Thread Rating:
  • 124 Vote(s) - 2.97 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica ❣️বৌদিমণি❣️ ﴾ সমাপ্ত ﴿
(17-06-2024, 02:00 PM)fatima Wrote: নায়ক নায়িকার পতন হইল। সঞ্জয়ের চিবুক নয়নতারার বক্ষপিঞ্জর ভেদ করিয়া আঘাত প্রদান করে নাই আশা করি। ইহাতে আহত নয়নতারা ঠাকুরানীর শ্বাস রুদ্ধ হইবার আশংকা ছিল।
সঞ্জয়ের মেরুদন্ড ভূপতিত হইবার কারণে আহত হওয়া বোধ করি আপ্রাসঙ্গিক। কারণ তাহার জননাঙ্গটির উত্থানে কোনও বাধা দেখা যায় নাই। সেইজন্যেই কবি বলিয়া থাকেন উত্থান ও পতন - এই লইয়াই সংসার। Smile

সত‍্য বলতে এই সাইটের কিছু পাঠকের কমেন্ট পড়ে মনে হয়, তাদের জ্ঞান ও কল্পনা শক্তি এখানকার অনেক লেখদের থেকেও ভালো।তার মধ্যে আপনিও একজন।ধন্যবাদ❤️❤️
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(15-06-2024, 07:21 PM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ১৫

দু'তিন দিনের চিন্তিত ও ব‍্যথিত হৃদয় লইয়া হেমলতার সময় ভালো কাটিলো না।
এই তো, নয়নতারা ও সঞ্জয় এখন কাছাকাছি এসে গেছে
[+] 1 user Likes uttoron's post
Like Reply
(17-06-2024, 07:13 PM)বহুরূপী Wrote: সত‍্য বলতে এই সাইটের কিছু পাঠকের কমেন্ট পড়ে মনে হয়, তাদের জ্ঞান ও কল্পনা শক্তি এখানকার অনেক লেখদের থেকেও ভালো।তার মধ্যে আপনিও একজন।ধন্যবাদ❤️❤️

মহাশয়, আপনার উত্তরে যারপরনাই বিস্মিত হইলাম। কি হেতু লিখিতে শ্রম ব্যয় করিতেছেন মূল রচনায় সাধু বঙ্গভাষার অর্চনা করিয়া, অথচ উত্তর দিবার সময় ইতর চলিত ভাষার শরণাপন্ন হইতেছেন, বোধগম্য হইল না।
[+] 3 users Like fatima's post
Like Reply
(19-06-2024, 12:11 PM)fatima Wrote: মহাশয়, আপনার উত্তরে যারপরনাই বিস্মিত হইলাম। কি হেতু লিখিতে শ্রম ব্যয় করিতেছেন মূল রচনায় সাধু বঙ্গভাষার অর্চনা করিয়া, অথচ উত্তর দিবার সময় ইতর চলিত ভাষার শরণাপন্ন হইতেছেন, বোধগম্য হইল না।

ঐ ভাষা গল্পেই ঠিক আছে,গল্পের বাইরে আনার কোন দরকার দেখি না।
তাছাড়া সাধু ভাষাটা আমাকে আগে ভালো ভাবে শিখতে হবে।
সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি  Shy
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(19-06-2024, 01:37 PM)বহুরূপী Wrote: ঐ ভাষা গল্পেই ঠিক আছে,গল্পের বাইরে আনার কোন দরকার দেখি না।
তাছাড়া সাধু ভাষাটা আমাকে আগে ভালো ভাবে শিখতে হবে।
সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি  Shy

আপনার "এক বার না পারিলে দেখ শত বার" অনেক বর্ধিত আকারে সফল হইবে যদিচ আপনার প্রচেষ্টার পরিসর বিস্তৃত করেন। ইহা এক সামান্যা পাঠিকার মতামত জ্ঞান করিয়া অবজ্ঞা করিতে পারেন।
[+] 1 user Likes fatima's post
Like Reply
(19-06-2024, 03:44 PM)fatima Wrote: আপনার "এক বার না পারিলে দেখ শত বার" অনেক বর্ধিত আকারে সফল হইবে যদিচ আপনার প্রচেষ্টার পরিসর বিস্তৃত করেন। ইহা এক সামান্যা পাঠিকার মতামত জ্ঞান করিয়া অবজ্ঞা করিতে পারেন।

আসলে এখন আমার হাতে সময় কম।তাই ভালো মত কিছুই হচ্ছে না। আমি নিজের সমস্যার কথা বলতে পছন্দ করি না।তাই সংক্ষেপে বলছি,আমার চলার পথের সমস্যা গুলোর আগে সমাধান করি। তারপর আমার শখের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেব। ধন্যবাদ আপনাকে,❤️
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(19-06-2024, 05:56 PM)বহুরূপী Wrote: আসলে এখন আমার হাতে সময় কম।তাই ভালো মত কিছুই হচ্ছে না। আমি নিজের সমস্যার কথা বলতে পছন্দ করি না।তাই সংক্ষেপে বলছি,আমার চলার পথের সমস্যা গুলোর আগে সমাধান করি। তারপর আমার শখের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেব। ধন্যবাদ আপনাকে,❤️

কিয়ৎক্ষণ পূর্বেই মহাশয় আপনি বলিয়াছিলেন যে সাধুভাষার শিক্ষার চেষ্টা চালাইয়া যাইতেছেন। সেইটি এবং উপর্যুক্ত কথাটি তো তাহলে পরস্পর বিরোধী হইল, নয় কি?
[+] 1 user Likes fatima's post
Like Reply
(19-06-2024, 08:52 PM)fatima Wrote: কিয়ৎক্ষণ পূর্বেই মহাশয় আপনি বলিয়াছিলেন যে সাধুভাষার শিক্ষার চেষ্টা চালাইয়া যাইতেছেন। সেইটি এবং উপর্যুক্ত কথাটি তো তাহলে পরস্পর বিরোধী হইল, নয় কি?

