16-01-2025, 11:10 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
এক মুঠো খোলা আকাশ
|
16-01-2025, 11:42 PM
24-01-2025, 03:03 PM
(This post was last modified: 24-01-2025, 03:04 PM by Manali Basu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
৪
নুরুল ই'সলামের সাথে সাক্ষাতের পরে নন্দিনী আর জাহাঙ্গীর ফের টিচার্স রুমে ঢুকলো। দুজনকে একসাথে ঢুকতে দেখে সুস্মিতার ঠোঁটের কোলে একটা দুস্টু হাসি খেলে উঠলো। সে মনে মনে বাসনা করলো এই জুটির রসায়ন যাতে আরো গভীরতর হয়। দুজনকে বেশ ভালোই মানিয়েছে। আলাদা ধর্ম, আলাদা কালচার, আলাদা পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে বেড়ে ওঠা এক্কেবারে দুই ভীন্ন মেরুর মানুষ। ইতিহাস সাক্ষী, যখনই দুই বিপরীত ধারার নদী জীবনে চলার পথে একে অপরের সাথে ধাক্কা খেয়েছে ততোবারই প্রলয় অবশ্যম্ভাবি হয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পরিচালক শ্রী হরিসাধন দাশগুপ্তর স্ত্রী শ্রীমতি সোনালী দাশগুপ্ত পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েন বিখ্যাত ইতালীয় পরিচালক রবার্তো রুশোলিনির সহিত। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু রুশোলিনীকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতবিষয়ক তথ্যচিত্র বানাতে। তৎকালীন তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রালয় থেকে দেশীয় পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্তকে ভার দেওয়া হয় রুশোলিনিকে সেই তথ্যচিত্র বানাতে সহায়তা করার। সেইসূত্রে রুশোলিনির সাথে হরিসাধন বাবুর স্ত্রীয়ের আলাপ, সেখান থেকে পরকীয়া প্রেম। তারপর অগ্রজ সন্তান রাজা দাশগুপ্তকে ভারতে রেখে সোনালী দেবী নিজের অনুজ সন্তান অর্জুনকে সাথে নিয়ে নিজ ঘরবাড়ি দেশ ত্যাগ করে রুশোলিনির সাথে পালিয়ে যান। রুশোলিনি সোনালীর ছোট ছেলেকে দত্তক নেন, এবং তাকে পিতৃপরিচয় দেন। এভাবে হরিসাধন দাশগুপ্তর অনুজ সন্তান অর্জুন দাশগুপ্ত পিতৃ ও ধর্ম পরিবর্তন করে হয়ে যান গিল রুশোলিনি। পরবর্তীতে তাদের একটি কন্যাসন্তানও জন্ম নেয়, নাম রাখেন রাফায়েল্লা রুশোলিনি। বাস্তবের সাথে সাথে সিনেমার পর্দায়ও এরকম কাহিনীর নিদর্শন পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হিস্টোরিক্যাল ড্রামা "Heat and Dust" একইভাবে বিংশ শতাব্দী ভারতের এক অসম পরকীয়া প্রেমের গল্প তুলে ধরেছিলো। যেখানে দেখানো হয় ১৯২৩ সালে অলিভিয়া নামক ব্রিটিশ মেমসাহেব, সিভিল সারভেন্ট হিসেবে কর্মরত এক ব্রিটিশ অফিসার ডগলাস এর সাথে বিয়ে করে মধ্যভারতের সতীপুর অঞ্চলে আসে। সেখানকার পার্শবর্তী খতম রাজ্যের এক তরুণ নবাব থাকতেন যিনি কিনা খুব রঙিন মেজাজের ছিলেন। সুন্দরী মেয়েদের প্রতি তাঁর আসক্তি বহুল চর্চিত ছিল। সেই নবাব একদিন আশপাশের এলাকার সকল ব্রিটিশ অফিসারদের সস্ত্রীক আমন্ত্রণ জানান তাঁর মহলে। সেখানে নবাবের সাথে দেখা হয় অলিভিয়ার। প্রথম দেখায় অলিভিয়ার সৌন্দর্য্য নবাবের মন কেড়ে নিয়েছিলো। অলিভিয়ার ভাতৃসম বন্ধু হ্যারি হ্যামিল্টন নবাবের পৃষ্টপোষকতায় তাঁর মহলেই স্থায়ী অতিথি হিসেবে থাকতো। নবাবের মাও কারোর আতিথেয়তায় কোনো কমতি রাখতেন না। কিন্তু গ্রীষ্মপ্রধান দেশের প্রচন্ড গরমে নবাবের অতিথি এবং অলিভিয়ার বন্ধু হ্যারি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দেখতে অলিভিয়ার আকছারই আগমন ঘটতো নবাবের মহলে। সেই সুযোগে নবাব অলিভিয়ার সাথে বন্ধুত্ব গাঁঢ় করে তোলেন। খুব কাছাকাছি চলে আসে নবাব ও ব্রিটিশ অফিসারের সেই সুন্দরী পত্নী। শুরু হয় পরকীয়া, আদিম-অকৃত্রিম। এক মু'সলিম নবাবের সাথে এক খ্রি'ষ্টান বিবাহিতা নারীর। দুজনের ধ'র্ম, দেশ, সংস্কৃতি সবই আলাদা। শুধু একটি বিষয়েই সাদৃশ্য, তা হলো দুজনের মধ্যে অসম্ভব ভালোবাসার চাহিদা। ব্যাস! সেটাই যথেষ্ট ছিল সব বাঁধা জটিলতা কাটিয়ে একে অপরের কাছে আসার। পরকীয়ার আগুন এত তীব্র আকারে জ্বলে উঠলো যে অলিভিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লো। ডগলাস ভাবলো এটা বুঝি তারই সন্তান। কিন্তু নবাব নিশ্চিত ছিলেন, অলিভিয়ার গর্ভে বেড়ে ওঠা নতুন প্রাণ তাঁরই শুক্রাণুর দেন্। অবশেষে অলিভিয়া স্বামী ডগলাসের কাছে নিজের ও নবাবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেয়। স্ত্রীর গর্ভে পরপুরুষের সন্তান বেড়ে উঠছে জেনে ডগলাস একেবারে মূর্ছা গেছিলো। যদিও লোকলজ্জার ভয়ে অলিভিয়া সেইসময়ে নবাবের সন্তান-কে গর্ভপাত করিয়ে ফেলে, কিন্তু নবাবের প্রতি জন্ম নেওয়া প্রেমকে কোনোভাবেই শেষ করতে পারেনি। অগত্যা ভালোবাসার টানে নিজের প্রেমিক নবাবের সাথে কাশ্মীরে পালিয়ে যায় সে। সেখানে নবাবের সাথে ঘর বেঁধে থাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে অলিভিয়া ছেড়ে যাওয়ার পর ডগলাসও দ্বিতীয়বার ঘর বেঁধে ছিল, সুখের সন্ধানে। ..... যাই হোক গল্পে ফেরা যাক, নন্দিনী টিচার্স রুমে ঢুকে নিজের টিম মেম্বারদের উদ্বুদ্ধ করতে একটা পেপ টক্ দিলো। বললো, "guys, আমরা নিশ্চই জানি আমরা কি কারণে এখানে এসছি! আমরা সকলেই নিজের নিজের দায়িত্ব ও কাজ নিয়ে অবগত। সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। নতুন করে আমার আপনাদের দিকনির্দেশন করার মতো কিছু নেই। তবুও কিছু কথা বলে রাখা উচিত। প্রথমত, যতই লোকমুখে আমরা শুনিনা কেন যে এলাকাটা খুব শান্ত, কোনো ঝুট-ঝামেলা হয়না, তাও আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে সকল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য। দ্বিতীয়ত, যতক্ষণ না ইলেক্শন কমিশন কালকে আমাদের থেকে সবকিছু বুঝে নিয়ে ব্যালট বাক্সগুলি নিজেদের জিম্মায় নিচ্ছে ততক্ষণ এই ব্যালট বাক্সগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব শুধু আমাদের। তৃতীয়ত, আমরা কোনো রাজনৈতিক চাপে মাথা নত করবো না। শেষ কথা, যতই ঝড়ঝাপটা আসুক, আমার একসাথে এক টিম ইউনিট হয়ে তার মোকাবেলা করবো, কেমন!" "ঠিক বলেছেন ম্যাডাম আপনি, আমরা এক ইউনিট এক পরিবারের মতো কাজ করবো, কি বলেন আপনারা", নন্দিনীর বলা কথাগুলোর প্রবলতা আরো বাড়িয়ে দিয়ে বললো জাহাঙ্গীর। সবাই সেই তালে তাল মিলিয়ে নন্দিনীকে ইতিবাচক অভিবাদন জানালো। "হ্যাঁ, ঠিক ঠিক! আমরা সবাই প্রিসাইডিং অফিসার ম্যাডামের সাথে রয়েছি, কোনো চিন্তা নেই", টিচার্স রুমে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা একযোগে বলে উঠলো। নন্দিনীর নিজেকে নিয়ে কিছুটা গর্ববোধ হলো। