Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
15-08-2023, 08:39 PM
(This post was last modified: 26-08-2023, 08:31 AM by Bichitro. Edited 5 times in total. Edited 5 times in total.)
সূচিপত্র
বিশেষ ঘোষণা
এই কাহিনীর স্থান কাল পাত্র সংলাপ সবই লেখকের কল্পনাপ্রসূত। বাস্তবের সাথে ইহার মিল পাইলে তা নিছকই কাকতালীয়।
স্মৃতি সুন্দরী গল্পটি প্রতিশোধ সিরিজের তিন নম্বর গল্প । প্রথম গল্প : প্রতিশোধ। দ্বিতীয় গল্প : মিষ্টি মুহুর্ত। তৃতীয় গল্প : স্মৃতি সুন্দরী
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
স্মৃতি সুন্দরী
বিচিত্র
প্রারাম্ভ
ছেলেটা তার ডান হাতে ধরা গোলাপ ফুলটা এগিয়ে দিয়ে মিষ্টি গলায় বললো , “ এটা আপনার জন্য । „
বিদ্যা গোলাপ ফুলটা নিয়ে ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করলো , “ তোমার নাম কি ? „ গোলাপ ফুলটা নেওয়ার সময় বিদ্যার হাত স্থির থাকলেও তার মন মৃদু মন্দ কেঁপে কেঁপে উঠছিল ।
তখন পাস থেকে এক মহিলা গলায় তীব্র ব্যাস্ততা ফুটিয়ে তুলে বললো , “ এই বিদ্যা ! চল এবার , না হলে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যাবে তো ! „
বিদ্যা মহিলার দিকে ফিরে , “ আসছি „ বললো । বিদ্যার ‘ আসছি , বলার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলেটা নিজের যে নাম বললো তা শুনে বিদ্যার মৃদু মন্দ কেঁপে ওঠা মনে ঝড় বইতে শুরু করলো।
একটা লাল গোলাপ দিয়েছিলাম তোমায়
সেই গোলাপের কাঁটা ক্ষতবিক্ষত করেছিল আমায়
দিতে চেয়েছিলাম রক্তিম সিঁদুর তোমার ওই শূণ্য সিঁথিতে
আমার এই সাদাকালো জীবনটাকে চেয়েছিলাম রাঙাতে
চোরাবালির উপর বানিয়েছিলাম পর্ণকুটির
একমুঠো বালুকণার মত রয়েগেলে অধরা
চারিদিকে আছে কতশত স্বপ্নপুরীর সুন্দরী
তুমি যে আমার তিলোত্তমাবাসী স্মৃতিসুন্দরী
The following 13 users Like Bichitro's post:13 users Like Bichitro's post
• a-man, Akash23, bad_boy, Ballterrain, Bumba_1, cuck son, ddey333, Kallol, Nibrass0007, ojjnath, ONE_S, pervy_sage, tuhin009
Posts: 104
Threads: 3
Likes Received: 188 in 67 posts
Likes Given: 152
Joined: Jul 2022
Reputation:
26
সুন্দরীদের স্মৃতি নাকি স্মৃতিতে থাকা সুন্দরী জানতে হলে হয়তো প্রারম্ভের চেয়ে আরো একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হবে। তবে বিচিত্রবীর্য যে আবার রণভূমে নেমেছে সুন্দরীদের চিত্ত ছারখার করতে তাতে সন্দেহ নেই। অন্তত স্মৃতি তাই বলছে আর কে না জানে স্মৃতি সততই মধুর। সুস্বাগতম বা বলা যায় পুনরায় সুস্বাগতম।
Posts: 4,424
Threads: 7
Likes Received: 8,907 in 2,802 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,211
সেই রোমান্টিক গল্প! যাই হোক, শুরুটা মন্দ নয়। তবে এরকম বাচ্চাছেলের পেচ্ছাপের মতো আপডেট কেন? আশা রাখি, পরের আপডেট কিঞ্চিত বড় হবে। ফাইভস্টার, লাইক এবং রেপু সবকিছুই দিলাম।
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(15-08-2023, 09:44 PM)Akash23 Wrote: সুন্দরীদের স্মৃতি নাকি স্মৃতিতে থাকা সুন্দরী জানতে হলে হয়তো প্রারম্ভের চেয়ে আরো একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হবে। তবে বিচিত্রবীর্য যে আবার রণভূমে নেমেছে সুন্দরীদের চিত্ত ছারখার করতে তাতে সন্দেহ নেই। অন্তত স্মৃতি তাই বলছে আর কে না জানে স্মৃতি সততই মধুর। সুস্বাগতম বা বলা যায় পুনরায় সুস্বাগতম।
প্রথম কমেন্টটা আপনার । ধন্যবাদ
❤️❤️❤️
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(15-08-2023, 10:01 PM)Bumba_1 Wrote: সেই রোমান্টিক গল্প! যাই হোক, শুরুটা মন্দ নয়। তবে এরকম বাচ্চাছেলের পেচ্ছাপের মতো আপডেট কেন? আশা রাখি, পরের আপডেট কিঞ্চিত বড় হবে। ফাইভস্টার, লাইক এবং রেপু সবকিছুই দিলাম।
আগেরটা ছিল নন-ইরোটিক রোমান্স। এটা তো ইরোটিক রোমান্স। আর এটাকে আপডেট না বলে ট্রেলার বলা ভালো । তাহলেই সমস্যা মিটে গেল । পরের আপডেট গুলো অবশ্যই বড় হবে ।
❤️❤️❤️
•
