Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 3.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery এক মুঠো খোলা আকাশ
#41
(16-01-2025, 10:26 PM)Anita Dey Wrote: গল্পটাকে নতুন জীবন দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার লেখা নিয়ে নতুন করে আর কি বলবো, বরাবরের মতো অসাধারণ। আশা করি নিয়মিত আপডেট পাব।

ধন্যবাদ। আমি heart and soul চেষ্টা করবো নিয়মিত আপডেট দিয়ে পাঠকমনে আমার লেখনীর জায়গা করে নেওয়ার।
[+] 1 user Likes Manali Basu's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
(16-01-2025, 11:10 PM)Manali Basu Wrote: ধন্যবাদ। আমি heart and soul চেষ্টা করবো নিয়মিত আপডেট দিয়ে পাঠকমনে আমার লেখনীর জায়গা করে নেওয়ার।

Kindly apni personal message ta aktu dekhben
[+] 1 user Likes banerjee3506's post
Like Reply
#43
গল্পটাতো সুন্দর এগোচ্ছিলো। লেখা বাদ দিলেন কেন?
[+] 1 user Likes Sage_69's post
Like Reply
#44


নুরুল ই'সলামের সাথে সাক্ষাতের পরে নন্দিনী আর জাহাঙ্গীর ফের টিচার্স রুমে ঢুকলো। দুজনকে একসাথে ঢুকতে দেখে সুস্মিতার ঠোঁটের কোলে একটা দুস্টু হাসি খেলে উঠলো। সে মনে মনে বাসনা করলো এই জুটির রসায়ন যাতে আরো গভীরতর হয়। দুজনকে বেশ ভালোই মানিয়েছে। আলাদা ধর্ম, আলাদা কালচার, আলাদা পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে বেড়ে ওঠা এক্কেবারে দুই ভীন্ন মেরুর মানুষ। ইতিহাস সাক্ষী, যখনই দুই বিপরীত ধারার নদী জীবনে চলার পথে একে অপরের সাথে ধাক্কা খেয়েছে ততোবারই প্রলয় অবশ্যম্ভাবি হয়েছে।

স্বাধীনতা উত্তর প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পরিচালক শ্রী হরিসাধন দাশগুপ্তর স্ত্রী শ্রীমতি সোনালী দাশগুপ্ত পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েন বিখ্যাত ইতালীয় পরিচালক রবার্তো রুশোলিনির সহিত। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু রুশোলিনীকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতবিষয়ক তথ্যচিত্র বানাতে। তৎকালীন তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রালয় থেকে দেশীয় পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্তকে ভার দেওয়া হয় রুশোলিনিকে সেই তথ্যচিত্র বানাতে সহায়তা করার। সেইসূত্রে রুশোলিনির সাথে হরিসাধন বাবুর স্ত্রীয়ের আলাপ, সেখান থেকে পরকীয়া প্রেম। তারপর অগ্রজ সন্তান রাজা দাশগুপ্তকে ভারতে রেখে সোনালী দেবী নিজের অনুজ সন্তান অর্জুনকে সাথে নিয়ে নিজ ঘরবাড়ি দেশ ত্যাগ করে রুশোলিনির সাথে পালিয়ে যান। রুশোলিনি সোনালীর ছোট ছেলেকে দত্তক নেন, এবং তাকে পিতৃপরিচয় দেন। এভাবে হরিসাধন দাশগুপ্তর অনুজ সন্তান অর্জুন দাশগুপ্ত পিতৃ ও ধর্ম পরিবর্তন করে হয়ে যান গিল রুশোলিনি। পরবর্তীতে তাদের একটি কন্যাসন্তানও জন্ম নেয়, নাম রাখেন রাফায়েল্লা রুশোলিনি।

বাস্তবের সাথে সাথে সিনেমার পর্দায়ও এরকম কাহিনীর নিদর্শন পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হিস্টোরিক্যাল ড্রামা "Heat and Dust" একইভাবে বিংশ শতাব্দী ভারতের এক অসম পরকীয়া প্রেমের গল্প তুলে ধরেছিলো। যেখানে দেখানো হয় ১৯২৩ সালে অলিভিয়া নামক ব্রিটিশ মেমসাহেব, সিভিল সারভেন্ট হিসেবে কর্মরত এক ব্রিটিশ অফিসার ডগলাস এর সাথে বিয়ে করে মধ্যভারতের সতীপুর অঞ্চলে আসে। সেখানকার পার্শবর্তী খতম রাজ্যের এক তরুণ নবাব থাকতেন যিনি কিনা খুব রঙিন মেজাজের ছিলেন। সুন্দরী মেয়েদের প্রতি তাঁর আসক্তি বহুল চর্চিত ছিল। সেই নবাব একদিন আশপাশের এলাকার সকল ব্রিটিশ অফিসারদের সস্ত্রীক আমন্ত্রণ জানান তাঁর মহলে। সেখানে নবাবের সাথে দেখা হয় অলিভিয়ার। প্রথম দেখায় অলিভিয়ার সৌন্দর্য্য নবাবের মন কেড়ে নিয়েছিলো।

