Poll: সহজ একটা প্রশ্ন করি,গল্প কেমন লাগছে?
You do not have permission to vote in this poll.
ভালো
91.04%
61 91.04%
খারাপ
1.49%
1 1.49%
সাধারণ, (কোন মতে চলে আর কি)
7.46%
5 7.46%
Total 67 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 51 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL ✒️গল্পের খাতা ✒️﴾প্রেমিকা ও বান্ধবী সিরিজ-গল্প নং ২- দাসী কমলিনী-পর্ব ২﴿
(13-01-2025, 02:29 PM)Sage_69 Wrote: রহস্য এতো তাড়াতাড়ি খুলে দিলেন? গল্প কি জলদিই শেষ করে ফেলবেন নাকি?

ইয়েস
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
অদ্ভুত নিয়তি: পর্ব ৪

সময় সকাল ৮: ৩০ । গতকাল  মশা ও গরমের জ্বালায় অর্পণের ঠিকমতো ঘুম হয়নি। ওদিকে এর আগেরদিন নন্দিনীর ঘুম হয়নি গ্রামে আসতে হবে বলে। ফলাফলে গতরাতে স্বামী সেবায় হাতপাখা নাড়তে নাড়তে ঘন্টা খানেকের মধ‍্যেই নন্দিনী ঘুমিয়ে কাঁদা। তাই সকাল বেলা সূর্যমুখী যখন অর্পণের মুখ দেখে বললে,


–এই কি হাল! চোখ দুটি ওমন লাল হয়ে আছে কেন?

তখন নন্দিনীর সত‍্যই খারাপ লাগলো। অর্পণের  এই সবের অভ‍্যেস নেই। এদিকে গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। তবুও ভালো যে আজ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন।মৃদুমন্দ ঠান্ডা বাতাস বইছে, আবহাওয়া শীতল। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি নেই। তাই অর্পণকে স্নান করতে যেতে হল পুকুর পাড়ে। এতে অবশ্য কোন সমস্যা  হলো না, কেন না অর্পণের সুইমিংপুলে সাতার কাটার অভ‍্যেস। তবে সমস্যা না হলেও নন্দিনী গালে হাত দিয়ে বসে রইলো পুকুর ঘাটে। মুখখানি তার হাসি হাসি। সুন্দর দুটি চোখের  দৃষ্টিতে এখন একই সাথে প্রেম ও কামনার ঢেউ দুলে দুলে খেলা করছে। 

গতরাতের অর্পণকে কাছে পেতে সে চাই ছিল বটে,তবে অর্পণের বিশেষ ইচ্ছে না থাকায় সেটি হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এই মুহূর্তে স্বামীর পেশিবহুল নগ্ন দেহটি চোখের সামনে জলে ভাসছে দেখে নন্দিনী কেমন কেমন যেন লাগছে। সে পুকুর পাড়ে বসে ঘন ঘন ওপড়ের দাঁত দিয়ে নিচে ঠোঁট খানি কামড়ে ধরছে। 

আজ নন্দিনীর পড়নে এখানা লাল শাড়ি। সেই সাথে খোঁপায় দিয়েছে বেলি ফুলের মালা। সে এমনিতেও প্রায়ই প্রতিদিন অর্পণের বাসায় ফেরার আগে এমন শাড়ি পরে হালকা সাজগোজ করে থাকে। মনে মানুষটির দুটি চোখে নিজেকে আর্কষণীয় করে তুলে ধরতে মেয়েদের লজ্জা কেন করবে? যদিও এখনো সত‍্য সত‍্যই তাদের বিয়ে হয়নি,তবুও ক্ষতি কি শুনি? এখনও হয়নি তবে পরে নিশ্চয়ই হবে। তাছাড়া নন্দিনী মনে মন্দিরে যার নামখানি লিখে রেখেছে তাকে স্বামী বলে ধর সে যদি মনেই করে! তবে কি অপরাধ হবে?

যাহোক, এখন মনের কথা রেখে আমার পারিবারিক আলোচনায় খানিক মনোনিবেশ করি। গতকাল যে এতো কান্ড নন্দিনীর গ্রামের বাড়িতে হটাৎ ঘটে গেল, তাই দেখতে পাড়ার এক রকম ভেঙে পরেছিল এই বাড়িতে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোক সূর্যমুখী ও অর্পণের কথা বিশ্বাস করেছিল বটে, তবে নন্দিনী ঠিক জানতো তার বাবা সূর্যমুখীর কোন কথাই বিশ্বাস করে নি। তাই আজ সকাল সকাল বাবার ঘরে নন্দিনীর ডাক পড়ে। যদিও অর্পণের ইচ্ছে ছিল সত‍্য কথা চেপে রাখা,যেন নন্দিনীর পিতামাতা কষ্ট না পায়। কিন্তু নন্দিনীর পক্ষে বাবার হাতে ধরে মিথ্যা বলা সম্ভব ছিল। তাই আজ সকালে বাবার ঘরে ডাক পরার পরে নন্দিনী অল্প কথায় তার বিগত নয় বছরের সবকিছুই বলে দিয়েছে। অবশ্য তাদের বাপ মেয়ে কথায় অন্য কেউ ছিল না। কিন্তু কথা শেষ হতেই ঘরের ভেতর যখন নন্দিনীর মা ঢোকে। তার অশ্রুসিক্ত চোখদুটো দেখে নন্দিনী যা বোঝার বুঝে নেয়।

তারপর খানিকক্ষণ মেয়ে বুকে জড়িয়ে নন্দিনীর মা এই লাল শাড়িটা নন্দিনীর  হাতে দেয়। সেই সাথে এও বলে যে–অর্পণের মত থাকলে আজেই তাদের মন্দিরে নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দেওয়া হবে। তবে নন্দিনী অল্প ভয় ভয় করছে। সে মিথ্যা বলে নি, অর্পণ সত্যিই এই সব ধর্মীয় রীতিনীতি মানে না। সে বোঝে কাগজ আর কলমের মিলবন্ধন। 

তবে ভরসা এই যে সূর্যমুখী তাদের সাথে আছে। তাই ত নন্দিনী মনের দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে অর্পণের সুবিধা অসুবিধার দিকে বিশেষ মনোযোগী হয়ে উঠেছে। অবশ্য এতেও সমস্যা দেখা দিল। তাদের শহরের বাড়িতে সবার একসাথে বসে খাবার নিয়ম ছিল। কিন্তু এবাড়িতে নিয়মটা একটু ভিন্ন। তাই নন্দিনী যখন অর্পণকে খেতে বসিয়ে সমুখে হাতপাখা নিয়ে বাতাস করতে বসলো,বলা বাহুল্য অর্পণের অস্বস্তি  চরমে পৌঁছালো। খাবার সময় সমুখে বসে কেউ মুখের দিকে চেয়ে থাকবে এটা ভেবে তার ক্ষুধা অর্ধেক এমনিতেই  কমে গেল। সূর্যমুখী আশে পাশে ছিল না,তাই নন্দিনী অর্পণের কম খাদ্য গ্রহণের হেতু বুঝলো না।  সে ভাবলো খাবর ভালো হয়নি। সুতরাং খাবারের দোষ কাটাতে স্বামী সেবার বেগ বৃদ্ধি পেল।  অন্য দিকে নন্দিনীর সর্বক্ষণ পেছন পেছন ঘোরাঘুরি দেখে অর্পণ  রীতিমতো বিরক্ত হয়ে উঠলো। বোধকরি আর কিছুক্ষণ এই রূপ চললে নন্দিনী ভয়ানক এখানা ধমক খেত।তবে নন্দিনীর ভাগ্য আজ বিশেষ ভালো ছিল । মোক্ষম সময়ে সূর্যমুখী পৌঁছে অবস্থা সামলে নিল এবং নন্দিনীকে বারাবারি রকমের স্বামী সেবার ফল কি রকম হতে পারে, তার খানিকটা বুঝিয়ে দিল।

///////////

মন্দিরে হঠাৎ বিয়ের কথায় অর্পণ যতটা চমকাবে বলে নন্দিনী ভেবে রেখেছিল। দেখা গেল কার্যক্ষেত্রে অর্পণ ততটা চমকালো না। মন্দিরে বিবাহ সম্পূর্ণ হবার পর তারা গ্রামের বাড়িতে থাকলো আরো কদিন। মেয়েকে দীর্ঘ নয় বছর পরে ফিরে পেয়ে পরিবারের কেউই সহজে ছাড়তে চাইলো না। 

এদিকে কদিন এখানে থেকে অর্পণের এক বিশেষ বিশ্রাম স্থান তৈরি হল পুকুর পাড়ে। সেখানে বড় একটি কাঁঠাল গাছের নিচে ঘাসের ওপড়ে চাদর বিছিয়ে বসে সে ল‍্যাপটপ খুলে অফিসের কাজ ও পড়াশোনা দুই চালাতো। 
পুকুর পাড়ে জাগয়াটি নির্জন। চারিধারে আম, কাঁঠাল,কলা ও বনঝোপের আড়াল। তার মাঝে পুকুর ঘাটের কাছাকাছি কাঁঠাল গাছের নিচের এই জায়গাটাই খানিক পরিস্কার। বোধহয় নিয়মিত অর্পণের অগোচরে কেউ জায়গাটির বিশেষ যত্ন নিয়ে থাকবে হয়তো।

এমনিতে এদিকটায় কেউ তেমন আসে না। কিন্তু গতকদিন ধরে নন্দিনী বোধকরি শখের বশেই পুকুরের স্নান করতে আসে। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে অর্পণ পুকুর পাড়ে না থাকলে একা একা বেচারী পুকুর পাড়ে শখ মেটাতে আসে না। এর জন্যে আমাদের গল্পে নায়িকাকে দোষ দে চলে না! কেন না নির্জন জায়গায় একা একা স্নান করতে বেচারী নন্দিনী ভয় ভয় করে হয়তো!
প্রথম প্রথম এমন কান্ডে অর্পণ খানিক বিরক্ত হলেও ইদানিং সেও মনে মনে অপেক্ষায় থাকে কখন নন্দিনী স্নানে আসবে। নন্দিনী এখন অর্পণের স্ত্রী। সুতরাং বলতে লজ্জা নেই; পুকুর পারে স্নানরত অর্ধনগ্ন রমণীটিকে দেখে অর্পণের কামদন্ডে কামনার শিহরণ বইতে থাকে। এটিও কিন্তু অপরাধ নয়!
আর যেহেতু এদিকটায় তেমন কেউ আসে না,তাই সেই সুযোগে জলসিক্ত কাপড়েই দুই একবার কাঁঠাল গাছের পেছনে হাতের ও যৌবনদন্ডের সুখ অর্পণ ইতিমধ্যে করে নিয়েছে। এতে অবশ্য নন্দিনী বাঁধা দেয়নি বরং স্বামীর উৎসাহ বারিয়েছে। 

নির্জন পুকুর পাড়ে বনঝোপ ও কাঁঠাল গাছের আঁড়ালে; অর্পণ যখন নন্দিনীকে নরম ঘাসে চাদর বা কোন বৃহৎকার গাছে গায়ে চেপে ধরতো! সত‍্য বলতে খনিকের জন্যে নন্দিনীর অন্তর আত্মা ভয়ানক রূপে কেঁপে উঠতো। হাজার হোক সে বেচারী স্বামীর সঙ্গে শুধু একটু দুষ্টুমিষ্টি খেলা করতেই আসতো পুকুর পাড়ে!  কিন্তু এতেই যে তার স্বামীটির কামনা জ্বালা অমন ভাবে জ্বলে উঠবে, তা কি আর সে জানতো প্রথম প্রথম!

তবে জানার পর যে নন্দিনীর দুষ্টুমি কমেছে এমনটা পাঠকেরা ভেবে থাকলে,ওটা তাদের ভুল ভাবনা। এমন দুষ্টুমি করে পুকুর পাড়ে নন্দিনী দু-তিনবার চোদন খেলে দমে যায়নি। তবে এতে করে অর্পণের মনে যেটুকু আড়ষ্টতা ছিল তাও যে কেটে গিয়েছে একথা সত্য।

বিশেষ করে আগে যেমন নন্দিনী চোখে চোখ রেখে অর্পণ নিজের কঠিন সত্তা খনিকের জন্যে হারিয়ে বসতো, এখন তা  একদমই হারিয়ে ফেলেছে সে। নন্দিনীর প্রতি কঠিন হাওয়াটা তার অভিমানের বহিঃপ্রকাশ প্রকাশ ছিল। কিন্তু এখন নন্দিনী শুধুমাত্র তার নিজের হওয়াতে  রাগ অভিমান ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে এসেছে। মনে পরে মধুচন্দ্রিমাতে অর্পণ নন্দিনীকে জিজ্ঞেস করেছিল,

– আমি শুনেছিলাম বাসর রাতটি স্মরণীয় করে রাখতে স্বামী স্ত্রীকে কিছু বিশেষ উপহার দেয়। এমন হঠাৎ বিয়ে হবে তা আমার জানাছিল না। তাই বলছি,আমার স্ত্রী হিসেবে তুমি আমার কাছে কি চাও?

