Thread Rating:
  • 124 Vote(s) - 2.97 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica ❣️বৌদিমণি❣️ ﴾ সমাপ্ত ﴿
(30-05-2024, 12:26 PM)dinanath Wrote: অনেকের প্ল্যানের সমষ্টি কিন্তু প্ল্যান নয়। প্ল্যান হল অর্গানাইজড। অনেকের প্ল্যানের সমষ্টি কেওটিক। এমন কেওটিক ব্যাপারকে কি আয়োজন বলা চলে?

সবার কথা না ধরি। এখানে নয়নতারার অবস্থানটা যদি ভাবা হয় ,তো সে প্রথম গ্রামের থেকে শহরে এসেছে ।একটা ছোট জায়গায় এতো কিছু দেখলে প্রথম শব্দে যেটা মাথায় আসে সেটা সমাবেশ বা আয়োজন,এছাড়া আর কিছু ঠিক মাথায় আসছে না।
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(30-05-2024, 12:53 PM)বহুরূপী Wrote: সবার কথা না ধরি। এখানে নয়নতারার অবস্থানটা যদি ভাবা হয় ,তো সে প্রথম গ্রামের থেকে শহরে এসেছে ।একটা ছোট জায়গায় এতো কিছু দেখলে প্রথম শব্দে যেটা মাথায় আসে সেটা সমাবেশ বা আয়োজন,এছাড়া আর কিছু ঠিক মাথায় আসছে না।

সমাবেশ কথাটি যথার্থ হত।
[+] 1 user Likes Tilottama's post
Like Reply
(30-05-2024, 12:48 PM)Tilottama Wrote: লেখকপ্রবর, আপনি এমন ডিটেলে এই দৃশ্যটি রচনা করিয়াছেন যে পাঠ করিয়া চমৎকৃত হইলাম। তবে প্রশ্ন হইল যে উহারা কি ঘরে বাতি জ্বালাইয়া শয়ন করিয়াছিল? নচেৎ কেবল চন্দ্রালোকে সঞ্জয় তাহার ভ্রাতৃবঁধুর স্খলিত চূর্ণ কুন্তলের যে রূপ দেখিতে পাইল, তাহা কি সম্ভবপর?

আবেগের বসে ডিটেইলস মনে হয়  একটু বেশিই হয়ে গেছে।যাই হোক এটি জাস্ট একটা পরীক্ষামূলক গল্প।তাই এই গল্পটাকে কেউ সিরিয়াসলি নেই অনুরোধ, ধন্যবাদ❤️
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
(30-05-2024, 12:59 PM)বহুরূপী Wrote: আবেগের বসে ডিটেইলস মনে হয়  একটু বেশিই হয়ে গেছে।যাই হোক এটি জাস্ট একটা পরীক্ষামূলক গল্প।তাই এই গল্পটাকে কেউ সিরিয়াসলি নাই অনুরোধ, ধন্যবাদ❤️

ডিটেলে লিখলেই বেশি উপভোগ্য হয়। ডিটেলে লিখুন
[+] 1 user Likes Tilottama's post
Like Reply
(30-05-2024, 01:09 PM)Tilottama Wrote: ডিটেলে লিখলেই বেশি উপভোগ্য হয়। ডিটেলে লিখুন
অনেক দিন লেখালেখি করা হয়নি,আর আমি ইরোটিক কখনো লিখিনি।তাই এই গল্পটা দিয়ে পরীক্ষা করছি লিখতে পারবো কিনা। সুতরাং এই গল্পটা বেশি ডিটেইলসে লেখার ইচ্ছে নেই, তবে এটা শেষ করে যদি লেখার ইচ্ছেটা ধরে রাখতে পারি তাহলে পরের গল্পটা বেশী ডিটেইল দিয়ে লেখার চেষ্টা করবো।,ধন্যবাদ❤️
Like Reply
বাহ্   চমৎকার  clps
নতুন পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
(01-06-2024, 01:38 PM)Fardin ahamed Wrote: বাহ্   চমৎকার  clps
নতুন পর্বের অপেক্ষায় রইলাম

একটু ব‍্যস্ত আছি, আপডেট আসতে দেরি হবে ।
ধন্যবাদ❤️
Like Reply
(27-05-2024, 05:03 PM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ১২