অলিভিয়ার ভাতৃসম বন্ধু হ্যারি হ্যামিল্টন নবাবের পৃষ্টপোষকতায় তাঁর মহলেই স্থায়ী অতিথি হিসেবে থাকতো। নবাবের মাও কারোর আতিথেয়তায় কোনো কমতি রাখতেন না। কিন্তু গ্রীষ্মপ্রধান দেশের প্রচন্ড গরমে নবাবের অতিথি এবং অলিভিয়ার বন্ধু হ্যারি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দেখতে অলিভিয়ার আকছারই আগমন ঘটতো নবাবের মহলে। সেই সুযোগে নবাব অলিভিয়ার সাথে বন্ধুত্ব গাঁঢ় করে তোলেন। খুব কাছাকাছি চলে আসে নবাব ও ব্রিটিশ অফিসারের সেই সুন্দরী পত্নী। শুরু হয় পরকীয়া, আদিম-অকৃত্রিম। এক মু'সলিম নবাবের সাথে এক খ্রি'ষ্টান বিবাহিতা নারীর। দুজনের ধ'র্ম, দেশ, সংস্কৃতি সবই আলাদা। শুধু একটি বিষয়েই সাদৃশ্য, তা হলো দুজনের মধ্যে অসম্ভব ভালোবাসার চাহিদা। ব্যাস! সেটাই যথেষ্ট ছিল সব বাঁধা জটিলতা কাটিয়ে একে অপরের কাছে আসার। পরকীয়ার আগুন এত তীব্র আকারে জ্বলে উঠলো যে অলিভিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লো। ডগলাস ভাবলো এটা বুঝি তারই সন্তান। কিন্তু নবাব নিশ্চিত ছিলেন, অলিভিয়ার গর্ভে বেড়ে ওঠা নতুন প্রাণ তাঁরই শুক্রাণুর দেন্। অবশেষে অলিভিয়া স্বামী ডগলাসের কাছে নিজের ও নবাবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেয়। স্ত্রীর গর্ভে পরপুরুষের সন্তান বেড়ে উঠছে জেনে ডগলাস একেবারে মূর্ছা গেছিলো। যদিও লোকলজ্জার ভয়ে অলিভিয়া সেইসময়ে নবাবের সন্তান-কে গর্ভপাত করিয়ে ফেলে, কিন্তু নবাবের প্রতি জন্ম নেওয়া প্রেমকে কোনোভাবেই শেষ করতে পারেনি। অগত্যা ভালোবাসার টানে নিজের প্রেমিক নবাবের সাথে কাশ্মীরে পালিয়ে যায় সে। সেখানে নবাবের সাথে ঘর বেঁধে থাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে অলিভিয়া ছেড়ে যাওয়ার পর ডগলাসও দ্বিতীয়বার ঘর বেঁধে ছিল, সুখের সন্ধানে। .....

যাই হোক গল্পে ফেরা যাক, নন্দিনী টিচার্স রুমে ঢুকে নিজের টিম মেম্বারদের উদ্বুদ্ধ করতে একটা পেপ টক্ দিলো। বললো, "guys, আমরা নিশ্চই জানি আমরা কি কারণে এখানে এসছি! আমরা সকলেই নিজের নিজের দায়িত্ব ও কাজ নিয়ে অবগত। সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। নতুন করে আমার আপনাদের দিকনির্দেশন করার মতো কিছু নেই। তবুও কিছু কথা বলে রাখা উচিত। প্রথমত, যতই লোকমুখে আমরা শুনিনা কেন যে এলাকাটা খুব শান্ত, কোনো ঝুট-ঝামেলা হয়না, তাও আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে সকল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য। দ্বিতীয়ত, যতক্ষণ না ইলেক্শন কমিশন কালকে আমাদের থেকে সবকিছু বুঝে নিয়ে ব্যালট বাক্সগুলি নিজেদের জিম্মায় নিচ্ছে ততক্ষণ এই ব্যালট বাক্সগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব শুধু আমাদের। তৃতীয়ত, আমরা কোনো রাজনৈতিক চাপে মাথা নত করবো না। শেষ কথা, যতই ঝড়ঝাপটা আসুক, আমার একসাথে এক টিম ইউনিট হয়ে তার মোকাবেলা করবো, কেমন!"