অর্পণের কথা শুনে নন্দিনী লজ্জা ভুলে এক দফা হেসেছিল। তাই দেখে রেগে গিয়ে ছিল অর্পণ এবং তারপর মধুচন্দ্রিমা একপাশে রেখে অন্য পাশে গাল ফুলিয়ে শুয়েছিল সে।  তখন নন্দিনী নিজের ভুল বুঝতে পেরে পেছন থেকে স্বামীকে জড়িয়ে গালে কয়েটি চুম্বন এঁকে দিয়ে বলেছিল,

–  আমার যা চাওয়ার তাতো আমি পেয়েই গিয়েছি।তুমি আমাকে তোমার বউ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছ, এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছু নেই । এখন শুধু তোমার বউ হয়ে সারাজীবন তোমাকে ভালোবাসার অধিকারটুকু চাই আর চাই তুমি আমার চোখে চোখ রেখে মনে আশ মিটিয়ে.....

এইটুকু বলেই নন্দিনী খানিক লজ্জায় নিজের মুখ লুকিয়েছিল অর্পণের ঘাড়ে। আগে এর চেয়ে খারাপ কথাও নন্দিনীর মুখে আনতে সংকোচ ছিল না। কিন্তু এখন এই লজ্জাটা ভাড়ি এখানা আপদ হয়েছে। কিন্তু সে যাই হোক,তখনও নন্দিনীর কথা শেষ হয়নি। তাই অর্পণের ঘাড়ে মুখ রেখেই বাকি কথা ধরা গলা বললে সে,

– আশির্বাদ কর যেন সারাজীবন চোখ বন্ধ করে তোমাকে বিশ্বাস করে তোমার উপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে তোমার সাথে সংসার করতে পারি ।

অর্পণ পাশ ফিরে কিছু বলতে চাই ছিল,কিন্তু নন্দিনী তাকে পাশ ফিরতে দেয়নি। কেন না বেচারীর কথা এখনো শেষ হয়নি। 

– আর শোন! আমাকে খুব বেশী ভালো না বাসলেও চলবে তোমার । শুধু যতটুকু ভালোবাসলে আমি ভারমুক্ত থাকতে পারবো ততটুকু বেসো,আর কিছুই চাই না আমি তোমার কাছে।

এদিকে না ফিরেও অর্পণ বুঝেছিল নন্দিনী কাঁদছে,তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক করতে সে বললে,

– সে তুমি কিছু নাই চাইতে পারো, কিন্তু আমর নিজের যে কিছু চাওয়ার আছে! তার কি হবে?

নন্দিনী তখন অর্পণের ঘাড় থেকে মাথা তুলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল স্বামীর মুখের দিকে। আর অর্পণ সে রাতে প্রথম বারের মতো তার প্রেয়সীর অপূর্ব দুটি চোখে চোখ রেখে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থেকে হঠাৎ বলেছিল,

– বাচ্চা চাই,অনেক গুলি!

– ধ‍্যাৎ...

এটুকুই বলেই নন্দিনী লজ্জা মিশ্রিত হাসি হেসে সরে পরে খানিক দুরে। তবে পরক্ষণেই স্বামীর বুকে বন্দী হয়ে  তার লজ্জায় রাঙা মুখানি অর্পণের বুকে গুজে দিয়েছিল। তবে অর্পণের তখন লাজ লজ্জা দেখবার  মতো ইচ্ছে বা  মনভাব কোনটাই ছিল না। সে নন্দিনীর শাড়ির ওপর দিয়েই ডানপাশের দুধটা খাঁমচে ধরে আলতো ভাবে টিপতে টিপতে বললো,

– উঁহু্...ওসব বললে হবে না, তোমার  ইনজেকশনের মেয়াদ আর মাত্র কয়েক দিনের তারপর থেকে নিয়মিত আমার এই গুদখানি তিন বার কর ভিজিয়ে দেওয়া হবে....

স্বামীর কথা শুনতে শুনতে নন্দিনীর যেন পায়ের ডগা থেকে কানের লতি পর্যন্ত সর্বাঙ্গে উষ্ণতা ছড়িয়ে পরলো। নন্দিনী ইতিমধ্যে জেনেছিল যে তার সম্পর্কে অর্পণ সব কিছুই জানে। কিন্তু এত গভীর ভাবে জানে তা জানা ছিল না।  কিন্তু নন্দিনীর এখনো ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না  অর্পণের কথা গুলো। কিন্তু তাতে কি আসে যায়! তার নিরবতা সুযোগে অর্পণ এক হাতে স্তন ও অন্য হাতে নাভির কাছটা খাঁমচে ধরেছে। নন্দিনী দাঁতে ঠোঁট কামড়ে আধবোঝা চোখে চেয়ে আছে অর্পণের দিকে। শহরের নিষিদ্ধ গলির নিষিদ্ধ কোন এক বাড়ীর ছোট্ট একটি ঘরে আজ থেকে নয় বছর আগের একটি ঘটনা মনে পরে; সেদিনকার অন্ধকার ঘরে একের পর এক ঢোকা মানুষগুলোও কি পুরুষ ছিল? বোধ হয় না! মানুষের পেট থেকে জন্ম নিলেই কেউ মানুষ হয় না,তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়। তেমনি শুধু ব‍্যাটা ছেলে হলেই আসল পুরুষ হওয়া যায় না। নয় বছর আগে একটি অন্ধকার রাতে যে প্রশ্ন নন্দিনীর মনে জেগেছিল  অসহ্য যন্তণার মাঝে, আজ অর্পণের দিকে তাকিয়ে সে তার উত্তর খুঁজে পেল। সে এখন জানে আমাদের এই নষ্ট সমাজে মানুষ রূপে ছরিয়ে ছিটিয়ে কিছু জানোয়ার বাস করে, তার মাঝে অর্পণের মত কেউ কে খুঁজে পাওয়া হয়তো সবার পক্ষে সম্ভব হয় না । এই সব ভাবতে ভাবতেই নন্দিনীর চোখে জল এল, তবে তা অর্পণের চোখে পরার আগেই মুছে ফেলে নিজেও যোগ দিল মিলন খেলায়। এই পুরুষটিকে কাছে টানতে তার কখনোই ঘৃণা করানি। বোধকরি মানুষ নিজের জন্য নিরাপদ আশ্রয় চিনতে কখনো ভুল করে না।তাই ত অর্পণকে চিনে নিতেও ভুল হয়নি নন্দিনীর।
////////////

– অঃ .. ও মাগো …আর পারছিনা … উ উ ঊঊহ......

বিছানায় কাটা পাঠার মতোই ছটফট করছিল নন্দিনী । আর অর্পণ নন্দিনীর বাঁ পায়ের আঙ্গুল গুলি মুখে নিয়ে চুষছিল। নন্দিনীর দেহে এই মুহুর্তে একটা সাদা তোয়ালে ছাড়া আর কিছুই নেই। দিনটি নন্দিনীদের গ্রামের থেকে ফেরার প্রায় সাত মাস পরের কোন এক শুক্রবার। সকালে স্নান সেরে নন্দিনী রোজকার মতোই তৈরি হতে বসে ছিল ড্রেসিং টেবিলের সামনে। আর তখনই তার পাগল স্বামী পেছন থেকে এসে একটানে তোয়ালে খুলে উন্মুক্ত করে দিল নন্দিনীর ভেজা চুলগুলি। তারপর কোলে করে নন্দিনী কে ফেললো খাটে। তবে এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল, শুধু নন্দিনীর জানা ছিল না পায়ের আঙ্গুল চুষে ও চুমু খেয়ে কেউকে এতটা উত্তেজিত করা সম্ভব।তার ওপড়ে এখন পায়ে ঠোট ঠেকিয়ে ক্রমশ ওপরে উঠে আসছে অর্পণ | হঠাৎ হাটুর ওপরে  উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়া তে কেঁপে উঠলো সে | পরক্ষণেই অর্পণ বলিষ্ঠ দুই হাতে আরো ফাঁক করে দিল নন্দিনীর পা দুখানি | এরপর ক্রমাগত পাছার ফুটো থেকে গুদের চেরা পর্যন্ত ওপর থেকে নিচে অর্পণের দুষ্ট জিভের ছোঁয়া পাগল করে দিল তাকে। 

এতে করে প্রথমকার না না বুলি এখন  হালকা গোঙানির শব্দে পরিবর্তীত হয়ে গিয়েছে | নন্দিনী এখন কামজ্বরে কাঁপতে কাঁপতে বিছানার চাদর আঁকড়ে কখনো পাছাটাকে ওপরে তুলে দিছে আবার কখনো বা স্বামীর মাথাটা  একহাতে চেপেধরছে তার গুদের মুখে,

 – কি করছো?…. আহহহঃ.... আর পারছিনা.... উউউফ.... এবার ঢোকায় না লক্ষ্মীটি.....প্লীজইইইইই....ফাক মিইই.....

অর্পণ নন্দিনীর এই মিষ্টি আহবান প্রত‍্যাখ‍্যান করলো না। তবে সে নন্দিনীকে উল্টে দিয়ে পেছন থেকে তার রসে ভরা গুদে কামদন্ড প্রবেশ করালো। এবং পরক্ষণেই নন্দিনীর পিঠের ওপরে শুয়ে ডান হাতের আঙ্গুল গুলি ডুবিয়ে দিল নন্দিনীর ঘনকালো কেশরাশিতে। অর্পণের অন্য হাতটি নন্দিনী নিজেই টেনে নিল তার ঠোঁটের কাছে, তারপর যে আঙুলটি সবচেয়ে কাছে পেল!সেটিকেই  মুখে ঢুকিয়ে চুষতে লাগলো প্রাণপণে। 

এদিকে প্রবল চোদন বেগে কামার্ত রমণীর দেহটি সুযোগ পেলেই চিৎকার করে পেছনে বেকে বেকে উঠছে,আবার পরক্ষণেই  অর্পণের দেহের চাপে পিষ্ট হচ্ছে নরম বিছানায়। সেই সাথে ক্ষণে ক্ষণে অস্ফুট কণ্ঠস্বরের,“ফফফফাক.... মী...ফাক মী হার্ড....” শুনেই অর্পণের চোদনক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বোধকরি অর্পণের গাদনের সাথে তাল মেলাতেই বাড়ছে নন্দিনীর গোঙানি।


তারপর এক সময় বিছানার উথাল-পাথাল চোদনলীলা থামতেই দেখাগেল নন্দিনীর  ছোট কর ছাটা যৌনিকেশে সাজানো যোনিপথে  দিয়ে সাদা সাদা তলের ধারা বয়ে চলেছে। আর তার  পাশে শুয়ে নগ্ন দেহি অর্পণ নন্দিনীর ডান হাতখানা তার হাতে নিয়ে চুমু খাচ্ছে। নন্দিনী কান্ত,সে বেচারী পিঠময় এলো মেলো চুল বিছিয়ে  চোখ বুঝে চুপচাপ শুয়ে আছে। তার ঈষৎ ফাঁক করে রাখা রাঙে ঠোঁটে অর্পণ আঙুল বুলাতেই নন্দিনী তা অপূর্ব সুন্দর চোখ দুটি খুলে চাইলো স্বামীর মুখোপানে।  খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকেই বলল,

– এবার ছাড় লক্ষ্মীটি, আমায় আবার শাওয়ার নিতে হবে এখন।

– আজ তো ছুটির দিন, এতো তারা কিসের তোমার? আর একবারটি করতে দেবেনা লক্ষ্মীটি?

– না বাবা, দোহাই তোমার এখন আর নয়!

নন্দিনীর কথায় একটু মন খারাপ করে অর্পণ ছাড়লো তাকে। তবে নন্দিনী উঠে দাঁড়ালেও ব‍্যাপার বুঝে আবারও বসল পাশে। আলতো করে স্বামীর বুকে হাত ছুইয়ে বলল,

– কি হল! মুখখানি অমন হয়ে আছে কেন?

