্‌, তুমি বুঝলে কি করে আমি কি জিজ্ঞাসা করতে চাইছিলাম?’ বুকের ওপরে আঁচড় কাটতে কাটতে প্রশ্ন করে সে।

‘এত কাছে রয়েছে ছুঁয়ে, আর সেটা বুঝবো না?’ ফের হাসে অর্নব।

‘ইশ্‌, সব বুঝতে পারে যেন আমার কথা...’ পৃথার গলার স্বরে আদর মিশে যায় আরো... ‘বুঝতেই যদি পারো, তাহলে আরো আগে কেন আমার কাছে ধরা দাও নি? এতদিন একা রেখেছ কেন আমাকে? হুম?’

‘ধরা তো আমি কোনদিনই দিতে চাই নি... তুমি তো জোর করে আমাকে ধরে ফেললে...’ অর্নবেরও যেন গলার স্বর ভারী হয়ে আসে।

‘ইশ্‌, ধরা না দিয়ে কোথায় যাবে মশাই... এই তিতিরকে না ভালোবেসে থাকতে পারতে?’ আরো যেন ঢুকে যেতে যায় পৃথা অর্নবের বুকের মাঝে।

‘সেই জন্যই তো যখন ওই ভাবে ডাকলে, আর থাকতে পারি নি সরে, এগিয়ে গিয়ে ধরেছিলাম তোমার হাতটা...’ হাতের বেড় আরো ঘন হয় পৃথার কাঁধের ওপরে।

অর্নবের বুকের ওপর থেকে হাতটা তুলে তার গালের ওপরে রাখে পৃথা, আলতো করে হাত বোলায় অর্নবের গালের ওপরে থাকা নরম লম্বা দাড়ির ওপরে, ‘কই, বললে না তো তুমি...’ পৃথার কথা শেষ হবার আগেই দরজায় বেলের শব্দ হয়... চকিতে দুজনে সোজা হয়ে বসে।

‘যাও... তোমার কলিগ এসেছে বোধহয়... আমিও উঠি...’ বলে ওঠার চেষ্টা করে অর্নব।

তাড়াতাড়ি করে অর্নবের বুকের ওপরে হাত রাখে পৃথা, ‘না... না... তুমি যাবে না... এখানেই থাকবে... আমার পাশে...’

‘আরে পাগলী... আমি তো অন্য ঘরেই থাকবো...’ বোঝাবার চেষ্টা করে অর্নব।

‘না... তুমি অন্য ঘরে নয়... এই ঘরেই থাকবে, আমার কাছে...’ আবদার করে পৃথা।

ফের বেল বাজে দরজায়।

‘আরে যাও... ও বেচারা বাইরে অপেক্ষা করছে, দরজাটা খুলে দাও...’ বলে ওঠে অর্নব।

‘আগে তুমি বলো, এই খানেই আমার পাশে থাকবে... যাবে না...’ ফের আবদার করে ওঠে পৃথা।

হাসে অর্নব... ‘আচ্ছা বাবা আচ্ছা... আমি তোমার পাশেই থাকবো... হয়েছে? এবার তো যাও, দরজাটা খুলে দাও...’

‘না, শুধু পাশে নয়... সারাটা’খন আমাকে ছুঁয়ে থাকবে... বলো থাকবে...’ আদুরে গলায় বলে পৃথা।

‘আচ্ছা, তাই হবে... আমি তোমাকে ছুঁয়েই থাকবো... হয়েছে? এবার তো দরজাটা খোলো...’ হাসে অর্নব পৃথার ছেলেমানুষী দেখে।

অর্নবের অদৃশ্য গলাটা জড়িয়ে ধরে পৃথা, না দেখা দাড়ি ভরা গালটায় চুমু খেয়ে হেসে বলে, ‘সোনা আমার...’ বলে উঠে যায় দরজার দিকে... হাত তুলে এতক্ষন অর্নবের বুকের ওপরে মাথাটা ঘসার ফলে ক্লিপের থেকে বেরিয়ে আসা অবাধ্য খুলে আসা চুলগুলোকে ঠিক করতে করতে... অর্নব সোফায় বসে অপলক তাকিয়ে থাকে পৃথার হেঁটে যাওয়ার দিকে, তাকিয়ে তাকে নির্নিমেশ গাঢ় কুর্তির আড়াল থেকে সুস্পষ্ট ফুটে ওঠা উত্তাল নিতম্বের দোলদুলিয়মান ছন্দের পানে... আজ দুপুরেই বাথরুমের চান করার সময় যে ভাবে উদ্দাম হয়ে উঠেছিল মেয়েটা, রাতের বিছানায় কি ঝড় তুলবে সেটা ভাবতেই রক্তচাপ বেড়ে ওঠে অর্নবের।

.
.

দরজার ইয়েল লকটা তুলে পাল্লাটা খুলে ধরে পৃথা, চৌকাঠের ওপারে দাঁড়িয়ে সুশান্ত... দেখে স্মিত হাসে পৃথা, মাথাটা একটু নেড়ে সম্বোধন করে, ‘হাই...’

‘হাই...’ প্রত্যুত্তর আসে সুশান্তর কাছে থেকে... এদিক ওদিক উঁকি মারে পৃথা, কাউকে খোঁজে, তারপর সুশান্তের দিকে ফিরে প্রশ্ন করে, ‘মৌসুমী আসে নি?’ বলতে বলতে পাশে সরে দাঁড়ায় সে... জায়গা করে দেয় সুশান্তকে ঘরে আসার।

ঘরের ভেতরে ঢুকলে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ফিরে দাঁড়ায় পৃথা, ওর হাতে একটা লাল গোলাপের বোকে তুলে দিয়ে হেসে বলে সুশান্ত, ‘গেট ওয়েল সুন, পৃথা...’

সুশান্ত হাত থেকে ফুলের বোকেটা নিতে নিতে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে পৃথা, ‘বাব্বা, একেবারে ফুল দিয়ে উইশ করছো... আরে বাবা সামান্য তো জ্বর হয়েছিল, তার জন্য আবার ফুল আনার কি দরকার ছিল... আমার তো আর বিরাট কিছু হয় নি...’

‘না, তা না...’ অপ্রস্তুত হাসে সুশান্ত।

‘মৌসুমী আসলো না?’ জিজ্ঞাসা করতে করতে এগিয়ে যায় ড্রইংরুমের সেন্টার টেবিলের দিকে, সেখানে ফুলের বোকেটা রেখে ফিরে খালি ওয়ান সিটার সোফার দিকে ইঙ্গিত করে বসতে ইশারা করে বলে, ‘তোমাকে যে বললাম, ওকেও সাথে করে আনতে, খুব ভালো লাগতো ও এলে।’

‘না, মানে আনলাম না...’ ইতস্থত করে সুশান্ত... ‘কেন... আমি... আমি একা এসেছি বলে তোমার খারাপ লাগছে?’ সোফায় বসতে বসতে উত্তর দেয়... চোখদুটো যেন বারেক ঘুরে যায় পৃথার মাথা থেকে পা অবধি... চোখটা বার বার ঘুরে যায় কুর্তির খোলা দুটো বোতামের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া মাখনের মত মসৃন ফর্সা চামড়াটার ওপরে... এত কাছ থেকে এই প্রথম পৃথাকে দেখছে তা নয়, আগেও বহুবার পৃথাকে দেখেছে সে এতটাই বা কেন এর থেকেও অনেক বেশি কাছ থেকে, অফিসে, কাজের ফাঁকে, কিন্তু তখন তাদের আশেপাশে কারুর না কারুর উপস্থিতি সর্বদাই ছিল, কিন্তু আজ এই ফাঁকা ফ্ল্যাটে দেখার গুরুত্বটা যেন অনন্য... চটক ভাঙে পৃথার কথায়...

‘দূর... আমি কি সেই বললাম? তুমি আমার কলিগ তার ওপরে এত ভালো বন্ধুত্ব আমাদের, সেখানে খারাপ লাগালাগির কি আছে আবার?’ নিজেও সুশান্তের উল্টো দিকের সোফায় বসতে বসতে বলে পৃথা... সোফায় বসে ডান পায়ের ওপরে বাঁ পা’টাকে তুলে দেয়... তারপর কুর্তির নীচটাকে তুলে ভালো করে ঢেকে রাখে নিজের সুঠাম পা’খানি... দুই পাশটায় মাথা ঘোরায় বারেক... মনে মনে খোঁজে তার প্রিয়তমকে... কাঁধের ওপরে ছোঁয়া পায় অদৃশ্য হাতের পরশের... উজ্জল হয়ে ওঠে পৃথার মুখটা... ঘাড়টাকে সামান্য কাত করে নিজের গাল ছোঁয়ায় কাঁধের ওপরে থাকা হাতের পীঠে।

‘এখন কেমন ফিল করছো? প্রশ্ন করে সুশান্ত... তারও চোখে যেন ধরা পড়ে পৃথার হটাৎ বেড়ে যাওয়া মুখের ঔজ্জল্য... একটু দ্বিধাগ্রস্থ সে... এটা কি তবে তার উপস্থিতির কারনেই? মনে মনে নিজেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে প্রশ্নের ফাঁকে।

‘অ্যাঁ? কি বলছো?’ সতর্ক হয় পৃথা... এই ভাবে বাইরের লোকের সামনে এতটা ছেলেমানুষী করা উচিত নয় তার।

‘বলছি হাউ ইয়ু আর ফিলিং নাও...’ পুনরাবৃত্তি করে প্রশ্নের সুশান্ত।

‘ওহ! ফাইন... নো প্রবলেম অ্যাটঅল... ডঃ বসাকের অসুধ দারুন কাজ করেছে, একটু যে উইকনেস নেই সেটা বলবো না, তবে মাচ বেটার... প্রণবদা খুব ভালো একজন ডক্টরকে নিয়ে এসেছিল...’ গড়গড় করে বলে পৃথা।

‘প্রনবদা? কে?’ ভুরু কোঁচকায় সুশান্ত।

‘কেন? আমাদের প্রণব কর্মকার...’ উত্তর দেয় পৃথা। মনে মনে নিজেকেই দোষে সে... আরো সতর্ক হওয়া উচিত... এই ভাবে দুম করে প্রণবদা বলে ফেলা মোটেই উচিত হয় নি তার...

‘ওহ! উনি আবার তোমার দাদাও হয়ে গেছেন দেখছি...’ একটু স্লেশাত্মক ভঙ্গিতেই বলে ওঠে সুশান্ত।

‘না, মানে যতই হোক, উনি বয়োজ্যেষ্ঠ তো, তাই না? সেই হিসাবেই দাদা বললাম আর কি...’ তাড়াতাড়ি সামলাবার চেষ্টা করে পরিস্থিতির।

‘তা হটাৎ করে ওনাকেই কেন ফোন করতে গেলে সকালে? আমাকেও তো করতে পারতে? আমি কি আসতাম না?’ গলার স্বরে একটু ক্ষোভ প্রকাশ পায় সুশান্তের।

‘আরে তা তুমি আসবে না কেন, আমি কি জানি না যে তোমাকে ডাকলেই তুমি আসবে, সেটা নয়, আসলে প্রণববাবুর ফার্স্ট লেটার পি আর তোমার ফার্স্ট লেটার এস, তাই বোধহয় জ্বরের ঘোরে আমি পি দেখে প্রণববাবুকেই কল করে দিয়েছিলাম, আসলে তখন কাকে কি করছি সেটা তো আর মনে করে করি নি, সেটাই হয়ত হবে, বুঝেছ!’ পরিস্থিতি আবার সামলাবার চেষ্টায় পৃথা।

‘তার পরেও তো ফোন করতে পারতে, আমি না ফোন করলে তো জানতেও পারতাম না যে তোমার জ্বর হয়েছে...’ সুশান্তর গলায় ক্ষোভ যেন একটু একটু করে বৃদ্ধি পায়।

‘আরে তা নয়... তখন আমার কি অবস্থা বলো... জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে তখন... কি করে জানাবো তোমায়?’ এবার পৃথাও একটু বিরক্ত হয় সুশান্তের এই ধরনের আতিসজ্যে... ইচ্ছা করে ভিষন অর্নবের হাতটাকে টেনে নিজের হাতের মুঠোয় ধরতে, কিন্তু নিজেকে সামলায় অনেক কষ্টে... ঘাড় কাত করে ফের গাল ঠেকায় অর্নবের হাতের পীঠে... মনের মধ্যে তৈরী হওয়া বিরক্তিটা যেন নিমেশে উবে যায় অর্নবের পরশ পেয়ে।

‘যাক, মিঃ সহায় কি বললেন? ওনাকে ইনফর্ম করেছিলে তো?’ কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা, ওদের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের কথা টেনে আনে প্রসঙ্গে।

‘আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি ঠিকই...’ গলার ক্ষোভ তখন মেখে রয়েছে বোঝা যায়।

‘দেখো... তুমি এটা যে করবে সেটা বলে দিতে হয় না সুশান্ত... তুমি না থাকলে বলো তো এই ভাবে আমি একা এত বড় একটা শহরে থাকতে পারতাম? পারতাম এত সুন্দর একটা ফ্ল্যাট পেতে?’ মনে মনে নিজের কথার আর একটু প্রসারিত করে ভাবে, ‘পারতাম আমার অর্নবকে পেতে? আমার সোনাটাকে...’