আমি বোঝাতে চেয়েছি আপাতত প্রচেষ্টার পরিসর বিস্তৃত করা সম্ভব নয়।

সুতরাং এই গল্পটি হয়তো খুব একটা ভালো হবে না।
এটা আমি অনেক আগের থেকেই বলছি,প্রথম দিকের কমেন্টগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন।
[+] 2 users Like বহুরূপী's post
Like Reply
(19-06-2024, 09:00 PM)বহুরূপী Wrote:
আমি বোঝাতে চেয়েছি আপাতত প্রচেষ্টার পরিসর বিস্তৃত করা সম্ভব নয়।

সুতরাং এই গল্পটি হয়তো খুব একটা ভালো হবে না।
এটা আমি অনেক আগের থেকেই বলছি,প্রথম দিকের কমেন্টগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন।

গল্পের কথা কেমন করিয়া প্রাসঙ্গিক হইল তা অনুধাবন করিতে অক্ষম আমি হে প্রাজ্ঞ পুরুষ। আপনার সাধুভাষা অভ্যাসের কথা যাহা আপনি "একবার না পারিলে" বলিয়াছিলেন, তাহার প্রতিই ইঙ্গিত করিতেছি মাত্র।
[+] 1 user Likes fatima's post
Like Reply
(19-06-2024, 10:31 PM)fatima Wrote: গল্পের কথা কেমন করিয়া প্রাসঙ্গিক হইল তা অনুধাবন করিতে অক্ষম আমি হে প্রাজ্ঞ পুরুষ। আপনার সাধুভাষা অভ্যাসের কথা যাহা আপনি "একবার না পারিলে" বলিয়াছিলেন, তাহার প্রতিই ইঙ্গিত করিতেছি মাত্র।

আপনাকে সরল ভাবে বলি,প্রথম থেকে- এই মূহুর্তে আসলে লেখালেখির বিশেষ ইচ্ছে ছিল না।কিন্তু অনেকদিন পরে এখানে ফিরে এসে দেখলাম আমার অনেক পছন্দের লেখকেরা লেখা ছেড়ে দিয়েছে। তাই ইচ্ছে হল এক দুই টা লিখি। আমি চলিত ভাষা মোটামুটি ভালো লিখি,এই গল্পের প্রথম দিকটা পড়ে থাকলে বুঝবেন। সাধু ভাষা আমার পছন্দের ভাষা হলেও আমি ঠিক মত পারিনা।,তাই কখনোই চেষ্টা করিনি লেখার।
তবে এই গল্পের কয়েকটি কমেন্ট দেখে শেখার ইচ্ছে টা বেড়ে গেছে। ঐ কথাটা বলেছি কারণ আমি যখন কিছু একটা ধরি তখন তার শেষ না দেখে ছাড়ি না,তা যাই হোক না কেন,যে যাই বলুক না কেন। আমি ওসব গায়ে মাখি না। তাই সাধু যেহেতু শিখতে চেয়েছি সেহেতু এখন ঠিক মত সময় না দিতে পারলেও পরবর্তীতে ঠিক মত সময় দিতে পারবো।
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(19-06-2024, 11:53 PM)বহুরূপী Wrote: আপনাকে সরল ভাবে বলি,প্রথম থেকে- এই মূহুর্তে আসলে লেখালেখির বিশেষ ইচ্ছে ছিল না।কিন্তু অনেকদিন পরে এখানে ফিরে এসে দেখলাম আমার অনেক পছন্দের লেখকেরা লেখা ছেড়ে দিয়েছে। তাই ইচ্ছে হল এক দুই টা লিখি। আমি চলিত ভাষা মোটামুটি ভালো লিখি,এই গল্পের প্রথম দিকটা পড়ে থাকলে বুঝবেন। সাধু ভাষা আমার পছন্দের ভাষা হলেও আমি ঠিক মত পারিনা।,তাই কখনোই চেষ্টা করিনি লেখার।
তবে এই গল্পের কয়েকটি কমেন্ট দেখে শেখার ইচ্ছে টা বেড়ে গেছে। ঐ কথাটা বলেছি কারণ আমি যখন কিছু একটা ধরি তখন তার শেষ না দেখে ছাড়ি না,তা যাই হোক না কেন,যে যাই বলুক না কেন। আমি ওসব গায়ে মাখি না। তাই সাধু যেহেতু শিখতে চেয়েছি সেহেতু এখন ঠিক মত সময় না দিতে পারলেও পরবর্তীতে ঠিক মত সময় দিতে পারবো।

লিখিয়া যান। শুভেচ্ছা রহিল। দেবদিগের অকৃপণ আশীর্বাদ বর্ষিত হউক আপনার যাত্রাপথে।
[+] 1 user Likes fatima's post
Like Reply
Sad 
পর্ব ১৬

যখনকার কথা আজ বলিতে আসিয়াছি।সে কথা আজিকার কথা নয়। সঞ্জয়ের জীবনের অতিতের পাতাগুলি একটু উল্টাইয়া দেখিব আজ। তখন সঞ্জয়ের ব‍্যবসা ও ঘরখানা দার করাইতে গিয়া সঞ্জয়ের আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভালো ছিল না,বেশ কিছু ঋণও সে করিয়াছিল। এমন সময় বৈশাখ মাসের প্রথমে সঞ্জয়ের বাড়িতে একখানা নিমন্ত্রণ পত্র আসিয়াছিল। পত্র খানি পড়া শেষ হইলেই সঞ্জয় কলিকাতায় যাইবার বন্ধবস্ত সব ঠিক করিয়া ফেলিল।তবে নিমন্ত্রণ ঠিক কি কারণে আসিয়াছিল তার খবর সঞ্জয় নিজেও জানিতে পারে নাই। অবশ্য সে যে জানিবার চেষ্টা করে নাই,তাও সত‍্য।


পত্রখানি কলিকাতায় বাসরত সঞ্জয়ের বাল‍্যকালের বন্ধু মাতা বা সঞ্জয়ের সই মাতা বলিলেও চলে,সেই পাঠাইয়া ছিল।চিঠিতে তার শারীরিক অবস্থা বিশেষ ভালো নয় ইহাও বলা হইয়াছে।সুতরাং কাকিমার অসুস্থতার খবর পাইবা মাত্র সঞ্জয় সাত-পাঁচ না ভাবিয়া কলিকাতায় ছুটিল। ইহার কারণ ব‍্যখা করিতে গেলে যে অতিত বলিতে হয়! তা বিশেষ সুখকর নহে। তবে একদম চাপিয়া গেল আবার পাঠক-পাঠিকারা চটিয়া যাইতে পারে। তাই আগে অল্পে কথায় ঘটনা বর্ণনা করিয়া লই

সঞ্জয় পেটে থাকিতে তার মাতা গুরুতর অসুখে পড়েন এবং সে রোগ দীঘস্থায়ী হয়।তবে সঞ্জয়ের জন্মের পরপরই তাহার দীর্ঘদিনের বেদনার পরিসমাপ্তি ঘটিয়াছিল। সঞ্জয়ের মাতা গ্রামের মেয়ের পছন্দের পাত্রী ও স্বামীর আদরের বউ ছিলেন। এই খবরে সঞ্জয়ের মার জন্য সকলেই কান্নাকাটি জুড়িয়া দেন।

এদিকে দাই সঞ্জয়কে প্রসব করাইয়া ঘোষণা করে যে মৃত সন্তান হইয়াছে। সাধারণ অবস্থায় দাইদের অমন কথায় কেউ বিশ্বাস করিতেন না। নিজ চক্ষে সন্তান দেখিবার জন্য সবাই উদ্বিগ্ন হইতেন। কিন্তু আদরের বউয়ের মরা-বাঁচা লইয়া সবাই এত ব্যস্ত হইয়াছিলেন যে মরা সন্তান দেখিবার জন্য কেউ বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন নাই। কাজেই মরা সন্তানটির যথাসময়ে একটা গতি করিবার সাপেক্ষে একটি সুপারির খোলে ঢাকা দিয়া এবং বাইরে ফেলিয়া রাখিলে কাক-কুকুরে লইয়া যাইতে পারে বলিয়া ঘরের এক অন্ধকার কোণে রাখা হয়।

