16-10-2025, 05:41 PM
Very good
|
Romance কিছু সম্পর্ক
|
|
16-10-2025, 06:16 PM
নতুন আপডেট পূর্ববর্তী পৃষ্ঠায় ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
16-10-2025, 06:22 PM
কামের জগতে এসে কামের বাইরেও যখন
অন্য এক অনুভূতীর দেখা মিলে
আহহ, বড্ড ভালোই লাগে।
চলুক
যেমনটা চলছে।
![]()
16-10-2025, 07:48 PM
মারামারি মোটেও নাটকিয় লাগে নি। পুরো লেখাই লাজবাব। কিন্তু প্রত্যেক পুরুষের গায়ের জোরই প্রায় সমান, সে যতই জিম করুক। যদি না বিপরীত মানুষ হ্যাংলা পাতলা হয়।
সে দিক দিয়ে রাজীব তো বেশ লম্বা, সমর্থ, আপনিই লিখেছেন অনেক বার। জয় ওর থেকে খাটো, লম্বা ছেলেরা একটু হলেও অ্যাডভান্টেজ পায় মারামারির সময়। রাজীবের ফাইট ব্যাক আশা করেছিলাম। ও তো আর হিজড়া নয়, জয়, হিজড়া বললো সেটাও হজম করলো। জয়ের এবার একটা শিক্ষা হওয়া উচিত, খুব বেপরোয়া ও, এ ধরনের ছেলেড়া জীবনে না নিজেরা সুখী হয় না কাছের মানুষদের সুখী করতে পারে। জয় রানীর, রাজীবের, জান্নাতের সাথে সাথে নিজের জীবনকেও বিষিয়ে তুলছে, হি ডিজার্ভ এ লেসন।
16-10-2025, 08:20 PM
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
16-10-2025, 08:25 PM
(16-10-2025, 06:22 PM)রাত্রী Wrote: চলছে , চলবে ,যেমনটা চলছে । পাশে থাকবেন ,মূল্যবান মতামত রাখবেন ,দ্বিমত থাকলে অবশ্যই জানাবেন । আমি দ্বিমত খুব পছন্দ করি । বলতে পারেন আমার পার্সোনাল ফেবারিট ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
16-10-2025, 08:45 PM
(This post was last modified: 16-10-2025, 08:56 PM by gungchill. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(16-10-2025, 07:48 PM)ধূমকেতু Wrote: মারামারি মোটেও নাটকিয় লাগে নি। পুরো লেখাই লাজবাব। কিন্তু প্রত্যেক পুরুষের গায়ের জোরই প্রায় সমান, সে যতই জিম করুক। যদি না বিপরীত মানুষ হ্যাংলা পাতলা হয়। আমি একবার নাকে আঘাত পেয়েছিলাম , তখন কে কি বলছে সেটা আমার শোনার মত অবস্থা ছিলো না । রাজীব ও আমার মত সাধারন ছেলে , তাই জয়ের ঘুষি খেয়ে নিশ্চয়ই চোখে সর্ষে ফুল দেখছিলো । আমি আপনার কমেন্ট পেয়ে AI সার্চ করে দেখালাম । যাদের মাসল মাস বেশি , তাদের ঘুষিতে এক্সট্রা পাওয়ার যোগ হয় । অবশ্য এটা ঠিক লম্বা ছেলেরা কিছু এডভান্টেজ পায় । তবে খাটো লোকটার যদি ফিজিকেল স্ট্রেন্থ বেশি থাকে , তবে বেঁটে লোক এডভান্টেজ বেশি পায় , আমি মারামারি সম্পর্কে তেমন একটা জানি না , AI যা বলল তাই বললাম । সামনেযদি আরো মারামারি আসে , আপনার কথা অবশ্যই মাথায় রাখবো। রাজীব কিন্তু নিজের সামর্থ্যের প্রমান কিছুটা রেখছে , জয় কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে , তারপর কঠিন ভাষায় থ্রেট ও করেছে । আর এসব হিজড়া ফিজড়া টাইপ ফালতু কথা ওকে তেমন প্রভাবিত করে না । যে দুটি জিনিস ওকে আঘাত করেছে , সেটা হচ্ছের রানীর চরিত্র নিয়ে কথা , আর বাড়ি নিয়ে খোটা দেয়া । এবার আর রাজীব নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না , জয়ের ধাক্কা খেয়ে একটু পিছিয়ে পড়েছিলো , সেই যায়গা টুকু বেশ গতিতে পেরিয়ে এসে শরীরের সব শক্তি দিয়ে জয় কে ধাক্কা দেয় , আচমকা ধাক্কায় জয় নিচে পরে যায় , আশেপাশে দুই একজন লোক উকি দিতে শুরু করেছে , সেটা রাজীবের নজরে আসে , তাই নিচু হয়ে রাগে কাঁপতে কাঁপতে নিচু স্বরে বলে , “ তুই যদি আর একটা বাজে কথা রানীর সম্পর্কে বলবি , তাহলে আমি ভুলে যাবো তুই কে , আমি তোকে সাবধান করে দিচ্ছি , আমাকে যা বলার বল, কিন্তু রানীর সম্পর্কে একটা বাজে কথাও আমি শুনবো না , রানী আমার বোন, আমি নিজের হাতে ওকে বড় করেছি , আমি জানি ও কি করতে পারে , আর কি করা ওর পক্ষে সম্ভব না, আর রানী নিজের বাড়িতে কাকে আনবে কাকে আনবে না এটা ও তোর কাছে জবাবদিহি করবে না” কয়েক মুহূর্তের জন্য জয় হতবাক হয়ে যায় , হতবাক হওয়ার প্রথম কারন রাজীব যে ওকে ধাক্কা দিয়েছে তার প্রচণ্ডতা , দ্বিতীয় কারন রাজীবের রাগ , জয়ের কাছে মনে হচ্ছে রাজীবের চোখ দুটো যেন ইটের ভাটির মত জ্বলছে । রাজীব যে এরকম রাগান্বিত হতে পারে সেটা ও ভুলেই গিয়েছিলো । সেই ছোট বেলার রাজীব কে এক ঝলকের জন্য যেন দেখতে পায় জয় । প্রচণ্ড জেদ আর মারামারিতে সবার আগে থাকতো রাজীব । জয় বেচারার কথাও একটু ভাবুন , ওর মত লোকের ইগোেতে চরম আঘাত লেগেছে । যে ছেলে চাইলেই মেয়ে পটাতে পারে , সেই ছেলেকে রেপিস্ট আক্ষা দিয়ে একটা মেয়ে অন্য ছেলে নিজের বাড়িতে এনেছে। একবার একটু ভেবে দেখুন তো । বেচারা তো পাগল হয়ে আছে । কি করছে , কি বলছে তার কোন ঠিক নেই । এই ধরনের মানুষের কাছে নিজের ইগোর চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই । দেখুন না ইগোর কারনে রাজীবের মত বন্ধুকে দূরে ঠেলে দিয়েছে । এই ইগো যে জয় কে দিয়ে আর কি কি করাবে , কে জানে ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
17-10-2025, 12:56 AM
রাজিকে আর কোন জায়গাতে যাতে হেনস্তা হতে না হয় ভাই প্লিজ??, ভবিশ্যতে যদি জয় এর সাথে আবার মারামারি কাটাকাটি হয় তাহলে রাজিবই যেন দুইটা কিল ঘুসি দিয়ে আগায়ে থাকে। এই ছেলেটারে আর অপমান হইতে দেখতে ভালো লাগেনা???। একজন পাঠক হিসাবে এটা আপনার কাছে আমার, অনুরোধ বা আবদার যাই বলেন কিন্তু রঅকতে হবে।?????
17-10-2025, 04:27 PM
(17-10-2025, 12:56 AM)mukta02 Wrote: রাজিকে আর কোন জায়গাতে যাতে হেনস্তা হতে না হয় ভাই প্লিজ??, ভবিশ্যতে যদি জয় এর সাথে আবার মারামারি কাটাকাটি হয় তাহলে রাজিবই যেন দুইটা কিল ঘুসি দিয়ে আগায়ে থাকে। এই ছেলেটারে আর অপমান হইতে দেখতে ভালো লাগেনা???। একজন পাঠক হিসাবে এটা আপনার কাছে আমার, অনুরোধ বা আবদার যাই বলেন কিন্তু রঅকতে হবে।????? আপনার কি মনে হয় , ওই ঘটনায় জয় এগিয়ে ছিলো ? আমার কাছে কিন্তু এমন মনে হয়নি , আমার কাছে মনে হয়েছে ওই ঘটনায় রাজীব জয়ের উপর মানসিক সুপিওরিটি অর্জন করেছে । জয়ের চেয়ে রাজীব অনেক বেশি মানসিক স্ট্রেন্থ এর পরিচয় দিয়েছে । ভাই কিল ঘুষি দিয়েই সুধু এগিয়ে যাওয়া যায় না । অনেক ধন্যবাদ আপনার কমেন্ট এর জন্য ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
17-10-2025, 06:57 PM
আজ কে রাতে কি কোনো আপডেট পাবো, লেখক মশাই?
