Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
23-10-2023, 08:45 PM
শেষ পর্ব
- আসব?
সারা দুপুরে বন্ধুর আতিথেয়তা, নিজের গুপ্ত অতীত আর এ বাড়ির বর্তমান গৃহিনীর রূপের কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে সময় পার হয়ে গিয়েছে বুঝিনি। চোখ খুলতেই দেখেছিলাম সূর্যের সোনালী রশ্মির ঝিকিমিকি বিদায় নিয়েছে, আর উজ্জ্বল আকাশের গায়ে গাঢ় নীলের ছটা। ঘরের দরজা খুলে কিছুক্ষন বাইরে দাঁড়িয়ে চারিপাশটা দেখে নিলাম। বন্ধুর থেকে শুনেছিলাম এ বাড়ি তার দাদুর বানানো নিজের যৌবনে। কর্তা নাকি অনেক যত্ন নিয়ে বানিয়েছিলেন এ বাড়ি। উকিল মানুষ ছিলেন। কিন্তু আজ সেই বাড়িটাও নিজের যৌবন হারিয়েছে। পুনরায় ঘরে এসে চেয়ারে বসে আমার থলি থেকে খাতা কলম বার করে মনের মধ্যে হটাৎ আগত দুটো লাইন লিখতে যাবো তখনি পেছন থেকে দরজায় টোকা আর ওই কণ্ঠটা কানে আসলো।
আমি পেছন ঘুরে কে? বলতেই ভেতরে প্রবেশ করল সে। পারুল! অমরেশ বাবাজির বোন। তাকে সেই আমাদের ছোটবেলায় দেখেছিলাম। সে ছোট্ট মেয়েটা আজ এতটা পাল্টে গেছে! সেদিনের বালিকা যে আজ পরিপূর্ণ নারী। যখনই মামার বাড়ি আসতো সে নিজের দাদাভাইয়ের কাছে তখন অমরেশ ওকেও নিয়ে আসতো আমাদের সাথে খেলতে। আমরা দল বেঁধে খেলতাম নানান মজার খেলা। ওকে কাছে পেলেই গাল দুটো টিপে দিতাম জোরে আর ও "আহ দাদা লাগছে" বলে চিল্লিয়ে উঠতো।
- কি গো? চিনতে পারছো?
বলেই হেসে উঠলো সে। আমি চিনতে তাকে প্রথমেই পেরেছি কিন্তু এতটা পরিবর্তন এসেছে তার মধ্যে যা কল্পনাতেও আসেনি। আর এই কিনা আমি লেখক হতে চাই? ছি ছি! মুখের মধ্যে সেই আগের মতোই সারল্য ও মিষ্টতা থাকলেও প্রকৃতির নির্মম নিয়মে শরীরে আসা স্বাভাবিক পরিবর্তন গুলো বড্ড চোখে লাগছে। সেদিনের সেই পুচকি খুকিকে যেন কিছুতেই আগের মতো সরল ভাবে দেখতে পারছিনা। এযে একেবারে ঠাসাঠাসী যৌবন, নিতম্ব পর্যন্ত লম্বা চুল আর বক্ষদ্বয় উর্বর। আজও এতদিন পর তার সাথে আলাপ হবার পর বড্ড খেলার সাধ জাগছে হৃদয়ে। তবে আমার নয়, ওই লুকানো পুরুষটা খেলতে চায় এই নন্দিনীর সহিত। তার যে প্রথম পরিচয় হলো পারুলের সাথে। আর তার এই রূপ বাধ্য করছে পুরুষটিকে খেলায় নামতে। তবে এবারের খেলা হবে একটু ভিন্ন। এ হবে বড়োদের গোপন খেলা।
"তুমি তো একেবারে পাল্টে গেছো? সেই ছোট্ট খুকুটি দেখেছিলাম তোমায়।" কোনোরকমে নিজের ইচ্ছা নিজের মধ্যে লুকিয়ে মিথ্যে হাসি হেসে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমি। সেও হালকা হেসে চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে আমার পাশে দাঁড়িয়ে সোজা আঁখি পানে চেয়ে বললো "তুমিও তো অনেক পাল্টে গেছো... আর আমি পাল্টাবোনা?" আমি হেসে বললাম "তা তো ঠিকই, সেদিনের সেই খুকি আজ ওই যাকে বলে বিগ গার্ল হয়ে গেছে.... তা সকালে দেখা পেলাম না যে? বিদ্যা সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলে বুঝি?"
সে হ্যা সূচক মাথা নাড়িয়ে চোখের ইশারায় আমায় চা পান করতে বলল। আমি চুমুক দিতেই মুখের ভেতরটা এক অদ্ভুত মিষ্টি স্বাদে ভোরে গেলো। মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো "বাহ্! দারুন!" আমার মুখে প্রশংসা শুনে তার মুখ যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। আমার বুঝতে বাকি রইলোনা এই মিষ্টি চা তার হাতেই বানানো। তাহলে কি আমার জন্যই.....? কানে কানে সে যেন বলে গেলো "হুম। শুধুই তোমার জন্য। ও যে তোমায় সেই কবে থেকেই......."
মুচকি হাসলাম তারপরে আবারো তার পানে চেয়ে চুমুক দিয়ে বললাম "দারুন বানিয়েছো চা টা" সে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো যে আমি কিকরে জানলাম। ভুরু নাচিয়ে রহস্যময় এক হাসি হেসে বললাম " তাহলে ঠিক ধরেছি তাইতো? এমন মিষ্টি চা একটা মিষ্টি মেয়ে ছাড়া আর কেউ বানাতেই পারেনা"। সে লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে বললো "ওসব কিছু নয়। বাড়ি থাকলে আমি নয়তো বৌদিই চা বানায়। আজ আমি বানালাম। এমন কিছু মিষ্টিও দিইনি। আর ওতো ভালো চাও আমি বানাইনা। বৌদি আমার থেকে অনেক ভালো চা বানায়। ওই আমায় শিখিয়েছে"। আমি আবারো চুমুক দিয়ে তার পানে চেয়ে বললাম "খুব ভালো বৌ হবে তুমি, যখনই স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হবে কিংবা কিছু চাওয়ার থাকবে এই হাতে চা বানিয়ে খাইয়ে দেবে.... ব্যাস দেখবে কেমন পতি বাবাজি না করতে পারবেনা।" যদিও আমি আমার মনের কথার সামান্য অংশটুকুই মেলে ধরেছিলাম তার সামনে। আমি মূলত বলতে চেয়ে ছিলাম চা হাতে এই সুন্দরী নন্দিনী যখন মিষ্টি হেসে স্বামীর কাছে এসে পাশে বসে নিজ হাতে স্বামীর হাত নিয়ে কাঁধে রাখবে নিজের মাথা..... ওসব মান অভিমান ভুলে স্বামী তাকে নিয়েই মেতে উঠবে। ওই চায়ের কাপে চোখও যাবেনা। কারণ ধুমায়িত চায়ের থেকেও উত্তপ্ত পতিদেব নিজেকে ঠান্ডা করতে হিমশিম খাবে। রতিদেব মাথায় চোড়ে বসবে তখন। আচ্ছা? ওই স্বামীর স্থানে বারবার নিজেকে কল্পনা করতে ইচ্ছে জাগছে কেন? সেটা কি শুধুই এই সম্মুখে উপস্থিত নারীর যৌবনকে ভোগের ইচ্ছার কারণে? নাকি সবার চোখের সামনে তাকে নিজের করে নিয়ে একান্তে তাকে নিয়ে মেতে ওঠার অছিলা? অথবা এমনও তো হতে পারে আমার হাত তাকে স্পর্শ করলো ঠিকই কিন্তু সেটা শুধুই ভালোবাসার পরশে?
ওর হাতটা বড্ড ধরতে ইচ্ছা করছে। ধরবো? আবারো সেই শীতল অদৃশ্য বাতাসে ভেসে সে যেন কানে কানে বলে গেলো "বুদ্ধু একটা! এখনো অপেক্ষা করে আছো? আর এদিকে যে মেয়েটা তোমার স্পর্শের অপেক্ষায়। আজ থেকে নয়, সেদিন থেকে যেদিন সে ভালোবাসাও বোঝেনা। শুধুই বোঝে ওর দাদার এই বন্ধু ওর কান্না মুছিয়ে দিয়ে কপালে চুম্বন করেছিল। সামান্য চোট লাগা হাতে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিলো কিচ্ছু হবেনা, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই ছিল তার প্রথম পুরুষ স্পর্শ। বুকটা কেঁপে উঠেছিল অজান্তে। সেদিনের সামান্য চোট হয়তো সে রাতেই ভুলে গেছিলো কিন্তু যে অজানা ব্যাথা তার বুকে অজান্তে তুমি দিয়েছিলে সেই ব্যাথা আজও বয়ে চলেছে সে এই বিরাট বুকে। সে ব্যাথা বড্ড মিষ্টি। তার মলম যে একমাত্র তোমার কাছে আছে। আর তুমি ভীতু হয়ে ভেবে চলেছো? কেমন পুরুষ তুমি বাপু? ধরো এখুনি!"
আশ্চর্য! হাওয়া এতো কথাও বলতে পারে? কি জানি হবে হয়তো। কিন্তু আমি আর অপেক্ষায় না থেকে তার কথা শুনে হাত বাড়িয়ে তার কোমল হাত ধরে পুরুষালি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলাম ধন্যবাদ। লাজে রাঙা রূপসী সুন্দরী যে কতটা অসাধারণ লাগে সেটার সাক্ষী যে পুরুষ না হয়েছে সে বুঝবেনা। উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। আমার বিশাল বুকের সাথে তাকে মিশিয়ে দিতে বড্ড ইচ্ছা জাগছিলো কিন্তু সেটা না করে জিগ্যেস করলাম "চা খেয়েছো?" মাথা নস্তক অবস্থাতেই মাথা নেড়ে জানালো ফিরে গিয়ে খাবে। আমি নিজের কাপটা তার ঠোঁটের কাছে নিয়ে গিয়ে বললাম - নাও। এইবারে সে ওপরে আমার পানে চাইলো। গাল দুটি লাল হয়ে গেছে বেচারির। আমি আরও কিছুটা এগিয়ে এসে নিজের হাতেই তাকে আবারো বললাম "একটু আমার হাতেই খাও না। এক চুমুক। নইলে কিন্তু....." বাকিটুকু বলার প্রয়োজন হলোনা। আমার হাতে ধরা কাঁপে চুমুক দিলো সে একটু। আর তারপরেই চোখ বড়ো হয়ে গেলো তার।
"এমা! আমি তো চিনিই....! ইশ....আর তুমি বলছো না? খেয়ে যাচ্চো?"
