Thread Rating:
  • 40 Vote(s) - 2.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance স্মৃতি সুন্দরী
Opekkhay thaklam
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
বিচিত্র ভাই
অনেক দিন পর এ গল্পের খোজ পেলাম।তাও কমেন্ট সেকশন ঘুরে আসলে আমি গল্প পড়তে অনেক ভালোবাসি অধিকাংশ ক্ষেত্রে গল্পের নাম ও লেখকের নাম মনে থাকে না।এজন্য অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প মিস হয়ে যায়।যেমনটা এক্ষেত্রে হয়েছে।
এ গল্পের কোন তুলনা করা উচিৎ হবে না।প্রতিটা লাইন আমার মনের মতো হয়েছে।স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ফুটে উঠেছে গল্পে।
তবে দুটি কথা আমার বেশ মনে হয়েছে।প্রথম :-আমাদের সকলের হাতেই স্মার্ট ফোন আছে।কজনের ফোনে মা+বাবার ছবি আছে।জানি না।দ্বিতীয় :-মা শুধু মা হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে তাতে কোন ধর্ম  বাধা হয় না।
পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায়।
লাইক ও রেপু


-------------অধম
Like Reply
Update ki r asbe na....????
Like Reply
স্মৃতি সুন্দরী ৩.১ 

নবমীর ভোর । সূর্য তার রক্তিম কিরণ এই ধরিত্রীর বুকে ছড়িয়ে দিয়েছে কিছুক্ষন আগে । সূর্যের কিরণ জীবনের প্রতীক । চিরসবুজ এই বঙ্গভূমির গাছগাছালির ফুল সূর্যের কিরণ শুষে নিয়ে রঙ ধারন করে , প্রকৃতিকে জীবন্ত করে তোলে । কিন্তু বিদ্যার বাড়ির চারপাশে সূর্য কিরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও আজ প্রকৃতি যেন প্রাণহীন । প্রতিদিন সকালে বিদ্যার বাড়ির চারপাশে যে সুরের মাদকতা প্রকৃতিকে সুন্দর থেকে সুন্দরতর করে তোলে আজ সেই মাদকতা নেই । কারন বিদ্যা আজ গান গাইছে না ।

গত দেড় দুই মাসে এই প্রথম বিদ্যা গান গাইছে না । চিলেকোঠার ঘর থেকে কোন হারমোনিয়াম এর যান্ত্রিক কৃত্রিম শব্দের সাথে বিদ্যার কন্ঠের প্রাণবন্ত মিঠে সুর মিশে মাদকতার সৃষ্টি করছে না । সে এখনো নিচের ঘরের বিছানায় শুয়ে আছে । চোখের নিচে কালো দাগ । আর সেই দাগের নিচে শুকিয়ে যাওয়ার অশ্রুর দাগ স্পষ্ট । আর অক্ষি দুটি অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে । সারারাত তার চোখের পাতা এক হয়নি ।

রাতে বিদ্যার ঘর থেকে বার হওয়ার পর বিক্রম নিজের শোওয়ার ঘরে চলে এল । আকস্মিক এই ঘটনার বিভৎস কুৎসিত চেহারা কল্পনা করেই বিক্রমের ঘুম এলো না । আকস্মিক এই ঘটনা যে সারাজীবন তার জন্য এক গ্লানি বয়ে বেড়াবে তার সূচনা হয়ে গেছে । তার কপালের দুই দিকের শিরাদুটো ফুলে উঠেছে । কি দরকার ছিল যাওয়ার ? সেকি আগাগোড়াই এতোটা লম্পট ছিল ? শরীরের খিদে কি তার এতোটাই বেশি যে জানলা দিয়ে ক্ষণিকের দেখা এক দৃশ্যে নিজেকে সংযত করার ক্ষমতাই তার নেই ।

বিক্রম নিজেকে যখন ধিক্কার দিতে ব্যস্ত তখন তার অন্তর থেকে কেউ একজন পরিত্রাহি চিৎকার দিয়ে উঠলো --- না... না... এটা একটা দূর্ঘটনা । আমি গেছিলাম আমার স্ত্রীর কাছে । একজন পুরুষের অধিকার আছে তার স্ত্রীর ঘরে যাওয়ার। কোটি কোটি পুরুষ রাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় , আমিও তেমন গেছিলাম । রাতের অন্ধকারে এরকম ভুল সবার সাথেই হতে পারে । আমার জায়গায় যদি অন্য কেউ থাকতো তাহলে তার সাথেও এটাই হতো ।

এই আকস্মিক অনিচ্ছাকৃত ঘটনায় বিক্রমের কতখানি দোষ ছিল সেটা পরিমাপ করতে করতেই সে বাড়ির ভিতরের বাথরুমে জলের আওয়াজ শুনতে পেল ।

বিদ্যা স্নান করছে । বিক্রমের নোংরা স্পর্শ থেকে সে নিজের শরীরকে সুদ্ধ করছে । নোংরা স্পর্শ তো সেদিন সেই বাসের লম্পটটাও করেছিল । তাহলে কি বিক্রম আর ওই বাসের অভদ্র লম্পটের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই ?