সখির অন্তিম অবস্থায় খবর পাইয়া, তার দের মাসের শিশু সন্তান কোলে করিয়া সঞ্জয়ের এই কাকিমাই ছুটিয়া আসিয়া ছিলেন।তিনি যখন সখীর মৃত্যুতে চোখের জলে বুক ভাসাইয়া এক সময় সখীর মৃত সন্তান টি দেখিবার ইচ্ছা জানাইলেন।তখন তাঁকে ঘরের কোণে রাখা সুপারির খোলটি দেখাইয়া দেওয়া হইল। তিনি সুপারির খোলটি খুলিয়া সঞ্জয়কে দেখিলেন। তিনি পাড়া গাঁয়ের মেয়ে ছিলেন না,কলিকাতায় এক ডাক্তার পিতার একমাত্র কন্যা সন্তান তিনি। সঞ্জয়কে দেখিয়া নাড়ি ও বুক পরীক্ষা করিয়া ঘোষণা করিলেন, সন্তানের জান এখনও যমদেব কারিয়া লয় নাই।ঠিকমতো যত্ন-আত্তি করিলে এখনও বাঁচিবার আশা আছে। তবে অন‍্য কাহারও উপড়ে তিনি ভরসা করিলেন না। সব দায়িত্ব নিজে হাতেই পালন করিলেন।তার যত্নে কিছুক্ষণ পরই সঞ্জয় কাঁদিয়া উঠিল। ইহাতে উপস্থিত যাহারা ছিল সবাই অবাক হইয়া গেল;ইহার কারণে বাড়িময় এবং শেষে পাড়াময় চাঞ্চল্য পড়িয়া যায়। তবে সে কথা থাক।

এই ঘটনার পরে দুই বন্ধু এক মায়ের কোলে বড় হইতে লাগিলো।কিন্তু ভগবানের বুঝি অন‍্য মতলব ছিল। সঞ্জয়ের বাবার বন্ধুর আর্থিক টানাপোড়েন কারণে এককালে তাহারা গ্রামের বাসস্থান উঠাইয়া কলকাতায় শশুর বাড়িতে গিয়া উঠিলেন। সঞ্জয় আবার মায়ের কোল হইতে যেন মাটিতে পড়িলো।

কাকিমার কলিকাতার ঠিকানা সঞ্জয়ের জানা ছিল না।কয়েকমাস আগে তালদিঘি হইতে দুই গ্রাম দূরে এক আত্মীয়ের বিবাহে আসিয়া দুই বন্ধুর আবার মিল হইয়াছিল। অবশ্য বিবাহে একটা গন্ডগোলও হইয়াছিল,তা আমরা পরে জানিবো।


কলকাতার স্টেশনে নামিয়া সঞ্জয় আগে কিছু মিষ্টান্ন কিনিয়া লইলো।তারপর গাড়ি ভাড়া করিয়া ঠিকানায় আসিল। তবে সঞ্জয় যেমনটি ভাবিয়া ছিল তার শুভাগমনের প্রথম ধাপটা ঠিক তেমনটি হইলেও,দ্বিতীয় ধাপে ধাক্কা লাগিলো। দোর খুলিতেই কাকিমা তাকে দেখিয়া প্রথমে খুশিতে তাকে বুকে টানিয়া লইলো।তারপর চিঠির খবর শুনিয়া অবাক হইয়া বলিল,

– ওমা, এইসব কি বলিস তুই? আমি তোকে নিমন্ত্রণ পত্র দিয়েছি! ঘরের ছেলেকে কেউ নিমন্ত্রণ করে খাওয়া? দেখ তো দামিনী পাগল ছেলে কি বলে

– তাই তো দেখছি মাসি,কেন! নিমন্ত্রণ না পেলে বুঝি আসতে নেই?

সঞ্জয় খানিক অবাক হইয়া বসিয়া রহিল।তার কাকিমার অসুস্থতার কোন লক্ষণ দেখা গেল না।ইহা দেখিয়া সঞ্জয় চিঠির রহস্য সমাধান মনে মনে করিতেছিল। কিন্তু সঞ্জয় কিছুতেই ভাবিয়া পায় না এ বাড়ির কেউ চিঠি না দিলে তবে চিঠি দিল কে! তার চিন্তিত মুখ দেখিয়া কাকিমা ব‍্যস্ত হইয়া কহিলেন,

– হয়েছে অত ভেবে কাজ নেই যা হয়েছে ভালো হয়েছে,এখন যাতো আগে স্নান করে আয়,আরাম হবে।

সঞ্চয় তাই করিল,স্নান সারিয়া খানিক বিশ্রাম করিয়া অপরাহ্ণবেলায় সঞ্জয় খাবার খাইতে কাকিমার ঘরে ঢুকিয়াই স্তব্ধ হইয়া দাঁড়াইল। তাহার খাবারের জায়গার ঠিক সুমুখে আসন পাতিয়া বৈকুণ্ঠের লক্ষ্মীঠাকরুনটিকে হীরা-মুক্তায় সাজাইয়া বসাইয়া রাখিয়াছে।

কাকিমা ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন, খেতে বস্।

যদিওবা বিয়ে বাড়িতে ইহার সহিত অনেক কথা হইয়াছিল,তবে দামিনীকে সঞ্জয় ঘোমটা বিহীন এই প্রথম দেখিল।তবে সঞ্জয় এখনও বুঝিয়া পায় নাই দামিনী এই বাড়িতে কি করিতেছে। প্রথমে ভাবিয়াছিল দামিনী বোধহয় তার মতোই নিমন্ত্রণ পাইয়া আসিয়াছে।কিন্তু বাড়িতে বিশেষ কোন আয়োজন তো নাই। তাকে যে চিঠি দেওয়া হইয়াছে,তাও মিথ্যা। তবে!

সঞ্জয়ের অবস্থা দেখিয়া দামিনী ডান হাত দিয়া মুখ চাপিয়া ধরিল।তবে দামিনী হাসি সঞ্জয়ের চোখ লাগিতেই তার চমক ভাঙিল। সে থতমত খাইয়া বলিল,

– এখানে কেন, আর কোথাও আমার খাবার দাও।

এই কথা শুনিয়া দামিনী আবারও মৃদু হাসিয়া বলিল

– মাসিমা তোমার এই ছেলে যে এত লাজুক তা আগে বললে আমি কি আর এখানে বসি!

