Thread Rating:
  • 3 Vote(s) - 4.67 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica যাদুকর
#1
১.

শান্তির সাথে অলোকের পরিচয় অনেকটা কাকতালীয়ভাবে। অনেকে প্রথম আলাপে ওদের পরিচয় হওয়ার গল্প শুনে ভাবে ওদের বোধহয় প্রেমের বিয়ে। আসলে ব্যাপারটি তেমন নয়। ঘটনা অনেকটা এরকম। অলোক তখন ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কোন বিশেষ বিকেলে টিএসসিতে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় হঠাৎ একটি মেয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন চারিদিকে বসন্ত উৎসব চলছে। উৎসবের রঙের সাথে মিলিয়ে মেয়েটির পরনে বাসন্তি রঙের শাড়ি, কালো ব্লাউজ। একমাথা কোঁকড়ানো খোলা চুল ছড়িয়ে আছে পিঠের উপর। ঠিক অলোকের সামনে এসে দাঁড়ানোতে সে অবাক হয়ে তাকায় মেয়েটির দিকে। যেহেতু সে নীচে মাটিতে বসে ছিলো, তাই সবার প্রথমে দৃষ্টি পড়লো মেয়েটির পায়ের স্যান্ডেলে, তারপর ধীরে ধীরে উপরে উঠতে উঠতে শাড়ির কুঁচি, চওড়া হিপ, পাতলা সূতির শাড়ি ভেদ করে দৃশ্যমান গভীর নাভীমূল, আঁচলের একপাশ দিয়ে উন্মুক্ত ঢেউ খেলা কোমর, তারপর আরও একটু উপরে আঁচলের আড়ালে ঢাকা পীনোন্নত স্তন, সরু গ্রীবা। সবশেষে নজরে এলো সুন্দরী একটি নারী মুখ — বড় বড় একজোড়া চোখ, ধনুকের মতো বাঁকা ঠোঁট, ধারালো চিবুক।

চোখের সামনে আচমকা এমন দেবীমূর্তি দেখতে পেয়ে থমকে গেল অলোকদের আড্ডা। রিনিঝিনি গলায় কল কল করে হেসে মেয়েটি সাধুবাদ জানালো ওকে। সম্প্রতি ওর একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। সেই লেখা এই মেয়েটির কাছে ভাল লেগেছে, সেই কথাই নিজে থেকে জানাতে এসেছে। কলেজ জীবন থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করার অভ্যাস ছিল ওর। সেসব লেখা পড়ে বন্ধুরা কখনো ঠাট্টা করতো, কখনো উৎসাহ দিতো। মোটের উপরে উদীয়মান লেখক হিসেবে তার একটি পরিচিতি তৈরি হয়েছিল বন্ধুমহলে। তবে কোন রূপবতী মেয়ে নিজে থেকে এসে ওর লেখার প্রশংসা করছে এটা অলোকের জন্য অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা। বিস্ময়ে প্রথমে কিছুক্ষণ আমতা আমতা করলেও শেষে কিছু কথাবার্তা চালিয়ে জানতে পারলো মেয়েটির নাম শান্তি। ওর এক ব্যাচ জুনিয়র, IBA এর ছাত্রী। মেয়েটি যখন বিদায় নিয়ে চলে যেতে লাগলো, ওর চলমান পথের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অলোক। সত্যি বলতে বাধ্য হলো তাকিয়ে থাকতে। 

এই মেয়েটিকে প্রকৃতি নিজের হাতে এমন কিছু সম্পদ গড়ে দিয়েছে, ক্ষণিকের জন্য হলেও অলোককে স্থান কাল ভুলিয়ে দিল। ওর খেয়ালই ছিল না যে আশেপাশে আরো অনেক ছেলেমেয়ে আড্ডা দিচ্ছে। শান্তি চলে যেতেই সবাই মিলে ওকে চেপে ধরে হৈ হৈ করে উঠলো — এমন সুন্দরী, তার উপরে IBA এর ছাত্রী, পোশাক আশাকে মনে হচ্ছে ধনীর দুলালীও বটে। এমন হুরপরী যেচে এসে ওর লেখার প্রশংসা করে গেল, এবার তো অলোকের কপাল খুললো বলে। অলোক ওদের সাথে সেদিনকার মত হাসি ঠাট্টায় ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলেও ঠিকই বুকের ভিতরে ঝড়ের আভাস টের পেয়েছিল।  

তারপরের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের জন্য জরুরি নয়। তাই কেবল উল্লেখযোগ্য কিছু হাইলাইটস বলে যাই, লেখার সূত্র ধরেই অলোকের সাথে শান্তির যোগাযোগ বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে অলোকের বন্ধু ওরফে রুমমেট আরিফ এবং বন্ধু সার্কেলের অন্যান্যরা বেশ সাহায্য করেছে। হয়তো অলোকের ছুতায় ওরাও শান্তিকে আড্ডায় পেত, হয়তো সেই সুবিধার জন্যই অলোকের সাথে শান্তির জুটি গড়তে সাহায্য করেছিল ওরা, কে জানে! 