"ঠিক বলেছেন ম্যাডাম আপনি, আমরা এক ইউনিট এক পরিবারের মতো কাজ করবো, কি বলেন আপনারা", নন্দিনীর বলা কথাগুলোর প্রবলতা আরো বাড়িয়ে দিয়ে বললো জাহাঙ্গীর।

সবাই সেই তালে তাল মিলিয়ে নন্দিনীকে ইতিবাচক অভিবাদন জানালো।

"হ্যাঁ, ঠিক ঠিক! আমরা সবাই প্রিসাইডিং অফিসার ম্যাডামের সাথে রয়েছি, কোনো চিন্তা নেই", টিচার্স রুমে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা একযোগে বলে উঠলো।

নন্দিনীর নিজেকে নিয়ে কিছুটা গর্ববোধ হলো। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের কোনো নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়া সত্যিই একটা মহৎ ব্যাপার। তার উপর নন্দিনী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলো। এটা তার কাছে একটা বড়ো সুযোগ নিজেকে প্রমাণ করার। শশুরবাড়িতে তাকে বড্ড দমিয়ে রাখা হয় শশুড়-শাশুড়ির দ্বারা। আর চার-পাঁচটা বাঙালি ঘরোয়া ছেলেদের মতো অনিকেতও নিজের বাবা-মার্ বিরুদ্ধে গিয়ে স্ত্রীর হয়ে কথা বলতে পারেনা। দূর্গম এলাকায় ইলেক্শন ডিউটি পড়েছে জেনে কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি নন্দিনীকে। প্রচুর কাঠ-খড় পুড়িয়ে শশুড়-শাশুড়িকে রাজি করাতে পেরেছে সে। আগেই বলেছিলাম যে এই প্রথম নন্দিনী কাজের কারণে বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে যাচ্ছিলো, যা তার শাশুড়ির একেবারে না-পসন্দ। বাড়ির বউ একা একা দূর প্রত্যন্ত গ্রামে যাবে সেখানে একা রাত কাটবে, নৈবচ নৈবচ!

নন্দিনীর শাশুড়ি চেয়েছিলো অনিকেতও যাক নন্দিনীর সাথে। কিন্তু ইলেক্শনের কিছু প্রোটোকল থাকে, তাছাড়া বললেও যে অনিকেত যেতে রাজি হতো তা এমন নয়। নন্দিনী প্রায় হাতে পায়ে ধরে অনিকেত-কে দিয়ে রাজি করায়, এবং পারমিশন আদায় করে আনে শশুড় শাশুড়ির থেকে এক রাত ইলেক্শন ডিউটির জন্য হাকিমপুরে থাকার। বিশেষ করে শাশুড়ির থেকে। কারণ তিনিই বেশি বেঁকে বসেছিলেন যাওয়ার ব্যাপারে।

নন্দিনীর কাছে এই ট্রিপ-টা এই জন্য ইম্পরটেন্ট ছিল কারণ তার কাজের জায়গায় স্কু'লে উঠতে বসতে পুরুষ শিক্ষকদের মেয়েদের নিয়ে হেয় করাটা যেন দৈনন্দিন রুটিন হয়েগেছিলো একপ্রকার। সুস্মিতা এসব গায়ে না মাখলেও নন্দিনীর জাত্যাভিমানে লাগতো। নারী হিসেবে কেউ তাকে ছোট করবে এটা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারতোনা। যখন হাকিমপুরে তার ইলেক্শন ডিউটি পড়লো তখন স্কু'লের প্রিন্সিপাল সমেত পুরুষ সহ-শিক্ষকরা সবাই বলেছিলো নন্দিনীর শশুরবাড়ি যা রক্ষণশীল তারা কিছুতেই বাড়ির বউকে এত দূরে পাঠাবে না। স্কু'লে চাকরি করতে দিচ্ছে এই অনেক। নন্দিনী তখন দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে শুধু ডিউটি করতেই হাকিমপুরে যাবেনা, তার উপর সুষ্ঠভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে সবার মুখে ঝামা ঘষে দেবে। স্কু'লের সহকর্মীদের থেকে শুরু করে বাড়িতে শশুড়-শাশুড়ি অবধি, যারা যারা তাকে মেয়ে বলে হেয় করে, দুর্বল ভাবে, তাদের প্রত্যেককে উচিত জবাব দেবে বলে ঠিক করেছিলো। তাই নন্দিনীর কাছে এই নির্বাচনটা নিজেকে প্রমাণ করার লড়াইও ছিল বটে। 

