26-09-2024, 12:20 AM
যা মনে হচ্ছে সুচি কে গফুর লাগাচ্ছে বা অন্য কেও লাগাচ্ছে।
অনেক অপেক্ষায় থাকবো আপডেট এর জন্য
অনেক অপেক্ষায় থাকবো আপডেট এর জন্য
Adultery ভাঙনের পরে
|
26-09-2024, 12:20 AM
যা মনে হচ্ছে সুচি কে গফুর লাগাচ্ছে বা অন্য কেও লাগাচ্ছে।
অনেক অপেক্ষায় থাকবো আপডেট এর জন্য
26-09-2024, 12:42 AM
Darun hoyeche Henry dada... Porer update opekkha roylam
26-09-2024, 01:01 AM
Woo
26-09-2024, 01:15 AM
R soiche na Henry sir
Kobe suchi posting niye Maa er bari utbe r kobe gofur k pabe Khub Sundor lekha mone hoy portei thaki Taratari porer update deben Lot's of love Henry sir
26-09-2024, 06:37 AM
Golpo ta khub mysterious mone hoitase.......
26-09-2024, 02:45 PM
(25-09-2024, 11:02 PM)Henry Wrote: পর্ব: ৭ বাস্তব পরিসংখ্যান। বাংলায় নারীর গড় উচ্চতা পাঁচফুটের আশেপাশে। ৫'৪" বা তার বেশি উচ্চতার বাঙালী রমণী বিরল।
27-09-2024, 08:31 AM
খুবই সুন্দর ভাবে এগিয়ে চলছে। অংশু তার বাবার এই লুকিয়ে পরের বউয়ের সাথে যৌণ সম্পর্ক বুজতে পারবে।
Rajkumar Roy
27-09-2024, 12:45 PM
(25-09-2024, 11:05 PM)Henry Wrote: ভোর হবার আগে উঠে পড়া সুচির প্রতিদিনের রুটিন। জয়ন্তের যখন ঘুম ভাঙলো। সে তখনও ঘুমোচ্ছে। জয়ন্ত নিজেই চা করল। অংশু পায়ে কেটস পরে মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে গেল। বহুদিন সকালে হাঁটার অভ্যাস ছেড়ে গেছে জয়ন্তের।কামনার বিবরণে চূড়ান্ত আবেগ উদ্দাম হয়ে উঠেছে।
28-09-2024, 08:36 PM
Kn jani mone hoitase suchi er deri kore bari ferar agei kisu ekta hoise...
Gofur k abar jama o dei Shomporko ta onek dur obdi geche...
29-09-2024, 10:29 PM
পর্ব: ৮
এক হপ্তা কাটলো, একদিনও বৃষ্টির দেখা নেই। অথচ আজ ভোর থেকে দমকা হাওয়া আর বৃষ্টি। রবিবার, ছুটির দিন। ছবি আসেনি। সুচিত্রা রান্না ঘরে জলখাবার বানাচ্ছে। এখনো খবরের কাগজ আসেনি। জয়ন্তের চা জলখাবার দিয়ে গেল সুচি। অংশু পড়ার ঘরে। এত বৃষ্টির পরও ছাতা মাথায় দিয়ে পড়াতে এসেছেন সুখবিলাস বাবু। ভিজে গেছিলেন খানিক। সুচি তোয়ালে দিয়ে বলল---স্যার, গা'টা মুছে নিন। তা নাহলে আবার ঠান্ডা লেগে যাবে। আমি আদা দিয়ে চা করে আনছি। জয়ন্ত জলখাবার শেষ করে টিভিটা চালালো। খবরে দেখাচ্ছে আগস্ট মাস জুড়ে বাকি সময়টা বেশ বৃষ্টি হবে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ হয়েছে। সুচি রান্না ঘরে। আজ দুপুরে একটা ও.টি আছে। জয়ন্তকে বেরোতেই হবে। চন্দনকে ফোন করল জয়ন্ত। সুচিত্রা ভাত বসিয়েছে। জয়ন্ত ভাত খেয়েই যাবে। টিভি দেখতে দেখতে সময়টা পার হয়ে গেল অনেকটা। অংশুর টিউশন মাস্টার যাবার পর সে বললে---মা, কি খাবার আছে দাও। সুচি রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলল---একেবারে ভাত খেয়ে নে। ---এই সাত সকালে ভাত? আমার কি কলেজ আছে নাকি, মা? সুচি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল---আমি বেরোব। চারুশীলা দি'র বাড়ি যাবো। ফিরতে রাত হবে। চারুশীলা সুচিত্রার কলিগ ছিল। রিটায়ার্ড করেছে বছর খানেক। সুচির কাছে নিজের দিদির মত। থাকে শিয়ালদার দিকে। একসময় চারুশীলা এ বাড়িতে প্রায়ই আসতো। ইদানিং