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,563 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
রহস্যময় কোনো কুগার লাভ স্টোরি গল্প মনে হচ্ছে
•
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(16-08-2023, 11:22 AM)a-man Wrote: রহস্যময় কোনো কুগার লাভ স্টোরি গল্প মনে হচ্ছে
কুগার শব্দের অর্থ জানি না । তাই কি বলতে চেয়েছেন সেটা বুঝলাম না । বাকি একটু রহস্য তো সব গল্পেই থাকে ।
❤️❤️❤️
•
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,563 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
(16-08-2023, 09:09 PM)Bichitro Wrote: কুগার শব্দের অর্থ জানি না । তাই কি বলতে চেয়েছেন সেটা বুঝলাম না । বাকি একটু রহস্য তো সব গল্পেই থাকে ।
❤️❤️❤️
মূলত যেখানে অল্প বয়স্ক একটি ছেলের সাথে কিছুটা বয়সে বড় একজন মেয়ের সম্পর্কের কথা বুঝায় 8 Reasons to marry a younger man and drop the ‘cougar’ stigma – SheKnows কুগার/cougar একটি স্ল্যাং
Posts: 1,391
Threads: 12
Likes Received: 2,249 in 808 posts
Likes Given: 1,054
Joined: Nov 2019
Reputation:
372
16-08-2023, 10:17 PM
(This post was last modified: 16-08-2023, 10:20 PM by cuck son. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(16-08-2023, 09:09 PM)Bichitro Wrote: কুগার শব্দের অর্থ জানি না । তাই কি বলতে চেয়েছেন সেটা বুঝলাম না । বাকি একটু রহস্য তো সব গল্পেই থাকে ।
❤️❤️❤️
কুগার একটা বড়সড় বিড়াল প্রজাতির প্রানি । অনেকটা চিতাবাঘের মতই । আর এখানে যে অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে , সেটা হচ্ছে একজন বয়স্ক মহিলা যে কিনা কম বয়সি ছেলেদের নিজের রুপ যৌবনের ফাঁদে ফেলে । এখানে বয়স্ক মহিলাকে সেই শিকারি প্রানির সাথে তুলনা করা হয়েছে , আর কম বয়সি ছেলেকে শিকার । ইদুর , খরগোশ টাইপ নিরীহ শিকার ।
আপনি মনে হয় ভাই পর্ণ দেখেন না , দেখলে এতদিনে কুগার সম্পর্কে ধারনা হয়ে জেতো । একদম ভোলাভালা ছেলে খরগোশ টাইপ ভোলাভালা। কোথায় কোন কোনায় আপনার জন্যও কোন কুগার খাপ পেতে বসে আছে কে জানে।
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(16-08-2023, 10:17 PM)a-man Wrote: মূলত যেখানে অল্প বয়স্ক একটি ছেলের সাথে কিছুটা বয়সে বড় একজন মেয়ের সম্পর্কের কথা বুঝায় 8 Reasons to marry a younger man and drop the ‘cougar’ stigma – SheKnows কুগার/cougar একটি স্ল্যাং
বুঝলাম। দেখা যাক আগে কি হয় । এখনও তো বলতে গেলে গল্প শুরুই হয়নি
(16-08-2023, 10:17 PM)cuck son Wrote: কুগার একটা বড়সড় বিড়াল প্রজাতির প্রানি । অনেকটা চিতাবাঘের মতই । আর এখানে যে অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে , সেটা হচ্ছে একজন বয়স্ক মহিলা যে কিনা কম বয়সি ছেলেদের নিজের রুপ যৌবনের ফাঁদে ফেলে । এখানে বয়স্ক মহিলাকে সেই শিকারি প্রানির সাথে তুলনা করা হয়েছে , আর কম বয়সি ছেলেকে শিকার । ইদুর , খরগোশ টাইপ নিরীহ শিকার ।
আপনি মনে হয় ভাই পর্ণ দেখেন না , দেখলে এতদিনে কুগার সম্পর্কে ধারনা হয়ে জেতো । একদম ভোলাভালা ছেলে খরগোশ টাইপ ভোলাভালা। কোথায় কোন কোনায় আপনার জন্যও কোন কুগার খাপ পেতে বসে আছে কে জানে।
বুঝেছি এবার । তবে আমার জন্য কে খাপ পেতে বসে আছে সেটা নিয়ে আমার চিন্তা মাথা ব্যাথা কোনটাই নেই
❤️❤️❤️
•
Posts: 638
Threads: 0
Likes Received: 637 in 392 posts
Likes Given: 1,112
Joined: Mar 2021
Reputation:
58
বিচিত্র ভায়া এতোদিন ছিলে কোথায়? অনেক দিন তোমার সাড়াশব্দ পাওয়া যায় নি। যাইহোক নতুন গল্প শুরু করেছো আশা করছি ফাটাফাটি হবে।
PROUD TO BE KAAFIR
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(18-08-2023, 09:47 PM)Kallol Wrote: বিচিত্র ভায়া এতোদিন ছিলে কোথায়? অনেক দিন তোমার সাড়াশব্দ পাওয়া যায় নি। যাইহোক নতুন গল্প শুরু করেছো আশা করছি ফাটাফাটি হবে।