ওর কথা শুনে আমি অবাক হবার ভান করে "তাই নাকি? কই দেখি " বলে চুমুক দিলাম কাপে। আবারো সেই একই স্বাদে ভোরে গেলো মুখ। কিন্তু মুখে বললাম "এ বাবা! এ যে আরও মিষ্টি হয়ে গেছে! এতো মিষ্টি খাইয়ে দিলে? এবার যে মিষ্টির প্রেমে পড়ে যাবো আমি! "
- ধ্যাৎ অসভ্য তুমি খুব!
ছুটে বেরিয়ে গেলো পারুল ঘর থেকে। আর আমি? আবারো চায়ে চুমুক দিলাম। জীবন স্রোতে ভাসতে যখন জীবনকে আরও ভালো করে জানতে নতুন অভিযানে বেড়িয়েছি তখন ডুবে নোনতা স্বাদ তো বারবার পেতেই হবে। সে জায়গায় তো এই চা সত্যিই মিষ্টি। বড্ড ইচ্ছে করছিলো ওর পালিয়ে যাবার ঠিক পূর্বে ওর ওই হাতটা ধরে কাছে টেনে নি ওকে। বুকে জড়িয়ে ধরি। পিষে ফেলি ওকে নিজের সাথে। হয়তো সেও বাঁধা দিতোনা। বরং ওর ভীত চোখে ও কম্পিত ঠোঁটে আমন্ত্রণ পেতাম খুঁজে। আর তারপরে আমিও..........
অজান্তেই বিশেষ এক স্থানে কেমন যেন একটা মৃদু স্পন্দন অনুভব করতেই হেসে ফেললাম। ধুর! আমিও না! লেখক বাবু হয়ে বড্ড বেশি ভেবে ফেলছি আজকাল। আবারো ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেলো কানের পাশ দিয়ে। যেন বলে গেলো - "ঐযে আরেক জন আসছে তোমার খোঁজে। সত্যিই লেখক বাবু.... ভাগ্য বটে তোমার। একা আমিতে হচ্ছেনা না? আরও চাই? অসভ্য একটা।"
সামান্য পরেই ঘরে প্রবেশ করলেন এ গৃহের দ্বিতীয় সুন্দরী। হয়তো একটু আগেই স্নান সেরে পূজা দিয়েছে। এমন মহেন্দ্র ক্ষনে নারীজাতি অস্বাভাবিক সৌন্দর্যের অধিকারিণী হন। সে রূপ তার কাছে যতটা পবিত্র ঠিক ততটাই আকর্ষক এক পুরুষের কাছে। বিশেষ করে যে পুরুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। আর স্বপ্ন যদি হয় মুক্ত আকাশে ভেসে চলা মেঘের পিঠে বসে থাকা দুস্টু কোনো দানবের। চোখে লালসা ও পেটে ক্ষিদে নিয়ে মেঘে চড়ে ভেসে যায় সে দানব আর শিকার পেলেই তাকে নিজের সাথে নিয়ে যায় তুলে। ভাসমান মেঘে শিকার শিকারি গভীর খেলায় মত্ত হয়ে হারিয়ে ফেলে নিজেদের অতীত ভবিষ্যত। শুধুই বর্তমানকে মাথা পেতে মেনে আদিম পূজায় মাথা নত করে দানব।
- পারুল এসেছিলো না? কি বলছিলো ও?
বন্ধু পত্নীর প্রশ্ন যতটা স্বাভাবিক ততটা কিন্তু তার মুখশ্রী লাগলোনা। যেন কিছু একটা কারণে সে অখুশি। সেটার কারণ কি পারুল? নাকি আমি? তবু প্রশ্ন মনে রেখেই হেসে সত্যিটা বলেই দিলাম। আমার হাতে ধরা কাপটা দেখে সেই দুই চোখে যেন হালকা একটা ব্যার্থতা লক্ষ করলাম আমি। তবে সেটা শুধুই এক পলকের জন্য। তারপরেই আবারো ওই ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। যদিও সে হাসিতে নেই কোনো উজ্জ্বলতা। আমি ভদ্রতার খাতিরে তাকে ভেতরে এসে বসতে বললাম। বৌদি আসলেন ঠিকই কিন্তু যেন কোন ভাবনায় ডুবে যাচ্ছিলেন জানিনা। খাটে বসে আমার সাথে কথা বলার পাশাপাশি বাঁ হাতের নখ দিয়ে বারবার চাদরটাকে শাস্তি দিচ্ছিলেন। হায়রে বেচারা..... কার ভাগের দন্ড কে পায়। আমার পিতা মাতার কুশলতার খোঁজ নিয়ে অন্যান্য ব্যাপারে কিছুক্ষন কথা বলে একটু থেমে হটাৎই প্রশ্ন করলেন শ্রীমতি -
- কি লিখছেন এখন? বিষয় কি?
- শুনবেন?
- হুমমম
- রাগ করবেন না তো আবার?
- এ মা? রাগ করবো কেন? রাগ করার মতো কোনো বিষয় নাকি?
- একদমই তাই। শুনেই মাথায় রক্তে চড়ে যাবে।
- তাই বুঝি? তা আগে শুনি। শুনে রেগে গেলে না হয় ভেবে দেখবো কি শাস্তি আপনার যোগ্য।
- হুমমমমমম...... বেশ তবে তাই হোক। ভাবছি এইবারের আমার সৃষ্টি হোক আদিম রিপুকে নিয়ে। যাকে বিচার করার ক্ষমতা অন্তত এই সংসারে কারোর নেই। যাকে হয়তো আমরা নানান নাম দিয়ে, নানা ভাবে অপরকে বা নিজেকেই বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু বারবার অসফল হই। কারণ তাকে সম্পূর্ণ রূপে বোঝা আমাদের কম্ম নয়।
তাই তাকে ওতো না বুঝে অনুভব করে তার অস্তিত্ব আবারো প্রমান করার কাহিনী হবে আমার। আর সেটা ব্যাভিচার ছাড়া কি সম্ভব?
- ব্যাভিচার?
- আজ্ঞে.... এই ধরুন আপনজনকে নিয়ে প্রতিদিন ঘর করার পরেও, তাকে সব কিছু উজাড় করে ভালোবাসার পরেও হটাৎ করে নতুন রূপের সাক্ষাৎ পেয়ে তাকে নিয়ে অজান্তেই ভাবতে শুরু করা। আপনজনকে আদর করার মাঝেই তার মধ্যে সেই নতুন মুখটা খুঁজে নেবার অসফল চেষ্টা কিংবা নিজের সাথে অনন্ত কাল ধরে লড়তে লড়তে শেষে পরাজিত হয়ে সেই নতুন মানুষটাকে হৃদয়ে স্থান দেওয়া। তাও আবার তার অজান্তেই। কি দারুন ব্যাপার না? সেই মানুষটা জানতেও পারলোনা দুটো অচেনা চোখ তাকে শুধু প্রতিদিন লুকিয়ে দেখছেই না বরং তাকে নিয়ে নানানা সব কথা ভাবছে। তার অজান্তেই সে কোনোদিন নাগিনী রূপে কিংবা অপ্সরা রূপে রতিসুখ দিচ্ছে সেই দুষ্টু পুরুষকে। এও তো এক প্রকার ব্যাভিচার। বাস্তবিক রূপে না হোক কাল্পনিক ভাবে তো অবশ্যই।
- হুমমম তা ঠিক। তা আপনার গল্পটা কেমন শুনি একটু। যদি আপত্তি না থাকে।
- শুনবেন? উমম আমার গল্পের নায়ক যিনি আমার মতোই একজন শিল্প ভুখা মানুষ। যে আঁকতে ভালোবাসে, লিখতেও ভালোবাসে আবার গড়তেও ভালোবাসে মাটির নানান সব মূর্তি। আর তার সেরা কাজটা ফুটে ওঠে তখন যখন সে রেগে থাকে।
- ও বাবা? রেগে থাকলে তার কাজ ভালো হয়? তা কার ওপর সে রেগে থাকে?
- সবার ওপর। বা বলতে পারেন সব কিছুর ওপর। বাবা মা থেকে প্রতিবেশী, অতীতের ক্রুর শিক্ষক থেকে সমাজ ব্যবস্থা, বন্ধু থেকে আত্মীয় সবার ওপর। যে মনে করে পুরো পৃথিবী তার শত্রু। শুধুমাত্র তার সৃষ্টিই তার বন্ধু। বলতে পারেন একজন শর্ট টেম্পার পাগলাটে পুরুষ। কিংবা বলতে পারেন সুপুরুষ। তবে তার সবচেয়ে বেশি রাগ কার ওপর জানেন?
- কার?
- আয়নার সামনে দাঁড়ালে যে লোকটাকে রোজ দেখতে পায় তার ওপর। লোকটা আসলে ওকে এমন একটা ক্ষত দিয়ে গেছে যে আজও সেই ক্ষত বুকে বিয়ে বেড়াতে হয় তাকে। তাই যতবার ওই শয়তানটাকে আয়নায় দেখে..... ওর ইচ্ছে করে গলা টিপে মারতে কিন্তু ও ব্যাটা আয়নার ওপারে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে। এতে আরও রাগ চেপে যায় বেচারার ওপর। আর তখন সে তার সমস্ত রাগ উগ্রে দেয় সৃষ্টির ওপর। সেরাটা বেরিয়ে আসে তার মধ্যে থেকে। তারপরে নোংরা হাতে হাঁপাতে হাঁপাতে তাকিয়ে থাকে সেটার দিকে। আর এক সময় সে প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে ওঠে। যৌন উত্তেজনা। তখন সে তাকায় পাশের বাড়ির ফাঁকা ছাদের দিকে। ওখানেই তো প্রায় প্রতিদিন দেখা পেতো সে তার। রোদে ভেজা শরীরটা রোজ যখন কাপড় তুলতে যেত এবাড়ির ছেলেটা হা করে গিলতো ওই শরীরটা। বড্ড ভালো লাগতো তাকে ঐভাবে লুকিয়ে দেখতে। কত কিছু আকাশ পাতাল ভাবতো সে তাকে নিয়ে। কিন্তু আজ আর সে আসেনা ছাদে। আর সে আসেনা এ বাড়িতে মায়ের সাথে গল্প করতে। আর শোনা যায়না তার শাশুড়ির সাথে ঝগড়া চিৎকার। আজ বড্ড শান্ত ওই বাড়িটা।
- কেন? সে কি বাড়ি পাল্টে অন্য কোথাও চলে গেছে থাকতে? নাকি........
