Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: কালো মন্ত্র, নিশীথ রাতের বিভীষিকা
নিশুতি রাতের অন্ধকার
পার্টি শেষ হতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। অতিথিরা বিদায় নেওয়ার পর রঞ্জিত এবং মীনা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।
“আজকের রাতটা সত্যিই ভালো কাটল,” রঞ্জিত বলল, হাই তুলতে তুলতে।
মীনা হালকা হাসল, কিন্তু তার মনে একটা অস্বস্তি কাজ করছিল।
আকরাম আজ সারা রাত ধরে তার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে ছিল, যেন সে মীনাকে গিলে খাবে।
“এই বৃদ্ধের মধ্যে কী যেন একটা আছে… যা স্বাভাবিক নয়,” মীনা নিজেই বুঝতে পারছিল।
রঞ্জিত তখনই বলে উঠল, “আমি ঘুমিয়ে পড়ছি, কাল অফিস আছে।”
শুভও নিজের ঘরে চলে গেল।
বাড়ি ধীরে ধীরে নীরব হয়ে এলো, শুধু নাইট ল্যাম্পের ম্লান আলো আর দূরের পেঁচার ডাক রাতকে আরও গা ছমছমে করে তুলছিল।
কিন্তু শুভ জানত, এই রাতে কিছু একটা ঘটতে চলেছে!
আকরামের অদ্ভুত আচরণ
শুভের ঘুম আসছিল না।
সে জানালার পাশের খাটে শুয়ে ছিল, কিন্তু কেমন যেন অস্থির লাগছিল।
তখনই সে লক্ষ্য করল—আকরাম তার নিজের ঘরে নেই!
শুভের কৌতূহল বাড়তে লাগল। সে ধীরে ধীরে বিছানা থেকে উঠে দরজার ফাঁক দিয়ে তাকাল।
আকরামের ঘরের ভেতর হালকা কমলা আলো জ্বলছে।
শুভ নিঃশব্দে দরজার কাছে গিয়ে উঁকি দিল।
কালোজাদুর অভিশাপ
শুভ যা দেখল, তাতে তার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল!
আকরাম ঘরের মাঝখানে বসে আছে, তার সামনে একটা লাল রঙের কাপড় পাতা।
সে নিজের হাতে কিছু একটা লিখছে—সাদা রঙের এক টুকরো কাগজে, কালো কালি দিয়ে।
তার চারপাশে ধূপ জ্বলছে, আর সে ফিসফিস করে কিছু বলছে।
শুভ মনোযোগ দিয়ে শুনতে চেষ্টা করল।
“ওই নারী আমার হবে… সে আসবে… সে বাধ্য হবে…”
শুভ শ্বাস বন্ধ করে শুনতে লাগল।
“মীনা… মীনা… মীনা… আমার হয়ে যা… আমার হয়ে যা…”
আকরাম এই কথা বলতে বলতে কাগজের চারপাশে কিছু লাল সুতো পেঁচিয়ে দিল।
তারপর, সে কাগজটাকে একটা ছোট চামড়ার থলির মধ্যে ঢুকিয়ে দিল।
তাবিজের শক্তি
শুভ স্পষ্ট বুঝতে পারল—এটা কোনো সাধারণ কিছু নয়, এটা একটা কালোজাদুর তাবিজ!
এই তাবিজ যার কাছে থাকবে, সে ধীরে ধীরে আকরামের বশে চলে যাবে!
শুভের হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল।
এই তাবিজ তার মায়ের জন্য!
আকরাম মীনাকে নিজের করায়ত্ত করার জন্য কালোজাদুর মাধ্যমে তাকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে!
ভয়ংকর মুহূর্ত
ঠিক তখনই আকরামের চোখ দরজার দিকে গেল!
শুভ দ্রুত সরে গেল, কিন্তু একটা শব্দ হয়ে গেল—দরজার কাঠে হালকা আওয়াজ!
আকরামের চোখ সরু হয়ে এল।
সে বুঝতে পারল, কেউ একজন তাকে দেখেছে।
সে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল, তার কঙ্কালের মতো হাত দিয়ে মোমবাতির আলো ঢেকে দিল।
“কে আছে?” তার গলা গভীর এবং শীতল হয়ে উঠল।
শুভ দ্রুত নিজের ঘরে ফিরে এসে দরজা আটকে দিল।
তার হৃদস্পন্দন এত জোরে চলছিল যে মনে হচ্ছিল, সে যে লুকিয়ে আছে, সেটা বাইরে থেকে শুনতে পাওয়া যাবে!
আকরামের ইঙ্গিত
কিছুক্ষণ পর সব আবার নিরব হয়ে গেল।
শুভ কিছুক্ষণ কিছুই শুনতে পেল না।
কিন্তু তখনই, তার দরজার বাইরে পায়ের শব্দ শোনা গেল!
কেউ ধীরে ধীরে এসে দাঁড়িয়েছে তার দরজার সামনে।
হঠাৎই, একটা খুব হালকা কিন্তু ভয়ংকর গলা ফিসফিস করে বলল—
“ঘুমিয়ে পড়ো, শুভ… বেশি কিছু জানার চেষ্টা করো না…”
শুভের পুরো শরীর শক্ত হয়ে গেল!
এই গলা আকরামের!
আকরাম বুঝে গেছে যে শুভ তাকে দেখে ফেলেছে!
এখন কী হবে? শুভ কি বাবাকে বলবে? কিন্তু রঞ্জিত তো এসব বিশ্বাস করবে না!
আর মীনা? সে কি বুঝতে পারবে, যে একটা ভয়ংকর অশুভ শক্তি তাকে নিজের দিকে টেনে নিচ্ছে?