বেশ অসুস্থ। জয়ন্ত আর সুচিত্রা মাস ছয়েক আগে গিয়েছিল ওর বাড়ি। জয়ন্ত বলল---কেন? চারুশীলা দি অসুস্থ নাকি? ---হ্যা। গৌতম দা ফোন করেছিল। গৌতম দা'রও তো বাতের ব্যথা। তোমার কথা বলছিলেন। একবার গিয়ে দেখা করে এসো। গৌতম মুখার্জী চারুশীলা 'র স্বামী। আগে চার্টার একাউন্টেন্ট ছিল। এখন বয়স হল প্রায় পঁয়ষট্টি। ভারী মিশুকে মানুষ। বুড়ো-বুড়িকে ফেলে একমাত্র ছেলে জার্মানিতে। ছেলেও বিয়ে করেনি। শোনা যায় ওদেশে কোনো এক জার্মান মেয়ের সাথে লিভ ইনে আছে। জয়ন্ত স্নানে ঢোকার আগে বলল---তাহলে তুমি আগে ঢুকবে না আমি? সুচি বললে---আমি স্নান করে ভাত বাড়ছি। ততক্ষনে তুমি স্নান করে নেবে। স্নানের পর ওরা তিনজনে একসাথে খেল। জয়ন্ত রেডি হচ্ছিল। সুচিও শাড়ি পরছিল। জয়ন্ত বলল---আমি না হয় যাবার সময় পৌঁছে দেব। ---ওমা! তুমি আবার ওদিকে যাবে কেন? তোমার না আজ ও.টি আছে। ---হাতে সময় আছে যখন শিয়ালদায় নামিয়ে দেব। মাঝে মধ্যে নিজের বহুদিনের পুরোনো রোগাটে বউটাকে সুন্দরী লাগে জয়ন্তের চোখে। এই মুহূর্তে যেমন লাগছে। সুচির অনেক শাড়ি। বেশিরভাগ না ভাঙা। কাপবোর্ডে জমা হয়ে থাকে। আজ তার মধ্য থেকেই একটা নীল রঙের কাঁথা স্টিচ শাড়ি পরেছে। সঙ্গে কালো ব্লাউজ। ওর খাটো পাতলা চেহারাটায় বেশ মানিয়েছে। বাবা-মা বেরিয়ে যাবার পর অংশু ঘরের মধ্যে একা। কোথাও যাবার উপক্রম নেই। বাইরে তো ভারী বর্ষণ। ঘরের মধ্যে টিভি দেখে, বাবার ল্যাপটপ ঘেঁটে কিংবা বই পড়ে কাটাতে একঘেয়েমি লাগবে। ***
29-09-2024, 10:31 PM
(This post was last modified: 29-09-2024, 11:38 PM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
জয়ন্ত ওটি থেকে বেরোলো দেড়টা নাগাদ। বৃষ্টিটা ছাড়ছে, আবার ধরছে। ফেরার সময় মনে পড়ল জয়ন্তের; সুচিত্রার ফিরতে দেরি হবে। পঞ্চাশ ছুঁই জয়ন্ত যেন তরুণ হয়ে উঠল। বৃষ্টি মুখর ঠান্ডা ওয়েদারে লিবিডো চাইছে অসুখ। পরকীয়ার অপ্রতিরোধ্য অসুখ।
জয়ন্ত বলল---চন্দন রাস্তায় কোনো ফুলের দোকান দেখলে দাঁড়াস তো। গ্যারেজে গাড়ি ঢুকিয়ে চন্দন চলে গেল। চন্দনের চলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল জয়ন্ত। নিজের বাড়ি না ঢুকে ফুলের বোকে নিয়ে সোজা চলে এলো মিতার বাড়িতে। অংশু ছাদবারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো মিতা কাকিমার প্রেমিক বাবাকে, কিভাবে যুবকের মত তৎপর। মিতার হাতে ফুলের বোকে তুলে দিল তার ডাক্তার প্রেমিক। মিতা বললে---কি ব্যাপার জয়ন্ত দা, সুচি বৌদির জন্য আনা ফুল ভুল করে আমায় দিচ্ছেন না তো? ---শুকিয়ে যাওয়া ফুলের জন্য এই ফুল নয় মিতা। এই ফুল কেবল যার যোগ্য তার জন্য। বলেই জয়ন্ত একটা ফুল ওখান থেকে নিয়ে মিতার মাথার খোঁপায় গুঁজে দিল। তারপর মিতার দুটো স্তনকে দুই হাতে আঁকড়ে ধরে বলল---মিতা, আমি ক্ষুধার্ত, এই দুটি ফুলের মধু খাওয়াও আমাকে। মিতা ব্লাউজ, ব্রা খুলে দাঁড়ালো জয়ন্তের সামনে। তারপর দুটো উদ্ধত স্তন উঁচিয়ে চেপে ধরল জয়ন্তের মাথা। বলল---ফুলের বদলে ফুল নিয়ে আপনি ভালোই সওদা করতে জানেন। জয়ন্ত দুটো স্তনে নাক-মুখ ঠেকিয়ে ঘ্রাণ নিতে নিতে বলল---এমন দুটি ফুলের জন্য আমি আজীবন সওদাগর হতে রাজী। মিতার মাইজোড়ার ওপর কালো বৃন্ত জয়ন্তের নাকে ঠোক্কর খাচ্ছে। জয়ন্ত