‘আমি তো আমার সবটা দিয়ে তোমায় সাহায্য করতে চাই পৃথা, চাই সবসময় তোমার পাশে থাকতে...’ এবার একটু বিগলিত হয়ে ওঠে সুশান্ত... গলার স্বর গাঢ় হয়।

‘তাই তো তোমার দিকে বন্ধুত্বর হাত বাড়িয়ে রেখেছি... তুমি আছো বলেই না আমি নিশ্চিন্তে আছি...’ বলে আর কথা বাড়ায় না পৃথা, বলে ওঠে, ‘যাক... কি খাবে বলো?’

‘না, না, তুমি আবার কি করবে? তোমার শরীর খারাপ... আমার কিছু চাই না...’ বলে ওঠে সুশান্ত।

‘সেকি বললে হয় নাকি? গৃহস্থের অকল্যাণ হবে না? আজ সত্যিই বেশি কিছু অফার করতেও পারবো না, কিন্তু একটু চা তো করে দিতেই পারি... তাই না?... তুমি বরং একটু বোসো... আমি এক্ষুনি দু-কাপ চা করে নিয়ে আসছি...’ বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায় পৃথা।

সুশান্তের চোখটা পৃথার আপদমস্তক শরীরের ওপরে একবার বুলিয়ে যায়... ‘না, না, ছেড়ে দাও না, শুধু শুধু আমার জন্য আবার চা করতে যেতে হবে না...’ মনে মনে চায় যতক্ষন অন্তত রয়েছে সে, শুধু পৃথার সামনেই থাকে... ওই চা করতে যাওয়ার সময়টুকুও চোখের সামনে থেকে হারাতে চায় না যেন।

‘আরে এত কিন্তু কিন্তু করছ কেন? আমরাও তো...’ বলতে গিয়ে থমকায় পৃথায়... তারপর তাড়াতাড়ি নিজেকে শুধরে নিয়ে বলে, ‘মানে, আমিও তো চা খাইনি এখনও... তোমার সাথে খাবো বলেই অপেক্ষা করছিলাম... শুধু শুধু নিজের জন্য চা বানাতে ইচ্ছা করে বলো... তুমি খেলে আমারও তাহলে খাওয়া হয়... এই আর কি...’

‘ওহ!... আমার জন্যই চা না খেয়ে অপেক্ষা করছিলে...’ বেশ খুশির ছোয়া লাগে সুশান্তর গলার স্বরে... ‘করো তাহলে...’

‘এই তো... এক্ষুনি হয়ে যাবে... দু কাপ করতে আর কতক্ষন লাগবে... তুমি ততক্ষন টিভিটা দেখো, আমি চা করে নিয়ে আসি...’ বলে রিমোট টিপে দেওয়ালে লাগানো টিভিটা চালিয়ে দিয়ে রিমোটটা এগিয়ে দেয় সুশান্তের হাতে, তারপর এগিয়ে যায় কিচেনের দিকে।

আলো জ্বেলে কিচেনে ঢুকেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা... আজ একটা ব্লান্ডার করেই ফেলছিল... সেই বা কি করবে, সর্বক্ষন যদি মাথার মধ্যে অর্নব বসে থাকে, তাহলে তার কি দোষ? নিজেই নিজের পক্ষে সাফাই গায় মনে মনে... হাত বাড়ায় তাকের ওপর থেকে কাপ প্লেট নামাবার জন্য।

হিসাব করে তিন কাপের মত চায়ের জল রেডী করে পৃথা... অর্নবও তো বেচারী খায় নি চা এখনও... মনে মনে ভাবে সে... গ্যাসের বার্নার জ্বালিয়ে চায়ের জল চাপাতে চাপাতে... কাবার্ড খুলে চা, চিনি বের করে রাখে পাশে... দুধ তো নেই, র’টিই বানাতে হবে... জোগাড় করে বিস্কিট, প্লেটের ওপরে সাজায় সুন্দর করে।

ড্রইংরুমে বসে খানিক টিভি চ্যানেল ঘোরাতে ঘোরাতে এদিক সেদিক তাকায় সুশান্ত... একটা অস্বস্থি হয় যেন তার... কেন জানি তার মনে হয় ঘরে সে ছাড়াও আর কারুর উপস্থিতি সে উপলব্ধি করতে পারছে... মনে মনে ভাবে, ‘বলেছিলাম পৃথাকে এই ফ্ল্যাটটা না নিতে... কি সব শুনেছিলাম এই ফ্ল্যাটের ব্যাপারে... কিন্তু এটাই নেবার জন্য এমন জিদ করল... নাঃ... ভালো লাগছে না...’ ভেবে উঠে দাঁড়ায়... তারপর ধীর পায়ে কিচেনের দিকে এগিয়ে যায়।

কিচেনের মধ্যে পৃথা সেই মুহুর্তে পেছন ফিরে চা করতে ব্যস্ত... নিশব্দে কিচেনের দোড়গোড়ায় গিয়ে দাঁড়ায় সুশান্ত... এক মনে তাকিয়ে থাকে পৃথার কর্মব্যস্ত শরীরটার পানে... মাথার ওপরে চুলগুলো চূড়া করে তুলে রাখার কারণে ঘাড়টা সম্পূর্ন উন্মুক্ত... পরণের গাঢ় নীল কুর্তিটা কাঁধ থেকে সুঠাম পীঠের ওপর দিয়ে ঢাল খেয়ে নেমে গিয়েছে নীচের দিকে... কোমরের কাছ থেকে একটা উত্তাল বাঁক নিয়ে বর্তুল ভারী নিতম্বের ওপরে টাইট হয়ে বসে রয়েছে কুর্তির নীচের অংশটা... এতটাই টাইট যে কিচেনের বৈদ্যুতিক আলো পড়ে কুর্তির আড়ালে থাকা পরনের প্যান্টিটার দুটো রেখা একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে কুর্তির কাপড়ের ওপর দিয়ে... দেহের প্রতিটা নড়াচড়ায় যেন নিতম্বটা ছলকে ছলকে উঠছে আপন খেয়ালে... মাঝে মধ্যেই কুর্তিটার পাশের কাপড়ের চেরাটা সরে গিয়ে বেরিয়ে দৃশ্যমন্য করে তুলছে পায়ের সাথে চেপে বসে থাকা লেগিংস মোড়া পুরুষ্টু পায়ের থাই, পায়ের গোছ...  নিঃশব্দে আর একটু এগিয়ে দাঁড়ায় সুশান্ত... একেবারে পৃথার পেছনে... এতটাই কাছে যে চোখের সামনে পৃথার ঘাড়ের ওপরে হাল্কা রোঁয়ার রেশ চোখে পড়ে তার... কেমন যেন নদীর ধারার মত সেই লোমের সারিগুলো দুইপাশ থেকে গড়িয়ে এসে নেমে গিয়েছে পীঠের অববাহিকা বেয়ে... সোনার সরু হারটা সেই ঘাড়ের ওপরে আরো জৌলুশ বাড়িয়ে তুলেছে যেন... করে তুলেছে পৃথাকে আরো যৌন আবেদনময়ী। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে চোখের সামনে উন্মুক্ত থাকা পৃথার ওইটুকু শরীরের ফর্সা অংশটার দিকে... ওই ঘাড়টুকুই যেন তার শরীরের অঘোষিত বিজ্ঞাপন... দেহের প্রতিটা কোণ আর বাঁকের ছবির।

হটাৎ ঘাড় ঘোরায় পৃথা, ঘুরিয়েই এত কাছে সুশান্তকে দেখে চমকে যায়... ‘একি? তুমি?’

চকিতে সুশান্তও কয়’একপা পিছিয়ে দাঁড়ায় পৃথার থেকে খানিক তফাতে... ‘না, মানে একা ভালো লাগছিল না বসে থাকতে, তাই...’ সাফাই দেয় নিজের উপস্থিতির।

‘ওহ! ভালো করেছ উঠে এসে... এই তো, আমারও চা হয়ে গেছে... শুধু ছাঁকলেই হবে...’ ফের ফিরে নিজের কাজে মনোনিবেশ করে পৃথা...

তিনটে কাপে চা ছেঁকে, দুটো কাপ আর বিস্কিটের প্লেট ট্রের ওপরে রেখে হাতে তুলে ঘোরে সে, ‘চলো... ও ঘরেই যাই...’

‘তিন কাপ করলে?’ একটা কাপ কিচেন স্ল্যাবের ওপরে রেখে দেওয়াটা নজর এড়ায় না সুশান্তর।

‘না, ওই করলাম, একেবারে করে রাখলাম, ইচ্ছা হলে পরে একটু গরম করে নেবো’খন...’ বলতে বলতে সুশান্তকে প্রায় সাথে নিয়েই ড্রইংরুমে ফিরে আসে পৃথা... সেই জানে কেন তৃতীয় কাপ সে রেডি করে রেখে এলো... তার সোনাটার জন্য... ড্রইংরুমে ঢুকে শুধু মুখের ইশারা করে কিচেনের দিকে দেখিয়ে দেয় পৃথা... তার মানে যে বোঝার সে ঠিক বুঝে যাবে।
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
#71
পর্ব ২৬ (খ)

সোফায় বসে পা’য়ের ওপরে পা তুলে দেয় পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিয়ে সুশান্তকে ফের মৌসুমীর প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করে, ‘তোমাকে বললাম সাথে মৌসুমীকেও আনো, কেন আনলে না বলো তো... কতদিন দেখি নি মেয়েটাকে... বড্ড ভালো মেয়ে...’

‘না ভাবলাম এত বকে, তোমার শরীর খারাপ, তাই আর কি... আর এত মৌসুমী মৌসুমী করছ কেন বলো তো?’ উত্তর দেয় সুশান্ত, ‘কেন? আমি শুধু একা তোমার কাছে আসতে পারি না? নাকি আজকাল আর আমায় ভালো লাগছে না?’ গলায় আগের ক্ষোভ যেন ফিরে আসে সুশান্তর।

‘আরে, তুমি বন্ধু, তোমার আসায় কি অসুবিধা... কিন্তু সেটা নয়... ওর সাথেও একটু গল্প করা যেতো, এই আরকি...’ বলে পৃথা... ‘যাক, তোমাদের বিয়ের কত দূর?’

