Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(26-08-2024, 02:30 PM)raktim Wrote: মোটর সাইকেল বলিনি। বলেছি মোটরগাড়ি। চার চাকার মোটরগাড়ি গৃহস্থ বাড়িতে গ্রাম বাংলায় এসেছে অনেক পরে। এখনও বেশি দেখা যায় না। প্রতি ঘরে তো নয়ই।
যুগ অনুযায়ী ভাষা পরিবর্তন হয়। মোটরসাইকেলকে ভুল কথ্য ভাষায় বাইক বললেই সেটা বাইক হয়ে যায় না। সঠিক প্রতিশব্দ হল মোটরবাইক। বাইক কথাটা বাইসাইকেলের অপভ্রংশ। বাইক শব্দের সঠিক অর্থ হল সাইকেল।
আরে...দূরদূর..এখানে নিশ্চয়ই ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।আমি চার চাকার কথা তো বলিনি।
•
Posts: 11
Threads: 0
Likes Received: 9 in 6 posts
Likes Given: 5
Joined: Jul 2023
Reputation:
2
কমেন্ট বিতর্কে অংশ না নিয়ে গল্প লিখায় সময় ব্যায় করেন।
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(28-08-2024, 09:45 PM)@peash21 Wrote: কমেন্ট বিতর্কে অংশ না নিয়ে গল্প লিখায় সময় ব্যায় করেন।
জানি ভাই অনেকেই হয়তো এই বিষয়ে বিরক্ত।তবে আমার দেশের অবস্থা ভালো নয়, তার ওপরে আমি খানিকটা অসুস্থ ।লেখা শুরু করতে একটু সময় লাগবে।
•
Posts: 51
Threads: 0
Likes Received: 110 in 58 posts
Likes Given: 198
Joined: May 2022
Reputation:
18
(23-08-2024, 04:27 AM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ২০
বোধকরি ভালবাসা মানুষের বোধ চিন্তাকে অচেতন করে দেয়।নিজের সত্ত্বা হারিয়ে যায়। এটি এই কদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় নয়নতারার নীরবতাই তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে। অবশ্য কথা যে হয়নি তাও ত নয়, কিন্ত খুব একটি জোরের সাথে যে হয়নি এটি কি আর তার অজানা। নয়নতারা সঞ্জয়ের জীবনে ধ্রুবতারার ন্যায় দিকনির্দেশ করে চলেছে।
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(30-08-2024, 02:28 PM)chitrangada Wrote: নয়নতারা সঞ্জয়ের জীবনে ধ্রুবতারার ন্যায় দিকনির্দেশ করে চলেছে।
(নতুন আপডেট লেখা শুরু করেছি,আশা করি জলদি দিতে পারবো।)
•
Posts: 10
Threads: 0
Likes Received: 13 in 10 posts
Likes Given: 13
Joined: Feb 2024
Reputation:
-6
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(31-08-2024, 02:41 AM)alan07 Wrote: Update pls
এতো তারা কিসের! লেখা শুরু করেছি, এখন দুই একদিন সময় দাও লেখা পেয়ে যাবে।
Posts: 147
Threads: 0
Likes Received: 180 in 129 posts
Likes Given: 290
Joined: Oct 2023
Reputation:
6
(31-08-2024, 02:33 PM)বহুরূপী Wrote:
এতো তারা কিসের! লেখা শুরু করেছি, এখন দুই একদিন সময় দাও লেখা পেয়ে যাবে।
অপেক্ষা করতে কার ভালো লাগে বলুন! আশা করি জলদিই আপডেট আসবে।
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(01-09-2024, 11:09 AM)Mamun@ Wrote: অপেক্ষা করতে কার ভালো লাগে বলুন! আশা করি জলদিই আপডেট আসবে।
চেষ্টা থাকবে আজ রাতের মধ্যে দেবার,তবে না পারলে আগামীকাল সকালে।
•
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
পর্ব ২১
কয়েকদিন পরের কথা। রাতে রান্নাঘরে নয়নতারা রান্না করতে করতে, দোরের মুখে বসা তার দেবরটির সাথে আলোচনা করছিল।
– তোমার পাপ কেন হবে বৌদিমণি? আমার কপাল!তবে এ তোমার ভারি অন্যায় তা জান? তুমি সুন্দর বলেই তো আমার ধাঁধা লাগে! তোমাকে ভালবাসি, না তোমার চেহারাকে ভালবাসি বুঝতে পারি না।
– তা এতোদিন এই ভালোবাসা ছিল কোথায়! এই মুখখানি তো আজ প্রথম দেখছো না।
– জানি না কি হয়েছে আমার! সত্যি বলছি বৌদিমণি....
সঞ্জয় কথা শেষ না করে নিজের মনে কি যেন ভাবতে লাগলো। নয়নতারাকে কয়েকদিন ধরে কেমন মনমরা দেখাছে। সেদিনকার পর থেকে সঞ্জয়ের দাদা বেশ কয়েকবার এই বাড়িতে এসেছে। নয়নতারার সাথে খানিক মনমালিন্য হয়েছে বোধহয়। কিন্তু নয়নতারা তাকে কিছু জানতে দেয়নি। তবে জানতে না দিলেও নয়নতারা আচরণে তা স্পষ্টতই বোঝা যায়।
এদিকে আর এক বিপদ। সেদিনের পর থেকেই হেমলতার সাথে তার দেখা করা মুসকিল হয়েছে। ও বাড়িতে রাতের বেলা কয়েকজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যদিও এই রকম একটা কিছু যে হতে চলেছে, সেই সন্দেহ তার আগেই হয়েছিল। কিন্তু এত জলদি হবে এটা সঞ্জয় ভেবে উঠতে পারেনি।
তবে পাহাড়ায় যেই থাকুক না কেন, একটু বুদ্ধি করে সরানো যেতেই পারে। সঞ্জয়ের আসল ভাবনা হেমলতা। হেমে যেমন তর ভীতু মেয়েছেলে শেষ বেলা বেকে বসলে কি উপায় হবে! তাও তো সে এখন সঞ্জয়ের সাথে নয়নতারার ঠিক কি চলছে ঠিকঠাক কিছু জানে না। এই নিয়ে সঞ্জয়ের মনে যে অপরাধবোধ জাগে নি তা নয়। সে জেগেছে বোইকি।ওমন সহজ সরল মেয়েটার সাথে সে যে ভাড়ি অন্যায় করছে,এ সে নিজে জানে।তবে কিনা নয়নতারার আকর্ষণ কাটানো তার সাধ্যের বাইরে...