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: আকরামের আসল রূপ
ভোরের আতঙ্ক
শুভর সারা রাত ঘুম আসেনি।
আকরামের ফিসফিস করে দেওয়া সতর্কবার্তা তার কানে বাজছিল—
“ঘুমিয়ে পড়ো, শুভ… বেশি কিছু জানার চেষ্টা করো না…”
শুভ জানত, সে যদি এখন চুপ করে থাকে, তবে এই বাড়িতে এমন কিছু ঘটবে যা তারা কেউই ঠেকাতে পারবে না।
কিন্তু সে কিছু করতে পারছে না!
সকাল হতে না হতেই তার শরীর কেমন যেন দুর্বল লাগছিল।
আকরামের পরিবর্তন
সকালবেলা, রঞ্জিত অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছিল।
মীনা রান্নাঘরে নাস্তা বানাচ্ছিল।
শুভ তখনও ঘুম থেকে পুরোপুরি ওঠেনি, মাথাটা ভারী লাগছিল।
তখনই সে খেয়াল করল—আকরাম উঠোনের এক কোণে বসে আছে, কিন্তু তার চেহারা স্বাভাবিক নেই!
তার চোখ দুটো ভয়ানক লাল, যেন রক্তে ভেজা!
তার মুখের চারপাশে একটা বিকৃত হাসি, আর মাথায় চাপা একটা পুরোনো . টুপি!
শুভর বুক ধক করে উঠল!
এটা কি সেই আকরাম?
এই আকরাম তো দেখতে মানুষের মতো নয়!
তার শরীর কেমন যেন শিথিল হয়ে আছে, হাত-পা যেন লম্বা হয়ে গেছে।
সে শুভর দিকে তাকিয়ে হাসল—একটা বিভীষিকাময়, অশুভ হাসি!
শুভর শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসছিল!
সে কিছু বলার চেষ্টা করল, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরোল না।
তখনই আকরাম ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে এল।
তার পা মাটিতে পড়ছিল না!
সে যেন হাওয়ায় ভাসছিল!
শুভ আতঙ্কে বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠল, কিন্তু তার শরীর কাঁপছিল।
ততক্ষণে আকরাম তার একদম সামনে এসে গেছে।
সে নিচু গলায় বলল—
“তুই বেশি জেনে গেছিস, শুভ…”
শুভর শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল!
আকরাম তখন তার হাতটা বাড়িয়ে দিল শুভর দিকে।
তার হাতের আঙুলগুলো ছিল লম্বা, কালো আর বিকৃত!
তার আঙুলের নখগুলো ধারালো, ঠিক যেন জানোয়ারের মতো!
শুভ আর সহ্য করতে পারল না।
তার মনে হলো, সে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে!
সে চিৎকার করার চেষ্টা করল, কিন্তু গলা দিয়ে শব্দ বেরোল না!
তারপর, আকরাম কিছু একটা ফিসফিস করে পড়ল—
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ…”
শুভর পুরো শরীর শিউরে উঠল।
তার চোখের সামনে সবকিছু কালো হয়ে গেল।
তারপর…
অন্ধকার…
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: শুভর অসুস্থতা ও মীনার সন্দেহ
শুভর দুর্বলতা
শুভর জ্ঞান ফেরার পর থেকেই তার শরীর ভীষণ দুর্বল লাগছিল।
সে বিছানায় শুয়ে থাকলেও মনে হচ্ছিল, যেন তার শরীরটা কেউ শক্ত করে ধরে রেখেছে।
সে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না।
তার গলা শুকিয়ে গেছে, চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা লাগছে।
মা যখন মাথায় হাত রাখল, সে বুঝল—তার শরীর খুব গরম!
মীনা চিন্তিত হয়ে বলল,
“শুভ, কিরে? শরীর এত গরম কেন? ঠিক করে শুই!”
শুভ কাঁপা গলায় বলল,
“মা… আমি ভালো লাগছে না…”
সে কিছু বলতে গিয়েও আর বলতে পারল না।
কিন্তু তার মনে হচ্ছিল, এই অসুস্থতা সাধারণ কোনো জ্বর নয়!
মীনার সন্দেহ
সারাদিন শুভ বিছানায় শুয়ে রইল, একটুও উঠতে পারল না।
মীনা তার ছেলেকে দেখছিল আর মনে মনে অস্থির হয়ে পড়ছিল।
রঞ্জিত অফিস থেকে ফিরতেই সে উদ্বিগ্ন গলায় বলল,
“শুভর শরীর ভালো নেই, আমি ভাবছি ডাক্তার ডাকব।”
রঞ্জিত বলল,
“আচ্ছা, চিন্তা করো না। আমি এখনই ডাক্তার ডেকে আনছি।”
কিন্তু মীনার মনে হচ্ছিল, শুভের এই অসুস্থতার পেছনে অন্য কিছু আছে!
তার মনে পড়ল, কয়েকদিন ধরে শুভ খুব চুপচাপ হয়ে গেছে।
আকরামের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে গেছে।
আর আগের দিন রাতে সে বেশ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল, যেন কোনো ভয় পেয়েছে!
মীনা সন্দেহের চোখে উঠোনের দিকে তাকাল।
সেখানে আকরাম দাঁড়িয়ে ছিল—নির্বিকার, কিন্তু তার ঠোঁটে একটা অদ্ভুত হাসি।
ডাক্তার এল, কিন্তু…
রঞ্জিত এক পরিচিত ডাক্তারকে ডাকল, যিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলেন।
ডাক্তার শুভর নাড়ি পরীক্ষা করলেন, শরীরের তাপমাত্রা দেখলেন।
তারপর বললেন,
“উত্তেজনায় জ্বর এসেছে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাধারণ জ্বর। এই ওষুধগুলো দাও, দুই-তিন দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।”
মীনার বুক ধক করে উঠল।
সাধারণ জ্বর?
কিন্তু শুভ তো ভয়ংকর কিছু দেখেছিল, সে কোনো সাধারণ অসুস্থতার মধ্যে নেই!