শুক্রবার.... তাই আর কি।
17-10-2025, 07:21 PM
(17-10-2025, 06:57 PM)ধূমকেতু Wrote: আজ কে রাতে কি কোনো আপডেট পাবো, লেখক মশাই? চেস্টায় আছি , আজকে আমার মনকে "ভালো লাগেনা " রোগে পেয়েছে । আজকে না পেলেও আগামিকাল বিকেলে হয়ে যাবে , আজকে অর্ধেক এর মত লেখা হয়েছে ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
17-10-2025, 07:47 PM
(17-10-2025, 07:21 PM)gungchill Wrote: চেস্টায় আছি , আজকে আমার মনকে "ভালো লাগেনা " রোগে পেয়েছে । আজকে না পেলেও আগামিকাল বিকেলে হয়ে যাবে , আজকে অর্ধেক এর মত লেখা হয়েছে । মনের উপর কারো হাত নেই। তাই রিকোয়েস্ট করবো না। কিন্তু গল্পটা পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। সারাদিন মাথার ভেতর পুরো প্লট টা গিজগিজ করে। কালকে এক ঘন্টা বাসে বসে ছিলাম, পুরো সময় গল্প টা পরেছি। কয়েকটা সিন তো দুই তিন বারও পড়েছি। যাই হোক অপেক্ষায় থাকলাম।
17-10-2025, 07:53 PM
(17-10-2025, 07:47 PM)ধূমকেতু Wrote: মনের উপর কারো হাত নেই। তাই রিকোয়েস্ট করবো না। অবশ্যই চেষ্টা করবো ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
17-10-2025, 09:08 PM
(This post was last modified: 17-10-2025, 09:10 PM by gungchill. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (ঘ)
রাজীব আর জান্নাত বাইকে করে বাসায় ফিরছে , রাজীব চালচ্ছে আর জান্নাত পেছনে বসে আছে । দুজনের মাঝে সম্মানজনক দুরুত্ব বজায় রেখছে দুজনেই , দুজনের মাথায় ই হেলমেট । রাজীব কখনি রাফ চালায় না , জান্নাত অথবা রানী সাথে থাকলে আরো বেশি বুঝে শুনে চালায় । ওরা দুজন জ্যামে বসে আছে , যদিও ফুটপাথ দিয়ে অনেক বাইক চলে যাচ্ছে , কিন্তু রাজীব সেই চেষ্টা করছে না । “ রাজীব , একটা কাজ বললে করবি?” রাজীব লুকিং গ্লাসে জান্নাত কে লক্ষ্য করে , সাধারনত এই ধরনের অনুরধ জান্নাত তখন করে যখন ওর মন খারাপ থাকে , রাজীব ভালো করে জান্নাতের অভিবেক্তি লক্ষ্য করে । সেখানে বরং জান্নাত কে একটু খুশি খুশি ই লাগছে । “ আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো বস” রাজীব হালকা টোনে বলে , জান্নাত ভ্রু উঁচিয়ে তাকায় , দুজনের চোখ এক হয় লুকিং গ্লাসের মাধ্যমে , জান্নাত দেখে রাজীবের ঠোঁটে মৃদু হাসির রেখা , মনে মনে খুশি হয় জান্নাত । রাজীব কে খুশি দেখলে ও নিজেও আনন্দিত বোধ করে । “ বস বললি ? নট ব্যাড , এক হিসেবে আমি তোর বস ই হই” বলে জান্নাত হেসে ওঠে , রাজীব ও নিজের হাসি প্রসস্ত করে । আশেপাশের লোকজন ওদের দিকে তাকায় , কেউ কেউ ভাবে ওরা দুজন কাপল । কারো কারো চোখে আডমায়ারেশন , কারো কারো চোখে হালকা জ্বলন দেখা যায় , কেউ কেউ বিরক্ত হয় , এদের ভাষ্য , বেহায়ার মত রাস্তায় এমন হা হা হি হি করতে হবে কেনো বাপু , ঘরের ভেতর গিয়ে করো না । তবে রাজীব আর জান্নাতের এসবের দিকে কোন নজর নেই । ওরা দুজনে একে অপরের হালকা মেজাজ মন দিয়ে অনুভব করতে ব্যাস্ত , সেই সাথে এই ছোট মুহূর্ত উপভোগে , না আছে পড়াশুনার টেনশন, না আছে কাজের চাপ , না আছে অন্য কোন চিন্তা । এই মুহূর্তে ওরা ওদের আলাদা জগতে । “ আমাকে বাইক চালানো শেখাবি?” হাসি থামিয়ে জান্নাত জিজ্ঞাস করে । “ কেনো? হঠাত!! বড় আব্বু কি রাজি হয়েছে? “ রাজীব একটু অবাক হয় , ও জানে জান্নাতের বাইকের সখ আছে , কিন্তু বড় আব্বু ওকে বাইক কিনে দিতে রাজি হলো কবে সেটাই রাজীব ভেবে পায় না । সেই সাথে আরো একটা ব্যাপার মুহূর্তের জন্য মনে উদয় হয়ে আবার ডুবে যায় , সেটা হচ্ছে , জান্নাত বাইক কিনলে ওরা হয়তো আর এভাবে কোনদিন বাসায় ফিরবে না। “ আরে বোকা ছেলে , আমি কি তোর বড় আব্বুর কাছ থেকে টাকা নিবো নাকি?” জান্নাত রহস্য করে বলে । “তাহলে?” অবাক হয় রাজীব । “ তুই ভুলে গেছিস ? আমাদের চ্যানেল যে মনিটাইজ হয়েছে , তা ছাড়া কত কত এন্ডরসমেন্ট অফার আসছে , যদিও বেশিরভাগ ই জুয়ার এপস এর এড , তাই আমি না করে দিয়েছি , ভালো অফার আসলে তোকে জানাবো” জান্নাত খুশিতে ডগমগ হয়ে বলে । রাজীব হাসে জান্নাতের এতো খুশি দেখে , তারপর বলে “ বাইক কেনার টাকা হতে অনেক দেরি আছে , আমাদের অতো ভিউ তো আসছে না” “ এই বছর না হোক আগামি বছর তো হবে , আগে থেকে শিখে রাখতে অসুবিধা কোথায়? তুই শেখাবি কিনা বল , নইলে আমার শেখানোর মানুষের অভাব নেই” জান্নাত কপট রাগ দেখিয়ে বলে , আসলে মনে মনে ও রাজীবের কাছেই শিখতে চায় । “ আরে বাবা শেখাবো শেখাবো , না শেখালে চাকরি থাকবে নাকি ?” রাজীব হাসতে হাসতে বলে , “ এই তো বুঝছিস , বসের উপর কোনদিন কথা বলবি না” জান্নাত রাজীবের কাঁধে চাপড় মারে কয়েকটা । জান্নাত ওর কাঁধের যে অংশটায় চাপড় মেরেছে , সেই অংশের দিকে তাকায় একবার রাজীব । আজকাল রাজীব জান্নাতের সঙ্গ , বন্ধুত্ব বেশ উপভোগ করে । এখন আর অফিসে যেতে হয় না , রানীও বেশ রিজার্ভ থেকে । তাই রাজীবের হাতে বেশ সময় । এই বাড়তি সময় টা জান্নাতের সাথে কাটিয়ে দিতে মন্দ লাগে না । কাজ ও হয় , আবার সময়টাও ভালো লাগে , যতক্ষণ সময় রাজীব জান্নতের সাথে কাটায় ওই সময়টা ওর সবচেয়ে ভালো কাটে । রাজীব নিজেকে নিজে বুঝিয়েছে , জান্নাতের সাথে বন্ধুত্বরে বেশি আর কিছুর আশা রাখা ঠিক হবে না । কোথায় জান্নাত আর কোথায় ও , বড় আব্বু যদি জানতে পারে , রাজীব অন্য কিছু ভেবেছে জান্নাত কে নিয়ে । তাহলে ব্যাপারটা সুখকর হবে না , হয়তো জয়ের মত মুখে বলবে না, কিন্তু মনে মনে নিশ্চয়ই ভাববে , এই পরিবারের লোকজন অকৃতজ্ঞ । রাজীব কিছুতেই বড় আব্বুর মনে এই চিন্তা আসার সুযোগ করে দেবে না । রাজীব ভাবে জান্নাতের কথা , ওর তো সামনে এমন কোন বাধা নেই । তবুও নিজেকে কত সুন্দর ভাবে ধরে রাখে । রাজীব কে বুঝতেই দেয় না , আগে ওদের মাঝে এমন কিছু কথা বার্তা হয়েছিলো । ঠিক এই মুহূর্তে রাজীবের মনে একটা প্রশ্ন উদয় হয় , রাজীব ভাবে , জান্নাত কি নিজেকে রেস্ট্রেইন করে রাখে , নাকি ও মুভঅন করে ফেলেছে ? প্রশ্নটা জাগতেই রাজীবের বুকে হালকা চাপ অনুভুত হয় । কিন্তু রাজীব সেটাকে পাত্তা দেয় না , মনে মনে ভাবে , জান্নাত যদি মুভঅন করেই থাকে , সেটা ওদের দুজনের জন্যই ভালো হয়েছে । “ এই কি ভাবছিস ? আচ্ছা তুই কি করবি টাকা পেলে” রাজীব কে কিছুটা আনমনা দেখে জিজ্ঞাস করে জান্নাত । “ আগে তো টাকা পাই , গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল দেয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই” রাজীব নিজের চিন্তা থেকে বেড়িয়ে এসে হাসতে হসাতে বলে । “ এমন ভাব করছিস আমার চ্যানেলের কোন ভবিষ্যৎ নেই?” জান্নাত ঠোঁট ফুলায় । রাজীব লুকিং গ্লাসে সেটা দেখে , দেখে হাসে “ বলে আমি কি সেটা বলেছি , বলেছি যখন পাবো তখন ভাববো, আর আমি হলাম ৩০% এর মালিক , আমি আর কত টাকা পাবো বল” রাজীব হাসে , “ যাহ তোকে ৫০% দিয়ে দিলাম , জান্নাত সাথে সাথে বলে” আসলে জান্নাতের কাছে এই পারসেন্ট এর কোন মূল্য নেই , রাজীব যদি চায় , সুধু চ্যানেলের মালিকানা কেন , ও নিজেই রাজীবের হয়ে যাবে । এই ভাগাভাগির কথা সেদিন রাজীব কে এ জন্য বলেছিলো , যেন রাজীব বুঝতে পারে জান্নাত আসলেই প্রেফেসনাল । বুদ্ধু টা এটা জানে না , জান্নাত আর সবার সাথে প্রফেশনাল হতে পারলেও রাজীবের সাথে হতে পারবে না । “ উহু এটা চলবে না , আমি দেখছি তুই কত পরিশ্রম করিস , আমি ত সুধু ইডিট করে দেই , বাকি আইডিয়া , স্ক্রিপ্ট , প্রেজেন্টেশন , সব তুই করিস , এমন কি ইনভেস্ট ও সব তোর , আমি কেন ৫০ ভাগ নেবো , তুই ই তো বলেছিস , সব ব্যাপারে প্রফেশনাল হতে হবে” ফুরফুরা মেজাজে থাকা জান্নাত হাসে রাজীবের কথা শুনে , বলে “ ঠিক আছে আমার……” এক মুহূর্তের বিরতি নিয়ে জিভের ডগায় চলে আসা শব্দটা পরিবর্তন করে বলে “ অবিডিয়েন্ট কর্মচারী, এভাবেই বসের কথা মেনে চলবে সব সময় , তাহলে উন্নতি করতে পারবে” কথা গুলো বলার পর জান্নাতের ফুরফুরে মেজাজে কিছুটা ভাঁটা পরে , আজ ও এতো খুশি ছিলো যে খুশিতে ভুলেই গিয়েছিলো , রাজীব কে “বোরিং