12-11-2023, 09:16 AM


ভৌতিক গল্প সংকলন (সমাপ্ত)
|
12-11-2023, 09:16 AM
![]() ![]()
13-11-2023, 09:28 AM
16-11-2023, 09:26 AM
|| হ্যালোউইন ||
লেখা :- মুম্মা মিত্র
জগন্নাথপুরের এদিকটা বেশ কয়েকঘর ক্রিশ্চিয়ান পরিবারের বাস। কে বা কারা তাদের এখানে বসত করিয়েছিলো তা এখন ঠিকঠাক কেউ বলতে পারেনা। তবে জনশ্রুতি আছে সলোমন স্টিভেন্স ওরফে গালকাটা সল-এর এর কোনো এক পূর্বপুরুষের স্থানীয় জমিদারের সাথে কিঞ্চিৎ অধিকমাত্রায় হৃদ্যতা ছিলো। স্টিভেন্স পরিবার তখন বেশ ক্ষমতা ও অর্থশালী পরিবারই ছিলো কলকাতায়। জমিদার তাঁর ইংরেজ বন্ধুকে জমিসহ এই বাগানবাড়িটি উপহার দিয়েছিলেন নিজের এলাকায়।বাড়ি ও বাড়ি সংলগ্ন বাগান ও জমি, সবে মিলে তখনকার দিনেই অনেক টাকার প্রপার্টি। দিয়েছিলেন হয়তো বা প্রতিদানে কিছু সম্মানপ্রাপ্তির আশায়। সে আজ অনেক বছর আগের কথা। আজ আর জমিদার বাড়ি বা জমিদার বংশ বলে কিছু নেই। দেশ স্বাধীন হবার পর স্টিভেন্স পরিবারের অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল শাখাটি চলে যায় বিদেশে। দুর্বল শাখাটি এই সম্পত্তির ভরসায় এখানেই থেকে যায়। পরে পরে তাদের পরিচিত, এবং পরিচিতদের পরিচিত কয়েকটি অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল ক্রিশ্চিয়ান পরিবারের বসতি হয়ে ওঠে জগন্নাথপুরের এই অংশ। বর্তমানে বিবাহ সম্পর্কসূত্রে এখানকার প্রায় প্রতিটি পরিবার সম্পর্কিত। ফলস্বরূপ জগন্নাথপুরের বাকি বাসিন্দাদের সাথে তারা এক হয়েও কোথাও একটা সূক্ষ্ম বিভাজনরেখা বর্তমান। বিশেষতঃ সলোমন স্টিভেন্স-এর অত্যধিক নাক উঁচু মনোভাবের কথা সর্বজনবিদিত। সে শুধু এখানকার অ-ক্রিশ্চিয়ান পরিবারগুলির সঙ্গেই নয়, এখানে পরবর্তীকালে বসত করা অকুলীন ক্রিশ্চিয়ান পরিবারগুলির সঙ্গেও খুব একটা মেলামেশা করার পক্ষপাতী নয়। অতি রগচটা সলোমন খুব কম বয়স থেকেই তার মেজাজের জন্য কুখ্যাত। স্থানীয় ছেলেদের সাথে সামান্য সবজির জন্য একবার ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ফলে সন্ধ্যার অন্ধকারে তার ওপর হামলাও হয়েছিলো। বৃষস্কন্ধ সলোমন স্টিভেন্স কে বাগে আনা সম্ভব হবেনা বুঝতে পেরেই প্রায় সাত আটজন একসাথে তার ওপর সশস্ত্র হামলা করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাঁচোখের নীচ থেকে ঠোঁটের লেভেলে একটি স্পষ্ট, কুৎসিত চিরস্থায়ী কাটা দাগ রেখে যাওয়া ছাড়া তারা বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেনি। উল্টে তাদের কয়েকজনের অত্যন্ত করুণ অবস্থা হয়েছিলো হাত, পা ভেঙে, মাথা ফেটে। গালের সেই দাগ চিরস্থায়ী হয়ে থেকে যাবার পর থেকে সলোমন স্টিভেন্স 'গালকাটা সল' নামেই সমধিক প্রসিদ্ধ। জনশ্রুতি আছে রেগে গেলে গালকাটা সলের ভেতর শয়তানের আত্মা বাসা করে। লোকটাকে ক্রিসমাসেও কখনো স্থানীয় চার্চের উঠোন মাড়াতে দেখা যায়নি। এহেন গালকাটা সল-এর গলাকাটা মৃতদেহ যেদিন নিস্তরঙ্গ জগন্নাথপুরের উত্তরের খালের পাঁকে অর্ধেক পোঁতা অবস্থায় পাওয়া গেলো, সেদিন গোটা জনপদ আতঙ্কে শিউরে