চোয়ালে চেপে ধরল। মিতা বলল---সুচি বৌদি'র দুটো খেয়ে বুঝি সাধ মেটেনি। জয়ন্ত হেসে বলল---আমার ছেলে-মেয়ে দুটো খেয়ে খেয়ে তোমার সুচি বৌদির দুটোকে থেবড়ে দিয়েছে। এখন দুটো শুকনো আপেল। তারপর আগ্রাসী ভাবে মিতার স্তন দুটো টিপতে টিপতে জয়ন্ত বললে---আমার এখন বাতাবী ভালো লাগে, সেও কেবল ঘোষ বাবুর বাগানের চুরি করা বাতাবী। ---এই বাতাবী দুটি আপনার জয়ন্ত দা। ঘোষ বাবুর সে ক্ষমতা নেই নিজের বাগানের বাতাবী খাওয়ার। খান, ইচ্ছে মত খান। জয়ন্ত বলে উঠল---মিতা। তোমাকে পাবার পর একদিনও আমি সুচিকে ছুঁয়ে দেখিনি। আমার ঐ চশমা চোখা দু বাচ্চার মা শুঁটকি বউটার শরীরে পেটের ঐ সামান্য থলথলে মাংস ছাড়া কিছু নেই। শুধু যেন ফর্সা ফর্সা কাঠি কাঠি একটা মেয়েছেলে। মিতা নগ্ন হয়ে গেছে। জয়ন্তের লিঙ্গ উদ্ধত হয়ে প্রস্তুত। বাইরে আবার বৃষ্টি নেমেছে। জয়ন্ত মিতার হলদে গম বর্ণের দুটি উরুতে হাত বুলিয়ে বলল---দেখো কেমন পাঁপড়ি মেলে আছে, এখানেও ফুল। সুচির কি আছে? মিতা বলল---সুচি বৌদির পাতলা ছিপছিপে চেহারাটাই পেতে কিন্তু আজকাল বহু মেয়ে জিমে যায়। আমি তো বরং মুটকি। জয়ন্ত মিতার যোনি কোটরে আঙুল ঢুকিয়ে মৈথুন করতে করতে বলল---তুমি পারফেক্ট। মুটকি নও। অনেকদিন ধরে সন্দিহান ছিল অংশু। আজ সে অধৈর্য হয়ে পড়ছে। বাবা কেন প্রায়শই যায় লুকিয়ে লুকিয়ে মিতা কাকিমার বাড়ি? জিজ্ঞেস করলে মিথ্যে বলে কেন? জয়ন্ত আসার পর মিতা গেটে তালা দেয়নি। আর তো এ' বাড়িতে কেউ আসে না। তালা দিয়েই বা কি হবে। সুচি বৌদি আসে মাঝে মধ্যে, তবে কলিং বেল না দিয়ে নয়। আর আজ তো সুচি বৌদি নেই। বরং বলা ভালো উত্তেজনায় ভুলে গেছে সে। অংশু সাহস করে ঘোষকাকুদের বাড়ির দোতলায় উঠে এলো। ধীর পায়ে গিয়ে দাঁড়ালো জানালার সামনে। পায়ের তলার মাটি যেন সরে যাচ্ছে। নিজের জন্মদাতা পিতাকে সে কখনো এমন উলঙ্গ দেখেনি। মিতা কাকিমাও নগ্ন। মিতা কাকিমার দুই উরুর মাঝে তার ডাক্তার পিতার পশ্চাৎদেশ ওঠানামা করছে। তার পিতা শারীরিক কসরত করে এই প্রতিবেশীনির যোনিতে মৈথুন করছে। মিতা কাকিমা জড়িয়ে ধরেছে বাবাকে। বাবার আর মিতা কাকিমার ঠোঁট জোড়া আবদ্ধ। অংশুর আর এক মুহূর্ত দাঁড়াবার ইচ্ছে হল না। সে নেমে গেল তৎক্ষনাৎ। তার বাবা তার মাকে ঠকাচ্ছে। সে হয়ত কোনোদিন মাকে এই দৃশ্য বলতে পারবে না। কিন্তু এই দৃশ্য তাকে যেমন অস্বস্তি দিচ্ছে, তেমন কষ্ট হচ্ছে তার বাবার সংসারে দিনরাত খেটে মরা মায়ের জন্য। ড্রয়িং রুমে স্তব্ধ হয়ে বসে রইল অংশু। খানিক পরে বাবা ফিরল। ফিরেই বলল---কি রে, নীচে গেট খোলা রেখেছিলি কেন? অংশু নিরুত্তর রইল। এখুনি বাবার কোনো প্রশ্নের উত্তর তার দিতে ইচ্ছে হচ্ছে না। মায়ের চেয়ে কি মিতা কাকিমাকে বেশি দেখতে ভালো? অংশুর মনে হয় না। মিতা কাকিমার হয়ত বয়সটা মায়ের চেয়ে কম, মা হয়ত খাটো চেহারার, পাতলা। মিতা কাকিমার মত স্বাস্থ্যবতী নয়। কিন্তু মা মিতা কাকিমার চেয়ে ঢের সুন্দরী। মায়ের গায়ের রঙ, মুখশ্রীর কাছে মিতা কাকিমা মোটেই তুলনায় আসে না। তবু বাবা কেন ঠকাচ্ছে মাকে? ***
29-09-2024, 10:35 PM
সুচি বাড়ি ফিরল সন্ধে সাড়ে সাতটায়। সন্ধের দিকটা বৃষ্টি কমেছে। জয়ন্তকে ছবি সন্ধেবেলা এক কাপ চা দিয়েছিল। সুচিত্রা বাথরুম থেকে বেরোলে জয়ন্তকে বলল---কই গো তুমি চা খাবে?
