Thread Rating:
  • 40 Vote(s) - 2.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance স্মৃতি সুন্দরী
স্মৃতি সুন্দরী ৩.২

নভেম্বরে পড়বো না , পড়বো না , করতে করতে , ডিসেম্বরে শীতটা ঝপ করে পড়লো । গঙ্গার প্রায় পাশেই বাড়ি হওয়ার দরুণ মাঝেমধ্যেই কনকনে হিমশীতল হাওয়া ধেয়ে আসে যা শরীরে চামড়া মাংস ভেদ করে হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয় । আর আছে কুয়াশা । বিদ্যার বাড়ির চারপাশে সকাল সাতটা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে । মাঝে মধ্যে ভোরবেলার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব এত বেশি থাকে যে দশ হাত দূরে কে দাঁড়িয়ে আছে সেটা  ঠাওর করা যায়না ।

কুয়াশা যতই ঘন হোক , চার পাঁচ হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিকে না দেখা গেলেও , হাত বাড়ালে তাকে ধরা যায় , তার স্পর্শ পাওয়া যায়। কিন্তু যার মনের ভিতর কুয়াশা জমে আছে শত চেষ্টা করলেও তার স্পর্শ পাওয়া যায়না। সেদিন সীমা নামের মেয়েটা চলে যাওয়ার পর থেকেই দিব্যা যেন কেমন একটা অন্যমনস্ক চুপচাপ হয়ে গেছে । বিক্রম একবার জিজ্ঞাসা করেছিল , “ কিছু হয়েছে ? „

“ কিছু না । „ বলে দিব্যা কথা কাটিয়ে দিয়েছিল ।

এরপর বিক্রম যে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করবে কিংবা জোর করে কিছু জানার চেষ্টা করবে সে অধিকার বিক্রমের নেই । লিভিংয়ে থাকার সময়েই দিব্যা নিজের ব্যাক্তিগত জীবনের ব্যপারে একটা পাঁচিল তুলে দিয়ছিল । ফলে দিব্যা বিক্রমের সন্তানের মা হলেও তাদের মধ্যে এক স্বামীর তার স্ত্রীর প্রতি কিংবা এক স্ত্রীর তার স্বামীর প্রতি যে অধিকার থাকে সেইরকম কোন  অধিকার বিক্রমের নেই ।

যে মেয়েরা সিগারেট খায় তাদের সম্পর্কে বিক্রমের একটা ধারণা ছিল যে এরা সমাজের কোন নিয়মই মানেনা । সবসময় নিয়ম ভাঙতে চায় । বড়দের বা গুরুজনদের শ্রদ্ধা করেনা । কিন্তু সীমার সাথে কথা বলে বিক্রমের সে ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে গেছিল । লিভিংয়ে থাকাকালীন সীমা দিব্যার সাথে দেখা করতে বার কয়েক এসেছিল বিক্রমের বাড়িতে । তখনই মেয়েটাকে সিগারেট খেতে দেখেছিল বিক্রম। দিব্যা আলাপ করিয়ে দিয়েছিল । মেয়েটার ব্যবহার খুব ভালো । বিক্রমের সাথে হেসেখেলেই কথা বলতো ।

সেদিন বাড়িতে ঢোকার সময় বিক্রম ভাসা-ভাসা কয়েকটা কথা শুনতে পেয়েছিল । সীমা ভালোবাসা নিয়ে কি একটা যেন বলছিল । যা বিক্রম পরিষ্কার স্পষ্ট ভাবে শুনতে পাইনি । বাড়িতে ঢুকতেই সীমা কথা বলা বন্ধ করে দেয় । বিক্রমকে দেখেই যে দুই বান্ধবী নিজেদের মধ্যে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে সেটা বিক্রম তখনই বুঝতে পেরেছিল । তাই তাদের মধ্যে কি নিয়ে কথা হচ্ছিল সেটা বিক্রম আর জানতে পারলোনা । তারপরেই তো সীমা গটগটিয়ে বেরিয়ে গেল তার সাথে কোন কথা না বলেই । আর তারপর থেকেই দিব্যার এই অন্যমনস্কতা। এই ঘটনার পর বিদ্যার মত বিক্রমের মনও তার আর দিব্যার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো ।

এই ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর একদিন রাতে বিদ্যার দোকানে বিক্রম আর শবনম গল্প করছে । বিদ্যা কাজের মধ্যে থেকেও এদের কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছে । বিদ্যা দেখেছে বিক্রম আগে কি কি কাজ করতো সেই বিষয়ে শবনমের অসীম কৌতুহল এবং জানার উৎসাহ । বিদ্যার মাঝে মধ্যে মনে হয় বিক্রম তার কাজ নিয়ে শবনমের সাথে ইয়ার্কি করছে , কিন্তু আবার পরক্ষণেই সেই কাজের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিতে পারেনা । বিক্রমের কাছে কোন কাজই ছোট নয় এটা বিদ্যা ভালো মতোই জানে । আর এও জানে যে বিক্রম অনেক ধরনের কাজ করেছে । বিক্রম বলছে , “ একবার ভেবেছিলাম বাস চালাবো ! „