উঠেছিলো। অসামাজিক হলে বা অপছন্দের লোক হলেও কার এমন বুকের পাটা যে গালকাটা সলকে খুন করার সাহস দেখায়! অর্ধগলিত মৃতদেহ বলে দেয় যে ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকদিন আগে। অর্থাৎ সল জরুরি কাজে কলকাতা যাবে বলে যেদিন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল, সম্ভবত সেই রাতেই। কিন্তু কাজটা কে করলো আর কিভাবে করলো তা স্পষ্ট হয়নি, আর খুনী ধরাও পড়েনি। স্থানীয় থানা কোনোমতে একটা তদন্ত করে ব্যপারটা বহিরাগত খুনীর কাজ বলে একটা দায়সারা রিপোর্ট দিয়ে কেস বন্ধ করে দেয়। তাদের তড়িঘড়ি তদন্ত বন্ধ করার বিশ্বাসযোগ্য কোনো কারন সলের পরিবারের ছিলোনা। কিন্তু এটা মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের উপায়ও ছিলোনা। জমি, বাগান থাকলে কাঁচা টাকা বা লোকবল সেই মুহূর্তে স্টেলা স্টিভেন্সের ছিলোনা। গালকাটা সলের মৃত্যুর পর স্টিভেন্স পরিবারের যাবতীয় সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী হল এই স্টেলা। স্টেলা সলের সৎ বোন।সে আর তাদের এক বুড়ি পিসি ছাড়া অবিবাহিত সলের এদেশে অন্ততঃ আর কেউ নেই। । অপরূপ না হলেও চোখ ধাঁধিয়ে দেবার মত তরুণী ও সলের বিশেষ প্রিয়। জগন্নাথপুরের ক্রিশ্চিয়ান তো বটেই, অন্যান্য সম্প্রদায়েরও একাধিক যুবক তার গুণগ্রাহী। কিন্তু প্রত্যেকের প্রাণে সলের আতঙ্ক এতটাই যে কেউ বছর পঁচিশের স্টেলার দিকে চোখ তুলে তাকাতেও দুবার ভাবে। যে লোক সামান্য সবজি নিয়ে অশান্তিতে এতো ভয়ঙ্কর রূপ ধরে, তার বোনের প্রেমে পড়া আর নিজের মৃত্যু ডেকে আনা প্রায় একই ব্যপার। এই দলের বাইরে দুজন ছিলো যারা সলের ভয়কে জয় করে স্টেলার প্রতি নিজেদের দুর্বলতা টুকটাক বন্ধুমহলে প্রকাশ করার সাহস দেখিয়েছিলো। প্রথম, স্থানীয় কলেজের হেড মাস্টার সরোজ মন্ডলের ছেলে মাইকেল মন্ডল আর জগন্নাথপুর চার্চ এবং ক্রিশ্চিয়ান কমিউনিটির সেক্রেটারি অরল্যান্ডো হোমসের ছেলে ডোরিয়ান হোমস। স্টেলা এদের ব্যপারে ঠিক কি ভাবতো সেটা বলা মুশকিল, কারন তাকে জিগেস করার সাহস এদের কারো ছিলো না। তবে লোকে আন্দাজ করতো স্টেলা খানিক মাইকেলের দিকে হেলে থাকলেও সল বেছে নেবে ডোরিয়ানকে। কারন মাইকেলরা দীক্ষিত হয়েছে মাত্র একপুরুষ আগে। বংশ কৌলীন্যের দিক থেকে ডোরিয়ান কয়েক ক্রোশ এগিয়ে। সলোমনের মৃত্যুর পর থেকে অন্ত্যেষ্টি মেটা পর্যন্ত বেশ অনেকটাই সময় বেশি লাগলো স্বাভাবিকের চেয়ে। কারণ খুনের মামলায় বডি পোস্টমর্টেম হবেই। তারপর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া। এই গোটাটা সময় ডোরিয়ান ছায়ার মত স্টেলার সাথে লেগে রইলো। সব ব্যপারে, সব জায়গায় তার হস্তক্ষেপ। প্রথম প্রথম অভিভাবকহীন অবস্থায় স্টেলা ও তার পিসি জর্জিয়া ডোরিয়ানের এই সহৃদয় ব্যবহারে খুশিই ছিলো। কিন্তু সব ব্যপারে নিজের ইচ্ছা স্টেলার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়াটা আস্তে আস্তে স্টেলার বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছিলো। সেটা চরমে উঠলো সেদিন, যেদিন মাইকেল এসেছিলো স্টেলার সাথে দেখা করতে। মাইকেল কলেজে স্টেলার দুইবছরের সিনিয়র। তাছাড়া স্টেলা ও সল দুজনেই সরোজ মন্ডলের ছাত্র ছাত্রী।