– বললে কি হবে শুনি? আমি এতোদিনে বেশ বুঝেছি তুমি আমায় একদমই ভালোবাসো না কুমকুম।

এই কথায় নন্দিনী না হেসে থাকতে পারলো না। সে হাসতে হাসতেই স্বামীর কামদন্ড মুঠোয় নিয়ে একখানা গাঢ় চুম্বন করলো সেটির লালচে মস্তকে। তারপর সেটিকে তার নরম গালে ঘষতে ঘষতে  হাসি মাখা সুরে বললে,

– তোমায় ভালোবেসে কি হবে শুনি! আমায় সুখী রাখতে এনার অবদানটাই যে বেশী.. 

এটুকু বলেই নন্দিনী স্বামীর কামদন্ডটি তার উষ্ণ মুখের ভেতরে ঢুকিয়ে নিল। নন্দিনীর অভিজ্ঞ মুখের চোষণে প্রবল সুখানুভূতি ডুবে গিয়ে অর্পণের আর কিছুই বলা হলো না। সে শুধু অনুভব করলে নন্দিনীর নরম ঠোঁট দুখানা তার কামদন্ডকে কেমন চারপাশ থেকে আঁকড়ে ধরলো। তারপর নন্দিনীর কোমল ঠোঁট ও  উষ্ণ লালাময় জিভে সম্মিলিত আক্রমণে খানিকক্ষণ চোখ বুঝে মৃদুমন্দ গোঙাতে লাগলো অর্পণ।  অবশেষে নন্দিনীর উষ্ণ মুখের ভেতর সবটুকু কামরস ছেড়ে যখন সে চোখ মেলে চাইলো! তখন নন্দিনী সরাসরি তার চোখে চোখ রেখেই দুহাতে বীর্যমাখা কামদন্ড মুঠো করে চুম্বন করছে।



((সমাপ্ত))



(আগেই বলেছি গল্পটা সম্পূর্ণ আমার লেখা নয়। তবে অল্প শব্দে লেখা এ গল্পটি আমার বিশেষ ভালো লাগাতে আমি বেশ কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছি। সুতরাং এখন এই গল্পের সাথে আসল গল্পে খুব অল্পই মিল আছে। তবুও আমি আসল লেখক বা লেখিকাকে এই গল্পটি লেখার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।❤️)
[+] 9 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
নন্দিনী রহস্যাবৃত জীবন রহস্যই থাকল। জানা হল না কিছুই।
[+] 1 user Likes Tilottama's post
Like Reply
(16-01-2025, 06:11 PM)Tilottama Wrote: নন্দিনী রহস্যাবৃত জীবন রহস্যই থাকল। জানা হল না কিছুই।

আসল গল্পেই রহস্য ফাঁস করেনি গল্পের লেখক বা লেখিকা,তাই আমারও দিতে ইচ্ছে হয়নি। তাছাড়া ওই রহস্য বললে পাঠকেরা কি ভাবে নেবে তা নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল।এই সব মেয়েদের জীবন কথা বলে বোঝানো মতো না। সত‍্য বলতে মনে আঘাত করে ওই সব ঘটনা। তাই নিজে যতটা জানি সেটুকুও লিখতে ইচ্ছে হয়নি। 
Like Reply
নন্দিনী যে জায়গা থেকে উঠে এসেছে, সেই অনুযায়ী গল্পের পরিণতি ঠিক ই আছে! নন্দিনীর মনে চলতে থাকা নয় বছর আগের সেই রাতে পুরুষদের নিয়ে যে প্রশ্ন, ওই লাইন কটা মনের মধ্যে কাটার মতো বিঁধে আছে...।।। Heart
 








PROUD TO BE KAAFIR  devil2


                                 
[+] 1 user Likes Kallol's post
Like Reply
(16-01-2025, 07:25 PM)Kallol Wrote: নন্দিনী যে জায়গা থেকে উঠে এসেছে, সেই অনুযায়ী গল্পের পরিণতি ঠিক ই আছে! নন্দিনীর মনে চলতে থাকা নয় বছর আগের সেই রাতে পুরুষদের নিয়ে যে প্রশ্ন, ওই লাইন কটা মনের মধ্যে কাটার মতো বিঁধে আছে...।।। Heart

❤️
Like Reply
দাসী কমলিনী

রূপকথা,মেইবি একটুখানি―লেসবিয়ান, রোমান্স এন্ড ???

তুষের আগুন যেমন প্রথমে ধিক-ধিক, শেষে হঠাৎ ধূ-ধূ করে জ্বলে ওঠে। তেমনি সমুখে একটি ক্ষুদ্র গ্রামের ঘর গুলো এভাবেই জ্বলে শেষ হলো সারা রাত ধরে।


যুদ্ধ ময়দানে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটেছে গতকাল। শত্রুদের পরাস্ত করে আহত রাজকুমারের যাত্রা পথে এই ক্ষুদ্র গ্রামটি পরলেও বিশেষ কিছু করা সম্ভব হয়নি। কারণ তাদের পৌঁছনোর কিছু আগেই এই গ্রামে লুটপাট করে বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। দুর্বৃত্তরা কে বা কারা ছিল তা জানার অবকাশ মেলেনি। কারণ, জ্বলন্ত ঘরে গুলোতে তখনো অনেকেই আটকা। তার মধ্যে একটি ঘর থেকে এক যুবতীর প্রাণ রক্ষা করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে কুমার জ্ঞান হারায়। কুমারের সেনাদল ও গ্রামবাসীর চেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দিলেও কয়েকজন ইতিমধ্যে নিহত হয়েছে।  
যুদ্ধের সময় কুমার আগে থেকেই আহত ছিল। এবার দ্বিতীয় আঘাতে কুমার অজ্ঞান হওয়াতে ভীত হয়ে সৈনিকেরা তাকে গ্রামের পাশে নদীর ধারে মন্দিরে নিয়ে তোলে। এরপর  দুটি রমণীকে মন্দিরের ভেতরে কুমারের সেবায়  রেখে তারা বাহিরে আলোচনা করতে বসে। 

আলোচনা বিশেষ কিছু নয়,কৌতূহলী সৈনিকদের কয়েকজন এই কথাটি বোঝার চেষ্টায় ছিল যে― কুমার যুদ্ধের পর পর বিশজন সৈনিককে ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে কোথায় নিয়ে চলেছিলেন? এমন আহত অবস্থায় কুমারের আগে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা না করে মুল সেনাদল থেকে আলাদা হওয়ার কারণ কুমার ছাড়া আর কারোই জখনা নেই। তবে এও ঠিক, যদি তাঁরা এই পথে না আসতো তবে হয়তো আরও গ্রামবাসীর প্রাণনাশ হত।

অন‍্যদিকে  মন্দিরের ভেতরে আহত রাজকুমার বিজয় প্রতাপ শুয়ে। তাঁর পা ও ডান বাহুর আঘাতে এক নব যৌবনা কিশোরী ঔষধ লাগানোর কার্যে মগ্ন ছিল। কুমারের বুকে এই মুহুর্তে লোহার বা কাপড়ের কোন রকম আড়ালই নেই। তাই এই কথা বললে অত‍্যুক্তি হয় না যে; আঘাতে ঔষধ লেপনের ফাঁকে ফাঁকে  এই সুদর্শন পুরুষটিকে দেখে নব যৌবনা কিশোরীর মন উদ্বিগ্ন ও চোখে  খানিকটা কম্পন ধরে গিয়েছে।  সে সাথে কিশোরীর সোনা বর্ণ মুখখানি খানিক লজ্জায় রক্তিম হয়ে আছে ।যদিও লজ্জার কারণটি বোঝা যাচ্ছে না।

এবার আহত কুমারের খানিক বর্ণনা বলা ভালো। রাজকুমারের দেহাকৃতি দীর্ঘকায়। গাত্রবর্ণ একসময় হাতির দাঁতের মতোই ছিল তার এখনো বোঝা যায়,তবে রোদে পুরো মুখানি তামাটে বর্ণ ধারণ করেছে। তার বলিষ্ঠ দেহে পুরনো ও নতুন কিছু আঘাতের চিহ্ন সুস্পষ্ট। কুমারের পেশিবহুল বলিষ্ঠ দেহটি দেখলেই তার সম্পর্কে এতো আজগুবি গুজব কেন রটে,তা খানিক অনুমান করা চলে। এই কিশোরী কোন একদিন কার কাছে যেন শুনেছিল, এই রাজকুমারটি যুদ্ধের ময়দানে খোলা তরবারী হাতে সৈন সকলের প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে। বিশেষ প্রয়োজন না হলে হাতির পিঠে চড়ে দূর থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করতে সে নারাজ। এর প্রমাণ সরুপ কুমারের দড়ির মতো শিরা বহুল হাতে ও পাথরের ন‍্যায় কঠিন বুকে বহু আঘাতের দাগ অংকিত।

তবে সে যাই হোক, রাজ পরিবারে পরে ফিরছি।আপাতত সেবারত এই কিশোরীর নামটি বলা প্রয়োজন। তবে নামটি ছাড়া বাকি পরিচয় আপাতত গোপনীয়। 
সেবারত এই কিশোরী নাম কমলিনী। এই মুহূর্তে সে  দুয়ারের বাইরে দূরবর্তী কিছু পোড়া ঘরবাড়ির ওপড়ে  উদিয়মান সূর্যের দিকে তাকিয়ে। সকালের প্রথম সুর্য কিরণের সিগ্ধ আলোকরশ্মি এসে পরেছে তাঁদের ওপরে। এতে কুমার চক্ষুরশ্নীলন করতেই সর্বপ্রথম তাঁর দৃষ্টি পরে সমুখের বসা কমলিনীর মুখপানে। তবে দৃষ্টি স্পষ্ট নয়, তাই কিশোরীকে দেখার সুবিধা  হয় নাই।

এদিকে রাজকুমারের দৃষ্টি স্পষ্ট হবার আগেই যুবতী সরে গিয়ে তার জায়গায় এক মধ‍্য বয়স্ক রমণী আসন গ্রহণ করলো। আর কুমার চারধারে দৃষ্টি পাত কর বোঝার চেষ্টা করলো সে কোথায়। এবং তার পরমুহূর্তেই সে উঠে বসার উদ্দোগ করছে দেখে পাশে বসা রমণীটি অতি মৃদু কিন্তু বীণাবৎ মধুর স্বরে বললে,

– স্থির থাকুন,আপনি আহত।

রাজপুত্র ক্ষীণস্বরে  জিগ্যেস  করলো,

– আমি কোথায়?

– আপনি উত্তম স্থানেই  আছেন,দয়া করে স্থির থাকুন।

এই কথায় কুমার শান্ত হয়ে সেবারত রমণীর মুখপানে দৃষ্টি রাখতেই দেখলে― এক অতি সুন্দরী গৌরবর্ণ রমণী তার পাশে বসে অঙ্গের ক্ষতসকলে সাবধান হাতে কি একটা ঔষধ লেপনে করছে। তবে হাত পায়ের ব‍্যথার চেয়ে  অসহ্য ব‍্যথা অনুভব হয়ে কুমারের মাথায়। তাই গত রাতে ঠিক কি হয়েছিল তা সে এই মূহুর্তে কিছুতেই মনে করতে পারছে না। ওদিকে দূরে হতে ভেসে আসা রোদন ও হাহাকারে মাঝেও এই রমণীটি কিন্তু শান্ত। তবে রমণীর মুখভঙ্গি পর্যবেক্ষণে করে এই কথা বলা যায় না যে, সে আনন্দে আছে। বোধকরি নিস্ফল ক্রন্দনে বিশেষ লাভ নাই বলিয়াই তার এইরূই শান্ত ভাব। অথবা এই শান্ত ভাবভঙ্গিই এই রমণীর স্বভাব।

মন্দিরের বাহিরে বাঁ পাশে সারিবদ্ধ বহৎ বৃক্ষের তলায় কিছু রাজ সৈনিক বিশ্রাম করছিল। তাদের মধ্যে কিছু সৈনিক ক্রন্দনরত গ্রামবাসীর মধ্যে খাদ‍্য বিতরণে ও কিছু সৈনিক তাদেরই আহত সহচরের ও গ্রামবাসীর সেবায় ব‍্যস্ত ছিল। এইরূপ পরিস্থিতি তেও কিছু বালক-বালিকা তাদের চঞ্চল স্বভাবের দরুণ ছুটোছুটি করতে এবং কিছু বাকপটু গ্রাম বাসি আলোচনা করতে ব‍্যস্ত ছিল। আলোচনা বিষয়বস্তু তাদের দূর্গতি থেকে ক্রমশ বর্তমান পরিস্থিতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কুমারের জন্ম ইতিহাস এসে পৌঁছলো। তাই শুনে কিছু রাজ সৈনিক স্বভাবসিদ্ধ কারণেই সেই আলোচনায় যোগ দিল । বোধকরি তাদের এই আলোচনার ফাঁকে পাঠকদের কেউ খানিক রাজ ইতিহাস বলা আবশ্যক।