কথাটা শুনিতেই সঞ্জয় খবরের কাগজ খানি নামাই নয়নতারার পানে দেখিল।নয়নতারা তখন মেঝেতে পেছন ফিরিয়া পা দুখানি সমূখে বারাইয়া বাবুকে কোলে করিয়া বসিয়াছিল। সেদিকে দেখিয়া সঞ্জয়ের মনটি কেমন যেন করিতেছিল, তবে খুব বেশি ব‍্যাকুল হইবার অবসর হইলো না। তার আগেই এক নারী কন্ঠের ডাকে মুখ তুলিয়া দেখিলো দোরের সমূখে অভিনাথে স্ত্রী, হাতে খাবারের টিফিন বক্স। প্রথম দিকে মানা করিলেও এখন ইহা স্বাভাবিক,নয়নতারা নিজে ব‍্যপারখানা উপভোগ করে বলিয়া সঞ্জয়ও আর কিছুই বলে না।শুধু সকালে খাবার বাদে দুপুর ও রাতের খাবার অভিনাথ নিজ হাতে আনে। মাঝে মাঝে কমলাও আসে। অবশ্য তার প্রয়োজন যদিও বা তার সইয়ের কাছে।

/////

সুধী লেখক, বেশ লিখিতেছেন। পুরাতন শৈলীতে লেখা রচনাটি অতীব পাঠ্যসুখকর, যা এইস্থানে কেন, গোটা বঙ্গদেশেই বিরল। বানান ভুল নাই বলিলেই চলে। তবে মাঝেমাঝে কিছু উটকো শব্দ চক্ষের পীড়ার কারণ হইতেছে। ও কিছু বানান ভুলও সুচারু রূপে মার্জিত মেঝেতে লোষ্ট্রখন্ডের মত বেমানান। অভিনাথ কাহারও নাম হইতে পারে এই প্রথম জানিলাম। অভি উপসর্গের অর্থ হইল দিকে। অভিযোগ, অভিনয়, অভিযান। নাথের দিকে কে বা কাহারা যাইবে বোধগম্য হইল না। যাহা হউক - নামে কি আসে যায়! সমুখ - উ কারই যথাযথ হইবে। স অর্থাৎ সহ। মুখ - গন্ডদেশ।
[+] 1 user Likes raikamol's post
Like Reply
(02-06-2024, 01:28 PM)raikamol Wrote: সুধী লেখক, বেশ লিখিতেছেন। পুরাতন শৈলীতে লেখা রচনাটি অতীব পাঠ্যসুখকর, যা এইস্থানে কেন, গোটা বঙ্গদেশেই বিরল। বানান ভুল নাই বলিলেই চলে। তবে মাঝেমাঝে কিছু উটকো শব্দ চক্ষের পীড়ার কারণ হইতেছে। ও কিছু বানান ভুলও সুচারু রূপে মার্জিত মেঝেতে লোষ্ট্রখন্ডের মত বেমানান। অভিনাথ কাহারও নাম হইতে পারে এই প্রথম জানিলাম। অভি উপসর্গের অর্থ হইল দিকে। অভিযোগ, অভিনয়, অভিযান। নাথের দিকে কে বা কাহারা যাইবে বোধগম্য হইল না। যাহা হউক - নামে কি আসে যায়! সমুখ - উ কারই যথাযথ হইবে। স অর্থাৎ সহ। মুখ - গন্ডদেশ।

নামটা কোথায় একটা পড়েছিলাম মনে নেই। তাছাড়া এই চরিত্র এমনিতেও বেশি দিন থাকবে না,তাই নামটি নিয়ে বেশি একটা ভেবে দেখিনি।
কিছু শব্দ আসলেই গন্ডগোল হয়েছে।তবে যেহেতু গল্পটা পরীক্ষামূলক তাই আশা করি কিছু ভুল ক্ষমা করে দেওয়াই ভালো ।
yourock
Like Reply
পর্ব ১৩

জ্যোৎস্না ভরা গভীর এই রাত্রিরে নয়নতারার মাথার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে সঞ্জয়ের ব‍্যাকুল মনটি বার বার ভাবছিল, ভগবান এই দুরবস্থার হাত থেকে আমায় উদ্ধার করো। কিন্তু সে অনুরোধ শুনিবার সময় বোধকরি ভগ'বানেরও ছিল না। বা এমন হতে পারে যে এই তার ইচ্ছে।


সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সঞ্জয় যখনই ভাবলো এখন উঠবে,তখন নয়নতারার মাথায় রাখা হাতটি সরে আসছিল ধিরে ধিরে। তবে শেষ কালে রমনীর কোমলমতি হাতে তা বাধাঁ পেলে সে কার দোষ শুনি! এক মুহুর্তে কঠিন পুরুষ মনটি যে নাড়িয়ে দিতে পারে, সেই মায়াবতীর নারীর মায়া কাটানো কি আর এত সোজা!