আমি বন্ধু পত্নীকে এসব বলার সময় এক টানা তাকিয়ে ছিলাম খোলা দরজাটার দিকে। হাওয়ায় অনবরত দুলে চলেছে পর্দাটা। মাঝে মাঝে আলো ছায়ায় মনে হচ্ছে যেন দরজার বাইরের চুপটি করে দাঁড়িয়ে কেউ সব শুনছে। আমি জানি সেই শুনছে। লুকিয়ে সব দেখছে আর হাসছে নিশ্চই। পাষান হৃদয় তার। তার হাসি আজকাল অসহ্য লাগে আমার। ইচ্ছে করে তাকে একটা ক্ষত দিতে কিন্তু আমি যে অক্ষম। সেটা বুঝেই তার পৈশাচিক আনন্দ হয় যেন।
- কি হলো? বললেন না?
- আজ্ঞে? কি? কি বলবো?
বন্ধু পত্নী বুঝতে পারলেন যে সামনে বসে থাকা পুরুষটা হয়তো বর্তমান পরিস্থিতির বাইরে গিয়ে অন্য কোনো দুনিয়ায় হারিয়ে গেছিলো ক্ষনিকের জন্য। হতে পারে গল্পের চরিত্রদের নিয়ে কিংবা অন্য কিছু। তাই পুনরায় একই প্রশ্ন না করে সে এবার জিজ্ঞেস করলো - আপনার গল্পের নায়ক তো বেশ রহস্যময় মনে হচ্ছে। তা সে কি প্রয়োজনে কাউকে খুন টুনও করতে পারে নাকি? এমন চরিত্রদের বিশ্বাস নেই। এরা যা ইচ্ছে করতে পারে।
আমি হেসে চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম - তা হয়তো পারে। যেমন ধরুন নিজের উগ্র যৌনতার বিষ ঝেড়ে ফেলতে বেশ্যালয় যাওয়া এমন পুরুষের কাছে কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। সেখানের কোনো কাম কক্ষে গিয়ে মেয়েমানুষ নিয়ে মেতে উঠতে উঠতে হয়তো আবার সেই ক্রোধ মাথাচারা দিতেই পারে। তখন সমস্ত রাগ গিয়ে হয়তো পড়লো ওই রমণীর ওপর। ব্যাস খেলা শেষ। আচ্ছা আপনি কি বলেন? সে কেন খুন করবে সেই নারীকে? রতিক্রিয়ায় অসফলতা নাকি নারী জাতির প্রতি তার ক্ষোভ।
আমার প্রশ্নবানে প্রাথমিক ভাবে ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিতে বেশি সময় লাগলো না আমার বন্ধুপত্নীটির। কিছুক্ষন হয়তো আমার প্রশ্নের উত্তরটা ভেবে নিলো সে। আমি কিন্তু তাকিয়ে খোলা দরজার দিকে। আমি জানি সে সব শুনছে। আমারও অন্তরে একটা লোভ বেড়ে চলেছে। ইচ্ছে করছে এক্ষুনি সামনে বসে থাকা সুন্দরী রমণীর ওপর ঝাঁপিয়ে তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলি। না তার প্রতি যে আমার বিকৃত নজর আমায় বাধ্য করছে তা মোটেও নয়, আমি দেখতে চাই ওই লুকিয়ে সাক্ষী হওয়া সত্তার হেরে যাওয়া মুখটা দেখতে। তখন বড্ড আনন্দ হবে আমার। কিন্তু কোনোরকমে নিজের সেই ইচ্ছেটা নিজের মধ্যে চেপে রেখে তার উত্তরের অপেক্ষায় আমি। সে বলতে শুরু করলো -
"উহু.... আমার কিন্তু মনে হয় এই ধরণের পুরুষের কামশক্তি ভয়ানক প্রবল হয়। যাকে বলে বীর্যবান পুরুষ। তাই ঐটা বাস্তবিক নয়। ধরুন অতীতে হয়তো এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছে সে যার জন্য নারীদের প্রতি তার ভয়ানক ক্ষোভ, ক্রোধ। নারী হয়তো তার কাছে বড্ড অপবিত্র। হয়তো নিজের মাকে কেন্দ্র করে কিংবা প্রেমিকার থেকে বঞ্চনা কিংবা স্ত্রীয়ের ব্যাভিচার। এর থেকে তার এই পাপ কর্মে লিপ্ত হওয়া। কি? খুব একটা মন্দ বললাম কি?"
মহিলার উত্তর শুনে আমি কিছুটা অবাকই হলাম। এমন সুন্দরী শান্ত ভদ্র রমণীর অন্তরে এই পরিমান বুদ্ধি থাকতে পারে সেটা ভাবতে পারিনি। এটা সত্যিই আমার একটা বড়ো ভুল। নারীজাতিকে হয়তো কোনোদিনই চিনতে পারবোনা আমি। নিজের অক্ষমতা নিজের মধ্যেই লুকিয়ে হেসে হাসিমুখে তার প্রশংসা করে বললাম - "মানতেই হবে। আপনার জবাব নেই। তা এতটা যখন বললেন তাহলে এটাও বলুন আপনার বর্ণিত অতীত গুলোর মধ্যে থেকে আমার গল্পের জন্য কোনটা সবথেকে বেশি মানাবে?"
বন্ধুপত্নী মুচকি হেসে বললেন - "লেখক কে? আমি না আপনি?"
আমিও প্রত্তুতরে বললাম - "সবসময় যে লেখক নিজের সৃষ্টি নিজের মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়েই লেখে তা তো নয়, খুঁজলে এমন বহু নামি লেখক পাওয়া যাবে যারা তাদের সৃষ্টির বীজ খুঁজে পেয়েছেন ওপর কোনো সৃষ্টিকর্তার বাগানে। লক্ষ কোটি পাতা ভর্তি লেখার ভিড়ে একটু ছল চাতুরী চলেই। এই গল্পের জন্য সহায়িকা হিসেবে না হয় আপনার নামও সংযোজন করবো। বলুন না? কোনটা সবচেয়ে যোগ্য?"
সে যেন আগের থেকে অনেকটা পরিবর্তিত এবার। হেসে উঠে হাত নেড়ে বললো - "নানা বাবা! আমার নাম টাম দেবার কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরে ওই লেখায় সহায়িকা হিসেবে আমার নাম দেখতে পেলে আপনার বন্ধুই আমাকে ঘাড় ধরে তাড়িয়ে দেবেন। তখন কি আপনার কুটিরে গিয়ে উঠবো নাকি?"
"আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই।" হেসে বলে উঠলাম আমি। তাতে সে কি বুঝলো জানিনা কিন্তু এক অদ্ভুত চাহুনি আমায় উপহার দিয়ে চুপচাপ বসে রইলো সে। এক অসহ্য নীরবতায় ভোরে গেলো ঘর খানি। আমিও চায় চুমুক দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম। সত্যিই চা পানে এতো সুখ কোনোদিন পাইনি তো। সেটা কি হাত পরিবর্তিত বলে? হবে হয়তো। খুব ইচ্ছে করছে তাকে পারুলকে দেখতে আবারো। মেয়েটার মধ্যে একটা আলাদা মাধুর্য আছে যেটা বারবার আকৃষ্ট করে। তাকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে জাগছে। চায়ে কিছু মিশিয়ে দেয়নি তো? নিশ্চই আঙ্গুল ডুবিয়ে নিজের দেহের ইতর মিশিয়ে দিয়েছে মেয়েটা। দাঁড়াও! একবার হাতের নাগালে পাই। এমন শাস্তি দেবো যে আমার চিরকাল মনে রাখবে। শুধু মনেই রাখবেনা, শাস্তিটাকে একটু একটু করে বড়োও করবে নিজের গর্ভে। উফফফফ ইচ্ছাটা মনে জাগতেই আবার নিষিদ্ধ চাহিদাটা অনুভব করলাম। এদিকে যে আরেকজন আমার ঘরে উপস্থিত সেটা ভুলে গেলেও চলবেনা। আকর্ষণের দিক থেকে সেও বা কম কিসে? বরং ইনি আরও পরিপূর্ণ। ঠিক সুস্বাদু পাকা আমের মতন। বহু ঝড় ঝাপ্টা উত্তাপ সামলে আজ সে রসে মাখামাখি রূপের রানী।
" আমি হলে প্রথমটা বেছে নিতাম" হটাৎ বলে উঠলো সে। আমি অন্য খেয়ালে হারিয়ে ছিলাম বলে সামান্য পরে হু? বলে উঠলাম। সে আবারো বললো - প্রথমটা।
- মানে মায়ের দিকটা?
- হুমমম.... এসব ব্যাপারে পুরুষ নষ্ট হবার পেছনে মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি থাকে। ধরুন ছোটবেলার কোনো স্মৃতি যা চিরকালের জন্য একটা জঘন্য ক্ষত দিয়ে দিয়েছে সেই ছেলেটিকে। যা পচে পচে তাকে আজ মানুষ রুপী জানোয়ার বানিয়ে তুলেছে। যার চোখে নারী মানেই নষ্টা, কলঙ্কিনী। তাদের ভোগ করে তারপরে তাদের শেষ করে এক চরম সুখ হয় তার। আপনি কি বলেন?
- মানে মায়ের ব্যাভিচারের সাক্ষী তাইতো? হ্যা মন্দ নয়। তবে এতটা গভীরে যাওয়া কি উচিত হবে? রসের গল্পে এতটা ক্রাইম ঢোকানো হয়তো অনেকেই পছন্দ করবেনা। তারা ব্যাভিচারের আগুনে পুড়তে রাজি কিন্তু খুনের বিবরণ পড়তে কতটা আগ্রহ পাবে সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার।
- আপনার কাছে নিজের গল্প আগে নাকি পাঠক? যদি শুধুই পাঠকদের কয়েক মুহূর্তের সুখ দিতে এসব লেখেন তাহলে নিজেকে আর যাই বলুন লেখক বলবেন না। লেখক সে যিনি নিজের কাছে আগে প্রতিজ্ঞা করেন মোহগ্রস্থ হয়ে ভুল পথে চালিত না হবার, নিজের সৃষ্টিকে বেশ্যার মতো রাস্তায় না নামানোই তো লেখকের প্রথম কর্তব্য। ভুলে যাবেন না আপনি সৃষ্টি করলেও আপনার প্রথম পাঠক আপনি নিজেই। যদি নিজেকেই না খুশি করতে পারলেন তবে কি সাহসে পাতার পর পাতা নষ্ট করেন? আমি যাই। আমার অনেক কাজ আছে।
এমন দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ করে উঠে দাঁড়িয়ে সে চলে যেতে গিয়েও দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কি ভেবে ঘুরে ঘরে বসে থাকা অতিথির দিকে তাকিয়ে আবার সেই আগের শান্ত ধীর কণ্ঠে বলে গেলো - "আসি...... কিছু মনে করবেন না। আমি খুব ভুলভাল বলে ফেলি। তাইতো শাশুড়িমা আমায়..... যাইহোক.... আবার দেখা হবে। আসি।"
চোখের সামনে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো সে। আমি তাকিয়েই রইলাম দুলন্ত পর্দার দিকে। ওপারে দাঁড়িয়ে যে সবটা শুনছিলো সেও বোধহয় মিশে গেছে প্রকৃতির বুকে। আমি এখন একাই জড় পদার্থ হয়ে বসে রয়েছি। বাইরে থেকে ভেসে আসা ছাতিম ফুলের গন্ধে কখন যেন ভোরে উঠেছে ঘরটা। মুচকি হেসে শেষবারের মতো চায় চুমুক দিয়ে নিজের কাজে ডুব দিলাম। নানান সব বিচিত্র লেখায় ভরিয়ে ফেলতে লাগলাম পাতার পর পাতা। কানের পাশ দিয়ে মুক্ত শীতল অবাদ্ধ হাওয়াটা বয়ে গেলো আবারো। শুনতে পেলাম সে বলছে - ইশ, এসব কেউ লেখে নাকি? নির্লজ্জ একটা হিহিহিহি।
পরের অংশ এক্ষুনি আসছে
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
উপরের অংশের পর
রাতের আকাশের নিচে দুই পুরুষে মিলে ছাদে কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে গল্প করছি। ঘুড়ন্ত গোলকের মাঝে দুটি অনু যেন নিজের উৎপত্তি ও বিকাশের ইতিহাস নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেই কবে কোথায় প্রথম দেখা, দুই বন্ধুর ঝগড়া, ক্লাসে জানলার ধারে বসে থাকা শান্ত ছেলেটার পেছনে লাগা থেকে পারিবারিক জীবন ও সেই বাঙালির অতি প্রিয় সাবজেক্ট স্ট্রাগল নিয়ে আলোচনা। মনে পড়ে ছোটবেলায় একবার দুই বন্ধুতে মাঠে খেলে ফেরার পথে ঝোপের ধারে মূত্রত্যাগের কথা। জায়গাটা ছিল কিছুটা উঁচু আর নিচে ঝোপটা নেমে গেছে অনেকটা। ইচ্ছে করেই ব্যাটাকে দিয়েছিলাম ধাক্কা। যদিও খুবই ধীরে তাতে বন্ধুটি এই এই করে চেঁচিয়ে উঠেছিল। যদিও একটু পরেই ফিক করে হেসে একটা অশ্লীল নামে আমায় ডেকে উঠে ছিল। আজও আমরা তেমনই একটা মুহূর্তে উপস্থিত। নিচের অন্ধকার অংশটা যেন বড্ড টানছে আমাকে। মাথার মধ্যে কি যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ফিসফিস করে বলছে " এইতো সুযোগ, দেখো কতটা কাছে দাঁড়িয়ে সে। দাও একটা ধাক্কা। ব্যাস তারপরেই তোমার সামনে আর কোনো বাঁধা থাকবেনা। অমন রমণী তোমার একার হবে। তাকে নিয়ে তখন যা খুশি করতে পারবে তুমি। তোমার সজ্জাসঙ্গিনী হয়ে ধন্য হয়ে যাবে সে। তার খুশির জন্য, তাকে পূর্ণতা দেবার জন্য কাজটা করতেই হবে তোমার। এই সুযোগ বারবার আসেনা। নাও দাও ধাক্কা!"
এই একটু আগেও তো আমার পাশে দাঁড়িয়ে কিসব যেন বলছিলো মানুষটা। এখন আর সেখানে দাঁড়িয়ে নেই সে। ওই নিচের অন্ধকারে যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমার পাশটা এখন ফাঁকা। ওটাকে পূর্ণ করতে হবে এবার আমায়। আমার অন্তরের সেই অচেনা কৃমিটা আমায় পশু বানিয়ে দিলো আজ। আর এই পশু এবার নবরূপে বিকশিত হবে। ওই বিছানায় আমার অধিকার, শুধুই আমার! আমার প্রেমকে ছিনিয়ে নিতে প্রেমিকাকেও প্রয়োজনে.........
এতটা পর্যন্ত লিখে থেমে গেলাম। নাহ..... এই মুহূর্তে আর কিছু মাথায় আসছেনা আগামী অংশের জন্য। ভেবেছিলাম রাতের মধ্যেই আমার গল্পের নায়ককে পাঠাবো তার প্রেয়সীর ঘরে। তারপরে সারারাত চলবে মদন খেলা কিন্তু আর পারছিনা। এইটুকু লিখে আজকের মতো মতো লেখাকে বিদায় জানিয়ে শুয়ে পড়লাম আমার জন্য নির্ধারিত বিছানায়। এই নতুন অংশটা একটু আগেই মাথায় এসেছে তাই চটপট লিখে রাখলাম। কিছু সময় পূর্বে সেই প্রতিবাদী মহিলার হাতের রান্নার স্বাদ নিয়ে মোরা দুই বন্ধুতে এ বাড়ির ছাদে হাঁটাহাঁটি করছিলাম। সত্যিই অতীতের নানান সব কথা হারিয়ে যাওয়া জাহাজের নিচ থেকে উদ্ধার করে মণি মুক্তার ন্যায় বার করে আনছিলাম। ওই যে ধাক্কার কথাটি উল্লেখ করেছি..... উহা সত্যিই বাস্তব রূপ নিয়েছিল আমাদের শৈশবে। মানুষ বাস্তব থেকেই তো অনুপ্রেরণা পায়। কল্পনার রসদ তো লুকিয়ে থাকে আশেপাশেই। আমার বন্ধু ভীতুর ডিমটা ভয় পেয়ে তো নিজেই গেলাম গেলাম রব তুলে উল্টে পড়ছিলো হেহেহ। বড্ড ভালোমানুষ আমার ওই বন্ধুটা। মনটাতে ময়লা জমতে দেয়নি। আর সেই উপহার স্বরূপ বোধহয় এমন একজন গৃহনিপুনা অপ্সরা জুটেছে তার কপালে। যে সাংসারিক জীবনে লক্ষী হয়ে সব সামলে চলছে আবার অন্যদিকে নিজ কক্ষে মেনকা রূপে স্বামীকে পূর্ণতার সুখ দিয়ে চলেছে অনবরত। যত চিনছি তাকে ততই যেন অবাক হয়ে যাচ্ছি। আগের জন্মে নির্ঘাত বিখ্যাত কোনো নাট্যকর্মী ছিল সে। নইলে সন্ধ্যার সেই প্রতিবাদী ভাবমূর্তি সবটা লুকিয়ে একেবারে শান্ত মেয়েটা হয়ে অমন ধীর কণ্ঠে কিকরে বলতে পারে " আপনি তো কিছুই নিচ্ছেন না, আরেকটা মাছ দি?" এই মানুষটার সাথে এ গৃহে আসার পরেই পরিচিত হয়ে তার রূপের জাদুতে মুগ্ধ হলেও তার সেই ভিন্ন রূপটা আমাকে বাধ্য করেছে তাকে সম্মান করতে। তার মধ্যেকার লুকানো কষ্ট যেন সামান্য অংশে বেরিয়ে এসেছিলো আজ এই কক্ষে। হয়তো অনেক কিছুই বলার আছে তার কিন্তু উপায় নেই। তাই সে নিজেকে তৎক্ষণাৎ সামলে নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই তো সমস্যাটা। কেন সে নিজেকে মুক্ত করলোনা? কেন সে আরও কয়েকটা কটু কথা বলে আমার লেখক রূপটাকে অপমান করলোনা? কেন আমায় অন্তর থেকে চিনতে পেরেও আমার দুই গালে সপাটে দুটো চড় মারলোনা? একটিবার যদি সে এই কাজটি করতো তাহলেই তো......... নাহ বড্ড একা আমি। নিজের গৃহে থাকলেও একা, এখানেও তাই। এই নিশি রাতের চাদর মুড়ে পথে পথে গল্প বেচা এক ফেরিওয়ালা ছাড়া আমি আর কিছুই নয়।
নানা! আমি ভুল বললাম। আছে তো! সে আছে আমার সাথে। সেদিনও ছিল, আজও আছে। কেন যে ভুলে যাই বারবার? ঐযে! জানলার সামনে দাঁড়িয়ে সে মুচকি মুচকি হাসছে। বড্ড রাগ হয় আমার ওই হাসি দেখলে। যেন আমার অসহায় অবস্থাটাকে ব্যঙ্গ করতেই সে হাসে। এদিকে আমি নিজের জ্বালায় জ্বলছি আর সেই নগ্নীকা মুখ টিপে হেসেই চলেছে। একদিকে বন্ধুর বোন আমায় যার চোখের দিকে তাকালে আমি কমজোর হয়ে যাই, অন্যদিকে বন্ধুপত্নী যার চোখের আগুনে জ্বলতে ইচ্ছে জাগে আরেকজন ইনি যে প্রতিনিয়ত আমায় অন্তর থেকে জাগিয়ে পালিয়ে যায়। সেই দিনও পালিয়ে গেছিলো যেদিন....... হ্যা মনে পড়ে সেদিন। দুটো হাত আমায় নিজের মধ্যে চেপে বলেছিলো " আমি শুধুই তোমার, তোমারই থাকবো"। সে কথা রেখেছে। সে সেদিনের পর থেকে আমার সাথেই থাকে। শুধু মাঝে মাঝে হারিয়ে যায় ক্ষনিকের জন্য। চঞ্চলা সে বড্ড।
আমার পাশে এসে চুপটি করে বসে সে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে। আমিও চেয়ে তার পানে। জানলা দিয়ে আসা চন্দ্রমার আলোয় যেন হটাৎ করেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে চারিপাশ। ছাতিমের গন্ধটায় যেন নেশা ধরে যাচ্ছে। কিছু সময় পরেই মা নিজের ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি আসবেন। আবার ফিরেও যাবেন। রেখে যাবেন নানান সব সুখের স্মৃতি আর নিয়ে যাবেন জমে থাকা দুঃখ। তারপরে আবার নতুন করে ভরতে থাকবে জীবন রোমাঞ্চ,নতুন উদ্বেগ, নতুন দুঃখের ঝুলি। এমন একটা মহেন্দ্রক্ষনে আমিও কেন যে শৈশবে হারিয়ে যাচ্ছি জানিনা। পাশে সুন্দরী রমণী আমার পানে চেয়ে আর আমি কিনা কোনকালে গুরুজনের হাত ধরে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়িয়েছি সেসব গুনতে শুরু করেছি। অজান্তেই চোখ থেকে একফোঁটা অবাধ্য তরল আমার গাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে জানতেও পারিনি। বিছানায় আমার পাশে অবশিষ্ট সামান্য জায়গাটুকুতে শায়িত হয়ে সে বললো "কি মহাশয়? গপ্পে মন বসছেনা বুঝি? অন্য সময় হলে তো রাত গভীর হয়ে গেলেও হাত থামতো না। এখন বুঝি লেখার থেকেও অধিক ভালোবাসার কিছু খুঁজে পেয়ে লেখার ভাষা হারিয়ে ফেলেছো?"