ছিলাম বাড়িতেই একটু ব্যস্ত ছিলাম। কালকে একটা আপডেট দেব । আর এটা ফাটাফাটি হবে কি ফুটোফাটা হবে সেটা তো ভবিষ্যৎ বলবে
❤️❤️❤️
•
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
প্রথম পর্ব
মানুষের জীবন বড়োই অদ্ভুত এবং অনিশ্চিত । গণনা করে ভবিষ্যতের অতল অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা নিয়তির নিষ্ঠুর লেখন সম্পর্কে কখনোই সুনিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যায় না । তাই মানুষকে ভালো মন্দ সবকিছুর জন্যই সদাপ্রস্তুত থাকতে হয় । সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করে চললেও ফাঁকফোকর দিয়ে এমন কিছু ঘটতে থাকে বা ঘটে যা আমাদের মানসিক এবং শারীরিক দুই সত্ত্বাকে নাড়িয়ে দিতে সক্ষম । অনেকে আবার এই ঘটনা গুলোকে ‘ জীবনের মোড় , বলতে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন । তো এই জীবনের চলার পথে কখন কোন মোড় কোথা থেকে ঘুরে যায় ! সেটা কেউ বলতে পারে না । সেরকমই একটা বড়ো মোড় ঘুরলো বিদ্যার জীবনে । তবে জীবনের এই পুতুলনাচ খেলায় সে অভ্যস্ত । বিয়ের পর মাত্র ছয় বৎসর সুখে সংসার করে , পনেরোটা বসন্ত সে নিজের ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে , বিধবা বেশে কাটিয়েছে ।
এখন বিদ্যার বয়স চল্লিশ ছুঁইছুঁই । বিদ্যা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির বিধবা রুপসী এক বঙ্গ গৃহবধূ। বয়স চল্লিশ ছুঁইছুঁই হলে কি হবে ! বিদ্যাকে দেখতে লাগে বত্রিশ তেত্রিশ বছরের বঙ্গ তনয়া । মুখে কিংবা শরীরে বার্ধক্যের ছাপ তো দূরে থাক যখন বিদ্যা তার মেয়ের সঙ্গে পাশাপাশি হেঁটে যায় তখন তাদের মা মেয়ের মত তো কখনোই দেখতে লাগেনা । বক্ষ ও কটিদেশ এর মত নারী শরীরের যে একান্ত নিজস্ব অঙ্গ গুলি যা এক নারীকে তুলে ধরে এক অপার্থিব রহস্যময়ী যৌন আবেদনময়ী হিসেবে সেই সব অঙ্গের সৌন্দর্য বিদ্যার শরীরে বর্তমান । স্বভাবে সে মিতভাষী , শান্ত । তার চরিত্রের সবথেকে বড় শক্তি হলো তার কোমলকুসুম হৃদয় ।
বিবিডি বাগে গঙ্গার ঘাটের খুব কাছে আড়াই কাঠা জমির উপর একটা দুই তলা বাড়িতে বিদ্যা তার মেয়েকে নিয়ে থাকে । বাড়িটা বিদ্যার নিজের । আসলে এই বাড়িটা বিদ্যার শাশুড়ির বাপের বাড়ির সম্পত্তি । বিদ্যার স্বামী এই বাড়িটা তার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিল । বাড়ির দুতলায় ওঠার সিড়ির বাম দিকে একটা সুন্দর ঘর আছে , তাকে চিলেকোঠার ঘর বলতে বিদ্যা নারাজ । সেই ঘরেই বিদ্যা থাকে । আর সিড়ির ডান দিকে আছে তিন দিকে প্রায় তিনফুট উঁচু পাঁচিল দেওয়া নেঁড়া বা খোলা ছাদ । এখানে ভেজা কাপড় শোকাতে দেওয়া হয় , এবং শীতকালে লেপ কম্বল গরম করতে দেওয়া হয় । বাড়ির পশ্চিম দিকে সুবিশাল অট্টালিকা না থাকার জন্য এই ছাদ দিয়ে গঙ্গার জলে স্টিমার , নৌকা আর ছোট মালবাহী জাহাজের বিচরণ দেখা যায় । আর কিছুদূরে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা হুগলি সেতুর মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ্য।
বিকাল বেলা এই ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখতে খুব ভালো লাগে বিদ্যার । পড়ন্ত সূর্যের কিরণ গঙ্গার নিল জলে আর আকাশের সাদা তুলোর মত মেঘের মধ্যে বিচ্ছুরিত হয়ে এক অপার্থিব মনমাতানো সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে । এই মনমাতানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে বিদ্যা হারিয়ে যায় অতিতের রঙিন দিন গুলোতে । কত বিকাল সে তার ভালোবাসার মানুষের হাতে হাত রেখে , কাঁধে মাথা রেখে কাটিয়েছে তার গোনাগুনতি নেই । এখন তার জীবন সাদা ক্যানভাসের মত ফাঁকা , কোন রঙ নেই তাতে । তাই সে অতীতের দিনগুলোতে ডুবে গিয়ে কিছু রঙ ধার করে এনে সাদা ক্যানভাসটাকে রঙিন করার ব্যার্থ চেষ্টা করে । চেষ্টা ব্যার্থ হওয়ার পর বিদ্যার মন বিষিয়ে ওঠে , একাকিত্ব এবং নিঃসঙ্গতা চারদিক থেকে ঘিরে ধরে তার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে ।