শবনম বললো , “ সেদিন বলেছিলে না কনডাকটাল হবে ? „

“ ওটা তো লোকাল বাসের । লোকাল বাসের কন্ডাক্টরদের শুনেছি অনেক ইনকাম । তাই লোকাল বাসের কন্ডাক্টর হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল । আমি বলছি কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যে বাস গুলো যায় ওই বাস গুলোর কথা । বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির নিজস্ব বাস থাকে । ওই গুলোর ড্রাইভার হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল । „

শবনম --- তালপল

বিক্রম --- হওয়ার চেষ্টা করিনি তো । হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল শুধু ।

এই কথাটায় শবনমের চোখ মুখে যে হতাশা ফুটে উঠলো তা দেখে বিদ্যা ফিক করে হেসে ফেললো । শবনমের হতাশার কারন বিদ্যা বুঝতে পেরেছে । শবনম বিক্রমের কাছ থেকে কোন অতিরঞ্জিত রোমাঞ্চকর একটা কাহিনী শোনার আশা করছিল । সেই আশায় বিক্রম জল ঢেলে দিল ।

বিদ্যার এই মিষ্টি প্রাঞ্জল হাসি অবশ্য শবনম এবং বিক্রম দুজনের কেউই খেয়াল করলো না । প্রাচীণ কালে রানীদের মুখে বিদ্যার মত এই মিষ্টি প্রাঞ্জল হাসির এক ঝলক দেখার জন্য রাজারা তাদের রানীদের মহামূল্যবান রত্ন গহনা উপহার দিত । যে উপহার পেয়ে রানীদের সরু পেলব ঠোঁটে এক মনমুগ্ধকর হাসির রেখা দিত । যা দেখতে পেয়ে রাজাদের জীবন ধন্য হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে কোন নারীর মুখের সেই হাসির কোন মূল্য নেই । বিদ্যার মত শত শত রমণীর মুখে হাসি কেউ দেখতে পায়না । দেখবে কে ? দেখার লোক নেই যে ! দেখার মত লোক না থাকলেও কিন্তু এই হাসি কেড়ে নেওয়ার লোকের অভাব নেই ।

বিদ্যার হাসি মুখ থেকে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই এক অনাহূত এসে বিদ্যার মুখের হাসি কেড়ে নিল । তীর্থঙ্কর দোকান থেকে ফেরার সময় বিদ্যার দোকানে এসে উপস্থিত হলো । বিক্রম আর শবনম খাটের উপর বসে গল্প করছিল । তাই একমাত্র চেয়ারটা ফাঁকাই পড়েছিল । তীর্থঙ্কর সেটাতে গিয়ে বসলো ।

শবনম দেখলো লোকটা আসতেই বিক্রমের মুখ থেকে হাসি মিলিয়ে গেছে । বিদ্যা জিজ্ঞেস করলো , “ চা খাবে ? „

তীর্থঙ্কর , “ হ্যাঁ হলে মন্দ হয়না । „ কথাটা বলতেই বিদ্যা চেয়ার থেকে উঠে পিছনের দরজা দিয়ে উঠোনে নেমে চলে গেল ।

বিদ্যা চলে যেতে তীর্থঙ্কর বিক্রম কে জিজ্ঞেস করলো , “ কেমন আছো ? „

বিক্রম --- ভালো ।

তীর্থঙ্কর --- এই শুক্রবার আসছো তো ?

বিক্রমের জানা থাকলেও না জানার ভান করে বললো , “ কোথায় ? „

তীর্থঙ্কর অবাক হয়ে বললো , “ ভুলে গেলে ? এই শুক্রবার আমার ভাইঝি তিলোত্তমার বিয়ে । তোমাদের সবাইকে নেমতন্ন করেছিলাম তো ! „

বিক্রম --- ও হ্যাঁ ভুলে গেছিলাম।

তীর্থঙ্কর --- এখন মনে করিয়ে দিলাম। এবার যাবে তো ?

বিক্রম সোজাসুজিই বাস্তবটা বললো , “ আমি ঠিক করার কে বলুন । „

কথাটা শুনে তীর্থঙ্করের মুখ পানসে হয়ে গেল । সে আর বিক্রমের সাথে কথা বললো না । কিছুক্ষনের মধ্যে বিদ্যা চা নিয়ে ঢুকলে তীর্থঙ্কর জিজ্ঞেস করলো , “ এই শুক্রবার আসছো তো ? „

বিদ্যার যাওয়ার ইচ্ছা খুব একটা নেই । মনীষা বেঁচে থাকলে বিদ্যার যাওয়ার একটা কারন থাকতো । মনীষা চলে যাওয়ার সাথে সাথে সেই কারনটাও নিজের সাথে নিয়ে চলে গেছে । তাই বিদ্যা অজুহাত দিয়ে বললো , “ এই অবস্থায় দিব্যা তো যেতে পারবে না । আর ওকে একা রেখেও তো কোথাও যেতে পারি না । „

তীর্থঙ্কর কিছুক্ষন নিরবে চা খেল । তারপর বললো , “ আমি দিব্যার সাথে দেখা করে আসছি । „ বলে ভিতরে চলে গেল ।