কি আশ্চর্য। এই রমণী বারবার কিকরে খুঁজে পায় আমার গোপনে লুকিয়ে রাখা ইচ্ছের ও অনুভূতির ঠিকানা? আগে তো অক্ষম ছিল সে। কি গুনে এসব আয়ত্ত করলো সে? আমার গাল বেয়ে বয়ে যাওয়া জল টুকু মুছে সে আমায় নিজের সাথে লেপ্টে নিলো। ঠিক যেভাবে ছোটবেলায় আমার জননীর কোলে আমি মুখ লুকাতাম আজও সেইভাবে নিজেকে অন্ধকারে মিশিয়ে দিয়ে শুয়ে রইলাম। সত্যিই.... মাথায় কিছুই আসছেনা। আমি যেন লেখার প্রগতির পথ খুঁজে পাচ্ছিনা। এই তো কিছুদিন আগেও নজরে আকর্ষণ করার মতন কিছু পড়লে তখনি মগজে নানান সব বাক্যমেলা কিলবিল করে উঠতো আর আজ? একি হলো আমার? লেখায় মন বসাতে পারছিনা কেন? আগে তো রতিক্রিয়ার বিবরণ লিখে পাতার পর পাতা ভরিয়েছি। নিজের অন্তরে জমে থাকা জঞ্জাল দিয়ে ভরিয়ে তুলেছি ডাইরির পাতাগুলি। সেসবের খোঁজ আমি ছাড়া আর কেউ জানেনি। আজও হয়তো আমার ঘরের কোনো কোণে ধুলো জমে পড়ে রয়েছে সেসব। লেখাপড়ার মাঝে যখনি রিপু দংশন করেছে আমায়, কিংবা আমার কামসঙ্গিনীর সাথে মেতে উঠেছি আদিম খেলায় আমি তা লিখে রেখেছি। বারবার চোখ বুলিয়েছি তাতে। যতদিন সময় পেয়েছি ততদিন। কিন্তু একটা সময় পর আর লিখিনি কিছুই। ফাঁকা রয়ে গেছে শেষের পাতাগুলি। কিছুই তো অবশিষ্ট ছিলোনা লেখার জন্য। কিংবা হয়তো ছিল, আমিই আর লিখতে দিইনি নিজেকে। ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে খোলা দরজার ভিতরে উঁকি দেওয়ার পর হাওয়ায় দুলন্ত পা জোড়া আমায় যেন সে সময় অকেজো করে দিয়েছিলো। হেরে যাচ্ছিলাম আমি একটু একটু করে। কিন্তু আমায় সে সময় রক্ষা করেছিল আমার এই ভালোবাসার মানুষটা। কোনো এক গভীর রাতে আমার কাছে এসে ছল ছল নয়নে সে বলেছিলো " আমি হেরেছি বলে কি তুমিও হেরে যাবে? এই তুমি আমার প্রিয় পুরুষ? আমি তোমায় মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন দেখছি আমার দায়িত্ব শেষ হয়নি। আমি এবার তোমার ঘাড়েই চাপলাম বুঝলে ছোড়া? খবরদার যদি আমায় ভয় পেয়েছো। মট করে মটকে দেবো হিহিহিহি। " অশ্রু নয়নে আমি জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলেছিলাম সেদিন - "ভালোবাসি! তোমায় আমি ভালোবাসি। " কিন্তু সেই চিৎকার আমার মুখ দিয়ে নয়, তাকে ভালোবেসে আদর করে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম সে রাতে। তাতে না ছিল শরীরী লোভ, না ছিল যৌন যুদ্ধে জেতার ইচ্ছে। শুধুই কামপুকুরে ভেসে তলিয়ে যাওয়ার আনন্দ। আমি আর কাঁদিনি তার জন্য। কেন কাঁদবো? সেতো আমার সাথেই আছে। যখনই তার সময় হয় সে এসে আমার পরিপাটি করে আঁচড়ানো চুল ঘেঁটে দিয়ে পালিয়ে যায়। বড্ড দস্যি সে। মুক্তি পেয়ে যেন আরও পাখনা গজিয়েছে তার। কিন্তু রাত্রে আমাকে ছাড়া সে থাকতেও পারেনা। বলে নাকি ভয় লাগে। নিজের ঘরে এসে শুয়ে পড়ার পর প্রতি রাতে বুঝতে পারি কেউ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে কিংবা আমার পুরুষালি বক্ষে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে আছে। কিন্তু কেন জানি আমি তাকে তখন ছুঁতে পারিনা। এক নির্জীব বস্তুর মতো শুয়ে থাকি। আবার কোনো রাতে তাকে আদরে আদরে পাগল করে দিতেও ছাড়িনা। সবটাই যেন তার ওপর নির্ভর করে।
আজ এই রাতেও সে যেন আমায় নিজের করে পেতে চায়না। বরং আজ তার আমাকে অনেক কিছু বলার আছে। যবে থেকে এই নতুন ঠিকানায় এসেছি তখন থেকে দেখছি তার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। যেন কোনো শয়তানি ঘুরপাক খাচ্ছে তার মাথায়। এতদিনে তাকে চিনতে আমার বাকি নেই। আমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে সে স্তব্ধ হয়ে রইলো। অন্ধকারে তার বুকে নিজেকে লুকিয়ে আমিও যেন বহু কক্ষপথ অতিক্রম করে আজ সর্বহারা এক ক্লান্ত পথিক। একটু তৃস্না মেটাতে চাই কিন্তু সেই উৎস খুঁজে এগিয়ে গিয়েও যেন কিছুতেই খোঁজ মিলছেনা পানির। তাই অশ্রু জলেই ভেজাচ্ছি নিজের কণ্ঠ। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে সে আমায় ঘুম পারিয়ে দিচ্ছে। যেন আমি তার কোলের শিশুটা।
- এইভাবে কমজোর হলে চলবে? তোমায় যে কঠোর হতেই হবে। নিজের জন্য, আমার জন্য। তোমার ওই লেখা যা তোমার কাছে বেঁচে থাকার অন্যতম অবলম্বন সেটাকে তো এতো সহজে তুমি দূরে সরিয়ে দিতে পারোনা হে লেখক। ইচ্ছে হোক বা না হোক লিখতে তোমায় হবেই। তুমি যত লিখবে ততো তোমার জীবন শক্তি বাড়বে। আমি যে তোমায় থামতে দিতে পারিনা
- কিন্তু আমি যে সব ভাষা হারিয়ে ফেলছি! আজ হটাৎ করেই মনে হচ্ছে আমি ভুল, আমি এক হেরে যাওয়া মানুষ যে হয়তো জীবনে কোনোদিন কষ্ট দেখেনি, কিন্তু তার অন্তরআত্মা জানে সে কষ্ট অনুভব করেছে প্রতিদিন। তার ভেতরটা ভেঙে গুড়িয়ে গেছে বহুদিন আগেই
- আর সেটাই যে একটা নতুন মানুষকে জন্ম দিয়েছে, আর তার ভেঙে পড়াটা গড়ে তুলেছে তাকে আরও কঠিন আকারে। সেদিনের ভীতু ছেলেটা ঠিক যেভাবে হিংস্র বাঘ হয়ে উঠেছিল, সেইভাবেই এক সাধারণ ছেলে কষ্টে পুড়ে নতুন ভাবে প্রকাশিত হয়েছে সকলের সামনে। সর্বোপরি নিজের সামনে। অনেক জমানো বেদনা গুলো একের পর এক খাতায় লিপিবদ্ধ করে খ্যাতি অর্জন করছে সে। তাকে তো আমি হেরে যেতে দেখতে পারিনা। আমার সেই হিংস্র বাঘ থাবা মেরে মাংস আদায় করতে জানে, ভীরু হয়ে লেজ ঘুটিয়ে পালাতে শেখায়নি তাকে।
- কিন্তু
- কিন্তু কিন্তু নয়। আমি জানি কেন তুমি ভাষা হারিয়ে ফেলছো। কামের জ্বালায় জ্বলতে থাকা জ্বলন্ত শরীরটা আজ এই প্রথম মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছে। একদিকে এগোলে যেমন ঝলসে যাওয়া শরীরটা একটু মলম খুঁজে পাবে অন্যদিকে আরও একটা খোলা পথ। অগ্নিপথ। সে পথের শেষে দাঁড়িয়ে আরেকটি শরীর। যার কাছে গেলে আবারো এই বুক জ্বলে উঠবে কামের আগুনে। আবার সেই বন্য আদিম অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ। সুস্বাদু হরিণী মাংস ভক্ষন করবে নাকি হে লেখক?