ডাক্তার চলে যাওয়ার পর মীনা শুভর পাশে বসল।
তার ছেলের চোখ বন্ধ, কিন্তু শরীরটা অদ্ভুতভাবে শক্ত হয়ে আছে, যেন কিছু একটা তাকে চেপে ধরে রেখেছে!
সে কপালে হাত রাখল, শুভ কেঁপে উঠল।
তার ঠোঁট কাঁপতে লাগল, যেন কিছু বলতে চাইছে।
মীনা কান এগিয়ে নিল।
শুভ ধীরে ধীরে ফিসফিস করে বলল,
“…মা… আকরাম… একটা… দানব…”
মীনার গা শিউরে উঠল!
তারপরই শুভ চুপ করে গেল, গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
আকরামের অদ্ভুত আচরণ
সেই রাতেই মীনা দেখল, আকরাম উঠোনে কিছু একটা করছে।
সে একা দাঁড়িয়ে, মুখে ফিসফিস করে কিছু বলছে।
তার দুই হাতে কিছু কালো সুতো আর ছোট ছোট ধাতব টুকরো!
মীনা আতঙ্কে বুঝতে পারল—এটা কোনো সাধারণ কাজ নয়!
সে কিছু একটা করছে, যা এই বাড়ির জন্য ভালো হবে না।
আর তার লক্ষ্য হয়তো শুভই!
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: মিনার দুর্বল মুহূর্ত ও আকরামের চালাকি
শুভর ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়া
একদিন কেটে গেছে। শুভর শরীর কিছুটা ভালো হলেও, সে এখনো পুরোপুরি উঠে বসতে পারছে না।
মীনা সারাদিন তার পাশে বসে যত্ন নিচ্ছিল—ওষুধ দিচ্ছিল, মাথায় জলপট্টি দিচ্ছিল।
তার মনে হচ্ছিল, শুভ ভয় পেয়েছে… শুধু অসুস্থ হয়নি, বরং তার মনের মধ্যেও একটা আতঙ্ক দানা বাঁধছে।
মাঝেমধ্যে শুভ যেন কিছু বলতে চাইছে, কিন্তু পারছে না।
মীনা তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“শুভ, কিরে? ভয় লাগছে?”
শুভ শুধু চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়ল।
সে কথা বলতে চাইছিল, কিন্তু জানত—মা বুঝবে না।
মা জানে না, এই বাড়ির অন্ধকারের মধ্যে কে আছে… কী আছে…
আকরামের প্রবেশ
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই আকরাম আস্তে আস্তে শুভর ঘরে ঢুকল।
তার হাতে ছিল একটা তাবিজ—কালো সুতো দিয়ে বাঁধা ছোট একটা ধাতব বস্তু।
মীনা তাকিয়ে থাকল।
আকরাম একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,
“বউমা, তোমার ছেলেকে খুব কষ্ট করতে দেখছি… কিন্তু তুমি জানো, একটা উপায় আছে!”
মীনা কৌতূহলী হয়ে বলল,
“উপায়? কেমন উপায়?”
আকরাম ধীরে ধীরে কাছে এসে বলল,
“এটা আমাদের ধর্মের একটা শক্তিশালী তাবিজ। এটা যদি মা হয়ে তুমি পড়ো, তাহলে ছেলের সব অশুভ শক্তি দূর হয়ে যাবে।”
সে তাবিজটা মিনার হাতে দিল।
মীনা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল।
তারপর বলল,
“কিন্তু… এটা কি আসলেই কাজে দেবে?”
আকরাম আত্মবিশ্বাসের হাসি দিয়ে বলল,
“অবশ্যই দেবে। বিশ্বাস করো, মা যদি এই তাবিজ পড়ে, তবে ছেলের কোনো ক্ষতি হবে না।”
শুভর আতঙ্ক
শুভ শুয়ে শুয়ে সব শুনছিল।
সে চোখ খুলল না, কিন্তু তার শরীর জমে গেল।
সে চিনতে পারল… এই তাবিজটা!
ঠিক এই তাবিজটাই সে আকরামকে বানাতে দেখেছিল!
সেই রাতে, যখন আকরাম তার ঘরে মন্ত্র পড়ছিল, যখন সে কালোজাদুর শক্তি বাড়াচ্ছিল—ঠিক তখনই এই তাবিজ বানানো হয়েছিল!
মা যদি এটা পরে… তাহলে কিছু একটা ভয়ংকর ঘটবে!
শুভ উঠে বসার চেষ্টা করল, কিন্তু তার শরীর এতটাই দুর্বল ছিল যে সে কিছুই করতে পারল না।
সে অসহায়ের মতো দেখল, মা ধীরে ধীরে তাবিজটা হাতে নিল।
মিনার সিদ্ধান্ত
মীনা তাবিজটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকল।
তার মনের মধ্যে দ্বিধা কাজ করছিল।
একদিকে আকরাম বলছে, এটা শুভকে রক্ষা করবে…
কিন্তু অন্যদিকে, শুভর শরীরের ভাষা বলছে কিছু একটা ঠিক নেই!
সে শুভর দিকে তাকাল—তার ছেলে কেমন যেন আতঙ্কিত দেখাচ্ছে!
শুভর চোখে অদ্ভুত একটা ভয়ের ছাপ!
মীনা তার কপালে হাত রাখল, আস্তে করে বলল,
“শুভ… এটা কি পরব?”
শুভ আস্তে আস্তে মাথা নাড়িয়ে ‘না’ বলার চেষ্টা করল, কিন্তু দুর্বলতার কারণে শব্দ বেরোল না।
আকরামের চোখের দৃষ্টি
আকরাম তখনো দাঁড়িয়ে ছিল, তার চোখে এক অদ্ভুত উজ্জ্বলতা।
সে জানত, যদি মীনা এটা পরে, তবে সে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে তার উদ্দেশ্যের দিকে!