মেয়ের সাথে তীর্থঙ্করের কি কথা হলো সেটা বিদ্যা না বুঝতে পারলেও বিক্রম তীর্থঙ্করের পলিটিক্স বুঝতে পারলো । মাকে রাজি করাতে পারেনি বলে এখন মেয়েকে রাজি করাতে গেছে সে ।

বিক্রম যা আন্দাজ করেছিল ঠিক তাই হলো । রাতে খাওয়ার সময় দিব্যা বিদ্যাকে বিয়েতে যাওয়ার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করতে লাগলো , “ তোমার তিলোত্তমাদির বিয়েতে যেতে অসুবিধা কোথায় ? „

বিদ্যা বললো , “ তোকে এই অবস্থায় একা রেখে যাব কি করে ? „

দিব্যা অসহিষ্ণু গলায় বললো , “ আমার চিন্তা তোমায় করতে হবেনা । আমি একা থাকতে পারবো । তীর্থঙ্কর আঙ্কেল দুইবার এসে বলে গেল । না গেলে খারাপ দেখায় । আর তুমি তো দিল্লি মুম্বাই যাচ্ছো না । যাবে পাশের পাড়ায় । যাবে , দেখবে , ফটো তুলবে আর খেয়ে দেয়ে চলে আসবে । এইতো । কতক্ষন লাগবে ? „

তীর্থঙ্করের জন্য দিব্যার সহানুভূতি দেখে বিদ্যা বিরক্ত হলো , “ থাক আর ওকালতি করতে হবেনা । „

দিব্যাও ততোধিক বিরক্ত হয়ে বললো , “ ওকালতি করছি না । একটা অনুষ্ঠানে গেলে তোমারও ভালো লাগবে । „

বিদ্যা রেগে গেলেও শান্ত স্বরে জিজ্ঞাসা বললো , “ আমার ভালো খারাপের চিন্তা তুই কবে থেকে করছিস ? „

“ এইজন্য তোমার সাথে কথা বলিনা । একটু কথা বললেই দোষ হয়ে গেল । „

বিক্রম চুপচাপ শাশুড়ি আর বৌয়ের ঝগড়া দেখতে এবং শুনতে লাগলো । একেই সংসার বলে । একটু ঝগড়া হবে , মনোমালিন্য হবে । তাই মা মেয়ের মধ্যে গরম গরম কথাবার্তা শুনতে বিক্রমের ভালোই লাগলো ।

রাতে এই পর্যন্তই থাকলো । বিক্রম নিজে চুপ থেকে মা মেয়ের কথায় নাক গলায়নি বটে কিন্তু খেতে খেতে বিদ্যা আর দিব্যার কথাবার্তা শুনতে শুনতে বিক্রমের একটা কথা খেয়াল হলো । সে যদি এই বিয়েতে যায় তাহলে এটাই তার জীবনের প্রথম বিয়ে বাড়ি হবে । আগে কখনো সে কোন বিয়ে বাড়িতে যাইনি। প্রতিবছর শীতকালে বহু বিয়ে বাড়ির সামনে দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে কিন্তু ভিতরে ঢোকার সুযোগ হয়নি কখনো । বাইরে থেকে বঙ্গ তনয়াদের রূপ লাবণ্য দেখার সৌভাগ্য হলেও বিয়ে বাড়ি খাওয়ার সৌভাগ্য কখনো হয়নি । বিয়ে মানে বেশ একটা জম্পেশ ব্যপার। অবশেষে এই শুক্রবার তার সেই সৌভাগ্য হতে চলেছে । তাই এইসব ভাবতে ভাবতে খাবার টেবিলে বসে বসেই বিক্রমে্য চোখ ঝিলিক দিয়ে উঠলো ‌ ।

তাই পরের দিন গ্যারাজে গিয়ে মনটা খুশি থাকাতে প্রফুল্ল দা জিজ্ঞেস করলো , “ কি ব্যপার এত হাসি খুশি । ব্যপার কি ? „

বিক্রম উৎফুল্ল হয়ে বললো , “ ওই একটা বিয়ে বাড়ি নেমতন্ন আছে তো । তাই । „

প্রফুল্ল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো , “ বিয়ে বাড়িতে নেমতন্ন ! তাতে এত খুশি ? „

“ কখনো যাইনি তো । „

প্রফুল্ল --- কখনো যাসনি মানে ?

বিক্রম বললো , “ যাইনি মানে যাইনি। কেউ কখনো নেমতন্ন করেনি তাই যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। এই শুক্রবার প্রথম বিয়ে বাড়ি যাব । „

বিক্রমের আনন্দের কথা বুঝতে পেরে প্রফুল্ল বললো , “ ও । তা একটা ভালো গিফ্ট নিয়ে যাস । „

কথাটা বিক্রমের মনে ধরলো , তাই সে রাতে বাড়ি ফেরার সময় একটা সোনার আংটি কিনে আনলো । বাড়ি এসে দুই মহিলা সদস্যকে দেখালো । আংটিটা দেখে এবং দাম শুনে বিক্রমের মনে হলো দিব্যা খুশি হলেও বিদ্যা যেন খুশি হলো না । পরে বিদ্যা দিব্যাকে একা জিজ্ঞেস করলো , “ ও আংটি কিনবে তোকে বলেছিল ? „

দিব্যা --- না

বিদ্যা --- বারন করিসনি ওকে ?