সে যাই হোক, বছর দুয়েক পেরিয়ে যাওয়ার পরে শান্তিই ওকে একটা সময়ে ইশারা ইঙ্গিতে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। আর অলোকের মাথায় রীতিমত আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। সত্যি বলতে এতদিনের ঘনিষ্টতায় তার ধারণা হয়েছিল শান্তির সাথে সম্পর্কটা কোন পরিণতি পাবে না, শান্তির যে ধরণের ব্যক্তিত্ব তার সঙ্গে অলোকের মত চাপা স্বভাবের সাধারণ ছেলের কিছুতেই মিলবে না। অলোক যেরকম অন্তর্মুখী, শান্তি তেমনই উচ্ছ্বল, আরিফের ভাষ্যমতে 'চঞ্চলা হরিণ'। যে কোন বিব্রতকর পরিস্থিতি শান্তি চমৎকারভাবে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু অলোক সহজেই বিমর্ষ হয়ে পড়ে। অতিচিন্তায় নিমজ্জিত হয়ে যায়। সব কিছু মিলিয়ে তাই মনে মনে ট্রাজেডির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল সে। কিন্তু ঐ যে, মানুষ যা ভাবে বেশিরভাগ সময়েই তার উল্টো ঘটনা ঘটে। অলোকের পরিবার থেকে শান্তির বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলে দুই পরিবারের আশীর্বাদ নিয়ে এক শুভদিনে এই দুই নরনারী বিয়ের পিড়িতে বসে যায়।

আমাদের গল্পটি ওদের বিয়ের ৪ বছর পরের। অলোক অনার্স পাশ করে একটি পত্রিকায় সম্পাদকের কাজ করছে। সংসারের চাপে মাস্টার্স করার সময় ও সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তবে শান্তি মাস্টার্স পাশ করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছে। দুজনের উপার্জনে বেশ ভালোই চলছে সংসার। ঢাকার অদূরে একটি আবাসিক এলাকায় ফ্লাট ভাড়া নিয়ে থাকছে। শান্তি সকালে দুজনের জন্য নাস্তা তৈরি করে রেখে অফিসের গাড়িতে করে বেরিয়ে যায় ন'টার মধ্যে। অলোক কিছুটা দেরি করে বাসা থেকে বের হলেও ফেরে শান্তির বেশ আগেই। শান্তিদের মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি। জুনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে বেশ পরিশ্রম করতে হয় তাকে, অফিস আওয়ারের বাইরেও সময় দিতে হয়। বেতনটাও সে হিসেবে দেয়, অলোকের পত্রিকার চেয়ে বেশিই দেয়। তবে এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ভিতরে মন কষাকষি নেই। যদিও শান্তি অলোককে অনেকবার বলেছে যেহেতু সে চাকরি করছে, তাই অলোকের উচিত এই সুযোগে মাস্টার্স শেষ করে আরো ভালো চাকরির চেষ্টা করা। কিংবা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্যেও চেষ্টা করতে পারে। অলোক শোনেনি। উলটো অলোক তাকে অনেকবার বলেছে তার পত্রিকার চাকরির বেতনে সংসার তো চলছেই, শান্তির উচিত এত লম্বা সময় অফিসে না দিয়ে ঘর সংসারে মন দেওয়া, শান্তি কর্ণপাত করেনি। পাঠকরা বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই — অলোক শান্তি দম্পতির সাজানো সংসারে এখনো কোন সন্তান আসেনি। 

নতুন মুখ আসবেই বা কীভাবে! অলোক যখন ফ্রি থাকে, অথবা রাত জেগে সম্পাদনার কাজ করে, শান্তি তখন ভোরে উঠে ব্রেকফাস্ট তৈরি, আর অফিসের গাড়ির চিন্তায় ডিনার সেরেই ঘুমিয়ে পড়ে। অন্যদিকে শান্তি যখন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়িতে থাকে তখন অলোক সময় কাটায় পত্রিকা অফিসে, না হয় ল্যাপটপের সামনে লেখালেখিতে। 