অংশু পড়ার ঘরে বসেছিল। পড়ায় তার কিছুতেই মন বসছে না। সে কি দিদিকে ফোন করে ব্যাপারটা বলবে, বলবে বাবা আর মিতা কাকিমার এফেয়ার চলছে? দিদি অংশুর কাছে বন্ধুর মত। তবে পিউ একটু বেশিই মডার্ন। ওর এদেশের কিছুই ভালো লাগে না। অংশুর যেমন দাদুর বাড়ির গাছ-গাছালি, ঝিল, গ্রাম্য পরিবেশ ভালো লাগে, পিউর তা নয়। পিউ সিনু মাসির মত বিদেশ চলে যেতে চায়। ওখানেই সেটল হতে চায়। এজন্যই ওর আইআইটিতে ভর্তি হওয়া। ও' হয়ত এই বিষয়টাতে আমলই দেবে না। মা আর বাবা একসাথে চা খাচ্ছে। চারুশীলা মাসির বাড়ির গল্প মা শোনাচ্ছে বাবাকে। বাবাও মনোযোগ দিয়ে শুনছে। যেভাবে অংশু বাবা-মাকে দেখেছে, তেমনই প্রতিদিনের মত। বাবাকে দেখে একবারও মনে হল না বাবা মাকে ঠকাচ্ছে। আর বেচারা মা জানেই না তার স্বামী একজন চিটার। অংশুর বড্ড দুঃখ হচ্ছে মায়ের জন্য। রাগ হচ্ছে মিতা কাকিমার ওপর। এভাবে তার বাবা-আর মায়ের মাঝে উপদ্রুতের মত এসে যাওয়ায়। +++++ পর্ব: ৯ হাসপাতাল থেকে ফিরে স্নান সেরে লম্বা টান টান হয়ে সোফায় বসে খবরের কাগজ পড়ছে জয়ন্ত। অংশু পড়ার ঘরে। ড্রয়িং রুমের ফ্যান ঘোরার শব্দ অবিরাম হতে হতে শ্রবণযন্ত্র যেন তার গুরুত্ব দেয় না আর। তবে একটা শব্দ জয়ন্তের কানে ঠেকছে এই নিস্তব্ধতায়; সেটা দেয়াল ঘড়ির কাঁটার ঘূর্ণায়মান টিকটিক শব্দ। রাত্রি আটটা হল। সুচি ফেরেনি। কলেজ থেকে বেরিয়ে নাকি বাড়িতে টেলিফোন করে জানিয়েছে অংশুকে ফিরতে দেরী হবে তার। কোথায় গেছে বলেও যায়নি সে। জয়ন্ত এবার আড়মোড়া ভেঙে উঠল, ছেলে হাঁক দিয়ে বললে---অংশু, দেখতো তোর মাকে ফোন করে। কখন আসবে। অংশু মাকে টেলিফোন করতে পড়ার টেবিল ছেড়ে ওঠার আগেই জয়ন্তের মোবাইল ফোন বেজে উঠল। সুচিত্রা ফোন করেছে। জয়ন্ত ফোন ধরার আগে ছেলেকে বললে---থাম। তোর মা ফোন করেছে। অংশু থেমে গেল। জয়ন্ত ফোন ধরতেই সুচি বললে---কই গো, তুমি বাড়িতে? ---হ্যা। কেন? এত দেরি... ---শোনো না, একটা সমস্যা হয়েছে। ---কি আবার? সুচিত্রার চারপাশে আরো দু' একটি গলা। ও' বলল---তোমাকে বলেছিলাম না, গফুর দা'র কথা? গফুর নামটা শুনেই গা জ্বলে উঠল জয়ন্তের। ঐ নোংরা ফেরেব্বাজ মাতালটার সম্পর্কে কি বলতে সুচিত্রা ফোন করল। জয়ন্ত ও'কে থামিয়ে বিরক্ত স্বরে বলল---তুমি বাড়ি কখন আসবে? ---ধৈর্য্য ধরো লক্ষীটি। গফুর দা'র স্ত্রী খুব অসুস্থ, ক্যানসারের পেশেন্ট। ওকে হাসপাতালে দেওয়ারও ওদের ক্ষমতা নেই। আজ বিকেল থেকে খুব সিরিয়াস মনে হচ্ছে। কি করা যায় বলো তো? ---তুমি জানলে কি করে? মানে তুমি কি ঐ গফুরের বাড়িতে নাকি? জয়ন্ত বুঝতে পারলো, অন্যে যাতে না শুনতে পায় সুচি একটু গলা নামিয়ে যেন বললে---আঃ, একটা গরীব মানুষ বিপদে পড়েছে। তাকে সাহায্য না করে তুমি কেমন কথা বলছ? আর গফুর দা তো আমার অপরিচিত কেউ নয়। জয়ন্ত থমকে গেল। বলল---কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দিতে বলো। ---আচ্ছা, আমি মেয়েমানুষ হয়ে সেসব পারি? ---তুমি করতে যাবে কেন? ঐ গফুরকে বলো, কাছে পিঠে যে কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দিতে। জয়ন্ত বুঝতে পারলো সুচিত্রার বোধ হয় কথাটা একেবারেই