নন্দিনী খেয়াল করলো যখন সে পেপ টক্ দিচ্ছিলো তখন জাহাঙ্গীর একনাগাড়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। এভাবে সবার সামনে হাঁ করে তাকিয়ে থাকাটা খুব একটা ভালো ঠেকছিলো না নন্দিনীর। বাকিরাও তো উপস্থিত ছিল সেখানে, তারা কি ভাববে? নন্দিনী জানে জাহাঙ্গীরের তার প্রতি একটা অতিরিক্ত উৎসাহ রয়েছে। সুন্দরী মেয়ে দেখলে আকছার পুরুষদের মধ্যে এরকম ঘটে থাকে। কিন্তু সেটা সবাইকে জানান দেওয়ার কি খুব দরকার? তারপর যখন নন্দিনী নিজের কথা শেষ করলো তখন গোটা রুমের মধ্যে একমাত্র জাহাঙ্গীরই কথা বলে উঠলো, হোক না তা সমর্থন করে বলা কথা, তবুও নন্দিনী কি তার কাছে কোনোরকম বিশেষ সমর্থন চেয়েছিলো?

এসব দেখে ঘরে উপস্থিত লোকাল পুলিশকর্মীরা চোখ টিপে টিপে হাসছিলো। সেই জন্যই হয়তো তারাও একযোগে বলে উঠলো যে তারাও নাকি নন্দিনী ম্যাডামের সাথে রয়েছে। লোকাল হওয়ার সুবাদে পুলিশকর্মীরা হয়তো জাহাঙ্গীর-কে চেনে। জাহাঙ্গীরের স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। না জানি লোকটা কিরকম! এরকম আর কতজনের সাথে ফ্লার্ট করেছে বা করার চেষ্টা করেছে। কতজনই বা সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। যারা দিয়েছে তাদের সাথে নন্দিনীকে একই ক্যাটাগরিতে রাখছে না তো গ্রামের লোকাল পুলিশ থেকে শুরু করে বাসিন্দারা?

না না, নন্দিনী ভাবলো তাকে আরো সতর্ক হতে হবে। সকাল থেকে সেই রিকশাওয়ালা রিংকুও ছিল তাকে রাখা হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে পরিবহণের কাজে। এছাড়া স্কু'লের পিওন রমেন দা, এস পি ভুতোড়িয়া, ব্লক সভাপতি নুরুল ই'সলাম প্রায় সবাই সাক্ষী যে এই জাহাঙ্গীর লোকটা নন্দিনীর পিছনে ঘুর ঘুর করছে। জানি এরা কি ভাবলো তাতে নন্দিনীর কিছু এসে যাবেনা কারণ একদিনের ব্যাপার তারপর সে আবার বাড়ি ফিরে যাবে। আর হয়তো কোনোদিনও হাকিমপুরে আসা হবেনা তার। এবং সুস্মিতা তার প্রাণের বন্ধু। ওর মধ্যে হাজার খামতি থাকলেও সে কখনোই নন্দিনীর ব্যাপারে কুকথা রটায়ও না, সহ্যও করতে পারেনা। তাই নন্দিনীও সুস্মিতার পরকীয়ার ব্যাপার নিয়ে আপত্তি থাকলেও তার সাথে মেশে, কারণ সে বিশ্বাসযোগ্য।

তবুও নন্দিনীর মনে হলো এই জাহাঙ্গীর লোকটা-কে নিজ থেকে দূরে রাখতে হবে। তাই সে একটা ফন্দি আঁটলো। ভোটিংয়ের জন্য স্কু'লের দুটি রুম বরাদ্দ হয়েছিল। নন্দিনী প্রিসাডিং অফিসার হিসেবে ঘোষণা দিলো যে এই ইলেকশন টিমটা-কে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হবে যা দুটি আলাদা রুমের দায়িত্বে থাকবে। একটি টিম লিড করবে সে নিজে এবং কৌশিক বাবু, অপরটি সুস্মিতা ও জাহাঙ্গীর স্যার। এই ঘোষণার পর জাহাঙ্গীর নন্দিনীকে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু নন্দিনী তাকে বলার সুযোগ দিলো না। তার সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত বলে সে অন্যান্য কাজ গুলো দেখতে লাগলো। 