– কি হল! শুনছো?
সঞ্জয় ভাবনার মাঝে খানিক হারিয়ে গিয়ে। নয়নতারার কথা কিছুই শুনতে পায়নি। এবার নয়নতারার দিকে মুখ ঘোরাতেই নয়নতারা আবারও বলতে লাগলো।
– তুমি চাদ্দিক দিয়ে আমার একেবারে সর্বনাশ ডেকে আনতে চাইছো,সেকথা জানো?
একথা শুনে সঞ্জয় দরজার পাশ থেকে উঠে গিয়ে ভেতরে নয়নতারার পাশে বসলো।এবং নয়নতারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সঞ্জয়ের হাত দুখানি উঠে আসে তার দুই পাশের গালে। তবে সঞ্জয়ের উদেশ্য বুঝে নিতে নয়নতারার দেরি হয় না। নয়নতারা তখনি ডান হাতে সঞ্জয়ের মুখ চেপে ধরে,
– ছিঃ! এই সব কি হচ্ছে?
সঞ্জয় নয়নতারা হাত সরিয়ে বলল
– এর মধ্যে ছিঃ-র কিছু নেই। তুমি নিজেই বল না আমায় ভালোবাসো কি না?
– এসব কথা থাক এখন। তুমি এখন যাও এখান থেকে।
নয়নতারা কথা শেষ করে একটু সরে বসলো। যদিও সঞ্জয়ের যাবার ইচ্ছে ছিল না। তারপরেও সে উঠে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত গলায় বলল,
– বাবু কোথায়?
– ভেতরের ঘরে।
সঞ্জয় রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে বারান্দায় উঠলো। আবার হঠাৎ কি মনে হতেই পেছন ফিরে হাঁটা লাগলো। রান্নাঘরের কাছে এসে দরজার পাশ দিয়ে ভেতরে উঁকি মেরে বলল,
– আজ সকালে দাদার সাথে কিছু হয়েছে?
বোধকরি নয়নতারার এই প্রশ্নের জন্যে তৈরিই ছিল। সে সঞ্জয়ের দিকে না তাকিয়েই বলল,
– সে নিয়ে না ভাবলেও চলবে তোমার। এখন ঘর যাও, খাবার সময় হলে ডেকে দেব।
বলল বটে,তবে খানিক পরে কথা গুলো নিজের কাছেই বড্ড নিষ্ঠুর বলেই মনে হলো নয়নতারার। এই কথা মনে হতেই সে উঠে রান্নাঘরের বাইরে বেড়িয়ে এল। কিন্তু ততক্ষণে সঞ্জয় সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠে গেছে। নয়নতারা নিজের মনেই একটিবার ভাবলো, ডাকবে কি না। কিন্তু হায়! মনের দোলাচলের কারণে আর ডাকা হল না। সে নীরব হয়ে আদ্র চোখে উঠনে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ।
এই কয়েকদিন নয়নতারার স্বামী বেশ কয়েকবার এসেছে। এবং এই সন্দেহটাই এখন সোহমের আক্রমণ করার প্রধান অস্ত্রে দাঁড়াইয়া গিয়েছে। বেচারী নয়নতারার মুখ দেখলে কারো এ কথা মনে হওয়া উচিত নয়, যে সে সুখে আছে। নয়নতারার মুখে প্রায় সময় চিন্তিত একটি ভাব ফুটে ওঠে। মাঝে মাঝেই তার নিদ্রাহীন রাত্রি যাপনের চিহ্ন, ফর্সা মুখশ্রীতে স্পষ্টতই বোঝা যায়। যদিওবা ছোটখাটো কারণে মাঝেমধ্যে তার মুখে হাসি ফোটে। তবে সঞ্জয়ের বিস্তর চেষ্টার পরেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হবার সুযোগ খুঁজে পায় না।
তবে কি না, সোহমের দেখবার ভঙ্গি ভিন্ন। সোহমের চোখে নয়নতারা মুখের ম্লানিমা রূপৈশ্বর্যের মতো লাগে। ছোট মেয়েটাকে দেখার জন্যে নয়নতারার চোখের ফাঁকা দৃষ্টি, যে আজকাল শ্রান্তিতে স্তিমিত হয়ে থাকে। সেটা সোহমের মনে হয় পরিতৃপ্তি। নয়নতারার সর্বক্ষণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা সোহমের কাছে মনে হয় সাজসজ্জা।
যদিও পরিতৃপ্তি বা সাজসজ্জা কোনটাই নয়নতারা মধ্যে নেই। তারপরেও সোহমের দৃষ্টির আড়ালে নয়নতারা জীবনযাত্রাটি এক গভীর সন্দেহের ও রহস্যময় ব্যাপার হয়ে উঠেছে। সেই সাথে নয়নতারার পিতাও দিনে দিনে এই বাড়ি ছাড়তে ব্যস্ত হয়ে পরছে। কিন্তু বেচারী নয়নতারা কোন সিদ্ধান্তে মনস্থির করতে পারছে না। দুদিকের টানাটানিতে তার মন হয়ে উঠেছে অস্থির।
সঞ্জয় দোতলায় উঠে তার শয়নকক্ষে খাটে শুয়ে পড়েছিল। তারপর নানান ভাবনা করতে করতে এক সময় তার দুচোখ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে এল।
যখন সঞ্জয়ের ঘুম ভাঙলো। তখন প্রথমেই তার চোখে পরলো নয়নতারা পানির গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে আছে। কে জানে, হয়তো আর একটু দেরে হলেই সেই পানি সঞ্জয়ের মুখে পরতো। তবে সঞ্জয়কে উঠতে দেখে নয়নতারা পানির পাত্র টেবিলে নামিয়ে রাখলো। তারপর সঞ্জয়কে খেতে বসিয়ে সে চেয়ার টেনে সামনে বসলো। এবং কিছুক্ষণ পরেই প্রশ্ন উঠলো,
– তুমি চিঠিটা ঠিকমতো দিয়েছিল তো?