সময়টা বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের একেবারে শেষের দিকে আর ইংরেজি জুন মাসের মাঝামাঝি । দিনের বেলায় প্রখর রোদ আর কাঠফাটা গরমে এই কল্লোলিনী তিলোত্তমার বাসিন্দারা হাঁসফাঁস করছে । সুধুমাত্র দুই পেয়ে বাসিন্দা ছাড়াও চার পেয়ে প্রানী আর পাখিদেরও অবস্থা শোচনীয় । সারাদিন সূর্য তার উষ্ণ কিরণের মাধ্যমে নিজের তেজ দেখানোর পর বিকালের দিকে মিঠে উষ্ণহীন রঙিন কিরণ ছড়িয়ে দিয়েছে আকাশে । যেন সারাদিনের কর্মকান্ডের জন্য সে বিকাল বেলায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে ।
প্রতিদিনের মত আজও বিকালবেলায় দুপুরে স্নানের পর মেলে দেওয়া শাড়ি , সায়া ব্লাউজ তুলতে এলো বিদ্যা । ছাদে এসে বিদ্যা শুকিয়ে যাওয়া শাড়িটা তুলে হাত নিল , ঠিক তখনই গঙ্গার বুক থেকে এক কোমল শীতল হাওয়া ধেয়ে এসে বিদ্যার আঁচল উড়িয়ে তার মনকে শান্ত কোমল করে তুললো । কোন এক অমোঘ ঘোরে সে ছাদের কার্নিশের দিকে যেতে শুরু করলো । হাতে সুধুমাত্র শুকিয়ে যাওয়া সুতির শাড়িটা নিয়ে সে দাঁড়ালো কার্নিশে হাত দিয়ে । গঙ্গার মৃদুমন্দ বাতাস এসে বিদ্যার একরাশি ঘন কালো চুলকে উড়িয়ে দিতে চাইলো । বিদ্যাও তার খোঁপা খুলে চুলগুলোকে উড়তে দিল । এই একরাশি ঘন কালো কেশ বিদ্যার মতোই স্বাধীন হতে চায় । যত্ন চায় , আদর চায় , ভালোবাসা চায় । চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এই বঙ্গ ললনার কালো হরিণ চোখ গঙ্গার জল আর নিল আকাশের মধ্যে পাল্লা দিয়ে রঙের খেলা দেখতে লাগলো । কিছুক্ষনের মধ্যেই সে এই মনমাতানো সৌন্দর্যে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লো ।
তন্দ্রা কাটলো খুব কাছে এক বাড়ি থেকে আসা শাঁখের আওয়াজে । তৎক্ষণাৎ বিদ্যার মনে পড়লো যে সন্ধ্যা দেওয়া হয়নি । তাই সে বাকি কাপড় গুলো তুলে নিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো । নিজের শাড়ি শায়া গুছিয়ে আলনায় সাজিয়ে রেখে দিল । দুপুরে নিজের ভেজা কাপড় শুকাতে দেওয়ার পর দিব্যার শুকিয়ে যাওয়া কাপড় গুলো সে নিচে নামিয়ে এনে গুছিয়ে রেখেছিল । নিজের কাপড় গোছানো হয়ে গেলে বিদ্যা নিচে নেমে লিভিংরুম , রান্নাঘর এবং বাকি দুটো ঘরের লাইট জ্বালিয়ে ঠাকুর ঘরে ঢুকলো । সব ঘরের আলো জ্বালানো হয়ে গেলে বিদ্যা গোপালের সিংহাসনের কাছে এসে বসে পবিত্র মন নিয়ে শাঁখ বাজিয়ে চারটে ধূপকাঠি ধরিয়ে সন্ধ্যা দিল ।
সন্ধ্যা দেওয়া হয়ে গেলে শুধুমাত্র দুটো ধূপকাঠি গোপালের সামনে রেখে আর দুটো হাতে নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলো । বাইরে আসার আগে অবশ্য সে দুটো বেডরুম আর রান্নাঘরের লাইট বন্ধ করে দিল । উঠোনে এসে ধূপকাঠি দুটো তুলসী তলায় দিয়ে দিল । তারপর বাড়িতে ঢোকার বড় লোহার গেট পেরিয়ে রাস্তায় চলে এলো । বিদ্যাকে বড় লোহার গেট খুলে বাড়ির বাইরে আসতে দেখে রাস্তার ওই পাশের একটা সাইকেল সারাইয়ের দোকান থেকে এক বছর পঁয়ত্রিশের লোক বেরিয়ে এলো ।
বাড়ির উঠোনের পরেই লোহার গ্রিল সংলগ্ন বিদ্যার শাড়ির দোকান । এই দোকানে শাড়ি বিক্রি করে এবং সেলাইয়ের কাজ করে বিদ্যা একা হাতে দিব্যাকে লেখাপড়া শিখিয়ে নার্সিং পড়িয়েছে । দোকানের সামনে এসে প্রনাম করে শাটারের চাবির ফুটোয় চাবি ঢুকিয়ে দিল । ঠিক তখনই সেই লোকটা এসে ভারী শাটার তুলে দোকান খুললো । গত ছয় সাত বছর ধরে লোকটা বিদ্যাকে দোকান খোলায় সাহায্য করছে । লোকটা এই সাহায্য নিঃস্বার্থভাবে করলেও বিদ্যা প্রতিবছর পূজার সময় লোকটাকে এক জোড়া ভালো জামা কাপড় দেয় ।
শাটার তুলে দিয়ে লোকটা ইশারায় বললো ‘ রাতে দোকান বন্ধ করার সময় সে এসে শাটার নামিয়ে দেবে । ‚
ইশারা করার কারন হলো লোকটা মূক ও বধির । বিদ্যা এক মুখ হাসি নিয়ে বললো , “ হ্যাঁ ডাকবো । „
লোকটা চলে গেলে বিদ্যা দোকানে ঢুকে লাইটটা জ্বালিয়ে দিল । ভালো ভাবে ঝাঁট দিয়ে দুটো ধুপ ধরিয়ে দক্ষিন দিকের দেওয়ালে নতুন পুরানো পাঁচটা বাংলা ক্যালেন্ডারে ছাপা রাধা কৃষ্ণ , গণেশ , মা কালির সামনে ধূপদুটো গুঁজে দিল । তারপর রোজকার মত পুরানো পায়ে চালানো সেলাই মেশিনের সামনে বসে পড়লো ব্লাউজ সেলাই করার জন্য । কালকের মধ্যে দুটো ব্লাইজ দিতে পারলে নিশ্চিন্ত ।