- করলে মন্দ হয়না কিন্তু
- এই ছিল তাহলে মনের গভীরে লুকানো অভিপ্রায়? শয়তান ছেলে! আমাকে দিয়ে হচ্ছেনা? আরও চাই? খুব লোভ জেগেছে না মনে ওই শরীরটা নিয়ে খেলার? অমন বিদ্রোহী অভিমানী নাগিনীকে বশে আনার মজাই আলাদা কি বলো হে? নাকি সাথে আরও কাউকে চাই যে আবার তোমার কথা ভাবতে ভাবতে এই মাঝরাতেও লজ্জা পাচ্ছে নিজের ঘরে শুয়ে। উফফফফ ছেলে বটে তুমি একখান। একসাথে দু দুটো নারী হৃদয়ে ঢুকে বসে আছো?
- পারুল বড্ড ভালো গো। ওকে নিয়ে খেলতে চাইনা আমি। বরং ওকে তোমার সতীন করবো ভাবছি। তুমি অভিমানী হয়ে দেখবে কিভাবে রোজ রাত্রে তোমার প্রেমিক নিজের ভালোবাসা উজাড় করে দেয় তার ওপর। খুব রাগ হবে না তোমার?
- উহহ...আমার বয়ে গেছে রাগতে। আমি কি জানিনা তোমরা সবকটা এক গোয়ালের। একজনেতে মন ভরেনা। বারবার নতুনের দিকে নজর। তা সে যতই ভদ্রবাবু হয়ে ঘোরো।
- আমাকে অন্য কারোর সাথে লিপ্ত দেখেও রাগ হবেনা তোমার?
- নাগো.... সত্যি বলছি একটুও হবেনা। বরং আমি খুশি হবো আবার আমার সেই পুরুষ সিংহকে ফিরে পেয়ে। তাই তো বলছি আর নয় বেশিদিন। এবার তোমার জীবনে রক্তমাংসের কাউকে নিয়ে এসো। তোমার গৃহে আসুক গৃহলক্ষী আর আমার সতীন। তাকে দিনরাত ভোগ করো। তাকে পোয়াতি করো। যেভাবে আমায় নিজের মতো গড়ে তুলেছিলে ঠিক সেইভাবে তাকেও নিজের করে গড়ে তোলো।
শেষের কথাগুলি বলার সময় তার কণ্ঠে কেমন একটা কম্পন অনুভব করলাম আমি। সেকি কাঁদছে? জানিনা। আমি অনন্ত অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে সেই দেহের রন্ধ্রে মিশে যাবার চেষ্টায় মগ্ন তখন। আমি স্বৈরাচারী, আমি স্বার্থপর, আমি হিংস্র হয়ে উঠছি সে সময়। কোনো কালের জমিদারি সত্তা যেন ক্রমশ বিকাশ পাচ্ছে আমার মধ্যে। মনে হচ্ছে এই নারী শরীর কেন এতো ভালোবাসে আমায়? কেন এতো মায়াময়ী সে? কেন বারবার আমার পুরুষত্ব হার মানে এই নারীর কাছে? খয়ব রাগ হচ্ছে আমার। ঠিক আমার গল্পের নায়কের মতন। ইচ্ছে করছে আমি ঝাঁপিয়ে পড়ি এই লাস্যময়ী শরীরটার ওপর আর ক্ষততে ভরিয়ে দিই তার দেহ কিন্তু আমি অপারক। কেন সে চায় আমি অন্য কারো হই? কেন সে আমায় আটকায় না? কেন প্রতিবার কোনো সুন্দরীর প্রতি আমার লোভ আরও বাড়িয়ে দেয় সে? একি তার কোনো পরীক্ষা নাকি পৈশাচিক সুখ পায় সে এসব করে? বেশ.... তবে তাই হোক। আমিও তার কথা মতো চলবো। যেমন এতদিন চলে এসেছি। আমার মতো জ্ঞানী অপদার্থর জীবনে বেশ কয়েক জন নারী বা বলা উচিত কাম সঙ্গিনী এসেছে যাদের আমি সুখে পাগল করে দিয়েছি। আমার হাতিয়ার বার বার আঘাত হেনে বিপরীত লিঙ্গকে বিদ্ধ করেছে প্রতিবার। আর সেসবের সাক্ষী শুধুই দুই নর নারী হয়নি, ইনিও হয়েছেন। চুপটি করে নিজেকে লুকিয়ে পিরিতের নাগরকে পরস্ত্রীকে ভোগ করতে দেখেছে। কে জানে কতবার গর্বিত হয়েছে আর কতবার তার চোখ ঝাপসা হয়েছে। কিন্তু আমায় থামতে দেয়নি সে। যে নারীই আমার নিকটে আসতে চেয়েছে তাকে আমার কাছে এক মায়াবলে টেনে এনেছে সে প্রতিবার বা আমায় বুদ্ধি জুগিয়েছে।আমিও ভালো ছাত্রের মতো পরীক্ষায় পাশ করে এসেছি এতদিন। কিন্তু আর কত পরীক্ষা দেবো? আজও মনে আছে যৌবনের সূচনায় যখন আমার জীবনে আসা প্রথম এই প্রেয়সীর সহিত রতিক্রিয়া শেষে জড়িয়ে শুয়ে থাকতাম সে আমার পানে চেয়ে থাকতো। আমার বড্ড অদ্ভুত লাগতো সেই চাহুনি। যেন সেই বিশেষ মুহূর্তে কেমন ভয় লাগতো আমার ওই মায়াবিনীর আঁখির দিকে তাকাতে। একদিন প্রশ্ন করেছিলাম কি দেখে সে আমার পানে চেয়ে। এমন কি আহামরি সৌন্দর্য আছে এই মুখে যে সে তাকিয়ে থাকে। উত্তরে সে বলেছিলো " তুমি বুঝবেনা বোকা ছেলে, তোমার বোঝার দরকারও নেই। এটা শুধুই আমরা বুঝবো। দেখবে এই আমার মতোই অনেকেই তোমার কাছে আসবে নিজের পিপাসা মেটাতে। আমি আশীর্বাদ করি তাই হোক। রতিদেব সর্বদা প্রসন্ন থাকুন তোমার উপরে...... আমার বোকা ছেলেটা।"
কে সে? সে আমার প্রেমিকা? সে আমার শিক্ষিকা? নাকি সে আমার জননী ছিল সেই মুহূর্তে? আমি জানিনা। সত্যিই বোকা ছেলেটা হয়ে তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। পীনোন্নতস্তনী তখন আমার শুকনো ঠোঁটে পুরে দিয়েছিলো নিজের বৃন্তখানি। আমিও শিশুর মতন স্তন লেহনে নিজেকে ব্যাস্ত করে ফেলি। মিলন শেষের ক্লান্তি আহ বড়ো মধুর। যেন সেই ক্লান্তিই আজ আবার নেমে এসেছে আমার ওপর। খুব ঘুম পাচ্ছে আমার। খোলা জানলা দিয়ে বাতাসের সাথে বয়ে আসা সেই ছাতিম ফুলের মনমোহিনী গন্ধ যেন নাসিকা হয়ে অন্তরে গিয়ে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ছে। আর আমার চোখের পাতা ভারী হয়ে আসছে। আমার নায়ক ওদিকে পাপে লিপ্ত হয়ে নিজের প্রেমিকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে আর আমি? আমি নিজেই একটু একটু করে নাম না জানা গল্পের চরিত্র হয়ে উঠছি। একটা সময় পর আর কিছুই মনে নেই। শুধুই অন্ধকার। হটাৎ দেখলাম ফাঁকা মাঠের মাঝে একটি সুসজ্জিত বিছানা। আর তাতে শায়িত এক নারী। আমার সেই প্রথম নারী। উলঙ্গ শরীরটি সামান্য একটি সাদা কাপড়ের অন্তরালে। আমি এগিয়ে চলেছি তার দিকে এক পা এক পা করে। আমার খেয়াল নেই নিজের দিকে। যদি দিতুম তাহলে দেখতাম এই হাত,এই পা, এই শরীর আর আজকের নেই। সেই বহু যুগ আগের এক কিশোরের। যে ভীরু, যে কৌতূহলী কিন্তু যে ভালোবাসা চেনে। জানে মায়ের মমতা ও বাবার স্নেহ। যে চেনে প্রেমের পরশ ও কষ্টের কান্নার স্বাদ।
"কি হে ছেলে? আজ আবার এসেছো? আগের দিন বুঝি শাস্তিটা কম হয়ে গেছিলো তাই আবার আসা হয়েছে? তবে আরকি? উঠে এসো চটপট। আজ নতুন কঠিন শাস্তি দেবো তোমায়। আজ থেকে তোমার পুরুষ হবার যাত্রা শুরু। একবার তোমার ভেতর আগুন জ্বালিয়ে দিই তারপরে আমিও জ্বলবো সে আগুনে। পুড়ে শেষ হবো আমিও সে আগুনে। কি হলো কি? অমন জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেন? এসো বলছি। হিহিহিহি অবস্থা দেখেছো ছোড়ার। মুখে ভয় আর ওদিকে আমার ডবগা শরীর দেখে হে ইয়েটাকে জাগিয়ে ফেলেছো।"
" আমার বড্ড ভয় করছে। আমি পারবোনা না গো। আমি ভুল করে ফেলেছি। আমায় ক্ষমা করো। আমি.... আমি পারবোনা "
" পারবিনা তো কোন সাহসে সেদিন আমার ঘরে ঢুকেছিলি? এক পুরুষের অত্যাচার সহ্য করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছি তারওপর আরেকজন এসেছে। অন্তত সে পুরুষের ক্ষমতা আছে আমায় আঘাত দেবার। তোর তো তাও নেই। অতই যদি ভীতু তো অমন হিংস্র পশুটাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াস কেন? মুক্তি দে ওটাকে। তোর মতো কাপুরুষের অমন পশু পোষার কোনো অধিকার নেই। তুই যোগ্য নয় ওটার। বেরো এখান থেকে হতভাগা!"