ছোট্ট জায়গা জগন্নাথপুরের মানুষ জন এখনো শিক্ষক ও তার পরিবারকে একটা সম্মান দেন। সল যতই রগচটা হোক, সামনে অন্ততঃ মাস্টার মশাইকে সেটুকু সম্মান দিতো। তার মৃত্যুতে বর্ষীয়ান শিক্ষক নিজে না এসে মাইকেলকে পাঠিয়েছিলেন সলের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে। স্টেলা বাইরের ঘরেই তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বসিয়ে সবে কথা শুরু করেছে, হঠাৎ ডোরিয়ানের আগমন। ডোরিয়ান হোস্টেলে থেকে পড়েছে শহরের কলেজে। এধরনের ছোটখাটো কলেজের শিক্ষক বা তার পরিবারকে সে ধর্তব্যের মধ্যে আনেনা। তার ওপর তার কানে খবর আছে স্টেলা ও মাইকেল, একে অপরের প্রতি দুর্বল। অতএব স্টেলাকে মাইকেলের সঙ্গে কথা বলতে দেখেই তার পায়ের রক্ত মাথায় ওঠে। সামান্য ভদ্রতাসূচক সম্ভাষণটুকুও না জানিয়ে সরাসরি মাইকেলের সামনেই সে স্টেলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসে। তার ব্যবহারে স্টেলা, মাইকেল হতভম্ব। একে তো সল-এর মৃত্যুর ঘটনা তখনও তরতাজা। মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অবধি হয়নি। তার ওপর বাড়িতে উপস্থিত অতিথির সামনের এরকম একটা আচরণ স্টেলা আশা করেনি। আগে থেকে তার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছিলো। এবার সে সরাসরি ডোরিয়ানকে মুখের ওপর প্রত্যাখ্যান করে। স্বাভাবিকভাবেই ডোরিয়ান ধরে নেয় মাইকেলই এর জন্য দায়ী। ঔপনিবেশিকের উদ্ধত নীলরক্ত আবার জেগে ওঠে। স্টেলার সাথে তার কথাবার্তা চিৎকার চেঁচামেচি, বিতন্ডার পর্যায়ে পৌঁছলে মাইকেল হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। ছুটে আসেন বৃদ্ধা জর্জিয়া। জর্জিয়ার অনুরোধে বাদানুবাদ থামলেও ডোরিয়ান মাইকেল ও স্টেলা দুজনকেই শাসিয়ে যায় যে সে এর শেষ দেখে ছাড়বে। স্টেলার ডোরিয়ানকে প্রত্যাখ্যান করার কথাটা সমস্ত পরিচিত মহলে আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে। অরল্যান্ডো হোমস হোমরাচোমরা মানুষ। তাঁর ছেলে যত অপদার্থ আর অসভ্যই হোক, সে তাঁর ছেলে। ফলে মানহানিটা তিনিও ব্যক্তিগত বলেই ধরে নেন। ফলে পরিস্থিতি আরো ঘোরালো হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ সলোমনের দেহ সমাহিত করার সময়ে ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের একটা অংশ স্টেলা স্টিভেন্সকে ঘুরিয়ে এক রকম বয়কট করে। কারন কেউ অরল্যান্ডো বা ডোরিয়ানের সাথে সম্পর্ক খারাপ করতে চায়না। স্টেলা, মাইকেল বোঝে অশান্তি আরো অনেক দূর গড়াবে। এই ঘটনার পর দুই মাস মত কেটে গেছে। জগন্নাথপুর অনেকটা স্বাভাবিক। স্টেলা স্টিভেন্সকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে, দোকানে বাজারে, সে সাবলীল হবার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাকে সবাই একটু যেন এড়িয়েই চলছে। এমতাবস্থায় এসে পড়ে হ্যালোউইন।