হটাৎ এমন প্রশ্নে সঞ্জয় খানিক চমকে গিয়েছিল। কিন্তু পরক্ষণেই কলকাতার চিঠির কথাটা মনে পরলো তার। যদিও সঞ্জয় এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি সৌদামিনীর সাথে নয়নতারা এত ভাবের কারণ কি। তবুও চিঠিটা সে ঠিকমতোই ডাকে দিয়ে এসেছিল। তবে চিঠির উত্তর এসেছে কি না তা জানবার কোন প্রয়োজন মনে করেনি সে। আসলে সৌদামিনীর নাম উঠলেই তার পুরোনো কিছু কথা মনে পরে, যেগুলো সে ভুলে থাকতে চায়। তাছাড়া পুরোনো কথা মনে করে লাভ কি আর! বিশেষকরে আর যখন কদিন পরেই সে হেমলতার সাথে নিজের জীবনকে জড়াতে চলেছে..
– কি হলে? খাওয়া থামালে যে!
নয়নতারার ডাকে ভাবনা ছেড়ে সঞ্জয় আবার খাবারে মননিবেশ করলো। তারপর ভোজন পর্ব শেষ হলে, নয়নতারা আবারও আগের প্রশ্ন করায় সঞ্জয় বলল,
– তোমার কি মনে হয়, আমি চিঠি ডাকে না দিয়ে কোথাও ফেলে দিয়েছি?
– ও কি রকম কথা,আমি কি তাই বলেছি নাকি! শুধু জানতে..
নয়নতারা হঠাৎ চুপ হয়ে গেল।আড়চোখে লক্ষ্য করলো সঞ্জয়ের মুখে খানিক বিরক্তি ভাব ফুটে উঠছে।
– আমি চিঠি ঠিকমতোই দিয়েছি বৌদিমণি। তবে সে উত্তর না দিলে আমি কি করতে পারি বল? ওস বড়লোকি কান্ডকারখানা। তার ইচ্ছে হলে মাথায় তুলবে, আর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে মাটিতে আছড়ে ফেলতেও দুবার ভেবে দেখবে না।তারা কখন কি করে তার কোন....
– ছিঃ…ছিঃ… কারো সম্পর্কে ও রকম বলতে আছে! সে তোমার এমন কি ক্ষতি করেছে শুনি? সেই তো কলকাতা তোমার বিপদের মুখে তার বাড়িতে নিয়ে তুলেছিল, তাই নয় কি?
নয়নতারার কথার মাঝে সঞ্জয় খাট ছেড়ে উঠে এসেছিল। কথা শেষ হতেই সঞ্জয় মেঝেতে হাটুগেড়ে নয়নতারার কোলে মাথা রাখলো। আর কোন কথা হল না। তবে নয়নতারার ডান হাতটি উঠে এল সঞ্জয়ের মাথায়,তারপর সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
//////
পরদিন সকাল সকাল সঞ্জয়ের ঘুম ভাঙলো। সে বাইরে বেড়িয়ে এল তালতলার রাস্তায় একটু হাটাহাটি করবে বলে। তবে সঞ্জয় সিঁড়ির মুখে আসতেই, হঠাৎ উঃ উঃ করে একটা শব্দ কানে লাগলো তার।শব্দের উৎস রান্নাঘর।
তাই সঞ্জয় তাড়াতাড়ি রান্নাঘরের দিকে ছুটে গেল। রান্নাঘরে পৌঁছে দেখা গেল নয়নতারা বাঁ হাত দিয়ে ডানহাত খানা চেপে ধরে বসে আছে। মুখে যন্ত্রণার ছাপ। চোখ ছলছল। আর তার পাশেই উনুনের একটি পাত্রে মাছ ভাজা হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখা মাত্রই সঞ্জয় জিজ্ঞেস করলো
– কি হয়েছে। কোথাও পুড়ে গেল নাকি?
নয়নতারা ডান হাতের মাঝখানটা দেখিয়ে বলল,
– এই যে এইখানটায় গরম তেল এসে লাগলো। জ্বালা করছে।
সঞ্জয় দেখলো নয়নতারার ডান হাতের মাঝে ও একটা আঙ্গুলে ফোসকা পরে গেছে।
– ইস, খুব জ্বালা করছে তাই না? কি করে পুড়ল?
প্রশ্ন করলেও উত্তরের অপেক্ষা সঞ্জয় করলো না। সে নয়নতারাকে অবাক করে, তাকে পাঁজাকোলে তুলে নিল। নয়নতারা ব্যস্ত হয়ে বলল,
– আরে কর কি! উনুনে মাছ পুড়ে যাবে যে, নামাও বলছি....