‘জানি না... সে নিয়ে ভাবছিও না কিছু এখন...’ বেজার মুখে উত্তর দেয় সুশান্ত।

‘কেন? তুমি তো বলেছিলে যে তোমাদের মোটামুটি সব কিছুই ঠিকঠাক হয়ে আছে, খুব শিগগিরি বিয়ে হবে... এখন আবার কি হলো? এনি প্রবলেম?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে।

‘না, ওদের দিক থেকে কোন প্রবলেম নেই... আমিই ভাবছি...’ বলতে বলতে থামে সুশান্ত... নিজের কাপে চুমুক দিতে থাকে চুপ করে।

‘তোমার আবার কি প্রবলেম? দিব্বি তো সব কিছুই ঠিক ছিল? অফিসও তো ঠিকঠাকই আছে...’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘না, মানে...’ একটু ইতস্থত করে সুশান্ত... তারপর কেটে কেটে বলে, ‘তোমাকে... দেখার পর থেকে... আমি ঠিক... কি করবো বুঝতে পারছি না...’

‘হোয়াট ডু ইয়ু মিন আমাকে দেখার পর থেকে?’ ভুরু কোঁচকায় পৃথা... ‘বুঝলাম ঠিক...’

‘না, মানে, অ্যাকচুয়ালি... আই থিংক... আমাকে আরো একবার ভাবতে হবে... আদৌ মৌসুমীর সাথে সম্পর্কটা নিয়ে এগোবো কি না...’ চোখ নামিয়ে উত্তর দেয় সুশান্ত।

‘হোয়াট?’ একটু বেশ জোরেই কথাটা বলে পৃথা... ‘আর ইয়ু ম্যাড? হোয়াটস দ্য প্রবলেম উইথ দ্যাট গার্ল? অ্যান্ড হাউ অ্যাম আই প্লেসড্‌ হেয়ার?’

‘না, মানে, ইয়ু কান্ট সে দ্যাট আই অ্যাম আ ব্যাড চয়েস... ক্যান ইয়ু?’ পৃথার মুখের পানে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘ঠিক বুঝলাম না, ব্যাড চয়েস বলতে হোয়াট ডু ইয়ু ওয়ান্ট টু মিন?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাতে ধরা চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে সোজা হয়ে বসে।

‘সি পৃথা... দ্য ট্রুথ ইজ...’ বলতে গিয়ে থমকায় সুশান্ত।

‘কাম অন সুশান্ত... হোয়াট দ্য ট্রুথ ইজ... টেল মি...’ তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুশান্তের পানে পৃথা।

‘না, মানে... মানে... অ্যাাকচুয়ালি...’ বলতে বলতে ফের থমকায় সুশান্ত।

সুশান্তর এই ব্যবহারে অধৈর্য হয়ে ওঠে এবার পৃথা... হাতের একটা আঙুল তুলে বলে সে, ‘লুক... ইয়ু মাস্ট স্পিক আউট দ্য ট্রুথ... আরে ইয়ার... উই আর ফ্রেন্ডস... দেন হোয়াই ইয়ু আর ফ্লাম্বলিং লাইক দ্যাট? কাম অন... টেল মি... আই অ্যাম ওলয়েজ দেয়ার টু হেল্প বোথ অফ ইয়ু... মৌসুমীর সাথে কোনো প্রবলেম হয়েছে?’ প্রশ্ন করে সে।

‘না, না... ওর সাথে কোন প্রবলেম হবে কেন...’ উত্তর দেয় সুশান্ত থেমে থেমে।

‘দেন? বাড়ির থেকে? শুড আই স্পিক ইয়ুথ ইয়োর পেরেন্টস?’ ফের জানতে চায় পৃথা।

‘না, সেটাও নয়... বাড়িতেও কোন প্রবলেম নেই...’ বলে সুশান্ত।

‘দেন হোয়ের ইজ দ্য প্রবলেম? হোয়াই আর ইয়ু বিহেভিং লাইক দিস?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাত দুটোকে দুই দিকে মেলে কাঁধ শ্রাগ করে।

উত্তর দেয় না কিছু সুশান্ত... চুপ করে চায়ের কাপে চুমুক দিতে থাকে... মাঝে মাঝে শুধু চোখ তুলে বারেক তাকায় পৃথার দিকে।

‘কি হলো? কিছু বলছো না?’ অধৈর্য পৃথা ফের জিজ্ঞাসা করে।

‘কি বলবো বলো তো...’ শেষ হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে রাখতে রাখতে উত্তর দেয় সুশান্ত।

‘কি বলবো মানে? হা... ইফ ইয়ু ডোন্ট ওয়ান্ট টু ইনভোল্ভ মী ইন দিস, দেন দ্যাটস ডিফারেন্ট, বাট ইয়ু হ্যাভ টোল্ড দ্যাট আই অ্যাম দ্য ইশু ফর ইয়োর প্রবলেম... ইন দ্যাট কেস...’ বলতে বলতে থামে পৃথা... একটা সিগারেট ধরাতে পারলে খুশি হতো, কিন্তু সে জানে, অর্নব তাকে এখন একটাও সিগারেট খেতে দেবে না... দেয়ও নি সকাল থেকে... দুপুরে খাবার পর অনেক রিকোয়স্ট করেছিল একটা সিগারেটএর জন্য, কিন্তু দৃঢ় গলায় অর্নব ওকে জানিয়ে দিয়েছিল যে আজ একটা সিগারেট পাবে না সে... রাগ করা দূরঅস্ত, খুশি মনে মেনে নিয়েছিল অর্নবের সে শাসন... কিন্তু, এখন এই পরিস্থিতিতে একটা সিগারেট হলে খুব ভালো হতো... যাক, কি আর করা যাবে, ও ভালো মতই জানে অর্নব আসে পাশেই আছে, সিগারেট ধরালে এখন কিছু বলতে পারবে না, কিন্তু পরে ভিষন বকবে... তাই আর চেষ্টা করে না সিগারেটের দিকে হাত বাড়াতে... ‘ইন দ্যাট কেস... অ্যাটলিস্ট ইয়ু মাস্ট ক্লিয়ার ইয়োর সেলফ...’ শেষ করে পৃথা নিজের কথা।

‘আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু পৃথা...’ মুখ তুলে কথাটাকে যেন বুকের মধ্যে থেকে ঠেলে বের করে দেয় সুশান্ত।

‘হোয়াট?’ প্রায় চেঁচিয়েই ওঠে পৃথা।

‘ঠিক শুনেছ... আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি পৃথা... অ্যান্ড আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইয়ু... শুধু তোমাকে...’ হাতদুটো জোড় করে বলে সুশান্ত।

‘ইয়ু আর নট সিরিয়াস... সুশান্ত... রাইট... ইয়ু আর জাস্ট জোকিং... তাই না?’ অবিশ্বাসী গলায় প্রশ্ন করে পৃথা... সুশান্তের বদল আগেই তার নজরে এসেছিল, বলেও ছিল অর্নবকে এই ব্যাপারে, কিন্তু সুশান্ত যে ওকে একেবারে প্রপোজ করে বসবে, এতটা আশা করে নি সে।

‘না পৃথা, জোক নয়... আমি সত্যিই বলছি... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু...’ বোঝাবার আকুল চেষ্টা করে সুশান্ত।

মাথা নাড়ে পৃথা... ‘না না সুশান্ত... এটা হয় না... অলরেডি একটা মেয়ের সাথে তোমার জীবন জড়িয়ে গেছে... সে তোমার আশায় বসে আছে, আর তুমি...’

‘আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট হার... লেট হার ফাইন্ড সাম আদার পার্সন... অ্যান্ড আই ডোন্ট থিংক শী কুড বী মাই টাইপ...’ নিজের সপক্ষে বলে সুশান্ত।

‘সেটা আগে বলো নি কেন তুমি?’ দৃঢ় স্বরে প্রশ্ন করে পৃথা... ‘তোমার তো এটা লাভ ম্যারেজ নয়... তাহলে যখন তোমার সম্বন্ধ দেখা হচ্ছিল, এই মেয়েটাকে তোমার বাড়ির লোক পছন্দ করেছিল, তুমিও পছন্দ করেছিলে... তখন কেন এটা ভাবো নি? আর আজ এমন কি হলো যে হটাৎ করে মনে হলো তোমার যে মৌসুমী ইজ নট অফ ইয়োর টাইপ? আর ইয়ু ম্যাড? একটা মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কে দিলো তোমায়? হুঁ?’

‘তখন তো তোমায় দেখি নি আমি?’ ব্যাকুল গলায় বলে সুশান্ত।

‘ওহ! মাই গড! নট মী...’ সোফায় হেলান দিয়ে মাথা তুলে বলে ওঠে পৃথা... ‘সুশান্ত... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড...’ ফের সোজা হয়ে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘দেয়ার ইজ নাথিং টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... আই হ্যাভ আলরেডি টোল্ড ইয়ু... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু... অ্যান্ড দ্যাটস্‌ ফাইনাল...’ গলার স্বরে জোর বাড়ে সুশান্তর।

‘এটা হয় না সুশান্ত... হয় না...’ মাথা নাড়ায় পৃথা... ‘তুমি যেটা চাইছ, সেটা আমার পক্ষে কোনদিনই সম্ভব নয়...’

‘কিন্তু কেন?’ প্রায় জোরেই চেঁচিয়ে ওঠে সুশান্ত... ‘কেন নয়? আমি ছেলেটা খারাপ? আমার সম্বন্ধ কখনো, কোন দিন কিছু খারাপ শুনেছ? দেন? হোয়াই নট... অসুবিধা কোথায়? ইয়ু আর সিঙ্গল... আই অ্যাম অলস সেম... তাহলে?’ উত্তেজিত সুশান্ত হাত নাড়ে জোরে জোরে।

‘ইটস নট দ্যাট ইয়ু আর ব্যাড... সে প্রসঙ্গ আসছেই বা কেন... আই নো ইয়ু আর আ ভেরি গুড পার্সন... তোমার মত বন্ধু এই অচেনা শহরে এসে পেয়ে আমি সত্যিই ধন্য... আমি স্বীকারও করি সেটা... কিন্তু আমাদের মধ্যের সম্পর্কটা শুধু মাত্রই বন্ধুত্বের... উই আর গুড ফ্রেন্ডস... বাট ইয়ু কান্ট ফল ইন এনি রিলেশনশিপ... সেটা হয় না...’ শান্ত গলায় ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘আই অ্যাম আ গুড পার্সন, আ গুড ফ্রেন্ড... তাহলে কিসের অসুবিধা? ভালো বন্ধু বা অফিসের কলিগ, তারা কি কখনও কোথাও রিলেশনএ বাঁধা পড়েনি? এটা কি নতুন?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।

ফের মাথা নাড়ায়... ‘তুমি আমাকে ভুল বুঝছ সুশান্ত... আমি সেটা বলতে চাই নি... আমি জানি কলিগ বা বন্ধুও একে অপরকে ভালোবাসতেই পারে, বিয়েও করে, এটা নতুন কিছু নয়... বাট ইন মাই কেস... আমার পক্ষে সম্ভব নয় সেটা... নট অ্যাট অল...’