যা হোক৷ এভাবেই দিনচক্রে চলতে চলতে এক অবকাশ যাপনের দিনে, ব্রেকফাস্টের টেবিলে শান্তি বললো, "তোমার কী আজকে কাজ আছে?"
"কেন বলো তো?", অলোক খাবার খেতে খেতে ট্যাবলেট ফোনে স্ক্রল করছিল। শান্তির প্রশ্নে দৃষ্টি না সরিয়েই জবাব দিল।
''না। বলছিলাম যে আজকে তো দুজনেরই ছুটি আছে। অনেকদিন হল দুজন একসঙ্গে বের হই না।"
"হ্যাঁ। অনেকদিন বের হই না। কিন্তু দুজনেরই ছুটি আছে সেটা ঠিক নয়। আমার হাতে অনেক কাজ। এ মাসের শেষে নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা বের হবে আমাদের পত্রিকা থেকে। আমাকেই সেগুলো এডিটোরিয়ালের দায়িত্ব দেওয়া আছে। প্রচুর কাজ আমার হাতে।" 
"সব সময়ই তো শুধু কাজের অজুহাত দাও।" 
"উহু! অজুহাত নয়। যেটা সত্যি, সেটাই বলেছি। তুমিও তো বাড়িতে বসে অফিসের কাজ কর। তোমার কাজ থাকলে আমার থাকতে পারবে না কেন!"
"হ্যাঁ। আমারও কাজ থাকে। কিন্তু ছুটির দিনটা অন্তত ফাঁকা রাখি আমি।" শান্তির গলায় অভিমানের সুর। নিজের আর অলোকের প্লেট নিয়ে রান্নাঘরে চলে গেল সে। ট্যাপ থেকে পানি পড়ার শব্দ টের পাওয়া গেল। 
অলোক বেসিনে হাত ধুতে ধুতে উঁচু গলায় বললো, "বেশ তো। আমি তো বলিনি যে যাব না। কোথায় যাবে ঠিক করেছ?" 
শান্তি চুপ করে রইলো। বাসন নাড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অলোক রান্নাঘরে ঢুকে ওর পিছনে গা ঘেষে দাঁড়ালো। দুহাতে কোমর জড়িয়ে পেটের চর্বির উপরে আদর করে দিতে লাগল। শান্তির উঁচু নিতম্ব বিয়ের পরে আর উত্তল হয়েছে। অলোকের শরীরে চাপ খেয়ে রইলো সেটি। ওর খোলা কাঁধ ও কানের মাঝের গলার পাশে ঠোঁট বুলাতে লাগলো অলোক। ৪ বছরের বিবাহিত দম্পতি হিসেবে এসব শারীরীক ইশারা ভালোই জানা আছে দুজনের। অলোকের ঠোঁটের আলতো স্পর্শে কাঁটা দিল শান্তির শরীরে। নীচু স্বরে বললো, "এই, হচ্ছেটা কী? কাজ করছিলে। তো তাই কর গিয়ে।"
"আমার সুন্দরী বউটা রাগ করে থাকলে কাজে মন বসে?" 
"ওরে বাপরে! ঢং দেখে বাঁচি না।"
অলোক হেসে ফেলে শান্তির কথা শুনে। আরো ঘনিষ্ট হয়ে আসে, শান্তির শরীরের সাথে আরো গা লাগিয়ে দাঁড়ায়। পেটের উপর হাত বুলাতে বুলাতে উপরে এসে দু হাতের আঙ্গুল ছড়িয়ে শান্তির দুধ দুটো ধরে ফেলে। বিয়ের পরে গত ৪ বছরে শরীরটা কিছুটা ভারি হয়েছে। তবে ঈশ্বর জায়গা মতই চর্বিগুলো বসিয়েছেন। খুব সামান্য অংশই হাতে আনতে পারলো অলোক। হাতের তালু মেলে নীচ থেকে তুলে ধরলো ওজন মাপার মত করে — যথেষ্ট ভারী। আচ্ছা! শান্তির কোলে যদি বাচ্চা থাকতো, তাহলে কী ওর দুধে আরো ভার হতো! আরো স্ফীত হয়ে উঠত! কতদিন এভাবে আদর করে না অলোক। ওর প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গটা ঈষৎ উত্তেজিত হয়ে উঠে শান্তির নিতম্বে ধাক্কা দেয়। 
"এই, কী হচ্ছে এসব? সরো বলছি। সরো।" শান্তি কড়া গলায় বলে।
"কী হবে! কিছুই হয়নি।"
"হয়নি মানে? আমি টের পাচ্ছি না নাকি?" 

