Thread Rating:
  • 132 Vote(s) - 3.06 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ভাঙনের পরে
Dada update please
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
Henry sir apni kothai গেলেন
একটা পোস্ট করে বলুন না
আমরা খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি আপ্নার
Plz একটু তাড়াতাড়ি আপডেট দিন
Lot's of love Henry sir
[+] 1 user Likes Realbond's post
Like Reply
আজকে 99% কালকে 100% নতুন পর্ব আসবে ।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 2 users Like Boti babu's post
Like Reply
Dada kisu to bolen.......
Like Reply
দারুণ ভাবে এগুচ্ছে, এই ধরণের গল্পে রিপু অবশ্যই দেওয়া উচিত।
[+] 1 user Likes Thomascrose's post
Like Reply
Henry dada update Kobe pabo
Like Reply
আগামীকাল আপডেট দেব
[+] 9 users Like Henry's post
Like Reply
(16-12-2024, 10:39 PM)Henry Wrote: আগামীকাল আপডেট দেব

Will wait for your update....
Like Reply
(16-12-2024, 10:39 PM)Henry Wrote: আগামীকাল আপডেট দেব

Henry স্যার প্লিজ আপডেট টা বড়ো করে দিও 
অনেক দিন পর আপডেট আসছে 
Lot's of love Henry sir
[+] 1 user Likes Realbond's post
Like Reply
Opekhai.......asi...
Like Reply
(16-12-2024, 10:39 PM)Henry Wrote: আগামীকাল আপডেট দেব

তাই নাকি কাকু ??। লিখো ভালো তবে তোমার বিলম্ব অতিরিক্ত।
Like Reply
(17-12-2024, 10:11 PM)@peash21 Wrote: তাই নাকি কাকু ??। লিখো ভালো তবে তোমার বিলম্ব অতিরিক্ত।

Give him respect
Like Reply
পর্ব: ২৪

পিউ এসেছে আজ। কদিনের জন্য মাত্র ও' আসতে পেরেছে বলেই ট্রেনের ঝক্কি নেয়নি। সুচিত্রা অবশ্য মেয়েকে একা একা ফ্লাইটের ঝামেলা নেওয়ার জন্য বকাঝকা করেনি। 
জয়ন্ত নিজেকে মেয়ে আসায় মানসিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সুচিত্রা তাকে চিট করেছে, সুচি পরপুরুষের সাথে সম্পর্ক গড়তে পারে, এটা এখনো তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। মনে হচ্ছে ওর; এটাই ভাগ্যের পরিহাস, কর্মফল, যা কিছু বলা যায়। জয়ন্ত ভাবছে অনবরত, মিতার সাথে তার পরকীয়ায় যে ঘটনা সামান্য মনে হচ্ছিল, সেই ঘটনা তার বিশ্বাসী স্ত্রী সুচিত্রা করতে পারাটা বড্ড আপত্তিকর ঠেকছে। কিন্তু সে অসহায়, সুচি তাকে লঘু পাপে এত বড় দন্ড দিল! নাকি পাপ দুজনেরই একই! এ দুই প্রশ্ন ওর মননে বড্ড গ্লানি তৈরি করেছে। 

পিউয়ের আজ জন্মদিনও। জয়ন্ত ভুলে গেছিল। সুচি মনে রেখেছে। সুচি সংসারের দায়িত্ব সামলে, কলেজ সামলেও ছেলে-মেয়েদের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী সব মনে রাখে। জয়ন্ত পারে না। অথচ সেই সুচিই কিনা পর পুরুষের সাথে শুয়েছে! কে সেই পরপুরুষ!

জয়ন্ত প্রশ্ন করেনি। জানার ইচ্ছাও নেই। ডিভোর্স এখন তাদের সময়ের অপেক্ষা। জয়ন্তের কাছে সুচিত্রা কোনো খোরপোষ দাবী করবে না। সুচিত্রা স্বাবলম্বী। মায়ের কাছে চলে গেলে, তার নিজস্ব বাড়ি, একার জীবন। সুচি যদি প্রতিহিংসার জন্য এই পাপকাজ না করত হয়ত জয়ন্ত অপরাধী হয়ে থাকতো, সুচি কি তার অপরাধ কমিয়ে দিল? 

জয়ন্তর মনদ্বন্দ্বে ঢুকছে না বাড়ির হৈ হৈ পরিবেশ। পিউ বিট্টু-লাট্টুর সাথে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। বরং বাচ্চাদুটো পিউকে বেশ পছন্দ করায় সুচিত্রা একটু হালকা হয়েছে। 
বাড়ির ড্রয়িং রুম বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ছবির বাচ্চা মেয়েটাও এসেছে। এতকিছুর মধ্যে বিষন্ন হয়ে আছে অংশু। 

অংশু দিদিকে আড়ালে পেলে জিজ্ঞেস করলে---বাবা-মায়ের ঝগড়াঝাটি চলছে জানিস? 

পিউ লাট্টুকে দেখাচ্ছিল ওর মোবাইল ফোনে বিভিন্ন রঙ বেরঙের কার্টুন ভিডিও। সে বলল---হুম্ম। বাবা-মা এডাল্ট। তাদের ডিসিশন নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি না থাকাই দরকার। ভাই, তুইও বড় হয়েছিস। তাছাড়া...

---তা বলে বাবা-মা আলাদা হয়ে যাবে? 

পিউ হাসলো। লাট্টুর হাতে মোবাইলটা দিয়ে বললে---সাবধানে দেখিস। মোবাইলটা ফেলে দিসনা। 

তারপর সে অংশুর দিকে তাকালো। বলল---বাবা-মা যদি মনে করে তারা আর একসাথে থাকতে পারবে না, সেখানে আমরা কি করতে পারি। আমাদের সেপারেট লাইফ আছে। আমি ফরেনে সেটল হতে চাই। তুই মেডিক্যালে যাবি এইচএসের পর। তখন তো এমনিতেই আমরা বাবা-মার থেকে আলাদা হয়ে যাবো। ম্যাচিওর হ' ভাই।

অংশু চুপ করে গেল। সন্ধে সাড়ে সাতটার দিকে কেক কাটা হল। এ বাড়ির ছেলেমেয়েদের এমন গম্ভীর জন্মদিন পালন হয়নি। সকলেই জানে এই পরিবার ভেঙে যাচ্ছে, অথচ তারা আচরণ করতে সচেষ্ট স্বাভাবিক ভাবে। 
***
[+] 11 users Like Henry's post
Like Reply
রাত্রি ন'টার দিকে ছবি মাসি চলে গেল। মা বিট্টু-লাট্টুকে খাওয়াচ্ছে। লাট্টু ঘুমে ঢুলে পড়ছে খেতে বসে। সারাদিন হুটোপুটি করে ওর চোখে ঘুম। মা ওদের খাইয়ে বলল---অংশু তোর দিদি আর বাবাকে ডাক। খাবার বাড়ছি।

খাবার টেবিলে সকলকে খেতে দিয়ে সুচি বসল সবার শেষে। বললে---অংশু, খাসির টেস্টটা কেমন হয়েছে রে?

অংশু মাংসের হাড় চিবোতে চিবোতে বলল---ভালোই। তবে পোস্ততে নুন দিতে ভুলে গেছ।

---ওমা! কি বলিস!

পিউ বলল---আমার মতে মাছটা ভালো হয়েছে সবচেয়ে। ওটা কে করেছে মা? ছবি মাসি না তুমি?

---সবই তো আমি করলাম। ছবি তো শুধু হাতের কাছে লাগা ছাড়া কি করল।

জয়ন্ত চুপ করে খেয়ে যাচ্ছে। সুচি লক্ষ্য করল ও'র ভাতের থালার দিকে। ডেকচি থেকে ও'র প্লেটে ভাত তুলে দিলে জয়ন্ত বললে---থাক।

তবু সুচি ভাত তুলে দিল। পিউ বলল---তাহলে তোমরা ডিভোর্স নিচ্ছ ফাইনাল?

জয়ন্ত চশমার ওপর দিয়ে মেয়ের দিকে তাকালো। সুচি বললে---হ্যা। তোদের অনেক কথা বলার আছে আমার। তোরা বড় হয়েছিস। আশা করি বুঝবি।

পিউয়ের খাওয়া শেষ। ও' এঁটো হাতে বসে রইল খাবার টেবিলে। সুচি বললে---আমি আর তোর বাবা ডিভোর্স নিচ্ছি মানে তোদের প্রতি আমরা কোনো কার্পণ্য করব, এমন নয়। আমরা তো একসাথে বাইশ বছর হল কাটালাম। এখন মনে হয় আমাদের একটা নিজস্ব স্পেস দরকার। আমি তোদের দিদার কাছে চলে যাবো পরের সপ্তাহে। ডিভোর্সের ডেট আছে ক'দিন পরেই। তোর বাবার আপত্তি না থাকলে দ্রুতই ফাইনাল হবে। তোরা মায়ের কাছে, বাবার কাছে যেখানে যখন খুশি থাকতে পারবি। তোদের কি কোনো মতমত আছে এ' ব্যাপারে?