দিব্যা ঝাঁঝিয়ে উঠলো , “ আমি বলতে যাব কেন ? ওর টাকা ও কোথায় খরচ করবে সেটা ওর ব্যাপার । „

সাংসারিক ব্যপারে মেয়ের এই অবহেলা উপেক্ষা এবং ঔদাসীন্য দেখে বিদ্যা বিরক্ত হলো । এরকম উদাসীন থাকলে সংসার টিকবে কি করে ? এই কয়েক মাসে বিক্রমের যে হাতখোলা স্বভাব আছে তা বিদ্যা ভালোমত বুঝতে পেরেছে । কিন্তু এইভাবে খরচ করলে তো সংসার চলে না । ভবিষ্যতে নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয় । তাই দিব্যা উদাসীন থাকলেও বিদ্যা না বলে থাকতে পারলো না । পরের দিন দোকান খোলার সময় সে বিক্রমকে বললো , “ এত দামী গিফ্ট তুমি না কিনলেও পারতে । „

বিক্রম বিদ্যার মুখের দিকে অবুঝের মত হাঁ করে চেয়ে থাকতে বিদ্যা বললো , “ নিজের আপন কারোর বিয়ে হলে তবে লোকে এত দামী গিফ্ট দেয় । এরা তো আমাদের কেউ হয়না । এইসব অনুষ্ঠানে ছোটখাটো কিছু দিতে হয় । শাড়ি বা প্লেট সেট এমন কিছু । „

বিক্রম বিদ্যার কথাটা বুঝলো । আংটি কেনাটা ভুল হয়েছে সেটা স্বীকার করলো , “ এই প্রথম কোন বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছি তো তাই কি উপহার দেব সেটা মাথাতে আসছিল না । আপনি বললে অন্য কিছু কেনা যেতে পারে । „

“ দেওয়ার জন্য যখন কিনে ফেলেছো তখন থাক । এটাই দিও । „

শুক্রবার বিক্রম গ্যারাজে গেল না । সকাল সকাল দাড়ি গোঁফ কামিয়ে এসেছে সে । তারপর সারাদিন শুয়ে বসে নুপুরের সাথে খেলা করেই কাটিয়ে দিল । বিক্রম যে বিয়েতে যাওয়ার জন্য খুবই উৎসাহিত তা বিদ্যা ভালো করেই বুঝলো । সন্ধ্যা বেলা বিদ্যা নামমাত্র সেজেগুজে বার হতে গেল । তখন বিক্রম বললো , “ আপনি ওই জামদানীটা পড়ুন না । „

মহালয়ার আগে বিক্রম তার জন্য একটা নীল সবুজ জামদানী পছন্দ করে কিনে দিয়েছিল । সেটা বিদ্যা কখনো পড়েনি । এখনো সেই শাড়ির ভাঁজ খোলা হয়নি । বিয়ে বাড়ি । সব মেয়েই চায় একটু সাজগোজ করে যেতে। কিন্তু তীর্থঙ্কর এর অশীতিপর মা অনুপমা একজন বিধবার বেশি সাজগোজ পছন্দ করেননা । অনেক টেঁরা গা জ্বালিয়ে দেওয়া কথা বলে । তাই সাজগোজ করার মন থাকলেও বিদ্যা তীর্থঙ্করের মায়ের কটু ব্যাঙ্গাত্মক কথার জন্য নামমাত্র সাজগোজ করে বিক্রমের কথার উত্তর দিল , “ এটাই থাক । „

এদিকে বিক্রম ভাবলো অষ্টমীর রাতের সেই ঘটনার জন্য বিদ্যা তাকে এখনো ক্ষমা করতে পারেনি । তাই সে তার পছন্দ করে কিনে দেওয়া শাড়ি পড়েনি।  ক্ষমা করে দিলে তো তার পছন্দ করে কিনে দেওয়া শাড়ি না পড়ার কোন কারন নেই ।

বিদ্যার বাড়ি থেকে তীর্থঙ্করের বাড়ি হেঁটে যেতে বার তের মিনিট লাগে । দিব্যা কে বার তিনেক সাবধানে থাকতে বলে বিদ্যা আর বিক্রম বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো । নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুটো গলি পার করে দুজনে বড় রাস্তায় উঠতেই একটা কালো মার্সিডিজ তাদের পাশ কাটিয়ে চলে গেল ।

পাশাপাশি হাঁটছে দুজনে । শেষ যখন এই দুই অসমবয়সী নরনারী পাশাপাশি একই রাস্তায় হেঁটেছিল তখন এক লম্পট কাম লালসায় লালায়িত পিশাচ বাসের মধ্যে বিদ্যার শরীরে হাত দিয়ে দিয়েছিল । বিদ্যার