‘কেন নয়... আমি সেটাই তো জানতে চাইছি... কোথায় অসুবিধা তোমার? মৌসুমীর কথা ভাবছ... আমি নিজে ওকে বলে দেবো যে ওকে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়... তাহলে তো কোন অসুবিধা নেই তোমার... বলো...’ মাথা নেড়ে সুশান্ত বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথাকে।

‘দেখ সুশান্ত, মৌসুমী তো একটা ব্যাপার বটেই... আমি কখনই চাইবো না একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়েকে এই ভাবে ঠকাতে... সেখানে আমার পক্ষে তোমার সাথে রিলেশনশিপ তৈরী করার সুযোগ থাকলেও তোমায় ফিরিয়ে দিতাম... আমি কখনই এগোতে দিতাম না তোমায়, দ্যাটস ফর হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর... কিন্তু এ ছাড়াও, আমি তো তোমাকে বলেই ছিলাম আগে, দ্যাট আই অ্যাম কমিটেড... আই আম ইন লাভ ইয়ুথ সামওয়ান এলস্‌...’ শান্ত গলায় বলে পৃথা।

‘আই ডোন্ট বিলিভ ইন ইয়োর স্টোরি... আমি বিশ্বাস করি না ইয়ু আর কমিটেড টু এনি বডি... ইটস্‌ অল বোগাস...’ উত্তেজিত সুশান্ত বলে ওঠে।

‘না সুশান্ত, এটাই সত্যি... বিলিভ মী...’ বোজাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘ইটস আ লাই... আই নো... সেদিন তুমি আমাকে বলার পর আই হ্যাভ স্পায়েড অন ইয়ু... কোনদিন তোমাকে অফিস থেকে বেরোবার পর কখনো কোথাও কারুর সাথে দেখা করতে দেখি নি... তুমি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ি ফেরো... ইয়েস... আই নো... শুধু তাই নয়... অফিসেও সারা দিন আমি তোমার ওপরে লক্ষ রেখে গিয়েছিলাম, না, সেখানেও আজ অবধি এমন কারুর ফোন তুমি রিসিভ করো নি বা তুমি নিজেও করো নি যেখান থেকে বোঝা যায় যে ইয়ু আর ইন রিলেশন উইথ এনি ওয়ান... তাই বলছি... ডোন্ট ট্রাই টু মেক ফুল আউট অফ মী... ওকে? আমাকে বোকা বানাতে এসো না...’ চিবিয়ে চিবিয়ে বলে সুশান্ত।

‘আমি তোমায় বোকা বানাচ্ছি না সুশান্ত...’ হাত তুলে ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘আমি জানি না কতটা তুমি দেখেছ, বা জেনেছ, কিন্তু আমি সত্যিই কমিটেড টু সাম ওয়ান...’

‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট...’ বলে হটৎ উঠে দাঁড়ায় সুশান্ত সোফার থেকে... এক লহমায় পৌছে যায় পৃথার সামনে... সামান্য ঝুঁকে ঝপ করে খামচে ধরে পৃথার কাঁধ দুখানি... ধরে ঝাঁকাতে থাকে পৃথার শরীরটাকে... ‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট... আই লাভ ইয়ু অ্যান্ড ইয়ু উইল বী ওনলি মাইন... ব্যস... দ্যাটস্‌ ইট... আর কিচ্ছু শুনতে চাইনা...’

পৃথা আশা করে নি সুশান্ত ওই ভাবে তার ওপরে ঝাপিয়ে পড়বে... চমকে গিয়ে পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করে সোফার ওপরে... আর তার ফলে টান পড়ে সুশান্তর হাতের মুঠোয় ধরে থাকা পৃথার পরনের কুর্তিতে... একটানে পটাস্‌ করে জামার দুটো বোতাম ছিড়ে ছিটকে যায় শরীর থেকে... বুকের কাছটায় ফাঁক হয়ে যায় কুর্তিটা বেবাক... জামার আড়ালে থাকা ফর্সা শরীরটা বেরিয়ে পড়ে সুশান্তর চোখের সন্মুখে... কালো ব্রা’য়ে ঢাকা সুডোল স্তনের লোভনীয় বিভাজিকা তখন উন্মুক্ত... গলার সরু সোনার চেনটায় আটকানো ছোট্ট হৃদয়ের আদলের লাল পাথরের পেন্ডেন্টটা যেন দুটো নরম স্তনের আদর খেতে ব্যস্ত।

স্তব্দ হয়ে বসে থাকে পৃথা... কেমন যেন হতবাক হয়ে যায় এই অতকির্ত আক্রমনে... সেকেন্ড খানেক ভাবার চেষ্টা করে কি ঘটে গেল... আর সেই মুহুর্ত ধরে সুশান্তও চোখের মনিতে অসীম লোভ নিয়ে তাকিয়ে থাকে তার সামনে উন্মুক্ত পৃথার লোভনীয় স্তনবিভাজিকার দিকে... যেন নরম বুকদুটো সুশান্তকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে মনে হয় তার... তারপরই পৃথা কিছু করার আগেই ঝুঁকে পড়ে সামনের পানে... নিজের মুখটা গুঁজে দেয় পৃথার ওই আকর্ষনীয় বিভাজিকায়... ঘসতে থাকে মুখটা নরম বুকের ওপরে...

ছটফট করে ওঠে পৃথা নিজের শরীরের ওপরে সুশান্তের লোভী স্পর্শে... সম্বিত ফিরে আসে তার... দু হাত দিয়ে ঠেলে সরাবার চেষ্টা করে সে... কিন্তু এমন বেখাপ্পা ভাবে সোফার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে যে কিছুতেই হাত দুটোকে ছাড়িয়ে ঠেলতে পারে না সুশান্তকে... অন্য সময় হলে খুব সহজেই হয়তো এই ধরণের আক্রমন প্রতিহত করত ক্যারাটে জানা পৃথা, কিন্তু এখন সেটাই করে উঠতে পারছে না বলে আরো বিরক্ত হয়ে ওঠে নিজের ওপরেই... এমনিতেই জ্বরে আক্রান্ত হবার পর একটু দুর্বলই বলা চলে, তারওপরে এই ভাবে বেকায়দায় ধরা পড়ে রয়েছে সে, বার বার করে অনুনয় করে সে, ‘এরকম কোরো না সুশান্ত... প্লিজ কোরো না... ছাড়ো আমায়... প্লিজ... আমাদের সুন্দর সম্পর্কটাকে এই ভাবে নষ্ট করে দিও না... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... প্লিজ... ছাড়ো আমায়...’

কে শোনে কার কথা... যত সময় গড়ায়, লোভ আরো চেপে বসে সুশান্তের ওপরে... স্তন বিভাজিকায় মুখ ঘসতে ঘসতে একটা হাত পৃথার কাঁধ থেকে নামিয়ে খপ করে চেপে ধরে নরম স্তন একটা... কচলাতে থাকে সেটাকে হাতের মুঠোয় ধরে... হাতের তেলোয় স্পর্শ লাগে পৃথার স্তনবৃন্তের।

হটাৎ করে ঘটে যায় ঘটনাটা যেন... সুশান্ত কিছু বোঝার আগেই সে ছিটকে গিয়ে পড়ে পাশের সোফার ওপরে... পৃথার শরীরের ওপর থেকে...

এই ভাবে দূরে গিয়ে ছিটকে পড়াতে প্রথমটায় একটু হকচকিয়ে যায় সুশান্ত... তারপর ভাবে নিশ্চয়ই পৃথা ওকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে থাকবে... পৃথার থেকে আঘাত পেয়েছে ভেবে আরো ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে মনে মনে... রাগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে ফের উঠে ঝাপিয়ে পড়ার চেষ্টা করে সে পৃথার ওপরে... কিন্তু এগোবার আগেই একটা সজোরে ঘুসি এসে পড়ে ওর চোয়ালে... যেন হাওয়ার থেকে কোন অশরীরি কঠিন হাতের আঘাত হানে তার মুখের ওপরে... এবার সে ছিটকে গিয়ে পড়ে সোফা আর সেন্টার টেবিলের মাঝে, মেঝের ওপরে... ঠোঁটের পাশটায় বেশ কেটে যায়... গড়িয়ে পড়ে রক্ত... নিমেশে কালশিটে পড়ে যায় গালের পাশটায়, হনুর ওপরে... হতদ্যম হয় বসে থাকে সে মেঝের ওপরে... ভাবার চেষ্টা করে ঘটনাটা কি... তখনই কানে আসে একটা গমগমে গলা... যেন ঘরের মধ্যেটায় বাজ পড়ে... ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সে স্বর... ‘ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার... আদার ওয়াজ আই’ল্ ব্রেক ইয়োর হেড... জাস্ট গেট আউট ফ্রম দিস প্লেস... আউট...’ শেষের ‘আউট’ কথাটা এতটাই জোরে যে প্রায় হৃদকম্প শুরু হয়ে যায় সুশান্ত... একবার তাকায় উল্টো দিকের সোফায় অপ্রস্তুত হয়ে বসে থাকা পৃথার দিকে, তারপর পড়ি কি মড়ি করে উঠে দৌড় লাগায় দরজার দিকে... কোনরকমে দরজাটা খুলে একেবারে ফ্ল্যাটের বাইরে... পেছন ঘুরে তাকাবার চেষ্টাও করে না সে... উর্ধশ্বাসে সিড়ি ভেঙে নামতে থাকে... এক একবারে দুটো তিনটে সিড়িও টপকায়... হোঁচট খায় ল্যান্ডিংএর কাছটায়... তবুও থামে না... উঠে ফের দৌড় মারে নীচের পানে... একেবারে রাস্তার দিকে।

অলোকবাবু পাশের ফ্ল্যাটের মধ্যে একটা ঝটাপটি শুনেছিলেন, তাই তাড়াতাড়ি নিজের দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছিলেন ব্যাপারটা বোঝার আশায়, কিন্তু যে ভাবে হটাৎ করে পৃথার ফ্ল্যাটের দরজাটা খুলে ছেলেটি দৌড়ে বেরিয়ে এসেই দিগবিদিক না তাকিয়ে পালালো, হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন সেই দিকে... ল্যান্ডিংএর পরে চোখের আড়ালে সুশান্তের দেহটা চলে গেলে মুখ ফেরান পৃথার খোলা দরজাটার দিকে... আগেও এই ফ্ল্যাটের সম্বন্ধে নানান কথা শুনেছেন উনি, কিন্তু কোনদিন নিজের থেকে দেখা বা অনুভব করা হয় নি তার... তাই ছেলেটিকে এই ভাবে উর্ধশ্বাসে পালাতে দেখে মনের মধ্যে নানান প্রশ্ন জেগে ওঠে তাঁর... তবে কি যেটা উনি শুনেছেন... কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় যে তাহলে মেয়েটি কি ভাবে রয়েছে, আবার একা!... গুলিয়ে যায় মাথার মধ্যে তাঁর... মেলে না কোন উত্তর... তাই আরো ভালো করে জানার আশায় সবে এক পা বাড়িয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই খোলা দরজাটা দুম্‌ করে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর মুখের ওপরে... হতাশ হয়ে খানিক ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকেন, তারপর যখন বোঝেন যে কিছু জানা যাবে না এখন, ধীর পায়ে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে যান।

ক্রমশ...
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
#72
[img][Image: 5c2a17724f09f.jpg] [/img]
Like Reply
#73
দাদা কোথায় আপনি ? বসে আছি আমরা
Like Reply
#74
(01-01-2019, 05:26 PM)ronylol Wrote: দাদা কোথায় আপনি ? বসে আছি আমরা

Asbo... Agami kaal...