একাগ্র মনে সেলাই করতে করতে যখন সেলাইয়ের কাজ শেষের মুখে তখন বিদ্যা দিব্যার স্কুটির আওয়াজ শুনতে পেল । মুখ তুলে দেখলো তার মেয়ে বাড়ি ঢোকার বড় লোহার গ্রিলটা খুলছে । উত্তর দিকের দেওয়ালে একটা ঘড়ি টাঙানো আছে । তাতে তাকিয়ে দেখলো সাতটা বাজে ।
দিব্যার বাবার পছন্দের অভিনেত্রী ছিল দিব্যা ভারতী । এতোটাই পছন্দ ছিল যে তার একমাত্র মেয়ের নাম সেই অভিনেত্রীর নামেই রাখার সিদ্ধান্ত নেয় । দিব্যা রায় । বিদ্যা নাম রাখার সময় বলেছিল , “ বাঙালি মেয়ের নাম দিব্যা ! „
দিব্যার বাবা তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রসিকতার ছলে বললো , “ কেন ! হতে পারে না বুঝি ! „
“ হবে না কেন ! হতেই পারে । তবে এর থেকেও তো ভালো ভালো নাম আছে । „
দিব্যার বাবা বুঝতে পারলো যে তার স্ত্রী মেয়ের জন্য নাম ঠিক করেছে । তাই দিব্যার বাবা জিজ্ঞেস করলো “ তোমার কোন নাম পছন্দ হলে বলো । „
বিদ্যা তার মনের মত একটা নাম বললো , “ উরভি „ ।
স্বামী স্ত্রীতে বেশকিছুক্ষন নাম নিয়ে আলোচনা হওয়ার পর ঠিক হয়েছিল যে যদি মেয়ে সন্তান হয় তাহলে নাম রাখা হবে “ দিব্যা „ আর যদি ছেলে সন্তান হয় তাহলে বিদ্যা নিজের মনের মত রাখতে পারবে । এখন সেইসব কথা মনে পড়লে বিদ্যার বুক ফাটে । বিদ্যা নিজের মেয়ের নাম রাখতে চেয়েছিল উরভি । উরভি দেবী লক্ষ্মীর আর এক নাম । আর আজ সেই মেয়েই মায়ের কথা মেনে চলে না ।
বিদ্যা ঘড়িতে সময় দেখে আবার ব্লাউজ সেলাইয়ে মন দিল । আরো কিছুক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর বিদ্যা বুঝলো যে আজকে আর কেউ গল্পো করতে আসবে না । সন্ধ্যার দিকে আশেপাশের বয়স্ক মহিলারা বিদ্যার শাড়ির দোকানে এসে একত্রিত হয় । বয়স্ক বললে ভুল হবে কারন এই গ্রুপে যেমন চল্লিশ বছরের গৃহবধু পোদ্দার গিন্নি আছে ঠিক তেমন আশি বছরের বিধবা বৃদ্ধা মাধবীলতাও আছে। এরা সাধারণত আসে গল্প গুজব করতে , এর ওর খবর নিতে আর সন্ধ্যার জলখাবার খেতে । এতে বিদ্যা খুশিই হয় । সন্ধ্যার খাওয়াটাও হয় আবার একাকিত্বও কাটে ।
সাড়ে নটার দিকে বিদ্যা বুঝতে পারলো যে আজকে আর কোন খরিদ্দারও আসবে না । তাই সে অন্যান্য কাজ গুছিয়ে দশটা বাজতেই দোকান বন্ধ করে দিল । না হলে দিব্যাকে খেতে দিতে দেরি হবে আর সে বাড়ি মাথায় তুলবে । বিদ্যার দোকান বন্ধ করার তোড়জোড় দেখতে পেয়ে লোকটা এসে শাটার নামিয়ে দিলে বিদ্যা তালা মেরে দিল । লোকটার সাইকেলের দোকান বন্ধ হতে এখনো এক ঘন্টা বাকি । বিদ্যা বাড়ি ঢুকে সাড়ে দশটার মধ্যে রাতের খাবার গরম করে মেয়েকে ডাকলো খেয়ে নেওয়ার জন্য ।
রাতে ভাত আর ফুলকপির তরকারি খেতে খেতে কিছুটা ইতস্তত করে , হুট করে দিব্যা বললো , “ মা , আমি ভাবছিলাম লিভিংয়ে যাবো । „
মেয়ের কথাটা বিদ্যা বুঝতে না পারলেও লিভিং শব্দটার মানে সে জানে । আজকাল নতুন ফ্যাশন উঠেছে । বিয়ের আগে ছেলে মেয়ে একসাথে কিছুদিন থেকে একে অপরকে চিনে নেয় । একে লিভিং বলে । মেয়ের কথা বুঝতে পেরে কিছুটা রুক্ষ স্বরে বিদ্যা নিজের আপত্তি জানালো , “ লিভিং ! এই বয়সে ! বয়স কতো তোর ? „
মায়ের কথায় দিব্যা রেগে গিয়ে বললো , “ আমি এখন ম্যাচিউর হয়েছি আর নিজে ইনকাম করি । সমস্যা কোথায় ? আর তুমি বয়সের কথা বলছো ! তুমি তো আমার থেকেও কম বয়সে বাবার সাথে বিয়ে করেছিলে ! „
মেয়ের অভব্য আচরণে বিদ্যার মন বিষিয়ে গেলেও সে দিব্যার উপর রাগ দেখাতে পারলো না “ তোর বাবা থাকলে কখনো রাজি হতো না ! „
দিব্যা গলায় ঝাঁঝ বজায় রেখে বললো , “ বাবা থাকলে রাজি হতো কি হতো না সে পরের ব্যাপার । বাবা নেই , তুমি আছো । তাই তোমাকে বলছি ? „
বিদ্যা কি বলবে কিছুই বুঝতে পারলো না । এইরকম পরিস্থিতিতে মেয়েকে কি বলে আটকাবে সেটা তার জানা নেই । দিব্যা যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে তখন সে লিভিংয়ে যাবেই । তাই সে বললো , “ লিভিংয়ে গেলে পাড়ার লোকে ছিঃ ছিঃ করবে এর থেকে বরং তুই বিয়ে করে নে ...