তবে কে শোনে কার কথা। সঞ্জয় নয়নতারাকে সোজা বৈঠক ঘরে নিয়ে এসে একটা আসনে বসিয়ে দিল।
নয়নতারার হাতে মলম লাগানোর সময়, নয়নতারার ঠোঁটে হাসি লেগে আছে দেখে সঞ্জয় বেশ বিরক্ত হয়ে জিগ্যেস করল,
– এখানে হাসির কি দেখলে ?
– হাসছি তোমার কান্ড দেখে। নাও এবার হাতটা ছাড় দেখি, অনেকক্ষণ ধরে আছো। এখানে বসে থাকলে আজ আর খেতে হবে না।
এই বলে নয়নতারা হাত ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো। তবে বারান্দায় পা দিতেই নয়নতারার শাড়ির আঁচলে টান পরলো। তৎক্ষণাৎ ডান হাতে কাঁধের আঁচল আঁকড়ে ঘুরে দাঁড়ালো নয়নতারা। সঞ্জয় শাড়ির আঁচলখানা তার ডান হাতে পাকিয়ে বারান্দায় বেরিয়ে এল।সঞ্জয়ের চোখের দৃষ্টি নয়নতারার সুবিধার মনে হলো না। সে গলায় কাঠিন্য ভাব এনে বলল,
– এইসব কি অসভ্যতা হচ্ছে? ছাড়ো বলছি! নয়তো এখনি কানটেনে..
কথা শেষ হলো না,সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠতায় নয়নতারা প্রায় ব্যাকরুদ্ধ হয়ে পরলো। পিছিয়ে যেতে গিয়ে তার পিঠ ঠেকে গিয়েছিল পেছনে থাকা পিলারে। সঞ্জয় এখন তার খুব কাছে। এতটাই কাছে যে সঞ্জয়ের উষ্ণ নিশ্বাস নয়নতারার কপোল স্পর্শ করছে।
– কি করবে শুনি? তুমি এখনো আমায় সেই ছোটটি পেয়েছ! বলি এই দুহাতে বন্দী হলে নিজেকে ছাড়াবে কি উপায়ে? তার চেয়ে ভালো একটা চুমু খেতে দাও ছেড়ে দিচ্ছি।
নয়নতারা হঠাৎই যেন বড্ড অসহায় হয়ে পড়লো। সঞ্জয়ের উত্তেজিত গরম নিঃশ্বাসে তার বুকের ওঠা নামার গতি বেড়ে গেল শতগুণ। তারপরেও সে মনে দৃঢ়তা এনে সঞ্জয়কে ঠেলে সরিয়ে দিতে চাইলো।তবে তার নিজের কাছেই এই প্রতিরোধ যথেষ্ট বলে মনে হলো না। যেন হৃদয়ের ভেতর কেমন এক অন্যায় দুর্বলতা তার সকল ইচ্ছে ও প্রতিরোধকে থামিয়ে দিতে লড়াই করছিল।
বলাই ব্যাহুল সঞ্জয় এমন সুযোগ হাত ছাড়া করিল না। সে বাঁ হাতে নয়নতারার চিবুক ঠেলে দিলো ওপড়ের দিকে। নয়নতারার লাল টুকটুকে ঠোটের ওপড়ে সঞ্জয়ের তৃষ্ণার্ত ঠোঁট দুখানি নেমে এলো ধিরে ধিরে। অল্পক্ষণেই সঞ্জয়ের জিভ ক্ষুধার্তভাবে চলে এলাে নয়নতারার সুগন্ধী মুখের ভেতর। ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেতে লাগলাে সুন্দর সারিবদ্ধ দাঁত, জিব, ঠোটের ভেতরের নরম জমি। সঞ্জয়ের মনে হতে লাগলো এতাে শুধু সুখ নয়, স্বর্গসুখ।
ঠিক কতখন কেটে গেল,তার খবরাখবর দুজনার কারোরই নেওয়া হলো না। নয়নতারাই প্রথম অনুভব করলো সঞ্জয়ের দুই বাহু যেন তার দেহটিকে বেষ্টন করে আছে।
এখন সঞ্জয়ের বাঁ হাতটা তার নিতম্বের উপড়ে অবস্থান করছে। এবং সেই সাথে ডান হাতটিও থেমে নেই। সেটি নয়নতারার শাড়ির ফাঁক গলে কোমড়ের মৃসণ ত্বক রিতিমত দলিত মথিক করে চলেছে। হঠাৎ আচমকা ধাক্কায় সঞ্জয়কে খানিকটা দূরে সরিয়ে নয়নতারার সেখান থেকে ছুটে বেড়িয়ে যেতে চাইলো। কিন্তু দুপা এগুতেই শাড়ির আঁচলে টান পরলো তার।
এই অসাবধানতায় নয়নতারার বুকের আঁচল সরে সঞ্জয়ের সুবিধাই হলো বটে।
শাড়ির টানে নয়নকে সঞ্জয়ের দিকেই ফিরতে হয়েছিল।কিন্তু আঁচল খানা সঞ্জয়ের হাতে বন্দী থাকায়,অগত্যা তার হাত দুখানা বুকের ওপড়ে উঠে এলো।
সুযোগ ছিল,তবে সঞ্জয় সে সুযোগ নেবার ইচ্ছেটা বহু কষ্টে নিবারণ করলো। সে তার হাত থেকে শাড়ির আঁচল খুলে নয়নতারার গায়ে জড়িয়ে দিল। তবে নয়নতারা ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই তার এবার সত্যিই মনে হতে লাগলো,আজ সকালের খাবার লাটে উঠেছে। যাহোক সেই চিন্তা না করে সঞ্জয় বাড়ির বাইড়ের দিকে পা বাড়ালো।
তালতলার পথে খানিক হাটাহাটি করার পর,বাড়ি ফিরে কলতলায় ঢুকলো সঞ্জয়। ঢোকার সময় দেখলো নয়নতারা রান্নাঘরে। বলাই ব্যাহুল এটি দেখে তার মুখে হাসি ফুটলো।