আমার খুব কান্না পাচ্ছিলো তখন। চোখ ফেটে জল আসছিলো। আমার জীবনে আসা প্রথম সেই নারীর থেকে এরূপ অপমান আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। ইচ্ছে করছিলো ছুটে পালিয়ে যাই। ত্যাগ করি ওই স্থান। কিন্তু কেউ যেন আমার পদযুগল চেপে ধরে আছে। আমি তাই অসহায় নির্লজ্জের মতো দাঁড়িয়েই রয়েছি। এদিকে আমার সম্মুখে এক কামিনী হিংস্র নয়নে চেয়ে। উফফফফফ যেন কোনো ক্ষুদার্থ বাঘিনী নিজের পেটের আগুন নেভানোর আগে ভালো করে জীবন্ত শিকারের ভয়ার্ত রূপের সাক্ষী হয়ে মজা পায়। আমি আর তাকাতে পারছিনা। মাথা নামিয়ে সত্যিই হতভাগা সর্বহারা রাখাল ছেলেটার মতো কেঁদেই ফেললাম। আমার অশ্রুধারা বোধহয় কাজে এলো। সে চণ্ডালি মূর্তি একটু একটু করে শান্ত হতে থাকলো।
" ব্যাস? এইটুকুতেই চোখে জল? এই তুমি পুরুষ? আমায় দেখো । দেখেছো আমার সর্ব শরীরে? আমার ঘরের মানুষটার দেওয়া উপহার এগুলি। আমি প্রতিরাতে মাথা পেতে সেগুলো গ্রহণ করে আসছি। কই আমি তো কাঁদিনি? আমার চোখে জল আর আসেনা। বিনা দোষে শাস্তি পেতে পেতে একদিন ভেবেই ফেললাম না হয় দোষ করেই শাস্তি পাই। অন্তত মানুষটার আঘাত গুলোর একটা দাম তো উসুল হবে হিহিহিহি। এমন বহু আঘাত সহ্য করতে হবে তোমাকেও। মুক্তি নেই যে। কারোর থেকে মুক্তি নেই। আমার চারিপাশে ছড়িয়ে থাকা এই উজ্জ্বল রশ্মির উৎস খুঁজে পেতে আমাকেও তো অন্ধকারে হারাতে হয়েছে। যে মানুষ কালোকে গ্রহণ করেনা সে আলোর মর্মও বোঝেনা বুঝলে ছোড়া। এই আলোর উৎস পর্যন্ত পৌঁছতে তোমাকে সহস্র পাহাড় টপকে যেতে হবে। হয়তো বহুবার গড়িয়ে পড়বে, ব্যাথা পাবে হার মেনে নিতে ইচ্ছে জাগবে, পিছুটান অনুভব করবে কিন্তু সেসবই যে তোমাকে হারানোর কৌশল। আমিও হেরেছি। কিন্তু থেমে থাকিনি। হারতে হারতে ভেঙে গুড়িয়ে গিয়ে একদিন খুঁজে পেয়েছি এই ঠিকানা। তুমিও পাবে। কিন্তু যতদিন না পাচ্ছ তোমার যে মুক্তি নেই। এসো...... কাছে এসো। খুব বকেছি তোমায়। এবার একটু আদর করে দিই। এসো।"
আমও আর ওই ডাক উপেক্ষা করতে না পেরে ক্রমশ এগিয়ে যেতে থাকি কাঠের স্তুপে শায়িত রমণীর দিকে। সে আমায় চায়। যতই আমায় অপমান করুক তার কাছে আমিই সব। উফফফ কি আনন্দ। আমিও এগিয়ে যেতে লাগলাম তার কাছে। আর তারপরে আমি সে পুড়তে লাগলাম ভালোবাসার আগুনে। এই আগুন আমায় কৈশোরকে পুড়িয়ে ছাই করে দিলো। শেষে দেখলাম অবশিষ্ট রইলো খালি যৌবন টুকু। সেটিও তাকে সমর্পিত করলাম।
------------------------------------------------------
ঘুম ভাঙিলো ভোরের মিষ্টি আলোয়। উঠিয়া দেখি পাশ বালিশে মুখখানি গুঁজে ঘুমিয়ে ছিলাম। চোখ ডলিতে ডলিতে পাখির কুহুকাঞ্চন শুনিতে পাচ্ছি। আহ কি মধুর সেই সংগীত। যেন তাহারাও রাতের শেষে পূর্বের হলুদ রাঙা মেঘ দেখিয়া আনন্দে উল্লাস করিতেছে। আমিও অনুভব করিলাম রাতের সমস্ত কষ্ট ও চিন্তার ভিড়ে এলোমেলো হয়ে যাওয়া মস্তিষ্কে আর যেন কোনো চাপ নাই। মনের কালি মুছে গিয়ে মাথা আবারো পরিষ্কার। চোখ গেলো টেবিলের দিকে। সেখানে এখনো খাতাটি খোলা অবস্থায় পড়িয়া আছে। সত্যিই! আমি যে কি কর্তব্যজ্ঞানহীন মানুষ সেটির আবার প্রমান পাইলাম। নিজের রুজিরুটির কারনকে অমন অবহেলা করিতে নাই। উঠিয়া পড়লাম বিছানা হতে। আর যে শুয়ে থাকলে চলেনা। এই যৌবন যখন তাকেই সমর্পন করে দিয়েছি তখন তার আদেশ যে পালন করতেই হইবে।
বাহ! এই লাইনগুলি তো বেশ ভালো। আমার নায়ক হবে দোষ গুনে ভরপুর এক পুরুষ। সে রাগ করে, অভিমান করে, ভুল করে কিন্তু হার মানেনা। লাইনগুলো লিখে ফেলতে হবে ঝটপট। দরজা খুলতেই এক ঝাঁক শীতল বাতাস রোদের আলোয় লুকিয়ে এসে ধাক্কা মারলো গায়ে। নিজেকে টেনে নিয়ে গেলাম কলঘরে। ফেরত এসেই কোনো দিকে না তাকিয়ে বসে পড়লাম ফাঁকা চেয়ারটায়। তারপরে পাতার পর পাতা ভরিয়ে দিতে লাগিলাম অদ্ভুত অশ্লীল সব লেখায়। কত যে সময় পার হয়ে যাচ্ছিলো কে জানে? লিখতে লিখতে নিজেরই মনে হচ্ছিলো এগুলো ছিঁড়ে পুড়িয়ে ফেলছিনা কেন? কিন্তু আবার এও মনে হচ্ছিলো এতেই যে লুকানো আমার প্রাণভোমরা। হায়রে কি অসহায় আমি। আমার নায়ককে খুনি হতে দিইনি। তাই আগের লেখা অংশটুকু দুমড়ে মুচড়ে ছিঁড়ে নিজের সৃষ্টি থেকে উপড়ে ঘরের কোনায় ফেলে দিয়েছি। আমার নায়ক শরীরে ক্ষত না করেও খুন করতে পারদর্শী। সম্মুখে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা জানবেও না কখন তার বক্ষে প্রবেশ করে গেছে ধারালো ছুড়ি খানি যা তার হৃদয় ভেদ করে গভীরে লুকানো আত্মাকে বধ করেছে। তবেই না সে যোগ্য খুনি।
চুড়ির মধুর শব্দে পেছনে ফিরে দেখি চায়ের কাপ হাতে হাসিমুখে ঘরে প্রবেশ করছেন এক সুন্দরী রমণী। তবে কাল সন্ধের মিষ্টি মেয়েটি নয়, ইনি আমার প্রিয় বন্ধুর অর্ধাঙ্গিনী। এ যে দেখি আপন গৃহেই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে হেহেহেহে। টেবিলে কাপ খানি সে তাকালো সম্মুখে রাখা পৃষ্ঠা গুলোর দিকে। আর আমি তাকিয়ে রইলাম তার নয়নের পানে। মেয়েটির স্পর্ধা তো খুব। এভাবে অপরিচিত পুরুষের সামনে দাঁড়িয়ে তারই লেখায় চোখ বোলানো হচ্ছে। যদি এক্ষুনি তার হাত ধরে কাছে টেনে নি কি হবে সেটা কি একবারো ভেবেছে?
"কি? কেমন লাগছে আমার নায়ককে?" জিজ্ঞেস করেই ফেললাম তাকে।
- ওমা! এ পুরুষ যে দেখি মোটেও হিংস্র নয়। বরং মানবিক দিক থেকে বড্ড ভালো। নইলে অমন সুন্দরীকে সামনে পেয়েও নমস্কার করেই মুক্তি দিলো? তাহলে যে কালকে অন্য পুরুষের কথা বলছিলেন?