জগন্নাথপুরের দুর্গাপূজা ও কালীপুজাতে ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের সকলেই অংশগ্রহণ করে, তাই হ্যালোউইন উদযাপন সম্পর্কেও সেখানকার অন্যান্য বাসিন্দারা ওয়াকিবহাল। তাই ক্যান্ডি চেয়ে বেড়ানো খুদে খুদে ভূতেদের দলে সব সম্প্রদায়েরই একটি দুটি কচিভূত থাকে। সবে মিলে সে এক মজার ব্যপার। সমস্যা একটা প্রতি বছর হয়। হ্যালোউইনে যে বিশেষ ধরনের পামকিন বা কুমড়ো কার্ভ করে ভৌতিক মাথা বানানো হয় সেটি সাধারণ খাদ্য কুমড়োতে সম্ভব না। একটি বিশেষ প্রজাতির শক্ত খোসাযুক্ত পামকিন ছাড়া ওই তীক্ষ্ণ দাঁত কার্ভ করে বার করা মুশকিল। জগন্নাথপুরের ত্রিসীমানায় একমাত্র গালকাটা সলের সবজি বাগান ছাড়া ওই বিশেষ জিনিষটি অমিল। তাই প্রতি বছর মানুষ ভয়ে ভয়ে তার থেকে একটি দুটি পামকিন চেয়ে নিয়ে যেত। রাগী মানুষ হলেও সল একাজে কখনোও কাউকে ফেরায়নি। এবছর অবশ্য সকলেই ভাবছিলো শোকসন্তপ্ত পরিবারের থেকে আর পামকিন চাইবে কি চাইবেনা...তাছাড়া সবার মনে অপঘাতে মৃত সল-র আত্মার ভয়ও একটু আধটু যে ছিলোনা, তা নয়। যদিও এই দুই মাসে কেউ কোনো অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটতে দেখেনি। কিন্তু তবুও অমীমাংসিত খুনের প্রতিশোধ নিতে সল-এর আত্মা যে কি করবে, এটা নিয়ে কুসংস্কারজর্জরিত অন্ধবিশ্বাসীরা স্টিভেন্স পরিবারকে হ্যালোউইনে একটু এড়িয়েই চলছিলো। কে না জানে, অপঘাতে মৃত,অতৃপ্ত,অশরীরী আত্মারা ওইদিন জীবিতদের জগতের খুব কাছে চলে আসে। এরকম একঘরে হয়ে থাকা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাঠে নামে স্টেলা। সে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে কাছাকাছি কয়েকটি বাড়িতে পামকিন পাঠানোর ব্যবস্থা করে। জর্জিয়ার বুদ্ধিতে হোমস পরিবারেও সেরা দেখে বেশ কয়েকটি পামকিন পাঠায় সে। যদি তাতে চিঁড়ে ভেজে। ডোরিয়ান যাই করুক, মিস্টার ও মিসেস হোমসের সাথে সম্পর্কটা একটু ভালো করা যায় যদি... ডোরিয়ান হোমস সহজ বুদ্ধির মানুষ নয়। বিশেষত রাগ পুষে রাখা তার চরিত্রের এক বিশাল বড় খুঁত। এ কথা আর কেউ না জানুক, অরল্যান্ডো ভালো করে জানতেন। তাই ছেলেকে জানতে দিলেননা ওই পামকিন কার বাড়ি থেকে এসেছে। রান্নাঘরে কি আসছে, যাচ্ছে, তা নিয়ে ডোরিয়ান কোনোকালেই মাথা ঘামায়না। তার মাথায় চলছে অন্য পরিকল্পনা। জগন্নাথপুরের চার্চ সংলগ্ন একটি পতিত জমি পেরোলেই একটি বাড়ি।এই বাড়িটি তৈরি হয়েছে কমিউনিটি ফান্ডিং করে। উদ্দেশ্যে এখানে একটি অনাথ আশ্রম বানানো। উদ্যোক্তা অরল্যান্ডো হোমস এবং উপদেষ্টা কমিটিতে এলাকার অন্যান্য গন্যমান্য মানুষের সাথে সরোজ মন্ডলও রয়েছেন। হিসাবপত্র মাইকেল দেখাশোনা করে। যেহেতু টাকাপয়সা সংক্রান্ত ব্যপার, তাই মেধাবী ছাত্র মাইকেল বয়সে ছোট হয়েও বাকিদের দ্বারা যোগ্য বিবেচিত হয়েছে। এই ব্যাপারটি অরল্যান্ডোর খুব একটা ভালো না লাগলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতকে তাঁকে মানতে হয়েছে।তিনি যেমন নিজের ছেলেকে চেনেন, তেমনই তাঁর অসন্তোষ ডোরিয়ানও জানে ভালোমত । সুতরাং তাঁকে বোঝাতে খুব একটা সমস্যা হবেনা। *****************