পিউ খুব স্বাভাবিকভাবে বলল---আমাদের কেন মতামত থাকবে। তোমাদের নিজস্ব লাইফের ডিসিশন মেকার তোমরা নিজেই। আমরা কেন মতামত দেব।

অংশু দেখল দিদি খুব স্বাভাবিক। তার কাছে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ কোনো অর্থ রাখে না। অংশু বলল---মা, তারপরে কি তুমি এ'বাড়িতে আর আসবে না।

---কেন আসবো না। তোরা আছিস। তোদের জন্য তো আসতেই হবে।

জয়ন্ত অবশ্য কোনো কথা বলছে না। সুচিত্রা পুনরায় বলল---আর একটা কথা, তোরা বড় হয়েছিস, ডিভোর্স মানে কিন্তু শুধু দুটি মানুষের আলাদা হয়ে যাওয়া নয়। তাদের নিজস্ব জীবনে নতুন করে কেউ আসতে পারে। অনেক কিছু পরিবর্তন হতে পারে। ডিভোর্সের পর তোদের বাবা স্বাধীন, তার জীবনে নতুন কেউ আসতে পারে। সেটা তোদের মেনে নিতে হবে।

জয়ন্ত তাকালো সুচিত্রার দিকে। ওর চোখে একটা তীব্র ক্রোধ। সুচি চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল---তোদের বাবার জীবনে যতদিন আমি ছিলাম ততদিন তোদের বাবা হয়ত পরাধীন ছিল। এখন তোদের বাবা চাইলে নতুন করে ভাবতে পারে। তোদের বাবার সাথে ঝগড়া ঝাটির কারণ তোদের আর জানতে বাকি নেই। আমি প্রথম দিকে কষ্ট পেয়েছিলাম। এখন আমিও আমার মত করে বাঁচতে চাই। আর হ্যা তোদের যেটা বলার, আমার জীবনে একজন নতুন করে এসেছে। আমি ডিভোর্সের পর নতুন জীবন তার সাথে শুরু করতে চাই। এ' কথা তোদের বলা দরকার। আমার মনে হয়, তোরা বড় হয়েছিস বুঝবি সমস্তটা। তোদের নিজস্ব জীবনে তোরা চলে যাবি। কিন্তু আমার জীবনে যে নতুন এসেছে, তার আমাকে বড় প্রয়োজন। তাছাড়া এই দুটি বাচ্চার জীবনেও আমার প্রয়োজন।


চমকে উঠল অংশু। গফুর! মায়ের জীবনে নতুন বলতে কি মা ঐ নোংরা মাতালটাকে বোঝাতে চাইছে। তাই তো, বিট্টু-লাট্টুর মাকে প্রয়োজন, বিট্টু-লাট্টুর বাবাই তো গফুর! মা কি উন্মাদ হয়ে গেল! ঐ গফুরের মত লোকটার সাথে বাকি জীবন কি করে কাটাবে!

অংশু তৎক্ষনাৎ বলল---আমাদের জন্ম দিলে কেন তাহলে তোমরা?

সুচি ছেলের পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে গেলে পরেই অংশু হাতটা সরিয়ে দিল। জানান দিল তার বিরোধ, যন্ত্রনা, রাগ ও অভিমান।

সুচিত্রা বলল---অংশু, বাবা আমার। তুই তো অনেক বড় হয়েছিস। বিট্টু-লাট্টু দেখ তো, মা হারা ছোটছোট দুটো শিশু। ওদের আমি ছাড়া কে আছে?

পিউ অবশ্য বিস্মিত। মায়ের জীবনে কেউ এসেছে, এটা সে ভাবতেই পারেনি। সে বলল---বেশ আমি উঠি। আমার অনেক কাজ। চেন্নাই ফিরলেই কলেজে প্রেজেন্টেশন জমা দিতে হবে। যাই ওসব নিয়ে বসি।

পিউয়ের সামনে কিছুই বলছিল না জয়ন্ত। অংশুও উঠে গেল বেসিনে হাত ধুতে। জয়ন্ত বলল---তোমার জীবনে নতুন ব্যক্তিটি কে জানতে পারি।

সুচি সামান্য হাসলো। বলল---আমাকে কি তুমি জানিয়েছিলে যে তোমার প্রেমিকা ঐ মিতা ঘোষ?

---সুচি! ওটা একটা সাময়িক ঘটনা। তোমার মত কোনো চিরস্থায়ী সিদ্ধান্ত নয়।

---কারন তুমি খুব সহজে চিট করতে পারো। তুমি আমাকে চিট করেছ। আবার মিতাকেও চিট করেছ। মিতাকে তোমার নিজের প্রয়োজনে ইউজ করতে চেয়েছ। আমি তেমন নয়, যতদিন তোমার স্ত্রী, ততদিন তোমাকে চিট করিনি। আজ যখন অন্য এক মানুষ, হোক সে তোমার মত নয়, কিন্তু তাকে আমি চিট করতে পারবো না।

জয়ন্ত চুপ করে গেল। এ যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে। সুচি পুনরায় বললে---আর যদি জানতে চাও লোকটি কে, আমার আপত্তি নেই বলতে। কিন্তু তোমার হয়ত বড্ড খারাপ লাগতে পারে। তাই বলছি না।

জয়ন্ত ভ্রু কুঁচকে তাকালো কৌতূহলী দৃষ্টিতে সুচিত্রার দিকে। কে এমন ব্যক্তি, যার পরিচয় জানলে জয়ন্তের খারাপ লাগবে। তাহলে কি সুচিত্রার প্রেমিক জয়ন্তের পরিচিত।

অংশুর কানে যাচ্ছে মা-বাবার কথোপকথন। সে সমস্ত কিছুই জানে। মুহূর্তের জন্য থেমে গেল সে, যখন বাবা বললে---আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিভোর্সের। কাজেই আমি পরোয়া করি না। তোমার জীবনে কি এলো তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই।

সুচি এঁটো-থালা বাসন ডাইনিং টেবিল হতে তুলতে গিয়ে থেমে গেল। বলল---সহ্য করতে পারবে না।

জয়ন্ত রাগত স্বরে বলল---তুমি কি আমাকে ঈর্ষান্বিত মনে করছ?

---তাহলে কেন ডিভোর্স পেপারে সাইন করতে এত পিছপা হচ্ছ?

---তুমি কি এতই মরিয়া ডিভোর্স নিতে? আমি তো বলেছি, কোথায় কবে সাইন করতে হবে জানিয়ে দিও। আমি কোনো উকিলও ধরিনি।
Like Reply
সুচিত্রা চুপ করে গেল। চলে গেল রান্নাঘরে। জয়ন্ত মুখ হাত ধুয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাদবারান্দায়। কানের কাছে বাসন কোচনের ঠুনকো শব্দ কানে বাজতে বাজতে থেমে গেল। সামনের বাড়িটা যেন অন্ধকার দৈত্যের মত এ বাড়িকে গিলে ফেলল, মনে হচ্ছে জয়ন্তের। গ্লানি, শ্লাঘা মিশে সে তখন অপরিসীম যন্ত্রনায় নিশ্চুপ। সুচিত্রা কখন এসে পেছনে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পারেনি। সুচি বলল---মিতারা এখনো যায়নি। কাল যাবে।

জয়ন্ত কোনো উত্তর করল না। সুচিত্রা ও নিশ্চুপ। পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিল দুজনে দীর্ঘক্ষণ। জয়ন্ত অকস্মাৎ ছেলেমানুষের মত বলল---সুচি, তুমি কি কোনো ভাবেই আমাকে মাফ করে দিতে পারছ না? একবার বিবেচনা করা যায় না। আমরা বাইশ বছর একসাথে কাটিয়েছি। তার আগে আমাদের প্রেম, পারিবারিক পরিচয়। এসব...