মনঃপুত হল না। বললে---সত্যি, তোমার কোনো মনুষত্ব আছে? একটা মহিলা তার ছোট বাচ্চা আছে, তাকে সাহায্য করতে পারা যায় না? ---আমি কি করতে পারি বলো? সুচিত্রা বিরক্ত হয়ে ফোনটা কেটে দিল। জয়ন্ত পড়ল একটা বিড়াম্বনায়। সুচি জেদের কাছে হার মানবে না, সেটা জয়ন্ত জানে। এই রাতে সুচি যদি গায়ে টেনে ঝামেলায় পড়ে, তাহলে আরেক সমস্যা। অংশু পাশ থেকে বললে---কি বলল মা? হাসি হাসি মুখ করে জয়ন্ত বললে---তোর মা এখন সমাজসেবা করতে ব্যস্ত। কে গফুর, তোর দাদুর বাড়ির কেয়ারটেকারের ছেলে, তার বউ নাকি অসুস্থ। ওকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। অংশু 'গফুর' নামটা শুনে অবাক হল। এই 'গফুর' সেই নয় তো ঝুমুর মাসির প্রেমিক। জয়ন্ত দ্বিধায় পড়ে আবার ফোন করল সুচিত্রাকে। এবার সুচি ফোন ধরেই কোনো রাগ না দেখিয়ে বললে---তোমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা যায় কিনা দেখো না? ---সরকারি হাসপাতাল, যে কেউ ভর্তি হতে পারে। হোক, তবু আমি ফোন করে দিচ্ছি। ---তুমি একটু আসতে পারবে? এই রাত-বিরেতে আমি মেয়েমানুষ... জয়ন্ত গররাজি থাকলেও অবশেষে বললে---কোথায় আছো তুমি? ***
29-09-2024, 10:38 PM
(This post was last modified: 27-10-2024, 10:24 AM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পার্ক সার্কাসের রেললাইন ধরে ঘিনঘিনে বস্তি এলাকায় ত্রিপল, ভাঙা কার্ডবোর্ড দিয়ে সারিবদ্ধ ঘর। একটা নোংরা জলের খালের পাশেই এই সারি। লম্বা টানা এই ঘরগুলোতে দিনমজুর, কাগজকুড়োন, কুলি মজুর, কেউ বা ভাড়াটে মাস্তান, পকেটমার, আবার যৌনকর্মীদের বসবাসও আছে এসব এলাকায়। হি ন্দু-মু সলিম, কেউ বিহারী, কেউ ওপার থেকে উদ্বাস্তু ভিটেমাটিহীন সব লোকেদের বসত এখানে।
ত্রিপল-কার্ডবোর্ড দিয়ে যে ঘরটা বানানো, সে ঘরটা এতটাই ছোট, একটা খাট পড়বার পর সামান্য জায়গাটুকুও নেই। ওই টুকু জায়গাতেই রয়েছে একটা স্টোভ, ইতিউতি ছড়ানো এঁটো থালা-বাসন। লম্বালম্বি দড়িটা বাঁধা ঘরের এ কোন থেকে অপর কোনে। তাতে এলোমেলো শতছিন্ন জামা-কাপড়। ময়লা তেলচিটে বিছানায় শুয়ে আছে একজন মহিলা। গায়ের রঙ রোদে পোড়া কালো। তবে রুগ্ন নয়, স্বাস্থ্য খানিক আছে। মাথায় চুল উঠে গিয়ে কয়েকটা ধূলি ধুসরিত লাল চুল এলোমেলো হয়ে আছে। পরনে ছিন্ন ময়লা শাড়ি, হাতে একগাছি কাচের চুড়ি, গলায় একটা রঙ চটে যাওয়া মঙ্গলসূত্র। ক্ষণিকের মধ্যে জয়ন্তের অস্বস্তি বাড়লো, যখন তারই সামনে শায়িত মহিলা তার দুটি সন্তানকে উদলা গায়ে স্তন দিচ্ছে তা দেখে। মহিলার গায়ে ছেঁড়া-ফাটা একটা ব্লাউজ, সেই ব্লাউজ দুই স্তনের ওপর তোলা। দুই দিকে আলগা হয়ে আছে দুটো স্তন। ছাগলের মত কালো কালো বোঁটা মুখে পুরে রেখেছে ময়লা হাফপ্যান্ট পরা দুটি বাচ্চা ছেলে। জয়ন্ত বিস্ময়ে দেখল দুধ খাবার বয়স দুটোরই অনেক আগে চলে গেছে। একটার বয়স বছর চারেক হবে, অন্যটা তো বেশ বড়। সাত-আট বছরের ছেলেটাও বেশ আয়েশ করে অসুস্থ মায়ের বাঁট থেকে দুধ টানছে। জয়ন্ত মহিলার হাতের পালস নিয়ে দেখল। তারপর স্টেথো বসানোর আগে বললে---এত বড় হয়ে গেছে, ওদের এখনো বুকের দুধ দেন কেন? মহিলা ঈষৎ হেসে ঘোলাটে কাতর চোখে বলল---ডাক্তার বাবু, পেটে খাবার জোটে না আমার বাচ্চার। মায়ের মাই খেয়েই যদি বাঁচে.. তাই কাউকে দুধ ছাড়াইনি। ---কিন্তু আপনি তো ক্যানসারের পেশেন্ট। আপনার নিজেরই এখন পুষ্টিগুন দরকার। যাইহোক, এর আগে ডাক্তার দেখিয়েছেন? সুচির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকালো মহিলা। বলল---হ্যা, সেবার দিদি বলেছিল ডাক্তার দেখাবে। জয়ন্ত একবার ঘুরে তাকালো নিজের স্ত্রীয়ের দিকে। সুচি যে এখানে এই আগেও এসেছে সেটা সুচি জয়ন্তকে জানায়নি, তাই সে বলল---আগে গফুর দা, ও' অসুস্থ বলায় এসেছিলাম। জয়ন্ত রোগিনীকে বললে---আপনি যে ক্যানসার পেশেন্ট জানলেন কি করে? ---একবার ডাক্তার দেখিয়েছিলাম ডাক্তারবাবু। সে ডাক্তারবাবু বলেছিল আমার এখুনি চিকিচ্ছা করা দরকার। কিন্তু কি করব খেতে-পরতে পাই না, ডাক্তার দেখাবো কি করে। জয়ন্ত প্রেসার চেক করল। বলল---সেটা কবে? ---সে তিন বছর হবে। জয়ন্ত এবার চশমার ওপর দিয়ে সুচির দিকে তাকিয়ে বলল---তিন বছর হল ক্যানসার পেশেন্ট কোনো ডাক্তার দেখায়নি। আর এদিকে স্বামী বউয়ের অসুস্থতার নামে টাকা চেয়ে মদ খাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিয়ে উঠল গফুরের বউ, বললে---না, ডাক্তার বাবু। আমার রেশমির আব্বা মদ খেতে পারে, কিন্তু আমার চিকিচ্ছার জন্য যে টাকা লিয়েছে লোকের কাছ থেকে, সে টাকায় সে মদ খায়নি। জয়ন্ত হাসলো। এসব মহিলারা মরতে বসলেই স্বামীর প্রতি অপবাদ সহ্য করতে পারবে না। জয়ন্ত সুচিকে আড়ালে ডেকে বলল---সাংঘাতিক কেস। ঝামেলায় ফেললে এখন। ততক্ষনে ঝুপড়ি ঘরের বাইরে ভিড় জমেছে। উঁকি ঝুঁকি মেরে লোকেরা দেখার চেষ্টা করছে। তাদেরই সাহায্যে মহিলাকে তোলা হল জয়ন্তের গাড়িতে। জয়ন্ত বললে---সুচি, ওর স্বামী কোথায়? সুচি মহিলাকে গাড়ির পেছনের সিটে বসাতে বসাতে বলল---বলছি, পরে। ---পরে বললে হবে না। ও'কে হাস্পাতালে ভর্তি করতে ও'র স্বামীকে লাগবে যে। বউ মরতে বসছে, আর স্বামী মদ খেয়ে বেড়াবে, এমন লোককে পুলিশে দেওয়া উচিত। ---আপাতত আমরা ওকে আমাদের দায়িত্বে ভর্তি করে দিই... জয়ন্ত বড্ড বিরক্ত হল। খামোকা যেন বিপদের বোঝা ঘাড়ে নেওয়া। প্রথম দেখেই জয়ন্ত বুঝেছে ক্যানসারের লাস্ট স্টেজ বোধ হয়। চিকিৎসা যে কিছুই হয়নি তাও জয়ন্ত টের পেয়েছে। এ' রোগী মরলে ঝামেলা তাদেরই নিতে হবে। বস্তি এলাকার ভাড়াটে কয়েকজনও সাহায্য করল। বেশ একটা ভিড়ও জমে গেল জয়ন্তের গাড়ির চারপাশে। বেশিরভাগ হিন্দিভাষী মহিলা। কেউ একজন সেই ভিড়েই বলল ''গফুর কাঁ হ্যায় রে?'' একজন বয়স্ক লোক জবাব দিল ''কাঁ দারু পিকর পড়া হ্যায়, ভোসড়িকে"। সাত-আট বছরের বাচ্চা ছেলেটা ওর মাকে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোথাও দেখে বড্ড ভয় পেয়েছে। কেঁদেই চলেছে সে। এক বিহারী মহিলা ওকে খান্ত করে বলল---বিট্টু, রোনা বন্ধ কর বেটা, তেরা মা আভি আ জায়েগা। ***
29-09-2024, 10:42 PM
হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া গেল কোনরকমে। ডাঃ হালদার জয়ন্তের ব্যাচমেট। বন্ধুস্থানীয় তাই। তিনি বললেন---ডাঃ দাশগুপ্ত, এ' রোগী কোথায় পেলে?
