Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(23-08-2025, 07:39 PM)Ari rox Wrote: অনেক ভালো হচ্ছে বস,এগিয়ে যান
ধন্যবাদ Ari rox একমাত্র আপনিই এখনো আছেন , বাকি সবাই ভেগেছে
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 533
Threads: 0
Likes Received: 240 in 229 posts
Likes Given: 445
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(23-08-2025, 08:38 PM)Saj890 Wrote: Darun থ্যাঙ্কস ভাই
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
26-08-2025, 06:41 PM
(This post was last modified: 26-08-2025, 07:06 PM by gungchill. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
কিছু সম্পর্কঃ ৬
আজকাল জয় খুব ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে । অনেক দেরিতে দলে যোগ দিয়েছে ও । আরিফ ভাই ওকে আগে কলেজ লাইফ থেকেই চিনতো । তাই ভার্সিটি ভর্তি হওয়ার পর পর ই অফার করেছিলো । কিন্তু জয় বার বার এড়িয়ে গেছে , বলতে গেলে রাজীব ওকে বিরত রেখছে । কিন্তু মাস দুয়েক আগে নিজে থেকেই রাতের বেলা কল করে আরিফের কাছে সাহায্য চায় জয় । সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়নি আরিফ । বিনিময়ে দলে জয়েন করার প্রস্তাব দেয় জয় কে । জয়ের ও মাথায় ভুত চেপেছিলো , যে কোন মূল্যে ওর সাহায্য দরকার ছিলো । কিছুতেই নিজেকে কারো কথার নিচে রাখতে চায়নি জয় ।
তবে দলে জয়েন করার পর বুঝতে পেরেছে কতটা ভুল করেছিলো ও । যদি ভার্সিটি লাইফের প্রথমেই জয়েন করে ফেলতো তাহলে এতদিনে ভালো পজিশনে থাকতো । জয়ের কাছে মনে হচ্ছে এটাই ওর আসাল যায়গা , এখানেই ওর পটেনশিয়ালের সম্পূর্ণ ব্যাবহার হবে । জয় এখানে এসে দেখছে কত কিছু করার আছে এখানে । জয় প্রথিবিতে নিভৃতে জন্ম নিয়ে নিভৃতে চলে যাওয়ার জন্য জন্ম নেয়নি । বড় কিছু করার জন্য জন্ম নিয়েছে । আর এই দলের সিঁড়ি বেয়েই ওর পক্ষে কিছু করা সম্ভব ।
দল ও ওকে পেয়ে খুশি , ডাইন্যামিক ছেলে জয় , ভালো পপুলারেটি আছে নিজ ডিপার্টমেন্টে । এছাড়া ভার্সিটি স্পোর্টস এ বেশ পরিচিত মুখ জয় অনেকেই চেনে । তাছাড়া রোমিও নাম ছাড়া অন্য কোন ব্যাড নেম নেই । আরিফ চিন্তা করেছে একে এভাবে ব্যয় করবে না , কয়েক জন কে ডিঙিয়ে হলেও নেক্সট কমিটিতে ওকে একটা মোটামুটি পদ দেবে , তাতে আরিফের ই লাভ হবে। ছেলেটা ওর হয়েই কাজ করবে । তা ছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে জয় পয়সা ওয়ালা বাপের ছেলে । ভালো ফান্ডিং করতে পারবে।
আগামিকাল দলের মিটিং আছে জয়ের উপর দায়িত্ব পড়েছে নিজ ডিপারট্মেন্ত থেকে ছেলে জোগাড় করার । মিনিমাম ২০০ ছেলে দরকার হবে । ইদানিং আরিফের বিপক্ষ পার্টি দলের ভেতর ই মাথা চারা দিয়েছে । তাই আরিফ দেখিয়ে দিতে চায় এখনো ওই সেরা । জয় ও মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে । যদিও জয়ের ভালো পোস্ট নেই , তারপর ও আরিফের সরাসরি পাওয়ারে জয় এসব করছে ।
যাকে কথা দিয়ে পারছে তাকে কথা দিয়ে কনভিন্স করছে , যাকে টাকা দেয়ার দরকার হচ্ছে টাকা দিচ্ছে । কেউকে রাজি করাতে হালকা ভয় দেখাচ্ছে ।
প্রথম বর্ষের একটা ছাত্র কে যখন জয় সামান্য ভয় দেখাচ্ছিলো , তখনি রাজীব সেদিক দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো । কয়েক সেকেন্ডের জন্য দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হয় । রাজীবের বুঝতে অসুবিধা হয় না জয় কি করছে । রাজীবের চোখে মুখে একটা অনুভুতি ফুটে ওঠে । যাতে লেখা থাকে ‘এতো নিচে নামতে পারে কেউ এতো দ্রুত’।
জয় ও কম যায় না , রাজীব কে দেখে যেন আরো বেশি বেয়াড়া হয়ে ওঠে , প্রথম বর্ষের ছেলেটির কলার চেপে ধরে । এতে করে ছেলেটি বেশ ভড়কে যায় , জয়ের সাথের ছেলে পেলেও বেশ অবাক হয়ে যায় , কারন ওই প্রথম বর্ষের ছেলে এমনিতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলো । যতক্ষণ জয় ওই ছেলের কলার চেপে ধরে ছিলো ততক্ষণ জয়ের দৃষ্টি রাজীবের দিকে ছিলো । ভাব এমন কলার ধরেছে অন্যজনের কিন্তু ফিল নিচ্ছে ও রাজীবের কলার ধরেছে ।
রাজীব একটা ডিজগাস্ট লুক দিয়ে সেই যায়গা ছেড়ে যায় । রাজীব চলে যেতেই জয় ওই ছেলের কলার ছেড়ে দেয় । নিজে হাতেই কলার ঠিক করে দেয় , তাপর বেশ শান্ত ভাবে বলে “ চলে এসো কিন্তু ভাইয়া, বড় ভাইয়ার কথা শুনবে না?”
ছেলেটা আরো ভড়কে যায় , কারন যে একটু আগে কলার চেপে ধরে রেখেছিলো সেই এখন এতো নরম ভাবে কথা বলছে । ছেলেটি মাথা ঝাঁকিয়ে শ্বায় জানিয়ে দ্রুত বিদায় হয় ।
“ভাই এইটা কি হলো , এতো এগ্রেসিভ হয়ে গেলা কেনো?” পাশে থাকা একটি ছেলে জিজ্ঞাস করে । জয় মুচকি হেসে বলে , “কিছু মানুষ আছে , যাদের দেখলেই হাত নিশপিশ করে ।“
“ওই কথা , আমাদের দেখাইয়া দিও , সাইজ করে দিবো” অন্য একটি ছেলে পাশ থেকে বলে ।
“ আরে বাদ দাও তো ভাই , চলো দুই একটা মেয়ে জোগাড় করি , মেয়ে না হলে আমার আবার ভালো লাগে না কেমন জানি খালি খালি লাগে , মেয়ারা হলো সব জায়গার সৌন্দর্য , যেখানে মেয়ে নাই সেখানে সৌন্দর্য নাই” জয় নিজের সাদা সার্টের হাটা গুটিয়ে কনুই পর্যন্ত আনতে আনতে বলে । তারপর চুল গুলো ঠিক করে নেয় । নিজের লুক ঠিক আছে নিশ্চিত হয়ে জয় সামনের দিকে বাড়ে ,
পাশ থেকে একটি ছেলে বলে “ ঠিক বলসো ভাই , মেয়ে থাকলে ব্যাপারটা আরো গুরুত্ব পায় , আরিফ ভাই খুব খুশি হবে”
কিছুদুর যেতেই চার পাঁচ জন মেয়ের একটা গ্রুপ দেখতে পায় , জয় নিজের সাথে থাকা ছেলেদের আর সামনে আসতে না করে। বলে “ তোমরা এখানেই থাকো , এরা মেয়ে এদের মাসল পাওয়ার বা টাকার পাওয়ার দিয়ে বশে আনা যায় না , এদের বশে আনতে লাগে সুইট টক আর ইনোসেন্ট লুকস , তোদের মতন গুন্ডা নিয়ে গেলে অন্য কিছু ভাববে” এই বলে জয় আর দাড়ায় না।
নিজে একাই মেয়েদের সামনে গিয়ে বলে “ Hi ladies, ফার্স্ট ইয়ার?”
মেয়ে গুলো হঠাত করে আকাশ থেকে পড়ার মত করে একটা হ্যান্ডসাম ছেলে নিজের মেয়ে পটানো হাসি নিয়ে হাজির দেখে একটু হতচকিয়ে যায় , সবাই মাথা নারিয়ে জানায় হ্যা ।
“ তা কেমন চলছে ভার্সিটি লাইফ ? এঞ্জয় করছো?” জয় নিজের স্মারটনেস পুরোটা ব্যাবহার করে বলে
মেয়েদের মধ্যে দুই একজন খুব ধিরে বলে হ্যা । জয় এবার মেয়ে গুলর পাশেই বসে পরে , জিজ্ঞাস করে “ লেখাপড়া কেমন চলছে?”
সবাই বলে ভালো , দুই একজনের মুখে মুচকি হাসি দেখা যায় । এই মেয়েদের মাঝে বেশ কয়েকজন জয় কে দূর থেকে আগে দেখছে । হ্যান্ডসাম , ফানি , পপুলার , এরা দূর থেকে দেখছে আর এডমায়ার করেছে । আজকে সামনে দেখে বেশ ভড়কে গেছে।
“ শোন , কোন সমস্যা হলে ভাইয়া কে বলবা” জয় একদম ক্যাজুয়াল হয়ে বলে । তারপর জিজ্ঞাস কজরে “ সুধু পড়াশুনা করার জন্য ভার্সিটি তে আসছো ? নিজেকে তৈরি করতে হবে না দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য? আর তোমারা হলে নারী শক্তি , তোমাদের ত সবার আগে থাকা দরকার , আমি বিশ্বাস করি একমাত্র নারীরা যদি সমান অংশ গ্রহন করে তবেই দেশ এগিয়ে যাবে”
জয়ের হঠাত এমন কথায় মেয়ে গুলো একটু গুলিয়ে যায় , কিন্তু জয় নিজের বিখ্যাত হাসি হেসে ওদের মনোযোগ ধরে রাখে , তারপর প্রায় ১৫ মিনিট ধরে নারী শক্তির উপর সবক দেয়ে , এবং নিজেকে নারী শক্তির পক্ষের একজন হিশেবে প্রমান করে। এবং মেয়েগুলো মিটিং এ আসার জন্য রাজি হয়ে যায় । জয় বিজয়ীর হাসি নিয়ে নিজের দলের ছেলেদের কাছে ফিরে যায় ।
ছেলেগুলো জিজ্ঞাস করে “ ভাই ওরা আসবে?”