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের কোনো নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়া সত্যিই একটা মহৎ ব্যাপার। তার উপর নন্দিনী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলো। এটা তার কাছে একটা বড়ো সুযোগ নিজেকে প্রমাণ করার। শশুরবাড়িতে তাকে বড্ড দমিয়ে রাখা হয় শশুড়-শাশুড়ির দ্বারা। আর চার-পাঁচটা বাঙালি ঘরোয়া ছেলেদের মতো অনিকেতও নিজের বাবা-মার্ বিরুদ্ধে গিয়ে স্ত্রীর হয়ে কথা বলতে পারেনা। দূর্গম এলাকায় ইলেক্শন ডিউটি পড়েছে জেনে কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি নন্দিনীকে। প্রচুর কাঠ-খড় পুড়িয়ে শশুড়-শাশুড়িকে রাজি করাতে পেরেছে সে। আগেই বলেছিলাম যে এই প্রথম নন্দিনী কাজের কারণে বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে যাচ্ছিলো, যা তার শাশুড়ির একেবারে না-পসন্দ। বাড়ির বউ একা একা দূর প্রত্যন্ত গ্রামে যাবে সেখানে একা রাত কাটবে, নৈবচ নৈবচ! নন্দিনীর শাশুড়ি চেয়েছিলো অনিকেতও যাক নন্দিনীর সাথে। কিন্তু ইলেক্শনের কিছু প্রোটোকল থাকে, তাছাড়া বললেও যে অনিকেত যেতে রাজি হতো তা এমন নয়। নন্দিনী প্রায় হাতে পায়ে ধরে অনিকেত-কে দিয়ে রাজি করায়, এবং পারমিশন আদায় করে আনে শশুড় শাশুড়ির থেকে এক রাত ইলেক্শন ডিউটির জন্য হাকিমপুরে থাকার। বিশেষ করে শাশুড়ির থেকে। কারণ তিনিই বেশি বেঁকে বসেছিলেন যাওয়ার ব্যাপারে। নন্দিনীর কাছে এই ট্রিপ-টা এই জন্য ইম্পরটেন্ট ছিল কারণ তার কাজের জায়গায় স্কু'লে উঠতে বসতে পুরুষ শিক্ষকদের মেয়েদের নিয়ে হেয় করাটা যেন দৈনন্দিন রুটিন হয়েগেছিলো একপ্রকার। সুস্মিতা এসব গায়ে না মাখলেও নন্দিনীর জাত্যাভিমানে লাগতো। নারী হিসেবে কেউ তাকে ছোট করবে এটা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারতোনা। যখন হাকিমপুরে তার ইলেক্শন ডিউটি পড়লো তখন স্কু'লের প্রিন্সিপাল সমেত পুরুষ সহ-শিক্ষকরা সবাই বলেছিলো নন্দিনীর শশুরবাড়ি যা রক্ষণশীল তারা কিছুতেই বাড়ির বউকে এত দূরে পাঠাবে না। স্কু'লে চাকরি করতে দিচ্ছে এই অনেক। নন্দিনী তখন দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে শুধু ডিউটি করতেই হাকিমপুরে যাবেনা, তার উপর সুষ্ঠভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে সবার মুখে ঝামা ঘষে দেবে। স্কু'লের সহকর্মীদের থেকে শুরু করে বাড়িতে শশুড়-শাশুড়ি অবধি, যারা যারা তাকে মেয়ে বলে হেয় করে, দুর্বল ভাবে, তাদের প্রত্যেককে উচিত জবাব দেবে বলে ঠিক করেছিলো। তাই নন্দিনীর কাছে এই নির্বাচনটা নিজেকে প্রমাণ করার লড়াইও ছিল বটে। নন্দিনী খেয়াল করলো যখন সে পেপ টক্ দিচ্ছিলো তখন জাহাঙ্গীর একনাগাড়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। এভাবে সবার সামনে হাঁ করে তাকিয়ে থাকাটা খুব একটা ভালো ঠেকছিলো না নন্দিনীর। বাকিরাও তো উপস্থিত ছিল সেখানে, তারা কি ভাববে? নন্দিনী জানে জাহাঙ্গীরের তার প্রতি একটা অতিরিক্ত উৎসাহ রয়েছে। সুন্দরী মেয়ে দেখলে আকছার পুরুষদের মধ্যে এরকম ঘটে থাকে। কিন্তু সেটা সবাইকে জানান দেওয়ার কি খুব দরকার? তারপর যখন নন্দিনী নিজের কথা শেষ করলো তখন গোটা রুমের মধ্যে একমাত্র জাহাঙ্গীরই কথা বলে উঠলো, হোক না তা সমর্থন করে বলা কথা, তবুও নন্দিনী কি তার কাছে কোনোরকম বিশেষ সমর্থন চেয়েছিলো? এসব দেখে ঘরে উপস্থিত লোকাল পুলিশকর্মীরা চোখ টিপে টিপে হাসছিলো। সেই জন্যই হয়তো তারাও একযোগে বলে উঠলো যে তারাও নাকি নন্দিনী ম্যাডামের সাথে রয়েছে। লোকাল হওয়ার সুবাদে পুলিশকর্মীরা হয়তো জাহাঙ্গীর-কে চেনে। জাহাঙ্গীরের স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। না জানি লোকটা কিরকম! এরকম আর কতজনের সাথে ফ্লার্ট করেছে বা করার চেষ্টা করেছে। কতজনই বা সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। যারা দিয়েছে তাদের সাথে নন্দিনীকে একই ক্যাটাগরিতে রাখছে না তো গ্রামের লোকাল পুলিশ থেকে শুরু করে বাসিন্দারা? না না, নন্দিনী ভাবলো তাকে আরো সতর্ক হতে হবে। সকাল থেকে সেই রিকশাওয়ালা রিংকুও ছিল তাকে রাখা হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে পরিবহণের কাজে। এছাড়া স্কু'লের পিওন রমেন দা, এস পি ভুতোড়িয়া, ব্লক সভাপতি নুরুল ই'সলাম প্রায় সবাই সাক্ষী যে এই জাহাঙ্গীর লোকটা নন্দিনীর পিছনে ঘুর ঘুর করছে। জানি এরা কি ভাবলো তাতে নন্দিনীর কিছু এসে যাবেনা কারণ একদিনের ব্যাপার তারপর সে আবার বাড়ি ফিরে যাবে। আর হয়তো কোনোদিনও হাকিমপুরে আসা হবেনা তার। এবং সুস্মিতা তার প্রাণের বন্ধু। ওর মধ্যে হাজার খামতি থাকলেও সে কখনোই নন্দিনীর ব্যাপারে কুকথা রটায়ও না, সহ্যও করতে পারেনা। তাই নন্দিনীও সুস্মিতার পরকীয়ার ব্যাপার নিয়ে আপত্তি থাকলেও তার সাথে মেশে, কারণ সে বিশ্বাসযোগ্য। তবুও নন্দিনীর মনে হলো এই জাহাঙ্গীর লোকটা-কে নিজ থেকে দূরে রাখতে হবে। তাই সে একটা ফন্দি আঁটলো। ভোটিংয়ের জন্য স্কু'লের দুটি রুম বরাদ্দ হয়েছিল। নন্দিনী প্রিসাডিং অফিসার হিসেবে ঘোষণা দিলো যে এই ইলেকশন টিমটা-কে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হবে যা দুটি আলাদা রুমের দায়িত্বে থাকবে। একটি টিম লিড করবে সে নিজে এবং কৌশিক বাবু, অপরটি সুস্মিতা ও জাহাঙ্গীর স্যার। এই ঘোষণার পর জাহাঙ্গীর নন্দিনীকে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু নন্দিনী তাকে বলার সুযোগ দিলো না। তার সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত বলে সে অন্যান্য কাজ গুলো দেখতে লাগলো। জাহাঙ্গীর স্বভাবতই খুব হতাশ হলো। কিন্তু তার কিছু করার ছিলোনা। প্রকাশ্যে সে নন্দিনীর টিমে থাকার আবদার করতে পারতো না, তা খুবই দৃষ্টিকটু লাগতো। লোকাল পুলিশকর্মীরা তখনও একে অপরের দিকে চেয়ে চোখের ইশারায় নন্দিনী ম্যাডাম-কে নিয়ে আকার ইঙ্গিতে গসিপ করে যাচ্ছিলো। নন্দিনী সেটা বুঝতে পেরে তাদের একবার গোটা গ্রাম ঘুরে রেকি করে আসতে বললো। সুস্মিতাকে বললো ভোটার লিস্টটা নিয়ে এসে চেক করতে কতজন ভোটার রয়েছে গ্রামে। কৌশিক বাবুকে নির্দেশ দিলো স্টোরেজ রুমে গিয়ে দেখে আসতে ব্যালট বাক্স গুলো সব ঠিকমতো সিল করা আছে কিনা। জাহাঙ্গীর-কে জিজ্ঞেস করলো কাল ভোটের পর কমিশন কখন ব্যালট বাক্সগুলো নিয়ে যাবে? জাহাঙ্গীর বললো সে যতদূর জানে কাল সন্ধ্যের পর সদরের কন্ট্রোল অফিস থেকে লোক আসবে ব্যালট বক্সগুলো নিতে। নন্দিনী জাহাঙ্গীরকে নির্দেশ দিলো যেকোনো ভাবেই হোক exact টাইম-টা জেনে তাকে বলতে। মনে মনে ভাবলো সেইমতো সে অনিকেত-কে কালকে আসতে বলবে নিয়ে যাওয়ার জন্য। রমেন দা টিচার্স রুমে জলের বোতল নিয়ে এলো। তখন নন্দিনী গ্রামের আবহাওয়া কিরকম, অর্থাৎ বৃষ্টি হওয়ার কোনো চান্স আছে কিনা জানতে চাইলো। রমেন দা অভিজ্ঞ মানুষ, আবহাওয়াবিদ না হলেও গ্রামের মানুষদের