জাহাঙ্গীর স্বভাবতই খুব হতাশ হলো। কিন্তু তার কিছু করার ছিলোনা। প্রকাশ্যে সে নন্দিনীর টিমে থাকার আবদার করতে পারতো না, তা খুবই দৃষ্টিকটু লাগতো। লোকাল পুলিশকর্মীরা তখনও একে অপরের দিকে চেয়ে চোখের ইশারায় নন্দিনী ম্যাডাম-কে নিয়ে আকার ইঙ্গিতে গসিপ করে যাচ্ছিলো। নন্দিনী সেটা বুঝতে পেরে তাদের একবার গোটা গ্রাম ঘুরে রেকি করে আসতে বললো। সুস্মিতাকে বললো ভোটার লিস্টটা নিয়ে এসে চেক করতে কতজন ভোটার রয়েছে গ্রামে। কৌশিক বাবুকে নির্দেশ দিলো স্টোরেজ রুমে গিয়ে দেখে আসতে ব্যালট বাক্স গুলো সব ঠিকমতো সিল করা আছে কিনা। জাহাঙ্গীর-কে জিজ্ঞেস করলো কাল ভোটের পর কমিশন কখন ব্যালট বাক্সগুলো নিয়ে যাবে? জাহাঙ্গীর বললো সে যতদূর জানে কাল সন্ধ্যের পর সদরের কন্ট্রোল অফিস থেকে লোক আসবে ব্যালট বক্সগুলো নিতে। নন্দিনী জাহাঙ্গীরকে নির্দেশ দিলো যেকোনো ভাবেই হোক exact টাইম-টা জেনে তাকে বলতে। মনে মনে ভাবলো সেইমতো সে অনিকেত-কে কালকে আসতে বলবে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

রমেন দা টিচার্স রুমে জলের বোতল নিয়ে এলো। তখন নন্দিনী গ্রামের আবহাওয়া কিরকম, অর্থাৎ বৃষ্টি হওয়ার কোনো চান্স আছে কিনা জানতে চাইলো। রমেন দা অভিজ্ঞ মানুষ, আবহাওয়াবিদ না হলেও গ্রামের মানুষদের আকাশের চরিত্রর সম্পর্কে মোটামুটি একটা আইডিয়া থাকে। চাষবাস করেই তাদের জীবনযাপন চলে কিনা, তাই জন্য। সেই অভিজ্ঞতার উপর ভর করেই রমেন দা বললো, বৃষ্টির সম্ভাবনা তো রয়েছে, তবে তা আনুমানিক পঞ্চাশ শতাংশই। নন্দিনী মনে মনে প্রার্থনা করলো কাল অবধি যেন আকাশের মুখ ভার না হয়। আজকে এখনকার মতোই যেন রৌদ্রোজ্জ্বল ঝলমলে থাকে।

কিছুক্ষণ পর পুলিশের টিম রেকি করে ফিরে এলো। নন্দিনী গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞেস করলো। আশানরুপ উত্তর সে পেলোনা। ওই ব্লক সভাপতি নুরুল ই'সলাম নিজের সঙ্গী সাথী নিয়ে জটলা করে কোনো ঘোঁট পাকানোর তালে রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। তাই সতর্ক থাকতে হবে। নন্দিনী তখন এই কথায় বিন্দুমাত্র আর ভয় না পেয়ে খুব দৃপ্ত কণ্ঠে পুলিশকর্মীদের আদেশ দিলো কোনোভাবেই কোনো রাজনৈতিক নেতা যেন ভোটারদের ভয় দেখিয়ে প্রভাবিত না করতে পারে। ম্যামের এই আগ্রাসী মনোভাব দেখে পুলিশকর্মীদের মনোবল বেড়ে গেলো। তাদের মনে নন্দিনী ম্যাডাম-কে নিয়ে শ্রদ্ধা জন্মালো। এতোক্ষণ যেই নন্দিনী ম্যাডাম-কে মেয়ে বলে তারা হেয় করছিলো এবং সুন্দরী হওয়ার জন্য পিঠ পিছে তাকে জাহাঙ্গীর স্যারের সাথে জড়িয়ে কাল্পনিক গল্প ফেঁদে রসালো গসিপ করছিলো, সেই নন্দিনী ম্যাডামের এত দৃপ্ত ও আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখে সারিবদ্ধ হয়ে disciplined ভাবে পুলিশগুলো একসাথে "ইয়েস ম্যাম" বলে স্যালুট মারলো! নন্দিনীও তার জবাবে তাদের স্যালুট করলো।