রাজকুমার” ডাকার অধিকার ওর নেই । জান্নাত আজকে সকালে নিজের চ্যানেলের revenue চেক করতে গিয়ে দেখছে , বেশ ভালো একটা এমাউন্ট জমা হয়েছে । তাই মনটা আজ খুব ভালো ছিলো । কিন্তু এখন এই মুহূর্তে তেমন একটা ভালো ফিল হচ্ছে না । চোখের সামনে রাজীবের পিঠ দেখে বড্ড লোভ হয় , ওর ইচ্ছে হয় পেছন থেকে রাজীব কে জড়িয়ে ধরে ওর পিঠে মাথা রেখে বাসা পর্যন্ত যায় । জান্নাতের ঠোঁটে একটা তেঁতো হাসি আসে , নিজের ইচ্ছার উচ্চাবিলাশ দেখে , মনে মনে বলে , এতো লোভ করিস না লোভি মেয়ে , জানিস না লোভে পাপ , আর পাপে মৃত্যু । **** রানী আজ দুদিন হলো ভার্সিটি যায় না , সারাদিন ঘরে বন্দি থাকে । ভার্সিটির কারো কল রিসিভ করে না , বাড়িতে রাজীব আর ওর আব্বু ভাবে ও ভার্সিটি গিয়েছিলো । কারন ওরা যখন ফেরে তখন রানী এমন ভাব করে যেন ও নিজেও ক্লাস করে এসেছে । নিজেকে এমন ভাবে লুকিয়েছে , এমনকি পাশের বাড়ির লোকজন ও জানে না ও কখন কোথায় আছে । কিছুতেই ভেবে পায় না ও এখন কি করবে । এতদিন অবস্থা যা ছিলো তাতে ও জয় কে ভুল বুঝে ছিলো । কিন্তু এখন জয় ওকে আবরারের সাথে মিলিয়ে ভুল বুঝেছে । এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান কি করে ঘোচাবে সেটাই রানী আজকাল ভাবে সারাদিন সারা রাত । কোন কিছুতেই মন বসাতে পারে না , শরীর ও খারাপ লাগছে আজ দুদিন ধরে , সারাক্ষণ মাথা ঝিম ঝিম করে । মাঝে মাঝে চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে যায় , জোনাকি পোকার মত আলো দেখা যায় । আর এসব কারনে চিন্তা গুলো ও ফলপ্রসূ হচ্ছে না । একবার ভাবে জয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে , নিজের কথা গুলো খুলে বলবে । কিন্তু সেই ভাবনা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে না । ভাবে জয় যদি ওকে প্রত্যাখ্যান করে , তখন কি হবে ? এই প্রত্যাখ্যান কি ও সহ্য করতে পারবে ? জয় যদি ওকে বিশ্বাস না করে? তখন কি হবে ? রানীর হাত পা শীতল হয়ে আসে কল্পনা ও করতে পারে না ওই অবস্থা । রানী মনে মনে ভাবে এগেই ভাল ছিলো , ও সুধু দূর থেকেই জয় কে কামনা করে যেতো । এতো কম্লিকেশন ছিলো না তখন , হারানোর ভয় ও ছিলো না । এখন যখন পাওয়ার কাছাকাছি চলে এসেছিলো , তখনি হারানোর ভয় পেয়ে বসেছে । আর ভায় হবেই বা না কেনো ? একবার হারালে যে আর পাওয়া যাবে না । একেবারেই হারিয়ে যাবে , একবার বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে সেই বিশ্বাস আর জোড়া লাগে না । তাই রানী এই রিস্কে যেতেই চায় না । কারন ও যদি জয় কে বিশ্বাস করাতে না পারে তাহলে ও জয়ের বিশ্বাস চিরদিনের জন্য হারাবে । কিন্তু এভাবে বসে থেকেও যে কিছু হচ্ছে না । সমস্যা আরো দিন দিন বেড়েই চলছে । কারো কাছে যে সাহায্য চাইবে সে সুযোগ ও নেই । রানীর দুটো জায়গাই ছিলো , একটা রাজীব অন্যটা জান্নাত । কিন্তু এ ব্যাপারে ওদের কাউকেই জানানো যাবে না । রাজীব কে তো নয় ই , ভাইয়ের কাছে কি করে বলবে যে ও একটা ছেলে কে ভালোবাসে , তাও আবার সেই ছেলে , ওই ভাইয়ের প্রাক্তন বন্ধু । আর জান্নাত ও কিভাবে রিএক্ট করবে কে জানে ? জয় তো জান্নাতের ভাই । একবার রানীর মনে এসেছিলো জান্নাত আর রাজীবের মাঝে কিছু চলছে , তখন রানী খুব একটা ভালো বোধ করেনি । জান্নাত ও নিশ্চয়ই তেমন ই ফিল করবে । রানীর মাথায় আবরারের চিন্তা আসে , কিন্তু সেটাও বাদ দিয়ে দেয় । আবরার ভালো ছেলে , কিন্তু অন্তত এই ব্যাপারে আবরার কে ও পুরোপুরি বিশ্বাস করে না । **** বিকেল বেলাটা জান্নাত নিয়ম মত মায়ের কাছে আসে । কিন্তু আজকে মায়ের মুখ দেখেই কিছু একটা গড়বড় বুঝতে পারে । জান্নাত আয়শার পাশে বসে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে , “ আমার সুইট আম্মুটার মুখ ভার কেনো গো?” “ কিছু না” ধরা গলায় বলে আয়শা , তারপর বলে “ আমিই মনে হয় কোন পাপ করেছি , তাই এমন হচ্ছে” “ কি হচ্ছে , সেটা তো বলবা , পাপ পুণ্যের বিচার পরে করছি” জান্নাত আবার জানতে চায় । “ তোমাদের এতো কষ্ট করে লালন পালন করলাম এই দিন দেখার জন্য” বলে আয়শা ফিচ ফিচ ওরে কেঁদেই ফেলে । “ আম্মু, ও আম্মু , আমার দিকে তাকাও তো , আমাকে বলো তো আমি কি করেছি?” জান্নাত জোড় করেই আয়শা কে নিজের দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করে , কিন্তু সেটা বেশ কষ্ট সাধ্য ব্যাপার । “ জয়” নামটা বলে আয়শা আবার কাঁদে , জান্নাতের কলিজা কেঁপে ওঠে , ভাবে জয় আবার কি করলো ? “ কি করেছে জয়?” জান্নাতের কণ্ঠে স্পষ্ট ভয় , “ জয় সিগারেট খায়” এই বলে আয়শা আবার ডুকরে ওঠে । জান্নাতের যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায় , মনে করেছিলো না জানি জয় কি করেছে , “ ও এই কথা” হাসতে হাসতে বলে জান্নাত “ তুই হাসছিস!!!” অবাক হয়ে তাকায় আয়শা , তারপর আবার বলে “ সিগারেট খেলে কেন্সার হয় , আরো কত রোগ বালাই হয়, এই টুকু বয়সে সিগারেট ধরেছে” জান্নাত বলে “ শোন আম্মু , সিগারেট খেলেই যে কেন্সার হয় এমন কোন কথা নেই , তবে হওয়ার চান্স থাকে , আব্বু যে এতদিন ধরে সিগারেট খাচ্ছে আব্বুর কিছু হয়েছে ? আর তোমার ছেলে আজকে থেকে নয় অনেক আগে থেকেই খায়” “ তুই জানিস আগে থেকেই ? অথচ আমাকে বলিস নাই” আয়শা চোখ কপালে তোলে , জান্নাত যেন বিশাল বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে এমন ভাব । “ আম্মু আমি যদি বলতাম তাহলে তোমার ছেলে আমাকে আস্তো রাখতো? আর শোনো , তোমাকে বলে রাখি , ভবিষ্যতে যেন আর অবাক না হও , তোমার ছেলে মাঝে মাঝে মদ ও খায়” কথাটা বলে জান্নাত এক ধরনের ছেলে মানুষী সুলভ শান্তি অনুভব করলো । ছোট বেলায় জয়ের নামে বিচার দিয়ে ওকে মার খাওয়াতে যে সুখ পেতো সেরকম । “ হ্যা!!!! বলিস কি ?” এই বলে আয়শা বিলাপ শুরু করে দেয়া শুরু করবে ঠিক সেই সময় জান্নাত ওকে থামায় , “ থামো থামো , ও মাতাল না , যে রোজ মদ খায় , ও মাঝে মাঝে পার্টি ফারটি তে গেলে খায়” জান্নাত দ্রুত ওর মা কে জানিয়ে দেয় । এটা শুনলে ওর মা হয়তো কিছুটা বুঝতে পারবে । “ আমি তো ভাবতাম রাজীবের সাথে যায় , রাজীব ভালো ছেলে………” “ রাজীব খায় না আম্মু” জান্নাত ওর মায়ের মুখের কথা টেনে নিয়ে বলে “ তুই সত্যি জানিস? কই আমার কাছে তো রাজীব কোনদিন এসে বলল না , আমি ওকে এতো ভালো জানি” এবার আর জান্নাতের ভালো লাগে না , ভাবে কেন যে বলতে গিয়েছিলাম , সুধু সুধু রাজীব বেচারা ফেসে গেলো , “ আরে আম্মু এসব কথা বলার মত না , এই বয়সি ছেলেরা একটু আধটু এসব করেই থাকে , আর তোমার ছেলে এখন আর রাজীবের সাথে যায় না কোথাও” “ কেন ? কেন?” “ কারন রাজীব বোরিং এসব করে না তাই , রাজীব সিগারেট খায় না , মদ খায় না” সুযোগ বুঝে রাজীবের গুন কীর্তন করে নেয় , জান্নাত “ হ্যা তাই তো বলি , রাজীব আমার এতো ভালো ছেলে” আয়শা যেন নিজের মনেই বলে । মায়ের মুখে এই কথা শুনতে জান্নাতের বেশ লাগে । কিন্তু আয়শা আবার জয়ের ব্যাপারে ফিরে আসে , জান্নাত কে ধরে বলে “ বলতো ওকে কিভাবে এসব ছাড়ানো যায় , আমি কি ওকে আমার দিব্যি দিবো?” “ আম্মু শোনো , তুমি ওর মদ খাওয়া নিয়ে এতো টেনশন করো না , তবে সিগারেট খাওয়া একটা সমস্যা , তবে এইসব দিব্যি টিব্বি দিয়ে লাভ হবে না , এক কাজ করো , তোমার ছেলের বয়স তো এখন ২১ , ওকে বিয়ে করিয়ে দাও , ওর বউ এসে এসব বন্ধ করবে” জান্নাত অনেকটা মজার ছলে বলে “ এই তো তুই বুঝেছিস , কিন্তু তোর আব্বু কিছুতেই বোঝে না , বলেলেই সুধু বলে , গ্যারান্টি দাও , লিখিত দাও , যে তোমার ছেলে ভালো হয়ে যাবে” আয়শা হতাশ হয়ে বলে । “ ওমা তুমি অলরেডি আব্বু কে বলে ফেলছো , তুমি পারো ও আম্মু , শোনো , আম্মু সিগারেট খুব খারাপ জিনিস , নিজে থেকে না ছাড়লে ছাড়ানো যায় না , একটা কেন চারটা বিয়ে করালেও ছারনো যাবে না , তুমি আব্বুরটা পেরেছো?” জান্নাত এবার সিরিয়াস হয়ে বলে “ নাহ” “ তাহলে?” জান্নাত জিজ্ঞাস করে কিন্তু আয়শা এর উত্তর দেয় না , তখন জান্নাত বলে “ ওকে সময় দাও