আকাশের চরিত্রর সম্পর্কে মোটামুটি একটা আইডিয়া থাকে। চাষবাস করেই তাদের জীবনযাপন চলে কিনা, তাই জন্য। সেই অভিজ্ঞতার উপর ভর করেই রমেন দা বললো, বৃষ্টির সম্ভাবনা তো রয়েছে, তবে তা আনুমানিক পঞ্চাশ শতাংশই। নন্দিনী মনে মনে প্রার্থনা করলো কাল অবধি যেন আকাশের মুখ ভার না হয়। আজকে এখনকার মতোই যেন রৌদ্রোজ্জ্বল ঝলমলে থাকে। কিছুক্ষণ পর পুলিশের টিম রেকি করে ফিরে এলো। নন্দিনী গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞেস করলো। আশানরুপ উত্তর সে পেলোনা। ওই ব্লক সভাপতি নুরুল ই'সলাম নিজের সঙ্গী সাথী নিয়ে জটলা করে কোনো ঘোঁট পাকানোর তালে রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। তাই সতর্ক থাকতে হবে। নন্দিনী তখন এই কথায় বিন্দুমাত্র আর ভয় না পেয়ে খুব দৃপ্ত কণ্ঠে পুলিশকর্মীদের আদেশ দিলো কোনোভাবেই কোনো রাজনৈতিক নেতা যেন ভোটারদের ভয় দেখিয়ে প্রভাবিত না করতে পারে। ম্যামের এই আগ্রাসী মনোভাব দেখে পুলিশকর্মীদের মনোবল বেড়ে গেলো। তাদের মনে নন্দিনী ম্যাডাম-কে নিয়ে শ্রদ্ধা জন্মালো। এতোক্ষণ যেই নন্দিনী ম্যাডাম-কে মেয়ে বলে তারা হেয় করছিলো এবং সুন্দরী হওয়ার জন্য পিঠ পিছে তাকে জাহাঙ্গীর স্যারের সাথে জড়িয়ে কাল্পনিক গল্প ফেঁদে রসালো গসিপ করছিলো, সেই নন্দিনী ম্যাডামের এত দৃপ্ত ও আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখে সারিবদ্ধ হয়ে disciplined ভাবে পুলিশগুলো একসাথে "ইয়েস ম্যাম" বলে স্যালুট মারলো! নন্দিনীও তার জবাবে তাদের স্যালুট করলো। প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে সে পারতো এক্সট্রা ফোর্সের জন্য সদরের কন্ট্রোল অফিসে আবেদন করতে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকার দরুন নিরাপত্তা রক্ষীর অভাব প্রায় প্রতি বুথেই হবে। সুতরাং কন্ট্রোল অফিসে বললেই রিইনফোর্সমেন্ট পাওয়া যাবেনা। নন্দিনী তাই বর্তমান বুথে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের উপরই ভরসা রাখলো। শুধু কন্ট্রোল অফিসকে ফোন করে জানিয়ে রাখলো গ্রামের বর্তমান অন্তর্নিহিত অবস্থার কথা, যাতে এমার্জেন্সি হলে এক্সট্রা ফোর্স চাইলে পাওয়া যায়। লাঞ্চের সময় হয়ে এসছিল। রিংকু নিজের রিক্সা করে আলির দোকান থেকে বিরিয়ানির প্যাকেট পার্সেল করে নিয়ে এসছিলো। নন্দিনী সচরাচর রেড মিট খেতে পছন্দ করেনা, তাই মটনের বদলে সে চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার করেছিলো, সুস্মিতাও তার বান্ধবীর দেখা দেখি চিকেন বিরিয়ানি আনতে বলেছিলো, আর বাকিদের জন্য ছিল আলির দোকানের রেওয়াজি খাসির এ-ওয়ান মটন বিরিয়ানি! খাবার পাশের রুমে সার্ভ করার ব্যবস্থা হয়েছিল। তাই টিচার্স রুম থেকে একে একে সবাই বেরিয়ে পাশের ঘরে যেতে লাগলো। প্রিসাইডিং অফিসার নন্দিনীও যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলো। কিন্তু জাহাঙ্গীরের কোনো হেলদোল ছিলোনা। সে চুপচাপ চেয়ারে বসেছিলো। নন্দিনীর তা দেখে একটু অদ্ভুত লাগলো। একবার ভাবলো ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করবে কিনা জাহাঙ্গীর-কে যে সে কখন খেতে যাবে? পরক্ষণে ভাবলো শুধু শুধু অপ্রয়োজনীয় কথোপকথন করে লাভ নেই। কথায় কথা বাড়বে ফালতু। তাছাড়া সে তো শুনেছে পাশের ঘরে রিংকু আর রমেন দা মিলে খাবার সার্ভ করছে সবাই কে। খিদে পেলে সে নিজে আসবে। নন্দিনীর অহেতুক ইন্টারফেরেন্স এর দরকার নেই এখানে। এইভেবে নন্দিনীও রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রইলো থেকে শুধু জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর খেয়াল করলো নন্দিনী ম্যাডাম তার ফোনটা ভুলে গ্যাছে নিয়ে যেতে। এই সুযোগটা তাকে কাজে লাগাতে হবে। সে ঝট করে কেউ আসার আগে ফোনটা সরিয়ে নিলো, নিয়ে নিজের কাছে রাখলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো নন্দিনী টের পাবে সে ফোনটা ফেলে এসছে, তখন সে আবার ফিরে আসবে টিচার্স রুমে ফোনটা নিতে। সেই অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে ওঁত পেতে বসেছিলো জাহাঙ্গীর। ঠিক সেইমতোই নন্দিনীর হঠাৎ খেয়াল হলো সে ফোনটা নিয়ে আনেনি। ওই রুমে ফেলে এসছে। তা নিতে সে আবার টিচার্স রুমে গেলো। দেখলো জাহাঙ্গীর সেই তখন থেকে চুপচাপ এক কোণায় চেয়ারে বসে আছে। নন্দিনী নিজের বসার জায়গায় ফোনটা খুঁজছিলো, কিন্তু আশ্চর্য্য ভাবে ফোনটা সে পাচ্ছিলো না। তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলো। অবশেষে জাহাঙ্গীর নিজের চেয়ার থেকে উঠলো। নন্দিনীর দিকে এগিয়ে গেলো। জাহাঙ্গীর-কে এভাবে হঠাৎ কাছে আসতে দেখে নন্দিনী কিছুটা ঘাবড়ে গেলো। রুমে কেউ নেই, তার কোনো অন্যায় সুযোগ নেবে না তো সে? সে চারদিকে তাকালো। দেখলো কেউ নেই। ঘরে তো কেউ নেই, দরজার বাইরেও এমন কেউ নেই, যার উপস্থিতির কারণে জাহাঙ্গীর নিজের কদম নিয়ন্ত্রিত করতে পারে। টিচার্স রুমে তখন কেবল দুটি মানুষ, নন্দিনী ও জাহাঙ্গীর। নন্দিনী ফের বাইরের দিকে একবার চেয়ে দেখলো। নাহঃ! সত্যিই সেইমুহূর্তে সেই জায়গায় এমন কেউ নেই যে তাদের দুজনকে এত কাছাকাছি দেখার সাক্ষী হয়ে জাহাঙ্গীরকে সাবধান করবে কোনো ভুল পদক্ষেপ নিতে। একটাই বাঁচোয়া, রুমের দরজাটা খোলা ছিল। ফলে কারোর চলে আসার ভয় নিশ্চই জাহাঙ্গীরের মধ্যে অবশিষ্ট আছে? কিন্তু কোথায় কি ...... জাহাঙ্গীর নন্দিনীর যত নিকটে যাচ্ছিলো, নন্দিনীর হৃদস্পন্দন ততোই বেড়ে যাচ্ছিলো। নন্দিনীকে চমকে দিয়ে জাহাঙ্গীর টিচার্স রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলো। নন্দিনী তখন এক বেচাড়া শিকারের মতো দাঁড়িয়েছিল দানব শিকারির সামনে। তারপর জাহাঙ্গীর নন্দিনীর পানে পা বাড়ালো। খুব নিকটে চলে এসেছিলো সে। তার মুখ থেকে ভগ ভগ করে সিগারেটের নেশাময় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিলো। নন্দিনী জাহাঙ্গীরের থেকে দূরে যেতে দু'পা পিছিয়ে এলো। পিছনেই দেওয়ালে সে ধাক্কা খেলো, অর্থাৎ পেছোনোর আর জায়গা নেই। জাহাঙ্গীর আরো কাছে আসায় নন্দিনী দেওয়ালের সাথে একেবারে সিঁটিয়ে গেলো। জাহাঙ্গীর তখন নিজের দু'হাত নন্দিনীর দুই দিকে করে দেওয়ালে রাখলো। এমন করে যেন সে নন্দিনীকে চারদিক দিয়ে ঘিরে নিয়েছে, অথচ তাকে স্পর্শ করেনি। জাহাঙ্গীরের এরূপ মনোভাব দেখে নন্দিনী প্রবলভাবে আতংকিত হয়ে পড়লো। সে চিৎকার করে সবাইকে অবগত করতে চাইছিলো জাহাঙ্গীরের এই অসৎ উদ্দেশ্যের ব্যাপারে। কিন্তু সে তো প্রিসাইডিং অফিসার। একজন লোকাল ইনচার্জ এভাবে তাকে রাগিং করছে সেটা জানাজানি হলে লোকে হাসবে তার উপর। মেয়ে বলে ফের হেয় করবে। তাই তাকেই এই পরিস্থিতিকে একা হাতে সামাল দিয়ে মোকাবিলা করে