প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে সে পারতো এক্সট্রা ফোর্সের জন্য সদরের কন্ট্রোল অফিসে আবেদন করতে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকার দরুন নিরাপত্তা রক্ষীর অভাব প্রায় প্রতি বুথেই হবে। সুতরাং কন্ট্রোল অফিসে বললেই রিইনফোর্সমেন্ট পাওয়া যাবেনা। নন্দিনী তাই বর্তমান বুথে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের উপরই ভরসা রাখলো। শুধু কন্ট্রোল অফিসকে ফোন করে জানিয়ে রাখলো গ্রামের বর্তমান অন্তর্নিহিত অবস্থার কথা, যাতে এমার্জেন্সি হলে এক্সট্রা ফোর্স চাইলে পাওয়া যায়।

লাঞ্চের সময় হয়ে এসছিল। রিংকু নিজের রিক্সা করে আলির দোকান থেকে বিরিয়ানির প্যাকেট পার্সেল করে নিয়ে এসছিলো। নন্দিনী সচরাচর রেড মিট খেতে পছন্দ করেনা, তাই মটনের বদলে সে চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার করেছিলো, সুস্মিতাও তার বান্ধবীর দেখা দেখি চিকেন বিরিয়ানি আনতে বলেছিলো, আর বাকিদের জন্য ছিল আলির দোকানের রেওয়াজি খাসির এ-ওয়ান মটন বিরিয়ানি!

খাবার পাশের রুমে সার্ভ করার ব্যবস্থা হয়েছিল। তাই টিচার্স রুম থেকে একে একে সবাই বেরিয়ে পাশের ঘরে যেতে লাগলো। প্রিসাইডিং অফিসার নন্দিনীও যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলো। কিন্তু জাহাঙ্গীরের কোনো হেলদোল ছিলোনা। সে চুপচাপ চেয়ারে বসেছিলো। নন্দিনীর তা দেখে একটু অদ্ভুত লাগলো। একবার ভাবলো ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করবে কিনা জাহাঙ্গীর-কে যে সে কখন খেতে যাবে? পরক্ষণে ভাবলো শুধু শুধু অপ্রয়োজনীয় কথোপকথন করে লাভ নেই। কথায় কথা বাড়বে ফালতু। তাছাড়া সে তো শুনেছে পাশের ঘরে রিংকু আর রমেন দা মিলে খাবার সার্ভ করছে সবাই কে। খিদে পেলে সে নিজে আসবে। নন্দিনীর অহেতুক ইন্টারফেরেন্স এর দরকার নেই এখানে। এইভেবে নন্দিনীও রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রইলো থেকে শুধু জাহাঙ্গীর।

জাহাঙ্গীর খেয়াল করলো নন্দিনী ম্যাডাম তার ফোনটা ভুলে গ্যাছে নিয়ে যেতে। এই সুযোগটা তাকে কাজে লাগাতে হবে। সে ঝট করে কেউ আসার আগে ফোনটা সরিয়ে নিলো, নিয়ে নিজের কাছে রাখলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো নন্দিনী টের পাবে সে ফোনটা ফেলে এসছে, তখন সে আবার ফিরে আসবে টিচার্স রুমে ফোনটা নিতে। সেই অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে ওঁত পেতে বসেছিলো জাহাঙ্গীর।

ঠিক সেইমতোই নন্দিনীর হঠাৎ খেয়াল হলো সে ফোনটা নিয়ে আনেনি। ওই রুমে ফেলে এসছে। তা নিতে সে আবার টিচার্স রুমে গেলো। দেখলো জাহাঙ্গীর সেই তখন থেকে চুপচাপ এক কোণায় চেয়ারে বসে আছে। নন্দিনী নিজের বসার জায়গায় ফোনটা খুঁজছিলো, কিন্তু আশ্চর্য্য ভাবে ফোনটা সে পাচ্ছিলো না। তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলো। অবশেষে জাহাঙ্গীর নিজের চেয়ার থেকে উঠলো। নন্দিনীর দিকে এগিয়ে গেলো। জাহাঙ্গীর-কে এভাবে হঠাৎ কাছে আসতে দেখে নন্দিনী কিছুটা ঘাবড়ে গেলো। রুমে কেউ নেই, তার কোনো অন্যায় সুযোগ নেবে না তো সে?