Happy New Year .....
Like Reply
#75
২৭।।


আলুথালু পোষাকে সোফার ওপরে হতদ্যম হয়ে বসে তাকিয়ে থাকে দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়া সুশান্তর শরীরটা দিকে পৃথা... তখনও যেন ঠিক ধাতস্থ হয়ে উঠে পারে নি সে... কথায় কথায় হটাৎ করে কি ঘটে গেল ব্যাপারটা... এরকমটা তো সে স্বপ্নেও আশা করে নি... আশা করে নি সুশান্তর কাছ থেকে এই ধরণের ব্যবহার... ওর আচার আচরণে সে সন্দিহান ছিলই, কিন্তু তাই বলে ওকে একা পেয়ে এই ভাবে ঝাপিয়ে পড়তে পারে? ওকে যে সত্যি সত্যিই বন্ধু বলেই ভেবেছিল সে... আজ না হয় ওর অর্নব আছে, কিন্তু যদি না থাকতো পাশে? তখন? জীবনে কাউকেই কি বিশ্বাস করা যায় না? ছেলেরা কি কখনই একটা একলা মেয়েকে শুধু মাত্র বন্ধু বলে ভাবতে পারে না? একটু হেসে কথা বললে, একটু ভরসা করে কাছে এগিয়ে গেলেই ভাবে এটা মেয়েদের দুর্বলতা? এক তুষার ঝড়ের রাতে, সুদূর হিমালয়ের কোলে রমেশ ওকে ব্যবহার করেছিল... শুধু মাত্র নিজের যৌন ক্ষুদা নিবৃত্তি করেছিল একলা তাকে টেন্টের মধ্যে পেয়ে... একবারের জন্য ওর প্রতি সহৃদয়তা দেখায় নি... প্রয়োজন মনে করেনি জাগিয়ে তোলা পৃথার যৌনক্ষুধা নিরশনের... আপন ক্ষুধা মিটতেই ছেড়ে উঠে গিয়েছিল জ্বলতে থাকা পৃথার অতৃপ্ত শরীরটা ছেড়ে দিয়ে... আর আজও একান্ত বন্ধু ভাবা সুশান্ত তাকে একা ফ্ল্যাটের মধ্যে পেয়ে দ্বিধা করে নি ঝাপিয়ে পড়তে... কেন? কেন? কেন এমন ঘটে... পুরুষ জাতটাই কি তবে এই রকমই... অপর দিকের মানুষটার মানসিকতা বোঝার এতটুকুও চেষ্টা করে না কখনও? প্রয়োজন বোধ করে না জানার মেয়েটির মনের চাহিদা কি? সেটা যৌনাত্বক নাকি বন্ধুত্বপূর্ণ? কেন এমন হয়? এর পর অফিসে গিয়ে কি করে ও মুখ দেখাবে সুশান্তর কাছে? সুশান্তই বা কি সাহস নিয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়াবে? কথা বলবে? হাসবে? আর মৌসুমী... একটা প্রাণবন্ত মেয়ে... সে যদি জানতে পারে সুশান্তর এই আচরণের কথা? বিয়ের আগেই কি ভাববে নিজের হবু জীবন সঙ্গীর সম্বন্ধে? যার সাথে সে সারাটা জীবন কাটাবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে রয়েছে?

দুম্‌ করে ফ্ল্যাটের দরজাটা বন্ধ হয়ে যেতে চটক ভাঙে পৃথার চিন্তায়... ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায় সে সোফা ছেড়ে... তারপর দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায় দরজা লক্ষ করে... মাঝ পথেই তার শরীরের সাথে ধাক্কা লাগে অর্নবের কায়াহীন দেহটার... দুহাত দিয়ে অর্নবকে জড়িয়ে ধরে... মুখটা তুলে তাকায় না দেখা অর্নবের মুখের পানে... একরাশ প্রশ্ন মেখে থাকে যেন তার ছলছল চোখের কোনে... তারপর আস্তে আস্তে নিজের মুখটাকে ডুবিয়ে দেয় অদৃশ্য লোমশ বুকটার মধ্যে... আঁকড়ে ধরে দু হাত দিয়ে প্রাণপনে... পরক্ষনেই বাঁধ ভেঙে যায় তার... অর্নবের বুকের মধ্যে ডুকরে ওঠে পৃথা... ফোঁপাতে থাকে মুখটাকে বারংবার পেশল বুকের ওপর ঘসতে ঘসতে... অব্যক্ত কন্ঠে নানান প্রশ্ন করে চলে সে... তারপর ফোঁপানোর জায়গা করে নেয় বাঁধ ভাঙা কান্না। ওর মাথার চুলের ওপরে হাত বোলায় অর্নব... সেও একটা হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে পৃথাকে, নিজের বুকের মধ্যে... মুখে কিচ্ছু বলে না, কাঁদতে দেয় নিজের প্রিয়াকে মন খুলে... এতেই সে হাল্কা হবে, জানে অর্নব... হাল্কা হওয়ার প্রয়োজন পৃথার... এই মানসিক আঘাত থেকে সেরে উঠতে।

ওই ভাবেই প্রায় মিনিট পাঁচেক ধরে জড়িয়ে ধরে রাখে পৃথাকে নিজের শরীরের মধ্যে অর্নব, একটু একটু করে কান্নার দমক কমে আসে... শেষে আবার ফোঁপানোতে রূপান্তরিত হয়ে শেষ হয় কান্নাটা... তবুও, আরো খানিক সময় নেয় সে... তখন ছাড়ে না তার আদরের তিতিরকে নিজের বুকের ভেতর থেকে... একটা সময় নিজের থেকেই পৃথা বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে চায় উপর পানে, অর্নবের অদৃশ্য মুখ লক্ষ্য করে, ফিসফিসিয়ে বলে, ‘আমি যে সত্যিই ওকে আমার খুব ভালো বন্ধু ভাবতাম গো... বিশ্বাস করো... কেন এমন করলো ও আমার সাথে?’

পৃথার মাথাটাকে ধরে ফের নিজের বুকের মধ্যে চেপে নেয় অর্নব, পৃথাও ছোট্ট আদুরে মেয়ের মত গুঁজে দেয় নিজের নরম শরীরটাকে অর্নবের বিশাল চওড়া দেহের আলিঙ্গনে... নিজের গালটা পৃথার মাথার সাথে ঠেকিয়ে ধীর গলায় বলে অর্নব, ‘কিচ্ছু হয় নি... যেটা ঘটেছে, সেটা সাময়িক, দেখবে কাল সব ঠিক হয়ে যাবে...’

‘সাময়িক?’ অর্নবের বুকের মধ্যে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘হু, সাময়িক, আর কিচ্ছু নয়... আসলে তোমার প্রতি ওর মনের অবচেতন কোনায় একটা মোহ জন্ম নিয়েছিল, এ সেটারই বহিরপ্রকাশ মাত্র... এটা ঘটত না যদি না তোমার জ্বরে ওকে ডাকতে, যে হেতু তুমি প্রণবকে ডেকেছ বলে ও শুনেছে, তাই ওর মধ্যে একটা প্রতিহিংসা তৈরী হয়েছিল... আর তোমাকে যেহেতু প্রথম থেকে ওই গাইড করেছে, তাই আজ নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি, একটা আউট বার্স্ট ঘটে গিয়েছে মাত্র...’ পৃথার মাথার চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলে অর্নব।

অর্নবের হাতে আদর খেতে খেতে যেন সব কষ্ট কেমন উবে যেতে লাগল তার, দুহাত বাড়িয়ে আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে অর্নবের শরীরটাকে নিজের দুই হাতের মধ্যে... নরম বুকদুটো চেপে বসে অর্নবের পেশল পেটের ওপরে... গালটাকে কাত করে বুকের ওপরে রেখে বলে পৃথা, ভাবে, কি সহজেই না সমস্যাটাকে বিশ্লেষণ করে দিলো মানুষটা... ‘কিন্তু অফিসে গেলে ও যদি কিছু বলে?’

‘বলবে না কিছু... দেখে নিও... হটাৎ আবেগের বশে করে ফেলেছে ঠিকই, কিন্তু অতটা ক্ষতিকারক ছেলে ও নয়... অন্তত আমার এক্সপিরিয়েন্স তাই বলে... আর ওর সে সাহসও নেই কারুর কোন ক্ষতি করার, সেটা করার মতও বুকের পাটার দরকার, সেটা ওর নেই... তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো ওর থেকে...’ পৃথাকে নিজের শরীরের সাথে আরো গভীর ভাবে লেপটে যেতে প্রশ্রয় দিতে দিতে বলে অর্নব...

ভিষন ইচ্ছা করে অর্নবের ঠোটের ওপরে নিজের ঠোটটা চেপে ধরতে, আশা নিয়ে মুখ তোলে পৃথা, গ্রীবা উচু করে তাকায় উপর পানে অর্নবের বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে... নিজের পাতলা ঠোঁটদুখানি মেলে দেয় অর্নবের পানে... ঠোঁটের পাপড়ি দুটো ফাঁক হয়ে যায় সামান্য... ভেতরের ঝকঝকে সাদা সুন্দর সাজানো দাঁতের সারি চোখে পরে...


টিং টং... টিং টং... দরজার ঘন্টিটা বেজে ওঠে তখনই। ভুরু কুঁচকে যায় বিরক্তিতে পৃথার... শরীরটাকে আরো বেশি করে চেপে ধরে অর্নবের অদেখা দেহের সাথে বাচ্ছা মেয়ের মত... ঠোঁট দুটো তখনও মেলে রাখে ওপর পানে করে...

‘বেল বাজছে তো!’ অর্নব ফিসফিসিয়ে মনে করিয়ে দেয়।

‘বাজুক... আগে আমাকে একটা চুমু খাও তারপর দেখবো কে এসেছে...’ আদুরে জেদ দেখায় পৃথা।

টিং টং... টিং টং... ফের দরজার বেল বাজে।

অর্নব বোঝে, একটা চুমু না নিয়ে এ মেয়ে ছাড়বে না তাকে, দরজাও খুলবে না সে... তাই মাথা নামিয়ে চট করে একটা চুমু এঁকে দেয় পৃথার নরম পাতলা ভিজে ঠোঁটের ওপরে... তারপর বলে, ‘হয়েছে? এবার যাও, দেখ কে এসেছে...’

গাল ভারী হয়ে যায় পৃথার... কয়’এক পলক তাকিয়ে থাকে মুখ তুলে, তারপর, ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে, ‘আজ রাত্রে তোমার কপালে অনেক দুঃখ আছে... তখন দেখবো কি করে পালাও...’ বলতে বলতে রাতের অভিসারের কল্পনায় মিচকি হেসে ওঠে সে... সদ্য চুমু খাওয়া ঠোঁট দুখানি যেন চকচক করে ওঠে সম্ভাব্য সঙ্গমের আবেশে।

অনিচ্ছা সত্তেও অর্নবকে ছেড়ে এগিয়ে যায় দরজার দিকে, পেছন থেকে অর্নব নির্নিমেশ তাকিয়ে থাকে প্রতি পদক্ষেপে ছলকে উঠতে থাকা গাঢ় রঙের টাইট কুর্তির আড়ালে ঢাকা নরম নিতম্বের দুটো দাবনার দিকে... প্রকারান্তে পৃথার বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়া রাতের ঘটনার কথা চিন্তা করে তার রক্তেও যেন কামাগ্নির মাতন লাগে।

.
.
.

‘কখন থেকে বেল মারচি, খুলচিলে না, তুমি কি সুয়ে চিলে?’ দরজা খুলতেই কাজল গড়গড় করে বলতে শুরু করে দেয়... পৃথাকে সরিয়ে নিজেই দরজার পাল্লা বন্ধ করে দেয় সে... ‘তোমার সলিলটা একন ঠিক আচে তো? দেকি দেকি...’ বলে পৃথার কপালে হাতের পীঠ ঠেকায়... ‘নাঃ... জ্বর নেই দেকচি... কিন্তু তোমার এই অবস্তা কেন গো? জামা কাপড় সব কেমন ঘেঁটে রয়েচে, মাতার চুলগুলো এলোমেলো... চোখদুটোও তো দেকচি লাল লাল ঠেকচে, কাঁদচিলে নাকি?’