মায়ের কথার মাঝে দিব্যা ব্যাঙ্গের হাসি হেসে উঠলো , “ তুমি পারবে আমায় বিয়ে দিতে ? একটা বিয়েতে এখন কত খরচা হয় জানো তুমি ? „
মেয়ের কথায় বিদ্যা গুম মেরে গেল । বিদ্যার পড়াশোনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে এডুকেশন লোন নিয়েছিল সে । যার কিস্তি বিদ্যা এখনো দিয়ে যাচ্ছে । মাকে চুপ করে থাকতে দেখে দিব্যা মায়ের হাতে হাত রেখে বললো , “ ছেলেটা ভালো । শুধু লিভিংয়েই তো যাচ্ছি । কোন সমস্যা হবে না । „
মায়ের এই দূর্বলতা সম্পর্কে দিব্যা ওয়াকিবহাল। একটু ভালো ভাবে কথা বললেই বিদ্যা দূর্বল হয়ে পড়ে । এই সুযোগটাই দিব্যা নিতে চাইলো । বিদ্যা কাঁপা স্বরে জিজ্ঞাসা করলো , “ ওর নাম কি ? কি কাজ করে ? „
“ ওর নাম বিক্রম । আর ও গাড়ি ঠিক করে , মানে গাড়ির ম্যাকানিক । একটা গ্যারাজে কাজ করে „
বিক্রম নামটা শুনেই বিদ্যার বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো , দৃঢ় কন্ঠে সে বলে উঠলো “ না। কখনোই না । একজন গ্যারেজ ম্যাকানিক এর সাথে কখনোই না । „ বিদ্যা আপত্তি জানালেও সে কিসের জন্য আপত্তি জানালো সেটা বিদ্যা নিজেই বুঝতে পারলো না । ওর আপত্তি কি বিক্রমের কাজের জন্য নাকি বিক্রমের নামের জন্য ?
মাকে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে প্রায় রাজি করিয়ে এনেছিল দিব্যা । তাই হঠাৎ মায়ের আপত্তি মানতে পারলো না সে , “ আমি অনুমতি চাইছি না । আমি বলছি । „ ভাতের থালা সরিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে দিব্যা বলে চললো , “ আমার কোন সিদ্ধান্তে তুমি কখনো রাজি হয়েছো ! এই জন্য তোমার সাথে আমার কথা বলতে একদম ইচ্ছা করে না । বাবা থাকলে আমার সাথে তুমি এমন করতে পারতে না । „ বলে থালায় আধখাওয়া ভাত রেখে উঠে চলে গেল দিব্যা ।
মেয়ের কথায় বিদ্যা পাথর হয়ে গেল । গলায় কিছু একটা দলা পাকিয়ে এলো । কথা বলতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তার , “ ভাতের উপর রাগ করিস না । খেয়ে যা । „ এই কথাটাও বিদ্যা বলতে পারলো না ।
মেয়ে চলে যাওয়ার পরও বিদ্যা কিছুক্ষন বসে রইলো । খাবার আর গলা দিয়ে নামবে না , এমনিতেও তার খাওয়া হয়ে এসেছিল , তাই সে উঠে পড়লো । এঁটো থালাবাসন মাজতে মাজতে বারবার বুকটা মুছড়ে উঠছিল । অশ্রু ভেজা শিক্ত চোখে রাতের বাকি কাজ শেষ করে , সে উপরে দুতলায় নিজের বেডরুমে চলে এলো ।
বিছানায় নিজের কোমল ক্লান্ত শরীরটা এলিয়ে দিতেই এতক্ষণের আটকিয়ে রাখা অশ্রু বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে এলো । বিদ্যা ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো । খাটের পাশে একটা টেবিলে রাখা তার স্বামির ফটোর দিকে তাকিয়ে বিদ্যা তার সমস্ত অভিযোগ জানাতে লাগলো , “ কেন তুমি আমায় একা ফেলে চলে গেল ? তুমি আমায় কথা দিয়েছিলে আমরা সারাজীবন একসাথে থাকবো । তুমি তোমার কথা রাখোনি । কেন আমায় একা ফেলে চলে গেলে ? তোমার মেয়ে আজও আমায় দোষী ভাবে ...
ফটো উত্তর দেয়না । দিতে পারেনা । বিদ্যার স্বামীর ফটোও কোন উত্তর দিল না । উত্তর না পেলেও বিদ্যা নিজের মনের কথা গুলো তার মৃত স্বামীর উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো , “ ও লিভিংয়ে যেতে চায় । তুমি বলো আমি এতে কিভাবে রাজি হতে পারি ? আমি কি কখনও ওর খারাপ চেয়েছি ? আমি ওর মা । আমি তো ওর সবসময় ভালো চাই । তবুও ও কেন বোঝেনা ? ....