জয় বলে “ সবাই হয়তো আসবে না তবে দুই একজন আসবে”
“ কিভাবে রাজি করালে ভাই” একজন কাতর স্বরে জিজ্ঞাস করে
“ আরে মেয়ে মানুষ , ওদের একটু লিফট করলেই গলে যায়, শোন একটা টিপস দেই , যদি কোন মেয়ে পটাতে চাও , নিজের জন্য অথবা অন্য কোন কারনে , সব সময় ভাব নিবা তুমি ফেমিনিস্ট , মেয়ে মানুষ সুযোগ পেলেই মাথায় উঠবে , আর একবার যদি মাথায় ওঠে আর তুমি মাথা থেকে না নামাও জীবনে নামবে না, তুমি যতদিন চাইবে তোমার সাথে থাকবে, যদি সারা জীবন রাখতে চাও , মাথায় তুলেই রাখতে হবে , মেয়ে মানুষের সবচেয়ে পছন্দের বসার স্থান হচ্ছে মাথা , মাথায় বসে এরা তোমার কান ধরে রাখবে ” জয় বিজ্ঞ লোকের ভাব নিয়ে বলল
“ কিন্তু ভাই মাথায় উঠলে ত জিন্দেগি বরবাদ” একটি ছেলে প্রশ্ন করলো
“ আরে তুমি কি সত্যি সত্যি মাথায় উঠাবা নাকি , ভাব নিবা , কিন্তু যদি দেখো আর সহ্য করতে পারতেসো না , সময় মতন নামিয়ে দিবা, নামায়া দিতেও বেশি কষ্ট করা লাগে না , একটা দুইটা কথা বলেই নামিয়ে দেয়া যায় । এখন চলো আরো কিছু পাখি শিকার করি, একদিনের জন্য একটা টিপস ই যথেষ্ট” এই বলে জয় আগে বাড়ে ।
জয়ের এমন স্বতঃস্ফূর্ত আর বন্ধুত্ব পূর্ণ আচরণ ওর সাথের ছেলে পেলের মন ও অল্প দিনে জয় করে ফেলছে । দলের ভেতর জয়ের জনপ্রিয়তা অল্প হলেও আছে ।
*****
বিকাল দিকে জয় যখন বাইকে করে যাচ্ছিলো তখন চত্তরে রানী কে একা দাড়িয়ে থাকতে দেখতে পায় , বাড়ি ফেরার জন্য কিছু খুজছে । জয় নিজের বাইক নিয়ে রানীর সামনে দাড়ায় । হ্যাল্মেট খুলে বলে “ কিরে তো সখি কই আজকে”
আচমকা সামনে বাইক ব্রেক করায় রানী চমকে ওঠে , দু পা পেছনে চলে যায় । তারপর ধাতস্ত হয়ে বলে , “তুমি কি চমকে না দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে আসতে পারো না?” বেশ বিরক্ত শোনায় রানীর গলা । আজকাল জয় আর রানীর ছাদের দেখা সাক্ষাত হয় না , জয় বিজি থাকে রাত ৯-১০ টার আগে বাসায় ফিরে না । তবে ক্যাম্পাসে দেখা হলে রানী একটু এড়িয়েই চলে জয় কে ।
“ কিছু কিছু মানুষ ঘোরের মাঝে থাকে তাদের চমকে দিয়ে ঘোর থেকে বের করতে হয়” জয় নির্লিপ্ত ভাবে বলে
“ সব দায়িত্ব কি তোমার নাকি” ঝাঁজের সাথে বলে রানী ,
“ যেহেতু জনসেবায় নেমেছি , দায়িত্ব দেয়ার আগেই কাঁধে তুলে নেয়ার অভ্যাস করতে হবে” জয় হেসে বলে
“ আর অভ্যাস করার জন্য তুমি আমাকেই পাও সুধু”
“ কি করবো বল তুই সামনে পরে যাস, আমার কি দোষ”
“নাহ তোমার আবার দোষ থাকে নাকি , তা রাজনীতি কেমন চলছে তোমার”
“ আমি হচ্ছি রাজা , রাজনীতি আমার রক্তে বুঝলি” বেশ ভঙ্গি করে বলে জয় ,
“ তাই ? তুমি নিজেকে রাজা ভাবো”
“ তুই যদি রানী হোস , আমি ত রাজাই হবো” কথাটা জয় একেবারে হঠাত করেই বলে ফেলে ।
মুহূর্তে রানীর শরীর রিজিড হয়ে যায় । রাজীবের বলা অনেকদিন আগে একটা কথা মনে পরে যায় , রাজীব বলেছিলো ,’যেদিন তোর রাজা আসবে সেদিন তুই এমনিতেই বুঝে যাবি”
কিন্তু রানী তো বুঝতে চায় না , একমাত্র লেখাপড়া আর ক্যারিয়ার ছাড়া আর কিছুই ভাবতে চায় না রানী । কিন্তু জয় সামনে এলেই গড়বড় হয়ে যায় ওর প্রতিজ্ঞার । আর এই কারনেই জয় কে এড়িয়ে চলে রানী ।
রানী মনে মনে বলে ‘আমি বুঝতে চাই না ,বুঝতে চাই না’
রানীকে একভাবে বিড়বিড় করে কিছু বলতে শুনে , জয় হাসতে হাসতে বলে , “কি জাদুটোনা করিস বিড়বিড় করে , আমার জন্য জাদুটোনার দরকার নাই”
“ আপদ বালাই বিদায়ের দোয়া এটা , কোন জাদুটোনা না , এখন যেখানে জাচ্ছিলে যাও , আমার বাসায় যেতে হবে , সামনে বাইক দাড়িয়ে থাকলে , সি এন জি পাবো না”
“ আমি থাকতে সি এন জি লাগবে কেনো, চল তোকে নামিয়ে দেই” জয় বাইকের পেছনের সিট দেখিয়ে বলে ।
“ তুমি রাজা তুমি কেনো কষ্ট করতে যাবে , যাও গিয়ে দুনিয়া উদ্ধার করো” রানী হালকা বেঙ্গ করে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে ,
রানীর বলার ধরন দেখে হাসে জয় , ঠোঁট বাঁকিয়ে কথা বলার ধরন টি বেশ ভালো লাগে ওর কাছে । যখন রানী ঐভাবে কথা বলে তখন ওকে দারুন কিউট লাগে জয়ের কাছে । এমনিতে রানীর ঠোঁট খুব সুন্দর । বেশি পাতলা ও না আবার ভারি ও না , হালকা গোলাপি আভা আছে , ফর্সা মুখে হলকা গলাপি ঠোঁট দারুনলাগে দেখতে । এমনিতে রানী সাধারন বাঙালি মেয়েদের তুলনায় একটু বেশি ই ফর্সা , তবে আজকাল দৈনিক রোদে ঘুরাঘুরির কারনে হালকা তামাটে হয়েছে । কিন্তু তাতে ওর সৌন্দর্য তেমন একটা কমেনি । এই মুহূর্তে রানী একটা ওফ হোয়াইট সালাওয়ার স্যুট পরে আছে , সব সময়ের মত চোখে কাজল আর কলাপে ছোট্ট একটা কালো টিপ পড়েছে । চুল গুলো পেছনে নিয়ে রাবার ব্যন্ড দিয়ে পনি টেল করে রাখা , কানে দুটো বড় বরর ঝুমকা ঝুলছে । মাথা নাড়িয়ে কথা বলার সময় ঝুমকা দুটো বার বার দুলছে ।
“ আরে রাজার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে রানীর দেখাশুনা করা , চল তুই ,আমার আর কাজ নেই এখানে” জয়ের আরো আড্ডা দেয়ার ইচ্ছা ছিলো বন্ধুদের সাথে কিন্তু সেই ইচ্ছা কেন্সেল করে দিয়েছে ।
“ তোমার বাইকের পেছনের সিট খুব উঁচু সাইড হয়ে বসা যায় না” রানী আবারো জয় কে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বলে ,
কিন্তু জয় কিছুতেই ছেড়ে দিতে নারাজ , চিন্তা ভাবনা না করেই বলে , “দু পা দুই দিকে দিয়ে বস”
রানী একটু রেগেই যায় , বলে “ গাধার মত কথা বলো কেনো? সালোয়ার কামিজে কি ওই ভাবে বসা যায় , বেকুব”
অন্য কেউ জয় কে বেকুব বললে , হয়তো এতক্ষনে তুলকালাম কান্ডো হয়ে যেতো । কিন্তু রানী আবারো ঠোঁট বাঁকিয়ে যখন বেকুব বলল তখন জয়ের মন্দ লাগার চেয়ে ভালোই লাগলো । মনে মনে বলল , তুই আমাকে এরকম কিউট ভাবে সারাদিন বেকুব ডাকতে পারিস , আমি কিছু মনে করবো না ।
“ দেখ বৃষ্টি হতে পারে , তারাতারি চল” জয় তাড়া দেয়
ভ্রু কুঁচকে তাকায় রানী জয়ের দিকে , সেটা দেখে জয় বলে “ সত্যি বলছি মোবাইলে দেখলাম ৭৫% চান্স”
“ যতই চান্স থাক , অন্তত দু চার ঘন্টার মাঝে বৃষ্টি হবেনা” রানী আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে ,
“ এই রানী” পেছন থেকে কে যেন ডেকে ওঠে , মেয়েলি কণ্ঠ । রানী আর জয় দুজনেই ডাক লক্ষ্য করে তাকায় , দেখে তিন চারজন মেয়ে দাড়িয়ে আছে কিছু দূরে , ওরা হাসছে । জয় ওদের দিকে তাকিয়ে নিজের স্বভাব সিদ্ধ মেয়ে ভুলানো হাসি দেয়। সেটা দেখে রানীর চেহারা কালো হয়ে যায় । মেয়ে গুলো ওর ক্লাসের , ঠিক বান্ধবি বলা যাবে না তবে কথা বার্তা হয় । মেয়ে গুলো জয়ের হাসির উত্তরে হাত নেড়ে হাই বলে , জয় ও তাই করে ।
রানীর শরীর তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে । না চাইতেও হিংসা হয় । মন চায় জয়ের হাত ধরে মুচড়ে দেয় । আর ওই মেয়েগুলোর দাঁতে কালি মাখিয়ে দেয় । কেমন লোলুপ দৃষ্টিতে জয় কে দেখছে । এই মেয়েদের যে কি হবে , হ্যাডসাম ছেলে দেখলেই এদের লালা ঝরে । আর সেই ছেলের যদি বাইক থাকে তাহলে তো কথাই নেই ।
“কে রে?” মেয়েগুলোর মাঝ থেকে একজন জিজ্ঞাস করে , কিন্তু রানী কোন উত্তর দেয় না সেই প্রশ্নের , বরং বলে “ এখন যাই পরে কথা হবে” এই বলে রানী বাইকে ওঠার চেষ্টা করে , কিন্তু বেশ উঁচু হওয়ায় দুই তিন বারের চেষ্টায় উঠতে সক্ষম হয় । তবে একটু দূরত্ব রেখে বসে ।
জয়ের মুখে মুচকি হাসি , মনে মনে ওই মেয়েগুলো কে ধন্যবাদ জানায় , শেষ বারের মত মেয়ে গুলোর দিকে একটা হিরো টাইপ হাসি ছুরে মারে , তারপর রানী কে বলে ধরে বসতে । কিন্তু রাগান্বিত রানী জানিয়ে দেয় লাগবে না । রানীর উত্তর শুনে জয়ের ঠোঁটে একটা দুষ্টুমির হাসি খেলে যায় ।