ডোরিয়ান আজ খুব খুশি। তার পরামর্শ মত এই চার্চের মেম্বারদের নিয়ে একটি হ্যালোউইন পার্টি অ্যারেঞ্জ করা হয়েছে পরিবেশ একটু হাল্কা করার জন্য। সবাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে ওই অনাথ আশ্রমের জন্য নির্ধারিত বাড়ির গ্রাউন্ড ফ্লোরের হলটিতে। মহা উৎসাহে সাজানোর কাজ চলছে। রকমারি ভয়ঙ্কর মুখোস আমদানি করা হয়েছে। তার সাথে চলছে একগাদা পামকিন কার্ভিং-এর কাজ। আর এই কাজটাও ডোরিয়ানের বিশেষ পছন্দের। কারন নানা ধরনের ছুরি ব্যবহার করাটা তার দুর্বলতা। তার কালেকশনের একটা দামী কার্ভিং নাইফ নিয়ে একটা পছন্দসই পামকিন নিয়ে সে নিজেও কাজে লেগে পড়ে। জিনিসটা দারুণ ভালো লাগে ডোরিয়ানের। পারফেক্ট শেপ দেওয়া যাবে। আউটার লেয়ারটা বেশ শক্ত। এটাকে বাগ মানিয়ে মজা আছে। বাড়িটার ব্যাকইয়ার্ডে কার্ভিং করতে করতে মগ্ন ডোরিয়ান একসময় বিশ্বচরাচর ভুলে কাজ করছিলো, হঠাৎ একটা লম্বা করে লোক এসে তার পিছনে দাঁড়িয়ে তার নাম ধরে ডাকতেই ডোরিয়ান এতটাই চমকে যায় যে তার হাত থেকে পোষমানা ছুরিও পিছলে যায়.... ইইইইইই...... একটুর জন্য বাঁহাতটা চোট হওয়া থেকে বেঁচেছে। কিন্তু বিরক্ত ডোরিয়ান দেখে ধারালো ছুরির এক টানে প্রায় কাজ শেষ হয়ে আসা পামকিনের মুখমন্ডলের বাঁদিকে সৃষ্টি হয়েছে এক গভীর আঁচড়ের। এত সুন্দর করে কাজটার এই পরিণতি দেখে পায়ের রক্ত মাথায় উঠলেও কেন জানিনা লোকটাকে কিছু বলতে পারেনা সে। কাজের লোকেদের একজনকে ডেকে পামকিনটা ধরিয়ে ওতে লাইট লাগানোর ব্যবস্থা করতে বলে লোকটাকে নিয়ে আশ্রমের বাড়ির দিকে চলে যায়। সকালের দিকে ওদিকে কেউ আসেনা। যাবার সময় বলে যায় খুঁতো জিনিসটাকে পার্টির সামনের দিকে না সাজিয়ে একপাশে বা পিছনদিকে কোথাও একটা টাঙিয়ে রাখতে। ****************
স্টেলার হ্যালোউইন পার্টিতে আদৌ যাবার ইচ্ছা ছিলোনা। কিন্তু জর্জিয়া জানতেন একবার ডোরিয়ানকে অপমান করে তাড়ানোর পরেও হোমস পরিবার তাঁদের নিমন্ত্রণ করেছে। সেটাতেও অনুপস্থিত থাকার অর্থ ক্ষমতাশালী অরল্যান্ডো হোমসকে সরাসরি অপমান করা। সলোমনের মৃত্যুর পর এই শত্রুতার ফল ভালো হবেনা। বিষয়টার গুরুত্ব বুঝে অগত্যা স্টেলা মন ভালো না থাকলেও হ্যালোউইন পার্টিতে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তার একমাত্র আশার কথা মাইকেলও থাকবে ওই পার্টিতে। অনাথ আশ্রমের বাড়ির সামনের দিকটাকে স্বল্প কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। অতিথিরা নানা রকম ভূত ও মনস্টারের আউটফিটে একজন দুজন করে আসতে শুরু করেছেন। নানারকম ভয়ের মিউজিক বাজছে পরিবেশকে ভৌতিক আবহ দিতে। অরল্যান্ডো হোমস ,তাঁর স্ত্রী ও চার্চের অন্যান্য সিনিয়র মেম্বাররা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছেন। অনেকেই জানতে চাইছেন ডোরিয়ানের কথা। অরল্যান্ডো সবাইকে একই কথা বলছেন। ডেকোরেশন শেষ করে ডোরিয়ান বাড়ি গেছে ফ্রেশ হতে। এই এলো বলে। ওদিকে বাড়ির পিছনের দিকের একটা