কেঁদে নিজের মন হালকা করলে নাকি ভালো ঘুম হয় । কিন্তু বিদ্যার ঘুম হলো না । মেয়ের চিন্তায় তার ভালো ঘুম আসেনি । সকালে দিব্যাকে ডিমটোস্টের ব্রেকফাস্ট বানিয়ে দিয়ে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলো , “ ছেলেটার বাড়িতে কে কে আছে ? „
ডিমটোস্টে কামড় বসিয়ে দিব্যা বললো , “ কেউ নেই । অনাথ । „
বিদ্যার মনটা খচখচ করে উঠলো । এগারো বছর আগের একটা ঘটনার কথা মনে পড়লো । এগারো বছর আগের সেই ছেলেটাই এই ছেলে কিনা সেটা জানার জন্য সে মেয়েকে বললো , “ ছেলেটার কোন ফটো আছে তোর কাছে ? „
দিব্যা কোন কথা না বলে তার স্মার্ট ফোনের গ্যালারি থেকে একটা ফটো বার করে দিল । এটা একটা সেলফি । তাতে দিব্যা আর ছেলেটা আছে । ফোনটার স্ক্রিনে চোখ দিতেই বিদ্যার আর কোন সন্দেহ রইলো না যে এই যুবক ছেলেটাই সেই এগারো বছর আগের কিশোর । নিজের অগোচরেই বিদ্যা ছেলেটার মুখ দেখতে লাগলো । আগের থেকে এখন মুখে একটু কাঠিন্য এসেছে । পুরুষালি কঠিন মুখ , চোখের দৃষ্টিতে অভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট । আর মুখের রঙটাও যেন আগের থেকে বেশি চাপা পড়েছে । হুম , দিব্যা বলেছিল ছেলেটা এখন গ্যারাজে কাজ করে । ওইজন্যেই হয়তো রোদে পুড়ে চামড়ার রঙ কালো হয়েছে ।
বিদ্যার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে এইভাবে ছেলেটা তার জীবনে আবার ফিরে আসবে ! কাল ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সারাক্ষণ সে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে যে ছেলেটার যেন তাকে না মনে থাকে । প্রার্থনা এইজন্য যে বিদ্যার মেয়ের লিভিংয়ে যাওয়ায় রাজি হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই । কিন্তু একটা কথা বিদ্যার মনে খচখচ করছে । সেটা হলো ওইবয়সে ছেলেরা অনেক কিছু করলেও সেগুলো তাদের সারাজীবন মনে থাকে । তাই এগারো বছর আগের ঘটনা ছেলেটার মনে থাকতেই পারে ।
দুই দিন পরেই দিব্যা নিজের ব্যাগ গুছিয়ে চলে গেল । মেয়ের যাওয়াটা কোন ভাবেই বিদ্যা আটকাতে পারলো না । এমনিতেও সেদিন রাতেই বিদ্যা বুঝতে পেরেছিল মেয়েকে আটকানো যাবে না । তাই সে ছেলের নাম ঠিকানা পরিচয় দিতে বলেছিল । দিব্যা ফোন থেকে বিক্রমের একটা ফটো দেখিয়েছিল আর তার ঠিকানা একটা কাগজে লিখে দিয়েছিল ।
মেয়ে তার যতোই অবাধ্য হোক , যতোই সে তার অমতে গিয়ে লিভিংয়ে যাক , তবুও বিদ্যা মেয়েকে আশির্বাদ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারলো না । মেয়েকে রাস্তা দিয়ে চলে যেতে দেখতে দেখতে বিদ্যা ঠাকুরের কাছে মনে মনে প্রার্থনা করলো , “ হে ঠাকুর মেয়েটা যার কাছে যাচ্ছে সে যেন ওকে সুখী রাখে , আমার কাছে যা পাইনি তা যেন ওর কাছে পায় । „
বিদ্যা বিক্রমের নামটা উচ্চারন করলো না । কারন বিদ্যার মৃত স্বামী নামও তো বিক্রম ছিল ।
The following 13 users Like Bichitro's post:13 users Like Bichitro's post
• a-man, Akash23, Arpon Saha, bad_boy, Ballterrain, buddy12, Bumba_1, kapil1989, Nibrass0007, ojjnath, ONE_S, Rajulove, Roy007
Posts: 4,424
Threads: 7
Likes Received: 8,907 in 2,802 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,211
শুরুটা খুব ভালো হয়েছে একেবারে পারফেক্ট যাকে বলে। তবে ডালহাউসি চত্বরে গঙ্গার ঘাটে আড়াই কাঠা জমির উপর যার দোতলা বাড়ি রয়েছে, সে শাড়ির দোকান দিয়েছে ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে সেলাইয়ের কাজ করবে? যা তা একেবারে। ওই বাড়ির দাম বর্তমান বাজারে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা হবে (কিংবা হয়তো আরও বেশি)। নায়িকার বাসস্থানের আর জায়গা পেলে না বাওয়া? আর 'বিক্রম' ওটা তো আমার দেওয়া নাম। এতকিছু করার পরেও সহ-লেখক হিসেবে আমার নামটা থাকলো না তোমার মতো একজন বিখ্যাত লেখকের উপন্যাসের সঙ্গে .. এটাই আক্ষেপ থেকে যাবে আমৃত্যু।
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(19-08-2023, 08:18 PM)Bumba_1 Wrote: শুরুটা খুব ভালো হয়েছে একেবারে পারফেক্ট যাকে বলে। তবে ডালহাউসি চত্বরে গঙ্গার ঘাটে আড়াই কাঠা জমির উপর যার দোতলা বাড়ি রয়েছে, সে শাড়ির দোকান দিয়েছে ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে সেলাইয়ের কাজ করবে? যা তা একেবারে। ওই বাড়ির দাম বর্তমান বাজারে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা হবে (কিংবা হয়তো আরও বেশি)। নায়িকার বাসস্থানের আর জায়গা পেলে না বাওয়া? আর 'বিক্রম' ওটা তো আমার দেওয়া নাম। এতকিছু করার পরেও সহ-লেখক হিসেবে আমার নামটা থাকলো না তোমার মতো একজন বিখ্যাত লেখকের উপন্যাসের সঙ্গে .. এটাই আক্ষেপ থেকে যাবে আমৃত্যু।
বাড়িটা এখন বিদ্যার হলেও ওটা আসলে ওই শাশুড়ির পৈতৃক সম্পত্তি। তাই বিদ্যা ৫০ কোটির মালিক হলেও সে কিছুই করতে পারবে না । আর সেলাইয়ের কাজে খারাপ কি ?