বাইক স্টার্ট করে জয় , ইঞ্জিন গরম করার পর , জয় ইচ্ছে করেই বাইক কে লাফিয়ে উঠতে দেয় হালকা ভাবে । ভয়ে আউউ করে ওঠে রানী, জয়ের কাঁধ ধরে নিজেকে রক্ষা করে । তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে , “ঠিক মত চালাবে না আমি নেমে যাবো”
জয় হেসে বলে “শক্ত করে ধরে রাখ” তারপর স্মুথ ভাবে বাইক নিয়ে এগিয়ে যায় ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 533
Threads: 0
Likes Received: 240 in 229 posts
Likes Given: 445
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(26-08-2025, 08:02 PM)Saj890 Wrote: Darun
ধন্যবাদ ভাই ,
নতুন যারা গল্পটি পড়তে শুরু করবেন তাদের জন্য; হয়তো গল্পটি একটু বোরিং লাগবে প্রথম দিকে । এর কারন হচ্ছে এই গল্পে সুধু একজন নারী আর একজন পুরুষের ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে লেখা নয়।ওই নারী আর পুরুষের আসে পাশে যারা আছে তাদের উপর এই সম্পর্কের কি প্রভাব পরে , এবং ওই মানুষ গুলো নিজেরা এই সম্পর্কের উপর কেমন প্রভাব ফেলে , তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা থাকবে ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
কিছু সম্পরকঃ ৬ (ক)
স্টেডি একটা স্পিড রেখে বাইক চালায় জয় , বাতাসে রানীর ওড়না মাথা থেকে পরে যায় । রানী সেটা আর দ্বিতীয় বার উঠানোর চেষ্টা করে না । বাতসের ঝাপটা মুখে চুলে আর সমস্ত শরীরে লাগতে দেয় । ও জানে এই দমকা বাতসে উড়ে চলা ওর জন্য সম্ভব নয় , তবুও যতটা সময় পাওয়া যায় উপভোগ করতে দোষ কোথায় । বাতসের সাথে যেন ওর মনের সকল চিন্তা ভাবনা উড়ে চলে যাচ্ছে , প্রতিটি মুহূর্ত যেন আরো হালকা করে দিচ্ছে ওকে । ভয় হয় রানীর , মনে হয় এমন চলতে থাকলে এক সময় উড়তে শুরু করবে ও । তখন চাইলেও মাটিতে নামতে পারবে না । অথচ ওর মাটিতে পা রাখা খুব জরুরি ।
সত্যিই কি জরুরি , যদি তাই হতো তাহলে , এতো ভালো লাগছে কেনো ? কেন মনে হচ্ছে না ও কোন অন্যায় করছে । কেন যতক্ষণ জয়ের সাথে থকে ততক্ষন মনে হয় ওর জীবনে কোন চাপ নেই , নেই কোন বাড়তি চিন্তা । এই সময়টুকু কেনো এতো রিয়াল মনে হয় , কেনো বাকি সময়টা অভিনয়ের মত মনে হয় । মনে হয় অন্য কারো জীবন যাপন করছে ও । আর সেই অন্য কারো জীবনে অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পরে , রাতে ঘুমুতে বিছানায় গা রাখতেই ক্লান্তিতে অবসাদে শরীর ভারি হয় আসে ।
এক ফোঁটা পানি এসে পরে রানীর গালে । তারপর আরেক ফোঁটা কপালে , এর পর ঝম ঝম করে বৃষ্টি শুরু হয় । রানীর ইচ্ছে হয় দু হাত দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে আকাশের দিকে মুখ করে , সারা শরীরে মাখিয়ে নেয় বৃষ্টির ফোঁটা , ধুয়ে ফেলে জীবনের সব অবসাদ আর ক্লান্তি । কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না , জয় কে উদ্দেশ্য করে বলতে হয় , “ গাড়ি ওই দোকানটায় থামাও”
বলার প্রয়োজন ছিলো না , জয় আগেই সেই দোকানের উদ্দেশ্যে বাইক ঘুরিয়ে নিয়েছে ।
দোকানটা একটা ঝুপড়ি চায়ের দোকান , আগে থেকেই কিছু মানুষ চা খাচ্ছিলো । বৃষ্টির কারনে আরো কিছু মানুষ এসে জড় হয়েছে । তবে গাদাগাদি ভিড় নয় , অন্য মানুষ গুলো ওদের একটু স্পেস দিয়েই দাঁড়িয়েছে । সাথে মেয়ে আছে বলে বাড়তি খাতির ।
অল্প সময় বৃষ্টিতে থাকলেও বেশ ভিজে গেছে দুজনেই । রানীর চুল , কামিজ সালোয়ার সব ভিজে গেছে । আর ভেজা কাপড় শরীরের সাথে লেপ্টে জাওয়ায় রানী চেষ্টা করছে যেন শরীরের সাথে লেপ্টে না থাকে , সেই সাথে ওড়না আর শরীর থেকে পানি ঝেড়ে ফেলার চেস্টাও করে যাচ্ছে ।
জয়ের সে সবের বালাই নেই , ওর দৃষ্টি রানীর উপর । মুগ্ধ হয়ে রানীর দিকে তাকিয়ে আছে ও । রানীকে দেখতে একেবারে উপন্যাসের নাইকাদের মত লাগছে , চোয়াল শক্ত , মুখে বিরক্তির ভাব , ভ্রু কুঁচকে আছে । কিন্তু এসব ও ওর মুখের কমনীয়তা কমাতে পারেনি , বরং বৃষ্টির পানিতে ভেজা চেহারায় এক বিষাদময় সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে । নাকের ডগা , চোখের পাপড়ি আর থুতনির মাঝ বরাবর থেকে ফোটায় ফোটায় পানি পরছে ওর প্রতিটি নড়াচড়ার সাথে সাথে । জয়ের কাছে মনে হচ্ছে ও স্লো মোশনে দেখছে এসব , রানীর মুখমন্ডলের একেকটি কোষের নড়াচড়া , একেকটি অভিবেক্তি ওর নজর গোচর হচ্ছে । কানের কাছে ভেজা কিছু চুল লেপটে আছে যাদের ডগা রানীর গাল পেরিয়ে ঝুলে আছে শূন্যে , সেখান থেকেও অল্প বিরতিতে মুক্তোর দানার মত ঝরছে বৃষ্টির পানি , কানের পেছন , গলা পেছনের পিঠের উন্মুক্ত অংশ ফোঁটা ফোঁটা পানিতে সজ্জিত হয়ে আছে । কানে ঝুলানো ঝুমকা বার বার দোল খাচ্ছে , রানীর বৃষ্টির পানি থেকে নিজেকে রক্ষা করার কর্মযজ্ঞের কারনে । এই অসাধারন দৃশ্য জয়ের মনে একদম ফ্রেম হয়ে গেঁথে যায় । হয়তো জয় ওর বাকি জীবন এই দৃশ্য ভুলতে পারবে না । একজন রাজকুমারির বিষাদ মাখা অপূর্ব সুন্দর মুখ , বৃষ্টির ফোঁটা অঙ্কিত হয়ে আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে । জয় রানীর এই দুষ্প্রাপ্য সৌন্দর্যের সাথে সাথে চাপা পরা গভির একাকীত্ব ও অনুভব করতে পারছে । যা জয়ের মনকে আর বেশি আপ্লূত করে । ইচ্ছে হয় এই একাকি দুঃখী রাজকন্যার হাত ধরতে , বলতে ইচ্ছে হয় আমি তোমার সব দুঃখ ভুলিয়ে দেবো , যাবে আমার সাথে ? কিন্তু বলে উঠতে পারে না ।
ধিরে ধিরে জয়ের দৃষ্টি রানীর গলা হয়ে কলার বোনের দিকে যায় ভেসে থাকা কলার বোন দুটোর বেশ জোরালো উপস্থিতি , তারপর আরো নিচে উন্মুক্ত বুকের উপর অংশ , বৃষ্টির ফোঁটা অঙ্কিত একটা ছোট্ট তিল , খুব খ্যেয়াল না করলে চোখে পরে না , তারপর জয়ের দৃষ্টি আরো নিচে নামতে থাকে , সোনালি সুতোর কাজ করা অংশটা উঁচু হয়ে আছে , ধিম তালে ওঠানামা করছে প্রতিটি নিশ্বাসের কারনে , এর পর আরো নিচে প্রায় সমতল পেট , ধুসর সাদা জামা ভিজে গিয়ে রানীর পেটের কাছ টায় শরীরের সাথে সেঁটে আছে , ফর্সা ত্বক স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে । জয় চোখ ফিরিয়ে নিতে চায় , কিন্তু পারে না । তবুও জোর করে নিজের দৃষ্টি উপরে তোলে , আর ঠিক তখনি চোখ পরে রানীর চোখে । নিজের দৃষ্টি কে চোরের মত লুকায় না জয়, রানীর চোখে চোখ রেখেই ওর ঠোঁটে ফুটে ওঠে হালকা লজ্জা মিশ্রিত হাসি । এই লজ্জা এইজন্ন নয় যে ও দেখেছে , এই লজ্জা ধরা পরে যাওয়ার কারনে । অনেকটা চুরি করে মিষ্টি খেয়ে মায়ের কাছে ধরা পড়ার পর যেমন হাসি সন্তান হাসে ।
নিজের শরীর থেকে যখন পানি ঝারছিলো তখন জয় কে চুপচাপ দেখে বেশ অবাক হয় রানী । জয় যে এতক্ষণ চুপ থাকতে পারে সেটা ওর জানা ছিলো না , তাই কৌতূহল বসত জয়ের দিকে তাকায় । দেখে জয় ওর দিকেই তাকিয়ে আছে , জয়ের দৃষ্টি অনুসরন করতে গিয়ে রানী খেয়াল করে যে জয় ওর পেটের দিকে তাকিয়ে আছে । তখনি মনে পরে , আজকে কামিজের নিচে ব্রা এর উপরে যে ভেস্ট টা পড়েছে সেটা ওর সম্পূর্ণ পেট কভার করে না । স্পাগেটি স্ট্রেপের ভেস্ট টা বুকের নিচে কিছুদুর গিয়েই শেষ হয়ে যায় । নিশ্চয়ই ওই অংশের পেট ভেজা কাপড় এর কারনে দেখা যাচ্ছে , রানী অবাক হয়ে জয়ের দিকে তাকায় , কেমন নির্লজ্জের মত তাকিয়ে আছে !!! আর তখনি চোখ তোলে জয় , চোখা চখি হয় , এবং রানী কে আরো অবাক করে দিয়ে, জয় নির্লজ্জের মত হাসে । এক্টুও লুকানোর চেষ্টা করে না যে এতক্ষণ ও কোথায় তাকিয়ে ছিলো । নাহ এতটুকু শরীর প্রদর্শনে রানীর লজ্জা নেই , কিন্তু কেউ যদি সেদিকে কু দৃষ্টিতে তাকায় তাতে রানীর রাগ হয় । রানী রাগ করার চেষ্টা করে , কিন্তু অবাক হয়ে খেয়াল করে যে রাগ করতে পারছে না । জয়ের জয়ের এই নির্লজ্জ দৃষ্টিকে আর যাই হোক কু কিছুতেই বলেতে পারছে না। বরং জয়ের দৃষ্টিতে এমন কিছু ছিলো , যা দেখে ওর গা শিউরে উঠেছে । জয়ের দৃষ্টিতে ছিলো অধিকার , ভাব খানা এমন যে , আমি দেখবোই , আমার দেখার জন্যই তো তোমার অস্তিত্ব ।