বেরিয়ে আসতে হবে। সে জাহাঙ্গীরের দিকে চেয়ে দেখলো, একজন ছয় ফিট লম্বা হাট্টাগোট্টা দানবাকৃতি লোক তার মতো ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির কোমল শরীরের সামনে দন্ডায়মান হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নন্দিনী তার দিকে তাকাতেই জাহাঙ্গীর বললো, "আপনি খালি আমার থেকে দূরে সরে সরে থাকেন কেন? আমি কোথায় আপনার সাহায্য করতে মুখিয়ে থাকি, আর আপনি সবসময়ে আমার থেকে গা বাঁচিয়ে চলেন!" সে নিম্নস্বরে কথাটা বললেও তার কথা ছিল আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ। একটা ডোন্ট কেয়ার অ্যাটিটিউড, তার এলাকায় দাঁড়িয়ে কেউ তাকে কিচ্ছু বলতে পারবেনা গোছের মনোভাব। জাহাঙ্গীরের বাংলা শহুরে দের মতোই মার্জিত ও পরিষ্কার, গ্রাম্য ছাপ-টা সেই অর্থে নেই বললেই চলে। হয়তো অনেকদিন কাজের সূত্রে শহরে কাটিয়েছে তাই। "আমি থুড়ি আপনাকে খেয়ে ফেলবো যে এত ভয় পাচ্ছেন?" নন্দিনীর নীরবতা ভেঙে জাহাঙ্গীর বলে উঠলো। নন্দিনী নিজের সকল সাহস একত্রিত করে জাহাঙ্গীরের চোখের দিকে তাকালো। নন্দিনী ভাবলো আত্মবিশ্বাসের সাথে জাহাঙ্গীরের চোখে চোখ রাখলে সে হয়তো একটু সমঝে যাবে, নন্দিনীকে দূর্বল ভাববে না। কিন্তু জাহাঙ্গীর তো তার এই দুই নয়নে ডুবে যেতে চাইছিলো। সে ঘোরাচ্ছন্ন চোখে নন্দিনীর দিকে চেয়ে রইলো। নন্দিনীও জাহাঙ্গীরের চোখের ভাষা বেশ ভালোই বুঝতে পারলো কিন্তু তার জন্য তাকে এন্টারটেইন করলো না। জাহাঙ্গীর ফের বলে উঠলো, "এই গ্রামে আপনি আমার অতিথি। আপনার যত্ন করা আমার পরম কর্তব্য। চিন্তা করবেন না, আপনার অনুমতি ছাড়া আমি আপনার সাথে এমন কিচ্ছু করবো না যাতে আপনার অস্বস্তি হয়।" এই কথা শুনে নন্দিনী স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। পরিস্থিতিটা-কে স্বাভাবিক করার জন্য নন্দিনী চেষ্টা করলো একটা সৌজন্যের হালকা হাসি দিয়ে জাহাঙ্গীরকে অভিবাদন জানাতে। কিন্তু স্নায়বিক দুর্বলাবস্থায় তার চোয়াল এতটা শক্ত হয়েগেছিলো যে তখনকার মতো ঠোঁট চওড়া করে সৌজন্যের স্বল্প হাসিটুকুও আর নন্দিনীর মুখ ফুটে বেরোলো না। নন্দিনী দেখলো জাহাঙ্গীরের চোখ দুটোর নজর তার চোখ থেকে নেমে এসে সেই শক্ত হয়ে আসা চোয়ালের উপর অধিষ্ঠিত ঠোঁটের উপর গিয়ে পড়েছে। তার ঠোঁটের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে জাহাঙ্গীর বললো, "এটা ঠিক যে আমি আপনার অনুমতি ছাড়া একটা কদমও আগে বাড়াবো না। তবে যদি আপনি এই অধমের উপর কৃপা করেন তাহলে আমাদের মধ্যে অনেক কিছুই হতে পারে....." নন্দিনীর বুঝতে বিন্দুমাত্র সময় লাগলো না জাহাঙ্গীর ঠিক কি বোঝাতে চাইছিলো এই কথার মাধ্যমে। লজ্জায়, অপমানে তার মাথায় আগুন চড়ে বসলো। সে আর কিচ্ছু না ভেবে কষিয়ে একটা চড় বসালো জাহাঙ্গীরের গালে, "ঠাঁসসস্স!!" জাহাঙ্গীর হতবাক হয়েগেলো। সে কিছু বুঝে উঠবে তার আগেই নন্দিনী আবার একটা চড় বসালো অপর গালে। জাহাঙ্গীর ছিটকে গিয়ে পিছিয়ে এলো। সেই ফাঁকে নন্দিনী সটান দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে বাহির হতে গমন করলো, পিছনে ফিরে একবারও তাকালো না।
24-01-2025, 06:38 PM
সুন্দর আপডেটের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
লাইক ও রেপু দিলাম। সাথে আছি।
24-01-2025, 11:53 PM
দয়া করে আগের গল্পটা শেষ করুন,,,,
25-01-2025, 12:24 AM
দারুণ হচ্ছে। চালিয়ে যাও, মানালি।
25-01-2025, 01:58 PM
এক কথায় অসাধারণ।। তাড়াতাড়ি আপডেট চাই।।
29-01-2025, 12:37 AM
update please waiting for years
03-02-2025, 06:25 PM
(This post was last modified: Yesterday, 02:37 PM by Manali Basu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
৫
নন্দিনীর বাপেরবাড়ি কাঁচড়াপাড়ায়। মফস্সল এলাকায় থাকলেও তার পরিবার অনিকেতের শহুরে পরিবারের থেকে অনেক বেশি উদার ছিল। নন্দিনীর পড়াশুনা, বেড়ে ওঠা সেখানেই। কাঁচড়াপাড়া কলেজ থেকে স্নাতক, এবং কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ ইংরেজিতে। দ্বাদশ শ্রেণী অবধি সে গার্লস স্কু'লে পড়েছে, কিন্তু কলেজ জীবনের ফ্রেন্ড সার্কেলে ছেলে মেয়ে উভয়েরই উপস্থিতি ছিল, তবুও কখনো বেপরোয়া লাইফস্টাইল নিজের জন্য বেছে নেয়নি সে। কলেজ জীবনে নন্দিনী অনেক স্মার্ট চটপটে ছিল। ফ্লুয়েন্ট ইংলিশে কথা বলতো। বাকি মেয়েদের মতোই জিন্স টপ পড়তো। কিন্তু বিয়ের পর সব বন্ধ হয়েগেলো। শাশুড়ি মা-র্ নির্দেশে শাড়ি পড়া শুরু হলো। তারপর আর জিন্স টপ পড়া হয়নি, কলেজ জীবন ফিরে দেখা হয়নি। শাড়ি ব্যাতিত অন্য কিছু পড়া বারণ ছিল অনিকেতের বাড়ির বউয়ের। মা বাবা যখন বিয়ের সম্বন্ধ দেখছিলো তখন সে স্কু'ল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসে। পশ্চিমবঙ্গের যেকোনো চাকরি পরীক্ষার ফলাফল বেড়োতে বছর পার হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। বিয়ের পর সে চাকরিটা পায়। কলকাতার মধ্যে এবং স্কু'ল টিচারের চাকরি বলে শশুড়বাড়ির কেউ আর বাধা দেয়নি। তবে চাকরি পেয়েই তার জীবনযুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। কর্মক্ষেত্রেও তাকে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। স্কু'লটা বাংলা মিডিয়াম হলেও কো-এডুকেশন। ফলে টিচিং ফ্যাকাল্টি-তে শিক্ষক-শিক্ষিকা উভয়েরই নিয়োগ রয়েছে। কলেজ, ইউনিভার্সিটি, তারপর স্কু'ল যেখানে সে শিক্ষকতা করে, সবজায়গায় কেউ না কেউ থাকতোই লোলুপ দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে। ছলে বলে কৌশলে কাছে আসার প্রচেষ্টা চলতো এবং এখনো চলে। কলেজেও এরকম ভাবেই নন্দিনী একটি ছেলেকে কষিয়ে চড় মেরেছিলো তার সাথে অসভ্যতা করতে চাওয়ার জন্য। তাই জাহাঙ্গীর-কে প্রশ্রয় না দিয়ে উল্টে চড় মারাটা তার কাছে নতুন কিছু ছিলোনা। সে আগেও এভাবে সকলের নিষিদ্ধ কামনা-কে প্রতিহত করে নিজেকে পবিত্র করে রেখেছে। -------------------------------------------------------- জাহাঙ্গীর-কে চড় মেরে টিচার্স রুম থেকে বেড়োলো নন্দিনী। আর কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা পাশের রুমে পৌঁছে সুস্মিতা যেখানে বসেছিলো সেখানে গিয়ে তার পাশে বসলো। "কিরে, তোর প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গেছিলিস?", মুচকি হেসে সুস্মিতা জিজ্ঞেস করলো। নন্দিনী তখন মজা করার বা সওয়ার মুডে ছিলোনা। তবু সে অতো রিএক্ট করলো না, পাছে চারিপাশে থাকা মানুষজনের কেউ যদি সঠিক আন্দাজ করে ফেলে তার আর জাহাঙ্গীরের মধ্যে ঘটে যাওয়া শীতল যুদ্ধের ব্যাপারে! তাই সে শুধু বিরক্তির স্বরে তুচ্ছতাচ্ছিলো করে উত্তর দিলো, "ধুড়ড়ঃ!! তোর যত্তসব বাজে