মাথায় আরো কয়েক মগ জল ঢালতে ঢালতে বিদ্যার দুই চোখ বেয়ে অঝোরে ঝরে পড়লো অশ্রু ধারা । মাথায় জল ঢালার জন্য তার চোখের জলের আর কোন হিসাব রইলো না । সব মিলে মিশে গেল । স্নান করে শরীর থেকে সমস্ত কাপড় খুলে ফেললো । একটা গামছা জড়িয়ে ঘরে এসে শাড়ি পড়লো । বিছানায় শুয়ে শুয়ে যখন মনটা শান্ত হলো তখন সে তার প্রশ্নের উত্তর পেল --- পার্থক্য আছে । বিক্রম তো দিব্যার সাথেই এটা করতে চেয়েছিল । তার অভিপ্রায় তো এটা ছিল না । বিদ্যার সাথে যা হয়েছে তা একটা দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই না ।

বিক্রমকে এই অপরাধ থেকে মুক্ত করেও বিদ্যা ঘুমাতে পারলো না । নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হতে লাগলো ।

সকালে উঠে বিদ্যা আর রেওয়াজ করলো না । যেমন হঠাৎ করে একদিন কোন এক নাম না জানা সুখের ঝোড় হাওয়া বিদ্যার হৃদয় স্পর্শ করে তাকে দিয়ে গানের রেওয়াজ শুরু করিয়ে ছিল তেমন হঠাৎ করে আর এক অজানা বিষাদময় দূর্গন্ধ মিশে থাকা হাওয়া তার হৃদয়ের সমস্ত নালী প্রণালী বন্ধ করে দিয়ে তাকে দিয়ে তার রেওয়াজ বন্ধ করিয়ে দিল । কিন্তু বিদ্যার এই অন্যায় প্রকৃতি মুখ বুজে সহ্য করবে কেন ? নবমীর সকালটা তাই যেন গুমোট হয়ে রইলো ।

বিদ্যার মত বিক্রম ও তার দুই চোখের পাতা এক করে উঠতে পারেনি । বিছানা থেকে উঠে নির্বিকার চিত্তে দোকানের সামনের রাস্তায় জল দিয়ে দোকানের শাটার তুলে দিল । তারপর বিদ্যার আগমনের জন্য অসীম অপেক্ষায় বসে রইলো পাথরের মূর্তির মত । অভিশপ্ত অহল্যা যেমন পাথর হয়ে অপেক্ষা করছিল রামচন্দ্রের জন্য। কারন একমাত্র রামচন্দ্রই পারত অহল্যাকে অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে । যে পাপ অহল্যা নিজের অজান্তে করেছিল সেই পাপ খন্ডনের জন্য সে রামচন্দ্রের অপেক্ষা করেছিল কত শত বছর । বিক্রমও গত রাতে যে পাপ নিজের অজান্তে করেছে সেই পাপ খন্ডন করার ক্ষমতা আছে কেবল বিদ্যার কাছে । তাই সে অহল্যার ন্যায় পাথর হয়ে বসে রইলো । কখন এসে বিদ্যা তাকে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি দেবে ।

এক ঘন্টা যায় দুই ঘন্টা যায় কিন্তু এ অপেক্ষা যেন চিরকালের। বিদ্যা এলো না তাকে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে । চটক ভাঙলো দিব্যার কথায় । দিব্যা, “ তুমি দোকান খুলে বসে আছো ? „

বিক্রম দিব্যার কথা বুঝতে পারেনি । তার মাথা যে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে সেটা বিক্রম অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে । বিক্রমের নির্বিকার মুখ দেখে দিব্যা বললো , “ মা তো এই কদিন দোকান খোলেনা সেটা ভুলে গেছ ? „

কথাটা শুনে বিক্রম একটা মেকি হাসি হেসে বললো , “ ভুলে গেছিলাম। „

দিব্যা হেসে বললো , “ মা তোমার জন্য খাবার রেখে দিয়েছে । খেয়ে নাও । „

বিক্রম দোকান বন্ধ করে দিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে বিদ্যার রেখে যাওয়া সকালের খাবার নিয়ে বসলো । খাবার মুখে নিয়েও সে কি খাচ্ছে তা বুঝতে পারলো না । রুটি না পরোটা তা বোঝার ক্ষমতা বিক্রমের লোপ পেয়েছে । কোনরকমে সে খাবার গুলো গলাধঃকরণ করে এঁটো হাতেই বসে রইলো । নিজেকে চালিত করার ক্ষমতা নেই । গতকাল রাতের ঘটনা যেন তার সমস্ত ইচ্ছাশক্তিকে শুষে নিয়েছে ।

ঠিক সেই সময় শবনম এলো । কোলে নুপুর। জেগে আছে । বড় বড় চোখ বার করে কাকে যেন খুঁজছে। শবনমকে দেখে কিছুটা হলেও বিক্রম নিজেকে ওই চলৎশক্তিহীন অন্ধকার গুহা থেকে বার করতে সমর্থ হলো । এঁটো হাত ধুয়ে এসে নুপুরকে কোলে নিল । নুপুর ও তার যে প্রিয় মানুষটাকে খুঁজছিল বিক্রম তাকে কোলে নেওয়ার পর তার চোখমুখের হাসি দেখেই বোঝা গেল যে সে তার প্রিয় মানুষটাকে পেয়ে গেছে ।

বিদ্যা শুয়েই রইলো । সারাদিনের কাজবাজ রান্নাবান্না সবই বিক্রম করলো । দিব্যা অবশ্য গতকাল রাতের ঘটনার কিছুই টের পেল না ।

পরেরদিন অর্থাৎ দশমীর বিকাল । বিদ্যা তার সেই প্রিয় জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে । যেখান দাঁড়ালে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সমস্ত চিন্তা , গ্লানি , অতীতের তিক্ত স্মৃতি ভুলে থাকা যায় । আজ মায়ের কৈলাস গমনের দিন । ছোট বড় প্যান্ডেল থেকে ঠাকুর এনে গঙ্গায় বিসর্জন হচ্ছে। দূর থেকেই বিদ্যা গঙ্গার ঘাটে মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেখতে পাচ্ছে । তাদের কোলাহল কানে না আসলেও তাদের উচ্ছাস উৎসাহ সবই বিদ্যা দেখতে পাচ্ছে ।