নয়নতারা বাঁ হাতে বাবুকে বুকে জড়িয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন। ডান হাতখানি বালিশের উপর তোলা। সঞ্জয়ের হাতখানি তার নাগালের আসতেই,ঘুমের মাঝেই নয়নতারা আলতো ভাবে আকড়ে ধরলো হাতটি। ঠোঁট জোড়া কেঁপে উঠে অস্পষ্ট একটা শব্দ কানে এলো।যেন কিছু বলতে চাইছে সে,কিন্তু কিছুই বোঝা গেল না। ঘুমন্ত রমনীর এই মুখটি যে মনকে এমন প্রবল শক্তিতে টানতে পারে, এটা সঞ্জয়ের জানা ছিল না।এখন এই নিশীথ রাতে জ্যোৎস্নার কুমন্ত্রণায় কোন এক অনিশ্চয়তার দিকে তার মনটি এগিয়ে যেতে চাইছে!

সঞ্জয়ের চলার পথে আপনার মধ্যে আপনার কোনো দিন বিরোধ ঘটে নি। দাদার অবহেলায় একা চলতে শিখেছে,অভাবের দুঃখে সে পীড়িত হয়েছে। কিন্তু সেটা তো তার প্রকৃতিকে আঘাত করে নি। তবে আজ কেন এতো দোটানায় পড়লো সে!

ভাবতে ভাবতেই হাতটা ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে চোখ পরে নয়নতারার হাতে,সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে মেলা থেকে যে চুড়ি কিনেছিল, সেগুলোর কথা। হেমকে সে নিজের হাতে পরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু নয়নতারার জন্যেও তো কিনেছিল। সেগুলো তো দেওয়া হয়নি। কলকাতার আসার চক্করে সব ভুলে বসেছে। না জানি হেমের হাতে চুড়ি দেখে কি সব ভেবে বসে আছে। হয়তোবা হেম এতদিনে সব বলে বসেছে।ও মেয়ের পেটে এসব কথা থাকবে বলে তো মনে হয় না।

নয়নতারার হাত ধরে হেমের কথা ভাবতে ভাবতে ধিরে ধিরে তার আঙ্গুলগুলোকে ওপড়-নিচ করে বোলাতে লাগলো সে। ধিরে ধিরে আঙ্গুলের গতিবিধি বেরে গিয়ে কব্জি ছাড়িয়ে যেতে লাগলো। সঞ্জয়ের হাতটি যখন ঠিক কাঁধের কাছাকাছি পৌঁছল। কেঁপে উঠলো নয়নতারার সর্বাঙ্গ,সঞ্জয়ের বাঁ হাতে ধরে থাকা নয়নতারার হাতটি হঠাৎই শক্ত করে চেপেধরলো সঞ্জয়ের হাতটিকে।এক মুহূর্তে জন্যে সঞ্জয়ের বুকের ধুকপুক এতো বেড়ে গেল, যে কিছুক্ষণ তার আর নড়াচড়া করার ক্ষমতা রইলো না। পরক্ষণেই সেই ঝড়ের রাতের কথা মনে হতেই ধিরে ধিরে নয়নতারার আঁচল সরিরে কাঁধে আলতো ভাবে ঠেলে এটুকু সোজা করে নিলো,যেন ঠিক মত দেখতে পারে।


কিন্তু তখনই ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠে নয়নতারা। চোখে চোখ পরতেই থমকে গেলে সঞ্জয়।নয়নতারা ঠিক কি হচ্ছে তৎক্ষণাৎ বুঝতে না পারলেও নিজেকে একটু দুরে সরিয়ে নিতে চায় সে। কিন্তু মাঝে মাঝে মনুষ্যত্বের প্রাণীর আচরণের মধ্যে এমন অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায় যে তার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না । তেমনি সঞ্জয়ের ওপরে ঠিক কি ভর করলো সঞ্জয় নিজেয় বুঝে উঠতে পারলো না