উত্তরঞ্চলের  শৈলবন্ধুর অধিত্যকার একপ্রান্তে কন্টকমণি  নামক এক ক্ষুদ্র রাজ‍্যের রাজধানী কঙ্কনপুর। শুরুতেই বলে রাখা ভালো যে― আমার এই ইতিহাসে দেশ কাল এবং পাত্র সম্পর্কে যে সকল স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে, তার সবগুলোই সুস্পষ্ট মিথ্যা। সুতরাং যে সকল পাঠক-পাঠিকাদের রসবোধের চেয়ে কৌতূহল বোধ বেশি তাদের বোধকরি ঠকতে হবে। যাহোক, কন্টকমণি রাজ‍্যের রাজা চন্দ্রপ্রতাব যুদ্ধপ্রিয় ছিলেন না। এমনকি যুদ্ধে তিনি কতটা পারদর্শী ছিলেন তাও সন্দেহ জনক। তাছাড়া রাজা চন্দ্রপ্রতাবের শত্রুদের চাইতে মিত্রদের সংখ্যা ছিল বেশি। হয়তো সেই কারণেই রাজা চন্দ্রপ্রতাব যুদ্ধের কথা কখনো ভাবতেই পারতেন না। কিন্তু তিনি না ভাবলেও  শত্রুপক্ষ আঘাত আনলো হঠাৎ। তবে এমন আক্রমণ কেউ যে আশা করে নি এমনটাও নয়। এই আক্রমণের পূর্বাভাস কন্টকমণি রাজ‍্যের পার্শ্ববর্তী দুই মিত্ররাজ‍্য আগেই অনুমান করে। এবং মহারাণী গীতমাধুরী দেবীর কাছে গোপনে পত্র আদানপ্রদান করে। কিন্তু যখন  আঘাত আসে হঠাৎ! তখন আর কিছুই করার থাকে না। 

রাজা চন্দ্রপ্রতাব বীর ছিলেন না। দীর্ঘ সময় যুদ্ধের প্রয়োজন পরে নাই বলিয়া হোক বা রাজার সৈনিকদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নাই বলিয়াই হোক। শত্রুপক্ষের হঠাৎ আক্রমণে কন্টকমণি রাজ‍্যের রাজা চন্দ্রপ্রতাব বন্দী হলেন। তবে কঙ্কনপুর নগরী শত্রু পক্ষের রাজা অর্জুন সিংহের দখলে বেশিক্ষণ ছিল না। কেন না, রাজা চন্দ্র প্রতাব  মিত্র রাজ‍্যের পাঠানো পত্র পাঠে বিশেষ মনোযোগ না দিলেও― গীতমাধুরী দেবীর অনুরোধে ও নিজ উদ্যোগে সেনাদল গঠন করে দুই রাজ‍্যের রাজাই গিরিপথে এগিয়ে ছিলেন আক্রমণ প্রতিরোধ করতে। সুতরাং পার্শ্ববর্তী দুই মিত্র রাজ‍্যের জোটে চন্দ্রপ্রতাব অতি শিগ্রই মুক্ত হন। তবে ততক্ষণে এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনা রাজ-অন্তঃপুরে রচনা হয়ে গিয়েছে। 

অন্তঃপুরে শত্রু সৈন্যদের আক্রমণের সমুখে বালক রাজকুমারের প্রাণ রক্ষার্থে মহারাণী হাতে অস্ত্র তুলেছিলেন। এখানে বলা আবশ্যক যে রাণী পরমা সুন্দরী নারী হলেও তিনি অসিবিদ্যায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। লোক মুখে এও শোনা যায় যে― মহারাণী গীতমাধুরী দেবীর মতো অসিবিদ‍্যায় পারদর্শী দ্বিতীয় কেউ কন্টকমণি এমনকি তার আশপাশের রাজ‍্যের মধ্যেও ছিল না।কেন না, মহারাণীর দুই হাতেই তরবারী সমান কথা বলতো। কিন্তু তারপরেও একজনের পক্ষে শত্রুদের বিপুল সেনাদল সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। সুতরাং রাজপুত্রের প্রাণ রক্ষা হলেও মিত্রবাহিনীর অন্তঃপুরে পৌঁছনোর আগেই মহারাণী প্রাণ ত‍্যাগ করেন। তার ওপড় আরো দুঃখের বিষয় এই যে; এই মর্মান্তিক ঘটনাটি বালক রাজকুমারের চক্ষু সম্মুখেই ঘটিয়াছিল।

মাতার মৃত্যু বালক কুমারের মনে গভীরভাবে আঘাত আনে। এরপর কালে কালে মাতৃ হত‍্যার স্মৃতি ভুলতে কুমারের বাল‍্যকাল অতিবাহিত হয় অশ্বারোহণ, অসি ও নানা বিধি অস্ত্রবিদ‍্যা শেখার মধ্যে দিয়ে। এর ফল সরূপ কুমার অতি শীগ্রই অল্প বয়সেই অস্ত্র বিদ‍্যায় তার মাতার মতোই পারদর্শী হয়ে উঠছিল। 

রাজা চন্দ্রপ্রতাব যুদ্ধ পরিচালনায় যেমন অক্ষম ছিলেন, তেমনি তিনি রাজ‍্য পরিচালনাতেও বিশেষ ভালো ছিলেন না। মহারাণীর মৃত্যুর পর পর  এই কথা রাজসচিবেরা অল্প দিনেই বুঝে নিলেন। অন্য দিকে কুমার বিজয়প্রতাবের অসামান্য রণপণ্ডিত্ব ও রাজনৈতিক জ্ঞান ছিল চোখে পড়ার মতোই। এটি রাজা চন্দ্রপ্রতাবের জন্যে আনন্দের বিষয় হলেও তিনি আনন্দিত হলেন না। তার কারণ, কিশোর বয়সেই কুমার রাজ অন্তঃপুর ত‍্যাগ করে রাজপুরির সেনানিবাস ও যুদ্ধের ময়দানে সময় অতিবাহিত করতে শুরু করেছিল।

তবে কুমারের অসাধারণ গুণগুলো প্রতি শুধু সে রাজসচিব দের দৃষ্টিই পরেছিল, এমনটা নয়। তার এই সকল গুণের কারনেই কুমারের নেতৃত্বে কন্টকমণি রাজ‍্যের সাথে পাশ্ববর্তী দুই মিত্র রাজ‍্য জোট বেধেঁ প্রায় দশ হাজার সৈন্যদের একটি দল গঠন হয়। এতে দিনে দিনে কুমার বিজয়প্রতাবের বিজয়গাথা দিকে দিকে প্রসিদ্ধী লাভ করতে শুরু করে। সেই সাথে বাড়তে থাকে তার সেনাদল। এতে করে উত্তরঞ্চলের শৈলমালার জটিল আবর্তের মধ্যে যত ছোট ছোট রাজ‍্যের রাজা ছিল। বিজয় প্রতাবের তরবারীর ধারের কাছে তাদের সকলের মাথানত করা ছাড়া দ্বিতীয় উপায় ছিল না। এতে রাজা চন্দ্রপ্রতাবের রাজ‍্য কন্টকমণির সীমানা ছাড়িয়ে সুদূর প্রসারিত হতে শুরু করলেও রাজা সুখী ছিলেন না।

কেন না,এই সকল ক্ষুদ্র রাজ্যগুলি একত্রে কন্টকমণি রাজ‍্যের অধীনে আনলেও কুমার বিজয় প্রতাবের ভোগে মন ছিল না। সেই সাথে রাজ সিংহাসনে কুমারের  কতটা আকর্ষণ ছিল,তাও বলা যায় না। সে শুধুমাত্র সকল রাজ‍্যে মধ্যে যুদ্ধ-বিদ্রোহ থামানো উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল। কিন্তু এমনই করে ত আর রাজ‍্য চলে না। তাই মাঝে মধ‍্যেই মন্ত্রণালয়ে রাজার সহিত সভা সচিবদের আলোচনা হতে লাগলো।


এই রূপ আরো কিছু কাল আলোচনা চলার পর সভা সচিব ও রাজপুরোহীতের পরামর্শে রাজা চন্দ্রপ্রতাব দ্বিতীয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন।  রাজার দ্বিতীয় রাণী  প্রভা দেবী রাজার প্রথম স্ত্রীরই বোন। কিন্তু যেই কারণে রাজ অন্তঃপুরে প্রভাদেবীর আগমন, যেই কার্য সম্পূর্ণ করতে প্রভাদেবী ব‍্যর্থ হলেন।  মাতার মৃত্যুর পর কুমারের  জীবনযাত্রা যুদ্ধের ময়দান ও সৈন্য শিবিরের বৃত্তে এক উন্মাদ ঘোড়ার ন‍্যায়  ঘুরছিল; যার লাগাম টেনে ধরা প্রভাদেবীর মতো শান্ত স্বভাব রমণীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে রাজা চন্দপ্রতাবের দুঃখ খানিক লঘু হয় প্রভাদেবীর কোলে শিশু রাজকুমারীর ক্রন্দনে। 


কুমারীর নামকরণের উপলক্ষে দীর্ঘ দশ বছর পরে কুমার বিজয় প্রতাব রাজ -অন্তঃপুরে প্রবেশ করে। এবং কুমার অন্তঃপুরে প্রবেশের পর পর প্রভাদেবী রাজকুমার কোলে কুমারীকে তুলে কান্নায় ভেঙে পরে। কান্নার কারণটি এই যে― কুমারকে অন্তঃপুরে ফেরাতে ব‍্যর্থ নিরপরাধ এই রমণীর কলঙ্কের শেষ ছিল না। অথচ প্রভাদেবীর চেষ্টার কোন ত্রুটি করেননি। কিন্তু অসহায়  নারী কথা কে শোনে!

সেদিন রাজা ও রাণীর অনুমতিতে কুমার তার একমাত্র ভগিনীর নামকরণ করলো উল্কা। একমাত্র হবার কারণ এই যে― পরবর্তী সতেরো বছরের মধ্যে কোন এক আশ্চর্য কারণ বশত প্রভাদেবীর আর কোন সন্তানাদি হয় নাই । কিন্তু কুমারী উল্কার প্রভাবে বিজয় প্রতাবের লাগামছাড়া জীবনযাত্রার গতি অনেকটাই মন্দ হয়েছে একথা সত্য।

কুমারীর জন্মের পর কুমারের অন্তঃপুরে আসা যাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক হয়। এবং বয়স বৃদ্ধির  সাথে ধীরে ধীরে কুমারের সংস্পর্শে বালিকা কুমারী ভাইয়ে মতোই অস্ত্রবিদ‍্যা ও অশ্বিচালনা শিখতে মনোনিবেশ করে। রাজা বা রাণী এই দুই ভাই বোনের মধ্যে কখনোই আসতেন না। তবে রাজপ্রাসাদে দাস-দাসীদের জটলা ও সৈন্যদের মদিরার আসরে কুমারের গোপন অভিসন্ধির কথা  নিয়মিত আলোচনা হতে লাগলো। সুতরাং এক পর্যায়ে এ কথা মহারাণী প্রভাদেবীর কানেও পৌঁছালো। এবং শোনা মাত্রই তিনি বিচলিত হয়ে পরলেন। কেন না কথাটি এই যে― কুমারী উল্কাকে বিজয় প্রতাব সিংহাসনের উপযুক্ত প্রতিনিধি হিসেবে নিজ হাতে গড়ে তুলছে।  তবে এ তো গেল অতীতের কথা, এবার বর্তমানে  ফিরি তবে।

প্রভাতের সূর্যদেব আত্মপ্রকাশ করেছেন বহুক্ষণ আগেই। বেলা গড়িয়ে প্রায় দুপুর হয় হয়। রাজকুমারের সহিত কমলিনীর যাত্রা পথে আজ তৃতীয় দিন। ঘোড়ার পিঠে  বসে  ফেলে আসা বনাঞ্চলের মাঝে যে পথটি! সেদিকে একবার তাকিয়েই কমলিনী পুনরায় মস্তিষ্ক নত করে। বোধকরি এই অভাগী কঙ্কনপুর নগরীতে নিজের ভবিষ্যত কি হবে সেই কথাই ভাবছে মনে মনে।