বড্ড অহংকারের সাথে একরাশ অভিমান রেখেই এক আশ্চর্য দৃঢ়তায় সুচিত্রা বললে---মাফ আমি করে দিয়েছি তোমাকে সেদিন, যেদিন আমিও নষ্ট হয়েছি। বাইশ বছর আমরা একসাথে কাটানোর পরও তোমার মনে হয়েছে তুমি অসুখী, যা পেতে মিতার দ্বারস্থ হয়েছ। বিশ্বাস করো, আমার মত মেয়েমানুষ যা ভাবতেই পারি না। যেদিন আমিও এমন অপরাধ করলাম, তোমাকে ঠকালাম, সেদিন আমিও টের পেয়েছি নতুন করে বাঁচতে গেলে অনেক অপ্রাপ্তি আমাদের সংসারের চাপে থেকে যায়। আমরা কেউই সাহস করে তা পারি না, তোমরা পুরুষমানুষ তা কি সহজে পারো। মেয়েরা তা পারে না।

---তুমি কি অসুখী ছিলে? জয়ন্ত বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল।

---জানি না। হয়ত তোমার মত কিছু ক্ষেত্রে। হয়ত সেটা আমাদের জীবনের অন্ধকার দিক হতে পারে।

জয়ন্ত বললে---তুমি ফিজিক্যাল কিছু বলছ? যার মোহে পড়ে আমি...

---শুধুই কি মোহ? তাহলে দিনের পর দিন তুমি কেন ঘরে বউ থাকতে থাকতে...

---সুচি, ওটা মোহই। আমি ভুল বুঝতে পেরেছি।

সুচিত্রা হাসলো। জয়ন্তের নগ্ন পিঠে লেগে থাকা ঘাম আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিল সে। তারপর বলল---তুমি কি শারীরিক দিক থেকে আমার কাছে সুখী ছিলে? তোমার কি এই একঘেয়ে সংসার আর বুড়ো বয়সের দিকে এগোতে থাকার ভয় অনুভব হয়নি? সত্যি করে বলো?

সুচির প্রশ্ন সঙ্গত। জয়ন্ত বলল---মানছি। কিন্তু তারপরেও তো তুমি আমার আশ্রয়।

---তুমি শিশু নও, যে আমি তোমার আশ্রয় হব। তুমি মিতার আশ্রয় নিতে গেছ তারপরে। কারণ আমার কাছে তোমার সমস্ত অভাবগুলো পূর্ন করতে কিংবা নতুন করে যৌবন ফিরে পেতে মিতার কাছে গেছ। যাওনি?

জয়ন্ত জানে তার মাস্টার ডিগ্রি পাশ করা স্ত্রী শিক্ষিকা। যথেষ্ট সাবলীলভাবে সুচি অনেকগুলি মনোস্তাত্বিক প্রশ্ন করছে তাকে। যা ফেলে দেওয়া যায় না। আসলে সুচির এটাই ইউএসপি, জয়ন্ত দেখেছে সুচি যেমন সংসারে সেকেলে গৃহিণী, বর্তমান প্রজন্মের নানা আপডেটেট বিষয়ে ছেলেমেয়েদের সাথে মানিয়ে নিতে না পারা একজন সাংসারিক সন্তান সর্বস্ব মা, একজন স্বামী সেবা পরায়না স্ত্রী। আবার কখনো কখনো সেই সুচিত্রাই বুদ্ধিমতী উচ্চশিক্ষিতা একজন নারী, একজন কলেজ শিক্ষিকা। জয়ন্ত স্ত্রীর এই রূপটার ভীষণ বড় প্রেমিক। সুচির এই দ্বৈততা আর কোনো নারীতে সে দেখে না। সে বলল---সুচি, তোমার সব কথাই ঠিক, কিন্তু তুমি কেন..?

কথা শেষ হবার আগেই সুচি বলল---আমিও হয়ত তোমার মত। চল্লিশ পেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত ঘর সংসার, চাকরী এসবই ভেবেছি। আস্তে আস্তে যখন বুঝলাম তুমি আর আমার প্রতি আকর্ষিত বোধ করো না। আমি যে বুড়িয়ে যাচ্ছি বুঝতে পারি। চেষ্টা করতাম তোমার কাছে সেই বিয়ের প্রথমদিনগুলোর মত হতে। কিন্তু আমি ততদিনে মনের মধ্যেই বুড়িয়ে গেছি। পারতাম না তোমার কাছে মেলে ধরতে। বিশ্বাস করো যেদিন জানলাম তুমি ঠকাচ্ছ আমাকে, দিনভর একা একা কেঁদেছি। বিশ্বাস করতাম, সবই আমার ভুল ভাবনা। ভেবেছিলাম তুমি যা করছ করো, আমার সাহস নেই সত্যটা খুঁজে বের করার। আসলে সত্যটাকে আমি গ্রহণ করতে চাইছিলাম না। একদিন মুখোমুখি হলে তুমি আর মিতা। আমি ভেবেছিলাম আত্মহত্যা করব। আমি এমন সাহসীও না। তারপর একদিন...

---একদিন কি? সুচি?

---আমিও কোনো একদিন জ্বলতে জ্বলতে পুড়ে গেলাম। পুড়তে পুড়তে বুঝলাম...

জয়ন্ত ও সুচিত্রা থেমে গেল। পিউ নিজের ঘর থেকে টয়েলেটে গেল। যাবার সময় অন্ধকারে ছাদবারান্দায় বাবা-মাকে দেখতে পেয়ে বলল---তোমরা ঘুমোবে না?

---যাচ্ছি। সুচিত্রা ছোট্ট উত্তর দিল।

যে বাবা-মা তার ডিভোর্সের মুখোমুখী, তারা এমন নিভৃতে রাতে প্রেমিক যুগলের মত দাঁড়িয়ে কি গল্প করছে বুঝতে পারলো না নব প্রজন্মের মেয়ে পিউ।

পিউ চলে যেতে সুচি বলল---বিছানা করে দিয়েছি, শোবে যাও।

জয়ন্ত সুচিত্রার হাতটা ধরে বলল---সুচি বললে না তো, কে সেই লোক?

সুচিত্রা থমকে দাঁড়ালো। পিউ টয়লেটের আলো নিভিয়ে তার শোবার ঘরে চলে গেছে। সুচিত্রা বলল---বলেইছি তো, বিট্টু-লাট্টুর এখন আমাকে খুব দরকার। ওদের একজন মায়ের দরকার।

জয়ন্ত বোধ হয় তখনও কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। মুহূর্ত পরে সে চমকে উঠল, মায়ের দরকার, বিট্টু-লাট্টুর মা'ই তো এখন সুচি। যে নারী শিশু দুটির মুখে স্তন তুলে দিচ্ছে, সে মা নয় তো কি? তারপরেও আর কি মা হবার কথা বলছে সুচিত্রা? ভাবনাটা অযৌক্তিক হলেও চমকিত স্বরে বলল---মানে? তুমি কি গফুরের কথা বলছ?

সুচি নিরুত্তর। জয়ন্ত হতবাক, সুচিত্রা আর গফুর! কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না তার। মাতাল, নেশাখোর, ভিখিরি একটা যাচ্ছেতাই নোংরা চেহারার স্নান না করা আধময়লা জামা কাপড় পড়া রাস্তায় পড়ে থাকা গফুর সুচির প্রেমিক! আবার সে বলল---গফুর?

---হ্যা। জানি অদ্ভুত মনে হবে তোমার। বিট্টু-লাট্টুর মত ঐ মানুষটারও কেউ নেই। ছোট থেকে চিনি গফুর দা'কে। মানুষটা জীবনে অনেক বড় আঘাত পেয়েছে, সেসব পেরিয়েই হয়ত এমন হয়েছে, যদি ওর পাশে থেকে ওকে শুধরে তোলা যায়...

---সুচি, তুমি কি পাগল হয়ে গেলে? ঐ ঘিনঘিনে পাগল ভিখিরিটা?

---গফুর দা পাগল না। নেশাটেশা করেই এমন হয়েছে। তাছাড়া...

---তুমি ওর কাছে কি পাবে সুচি? ও একটা বদ অশিক্ষিত...

সুচিত্রা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো, বলল---মানুষটা গরীব, অশিক্ষিত, হ্যা মদ খায়। কিন্তু মানুষটাকে তো ভালো করে তোলা যায়।

---তোমার মাথা খারাপ? ঐ লোকটা ভালো হবে? তাছাড়া কি না কি রোগ বাসা বেঁধেছে কে জানে! ফুটপাতে থাকতো, নোংরা...

---কোনো রোগটোগ আছে বলে তো মনে হয় না। বরং ওকেও দেখলাম একজন বাবার মত বিট্টু-লাট্টুকে নিয়ে ভাবে...

---বাবার মত ভাবে? ক্যানসার রুগী বউটাকে ফেলে রেখে দেখোনি, কেমন নেশা করে ঘুরে বেড়াতো?

সুচি এবার বিরক্ত হল। বলল---সে তো মিতাও অসুস্থ স্বামীকে ফেলে রেখে তোমার সাথে ফষ্টিনষ্টি করত।

---মিতার কথা আলাদা, গফুরের গা দেখোনি? তোমার ঘেন্না হয় না? কি ভীষণ নোংরা? জঘন্য...