তার ভেতরে এক গোপন উত্তেজনা কাজ করছিল।
কিন্তু শুভ জানত… যদি মা এটা পরে, তাহলে তাদের নিয়ন্ত্রণের সব সীমা অতিক্রম করবে আকরাম!
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: মিনার আত্মসমর্পণ
তাবিজের স্পর্শ
মীনা তাবিজটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল।
তার ভেতরে এক অদ্ভুত দ্বিধা চলছিল।
এটা কি সত্যিই শুভর জন্য ভালো হবে? নাকি… কিছু একটা ঠিক নয়?
শুভ তখনো বিছানায় শুয়ে ছিল, নিঃশব্দে দেখছিল মায়ের প্রতিটি নড়াচড়া।
তার শরীর কাঁপছিল—একটা ভীষণ ভয় তাকে গ্রাস করে ফেলছিল।
কিন্তু দুর্বল শরীরে সে কিছু করতে পারছিল না।
মীনা ধীরে ধীরে তাবিজটা হাতে ধরল।
ঠিক সেই মুহূর্তে, তার শরীর কেঁপে উঠল!
একটা অদ্ভুত অনুভূতি… যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল তার সারা শরীরে!
সে সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করল, শরীরটা এক মুহূর্তের জন্য থরথর করে কাঁপল।
শুভ হতবাক হয়ে দেখল…
শুভর দুঃস্বপ্ন সত্যি হলো
মীনা এবার শুভকে বুকে টেনে নিল, যেন তাকে সুরক্ষা দেবে।
তারপর আস্তে আস্তে, নিঃশ্বাস বন্ধ করে, তাবিজটা গলায় পরল।
সঙ্গে সঙ্গে…
ঘরের বাতাস বদলে গেল!
একটা অদ্ভুত, গা ছমছমে ঠান্ডা হাওয়া ঘরের মধ্যে বয়ে গেল।
মীনার চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল।
তার সারা শরীর কেঁপে উঠল… যেন সে তার আত্মাকে হারিয়ে ফেলছে!
আকরামের বিকৃত হাসি
শুভ দুঃস্বপ্নের মতো তাকিয়ে দেখল, আকরামের ঠোঁটের কোণে এক ভয়ঙ্কর হাসি ফুটে উঠেছে!
একটা বিকৃত, নোংরা, অশুভ হাসি।
তার চোখের দৃষ্টি আর মানুষের মতো ছিল না—সেখানে অন্ধকারের ছায়া!
সে এক পা এক পা করে এগিয়ে এলো।
তার চোখ মীনাকে ঘিরে ধরেছে, যেন সে সম্পূর্ণ তার নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে!
শুভ এক মুহূর্তের জন্য অনুভব করল… সব শেষ হয়ে গেল!
মীনার পরিবর্তন
মীনা ধীরে ধীরে চোখ খুলল।
তার চোখে এক অদ্ভুত শূন্য দৃষ্টি!
সে শুভকে শক্ত করে ধরে আছে, কিন্তু তার শরীর অবশ হয়ে আসছে।
তার মুখ থেকে একটা হালকা শ্বাস বের হলো, যেন সে নিজের ভেতর থেকে কিছু হারিয়ে ফেলেছে।
শুভ বুঝল… মা এখন আর আগের মতো নেই!
শুভর অসহায়তা
শুভ বুঝতে পারছিল সবকিছু, কিন্তু সে কিছু করতে পারছিল না।
তার শরীর শক্ত হয়ে গেছে, মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের হচ্ছে না!
আকরাম এবার সামনে এসে মিনার দিকে তাকিয়ে বলল,
“বউমা, কেমন লাগছে?”
মীনা কিছু বলল না, শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল।
তার চোখের ভেতর… একটা ভয়ংকর অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছে!
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: মিনার আত্মসমর্পণ
আকরামের আদেশ
ঘরটা নিস্তব্ধ।
শুভ বিছানায় শুয়ে আছে, শরীর দুর্বল, কিন্তু চোখের সামনে যা ঘটছে, তা দেখে তার রক্ত হিম হয়ে আসছে।
আকরাম এক ধাপ এগিয়ে এলো, তার চোখে এক অদ্ভুত জ্বলজলে দৃষ্টি।
সে ধীরে ধীরে বলল,
“উঠে দাঁড়াও।”
মীনার শরীর কেঁপে উঠল।
তার মুখের অভিব্যক্তি পাল্টে গেল—চোখে এক শূন্য দৃষ্টি।
তারপর…
সে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল!
একটা পুতুলের মতো…
শুভর বুক ধকধক করতে লাগল।
মা যেন নিজের ইচ্ছায় নয়, কাউকে অনুসরণ করে চলছে!
তার শরীরের প্রতিটি নড়াচড়া অস্বাভাবিক, কেমন যেন একটা পুতুলের মতো।
মাথাটা হালকা কাত হয়ে আছে, হাত দুটো শরীরের দুপাশে ঝুলে আছে, চোখের দৃষ্টি শূন্য।
আকরামের বিকৃত উল্লাস
আকরাম এবার হো হো করে বিকৃত হাসিতে ফেটে পড়ল!
“হা হা হা হা…!!!”
তার হাসির আওয়াজ পুরো বাড়ি জাগিয়ে তুলল!
শুভ ভয়ংকর আতঙ্কে গুটিয়ে গেল।
তার মা… তার প্রিয় মা… এখন আকরামের হাতের পুতুল হয়ে গেছে!