বলিয়া সে উঠিয়া যায় আর কি। দামিনী কে উঠিতে দেখিয়া কাকিমা বলিলেন,

– আহা! উঠিস নে মা... হা'রে সঞ্জয় ঘরের মেয়ের সামনে তোর লজ্জা কি!

লজ্জা পাইয়াছে এ কথা সঞ্জয়ের হজম হইলো না,

- আমি কারুকে লজ্জা করিনে,

বলিয়া সঞ্জয় প্যাঁচার মত মুখ করিয়া সমুখের আসনে বসিয়া পড়িল। তার কাকিমা চলিয়া গেলে দামিনী খাবার পরিবেশন করিতে লাগিল। মিনিট-দুয়ের মধ্যে সে খাবারগুলো কোনমতে নাকে-মুখে গুঁজিয়া সঞ্জয় উঠিয়া গেল।


বাহিরের ঘরে আসিয়া দেখিল, ইতিমধ্যে তার বন্ধু লোক জুটাইয়া পাশার ছক পাতিয়া তার জন্যই অপেক্ষা করিতেছিল। সে প্রথমেই দৃঢ় আপত্তি প্রকাশ করিয়া কহিল,

- আমি কিছুতেই বসতে পারব না আমার ভারি মাথা ধরেচে।

বলিয়া ঘরের এক কোণে সরিয়া গিয়া তাকিয়া মাথায় দিয়া চোখ বুজিয়া শুইয়া পড়িল। তার বন্ধু মনে মনে কিছু আশ্চর্য হইল এবং লোকাভাবে পাশা তুলিয়া দাবা পাতিয়া বসিল।

////

সৌদামিনী বড়মানুষের মেয়ে। কিন্তু তাহার মাতা নাই; তাহার পিতা স্ত্রী-কন‍্যাকে বড় ভালোবাসিতেন বলিয়া স্ত্রী বিয়োগের পর আর দ্বিতীয় বিবাহ করেন নাই। তার অঢেল সম্পদ থাকিলেও পুত্র ছিল না। তাই পুত্রের অভাব পূরণ করিতে সৌদামিনীকে তার পিতা উচ্চতরে পাড়ালেখা করাইয়া বিদেশি মেম দের মত করিয়া তৈরি করিবেন বলিয়া সিদ্ধান্ত নিলেন।বেশী পড়িবার ফলে দামিনীর বয়স ও বুদ্ধি দুই অধিক বারিয়া গেলেও,সৌদামিনী মেম না হইয়া দিনে দিনে তার মায়ের মত এক বাঙ্গালী রমণীর রুপ ধারণ করিল। অবশেষে দামিনীর পিতা কন‍্যাকে মেম বানাইবার আশা ত‍্যাগ করিয়াছিলেন এবং ভালো পাত্রের সন্ধান করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন।তবে দামিনীর পাত্র পাইবার আগেই তিনি ভগ'বানের ডাকে ইহলোক ত‍্যাগ করিলেন। পিতার মৃত্যুর পর ধিরে ধিরে বাড়িতে অনেক আত্মীয়স্বজন আসিয়া ভিড় করিল। উহাদিগের অনেকেই সৌদামিনী চিনিতে পারিল না,এদের কাহাকেও সে কখনোই দেখে নাই।সঞ্জয়ের পিতার বন্ধুটি দামিনীর বাবার উকিল ছিলেন। এবং তাহাদিগের সকল বিষয়-আশয়ের দেখভাল করিতেন। তিনি দামিনীকে নিজের মেয়ের দেখিতেন বলিয়া বেশ অনেকবার পাত্রের ফটোগ্রাফ লইয়া দোতলায় দামিনী কক্ষে আসিয়া অত্যন্ত গম্ভীর মুখভঙ্গি করিয়া বলিতেন,

– মা দামিনী! এই ফটোগ্রাফটি রাখো ত মা,ছেলে ভালো, বিদেশে আইন পড়ছে,এইবার দেশে এলেই ....

ইত‍্যাদি ছেলে অনেক গুন বলিলেও তার বাছাইকৃত প্রতিটি পাত্রই আইনের ছাত্র। দামিনী নতমস্তিষ্কে ফটোগ্রাফ হাতে লইয়া বসিয়া,মনোযোগের সহিত সব কথা শুনিত। তারপর তিনি কক্ষের বাহির হইলে, না দেখিয়া ফটোগ্রাফটি দেরাজে বাক্স বন্দী করি তো। ধিরে ধিরে সবাই বুঝিলো সৌদামিনীর বিবাহে কোন উৎসাহ নাই। একথা সকলে ধিরে ধিরে জানিলেও দামিনী অনেক আগেই জানিয়াছিল।সে মনে মনে ভাবিয়া রাখিয়াছিল তাহার পক্ষে কেউকে ভালোবাসিয়া সংসার পাতা সম্ভব হইবে না।সে সারাটা জীবন বই পড়িয়া কাটাইবে বলিয়া ভাবিয়া রাখিয়াছে।

তবে দামিনী ভাবিলে কি আর ভালোবাসা দমিয়া থাকিবে! সুতরাং যাহা হইবার তাই হইল;জ্ঞানের চর্চায় তার মনটা ঠাস-বোঝাই থাকিলেও মনসিজ তার মধ্যেই কোথা হইতে বাধা ঠেলিয়া উঠিল,যার একটুও স্থানাভাব হয় নাই। অবশ্য ইহার প্রমাণ পাইতে দামিনীকে গ্রামে যাইতে হইয়াছিল।

গ্রামে এক বিবাহের অনুষ্ঠানে গিয়ে সঞ্জয় কে সে লাঠি হাতে প্রথম দেখিয়াছিল। ঘটনাটি অল্প কথায় বলিলে এমন দাড়ায়; বরকর্ত্তা পণের টাকা সম্পূর্ণ হাতে না পাওয়ার কারেণ বর উঠাইয়া চলিয়া যাইবার সিদ্ধান্তে মনস্থির করিয়াছেন। ইহাতে কন্যার পিতা প্রমাদ গুণিয়া বলিলেন

- আপনারা যদি এখন বিবাহ স্থগিত করেন, তাহা হইলে আমার জাতি থাকে কেমন করিয়া ?

তবে মিষ্টি কথায় তাহাদের মন গলিবে না দেখিয়া সঞ্জয় নিজেই বলিয়াছিল,

– আগে বিবাহ সম্পূর্ণ হোক,তাহার পর টাকা আমি নিজে আনিয়া দিব।

তবে এই প্রস্তাবে বরকর্ত্তা কর্ণপাত না করিয়া বলিয়া বসিলেন,

– আমার সাথে ফাঁকিবাজি চলিবে না,এমন জোচ্চোরের মেয়ের সাথে আমি ছেলে বিবাহ দিব না।

এই কথায় পাড়ার যাহারা উপস্থিত ছিল, তাহারা এমন আচরণ দেখিয়া বলিয়া উঠিল,

– কি ! বিবাহ দিবে না? লাঠির চোটে মাথার খুলি ভাঙ্গিয়া দিব না !