ছোট্ট গুদাম ঘরের মত ঘরে আধো আঁধারে দুই ছায়ামূর্তি কথা বলছে। একজন বলছে -'ক'দিনের গ্যাপে দুটো খুন? রিস্ক হয়ে যাচ্ছে না দোস্ত? ' -'এটা পাতি কেস। বাবা এটাও বুঝে নেবে। যদি ওই রাক্ষুসে লোকটাকে বাগে আনতে পারো, তাহলে এই নেটিভ ছোকরাকে কিসের ভয় তোমার লিও?' লিওর ততোধিক ফিসফিসে কন্ঠ বলে 'সে লোককে তুমি ড্রিংকে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েছিলে বস। তা নাহলে অত সহজে নলি ফাঁক করা সম্ভব ছিলোনা। আমাদের অন্ততঃ একজনকে ও সাথে নিয়ে যেত নরকে। কিন্তু তুমি তো বলেছিলে এ লোক সরে গেলেই রাজত্ব আর রাজকন্যা তোমার। তারপর আবার কেন?' -'তাকেও মারতামনা। কিন্তু ওপর ওপর স্নবারি দেখালেও সে তার মাথামোটা বোনের মতামতকে গুরুত্ব দিতো। অনেক বলেছি বাবা আর আমি স্টেলার আর আমার এনগেজমেন্ট অ্যানাউন্স করে দিতে কোনো একটা অকেশনে। তারপর যা হবে বুঝে নেবো। একটা মেয়েমানুষকে বাগে আনা আর এমনকি কাজ! ওই শয়তান সলোমনের বাচ্চা সেদিন বলে কিনা বোন যদি ওই ছোটলোক মাইকেলকে পছন্দ করে তাহলে তার আপত্তি নেই। বুড়ো সরোজ মাস্টার নাকি তার রেসপেক্টেড টিচার। রেসপেক্ট, মাই ফুট! বাধ্য হয়ে সরিয়ে দিতে হল।' ঠিক এমন সময় 'খুট' করে একটা আওয়াজ হতেই দুজনের চোখ যায় বাইরের দিকে। দেখে জানলা থেকে একটা ছায়া সরে গেলো। দুজনেই আন্দাজ করে ছায়া কার হতে পারে। বাড়ির এইদিক দিয়ে আসাটা একমাত্র সরোজ মাস্টারের বাড়ি থেকেই শর্টকাট। সে লোক আসবেনা। কিন্তু যার আসার কথা ছিলো সে তো আরেকটু পর আসার কথা...সর্বনাশ! যদি সে হয় তো একটা সেকেন্ড অপচয় করা যাবেনা। ছুটে বেরিয়ে যাকে উর্ধশ্বাসে বাড়ির সামনের দিকে ছুটতে দেখে তাতে দুজনের সন্দেহই সঠিক প্রমাণিত হয়। অল্প আলোয় হলেও এই দুজনের মুখও স্পষ্ট হয়। একজন ডোরিয়ান, আর একজন সেই লম্বা লোকটা যে সকালে তার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। ডোরিয়ানের হাত চলে যায় পকেটে, হাতে উঠে আসে মাঝারি সাইজের একটা অনবদ্য ছুরি যার রূপোর বাঁটের কারুকাজ পরিচয় দেয় মহার্ঘ্য বংশকৌলিন্যের। তীরের বেগে ছুটতে ছুটতে লক্ষ্য স্থির করে ছুঁড়তে যাবে, এমন সময় হঠাৎ ডানহাতে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করে সে... মুখ দিয়ে আর্ত চিৎকার বেরিয়ে আসে তার। তার পিছনে পাঁচ ছয় হাত দূরে থমকে দাঁড়ানো লিও-র চোখও আতঙ্কে কপালে ওঠার যোগাড়...এ কি দেখছে সে...এ টা তো সেই সেইটা....তার হাত থেকে ছুরি খসে পড়ে চোখের সামনে !!! শুধু কি ছুরি? প্রচন্ড যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে ওঠে ডোরিয়ান...লিও যথেষ্ট শক্তপোক্ত মানুষ। কিন্তু এবার তার সামনে যা ঘটতে শুরু করে সেটা তার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব ছিলোনা... ধারালো দাঁতগুলো থেকে হাড় ভাঙার শব্দ কানে আসতেই অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে সে। ************