বাড়ির পরিবেশ বদলে গেল
আকরামের বিকৃত উল্লাসের সাথে সাথেই মনে হলো, বাড়ির বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
দেয়ালগুলো যেন কালো হয়ে আসছে, বাতাসে এক অদ্ভুত গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
মিনার শরীরটা একবার ঝাঁকি খেল, তারপর সে এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
শুভর অসহায়তা
শুভ কিছু বলতে চাইল, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না।
তার শরীর অবশ হয়ে আসছে।
সে অনুভব করল, একটা কালো শক্তি তাকে চেপে ধরেছে, যেন সে কিছুতেই এখান থেকে পালাতে পারবে না!
আকরামের বিকৃত নজর
আকরাম এবার চারপাশে একবার তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল,
“বউমা, এখন থেকে তুমি আমার কথাই শুনবে… বুঝলে?”
মীনার ঠোঁট একবার কেঁপে উঠল, কিন্তু সে কিছু বলল না।
তার চোখ একদম ফাঁকা, যেন সে নিজের মধ্যে আর নেই!
আকরাম এবার গভীর দৃষ্টিতে তাকাল মিনার শরীরের দিকে।
তার চোখে একটা নোংরা, বিকৃত লালসার ছাপ!
সে মীনাকে সম্পূর্ণ তার আয়ত্তে এনেছে!
শুভর চোখের সামনে সর্বনাশ
শুভ দেখছিল, তার মা দাঁড়িয়ে আছে এক জায়গায়, আর আকরাম তাকে চারদিক থেকে ঘুরে ঘুরে দেখছে, বিকৃত দৃষ্টিতে।
তার মাকে…
তারই চোখের সামনে…
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: আকরামের অদৃশ্য বাঁধন
আকরামের বিদায়, কিন্তু…
আকরাম ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো। শুভর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল।
তার ঠোঁটের কোণে এক বিকৃত হাসি, চোখজোড়া রক্তলাল।
সে মীনার কপালে আঙুল ছুঁইয়ে মৃদু স্বরে বলল,
“ফিরে যাও… এখনো সময় আসেনি… হে হে হে…”
মীনার শরীর আবারও একবার ঝাঁকি খেল।
তার চোখ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলো, শরীর শক্ত হয়ে এল।
সে যেন এক মুহূর্তের জন্য বুঝতে পারল না, সে কী করছিল, কোথায় ছিল!
মীনার বিভ্রান্তি
সে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“শুভ… আমি… আমি তো…”
কিন্তু কিছুই মনে পড়ছিল না!
শুভর আতঙ্ক
শুভ ততক্ষণে চেয়ারের এক কোণে গুটিয়ে গেছে, শরীর অবশ লাগছে।
সে এখনো নিজের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা ভুলতে পারছে না।
আকরাম তাদের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ বিকৃত হাসি দিল।
তারপর ধীরে ধীরে দরজা খুলে বাইরে চলে গেল।
গভীর রাতের নিস্তব্ধতায় শুধু তার হাসির প্রতিধ্বনি শুনতে পাওয়া গেল…
“হে হে হে…!”
তিন মিনিট নিস্তব্ধতা…
মীনা পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিল, শুভ বিছানায় ঠায় বসে ছিল।
এই তিন মিনিট যেন তাদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর মুহূর্ত!
মীনার অস্বস্তি
তারপর ধীরে ধীরে মীনা শুভর দিকে তাকাল।
“শুভ… কিছু একটা হচ্ছে… আমি কেমন যেন লাগছে… মনে হচ্ছে… কিছু একটা আমার মাথার মধ্যে ঢুকে আছে…”
তার কপাল ঘামে ভিজে উঠল।
তার মনে হচ্ছিল, কিছু একটা তাকে নিয়ন্ত্রণ করছিল, কিন্তু ঠিক কী, তা সে বুঝতে পারছে না!
শুভ জানে… কিন্তু বলতে পারছে না!
শুভ জানে…
সে জানে তার মা আস্তে আস্তে আকরামের আয়ত্তে চলে যাচ্ছে!
কিন্তু সে কিছু বলার শক্তি পাচ্ছে না।
কোথাও কেউ নেই, শুধু সেই হাসির প্রতিধ্বনি…
বাড়ির অন্ধকার করিডোরে যেন এখনো সেই বিকৃত হাসির প্রতিধ্বনি বাজছে…
“হে হে হে…!”
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: রাতের অভিশাপ
রাতের খাওয়া: স্বাভাবিকতার ছদ্মবেশ
রঞ্জিত অফিস থেকে ফিরে আসার পর সবকিছু যেন স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল।
শুভ ধীরে ধীরে খাওয়ার টেবিলে এসে বসল। তার শরীর এখনো দুর্বল, কিন্তু ক্ষুধা পেয়েছে।
মীনা রান্নাঘর থেকে খাবার পরিবেশন করছিল।
আকরাম একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল, তার চোখ সবকিছুর উপর নজর রাখছিল।
আকরামের ছলনা
শুভ খেয়াল করল, আকরাম একদৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
তার ঠোঁট নড়ছে, কিন্তু কোনো শব্দ শোনা যাচ্ছে না।
সে আবার কিছু একটা মন্ত্র বলছে!
মীনার আচরণ বদলে গেল!
মন্ত্র উচ্চারণ শেষ হতেই মীনার শরীর কেঁপে উঠল।
তার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এল, সে কয়েক সেকেন্ড স্থির দাঁড়িয়ে রইল।
তারপর ধীরে ধীরে মুখে একটা অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠল…
আকরামের আয়ত্তে…
মীনা এবার খাবার রেখে ধীরে ধীরে রঞ্জিতের দিকে তাকাল…
তার চোখের চাহনি বদলে গেছে!
কিন্তু আকরামের দিকে তাকানোর পর…
সে যেন বদলে গেল!
বিকৃত ভালোবাসার স্পর্শ…
মীনার শরীরের ভাষা পাল্টে গেল।
সে ধীরে ধীরে আকরামের দিকে এগিয়ে গেল, তার চোখে এক অদ্ভুত উষ্ণতা ফুটে উঠল!