আম্মু , সবাই তো এক রকম হয় না , ওর মেচিওরেটি আসতে সময় লাগবে , তুমি চিন্তা করো না , দাদি আব্বুর সম্পর্কে কি কি বলে তোমার মনে আছে? ও তো আব্বুর ই ছেলে হা হাহা” জান্নাত ওর মায়ের মুড ঠিক করার চেষ্টা করে । “ আচ্ছা তুই একটু যা না , ও ঘরেই আছে দু দিন ধরে , জ্বর এসেছে , একটু কথা বলে আয়” আয়শা জান্নাত কে অনুরধ করে । “ আচ্ছা যাচ্ছি , দেখি তোমার মাথার সাথে আমার মাথা যোগ করে দিব্যি দিয়ে দেখি , বিড়ি ছাড়ানো যায় কিনা” জান্নাত হাসতে হাসতে বলে **** জয় দুদিন যাবত ঘরেই আছে , বেশ জ্বর উঠেছে । মুখটা তেঁতো হয়ে আছে , কিছুই মুখে দেয়া যায় না । জ্বরের সাথে সর্দি ও আছে । কিছুক্ষন আগে ওর মা এসে অনেক কান্নাকাটি করে গেছে , ডাক্তার কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে । কিন্তু রাজি হয়নি । সেই সাথে সিগারেট খাওয়া নিয়েও বেশ চাপ দিয়েছে । জয় কোন মতে ব্যাপারটা পাশ কাটিয়ে গেছে । এখন ভাবছে কেন যে শীতের দিনে ঘরে সিগারেট খেতে গিয়েছিলো । “ কিরে বিড়ি খোর ঘরে তো বিড়ির গন্ধ দিয়ে ভরিয়ে ফেলছিস , আগে তো ঘরে খেতি না?” জান্নাত ঘরে ঢুকেই জিজ্ঞাস করে । “ তোকে আম্মু পাঠিয়ে ছে?” জয় শোয়া থেকে উঠে হেলান দিয়ে বসে “ হুম , ভেবেছে আম্মুর মাথার সাথে আমার মাথাটা যোগ করলে হয়তো দিব্যিটা আরো স্ট্রং হবে” জান্নাত হাসতে হাসতে বলে । জয় হাসে , তবে কিছু বলে না । “ নাকি আমারটার সাথে রানীর মাথাটাও যোগ করে দেবো, আরো বেশি স্ট্রং হওয়ার জন্য” “ এই তো দিলি আমার মেজাজ খারাপ করে , ওই বাড়ির কারো নাম ই আমার সামনি নিবি না , ওই অকৃতজ্ঞ পরিবারের সাথে আমার অন্তত কোন সম্পর্ক নেই “ “ তাই বুঝি?” জান্নাত ভ্রু উপরে তোলে , “ হ্যা” “ তাহলে অকৃতজ্ঞ নাম্বার থ্রির জন্য এমন মজনু সেজে আছিস কেনো?” জান্নাত জয়ের মুখের অগোছালো দাড়ির দিকে ইশারা করে বলে , এমনিতে জয় সব সময় ট্রিম করা ছোট ছোট দাড়ি রাখে , এটা এক সময় নিজের বয়স বেশি বোঝানোর জন্য করতে করতে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে । জয় ভাবে ওকে ক্লিন থেকে দাড়িতেই ভালো দেখায় । তবে এখন ওর দাড়ি গোঁফ আর সুন্দর করে ট্রিম করা নেই । “ কে বলেছে তোকে?” জয় ধমকে ওঠে “ তুই বলেছিস , মনে নেই সেই রাতের কথা” জান্নাত জয়ের সেই মাতাল অবস্থায় বলা কথা গুলো মনে করিয়ে দেয় । “ তখন পরিস্থিতি অন্য রকাম ছিলো , এখন সে আর আগের রানী নেই , এখন সে বাড়িতে ছেলে আনা শিখে গেছে” জয় মুখ বিকৃত করে বলে , জান্নাত একবার বলতে চায় , জয় ও কম মেয়ের সাথে কম কিছু করেনি , কিন্তু বলে না , শত হলেও জয় ওর বড় ভাই । “ জয় আমার কথা শোন , আমি সিরিয়াসলি বলছি , আমি রানীর সাথে এক সাথে কলেজে পড়েছি ( উচ্চমাধ্যমিক) ওর বয়ফ্রেন্ড তো দুরের কথা , কোন ছেলে বন্ধুও ছিলো না , ওই ছেলে ওর বন্ধু , আমি নিজে ওদের সাথে ওই বাড়িতে ছিলাম” জান্নাত জয় কে বোঝানোর চেষ্টা করে । “ আমিও সেটাই বলছি , যার আগের কোন এক্সপেরিয়েন্স নেই , তার হঠাত এমন ছেলে বন্ধু হয়ে গেলো যাকে খালি বাড়িতে নিয়ে আসা যায়” রাগে জয়ের মুখ লালচে হয়ে ওঠে । “ আর শোন যদি আমাকে দেখতে এসে থাকিস তাহলে এই ঘরে থাক , আর যদি দালালি করতে আসিস , তাহলে এই মুহূর্তে বেড়িয়ে যা” “ কথার কি ছিরি হয়ছে তোর , দালাল বছিস কেন ? আমি ওকালতি করতে এসেছি” জান্নাত পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করে । কিন্তু সফল হয় না । “ ওকালতি আর দালালি একি জিনিস , তুই যদি আর একটা কথাও বলিস ওই ফালতু মেয়ে সম্পর্কে তাহলে সত্যি সত্যি আমি ঘাড় ধরে তোকে বের করে দেবো” “ ওকে ওকে , আচ্ছা তোর কপালে কি হয়েছে , রাজনীতি করতে গিয়ে রাজপথে মার খেয়েছিস নাকি?” জান্নাত্ জয়ের কপালে কাটা দাগ দেখিয়ে বলে এবার কিছুটা শান্ত হয় জয় , শুঁকনো হাসি হেসে বলে “ তোর ভাই কে মারবে এমন বাই… কেউ তৈরি হয়নি এই দুনিয়ায় , মাইর দেয়ার অধিকার সুধু আমার “ বলে জয় সেদিন রাজীবের নাকের কথা চিন্তা করে জান্নাত জয় কে এমন খুশি হতে দেখে , আবার রানীর কথা তোলে , বলে “ আর একবার ভেবে দেখ , তুই তো রানীকে সেই ছোট বেলা থেকেই চিনিস , তোকে এই অবস্থায় দেখে আম্মু খুব দুঃখ পেয়েছে , মিট্মাট করে নে ভাই , একবার অন্তত রানীর সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বল , তুই যদি আমাকে কথা দিস , তুই উল্টা পাল্টা কিছু করবি না , তাহলে আমি বেবস্থা করে দেবো” জয় চুপচাপ জান্নাতের কথা শেষ হতে দেয় , তারপর বলে “ গেট আউট , বের হ “ জান্নাত আরো কিছু বলতে চায় , কিন্তু জয় চান্স দেয় না , আরো উচ্চ স্বরে বলে “ বের হবি না আমি উঠবো?” “ ওকে আমি যাচ্ছি “ এই বলে জান্নাত ওঠে , এবং দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে , “ যদি ডিসিশন চেঞ্জ হয়ে , আমাকে টেক্সট করিস” জয় এবার মুখে কিছু বলে না , আশে পাশে খুজতে থাকে , তবে কিছু না পেয়ে , কপালে যে ভেজা রুমাল ছিলো সেটা ছুড়ে মারে জান্নাতের দিকে , জান্নাত সঠিক সময়ে ডাক করে যাওয়ায় ওর শরীরে লাগে না । জান্নাত আর দাড়ায় না । নিজের ঘরে চলে আসে , মনে মনে আবরারের বুদ্ধিটা নিয়ে ভাবে , কিন্তু সাহস হয় না ওই কাজ করতে । তারপর হঠাত ওর মাথায় চিন্তা আসে , জয়ের এমন অসুস্থ অবস্থায় ওদের দেখা করিয়ে দিলে কেমন হয় , জয় যে বেশ ভালো দুর্বল হয়ে আছে সেটা জান্নাত বুঝতে পেড়েছে । দুর্বল অবস্থায় আর যাই হোক রানীর গায়ে হাত তুলতে পারবে না । জান্নাত আরো একটু গভির ভাবে চিন্তা করার সিদ্ধান্ত নেয় । ওদের একা দেখা করানো কোন ব্যাপার না ওর জন্য । কিন্তু ফলাফল কি হতে পারে , সি নিয়ে ভাবতে হবে , হুট করে জান্নাত এমন কিছু করতে চায় না । যা জয় আর রানী দুজনের জন্যই খারাপ হবে । ***** যদি কেউ আইন পেশায় থেকে থাকেন ,আমার প্রতি কোন ধরনের রাগ রাখবেন না প্লিজ , ওটা সুধু জয়ের মতামত , আমার নয় ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
17-10-2025, 09:52 PM
জয় এবার একটু বেশিই ঢং করছে।
উচিত ছিলো সুযোগ লুফে নেওয়া। মেনে নিলাম রানি ওকে অপবাদ দিয়েছে, তাই ওর অভিমান। কিন্তু জয়ওতো এখন রানিকে অপবাদ দিচ্ছে, তারউপর একেবারে ঢাকঢোল পিটিয়ে। জান্নাত ওকে বুঝিয়ে গেল, আবরারের সাথে রানির কিছু নেই। রানিকে কিন্তু কেউ কিছু বোঝায় নি, জয় সম্পর্কে কোনো জাস্টিফিকেশন কেউ দেয় নি ওকে। জান্নাত কয়েক বার জয়কে উল্টো ভুলে যেতে বলেছিলো। বোকাসোকা হয়েও রানি কিন্তু জয়ের সম্পর্কে একটা পজিটিভ ধারণা রাখে। তাই ভাবছি জয়ের যখন ভুল ভাঙ্গবে নিজেকে তখন কতো ছোট ভাববে ও? ভালো মন থাকলে ভবিষ্যতে ওর প্রচুর অনুশোচনা হবে। আর রানী এখন বেশ আত্মভিমানি, আত্মসম্মান বোধ বেশি, রাজীব সামান্য চোখে চোখে রাখছিল, বেচারাকে কি দারুন অপমানটাই না করলো। তো যখন এই টক্সিক আর পোজেসিভ জয় ওকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে নিজের একমাত্র সম্পদ, আমি দেখবো আর কেউ দেখবে না, কোনো ছেলে বন্ধু থাকবে না, যেমন আবরার কে নিয়ে করছে, তখন রানির রিয়েকশন টা কি হবে। আই এম গেটিং ভেরি এক্সাইটেড, ওয়েটিং ইগারলি ফর হুয়াট গোন্না হ্যাপেন নেক্সট।
18-10-2025, 12:21 PM
(This post was last modified: 21-10-2025, 08:34 PM by রাত্রী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
১।জয়নাল-রহিম
২।রাজীব-জয় ৩।রানী-জান্নাত ৪। বিশেষ করে আয়েশা। উপরোক্ত বন্ধনগুলির আবেগ দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ইশশশ যদি এমন চরিত্রের সাথে বাস্তবে দেখা মিলতো! গল্পের চরিত্রগুলো জীবন্ত। তবে হ্যাঁ, সেক্সুয়াল কনটেন্টের ইঙ্গিত আছে, সেটা যেন প্লটের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মিশে যাই---অনুরোধ। লেখার ধরন খুব সাবলীল, তবে গল্পের কোনো এক মোড়ে গিয়ে হঠাত একটা টুইস্ট বা চমক আনলে আরও মুগ্ধ হব। চালিয়ে যান, অপেক্ষায় আছি! ![]()
18-10-2025, 06:25 PM