হ্যালোউইন পার্টিতে আসার বিশেষ ইচ্ছা মাইকেলের ছিলোনা। কিন্তু অসুস্থ বাবার পক্ষে অরল্যান্ডো হোমসের নিমন্ত্রণ রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে, এবং ডোরিয়ানের সঙ্গে তার সেই ঝামেলার পর থেকে সিনিয়র মিস্টার হোমসের সাথে সম্পর্ক ঠিক করার এটাই একটা সুযোগ। তাছাড়া বাজারে আন্ট জর্জিয়া তাকে বলেছেন যে স্টেলা ও যাবে ওই পার্টিতে। তাই সাত পাঁচ ভেবে সে যাওয়াটাই স্থির করলো। একটু তাড়াতাড়ি গেলে তাড়াতাড়ি ফিরবে সে অসুস্থ বাবার কাছে। এই ভেবেই একটু সন্ধ্যা থাকতেই বেরিয়েছিলো সে। তাদের বাড়ি থেকে অনাথ আশ্রমের বাড়ির পিছন দিকটা দেখা যায়। একটা শর্টকাট আছে। তাড়াতাড়ি করে ওটাই ধরে মাইকেল। অনাথ আশ্রমের বাড়ির পিছন দিকটায় এসে মাইকেলের কেমন জানি সন্দেহ হল কোনার ছোট ঘরটায় একটা টিমটিমে আলো জ্বলছে বলে। এই রে! চোরটোর নয়তো! পা টিপে টিপে এগিয়ে কোনার ঘরের জানলার পাশে দাঁড়ায় সে। ভিতরের কথাবার্তা শুনতে শুনতে এতটাই ভীত আতঙ্কিত হয়েছিল সে যে বেখেয়ালে জানলার পাল্লায় কখন হাত লেগে গেছে বুঝতেই পারেনি। এরপরের ঘটনা আমরা কিছুটা জানি... *******************
প্রায় দম আটকানো অবস্থায় মাইকেল হলে ছুটতে ছুটতে ঢুকতেই উপস্থিত সব অতিথির দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। স্টেলা এসে গেছিলো, সে মাইকেলের উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি দেখে এগিয়ে আসে। মাইকেল স্টেলাকে দেখে ছুটে তার হাত ধরে বেশ জোরেই বলে 'ডোরিয়ান, ডোরিয়ান আর তার বন্ধু খুন করেছিলো সল-কে স্টেলা।' মিউজিক যেটা চলছিলো সেটা কেউ বন্ধ করে দেয়। কারন বেশ কয়েকজন শুনেছে কথাটা। -'কি আজেবাজে বকছো হে ছোকরা। আমার ছেলে একাজ কেন করবে?' তেড়ে আসেন অরল্যান্ডো হোমস। -'আমি সেসব জানিনা মিস্টার হোমস। কিন্তু আমি নিজে কানে শুনেছি ডোরিয়ানকে বলতে... ' মাইকেলের কথা শেষ হবার আগেই তীব্র আর্তনাদ ভেসে আসে বাড়ির পিছন দিক থেকে... সকলে দৌড় দেয় সেদিকে। কিন্তু বাড়ির পাশের প্যাসেজটুকু শেষ হতেই যে ভয়ঙ্কর দৃশ্য সকলের চোখে পড়ে তাতে সবার হাত পা হিম হয়ে যায়। কে পড়ে আছে ওটা? ডোরিয়ানই তো... নাকি ডোরিয়ানের ভুক্তাবশিষ্ট! শরীরের ডানদিক প্রায় কিছুই নেই। কোনো এক হিংস্র জন্তু যেন কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে গেছে দেহের হাড়, মাংসসহ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, নাড়িভুড়ি ছিটিয়ে আছে খানিক দূর অবধি। হড়হড় করে বমি করে ফেলে স্টেলা এই ভয়ঙ্কর দৃশ্যে। অরল্যান্ডো হোমস সহ সকলে মাইকেলের দিকে তাকাতেই দেখেন মাইকেল প্রায় ভূতে পাবার মত পিছন দিকে আঙুল তুলেছে। কারো হাতে কোনো অস্ত্র নেই। একমাত্র যারা ভৌতিক কসটিউমের অংশ হিসাবে কিছু বহন করছিলো সেগুলি ছাড়া। এ কোন হিংস্র জানোয়ারের কাজ? সকলে আতঙ্কিত হয়ে অদূরে অপেক্ষাকৃত অন্ধকার মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখে ঘাসের ওপর একটা বাল্বের আলোর মত কিছু একটা টিমটিম করে জ্বলছে, আর তার পাশে কে একটা পড়ে আছে যেন। এত লোক থাকায় মাইকেল একটু সাহস পায়। আস্তে আস্তে একটু এগিয়ে গিয়ে সে চেঁচিয়ে ওঠে, 'এই তো, এই লোকটার সাথেই ডোরিয়ান কথা বলছিলো। ' টিমটিম করে জ্বলা আলোটা নিভে যায় এবার। কে একজন একটা টর্চ নিয়ে এগিয়ে আসে। এখানে আরেক বীভৎস দৃশ্য। যে লোকটা উপুড় হয়ে পড়ে আছে তার ডান হাতটা কবজি আর কনুই মাঝখান থেকে একভাবে কামড়ে ছিঁড়ে নেওয়া। লোকটা ভয়ে আর যন্ত্রণায় অজ্ঞান হয়ে গেছে। কিন্তু মরেনি।