সে চারদিকে তাকালো। দেখলো কেউ নেই। ঘরে তো কেউ নেই, দরজার বাইরেও এমন কেউ নেই, যার উপস্থিতির কারণে জাহাঙ্গীর নিজের কদম নিয়ন্ত্রিত করতে পারে। টিচার্স রুমে তখন কেবল দুটি মানুষ, নন্দিনী ও জাহাঙ্গীর। নন্দিনী ফের বাইরের দিকে একবার চেয়ে দেখলো। নাহঃ! সত্যিই সেইমুহূর্তে সেই জায়গায় এমন কেউ নেই যে তাদের দুজনকে এত কাছাকাছি দেখার সাক্ষী হয়ে জাহাঙ্গীরকে সাবধান করবে কোনো ভুল পদক্ষেপ নিতে। একটাই বাঁচোয়া, রুমের দরজাটা খোলা ছিল। ফলে কারোর চলে আসার ভয় নিশ্চই জাহাঙ্গীরের মধ্যে অবশিষ্ট আছে? কিন্তু কোথায় কি ......

জাহাঙ্গীর নন্দিনীর যত নিকটে যাচ্ছিলো, নন্দিনীর হৃদস্পন্দন ততোই বেড়ে যাচ্ছিলো। নন্দিনীকে চমকে দিয়ে জাহাঙ্গীর টিচার্স রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলো। নন্দিনী তখন এক বেচাড়া শিকারের মতো দাঁড়িয়েছিল দানব শিকারির সামনে। তারপর জাহাঙ্গীর নন্দিনীর পানে পা বাড়ালো। খুব নিকটে চলে এসেছিলো সে। তার মুখ থেকে ভগ ভগ করে সিগারেটের নেশাময় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিলো। 

নন্দিনী জাহাঙ্গীরের থেকে দূরে যেতে দু'পা পিছিয়ে এলো। পিছনেই দেওয়ালে সে ধাক্কা খেলো, অর্থাৎ পেছোনোর আর জায়গা নেই। জাহাঙ্গীর আরো কাছে আসায় নন্দিনী দেওয়ালের সাথে একেবারে সিঁটিয়ে গেলো। জাহাঙ্গীর তখন নিজের দু'হাত নন্দিনীর দুই দিকে করে দেওয়ালে রাখলো। এমন করে যেন সে নন্দিনীকে চারদিক দিয়ে ঘিরে নিয়েছে, অথচ তাকে স্পর্শ করেনি।

জাহাঙ্গীরের এরূপ মনোভাব দেখে নন্দিনী প্রবলভাবে আতংকিত হয়ে পড়লো। সে চিৎকার করে সবাইকে অবগত করতে চাইছিলো জাহাঙ্গীরের এই অসৎ উদ্দেশ্যের ব্যাপারে। কিন্তু সে তো প্রিসাইডিং অফিসার। একজন লোকাল ইনচার্জ এভাবে তাকে রাগিং করছে সেটা জানাজানি হলে লোকে হাসবে তার উপর। মেয়ে বলে ফের হেয় করবে। তাই তাকেই এই পরিস্থিতিকে একা হাতে সামাল দিয়ে মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসতে হবে।

সে জাহাঙ্গীরের দিকে চেয়ে দেখলো, একজন ছয় ফিট লম্বা হাট্টাগোট্টা দানবাকৃতি লোক তার মতো ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির কোমল শরীরের সামনে দন্ডায়মান হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নন্দিনী তার দিকে তাকাতেই জাহাঙ্গীর বললো, "আপনি খালি আমার থেকে দূরে সরে সরে থাকেন কেন? আমি কোথায় আপনার সাহায্য করতে মুখিয়ে থাকি, আর আপনি সবসময়ে আমার থেকে গা বাঁচিয়ে চলেন!"