খানিক দূরে চারিপাশের পাহাড় ও উঁচুনিচু টিলার মধ্যে এক সর্বোচ্চ পাহাড়ি সমভূমি তে কঙ্কনপুর নগরীটি উজ্জ্বল নক্ষত্র মতোই চোখে পরে।  নগরের পথগুলি আঁকাবাঁকা, দুই পার্শ্বে পাষাণনির্মিত হর্ম্য।আর তার মাঝে কোথাও কোথাও ক্ষুদ্র ও স্বচ্ছ জলাশয়ের সংলগ্ন নানাবিধ ফুলের বাগান। কঙ্কনপুরের রাজ প্রাসাদ নগরীর প্রবেশ পথে দাঁড়িয় স্পষ্ট চোখে পরে। নগরের থেকে বেশ উঁচুতে এক টিলায় রাজপ্রাসাদ অবস্থিত। রাজপ্রাসাদে ওঠার পথটির বাঁ পাশ দিয়ে সাপের মত আঁকাবাঁকা হয়ে খানিক দূরের আর একটি টিলায় উঠেছে। সেখানে চারপাশে পাতলা বনে ঘেরা এক সমতল ভুমিতে কন্টকমণি রাজ‍্যের সেনানিবাস।

বিজয় প্রতাব যখন সেনানিবাসে পৌঁছলো; তখন মাঠে কিছু নতুন সৈনিক অশ্বারোহণ শিখতে ও কিছু সৈনিক একধারে জটলা করে নতুন সৈনিকদের অসি চালনা পরখ করছিল। জটলা পেরিয়ে দেখা গেল এক সুদর্শন কিশোর খোলা তরবারী হাতে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে। তার তরবারীর ডগাখানি ভূলুণ্ঠিত এক সৈনিকের গলার কাছে স্থির। বলা বাহুল্য এই দৃশ্য অভিজ্ঞ সৈনিকদের জন্যে বিশেষ প্রীতকর কিছু নয়। বরং বেশ লজ্জা জনক দৃশ্য। তার ওপরে নতুন আগত এই কিশোর ইতি মধ্যে তিনজন অভিজ্ঞ সৈনিককে পরাস্ত করেছে। সুতরাং সকলের মুখমণ্ডলে এই মুহূর্তে রাগান্বিত এক ভাবমূর্তি অতি স্পষ্ট ভাবে ফুটেছে। এমন অবস্থায় সকলের চুপসে যাওয়া মুখমণ্ডলের দিকে একবার দৃষ্টি পাত করে সৈনিকের বেশধারী এই কিশোর উচ্চ কণ্ঠে বলে উঠলো,

– এই কঙ্কনপুর নগরীর সৈনিকদের মধ্যে এমন কেউ কি নেই? যে আমার তরবারী আঘাত সাইতে পারে! নাকি বীর পুরুষের বেশে সকলে ভেড়া........

সৈনিকের বেশধারী কিশোর অপমান সূচক কিছু বলার আগেই সেখানে ঘোড়ার পিঠে চড়ে কুমার বিজয় প্রতাবের আগমন। সুতরাং সকলেই তখন কিশোরের থেকে মনযোগ সরিয়ে কুমারের দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু ঘোড়া থেকে নেমে কুমার এগিয়ে এলো একা দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরটির দিকে। এবং কাছাকাছি পৌঁছেই কুমার শান্ত স্বরে বললে,

– এই কঙ্কনপুর রাজ‍্যের সম্মান রক্ষার্থে কুমার বিজয় প্রতাব তোমার সমুখে দাঁড়িয়ে। এখনও সময় আছে, যদি নিজে সম্মান রক্ষা করতে চাও তবে নিজের আচরণের জন্যে ক্ষমা চাও।

কুমারের কথায় কিশোরের আচরণের কোন পরিবর্তন ঘটলো না। তার বদলে মুখি  অবজ্ঞা সূচক হাসি ফুটিয়ে সে তরবারী উচিয়ে ধরলো লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে। এতে সোনাদলের অনেকই অবাক এবং আরো অনেকেই ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলো। তার মধ্যে থেকে কুমারের এক সহচর উদ্দীপ্ত কণ্ঠে বলে উঠলো,

– আজ্ঞা করুন কুমার! আমি নিজ হাতে এই বেয়াদপের মুন্ডচ্ছেদ করবো।

তার হাতে তরবারি উঠেছিল, কিন্তু কুমার হাত উচিয়ে তাকে থামিয়ে দিয়ে সৈনিকের বেশধারী কিশোরটি উদ্দেশ্যে বলল,

– লড়াই! বেশ তবে তাই হোক!

কথা শেষেই কুমারের তরবারী খাপ থেকে উন্মুক্ত হয়ে তার হাতে উঠলো। এবং সঙ্গে সঙ্গেই সমুখের কিশোরটি তরবারী উচিয়ে লড়াইয়ে নামলো। তবে সবার পেছনে ঘোড়ার পিঠে বসে কমলিনী দেখল লড়াই খুব বেশিক্ষণ চললো না। দুই একবার তরবারী ঠোকাঠুকির পর এক জোড়ালো আঘাতে কিশোরের তরবারী হাত থেকে ছিটকে গেল দূরে। তার পরমুহূর্তেই দ্বিতীয় আঘাতে ছিটকে গেল কিশোরের মাথায় বাঁধা পাগড়ীটি। এতে করে সঙ্গে সঙ্গেই সৈনিকের বেশধারী কিশোরের আসল পরিচয় সর্বসম্মুখে উন্মুক্ত হয়ে পরলো। পাগড়ী সরতেই কিশোরের মাথা থেকে বিসর্পিল এক বেণী লুটিয়ে তার কোমড় ছাড়িয়ে গেল। বলা বাহুল্য এই দৃশ্য দেখা মাত্র কমলিনী অবাক হয়ে এক দৃষ্টিতে সেদিকেই চেয়ে রইল। তবে তখন সেখানকার কারোরই সৈনিকের বেশধারী রাজকুমারী উল্কাকে চিনতে অসুবিধা হলো না। তবে পরিচয় প্রকাশ পেলেও কুমারীকে বিচলিত হতে দেখা গেল না। সে তখনও এক দৃষ্টিতে  হাসি মুখে কুমার বিজয় প্রতাবের মুখপানে তাকিয়ে ।

কমলিনী একটু দূরে ঘোড়ার পিঠে বসেই এতখনের সকল দৃশ্য সচোখে দেখছিল। তাকে ঘোড়া থেকে নামাতে এতখন সকলেই ভুলে গিয়েছিল । লড়াই শেষ হতেই একজন এগিয়ে এসে তাকে ঘোড়া থেকে নামিয়ে দিল। তখন কমলিনী ধীরপদে  কুমারের পেছন দিয়ে সেনা নিবাসে ঢোকার সময় শুনলো,

– আপাতত রাজকুমারীকে আমার শয়নকক্ষে বন্দী করা হোক.....

এরপর কি হল সে জানে না। কারণ, দুটি মেয়ে তাকে নিয়ে তখন সেনানিবাসের ওপড় তলায় উঠলো তারপর স্নান সেরে নতুন কাপড়ে সে যখন বাকিদের সাথে বাইরে বেরুল, তখন রাজ কুমারী উল্কাকে সে প্রথম নারী বেশে কুমারের শয়নকক্ষের প্রবেশ করতে দেখলো।

এদিকটার ওপর তলার পূর্ব পাশের শেষটায় কুমারের শয়নকক্ষ। কমলিনী দোতলা ওঠার আগেই দেখেছিল দুজন পরিচারিকার সাথে উল্কা এদিকটায় এগিয়ে আসছে। গ্রামে থাকতে কমলিনী এক গুজব শুনেছিল যে― কুমারের সেনানিবাস সুন্দরী দাসীদের আড্ডা খানা। এখন সচোখে সত‍্যই সে দেখলো কুমারের শয়নকক্ষের পাশের ঘরগুলিতে কম করে হলেও প্রায় ১৫ কি ২০ জন রমণীর বাস।  এবং তাদের মধ্যে অনেকেই অসামান্যা সুন্দরী।
কিন্তু  কমলিনীর মনে পরে তার আগের প্রভুপত্নী বলেছিল কুমারের নারীদের প্রতি আকর্ষণ নেই। এমনকি  ৪২ বছর পার হতে চলেছে কিন্তু কুমার এখনো বিবাহের নাম মুখেও তোলেনি। পুরো ব‍্যাপারখানা তার বোধের বাইরে থাকায় সে বেচারী অবাক হয়ে শুধুই চারপাশ দেখতে লাগলো।

এর বেশি লেখা যেত,তবে এটি পরিচয় পর্ব। যদিও কমলিনীর পরিচয় এখনো দেওয়া হয়নি। তবে তা ধাপে ধাপে দেওয়া হবে নিশ্চয়ই।
[+] 9 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
(17-01-2025, 12:13 PM)বহুরূপী Wrote:
দাসী কমলিনী

তুষের আগুন যেমন প্রথমে ধিক-ধিক, শেষে হঠাৎ ধূ-ধূ করে জ্বলে ওঠে। তেমনি সমুখে একটি ক্ষুদ্র গ্রামের ঘর গুলো এভাবেই জ্বলে শেষ হলো সারা রাত ধরে।
বেশ সুন্দর ধ্রুপদী ভাষার গল্প। অনেক প্রত্যাশা রইল।
[+] 1 user Likes Qabila's post
Like Reply
(17-01-2025, 12:51 PM)Qabila Wrote: বেশ সুন্দর ধ্রুপদী ভাষার গল্প। অনেক প্রত্যাশা রইল।

সেরেছে.... !! অনেক প্রত্যাশা থাকলে তো সমস্যা। তবে দেখা যাক কতটুকু কি করতে পারি। ধন্যবাদ❤️
Like Reply
নন্দিনীর অতীত নিয়ে তেমন গভীরে না যাওয়াই মনে হলো ভালো হয়েছে। নাহলে হয়তো গল্পটা আরো ডার্ক টার্ন নিতো অথবা গল্পটার মেইন থিম টাই পালটে যেতো। ছোট করে শেষ হলেও আমার ভালোই লেগেছে।
[+] 1 user Likes Sage_69's post
Like Reply
(18-01-2025, 06:19 AM)Sage_69 Wrote: নন্দিনীর অতীত নিয়ে তেমন গভীরে না যাওয়াই মনে হলো ভালো হয়েছে। নাহলে হয়তো গল্পটা আরো ডার্ক টার্ন নিতো অথবা গল্পটার মেইন থিম টাই পালটে যেতো। ছোট করে শেষ হলেও আমার ভালোই লেগেছে।

ধন্যবাদ Shy
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(16-01-2025, 03:48 AM)বহুরূপী Wrote: অদ্ভুত নিয়তি: পর্ব ৪


আগের গল্পটি বেশ ভালো লাগলো। এমন একটি গল্পের জন্যে ধন্যবাদ এবং নতুন গল্পের জন্যে শুভকামনা।
[+] 1 user Likes Sweet angel's post
Like Reply
(19-01-2025, 08:52 AM)Sweet angel Wrote: আগের গল্পটি বেশ ভালো লাগলো। এমন একটি গল্পের জন্যে ধন্যবাদ এবং নতুন গল্পের জন্যে শুভকামনা।

অনেক দিন পর এলেন,আশা করি সব ভালো, ধন্যবাদ❤️
Like Reply
অসাধারণ গল্পগুচ্ছ
[+] 1 user Likes Matir_Pipre's post
Like Reply
দাসী কমলিনী: পর্ব ২

সেনানিবাসে ক্রমে ক্রমে প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেল। কমলিনী এই কদিনে সেনানিবাসের নানাবিধ কাজকর্মে নিজেকে জড়িয়ে অনেকের সাথেই সখী সুলভ সম্পর্ক স্থাপন করে নিয়েছে। তাদের সাথে গল্পগুজবের মধ্যে দিয়ে সে ইতিমধ্যে জেনেছে যে― সেনানিবাসের ওপড় তলার এই অংশে কুমারের সেবার জন্যে মোট ১৮ জন্য দাসী মহারাণী প্রভা দেবী নিজে বাছাই করে নিযুক্ত করেছেন। তাদের মধ্যে কিছু দাসীকে আনা হয়েছে দূর দেশ থেকে। এদের প্রতেকেই সাধারণ গৃহকর্ম থেকে শুরু করে সঙ্গীত চর্চা, নৃত্য পরিবেশন এবং কেউ কেউ কুমারের সহিত চিত্র অংকন ও অসিবিদ‍্যার অনুশীলনেও যোগদান করে থাকে।