নিজের শরীরে এক ধরনের শিরশিরে অনুভূতি হয় । এই ঠাণ্ডা শরীরেও উষ্ণতার আভাষ পায় । তাছাড়া অন্য লোকজন যখন কু দৃষ্টিতে তাকায় , তখন চোখে চোখ পরলে চোরের মত চোখ সরিয়ে নেয় । কিন্তু জয় চোখ তো সরিয়ে নেয়নি ই উল্টো হাসছে । ভাব খানা এমন যে আমি দেখতেই পারি ।
হঠাত রানীর হুঁশ হয় আশেপাশেও কিছু পুরুষ আছে , রানী আশেপাশে একবার তাকিয়ে দেখে , বেশ কয়েকজন চোরের মত দৃষ্টি লুকায় । এতক্ষনের ভালোলাগার অনুভূতি চলে যায় রানী কে ছেড়ে , দ্রুত হাত দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করে ।
জয় রানীকে আশেপাশে তাকাতে দেখে আর হাত দিয়ে নিজের পেট ঢাকতে দেখে বুঝতে পারে ও বিব্রত হচ্চে । জয় নিজেও চোখ গরম করে আশেপাশে একবার তাকায় , বেশ কয়েকটি চোর ধরা পরে । কিন্তু জয় জানে ও এখানে কিছু করতে পারবে না , কিন্তু রানীকে এই অবস্থায় দেখতেও পারছে না । তাই ও একটু ভেবে নিয়ে এমন একটা কাজ করে যা হয়তো একটু বেশি বেশি মনে হবে , অনেকেই ভাববে গাঁজাখুরি সিনেমা চলছে । কিন্তু জয় এসব কেয়ার করে না , নিজের সার্ট খুলে রানীর দিকে এগিয়ে দেয় । ব্লু জিন্স যা এখন ভিজে কালচে দেখাচ্ছে এর উপর সুধু মাত্র একটা সাদা ওয়াইফ বিটার পরে আছে জয় ।
রানী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জয়ের দিকে , ভ্রু কোচকানো , প্রশ্নবোধক দৃষ্টি , ‘ এটা কি হচ্ছে ধরনের প্রশ্ন’ । কিন্তু জয় সেই প্রশ্ন উপেক্ষা করে , সার্ট নেয়ার জন্য ইশারা করে । কিন্তু রানী সার্ট না নিয়ে , চোখের দৃষ্টিতে বলে , ‘ সিন না করলে হয় না’। জয় আবার এড়িয়ে যায় , উল্টো ইশারায় বলে পরে নিতে , এবার অবশ্য ধমক মেশানো থাকে ইশারাতে ।
রানী বুঝতে পারে জয় কথা শুনবে না , তাই সিন যেন আরো বেশি ড্রামাটিক না হয় সে জন্য সার্ট নিয়ে নেয় , তারপর নিজের শরীরের উপর চরিয়ে বোতাম আটকে নেয় । মনে মনে ভাবে হিরো সাজার অভ্যাস কোনদিন যাবে না এই ছেলের । এইটুকুর জন্য নিজের সার্ট না খুল্লেও হতো । সব ব্যাপারে বেশি বেশি , আশেপাশের লোকজন অবাক হয়ে দেখছে , কারো কারো মুখে মুচকি হাসি । খুব মেজাজ খারাপ হয় রানীর । তবে রানী স্বীকার করতে না চাইলেও মনের এক কোনে ভালোলাগার ছোট্ট একটা অনুভূতি চুপ করে বসে দাঁত বের করে হাসছে । সেই হাসি রানীর ঠোঁটেও সংক্রমিত হয় , খুব ছোট্ট করে মুচকি একটা হাসি ফুটে ওঠে ওর ঠোঁটে । এবং রানী খুব চেষ্টা করে সেটা যেন জয় দেখতে না পায় । বডি বিল্ডার জয়ের সার্ট রানীর জন্য বেশ ঢোলা হয় । ওড়নার আর দরকার হয় না । রানী ওড়নাটা এক প্যাচে গলায় ঝুলিয়ে নেয় । তারপর জয়ের দিকে তাকায় , ইশারায় প্রশ্ন করে ‘এবার খুশি?’
আর তখনি জয়ের কাঁটা কাঁটা মাসল যুক্ত বাহু আর কাঁধ , সেন্ডো গেঞ্জি ঢাকা শক্ত সমতল পেট নজরে আসে রানীর । একটা বৈদ্যুতিক শক খায় রানী , গলা শুকিয়ে আসে , ঢোক গিলতে বাধ্য হয় । সমস্ত শরীরে তাপ মাত্রা হঠাত বৃদ্ধি পাওয়া টের পায় রানী । নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসে । এতো সুন্দর হয় ছেলে মানুষের শরীর রানীর জানা ছিলো না । হ্যা সিনেমায় দেখছে , কিন্তু সেই অনুভূতি আর ছোঁয়ার দুরুত্ত্বে দাড়িয়ে থাকা এক ব্যাপার না । রানী যেন জয়ের শরীরের উত্তাপ টের পায় , কতটুকু শক্তি ধারন করে এই বাহু তার ভয়ংকর সুন্দর ধারনা পায় । প্রবল মেয়েলি তাড়না বোধ করে একবার ছুয়ে দেখার । নিজের অজান্তেই শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় , আর তখনি ধরা পরে যায় জয়ের কাছে ।
লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা হয় , দ্রুত সরিয়ে নেয় নিজের দৃষ্টি । রানী নিশ্চিত যে র গাল লাল হয়ে গেছে । মনে মনে ভাবে ‘ হায় খোদা এ কি হলো , এই ছেলে আমাকে ছারবে না , জ্বালিয়ে মেরে ফেলবে’ । রানী নিজের দৃষ্টি জয়ের দিকে ফেরায় না, তবুও এই মুহূর্তে জয়ের ঠোঁটে যে হাসি আছে সেটা কল্পনা করতে কষ্ট হয় না ওর । ইচ্ছা করে দৌরে পালিয়ে যায় । হয়তো এক্ষুনি জয় কিছু বলবে , আর সেই কথা যে ওকে একদম লিজ্জায় মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলবে সেটা রানী খুব ভালো করেই জানে ।
কিন্তু রানীকে অবাক করে দিয়ে জয় কিছুই বলে না , দশ সেকেন্ড , পনেরো সেকেন্ড , বিশ সেকেন্ড , এক মিনিট কেটে যায় । কিন্তু জয় চুপ । রানীর ভয় কাটে না , মনে মনে ভাবে ‘সয়তান টা কিছু বলছে না কেনো?’ রানীর কাছে মনে হয় কিছু বলে ফেল্লেই ল্যাঠা চুকে গেলো । কিন্তু যতক্ষণ জয় কিছু না বলবে ততক্ষণ ওর লজ্জা বাড়তেই থাকবে । ‘সয়তান টা ইচ্ছে করেই কিছু বলছেনা’ রানী মনে মনে বলে । ‘ আমাকে কি লজ্জা দিয়ে মেরে ফেলার ইচ্ছা?’ রানী প্রশ্ন করে মনে মনে । তারপর সাহস করে একবার তাকায় । চোখাচোখি হয় দুজনের , এই পুরো সময় জয় ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলো । মুখে হাসি , সেই হাসিতে লেখা , কি ? ধরা পরে গেছো।
রানী ও হাসে , তারপর আবার তাকায় , দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হাসে । তারপর কি মনে করে রানী নিজের ওড়না গলা থেকে খুলে জয়ের দিকে বাড়িয়ে দেয় , ঠোঁটে মুচকি হাসি নিয়ে । জয় প্রথমে অবাক হলেও বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না ওর । কাঁধ ঝাঁকিয়ে রানীর হাত থেকে ওড়না নেয় , তারপর শীতের চাদরের মত শরীরে প্যাচিয়ে নেয় । রানীর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচায় । রানী ও হাসে ।
কিছুক্ষনের জন্য রানী সমস্ত দুনিয়া ভুলে যায় । এই সময়টায় রানীর দুনিয়া জুড়ে সুধু জয় আর জয় , যে এখন ওর ওড়না জড়িয়ে দাড়িয়ে আছে । মুখে ভুবন ভুলানো হাসি ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 533
Threads: 0
Likes Received: 240 in 229 posts
Likes Given: 445
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(06-09-2025, 11:25 PM)Saj890 Wrote: Darun ধন্যবাদ
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 853
Threads: 0
Likes Received: 391 in 324 posts
Likes Given: 1,598
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(08-09-2025, 07:36 PM)Ari rox Wrote: এগিয়ে যান বস
ধন্যবাদ বস ,
লাস্ট আপডেটের পর প্রায় হাজার ভিউ হয়েছে , এরা নিশ্চয়ই সবাই নতুন নন ,নিশ্চয়ই এদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা দ্বিতীয় তৃতীয় বা আরো বেশিবার গল্পটা পড়ার জন্য এসেছেন । কিন্তু ভালো মন্দ কিছুই বলেন না এরা । আমি বেশ আশাহত । মন্দ হলে মন্দ বলুন , অন্তত আমি ভালো করার চেষ্টা তো করতে পারবো ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 853
Threads: 0
Likes Received: 391 in 324 posts
Likes Given: 1,598
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
(08-09-2025, 08:42 PM)gungchill Wrote: ধন্যবাদ বস ,
লাস্ট আপডেটের পর প্রায় হাজার ভিউ হয়েছে , এরা নিশ্চয়ই সবাই নতুন নন ,নিশ্চয়ই এদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা দ্বিতীয় তৃতীয় বা আরো বেশিবার গল্পটা পড়ার জন্য এসেছেন । কিন্তু ভালো মন্দ কিছুই বলেন না এরা । আমি বেশ আশাহত । মন্দ হলে মন্দ বলুন , অন্তত আমি ভালো করার চেষ্টা তো করতে পারবো ।