সংক্ষেপে ইহাই হইলো লাঠির ঘটনা।যদি লাটির কোন বিশেষ ব‍্যবহার সেদিন হয় নাই। টাকাটা সৌদামিনী নিজে দিয়াছিল। তবে লোকমুখে এই ছোট্ট ঘটনা অনেক বড় আকারেই প্রচারণা করা হইয়াছিল। যেই ঘটনায় লাঠির কথা থাকিলেও টাকার কোন কথা ছিল না। তা যা হোক, গ্রাম তিনদিন তিনরাত্র থাকিয়া দামিনী সঞ্জয় সম্পর্কে জানিয়া ও তার গান শুনিয়া তাহার প্রতি এক অদ্ভুত টান অনুভব করিয়াছিল। তবে সেই টানে যে তার হৃদয় খানি কেহ কারিয়া লইয়াছে ইহা সে কলিকাতায় আসিয়া পরে বুঝিল।এবং এও বুঝিল ভালোবাসা কতটা সত‍্য ও বেদনাদায়ক হইতে পারে।

সঞ্জয়ের সাথে সৌদামিনীর মিলনের সবচেয়ে বড় যে বাধা ছিল, তা সৌদামিনীর বয়স। যাহা লইয়া দামিনীকে কখনোই ভাবিতে হয় নাই, আজিকার দিনে আসিয়া দিবারাত্রি ইহায় তাহার অনিদ্রার কারণ হইয়া দাঁড়াইল। ভাবিয়া ভাবিয়া যে মুহুর্তে আর সহিতে পারিলো না,তখন সে সব ভুলিয়া কাগজ কলম লইয়া প্রেম পত্র লিখিতে বসিয়াছিল।

কিন্তু পত্রখানা ডাকঘরে পৌঁছিল না। প্রথমে পত্রখানা দামিনীর বুকে স্থান পাইলো। তারপর কি ভাবিয়া কাগজখানি মুষ্টির মধ্যে দুমড়াইয়া সুসজ্জিত কক্ষের মেঝেতে ছুড়িয়া দিল। একরাতে এইরুপ অনেক বার হইল। তাহার পর সকালে সেই পত্র গুলা ঝি একসঙ্গে ঝাঁটাইয়া বাহিরে ফেলিয়া দিল।শেষকালে সৌদামিনীর প্রাণের আকাঙ্ক্ষা গুলি ধুলা মাখিয়া সুসজ্জিত কক্ষের পরিপাটি মেঝে হইতে কলিকাতার পাথরের রাস্তায় রোদ খাইয়া পড়িয়া রহিল।

অবশেষে দামিনী আবারও পত্র লিখিতে বসিয়া না জানিয়া এক ভুল করিয়া বসিল। সেই পত্র পাইবা মাত্র সঞ্জয় কলিকাতায় আসিল বটে। তবে এই মিথ্যা পত্রের কথা শুনিলে সঞ্জয় কি রুপ আচরণ করিতে পারে ইহার আভাস পাইয়া দামিনী ঘটনা সম্পূর্ণ চাপিয়া গেল।

/////

কলিকাতায় সঞ্জয়ের মন টিকিতেছে না দেখিয়া তার কাকিমা অনেকবার ইহার কারণ জানিতে চাইলেও, সঞ্জয় কিছুই বলিল না। সঞ্জয় বাড়ি ফিরিয়া যাইতে যত তারা দিতে লাগিল। দামিনীর মন ততোধিক ব‍্যাকুল হইতে লাগিল। সঞ্জয়ের কলিকাতায় আগমনের পর সৌদামিনীর এই বাড়িতে ঘনঘন আসা যাওয়া কাকিমার চোখ স্পষ্ট ভাবেই পড়িয়াছিল। তবে আগেই বলিয়াছি তিনি পাড়াগাঁয়ের মেয়ে নন। সুতরাং বয়সের তফাৎ থাকিবার কারণে মনের মাঝে খচখচ করিলেও,সঞ্জয়-দামিনীর জোড় তার মন্দ লাগিলো না। তিনি দামিনীর কার্য সম্পূর্ণ করিবার সুবিধার্থে সঞ্জয়কে নানান উপায়ে কলকাতায় বাঁধিয়া রাখিলেন।

ইহার মধ্যেই একদিন দামিনী এ বাটীতে আসিয়া ফিরিবার সময় অনেক রাত্রি করিয়া ফেলিল। দামিনীর মোটরের কি একটা সমস্যা হইয়াছিল।কথাছিল গাড়ি ঠিক করিয়া সন্ধ্যায় আসিয়া দামিনীকে লইয়া যাইবে।কিন্ত রাত আটটা পার হইয়া গেলেও গাড়ি আসিলো, তার উপড়ে আবহাওয়া খারাপ।তাই বাড়ির কেউই দামিনী কে ছাড়িতে রাজি ছিল না।কিন্তু দামিনী যখন থাকিতে চাহিল না, তখন গাড়ি ভাড়া করিয়া একটু ভাবিয়া লইয়া কাকিমা সঞ্জয়কে সৌদামিনীর সাথে পাঠালেন।

গাড়ি গন্তব্যে পৌছাইবার আগের ঝিরিঝিরি করিয়া বৃষ্টি পড়িতে লাগিল।গাড়ির ভেতর তারা পাশাপাশি বসিলেও সম্পূর্ণ পথ তাহারা নীড়ব রহিল, কোনও কথা হইল না। এই কয়েক দিনে দুজনার ঘনিষ্ঠতা বন্ধুতের সীমানা পার করিয়া এক অনিশ্চয়তার কাছাকাছি আসিয়া থামিয়া গিয়াছিল।সৌদামিনীর সম্পদের পরিমাণ এতোটা বেশি ছিল যে সঞ্জয় আগবারাইয়া প্রেম নিবেদন করিতে গিয়া আত্মসম্মানে ঠোকর খাইয়া বারবার ফিরিয়া আসিত।অপরদিকে দামিনীর অবলা নারী হৃদয় সঞ্জয়ের প্রতিক্ষায় থাকিয়া থাকিয়া এত ব‍্যাকুল হইয়া উঠিয়াছে,যে মাঝে মাঝে সেই ব‍্যাকুলতা সামলাইয়া লইতে তার বুক ফাটয়া যায়।কিন্তু হায়! এতদিন অপেক্ষা করিবার পর,এত বেদনা সহিবার পরে,আজ এত কাছে থাকিয়াও সে একটা কথায় বলিতে পারিতেছে না।

গাড়ি বাড়ির সমুখে যে মুহূর্তে আসিয়া থামিল,তখন দামিনী গাড়ি হইতে নামিবার সময় সশব্দে কাছাকাছি কোথায় বজ্রাঘাত হইল। হটাৎ এমন প্রচন্ড শব্দে দামিনী সহসা চমকাইয়া উঠিল,সেই সাথে বেকাইদায় পা ফেলিয়া আর সামলাইয়া লইতে পাড়িলো না।এই ঘটনায় সঞ্জয় না জানি কেন বিরক্ত হইয়া সৌদামিনীকে বকাঝকা করিতে লাগিলো,

– একটু দেখেশুনে পা ফেললেই তো হয়,এমন...