হঠাৎ এক দমকা হাওয়া এসে বিদ্যার চিত্ত স্পর্শ করে তার সমস্ত গ্লানি ধুয়ে দিল । যেন মা দূর্গা কৈলাস যাওয়ার সময় তার সমস্ত কলঙ্ক গ্লানি নিজের সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন । যে গঙ্গায় এই মায়ের ভাসান হচ্ছে সেই গঙ্গার জলে তো প্রতি বছর কোটি কোটি পূণ্যার্থী নিজের পাপ ধুয়ে নিজেকে পাপমুক্ত করে । কিন্তু মা গঙ্গা কি তাদের পাপে পাপিত হয় ? নাকি তাদের পাপ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কলঙ্কিত হয় ? বিদ্যা এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিয়ে নিজের গ্লানি থেকেও মুক্তি পেয়ে গেল । মা গঙ্গা কলুষিত হয়না এমনকি পাপিত ও হয়না । এমনকি মা গঙ্গার পবিত্রতাও নষ্ট হয়না । তেমনই অষ্টমীর রাতে তার সাথে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনায় সে কলঙ্কিত হয়নি , অপবিত্র হয়নি , এমনকি কোন পাপ ও হয়নি ।

আরও কিছুক্ষণ ওখানে থেকে বিদ্যা যখন নিজের চিলেকোঠার ঘরে ফিরছিল তখন তার মুখে যে গত দুই দিনে অবসাদ প্রকাশ পেত তা কিছুটা কমতে দেখা গেল ।

পরের দিন দুপুর নাগাদ দিব্যা বিক্রমকে বললো , “ মা বলছিল তোমাকে কাজে যেতে। „

বিক্রম এখন সব সময় মাথা নিচু করে থাকে যাতে বিদ্যার সাথে চোখাচোখি না হয়ে যায় । তাই নিজের মুখটা তুলে চাইতে দিব্যা বললো , “ বসে বসে খেলে কুবেরের ধনও শেষ হতে বেশিদিন সময় লাগেনা । মা আমার দেখাশোনা করতে পারবে । তুমি চিন্তা করোনা । „

বিক্রম বুঝতে পারলো বিদ্যা তাকে তার চোখের সামনে থেকে সরাতে চাইছে । তাই সে পরের দিন থেকেই কাজে যেতে শুরু করলো । তবে সকালে বাজার করে , দোকানের সামনের রাস্তায় জল ছিটিয়ে , দোকানের শাটার তুলে দিয়ে তারপর বিক্রম কাজে যায় । আর রাতে ঠিক দোকান বন্ধ করার আগে চলে আসে । মাঝে দুপুরে সে আর বাড়ি ফেরে না । তখন দোকানের শাটার ফেলার কাজটা ওই সাইকেল সারানোর লোকটাই করে দেয় ।

বিক্রম এবং বিদ্যার মধ্যে সেই ঘটনা অমীমাংসিত থাকলেও দুজনেই স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে । তাদের মধ্যে কখনো কিছু হয়নি এমন ভাব করে থাকলেও বিদ্যার শরীর মাঝে মাঝে কেঁপে কেঁপে ওঠে আর বিক্রম গ্যারাজে কাজ করার সময় থেকে থেকেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে । কিন্তু বিক্রমের এই দীর্ঘশ্বাসে বুকের ভিতর যে ভার সে বয়ে বেড়ায় তা একটুও কমেনা । গ্যারেজ থেকে ফেরার সময় বিদ্যার বাড়ির গলিতে ঢোকার মুখেই বিক্রম শুনতে পায় বিদ্যার পায়ে চালানো সেলাই মেশিনের আওয়াজ । এই সেলাই মেশিনের যান্ত্রিক আওয়াজটা যে একটা মানুষের কাছে কতোটা প্রাণবন্ত হতে পারে তা তখন বিক্রমের মুখ দেখলে বোঝা যেতে পারে ।

সারাদিন বিক্রম গ্যারেজে আর বিদ্যা বাড়িতে থাকলেও বাকি সময় যখন তারা একসাথে থাকে তখন দুজনের মধ্যে শ্মশানের নিস্তব্ধতা বিরাজ করে । খাওয়ার সময় , বিদ্যার দোকানের শাটার নামানোর সময় বিক্রম বিদ্যার দিকে মুখ তুলে তাকায়না। এমনকি সেইরাতের পর বিক্রম তার সাথে একটা কথাও বলেনি । আর এতেই বিদ্যার মনে একটা সন্দেহ বাসা বাঁধলো। সেদিন রাতের ঘটনাটা কোন ভাবে বিক্রম বুঝতে পারেনি তো ! যে ওটা দিব্যা ছিল না , সে ছিল । কথাটা মাথাতে আসতেই বিদ্যার বুকটা ধড়াস করে উঠলো । বিজয়া দশমীর দিন বিদ্যার মনের সমস্ত গ্লানি , ক্লেশ দূর হয়ে গেলেও বিক্রমের মনে এখনো পাপ বোধ আছে । বিদ্যা নিজের এই সন্দেহের কথাটা যত ভাবে তত তার বুক শুকিয়ে যায়। যদি বিক্রম জানতে পারে সেদিন ওটা দিব্যা ছিল না তাহলে তার মেয়ের সাথে বিক্রমের সম্পর্কে কোন ধরনের মনোমালিন্য আসবেনা তো ? কোন ক্ষতি হবেনা তো মেয়ে জামাইয়ের সংসারে ? এই কষ্টটাও বিদ্যাকে বেশিদিন বয়ে বেড়াতে হলোনা ।

কয়েক দিন পরেই লক্ষ্মী পূজা চলে এলো । লক্ষ্মী পূজার দিন সকালে বিক্রম রাস্তায় জল দিয়ে দোকানের শাটার তুলে দিল । তারপর নিজের সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লো গ্যারাজের উদ্দেশ্যে । কলকাতা জাদুঘর অব্দি যেতেই তার ফোন বেজে উঠলো । সাইকেল থামিয়ে ফোন ধরতেই ফোনের ওপর প্রান্তে প্রফুল্লদার গলা শোনা গেল , “ তুই কি বেরিয়ে গেছিস ? „

বিক্রম --- হ্যাঁ কেন ?