বোঝা যাচ্ছে বুকটা উঠছে নামছে এখনোও। আর তার কয়েক হাত দূরেই পড়ে রয়েছে রক্তাক্ত একটা কার্ভ করা পামকিন... যার হিংস্র দুই দাঁতের ফাঁকে আটকে আছে ওই লোকটার ছেঁড়া হাতের অংশটা। দুপাশে ছড়ানো ছেঁড়া ইলেকট্রিক তার। *********************
অনাথ আশ্রমের বাড়ির একতলার হল ঘর।এখানেই হ্যালোউইন পার্টির যোগাড় হয়েছিল।এখন জায়গাটা থমথম করছে। স্থানীয় ডাক্তার ডক্টর পালকে একজন ধরে এনেছে। তিনি এসেই একটা স্ট্রং পেইন কিলার ইনজেক্ট করেছেন লিওকে। কিন্তু সে প্রবল যন্ত্রণা সত্ত্বেও সিডেটিভ নিতে নারাজ। ব্যান্ডেজের চুঁইয়ে পড়া রক্ত অগ্রাহ্য করে পাগলের মত স্টেলা স্টিভেন্সের খোঁজ করছে। অগত্যা ডক্টর পাল খানিকটা দুধে ব্র্যান্ডি মিশিয়ে তাকে খাইয়ে অ্যামবুল্যান্সের অপেক্ষা করছেন। এক কোনে অরল্যান্ডো হোমস মাথায় হাত দিয়ে বসে। মিসেস হোমস হেঁচকি তুলে তুলে কেঁদে চলেছেন। পুলিশ এসে লাশ তুলে নিয়ে গেছে। আর কাউকে হল ছেড়ে যেতে মানা করেছে। এখনই একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ হবে। সবার মুখ থমথমে। কিছু পরে ঘাড়ে গলায় জল দিয়ে মুখ মুছে মাইকেলের হাত ধরে প্রবেশ করে স্টেলা। তখনও সে কাঁপছে। সে ঘরে ঢুকতেই চঞ্চল হয়ে ওঠে লিও- 'মার্সি, মিস স্টিভেন্স, মার্সি। আপনি ক্ষমা না করলে সল আমাকে নরক অবধি ধাওয়া করবে।' -' সল মারা গেছে মিস্টার। তুমি আর ডোরিয়ান মিলে তাকে খুন করেছো। আমি নিজে কানে শুনেছি।' বলে ওঠে মাইকেল। -'সল আশেপাশেই আছে মিস্টার মন্ডল... ওই তো, ওই তো সল... ' বলতে বলতে আবার জ্ঞান হারায় লিও। চমকে পিছন ফিরে দেখে স্টেলা এক পুলিশ কর্মীর হাতে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া একটা কার্ভড পামকিন। এই বিশেষ প্রজাতির পামকিন খুব ভালো করে চেনে সে। এই পামকিনটার তীক্ষ্ণভাবে কুরে বার করা দাঁতগুলোতে রক্ত না লেগে থাকলে সেটাকে একটা সাধারণ পামকিনই মনে হত। হ্যালোউইনে যেরকমটা ভেতরে আলো লাগিয়ে ঝোলানো হয়, তেমনটা। আরো একটা বিশেষত্ব আছে এটার। প্লাস্টিকের ওপর দিয়ে একঝলকে দেখাতেও স্টেলার চোখ এড়ায়নি সেটা। বাঁ চোখের নীচ থেকে ঠোঁটের লেভেলে একটা খুব পরিচিত, স্পষ্ট, কুৎসিত একটা কাটা দাগ। || সমাপ্ত ||
এই ক'দিনে ছোট এবং বড় মিলিয়ে প্রচুর গল্প দিয়ে ফেলেছি আমার এই থ্রেডে। এবার শেষ করলাম, ভালো থাকবেন সবাই
16-11-2023, 02:32 PM
17-11-2023, 02:06 PM
27-11-2023, 06:26 PM
ভালো লাগল। তবে থ্রেডটা সত্যিই ভালো গল্পে পরিপূর্ণ। বাঙালির কাছে ভূত ও ভৌতিক একটা ইমোশান। এটা এইভাবেই সকলের মধ্যে বেঁচে থাকুক। ♥️
29-11-2023, 03:24 PM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|