---বা রে! মিতা স্নো পাউডার মাখা বড়লোকের বউ বলে সবটাই তার মাফ? বিট্টু-লাট্টুর জীবনে মা নয় একজন বাবারও দরকার। আমি বিট্টু-লাট্টুর জীবন অপূর্ণ রাখতে চাই না। গফুর দা আসলে জীবনে ভালোবাসা পায়নি, ভালোবাসা পেলে লোকটা হয়ত..

জয়ন্ত যেন কি একটা ভাবছিল। সুচির কোনো কথা কানে না নিয়ে বলল---তুমি এই লোকের সাথে শুয়েছ?
Like Reply
সুচিত্রার মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। জয়ন্ত পুনরায় বলল---কি করে পারলে সুচি? এই লোকটার কত রোগ থাকতে পারে জানো? সিফিলিস, গনোরিয়া এসব মাতাল ফুটপাথের লোকেদের কত কি হয়!

সুচি আর সহ্য করতে বোধ হয় পারলো না। বলল---যাও, ঘুমোও।

জয়ন্ত তখনও বলতে লাগলো---সুচি এই লোকটার জন্য তুমি ডিভোর্স চাইছ? তোমার সামাজিক মান সম্মানের কথা ভাববে না। ছেলে-মেয়েরা কি ভাববে? ছিঃ সুচি! তোমার সাইকিয়াট্রিক ডক্টর দেখানো উচিত।

সুচি ঝাঁঝিয়ে উঠল রাগে, বলল---ঠিকই তো, তোমাদের সমাজের বাঁধা ধরা নিয়মে না হলেই সাইকিয়াট্রিক দেখানো উচিত, তাকে পাগল বলে ধরে নেওয়া!

জয়ন্ত ভাবতেই পারছে না। বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না। সুচি কিভাবে ঐ নোংরা লোকটার ঘনিষ্ট হতে পারে! কিভাবে ঐ লোকের সাথে বাকি জীবন কাটাতে পারে! সুচি কি সত্যি পাগল হয়ে গেল! ও' কি তার ওপর রাগে হিতাহিত জ্ঞান ভুলে গেছে। জয়ন্ত পুনরায় কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। সুচি যাবার আগে বললে---সব কিছুর পরও গফুর দা একটা সবল পুরুষ মানুষ। বিশ্বাস করো এই তেতাল্লিশ বছর বয়সেও যেন নতুন করে সেই দিনগুলি ফিরে পাই যখন গফুর দা....!

কথাটা বলেই লজ্জা পেল সুচি। তার মুখে এমন অভিব্যক্তি; যেন সে স্বামীর সামনে কি বলে ফেলছে। জয়ন্ত প্রবল বিস্মিত। সুচি কি করে পারলো, কি করে পারবে? লোকটা সবল মানে? আসলে কি সুচি এর দ্বারা বোঝাতে চাইল লোকটা সুচিকে সেক্সচুয়াল স্যাটিশফাই করতে পারে? তারমানে সুচি কি দাম্পত্য জীবনের এই বয়সে এসে মনে করছে সে যৌন অভুক্ত?

জয়ন্ত ঘুমোতে পারছে না। গফুরের সাথে সুচি শুয়েছে! তার বাইশ বছরের দাম্পত্য সঙ্গিনী সুচিত্রা একটা নোংরা ভবঘুরে মাতালের সাথে যৌন মিলিত হয়েছে, এ বিষয় সে চিন্তাতেও আনতে পারছে না। সুচি গফুরের সাথে সংসার করবে! সত্যিই? সুচি ঐ লোকটার কাছে যৌন তৃপ্ত? এ বয়সেও কি এমন সুচির যৌন চাহিদা ছিল, যা ঐ ভবঘুরে মদ্যপ ভিখিরিটা তৃপ্ত করতে পেরেছে?
জয়ন্তের মনে হচ্ছিল চল্লিশ পেরোনো তার স্ত্রী আস্তে আস্তে সেক্সচুয়ালি ফ্রিজড হয়ে যাচ্ছে। নিয়মের বশে যৌনতায় যেটুকু উত্তেজনা সুচির দেহে দেখে সেটা একজন মধ্যবয়স্কা রমণীর জন্য সাধারণ। কিন্তু তারপরেও কেন? তবে কি সুচির দেহে চাপা যৌন ক্ষুধা ছিল, যা জয়ন্ত তৃপ্ত করতে পারেনি? অথচ সে কিনা নিজের স্ত্রীকে অতৃপ্ত রেখে পরস্ত্রীকে তৃপ্ত করতে বহিরাগমন করেছে! এ যেন জয়ন্তে পুরুষত্বের গৌরবে আঘাত। যে গৌরব মধ্যবয়সে এসেও সে মিতার কাছে অর্জন করেছিল, সেই গৌরব এক লহমায় ভেঙে দিল তার রোগ পাতলা খাটো মধ্যবয়সী স্ত্রী।
***

অংশু ঘুমোয়নি। বাবা-মায়ের ডিভোর্স, মায়ের সাথে গফুরের সম্পর্ক, মায়ের নতুন জীবনে ঐ গফুর নামক মাতালটা, এসব তাকে যন্ত্রনা দিলেও, এখন তার মনে হচ্ছে দিদির মতই, যে বাবা-মায়ের ব্যক্তিগত জীবন, সে নিয়ে তার বলার কিছু নেই। তার সামনে অনেক বড় ভবিষ্যৎ। তবু সে পারছে না মাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় গফুরের সাথে দেখার দৃশ্যটা সহ্য করতে। কি জঘন্য ভাবে লোকটা মায়ের নরম দুটো স্তন দু'হাতে টিপছিল। মায়ের ফর্সা গায়ের সাথে লোকটার কালো দানবীয় নোংরা শরীরটা গা ঘেঁষে ছিল। কানে এখনো তার বাজে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাবার সময় শুনতে পাওয়া সেই মৈথুনের উদোম শব্দ 'থাপ... থাপ... থাপ'।
অংশুর ঐ শব্দটি মনে এলে ওর সহপাঠী দেবাশীষের দেওয়া একটা গালি মনে আসে। দেবাশীষ একবার ওদের ক্লাসের টিফিন পিরিয়ডে করিনা কাপুরের একটা সিডাক্টটিভ ছবি দেখিয়ে বলেছিল ''সইফ আলী খান যা ঠাপাচ্ছে না মালটাকে, উফঃ মাইরি.. এমন ঠাপে ঠাপে চোদন খেয়ে...''। অংশুর কান গরম হয়ে গেছিল সেদিন। বয়ঃসন্ধি থেকে যৌবনে পদার্পন করতে চলেছে অংশু। মায়ের আর গফুরের সেই সঙ্গমকালীন শব্দ ভাবলেই যেন বারবার না চাইলেও দেবাশীষের বলা ঐ গালিটা মনে এসে উৎপীড়ন করে। বড্ড ইতস্তত বোধ করে সে। মায়ের ছোটখাটো শরীরের সাথে কালো নোংরা ছ ফুটের গফুরের গায়ে গায়ে অর্ধনগ্ন ঘেঁষে থাকা দৃশ্য তাকে বড্ড বেশি অস্বস্তি দেয়।

উঠে পড়ল সে বিছানায়। জঘন্য ভাবনাগুলি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। নিজের মায়ের সম্পর্কে কুচ্ছিত ভাবনাগুলি সংবরণ করতে চায় সে। ড্রয়িং রুমে জলের বোতলের ছিপি খুলে গলায় ঢালতে গিয়ে নজরে এলো মা শুয়ে আছে ডিম আলো বিছানায়। পাশ ফিরে শোয়া মায়ের বুকের কাছে মুখ লুকিয়ে রেখেছে বিট্টু। লাট্টু খাবার সময়ই ঘুমে ঢুলুঢুলু হয়ে পড়েছিল। তাই ও' আজ ঘুমোচ্ছে। বিট্টু মহানন্দে আজ একাই মায়ের নরম বুকে দুধের সাম্রাজ্য দখল করেছে।
কেমন মাকে জড়িয়ে ধরে আট বছরের ছেলেটা দুদু খাচ্ছে। মা বুকের আঁচল ফেলে রেখেছে। ব্লাউজের হুক খুলে বাম স্তনটা গুঁজে দিয়েছে বিট্টুর মুখে। ডান স্তনও ঈষৎ উঁকি দিচ্ছে। মৃদু আলো হলেও এ দৃশ্য এড়ালো না অংশুর নজর হতে। মায়ের দুধ সাদা ফর্সা গায়ের মত নরম স্তন, বিট্টুর গায়ের রঙ তার বাপের মত ময়লা কালচে। মায়ের এই স্তনটাই কেমন শক্ত করে টিপছিল গফুর। মায়ের মুখটি ছিল সে মুহূর্তে দেখবার মত। প্রবল সুখানুভূতিতে চোখ বন্ধ, আর প্রশ্রয়ের সাথে নিছক বাধাদান। এখন চুকচুক করে দুধ টানছে গফুরের ছেলে। মায়ের বাম স্তনটা ফুলে উঠছে বিট্টুর টানে। দিন দিন যে মায়ের দুদুগুলো বড় হয়ে উঠছে বুঝতে পারে অংশু। ঢিলে ঢালা নাইটি বা হাউসকোট পরলেও কেমন ঢলমলিয়ে দুলতে থাকে ডাঁসা পেঁপের মত দুজোড়া নিম্নমুখী স্তন। আজ দুপুরেই ঘেমো গায়ে মা রান্নাঘরে ফাঁক পেয়ে দুটোকে কোলে জেঁকে বসেছিল ড্রয়িং রুমে। হাউসকোটের বোতাম খুলে দুটোকে খাওয়াচ্ছিল যখন, অংশু দেখছিল আনমনে। কি সুন্দর বড় বড় দুটো দুদু জোড়া মায়ের, ঘামে নেয়েছিল তখন মা। ইতস্তত চুল, ঢিলে খোঁপার সাথে মাকে অপূর্ব গৃহকত্রী দেবী মনে হচ্ছিল তখন। এই দেবী লুঠ হয়ে যাচ্ছে গফুরের ঘরনী হয়ে। লুঠ কেন মা তো নিজের ইচ্ছায় যাচ্ছে গফুরের সংসারে।