তবে মূলত এই লাস্যময়ী দাসিগণের প্রধান উদ্দেশ্য হল কুমারের সকল প্রয়োজনে আশেপাশে থাকা এবং সার্বক্ষণিক কুমারকে সঙ্গ দিয়ে তার মনোরঞ্জন করা। তাই কুমারের মনোরঞ্জনের জন্যে যে কোন কিছু করতেই তারা সর্বদা প্রস্তুত। এছাড়া দ্বিতীয় কোন কাজ যদিও এদের ছিল না। তথাপি, দাসী দেবসেনার আওতাধীনে সকলে মিলে মিশে সেনানিবাসের এই অংশের রান্নাবান্না ও  পরিচর্যা করে থাকে। মহারাণী আদেশে দেওয়াল তুলে মূল সেনানিবাসের থেকে এই অংশ আগেই আলাদা করা হয়েছিল। এরপর এই অংশ দেবসেনার আওতাধীন হবার পর বাহিরে সকল কর্মিদের সে বিদায় করে। তবে এর জন্যে এখানকার বাসরত কারোরই আপত্তি দেখে দেয় নি। বরং তার দেবসেনার এইরূপ ব‍্যবস্থাপনায় অত্যন্ত সুখী হয়েছিল বলেই শোনা যায়।

কিন্তু সবদিক দেখে কমলিনী ভেবেছিল― এতোগুলি দাসীর কুমারের প্রয়োজন কি? সে তো আসছে থেকেই দেখেছে অধিকাংশ সময় কুমার নিজের কাজ নিজেই করে। আর যখন সে নিজে করে না, তখন হয়তো কুমারী উল্কা বা দাসী দেবসেনা বাকিদের নিয়ে সেই কাজে হাত লাগায়। কিন্তু তাতেও ত অত লোকের আবশ্যক হয় না।তার ওপড়ে মাঝে মধ্যে কুমারের একান্ত নিজস্ব কাজে দাসী সকলে এমন বারাবারি করে থাকে; যা দেখে কমলিনী নিজেই ভয়ে শিউরে ওঠে।

এই তো যে দিন সে প্রথম এল, সেদিন খানিক পর দুজন পরিচারিকার সাথে সে যখন কুমারের সমুখে গেল। তখন দেবসেনার সাথে আরো চার জন্য পরিচারিকা একরকম জোড় পূর্বক কুমারের দেহাবরণ খুলে তাকে স্নানের জন্যে তৈরি করছিল,এবং নিজেদের মধ্যে কি নিয়ে যেন হাসাহাসি করছিল। তখন দেবসেনা ব‍্যতীত বাকি চার জন্য পরিচারিকারাই অর্ধনগ্ন। এছাড়া তাদের কোমড়ের নিচে যা আছে! তাও না থাকারই সমান।

তবে তাতে তখধ কমলিনীর কি বা যায় আসতো! কিন্তু এমন বিশাল দেহে লোকটিকে কজন দাসী মিলে জোরপূর্বক স্নানে নিয়ে যাচ্ছে দেখে, কমলিনী অবাক তো হলোই, সেই সাথে ভয়ও পেল খুব। তবে দেখাগেল কুমার কিন্তু এতে  বিচলিতও হলো না আবার তাদের বাঁধাও দিল না। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা এই যে, কুমার একবারের জন্যেও তার দুই পাশের দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরী রমণীদের প্রতি দৃষ্টিও ফেলল না। শুধুমাত্র একটিবার শান্ত দৃষ্টিতে দেবসেনার মুখপানে চেয়ে অল্প হাসি মাখা কণ্ঠস্বরে বললে,

– সখী! এ তোমার বারাবারি। আগে কুমারীর সাথে দে.....

– তা হলেই না হয় বারাবারি! কিন্তু আমার কর্তব্য যে আমায় করতেই হবে কুমার।  তাছাড়া আপনার বোনটি কোথাও পালিয়ে তো যাচ্ছে ন...একি! এখন ওকে নিয়ে এখানে কেন?

এর বেশী কমলিনীর শোনা হয়নি,তার আগেই দেবসেনা এগিয়ে এসে কমলিনী সহ তার পাশের দুজনকেউ বেড়িয়ে যাবার আদেশ করলো। এই ঘটনার পর কমলিনী বহুবার দাসীদের কে
এইরূপ জোরপূর্বক ভাবে কুমারের নানান কাজে হাত লাগাতে দেখেছে। যদিও সকলেই জানে কুমারের সঙ্গ বা সাহায্যের কোনটারই কোন প্রয়োজনই নেই।  কিন্তু এরপরেও সব দাসীরাই সর্বক্ষণ সজাগ দৃষ্টি রাখে কুমারের প্রতি। সেই সাথে এইসব লাস্যময়ী দেহের অধিকারীণি পরিচারিকাগণের অবসর সময় কাটে মিষ্টি মধুর কথাবার্তার দ্বারা কুমারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টায়। তাদের সকলই মনে মনে সর্বক্ষণ কামনা করে কুমারের সঙ্গ। দৈনিক কাজকর্মের মাঝেও তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু অধিকাংশ সময়েই শুরু ও শেষ হয় কুমারকে কেন্দ্র করে। বোধকরি তাদের এই রূপ একনিষ্ঠ ভাবের জন্যেই ভাগ‍্যদেবী প্রসন্ন হওয়াতে হঠাৎ হঠাৎ কেউ কেউ সত‍্যই কুমারের সঙ্গ লাভ করে। তবে এই সঙ্গটি শয‍্যা সঙ্গিনী হিসেবে নয়,একটু অন্য রকমের।

কুমার বিজয় প্রতাব চিত্রকলাখুবই পছন্দ করে। এবং সে নিজেও এই কার্যে অস্ত্রবিদ‍্যার মতোই পারদর্শী। তবে তার চিত্রকলায়  অধিকাংশ সময়েই ফুটে উঠতো পুশু-পাখি,ফুল এবং সেনানিবাসের দাসীগণের দৈহিক সৌন্দর্য। কেন না, তাদের দেহে অধিকাংশ সময়ই কাপড় থাকতো অল্প এবং অলঙ্কার থাকে অতিরিক্ত। বলা বাহুল্য এহেন অল্প দেহাবরণে এই অসামান্যা সুন্দরী রমণীদের লাবন‍্যময়ী দেহের সৌন্দর্য কিঞ্চিৎ ঢাকা পরে মাত্র, কিন্তু নানাবিধ সোনা,রুপা ও  মনিমানিক‍্যের অলঙ্কারে থাকে শোভিত। অবশ্য এতে কারোরই লজ্জা বা দ্বিধা বোধ দেখা যায় না। কারণ,তারা সকলেই জানে যে  সেনানিবাসের এই অংশে সর্বক্ষণ নিজেদের লাস্যময়ী দেহের সৌন্দর্য  উদ্ভাসিত করে ঘুরে বেরালেও কুমার ছাড়া দ্বিতীয় পুরুষের এই নৈসর্গিক দৃশ্য দেখার উপায় নেই। তাছাড়া নিজের সৌন্দর্য্য দ্বারা কুমারকে কিঞ্চিৎ মুগ্ধ করতে পারলে বা কুমারের সংস্পর্শে থেকে তাকে খানিক আনন্দিত করতে পারলেই মহারাণীর পক্ষ থেকে আসে উপহার। এই বিষয়ে যে যতটা কুমারের ঘনিষ্ঠ, তার উপহারটিও ততই পরিমাণে ও দামী হয়ে থাকে। যদিও আজ পর্যন্ত একথা জানা যায় নি  মহারাণী সেনানিবাসের ভেতরের সকল সংবাদ কি করে জানতে পারেন। তবুও মাঝে মধ্যেই প্রাসাদে তাদের ডাক পরে।

কিন্তু তারপরও, কুমারের সাথে এমন আচরণ দাসীদের পক্ষে কি বেয়াদপী নয়? তাছাড়া সেনানিবাসের এতো পুরুষের মাঝে অধিকাংশ সময়ই তাদের এমন অর্ধনগ্ন সাজসজ্জা করতে কি ভয় করে না? হাজারর হোক, সে কোনো সময়েই দ্বিতীয় কোন পুরুষের আগমণ ত কুমারে সাথে আলোচনার জন্যে হতেই পারে,তাই নয় কি?

নিজে মনের অন্তরালে জাগা এই প্রশ্নের গুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে কমলিনী জানলো যে―তাদের ভয় না থাকার কারণ সেনানিবাসের এই অংশে প্রয়োজন ছাড়া কুমার ব‍্যতীত দ্বিতীয় কোন পুরুষের আগমন নিষিদ্ধ। আর প্রয়োজন হলেও তার জন্য আলাদা ব‍্যবস্থাপনা আছে। তাছাড়া, সেনানিবাসের এই অংশ যেমনি বাকি সেনানিবাসের থেকে পাচিল দ্বারা আলাদা। তেমনই এখানকার রান্নাবান্না সহ সকল কাজকর্ম আলাদাভাবে এখানকার বাসরত এই পরিচারিকারাই করে থাকে নিয়মিত। তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল দ্রব‍্যাদির জোগানের ব‍্যবস্থা এবং তারা সকলেই মহারাণীর অধীনে। সুতরাং সেনানিবাসের নেতৃত্বে কুমার বিজয় প্রতাব বহাল থাকলেও,সেনানিবাসের এই অংশটি মহারাণী প্রভাদেবী ও রাজকুমারী উল্কার কথাতেই চলে, কুমারের নয়। মহারাণীর অনুমতি ছাড়া সেনানিবাসের এই অংশে কারোই থাকার অধিকারও নেই। কুমার নিজেও মাতার এই নিয়মের অধীনে। সে এখানে থাকে বটে,তবে এখানকার কোন কাজে বাধা সৃষ্টি বা মহারাণীর সিদ্ধান্তকে অমান্য করার দুঃসাহস সে দেখায় না। কেন না ,কুমার নিজেও জানে তার জন্যে রাণী মায়ের চিন্তার শেষ নেই। মোট কথা কুমারের নীরবতায় এখানকা শাসন ভার মহারাণীর হাতে। তাই এই অবস্থায় কমলিনীর ডাক যে রাজ প্রাসাদে অতি শীঘ্রই পড়বে এতে কোন সন্দেহ ছিল না।

তবে কমলিনীর কঙ্কনপুরের আগমনের সময় মহারাণী কঙ্কনপুরে ছিলেন না। কদিন আগেই তিনি নিজের পিত্রালয়ে গমণ করেছেন এবং যাওয়ার আগে এখানকার দুজন দাসীকে সাথে নিয়ে গেছেন। এদিকে মহারাণীর অনুপস্থিতিতে কমলিনী আপাতত সেনানিবাসের প্রধান দাসী দেবসেনার অধীনে রান্নার কাজে বহাল হয়েছে। স্থায়ী হবার পর পরই কমলিনী অল্পদিনেই দাসী দেবসেনার সুনজরে পরেছে এবং সেই সুবাদে কুমারী উল্কার সাথেও তার পরিচয় ঘটে মাস ঘুরতেই।

কিন্ত  এতকিছু জানার পরেও কমলিনী এই সব দেখে প্রথমটায় একটু অবাকই হয়েছিল। মনে কয়েকবার রানীমায়ের এইরূপ ব‍্যবস্থা দেখে প্রশ্নও তার জেগেছে বৈ কি! তবে সম্পূর্ণ সত‍্য জানার পর রাণী মায়ের প্রতি অসম্মান নয় বরং  কমলিনীর করুণা হয়েছে অনেক বেশী। একজন নারী কতটুকু নিরুপায় হলে এমনটি করতে পারে সেটি ভেবেই কমলিনীর মন কেঁপে ওঠে।