‘কাঁদতে যাবো আবার কেন রে?’ নিজের মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে তাড়াতাড়ি ঠিক করতে করতে কাজলের প্রশ্নের সাফাই দেয় পৃথা... কাজলের সন্দিহান চোখ থেকে বাঁচতে দ্রুত পায়ে গিয়ে ঢোকে বাথরুমে, বেসিনের কল খুলে চোখে মুখে জলের ঝাপটে দিয়ে টাওয়েল রড থেকে তোয়ালেটা টেনে নিয়ে মুখ মোছে... বেসিনের ওপরে লাগানো আয়নায় নিজের মুখটা একবার দেখে নিয়ে বেরিয়ে আসে বাথরুম থেকে, তাড়াতাড়ি বেডরুমে ঢুকে একটা ওড়না নিয়ে আড়াআড়ি ফেলে রাখে কাঁধ থেকে বুকের ওপরে, ছিঁড়ে খুলে যাওয়া কুর্তির বোতামের জায়গাটাকে আড়াল করার চেষ্টায়।

‘কেউ এয়েচিলো?’ কিচেনের থেকে প্রশ্ন আসে কাজলের।

‘অ্যাঁ... হ্যা... ওই আমার এক বন্ধু...’ ড্রইংরুমে এসে সেন্টার টেবিলের ওপর থেকে সুশান্তর আর তার এঁটো কাপ প্লেটগুলো তুলে নিতে নিতে জবাব দেয় পৃথা... ‘কেন?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে সে।

‘না, চা করেচো দেকচি, তাই জিজ্ঞাসা করলাম...’ কিচেনের মধ্যে থেকে কাজলের বাসন ধোবার আওয়াজ আসে। পৃথা কিচেনে ঢুকে কাজলের পাশ কাটিয়ে সিঙ্কএর মধ্যে হাতের কাপ প্লেট নামিয়ে রাখতে রাখতে বলে, ‘তুই এখন আসবি, বলিস নি তো?’

‘ও মা, তোমার জ্বর হয়েচে, আর আমি আসবো না? আমি কি সেই রকম মেয়ে নাকি গো?’ তাক থেকে লিকুইড ভিমএর বোতলটা নামাতে নামাতে উত্তর দেয় কাজল... ‘তুমি না বললে কি হবে, আমি তো জানি, তোমার সলিলটা কত দুব্বল, একটু রান্না না করে দিলে রাতে খাবে কি সুনি? সেই জন্যই তো দাসবাবুদের গিন্নিকে বলে দিলুম যে আজ সন্দে বেলায় আর যাবো না... একটু চালিয়ে নিতে... ঠিক করি নি? বলো?’

‘এসেছিস ভালোই হয়েছে, কিন্তু অন্যদেরও তো অসুবিধা হলো... তাই না?’ কুন্ঠিত গলায় বলে পৃথা।

‘ও মা... এই লাও... তোমার অসুক, আর আমি যাবো অন্য বাড়ি কাজ করতে, তাই আবার হয় নাকি?’ কথার মধ্যে কাজলের হাত কিন্তু থামে না... যন্ত্রচালিতের মত দুপুরের রেখে দেওয়া বাসনগুলো ঝটপট মেজে ফেলতে থাকে সিঙ্কের মধ্যে রেখে... ‘দুপুরে ঠিক মত খেয়েচিলে তো? একা একা থাকতে অসুবিদা হয় নি?’ কাজলের প্রশ্নের ঢেউ ভেসে আসতে থাকে পৃথার দিকে।

মাথা নেড়ে হাসে পৃথা, ‘না রে... কোনো অসুবিধা হয় নি... আমি ঠিকই ছিলাম...’ মনে মনে ভাবে, ঠিক না থেকে উপায় আছে? থাকতে দেবে নাকি ওই লোকটা... সব সময় আগলে রেখেছে না... অর্নবের কথা মাথায় আসতেই মুখটা উজ্জল হয়ে ওঠে তার যেন... ঠোঁটের কোনে হাসি খেলে যায় মুচকি... তখনও যেন ঠোঁটের ওপরে অর্নবের চকিত স্পর্শ লেগে রয়েছে মনে হয় তার... হাত তুলে নিজের ঠোঁটের ওপরে ছোয়ায় সে।

‘অসুদ খেয়েচিলে?’ প্রশ্ন করে কাজল।

‘অ্যাঁ?’ চটকা ভাঙে পৃথার... ‘কি বলছিস?’

‘বাব্বা... কি এত ভাবচো গো?... বলচি অসুদ খেয়েচিলে দুপুরে ঠিক মতো?’ ফের প্রশ্ন করে কাজল।

‘হ্যা, হ্যা... খাবো না কেন? আমি কি বাচ্ছা মেয়ে?’ উত্তর দেয় পৃথা তাড়াতাড়ি...

‘হ্যা... সে তো দেকতেই পাচ্চি... বাচ্চা মেয়ে কি না... তুমি বাচ্চা নয় তো কি গো? একনো তোমার আড় ভাঙে নি...’ বাসন মাজা প্রায় শেষ করে এনেছে ততক্ষনে কাজল।

‘এই... বাচ্ছা কি রে? আমি তোর থেকেও বড়, সেটা জানিস?’ কপট রাগ দেখায় পৃথা।

‘সেতো বয়সে... আসল জায়গায় তো একনো আদুরে বাচ্চা মেয়েই রয়েচো...’ হাসতে হাসতে উত্তর দেয় কাজল।

ভুরু কুঁচকে কোমরে হাত রাখে পৃথা, লক্কা পায়রার মত ঘাড় বেঁকিয়ে বলে সে, ‘কি বলচিস রে? আসল জায়গা মানে? কি বোঝাতে চাইছিস?’

‘হি হি... তোমার তো একনো সিলই ভাঙে নি গো... আর আমার বিয়ে হয়েচে পেরায় দু বচর হয়ে গেলো... তাহলে তুমি আমার কাচে বাচ্চা হলে না?’ হাসতে হাসতে দেহ দুলিয়ে উত্তর দেয় কাজল।

চকিতে না চাইতেও পৃথার চোখটা একবার ঘুরে বেড়ায় কাজলের শরীরটার ওপরে... রোগা পাতলা হলেও খুব একটা খারাপ চেহারার নয় মেয়েটা... বুক পাছায় বেশ ভালোই চর্বির প্রলেপ রয়েছে লেগে... হয়তো নিয়মিত সহবাসের ফলেই ফুলে উঠেছে শরীরের বিশেষ জায়গাগুলো... কেন জানে না সে, কেমন হটাৎ করেই মনের মধ্যে একটা ক্ষীণ সন্দেহ খোঁচার মত বিঁধে যায়... ‘অর্নব যখন একা থাকতো... কাজলও তো কাজ করতো শুনেছে...’ পরক্ষনেই তাড়াতাড়ি ঝেড়ে ফেলে মনের মধ্যে থেকে কথাটাকে... ‘ছি, ছি... এ কি ভাবছে সে? তার অর্নবকে নিয়ে সে সন্দিহান হচ্ছে? না, না... এ কখনই সম্ভব নয়...’ নিজেই মাথা ঝাকিয়ে অঙ্কুরের বিনাশ করে দিতে চায় যেন সদ্য তৈরী হতে থাকা ওই বিচ্ছিরি সম্ভাবনাটাকে... তাড়াতাড়ি করে কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে সে... ‘তোর কতদিন হলো বিয়ে হয়েছে বলছিস?’

‘এই তো... পরের মাসে আমার দু বচর কমপিলিট হবে...’ মাটির ওপরে থেবড়ে বসে পড়ে বলে কাজল, হাত বাড়িয়ে ক’টা আলু নিয়ে বটি দিয়ে কাটতে বসে সে... ‘আমি একটু আলু দিয়ে বাটি চচ্চড়ি করে দিয়ে যাচ্চি... জ্বরের মুকে ভালো লাগবে, দেকো...’ বটির ফলায় অভ্যস্থ হাতে আলুর খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বলে সে।

‘তোর বিয়ের সময় দাদাবাবু ছিল?’ কেন জানে না, না চাইতেও ফের ওই প্রসঙ্গেই আবার ঢুকে পড়ে পৃথা, নিজেরই অজান্তে।

‘চিলো তো... দাদাবাবুই তো আমার বিয়ে দিলো... বরটা তো দাদাবাবুর অপিসেই কাজ করে... খুব ভালো ছেলে... জানো... খুব আদর করে আমায়... অন্য সোয়ামীদের মত মদও খায় না, মেয়েছেলেরও দোস নেই... অপিস সেস হলেই সোজা বাড়ি চলে আসে...’ হাতের কাজ করতে করতেই বলে যায় কাজল। তারপর হটাৎ কি মনে হতে মুখ তোলে পৃথার পানে, ‘তুমি কবে বিয়ে কচ্চো দিদিমনি? তোমাকে দেকেও তো লাগচে খুব আদর খাবার সক হয়েচে...’

কাজলের কথায় খানিকটা হকচকিয়ে যায় পৃথা, এই ভাবে সরাসরি আক্রমন আসবে সবে মাত্র কাজে যোগ দেওয়া কাজলের কাছ থেকে, সেটা ঠিক আশা করেনি... কথাটা কানে যেতেই তার অজান্তেই কানের লতিদুটো লাল হয়ে গরম হয়ে ওঠে... ছদ্ম রাগে চোখ পাকায়... ‘আমার বিয়ে নিয়ে পড়তে কে বলেছে তোকে শুনি?’

‘কে আবার বলবে? মনে হলো তাই বললুম...’ নিজের হাতের কাজে ফের মনোনিবেশ করে কাজল... হাত চালাতে চালাতেই বলে সে, ‘তবে যাই বলো দিদিমনি... আমার দাদাবাবুর সাথে কিন্তু তোমাকে বেস মানাতো...’

আরো গরম হয়ে ওঠে কান পৃথার... বুকের মধ্যেটায় হৃদপিন্ডটা যেন অনর্থক একটু বেশিই ধকধক করছে তার... উৎসুক গলায় প্রশ্ন করে, ‘কোন দাদাবাবুর সাথে আবার বলছিস রে?’

‘কোন দাদাবাবু আবার কি গো... একটাই তো আমার দাদাবাবু আচে... অর্নবদাদাবাবুর কতা বলচি... আজ যদি দাদাবাবু থাকতো একানে, তবে তোমার সাতে খুব মানাতো... ওই একটা কি বিচ্চিরি বাইরের দেসের মেয়েছেলেকে বিয়ে করেচিল... আমাদের দেসে কি মেয়ের অভাব চিলো, বলো? এই তো... তুমিই কতো সুন্দর... একেবারে যেন পরিটি... দেকেই ভালোবাসতে ইচ্চা করে...’ কাজলের হাতের সাথে কথাও চলে গড়গড়িয়ে।

কাজলের কথায় বাধা দেয় না পৃথা... কানের লতিতে রক্তিমাভা নিয়ে মাথা নিচু করে উপভোগ করে কাজলের কথাগুলো... মন চায় আরো এই ধরনের কথা শুনতে কাজলের কাছ থেকে... ‘তোর ওই অর্নবদাদাবাবুর সাথে আমাকে সত্যিই মানাতো?’ ফের প্রশ্ন করে যাচাই করে নিয়ে চায় সে কাজলের বক্তব্যটাকে।

হাতের আলু কাটা ততক্ষনে শেষ হয়ে গিয়েছে কাজলের, বটিটাকে পাশে সরিয়ে রেখে উঠে দাড়ায় সিঙ্কের কাছে, কল খুলে কাটা আলুগুলো ধুতে ধুতে ঘাড় ফিরিয়ে তাকায় পৃথার পানে, ‘বিসসেস হচ্চে না তো... হবেই বা কি করে... তুমি তো আর আমার দাদাবাবুকে দেকো নি... তাই এত বার এই ভাবে পেসনো করচো... যদি দেকতে, হা করে তাকিয়ে থাকতে আমার দাদাবাবুর দিকে...’ বলতে বলতে ফের মন দেয় হাতের কাজে।

‘আচ্ছা... খুব সুন্দর ছিল তোর দাদাবাবু?’ ফের টিজ করার চেষ্টা করে পৃথা... বেশ মজা পায় কাজলের সাথে অর্নবের ব্যাপারে কথা বলে... প্রসঙ্গটা যেন থামাতেই ইচ্ছা করে না তার।

‘তুমি যেমন একেবারে লম্বা ছিপছিপে, সুন্দর দেকতে... আমার দাদাবাবুও তেমনিই চিলো... হেই লম্বা... আমার থেকেও এত্তো বেশী...’ বলে নিজের মাথার ওপরে হাত তুলে দেখায় কাজল... ‘আর তেমনি গতর খানা... হেই বুকের ছাতি... তুমি হলে সেই ছাতির মদ্দে একেবারে সেদিয়ে যেতে... বুজেচো?’