সেদিন সেই নর পিশাচের হাত থেকে বিদ্যাকে রক্ষা করে বিক্রম নিজেকে নায়কের সিংহাসনে বসিয়েছিল । কিন্তু আজ বিক্রম নিজেকে সেই সিংহাসনে বসাতে পারছে না । বরং নিজেকে সেই বাসের বৃদ্ধ লম্পটের স্থানে বসে থাকতে দেখছে । কারন বিদ্যা এখনো তাকে ক্ষমা করতে পারেনি । তার পছন্দ করে দেওয়া শাড়ি সে পড়েনি ।

বিক্রম নিজেকে যতোই দোষী মনে করুক , যতোই সেই ঘটনাটা মনে করে নিজেকে দুষতে থাকুক বিদ্যা কিন্তু সেই ঘটনাটার কথা মনে আনতে চায়না । বিক্রম যে ইচ্ছাকৃত সেদিন তার শরীরে হাত দেয়নি এটা সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে । আর অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য মানুষকে একবার অন্তত ক্ষমা করাই যায় । এখানেই হয়তো বয়সের পার্থক্য। জীবন যাপনে পটু বিদ্যার সাথে বিক্রমের পার্থক্য। বিক্রম ভুল করে নিজেকে ক্ষমা করতে পারেনি আর বিদ্যা সেই ভুলের জন্য কলঙ্কিত হয়ে বিক্রমকে ক্ষমা করে দিয়েছে ।

দীর্ঘ নিস্তব্ধ সময় একসাথে হাঁটার পর বিদ্যা যে বাড়িটার সামনে এলো সেটা দেখার পর আর কাউকে বলে দিতে হয় না যে এই বাড়িতে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে। বাড়িটা দুইতলা , ছাদের উপর থেকে লম্বা লম্বা টুনি বাল্ব বাড়ির গা বেয়ে নেমে এসেছে । বাড়ির দেওয়াল দেখে বোঝা যাচ্ছে বিয়ের জন্য নতুন রঙ করা হয়েছে । বাড়িতে ঢোকার মুখে বড় গেট বানানো হয়েছে , তার মাথায় লেখায় সৌম্যদ্বীপ weds তিলোত্তমা। গেটের বাইরে কয়েকজন পাঞ্জাবি পড়ে দাঁড়িয়ে আছে । ভিতর থেকে হইহুল্লোড় এর শব্দ ভেসে আসছে ।

বিদ্যা সেই গেট দিয়ে ঢুকলে বিক্রম ও তার পিছু নিল । জীবনে এই প্রথম কোন বিয়ে বাড়িতে বিক্রম ঢুকছে। তাই মনে এক নতুন ধরনের অনুভূতির সন্ধান পেল । নতুন এক অনুভূতি আবিষ্কারের যে আনন্দ সেটাও বিক্রমের মনকে প্রফুল্ল করে তুললো । বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই চারিদিকে দাঁড়িয়ে থাকা নতুন সুন্দর পোশাক পরিহিত মহিলাদের শরীর থেকে নির্গত সুগন্ধি বিক্রমের নাকে এসে পৌঁছালো। বড় দীর্ঘ প্রঃশ্বাস নিয়ে সে এই সুবাস নিজের বুকের ভিতর ভরে নিল । মন মেজাজ তরতাজা হতেই বিক্রম সেই নতুন আবিষ্কৃত অনুভূতিটাকে খোলা বইয়ের মত পড়তে পারলো । বিয়ে । একদিন সেও বিয়ে করবে । একদিন কেন ! সম্ভবত পরের বছরেই সে বিয়ে করবে । তার এবং বিদ্যার দুটো বাড়িটাই ঠিক এই তীর্থঙ্করের বাড়ির মত সাজাবে । তার বিয়েতে সে তার আবাসিকের সবাইকে আমন্ত্রণ করবে । নতুন পুরানো আবাসিকের ভাই দাদাদের , স্যার ম্যামদের সবাইকেই আমন্ত্রণ করবে সে । কতো আনন্দটাই না হবে । বিক্রম যখন এই নতুন আবিষ্কৃত অনুভূতিটার আনন্দ নিজের সমস্ত শরীর এবং মনে মাখতে ব্যাস্ত তখন একজন তার হাতে একটা ছোট কাগজের কফির কাপ ধরিয়ে দিল । বিক্রম হাসি মুখে কফি নিয়ে খেতে শুরু করলো ।

বিক্রমের এই নতুন আবিষ্কৃত সুখানুভূতিটার যে এক বিপরীত কষ্টের অনুভূতিও আছে সেটা বিক্রম জানেনা । সেই কষ্টের অনুভূতি যার মনকে ব্যথিত করছে সে হলো বিদ্যা। বিক্রম পরের বছরেই তার সম্ভাবনাময় বিয়ের জন্য সুখী , অপরদিকে বিদ্যার কখনো বিয়েই হয়নি , তাই এই বাড়ির বিয়ের পরিবেশ তার দম কেড়ে নিচ্ছে। চারিদিকের হাসি উল্লাসের ধ্বনি এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করছে । সব মেয়েরই স্বপ্ন থাকে তার বিয়ে ধুমধাম করে হোক । নতুন জীবনের সূচনা হোক মহা আন্দময় । কিন্তু দিব্যার বাবার সাথে পালানোর পর তাদের বিয়ে ধুমধাম করে হয়নি । কোর্ট রেজিস্ট্রি করার পর সে দিব্যার বাবাকে অনুমতি দিয়েছিল তাকে ভালোবাসার , তার শরীর স্পর্শ করার । যজ্ঞ করে এত ধুমধাম করে বিয়ে তাদের হয়নি । নিজের মনের গভীরে এই চাপা কষ্টটা যখন অশ্রুর আকারে চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে প্রস্তুত হচ্ছে তখন একজন তার হাতে ছোট কফির কাপ গুঁজে দিল ।