বস এমন অনেক হয়ে থাকে, আপনি পেরা নিয়েন নাহ।।।আপনি আপনার লিখাটা চালিয়ে যান
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(09-09-2025, 12:25 AM)Ari rox Wrote: বস এমন অনেক হয়ে থাকে, আপনি পেরা নিয়েন নাহ।।।আপনি আপনার লিখাটা চালিয়ে যান
হ্যা লেখা চলবে , আপনারা দুই একজন তো আছেন ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
কিছু সম্পর্কঃ ৬ (খ)
আশেপাশের মানুষের চাপা হাসির ভেতর বেশিক্ষণ থাকতে হয়নি রানী আর জয়ের । যেমন হঠাত করে বৃষ্টি নেমেছিলো , ঠিক তেমন করেই হঠাত বৃষ্টি থেমে ঝলমলে রোদ চারদিক ঝলসাতে শুরু করে । ভেজা রাস্তা , ফুটপাতে জমা পানি , গাছের পাতায় ফোঁটা ফোঁটা পানি , আর রানী জয়ের ভেজা জামা কাপড় না থাকলে কেউ হয়তো বিশ্বাস ই করতো না যে একটু আগে ঝুম বৃষ্টি হয়েছে ।
দুজনে দ্রুত নিজেদের মাঝে আরো একবার পোশাকের অদল বদল করে নেয় , তারপর জয়ের বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । এবার রানী কিছুটা লেগেই বসে জয়ের সাথে , ভাবে আর অল্প রাস্তাই তো বাকি , রেশ টা বাড়ি পর্যন্ত থাকুক না।
জয় একদম রানীদের বাড়ির সামনে এসে বাইক থামায় , ওদের দুই বাড়ির মাঝে যে সম্পর্ক তাতে ওদের দুজনের এক বাইকে করে আসা নিয়ে কেউ তেমন ভ্রু কুচকাবে না । যদি কারো মনে কোন প্রশ্নের উদয় হয় ই , সেটা মনেই থেকে যাবে । রানী বাইক থেকে নামে , কিছু একটা বলতে চায় , কিন্তু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না । সামান্য ধন্যবাদ ওর মুখে থেকে বের হয় না । কারন ওর কাছে মনে হয় এখানে জয় ধন্যবাদ পাওয়ার মত কিছুই করেনি । বরং জয় যা করেছে তা ওর কর্তব্য ছিলো । রানী অন্য কিছু একটা বলতে চায় , সেই অন্য কিছু একটা যে কি সেটাই গুছিয়ে নিতে পারছে না।
আর ঠিক সেই সময় ই রাস্তার উল্টো পাশের বিলদিং থেকে একজন নারী বেড়িয়ে আসে । রানী আর জয় দুজনই এই মেয়েকে চেনে । ওদের প্রতিবেশী , নিলু । বয়সে জয়ের চেয়ে দুই বছরের বড় । ছোটবেলায় ওরা এক সাথে খেলেছে । তবে জয় আর নিলুর আরো একটি পরিচয় আছে , জয়ের রোমান্টিক লাইফের সূচনা এই নিলুর সাথেই । তখন জয় সবে ক্লাস নাইনে পড়ে , আর নিলু উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে ।
“ জয় না , কি খবর তোর?” জয় কে দেখে উচ্ছ্বাসিত ভাবে বলে । যদিও ওরা একজন আর একজনের এক্স , কিন্তু ওদের মাঝে কোন ব্যাড ব্লাড নেই । কারন ওরা জানতো এই সম্পর্কের কোন ভবিষ্যৎ নেই । বছর তিনেক আগে নিলুর বিয়ে হয়ে গেছে , স্বামীর সাথে ইউরোপ থাকে ।
“ আরে নিলু আপা, কি খবর , কবে দেশে আসলা?” পুরাতন প্রেমিকাকে দেখে জয় ও খুশি হয় ।
রানী দাড়িয়ে আছে , ওর মনে একটা মিশ্র অনুভূতি , নিলুর ব্যাপারে ও কিছুটা জানে । রানী কিছুটা কৌতুক পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে , দুই প্রাক্তন প্রেমিক প্রেমিকার পুন মিলন ।
“ আসলাম , দুই দিন আগে , খুব টায়ার্ড ছিলাম , তাই ঘর থেকে বের হইনাই , আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?”
রানী লক্ষ্য করে নিলু কথা বলার সময় জয়ের আপাদমস্তক একবার দেখে নেয় । এবার রানীর মনে একটা সুই বিদ্ধ হয় , তবে রানী তেমন পাত্তা দেয় না । পুরনো প্রেমিকা বলে কথা , তার উপর জয় দেখার মতই জিনিস ।
“ হ্যা ভালোই আছে , তোমার খবর বলো , প্যা পু হইসে নাকি?” জয় বাচ্চার কথা জিজ্ঞাস করে ,
“ আমার ফিগার দেইখা কি মনে হয়?” নিলু হাসতে হাসতে বলে , নিজের শরীরের দিকে ইশারা করে
রানী জয়ের উত্ততর শোনার জন্য জয়ের দিকে তাকায় , চোখে এখন পর্যন্ত কৌতুক পূর্ণ কৌতূহল । দেখতে চায় জয় কি বলে ।
জয় নিলু কে একবার ভালো করে দেখে , তারপর নিজের স্বভাবসিদ্ধ হলকা ফ্লারট করার টোনে বলে “ মিস ওয়ার্ল্ড”
রানী ফিক করে হেসে ফেলে , আর যাই হোক নিলু কে মিস ওয়ার্ল্ড বলা যায় না । অনেক চেষ্টা করেও নিজের হাসি চাপতে পারে না রানী । মনে মনে ভাবে , এই ব্যাটা কখনো মানুষ হবে না । মেয়ে দেখলেই ফ্লারট করতেশুরু হয়ে যায়। তবে জয়ের এমন ব্যাবহারে রানী অভ্যস্ত ।
নিলু সরু চোখে রানীর দিকে তাকায় , রানীর হাসি নিলুকে বিরক্ত করে , জয়ের করা কমপ্লিমেন্টের সম্পূর্ণ আনন্দ ভোগ করতে পারে না । নিলুর এই অভিবেক্তির পরিবর্তন রানীর চোখেও পরে , দ্রুত হাসি বন্ধ করে ফেলে , শত হলেও মহল্লার বড় বোন । তবে মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করে ।
“ আরে তুই রানী না, কত বড় হয়ে গেছিস” নিলু এমন ভাব করে যেন এতক্ষনে রানী কে দেখতে পেয়েছে । আর নিলুর গলাতেও আগের মত উচ্ছ্বাস খুজে পাওয়া গেলো না ।“ ওমা তোরা আবার কবে ফিরে আসলি? তোরা না এই বাড়ি বিক্রি করে দিসিলি?”
“ওরা কবে বাড়ি বিক্রি করলো ? কি যা তা বলো তুমি” উত্তরটা জয় ই দিয়ে দিলো , কিন্তু নিলু সেদিকে কোন কর্ণপাত করলো না । রানী কে উদ্দেশ্য করে বলল , “ এমন শুকনা কেনো রে , একদম কাঠির মত , শরীরে মাংস লাগা , নইলে বড় হয়েছিস , বিয়ে শাদী হবে কি করে? ছেলেরা তো তোকে নিজদের মানুষ মনে করে কাঁধে হাত দিয়ে বলবে , দোস্তো কেমন আছিস হি হি হি ”
খুব নোংরা ভাবে নিলু রানীর হাসির প্রতিশোধ নিলো , রানীর চেহারা একদম শুকিয়ে গেছে , এই ধরনের কথার চালাচালিতে রানী খুব একটা পারদর্শী না । এদিকে নিলু রানীর প্রাপ্য পরিশোধ করতে পেরে তৃপ্তির হাসি হাসছে । এরি ফাঁকে রানী আর নিলুর মাঝে ঠাণ্ডা দৃষ্টির বিনিময় হয়ে গেছে বেশ কয়েকবার । কিন্তু জয় এ ব্যাপারে একদম বেমালুম । হাসতে হাসতে জিজ্ঞাস করলো “ কোথায় যাচ্ছ তুমি?”
“ এই একটু শপিঙে , এক কাজ কর না ভাই , বৃষ্টির পর রিক্সা পাওয়া মুশকিল , আমাকে একটু গলির মাথায় নামিয়ে দিয়ে আয় না” কথাটা বলে নিলু রানীর দিকে তাকালো , ঠোঁটে ইংগিত পূর্ণ হাসি । রানীর কাছে মনে হলো , নিলু ওর মনের একদম ভেতরে লুকিয়ে রাখা জয়ের জন্য যে আকর্ষণ আছে সেটা দেখে ফেলেছে ।
“ আরে ওঠো , গলির মাথায় কেনো , তুমি কোথায় যাবে আমারে বলো নামিয়ে দিয়া আসি” জয় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বলল ,
রানী জানে ওর আর জয়ের মাঝে অফিসিয়াল কোন সম্পর্ক নেই , তবুও জয়ের এমন সহজে রাজি হয়ে যাওয়া , ওর কাছে প্রচন্ড অপমানকর মনে হলো , এতক্ষণ নিলুর সাথে যে ঠাণ্ডা দৃষ্টির লড়াই চলছিলো , তাতে ও হেরে গেছে । রানী আর দাঁড়ালো না , জয় কে বিদায় ও বলল না , দ্রুত পদে গেটের দিকে হাটা দিলো । কিছুক্ষন আগে জয়ের সাথে কাটানো সময় গুলো এতক্ষণ ছবির মত ফ্রেমে গাঁথা ছিলো , তা এখন কাচের মত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে ।
পেছন থেকে নিলু কে বলতে শুনল , “ তুই মাত্র একজন কে নিয়ে ভিজে ভিজে রোমান্টিক গান গেয়ে এলি , এখন কি তোর সময় হবে?” নিলুর গলায় স্পষ্ট বক্র কটাক্ষ ,
উত্তরে জয় বলল “ আরে ধুর , কি যে বলো , তোমার জন্য আমার সময় আর সময়”
রানীর দ্রুত পদক্ষেপ এ পর্যায়ে এসে দৌরে রুপান্তর হয়েছে । ভেতর থেকে একটা চাপা কান্না প্রচণ্ড বেগে দরজায় আঘাত করছে, যে কোন মুহূর্তে বেড়িয়ে আসবে । রানী দরজার সামনে এসে চাবি বের করার সময় বাইক স্টার্ট হওয়ার আওয়াজ পায়।
নিজের ঘরে এসে হাতের ব্যাগ কোন রকমে ছুরে ফেলতে পারে সুধু । আর সাথে সাথেই কান্না ঠেলে বেড়িয়ে আসে । রানী ভেজা কাপরেই বালিসে মুখ গুজে শুয়ে পরে । একটি প্রস্নই বার বার ঘুরে ফিরে মনে আঘাত করতে থাকে , “ জয় তুমি কি চাও আমার কাছে?”