অদ্ভুত এক শিহরিত চিন্তায় অংশু যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে পড়েছিল খেয়াল নেই। বিট্টুর সাথে মা গুন গুন করে কথা বলছে। কি কথা বলছে শোনা যায় না। অংশুর এই মুহূর্তটা ঈর্ষে হল, তার মা এখন বিট্টু-লাট্টুরও মা। সারাদিনে যে কতবার মায়ের দুদু খাচ্ছে ওরা কে জানে! অংশু নিজেই দেখেছে কেক কাটার পর মা ঘরের ভেতর বসেছিল লাট্টুকে নিয়ে। অনেকটা সময় ছিল মা। বিট্টু অবশ্য তখন দিদির সাথে মোবাইলে নানা বিস্ময়কর ভিডিওগ্রাফি দেখছিল অবাক চোখে। মা লাট্টুকে দুধ খাইয়ে কোলে নিয়ে বেরিয়ে এসেছিল অন্তত আধ ঘন্টা পরে। লাট্টুটা তো যেন বাঁদর ছানার মত যখন তখনই মায়ের স্তন মুখে নিয়ে ঝুলে পড়ে। মা ওকে কখনই বাধা দেয় না। বরং বিট্টুকে একটু আধটু বকাঝকা করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অংশু দেখেছে মা আলাদা করে বিট্টুকে দুধপান করাচ্ছে পরম মমতায়। এই যেমন এখন, বিট্টু মায়ের কোমরে পা তুলে বেশ আয়েশ করে দুধ টানছে। মা ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, মাঝেমধ্যে গুনগুন করে কিছু বলছেও।

অংশু চলে এলো ওখান থেকে। এভাবেই তো মা আলাদা হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। অংশু ভাবল মায়ের ওপর নিছক অভিমান রেখে লাভ নেই। এমন করেই বেড়ে উঠতে হবে তাকে। নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল সে। উচ্চমাধ্যমিক, জয়েন্ট, মেডিক্যাল কলেজ এসব নিয়েই ভাবতে হবে তাকে।
+++++
Like Reply
পর্ব: ২৫

সকাল থেকে গলির মুখে একটা বড় লরি এসে দাঁড়িয়েছে। লরিতে ঘোষ বাড়ির জিনিসপত্র তোলা হচ্ছে। তোলা হচ্ছে যদিও সামান্য ক'টা জিনিস তবুও কম নয়। ওই তো মাস আটেক আগে এভাবেই লরি ভর্তি জিনিস এনে ঘর গুছিয়েছিল মিতা। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার পাততাড়ি গোছাচ্ছে ঘোষ পরিবার। পরিবার বলতে তো পঙ্গু স্বামী আর যৌবনবতী ছত্রিশ বর্ষীয় স্ত্রী। অত জিনিস সুদূর আসামে নিয়ে যাবেই বা কেন? 

জয়ন্ত ছাদবারান্দা থেকে মিতার চলে যাওয়া সবার অলক্ষ্যে একবার লক্ষ্য করেছে। সুচি ওখানে দাঁড়িয়ে, ওদের বিদায় জানাতে। সুচির ব্যবহার স্বাভাবিক, যেন এই মহিলাকে নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুই হয়নি। 

জয়ন্ত হাসপাতাল যাবার জন্য রেডি হচ্ছিল। সকাল থেকে স্বামী-স্ত্রীর কথা হয়নি। অথচ সুচি প্রতিদিনকার মত জয়ন্তের শার্ট খানা ইস্ত্রী করে বিছানায় রেখে গেছে। জয়ন্ত জামার হাতার বোতাম আঁটছিল, এমন সময় সুচি এসে বললে---একবার কি সৌজন্যতা দেখিয়ে আসা যায় না? 

জয়ন্ত আমল দিল না। হয়ত তার ইচ্ছা আছে, মিতার সাথে শেষবার কথা বলার। কিন্তু মিতার কারণে যে তাদের দাম্পত্য জীবন, সংসার সব তছনছ হয়ে গেল, তারপর আর সে কোনো আগ্রহ পায় না। 

সুচিত্রা পুনরায় বললে---মিতার সাথে তোমার বিষয়টা তো আর নির্মল দা জানেন না। কাজেই তুমি যদি নির্মল দা'র সাথে শেষবার দেখা না করো কি ভাববেন উনি? 

নির্মল দা মানে নির্মল ঘোষ। জয়ন্ত সিঁড়ি দিয়ে নামতেই মেইন গেটের মুখে ট্যাক্সিটা দাঁড়িয়ে। ওখানেই হুইল চেয়ারে বসে রয়েছেন মিঃ ঘোষ। মুখের কাঁচা পাকা দাড়ি সেভ করা। পেছনে মিতা। জয়ন্তকে দেখেই মিঃ ঘোষ বললেন---ডাক্তার বাবু, আপনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আসছি। আবার দেখা হবে কিনা জানি না। যদি কখনো আসাম আসেন, যোগাযোগ করবেন। আমাদের ওখানে বসতবাড়িতে একবেলা থেকে আসবেন। 

লোকটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে জয়ন্তের কাছে। জয়ন্ত হয়ত লোকটার চিকিৎসা করেছে ক'টা দিন। কিন্তু জয়ন্তের যেন কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। সে লোভীর মত লোকটার বাড়িতে দিন রাত লুকিয়ে ঢুকেছে, তারই বিছানায় তারই স্ত্রীর সাথে যৌন সম্ভোগ করেছে একাধিকবার। 

সুচি পাশেই ছিল। জয়ন্তের দিকে ও' তাকালো। জয়ন্ত যেন সম্বিৎ ফিরে পেল। বলল---নিশ্চই। ভালো থাকুন। ওষুধগুলো নিয়ম মত খান। আর ডক্টরের কাছে রুটিন চেকআপ বন্ধ করবেন না।
***
[+] 10 users Like Henry's post
Like Reply
স্কু ল নেই আজ অংশুর। বাড়িতে ভালো লাগছে না মোটেই। দিদি তার কলেজের অ্যাসাইমেন্টের প্রেজেন্টেশন গুলি নিয়ে বসে পাওয়ার পয়েন্টে কাজ করে যাচ্ছে। বিট্টু ফ্যালফ্যাল করে দেখছে সেগুলি ল্যাপটপে। ওর আসলে বেশ আগ্রহ এই যন্ত্রটির প্রতি।
মা রান্নার কাজে ব্যস্ত। অংশু দেখলো লাট্টু গুনগুন করে শব্দ করছে আর দুটো খেলনা গাড়ি মুখোমুখি ঠেকিয়ে অ্যাক্সিডেন্টের খেলায় মশগুল। একটা ট্রাক অন্যটা ছিমছাম স্কর্পিও ধরণের প্লাস্টিকের গাড়ি। অংশুর মনে হচ্ছে এমন মুখোমুখি সংঘর্ষ বাস্তবে হলে কি ভয়ঙ্কর ঘটনা হতে পারতো। ছোট্ট শিশুর খেলার দৃশ্যই যেন হয়ে উঠতে পারতো বাস্তবে ধ্বংসাত্বক।
ধ্বংসতো হচ্ছেই এমন করে তাদের পরিবার। এই ছিমছাম স্কর্পিও গাড়িটা যেন ঠিক ওর বাবার গাড়ির মত। বড় শক্তিমান কর্কশ ট্রাকটা কি তবে গফুর? না না, গফুর এর চেয়েও কর্কশ, ভোরবেলা ময়লা তুলতে আসা ডালা খোলা দুর্গন্ধ ছড়ানো ঐ ভ্যাট গাড়িটার মত। অংশুর ভাবতেই ঘিনঘিন করে ওঠে। লোকটা স্নান করে না, গোটা গায়ে সবসময় বুনোট ঘামের গন্ধ, মদে আসক্ত ঘোরদোরহীন ভবঘুরে, সে লোককে ভ্যাটা গাড়ি ছাড়া আর কি ভাবতে পারবে অংশু। সংঘর্ষ হচ্ছে, পিষে যাচ্ছে তাদের পরিবার।