কফির গরম উষ্ণতা হাতের লাগতেই সে নিজেকে সামলে নিল । কফি যখন প্রায় শেষের মুখে তখন একটা নয় দশ বছরের কিশোরী এসে বিদ্যার হাত ধরে নিজের ঠোঁট বেঁকিয়ে অভিমানী স্বরে বললো , “ মাসি তুমি এখন এলে । দিদির তো বিয়ে কখন হয়ে গেছে । „

মেয়েটার মান ভাঙাতে বিদ্যা কথা ঘুরিয়ে বললো , “ ও মা কত সুন্দর দেখাচ্ছে তোকে । „

মেয়েটা খুশি হয়ে বললো , “ সত্যি ? „

“ খুব খুব সত্যি । তোকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে । „

“ এসো তোমাকে দিদির কাছে নিয়ে যাই । „ বলে বিদ্যার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো । সদ্য বিবাহিতা কণেকে দেখানোর জন্য । বিদ্যা তাকে বাঁধা দিল না ।

বিদ্যা মেয়েটার সাথে চলে যেতেই বিক্রম আশেপাশে ঘুরে দেখতে লাগলো । এই অতিপুরানো বাড়িটা তাকে খুব আকর্ষন করেছে । তাই বাড়িটা ঘুরে দেখতে লাগলো । এদিক ওদিক দেখতে দেখতে সে একটা কোলাহলপূর্ণ ঘরে ঢুকল । ঘরে ঢুকে দেখলো নতুন বর বৌ এর ফটোশুট চলছে । আগত অতিথিরা নতুন জুটির সাথে ফটো তুলছে । বিক্রম পাত্র পাত্রীকে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো । একদিন সেও এই বরের মত শেরওয়ানি পড়বে , দিব্যা পড়বে লেহেঙ্গা। তারপর কতো লোকে এসে তার আর দিব্যার সাথে ফটো তুলবে । ঘরের এক কোনে দাঁড়িয়ে নিজের বিয়েতে কত আনন্দ হবে বিক্রম তারই হিসাব নিকাশ করতে লাগলো ।

বিদ্যাকে সেই ছোট্ট মেয়েটা টানতে টানতে এই বর বৌয়ের ঘরের দিকেই আসছিল । পথে তীর্থঙ্করের মায়ের সাথে দেখা । একটা ছোট ঘরে তীর্থঙ্করের মা আরো একজন বৃদ্ধা বসে আছে । এই চার কুড়ি বয়সী মহিলার সাথে কথা বলতে বিদ্যা মোটেও আগ্রহী নয় । তবুও সৌজন্যবোধের জন্য বিদ্যা এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো , “ কেমন আছেন মাসিমা ? „

বৃদ্ধা বললো , “ আমি ভালোই আছি । তুমি কেমন আছো ? „

বিদ্যা হেসে বললো , “ আমিও ভালো আছি । „

সোজাসাপ্টা মুখের উপর কথা বলতে তীর্থঙ্করের মা ওস্তাদ মহিলা । তার প্রমাণ বিদ্যা আগেও পেয়েছে । এখনো পেল । তীর্থঙ্করের মা জিজ্ঞেস করলো , “ কিছু ভেবেছো ? „

মণীষার মৃত্যুর পর তীর্থঙ্করের সাথে তার বিয়ে দেওয়ার কথাটা এই মহিলাই প্রথম তুলেছিল । কিন্তু বিদ্যা রাজি হয়নি । এখন মুখের উপর করা এই প্রশ্নের কোন জবাব বিদ্যা দিতে পারলো না । তীর্থঙ্করের মা বিদ্যার মৌনতার সুযোগ নিয়ে বললো , “ মনীষা একসময়ে তোমার বান্ধবী ছিল । সুখে দুঃখে সবসময় তোমার পাশে থাকতো , তোমায় সাহায্য করতো । সবসময় তোমার আশেপাশে থাকার চেষ্টা করতো । তোমার সাথে বড়বাজার গিয়ে মালপত্র কিনে আনতো । আর এখন সেই মনীষার মেয়ে মাতৃহারা । তোমার কি তার প্রতি কোন দায়িত্ব নেই । নাকি সব দায় দায়িত্ব তার একার ছিল । „