কনুই দিয়ে অলোকের পেটে একটা গুঁতো দিলো শান্তি। ব্যাথা পেয়ে সরে গেল অলোক। পেট ডলতে ডলতে সোফায় গিয়ে বসলো। নাহ! ছুটির দিনে বউকে রাগিয়ে দেওয়া খুব ভুল কাজ হয়েছে। আসলে এত দিনের সংসারে থেকে অলোক ভুলেই গিয়েছিল যে সে শান্তির মত একটা মেয়ের সাথে সে সংসার করছে, যেই মেয়েটির জন্য ক্যাম্পাসে সিনিয়র জুনিয়র, ছাত্র-শিক্ষক সকলে একযোগে পাগল হয়ে ছিল। নিঃসন্দেহে শান্তি এখনো যে কোন পুরুষের স্বপ্নের নায়িকা হওয়ার মত যোগ্যতা ও গুণসম্পন্ন। এতদিনে তার যোগ্যতা বরং আরো বেড়েছে। বিয়ের আগে সে ছিল কুমারী যুবতী! আর এখন হয়েছে রমণী সুন্দরী! রমণী মানে যেন কী? যাকে রমণ করা যায় সেই তো রমণী, তাই না? নাহ! এজন্যই জ্ঞানীরা বলেন বউকে রাগাতে নেই। তার উপরে বউ যদি এমন ডাকসাইটে সুন্দরী হয়। আসলে সকল বাঙ্গালি স্বামীরই বোধহয় একটা কুঅভ্যাস আছে, বিয়ে করা বউয়ের সৌন্দর্য্যের প্রতি একরকম উন্নাসিকতা কাজ করে তাদের মাঝে। অলোকের ক্ষেত্রেও কী তেমনটা হচ্ছে? তা নাহলে শান্তি যখন বাইরে যাওয়ার কথা বললো, তখন উল্টাপাল্টা বকে রাগিয়ে দিল কেন? তার নিজেরই উচিত ছিল এমন ছুটির দিনে সুন্দরী বউকে বাইরে থেকে বেড়িয়ে নিয়ে আসা। সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করতে করতে আফসোস হলো অলোকের। শান্তিকে ও ভাল করেই চেনে। নিজে থেকে রাগ না কমালে, এখন আর ওর ধারে কাছে ঘেঁষতে দেবে না। 

কিছুক্ষণ পর ওকে অবাক করে দিয়ে শান্তি এসে বললো, "আমাদের এলাকারই কিন্ডারগার্টেন মাঠে মেলা হচ্ছে। যাবে? কিছু শপিং করার আছে আমার। মেলা থেকে ঘুরে একবারে শপিং আর ডিনার করে তারপর ফিরলাম না হয়?" অলোক তো আকাশের চাঁদ হাতে পেল যেন। এত তাড়াতাড়ির শান্তির রাগ ভাঙবে ভাবেনি। তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে গেল সে। 

(চলবে)
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
পাঠ ও মন্তব্যের আমন্ত্রণ
Like Reply
#3
খুব সুন্দর শুরু। এখনো প্লট কোনদিকে প্রবাহিত হবে আঁচ করা যাচ্ছেনা। তবে দারুণ লিখছেন এবং গল্পের প্লটটিও খুবই সুন্দর ও আশাব্যঞ্জক। চালিয়ে যাবেন  এবং সুন্দরভাবে সমাপ্তি টানবেন আশা করি। আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম।
Like Reply
#4
দারুণ শুরু
Like Reply
#5
অসাধারণ শুরু হয়েছে
[+] 1 user Likes Anita Dey's post
Like Reply
#6
সুন্দর শুরু ।
চালিয়ে যান ....
Like Reply
#7
২.