কথা" "তাহলে কি করতে গেছিলি আবার?", সুস্মিতা প্রশ্ন করে খোঁচা দিলো। "আমি তো........" প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মনে পড়লো, যে কাজের জন্য সে গেছিলো সেটাই তো হয়নি! তার ফোন! সেটা তো খুঁজে পেলোনা! তাহলে কি সে আবার যাবে একবার? নাহঃ নাহঃ, আবার গেলে যদি জাহাঙ্গীর ধরে। সে ভাবতেই পারে তার টানে ফিরে এসছি। উৎসাহ পেয়ে যাবে তখন। ..... নন্দিনী-কে চিন্তামগ্ন দেখে সুস্মিতা আবার জিজ্ঞেস করলো, "কিরে? বললিনা তো, তাহলে কেন গেছিলিস?" "কি..... ক্কি.. কিছুনা.. ওই কয়েকটা সই-সাবুত বাকি ছিল সেটা ভুলে গেছিলাম করতে, তাই যেতে হলো আবার" ফোনের কথাটা ইচ্ছে করে বললো না, নাহলে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করতো। ফোনটা পেয়েছিস কিনা? পাসনি যখন তখন কোথায় গেলো? এতক্ষণ সময় কেন লাগলো ওখানে? জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞেস করেছিলিস কিনা ফোনের ব্যাপারে? কেন সাহায্য চাসনি ওর কাছ থেকে? সে (সুস্মিতা) কি সাহায্য করতে যাবে খোঁজার জন্য? ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ফোন খুঁজতে যদি নন্দিনী সুস্মিতাকে নিয়ে যায় তাহলে না জানি জাহাঙ্গীর কি না কি বলে বসবে। সবই তো আনপ্রেডিক্টবেল লাগছিলো অনুরিমার এই হাকিমপুর গ্রামে এসে। ধুর!! বিরক্ত হয়ে গেলো মনে মনে নন্দিনী! ...... "হুমঃ!! বুঝি বুঝি, সব বুঝি! সই সাবুত কি পরে করা যেতোনা? আসলে তুই জাহাঙ্গীরকে ডাকতে গিয়েছিলিস খাওয়ার জন্য, এটা বললেই হয়। নাহ আমি এটা বলছি না যে তুই অন্য কোনো বিশেষ টানে গেছিলিস, আসলে প্রিসাইডিং অফিসার ম্যামের তো একটা দায়িত্ব আছে নাকি, এটা দেখার যে তার সকল সহকর্মী ঠিকমতো খেয়েছে কিনা, আরো কত কি.... হি হি হি হি!...." সুস্মিতা ক্রমাগত নিজের বান্ধবীর লেগ পুল করছিলো। নন্দিনীর তাতে একেবারেই ভালো লাগছিলো না। অন্য সময় হলে তাও হালকা মেজাজে সয়ে নেওয়া যেত, কিন্তু সে-ই জানে কিছুক্ষণ আগে টিচার্স রুমে তার সাথে ঠিক কি হতে যাচ্ছিলো! তাই সে না পারতে অবশেষে সুস্মিতাকে হালকা ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলো। সুস্মিতা নিজের বান্ধবীকে ভালো মতো চেনে। অনেকদিন ধরে একসাথে দুজনে শিক্ষকতা করছে। তাই নন্দিনী কখন খোঁচে যায়, আর কখন সত্যিই সে রাগ করে বসে সেই মেজাজের ফারাকটা নন্দিনীর রিঅ্যাকশনে বোঝে সুস্মিতা। নন্দিনী যে কোনো একটা ব্যাপারে খুব আপসেট হয়ে আছে সেটা নন্দিনীর থেকে ধমক খাওয়ার পর সুস্মিতা তখন বুঝতে পারলো। আর সেই আপসেটটা যে দ্বিতীয়বার টিচার্স রুমে গিয়ে ফেরৎ আসার পর হয়েছে সেটাও সে বুঝেছে। সুস্মিতা ভাবলো ওই রুমে তো জাহাঙ্গীর ছাড়া আর কেউ ছিলোনা। তবে সে কি কিছু করেছে? এক গভীর রহস্য দানা বাঁধলো সুস্মিতার মনে। তাড়াতাড়ি লাঞ্চ শেষ করে নন্দিনী ফের দৌড় লাগালো টিচার্স রুমের দিকে। সবার অলক্ষ্যে সুস্মিতাও ওর পিছু নিলো, বিষয়টা খতিয়ে দেখতে। টিচার্স রুমে ঢুকে নন্দিনী দেখলো সেই একইভাবে জাহাঙ্গীর ঠাঁয় বসে রয়েছে তখন থেকে, না খেয়ে না দেয়ে। নন্দিনী গম্ভীরভাবে জাহাঙ্গীর কে জিজ্ঞাসা করলো, "আপনি আমার ফোনটা দেখেছেন?" জাহাঙ্গীর কে আবার নিজের চেয়ার থেকে উঠতে দেখে নন্দিনী ঘাবড়ে গেলো। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেনা তো এই লোকটা? ভেবে আঁতকে উঠলো! কিন্তু তারপরই নিজেকে সামলে নিলো মনে মনে রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলির কবিতা স্মরণ করে -- "বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা, বিপদে আমি না যেন করি ভয়।" নন্দিনী এবার আগের থেকে অনেক বেশি দৃপ্ত ও প্রস্তুত ছিল, সকল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য। তবে জাহাঙ্গীরের মুড ততোক্ষণে বদলে গেছিলো। সে বুঝেছিলো এভাবে নন্দিনীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে বাগে আনা যাবেনা। অন্য পথ অবলম্বন করতে হবে। তাই সে নম্রভাবে নন্দিনীর কাছে এলো, প্রথমে ক্ষমা চাইলো পূর্বের ঘটনার জন্য। তারপর পকেট থেকে নন্দিনীর ফোনটা বের করে তার হাতে তুলে দিয়ে বললো, এটা নন্দিনী প্রথমবার টিচার্স রুম থেকে বেড়োনোর সময়ে টেবিলেই ভুলে রেখে গেছিলো। জাহাঙ্গীর তখন ফোনটা নিজের জিম্মায় নিয়েছিলো যাতে এরকম জায়গায় কোনো অচেনা অজানা কারোর হাতে এটা না পরে। জাহাঙ্গীরের খিদে ছিলোনা বলে সে লাঞ্চ করতে যায়নি। তবে সে নন্দিনীকে পরে সময় সুযোগ পেয়ে ফোনটা ঠিক হ্যান্ডওভার করে দিতো। তার আগেই নন্দিনী ম্যাডাম টিচার্স রুমে ফেরৎ আসেন ফোনটা খুঁজতে। কিন্তু তখন হঠাৎ জাহাঙ্গীরের মাথায় দুস্টু বুদ্ধি খেলে এবং সে সেই বোকামিটা করে ফেলে। অতিথি সমান প্রিসাইডিং অফিসার ম্যাডামের সাথে ফ্লার্ট। নন্দিনী ম্যাডাম সেটাকে ভালোভাবে না নিয়ে তাকে চড় কষিয়ে চলে যায়। তারপর আর ফোনটা দেওয়া হয়না। জাহাঙ্গীর এভাবে নন্দিনীর কাছে পুরো ঘটনাকে নিজের মতো করে বিশ্লেষণ করে বিবরণ দিতে লাগলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য। বারবার নিজের কৃতকর্মের জন্য নন্দিনীর কাছে ক্ষমা চাইছিলো। বোঝাতে চেষ্টা করছিলো যে ওর কোনো ডেভিল ইনটেনশন ছিলোনা। সে জাস্ট একটু মজা করছিলো। জাহাঙ্গীরের পীড়াপীড়িতে অবশেষে নন্দিনী তার কথা মেনে নেয় এবং তাকে ক্ষমা করে দেয়। সাথে এটাও বলে যে এরকম মজা জাহাঙ্গীর পূনরায় যেন না করে তার সাথে। এই নির্দেশ দিয়েই নন্দিনী নিজের ফোনটা নিয়ে টিচার্স রুম থেকে বেড়োতে যাচ্ছিলো। কিন্তু একবার ফিরে সে জাহাঙ্গীরের দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো সে লাঞ্চ করবে না? জাহাঙ্গীর উত্তর দিলো যে প্রথমে তার খিদে ছিলোনা তাই সে বাকি সকলের সাথে পাশের রুমে যায়নি। তার উপর নন্দিনী ম্যাডামের কাছ থেকে চড় খেয়েও তার যথেষ্ট পেট ভরে গেছিলো..... এই কথা শুনে নন্দিনী হেসে ফেললো। মজা করে বললো, "তা শুকনো চড়ে কি চিঁড়ে ভিজলো, নাকি গামছা ভিজিয়ে উত্তম মদ্ধম দিতে হবে??" নন্দিনীর কথায় জাহাঙ্গীরও হেসে ফেললো। বললো, "না না, চিঁড়ে ভিজলেও হজম হয়নি। খিদে এখন রয়েছে তবে সেটা খাবারের। আমি অপেক্ষা করছিলাম কখন আপনার সাথে কথা বলার সুযোগ পাবো, কখন আপনার কাছে ক্ষমা চাইবো। তারপর লাঞ্চ করবো। নাহলে গলা দিয়ে খাবার নামবে না।" জাহাঙ্গীরের কথা শুনে নন্দিনী আপ্লুত হলো। ভাবলো এতটা গিল্ট ফিলিং কাজ করছিলো ওর মধ্যে! তার মানে লোকটা অতটাও খারাপ নয় যতটা ভেবেছিলাম। সুন্দরী মেয়ে দেখে পা পিছলে গেছিলো আর কি। তার অনেক পুরুষ সহকর্মী তথা সহ-শিক্ষক এনিয়ে বিনিয়ে অনেক টিস্ করে কথা বলে তার সাথে। তারা শহুরে বলে কথার মার্ প্যাঁচ ভালো জানে। তাই কোনটা তাদের ইভ টিজিং, কোনটা ফ্লার্ট