কুমার বিজয় প্রতাবের নারীদের প্রতি যে কোন আকর্ষণ নেই, এই কথা কমলিনী আগেই শুনেছে।  কিন্তু কুমারের নারী আকর্ষণ না থাকায় মহারাণীর কপলা যে কত কলঙ্ক লেগেছে! সেটি তার জানা ছিল না। বিশেষ করে রাজপুরীতে অনেকেরই ধারণা প্রভাদেবী কখনোই কুমারকে রাজপ্রাসাদে ফেরানোর চেষ্টাই করেননি। কারণ, মহারাজের অন্তরালে মহারাণী নিজে রাজ‍্য শাসন চালাতে ও নিজের সন্তানকে রাজ‍্যসিংহাশনে প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছে রাখেন। কেন না, এর আগেও রাজার আঁড়ালে থেকে আগের রাণী এবং প্রভা দেবী বোন যে রাজ‍্য শাসন করতেন, এই কথা এখন আর কারোরই অজানা নয়। তাছাড়া বিজয় প্রতাব যে কুমারী উল্কাকে রাজসিংহাসনে বসানো চিন্তা ভাবনা করছে এই কথা রটনা হবার পর থেকে তাদের ধারণা এর পেছনেও মহারাণী প্রভাদেবীর কুট অভিসন্ধি বিদ‍্যমান।

যদিও এই কথা সত নয়, কিন্তু কুমারী উল্কাকে নিয়ে রাজকুমারের মনভাব প্রকাশিত হবার পর থেকেই এই বিষয়ে আর কারোই কোন সন্দেহ থাকে না। কেন না ,প্রভাদেবীর কোন পুত্র সন্তান ছিল না।তাই এই অবস্থায় কুমারের বিবাহ অবশ্যই প্রভাদেবীর হিসেবে সমস্যা সৃষ্টির প্রদান কারণ। সবাই এই কথায় এটাই ভেবে নেয় যে রাজকুমারের নারীদের প্রতি এমন অনিহার পেছনেও নিশ্চিতরূপে বর্তমান মহারাণীর বিশেষ ভুমিকা থাকবে। তিনি  কুমারকে ছলনার দ্বারা প্রভাবিত করে আজীবন রাজ‍্য রক্ষার ভারে তার কাঁধে তুলে দিয়েছেন।

অথচ যারা মহারাণীর নিকটবর্তী এবং বিশ্বাসভাজন। তাদের কারোই এই কথা অজানা নয় যে কুমারকে রাজন্তঃপুরে ফিরিয়ে নিতে প্রভা দেবী চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখেনি। এমনকি তার আদেশেই সেনানিবাসের বিশেষ এই অংশে একেরপর এক সুন্দরী দাসীদের আগমন। যদিও এর উপলক্ষ কুমারকে নারীদের প্রতি দূর্বল করে  তার মনে নারীদের প্রতি আকর্ষণ জাগিয়ে তোলা। কিন্তু দূঃখের বিষয় এই যে– গত দশ বছরের মধ্যে এই কার্যে কোন দাসীই সফলতা অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু এই উদ্যোগ নেওয়ার ফলে অভাগী রাণীর কলঙ্কের খাতায় আর একটি দাগ অল্প দিনেই আঁকা হয়ে গিয়েছে। যদিও মহারাণী প্রথমে বিভিন্ন রাজ‍্যের রাজকুমারীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসে ছিলেন। কিন্তু এই রূপ কয়েকবার ব‍্যর্থ হয়ে  তিনি বুঝেছিলেন কুমারের অন্তরের কঠিন জমিনটি নরম করে আগে নারীদের জন্যে অল্প হলেও দূর্বলতা আনা চাই। আর সেই জন‍্যেই কুমারকে এখন সর্বক্ষণ নারীদের সান্নিধ্যে রাখা প্রয়োজন। কিন্তু রাজকুমাদের দিয়ে তা সম্ভব,তাই অবশেষে কুমারের সেনানিবাসের নিত্য নতুন দাসীদের এনে তিনি কুমারের মনটিতে নারীর জন্যে খানিক জায়গা করতে চাই ছিলেন।


তবে এতকিছুর পরেও মহারাণী আশা ভঙ্গ হয়ে পরেননি। কেন না ,এতদিন পর দাসী দেবসেনা কুমারের নিকটবর্তী হতে হতে সক্ষম হয়েছে। তা গত দুবছরে সেনানিবাসে নতুন কোন দাসীর আগমন ঘটেনি।মহারাণী দেবসেনার প্রতি বিশেষ আস্থাভাজন হয়ে পরেছেন। অবশ্য দেবসেনার প্রতি মহারাণীর বিশ্বাস এমনি এমনি তৈরি হয় নি। দেবসেনা অসামান্যা সুন্দরী না হলে তার রূপের কমতি বুদ্ধির দ্বারা পরমেশ্বর পূর্ণ করে দিয়েছেন।যার শয়নকক্ষে আগে রাজ কুমারী উল্কা ছাড়া দ্বিতীয় কারোরই প্রবেশধিকার ছিল না! এখন দেবসেনার দৌলাতে সব দাসীরাই নিরদ্বিধায়  কুমারের শয়নকক্ষে চলা ফেরা করছে। আর শুধুমাত্র চলাফেরাই নয়, গত দুবছর ধরে দেবসেনা কথা মেনে সকল পরিচারিকারাই কুমারের  কাছে আরো কিছুটা নিকটবর্তী হয়েছে। এখন সেদিন আর দূরে নয় যখন এদের মধ্যে কেউ একজন হয়তো কুমারের পাথরের মত কঠিন ঐ বুকের দেয়াল বেধ করে; তার নরম হৃদয়ে দোলা দেবে। মহারাণীর ও কুমারী উল্কার ধারণা সেই রমণীটি হয়তো দেবসেনা!

তবে বাকি সকলে যত যাই বলুক না কেন, কমলিনীর মনে হলো মহারাণী নিতান্তই নিরুপায় হয়েই এমন ব‍্যবস্থাপনা করেছেন। কেন না এতকিছুর পরেও মহারাণী তার এই পরিকল্পনার ভবিষ্যত নিয়ে কিছুই ভেবে রাখেননি। তাছাড়া কুমারের হৃদয়কে দোলা দিয়ে যদিওবা কোন দাসী তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়;তবে এতে লাভের কি হবে যদি কুমার এর পরেও বিবাহ করতে রাজী না হন তো! হাজার হোক তার শয়নকক্ষের বাহিরেই ত ১৮ জন্য সুন্দরী পরিচারিকার বাস। পরমেশ্বর না করুক ! কুমারের মন নরম হয়ে তিনি সত্য সত‍্যই নারীদের প্রতি যদি প্রত‍্যাশার চাইতেও বেশি দূর্বল হয়ে পরেন তবে!

এই সব ভাবতে ভাবতেই আনমনা হয়ে বাগানের ঘাসের ওপড়ে বসে ছিল কমলিনী। সেনানিবাসের পেছনদিকের এই বাগানটি শুধুমাত্র এখানকার পরিচারিকাদের জন্যে কুমারের আদেশেই তৈরি করা হয়েছে। কমলিনী মাঝে মধ্যেই সময় মিললে এখানটায় এসে বাগানের ফুল তুলে মালা গাথে। তারপর সেই ফুলের মালা লোক চক্ষুর আঁড়ালে রেখে আসে কুমারের শয়নকক্ষে।

না,সে মহারাণী কৃত কুমারের মনোরঞ্জনের জন্যে নিযুক্ত কোন দাসী নয়। যদি এমনটা হতো তবে এই ক্ষুদ্র কাজে গোপনীয়তা অবলম্বনের তার কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ, এই কাজটি প্রতিদিন সকালে অনেক পরিচারিকারাই করে থাকে। এবং তার পরিবর্তে মাঝে মধ্যে কুমারের মন ভালো থাকলে এক আধটা চুম্বন তাঁরা উপহার হিসেবে পেয়ে থাকে। আমাদের কমলিনীর মনটি এই সব দেখে মাঝে মধ্যেই বড্ড অভিমানী হয়ে ওঠে। তবে বাকি পরিচারিকাদের মাথার ওপড়ে আছে রাণীমায়ের আদেশ ,আমাদের গল্পের নায়িকার তা নেই। কে জানে! তার মালাদানে অসন্তোষ হয়ে কুমার যদি রুষ্ট হন তবে! তখন অভাগী কমলিনীকে কে রক্ষা করবে বল? হাজার হোক! বিজয় প্রতাব এই রাজ‍্যে কুমার আর সে সাধারণ দাসী মাত্র। কিন্তু মনের মানুষটির  শারীরিক অবস্থা যখন বিশেষ মন্দ এবং নিজ সংকোচে তার কাছে যেতে যখন কমলিনীর এতো ভয়! তখন এই অবস্থায় ফুলের মালা উপহার দিয়ে তার মনে খানিক আনন্দ আনার চেষ্টা থেকে সে বিরত থাকে কি করে? কিন্তু মাঝে মাঝে তার মনে এই প্রশ্নও জাগে যে― সেদিন অন্ধকার রাত্রিতে এই অভাগীনিকে  অগ্নিদেবের তান্ডব থেকে বাঁচিয়ে সে যে অজ্ঞান হয়েছিল ,তা কি এখন আর কুমারের মনে পরে?

এই প্রশ্নের উত্তর বোধ হয় “না!”। তা না হলে, গত মাস কয়েক ধরে গোপনে সে যাকে মনের মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে নিয়মিত পূজো করে চলেছে ; তাকে কি একটি বার চোখের দেখাও দেখতে ইচ্ছে হয় না কুমারের? সে তো মাঝে মধ্যেই লক্ষ্য করে কুমার তার পরিচারিকাদের মনের অনুভূতি কেমন মুখে না আনতেই  বুঝে নেয়। তবে তার বেলা এমন অবহেলা কেন? অবশ্য এও সত্য বোঝার জন্যে আগে তো নিকটে যাওয়া চাই,তাই নয় কি? কিন্তু তার নিকটবর্তী হতে কমলিনী বড্ড ভয় হয়। এতো এতো সুন্দরী পরিচারিকা দের মধ্যে কুমার কি আর তার পানে দৃষ্টি রাখবে?

এই প্রশ্নের জবাব খোঁজার আগেই কমলিনীর মালাগাথা সম্পূর্ণ হলো। তারপর গত কদিনের মত সকলের দৃষ্টি থেকে লুকিয়ে সে এলো কুমারের শয়নকক্ষে। গত সপ্তাহ খানেক হল কুমারের সাস্থ্য ভালে নেই। রাজবৈদ‍্য রোগীর রোগ নির্ণয় করতে ব‍্যর্থ। তবে চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা হলে কি হয়,এই কদিনেই কুমারের অবস্থা ক্ষণে ভালো ত পরক্ষণেই মন্দ হয়ে আসছে। কুমারের এইরূপ শারীরিক অবস্থা দেখে তার সকল পরিচারিকারাই তার প্রতি দ্বিগুণ যত্নশীল হয়ে উঠেছে। তবে একথা বলতেই হয় যে অমন কঠিন দেহখানির জন‍্যেই কুমার এখন নিজ পায় দাঁড়িয়ে চলাফেরা করতে পারছে। আর যেই কারণেই আমাদের কমলিনী পক্ষে মালাদান করাটাও সহজলভ্য হয়েছে। তবে আজ কি না ভাগ‍্যদেবী কমলিনীর প্রতি  খানিক রুষ্ট ছিলেন। তাই তো মালা রেখে পেছন ফিরতেই সে পরলো  কুমারী উল্কার সমুখে।

কুমারী উল্কার সৌন্দর্য্য রাজ‍্য আলোকিত করার মতো।সেই সাথে তার দেহের গঠনটিও খাটো গোছের নয়। কুমারের পাশে দাড়ালে উল্কার মস্তক প্রায় বিজয় প্রতাবের নাক স্পর্শ এমন। সেখানে আমাদের কমলিনী উল্কার কাঁধের চাইতেও অল্প নিচু। তার ওপড়ে আর এক বিপদ এই যে; কমলিনী উল্কার ওই বিদ্যুৎ ঝড়ানো আঁখিপানে তাকানোর সাহস এখনো মাঝে মাঝেই হারিয়ে বসে ,এবং এই কথাটি কুমারী নিজেও জানে বলে দেবসেনা ও তার মধ্যে কমলিনীকে নিয়ে কৌতুক হয় প্রায়শই। তাই এহেন পরিস্থিতিতে পরে ভয়ে কমলিনীর গলা শুকিয়ে গেল। অবশ্য তাকে কিছু বলার অবকাশ না দিয়েই উল্কা গম্ভীর সুরে বলতে লাগলো,

– মালা দেবার লোক পেলি না আর কমল! বলি এই সব কবে থেকে চলছে শুনি?