তার শরীর আকরামের দিকে ঝুঁকে পড়ল, যেন অনেকদিনের না দেখা প্রেমিক-প্রেমিকা একে অপরকে চায়!
তার মুখে একটা হাসি, যা কখনোই স্বামী বা ছেলের সামনে আসা উচিত নয়!
রঞ্জিত কিছু বুঝতে পারল না!
রঞ্জিত তখনো খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিল, সে কিছুই খেয়াল করেনি!
কিন্তু শুভ দেখল তার মা কীভাবে আকরামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে!
শুভর আতঙ্ক!
শুভর সারা শরীর শিউরে উঠল!
তার মনে হলো, এটা তার মা নয়… এটা যেন অন্য কেউ!
সে বুঝতে পারল, তার মা স্বাভাবিক নেই!
লজ্জা, ভয়, আর অসহায়ত্ব…
শুভর লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল!
তার চোখ দিয়ে পানি চলে আসছিল!
কিন্তু সে কিছু করতে পারছিল না!
আকরামের বিজয়ের হাসি…
আকরাম শুভর দিকে তাকিয়ে একটা বিকৃত হাসি দিল…
সে যেন জানে, শুভ এটা দেখতে বাধ্য…!
এটা কীভাবে থামবে?
রঞ্জিত কি কিছু বুঝতে পারবে?
শুভ কি কোনো উপায় বের করতে পারবে?
আকরামের কালো জাদুর শক্তি কি আরও ভয়ংকর কিছু করবে?
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: রাতের ছদ্মবেশ
খাওয়ার টেবিলে ছদ্মনাটক
রঞ্জিত ব্যস্ত ছিল খাবারে, তার নজর প্লেটের দিকেই ছিল।
শুভ ধীরে ধীরে খেতে খেতে এক চোখে বাবাকে দেখছিল, আর এক চোখে মাকে… আর আকরামকে!
আকরামের অশুভ উপস্থিতি
রঞ্জিতের ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিল আকরাম।
আর মীনা!
সে আকরামের ঘনিষ্ঠ স্পর্শে দাঁড়িয়ে আছে!
আকরামের হাত মীনার কোমরে ছিল, তার শরীর মীনাকে শক্ত করে ধরে রেখেছিল!
মীনার চোখ দুটো আধো ঘুমে ঢুলছিল, তার মুখে একটা অদ্ভুত নেশাগ্রস্ত হাসি।
শুভর আতঙ্ক!
শুভর হাত থেকে প্রায় চামচ পড়ে যাচ্ছিল!
সে কিছু বলতে পারছিল না, কিছু করতে পারছিল না!
শুধু দেখছিল…
তার বাবার ঠিক পিছনে তার মা একটা পরপুরুষের বাহুতে আবদ্ধ…!
এক ভয়ংকর মুহূর্ত…
যদি রঞ্জিত হঠাৎ পিছনে ফিরে তাকায়, তাহলে কি দেখতে পাবে?
আকরামের হাত এখনো মীনার কোমরে…
মীনা ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করে ফেলছে, যেন তার জ্ঞান লোপ পাচ্ছে, অথবা সে এই ছোঁয়ায় সম্মতি দিচ্ছে!
রঞ্জিত কিছু টের পাচ্ছে না!
শুভর মনে হলো, সে চিৎকার করে বাবাকে সাবধান করে দেয়!
কিন্তু আকরাম তখনই একটা মন্ত্র উচ্চারণ করল…
রঞ্জিত যেন ঘোরের মধ্যে চলে গেল!
সে খাওয়ায় এতটাই মগ্ন হয়ে পড়ল যে, কিছুই বুঝতে পারল না!
আকরামের নির্দেশ!
আকরাম এবার মীনার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল…
“বসো মীনা, আমাদের সাথে খাও… আমাকে সারাদিন কাজ করতে হয়েছে, তোমার হাতে করা খাবার খেতে ইচ্ছে করছে…!”
মীনার অস্বাভাবিকতা!
মীনা যেন একটা যান্ত্রিক পুতুলের মতো চুপচাপ বসে পড়ল আকরামের পাশে…!
তার চোখ দুটো এখনো ঝাপসা, মুখে একটা নেশাগ্রস্ত, বশীভূত হাসি!
শুভ স্তব্ধ!
শুভর শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল!
তার মনে হচ্ছিল, সে একটা দুঃস্বপ্ন দেখছে!
আকরামের ভয়ংকর ইঙ্গিত…
আকরাম খেতে খেতে শুভর দিকে তাকিয়ে একটা বিকৃত হাসি দিল!
তারপর বলল—
“রাতটা স্পেশাল হতে চলেছে… আমাদের সবার জন্য!”
শুভর শরীরে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল!
রাতে কি ঘটতে চলেছে?
আকরামের কালো শক্তি কি আরও ভয়াবহ কিছু ঘটাবে?
শুভ কি কিছু করতে পারবে, নাকি সে শুধু দর্শক হয়েই থাকবে?
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
I am a big big fan of Henry daa, baban , bumba daa and others
But henry daa toh aladai ,,,, gurudev jaake bole ❤️
Story kemon laagche janate bhulben nah ??
•
Posts: 236
Threads: 0
Likes Received: 149 in 121 posts
Likes Given: 14
Joined: Dec 2022
Reputation:
2
Eto suspense. Ufffs darun
•
Posts: 1
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 1
Joined: Feb 2025
Reputation:
0
Ajke ki update etotukuo? Porte porte neshar moddhe chole giyechilam
•
Posts: 1,248
Threads: 2
Likes Received: 2,225 in 1,016 posts
Likes Given: 1,622
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
(05-03-2025, 02:48 PM)Toxic boy Wrote: Story kemon laagche janate bhulben nah ??