(17-10-2025, 09:52 PM)ধূমকেতু Wrote: জয় এবার একটু বেশিই ঢং করছে। রানীকে কেউ বোঝায়নি , তবে হিন্টস দিয়েছিলো, জান্নাত সেই হিন্টস দিয়েছিলো , আর রানী সেটাই লুফে নিয়েছিলো । কারন রানীও মনে মনে চাইছিলো কেউ এসে বলুক, জয় এমন করেনি । ও এই কথা বিশ্বাস করার জন্যই বসেছিলো । আর জয়ের ব্যাপারটা হচ্ছে , একে তো অপবাদ পাওয়ার পর বেশ মনকস্টের মাঝে ছিলো ,তার উপর দ্বিতীয় আঘাত পেয়েছে ,তাই রাগটা একটু বেশি হয়েছে ।আমার কাছে মনে হয় এই সব ব্যাপারে ছেলেদের ইগো হার্ট হয় বেশি ।তার উপর দেখেছেন ই তো , জয়ের ইগো কত স্ট্রং ।যদি এই ইগো না কমে তবে সামনে হয়তো আরো দুঃখ অপেক্ষা করছে । আমি স্পয়েলার দিতে চাই না , একটা হিন্টস দিতে চেয়েছিলাম , কিন্তু স্পয়েলার হয়ে যাবে তাহলে । (18-10-2025, 12:21 PM)রাত্রী Wrote: ১।জয়নাল-রহিম এমন চরিত্র আছে , কিন্তু সবাইকে এক জায়গায় এক সাথে পাওয়া যায় না । আর আয়শার চরিত্রটা প্রথমে এমন ভেবে নেইনি আমি । পরে আমার মাথায় এসেছে , বিশেষ করে রানী আর জান্নাত এই দুজনের মাঝের তফাৎ তুলে ধরার জন্য এভাবে আয়শার আগমন ।জান্নাতের একজন মা আছে যার কাছে নিজের গোপনতম কথাটিও শেয়ার করতে পারে , আর আয়শাও মেয়ের বলার আগেই বুঝে ফেলে মেয়ের মনে কি চলছে । এদিকে রানীর এমন কেউ নেই , নিজের মনের কথা গুলো শেয়ার করতে না পেরে ভতরে ভেতরে গুমরে মরে । এডাল্ট কন্টেন্ট গুলো আশা করি গল্পের সাথে স্বাভাবিক ভাবেই আনার চেষ্টা করবো ।টুইস্ট বা চমক বলতে কি বুঝিয়েছেন? যদি একটু খুলে বলতেন তাহলে ভালো হতো । তবে আমি যেটুকু বুঝেছি , সেই অনুযায়ী বলতে গেলে , আমি বলবো ,টুইস্ট মাঝে মাঝে থাকবে , তবে খুব বেশি ঘন ঘন হয়তো নয় ।মানুষের স্বাভাবিক জীবনে টুইস্ট সাধারণত এতো ঘন ঘন থাকে না ।তবে জীবনের মোড়ে মোড়ে বাকে বাকে , কিছু টুইস্ট তো থাকবেই ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
19-10-2025, 05:52 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (ঙ)
ছুটির দিন রহিম ভোরে নামাজ পরে একটু বিছানায় গড়িয়ে নেয় । তারপর ছুটির দিনের রুটিন মাফিক বন্ধু জয়নালের সাথে আড্ডা দিতে বেড়িয়ে যায় । আজকেও তার বেতিক্রম হলো না । ঘড়িতে যখন সকাল আটটা তখন রহিম চৌধুরী বাড়ির মেইন গেটের সামনে । একবার কলিং বেল বাজিয়ে অপেক্ষা করে , দরজা খুলে দেয় শান্তির মা । চৌধুরী বাড়ির ছুটা কাজের লোক। সকাল আটটায় আসে দুপুর বারোটার মাঝে চলে যায় , এর কাজ ঘর পরিস্কাল করা , আর রান্নায় হেল্প করা । শহরে আজকাল এই ধরেনের কাজের মানুষ জোগাড় করা খুব কঠিন । বেতন ও খুব বেশি , যে মেয়েটি দরজা খুলে দিলো তার চার ঘন্টার বেতন মাসে বারো হাজার টাকা । এই মেয়ে এর পর অন্য একটা বাড়িতে যাবে , সেখানেও তিন চার ঘণ্টা কাজ করে এই পরিমান টাকা নিবে। রাহিম নিজেও এমন একটা লোক রাখতে চেয়েছিলো , কিন্তু রাজীব কিছুতেই রাজি হয় না । রহিম মাঝে মাঝে ভেবে পায় না , কোন পুণ্য গুনে এমন ছেলে পেয়েছে । বাবার কষ্টের টাকায় কোন বিলাসিতা করতে চায় না। নিজে ঘরের কাজ করে , মাঝে মাঝে রানীও করে । অবশ্য রাজীব ঠিক ই বলে দশ বারো হাজার টাকা রহিমের মত মানুষের জন্য অনেক টাকাই । রহিমের আওয়াজ শুনে আয়শা মাথায় ঘোমটা দিতে দিতে বেড়িয়ে আসে , “ আসেন ভাই , কেমন আছেন?” যদিও আয়শা হাসি মুখেই প্রশ্নটা করেছে , কিন্তু ভেতরে ওর হাসিটা আসছে না । আফরোজার বিয়ের দিনের কথা আজো মনে আছে আয়শার । দারুন দেখতে ছিলো রহিম , বেশ লম্বা এক হারা গড়নের । মাথায় তখন কার ফ্যাশন মত লম্বা চুল, বিয়ের পোষাকে মনে হচ্ছিলো সত্যি সত্যি রাজপুত্র এসেছে । আয়শা বর দেখে দৌরে গিয়ে ান্ধবীর কানে কানে গিয়ে বর্ণনা দিয়েছিলো । আর এখন , বয়স এখন মাত্র ৫২ , কিন্তু দেখলে মনে হয় ষাট পেরিয়ে গেছে বহু আগে । আগের মত লম্বা দেখায় না , হালকা একটু নুয়ে পরা মনে হয় , দাড়ি চুল প্রায় ৭০ ভাগ পেকে গেছে । “ আছি , যতটুকু ভালো আছি সে আপনাদের দোয়ায় “ রহিম হেসে হেসে বলে । “ তাহলে মনে হয় আমরা আপনার জন্য ঠিক মতন দোয়া করছি না , নিজের শরীরের হাল দেখছেন?” আয়শার কথা শুনে রহিম শব্দ করে হাসে , কথা ঘুরিয়ে নেয়ার জন্য বলে “ কই আপনার পতিদেব কই ডাক দেন , এক সাথে নাস্তা করি , সপ্তায় একদিন আপনার হাতের নাস্তা খেলে সারা সপ্তার শক্তি চলে আসে শরীরে” “ আর ডাকতে হবে না , তোর দৈত্যের হাসি ই আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে , শালা হাসির কি ছিরি” জয়নাল , সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে । “ আমি হাসছি এক মিনিট ও হয় নাই , আর তুই এই এক মিনিতে বাথরুম দাঁত ব্রাশ সব করে ফেলছিস? মিথ্যা বলার আর যায়গা পাশ না “ “ আমি কল্পনায় তোর এই বিচ্ছিরি হাসি শুনতে পাইসিলাম আরো দশ মিনিট আগে , তাই ঘুম ভেঙ্গে গেছে হা হা হা” জয়নাল ও ভুঁড়ি নাচিয়ে হাসে । আসলে এই সময়টা বন্ধুর সাথে কাটাতে ভালো লাগে ওর । অন্য দিনে তো সময় ই পায় না , ছুটির দিনে সময় হয় । তাই একটু আগে ভাগেই ঘুম ভাঙ্গে জয়নালের । জয়নাল আর রহিম বারান্দায় বসে , শীতের কুয়াশা শহরে এতো সময় থাকে না , তাই ঝলমলে রোদে বসে নাস্তা করতে ভালোই লাগে ওদের । কিছুক্ষনের মাঝেই আয়শা আর পরিচারিকা মেয়েটি নাস্তা নিয়ে আসে , আয়শা ও ওদের সাথে বসে । “ ভাবি , এই নাস্তা করলে তো আর বেশিদিন আপনাদের মাঝে থাকতে পারবো না , রহিম নাস্তার দিকে তাকিয়ে বলে “ খাসির পায়া , পরোটা আর ছোলার ডাল । জয়নাল বেশ ভোজন রসিক , তাই ছুটির দিনে বাপ দাদার আমলের নাস্তা ওর পছন্দের । এই খাসির পায়া গতকাল রাত থেকে রান্না হচ্ছে । “ আরে খা বেটা একদিন খেলে কি হবে ? তুই এইসব খাস না বলেই তোর শরীর দুর্বল” “ আরে না ভাই দরকার নেই , আপনার জন্য রুটি নিয়ে আসছে , আর খাসির পায়া টা একটু ঝোল টেস্ট করে দেখেন” আয়শা জয়লানের বিপরীতে গিয়ে বলে , না হলে ও জানে জয়নাল রহিম কে খেতে বাধ্য করবে । আয়শার কথা শেষ হওয়ার আগেই , পরিচারিকা , আটার রুটি , একটা ডিম সেদ্ধ নিয়ে আসে । নাস্তা করতে করতে ওদের তিনজনের আড্ডা হয় । সারা সপ্তা ওরা তিনজন এই দিনের অপেক্ষা করে । এই দিনের এই সময়ে ওরা অতীতে ফিরে যায় আবার হাসি ঠাট্টার মাধ্যমে নিজেদের অতীত এবং অতীতে হারিয়ে যাওয়া সঙ্গীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে বর্তমানে । নাস্তা শেষে চায়ে চুমুক দিতে দিতে , রহিম জান্নাত আর জয়ের কথা জিজ্ঞাস করে , তখন আয়শা জয়ের জ্বর হয়েছে , এই তথ্য দেয় । জানতে পেরে রহিম জয়ে কে দেখতে যাওয়ার কথা বললে , আয়শা তড়িঘড়ি করে বাধা দেয় রহিম কে । “ জয় এখন তো ঘুমাচ্ছে , এখন গিয়ে কি করবেন ভাই , আর একটু পরে যাবেন , আমি ডেকে দেবো” রহিম আর জয়নাল আয়শার চোখে মুখে যে আতংক দেখা দিয়েছিল সেটা খেয়াল করে না । তবে ওরা আয়শার কথা মেনে নেয়ায় আয়শা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে । জয়নাল আর রহিমের কাছে ছেলের সিগারেট খাওয়া যেন ধরা পরে না যায় সেই কারনে আয়শা ওদের এমন বাধা দিয়েছে । বিশেষ করে রহিমের কাছে কিছুতেই এই তথ্য ফাঁস হতে দেয়া যাবে না । আয়শা চায় না রহিম জয়ের কোন খারাপ গুণের কথা জানুক । তাই চা খেয়ে দ্রুত জয়ের ঘরে যায় , আয়শা , ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে , “ এই জয় , জয়” জয়ের ঘুমন্ত শরীরে হাত দিয়ে ঠেলা দেয় আয়শা । কিন্তু জয় ওঠে না , ঘুম জড়িত কণ্ঠে বলে , “ উফফ আম্মু , আরো একটু ঘুমাই , শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে” “ ওঠ , তোর ছোট আব্বু এসেছে , তোর সাথে দেখা করবে বলেছে , ওঠ” আয়শা তাড়া দেয় , তারপর অগোছালো ঘর কিছুটা গোছানোর চেষ্টা করে । রহিমের কথা শুনে জয়ের বুক ধক করে ওঠে । মনে মনে ভাবে রাজীব আবার বিচার দেয়নি তো ? আবার নিজে নিজেই ভাবে , এতো দিন হয়ে গেছে , এখন কি আবার বিচার দেবে ? তা ছাড়া ওই শালা আর যাই হোক , এই বিচার দেয়া দেইর মাঝে নাই । এদিকে