আজকের সুখ সৃতি গুলো যে এতো স্বল্পস্থায়ী হবে সেটা কিছুক্ষন আগেও ভাবেনি রানী । রানী জানে আজকে নিজেকে যে বিরহের চোরাবালিতে নিয়ে ফেললো। এর থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগবে । না রানী জয় কে দোষ দিচ্ছে না । জয় নিজের স্বভাব সুলভ আচরণ করেছে , যা ও অনেকের সাথেই করে । জয়তো ওর সাথে কোন কমিট্মেন্ট করেনি । সুধু বাইকে করে বাড়ি পৌঁছে দিতে চেয়েছে । এবং তা করেছেও । দোষ ওর নিজের ই , ও নিজেই কাঁচের ক্যানভাসে স্বপ্ন আঁকতে চেয়েছিলো । কিন্তু ভাবেনি , কেউ একজন ঢিল ছুঁড়লেই সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে । আজকে সেই ঢিল ছোঁড়ার কাজ করলো নিলু ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 853
Threads: 0
Likes Received: 391 in 324 posts
Likes Given: 1,598
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
এইকানে নায়ক্টা কে ভাই।।।শুধু জয়রে নিয়ে ৩টা আপডেট।।।
Posts: 533
Threads: 0
Likes Received: 240 in 229 posts
Likes Given: 445
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
(10-09-2025, 12:56 AM)Ari rox Wrote: এইকানে নায়ক্টা কে ভাই।।।শুধু জয়রে নিয়ে ৩টা আপডেট।।।
Ari rox ভাই , এই গল্পে কে নায়ক সেটা পাঠক বেছে নেবে । আমার কাছে মনে হচ্চে ভিন্ন ভিন্ন পাঠকের কাছে ,ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র , প্রধান চরিত্র বলে গণ্য হবে । দেখা যাক সামনে কি হয় , কে প্রধান চরিত্র হিশেবে উঠে আসে শেষ পর্যন্ত
(10-09-2025, 12:59 AM)Saj890 Wrote: Very nice
thanks bro
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
কিছু সম্পরকঃ ৬ (গ)
কিছুদিন যাবত রাজীব খুব বিজি সময় কাটাচ্ছে । ভার্সিটির ট্রিভিয়া ক্লাব থেকে ওকে সাধারন সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে । আর দেশের সবচেয়ে বড় ভার্সিটি হওয়ায় ওদের উপর দায়িত্ব পড়েছে আন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার । সেই নিয়েই রাজীবের ব্যাস্ততা । সেই সাথে লেখাপড়ার চাপ ও রয়েছে । আর কিছুদিন পর সেমিস্টার ফাইনাল । এই দুই চাপে রাজীব ঠিক মত ঘুমানোর সময় পাচ্ছে না । তার উপর আর একটা ব্যাপার রাজীব কে বেশ ভোগাচ্ছে , সেটা হচ্চে জয়ের আচরণ ।
হ্যা রাজীব হয়তো একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছিলো , বাপ্পির ব্যাপারটা নিয়ে । তাই বলে এমন করবে জয় !! সেটা রাজীব কখনো ভাবেবি । রাজনীতি জয়েন করেছে , এই খবর রাজীব অনেক আগেই পেয়েছে । সেই প্রথম থেকেই জয় কে খোঁচাচ্ছিল সরকার সমর্থিত ছাত্র উইং । কিন্তু রাজীব জয় কে বার বার বাধা দিয়েছে ।
রাজীব জানে কেন জয় এই শেষ সময়ে এসে রাজনীতি জয়েন করেছে । ওকে বাপ্পির কেস থেকে রক্ষা করার জন্য জয় এটা করেছে । জয় ওই দলে যোগ দেয়ার পর লেডিস হোস্টেলে অনুপ্রবেশ এর ব্যাপারে আর কোন ইনভেস্টিগেশন হয়নি । বাপ্পি আর ওই মেয়েকে শাস্তি দিয়েই কেস ক্লোজ করা হয়েছে ।
এক রাতে জয় এমন সিধান্ত নেবে সেটা রাজীব কোনদিন ভাবতে পারেনি । এটুকু রাগ করার অধিকার কি ওর নেই ? বার বার এই প্রশ্ন নিজেকে করেছে । হ্যা রাজীব ভয় পেয়েছিলো , ভয় পাওয়া কি খুব অপরাধ ছিলো? নির্ঘুম রাতে এই চিন্তা করেই কাটিয়েছে।
কিন্তু জয় এসব কিছুই শুনতে রাজি ছিলো না । দুই রাত রাগ আর রিগ্রেটের সাথে লড়াইয়ের পর রাজীব জয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলো । নিজের অবস্থান পরিস্কার করার চেষ্টা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি ।
জয় তখন গলির সামনে একটা ঝুপড়ি দোকানে বসে এলাকার বন্ধুদের সাথে সিগারেট ফুকছিলো । রাজীব গিয়ে সামনে দাড়াতেই নিজের মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে অন্য একজনের সাথে কথা বলতে শুরু করে । সরাসরি এমন প্রত্যাখ্যান উপেক্ষা করে রাজীব বলেছিলো “ জয় একটু এদিকে আয় তোর সাথে কথা আছে”
জয় ওর দিকে না তাকিয়েই বলেছিলো “ যা বলার এইখানেই বল , এরা সবাই বন্ধু বান্ধব , ভাই ব্রাদার”
রাজীব কিছুক্ষন চুপ করে থাকে , বাকিদের মুখের দিকে তাকায় , এরা সবাই এলাকার ছেলে , ছোট বেলায় রাজীব আর জয় এদের সাথেইও খেলাধুলা করতো । রাজীব চলে যাওয়ার পর এদের সাথে তেমন ঘনিষ্ঠতা নেই । সবার চোখে মুখেই একটা অবাক হওয়ার স্পষ্ট ছাপ দেখা যাচ্ছে । এরা সবাই রাজীব আর জয়ের ঘনিষ্ঠতা রাখে ।
এদের মাঝে একটা ছেলে জয় কে বলেছিলো “ জয় যা একটু বাইরে গিয়ে কথা বইলা আয়” ছেলেটা রাজীবের থমথমে মুখ দেখে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলো যে ওদের মাঝে হয়তো কিছু ঝামেলা চলছে । তখন জয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে দাড়ায় , হাতের সিগারেট অন্য একজনের হাতে দিয়ে ঝুপড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসে । ওর প্রতিটা নড়াচড়ায় অনিচ্ছার স্পষ্ট ছাপ । রাজীব এসব বুঝতে পারেও উপেক্ষা করে যাচ্ছিলো ।
“ কি বলবি তারাতারি বল , আমার পার্টি অফিসে মিটিং আছে, প্রথম মীটিঙে দেরি করে যেতে চাই না ” জয় আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলেছিলো ।
রাজীব সময় নষ্ট করেনি , জয়ের এমন আচরন ওকেও কিছুটা রাগান্বিত করে তুলেছিলো , এখানে আসার আগে রাজীবের মনে যে অনুসুচনা ছিলো , ধিরে ধিরে সেটা কমে আসছিলো আর সেই খালি জায়গাটা রাগ দখল করে নিচ্ছিলো । জয়ের এমন আচরণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না । ভুল সুধু ও একা করেনি ।
“ এমন আচরণ করছিস ক্যান আমার সাথে” রাজীব সরাসরি আসল পয়েন্টে চলে আসে , এখানে আসার আগের মনভাব আর ওর মাঝে নেই । কেউ যদি ওকে এভোয়েড করতে চায় , ওর নিজেরো ঠ্যাকা পরেনি সেধে গিয়ে বন্ধুত্ব জিইয়ে রাখবে ।
“ কেমন আচরণ?” জয় এমন ভাব করেছিলো যেন খুব অবাক হওয়ার মত একটা কথা বলেছে রাজীব
“ তুই জানিস না?” রাজীব চোখ সরু করে তাকিয়েছিলো জয়ের দিকে
জয় হেসেছিলো , তাচ্ছিল্লের হাসি , তারপর হঠাত হাসি থামিয়ে সিরিয়ান টোনে বলেছিলো “ আমি সুধু একটা জিনিস ই জানি , যে বন্ধু মনে মনে বন্ধুত্বের জন্য রিগ্রেট রাখে , মনে এমন ভাব রাখে যে বন্ধুত্বের কারনে নিজের ক্ষতি করছে , সেই বন্ধুত্বের এক কানা কড়ি দাম নাই আমার কাছে”
কয়েক সেকেন্ডের জন্য থেমে গিয়েছিলো রাজীব , ভেবে পাচ্ছিলো না জয় কোথাহতে এই বিষয় গুলো খুজে পেলো। জয় যে ওকে উদ্দেশ্য করে এইসব বলছে , সেটা বুঝতে রাজীবের কোন সমস্যা হয়নি । আর এই মিথ্যা অভিযোগে রাজীবের মন ভাঙার সাথে সাথে রাগের পারদ ও উপরে উঠছিল । “ তুই খুব বন্ধুত্বের মানে বুঝিস? এসব কথা তোর মুখে মানায় না”
“ নাহ তোর মুখে খুব মানায় , বিপদ দেখে নীতিবাক্যের পেছনে লুকানো মহাবীর রাজীব তুই”
জয়ের এই ব্যঙ্গাত্মক কথা গুলো , রাজীবের অহংবোধে প্রচণ্ড ভাবে আঘাত করলো , “ তুই জীবনের কি জানিস , জীবন মানে তো তর কাছে খেলা , তোর কাছে তো এমন মনে হবেই , তুই মনে করিস এটাই জীবন , আরে নিজের বানানো ভিদিও গেম থেকে বেড়িয়ে দেখ জীবন কাকে বলে , দায়িত্ব কাকে বলে , সংগ্রাম কাকে বলে ত্যাগ কাকে বলে ”
“ কাকে তুই সত্যিকারের জীবন বলছিস , সব সময় তো কারো না কারো পেছনে লুকিয়ে থাকিস , বাহান খুজিস “ জয়ের চোখে মুখেও ক্রোধ ফুটে উঠতে শুরু করেছিলো , রাজীব কে আরো বেশি করে হার্ট করার জন্য এর পরে যা বলেছিলো , তা হয়তো জয় নিজেও বলতে চায়নি ।
“ আমার মা নেই , আমার আব্বু অসুস্থ , আমার ছোট বোনের প্রতি দায়িত্ব , এসব বলে বলে সব সময় নিজের খামতি লুকানোর চেষ্টা করিস , আর তুই এসেছিস আমাকে জীবন বোঝাতে , তোর মত ভিরু কাপুরুষের জন্য আমার মনে দয়া ছাড়া আর কিছুই নেই”