প্রফুল্ল --- আজ গ্যারেজ বন্ধ ।

বিক্রম --- তুমি এটা এখন বলছো ! আমি এতদূর চলে এসছি ।

প্রফুল্ল --- আমি কি জানতাম ছাই । এসে দেখি গ্যারেজ বন্ধ। তোকে আজ আর আসতে হবেনা ।

বিক্রম --- ঠিক আছে । বলে বিক্রম আবার বাড়ি চলে এলো । বিদ্যার দোকানের সামনে এসে দাঁড়াতেই সে দেখলো শবনম দোকানের ভিতরে বসে আছে । শবনম তাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো , “ ফিলে এলে ? „

বিক্রম তার সাইকেলটা কাঠগোলাপ গাছে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে বললো , “ হ্যাঁ গ্যারাজ বন্ধ । „

শবনম , “ ভালো হয়েছে । এই নাও ধলো তোমাল ভাগ্নিকে । আমাল অনেক কাজ আছে । „ বলে বিক্রমের কোলে নুপুরকে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল ।

কিছুক্ষন নুপুরের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর বিক্রমের বুকে এক অস্বাভাবিক বল এলো । এতদিন বিদ্যার সাথে কথা বলার সাহস যে জোগাতে পারেনি । এখন সেই সাহস এই নুপুরের শান্ত নিস্পাপ মুখটা দিয়ে দিল । বিক্রম জিজ্ঞেস করলো , “ আপনি বাড়িতে কোন পূজা করেননা ? „

“ না „ একটা শব্দেই বিদ্যা উত্তর দিল । উত্তরটা দিয়ে বিদ্যা নিজেই অবাক হয়ে গেল । তার মনে বিক্রমের জন্য রাগ ছিল তা তো সে বুঝতে পারেনি । কিন্তু সেদিনকার ঘটনাতে তো বিক্রমের কোন অপরাধ ছিলনা । তাহলে এই রাগ কিসের জন্য ? বিদ্যা তা না বুঝতে পারলেও এটা বুঝতে পারলো যে বিক্রম তার সাথে কথা বলছে । এতদিন পর সম্পর্কটা স্বাভাবিক করার সুযোগ পাওয়া গেছে । তাই বিদ্যা বললো , “ সরস্বতী পূজা করার ইচ্ছা ছিল । কিন্তু একা হয়ে ওঠেনা । „

কথাটা শুনে বিক্রম মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো পরের বছর সে এই বাড়িতে সরস্বতী পূজা করবেই । শুধুমাত্র বিদ্যার জন্য না । তার নিজের জন্যেও , নিজের পরিবারের জন্যেও ।

প্রায় এক ঘন্টা পর শবনম এলো । দেখে বোঝা যাচ্ছে সে কাপড় কেচে এসেছে । এসে কিছুক্ষন এদিক ওদিককার কথা বলে শবনম বিক্রমের মুখ লক্ষ্য করলো । বিক্রমের এই মনমরা হয়ে থাকা এবং তার শুকিয়ে যাওয়া মুখ শবনমেরও নজর এড়ালো না। সে ইয়ার্কির সুরে জিজ্ঞেস করলো , “ দাদা তোমাল কি কেউ মালা গেছে ? „

বিক্রমের সাথে শবনমের সম্পর্কটা সহজ এবং সরল । তাদের মধ্যে কোন জটিল সম্পর্ক থেকে থাকলে শবনম কোন ধরনের ইয়ার্কি মেরে কথা বলতে পারতো না । একটা জটিল সম্পর্কে অপরের মন বুঝে কথা বলতে হয় । একটা জটিল সম্পর্কে একে অপরকে হারানোর ভয় থাকে । তাই অনেক সময় অনেক না বলা কথা থেকে যায়। অনুভূতি গুলো একে অপরের গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করলেও মন খুলে কথা বলা যায় না । উল্টো দিকে একটা সহজ সরল সম্পর্কে একে অপরকে হারানোর ভয় থাকে না । মন খুলে অকপটে নিঃসঙ্কোচে নির্দিধায় নিজের মনের কথা সামনের জনকে বলা যায় । তাই শবনমও এইভাবে ইয়ার্কির সুরে বিক্রমের মনের কথা জানতে চাইতে পারলো ।

শবনমের প্রশ্নে বিক্রম ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো । শবনম হাসছে। বিক্রম বোঝার চেষ্টা করেও কিছু বুঝতে পারলো না তাই সে জিজ্ঞেস করলো , “ মানে ? „

শবনম বললো , “ তুমি সালাক্ষন এমন মুখ কলে থাকো যেন তোমাল কেউ মালা গেছে । তাই জিজ্ঞেস কলছি । „