নয়নতারার কাঁধে ও হাতে ধরে থাকা সঞ্জয়ের হাত দুটো হঠাৎই শক্ত করে চেপেধরে নয়নতারাকে বিছানার সাথে। নয়নতারার ঠোঁট জোড়া কেঁঁপে উঠে শুধুমাত্র একটু অস্ফুট শব্দ করেই চাপা পরে পুরুষালি রুক্ষ দুটি ঠোঁটের নিচে। নয়নতারার কাধে থাকা সঞ্জয়ের হাতটি ঘষটে ঘষটে শাড়ির আঁচল সহনেমে আসে নিচের দিকে। নয়নতারার কাছে এতখনে সবটাই স্পষ্ট,সে নিজের কে ছাড়াতে একহাতে সঞ্জয়ের কাঁধে ধরে ঠেলে অন‍্য হাতটি মুঠো পাকিয়ে মুচড়ে ছাড়িয়ে নিতে চায়।কিন্তু ততখনে সঞ্জয়ের পেশীবহুল হাতের থাবায় তার একটি স্তন ব্লাউজের ওপড় দিয়ে পিষ্ট হতে শুরু হয়েছে।তার নরম ঠোঁটে ফাঁকে ঢুকে গেছে সঞ্জয়ের জীভ।তার বুকের আঁচলখানি এতখনে কোমড়ের কাছে নেমেছে। নয়নতারার যে হাতটি উন্মুক্ত ছিল, অতিরিক্ত ঠেলাঠেলি তে সেই হাতখানিও সঞ্জয়ের পেশীবহুল হাতের বাঁধনে বন্দী হতে বেশি সময় নিল না।দেখতে দেখতে নয়নতারার মাথার ওপরেই তার কোমল দুটি হাত সঞ্জয়ের একহাতের বন্ধনে বাধাঁ পরে তার আর ছাড়া পাইবার উপার রাখলো না।। এতকিছুর মধ‍্যেও নয়নতারাকে অবাক করে দিয়ে তার সর্বাঙ্গে কি এক শিরশির স্রোত বসে গেল। সঞ্জয়ের হুশ থাকে সে বুঝতো তার পেশীবহুল হাতের শক্তিশালী মর্দনে নয়নতারার স্তনের দৃঢ় হয়ে ওঠা।ধীরে ধীরে নয়নতারার শরীরের শক্তি যেন সঞ্জয় চুষে নিঃশেষ করে দিছিল।কিন্তু নয়নতারা যখন একটু ফাঁক পেল, তখনে সেই সুযোগে সে সজোরে সঞ্জয়ের ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিল।কিন্ত এতেও সঞ্জয়ের হুশ হলো না। বরং কামড়ে এই ব‍্যপারখানার সংক্রমণ ঘটিলো। হয়তো আর কিছু হতো, কিন্তু সঞ্জয়ের চমক ভাঙ্গলো বাবুর কান্নার আওয়াজে।সম্ভিত ফিরে পেয়েই এক রকম ছিটকে সরে সরে গেল সে। ছাড়া পেয়ে নয়নতারা উঠে বসলো বাবুকে বুকে আকড়ে।নয়নতারার মুখে কোন কথা নাই,এমন আকস্মিক ঘটনার ফলে সে তম্ভিত,তার সর্বাঙ্গের কম্পন এখনো থামেনি.…

/////

দোতলার বারান্দায় শেষ প্রান্তে সঞ্জয়ের ঘরটি। তারই সামনে হেমলতা দাঁড়িয়ে আনমনে কি জানি ভাবছিল।এমন সময় সিঁড়ির দিক থেকে একটু চাপা হাসি ও ফিসফিস্ কথা শুনে চমকে গিয়ে সেদিকে তাকায় সে। কয়েকটি মেয়ে-বউ নিজেদের মধ্যেই কি কথা বলতে বলতে উঠে এলো। ব‍্যপারখানা নতুন নয়, নয়নতারা থাকতে এরা মাঝে মধ্যেই আসতো। এখানে আসা অবধি কাজের শেষে বিকেল বেলা জামগাছটির তলায় মাঝে মধ্যেই তাদের জমায়েত হতো হেমলতার দিদির সাথে।

এখন নয়নতারা নেই। কিন্তু দু-একদিন আগে লতা নামের এক মেয়ে চিঠি নিয়ে এসে নয়নতারাকে না পেয়ে কেমন মুখখানি মলিন করে ফিরে যাচ্ছিল। মেয়েটার স্বামী শহরে থাকে,প্রায় মাসখানেক পরে চিঠি এসেছে শহর থেকে। মেয়েটির মলিন মুখটি দেখেই হেমের বুকের ভেতরটা কেমন মোচড় দিয়ে ওঠে। এই কদিনে সে নিজেই অনুভব করিয়া বুঝিয়াছে বিরহের যন্ত্রণা কতো কঠিন কতো ভয়ানক। যদিওবা সে জানে তাহার জলদি ফিরিবে তবুও সমূখে না দেখিলে কি আর এ জ্বালা জুড়ায়।