সত্যিই সেটা বোঝা দায়। কিন্তু জাহাঙ্গীর ছা পোষা একটা গ্রামের লোক। সে কথার উপর কথা বুঁনে সাজিয়ে বলতে পারে না। মনের উত্তেজনা বেড়ে গেলে এবং হাতের নাগালে সেই পছন্দের মানুষটাকে পেয়ে গেলে অজান্তেই তারা নিজেকে সামলাতে না পেরে কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেলে সরাসরি। এটাই শুধু পার্থক্য শহর ও গ্রামের "প্রেমিকদের"। তাই এটা জাহাঙ্গীরের লঘু পাপই বটে। সেই কারণে তাকে লঘু পাপে গুরু দণ্ড দিয়ে লাভ নেই। নন্দিনী যাওয়ার আগে শুধু সাবধান করে দিয়ে জানালো, সে কিন্তু খুব কড়া প্রিসাডিং অফিসার তাই তাকে যেন সবাই সমঝে চলে, সেটা লোকাল লোক বলে জাহাঙ্গীরকেই নিশ্চিত করতে হবে। আর দ্বিতীয়ত এবার যেন জাহাঙ্গীর লাঞ্চটা সেরে নেয়। নাহলে খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে। বলে নন্দিনী রুম থেকে বেড়োতে লাগলো। নন্দিনীকে রুম থেকে বেড়োতে দেখে সুস্মিতা, যে এতক্ষণ আড়িপেতে জাহাঙ্গীর ও নন্দিনীর সবকথা শোনার চেষ্টা করছিলো, সে সজাগ হয়েগেলো। চটজলদি সে দরজার পাশ থেকে সরে দূরে চলে গেলো যাতে নন্দিনী বেড়োনোর সময় বুঝতে না পারে তার বান্ধবী সুস্মিতা কাছে পিঠেই ছিল এবং তার কথা লুকিয়ে চুড়িয়ে শোনার ব্যর্থ চেষ্টা করছিলো। ব্যর্থ চেষ্টা কারণ সুস্মিতা সেই অর্থে কিছু ঠাহর-ই করতে পারলো না ঠিক কি হয়েছিল ওদের মধ্যে। শুধু এইটুকু বুঝলো যে কোনো একটা কারণে তার বান্ধবী জাহাঙ্গীরকে কষিয়ে চড় মেরেছিলো, আর জাহাঙ্গীর নন্দিনীর কাছে অনবরত ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছিলো। তবে কি তার অনুমানই ঠিক? জাহাঙ্গীর কোনোপ্রকার অসভ্যতামো করেছে নন্দিনীর সাথে? করলেও ঠিক কতোটা? এতটা দুঃসাহস সেই লোকটার! যতোই হোক নন্দিনী তার বেস্ট ফ্রেন্ড! হালকা ফুলকা ফ্লার্টিং করা ঠিক আছে কিন্তু তা বলে একেবারে মোলেশটেশন! নাহঃ! এটা তো মেয়ে হিসেবে সেও কিছুতে মানতে পারবে না। নন্দিনীকে এই বিষয় নিয়ে ডাইরেক্ট কথা বলতে হবে, জানতে হবে এক্সাক্টলি তখন টিচার্স রুমে হয়েছিলটা কি?? মানছি এটা জাহাঙ্গীরের এলাকা। তাই বলে সে যা ইচ্ছা তাই করে পার পেয়ে যাবে? তাও একটা মেয়ের সাথে! সেটা ভাবলে সে ভুল করবে! মারাত্মক ভুল! সুস্মিতা মনে মনে এসব ভেবে রাগান্বিত হচ্ছিলো, কি ঠিক সেই সময়ে সুস্মিতার ফোনে কল এলো। তড়িঘড়ি সে একটা ফাঁকা জায়গায় গিয়ে কল-টা রিসিভ করলো। কল-টা ছিল তার প্রেমিক অঙ্কিতের, স্বামী সুমনের নয়। দূর থেকে নন্দিনী তার বান্ধবীকে দেখলো, ফোনে কারোর সাথে কথা বলছে। একবার ভাবলো জাহাঙ্গীরের ব্যাপারটা সে শেয়ার করবে কিনা সুস্মিতার সাথে। এখানে আপন বলতে এখন সেই শুধু। জাহাঙ্গীর যদিও বা নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে তবু ভরসা নেই, আবার যদি তার পুনরাবৃত্তি ঘটায়! তাই সুস্মিতার সাথে এই ঘটনা শেয়ার করাটাই ভালো। এই ভেবে নন্দিনী সুস্মিতার দিকে এগোতে থাকলো। নন্দিনী খেয়াল করেছিলো তার বান্ধবী এত রোদেও স্কু'ল প্রাঙ্গনে সবার অলক্ষ্যে দূরত্ব বজায় রেখে ফোনে কথা বলছে। সুস্মিতার কথোপকথনের ভঙ্গিমা দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো ফোনের ওপারে যিনি রয়েছেন সেটা ওর স্বামী নয়। সুমনের সাথে হেসে এত ভালো করে কখনো কথা বলেনা সুস্মিতা। নন্দিনী তার বান্ধবীকে চেনে। এ নির্ঘাত সেই লোফার অঙ্কিত টাই, যার সাথে সুস্মিতা কথা বলছে। "উফ্ফ্ফ্হঃ!! এই মেয়েটা দেখছি নিজের সংসারটা ভেঙেই ছাড়বে", মনে মনে ভেবে সুস্মিতার দিকে যাচ্ছিলো নন্দিনী। নন্দিনীকে আসতে দেখা মাত্রই সুস্মিতা চট করে ফোনটা কেটে দিলো। নন্দিনী বান্ধবীর কাছে গিয়ে বললো, "কিরে, এত রোদে সবার থেকে আলাদা হয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছিস যে? অঙ্কিতের সাথে কথা বলছিলিস বুঝি?" "সবই তো জানেন প্রিসাইডিং অফিসার ম্যাডাম, তাও কেন জিজ্ঞেস করছেন?" "করছি কারণ তোকে সাবধান করার জন্য। তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, আমি তোর খারাপ কখনোই চাইবো না নিশ্চই!" "সত্যি তুই আমাকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবিস?" "হ্যাঁ, কোনো সন্দেহ আছে?" "ওকে, তাহলে বল ওই জাহাঙ্গীরের সাথে তোর এক্সাক্টলি কি হয়েছে? তুই প্রথমে লাঞ্চ করতে এলি, তারপর হঠাৎ উঠে গিয়ে টিচার্স রুমে চলে গেলি। ওখান থেকে কিছুক্ষণ পর ফিরে এলি। সারাক্ষণ তোর মুড অফ ছিল। আমাকে বেকার ধমক দিলি! প্রথমে বললি কিছু সই-সাবুত করতে গেছিলিস। ঠিকমতো লাঞ্চ করলি না। তাই একটু চেপে ধরায় বললি, ফোন ফেলে এসে ছিলিস তাই খুঁজতে গেছিলিস। কিন্তু খুঁজে পাসনি। তাই আবার লাঞ্চ শেষে টিচার্স রুমে যাবি। আমি চাইলাম যেতে তোর সাথে তুই সঙ্গ নিলিনা। এখন দেখছি তোর হাতে ফোন অর্থাৎ পেয়েছিস অবশেষে। কিন্তু এই গোটা সময়টা জুড়ে জাহাঙ্গীর টিচার্স রুমেই ছিল। প্রথমবার ফোন খুঁজতে গিয়ে না পেয়ে ফেরার পর তোকে কিছু একটা নিয়ে খুব আপসেট হয়ে থাকতে দেখেছিলাম! এখন অবশ্য ঠিক লাগছে তোকে, কিন্তু তখন কি হয়েছিল? বল না রে!.... কি হয়েছে তোর আর জাহাঙ্গীরের মধ্যে?.... হ্যাঁ রে, জাহাঙ্গীর কি তোর কোনো সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে? প্লিজ বল! দেখ আমি কিন্তু তোকে সব কথা শেয়ার করি, তুই করবি না ?" আসলে সুস্মিতা বাইরে থেকে আড়ি পেতে শোনার চেষ্টা করলেও সেরকম কিছু শুনতে পায়নি। শুধু শুনতে পেয়েছে যে নন্দিনী নাকি জাহাঙ্গীরকে কষিয়ে একটা চড় মেরেছিলো! আর জাহাঙ্গীর ওকে ওর হারিয়ে যাওয়া ফোনটা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলছিলো। কিন্তু নন্দিনী জাহাঙ্গীরকে চড় মারলোই বা কেন ? সামান্য ফোন খোঁয়া যাওয়ার জন্য তো মারবেনা! কি এমন করেছিলো ওই জাহাঙ্গীর যার জন্য চড় মারার সিচুয়েশন এসে পড়লো? সুস্মিতার মনে বারবার একই খটকা লাগছিলো। সেই জন্যই সুস্মিতা অত্যুৎসাহী হয়ে উঠলো সবটা জানার জন্য! এদিকে নন্দিনীও বেশ ভাবনায় পড়ে গেলো। বুঝতে পারছিলোনা সে আদেও এসব কথা সুস্মিতাকে বলবে কিনা? সুস্মিতা যা চালাক চতুর মেয়ে, ওর কাছ থেকে কিছু লুকোনোও তো মুশকিল! কিন্তু কৌতূহলের বশে যদি সে ডাইরেক্ট জাহাঙ্গীরকে এই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করে বসে?? সুস্মিতা খুব অ্যাগ্গ্রেসিভ মেয়ে। একবার যদি জানতে পারে জাহাঙ্গীর তার বান্ধবীর কোমলতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল তাহলে সে তুলকালাম বাঁধিয়ে দেবে। গোটা গ্রামে খবর চাউড় হয়ে যাবে তখন। কারণ খবর চাউর হতে গ্রামে বেশি সময় লাগেনা। নন্দিনীর তা ভেবেই ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো। যতই হোক নন্দিনী একজন মেয়ে। সবাই কিছু না