স্তব্দ হয়ে রাজীব কিছুক্ষন জয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো , এতটা পার্সোনাল হবে জয় সেটা রাজীব কোনদিন ভাবেও নি । এসব কথা জয়কে সবচেয়ে কাছের মানুষ ভেবেই শেয়ার করেছিলো রাজীব । আজ প্রয়োজনের সময় জয় ওর বিরুদ্ধে ব্যাবহার করলো ।
ধিরে ধিরে ওদের দুজনের মাঝে উতপ্ত বাক্য বিনিময় বাড়তে শুরু করে , সেটা দেখে ওদের বন্ধুরা দ্রুত ঝুপড়ি থেকে বেড়িয়ে ওদের আলাদা করে দেয় । দুজন কে দুদিকে নিয়ে গেলেও ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে , রাজীবের চোখে একি সাথে অভিমান আর প্রচণ্ড রাগ , আর জয়ের দৃষ্টিতে তাচ্ছিল্য , আর সেই তাচ্ছিল্যের আড়ালে কিছুটা অভিমান আর অনুসুচনা ।
এর পর থেকে রাজীব আর জয়ের কথা বলা বন্ধ , সামনা সামনি হয়ে গেলেও দুজন দুজন কে এড়িয়ে চলে । মাঝে মাঝে জয় নিজের স্বভাব মত রাজীব কে উদ্দেশ্য করে তির্যক কিছু মন্তব্য অথবা আন্ডিরেক্টলি কোন কাজ করে , যেমন সেদিন ক্যাম্পাসে একটি ছেলের কলার চেপে ধরেছিলো ।
রাজীব বুঝতে পারে এসব জয় ওকে ক্ষেপানোর জন্য করছে । রাজীব ভেবে পায় না কি করে এই অল্পদিনে ওর আজন্ম পরিচিত মানুষটি এভাবে বদলে গেলো । যদিও সেদিন রাজীব পন করেছিলো আর জয়ের সাথে ও নেই । কিন্তু এতদিনের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় মনে মনে একটা গোপন ব্যাথা বয়ে বেড়াচ্ছে ।
এতো এতো সৃতি জড়ানো সম্পর্ক তো এমনি এমনি শেষ করে দেয়া যায় না ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 135
Threads: 0
Likes Received: 70 in 37 posts
Likes Given: 164
Joined: May 2024
Reputation:
1
Porer update er opekkhay aci
•
Posts: 210
Threads: 3
Likes Received: 278 in 132 posts
Likes Given: 161
Joined: Jul 2025
Reputation:
40
কিছু সম্পর্কঃ ৬(ঘ)
আজকেও রাজীবের খুব ব্যস্ততা গিয়েছে , প্রতিটা ভার্সিটিতে চিঠি পাঠাতে হয়েছে । সেই সাথে অডিটরিয়াম বুকিং নিয়েও কিছু ঝামেলা ছিলো সেটা মেটাতে হয়েছে । তাই ভার্সিটি থেকে বাড়ি ফিরতে বেশ দেরি হয়ে গেছে । প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে , কিন্তু ঘরের ভেতর কোন লাইট জলতে না দেখে বেশ অবাক হয় রাজীব । রানী এসব ব্যাপারে খুব পাংচুয়াল । ওদের বড় ফুপু ( বাবার মামাতো বোন , রহিমের কোন ভাই বোন নেই) একবার বলেছিলো যে সন্ধ্যায় ঘরে বাতি না দিলে ঘরে অলক্ষ্মী হয় । রানী তখন ১৪-১৫ বছরের , সেই সুপারস্টিয়াস কথা মনে প্রানে বিশ্বাস করেছিলো । এবং আজো অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ।
রাজীব লিভিং রুমের লাইট জ্বালায় । কিচেনে লাইট জ্বালায় , কিচেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আজকে চা হয়নি । বিকেলে চা খাওয়া রানীর অনেক দিনের অভ্যাস । রাজীব ভাবে হয়তো বাইরে থেকে চা খেয়ে এসেছে । কিন্তু মনে একটা খটকা থেকেই যায় । ভাবে , আজকাল রানীর প্রতি তেমন একটা নজর দিচ্ছে না ও । তারপর আবার ভাবে , নজর দিয়েও কি হবে , আজকাল রানীকে আর ঠিক আগের মত বুঝতে পারে না । চেপে যাওয়া স্বভাবের রানী আগেও ছিলো , কিন্তু আজকাল ও কাছে লুকাচ্ছে ।
একটা নিঃশ্বাস ফেলে রাজীব , মনে মনে ভাবে রানী বড় হয়ে গেছে । এখন আর ওর পক্ষে হয়তো রানীর সব সমস্যা বোঝা সম্ভব নয় , আর রানী হয়তো সব ওকে বলতেও পারবে না । ক্লান্ত শরীরেই রাজীব রানীর ঘরের দিকে পা বাড়ায় । হয়তো ওর সব সমস্যা বুঝতে পারবে না , তাই বলে একদম একাও ছেড়ে দেয়া যাবে না , যতটুকু সম্ভব সাপোর্ট করতে হবে । এই সময় সাপোর্ট খুব দরকার , বাড়িতে একজন নারী অবিভাবক এর অভাব রাজীব আজকাল যেন আরো বেশি করে বুঝতে পারে । বড় আম্মু আছে , কিন্তু ওনার নিজের সংসার আছে , নিজের সমস্যা আছে ।
দরজা লাগানো , রাজীব দরজায় টোকা দেয় , একবার , দু বার , তিনবার । কিন্তু ভেতর থেকে কোন শব্দ আসে না । এবার রাজীবের চিন্তা হয় , শরীর খারাপ হলো কিনা ? রাজীব একটু ইতস্তত করে দরজা খুলে ফেলে , প্রথমে অল্প , ডাকে “রানী ঘুমাচ্ছিস নাকি?” কিন্তু উত্তর দেয় না রানী , বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে আছে ।
রাজীব দ্রুত ঘরের ভেতর ঢুকে যায় , ঘর ময় একটা অসুখ অসুখ গন্ধ , ফ্যান বন্ধ , গুমট গরম , জালানা গুলোও বন্ধ । রানী যেন অচেতনের মত ঘুমাচ্ছে , ওর মুখ লাল হয়ে আছে । রাজীব রানীর গালে হাত দেয় , হাত দিয়েই চমকে ওঠে । প্রচণ্ড জ্বর রানীর শরীরে , রাজীব রানীর কাঁধে হাত রেখে কয়েকবার ডাকে , “ এই রানী , এই রানী ওঠ” কিন্তু রানী ওঠে না , বিড়বিড় করে কি যেন সুধু বলছে , রাজীব নিজের কান সামনে নিয়ে শোনার চেষ্টা করে , সুধু শুনতে পায় “ তুমি আমার কাছে কি চাও ,কেনো আমার কাছে আসো , আবার নিজেই দূরে ঠেলে দাও”
রাজীবের বুঝতে বাকি থাকে না , বয় প্রবলেম , এই ব্যাপারটা থেকে রানী কে দূরে রাখতে খুব চেষ্টা করেছে , কারন রানী কে ও হাড়ে হাড়ে চেনে , এই ধরনের মেয়ে গুলোই বেশি দুঃখ পায় । কিন্তু এসব ভাবার সময় এখন নেই । রাজীব দ্রুত জানালা গুলো খুলে দেয় । ফ্যান অন করে ফুল স্পিডে । কুঁকড়ে ওঠে রানী , বিরক্তি নিয়ে বলে ‘ আম্মু ফ্যান বন্ধ করো’ কিন্তু রাজীব সেই কথায় পাত্তা দেয় না ।
একটা এ্যাম্বুলেন্স কল করে , কিন্তু রাস্তায় যে জ্যাম দেখে এসেছে , তাতে করে মিনিমাম আধ ঘণ্টা সময় লাগবে । এর পর রাজীব আয়শা কে কল করে । আর আয়শা আসার আগেই , তোয়ালে ভিজিয়ে রানীর মুখ হাত , হাটু পর্যন্ত পা, পেট পিঠ ভালো করে মুছে দেয় । এতে করে কিছুটা তাপ কমে আসে ।
আয়শা যখন অনেক কষ্টে দোতলায় উঠে আসে , তখন রাজীব রানীর জ্বর মেপে ফেলেছে । জ্বর একশো তিন ।
“ কিরে জ্বর কত?” আয়শা ঘরে ঢুকেই হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞাস করে ।
“ একশো তিন বড় আম্মু” রাজীব তখন রানীর মাথা কোলে নিয়ে বসে বসে মাথায় জল পট্টি দিচ্ছে ।
থাইরয়েডের প্রবলেম থাকায় , আয়শা খুব মুটিয়ে গেছে , তাই প্রায় ৯৬ কেজি ওজন নিয়ে নিজের বাড়ির সিঁড়ি , আর রানীদের বাড়ির দোতলায় উঠতে উঠতে খুব হাপিয়ে গেছে । তা ছাড়া হাটুতে হাড়ের ও কিছুটা খয় হয়ে গেছে । রানীর পাশে বসে কিছুক্ষন হাঁপাতে থাকে আয়শা । হাঁপাতে হাঁপাতে আয়শা রানীর পায়ে হাত দেয় ।
“ওরে বাবা জ্বর তো অনেক বেশি , ডাক্তার দেখিয়ে লাভ নেই হস্পিটাল নিয়ে চল” আয়শা কলাপে ভাজ ফেলে বলে ।
রাজীব জানায় ও এ্যাম্বুলেন্স কল করে ফেলেছে । আর এর পর ই জান্নাত এসে ঢোকে । এক মুহূর্তের জন্য রাজীবের সাথে চোখাচোখি হয় , জান্নাতের চোখে চিন্তার ছাপ ।
“আজকে ভার্সিটি ও যায়নি , গত দুই দিন ধরে অল্প অল্প জ্বর ছিলো বেশ ঠাণ্ডা ও ছিলো , জিজ্ঞাস করলে সুধু বলে ঔষধ খাচ্ছি” জান্নাত রাজীবের উদ্দেশ্য করে বলে ।
“ আর তুই আমার কাছে বলিস নি?” আয়শা খুব রাগান্বিত হয়ে জান্নাতের দিকে তাকায় , গত কয়েক দিন যাবত রানী ওই বাড়িতেও তেমন যায় না । আয়শা কয়েকবার জিজ্ঞাস করবে করবে করেও ভুলে গিয়েছিলো । বেশ গিল্টি ফিল হয় আয়শার, বান্ধবির মেয়ের ঠিক মত খবর না রাখতে পেরে , প্রায় অজ্ঞান লালচে মুখতি দিকে তাকিয়ে চোখে জল আসে ।
ধরা গলায় আয়শা রাজীব কে বলে “ যা তো বাবা একটু বাইরে যা , আমি আর জান্নাত মিলে ওর জামাকাপর চেঞ্জ করে দেই , ঘামে ভিজে চ্যাটচেটে হয়ে আছে”
রাজীব খেয়াল করে সত্যি ই আর ওর বিছানা আর শরীরের কাপড় থেকেই মুলত গন্ধটা আসছে , যেটাকে অসুখ অসুখ গন্ধ মনে হয়েছিলো । রাজি নিজের কোল থেকে রানী মাথা খুব যত্ন সহকারে নামিয়ে , বাইরে চলে যায় ।