তা মেয়েটার দুঃখিনী মুখে দেখিয়াই হোক বা তার নামের সহিত মিল থাকার কারনেই হোক। হেমলতা অতি কষ্টে সংকোচ ভাঙ্গিয়া বউটিকে কাছে ডাকিয়া আনিলো। অবশ্য চিঠিখানি সে সম্পূর্ণ পড়িতে পারিলো না। সংকোচের বাধা ভাঙ্গিয়া সে চারপাঁচ লাইল পড়িল বটে,তবে পরক্ষণেই বেজায় বিপাকে পড়িল। অর্ধেক চিঠি পড়িতেই গাল দুখানি লাল করিয়া নতমুখে বসিয়া রহিল।হেমের অবস্থা দেখিয়া মেয়েটি শেষমেশ চিঠিখানা কাড়িয়া লইয়া হেমলতার চিবুক ঠেলিয়া উঁচু করিয়া কহিল,,

– থাক ভাই আমার চিঠি,ও তোমার আর পড়ে কাজ নেই,একখানি চিঠি পড়তেই এই দশা হবে কে জানতো।

এই বলিয়া বউটি তার গলা জড়াইয়া হাসিতে লাগিলো। তারপর হইতেই মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া আর গল্প করিতে করিতে আরও দুই একটি মেয়ে-বউ জুটিয়াছে হেমের ছোট্ট এই আসরে। তা সে নাই বা পারলো তার দিদির মতো রসিয়ে চিঠি পড়তে,বা গোপন কথায় চোখ টিপে হেসে উঠতে।হেমকে দিয়ে যে এইসব হবে না, সে তো আমরাও ভালো জানি। তাই বলে আজীবন আড়ালে দাঁড়িয়ে চোরের মতো আড়িপাতা তো থামানো চাই।

তবে ধীরে ধীরে আসরের প্রসার ঘটিলো।এখন শুধু দুএকজন মেয়ে নয়, মাঝে মধ্যেই নয়নতারার আসরের সবাই আসিতে লাগিলো। আর এদের মুখেই হেম ধিরে ধিরে সঞ্জয়ের ছেলেবেলার কথা জানিয়া লইলো। আর বুঝিলো সঞ্জয়ের সম্পর্কে গ্রামের আর সবাই তার চেয়েও ভালো জানে ।অবশ্য এটাই স্বাভাবিক, এরা এতোদিন আছে এখানে সে তো সেদিন এলো মাত্র। তবুও বড্ড রাগ হয় তার, যখন কোন মেয়ে সঞ্জয়ের কথা বলতে বলতে আহ্লাদে গদগদ হয়,তখন সে গাল দুখানি ফুলিয়ে বসে থাকে চুপচাপ। আবার বেশ ভালো লাগে যখন মা-কাকিমা গোছের মহিলাদের মুখে শোনে তার মনে ঠাকুরের ছোটবেলার কথা।


ছোটবেলায় বাপ মা হাড়িয়ে শেষে দাদা থাকতেও হারাতে হয় তাকে,তারপরেও সে মোটে বখে যায়নি। এখনো সে এতো টাকা-পয়সা করেও পাড়ার লোকেদের ফাইফরমায়েশ খেটে দেয় সময় পেলেই, লোকের বিপদ-আপদে এগিয়ে আসে। এই ত কিছুদিন আগে যে ঝড়ে গেল।ঐ যেদিন তার দিদির রাতে জ্বর এলো।সেই দিন সকালে ডাক্তার কে বাড়িতে রেখেই সঞ্জয় বেড়িয়েছিল। হেম সে কথা ভোলেনি এখনো। সারাদিন খেটে খুটে সন্ধ্যায় এসে দোতলায় উঠে যাওয়া, তারপর হেম যখন খাবার নিয়ে দিতে গেল,তখন অসভ‍্যের মত তার শাড়ির আঁচল....ভাবতেই সর্বাঙ্গ শিহরিত হয়ে ওঠে হেমলতার।না জানি কোন রাজ‍্য হইতে এক রাশ লজ্জা আসিয়া তার মুখখানি রাঙা করিয়া তোলে। যেন কাহারও চোখে না পরে তাই তখন কোন একটা ছুতোয় যে সরিয়া পরে।কিছুক্ষণ পর এখানি সোনালী পানের বাটা ও একটা পাত্রে মুড়ি মাখা নিয়ে সে ফেরে।