এই কথাটা মরুভূমির বুকে দিকভ্রষ্ট এক ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত মৃতপ্রায় পথিকের সামনে একটা ক্ষুত্র জলাধার দেখা দিলে যেমন তার বেঁচে থাকার ইচ্ছা সকল সীমা ছাড়িয়ে যায় তেমন গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যার বুকে বাসা বেঁধে থাকা  যে আশঙ্কা তাকে প্রায় মৃতপ্রায় অবস্থায় এনে ফেলেছিল এখন শবনমের করা প্রশ্নটা তাকে সেই অবস্থা থেকে টেনে তুললো ।

বিক্রম বললো , “ অনেক খাটাখাটনি যাচ্ছে তো , তাই ।

শবনম বললো , “ খাটাখাটনি তো আমলাও কলি। „

বিক্রম এবার না হেসে পারলো না , “ এতদিন বাড়িটা ফাঁকা পড়েছিল । ধুলো ময়লা জমে নোংরা হয়েছিল । দুপুরে গ্যারেজ থেকে ফিরে প্রথমে ঘর গুলো যতোটা পরিষ্কার করা যায় ততোটা করি । তারপর স্নান করে রান্না করে খেয়ে আবার গ্যারেজে যাই। তার উপর এখান থেকে ওখানে সাইকেলে যাওয়া আসার ও তো একটা ধকল আছে ।

শবনম --- কে বলেছে এত খাটাখাটনি কলাল ? বাসে গেলেই তো পালো ।

বিক্রম --- তাই ভাবছি । কিন্তু বাস ধরতে গেলে এখান থেকে সেই ধর্মতলায় গিয়ে ধরতে হবে ।

বিদ্যার এতদিনের চিন্তা যে অমূলক তা বুঝতে পেরে তার ধড়ে প্রাণ এলো । চোখ বন্ধ করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো , “ কাল থেকে আমি টিফিন করে দেব , দুপুরে ওটা খেয়ো। আর এখন ঘরদোর পরিষ্কার করার দরকার নেই । একদিন আমি গিয়ে করে দেবো । „

বিদ্যার কথাটাতে শবনমের মুখে হাসি ফুটে উঠলো যা বিক্রমের নজর এড়ালো না । নুপুরকে কোলে নিয়ে নিজের বাড়ি যাওয়ার সময় সে বিক্রমকে বললো , “ দেখলে ! আমাল জন্য তোমাল দুপুলেল খাবাল জোগাল হয়ে গেল । „

বিক্রম যে একটু হলেও চুপচাপ স্বভাবের কম কথা বলা মানুষ সেটা শবনম ভালো করেই জানে । তাই শবনম ভেবেছিল কোন কারনে হয়তো বিক্রম তার অসুবিধার কথা বাড়িতে কাউকে বলতে পারছিল না । এখন তার করা প্রশ্নের জন্য বিক্রম এই সমস্যার একটা সমাধান পেল । দুপুরে নিয়মিত খাবারও পেল আর ঘর পরিষ্কার করার ঝামেলাও রইলো না । আর এইসব হলো শুধু শবনমের জন্য। তাই শবনম কিছুটা গর্ব অনুভব করছে এটা বিক্রম বুঝতে পারলো । তাই এই মেয়েটার সহজ সরল মনের জাদুতে এতদিন পর বিক্রমের ঠোঁটে হাসি দেখা দিল আর তার মুখটাও খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো ।

এই ঘটনার পর আর দুজনের মধ্যে সেই শশ্মানের নিরবতা বিরাজ করেনা । প্রয়োজন পড়লে দুজনেই একে অপরের সাথে কথা বলে । দরকারি কথা বললেও অষ্টমীর রাতের ঘটনাটা দুজনের মধ্যে অমীমাংসিতই থেকে গেল ।

এই জগৎ সংসারে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও কোন নারী নির্যাতিত হচ্ছে , নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শুধুমাত্র বাসে ঘাটে রাস্তায় অফিসে অপরিচিত নারী মাংস লোভী লম্পট পশুরাই যে এই নির্যাতন করছে এমন নয় । কোথাও কোথাও পরিচিত পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও ঘরের নিস্পাপ শিশুরাও এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে । আইনের মারফত এই পশুরা শাস্তি পেলেও সেটা সংখ্যায় খুব কম । নিয়তিও যেন এদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ। তবুও সময় কাটে কালের নিয়মে। এক বা একাধিক নারীর শ্লীলতাহানি সময়কে ধরে রাখতে পারেনা । আটকিয়ে রাখতে পারেনা । বিক্রম বিদ্যাকে শ্লীলতাহানি করেনি । এখানে তো সময় থমকিয়ে থাকার কোন কারন নেই । এই পরিবারেও সময় কালের নিয়মেই অতিবাহিত হতে লাগলো ।

নভেম্বর মাস । কলকাতার পারদ অল্প অল্প করে কমছে । এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে দিব্যার রেগুলার চেকআপের ডেট আছে সেটা সে বিক্রমকে বলে রেখেছিল । নির্দিষ্ট দিনে বিক্রম নিজের গাড়ি করে নিয়ে গেল তাকে । দিব্যা যে নার্সিংহোমে ডিউটি করে সেখানেই ।

এখন দিব্যাকে দেখে মনে হয় ছয় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা গুলো করার পর তারা এক গায়নোকোলজিস্ট এর চেম্বারে গিয়ে বসলো । দিব্যা এই নার্সিংহোমে ডিউটি করলেও সবাইকে এখনো চিনে উঠতে পারেনি । শুধুমাত্র মুখ দেখলেও নাম ঠিকানা এখনো সবার জানা হয়ে ওঠেনি । তেমনই এই মহিলা ডাক্তারকেও আগে কয়েকবার দেখে থাকলেও নাম শকুন্তলা ছাড়া আর কিছুই জানা নেই । ডাক্তার দিব্যাকে জিজ্ঞেস করলো , “ তোমাদের ইন্টিমেসির কত মাস হলো ? „