‘তাই?’ মেকি অবিশ্বাস ফোটাবার চেষ্টা করে গলার স্বরে... মনে মনে বলে, ‘তোর দাদাবাবুর ওই হেই বুকের ছাতির মধ্যেই তো সেঁদিয়ে আদর খাচ্ছিলাম এতোক্ষন... তুই মুখপুড়ী না এলে তো আরো অনেক আদর খেয়ে ফেলতে পারতাম, পাগল হয়ে যেতে পারতাম আদরে আদরে...’ ভাবতে ভাবতেই সারা শরীরের মধ্যে একটা শিহরণ খেলে যায় পৃথার... বুকের মধ্যে হাজারটা দামামা বেজে ওঠে এক সাথে... মাথার মধ্যে ফিরে আসে রাতের সম্ভব্য কামকেলির ছবি... গরম হয়ে ওঠে কানের লতিদুটো তার... লাল হয়ে ওঠে নাকের পাটা... কুর্তির নীচে, ব্রায়ের আড়ালে থাকা নরম সুগোল বুকের বোঁটাগুলো যেন বিদ্রোহ ঘোষনা করতে চায় দাঁড়িয়ে উঠে।

‘আমার সাথে তোর দাদাবাবুর মানাবে, সেটা কি করে বুঝলি?’ প্রশ্ন করতে করতে প্রায় গলা বুজে আসে যেন তার...

‘সেটা কি আর বলে দিতে হয় দিদিমনি? দাদাবাবুকে দেকেচি, তোমায় দেকচি... যেন দুটিতে একেবারে জোড়া হবার জন্যই এসেচো... যেমন আমার দাদাবাবু চিলো, ঠিক তেমনি তুমিও তো... কি সুন্দর তোমার সলিল... এত সুন্দর তোমায় দেকতে, এত সুন্দর তোমার বুক, পাছা...’ পৃথার একেবারে সামনে এসে দাঁড়ায় কাজল, ভালো করে দেখতে দেখতে বলে তাকে।

কাজলের কাছে এই ভাবে নিজের দেহের বর্ননা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে সে, অন্য সময় হলে তার দেহের বর্ননা একটা কাজের মেয়ের থেকে পেলে কি বলতো জানে না সে, কিন্তু এই মুহুর্তে কাজলের দিকে চোখ তুলে তাকাতেও যেন লজ্জা করে তার... ‘যাহঃ... কি যে বলিস না তুই...’

‘সত্যিই বলচি গো দিদিমনি... তুমি যদি আগে আসতে... তাহলে থড়ি দাদাবাবু ওই মেমসাহেব বিয়ে করতো... তোমাকেই বিয়ে করে সারাক্ষন আদর করতো...’ হাসতে হাসতে বলে কাজল ফের ফেরে নিজের কাজে।

আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো পৃথা, কিন্তু ঘাড়ের ওপরে গরম নিঃশ্বাস পড়তেই তার সারা দেহটা যেন অসাড় হয়ে আসে... অর্নব... কখন চুপি চুপি এসে দাঁড়িয়েছে তার পেছনে সে জানতেও পারে নি... ‘ইশ... তবে কি ও এই সব কথাগুলো শুনছিল?’ ভাবতেই লজ্জায় আরো লাল হয়ে ওঠে সে... দুটো বলিষ্ঠ অদৃশ্য হাত তার দেহটাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে... হাতের তেলোদুটো এসে থামে ঠিক তলপেটটার ওপরে... কোমল বর্তুল নিতম্বের ওপরে চাপ পড়ে ইষৎ দৃঢ় হয়ে উঠতে থাকা অর্নবের লোভনীয় পৌরষ... পৃথার মনে হয় এবার সে নিশ্চয় হাঁটু ভেঙে বসে পড়বে... দেহের ওপরে অর্নবের পুরুষালী স্পর্শে যেন হাঁটুর জোরটা কেমন জেলির মত নরম হয়ে পড়ছে আস্তে আস্তে... নিজের শরীরটাকে হেলিয়ে দেয় পেছন দিকে, অর্নবের চওড়া ছাতির ওপরে, উদ্বেল নিতম্বটাকে ঠেলে চেপে রাখে অর্নবের দুই পেশল উরুর মাঝে... একবার আড় চোখে তাকায় কাজলের দিকে... কাজল মন দিয়েছে রান্নার কাজে... মনে মনে কাজলকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে... ‘এই দেখ মুখপুড়ী... তোর দাদাবাবু আমাকে কেমন আদর করছে... আদরে আদরে পাগল করে দিচ্ছে একবারে...’

‘তবে...’ কিছু বলতে হটাৎ তখনই মুখ ঘোরায় কাজল, পৃথাকে ওই ভাবে পেছন দিকে হেলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কেমন অবাক হয়ে যায়... ‘ওকি দিদিমনি, তুমি ওই ভাবে হেলে দাঁড়িয়ে আচো কেনো?’

ঝট করে পৃথার শরীর থেকে হাত সরিয়ে সরে দাঁড়ায় অর্নব... পৃথাও তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে দাঁড়ায়... ‘ক...কি ভাবে?’

‘না কেমন হেলে গিয়েচিলে পেচন দিকে...’ সন্দিহান চোখে তাকায় পৃথার পানে।

‘ও... ও কিছু না... আড়মোড়া... আড়মোড়া ভাঙছিলাম আর কি...’ বলে তাড়াতাড়ি কাজলকে দেখিয়ে হাত তুলে আড়মোড়া ভাঙার ভঙ্গিমা করে, তারপর ফিরে বেরিয়ে আসে কিচেন থেকে... এসে ড্রইংরুমে ধপ করে বসে পড়ে সোফায়... ‘ইশ... আর একটু হলেই কাজলের কাছে ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম... ছি ছি... কি কেলেঙ্কারিটাই না করছিলাম...’ মনে মনে ভাবে পৃথা... ‘আমার কি দোষ শুনি? দোষ তো যত ওই লোকটার... বদমাইশ একটা... পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আদর করলে আমার ওই অবস্থা হবে না? দাঁড়াও... আজ পাই তোমায় রাতে... তখন দেখাবো...’ নিজেই মনে মনে সাফাই গায়... ঘাড় ফিরিয়ে তাকায় এদিক সেদিক... খোঁজে অর্নবকেই যেন... আরো কিছু ভাবতে যাচ্ছিল, কিন্তু হটাৎ করে ভুরু কুঁচকে ওঠে তার... পায়ের ফাঁকে কেমন চেনা এক অস্বস্তিকর অনুভূতি অনুভব করে সে... কিছু একটা গড়িয়ে বেরিয়ে আসার ভিষন পরিচিত অনুভব... তাড়াতাড়ি করে সোফার থেকে উঠে দাঁড়ায়... দ্রুত পায়ে গিয়ে ঢোকে বাথরুমে... পরণের কুর্তিটার হেমটাকে নিজের থুতনির নিচে চেপে ধরে কোমর থেকে লেগিংস আর প্যান্টিটাকে এক সাথে নামিয়ে চোখ রাখে প্যান্টির মাঝের কাপড়ে... চোখে পড়ে জায়গাটার রঙ ভিজে গাঢ় লালচে হয়ে ওঠার... দেখেই চোখ কুঁচকে যায় এক রাশ বিরক্তিতে... ‘ওফ... ভগবান... আজই হবার ছিল?’ ভাবতে ভাবতে প্রায় কান্না এসে যায় তার চোখে... যেন সম্ভাব্য এক সুখানুভূতি পাবার আগেই কেউ জল ঢেলে দিয়েছে সেই সুখে... আবার মুখ নামিয়ে তাকায় প্যান্টির দিকে... ‘নাঃ... কোন ভুল নেই... হয়েই গিয়েছে...’ বিরক্ত মুখে লেগিংস আর প্যান্টি সাবধানে খুলে ফেলে দেহ থেকে, প্যান্টিটা বাথরুমের এক কোনায় নামিয়ে রেখে লেগিংস হাতে বেরিয়ে আসে বাথরুম থেকে... বেডরুমে গিয়ে কাবার্ড খুলে, তাকের পেছন থেকে পাকেটটা টেনে বের করে নেয় পৃথা।

ক্রমশ...
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
#76
অদ্ভুত এই গল্প টা। বোঝা যাচ্ছে না কি হবে। চালিয়ে যান
Like Reply
#77
(02-01-2019, 06:08 PM):cool:ronylol Wrote: অদ্ভুত এই গল্প টা।  বোঝা যাচ্ছে না কি হবে। চালিয়ে যান

:D :D
Like Reply
#78
২৮।।


‘তুমি কি ঘরে?’ শোবার ঘরের আলতো করে ভিজিয়ে বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে আওয়াজ পেয়ে জিজ্ঞাসা করে ড্রইংরুম দাঁড়িয়ে পৃথা। 

অনেকদিনই আর বৃষ্টি হচ্ছে না... তাই যথেষ্ট ভ্যাপসা গরম হয়ে উঠেছে শহরের আবহাওয়াটা ফের... রাতে এসি ছাড়া শোয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না এখন... কিন্তু জ্বরএর জন্য এসিও চালাবে না অর্নব, আগেই বলে দিয়েছে... 

‘হ্যা, কেন? আসবো?’ অর্নবের স্বর ভেসে আসে।

‘না, না... আওয়াজ পেলাম, তাই ভাবলাম তুমি ঘরে আছো কি না...’ উত্তর দেয় পৃথা, একবার মুখ তুলে ঘরের দিকে তাকিয়ে নিজের হাতে ধরা সিগারেটএর প্যাকেটটা দেখে... ‘একটা কথা বলবো? রাগ করবে না তো?’ খানিক ইতস্থত করে ফের মুখ তুলে প্রশ্ন করে সে।

‘কেন? কি কথা?’ অর্নবের গলার স্বরটা এগিয়ে বেডরুমের দরজার কাছে পৌছায়... পৃথার বুঝতে অসুবিধা হয় না ওর কথায় ঘর থেকে বেরিয়ে অর্নব ওর সামনে এগিয়ে আসছে।

‘বলছি, একটা সিগারেট খাবো গো? প্লিজ... অনেকক্ষন খাইনি তো, তাই... প্লিজ...’ অনুনয় করে না দেখা অর্নবের দিকে তাকিয়ে।

‘খেতেই হবে? আজকের দিনটা বাদ দিলে হয় না?’ অর্নবের স্বরটা এবার একেবারেই পৃথার সামনে এসে বাজে... অর্নবের গায়ের পুরুষালী গন্ধটা নাকে লাগে পৃথার...