সঞ্জয়ের আরেকটা গুণ আছে,সে নাকি দিব্যি গাইতে পারে। মনসার ভাসান হোক, কি শিবের চড়ক, নইলে কেত্তন.... তার ডাক পড়বেই। তালদিঘির মন্দিরে পুজোর সময় দিঘীর পাশে যে বড় বটগাছটি দাঁড়িয়ে।তার নিচে ছেলে বুড় সবাই গানের আসর করে,সঞ্জয় সেখানেই গান গায়। পাড়ার মেয়ে বউরা তাকে ভারি পছন্দ করে। সে আবার বাঁশিতে বেশ সুর তুলতে পারে। মাঝে মাঝে দিঘীর জলে ছিপ ফেলে বট গাছটার ছায়ায় বসে বাঁশী বাজায়। মেয়েরা কলসি কাঁখে জল আনতে আসলে দুদন্ড শুনে যায়।এই সব শুনে কখনো হেমের মন খুশি হয় আর কখনো অভিমানে গাল ফুলায়।

তাবে আজ এরা কথা বলতে নয়,তাকে নিতে এসেছে। বাড়ির পেছন দিকের ক্ষেত পেরিয়েই জঙ্গলার ধারে একটা পুকুর। পুকুরটা বেশ বড়, চারদিক অসংখ্য বড় বড় তাল আর খেজুর গাছ। তাছাড়া পুকুরপাড়ে একটা পুরনো জামরুলগাছ আছে।সেই গাছের অনেকগুলো ডাল ছুঁয়ে আছে পুকুরের জল। হেমলতা সেদিন প্রথম গেল পুকুরের স্নান করতে,সেদিন পুকুর ছুঁয়ে থাকা ডালের নিচে পাড়ের কাছাকাছি একটা নৌকো ডুবে থাকতে দেখে অবাক হয়ে ভাবছিল,নৌকোটা এখানে কে ডুবাল?নৌকোর ওপর আরো ডালপালা ছড়িয়ে রাখা আছে। মাঝেমধ্যে দুই একটা দস‍্যি ছেলে জামরুলের ডাল বেয়ে জলে অর্ধেক ভেসে থাকা নৌকাটিতে বসে। হেমে ভয় হয় ওদের জন‍্যে, যদি গাছে ডাল ভেঙ্গে ব‍্যথা পায় তবে!

ঘাটখানি লোহা কাঠের তক্তা দিয়ে বানানো। পাড়ার মেয়ে বউদের মুখে শুনলো এই ঘাটখানি দু-তিনজন লোক নিয়ে সঞ্জয় নিজ হিতে বানিয়েছে।কথাটা শোনা মাত্র খুব রাগ হয় হেমের। মনে মনে বলে, এটাও তার বানানো! কেন, গাঁয়ে কি আর লোক নেই; আগ বারিয়ে তাকেই কেন সব করতে হবে।

ঘাটে থাকাকালীন সম্পূর্ণ সময়টা হেম হাসফাঁস করে বেরিয়ে আসতে।পাড়ার মেয়ে বউদের মুখে সঞ্জয়ের কথা উঠলেই তার ছটফটানি আরও বাড়ে। এক একবার তো পাড়ার এক কাকিমা বলেলেই ফেল, এইবার কলিকাতা থেকে আসুক, ধরে বেধে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে। কার সাথে দেবে,সেই পোড়ামুখির নামটিও শোনা যায় প্রায় সময়ই। আমাদের হেমলতা এমন কত পোড়ামুখিকে মনে মনে ভৎসনা করিয়াছে তা আর নাইবা বললাম। কিন্তু এতেও তার রাগ হয় পরিতে চায় না। কিন্তু কেন যে এত রাগ হয় তার সে বুঝে উঠতেই পারে না। ভালোবাসা বলে! ভালোবাসলেই কি এত রাগ হওয়া উচিত!

যে যাই হোক, দুদিন হলো ঘাটে যাওয়া বন্ধ তার।তবে সেটা পাড়ার মেয়ে বউদের কথার কারণে নয়।এ কারণ ভিন্ন। কদিন ধরে রাস্তার পাশে একটা লোক চোখে পড়ছে তার।প্রথম প্রথম সে খুব একটা গাঁ করেনি।বড় জোর বিকেলে ছাদে ওঠা ছেড়ে দিয়েছে সে।কিন্তু দুদিন আগে সে একা মন্দিরাকে নিয়ে ঘাটে বসে ছিল। পরে যদিওবা মনে মনে বলেছিল,পোড়ামুখি কেন গেলি,এতো সাহস হয় কিভাবে তোর!