বিদ্যার চোখ ঝাপসা হয়ে উঠলো । এই বৃদ্ধার কথায় তার বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেল । তার সাথেই কেন এমন হয় ? তার জীবনের সিদ্ধান্ত অন্য কেউ কেন নেবে ? যখন সে ছোট ছিল তখন তার বাবাই তার জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । একমাত্র দিব্যার বাবার সাথে পালানোর সিদ্ধান্ত তার নিজের ছিল । সে কি কোন ভুল করেছিল পালিয়ে ? ভালোবাসার মানুষের সাথে ঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সে যদি কোন ভুল না করে তাহলে সেই ঘর সংসার বেশিদিন টেকেনি কেন ? আগে যেমন তার বাবা তার জন্য সিদ্ধান্ত নিত তেমন এখন তার মেয়ে চায় তার জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে । তীর্থঙ্করের মা চায় তার জীবনের বড় সিদ্ধান্ত নিতে । তার কি কোন দাম নেই ? চোখের কোণে জলের ফোঁটা টলটল করে উঠলে মাথা নিচু করে সে আঙুল দিয়ে সেই অশ্রুর ফোটা মুছে নিল ।

মাথা উপরে তুলতেই সে দেখলো মণীষার মেয়ে তার দিকে চেয়ে আছে । কি সুন্দর মুখটা । যখন মণীষা তার বাড়িতে যেত , দোকানে যেত তখন এই মেয়েটাকে সে কত আদর করতো । মণীষা কখনোই তার মেয়েকে চোখের আড়াল হতে দিত না । এখন সেই একরত্তি মেয়েটা মাতৃহারা ।

বিক্রম এখনো পাত্র পাত্রীর সাজে মুগ্ধ। কি অপরূপ সাজেই না সেজেছে তিলোত্তমা । মানিয়েছে দুজনকেই । পাশাপাশি দাঁড়ালে দুজনকে ভালো দেখাচ্ছে। তাকেও নিশ্চয়ই মানাবে দিব্যার পাশে । অবশ্যই মানাবে । আত্মবিশ্বাসী বিক্রম যখন নিজের বুক ফোলাতে ব্যাস্ত তখন কোন সময় তীর্থঙ্কর তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সে খেয়াল করেনি । তার কাঁধে হাত দিয়ে তীর্থঙ্কর জিজ্ঞেস করলো , “ কখন এসেছো ? „

“ কিছুক্ষন আগে । „

“ ফটো তুলেছো ? „

“ না এখনো ....

বিক্রমের কথা শেষ হওয়ার আগেই তীর্থঙ্কর বললো , “ আরো বলো কি ? এসো এসো । „

বিক্রম বাধ্য হয়েই পাত্রপাত্রীর সাথে ফটো তুললো । বিক্রম এতক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করেছে , যারা বর কণের সাথে ফটো তুলছে তারা গিফ্ট দেওয়ার ও একটা ফটো তুলছে তাই সেও পকেট থেকে গিফ্টটা বার করে দিল । এবং ক্যামেরাম্যান সেটারও ফটো তুললো । তিন চারটে ফটো তুলে বিক্রম আবার তীর্থঙ্করের পাশে এসে দাঁড়ালো। তীর্থঙ্কর জিজ্ঞেস করলো , “ তোমার সাথে আর কেউ আসেনি ? „

“ দিব্যা আসেনি ।  শাশুড়ি ... নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বললো , “ মানে দিব্যার মা এসেছে । „

এই প্রথম সে বিদ্যাকে শাশুড়ি হিসাবে পরিচয় দিল । বিদ্যা তো তার শাশুড়িই হয় । তাহলে তাকে শাশুড়ি হিসাবে সম্বধন করার জন্য খারাপ লাগার কথা তো নয় । শাশুড়ি হিসাবেই তো সম্বধন করা উচিত। এখন থেকে শাশুড়ি হিসাবেই পরিচয় দিতে হবে । নিজের মনের সাথে যখন এই দ্বন্দ চলছে তখন যে মেয়েটা বিদ্যার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেছিল সেই মেয়েটা এসে তীর্থঙ্করকে বললো , “ জানো বাবা , মাসি না আমাদের সাথে থাকতে রাজি হয়ে গেছে । „

কথাটা বিক্রমের বুঝতে সময় লাগলেও তীর্থঙ্করের বুঝতে একমুহুর্ত ও লাগলো না । সে মেয়েকে বললো , “ সত্যি ? „

“ হ্যাঁ মাসি ঠাম্মাকে বলেছে শুনেছি । „

মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে তীর্থঙ্কর বিক্রমকে বললো , “ খেয়েছো ? „

“ না । দিব্যার মা আসুক একসাথে বসবো । „

বিদ্যা বিয়েতে রাজি হয়ে গেছে তাই তীর্থঙ্করের নাচতে ইচ্ছে করছে । এই খবরে নিজেকে সামলে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে । সে বিক্রমকে বললো , “ ড্রিঙ্কস করো ? উপরে ছাদে বন্দবস্ত করা হয়েছে । „