‘দেখো... তোমার কথা শুনে আজ সারা দিন একটাও খাইনি... এখন বড্ডো খেতে ইচ্ছা করছে... খাই না গো?’ ফের অনুরোধ করে সে।

‘কিন্তু তোমার যে জ্বরটা সবে ছেড়েছে... কালকে কি অবস্থা হয়েছিল বলো তো? আজকের দিনটা থাক না...’ বলে অর্নব... বলিষ্ঠ হাতের পরশ লাগে পৃথার কাঁধের ওপরে।

ঘাড় কাত করে গাল ছোয়ায় হাতের পীঠের ওপরে পৃথা... নিজের কোমল গালটা ঘসে সেই হাতের পীঠের ওপরে... তারপর মুখ তুলে গাল ভারী করে বলে ওঠে, ‘ভাল্লাগে না... একটা সিগারেট খাবো, তার পারমিশন নেই... আজ ভাবলাম মনের সুখে করবো, সেটাও ভগবানের ইচ্ছা হলো না, আজই শরীর খারাপ হতে হলো... আমার সবই ইচ্ছাতেই সবাই শুধু না বলে... চাই না... যাও... খাবো না...’ বলে হাতের মধ্যে ধরা সিগারেট প্যাকেটটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে যায় সেন্টার টেবিল লক্ষ্য করে... কিন্তু অর্নবের অদৃশ্য গায়ে সেটা ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়।

অর্নব নীচু হয়ে সিগারেট প্যাকেটটা তুলে রেখে দেয় টেবিলটার ওপরে, তারপর পৃথার সামনে ঘুরে ওকে নিজের বুকের ওপরে টেনে নেয় দুহাতের আলিঙ্গনে... পৃথা বাধ্য মেয়ের মত ভারী গাল নিয়ে মাথা রাখে অর্নবের নিরাকার বুকের ওপরে... অবিন্যস্ত চুলের মধ্যে আঙুল চালিয়ে বিলি কাটে আদর করে... ‘লক্ষ্মী সোনা... কি করবে বলো? এখানে তোমার নিজের হাতে কিছু নেই...’

‘আ হা... লক্ষ্মী সোনা... বলো? নিজের হাতে তো কিছু নেই?’ মুখ তুলে অর্নবকে ভেঙচে ওঠে পৃথা... ‘ভাল্লাগে না... হু হু...’ বলে আবার মুখ লুকায় লোমশ বুকের মাঝে... ডান হাত তুলে আঙুল দিয়ে অর্নবের পুরুষালী বুকের লোমগুলোকে আন্দাজ করে সরিয়ে স্পর্শ করে ছোট্ট বোঁটাটার ওপরে... সেটাকে নখ দিয়ে আলতো করে খুঁটতে খুঁটতে বলে, ‘কত আশা করেছিলাম বলো, আজকে তোমার কাছে আদর খাবো... আর কি হলো দেখো...’

অর্নব কিছু উত্তর না দিয়ে চুপ করে জড়িয়ে ধরে থাকে পৃথাকে নিজের বুকের মধ্যে...

অর্নবের থেকে কোন উত্তর না পেয়ে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে পৃথা... আঙুলের ডগায় থাকা অর্নবের বুকের বোঁটাটাকে দুই আঙুলের চাপে চিমটি কেটে ধরে হটাৎ করে... ‘আআআ... কি করছ?’ কোঁকিয়ে ওঠে অর্নব...

‘আমার কথার উত্তর দিচ্ছ না কেন? হুঁ?’ ফের আদর করে আঙুল বোলাতে থাকে ব্যথা দেওয়া বোঁটার ওপরে... ‘বলো না... আমার শরীরটা এখনই কেন খারাপ হলো... উ...’

‘ভালোই হয়েছে তো... অন্তত আর কিছুদিন আমাকে আর একটু চেনার সময় পেলে... সব কিছুই এত তাড়াহুড়ো না করাই ভালো... বুঝেছ?’ পৃথার চুল থেকে খুব ধীরে, যেন স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে হড়কে অর্নবের হাতটা নেমে আসে পৃথার মসৃন পীঠের ওপরে... পীঠের মাঝ বরাবর এসে থেমে যায় হাতের অগ্রগতি... সেই মুহুর্তে পৃথার পরনের পাতলা গেঞ্জী কাপড়ের স্লিপটার ওপর দিয়ে পৃথার শরীরের ওম্‌ নিতে থাকে নিজের হাতের তালুর মধ্যে।

‘আ হা... আমার জ্যাঠামশাই রেএএএএ...’ সুর টেনে বলে ওঠে পৃথা... মুখটাকে লোমের মধ্যে ঘসে নেয় বার খানেক... ‘এই বদমাইশ, বিচ্ছিরী, অসভ্য লোকটাকে আর নতুন করে কি চিনবো? হু?’

‘আমি বদমাইশ?’ পৃথার মাথার চুলে মুখ ডুবিয়ে প্রশ্ন করে অর্নব।

‘হু’... অর্নবের বুকের মধ্যে মুখ রেখে উত্তর দেয় পৃথা।

‘আমি বিচ্ছিরী?’ প্রশ্ন করে অর্নব ফিরিয়ে... হাতটা তার ফের সচল হয়ে ওঠে... আরো খানিকটা নেমে যায় পৃথার পীঠ বেয়ে নীচের পানে... ঠিক কোমরের ওপরে নিতম্বের উদ্বাম ঢেউ যেখানটায় শুরু হয়েছে, সেখানে গিয়ে থামে... পাতলা সুতির কাপড়ের স্লিপ্‌সটার হেমও শেষ হয়েছে ঠিক সেই খানটাতেই... হাতের তালুতে স্পর্শ লাগে পৃথার পরিধেয় পাতলা সুতির সর্টস এর ইলাস্টিক ব্যান্ড আর স্লিপ্‌সটার হেমটার মাঝে থাকা মসৃণ ত্বকের... খুব ইচ্ছা করে স্লিপ্‌সটা তুলে হাতটাকে ওটার মধ্যে পুরে দেবার... অনেক কষ্টে সংবরণ করে নিজের সেই ইচ্ছাটাকে...

পৃথাও অনুভব করে অর্নবের হাতের স্পর্শ নিজের শরীরের চামড়ায়... গুনগুনিয়ে ওঠে সে বুকের মধ্যে থেকে... ‘ইশ... বিচ্ছিরীই তো...’

‘আবার অসভ্যও?’ ফের প্রশ্ন করে অর্নব... হাতের পাঞ্জাটা ঘুরে বেড়ায় পৃথার কোমরের ওপরে...

‘ভিষন... ভিষন... ভিষন... অসভ্য লোক একটা...’ বুকের ওপর থেকে মুখটা তুলে খিলখিল করে হাসতে হাসতে বলে ওঠে পৃথা... ডান হাতটা ঘুরিয়ে নিজের শরীরের পেছন দিকে নিয়ে গিয়ে অর্নবের হাতটাকে ধরে... তারপর সেটাকে নামিয়ে দেয় নিজের বর্তুল তুলতুলে কোমল নিতম্বের দাবনার ওপরে... চেপে ধরে অর্নবের হাতটাকে নিজের সেই লোভনীয় নিতম্বের মাংসল দাবনার ওপরে... হাতের মুঠোয় ধরে অর্নবের হাতের তেলোটাকে ঘসতে থাকে দাবনার ওপরে... ‘অসভ্য একটা... উমমম...’ কামঘন চোখে মুখ তুলে তাকায় সে অদৃশ্য অর্নবের পানে... নিজের শরীরটাকে আরো ঘন করে নিয়ে আসে অর্নবের শরীরের সাথে... উরু সন্ধিটাকে চেপে দেয় অর্নবের পুরুষালী উরুর ওপরে... অর্নব ছোঁয়া পায় প্যান্টির আড়ালে থাকা দুই উরুর ফাঁকে বাঁধা প্যাডটার... পাতলা ঠোঁটের কোয়া দুটো ফাঁক হয়ে যায় খানিক... ফিস ফিসিয়ে ওঠে... ‘আর সেই অসভ্য লোকটা শুধু আমার... আমার... আমার... আর আমার...’ বলতে বলতে অর্নবের হাতটাকে নিজের নিতম্বের ওপরে চেপে রেখে পায়ের আঙুলের ওপর ভর রেখে শরীরটাকে আরো খানিক তুলে ধরে অর্নবের পানে... চোখের পাতা দুটো আস্তে আস্তে বন্ধ করে দিয়ে ঘাড়টাকে সামান্য কাত করে দিয়ে অপেক্ষা করে সে... ঠোঁটের কোয়া ফাঁক হয়েই থাকে একই ভাবে...

অর্নব নিজের মাথাটাকে নীচু করে একটু... একরাশ দাড়ি ভরা মুখের আড়ালে থাকা পুরুষালী মোটা ঠোঁট চেপে ধরে পৃথার এগিয়ে বাড়িয়ে মেলে ধরা ঠোঁটের ওপরে... ভিজে যায় দুজনেরই ঠোঁটজোড়া একে অপরে মুখের লালায়... অনুভব করে নিজের বুকের ওপরে চেপে বসা পৃথার কোমল দুটো মাংসের পিন্ডর চেপে বসে থাকার... হাতের তালুর মধ্যে থাকা পৃথার পরিধেয় সর্টস আর প্যান্টি আড়ালে থাকা ওই নরম নিতম্বের দাবনার একটাকে প্রায় খামচে ধরে সে... তার মুখের মধ্যেই শিৎকার দিয়ে ওঠে অস্ফুট স্বরে পৃথা, ‘উমমমম... হুমমমমম...’ অর্নবের হাতের ওপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে দুহাত দিয়ে আলিঙ্গন করে ধরে থাকে তার প্রিয়তমের গলাটাকে... নিজের বুকটাকে আরো চেপে ধরে তার বুকের সাথে... ভারী হয়ে আসে দুজনেরই নিঃশ্বাস... উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে ওঠে নিশ্বাসএর তাপমাত্রা... একটু একটু করে স্ফিত হয় উঠতে থাকা অর্নবের পৌরষের স্পর্শ লেগে থাকে পৃথার বাড়িয়ে চেপে ধরে থাকা মসৃন উরুর ওপরে।

এক মিনিট... নাকি পাঁচ মিনিট... নাকি আধ ঘন্টা... একে অপরে সাথে এই ভাবে কতক্ষন ঠোঁটের ওপরে ঠোঁট চেপে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার হিসাব থাকে না... যেন ওদের এই ভাবে প্রগাঢ় আলিঙ্গনের বাঁধা পড়তে দেখে সময়ও থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছে... স্তব্দ হয়ে গিয়েছে চতুর্দিক... শুধু ঘরের দেওয়াল ঘড়িটা মৃধু শব্দে বলে চলেছে... টিক টিক টিক টিক... আর সেই সাথে মিলিয়ে দুটো প্রেমঘন শরীরের হৃদস্পন্দন...

এক সময় মুখ তোলে পৃথার ঠোঁটের ওপর থেকে অর্নব... দুজনেই হাঁফায় খানিক... বড় বড় নিঃশ্বাস নেয় শ্বাস টেনে... এক রাশ ভালোবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকে পৃথার তুলে ধরা মুখটার পানে অর্নব... কি সুন্দর, নিস্পাপ অথচ কতই না কামনামেদূর মুখমন্ডল... প্রাণ ভরে তাকিয়ে থাকে তার প্রেয়সীর মুখের পানে সে...

পৃথারও বোধহয় বুঝতে অসুবিধা হয় না অর্নবের তার দিকে নির্নিমেশ তাকিয়ে থাকার... প্রায় অস্ফুট স্বরে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে সে... ‘লাভ মী সোনা... লাভ মী প্লিজ... আই ওয়ান্ট টু গেট ড্রাউন্ড ইন ইয়োর লাভ... প্লিজ... টেক মী...’

আজ কিছু করা সম্ভব নয়, সেটা অর্নব ভালো করেই জানে, তবুও, পৃথার কথার কোন প্রতিবাদ করে না সে, সামান্য ঝুঁকে, অবলীলায় পৃথার শরীরটাকে নিজের বলিষ্ঠ দুই হাতের ওপরে পাঁজাকোলা করে তুলে নেয় মাটির ওপর থেকে... বয়ে নিয়ে চলে শোবার ঘরের পানে... পৃথা পরম নিশ্চিন্তে নিজের মুখটাকে গুঁজে রাখে অর্নবের বুকের মাঝে... দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে থাকে আলতো স্পর্শে তার প্রিয়তমের গলাটাকে... একটা পাখির পালকের মত ভেসে থাকে শূন্যে।

ক্রমশ...

[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#79
Opekhay roilam next update er jonne??
Like Reply
#80
dada arek tu boro update cai
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)