তা পরে বললেই বা কি হয়; লোকটা যখন ঘাটে এসে তার নাম ধরে ডাকলো, তখনই সে বুঝেছে লোকটা কে। সাথে সাথেই বুকের ভেতরটা কেমন ধক করে ওঠে তার। করুণ নয়নে সে চারপাশে তাকিয়ে দেখে। কিন্তু তখন সেই কম্পান্বিতা তরুণীর সহায়তা করার কেহই ছিল না। সে কোন কর্মে তার দিদির কন‍্যাটিকে বুকের জড়াইয়া ছুটিয়া বাড়ি ফিরিয়া বাঁচিল। দোতলায় উঠিয়া সে সোজা সঞ্জয়ের বিছানায় এখানি বালিশ বুকে চাপিয়া মনে মনে বলিল,কস্মিনকালেও সে মুখে যাবার নাম এই মুখে আনবে না। কিন্তু এখন এদের কি বলিবে...

///////

গত রাতের ঘটনার পর নয়নতারার পক্ষে সঙ্গিনীর বড়ো দরকার হইয়াছিল।ভাগ‍্য ক্রমে তাহা সে খুব সহজেই পাইল। প্রভাতে সঞ্জয় কিছু মাত্র মুখে না তুলিয়াই বাহির হইল।নয়নতারা একবার ডাকিল না দেখিয়া কমলা একবার নয়নতারার পানে চাহিয়া দেখিলো। হয়তোবা কিছু বলিতো। কিন্তু পরক্ষণেই নয়নতারার মুখের গাম্ভীর্য দেখিয়া সে একে বারেই দমিয়া গেল। আজ কমলা সকাল হইতে সন্ধ্যাকাল অবধি কোন কথা বলিলো না।অবশ্য সে যে দুই একটিবার চেষ্টা করে নাই, তা নয়।কিন্ত নয়নতারা কোনরূপ আগ্রহ প্রকাশ করে নাই বলিয়াই সারাটা সময় চুপচাপ কাটিয়া গেল। তবে ভেতরে ভেতরে শুধু কমলা নয় নয়নতারার নিজের মনটাও কেমন যেন করিতে লাগিলো।

নয়নতারার চিন্তিত মন আর চিন্তিত হইলো যখন রাত্রি হইলেও সঞ্জয় ফিরিলো না। কমলার স্বামী যখন তাহাকে হাসপাতালে খুঁজিয়া পাইলো না,তখন নয়নতারা আর থাকিতে না পারিয়া সইয়ের কাঁধে মুখ লুকাইয়া কাঁদিতে লাগিলো। কমলা ঘটনা ঠিক বুঝিতে না পারিয়া আরও ব‍্যস্ত হইয়া পরিলো। দেখিতে দেখিতে দুই রমনী একে অন‍্যকে জড়াইয়া অশ্রু নদীর বান ভাঙিয়া দিল। কান্না নামক এই অনুভূতি টা ঠিক সংক্রমণীত কিনা তা বলিতে পারি না।তবে মায়ের কান্নায় নয়নতারার শিশু পুত্রটিও কাঁদিতে আরম্ভ করিলো।এহেন কান্ডে কমলার স্বামী ঠিক কাকে ফেলিয়া কাকে সামলাইবে তা বুঝিতে না পারিয়া,একবার এদিকে ও একবার খাটের দিকে দেখিতে লাগিল।কিন্তু পোড়া কপাল নয়নতারার, ভগ'বান তাহার কান্না কানেও তুলিলেন না। সে রাত্রিরে সঞ্জয় ফিরিলো না। এদিকে নয়নতারাও জল ছাড়া আর কিছুই মুখে তুলিলো না।......আপডেট দিতে দেরি হচ্ছে।আসলে ব‍্যস্ত সময় কাটছে।যাই হোক প্রশ্ন কিন্তু রইলো,ওইযে গল্প চলবে কি না।
Like Reply
(03-06-2024, 06:00 PM)বহুরূপী Wrote: পর্ব ১৩


নয়নতারা বাঁ হাতে বাবুকে বুকে জড়িয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন। ডান হাতখানি বালিশের উপর তোলা। সঞ্জয়ের হাতখানি তার নাগালের আসতেই,ঘুমের মাঝেই নয়নতারা আলতো ভাবে আকড়ে ধরলো হাতটি।

সঞ্জয়ের চলার পথে আপনার মধ্যে আপনার কোনো দিন বিরোধ ঘটে নি। দাদার অবহেলায় একা চলতে শিখেছে,অভাবের দুঃখে সে পীড়িত হয়েছে। কিন্তু সেটা তো তার প্রকৃতিকে আঘাত করে নি। তবে আজ কেন এতো দোটানায় পড়লো সে!