আয়শা রুমে রুম ফ্রেশনার স্প্রে করছে , আর বিড়বিড় করে জয়ের গুষ্ঠি উদ্ধার করছে । সেটা দেখেও জয় কিছুটা ভালো বোধ করে । স্প্রে করা শেষে তোয়ালে ভিজিয়ে জয়ের মুখ মুছে দেয় , মাথা আঁচরে দেয় । একটা টি সার্ট পরিয়ে একদম পরিপাটি করে তারপর ডাকে রহিম কে । রহিম আর জয়নাল এক সাথে ঘরে ঢোকে । ঘরের চারপাশে, আর জয়ের পরিপাটি চুলের দিকে একবার তাকিয়েই জয়নালের ঠোঁটে একটা হাসি ফুটে ওঠে , হাসিটা খুশি বা আনন্দের নয় , কারো গোপন অভিসন্ধি বুঝে ফেললে যেমন হাসি ফুটে ওঠে তেমন হাসি । সেই সাথে একটা বড় নিঃশ্বাস , কারন ওই গোপন অভিসন্ধির সাথে জয়নাল এক মত নয় । “ কিরে আমার পালোয়ান ছেলে তোর নাকি জ্বর এসেছে ?” রহিম হাসতে হাসতে বলে । জয় উত্তরে কিছু বলে না , সুধু একটু হাসে । রহিমের মুখটা দেখার পর ওর মনে কিছুটা অনুশোচনার দেখা দিয়েছে , সেদিন রাতে রাজীব কে বাড়ি নিয়ে খোটা দিয়েছিলো । এখন মনে হচ্ছে এই ধরনের কথা বলা ওর উচিৎ হয়নি । আর ওই বাড়ির সবাইকে অকৃতজ্ঞ বলেও আখ্যা দিয়েছিলো । “ এইসব জ্বরে কি তোর মত পালয়ানের কিছু হয় ? যা জিমে গিয়ে দুই সেট ডন মেরে আয়, দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে” বিছানার পাশে চেয়ারে বসে , জয়ের পিঠে চাপড় মেরে বলে রহিম । “ ঠিক বলেছো , ছোট আব্বু , তোমার মত মটিভেটোর থাকলে আমার কিছুই হবে না” জয় ও হাসতে হাসতে বলে “ সেটা না হয় বুঝলাম , কিন্তু পরিক্ষা করছিস না কেনো ? মশা তো আর জানে না তুই একটা বাঘ , আর আজকাল মশার কামড়ে বাঘ ও কুপকাত হয় , যা ডেঙ্গু পরিক্ষা করে আয় , আমি রাজীব কে বলে দেবো , রাজীব নিয়ে যাবে তোকে” এবার জয় বিপদে পরে যায় , কিভাবে বলবে রাজীবের সাথে ও যাবে না , “ আরে শীতের দিনে ডেঙ্গু হয় না ছোট আব্বু এটা তুমিও জানো না ?” জয় প্রতিবাদ করে । “ বুঝলাম, কিন্তু চারদিন তো হয়ে গেছে , পরিক্ষা না কর ডাক্তার দেখা” “ ওকে দেখাবো” আর কিছুক্ষন রহিম জয়নাল আর আয়শা জয়ের সাথে থাকে , বেশির ভাগ কথা রহিমের সাথেই হয় । জয়নাল আর আয়শা পাশ থেকে মাঝে মাঝে জয়ের নামে নালিশ করে । ওরা চলে গেলে জয় ওর আব্বু আর ছোট আব্বুর বন্ধুত্ব নিয়ে ভাবে । এই দুজনের বন্ধুত্ব আজো কেমন অটুট । অথচ ওর আর রাজীবের মাঝে কত বড় ফটল দেখা দিয়েছে , জীবন অর্ধেক পার হতে না হতেই । জয় ভাবে , কি ভুল ছিলো ? বেশ অনেকক্ষণ সময় জয় ওদের দুজন কে নিয়ে ভাবে । শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয়ের আদালতে রাজীব কেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় । জয় ভাবে রহিম আর জয়নাল একে অন্যের জন্য সব করতে পারে , ওরা দুজন ফলাফল ভেবে পেছনে হটে না । আর রাজীব একজন বস্তুবাদী মানুষ । ওর কাছে নিজের ক্যারিয়ার , ভবিষ্যৎ এসব ই ইম্পরট্যান্ট , আশেপাশের মানুষ ওর কাছে কোন ইম্পরটেন্স রাখে না । কিন্তু এভাবে তো সম্পর্ক রাখা যায় না । সম্পর্কে আপস আসবে , ডাউন আসবে , কিন্তু কখনোই তা নিয়ে রিগ্রেট করা যাবে না । পা ফেলার আগে ভাবা যাবে না এর ফলাফল কি হবে । ভাবতে হবে যা হওয়ার হবে । এবং যা হবে সেটা একত্রে মোকাবেলা করতে হবে । তবেই না বন্ধুত্বের দাবি মেটানো যাবে । বন্ধুত্বের জন্য যদি চোখ বন্ধ করে অন্ধকারে ঝাপ ই না দেয়া যায় , সেটা জয়ের কাছে বন্ধুত্বই নয় । এসব ভাবতে ভাবতেই রাজীবের উপর জয়ের রাগ যেন নতুন করে রিনিউ হয় । একটু পর আয়শা ওর জন্য নাস্তা নিয়ে আসে । কিন্তু জয়ের খেতে ভালো লাগে না , মুখের তেঁতো স্বাদ সব খাবার ই তেঁতো বানিয়ে দেয় । অল্প একটু মুখে দিয়েই জয় বলে “ আম্মু এসব আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব না “ “ তাহলে আমার মাথা খাও , আজকে তোর ছোট আব্বু যদি রুমে এসে গন্ধ পেতো ? তাহলে আমার মান ইজ্জত কোথায় থাকতো?” আয়শা ক্ষেপে গিয়ে বলে । ছেলের দিকে ছল ছল চোখে তাকায় । “ আহা আম্মু তুমি আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ো না তো , তুমি এই ভাবে তাকালে আমার আর কোন কিছু ভালো লাগে না , এর চেয়ে ভালো তুমি আমাকে দুইটা থাপ্পড় দাও , ছোট বেলায় যেমন দিতে” ছেলের কথা শুনে আয়শার চোখ ছলছল করে , বলে “ এখন তো আর ছোট নও যে সব সময় শাসন করবো “ “ তোমার কাছে আমি সব সময় ছোট ই থাকবো, আম্মু, তোমার কাছে কোনদিন বড় হবো না” জয় হাসি মুখে বলে । “ তাহলে বাবা আমার কথা শোন , সিগারেট ছেড়ে দে , তুই মাঝে মাঝে মদ খাস , সেটা না হয় কোন সমস্যা না , কিন্তু বাবা সিগারেট ছেড়ে দে , যদি তোর কিছু হয়ে যায় , আর আমি বেঁচে থাকি সেটা দেখার জন্য , তখন আমার কেমন লাগবে একবার ভাব, আমি মরে গেলে তখন নিজের ইচ্ছা মত চলিস” জয় আয়শার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে , ওর মা জানে ও মদ খায় , কি ভাবে জানলো ভেবে পায় না জয় । “ তোমাকে কে বলল আমি মদ খাই?” জয় অবাক হওয়ার ভান করে জিজ্ঞাস করলো “ জান্নাত বলেছে , বাবা আমি তো সে জন্য কিছু বলছি না” আয়শা অনুনয় করে “ আরে না জান্নাত মিথ্যা বলেছে” জয় ডাহা মিথ্যা বলে , ও চায় না ওর মা এসব জানুক । মনে মনে ভাবে , জান্নাতের বাচ্চা জান্নাত , তোকে আমি ছারবো না । জান্নাতের ইতিহাস ভাবতে শুরু করে , জান্নাতের দোষ ত্রুটি খুজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিচার দেয়ার মত তেমন কিছু পায় না , কিছু না পেয়ে জয় বানিয়ে বলে “ তুমি জানো , জান্নাত যে ভিডিও ছাড়ছে , ওর উপর কত মানুষ ক্ষেপে যাচ্ছে , যে কোনদিন ওকে রাস্তায় ধরবে মানুষজন , ও অনেক ক্ষমতাধর মানুষ কে ক্ষেপীয়ে তুলছে , তুমি তোমার মেয়ে সামলাও আম্মু , নইলে কিন্তু খুব খারাপ হবে । ও যদি রাস্তায় মাইর খায় , তাহলে কি ওর বিয়ে হবে?” জয় সফল ভাবে আয়শার মন কে অন্য দিকে কনভার্ট করতে সম্ভব হয় , জয়ের কথা শুনে আয়শার চোখ বড়বড় হয়ে গেছে , ছেলের সিগারেট খাওয়ার দুশ্চিন্তা ভুলে , মেয়ের মার খাওয়ার চিন্তায় মন পরিপূর্ণ হয়ে গেছে । “ কি বলছিস তুই ?” “ হ্যা আম্মু , আমি তো রাজনীতি করি তাই কিছুটা জানি , আর আমি আছি বলেই এতদিন মাইর খায় নি” জয় নিচু স্বরে গোপন কথা বলছে এমন ভাবে বলে । “ রাজীব তো আছে ওর সাথে , রাজীব কি ওকে এমন কাজ করতে দেবে?” আয়শা ঠিক ভেবে পায় না , রাজীব কি জান্নাত কে এমন রিস্ক নিতে দেবে ? জয় একটু খুশি হয় রাজীবের নাম আসতেই , বলে “ আরে আম্মু ওই সব নষ্টের মুল , ওর সাহসেই জান্নাত এসব করছে , নইলে আমাদের জান্নাত কি এতো খারাপ নাকি?” এক মুহূর্তের জন্য জয়ের মনে হয় ওর শরীরের জ্বর সেরে গেছে , এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে ও । জয় না না করলেও আয়শা ওকে জোর করে কিছুটা নাস্তা খাওয়ায় । তবে সিগারেটের কথা আর তোলে না । বেশ কিছুক্ষন সময় জয়ের ভালো কাটে । এমন কি বারান্দায় গিয়ে একটা সিগারেট ও খেয়ে আসে । মোবাইলে কিছু ফানি ভিডিও দেখে বেশ হাসাহাসিও করে । সেই হসপিটাল এর ঘটনার পর এতটা খুশি ও কোনদিন হয়নি । তবে এই খুশি বেশিক্ষণ স্থাই হয় না , হঠাত ওর মনে হলো , সবাই ওকে দেখতে এলো , সুধু একজন এলো না । তার কি ওর জন্য একবার ও মন কেমন করে না ? জয় নিজেকে প্রশ্ন করে , তারপর আবার নিজেই উত্তর দেয় , করবে কি করে ? তার মন তো আর খালি নেই , তার মনে এখন এমন মানুষ ও আছে যাদের খালি বাড়িতে নিয়ে আসা যায় । রানীর কথা ভাবতেই জয়ের মুখ আবারো তেঁতো হয়ে উঠলো , আবার একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা হলো , কিন্তু বারান্দায় যাওয়ার ইচ্ছা হলো না , শীতের বাসাতে খুব কাহিল লাগে । জয় রানীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে , তুই আমাকে অপবাদ দিলি , দূরে সরিয়ে রাখলি , তারপর আরো একজন কে তোর জীবনে নিয়ে এলি । আমাকে একটা সুযোগ দেয়ার চিন্তা কি একবার ও তোর মনে এলো না? ****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না।
19-10-2025, 05:53 PM
কিছু সম্পর্কঃ ৮ (ঙ) এর বাকি অংশ.........