রান্না শেষ করে মা ডাক দিল----বিট্টু? লাট্টু? কই রে? চল, তোদের স্নান করিয়ে দিই।

বিট্টু-লাট্টুকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকল মা। অংশু টেবিল থেকে খবরের কাগজটা তুলে নিয়ে চোখ বুলোতে লাগলো। যদিও দৈনিক কাগজ পড়া ওর অভ্যেস নেই। তবু বিষন্ন মনে সময় অতিবাহিত হচ্ছে না ওর। মা গায়ের শাড়িটা খুলে ফেলেছে বিট্টু-লাট্টুকে স্নান করানোর সময় শাড়িটা ভিজে যাবে বলেই। ন্যাংটো দুটো শিশুর গায়ে জল ঢালতেই ওরা আনন্দে লাফিয়ে উঠল। মা বলল হেসে---ভারী মজা না? সাবান দেব আজ দুটোর গায়ে।
মায়ের পরনে কেবল বেগুনি রঙা সায়া আর গাঢ় নীল ব্লাউজ। ভেতরে ব্রেসিয়ার নেই। ফলত মায়ের দু জোড়া ভারী স্তন ওদের স্নান করানোর তালে দুলে উঠছে বারবার। অংশু লক্ষ্য করছে সে দৃশ্য। লাট্টুটা মায়ের দুদুগুলো যেকোনো ভাবে দেখতে পেলেই লোভাতুর হয়ে ওঠে। ওদিকে তাকিয়ে সে বলল---মা...দুদু...

মা সলজ্জ চোখে হেসে বলল---ধ্যাৎ!

ওদের স্নান করে গা মুছিয়ে দিল মা। লাট্টুকে কোলে নিয়ে বিট্টুকে টানতে টানতে নিয়ে গেল ঘরের ভেতর। মায়ের কোল থেকে নামতেই চায় না লাট্টু। ওকে মা নামিয়ে দিল জোর করে ড্রেসিং আয়নার সামনে ডেস্কে। মায়ের গলার পাতলা সোনার চেনের পানপাতার মত লকেটটা ও মুখে পুরে রেখে চিবোচ্ছে। মা চুল আঁচড়িয়ে দিয়ে বলল---ধ্যাৎ! ছাড় ওটা, যা পেল মুখে নিয়ে ফেললে!

বিট্টুরও মাথা আঁচড়ে দিল মা। ওদের দুজনকে পরিপাটি করে রেডি করলে।

দুপুর আড়াইটে নাগাদ জয়ন্তের কাছে একটা মেসেজ ঢুকল। মিতা পাঠিয়েছে। জয়ন্ত তখন রুগী দেখতে ব্যস্ত। বার্তাবাহকের নামটি দেখে উৎসাহ তার বাড়লো না। কেমন যেন সে জীবন সম্পর্কে উদাসীন হয়ে উঠছে।

হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথে রওনা দিতে দিতে দুটো বাজলো। সুচি খাবার বেড়ে দিল জয়ন্ত স্নান সেরে বেরোতেই। জয়ন্তের কেমন যেন ঘৃনা অনুভব হচ্ছে সুচিত্রার প্রতি। সুচিত্রা যৌন মিলিত হয়েছে গফুরের সাথে। গফুরের নোংরা ঘ্রাণ নিশ্চই লেগে আছে সুচির গায়ে। জয়ন্ত তবু কোনো কথা উচ্চারণ করল না।

সুচি জয়ন্তের সামনেই হাউসকোটের বোতাম খুলে দুটো স্তন উদলা করে বসে আছে ড্রয়িং রুমে। ওর কোল জাপটে গফুরের দুই ছেলে মাই টানছে চুকচুক করে। জয়ন্ত ভাবলে সুচিত্রা দেহ, মন সব দিক দিয়েই এখন গফুরের হয়ে গেছে, যদিও গফুরের সন্তানের প্রতি তার এত তীব্র মাতৃস্নেহ আগেও ছিল।

---মা, সেই দুদুটা দাও না?

বিট্টু আবদার করল ভাইয়ের চুষতে থাকা বাম মাইটা খাবার জন্য। সুচিত্রা বারণ করে বলল---যেটা খাচ্ছিস খা না...

বিট্টুর মুখ হতে বেরিয়ে আছে। সুচির ডান স্তনের বোঁটা। ফর্সা ঠাসা দুটো স্তন কেমন ফুলে উঠেছে দুধে। লালচে বাদামি বোঁটার গায়ে এক ফোঁটা দুধ লেগে আছে। বিট্টু মুখের মধ্যে ভরে নিল তৎক্ষনাৎ। জয়ন্ত দেখলে তার বাইশ বছরের দাম্পত্য সঙ্গিনীর স্তনে হামলে রয়েছে তার প্রেমিকের দুই সন্তান।

জয়ন্ত খাওয়া সেরে উঠে গেল। তার ছেলে-মেয়ে দুটো ভাতঘুমে আচ্ছন্ন। জয়ন্তের এখন আর কিছু কাজ নেই। সে নিজের ঘরে শোবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। অকস্মাৎ ড্রয়িং রুম হতে কানে এলো সুচির গলা---আঃ, কামড়াস কেন? বাপের মত...

সুচি থেমে গেলেও জয়ন্ত থমকে গেল। লক্ষ্য করল দূর হতে লুকিয়ে সুচির মুখখানি। কেমন একটা লাজুক হাসি, সে মুখেই ও' স্তন দুটো বদলে দিয়েছে দুজনের মধ্যে। আর লাট্টু ও বিট্টুকে আদর করছে মুখে লাজ ভরা হাসিতে।
---চল ঘরে চল।
দুটোকে নিয়ে সুচিত্রা চলে গেল ঘরের ভেতর। এখন সে গফুরের বাচ্চা দুটোকে নিভৃতে স্তনপান করাবে। আর হয়ত প্রেমিক গফুরের কথা ভেবে লাজ ভেঙে ছেলে দুটোকে আদর দেবে মাতৃ স্নেহে। ভাবতেই কেমন অশালীন শিহরণ হল জয়ন্তের দেহে। এ শিহরণ বিকৃত, নিজের স্ত্রীর একটি আদিম বর্বর মাতাল লম্পটের সাথে যৌন অনুভূতির কথা ভেবে।
***
[+] 13 users Like Henry's post
Like Reply
সন্ধেবেলা খেয়াল হল মিতার মেসেজের কথা। মেসেজ বক্সে গিয়ে লক্ষ্য করল মেসেজটা বাংলায় লেখা। মিতা লিখেছে;

"জয়ন্ত দা, ভালোবাসা দিলাম। সবটুকু উজাড় করে দিতে পারলাম না। পারলেন না আপনিও। আমি জানি আমি আপনার পারিবারিক জীবনে ক্ষতি করেছি। সুচি দি নিশ্চই আমাকে ঘৃণা করে। আপনিও নিশ্চই করবেন। আসলে আমরা দুজনেই আলাদা মানুষ জয়ন্ত দা। ক্ষনিকের জন্য এক নৌকায় এসে পড়ছিলাম। আমি এখনো আসাম পৌছাইনি। পথেই আপনাকে এই মেসেজ পাঠালাম। আমাকে আবার ফিরে আসতে হবে কলকাতায়। এ' বাড়ি তো এখনও আমাদেরই। জয়ন্ত দা, আমার পাপ স্খলণ হবে না কোনোদিন। আমাকে মার্জনা করবেন।''

মিতা আবার আসবে। কলকাতায় অন্ধকার দিনগুলিতে জয়ন্তকে একা বাঁচতে হবে। মিতা যদি আবার ফিরে আসে, সে কি করবে? ছুটে যাবে মিতার কাছে? আলোর আশ্রয় নিতে? সুচি যদি পারে সে কেন নয়? জয়ন্ত প্রচন্ড বজ্রকঠিন হয়ে উঠল। সুচি যদি ডিভোর্সের পরে নতুন সংসার গড়ার কথা ভাবতে পারে, সে কেন সারাজীবন মৃতবত হয়ে বাঁচবে?