খুব ভালো হচ্ছে চালিয়ে যান likes & repu added
•
Posts: 11
Threads: 0
Likes Received: 3 in 3 posts
Likes Given: 0
Joined: Aug 2021
Reputation:
0
•
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
অধ্যায়: রাতের অভিশাপ
অন্ধকারের ভারী উপস্থিতি
রাত গভীর হতে চলেছে। বাইরে নিঃসঙ্গ বাতাস বইছে, মাঝে মাঝে জানালার কাঁচ হালকা কাঁপছে। শুভর মনে হচ্ছে, এই রাত অন্য রাতের চেয়ে অনেক বেশি ভারী—শ্বাসরুদ্ধকর, ভয়ানক। খাওয়ার পর থেকে সে একটা অদ্ভুত অস্বস্তি অনুভব করছে।
আকরাম চুপচাপ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু তার চোখ যেন প্রতিটা মুহূর্তে মীনাকে অনুসরণ করছিল। খাওয়ার সময়ও, যখন রঞ্জিত ব্যস্ত ছিল নিজের প্লেটে, তখন শুভ লক্ষ্য করেছিল—আকরামের চোখে এক অস্বাভাবিক দৃষ্টি। যেন সে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছে, রাত যত গভীর হবে, তার শক্তি ততই প্রবল হবে।
রাত ১২টা
শুভ তার ঘরে শুয়ে পড়লেও ঘুম আসছিল না। কিছু একটা ঠিকঠাক লাগছে না। তার শরীর নিস্তেজ লাগছে, যেন কেউ তার শক্তি শুষে নিচ্ছে। তার মাথায় তখনো বাজছে সেই মুহূর্ত—খাওয়ার সময় আকরাম কেমন একটা বিকৃত হাসি দিয়েছিল।
হঠাৎ করে সে শুনতে পেল এক অদ্ভুত শব্দ—দীর্ঘ শ্বাস ফেলার মতো, যেন কেউ ঘরের কোণেই দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে দেখছে।
সে ধীরে ধীরে উঠে বসল। জানালার বাইরে তাকাল, চাঁদের আলো মেঘে ঢাকা, পুরো পরিবেশ যেন এক অব্যক্ত আতঙ্কের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ঠিক তখনই, সে শুনতে পেল কিছু ফিসফিসানি।
“মীনা…”
শব্দটা আসছে তার বাবা-মায়ের ঘরের দিক থেকে।
শুভর হৃৎপিণ্ড দপদপ করতে লাগল। এই রাতে, এই সময়, এই অস্বাভাবিক কণ্ঠস্বর—এটা কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না।
সে আস্তে আস্তে দরজা খুলে করিডোরে পা রাখল। চারপাশে শুধু ছায়া আর শীতল বাতাস। তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল, কিন্তু কৌতূহল আর ভয়ের সংমিশ্রণে সে এগিয়ে যেতে লাগল।
রাত ১২:৩০
শুভ ধীরে ধীরে মায়ের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। দরজার ফাঁক দিয়ে সে যা দেখল, তা দেখে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে লাগল।
আকরাম তার মা’র সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
মীনা এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে। তার চোখ আধখোলা, ঠোঁট নীলচে, শরীর স্থির। আকরাম তার দিকে তাকিয়ে কিছু বলছে, কিন্তু শব্দগুলো এত নিম্নস্বরে যে শুভ ঠিক বুঝতে পারছে না। তবে আকরামের চোখ… সেই চোখে এক ভয়ানক দখলদারিত্বের ছাপ।
আকরামের হাত ধীরে ধীরে মীনার কপালের কাছে এগিয়ে গেল।
ঠিক তখনই, শুভ অনুভব করল একটা প্রবল ধাক্কা—শরীরের ভেতর থেকে যেন কিছু একটা কেঁপে উঠল। তার শ্বাস আটকে গেল।
হঠাৎ আকরাম মাথা ঘুরিয়ে সোজা শুভর দিকে তাকাল।
সেই দৃষ্টি…
সেই শূন্য, লালচে চোখ…
শুভর মনে হলো, সে একটা অতল গহ্বরে পড়ে যাচ্ছে। পুরো ঘরটা যেন দুলে উঠল, বাতাস ভারী হয়ে গেল।
“তোকে তো বলেছিলাম, আমার পথে আসবি না…”
আকরামের কণ্ঠস্বর সরাসরি তার মনের গভীরে বাজল, কিন্তু তার ঠোঁট নড়েনি। শুভ বুঝতে পারল—আকরাম শুধুই মানুষ নয়, তার ক্ষমতা এই বাস্তবতার সীমার বাইরে।
তার শরীর অবশ হয়ে আসছিল, মাথার ভেতর সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছিল।
এই রাতে কিছু একটাই ঘটতে চলেছে, যা তার জীবন চিরতরে বদলে দেবে।
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
শুভর মাথা ভার হয়ে আসছে, যেন শরীরটা আর ঠিকভাবে ধরে রাখতে পারছে না। কিন্তু সে জানে, এখন যদি ভেঙে পড়ে, তাহলে শেষ। তাকে শক্ত থাকতে হবে।
সে দেয়ালে হাত রেখে হালকা ঝুঁকে পড়ে দাঁড়ায়, চোখের সামনে যা দেখছে, তাতে তার গা শিউরে উঠছে।
আকরাম কিছু একটা বলল—তার স্বর গভীর, রহস্যময়, যেন অদৃশ্য কোনো শক্তি দিয়ে আচ্ছন্ন।
মিনার শরীর কেঁপে উঠল, তারপর আচমকা সে রঞ্জিতের দিকে সরে গেল, কিন্তু তার চোখ… ওর চোখ যেন পুরোপুরি খোলা নয়, আধখোলা ঘোলাটে দৃষ্টি! যেন সে জেগেও ঘুমিয়ে আছে।
শুভর রক্ত হিম হয়ে গেল।
আকরাম পুরোপুরি মাকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে ফেলেছে…!