বুঝে নন্দিনীর দোষই দেখবে, তার চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করবে। আর গ্রামবাংলার দিকে খাপ পঞ্চায়েত বসে, শুধুমাত্র মেয়েদেরকেই কারণে-অকারণে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য। বিষয়টা তখন এমন দাঁড়াবে যেন "যত দোষ নন্দিনী ঘোষ! সরি, নন্দিনী চ্যাটার্জী!".. নাহঃ! সুস্মিতাকে এসব নিয়ে রায়েতা ফেলাতে দেওয়া যাবেনা। নন্দিনীকেই সামলাতে হবে সবকিছু। তাছাড়া জাহাঙ্গীর তো ক্ষমা চেয়েই নিয়েছে। তাহলে এত জলঘোলা করে কি লাভ? মনে মনে ভাবলো নন্দিনী। "ওহঃ, কিছুনা। তেমন সিরিয়াস কিছু হলে আমি তোকে নিশ্চই জানাবো, ডোন্ট ওয়ারী! যতক্ষণ আমি সব সামলে নিতে পারছি ততোক্ষণ আমাকেই সামলাতে দে, নাহলে তো তুই আছিস, আমাকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য।" নন্দিনীর এই কথা শুনে সুস্মিতা একটু ইমোশনাল হয়ে গেলো। তার বান্ধবী তাকে যতটা ভরসাযোগ্য বলে মনে করে ততোটা আর কেউ মনে করেনা। তার স্বামীও নয়। তাই জন্যই তো সে এই ভুল পথটা ভুল জেনেও বেছে নিয়েছে, পরকীয়ার পথ। নাহলে কোনো বিবাহিতা মেয়ে কি ইচ্ছে করে নিজের বিবাহিত জীবন বাজি রাখতে চায়? একজন পুরুষ পরকীয়া করে যৌনলালসার জন্য, তবে স্ত্রী পরকীয়া করে মানসিক সুখ না পেলে। যাই হোক সুস্মিতা ভাবলো এখন আর চড় মারার প্রসঙ্গটা না তোলাই ভালো। সে যে জানে নন্দিনী জাহাঙ্গীরকে চড় মেরেছিলো সেটা গোপন করে গেলো। ভাবলো নন্দিনী যখন বলছে এই বিষয়টা সে একাই দেখে নিতে পারবে তাহলে নিশ্চই সেই সাহসটা ওর মধ্যে রয়েছে। এমনি এমনি তো সরকার ওকে একটি বুথের প্রিসাইডিং অফিসার করে পাঠায়নি! নিশ্চই কোনো গুণ দেখেছে, নাহলে তো সেও হতে পারতো অফিসার। একই বছরে জয়েনিং, একইসাথে দুজনে শিক্ষকতা করে, তাও! মনে মনে হালকা হলেও সুস্মিতার সেই নিয়ে নন্দিনীর উপর ঈর্ষা রয়েছে বৈকি! এছাড়া সুস্মিতা আরো ভাবলো, সে দরজার আড়াল থেকে একটা বিষয় খেয়াল করেছিল যে জাহাঙ্গীর ক্রমাগত কোনো একটা বিষয় নিয়ে নন্দিনীর কাছে ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছিলো। তার মানে জাহাঙ্গীর যাই করে থাকুক না কেন তা নিয়ে সে অনুশোচিত। তাই বিষয়টা নিয়ে অতো পর্যালোচনার দরকার এখনই আছে বলে আর মনে করলো না সুস্মিতা। নন্দিনী কথা ঘোরানোর জন্য অঙ্কিতের প্রসঙ্গটা তুললো, "বাই দা ওয়ে, তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করা হয়নি। তুই কেন আমার সাথে হাকিমপুরে আসার প্ল্যানটা ক্যানসেল করলি? ওই অঙ্কিতের জন্য?" সুস্মিতা তখন নন্দিনীর হাত ধরে স্কু'ল বিল্ডিংয়ের একটা কোণে ছায়ার তলায় নিয়ে গেলো যাতে তাদের প্রাইভেট টক্ পাঁচ-কান না হয়। নন্দিনীকে একটু নিরিবিলিতে নিয়ে এসে তারপর সুস্মিতা বললো, "নন্দিনী, তুই তো জানিস অঙ্কিত কতোটা আমাকে চায়, আই মিন সময় কাটাতে, একসাথে। .... ও চাইছিলো আমাকে বাইকে করে ড্রপ করে দিয়ে যাবে। তাই কাল রাতে ম্যাসেজ করলো, আর আমি তক্ষুনি রাজি হয়েগেলাম। সুমন আর ওর বাড়ির লোক জানতো আমি তোর সাথে যাবো। সেই বলেই বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলাম। সকাল থাকতে একটু আগেই বেড়িয়েছিলাম। ট্যাক্সি নিয়ে মেট্রো সিনেমার সামনে এলাম। সেখানে অঙ্কিত বাইক নিয়ে আমার জন্য ওয়েট করছিলো। ব্যাস! আমি ওর সাথে চলে এলাম।....." "সুস্মিতা তুই বুঝতে পারছিস তুই কি করছিস? আগুন নিয়ে খেলছিস তুই? যেদিন সুমন জানতে পারবে সেদিন যে কি হবে সেটা ভেবেই আমি বারবার শিউরে উঠি!" "ডোন্ট ওয়ারী ডার্লিং! ঠিকমতো বুদ্ধি খাটিয়ে পরকীয়া করলে স্বামীরা কখনোই জানতে পারেনা। হাসবেন্ড ডাসেন্ট নোও (Husband doesn't know)!" "husband doesn't know!" "ইয়েস বেবি! তাই জন্যই তো তোকে বলছি জাহাঙ্গীর যদি সেরকম কিছু না করে থাকে তাহলে তুইও একটা চান্স নিতে পারিস।" জাহাঙ্গীরকে নন্দিনীর সামনে কোনো একটা বিষয় নিয়ে কাকুতিমিনতি করে ক্ষমা চাইতে দেখেছিল সুস্মিতা। তাই পরে সে ভাবলো যে মানুষটা এইভাবে নন্দিনীর লিট্রেয়ালি পায়ে পড়ে ক্ষমা চাইছে, সে পূর্বে আর যাই করে থাকুক না কেন ভবিষ্যতে নন্দিনীর কোনো ক্ষতি করার কথা ভাববেনা। অন্য কোনো কারণে নাহলেও, শুধু ভালো লাগার তাগিদেই গুন্ডার মতো দেখতে লোকটা নন্দিনীর প্রতি সদাই তুলোর মতো নরম থাকবে। আর নন্দিনী থাকবে ডোমিনেন্ট পজিসনে। সেই কারণেই সুস্মিতা এত কিছু হওয়ার পরেও নন্দিনীকে আবার উস্কাতে শুরু করলো এসব নিষিদ্ধ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য। "আমার কোনো দরকার নেই এসব চান্স নেওয়ার। আমি অনিকেতের বউ হয়েই সুখে আছি।" "আমিও তো সুখে থাকতে চেয়েছিলাম নন্দিনী। আজ যদি সুমন আমার দিকে নজর দিতো আমি কি ওই অঙ্কিতকে পাত্তা দিতাম! সুমন সবদিক থেকে ওর থেকে অনেক বেটার। কিন্তু স্বামীদের টাইম-ই হয়না নিজেদের স্ত্রীয়ের দিকে নজর দেওয়ার। তোকেই দেখ না, তোর অবস্থাও কিন্তু একইরকম। আমি যতদূর দেখেছি অনিকেতও তোর দিকে খুব একটা নজর দেয়না। সবসময়ে মায়ের কথায় ওঠে ও বসে। কিন্তু তুই একটা মিথ্যে অবয়ব তৈরী করে রেখেছিস তাই। আমি এরকম কম্প্রোমাইস করে সুখে থাকতে চাইনা।" অনিকেত কে নিয়ে সুস্মিতা যে কথা গুলো বললো সেগুলো একেবারে ফেলে দেওয়া যায়না। তবু করারই বা কি আছে নন্দিনীর? সে সুস্মিতার মতো অতো ডেয়ারিং হতে পারবেনা। সুস্মিতা তাকে জানায় যে অঙ্কিত তাকে আজ বিকেলে নিয়ে যাবে। ওর নাকি বশিরহাটেই মামারবাড়ি। তাই জায়গাটা ওর ভালোমতো চেনা। সে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে মামার বাড়ি যাবে বলে। কিন্তু আসল মতলব সুস্মিতার সাথে থাকার। তাই মামারবাড়িতে স্টে করেছে। সেখান থেকে এসে সুস্মিতাকে নিয়ে কোথাও একটা যাবে। নন্দিনী প্রিসাইডিং অফিসার, তাই তার পারমিশন লাগবে। নন্দিনী কিছুতেই রাজি নয় এই বিষয়ে পারমিশন দিতে। বারবার নিজের বান্ধবীকে বোঝাতে লাগলো এই ইলেকশনটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাদের কাছে। এটা কোনো ছেলেখেলার বিষয় নয়। কিন্তু সুস্মিতা ছিল অনড়। সে বললো ভোটিং প্রক্রিয়ার কাজ শুরুর আগেই সে ফিরে আসবে। এরকম হাজার রকমের কথা বলে অবশেষে সে নন্দিনীকে রাজি করিয়ে ফেললো অঙ্কিতের সাথে ঘুরতে যাওয়ার পারমিশন দিতে। আসলে অঙ্কিত আর সুস্মিতা প্ল্যান করেছিল বাড়ি থেকে দূরে এসে এই অছিলায় তারা শারীরিক ভাবে মিলিত হবে। কলকাতায় থাকতে সেই স্কোপ নেই। সুস্মিতা শশুরবাড়িতে থাকে, অঙ্কিত বেকার। যতটুকু সময় পায় তারা তাতে সবার অগোচরে রাস্তা ঘাটে পার্কে হাত ধরে ঘুরে বেড়াতে পারে, শুধু গল্প করে সময় কাটাতে পারে। কিন্তু শারীরিক চাহিদা কারোরই মেটেনা। বাড়ি থেকে দূরে এসে এবার এই খড়া হয়তো মিটবে। .....