কলতলার ঢোকার মুখ থেকে রান্নাঘর সরাসরি দেখা যায়। যদিওবা নয়নতারা রাগে কিংবা লজ্জায় এদিকপানে একটি বারও দৃষ্টিপাত করল না। তবে তাই বলে সঞ্জয়ের দেখতে আর বাধা কই! সে কলতলায় বসে দেহে শিতল জল ঢালতে ঢালতে সেই দিকেই চেয়ে রইলো। তবে কলতলার শিতল জলেও তার দেহ ও মনের উত্তেজনা বিশেষ কমলো না।
স্নান সেরে বেরিয়ে এসে সঞ্জয় নয়নতারাকে ডেকে বলল
– আচ্ছা আর রাগ করতে হবে না,বড্ড ভুল হয়েছে আমার। এই দেখ কানে ধরেছিক আর এমনটি হবে না।
নয়নতারা নীরবে তার কাজ করতে লাগলো, যেন সঞ্জয়ের কোন কথা সে শুনতেও পায়নি। এবার সঞ্জয় খানিকটা চিন্তিত হয়ে পরলো। এই অবস্থায় আর কি বলবে ভেবে পেল না। খাবার শেষে বেরুবার সময় সঞ্জয় নয়নতারা কে উদেশ্য করে বলল,
– রাতে ফিরতে দেরি হবে আমার। তুমি চিন্তা কোরো না।
দোকানে গিয়ে কাজের ফাঁকে সঞ্জয় তার বন্ধু পুলককে বলল কখানা বই সংগ্রহ করে দিতে, একথায় পুলক বলল
– আজকাল কাজে মনোযোগ না দিয়ে বসে বসে নোবেল পড়া শুরু করলি নাকি?
– না ঠিক তেমনটা নয়। বৌদিমণি মাঝেমধ্যেই বই হাতে বসে,তাই ভাবছিলাম আর কি একা থাকে সময় কাটবে।
– ও এই ব্যপার, বলি তোর মতলব খানা কি বলতো,ওসব সাহেবি নোবেল পড়িয়ে বৌদিকে পাকানোর হচ্ছে বুঝি।
– আরে ধ্যাৎ, ফাজলামি না করে পারবি কি না তা বল।
– আরে বাবা রেগে যাচ্ছিস কেন! এ এমন আর কি কঠিন কাজ। তবে সময় লাগবে। এই গায়ে কজনের কপালে আর নোবেল পড়ুয়া বৌদি জোটে বল!অন্য জায়গায় থেকে বই আনতে হবে....
দোকান থেকে সেদিন একটু তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ে সঞ্জয়। মোটরসাইকেল টা মাঝি পাড়ায় একটি ঘরের সামনে রেখে,খানিক পরেই একজন কালোমত সন্ডাগন্ডা লোককে নিয়ে বেরিয়ে আসে সে।নদীর তীরের দিকে এগুতে এগুতে কি যেন কথাবার্তা চলে তাদের মাঝে। তারপর সঞ্জয় একটা নৌকায় উঠে বসতেই লোকটি নৌকা ঠেলে এক লাফে নৌকায় উঠে বসে।
সন্ধ্যা ঠিক সাতটা নাগাদ সঞ্জয় বাড়ি ফেরে প্রতিদিন। তবে আজ দেরি হবে একথা সকালে বলে বেরিয়ে ছিল। তারপরেও নয়নতারার মনে থেকে থেকেই অস্থির হয়ে উঠছিল।
নয়নতারা বাবুকে খাইয়ে সবেমাত্র ঘুম পাড়িছে। এখন সে বাবুকে বিছানায় শুইয়ে কপালে চুমু খেতেই হঠাৎ পেছন থেকে তাকে সঞ্জয় জড়িয়ে ধরলো। আচমকা পিছন থেকে জড়িয়ে ধরায় নয়নতারা খুব ঘাবড়ে যায় । এরকম আচমকা পিছন থেকে জাপটে ধরলে ভয় পাওয়া বা ঘাবড়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক।যাইহোক কোনোরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
– এমনটি না করলেই কি নয়! ভয় পেয়ে চিৎকার দিলে কি হতো জানো?
সঞ্জয় নয়নতারাকে ছেড়ে দিয়ে হাসি মুখে বলল,
– রাগ পরেছে তাহলে! আমি তো ভাবলাম আজ আর কথাই বলবে না।
নয়নতারা চিন্তা করতে করতে সকালের কথা ভুলেই গিয়েছিল। এখন মনে পড়ায় তার মুখমণ্ডল রক্তিম বর্ণ ধারণ করতে শুরু করলো। সে নিজের মনের অস্থিরতা লুকাতে কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিল,
– খিদে পেয়েছে নিশ্চয়ই, যাও হাত মুখ ধুয়ে এসো আমি.....
সঞ্জয় বেড়িয়ে যাবার পর নয়নতারা খাটে বসে চোখ বুঝলো। সে আপন মনে ভাবতে লাগলো এই সমস্যা সমাধান কি করে করা যায়। হেমলতার সাথে সঞ্জয়ের বিবাহের আলোচনা তার পিতার কানে তুলে দিলে মন্দ হয় না। এই বিষয়ে সে নিজেও অনেক ভেবে দেখেছে। তাছাড়া সঞ্জয় নিজেও হেমকে বেশ পছন্দ করে। নয়নতারার এই মুহূর্তে ভাবনা ঘরে বউ এলে হয়তো সঞ্জয়ের সুমতি হবে। কিন্তু সে যে অনেক সময়ের ব্যাপার। সঞ্জয় যে দিনে দিনে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে, আপাতত তাকে ঠেকায় কি উপায়ে?