নিজের উপর বেশ বিরক্ত , ছোট বোনের জীবনে কি চলছে না চলছে এসব কিছুই আজকাল খেয়াল রাখছে না ও। নিজেকে নিয়ে এতোই বিজি হয়ে আছে যে , যাকে নিজের জীবনের সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট মানুষ ভাবে তাকেও একা ছেড়ে দিয়েছে । এসব ভাবতে ভাবতে এক সময় সমস্ত রাগ গিয়ে পরে জয়ের উপর , নিজের ঘরের মানুষ নিয়ে না ভেবে ওই অকৃতজ্ঞ সেলফিশ মানুষ নিয়ে সময় নষ্ট করেছে ও । ওই সেলফিস ছেলের জন্য আর এক মুহূর্ত ও নষ্ট করবে না বলে প্রতিজ্ঞা করে রাজীব । এমন আরো অনেক মানুষ আছে যারা ওর সময়ের দাবীদার ।
এ্যাম্বুলেন্স চলে এলে রাজীব আর এম্বুলেন্সের সহকারি স্ট্রেচারে করে রানীকে এম্বুলেন্সে এনে তোলে । আয়শা ব্যেগে করে রানীর জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নিয়েছে । এ্যাম্বুলেন্স স্টার্ট হয় , সাইরেন বাজিয়ে ওদের বাড়ির গলি থেকে বেড়িয়ে যায় । গলি থেকে বের হওয়ার সময় ই জয়ের বাইক ক্রস করে এ্যাম্বুলেন্স । জয় প্রথমে খুব একটা মাথা ঘামায় না । ওর মন আজকে বেশ ফুরফুরে , আজকের পার্টি অফিসে মিটিঙয়ে সবাই বেশ বাহবা দিয়েছে , সেদিন জয়ের একক প্রচেষ্টায় প্রচুর ছেলে হয়েছিলো , আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছচ্ছে পার্টি সদস্য নয় এমন অনেক মেয়ে যোগ দিয়েছে । যা ওদের পার্টির ভাবমূর্তি কিছুটা বাড়িয়েছে।
*****
ডাক্তারদের প্রাথমিক ধাররনা হচ্ছে রানীর ইনিসিয়াল স্টেজের নিউমোনিয়া হয়েছে । ভর্তি রাখা হয়েছে , স্যাম্পল কালেকশন করা হয়েছে , আগামিকাল টেস্টের রেজাল্ট আসেব । জয়নাল আর রহিম দুজনেই খবর পেয়ে বাড়ি না ফিরে সোজা হস্পিটালে চলে এসেছে । দুই পরিবারের একজন বাদে সব সদস্য হসপিটালে উপস্থিত । সবার চোখে মুখে উদ্বেগ । রহিম কে দেখা যাচ্ছে নিজের উদ্বেগ চেপে রেখে আয়শাকে সান্তনা দিচ্ছে । আয়শা বেশ ভেঙ্গে পড়েছে , রানীর এই অবস্থার জন্য নিজেকে দোষারোপ করছে প্রতিনিয়ত । নার্সরা ভেবেই নিয়েছে আয়শা রানীর মা । অবশ্য কেউই নার্সের এই ভুল ধারনা ভেঙ্গে দেয়নি ।
অনেক রাত পর্যন্ত সবাই হসপিটালেই বসে থাকে , রাতের খাওয়া কারই হয়নি । এক পর্যায়ে রাজীব সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলে । কিন্তু কেউই নড়ার জন্য প্রস্তুত নয় । রাত প্রায় সারে এগারোটার দিকে রাজীব প্রায় জোর করেই সবাইকে বাড়িতে চলে যেতে বলে । এবার জয়নাল ও শ্বায় দেয় রাজীবের কথায় । রহিম কেও রাজি করানো হয় । রাজি হয়না সুধু আয়শা , সে কিছুতেই যাবে না । অনেক বলে কয়ে আয়শা কে বাড়ি যেতে বাধ্য করা হয় , জয়নাল আর রহিম আয়শা কে রাজি করায়। রাতের রেস্ট আয়শার জন্য খুব জরুরি ।
রাজীব থাকবে বলে ঠিক করে , কিন্তু আয়শা বলে “ তুই ছেলে মানুষ , রানীর জন্য একজন মেয়ে এটেন্ডেন্ট দরকার , নার্সরা কি সব ঠিক মত করবে , কত দরকার হতে পারে”
জান্নাত মায়ের ইচ্ছা বুঝতে পারে , আয়শা যে নিজে থেকে যাওয়ার জন্য বাহানা খুঁজছে এটা ওর কাছে স্পষ্ট । এখানকার নার্সরা সবাই হেল্পফুল আর প্রফেশনাল । কিন্তু আয়শা কে এ কথা বোঝানো যাবে না , তাই নিজে থেকে যাওয়ার সিধান্ত নেয় , প্রায় ধমকের সুরে বলে “ আম্মু তোমার এ নিয়ে ভাবতে হবে না , আমি থাকছি ,তুমি দয়া করে বাড়ি যাও , রানীর সিরিয়াস কিছু হয়নি , ঠিক হয়ে যাবে ও”
এবার আয়শা আর কোন বাহানা পায় না , যাওয়ার সময় রানীর কপালে একটা চুমু খায়, মাথার চুলে হাত বুলায় , সমস্ত মুখে হাত বুলায় । তারপর চোখের পানি মুছে রহিম আর জয়নালের সাথে বেড়িয়ে যায় ।
রয়ে যায় সুধু জান্নাত আর রাজীব । রানী ঘুমাচ্ছে , আপাতত কোন কাজ নেই , জান্নাত রানীর মাথার কাছে চেয়ারে বসে আছে আর রাজীব একটু দূরে সোফায় । কিছুক্ষন চুপ থেকে রাজীব বলল “ আমি তোর জন্য খাবার নিয়ে আসছি”
****
বাড়িতে এসে কাউকে না পেয়ে বেশ অবাক হয় জয় । বাড়ির সবাই এক সাথে কোথায় উধাও হয়ে গেলো ভেবে পায় না । তাই জান্নাত করে কল করে , কিন্তু জান্নাত ফোন রিসিভ করে না , এর পর জয় ওর আম্মুকে কল করে । কিন্তু সেটাও রিসিভ করে না। ওর আব্বু এই সময় বাড়ি থাকে না , এটাই স্বাভাবিক । তাই আর জয়নাল কে কল করে না জয় । ভাবে পর মা আর বোন হয়তো পাশে রানীদের বাড়ি গেছে । একা বাড়িতে থাকতে বেশিক্ষণ ভালো লাগে না , তাই আবার বেড়িয়ে পরে । গলির মাথায় চায়ের দোকানের আড্ডায় । আজকাল এলাকার লোকজন বেশ সমীহ করে জয় কে , এমনকি এই ওয়ার্ডের কমিশনার পর্যন্ত ওকে ডাক খোঁজ করে ।
চায়ের দোকানে কেউ না কেউ এলাকার থাকেই , তাই জয়ের আড্ডা জমাতে কষ্ট হয় না । আজ ও পেয়ে গেলো সম বয়সি দুজন কে । এরা আজকাল জয় কে ধরেছে এলাকায় একটা অফিস খোলার জন্য । এলাকার কমিশনারের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে , একটা রাজনৈতিক অফিস খুলে বসলে ভালো হয় , এইসব বুঝিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু জয় এসব কথায় কান দেয়ার মানুষ না , রাজনৈতিক দোকান খুলে বসার জন্য ও পলিটিক্স জয়েন করেনি । ওর লক্ষ্য আরো বড় , এসব অফিস করে টুপাইস কামানোর ধান্দা ওর নেই । তবে জয় , এলাকার ছেলেদের এসব বলে না , ওদের আশাহত করে লাভ নেই । ওদের সাথে তাল মিলিয়ে যায়।
এইসব নিয়েই কথা চলছিলো, হঠাত এর মাঝে একটা ছোট ভাই বলে ওঠে “ ভাই আজকে তো রাজীব ভাইদের বাড়িতে এ্যাম্বুলেন্স আসছিলো”
জয়ের বুক ধক করে ওঠে , প্রথমেই ওর মনে পরে ছোট আব্বু রহিমের কথা । বেশ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ । যদিও ব্যাস্ততার জন্য দেখতে যাওয়া হয়ে ওঠে না । তার উপর যোগ হয়েছে রাজীবের সাথে দ্বন্দ্ব , তাই আজকাল্ আরো বেশি যাওয়া হয় না। এবার বুঝতে পারে জয় কেনো ওদের বাড়িতে কেউ নেই ।
জয় বেশ ব্যাকুলতার সাথে জিজ্ঞাস করে “ কাকে নিয়ে গেছে জানিস কিছু”
কিন্তু কেউই কোন উত্তর দিতে পারলো না । জয় মোবাইল বের করে সবাই কে কল করতে থাকে । এবার কিন্তু কল ই ঢোকে না । কোন হসপিটালে নিয়ে গেছে সেটা জানতে পারলেও হতো । রেগে যায় জয় , ইচ্ছা হয় মোবাইল আছার মারে , কেউ ওকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলো না । ছোট আব্বু রহিমের মুখটা মনে পরলো ওর , সেই সাথে রানীর মুখটা , জয়ের বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো । এই বিপদের সময় রানীর পাশে থাকার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠলো ।
আর বেশিক্ষণ দোকানে বসলো না জয় । বাড়িতে ফিরে এলো , বার বার ট্রাই করে যাচ্ছে । সবাই কে কল করলো সুধু রাজীব বাদে সুধু মাত্র রানীর আর ওর আম্মুর মোবাইলে কল ঢুকল কিন্তু রিসিভ করলো না কেউ। জয় এক পর্যায়ে আবিস্কার করলো ওর আম্মুর মোবাইল বাড়িতেই রেখে গেছে । একবার চেয়েছিলো রাজীব কে কল করতে , কিন্তু শেষ পর্যন্ত করলো না । মনে মনে সুধু আস্ফালন ছাড়া আর কিছুই করার রইলো না জয়ের ।
রাত প্রায় সারে এগারোটার দিকে কল ঢুকল জয়নালের মোবাইলে । রিসিভ হতেই , জয় হরবরিয়ে বলতে শুরু করলো “আব্বু , ছোট আব্বু কোন হসপিটালে , তোমারা আমাকে খবর দিলে না কেনো ? এখন কি অবস্থা , আমাকে বলো আমি আসছি”
“ আরে থাম থাম , তোর ছোট আব্বুর কিছু হয়নি , রানীর জ্বর হয়েছে , নিউমোনিয়া ও মনে হয় আছে “ জয়নাল ছেলেকে থামিয়ে দিয়ে বলল ।
এতক্ষণ ব্যাকুল হয়ে থাকা মন আরো ব্যাকুল হয়ে উঠলো , “ আব্বু হসপিটালের নাম বলো , আমি আসছি” জয় গম্ভির গলায় বলল ।
“ তার আর দরকার নেই , আমরা বাড়ি চলে আসতেসি , কালকে সকালে যাবি “ জয়নাল স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল
জয়ের ইচ্ছে হচ্ছিলো চেঁচিয়ে বলে যে ও এখনি যেতে চায় , কিন্তু বলতে পারে না , ফ্রাস্টেসনে হাত মুঠো করে টেবিলের উপর একটা ঘুষি দেয় । চোয়াল শক্ত করে রাখে । নিজের এই অপারপগতায় নিজের উপর প্রচণ্ড রেগে যায় । কেনো ও বলতে পারলো না ওর যাওয়া কতটা জরুরি । কেনো ও বলতে পারলো না , রানীকে না দেখে ওর ঘুম আসবে না । কেনো বলতে পারলো না , রানী ওর জন্য কতটা ইম্পরট্যান্ট।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
|