04-02-2025, 12:20 PM
Thank you so much to all of you.....
![]() ![]() ![]()
04-02-2025, 12:43 PM
(This post was last modified: 04-02-2025, 02:38 PM by prshma. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আমি আমার জীবনে অনেক পরিচিত ও অপরিচিত মানুষ কে ভোটের ডিউটিতে যেতে ও করতে দেখেছি। কেউ পোলিং অফিসার হিসেবে, কেউ প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে, কেউ মাইক্রো ওবসারভার আবার কেউ ওবসারভার হিসেবে। তারা যে designation এরই হোক না কেনো সবার মধ্যে একটা কমন ব্যাপার আমি লক্ষ্য করেছি। সেটা হলো সবাই এই অপেক্ষাতেই থাকে যে কতক্ষণে এই ভোট শেষ হবে ও কত তাড়াতাড়ি তারা এই ঝুকির, টেনশনের ও বিরক্তিকর ডিউটি শেষ করে নিজের নিজের বাড়ি ফিরবে। কারণ যতক্ষণ তারা বাড়ি না ফিরবে ততক্ষণ তাদের বাড়িতে তাদের প্রিয়জনেরাও তাদের কথা ভেবে দুশ্চিন্তায় থাকবে।
কিন্তু এই সুস্মিতা আমার জীবনে দেখা প্রথম ও একমাত্র মানুষ (??) যার এরকম একটি ঝুকির, টেনশনের ও বিরক্তিকর ডিউটি করতে এসেও, একজন বিবাহিতা মহিলা হয়েও নিজের স্বামী সংসারের কাছে কতক্ষণে ফিরতে পারবে সেই চিন্তা মাথায় না এসে নিজের বিশ্ববেকার বয়ফ্রেন্ডের সাথে এই ফাঁকে কিভাবে সেক্স করতে পারবে সেই চিন্তা মাথায় ঘুরছে। মানে কি ম্যাগ্নিচিউডের দুশ্চরিত্রা মহিলা হলে মাথায় এসব চিন্তার উদয় হয়। নন্দিনীর ভাবগতিক ও আমার খুব একটা ভালো ঠেকছে না। সে যেন খুব সাবধানে থাকে আর কোন প্ররোচনায় পা না দেয় কারণ তার প্রতি জাহাঙ্গীর নামক শকুনটার নজর পড়েছে আর তাকে বিপথে উস্কানোর জন্য তো তার চরিত্রহিনা বান্ধবী আছেই। আশা করব নন্দিনী নিজের ডিগ্নিটি মেইন্টেন করে মুখ না পুড়িয়েই তার স্বামীর কাছে ফেরত আসবে। এখানে মনে রাখতে হবে নন্দিনীর স্বামী অনিকেত কিন্তু স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণার সমীর নয়। অনিকেত কিন্তু কাকোল্ড না, নন্দিনী কিন্তু একবারও বলেনি যে সে অনিকেতের সঙ্গে অসুখী। শুধু স্বামী একটু কম নজর দেয় বলে যদি স্ত্রীয়েরা আরেকজনের সাথে গিয়ে শুয়ে পড়ে তাহলে তো সম্পূর্ণ সমাজব্যাবস্থা ভেঙে পড়তে দুদিন লাগবে না। আগ্রার মানুষ কিন্তু হাঁ করে তাজমহল দ্যাখে না কারণ তারা রোজ তা দেখে, কিন্তু বাইরের লোক এসে মুগ্ধ হয়ে হাঁ করে দেখতে থাকে। কিন্তু আগ্রার মানুষ কি তাজমহল কে ভালবাসেনা বা তাজমহলকে নিয়ে গর্ববোধ করে না ? বাইরের হাঁ করে দেখতে থাকা দর্শকের চেয়ে অনেক গুন বেশিই করে। সেইম উইথ হাসবেন্ডস। এই ব্যাপার টা নন্দিনীর মাথায় যত তাড়াতাড়ি ঢুকবে ততই মঙ্গল। সুস্মিতা সিমস টু বি আ লস্ট কেস, ওর জীবনে চরম দুর্দিন ঘনিয়ে এল বলে।
04-02-2025, 07:46 PM
গল্পে বলা আছে যে সুস্মিতা কলকাতায় থাকতে সুযোগ পায়না তার প্রেমিক অঙ্কিতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে। তাই অঙ্কিতও বসিরহাট এসছে, এই ফাঁকে শারীরিকভাবে মিলিত হতে সুস্মিতার সাথে।
আর নন্দিনী তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি দৃঢ়। তাই জাহাঙ্গীরের পক্ষে হয়তো অতটাও সহজ হবেনা নন্দিনীকে বাগে আনতে। নন্দিনীর স্বামী অনিকেতের সম্পর্কে হয়তো আমাদের আরো জানা বাকি আছে। তারপরই হয়তো অনিকেত আর "স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা" গল্পের সমীরের তুলনা টানা যেতে পারে তার আগে নয়।
05-02-2025, 10:54 AM
(04-02-2025, 07:46 PM)Manali Basu Wrote: গল্পে বলা আছে যে সুস্মিতা কলকাতায় থাকতে সুযোগ পায়না তার প্রেমিক অঙ্কিতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে। তাই অঙ্কিতও বসিরহাট এসছে, এই ফাঁকে শারীরিকভাবে মিলিত হতে সুস্মিতার সাথে।নিজের স্বামী থাকা সত্ত্বেও শুধু একজন বয়ফ্রেন্ড জোটানোই নয় উপরন্তু তার সাথে শারীরিক ভাবে মিলিত হওয়ার ভাবনা একজন স্ত্রীয়ের মাথায় আসাটাই তার দুশ্চরিত্রা হওয়ার বড় প্রমাণ। এই সব মহিলা নিজের যৌনসুখের জন্য নিজের প্রিয়তম মানুষটির পীঠে ছুরি মারতেও পিছপা হবে বলে আমার মনে হয়না। আমি আশা করি নন্দিনী তার চারিত্রিক দৃঢ়তা বজায় রাখবে আর জাহাঙ্গিরের মতন পাপী, লোভী হায়েনাগুলোর বাগে কোনোদিনই আসবে না। সে শুধু তার স্বামীর হয়েই থাকবে।
05-02-2025, 08:32 PM
(04-02-2025, 07:46 PM)Manali Basu Wrote: গল্পে বলা আছে যে সুস্মিতা কলকাতায় থাকতে সুযোগ পায়না তার প্রেমিক অঙ্কিতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে। তাই অঙ্কিতও বসিরহাট এসছে, এই ফাঁকে শারীরিকভাবে মিলিত হতে সুস্মিতার সাথে। আশাকরি এটাও একটা ভালো কাকোন্ড গল্প হতে চলছে,, best of luck
05-02-2025, 10:15 PM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 6 Guest(s)