অলোকদের ফ্লাট যে এলাকায়, সেটার প্রতিষ্ঠাকাল বেশিদিন নয়। সদ্য গঠিত হাউজিং সোসাইটি কয়েক দিন পর পর বেশ উৎসাহের সাথে বিভিন্ন সামাজিক প্রোগ্রামের আয়োজন করে যাতে সোসাইটির অনেকে যুক্ত হতে পারে। এখানে বাচ্চাদের জন্য নির্মিত কিন্ডারেগার্টেনের সংলগ্ন একটি বাস্কেটবল গ্রাউন্ডের মত স্থান আছে, যেটা কমিউনিটি গেদারিং এর জন্য ব্যবহৃত হয়। সেখানেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার মাঠ বলতে যেমনটা বোঝায়, অর্থাৎ চারিদিকে খোলা মাঠের মাঝে বিভিন্ন রকমের দোকানের পসরা থাকে, দেশীয় রাইড থাকে, খাবারের দোকান থাকে, এটা তেমন কিছু নয়।

বেশিরভাগ দোকান বলতে আবাসিকেরই বিভিন্ন ফ্লাটের গৃহিনী, কন্যারা ঘরে বানানো খাবার, কারুশিল্প ইত্যাদি নিয়ে বসেছে। ছুটির দিন বলে অনেকের স্বামী কিংবা বাবারাও উপস্থিত আছেন, ছুটোছুটি করা বাচ্চাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা, সাথে বউদেরও পাহারা দিচ্ছে। বেশিরভাগ পুরুষই যে এই সুযোগে মেলায় আগত নারীদের চোখে দেখার সুযোগটাও কাজে লাগাচ্ছে, সেটাও সহজে লক্ষণীয়। অন্তত মেলায় আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই বিষয়টি ধরে ফেলে একাকী মুচকি হেসেছে অলোক।

এই সোসাইটির বাসিন্দারা সবাই মোটামুটি উচ্চ মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী অথবা ব্যবসায়ী। সব পরিবারের নারীরাই শিক্ষিত। সাজে পোশাকে কারোর ভিতরেই গোঁড়ামি নেই। তাছাড়া এ ধরণের উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর ভিতরে এক অদ্ভুত মানসিকতা কাজ করে। এরা গুলশান বনানীর মত পুরোপুরি উচ্চবিত্ত নয়, প্র‍তি সন্ধ্যায় পার্টিতে যাওয়ার মতো আর্থসামজিক সামর্থ্য, সুযোগ ইত্যাদি এদের থাকে না। আবার মধ্যবিত্তের তকমাটাও তারা অত্যন্ত অপছন্দ করে। মধ্যবিত্ত শ্রেণী তাদের কাছে ক্ষ্যাত, সেকেলে মনে হয়। চলনে, বলনে, আচার সংস্কৃতির মাধ্যমে যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে এদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে মধ্যবিত্তের ট্যাগ ঝেড়ে ফেলে উচ্চবিত্তের আসরে নিজেদের জায়গা করে নেওয়ার। এই মেলাতেও তেমনটাও লক্ষণীয়, বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে। এখানে জিন্স টপস পরিহিত নারীরা যেমন আছে, আছে দেশি পোশাক পরিহিতরাও। যারা শাড়ি পরে এসেছে তাদের পাতলা আঁচলের নীচে উদগ্র বক্ষের কারুকাজ স্পষ্ট দৃশ্যমান, যারা হি*জা*ব পরেছে, তাদের পশ্চাৎদেশের ঢলুনি বরং ওয়েস্টার্ন পোশাকের নারীদের চেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণকারী। যারা সালোয়ার কামিজ পরেছে, কারোরই ওড়না দিয়ে বুক ঢাকার ব্যস্ততা নেই। সবমিলিয়ে এই মেলার স্টলের চেয়ে বরং রমণীরাই অধিক দর্শনীয় বস্তু। এই ছুটির দিনে ঘরের আরাম ছেড়ে এইখানে আসা পুরুষগুলোর জন্য এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলা যায়। শরীরের আরাম না হলেও, চোখের আরাম হচ্ছে ভালোই।