সে নিম্নস্বরে কথাটা বললেও তার কথা ছিল আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ। একটা ডোন্ট কেয়ার অ্যাটিটিউড, তার এলাকায় দাঁড়িয়ে কেউ তাকে কিচ্ছু বলতে পারবেনা গোছের মনোভাব। জাহাঙ্গীরের বাংলা শহুরে দের মতোই মার্জিত ও পরিষ্কার, গ্রাম্য ছাপ-টা সেই অর্থে নেই বললেই চলে। হয়তো অনেকদিন কাজের সূত্রে শহরে কাটিয়েছে তাই।

"আমি থুড়ি আপনাকে খেয়ে ফেলবো যে এত ভয় পাচ্ছেন?"

নন্দিনীর নীরবতা ভেঙে জাহাঙ্গীর বলে উঠলো। নন্দিনী নিজের সকল সাহস একত্রিত করে জাহাঙ্গীরের চোখের দিকে তাকালো। নন্দিনী ভাবলো আত্মবিশ্বাসের সাথে জাহাঙ্গীরের চোখে চোখ রাখলে সে হয়তো একটু সমঝে যাবে, নন্দিনীকে দূর্বল ভাববে না। কিন্তু জাহাঙ্গীর তো তার এই দুই নয়নে ডুবে যেতে চাইছিলো। সে ঘোরাচ্ছন্ন চোখে নন্দিনীর দিকে চেয়ে রইলো। নন্দিনীও জাহাঙ্গীরের চোখের ভাষা বেশ ভালোই বুঝতে পারলো কিন্তু তার জন্য তাকে এন্টারটেইন করলো না।

জাহাঙ্গীর ফের বলে উঠলো, "এই গ্রামে আপনি আমার অতিথি। আপনার যত্ন করা আমার পরম কর্তব্য। চিন্তা করবেন না, আপনার অনুমতি ছাড়া আমি আপনার সাথে এমন কিচ্ছু করবো না যাতে আপনার অস্বস্তি হয়।"

এই কথা শুনে নন্দিনী স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। পরিস্থিতিটা-কে স্বাভাবিক করার জন্য নন্দিনী চেষ্টা করলো একটা সৌজন্যের হালকা হাসি দিয়ে জাহাঙ্গীরকে অভিবাদন জানাতে। কিন্তু স্নায়বিক দুর্বলাবস্থায় তার চোয়াল এতটা শক্ত হয়েগেছিলো যে তখনকার মতো ঠোঁট চওড়া করে সৌজন্যের স্বল্প হাসিটুকুও আর নন্দিনীর মুখ ফুটে বেরোলো না।

নন্দিনী দেখলো জাহাঙ্গীরের চোখ দুটোর নজর তার চোখ থেকে নেমে এসে সেই শক্ত হয়ে আসা চোয়ালের উপর অধিষ্ঠিত ঠোঁটের উপর গিয়ে পড়েছে। তার ঠোঁটের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে জাহাঙ্গীর বললো, "এটা ঠিক যে আমি আপনার অনুমতি ছাড়া একটা কদমও আগে বাড়াবো না। তবে যদি আপনি এই অধমের উপর কৃপা করেন তাহলে আমাদের মধ্যে অনেক কিছুই হতে পারে....."

নন্দিনীর বুঝতে বিন্দুমাত্র সময় লাগলো না জাহাঙ্গীর ঠিক কি বোঝাতে চাইছিলো এই কথার মাধ্যমে। লজ্জায়, অপমানে তার মাথায় আগুন চড়ে বসলো। সে আর কিচ্ছু না ভেবে কষিয়ে একটা চড় বসালো জাহাঙ্গীরের গালে, "ঠাঁসসস্স!!"

জাহাঙ্গীর হতবাক হয়েগেলো। সে কিছু বুঝে উঠবে তার আগেই নন্দিনী আবার একটা চড় বসালো অপর গালে। জাহাঙ্গীর ছিটকে গিয়ে পিছিয়ে এলো। সেই ফাঁকে নন্দিনী সটান দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে বাহির হতে গমন করলো, পিছনে ফিরে একবারও তাকালো না।
[+] 8 users Like Manali Basu's post
Like Reply
#45
Valo laglo
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
#46
সুন্দর আপডেটের জন্য অনেক ধন্যবাদ। 
লাইক ও রেপু দিলাম। 
সাথে আছি।
Like Reply
#47
দয়া করে আগের গল্পটা শেষ করুন,,,,
Like Reply
#48
দারুণ হচ্ছে। চালিয়ে যাও, মানালি।
Like Reply
#49
এক কথায় অসাধারণ।। তাড়াতাড়ি আপডেট চাই।।
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)