ভাবতে ভাবতেই হাতটা ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে চোখ পরে নয়নতারার হাতে,সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে মেলা থেকে যে চুড়ি কিনেছিল, সেগুলোর কথা। হেমকে সে নিজের হাতে পরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু নয়নতারার জন্যেও তো কিনেছিল। সেগুলো তো দেওয়া হয়নি। কলকাতার আসার চক্করে সব ভুলে বসেছে। না জানি হেমের হাতে চুড়ি দেখে কি সব ভেবে বসে আছে। হয়তোবা হেম এতদিনে সব বলে বসেছে।ও মেয়ের পেটে এসব কথা থাকবে বলে তো মনে হয় না।

নয়নতারার হাত ধরে হেমের কথা ভাবতে ভাবতে ধিরে ধিরে তার আঙ্গুলগুলোকে ওপড়-নিচ করে বোলাতে লাগলো সে।


নয়নতারার কাঁধে ও হাতে ধরে থাকা সঞ্জয়ের হাত দুটো হঠাৎই শক্ত করে চেপেধরে নয়নতারাকে বিছানার সাথে। নয়নতারার ঠোঁট জোড়া কেঁঁপে উঠে শুধুমাত্র একটু অস্ফুট শব্দ করেই চাপা পরে পুরুষালি রুক্ষ দুটি ঠোঁটের নিচে।

সঞ্জয়ের কোন হাতে কি হচ্ছে, বুঝতে গিয়ে দৃশ্যটি মাথা গুলিয়ে দিল
[+] 5 users Like Tilottama's post
Like Reply
(03-06-2024, 07:23 PM)Tilottama Wrote: সঞ্জয়ের কোন হাতে কি হচ্ছে, বুঝতে গিয়ে দৃশ্যটি মাথা গুলিয়ে দিল

হ্যাঁ, সত্যি কথা।
[+] 1 user Likes ajrabanu's post
Like Reply
(03-06-2024, 07:45 PM)ajrabanu Wrote: হ্যাঁ, সত্যি কথা।
(03-06-2024, 07:23 PM)Tilottama Wrote: সঞ্জয়ের কোন হাতে কি হচ্ছে, বুঝতে গিয়ে দৃশ্যটি মাথা গুলিয়ে দিল

একেই বলে কপাল,প্রতেকবার একটা না একটা গোলযোগ রয়েই যাচ্ছে।
যাই হোক, ভুল না করলে শেখা হয় না।

পরবর্তীতে খেয়াল রাখবো,ধন্যবাদ❤️
Like Reply
অসাধারণ লেখা  clps
চালিয়ে যান yourock

নতুন পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলম  Big Grin
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
(03-06-2024, 11:14 PM)Fardin ahamed Wrote: অসাধারণ লেখা  clps
চালিয়ে যান yourock

নতুন পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলম  Big Grin

ধন্যবাদ❤️
[+] 1 user Likes বহুরূপী's post
Like Reply
অসাধারণ দারুণ
[+] 1 user Likes Aisha's post
Like Reply
(04-06-2024, 07:46 AM)Aisha Wrote: অসাধারণ দারুণ

ধন্যবাদ ❤️
Like Reply
বেশ সুন্দর, পরবর্তী updater অপেখ্যায় রইলাম। ধন্যবাদ।
[+] 1 user Likes dweepto's post
Like Reply
খুবই ভালো হয়েছে, দুই নারীর মানসিক দোদুল্যমনতা খুব ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে। কি জানি কি হয়।
[+] 3 users Like evergreen_830's post
Like Reply
(04-06-2024, 08:55 PM)evergreen_830 Wrote: খুবই ভালো হয়েছে, দুই নারীর মানসিক দোদুল্যমনতা খুব ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে। কি জানি কি হয়।

(04-06-2024, 08:16 PM)dweepto Wrote: বেশ সুন্দর, পরবর্তী updater অপেখ্যায় রইলাম।  ধন্যবাদ।

সাথে থাকুন জেনে যাবেন কি হবে। Big Grin
Like Reply




Users browsing this thread: Jatinroy, 18 Guest(s)