তার কথা শেষ হইল না,গাড়ির গারোয়ান পাশ হইতে বলিল,

- পা মচকে গেছে,দাঁড়াবার শক্তি নেই। আরে আপনি মশাই.....

সঞ্জয় গারোয়ানের দিকে ফিরিতেই সে নিজের ভুল বুঝিতে পারিয়া চুপ মারিয়া গেল। সঞ্জয় ভাড়া মিটাইয়া সৌদামিনীকে পাঁজাকোলা করিয়া বাড়িতে ঢুকিল।সিড়ির কাছাকাছি আসিতেই এতখন লজ্জায় যাহা করিতে পারে নাই,এখন খানিক ভয় পাইয়া তাই করিল। তার দুটি কোমল হাতে সঞ্জয়ের গলা জড়াইয়া নিজেকে সঞ্জয়ের বুকের আরও চাপিয়া ধরিল।

এ বাড়িতে আত্মীয়ের যেমন অভাব ছিল না,তেমনি চাকর-ঝিও কমছিল না। তার মধ্যেই দুই জন দেখিতে পাইয়া তাড়াতাড়ি চুন-হলুদ গরম করিয়া আনিয়া প্রলেপ দিতে দিতে সৌদামিনীর রাঙা মুখ দেখিয়া মুখ টিপিয়া হাসিতেছিল। ইহা দেখিবা মাত্র দামিনী রুষ্ট হইয়া বলিল,

– রেখে দে! কিছুই লাগেনি আমার, এ কাল সকালেই সেরে যাবে, তোরা যা এখান থেকে।

দামিনী সাথে মন খুলিয়া কথা বলিতে এই বাড়ির কেহই ভয় করিতো না। সংসারের বিষয়ে নারীর সাধারণ জ্ঞান অধিক বলিয়াই আজিকার পরিস্থিতি বুঝিয়া তাহারা আর কিছু না বলিয়া চলিয়া গেল।

সঞ্জয় জানালার পাশে দাঁড়াইয়া বৃষ্টির গতির পর্যবেক্ষণ করিতেছিল,সেবিকাদের যাইবার কথা শুনিয়া, সে মুখ ঘুরাইয়া দেখিল সৌদামিনী নিজেই বাটিখানা টানিয়া লইলো। ইহা দেখিয়া সঞ্জয় আগাইয়া আসিয়া দামিনীর হাত হইতে বাটিখানা তার হাতে লইয়া মেঝেতে বসিতে বসিতে বলিল,

– ওদের পাঠিয়ে দিলে কেন?

দামিনী সঞ্জয়ের প্রশ্নের উত্তর না করিয়া,তার পা টানিয়া লইয়া বলিল,

– ও'কি করছেন! রেখেদিন আপনাকে কিছু করতে হবে না..

সঞ্জয় তার কথা কানে না তুলিয়া দামিনীর পা টানিয়া লইয়া প্রলেপ দিতে লাগিল। পায়ে প্রলেপ দেওয়া শেষ হইলে সঞ্জয় উঠিয়া দেখিল দামিনী চোখ বুঝিয়া দুই হাতে তার দুই পার্শ্বের বিছানার চাদর আঁকড়াইয়া কাপিতেছে। বাহিরে উতাল প্রকৃতি আর ভেতরে সুসজ্জিত কক্ষে কম্পায়মান রমনীকে উপেক্ষা করিয়া আপনার ইচ্ছা সংবরণ করিতে হয়তো অনেক পুরুষই পারিত। তবে আগেই বলিয়াছি সঞ্জয় মাটি ছেলে,লাজলজার ধার ধারে না। তাছাড়া তার মন কি আর এই রমনীর জন্যে কম ব‍্যাকুল হইয়াছে!

এতদিন যে আত্মসম্মান তাকে বাঁধিয়া রাখিয়াছিল, আজ হঠাৎ এই কম্পান্বিতা রমনীর করুণ মুখচ্ছবি দেখিয়া সকল বাঁধন ছিন্ন হইয়া গেল। সঞ্জয় সৌদামিনীর দুই গালে হাত রাখিল সেই সাথে নিজেকে বেশখানিকটা ঝুকাইয়া দামিনীর কম্পিত ঠোঁটে চুমু খেলো, আওয়াজ করে, মার্কিন ফিল্মে যেমন চুমুর আওয়াজ শোনা যায়। ইহাতে সৌদামিনীর ঠোঁটে লজ্জা মিশ্রিত একটু হাসির রেখে ফুটিলেও দুই হাত প্রসারিত করিরা সঞ্জয়কে ঠেলিয়া সে নিজেকে মুক্ত করিয়া লইলো। সঞ্জয় আপনাকে সামলাইয়া কক্ষ হইতে প্রস্থান করিবার আগে একবার পেছন ফিরিলো। চোখে চোখ পড়িতেই সঞ্জয়ের ঠোঁটে বাকাঁ হাসি দেখিয়া দামিনী দৃষ্টি ফিরাইয়া জানালার বাইরে চাহিল।

বৃষ্টি ধরিয়া আসিলেও মাঝেমধ্যেই বজ্রপাতের আওয়াজ কানে আসিতেছে। দামিনী জানালার পার্শ্বে দাড়াইবে বলিয়া খাটের কোনে ভর দিয়া উঠিলো বটে,কিন্তু মনে ভয় জাগিলো। মচকানো পা লইয়া ঐ পর্যন্ত পৌছাইবার আগে সঞ্জয় দৃষ্টির বাহিরে না চলিয়া যায়। তবে তার এই চিন্তা অনর্থক হইলেও সঠিক সময়ে তার দুই সেবিকা আসিয়া তার সেই চিন্তা দূর করিয়া দিল। তাহার কক্ষের বাহিরেই ছিল।সঞ্জয়কে বাহির হইতে দেখিয়া ভেতরে উকি দিয়াছিল এবং দামিনীকে উঠিতে দেখিয়া ছুটিয়া আসিয়াছে।

জানালায় চোখ রাখিতেই দেখা গেল সঞ্জয় সবে মাত্র পাথর বিছানো রাস্তা ধরিয়া গেইটের দিকে অগ্রসর হইতেছে।দামিনীর পাশ হইতে এক সেবিকা কহিল,

– দামিনীদি তোমাদের দুটিকে দিব্যি মানায়,ওই দিনে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা কচ্ছিলে, যেন একটি জোড়া-গোলাপ ফুটে ছিল।