দিব্যা --- এই সাত মাস মত হবে ।

ডাক্তার ভুরু কুঁচকে সংশয় প্রকাশ করলো , “ কিন্তু বেবি দেখে তো মনে হচ্ছে আট মাসের বেশি ! „

বিক্রম উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো , “ এতে কোন অসুবিধা হবে ম্যাডাম ? „

ডাক্তার আশ্বস্ত করে বললো , “ অসুবিধার কিছুই নেই । বেবির গ্রোথ বেশি। এইসব ক্ষেত্রে বেবির জন্মানোর এক্সেক্ট কোন ডেট বলা কঠিন । „

বিক্রম চিন্তা মুক্ত হলে মহিলা ডাক্তার বললো , “ মনে হচ্ছে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। „ তারপর দিব্যার দিকে ফিরে বললো , “ এই সময়টা কিন্তু খুব ভাইটাল। যত্ন নেবে নিজের । আর ভারি জিনিস তুলবে না । আর যত কম কাজ করা যায় তত ভালো । „

ডাক্তারের কাছ থেকে আরো কিছু উপদেশ এবং দিব্যার দৈনন্দিন খাবার দাবারের একটা তালিকা নিয়ে দুজন চেম্বার থেকে বার হলো । বিক্রমের মন উৎফুল্ল। আর মাত্র দুই মাস । তারপর সে একজনের বাবা হবে । দিব্যা বললো , “ তুমি গাড়ি বার করো । আমি আমার কলিগদের সাথে একটু দেখা করে আসছি । „

“ হ্যাঁ „ বলে বিক্রম নার্সিংহোম থেকে বেরিয়ে এলো ।

আজ যে দিব্যার চেকআপের তারিখ আছে তা সীমার অজানা । আজ তার টানা দশ ঘন্টা ডিউটি চলছে । মাঝে একটু ফাঁক পেয়ে ছাদে গিয়ে সিগারেট খেয়ে ফিরছিল । সিগারেট খেয়ে ছাদ থেকে নামার সময় বরাবরই সে লিফ্টে না চড়ে সিড়ি দিয়েই নামে । এই সময় লিফ্টে চড়লে অনেক অসুবিধা । করিডর দিয়ে যাওয়ার সময় , হার্ট স্পেশালিস্ট ড. রাজেশ ঘোষালের চেম্বারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দরজায় লাগানো ছোট কাঁচ দিয়ে চেম্বারের ভিতর দেখতে পেল । রাজেশ স্যার আর দিব্যা গল্প করছে ।

দরজা ঢেলে ভিতরে ঢুকতে গিয়েও থমকিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো । ভিতর থেকে কিছু কথা তার কানে ভেসে এলো । দরজা আর ঢেলা হলোনা । কথাগুলো অস্পষ্ট হলেও তার বুঝতে কোন অসুবিধা হলোনা। কথা গুলো বোধগম্য হতেই সীমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল । পায়ের তলাটা যেন কাঁপছে । একটা মানুষ কিভাবে এরকম করতে পারে ? কথাটা ভাবতেই তার মাথা ঝিমঝিম করে উঠলো ।

সীমার ওখান থেকে চলে যেতে ইচ্ছে হলো কিন্তু তাকে দেখে দিব্যার রিয়েকশন কেমন হয় সেটা দেখার জন্যেই সে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বাকি কথা গুলো শুনলো । ভিতরের কথা যতো তার কানে এলো ততো তার বিস্ময়ের অন্ত রইলো না । তার ছোটবেলার বান্ধবী এতোটা নিচে নামতে পারলো ?

কয়েক মুহূর্ত পরেই দিব্যা চেম্বার থেকে বার হতেই যেন ভুত দেখলো । সীমাকে দেখে নিমেষে তার মুখ রক্ত শূন্য হয়ে গেল । সীমার কঠিন দৃষ্টি যেন তার অন্তরটা ছারখার করে দিচ্ছে। সীমা কেবলমাত্র দিব্যার দিকে এক কঠিন দৃষ্টি হেনে চলে গেল । দিব্যার সীমাকে পিছন থেকে ডাকার সাহসে কুলালো না ।

কয়েক মুহুর্ত ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে দিব্যা রাস্তায় চলে এলো । বিক্রম আগে থেকেই গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল । দিব্যা চুপচাপ গাড়িতে ঢুকলে বিক্রম গাড়ি ছুটিয়ে দিল ।

বাড়ি এসে দিব্যা এক মুহুর্ত স্থির থাকতে পারলো না । তার মনে একটা আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে । যদি আশঙ্কাটা সত্যি হয় তাহলে তো সর্বনাশ। এতদিনের কষ্ট , ত্যাগ সব জলে চলে যাবে ।

বিকালের দিকে দিব্যা সীমাকে ফোন করলো।  কাঁপা ভীত কন্ঠে বললো , “ তুই আসতে পারবি একটু ? „

সীমা --- কোথায় ?