কুমারীর প্রশ্নের উত্তর দেবার আগেই দ্বিতীয় বিপদ উপস্থিত। এবার কুমার নিজে। কমলিনী কথা বলবে কি! তার সর্বাঙ্গ অজানা এক ভয় ও শিহরণের অনুভূতিতে ভয়ংকর রকম কাঁপতে লাগলো। সে বেচারী তৎক্ষণাৎ কিছু ভেবে উঠতে না পেরে রাজ কুমারীর পেছনে লুকালো। এমন কান্ড দেখে কুমারী হাসিতে ভেঙে পরলেও ; কুমার যখন এগিয়ে এসে কমলিনীর রাখা ফুলের মালাটি ঠোঁটের কাছাকাছি তুলে নিয়ে গাঢ় নিশ্বাস নিল !তখন বিনা কারণেই লজ্জায় কমলিনীর মুখখানি  সিঁদুরের রঙে রঙিন হয়ে উঠলো।  তবে কুমার কিন্তু কিছুই বললো না। বোধকরি কমলিনী রক্তিম মুখমন্ডল তার চোখে পরেছে। আর তা না হলে কুমারের শারীরিক অবস্থা আবারও মন্দ হতে শুরু করেছে।

কুমারের পরিচারিকাদের শয়নকক্ষে নানান রকম বিলাসবহুল আসবাবপত্র  থাকলেও কুমারে শয়নকক্ষে প্রয়োজনীয় কয়েকটি আসবাব,একটি পালঙ্ক আর খান কয়ের বসার আসন ছাড়া আর তেমন বিশেষ কিছুই নেই। যেখানে কুমারের পরিচারিকারা জাঁকজমকপূর্ণ  কক্ষে নরম গালিচা পা রেখে চলা ফেরা ও  কোমল শয্যায় রাত্রি যাপন করে থাকে। সেখানে কুমারের শোবার ব্যবস্থা ছিল অতি সাধারণ। তাই বোধকরি এতো সব সাধারণ বস্তুর মধ্যে কমলিনীর চোখ দুটি বার  বার শয়ন রত ঐ অসাধারণ ব‍্যক্তিটির ওপরেই পরছিল বার বার। যদিও তার লজ্জা এখনো কাটেনি, তবুও কুমারী তাকেই কুমারের সেবার দায়িত্ব দিয়ে প্রস্থান করলো।

কুমারী  শয়নকক্ষে ত‍্যাগ করার পর কমলিনী তার কাঁপা কাঁপা হাত দুখানি কুমারের পায়ে রাখতেই সে চোখ মেলে চাইলো। কমলিনী তখন নত মস্তকে  কুমারের পদসেবায় তার সম্পূর্ণ মনোযোগ একত্রিত করার চেষ্টায় মগ্ন। কুমার হয়তো কিছু বলতো কিন্তু কমলিনীর ভীত মুখভঙ্গি দেখে সে অল্প হেসে আবারও চোখ বুঝলো।

কমলিনী কুমারের কাছে না এলেও তার শারীরিক অবস্থার খবর  বাকীদের থেকে নিয়মিত মনোযোগ সহকারে শুনতো এবং দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করতো। সুতরাং কুমারের রোগ বৃদ্ধির লক্ষণ গুলি কমলিনী নিজেও জানতো। তাই খানিকক্ষণ পরে যখন কুমারের দেহের উত্তাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে শুরু করলো,তখন সে বিচলিত হয়ে পরলো। সেই সাথে কমলিনী এও লক্ষ্য করলো যে খানিকক্ষণ আগে যে শান্ত ভাবে নিদ্রিত ছিল, এখন দেহের উত্তাপ বৃদ্ধির সাথে সাথেই কুমারের দেহের স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ ভাবমূর্তি পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। এবং খানিকক্ষণের মধ্যেই খুব দ্রুত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে দেখে কমলিনী উদ্বিগ্ন হয়ে পালঙ্ক থেকে নেমে শয়নকক্ষের দ্বার সমুখে এসে চিৎকার করে সকলকে ডাকতে লাগলো।
[+] 2 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
///////////
মহারাণী প্রভাদেবী আজ  আপরহ্নে পিত্রালয় থেকে ফিরেই কুমারের শারিরীক অবনতি খবর পেয়ে অতি শীঘ্রই সেনানিবাসের উপস্থিত হতে রওনা করেছিলেন । অন‍্যদিকে রাজবৈদ‍্যের চিকিৎসায় কুমারের শরীর আশানুরূপ সাড়া দেয়নি বরং সময়ে সাথে সাথে অবস্থা আরো অবনতিই ঘটছিল। তার ওপড়ে চিন্তার বিষয় এই যে,গত কদিনের থেকেও আজিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত কদিনের রোগেও কুমার নিজে উঠে দাঁড়িয়ে রাজবৈদ‍্যের সহিত আলোচনা করেছে। কিন্তু আজ সেই কুমার জ্ঞান হারিয়েছে দুবার।

কুমারের এই অভনতি দেকে রাজবৈদ‍্যের মুখ চিন্তিত।  আর সেদিকে লক্ষ্য করে বাকিরে মুখেও যখন চিন্তার ভাব ভঙ্গি ফুটে উঠছে, এমন সময় কুমারের শয়নকক্ষে মহারাণীর আগমন। প্রভাদেবী কক্ষে মধ‍্যে পা রেখেই কুমারের শয্যাপার্শ্বে নতজানু হয়ে কপালে সস্নেহে হাত বুলিয়ে স্নিগ্ধকণ্ঠে একবার ডাকলেন,

– কুমার!

আশ্চর্য হলে সত্য যে এতখন শত ডাকাডাকিতে যে চোখ বুঝে শয‍্যায় পরে ছিল, এবার রাণী মায়ের একটি ডাকেই সে দুর্বল চোখ মেলে তার মুখপানে চাইলো। এরপর মহারাণী সকলকে শয়নকক্ষ ত‍্যাগ করতে বলে পরদিন মধ‍্যাহ্ন পর্যন্ত কুমারের শয‍্যাপার্শ্বে ঠাই বসে রইলেন। ধীরে ধীরে কুমারের শারীরিক অবস্থায় খানিক ঠিক হলে কুমারকে নিদ্রায় রেখে প্রভাদেবী কুমারী উল্কা ও দেবসেনাকে নিয়ে রাজ‍্যবৈদ‍্যের সহিত আলোচনায় বসলেন।


কুমারের শারীরিক অবস্থার আরো উন্নতি হলে মহারাজ এলেন পুত্রের সহিত সাক্ষাৎ করতে। মহারাজ যদিও বেশিক্ষণ থাকলেন না। তবে কুমারের হঠাৎ এমন বিপর্যয়ে কমলিনী গতকাল থেকে আজ রাত্রি পর্যন্ত কিছু মুখে তুলতে পারে নি। এখন কুমারের সুস্থতার কথা শুনে সে কোন কিছু না ভেবেই এক ছুটে এলো কুমারের শয়নকক্ষে। কুমার তখন নিদ্রা মগ্ন। তার শয‍্যার দুই পার্শ্বে দুজন পরিচারিকা বসে হাওয়া করছিল। এদিকে মেঝেতে দেবসেনা বসে না জানি কি করছিল। কমলিনী মনের আনন্দে নিজের বেগ সামলাতে না পেরে সবেগে আছড়ে পরলো দেবসেনার ওপড়ে....

– ওওমাগো...মেরে ফেললে রে... উফফ্.....বজ্জাত মেয়ে চোখে দেখিস না..

এখানে বলে রাখা ভালো যে কমলিনী এখানকার সকল পরিচারিকারা থেকে বয়সে ছোট। সে প্রায় কুমারী সমবয়সী। সুতরাং ছোট হওয়াতে  সবার আদর সে যেমনিভাবে পেত তেমনি অপরাধ করলে ভর্ৎসনাও কমলিনীকে হজম করতে হত বেশি। মহারাণী তখনও কুমারের শয়নকক্ষেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি কমলিনীর এমন ছন্নছাড়া কান্ড দেখে কমলিনী কে নিজের কাছে ডাকলেন।  কিন্তু মহারাণী সমুখে এমন অনাসৃষ্টি  কান্ড বাধিয়ে কমলিনী ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো । কমলিনীর এইরূপ  নির্বুদ্ধিতা দেখে দেবসেনা তাকে আর এবার ধমকা দেবার উদ্দোগ করতেই মহারাণী নিজেই এগিয়ে এলেন। কমলিনীর কাছে এসে ডান হাতে প্রভাদেবী চিবুক ঠেলে কমলের নত মুখখানি একবার পরখ করলেন। তারপর দেবসেনার উদ্দেশ্যে বললেন,

– দেবসেনা! তুমি আগামিকাল অপরাহ্নে কমলকে নিয়ে অন্তঃপুরে আসবে,আমি অপেক্ষায় থাকবো।

এরপর দেবসেনার সাথে কথা শেষ করে মহারাণী  কক্ষ থেকে অন্তর্হিত হলেন। অবশ্য মহারাণী প্রস্থান করলেও কমলিনীর আড়ষ্টতা গেল না। সে বেচারী দেবসেনার ধমক-দামক শুনতে সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে রইল । তবে দেবসেনার কাছে কমলিনীকে ভর্ৎসনা করে সময় নষ্ট করার সময় ছিল না।  তাই সে নিজের পূর্ববর্তী কাজে কমলিনীকে নিযুক্ত করে সেও কুমারের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

রাত্রি দ্বিপ্রহরে নগ্ন বক্ষ, উদোম শরীরের কয়েকটি পরিচারিকা একে অপরের দেহে এক রকম ঝাপিয়ে পরেছে।  কুমারের কক্ষ মধ্যে মেঝে ও বসার আসনগুলিতে কয়েকজন পরিচারিকা জোড়ায় জোড়ায় একে অন‍্যের কোলে চরে স্তন মর্দন বা স্তন চোষণ চালাছে। কেউ কেউ  শৃঙ্গার ক্রিয়া করছে মেঝেতে বসে। এই মুহুর্তে কুমারের শারীরিক অবস্থা গত সপ্তাহ খানেক থেকে বহুগুণ উন্নতির করেছে।

কুমার সজাগ,কিন্তু চারিপাশে এইরূপ উন্মাদনা পূর্ণ দৃশ্য দেখেও তার দৃষ্টি স্থির এবং শান্ত।  দেখে বোঝা যায় এই দৃশ্য তার কাছে নতুন কিছু না। অন‍্যদিকে কমলিনী  আর একটি পরিচারিকারা সাথে কুমারে পদসেবা করতে করতে আঁড় চোখে এই দৃশ্য উপভোগ করে চলেছে। তার কাছে এই অপুর্ব দৃশ্যটি একদম নতুন ও অতি আকর্ষণীয়ও বটে। তাই সেদিকে দৃষ্টি দিতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই কুমারের পদসেবায় বিঘ্ন ঘটছে। আর তাতেই রেগে গিয়ে দ্বিতীয় পরিচারিকা ক্ষণে ক্ষণে কমলিনীকে ভর্ৎসনা করিতেছে ছিল। কিন্তু তা হলে কি হয়, ঘরময় লাস্যময়ী রমনীদের নরম কণ্ঠস্বরে কামার্ত সুখের চিৎকার বারবার কমলিনীর মনোযোগ নষ্ট করছে। তবে একথা সত‍্য যে ,এই দৃশ্যের শুরুতে প্রথম প্রথম কমলিনী লজ্জায় মাথা নত করে ছিল। কিন্তু পুরুষ হয়েও কুমার যখন এমন দৃশ্য দেখেও স্থির ও শান্ত, তবে নারী হয়ে তার যদি খানিক কৌতূহল হয়েই থাকে তবে লজ্জা ঝেড়ে দেখতে ক্ষতি কিসের?
[+] 5 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
(19-01-2025, 05:47 PM)Matir_Pipre Wrote: অসাধারণ গল্পগুচ্ছ

ধন্যবাদ❤️❤️
Like Reply
কুমার দেখি সন্ন্যাসী।
[+] 1 user Likes Sage_69's post
Like Reply
(Yesterday, 06:01 AM)Sage_69 Wrote: কুমার দেখি সন্ন্যাসী।

মন্দ বলনি ব্রো
তবে দেখিই না সমনে কি হয়।
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(Yesterday, 07:10 AM)বহুরূপী Wrote: মন্দ বলনি ব্রো
তবে দেখিই না সমনে কি হয়।

আরো বিস্তারিত খুলে বলতে হবে তাহলে।

Mahreen
Like Reply




Users browsing this thread: [email protected], 3 Guest(s)