///////


সেই রাত্রি সৌদামিনীর সংকোচ না কাটিলেও সঞ্জয়ের সংকোচ বলিতে আর কিছুই বাকি রাখে নাই।সুতরাং দামিনীকে এবাড়িতে একা পাইবা মাত্র সে চাপিয়া ধরিত এবং তাহার হাত এখন আর দামিনীর গাল বা ঠোঁট স্পর্শ করিয়া তৃপ্তি পাইতো না অর্থাৎ সুযোগের সৎ ব‍্যবহার সে যথার্থ করিত।সৌদামিনীকে কাছে পাইবা মাত্র তার সর্বাঙ্গে হাত বুলাইয়া তার মুখানি রাঙা করিয়া তবে ছাড়িত। দুজনার কাছাকাছি আসাতে সঞ্জয় গ্রামের কথা প্রায় ভুলিয়া গিয়াছিল। একদিনের নিমন্ত্রণ খাইতে আসিয়া পনেরো দিন পার হইয়া গেল।ইহার মধ্যেই গ্রাম হইতে তিনি বার চিঠি আসিয়াছে।তবে চিঠিই সঞ্জয়ের হাতে পৌছায় না। পত্রখানা প্রথমে সঞ্জয়ের কাকিমার হাতে এবং পরে সৌদামিনীর হাতে পড়িত। দামিনী চিঠি পড়িয়া তার উত্তর লিখিয়া কিছু মোটা অঙ্কের টাকা খামে ভরিয়া গ্রামে পাঠাইয়া দিত। সেই টাকা যথা সময়ে গ্রামে সঞ্জয়ের এক বন্ধুর নিকট পৌছাইত,সেই সঞ্জয়ের অবর্তমানে সবকিছুর দেখ ভালের দায়িত্বে ছিল।

কাকিমার বাড়িতে দোতলায় দক্ষিণ কোণের ঘরটিতে সঞ্জয়ের থাকিবার বন্ধবস্ত হইয়াছিল।একদিন অপরাহ্নে সঞ্জয় ঘরের মেঝেতে পা ছড়াইয়া, দামিনীর কোলে মাথা রাখিয়া শুইয়াছিল। দামিনী সঞ্জয়ের চুলে আঙুল বুলাইতে বুলাইতে গান গাহিতে ছিল–

“যাবে কিহে দিন আমার বিফলে চলিয়ে।”
“আছি নাথ, দিবানিশি আশাপথ নিরখিয়ে॥”
“তুমি ত্রিভূবন নাথ, আমি ভিখারী অনাথ,”
“কেমনে বলিব তোমায় “এস হে মম হৃদয়ে?”

গান শেষ হইতেই সঞ্জয় চোখ খুলিয়া কহিল,

– বাহ্..বেশ ত গাইছ! তবে কেন বললে তুমি গাইতে জান না? তমি বড় মিথ্যে কথা বল!

– মোটেই না; মিথ্যে বলব কেন যা সত্য তাই বলেছি।


দামিনী যখন হাতে থাকা বইয়ের পাতায় চোখ বুলাইতে বুলাইতে সঞ্জয়ের কথার উত্তর করিতেছিল।সঞ্জয় তখন উঠিয়া গিয়া সশব্দে ঘরের দরজা খানা বন্ধ করিয়া দিল। এই শব্দতরঙ্গ দামিনীর কানে লাগিতে সে হাতের বই ফেলিয়া উঠিয়া পড়িল।

- দুদিন পর গ্রামে ফিরতে হবে আমায়,কিন্তু তার আগে আমার কিছু চাইবার আছে।

সঞ্জয়ের ঠিক কি চাহিবার থাকিতে পারে ইহা দামিনীকে বলিয়া বুঝাইতে হইলো না।সে এই কয়েকটি দিনেই বুঝিয়া লইয়াছে এই মানুষটির অন্তঃকরণের কাম-রাক্ষসটি যখন জাগিয়া যায় তখন সে আর রোমান্টিকতার ধার ধারে না। সুতরাং সে যে কি চাহিতে পারে তা সহজেই বুঝিয়া লওয়া যায়,কিন্তু ঠিক কতটা চায় ইহা না জানিয়া উহার হাতে নিজেকে সপিয়া দেওয়া ঠিক হইবে কি না দামিনী তাই ভাবিতেছিল।

কিন্তু তাহাকে বেশি ভাবিতে না দিয়া সঞ্জয় কাছে আসিয়া ডান হস্ত খানি দামিনীর মস্তিষ্কে পেছনে নিয়া তার দীঘল কেশরাশি মুষ্টিবদ্ধ করিয়া লইলো। কিছু বলিবার উদ্বেগে দামিনীর রক্তিম অধর খানি কাপিতেছিল, তবে কিছু বলিবার সুযোগ সে পাইল না। দামিনীর কিছু বলিবার আগেই সঞ্জয়ের ঠোঁটের মাঝে তা চাপা পরিয়া গেল। সঞ্জয় ভালো করিয়াই জানিত দামিনীর সহিত ঘনিষ্ঠ হইতে গেলে সে বাধাগ্রস্ত হইবে,সেই কারণেই সবার আগে দামিনীর কেশরাশি হাতে বন্দী করিয়াছিল এবার সে দামিনীর বুকের আঁচল খানা টানিয়া টানিয়া লইল।ইহার প্রতিবাদে দামিনীর দেহখানি একবার মোচড় দিয়া উঠিল। ইহাতে তাড়ার অধর ছাড়া পাইলেও তাহর কেশরাশি ছাড়া পাইলো না। দামিনীর ছাড়া পাইবার উপায় না দেখিয়া কাঁদো কাঁদো মুখ করিয়া বলিল,

– আজকের মত ছাড়ো আমায় মাসি আসবে এখুনি, আমি কথা দিছি আর কখনোই বাঁধা দিব না।

সঞ্জয় দামিনীর মন ভোলানো কথায় ভুলিবার পাত্র নহে,সে বাম হস্ত উঠাইয়া দামিনীর বক্ষবন্ধনীর ভেতর যে পর্বতের ন্যায় খারা দুটি নরম মাংসপিন্ড ছিল, তার একখানা থাবায় আবদ্ধ করিয়া পিষ্ট করিতে করিতে বলিল,

– আর বাঁধা দিতেও পারিবে না,পরেরবার ফিরিয়া তোমায় আমি বিবাহ করিয়া গ্রামে লইয়া যাইবো‌। তখন না থাকিবে তোমার মাসিমা,না থাকিবে তোমার চাকর-ঝি,তখন আমি তোমায় ল‍্যাংটো করিয়া কখনো শষ‍্যায় ফেলিয়া কখনো বা কলঘরের মেঝেতে ফেলিয়া নিজের ইচ্ছামত চুদিব,কেহই বাঁধা দিতে আসিবে না।

বলিতে বলিতে সঞ্জয় দামিনীর কেশ ছাড়িয়া তাহাকে শষ‍্যায় ফেলিয়া দুই হস্তে নরম স্তনদুটি বক্ষবন্ধনীর সহিত দুমড়াইয়া মুচড়াইয়া পিষ্ট করিতে লাগিল।