রাতে আর বিশেষ কিছুই হলো না। সঞ্জয় দিবি খেয়েদেয়ে দোতলায় উঠে গেল। তারপর শয়নকক্ষে খাটে শুইয়েই ঘুম। কিন্তু নয়নতারার চোখে এখনো ঘুম আসেনি। রাতের এই নিরবতায়, নিরবচ্ছিন্ন ভাবনারা যেন সুঁই ফুটিয়ে চলেছে তার মনে। সে খানিকটা সময় বিছানায় এপাশ ওপাশ করার পর, বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো। তারপর বাতি জ্বালিয়ে অন্ধকার ঘরটি আলোকিত করে, খাতা কলম নিয়ে টেবিলে বসলো। উদেশ্য কলকাতায় সৌদামিনীর কাছে আর একটি পত্র লেখা। সৌদামিনী আর সঞ্জয়ের অতীত সম্পর্কে সম্পূর্ণটা না জেনে বুঝে, হেমকে নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া তার পক্ষে মুসকিল হয়ে পরেছে।
পরদিন সকালে সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে নেমে সঞ্জয় যখন বৈঠকঘর ঢুকলো। তখন নয়নতারা দেবুর হাতে একখানা খাম দিচ্ছে। এটি দেখে সঞ্জয় গলার স্বর পাল্টে খানিক গম্ভীর সুরে বলল,
– আবারও চিঠি! কি দরকার বৌদিমণি?
– কেন! তার সাথে তোমার কিসের শত্রুতা শুনি?
– সুদূর এক বিদেশীনির সাথে আমার শত্রুতা নাকি মিত্রতা সেই হিসেব করে তোমার বিশেষ কি লাভ বল। তাছাড়া যে যোগাযোগ রাখতে চায় না,তার পেছনে শুধু শুধু সময় ও অর্থ বিসর্জন দিয়ে কি হবে বল?
– একখানা চিঠি পাঠাতে যদি তোমার সিন্দুক খালি হবার ভয় থাকে তবে....
নয়নতারার বাকি কথাটুকু তার মুখেই রয়েগেল। সঞ্জয় এগিয়ে এসে নয়নতারার ঠোটে আঙ্গুল রেখে থামিয়ে দিল।
– ছিঃ, ওকথা মুখেও এনো না। তুমি যেদিন প্রথম এবাড়িতে পা দিয়েছ, সেদিনই তোমার ওই চরণ তলে আমর সব ঐশ্বর্য সমর্পণ করে দিয়েছি। ওতে আমি আর হাত দিতে চাই না বৌদিমণি।
নয়নতারা সঞ্জয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল। সেই শান্ত দৃষ্টিতে ভালোবাসা,কামনা নাকি শ্রদ্ধা, ঠিক কি ছিল তা নয়নতারার বোধগম্য হলো না। তবে সঞ্জয়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস নয়নতারার বেশ কমে এসেছিল। সেই চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা তার পক্ষে সম্ভব হল না।
না জানি সেই মায়াময়ী চোখের দৃষ্টি কখন কোন ছলনায় নয়নতারার নিজের সত্তাটি বিলুপ্ত করে দেবে । গতকাল সঞ্জয়ের দেহের ঘনিষ্ঠতায়, নয়নতারার দেহ-মনে যে নিষিদ্ধ কামনা-বাসনা অল্পক্ষণের জন্যে জাগ্রত হয়েছিল। তাতে একটুও ঘৃণ্য বোধ না হওয়াতে নয়নতারা নিজেও আশ্চর্য হয়েছিল। তাই গতকালের ঘটনার পরে নয়নতারার নিজের ওপড় থেকেও বিশ্বাস উঠে গিয়েছে।
সঞ্জয় অবশ্য আপত্তিকর কিছুই করলো না। সে নয়নতারার কোল থেকে বাবুকে কোলে নিয়ে গটগট করে হেঁটে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গেল।
কিন্তু নয়নতারার নীরবে চোখ বুঝে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল।
নয়নতারার রান্নার কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছিল। এখন সে বারান্দায় একপাশে বসে তার পুত্র সন্তানটির ক্ষুধা নিবারণ করতে স্তনদান করছিল।তার পেছনে খানিক দূরে সঞ্জয় ও তার পিতার জলখাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। নয়নতারা একটু পর পর ঘাড় ঘুড়িয়ে সেই দিকের নজর রাখছিল। আর ক্ষনে ক্ষনে দেবুকে এটা ওটা বলে বলে তাদের খাবারের তদারকি করছিল। নয়নতারা এটি বেশ ভালোভাবেই জানা ছিল যে, খাবার সময় সঞ্জয়ের কখন কি লাগে সঞ্জয় তা চেয়ে নিতে পারে না।তাই এই নজরদারি।
হঠাৎ বাইরের থেকে কার যেন গলার আওয়াজ ভেসে এলো। লোকটি বেশ জোর গলায় দুইবার সঞ্জয়ের নাম ধরে ডাকার পরে,সঞ্জয় দেবুকে পাঠিয়ে দিল।
যতখনে লোকটির ভেতরে আসার অনুমতি মিললো। ততখনে নয়নতারা বাবুকে নিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করেছে। বৈঠক ঘরের দরজার চৌকাঠ পেরিয়ে যে লোকটি ভেতর বারান্দায় পা রাখলো, তাকে নয়নতারার চিনতে দেরি হলো না।
নন্দলাল কিছু বলবার জন্যে এলেও,সঞ্জয়কে খাবারের আসনে দেখে খানিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই পরলো মনে হয়। সঞ্জয় তার দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে তাকেও তাদের একপাশে বসিয়ে দিল। নন্দলাল খানিক আপত্তি করলেও,পরে বাধ্য হয়ে খেতে বসলো।