বিক্রম স্পষ্ট সোজাসাপ্টা বললো , “ না , আমি ওসব খাইনা । „

তীর্থঙ্করের কথা গুলো বড্ড নির্লজ্জের মত শোনালো , “ বিদ্যা তো রাজি হয়ে গেছে এই বিয়েতে । তাহলে আমি তো তোমার শশুর হয়েই গেলাম । আর বিয়ে হওয়ার পর আমি কিন্তু রাশভারী গুরুগম্ভীর শশুরের অভিনয় করতে পারবো না । „ বলে হাসতে লাগলো

এতক্ষণ পর বিক্রম ছোট্ট মেয়েটার কথা বুঝতে পারলো । বুঝতে পেরে বুকটা খালি খালি লাগতে লাগলো । মুখটা তেতো হয়ে গেল । অবশেষে বিদ্যা রাজি হলো । নতুন একটা জীবন শুরু হতে চলেছে বিদ্যার । কিন্তু এই খবরে তো তার খুশি হওয়ার কথা ! তাহলে তার আর এই বিয়ে বাড়ির পরিবেশ ভালো লাগছে না কেন ? ঘরটায় হঠাৎ হাওয়া কমে এসেছে নাকি ? বড্ড দম বন্ধ হয়ে আসছে । যে মহিলাকে লাল পাড় সাদা সাড়িতে একবার দেখার পর তাকে গোলাপ ভুল দিয়েছে , প্রায় এক বছর সেই মহিলাকে কলকাতার রাস্তাঘাটে খুঁজে বেড়িয়েছে তাকে কি এত সহজে নিজের জীবন থেকে স্মৃতি থেকে ছিন্ষ করা যায় ?

আর ভালো লাগলো না । বিক্রম বাইরে এসে দাঁড়ালো। কিছুক্ষন পর দেখলো বিদ্যাও এইদিকেই আসছে । বিদ্যা এসে বললো , “ দিব্যা বাড়িতে একা আছে ...

বিদ্যার ইশারা বুঝতে বিক্রমের বিন্দুমাত্র সময় লাগলো না “ হ্যাঁ যাওয়া উচিত। চলুন । „

বিয়ে বাড়ি থেকে খালি পেটে বেরিয়ে এসে তারা পাশাপাশি হেঁটে বাড়ি ফিরতে লাগলো । রাতের আকাশের তারা গুলো যতোই সুন্দর হোক সেগুলো সব মৃত । সেই মৃত তারা এখনো জ্বলজ্বল করছে । যেন তারা এখনো জীবন্ত। মৃত তারাদের জীবন্ত হওয়ার এই প্রয়াসের আস্ফালন দেখতে দেখতে বিক্রম বললো , “ ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । „
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
অনেক দিন পরে আপডেট পাওয়া গেল পড়ে খুব ভালো লাগলো, এর পরের অংশ পড়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
Like Reply
খুব ভালো হয়েছে।
Next update Taratari deben
Like Reply
Next update kobe ashbe.? Golpo niye bolar moton kisui pacchi na
But bikrom ke puro thokano hocce....


My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone. ArrowNamaskar


[+] 1 user Likes Patrick bateman_69's post
Like Reply
অসাধারণ  yourock
Like Reply
আচ্ছা কালো মার্সিডিজ গাড়ির আরোহী কি দিব্যার সাথে দেখা করতে গেল?
আমারই কি সমস্যা হচ্ছে নাকি অন্য কারোও সমস্যা হচ্ছে বিদ্যা+দিব্যা নাম নিয়ে।আসলে এ দুটো নাম আমার জন্য একেবারে আনকমন।
এবারের আপডেট ছোট হয়ে গেল মনে হয়।
পরবর্তী আপডেট একটু তারাতাড়ি পাওয়ার আশা করছি।


-------------অধম
Like Reply
Update plz


My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone. ArrowNamaskar


Like Reply
Next update Kobe asbe....?????
Like Reply
Next update Kobe asbe
Like Reply
দেখা যাক নতুন এক জীবন শুরু হয় কিনা বিদ্যার আর সেই জীবনে বিক্রমের অবস্থানটাই বা কি থাকে....
Like Reply
Next update din
অপেক্ষায় আছি
Like Reply
Update Kobe diben...????
Like Reply
গল্প কি এটাও শেষ হবে না
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
দারুন লাগলো।। পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম।।
প্রেম বিনে ভাব নাহি,
ভাব বিনে রস;
ত্রিভুবনে যত দেহ,
প্রেম হস্তে বশ।।
                                                 By: Syealaol(1607-1680)
                                                       Modified
[+] 1 user Likes S_Mistri's post
Like Reply
এনার স্মৃতি ভ্রষ্ট হয়েছে।
Like Reply
Update ki r asbe na...????
Like Reply
Next update Kobe asbe???
[+] 1 user Likes Dip 99's post
Like Reply
VAlo laglo
Like Reply
বহুদিন কোনো আপডেট পাওয়া যাচ্ছেনা, এত দেরি করে আপডেট দিলে গল্প পড়ার মজাটাই নষ্ট হয়ে যায়।
Like Reply
বিচিত্র ভাই
এক মাস তিন দিন হয়ে গেল শেষ আপডেট এর।আপনি কোথায় আছেন।আমি/আমরা আপনার অপেক্ষায় আছি।


-------------অধম
Like Reply




Users browsing this thread: 28 Guest(s)