সঞ্জয়ের এইরূপ যৌন-অত্যাচারে দামিনীর সর্বাঙ্গে শিহরণ জাগাইয়া দিল।তাহাদের বিবাহ হইলে রজনীর পর রজনী এই মানুষটি তাহার শরীর নিঙড়াইয়া লইতে কি করিবে ইহা শুনিতে শুনিতে দামিনীর দুই পায়ের ফাঁকে যৌনাঙ্গ ধিরে ধিরে যৌন রসে আদ্র হইয়া উঠিতেছে।

হঠাৎ দামিনী তার ডান হস্তে উতপ্ত কিছুর স্পর্শ অনুভব করিল। সে মস্তক উঠাইয়া দেখিল, সঞ্জয়ের ধুতি ফাঁক দিয়া পুরুষাঙ্গ টি মুক্ত তরবারি ন‍্যায় দন্ডায়মান হইয়া আছে আর সঞ্জয় তার হাতখানি টানিয়া লইয়া সেই তরবারি খানা ধরাইয়া দিয়াছে। দামিনী তার দন্তের ধারা অধরে হালকা কামড় বসাইয়া সাহস সঞ্চয় করিয়া তাহার মুষ্টির মধ্যে চাপিয়া ধরিল। ইহার সাথে সাথেই সঞ্জয় অদ্ভুত আওয়াজ করিয়া মুখ নামাইয়া দামিনী ওষ্ঠাধর চুম্বন করিল।

দামিনী উহা ধরিয়াছিল বটে,তবে ইহার পর ঠিক কি করিতে হইবে ইহা সে জানিত না।এক সময় ইহা লক্ষ্য করিয়া সঞ্জয় বলিল,

– কি হল,আমায় আদর করিবে না?

দামিনী ইহার উত্তর ভাবিয়া না পাইয়া করুণ নয়নে সঞ্জয়ের মুখের পানে চাহিয়া রহিল।দামিনী মনে মনে ভাবিতে ছিল তাহার অপটুতা দেখিয়া সঞ্জয় এখুনি হাসিয়া উঠিবে।কিন্তু তাহাকে অবাক করিয়া দিয়া সঞ্জয় হাসিল না এবং নিজ হস্তের দ্বারা দামিনীর হাতখানি ধরিয়া তার দন্ডায়মান পুরুষাঙ্গে বলাইতে লাগিলো।

ঠিক কি করিতে হইবে তা দামিনী অল্পক্ষণেই বুঝিয়া লইলো।এবং সেই মতোই কাজ করিতে লাগিলো। এদিকে সঞ্জয় বাম হস্তে দামিনীর ঘনকালো চুলে হাত বুলাইয়া ও ডান হস্তের দ্বারা পালা করিয়া দুই বক্ষযুগল পিষ্ট করিতে করিতে দামিনীর সমস্ত মুখমণ্ডলে চুম্বন করিতেছিল। এইরূপ চলিতে চলিতে এক সময় দামিনীর অধর কামড়াইয়া সঞ্জয় দামিনীর হস্তে বীর্যপাত করিল। বীর্য শুধু মাত্র দামিনীর হস্তেই সীমিত থাকিল না,দামিনীর হাত ফসকাইয়া তার কিছুটা দামিনীর শাড়িতে লাগিল। তবে এত করিয়াও সৌদামিনী ছাড়া পাইলো না। সঞ্জয় তাহার হাতে শাড়ির আঁচল ধরাইয়া দিয়া কহিল,

– ইহা মুছাইয়া দিয়া তবে মুক্তি পাইবে!

তখন বেচারী আর কি করিবে! অগত্যা একহাতে শাড়ির আঁচল দিয়া সঞ্জয়ের পুরুষাঙ্গে লাগিয়া থাকা বীর্য পরিষ্কার করিয়া দিল। তাহার পর সঞ্জয় দামিনীর কপালে চুম্বন করিয়া বলিল,

– আমি তোমার কাছে ঋণী হইয়া রহিলাম, আমাদের ফুলশয্যায় এই ঋণ পরিশোধ করিব...

.....আজিকার পর্ব পড়িবার পর অনেক প্রশ্ন জাগিতে পারে মনে। তবে আগেই বলিয়া রাখি উত্তর জানিতে হইলে পরবর্তীতে আরো পড়িতে হইবে,আমি কিছুই বলিয়া দিব না। অবশেষে প্রশ্ন রহিল গল্প কি চলিবে?
Like Reply
অসাধারণ হইছে  yourock
____________________________
  •°৹৴°【সামিউল】°°
_____________ °°°°°°°°°°°°°°_____________
Like Reply
(22-06-2024, 02:35 PM)•°৹৴°【সামিউল】°৲৹°• Wrote: অসাধারণ হইছে  yourock

থ‍্যাংস ব্রো ❤️
Like Reply
খুব সুন্দর, আপডেটের অপেখ্যায় বসে থাকা, আবার কি ঘটনা ঘটে সেটার জন্য । ধন্যবাদ।
[+] 1 user Likes dweepto's post
Like Reply
(22-06-2024, 11:19 PM)dweepto Wrote: খুব সুন্দর, আপডেটের অপেখ্যায় বসে থাকা, আবার কি ঘটনা ঘটে সেটার জন্য ।  ধন্যবাদ।

ঘটনা এখনও অনেক বাকি।
যাই হোক ধন্যবাদ❤️
Like Reply
দামিনী আবার কে?

সঞ্জয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক কি? তার কত বয়স? সঞ্জয়েরই বা কত?
[+] 1 user Likes prataphali's post
Like Reply
(23-06-2024, 12:20 PM)prataphali Wrote: দামিনী আবার কে?

সঞ্জয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক কি? তার কত বয়স? সঞ্জয়েরই বা কত?

সৌদামিনীর কথা আগের কয়েকটি পর্বে অল্প অল্প করে বলেছি, বাকি যা আছে গল্প এগিয়ে যাক সেই সাথে সব বলা হবে।ধন্যবাদ❤️ 
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(23-06-2024, 01:37 PM)বহুরূপী Wrote: সৌদামিনীর কথা আগের কয়েকটি পর্বে অল্প অল্প করে বলেছি, বাকি যা আছে গল্প এগিয়ে যাক সেই সাথে সব বলা হবে।ধন্যবাদ❤️ 

সৌদামিনী কোন কোন পর্বে এসেছিল? মিস করে গেছি মনে হয়।
[+] 1 user Likes Charon's post
Like Reply
(24-06-2024, 07:59 PM)Charon Wrote: সৌদামিনী কোন কোন পর্বে এসেছিল? মিস করে গেছি মনে হয়।

বেশী দুরে যেতে হবে না ১৪, ১৫ পড়ে দেখুন
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)