জান্নাত পরন্ত দুপুরে রানীদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেড়িয়েছে । রানীকে আজকাল খুজে পাওয়া যায় না , কল করলে ধরে না , ক্যাম্পাসেও পাওয়া যায় না । গতকাল রাতে আবরারের দেয়া প্ল্যান নিয়ে ভেবেছে , এমন কি রাতে আবরারের সাথে কথাও বলেছে। কিন্তু আবরারের সেই নাটকীয় কথাবার্তা , সব কিছুই ও বিশ্বাসের উপর ভর করে বলে । আর আবরার এও বলেছে রানী নাকি দুদিন ক্যাম্পাসে আসেনি , কারো ফোন ও রিসিভ করছে না । তাই জান্নাতের তাগিদ আরো বেরেছে , বিরক্তি থেকেই বেরেছে । জয় আর রানীর নাটক আর ভালো লাগছে না ওর কাছে । জান্নাত ভেবেই পায় না ওরা এই সময়ে কি করে জন্ম নিলো। ওদের তো ৫০ এর দশকে জন্ম নেয়া উচিৎ ছিলো । তখন এসব চলতো , এখন তো এসব অচল ব্যাপার । একজন দাগা দিলে , আর একজন রেডি থাকে এখন । এতো বিরহ বেদনার দিন তো আর নেই এখন । কিন্তু জান্নাতের আবরারের গট ফিলিং এর উপর বিশ্বাস করতে পারছে না । তাই সাহস পাচ্ছে না , শেষ চেষ্টা করার জন্য রানীর কাছে যাচ্ছে , আলাপের ফাঁকে রানী কে জানিয়ে আসবে জয় অসুস্থ । যদি রানী জয় কে দেখতে চায় , তাহলে নিয়ে আসবে , বাড়ি ভর্তি লোকের সামনে জয় নিশ্চয়ই ওকে কিছু বলবে না , আর এক ফাক বুঝে জান্নাত ওদের ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবে । এবং আশেপাশেই থাকবে । যদি উল্টা পাল্টা দেখে তখন উপস্থিত হবে । এতে আবরারের প্লানের কিছুটা প্রয়োগ করা যাবে। “ কিরে কি খবর তোর ?” জান্নাত রানীকে নিজের রুমেই পায় , চোখের নিচে হালকা কালি পরেছে । প্রচণ্ড বিরক্তি এসে ভর করে জান্নাতের উপর । কিন্তু প্রকাশ করে না । “ ভালো” রানী স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দেয় , আসলে জান্নাত কে দেখে ওর বেশ ভালো অনুভব হচ্ছে । এই দুদিনের বন্দি জীবনে ও বেশ হাপিয়ে উঠেছে , তাই জান্নাতের সাথে সম্পর্ক ভালো না হলেও ওকে দেখে ভালো লাগছে । “ তোর অবস্থা এমন কেন? শরীর খারাপ নাকি? ক্যাম্পাসেও যাচ্ছিস না?” জান্নাত বিরক্ত হলেও রানীর অবস্থা দেখে একটু চিন্তা হয় ওর। “ না না আমি ঠিক আছি , ক্যাম্পাসে যেতে ভালো লাগছে না তাই” “ ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করছিস তো? , ঔষধ খাচ্ছিস ঠিক মত?” এই বলে জান্নাত নিজেই রানীর ঔষধের ড্রয়ার খুলে দেখে । আয়রন ঔষধ গুলো ওকে দেয়া হয়েছে সেগুলো গুনে দেখে , দেখা যায় এক মাসের ঔষধ থেকে আজকের তারিখ পর্যন্ত ঠিক মেলে না , তিন চারদিনের ঔষধ বেশি আছে । রানী চুপ করেই থাকে , কিছু বলে না । জান্নাত ঘুরে দেখে রানী চুপ । ওর ইচ্ছা হয় দুটো কঠিন কথা বলতে । কিন্তু নিজেকে সামলে নেয় । আবরারের কথা গুলো মনে পরে যায় । তা ছাড়া এও ভাবে , রানীর এসব খেয়াল রাখার মতো তেমন কেউ নেই। রাজীব এখন আর আগের মত পেরে ওঠে না , ভয় পায় যদি আমার ক্ষেপে ওঠে । নিয়মিত ঔষধ এনে দেয় , জিজ্ঞাস করে । কিন্তু চেক করে দেখতে সাহস করে না । জান্নাত রানীর পাশে এসে বসে , নরম স্বরে বলে “ এমন করলে হবে ? ঔষধ তো ঠিক মত খেতে হবে” রানীর ইচ্ছা হয় কঠিন করে উত্তর দেবে , কিন্তু হয়ে ওঠে না , জান্নাত কে ও কম কিছু বলেনি , তারপর ও জান্নাত এসেছে , ওর খোঁজ নিচ্ছে । তাই রানী চুপ করেই থাকে । “ দুপুরে খেয়ছিস?” জান্নাত আবার জিজ্ঞাস করে , উত্তরে রানী সুধু মাথা ঝাঁকায় , তখন জান্নাতের চোখে পরে রানীর রুমে কিছু প্লেট বাটী , এর মানে রানী রুমেই খেয়েছে । “ ঔষধ খেয়েছিস?” রানী না সুচক মাথা নাড়ায় । তখন জান্নাত উঠে গিয়ে ঔষধ নিয়ে আসে , সাথে পানি , রানী ওর হাত থেকে ঔষধ আর পানি নেয় । মুখে ঔষধ নিয়ে পানি দিয়ে গিলে ফেলে । জান্নাত দেখে রানীর গলার নিচের হাড্ডি কতটা দেখা যাচ্ছে । জিজ্ঞাস করে “ তোর ওজন এখন কত?” “ জানি না” এবার রানী উত্তর দেয় “ তোর আর জয়ের মাঝে কত মিল দেখছিস?” জান্নাত হেসে বলে জয়ের নাম শুনেই রানী জান্নাতের দিকে ভালো করে তাকায় , চোখে জিজ্ঞাসা জান্নাত হাসে , “ তুই ও অসুস্থ হয়ে আছিস , ঔষধ খাচ্ছিস না, ওদিকে জয় ও অসুস্থ হয়ে পরে আছে , ডাক্তার দেখায় না , তোরা দুজনেই একেবারে ছেলেমানুস আছিস” জয়ের অসুখের কথা শুনেই রানী নড়েচড়ে বসে , কি অসুখ জিজ্ঞাস করতে গিয়েও থেমে যায় , ওর বলাতে যেন অতি উৎকণ্ঠা প্রকাশ না পায় , তারপর নিজেকে তৈরি করে নিয়ে জিজ্ঞাস করে “ কি হয়েছে?” “ জ্বর , শরীর ব্যাথা, বিছানা থেকে প্রায় উঠতেই পারে না” জান্নাত একটু বাড়িয়েই বলে । “ বলিস কি , ডেঙ্গু নয় তো ?” এবার আর রানী নিজেকে ধরে রাখতে পারে না । “ কি জানি , ডাক্তার কাছেই তো যায় না “ জান্নাত একদম নির্লিপ্ত ভাব দেখায় , যেন রানী আরো বেশি চিন্তিত হয় । কিন্তু জান্নাত নিজের পছন্দ সই রিয়েকশন পায় না , রানী নিজের ভেতরেই রেখে দেয় । বাধ্য হয়েই জান্নাত জিজ্ঞাস করে “ তুই যাবি দেখতে? তোকে দেখতে কিন্তু জয় একদিনে দুবার গিয়েছিলো।” রানী এবারো নিরুত্তর , তাই জান্নাত বলে “ অবশ্য না যাওয়াই উচিৎ , যদি ডেঙ্গু না হয়ে ভাইরাল জ্বর হয় , তবে তোকেও ধরবে, এই দেখ না আমি চলে এসেছি , কখন যে আমাকে ধরে” জান্নাত রানীর মনে জয়ের জন্য মমতা উৎপাদনের চেষ্টা করে । ভাবে রানী যদি ভাবে জয়ের প্রতি সবাই উদাসীন তাহলে হয়তো রানী জয়ের প্রতি মমতা বোধ করবে । রানী কিছুই বলে না , তবে জান্নাত দেখে রানীর চোখ দুটো ছলছল করছে । মনে মনে জান্নাত রানী কে একটা থাপ্পড় মারতে চায় । আর কত স্যাড সিনেমার নাইকা ভাব নিবি , একটু স্বাভাবিক মানুষের মত আচরণ কর - মনে মনে বলে জান্নাত । জান্নাত ব্যারথ হয়ে ফিরে যায় । ফিরে গিয়ে জয়ের ঘরে যেতে নেবে , তখনি দেখে রাজীব আর ওর মা কথা বলছে । রাজীব বলছে “ বড় আম্মু কে তোমাকে এসব বলেছে , তোমার কি মনে হয় আমি জান্নাত কে এমন কাজ করতে দেবো?” “ কি জানি , আমি কি করবো বুঝতে পারছি না , জয় বলল” আয়শা প্রায় কাঁদোকাঁদো হয়ে বলল । উত্তরে রাজীব বেশ কঠিন স্বরে বলল “ আমি জানি না জয় কেনো বলেছে , কিন্তু এমন কোন কাজ জান্নাত আর আমি করছি না” জান্নাতের বুক ধক করে ওঠে , জয় কি বলেছে ? মনে মনে ভাবে ও । তারপর আবার ভাবে জয় কি জেনে গেছে কিছু ? আর আম্মু কি রাজীব কে এই নিয়ে জিজ্ঞাস করছে ? আবার ভাবে জয় যদি কিছু আঁচ করতে পারতো তাহলে এতো চুপচাপ থাকতো না , ও বাড়ি মাথায় তুলতো । খুব শক্ত ভাবে রিয়েক্ট করতো । নিজের আর রাজীবের মাঝের ঝামেলা টেনে নিয়ে আসতো । জান্নাত আবার বেড়িয়ে যায় , দরজার বাইরে অপেক্ষা করে , কিছুক্ষন অপেক্ষার পর ই রাজীব বেড়িয়ে আশে । চেহারা গম্ভির কিছুটা রাগান্বিত । কিন্তু জান্নাত ওকে বুঝতে দেয় না , যে ও কিছু জানে । স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞাস করে , “ তুই এখানে , আর আমি তোদের বাড়ি থেকে এলাম” রাজীব ও স্বাভাবিক ভাবেই বলার চেষ্টা করে , কিন্তু ওর কণ্ঠের রাগ লুকাতে পারে না , “ তোর ভাই কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে এসেছিলাম , আব্বু পাঠিয়েছিলো , আমি জানতাম যাবে না , তবুও আব্বুর মন রাক্ষায় এসেছিলাম” “ও তাই” জান্নাত আর কোন কথা খুজে না পেয়ে বলে , মনে মনে জান্নাত চাইছে রাজীব ওর মায়ের সাথে কি কথা হচ্ছিলো সেটা নিয়ে কিছু বলুক । কিন্তু জান্নাত কে হতাশ করে দিয়ে রাজীব বলে , “ তুই একটু নিয়ে যা না ডাক্তারের কাছে , আমার তো ওর শরীরের অবস্থা ভালো ঠেকছে না” জান্নাত মনে মনে হাসে , ভাবে , সবার প্রতি নজর আছে , কিন্তু একজনের মনের অবস্থার প্রতি কোন নজর নেই । একটা বড় নিঃশ্বাস ফেলে , জান্নাত , বলে “ ও তো আর বাচ্চা না যে কোলে করে নিয়ে যাবো , যদি নিজে থেকে না যায় , তাহলে একেবারে যখন অসুস্থ হয়ে পরবে তখন এ্যাম্বুলেন্স ডেকে নিয়ে যেতে হবে” “ হুম ঠিক বলেছিস , ওর শরীর বড় হয়েছে কিন্তু ও বড় হতে পারেনি , এখনো ছোটই রয়ে গেছে” এই বলে রাজীব একটা নিঃশ্বাস ফেলে , তারপর