অলোক এই দিক থেকে অন্যদের তুলনায় একটু ভিন্ন। সে উদ্দেশ্যহীনভাবে হেঁটে বেড়াচ্ছে আর মনে মনে ফেলে আসা অসমাপ্ত লেখার খসড়া ভেবে নিচ্ছে। শান্তির দিকেও দৃষ্টি রাখছে মাঝে সাঝে। অদূরে কুটির শিল্পের এক দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আরো কয়েকজন মহিলার সঙ্গে হেসে হেসে গল্প করছে শান্তি। ওখানে উপস্থিত সব নারীরাই যথেষ্ট সেজেগুজে এসেছেন। তবে অলোকের মনে হলো, শান্তির সৌন্দর্য্য যেন বিলের পানিতে ভাসমান হাজার কচুরিপানার ভীড়ে সদ্য ফোটা এক নীলপদ্ম। অন্য মেয়েদের তুলনায় তেমন কোন উগ্র সাজ নেই শান্তির। ওর পরনে সাদা লেগিংসের সঙ্গে ফুলের নকশা করা নীল রঙের সেলোয়ার কামিজ। বডি ফিট করে টেইলরিং করা বিধায় শরীরের উঁচু নীচু ভাঁজে ভাঁজে মিশে গেছে, সুন্দর করে ওর চওড়া নিতম্বের উপর দিয়ে ঝুলে পড়েছে নীচে। আবার কোমরের কাছে জামার ফাঁড়া দিয়ে সাদা লেগিংসে কামড়ে ধরা সুগঠিত উরু ও ভারী নিতম্বের সুগোল আকৃতিও স্পষ্ট চোখে পড়ছে। যেমনটা কাঁধের এক পাশ দিয়ে ওড়না ঝুলানোর ফলে অন্য পাশের পয়োধরটা চোখে পড়ছে। ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচিং করে কানে ও গলায় নীল রঙের পাথরের গহনা পরেছে শান্তি৷ তবে চুল বাঁধেনি সে। সেলুন থেকে যত্ন করে কাটা সিল্কি চুল পিঠের উপরে ছড়িয়ে দিয়েছে। মাঝে মাঝে কয়েক গোছা চুল ওর অসম্ভব ফর্সা মুখে এসে পড়ছে, হাত দিয়ে সুন্দর করে সেই চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে কানের পাশে। বিয়ের আগে সেই ইউনিভার্সিটি জীবন থেকে শান্তির এই ব্যাপারটি লক্ষ করেছে অলোক, মেয়েটি নিজের সৌন্দর্য্যের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। নিজের সৌন্দর্য্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কোন জড়তা কাজ করে না তার মাঝে। যদিও শান্তিকে কখনো ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে দেখেনি। কিন্তু দেশি পোশাক পরলেও শান্তির ফ্যাশনে, আচার আচরণে একধরণের সাহসীকতা থাকে। বিয়ের এত বছর পরেও অলোক যার সঙ্গে তাল মিলাতে পারে না। মাঝে মাঝে ওর মনে হয় ও যেন একটা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিকে পাশে নিয়ে বসে আছে। যে কোন সময়ে আগ্নেয়গিরি ফেটে লাভা উদগীরিত হলে তার করার কিছুই থাকবে না। সে কেবল প্রার্থনাই করতে পারে, যাতে এমন বিপদ তার সামনে না আসে।


শান্তি গল্প করতে করতে ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে হাত নাড়ে, পাতলা ঠোঁটের আড়ালে মুক্তার মত দাঁত চকমক করে। অলোক হাত নেড়ে প্রতিউত্তর জানায়, অর্থাৎ সে যে আশেপাশেই আছে সেটা ইশারায় বুঝিয়ে দেয় বউকে।

মেলার একপ্রান্তে জুসের ঘর দেখতে পায় অলোক, হাউজিং সোসাইটির সদস্যদের জন্য ফ্রি ফলের জুস ও কফির জন্য কয়েকটা ডিসপেন্সার বসানো হয়েছে সেখানে। এখানে সেল্ফ সার্ভিং সিস্টেম। ইতোমধ্যেই বেশ কজন ছেলে বুড়ো হাতে কাগজের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, অনেকে সিগারেট ফুঁকছে, নিজেদের ভিতরে উঁচু গলায় কথা বলছে। এদিকটা পুরুষদের দখলে বলে শিশু ও মহিলারা কেউ সহসা এদিকটায় দাঁড়াচ্ছে না, কয়েকজন নিজেরা কাপ ভর্তি করে নিয়ে দ্রুত সরে পড়ছে, বেশিরভাগ পুরুষ সঙ্গীকে খাটিয়ে নিচ্ছে।

অলোকেরও সিগারেটের নেশা পেয়ে গেল, এক হাতে কফির কাপ ও অন্য হাতে সিগারেট  নিয়ে দাঁড়িয়ে গেল এক কর্ণারে, গোল গোল আড্ডার সার্কেলগুলো থেকে একটু পেছনে। কফিতে চুমুক দিতে দিতে নিজের চিন্তায় ডুবে যাওয়ার চেষ্টা করলো, তখনই ওর কানে গেল কিছু টুকরা কথা। নিকটেই কয়েক জন অল্প বয়সী ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছিল। নীচু গলাতেই কথা বলছিল ওরা, তবে সাধারণত এ বয়সে যা হয়, কারণে অকারণে একেকজন হেসে ওঠে, একে অপরের কথা রিপিট করে। ফলে সব কথা নীচু গলায় থাকে না। না চাইতেও ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশে।