দিব্যা --- আমার বাড়িতে ।

সীমা --- কি জন্য ডাকছিস সেটা আগে বল ।

দিব্যা --- তুই আয় না বলছি । বলে ফোনটা কেটে দিল ।

তার মনে একটা সংশয় তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। মনটা বড্ড খচখচ করছে । বারবার কু ডাক ডাকছে। সকালে সীমা তার দিকে যেভাবে তাকিয়ে ছিল তাতে নিশ্চিত যে সে ঘরের ভিতরের তার আর রাজেশ স্যারের কথা শুনেছে । দিব্যা নিজের অজান্তেই বিড়বিড় করে বলতে শুরু করলো --- এবার কি করবো আমি ? উফফফ মাথা ব্যথা করছে । যদি সীমা মাকে আর বিক্রমকে সব বলে দেয় । তাহলে ? তাহলে কি হতে পারে সেটা ভেবেই দিব্যার মুখ রক্তশূন্য হয়ে গেল ।

সীমা এলো রাত আটটার কিছু পড়ে । এসে বিদ্যার দোকানে বসে বিদ্যার খোঁজ খবর নিল । তারপর বাড়ির ভিতরে ঢুকলো । দিব্যা ড্রয়িংরুমেই বসে ছিল । সীমাকে দেখে দিব্যা সোজা হয়ে বসলো । সীমা বললো , “ বল কি বলবি ? „

সীমার মুখোমুখি হওয়ার জন্য দিব্যা মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিল । তবুও সীমা বাড়িতে ঢুকলে দিব্যা কিছুটা হলেও বিচলিত হয়ে পড়লো , “ বস । „

সীমা একটা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসলে দিব্যা জিজ্ঞেস করলো , “ কিছু খাবি ? „

সীমা রুক্ষ স্বরে বললো , “ না বাড়ি গিয়ে একেবারে ডিনার করবো । তুই কি বলবি বল । „

দিব্যা সীমার রুক্ষ স্বর শুনে আরো ঘাবড়ে গেল , “ এরকম করছিস কেন ? আগে তো কখনো এমন ব্যবহার করিস নি । „

সীমা তার কন্ঠে রুক্ষতা বজায় রেখে বললো , “ আগে তো তোকে চিনতাম না , তাই । „

দিব্যা , “ মানে ? „

সীমা এবার কিছুটা ঝাঁঝ দেখিয়ে বললো , “ মানেটা তুই খুব ভালো ভাবেই জানিস দিব্যা। „

এই কথাটাতেই দিব্যা বুঝতে পারলো যে তার সন্দেহ অমূলক নয় । সীমা তার আর রাজেশ স্যারের কথা শুনেছে । সীমা কথাটা বলতেই দিব্যা যেন হুমড়ি খেয়ে সীমার পায়ের কাছে পড়লো । সীমার চেয়ারের ডানদিকে বসে সীমার ডান হাত নিজের মুষ্টিবদ্ধ করে দিব্যা বললো , “ আমার আর কিছু করার ছিল না রে । আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না । নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হচ্ছিল । „ কথা গুলো বলতে বলতে দিব্যার চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা অশ্রু মেঝেতে বৃষ্টির ফোটার মত টপটপ করে পড়ছিল । দিব্যার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসলেও যে জঘন্য কাজ সে করেছে তার জন্য তার মুখে দুঃখের ছাপ কম বরং ভয়ের বহিঃপ্রকাশ বেশি।

সীমা উঠে দাঁড়িয়ে দিব্যার হাত থেকে নিজের হাত মুক্ত করতে করতে বললো , “ ছাড় আমায় , ছাড় , কি করছিস কি তুই ? „

দিব্যা উঠে দাঁড়িয়ে বললো , “ প্লিজ তুই মা আর বিক্রমকে কিছু বলিস না । প্লিজ সীমা …

সীমা --- আমি না বললেও এক না একদিন তো ওরা জানবে । তখন ? তখন কি করবি তুই ? কতদিন লুকিয়ে রাখবি ?

দিব্যা চোখের জলে দুই গাল ভাসিয়ে দিয়ে বললো , “ আমি অন্য কোথাও চলে যাব । দূরে কোথাও ...

সীমা আর দিব্যা সেই কিন্ডারগার্টেন থেকে একসাথে পড়ছে । কলেজ বয়সে এসে দিব্যার কান্ডকারখানা দেখে দিব্যাকে সীমার একটা কথা বলতে খুব ইচ্ছা করতো । যা কখনোই তার বলা হয়ে ওঠেনি । হয় যথোপযুক্ত সময় হয়ে ওঠেনি না হলে দিব্যাকে মুখের উপর কথাটা বলার সাহস হয়ে ওঠেনি । কিন্তু নিয়তি যেন আজ এই নির্দিষ্ট মুহুর্তটাকে সীমার জন্যেই সৃষ্টি করেছে । কিন্তু অন্য সময় হয়তো সীমা কথাটা বললে তার ইগো সন্তুষ্ট হতো । এখন কথাটা বলার সময় বিদ্যা কাকি আর বিক্রমের কথা ভেবে সীমার মন কিছুটা হলেও ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো । সীমা বললো , “ তুই ভালোবাসতে জানিস না দিব্যা। ভালোবাসা কি সেটাই তুই জানিস না । „
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
বহুদিন পর আপডেট পাওয়া গেল, কিন্তু এত দেরি করে এল যে ভেবেছিলাম আর হয়তো আপডেট পাওয়া যাবেনা। যাকগে এর পরের অংশ পড়ার জন্যে অপেক্ষায় রইলাম।
Like Reply
অনেক দিন পর আপডেট পেলাম। খুব ভালো হয়েছে। পরের আপডেট গুলো তাড়াতাড়ি দেবেন।
Like Reply
(31-12-2023, 08:41 PM)pradip lahiri Wrote: বহুদিন পর আপডেট পাওয়া গেল, কিন্তু এত দেরি করে এল যে ভেবেছিলাম আর হয়তো আপডেট পাওয়া যাবেনা। যাকগে এর পরের অংশ পড়ার জন্যে অপেক্ষায় রইলাম।

হ্যাঁ দেরি তো হয়েছে অনেক । পরের অংশ খুব শীঘ্রই আসবে । চেষ্টা করবো প্রতি সপ্তাহে একটা করে আপডেট দেওয়ার।