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
শুভ হতভম্ব হয়ে দেখল, আচমকা তার মা যেন কোনো অদৃশ্য টানের দ্বারা উঠে দাঁড়াল—ধীরে ধীরে, যান্ত্রিক ভঙ্গিতে।
তার পা অগ্রসর হলো আকরামের দিকে, যেন সে নিজের ইচ্ছায় নয়, কারও আদেশে চলছে!
আর তখনই অবিশ্বাস্য কিছু ঘটে গেল—আকরাম আর মিনার অবস্থান যেন মুহূর্তের মধ্যে বদলে গেল!
মিনা যেখানে ছিল, সেখানেই এবার আকরাম দাঁড়িয়ে, আর মিনা আকরামের জায়গায়!
শুভর কপালে ঘাম জমে গেল। এটা কীভাবে সম্ভব?
আকরাম তখন ধীরে ধীরে মুখ তুলল, শুভর দিকে তাকাল—তার ঠোঁটে একটা বিকৃত, শয়তানি হাসি।
সেই হাসিতে যেন হাজারো অশুভ ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে, শুভর ভেতরটা কেঁপে উঠল।
আকরাম কী খেলছে?
তার ক্ষমতা আসলে কতটা ভয়ংকর?
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
ঘরটা নিস্তব্ধ, কিন্তু বাতাসে যেন এক অদ্ভুত চাপা উত্তেজনা।
মিনা ধীরে ধীরে বিছানায় উঠে দাঁড়াল। তার শরীরের ভাষা একদম অস্বাভাবিক, যেন কোনো অদৃশ্য শক্তি তাকে টেনে তুলছে।
তার মুখ শুভর দিকে, কিন্তু তার চোখ? সেই চিরচেনা উষ্ণতা নেই—এ যেন অন্য কেউ!
মিনার ঠিক পিছনেই আকরাম দাঁড়িয়ে, চোখে এক বিকৃত শয়তানি দৃষ্টি।
আর বিছানার একপাশে রঞ্জিত গভীর ঘুমে অচেতন, তার শরীরের সঙ্গে লেগে শুয়ে আছে আকরাম, কিন্তু রঞ্জিত কিছুই টের পাচ্ছে না!
শুভর গা শিউরে উঠল।
আকরামের ঠোঁট বাঁকা হাসিতে বেঁকে গেল, যেন সে ইশারায় শুভকে কিছু বলতে চাইছে—
“তোর সামনেই ঘটবে সব… কিন্তু তুই কিছুই করতে পারবি না!”
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
কক্ষের পরিবেশ যেন এক নিমিষেই বদলে গেল।
বাইরে এক ঝোড়ো হাওয়া উঠল, যেন প্রকৃতিও কোনো অশুভ কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। জানালার কাঁচ কাঁপতে লাগল, আর হঠাৎই একটা বিকট বিদ্যুৎ চমকালো, ঘরজুড়ে ক্ষণিকের জন্য একটা নীলচে আলো ছড়িয়ে পড়ল।
মিনা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল।
প্রথমে সে রঞ্জিতের পাশে ছিল, কিন্তু আস্তে আস্তে আকরামের দিকে সরতে লাগল—
একসময় তারা দু’জন একই বিছানায়!
শুভের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে ভয় আর আতঙ্কে। তার শরীর কাঁপছে, কিন্তু সে কিছুই করতে পারছে না!
আকরাম এক পৈশাচিক হাসি দিলো, শুভর দিকে তাকিয়ে, যেন সে এই মুহূর্তটা উপভোগ করছে।
বাইরের ঝড় আরও তীব্র হলো, জানালার পর্দা উড়তে লাগলো, আর বিদ্যুৎ আবারও ঝলসে উঠল—
শুভ অনুভব করল, এই রাতে কিছু ভয়ংকর ঘটতে চলেছে!
Posts: 71
Threads: 5
Likes Received: 177 in 55 posts
Likes Given: 56
Joined: Jan 2023
Reputation:
9
শুভ অবাক নয়, আতঙ্কে স্তব্ধ!
তার চোখের সামনে ঘটছে এমন কিছু, যা সে কল্পনাতেও আনতে পারেনি।
মিনা ধীরে ধীরে আকরামের দিকে ঝুঁকছে, যেন অদৃশ্য কোনো শক্তি তাকে আকর্ষণ করছে। শুভ স্পষ্ট দেখল, কিভাবে আকরামের শরীর রঞ্জিতকে সরিয়ে নিজের দিকে টেনে নিলো—
আর তারপর…
মিনা আকরামের শরীরের সাথে মিশে গেল, যেন সে ওখানেই থাকার জন্য জন্মেছে!
শুভর দৃষ্টি এবার আকরামের মুখের দিকে আটকে গেল।
আকরাম বদলে যাচ্ছে!
তার দেহ লম্বা হয়ে যাচ্ছে, শরীর ফুলে উঠছে, যেন ভিতর থেকে কেউ সেটাকে টেনে টেনে বিশাল বানাচ্ছে!
চোখ দুটো রক্তের মতো লাল—
না! এটা শুধু রক্তের লাল নয়! শুভ অনুভব করল, যেন চোখের ভেতর আগুন জ্বলছে!
তার মুখের কোণে একটা বিকৃত হাসি, যা একাধারে ভয়ঙ্কর, বিকৃত, আর অশুভ!
শুভর শরীর অবশ হয়ে আসছে।
তার সামনে তার নিজের মা… আর একটা দানব…!
বাইরে ঝড় আরও তীব্র হলো, যেন প্রকৃতিও এই অশুভ রাতের সাক্ষী হয়ে রইল!
|