১ম জন: "...এই খানে বাসা ভাড়া নিয়ে বিরাট লাভ হইছে তো মামা... সব তো দেখি মাল দিয়ে ভর্তি...''
২য় জন: "... তুমি তো এ কারণেই এখানে ফ্লাট নিয়েছো।"
১ম৷ জন: "... এইটা ঠিক। প্রথমদিন ঘুরেই বুঝে ফেলেছিলাম যে এটা একটা সোনার খনি। এখানে অবারিত সুযোগ আছে। কেবল কাজে লাগাতে জানলেই হয়। হে হে হে ...'' (সমস্বরে হাসি)
৩য় জন: "... যা করবে বুঝে শুনে করো। আর আমাদেরকেও সঙ্গে রেখো। By the way, কতক্ষণ আর এখানে খালিমুখে দাঁড়িয়ে থাকবি! উইকএন্ডে যদি একটু মোজ মাস্তি না হয় তাহলে সারা সপ্তাহ চলবো কীভাবে! পথ দেখাও গুরুজী..."
২য় জন: ''আরে সেটাই তো। রাকিব তোমার ভেল্কি দেখার জন্য বসে আছি।"
১ম জন (রাকিব): "You know me guys. আমি যাকে তাকে ধরি না। সহজ শিকার ধরার ভেতরে কোন আনন্দ নেই। And you know I have certain types as well. হে হে হে... তবে তোমাদের জন্য খুশির খবর হলো I have probably found the right one at last."
''কে কে? কোনটা?" (বাকী দুজন সমস্বরে)
রাকিব: ঐ যে, 2 O' Clock। Blue necklace and earrings. Cute face with Busty melons and bubble ass.

৩য় জন: "কোনটা রে! ঐটা? ওরে শালা... তোর আসলেই জহুরির চোখ। এই ভীড়ের ভিতরে এতদূর থেকে সোনা খুঁজে পেয়েছিস। আরেব্বাস..."
২য় জন: "মালটাকে তো চেনা চেনা লাগে। মানে আগে দেখেছি আরকি। আমাদের পাশের বিল্ডিং-য়েই থাকে। দেখস নাই? জব করে সম্ভবত। সকালে অফিসে যাওয়ার সময়ে কয়েকবার গাড়িতে যেতে দেখেছি। খাসা জিনিস।"
৩য় জন: "* মনে হচ্ছে। হাতে শাখা পলা আছে মনে হচ্ছে।"
রাকিব: "আমার সাথে থাকতে থাকতে তোমাদেরও অবজারভেশন  ক্ষমতা বেড়েছে। My type of women she is. বাচ্চারা তোমরা থাকো তবে। আমি কাজে নেমে পড়ি।" (বিটকেল হাসি)
২য় জন: "দেখ, আমাদের ভুলে যেও না।"
৩য় জন: "ধীরে বৎস, ধীরে। আগে আমি ফলটাকে টোকা দিয়ে দেখে আসি, ফল পাকলে তোমরাও ভাগ পাবে। তোমাদের কিছু না দিয়ে আজ পর্যন্ত কিছু খেয়েছি?" (আরেক দফা সমস্বরে হাসির রোল পড়ে গেল।)

না চাইতেও এসব আলাপ অলোককে শুনতে হলো। এরা সবাই ওর চেয়ে বয়সে ছোট হবে। এমন বয়সে সেও এসব আড্ডা দিয়েছে। তাই বেশি মাথা ঘামালো না। হাতের সিগারেটটা শেষ করে ছুঁড়ে ফেলে আরেক কাপ কফি হাতে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো। শান্তি এখনো আড্ডা দিচ্ছে। চলে যাওয়ার তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখানে অলোকের পরিচিত কেউ নেই। শান্তির মত রাতারাতি কারো সাথে পরিচিত হয়ে গল্প জুড়ে দেওয়ার মত ইচ্ছেও নেই ওর।