জয়ন্ত মৃদু হেসে বলল---দেখতেই তো পাচ্ছো, অত্যন্ত গরীব। আমার বউয়ের আবার দয়ার শরীর। সেই দয়া দাক্ষিন্যেই... ডাঃ হালদার বললেন---সবই বুঝলাম। কিন্তু এ' রোগীকে আগে যে কিছুই ট্রিটমেন্ট করা হয়নি, বুঝতে পারছ। হাসপাতালের বাইরে সুচিত্রা অপেক্ষা করছে। জয়ন্ত এবার রাগ দেখিয়ে বললে---উটকো ঝামেলা নেওয়ার শখ তোমার কম নয়। আর আমাকেই নাকি বলো, যত ঝামেলা আমি নিই। সুচি হেসে বলল---কি করব বলো? হঠাৎ করে ফোন করল গফুর দা'র মেয়ে। ---গফুরের মেয়েও আছে নাকি? চমকে উঠল জয়ন্ত। সুচির মুখে লাজুক হাসি। বলল---গফুর দা'র এক মেয়ে দুই ছেলে। ---খেতে পায় না, তিন তিনটে বাচ্চা! বলিহারি এসব ছোটোলোকদের। তা তোমার ঐ গফুর দা কোথায়? ---দিনরাত মদ খেয়ে পড়ে থাকে। গফুর দা'র বউই কাজ করে সংসার চালাতো। সকালে পৌরসভার জমাদারদের সাথে ময়লা তোলার কাজ করত। দুপুরে দু একটা বাড়িতে কাজ করত। এই করেই সংসার চালিয়ে বড় মেয়েটার বিয়ে দিয়েছে। তার বিয়ে হয়েছে একটা বিহারী ছেলের সাথে নাকি। যেবার গফুর দা'কে তোমার ঐ জামাটা পরতে দিলাম, সেবার গফুর দা বললে ওর স্ত্রীয়ের ক্যানসারের কথা, ওর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে বিহারে ইত্যাদি। সত্যি বলছি, প্রথমে আমারও তোমার মত গফুর দা'র কথা বিশ্বাস হয়নি। ---আর অমনি না জানিয়ে তুমি খোঁজ নিতে বেরিয়ে পড়লে? ---না গো পরে আবার একদিন বাড়িতে গফুর দা হাজির। বললে ''সুচি মদ আমি ছাড়তে পারবো না, মদ আমাকে গিলে খায়। তুই আমার বউটাকে বাঁচা, তা নাহলে আমার বাচ্চাগুলা মারা পড়বে''। সেদিন বড্ড মন খারাপ হল জানো। গিয়ে দেখলাম গফুর দা মিথ্যে বলেনি। ভেবেছিলাম তোমাকে বলে একটা ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করব। তুমি বকাঝকা করবে বলে বলিনি আর সাহস করে। আজ কলেজ থেকে বেরোব, হঠাৎ করে ফোন করল গফুর দা'র মেয়ে। ওর মায়ের অসুস্থতায় বোধ হয় পাশে যারা থাকে তারা কাউকে না পেয়ে ওর বিহারে থাকা মেয়েকে ফোন করে জানিয়েছে। গফুর দার বউ বোধ হয় ওর মেয়েকে আমার কথা বলেছে। তাই কাঁদোমাদো হয়ে আমাকে ফোন করে মেয়েটা। কি করি বলো...এরপরে? জয়ন্ত গাড়ি স্টার্ট দিল। সুচি শাড়ির আঁচলটা গুছিয়ে নিয়ে বসল জয়ন্তের পাশে। জয়ন্ত বললে---বউ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে, স্বামী তিন তিনটে বাচ্চা জন্ম করে মদ খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুচি মুচকি হেসে বললে---তিনটে কি গো? বউটা তিন মাসের প্রেগনেন্ট! ---অ্যা! বলো কি হে? ক্যানসার পেশেন্ট তারপরেও...