বেশ রাগান্বিত হয়ে বলে “ এই দেখ না বড় আম্মুকে কেমন ভয় পাইয়ে দিয়েছে” এবার জান্নাতের প্রতিক্ষার শেষ হয় , দ্রুত জিজ্ঞাস করে “ কেন কি করেছে ?” “ তোর ভাই কে গিয়েই জিজ্ঞাস কর , বড় আম্মু কেঁদে কেটে একদম অস্থির , আমাকে এমন করে ধরলো” “ কেন? তোকে ধরলো কেনো?” জান্নাত আবার জিজ্ঞাস করলো “ আমি নাকি তোকে সাহস দিচ্ছি , রাজনৈতিক উস্কানি মুলক ভিডিও বানাতে , তোর উপর নাকি ক্ষমতাবান লোকজন রেগে আছে, রাস্তায় পেলে তোকে মাইর দেবে” জান্নাত আর সেখানে এক মুহূর্ত দাড়ায় না , চেঁচিয়ে “ জয়ের বাচ্চা জয় , তোকে আমি খেয়ে ফেলবো” বলতে বলতে বাড়ির ভেতর ঢোকে , রাজীব পেছনে থেকে ডাকে , কিন্তু জান্নাত পাত্তা দেয় না । সেটা দেখে রাজীব ও ওর পেছনে পেছন ঢোকে । কিন্তু জান্নাত অতক্ষনে জয়ের ঘরে ঢুকে গেছে , তাই আর রাজীব আগায় না । জান্নাত ধরাম করে জয়ের ঘরের দরজা খোলে , দরজার দুই পাল্লা দুই দিকে ধরাম করে লাগে । “ কিরে শি-হাল্ক এখানে কি করছিস?” জয় জান্নাতের অবস্থা দেখেই বুঝে ফেলে , ওর লাগানো কথার ইম্পেক্ট শুরু হয়ে গেছে। “ তোর মাথা আমি ফাটিয়ে দিবো , তুই আম্মুকে কি বলেছিস?” জান্নাত রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে “ যেটা সত্যি সেটাই বলেছি” জয় উঠে বসে , নিজেকে ডিফেন্ড করার জন্য প্রস্তুত “ তোর সত্যি আমি তোর ……” জান্নাত লাইন শেষ করে না , ছোট বেলায় এই লাইন অনায়েসে বলে দিতো , এখন বড় হয়েছে তাই বলতে বাধলো । “ দেখ জান্নাত কথা সাবধানে বল , আমি তোর বড় ভাই “ জান্নাত লাইন শেষ না করলেও জয় জানে জান্নাত কি বলতে চেয়েছিলো। এই লাইন অনেক বলেছে আগে । “ বড় ভাই বলতে তোর লজ্জা হয় না , যে জিনসটা নিয়ে আমি সবচেয়ে বেশি সিরিয়াস সেখানেই তুই বাধা দিচ্ছিস?” “ আমি বাধা দিলাম কই , আমি বরং তোর ভালো করলাম , মেয়ে মানুষ তুই এসবে না যাওয়াই ভালো , এমন কন্টেন্ট বানা যেটা মেয়েদের জন্য সেফ। আর সাথে এমন একজন কে নিয়েছিস যে কিনা বিপদ দেখলে তোকে ছেড়ে পালাবে । বলবে , আমার ক্যারিয়ার আছে , বাড়িতে আমার দুধের শিশু ছোট বোন আছে , আমার আব্বু অসুস্থ। আমার কিছু হলে ওদের কি হবে , আমার ছোট বোনকে কে দুদু খাওয়াবে ?” জয় রাজীবের কণ্ঠ নকল করে বলার চেষ্টা করে । জান্নাত কিছুক্ষন চোখ সরু করে জয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে , আরপর বেশ শান্ত স্বরে বলে “ তোর জন্য আমার মায়া হয় , তুই কবে বড় হবি? নিজে যা বুঝিস সেটাই সঠিক ভেবে নিস , কবে তোর চোখ ফুটবে ? কবে তোর কান খুলবে , কবে তোর মস্তিস্ক ম্যাচিওর হবে? নাকি সারাজীবন এমন ম্যান চাইন্ড হয়ে থাকবি ?” এই বলে জান্নাত আর দাড়ায় না , ওর কাছে মনে হয় জয়ের সাথে কথা বলা মানে সময় নষ্ট করা । জান্নাত চলে গেলে জয় বিড়বিড় করে বলে “ আমার কথা তো বিশ্বাস করলি না , যখন তোর সাথে হবে তখন বুঝবি , এদের স্বভাব ই এমন , মাঝ পথে এসে এরা ছেড়ে যায় , ভাই বোন দুটই এক রকম, এদের কাছ থেকে যত দূর থাকবি তত ভালো থকবি। আমাকে তো দেখছিস , তাতেও তোর শিক্ষা হয় না ” **** রানী নিজেদের লিভিং রুমে সোফায় হাটু ভাজ করে হাটুতে থুতনি রেখে বসে আছে । জান্নাত চলে যাওয়ার পর , ওর ইচ্ছা হয়েছিলো দূর থেকে একবার জয় কে দেখে আসবে । কিন্তু যাওয়া হয়ে ওঠেনি , দরজা খুলেও আবার বন্ধ করে দিয়েছে। আর তার পর থেকেই সোফায় এভাবে বসে আছে । বাসায় এখন কেউ নেই , রহিম আজকে ছুটির দিনেও কোচিং সেন্টারে গিয়েছে , বাচ্চাদের মক টেস্ট নিচ্ছে তার পেপার তৈরি করতে হবে । এমন সময় রাজীব ঢোকে , শব্দ করে দরজা আটকায় , আর সেই শব্দে রানী চমকে ওঠে । সেয়া দেখে রাজীব বলে “ ওহ তুই বসে আছিস ? দেখিনি তোকে, লাইট দিসনি কেন?” রাজীব লাইট জ্বালায় , তারপর সোফায় বসে পরে , রাগে গজ গজ করতে থাকে । “ কি হয়েছে?” রানী দুর্বল স্বরে জিজ্ঞাস করে , “ আর বলিস না , আব্বুকে এতো করে বললাম ও আমার সাথে যাবে না , তবুও আমাকে জোর করে পাঠালো? আমার কোন আত্মসম্মান নেই যেন , সবার কাছে আমার সুধু অপমান ই হতে হবে” রাজীব রাগত স্বরে বলল রাজীবের কথা গুলো , রানী নিজের গায়ে নিলো , মনে পরে গেলো রাজীব কে কি অপমানটাই না করেছিলো , একটু অনুতাপ হলো ওর । জিজ্ঞাস করলো , “আবার কে তোকে অপমান করলো ?” “ কে আবার , মানুষ কে অপমান করার লাইসেন্স আর কার আছে? সে তো একজনের ই আছে” রানী বুঝতে পারে রাজীব জয়ের কথা বলছে । রানীর মনে হঠাত করে একটা জিজ্ঞাসা আসে , রানী ভাবে - ওরা পারে কিভাবে? এইজে জান্নাত এসে একটু আগে ওর প্রতি যত্ন নিয়ে গেলো , অথচ এই জান্নাতের সাথে ও আজকাল শীতল আচরণ করে । আর এদিকে রাজীব , জয়কে ডাক্তার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য গিয়েছিলো , এটা জানা সত্ত্বেও জয় ওর সাথে যাবে না। “ওর শরীর এখন কেমন ?” রানী আরো দুর্বল স্বরে জিজ্ঞাস করে । রাজীব আর জন্নাতের মানসিক শক্তি দেখে নিজেকে আরো দুর্বল মনে হয় ওর । “ ভালো না , ডেঙ্গু না হলেও টাইফয়েড নিশ্চিত , চোখ লাল হয়ে আছে” এবার রাজীবের কণ্ঠে কিছুটা উৎকণ্ঠা প্রকাশ পায় । “ তুই আর একটু জোর করতে পারলি না?” “ আমি আর এইসব এর মাঝে নেই , জোর করতে গিয়ে কি অপমান হবো নাকি?” রানী আর কিছু বলে না , বলার মুখ ও নেই ওর , এই রাজীব কেই কিছুদিন আগে অনধিকার চর্চার জন্য কত কথা শুনিয়ে দিয়েছে। রানী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে । “ তোর অবস্থা এমন কেন ? চোখের নিচে কালি , শরীর ও তো মনে হয় ভালো না” রাজীব রানীর দীর্ঘশ্বাস শুনে তাকায় । তাকিয়ে রানী কে দেখে ওর মনে হয় রানী নিজেও সুস্থ নয় । “ না না আমার কিছুই হয়নি , দুদিন রাতে তেমন ঘুম হয়নি , তাই এমন হয়েছে” রানী দ্রুত নিজেকে সোজা করে বসে । “ কেন রাতে ঘুম হয়নি কেন?” রাজীব রানীর দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে , “ পড়াশুনার চাপ আছে একটু” রানী মিথ্যা করে বলে । “ পড়াশুনা জরুরি , কিন্তু তার চেয়ও জরুরি তোর স্বাস্থ্য , এটা মনে রাখিস” রানী সম্মতি সুচক মাথা নাড়ায় । রাজীব কিছুক্ষন কি যেন ভাবে , তারপর বলে “ তবুও আমি আগামিকালের সিরিয়াল দিয়ে রাখবো , একটা রুটিন চেকাপ তোর দরকার, আগামিকাল সন্ধার পর কোন কাজ রাখিস না” রানী একবার ভাবে , না করবে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত করে না । ওর কাছে মনে হয় কেউ ওর জন্য কেয়ার করছে করুক না । কেউ যখন কেয়ার করার জন্য না থাকে , কতটা শূন্যতা অনুভব হয় তা রানী এই কয় মাসে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে । আজকে যখন জান্নাত ওকে ঔষধ খাইয়ে গেলো তখন রানী অনুভব করেছে , এই ব্যাপার গুলো আসলেই মিস করেছে ও । “ আমি একটু ছাদে যাই ভাইয়া” রানী অনেকদিন পর রাজীবের কাছে নিজের কোন প্ল্যান জানায় । “ বেশিক্ষণ থাকিস না এই সময় রোগ বালাই বেশি হয় । আমিও একটু বাইরে যাচ্ছি , ঘণ্টা দুয়েকের মাঝে ফিরবো , রাতের খাবার তৈরি করবো আমি এসে , তুই রান্না ঘরে ঢুকিস না” “ ওকে” রানী মাথা হেলায় । রানী সরাসরি ছাদে যায় না , প্রথমে নিজের ঘরে যায় , একটা সোয়েটার পরে । সিঁড়িতে পা রেখেই রাজীবের বাইকের ইঞ্জিনের শব্দ পায় । অনেক দিন পর ছাদে যাচ্ছে । দরজা খুলতেই সন্ধার আগের শীতল বাতাস ওর মুখে লাগে । ফ্রেস বাতাস শরীরে লাগতেই নিজেকে কিছুটা উজ্জেবিত লাগে, যদিও বাতাস খুব ঠাণ্ডা । রানী দরজার চৌকাঠের বাইরে একটি পা বাড়ায় । খুবি সাধারন একটা ব্যাপার , রানী ভাবছে এই পদক্ষেপ ওকে ওদের ছাদে নিয়ে যাবে । কিন্তু মাঝে মাঝে অতি সাধারন কিছু থেকেও , অভাবনীয় কিছু ফলাফল আসে । যা মানুষ হাজার পরিকল্পনা করেও হাসিল করতে পারে না । *****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না। কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , কখনো ছেড়ে যায় না। |
|
« Next Oldest | Next Newest »
|