নয়নতারা তার কক্ষের দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল।তবে খাবার সময় তাদের কথাবার্তা বিশেষ হলো না।খাবার শেষে সঞ্জয় নন্দলাল কে সাথে নিয়েই বেরিয়ে গেল।
//////
সঞ্জয়ের নিয়মিত আসা যাওয়ায় হেমলতা এক রকম অভ্যস্থ হয়ে পরেছিল।তাই হঠাৎ তার আসা বন্ধ হওয়াতে হেমের মন বড্ড ব্যাকুল হয়ে উঠলো। তাই আজ সন্ধ্যার পূর্ব্বেই হেমলতা সঞ্জয়ের অপেক্ষায় জানালার পাশে বসে ছিল। কতখন কাটলো সে খবর তার রাখা হলো না। সন্ধ্যায় মিনতি দেবীর ডাকেও হেমলতা আজ সারা দিল না। তবে আশ্চর্যের বিষয় তিনি খোঁজ নিতে এলেন না।
শেষে যখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামলো।তখন চাঁদের নির্ম্মল জ্যোৎস্না আমবাগানের চারিদিক শুভ্র করে তুলেছে।হঠাৎ একটি অদ্ভুত ঘটনা হেমলতার চোখে পড়লো।
আমবাগানের গাছের আড়ালে দুটি কালো কালো ছায়ামূর্তি যেন এদিক থেকে ওদিকে হেঁটে বেরাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখা মাত্রই, আচমকা কিসের আশঙ্কায় হেমলতার বুকের ভেতরটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। এতক্ষণ নিজের ভাবনায় ব্যস্ত থাকায় তাদের সে লক্ষ্য করে নি।
হেমলতা দুপা পিছিয়ে আসতেই বাগানের কোন একদিক দিয়ে যেন ধুপধাপ শব্দ শোনা গেল। তারপর হঠাৎ যেন চারদিক কেম নিস্তব্ধ হয়ে গেল।খানিকক্ষণ পরে সেই নিস্তব্ধতা ভাঙে জানালার পাশে লাগোয়া আমগাছের কয়েকটি ডালপালা নড়েচড়ে উঠলো।
ভয়ের অনুভতি ইতিমধ্যে হেমের মনে জাগ্রত হয়েছিল।কিন্তু আগন্তুকটি কে,তার দেখার জন্যেই কৌতূহলে ও উদবেগে সে হাঁপাতে শুরু করেছে।তার দ্রুত নিশ্বাসের সাথে সুডৌল দুটি বুক হাপরের মতো ওঠানামা করছে। গাছের পাতায় উজ্জ্বল জলকণার মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম তার কপলে জমতে শুরু করেছে।
হেমলতা যখনই মনে মনে ভাবছে চিৎকার করবে কিনা।তখনই জানালা দিয়ে সঞ্জয় তার আলোকিত ঘরের মেঝেতে পা রাখলো। সঞ্জয়কে দেখা মাত্রই হেমের আয়ত চোখে যেন আনন্দের বান ডাকল। একটু আগের ভয়ের কথা ভুলে গিয়ে এক দৌড়ে সে সঞ্জয়ের বুকে আছড়ে ফেললো নিজেকে। সঞ্জয় ব্যাপার বুঝে হেমের মাথা থেকে পিঠ অবধি হাত বুলিয়ে তাকে শান্তনা দিতে লাগলো।
তবে সঞ্জয়ের হাতে সময় ছিল অল্পই, তাই সে হেমলতা হাতে একখানা ভাজ করা কাগজ গুজে, তাকে খানিক আদর করার পর। মন না চাইলেও তাকে বিদায় নিতে হলো।
সঞ্জয় আমবাগানের অন্ধকারে মিলিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত; হেমলতা জানালার এক পাশে দাঁড়িয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পরেই আগের দুই ছায়ামূর্তি বাগানে এসে ঢুকলো। তবে এবার আর হেমের মনে ভয়ের আবির্ভাব হল না। সে তার জানালার কপাট লাগিয়ে খাটে এসে বসলো। হাতে থাকা ভাজ করা কাগজে একটা চুমু খেয়ে আয়নায় চোখ পরতেই, সে লজ্জায় দু হাতে নিজের মুখ ঢাকলো।
হেমলতার প্রবল ইচ্ছে থাকলেও চিঠির ভাজ খুলে সে পড়ে দেখলো না। বোধকরি চিঠিতে কি লেখা আছে তা সে নিজের কল্পনায় সাজাতে লাগলো, এবং সেই কল্পনা সে এখনি ভাঙতে নারাজ।
বিছানায় শুয়ে হেম চিঠিটা আর একবার তার ঠোঁটে ছোঁয়ালো। তারপর বাঁ হাতে বুকের আঁচল সরিয়ে নিল। চিঠিটা সযত্নে কাঁচুলির গলা গলিয়ে বুকের বাঁ পাশে ঢুকিয়ে রাখল সে।
আমার এখন ঘুমোনোর সময়,তবুও আপডেট দিয়ে দিলাম। আশা তো করি চলবে…কি চলবে না??
Posts: 776
Threads: 0
Likes Received: 348 in 284 posts
Likes Given: 1,597
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
অনেক দিন পরে
অসাধারণ হচ্ছে দাদা
Posts: 291
Threads: 10
Likes Received: 370 in 185 posts
Likes Given: 198
Joined: Oct 2021
Reputation:
41
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(02-09-2024, 12:43 AM)Fardin ahamed Wrote:
Wake up bro...!!