সুচিত্রা এখনো কত স্বাভাবিক। এইমাত্র চা দিয়ে গেল। ড্রয়ার খুলে বেতন দিল ছেলের হোম টিউটরকে। মেয়ের আগামীকাল ফিরে যাবার ব্যাগ গুছিয়ে দিল। ঠিক যেমন গৃহকত্রীটি ছিল, তেমনই। অথচ সুচি কদিন পর থেকে একটা মাতাল ভবঘুরের সাথে বসবাস করবে, দুটো ফুটপাতের বাচ্চাকে নিয়ে তার দুগ্ধপোষ্য সংসার হবে। সুচি চাকরি করে। মাস ফুরোলে পে স্লিপ অনুযায়ী জয়ন্ত যা জানে মোটামুটি পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা বেতন পায়। সিনু আমেরিকা থেকে ফিরবে না। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া গোবিন্দপুরের বিশাল বাড়ি আর বাস্তু ওরই। চন্দননগরের বাপের বাড়িটা অবশ্য বিক্রি হয়ে গেছে, শেষবার যখন সিনু দেশে এসেছিল। সে টাকাও কম নয়। তার অর্ধেক সুচির একাউন্টেই। কাজেই ঐ ভবঘুরে মদ্যপকে নিয়ে সংসার করতে সুচিত্রার আর্থিক অনটন হবে না। কিন্তু তার পরেও সুচি একটা কলেজের শিক্ষিকা হয়ে কি করে পারবে ঐ ইতর নোংরা নেশাখোর জন্তুটার সাথে সহবাস করতে? সুচি যথেষ্ট পরিণত, পরিচ্ছন্ন, শিক্ষিতা, সে কি করে এমন ডিসিশন নিল?

বাইরে ঝিরঝির বৃষ্টি। অংশু আর পিউ ভাইবোন ছাদ বারান্দায় দাঁড়িয়ে গল্প করছে। লাট্টু পিউর কোলে বসে রয়েছে। জয়ন্ত জানে পিউ এম্বিসাস, আল্ট্রা মডার্ন। তার কোনো কিছুতেই মাথাব্যথা নেই। তবু ও যদি জানতে পারে তার মায়ের সম্পর্ক একটা অশিক্ষিত ভিখিরি মাতালের সাথে, সুচি খাটো হয়ে যাবে মেয়ের কাছে। জয়ন্ত ভাবলো চাইলে সে এমনটা করতে পারে, ছেলে-মেয়ের কাছে সুচিকে অপদস্থ করতে। কিন্তু কি লাভ তাতে?

ছেলে-মেয়েকে মাংসের গরম পকোড়া ভেজে দিয়ে গেল সুচিত্রা। অংশু মাংস ভালোবাসে। জয়ন্তকেও চা দিয়ে গেল। বাচ্চা দুটো সুচিকে গাভী করে দিয়েছে। জয়ন্ত লক্ষ্য করেছে একটু আগেই ঘরের ভেতর হালকা আলোয় বিট্টুকে মাই খাওয়াচ্ছিল সুচি। আট বছরের বিট্টুর মাই খাওয়াটা বড্ড দৃষ্টিকটু লাগে জয়ন্তের। সুচি কেমন এত বড় ছেলেটাকে কোলে নিয়ে হাউসকোটের বোতাম খুলে দুধ দিচ্ছিল ওকে। সুচির কি বুকে অত দুধ হয়? যে দুটো বাচ্চা দিনরাত যখন তখন টেনেই চলেছে সদ্যজাত শিশুর মত। কে জানে? হতেই পারে, মেডিক্যাল সায়েন্স বলে মা যত বেশি সন্তানকে দুধপান করায়, ততই দুগ্ধক্ষরণ হয়। সুচির পাতলা খাটো চেহারায় থেকে ওরা ইচ্ছেমত শুষে নিচ্ছে মাতৃস্তন নিঃসৃত অমৃত। সুচির শুঁটকি ছিপছিপে মেদহীন চেহারায় বুক দুটো বেশ বড় হয়ে বিশ্রী রকম দোল খায়। সুচি কে সত্যিই জয়ন্তের মনে হয় যেন ও' একটা গাভীন।
[+] 10 users Like Henry's post
Like Reply
পর্ব: ২৬

"Divorce is not a tragedy. Divorce is the end result of an unhappy marriage. There may be love, there may be affection, but there is no happiness. Divorce is still not a tragedy, but also opens up many new possibilities; Good and evil." 

একুশ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর বাইশতম বছরে বিচ্ছেদপত্রে সই করতে করতে জয়ন্তের বারবার মনে আসছিল উক্তিটি। কে বলেছে, কোথায় বলেছে যদিও মনে পড়ছে না তার। 
আজ এক হপ্তা হল সুচিত্রা গোবিন্দপুরে চলে গেছে। ওখান থেকে সে এসেছে সরাসরি কলকাতায়। উকিলের চেম্বারে নির্বিবাদে সই স্বাক্ষরিত হল। সই করবার আগে পূর্ণাঙ্গ ডিভোর্স পেপার পড়বার জন্য উকিল সমরেশ গুপ্ত জয়ন্তকে বললে। জয়ন্তের কোনো ইচ্ছে নেই কি লেখা আছে তাতে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ পড়বার।

অংশু কাছেই ছিল। বাবা-মায়ের দাম্পত্য ভাঙনের স্বাক্ষী সে। এক বুক অভিমান তার নীরবে রয়ে গেল। কেউ টের পেল না। যদিও সে নিজেকে পাথরের মত প্রস্তুত করেছে। 
জয়ন্ত দাশগুপ্ত কিংবা সুচিত্রা দাশগুপ্ত তাদের বাইশ বছরের দাম্পত্যকে ভেঙে দিল অতি সহজে। মাত্র একমাসেই সব ওলটপালট হয়ে গেল। 

জয়ন্ত যদি মিউচুয়াল ডিভোর্সে না যেত তাহলে হয়ত এত সহজে সুচি ডিভোর্স পেত না। তিনমাসের ন্যূনতম পিটিশন তারপর কোর্ট কেস এসবে উভয়কেই ছোটাছুটি করতে হত। কিন্তু সুচির ইচ্ছের কাছে জয়ন্ত অবনত হয়েছে। যার সাথে তার সংসার, সন্তান-সন্ততি, সেই যখন তাকে এত কঠিন সাজা দিতে চায়, সেই যখন চায় গফুরের মত একটা নিকৃষ্ট মানুষই তার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী হোক, তখন জয়ন্তের আর সম্পর্ককে বেঁধে রেখে কি লাভ। 

সুচি আর জয়ন্ত পাশাপাশি বসে। সুচি একটা কমলা রঙের সিল্কের শাড়ি পরেছে। মানানসই ছোপছোপ বাদামি ব্লাউজ। একটা সাড়ম্বরতা নজরে আসছে এই শাড়িতে। সুচি কি তাদের এই বিচ্ছেদ কে উপভোগ করতেই এমন বর্ণজ্জ্বল গর্জিয়াস শাড়ি পরেছে! নাকি নিজের ভবঘুরে নেশাখোর প্রেমিকের কাছে চলে যাবার স্বাধীনতায় সুচির এই আড়ম্বরপূর্ণতা? জয়ন্ত সদ্য প্রাক্তন হওয়া স্ত্রীয়ের দিকে তাকিয়ে এখনো মূল্যায়ন করছে নানাবিধ প্রশ্নের। 

কিন্তু সেসব মূল্যায়ন নিছকই। ডিভোর্সের পর সুচিত্রা তার কাঁধের ব্যাগটা নিয়ে বলল---অংশু, যখনই মন খারাপ করবে চলে আসিস বাবা। আমার ওপর রাগ করিসনে। 

মায়ের হাত অংশুর গালে। সে বলল---তুমি আজ বাড়ি আসবে না? 