বলিহারি এদের! সুচিত্রা খানিক চুপ করে থেকে হাসতে হাসতে বলল---আসলে গফুর দা এমনটা ছিল না, জানো। অনেক কেস আছে এই গফুর দা'র। ---রাখো তোমার এই গফুর দা'র কীর্তি। এখন লোকটাকে খুঁজে বার করতে হবে। বউটা মরলে পরে কিন্তু বাড়তি ঝামেলা। বিরক্ত হয়ে বলল জয়ন্ত। সুচি বললে---সত্যি বাঁচবে না? ---সম্ভাবনা নেই। ট্রিটমেন্ট যদি সঠিক সময় হত, চান্স ছিল। কিন্তু এ শেষ সময়। শুধু ডেথ সাটিফিকেটটা পেলেই হয়। তারপরেও মহিলা বেশ শক্ত সমর্থ দেখলাম। ---জানো এই হাসিনা মানে গফুর দার বউ আসলে আগে প্রস্টিটিউট ছিল। সুচি ফিসফিসিয়ে বলল এমনভাবে, যেন এই চলন্ত গাড়িতেও কেউ কথাটা শুনতে পাবে। জয়ন্ত তাকালো সুচির দিকে। বললে---তার মানে অন্যকোন রোগ নেই তো। আগে বলোনি কেন? ---গফুর দা ওকে বিয়ে করার পরে ও' সেসব ছেড়ে দিয়েছে। আসলে গফুর দা তো অন্য একজনকে ভালোবাসতো। এবার উৎসাহ পেল জয়ন্ত। গাড়িটা টার্ন নিয়ে বলল---কাকে? ---তোমার ঝুমুরকে মনে আছে। মালতী পিসির মেয়ে। মানে ডালিয়ার দিদি। ---মানে যে ঐ তোমাদের দীঘিতে ডুবে মারা গিয়েছিল?
29-09-2024, 10:47 PM
(This post was last modified: 27-10-2024, 10:26 AM by Henry. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
সুচি বললে---হ্যা। ঝুমুর আর গফুর দা'র প্রেম ছিল। সে অনেক গল্প। ঝুমুরও বেশিদূর পড়া লেখা করেনি। কিন্তু বরাবরেরই সাহসী ডানপিটে মেয়ে ছিল। আর যাইহোক গফুর দা , ঝুমুর বাবার দূর সম্পর্কের বোনের মেয়ে। কখনোই বাবা মেনে নিতেন না। ঝুমুর আর গফুর দা'র প্রেমটা ধরে পড়ে গেল একদিন। সেই যে গফুর দা পালালো আর কোনো খবর নেই। ঝুমুরও চেয়েছিল গফুর দা'র সাথে পালাতে। কিন্তু গফুর দা যা বদমেজাজি, কখন যে কি করে। কি জানি কি হল ওদের মধ্যে তারপর। আমার মনে হয় ঝুমুর আত্মহত্যা করেছিল।
চমকে উঠল জয়ন্ত। ঝুমুরের মুখটা তার মনে আছে, পুজোর সময় সুচিদের বাড়ি গেলে দেখেছে সে মেয়েটাকে। সুচির খুব ঘনিষ্ট ছিল ছেলেবেলায়। মেয়েটার গায়ের রঙ সুচির ঐ আশ্রিতা দূর সম্পর্কের পিসির মত কালো। কিন্তু চোখ দুটো বেশ টানাটানা ছিল। লোকে বলত কালো মেয়ে হয়েও ঝুমুরের জন্য পাত্রের অভাব হবে না। বড্ড চঞ্চল মেয়ে ছিল ঝুমুর। সেই মেয়ে আত্মহত্যা করবে! জয়ন্তের কেমন যেন বোধগম্য হল না। যদিও বহু বছর আগের কথা, তবু সে বলল---কেন আত্মহত্যা করবে? সুচিত্রা খানিক চুপ করে রইল। আমার মনে হয় গফুর দা আর ঝুমুরের একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কিংবা গফুর দা না ফিরে আসায়..ঝুমুর আত্মহত্যা করেছে। জয়ন্ত হেসে বলল---এসব তোমার অনুমান। এই গফুরের সাথে ঝুমুর বিয়ে করার চেয়ে মরে যাওয়াটই বোধ হয় ভালো হয়েছে। নাহলে এমন মাতাল, ভিখিরিকে নিয়ে সংসার করতে হত আজীবন। সুচিত্রা বলল---গফুর দা কিন্তু এখনো ভুলতে পারেনি ঝুমুরকে। যেদিন জানতে পারে ঝুমুর মারা গেছে, সেদিন থেকে নেশভান শুরু করেছে। জয়ন্ত সামান্য মুহূর্ত তাকালো সুচির দিকে। ওদের বাড়ির গলিমুখে এসে পড়ল গাড়িটা। বাড়ি ফিরে শাড়ি বদলে রান্নাটা চাপিয়ে স্নানে গেল সুচি। জয়ন্ত জামা কাপড় বদলে এসে বলল---সুচি স্নান হল তোমার? সুচিত্রা বাথরুম থেকে বললে---কেন? ---চা দাও জলদি। চলবে। |
« Next Oldest | Next Newest »
|