(01-01-2024, 06:58 PM)Dip 99 Wrote: অনেক দিন পর আপডেট পেলাম। খুব ভালো হয়েছে। পরের আপডেট গুলো তাড়াতাড়ি দেবেন।

ধন্যবাদ। পরের আপডেট খুব শীঘ্রই আসবে ।

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
দুজনের টানাপোড়ন দেখে সন্দেহ হয়েছিল।তাইতো বলি এমন মেয়ে এ ছেলেকে কেন বশ করলো।ডঃরাজেশ ঘোশালের পাপ আমাদের নায়কের ঘাড়ে চাপানো।
ভালোই হলো নায়ক+নায়িকার মিলনের পথ সুগম হলো।
পরবর্তী আপডেট জলদি জলদি চাই।
লাইক ও রেপু


-------------অধম
Like Reply
আমার আগের পর্বেই সন্দেহ হয়েছিল, যখন দিব্যা ফোনে মেসেজ করছিল। এখন বুঝতে পারলাম গ্যাঁড়াকলটা। Big Grin
একটু তাড়াতাড়ি আপডেট চাই। অধীর অপেক্ষায় রইলাম।
প্রেম বিনে ভাব নাহি,
ভাব বিনে রস;
ত্রিভুবনে যত দেহ,
প্রেম হস্তে বশ।।
                                                 By: Syealaol(1607-1680)
                                                       Modified
[+] 1 user Likes S_Mistri's post
Like Reply
Khub valo laglo
Like Reply
(26-12-2023, 08:33 PM)অভিমানী হিংস্র প্রেমিক। Wrote: বিচিত্র ভাই
অনেক দিন পর এ গল্পের খোজ পেলাম।তাও কমেন্ট সেকশন ঘুরে আসলে আমি গল্প পড়তে অনেক ভালোবাসি অধিকাংশ ক্ষেত্রে গল্পের নাম ও লেখকের নাম মনে থাকে না।এজন্য অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প মিস হয়ে যায়।যেমনটা এক্ষেত্রে হয়েছে।
এ গল্পের কোন তুলনা করা উচিৎ হবে না।প্রতিটা লাইন আমার মনের মতো হয়েছে।স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ফুটে উঠেছে গল্পে।
তবে দুটি কথা আমার বেশ মনে হয়েছে।প্রথম :-আমাদের সকলের হাতেই স্মার্ট ফোন আছে।কজনের ফোনে মা+বাবার ছবি আছে।জানি না।দ্বিতীয় :-মা শুধু মা হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে তাতে কোন ধর্ম  বাধা হয় না।
পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায়।
লাইক ও রেপু


-------------অধম

খুব ভালো লাগে যখন কেউ গল্পে নিজের ভালো লাগা একটা অংশকে উল্লেখ করে ।

(03-01-2024, 07:47 PM)S_Mistri Wrote: আমার আগের পর্বেই সন্দেহ হয়েছিল, যখন দিব্যা ফোনে মেসেজ করছিল। এখন বুঝতে পারলাম গ্যাঁড়াকলটা। Big Grin
একটু তাড়াতাড়ি আপডেট চাই। অধীর অপেক্ষায় রইলাম।

আমার আগে একজন পাঠক ছিল যে আপনার মতোই খুঁটিয়ে লাইন ধরে ধরে পড়তো ।

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(03-01-2024, 03:07 AM)অভিমানী হিংস্র প্রেমিক। Wrote: দুজনের টানাপোড়ন দেখে সন্দেহ হয়েছিল।তাইতো বলি এমন মেয়ে এ ছেলেকে কেন বশ করলো।ডঃরাজেশ ঘোশালের পাপ আমাদের নায়কের ঘাড়ে চাপানো।
ভালোই হলো নায়ক+নায়িকার মিলনের পথ সুগম হলো।
পরবর্তী আপডেট জলদি জলদি চাই।
লাইক ও রেপু


-------------অধম

আরো বেশি বাকি নেই । আর দুটো আপডেট পড়েই শেষাংশ শুরু হবে ।

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 2 users Like Bichitro's post
Like Reply
Atodin por update pelam khub valo laglo.
Porer update taratari diyen...???
[+] 1 user Likes Raju roy's post
Like Reply
New part Kobe asbe
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
(05-01-2024, 02:41 AM)Raju roy Wrote: Atodin por update pelam khub valo laglo.
Porer update taratari diyen...???

(07-01-2024, 02:05 PM)Fardin ahamed Wrote: New part Kobe asbe

ভেবেছিলাম প্রতি সপ্তাহে একটা করে আপডেট দেব । কিন্তু ব্যস্ত রুটিনে সেটা হয়ে উঠছে না । লিখছি একটু একটু করে । এই সপ্তাহেই পরবর্তী আপডেট দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 3 users Like Bichitro's post
Like Reply
thanks
অপেক্ষায় রইলাম
Like Reply
খুবই ভালো লাগলো এক চমকপ্রদ আপডেট পেয়ে। নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা থাকলো.........
Like Reply
(08-01-2024, 10:14 PM)Bichitro Wrote: ভেবেছিলাম প্রতি সপ্তাহে একটা করে আপডেট দেব । কিন্তু ব্যস্ত রুটিনে সেটা হয়ে উঠছে না । লিখছি একটু একটু করে । এই সপ্তাহেই পরবর্তী আপডেট দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো

❤️❤️❤️

Update Kobe asbe....??????
Like Reply
Update kobe ashbe?


My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone. ArrowNamaskar


Like Reply
############
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply




Users browsing this thread: 36 Guest(s)