বাড়ি বলতেই বুকটা কেমন হাহাকারে মোচড় দিয়ে উঠল অংশুমানের। মায়ের বাড়ি তো এখন গোবিন্দপুর। সুচিত্রা ছেলেকে বললে---না রে, বিট্টু-লাট্টু একা আছে। ডালিয়া তেমন লক্ষ্য নজর করে না। 

জয়ন্ত নীরব রইল। ফেরার সময় বাপ-ছেলে একসাথে ফিরল। সুচি উকিলের চেম্বারের অদূরে মৌলালির দিকে যাওয়া বড় রাস্তায় হারিয়ে গেল। হারিয়ে গেল সুচিত্রা। জয়ন্তের জীবনের মোড় এখন অন্যদিকে, সুচিত্রার পথ ভিন্ন। সুচি হয়ত চাইবে গফুরকে সভ্য করে তুলতে। যে কাজ অসম্ভব বলে মনে করে জয়ন্ত। সুচির পাগলামি ছাড়া এ কাজ আর কিচ্ছু নয়। সুচি যে কেন গফুরের মত একটা নেশাখোর মাতাল ফুটপাতবাসীকে নিজের জীবনের অঙ্গ করে নিতে চায় জয়ন্ত এখনো বুঝে উঠতে পারল না। আসলে এই অসম সম্পর্কটা সামাজিক অভ্যাস বহির্ভুত, যাকে মেনে নেওয়া বা বিশ্বাস করা বড্ড কঠিন। জয়ন্তের মনে পড়ে চন্দননগরে থাকাকালীন শিউলি দিদির কথা। ইংরেজিতে মাস্টার্স করা শিউলিদিদি ছিল অবনী ডাক্তারের মেয়ে। অবনী ডাক্তারকে জয়ন্ত ছোটবেলা থেকে জেঠু বলত। সেই শিউলি দিদি পালিয়ে বিয়ে করেছিল একটা লোফার মূর্খ ছেলেকে। ছেলেটা কাজকম্ম বলতে ইলেক্ট্রিকের লাইন সারাতো। কত সমালোচনা হয়েছিল পাড়ায়। আর তাতেই মুখ ঢাকতে অবনী ডাক্তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি বিক্রি করে চলে যান।
রফিকুলের কথা মনে পড়ে জয়ন্তের। নিপাট মূর্খ একটা ছেলে, জয়ন্তের বয়সী। জয়ন্তের ক্লাসমেট ছিল। কলেজ কমপ্লিট না করেই পড়া ছাড়লো। শিল্পাঞ্চলের এক নেতার চামচাগিরি করতে বেশ কয়েকবার জেল খেটেছে, সেই একদিন বিয়ে করল নিজের চেয়ে বছর পাঁচেকের বড় এক মহিলার সাথে। মহিলা নাকি কোনো এক কলেজমাস্টারের স্ত্রী। ভাগিয়ে এনেছিল তাকে। 
এই সম্পর্কগুলো অসম শ্রেণী, অসম মর্যাদা কিংবা অসম শিক্ষার। জয়ন্ত শুনত ইতিউতি; এসবের পেছনে ছিল নাকি আসলে মহিলাদের প্রচণ্ড লিবিডো। শুধুমাত্র যৌন তাড়নায় অতৃপ্ত নারীরা ভালোমন্দ বিচার না করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়। এসব সম্পর্কে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীকালে অসুখী হয় মহিলারা। কিন্তু সুচিত্রা? গফুর একটা থার্ডক্লাস ভিখিরি ছাড়া কিছু নয়। ওর নোংরা কুচ্ছিত দেহ, ঘৃণিত স্নান না করা বহুদিনের দুর্গন্ধ কোনো নারীর মধ্যে যৌন চাহিদা তৈরি করতে পারবে না, তবে সুচির মত শুচিবাই শিক্ষিতা নারী কেনই বা ওকেই বেছে নিয়েছে বাকি জীবনের জন্য? শুধু কি বিট্টু-লাট্টুকে পূর্ন পরিবার দেওয়ার জন্য? এটা হতে পারে না। বিট্টু-লাট্টু কে তো এ বাড়িতে জয়ন্ত কখনো খাটো চোখে দেখেনি। বরং সুচির মত না হোক, সন্তান স্নেহ সেও দেখিয়েছে। কি দরকার আছে এমন মাতাল বদ চরিত্রের নেশাগ্রস্ত পিতার? তাছাড়া যদি সুচির তীব্র দেহ চাহিদা থেকে থাকে, জয়ন্ত এতদিন কি তার বিন্দু মাত্র বুঝতে পারলো না? এই তেতাল্লিশ বছরে সুচির দেহজ চাহিদা কতখানি হতে পারে যে তার সম্ভোগ তৃপ্তির দরকার থাকতে পারে? 

সুচির সাথে গফুরের সম্পর্কটা জয়ন্তের কাছে বড্ড স্ট্রেঞ্জ একটা বিষয় ঠেকছে বারবার। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। তা নাহলে সুচির মত নারীর মন কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা ঐ মাতালের নেই। সেটা যে কি জয়ন্ত ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। 

বাবার ড্রাইভিং সিটের পাশে অংশু বসেছিল। মায়ের চিন্তার বদল কোনোভাবেই হল না। অংশু ভেবেছিল বাবা যে অপরাধ করে মাকে ঠকিয়েছে, সেই অপরাধ মাও করেছে, কাজেই মা কে সে যেভাবে চেনে, মা দীর্ঘ দিন রাগ পোষন করে রাখতে পারার কথা নয়। বিশেষ করে তাদের জন্য, ছেলে-মেয়ের মুখের সামনে দাঁড়িয়ে মা এমন সাহসী হতে পারে না। যদিও মা খুব দৃঢ়চেতা, একটা প্রত্যয় রাখে অন্তরে সর্বদা, সেটা ছোটো থেকেই অংশু টের পেয়েছে। কিন্তু সেই দৃঢ়তা মায়ের বড্ড ভালো, বড্ড সদয়, স্নেহ ও ভালোবাসার। যা হয়ত বিট্টু-লাট্টুর জন্য বর্তায়। কিন্তু গফুরের সাথে মায়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় অংশুও বাবার মত সন্দিহান। কি করে সম্ভব হল? অংশু জানে মা মদ্যপান একেবারেই পছন্দ করে না। মায়ের এই প্রভাবে অংশুও মাতালদের একেবারে পছন্দ করে না। তাদের বাড়িতে কেউ কোনোদিন মদ্যপান করেনি। বাবাকে ডাক্তারদের বড় বড় পার্টি থেকে রাত করে ফিরলেও কোনোদিন ড্রিংক করতে দেখেনি অংশু। তাহলে ঐ গফুরের মত প্রবল মাতাল একটা ফুটপাতে পড়ে থাকা লোকের সাথে ঘনিষ্টতা কিংবা বাকি জীবনের সিদ্ধান্ত নেয় কি করে মা? তাছাড়া গফুর একটা রাস্তায় ঘোরা পাগলা ভিখিরি ছাড়া কিছু নয়। ওর জঘন্য স্নান না করা গায়ের দুর্গন্ধ, ময়লা, ঘিনঘিনে মুখ এসবকে কি করে মায়ের মত ঘর-সংসার টিক টিক করে গুছিয়ে রাখা, এক ঘন্টা সাবান শ্যাম্পু স্নানে শুচিবাই মা বরদাস্ত করল কি ভাবে? অংশু নিজে দেখেছে গফুর বাড়িতে এলে মাকে ওর থেকে দূরে নাকে শাড়ির আঁচল চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে, কোনোদিন কাগজের থালা ছাড়া ও'কে খেতে দেয়নি। এমনকি নীচতলার মেঝেতেই ও'কে খেতে দিত, কলতলায় মুখ ধুয়ে ওকে নীচ থেকেই ভাগিয়ে দেয়। সেই গফুর সোজা দোতলায় মায়ের বেডরুমে নগ্ন গায়ে ঘনিষ্ট অবস্থায়! 

অংশুর অকস্মাৎ মনে পড়ল মায়ের ডায়েরির কথা। মা ডায়েরিতে তার অতীত জীবনের কিছু কথা লিখেছিল। যেখানে ঝুমুর মাসির মৃত্যুর জন্য মা নিজেকে দায়ী করে, গফুরের প্রতি কি এই সহমর্মিতায় মা ওর সঙ্গ দিল? শুধু এটুকু? না, কারণটা অসঙ্গত মনে হল অংশুর। মা ডায়েরিটা যে পুনর্বার লিখেছে সেটাও খেয়াল হল অংশুর। সঙ্গে সঙ্গে চঞ্চল হয়ে উঠল ও'। ঐ ডায়েরি কি বাড়িতে আছে? মা কি নিয়ে যায়নি? যদি না নিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে বাকি লেখা পড়েই কেবল জানা সম্ভব, তারপরে হঠাৎ কি হল যে মা গফুরের মত নোংরা লোকের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠল? 

জয়ন্ত ছেলেকে বলল---তোকে মেইন রোডে নামিয়ে দিলে চলবে? আমাকে ডিউটি যেতে হবে। 

এতক্ষণ পর বাপ-ছেলের কথা হল। অংশু বললে---বাবা, তুমি লাঞ্চ করবে না? 

---নাঃ। সকালে বড় করে টিফিন করেছি। এখন খিদে নেই। 

আসলেই জয়ন্তের বিষন্ন হৃদয়ে এখন একটা নিভৃতি দরকার। কাজের মধ্যে থাকলে পরে বরং ভালো। খিদেটাও তেমন পাচ্ছে না। 
***
[+] 12 users Like Henry's post
Like Reply




Users browsing this thread: Ghost1041, 43 Guest(s)