আমার মত বিখ্যাত লেখক মানে ??? !!! আমি কবে বিখ্যাত হলাম
❤️❤️❤️
•
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,563 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
শুরুটা ভালোই, এককথায় আকর্ষণীয়।
যাহোক সাত সমুদ্র পেরিয়ে আবার লেখার জগতে ফিরে আসার জন্যে ধন্যবাদ। আসলে সাত সমুদ্রের কথা উল্লেখ করলাম কারণ ওই "দিব্যা" নামটা দেখে অকালে মৃত এক নায়িকার কথা মনে পড়লো যার প্রতিমা স্বরূপ নিষ্পাপ চেহারা দেখার পর নাকি তখন ছেলেদের সাত দিনের ঘুম হারাম হয়ে যেত https://www.youtube.com/watch?v=dZM7TxBwAwY
Posts: 4,424
Threads: 7
Likes Received: 8,907 in 2,802 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,211
(19-08-2023, 09:08 PM)Bichitro Wrote: বাড়িটা এখন বিদ্যার হলেও ওটা আসলে ওই শাশুড়ির পৈতৃক সম্পত্তি। তাই বিদ্যা ৫০ কোটির মালিক হলেও সে কিছুই করতে পারবে না । আর সেলাইয়ের কাজে খারাপ কি ?
আমার মত বিখ্যাত লেখক মানে ??? !!! আমি কবে বিখ্যাত হলাম
❤️❤️❤️
কথার পৃষ্ঠ কথা, তার পৃষ্টে কথা, কিন্তু স্বীকার করতে পারলে না, যে নায়কের নামটা আমারই দেওয়া। যাই হোক, এবার যে ভুলটা করে ফেলেছো সেটা তো আর শুধরে নেওয়া যাবে না, তবে এর পরেরবার থেকে একটা বিষয় খেয়াল রাখবে .. জায়গার নাম উল্লেখ করার সময় যদি কোনো বিখ্যাত নাম অর্থাৎ সবার কাছে যেটা পরিচিত সেইরকম কোনো নাম উল্লেখ করো, তাহলে সেই বিষয়ে পড়াশোনা করে তবেই উল্লেখ করবে। তা না হলে এমন একটা নাম দেবে যেটা ভীষণ আনকমন বা ওই ধরনের জায়গার নাম এই শহরে নেই। তাহলে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।
for your kind information ডালহৌসির ওই দিকে গঙ্গার ধারে দোতলা কোনো বসতবাড়ি নেই। যেগুলো আছে, সবগুলোই গেস্টহাউস।
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(19-08-2023, 09:22 PM)a-man Wrote: শুরুটা ভালোই, এককথায় আকর্ষণীয়।
যাহোক সাত সমুদ্র পেরিয়ে আবার লেখার জগতে ফিরে আসার জন্যে ধন্যবাদ। আসলে সাত সমুদ্রের কথা উল্লেখ করলাম কারণ ওই "দিব্যা" নামটা দেখে অকালে মৃত এক নায়িকার কথা মনে পড়লো যার প্রতিমা স্বরূপ নিষ্পাপ চেহারা দেখার পর নাকি তখন ছেলেদের সাত দিনের ঘুম হারাম হয়ে যেত https://www.youtube.com/watch?v=dZM7TxBwAwY
দিব্যার রূপ ছিলোই কাতিলানা। অকালে মারা গেল । নাকি খুন হলো ।
❤️❤️❤️
•
Posts: 3,676
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(19-08-2023, 09:27 PM)Bumba_1 Wrote: কথার পৃষ্ঠ কথা, তার পৃষ্টে কথা, কিন্তু স্বীকার করতে পারলে না, যে নায়কের নামটা আমারই দেওয়া। যাই হোক, এবার যে ভুলটা করে ফেলেছো সেটা তো আর শুধরে নেওয়া যাবে না, তবে এর পরেরবার থেকে একটা বিষয় খেয়াল রাখবে .. জায়গার নাম উল্লেখ করার সময় যদি কোনো বিখ্যাত নাম অর্থাৎ সবার কাছে যেটা পরিচিত সেইরকম কোনো নাম উল্লেখ করো, তাহলে সেই বিষয়ে পড়াশোনা করে তবেই উল্লেখ করবে। তা না হলে এমন একটা নাম দেবে যেটা ভীষণ আনকমন বা ওই ধরনের জায়গার নাম এই শহরে নেই। তাহলে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।
for your kind information ডালহৌসির ওই দিকে গঙ্গার ধারে দোতলা কোনো বসতবাড়ি নেই। যেগুলো আছে, সবগুলোই গেস্টহাউস।
হ্যাঁ নামটা আপনারই দেওয়া ।
আরে মশাই এটা গল্প । জায়গার নাম , কত কাঠা জমি , বাড়ি কি ফ্ল্যাট, কি কাজ করে ? এসবই গল্পের খাতিরে দিতে হয় , গল্পের অপ্রয়োজনীয় একটা অংশ যার সাথে আসল গল্পের কোন যোগ নাও পারে। দিতে হয় তাই দেওয়া । নিজের মত বানিয়ে নেওয়া। এসব ইগনোর করতে হয় । সবই গল্প । আমার বানানো কলকাতা এটা । জব চার্নকের বানানো নয় । তাই এই ডালহৌসি ওই ডালহৌসি নয়
❤️❤️❤️
|