(02-09-2024, 12:39 AM)Ari rox Wrote: অনেক দিন পরে
অসাধারণ হচ্ছে দাদা
ব্রো বন্ধুরা এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে শুধু মশার কামড় খেয়েছি। ওখানে লেখালেখির পরিবেশ ছিল না। যাহোক ধন্যবাদ❤️
•
Posts: 12
Threads: 0
Likes Received: 17 in 11 posts
Likes Given: 35
Joined: Aug 2024
Reputation:
0
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(02-09-2024, 03:15 PM)shazana Wrote: পরের আপডেট কবে আসবে!?
লেখা শেষ হলেই দিয়ে দেব,সময় বলতে পারবো না।ধন্যবাদ❤️
•
Posts: 52
Threads: 0
Likes Received: 52 in 31 posts
Likes Given: 106
Joined: Aug 2022
Reputation:
6
(02-09-2024, 12:20 AM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ২১
কয়েকদিন পরের কথা। রাতে রান্নাঘরে নয়নতারা রান্না করতে করতে, দোরের মুখে বসা তার দেবরটির সাথে আলোচনা করছিল।
– তোমার পাপ কেন হবে বৌদিমণি? আমার কপাল!তবে এ তোমার ভারি অন্যায় তা জান? তুমি সুন্দর বলেই তো আমার ধাঁধা লাগে! তোমাকে ভালবাসি, না তোমার চেহারাকে ভালবাসি বুঝতে পারি না।
– তা এতোদিন এই ভালোবাসা ছিল কোথায়! এই মুখখানি তো আজ প্রথম দেখছো না।
– জানি না কি হয়েছে আমার! সত্যি বলছি বৌদিমণি.... সঞ্জয় তো ভালবাসার কথা একটু বাচালের মত বলে ফেলল। এত সহজে ও অবলীলায় ভালবাসার কথা?
Posts: 10
Threads: 0
Likes Received: 15 in 8 posts
Likes Given: 54
Joined: Jul 2022
Reputation:
1
(03-09-2024, 11:49 AM)zahira Wrote: সঞ্জয় তো ভালবাসার কথা একটু বাচালের মত বলে ফেলল। এত সহজে ও অবলীলায় ভালবাসার কথা?
অশিক্ষিত ও অমার্জিত ছোকরাদের এমন অবহেলায় ভালবাসার কথা বলতে প্রায়শঃই দেখা যায়। এদের কাছে এক নারীকে জয় করা ও পর মুহূর্তে অবহেলা করার লাম্পট্যই বড় পুরুষকার।
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
03-09-2024, 03:39 PM
(This post was last modified: 03-09-2024, 03:40 PM by বহুরূপী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(03-09-2024, 02:11 PM)Laila Wrote: অশিক্ষিত ও অমার্জিত ছোকরাদের এমন অবহেলায় ভালবাসার কথা বলতে প্রায়শঃই দেখা যায়। এদের কাছে এক নারীকে জয় করা ও পর মুহূর্তে অবহেলা করার লাম্পট্যই বড় পুরুষকার।
একদম একমত,কোন কথা হবে না
(03-09-2024, 11:49 AM)zahira Wrote: সঞ্জয় তো ভালবাসার কথা একটু বাচালের মত বলে ফেলল। এত সহজে ও অবলীলায় ভালবাসার কথা?
বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের ভালোবাসার দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজছেন নাকি? অবশ্য এখানকার পিনুরাম থাকলেও ভালোবাসায় মাতিয়ে তুলতো আমাদের।
ওমন ভালোবাসা তুলে ধরতে ইচ্ছে হয় না।বলা তো যায় না, এখানে চোখের বালি বা শেষের কবিতার মতো মহৎ ভালোবাসা তুলে ধরলে, আমার পাঠক-পাঠিকাদের চোখের পানি নাকের পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় কিনা। এমনিতেই গল্পে ইরোটিকতা কম তার ওপড়ে আবার মরাকান্না,কেমন কেমন হয়ে যাবে না।
Posts: 36
Threads: 0
Likes Received: 40 in 32 posts
Likes Given: 120
Joined: Feb 2024
Reputation:
0
03-09-2024, 08:02 PM
(This post was last modified: 03-09-2024, 08:07 PM by ৴৻সীমাহীন৴. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(03-09-2024, 03:39 PM)বহুরূপী Wrote: বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের ভালোবাসার দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজছেন নাকি? অবশ্য এখানকার পিনুরাম থাকলেও ভালোবাসায় মাতিয়ে তুলতো আমাদের।
ওমন ভালোবাসা তুলে ধরতে ইচ্ছে হয় না।বলা তো যায় না, এখানে চোখের বালি বা শেষের কবিতার মতো মহৎ ভালোবাসা তুলে ধরলে, আমার পাঠক-পাঠিকাদের চোখের পানি নাকের পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় কিনা। এমনিতেই গল্পে ইরোটিকতা কম তার ওপড়ে আবার মরাকান্না,কেমন কেমন হয়ে যাবে না।
আপনি কি ফেসবুকে এখনো লেখেন?
এখানের বাহিরে আপনার গল্পের লিংক গুলো যদি দেওয়া সম্ভব হয়, তবে ভালো হতো।
Posts: 704
Threads: 4
Likes Received: 1,675 in 437 posts
Likes Given: 907
Joined: Apr 2024
Reputation:
536
(03-09-2024, 08:02 PM)৴৻সীমাহীন৴ Wrote: আপনি কি ফেসবুকে এখনো লেখেন?
এখানের বাহিরে আপনার গল্পের লিংক গুলো যদি দেওয়া সম্ভব হয়, তবে ভালো হতো।
Sorry
•
|