অগত্যা সময় কাটানোর জন্য মেলার অন্য পাশটা টহল দিতে শুরু করলো। চুপচাপ হাঁটতে হাঁটতে স্টলগুলো দেখতে থাকলো। এদিকেও সেই একই শুকনো খাবার, পিঠা, ঝালমুড়ির দোকান, বাচ্চাদের কিছু খেলনার দোকান। এর মধ্যে একটা ব্যতিক্রমি স্টল চোখে পড়লো অলোকের। মাথার উপরে সাইনবোর্ডে লেখা "মায়ারাজ্যের রাজা, কামরুখ কামাখ্যা জয় করে আসা তন্ত্রসাধক, মহান জাদু সম্রাট ফড়িং শাহ-এর Show-এ স্বাগতম।'' লাল নীল হরেক রকমের বাতি জ্বলছে নিভছে, হলিউডের কোন হরর সিনেমার মিউজিক বাজিয়ে ও ফগ মেশিন দিয়ে কৃত্রিম ধোঁয়ার কুন্ডলী সৃষ্টি করে রহস্য তৈরীর চেষ্টা করা হয়েছে।

এ ধরণের সাইনবোর্ড লাগিয়ে বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে প্রচুর স্ট্রিট ম্যাজিশিয়ান ঘুরে বেড়ায়। দুই একজন মনের আনন্দে কাজ করলেও, অধিকাংশরাই যাদু সম্রাট, তন্ত্রমন্ত্রসাধক, ভাগ্য দর্শন ইত্যাদি কথা বলে লোক ঠকিয়ে অর্থ উপার্জন করে। এই ফড়িং শাহ তেমন কেউ কী না কে জানে। পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে একটু স্বাভাবিক কৌতূহল কাজ করলো অলোকের মনে। কোন ফ্রডকে ধরে যদি একটা ইন্টারেস্টিং গল্প পাওয়া যায় তবে সাপ্তাহিক সংখ্যায় একটা লেখা প্রকাশ করা যাবে। কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে জাদু সম্রাটের স্টলের পাশে দাঁড়ালো সে। ভেতরে ছোট্ট কাঠের স্টেজের উপরে ফড়িং শাহ-কে দেখা গেল। কথায় আছে আগে দর্শনধারী তারপর গুণবিচারী। প্রথম দর্শনেই লোকটাকে আস্ত ধড়িবাজ মনে হলো অলোকের কাছে। একেবারে শুকনো, ঢ্যাঙঢ্যাঙে লম্বা লোকটার পরনে গুলিস্তানের সস্তা কাপড়ের বেঢপ সাইজের কালো কোট, কালো প্যান্ট, ময়লা সাদা শার্ট। মাথায় আবার ইউরোপের উইচদের নকল করে চোখা কালো হ্যাট পরেছে। লোকটার চেহারাটাও কুদর্শন। অস্বাভাবিক লম্বা নাক, চোখ দুটো কোটরের ভিতরে ঢুকে রয়েছে। মাথার একেবারে  ফিনফিনে চুলগুলো কানের উপরে, ঘাড়ের পিছনে ঝুলে আছে। মুখে মাংশ বলতে কিছু নেই, একদম মিশরের মমির মত। লোকটা ব্যাঙের মত লাফিয়ে বেড়াচ্ছে স্টেজে। ওর কাছে সব বাচ্চারা ভিড় করেছে। সম্ভবত বাচ্চার বাপেরা এইখানে বাচ্চাদের ছেড়ে দিয়ে নিজেদের মর্জিমত সময় কাটাচ্ছে। কয়েক মিনিট ফড়িং শাহ-এর কাণ্ডকারখানা দেখে অলোকের মেজাজ চড়তে লাগল। মেজাজ চড়ার সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। আশেপাশে ও ছাড়া কোন বয়স্ক মানুষ নেই। এখানকার সব বাচ্চাদের গড় বয়স ৮-১০ বছর, বেশিরভাগই মেয়ে বাচ্চা। অলোকের চোখে এমন কিছু ধরা পড়েছে যেটার জন্য সে একদমই প্রস্তুত ছিল না। সে কফির কাপ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে গটগট করে স্টেজে উঠে গেল।

(চলবে)
[+] 5 users Like শূন্যপুরাণ's post
Like Reply
#8
দারুণ হচ্ছে, চালিয়ে যাও।
Like Reply
#9
প্রথম পর্বেই জমিয়ে দিয়েছেন। লেখা নিয়মিত চালিয়ে যাবেন আশা করি। সর্বোপরি ধন্যবাদ লেখক
Like Reply




Users browsing this thread: 4 Guest(s)