- ভেবে দেখলাম আমার নায়ককে অতটাও ক্রুর বানাবো না। তারচেয়ে এই ভালো। একটু ভীরু, একটু দুঃখী আর একটু নষ্ট।
- আপনার যা ইচ্ছে। তবে আমার কিন্তু ওই পূর্বের নায়ককেই বেশি পছন্দ হয়েছিল। সে আর হাই হোক মিথ্যের মুখোশে লুকিয়ে ঘুরে বেড়াতো না। ভোগী স্বৈরাচ্ছি খুনি হলেও সে ছিল পুরুষ। একে তো আমার মিচকে শয়তান মনে হচ্ছে।
- একদমই ঠিক ধরেছেন। এই হতভাগা সেটাই। সুযোগ বুঝে কাজ সারে ব্যাটা। এইতো সবে ব্যাটাকে বন্ধুর বাড়িতে পাঠালাম। সবে সুন্দরী বৌঠানের সহিত পরিচয় হলো। এখনো তো সবকিছুই বাকি।
- বেশ। আপনার সৃষ্টি যখন আপনিই ভালো বুঝবেন। তবে ভালো লাগলো যে আপনার ভোরে ওঠার অভ্যেস আছে। অমন বাড়ির ছেলে তাই ভেবেছিলাম বেলা পর্যন্ত পড়ে পড়ে ঘুমান। নিন আগে চা টুকু খেয়ে নিন দেখি তারপরে যা করার করুন। আমি যাই সকালের খাবার........ একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবো যদি কিছু মনে না করেন?
- অবশ্যই। মনে করবো কেন?
- নায়কের অভিপ্রায় কি?
- সেটা এখন থেকেই কেন বলে দেবো বলতে পারেন? তাহলে তো আগামী পর্বের মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে। পর তো দূরের কথা, অনেক সময় লেখক লেখিকা নিজেকেই জানতে দেয়না আগামী অংশে চরিত্রদের ভবিতব্য। তাই......
- ওহ.... হ্যা..... তাওতো। ঠিকাছে। দুঃখিত। আমি আর বিরক্ত করবোনা। আপনি বরং চা পান করুন.....আমি যাই।
সে বিদায় নিয়ে শুকনো মুখে কক্ষ ত্যাগ করছিলো। পেছন থেকে আমার " শুনুন " শুনে ফিরে তাকালো। আমি আমার খাতা খানি নিয়ে হাসিমুখে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। অপ্সরা সম সুন্দরী হলেও আমার সামনে সে সত্যিই যেন হরিণী আর আমি বিরাটাকার এক বাঘ। আমি চোখ পড়তে পারি। তাই জানি সে এই গল্পের নায়কের জায়গায় কাকে কল্পনায় স্থান দিয়েছে। তাই এটাই বোধহয় সঠিক সময়। হাতের খাতাটি তার দিকে বাড়িয়ে বললাম " আমার নায়কের অভিপ্রায় কি সেটা জানতে হলে যে আমার নায়ককে জানতে হবে। তার অতীত না জানলে ভবিষ্যত জানবেন কিকরে? আর তার বর্তমান কি সেটাও বা কিভাবে পরিষ্কার হবে? তাই নিন আমার সৃষ্টির কিছুটা তুলে দিলাম আপনার হাতে। নিজের একাকিত্বকে কাজে লাগিয়ে পড়ে ফেলুন এইটুকু। তারপরে একটা মতামত দিন তো দেখি। মানে ওই কমেন্টস এন্ড সাজেসশন আরকি "
- সেকি? আমি কেন?
- কারণ আপনি আর পাঁচটা পাঠকের মতন নন তাই। সেটা কালকেই বুঝেছি। আমার অন্তরের লেখক এতদিনে তার প্রিয় পাঠিকা বন্ধুর খোঁজ পেয়েছে। তাকে যে আমি ছাড়বোনা। নিন এটি। শুধু এইটুকুই অনুরোধ এর কথা যেন আমার বন্ধু জানতে না পারে। সে আমার নিকট হলেও এই একটা ব্যাপারে আমি তাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে রাখছি। তাছাড়া আমার মনে হয় আমার এই সব সামান্য লেখালিখি নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা নেই। তার সাংসারিক দায়িত্ব আছে। এটি শুধুই অপনার জন্য। কারণ আপনাকেও আমি সেই বন্ধুর আসনেই বসিয়েছি। আপনিই হবেন আমার প্রথম পাঠক যে একটু একটু করে সবটা জানতে পারবেন। আমার প্রতিদিনের সৃষ্টি তুলে দেবো আপনার হাতে আর আপনি রোজ তার স্বাদ নিয়ে জানাবেন নুন লঙ্কা হলুদের পরিমান ঠিকঠাক আছে কিনা। যদি এই শর্তে রাজি হন তবেই কিন্তু ওই ধুমায়িত চায়ে চুমুক দেবো, নচেৎ পারুলও কিন্তু ভালোই চা বানায়।
আমার শর্ত শুনে নাকি শেষের কথাটুকু শুনে জানিনা কিন্তু এক মুহুর্ত আমার হাতে ধরে থাকা খাতাটির দিকে চেয়ে থেকে একটানে সেটি আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। আমিও হেসে ফিরে গেলাম পূর্বের স্থানে। সেখানে যে এক কাপ গরম চা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। চায়ের কাপে কিনা জানিনা কিন্তু কোনো এক হৃদয়ে হয়তো তুফান দেখা দিয়েছে।
ব্যাস তারপর থেকে এই ভাবেই কাটতে লাগলো বন্ধুর বাড়িতে প্রতিটা দিন। বন্ধুর সাথে সময় কাটানো আড্ডবাজি, তার অনুপস্থিতিতে তার মাকে সময় দেওয়া, গল্প করা আর সেই মিষ্টি মেয়েটার সাথে একটু একটু করে জড়িয়ে পড়ার মাঝেই এক মিচকে শয়তান অতিথি বাবু নিজের সঞ্চয়ের মনিমুক্ত তুলে দিতে লাগলো পরের ভার্যার হাতে। পরের দিন কোনো এক সময় সে কখন জানি এসে রেখে যেত খাতাটি। সেটি খুলে আবিষ্কার করতাম আমার লেখার নিচে কয়েকটা লাইন লেখা। যেমন মুক্তোর মতো শরীর তেমনি হাতের লেখা। গল্প সম্পর্কে তার মনে কথা পড়ে আমিও এক নতুন অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতে লাগলাম। আর সেও একটু একটু করে চিনতে লাগলো আমার গপ্পের নায়ককে। যে নায়ক একদিন ছিল তার কাছে এক হতভাগা কাপুরুষের মতন, সেই যেন তার কাছে প্রিয় পাত্র হয়ে উঠতে লাগলো। নায়কের অতীতের অংশ যত লিখেছি ততই দেখেছি ফেরত পাওয়া খাতার পৃষ্ঠায় নানান জায়গায় কয়েকটা জল বিন্দুর শুকিয়ে যাওয়া দাগ। কে জানে? হয়তো আমারই সেসব। এক বন্ধু, এক অতিথি, এক প্রেমিকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এক লেখক হবার জন্য সময় জ্ঞান যেন হারিয়ে ফেলছিলাম আমি ক্রমে। আপন বাড়িতে থাকাকালীন ভাবতাম সময় যেন কাটতেই চায়না আর এখানে কখন যেন দিনের শেষে রাত নেমে আসে। আর রাত নামলেই সে ফিরে আসে আমার কাছে। রাত টুকুও উজাড় করে দিই তার ওপর। ঠান্ডা মায়াবী শরীরটা আমাকে নিয়ে মেতে ওঠে আদিম খেলায়। শুধুই আমি নয়, এই রাতের শুন্যতায় কোনো এক বন্ধ ঘরে স্বামীর পাশে শুয়ে থাকা এক নারীরও যে আমার মতোই হালত হয় সেটাও সে এসে ফিসফিস করে জানিয়ে দিয়ে যায় আমার কানে। আমার সৃষ্টির মধ্যভাগের অংশের নীল কালীতে ফুটিয়ে তোলা লাইনগুলোর মাঝে হারিয়ে গিয়ে সেই প্রতিবাদী নারীও নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিজের সাথে নতুন খেলায় মেতে ওঠে সেটা জেনে আমিও গর্বিত। এক ভিন্ন বিকৃত উত্তেজনায় ভোরে যায় সারা অঙ্গ। মনে হয় আমার সৃষ্টির মাধ্যমে তাকে ভোগ করে চলেছি প্রতিরাতে। উফফফফফ সে যে কি পৈশাচিক সুখ তা অবর্ণনীয়। জৈবিক প্রবৃত্তি গুলোর জালে জড়িয়ে বাস্তবে না হোক, এইভাবেই না হয় ব্যাভিচার চলুক নায়কের সাথে নায়িকার। নায়কের জায়গায় আমি আর নায়িকার জায়গায় সে। দারুন ব্যাপার তো! এইভাবেই চলতে চলতে হয়তো দেখবো কোনো রাতে আমার ঘরের দরজায় টোকা পড়বে। রাতের আঁধারেই ফিরে পাবো আমার খাতা। যেথায় আমার সৃষ্টির নিচে কয়েকটা লাইন জ্বল জ্বল করবে। সকলের অজান্তে একই পাতায় লেখক লেখিকার হস্তলিপি যেমন মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে , তেমনি হয়তো এই বিছানাটাতেও দুই রক্ত মাংসের নর নারী খুঁজে পাবে গল্পের বাকি অংশটুকু। লেখা সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সে হয়ে উঠবে আমার অন্যতম দোসর। ভাবছি আমার নায়ক এইভাবেই খুন করুক নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে। তার ভাগের সুখের একটু না হয় ছিনিয়ে নিক সে। এই না হলে যথার্থ খুনি। সকল অতিথি যে নারায়ণ হতেই হবে তার কি মানে? এক আধটা অসুর হলে ক্ষতি নেই।
সবই সম্ভব হলো আমার সেই প্রথম প্রেমিকার জন্য। তার জন্য সতীন আনার বন্দোবস্ত যখন সে নিজেই করে দিচ্ছে তবে আমিও দেখিয়ে দেবো খেলতে আমিও পারি। মুচকি হেসে এগিয়ে গেলাম জানলার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আমার একান্ত আপন মানুষটার কাছে। হাত রাখলাম তার কাঁধে। ঘুরে দাঁড়ালো সে। লক্ষ করলাম তার চোখে জল। দুঃখ নাকি খুশির? জানিনা। জড়িয়ে ধরলাম তাকে। আর কিচ্ছু চাইনা আমার। শুধুই একটা চাহিদা। সে যেন..... না যেন কেন? সে চিরকাল আমার পাশে এইভাবেই থাকবে। চিরসখা, ছেড়ো না মোরে ছেড়ো না। সংসারগহনে নির্ভয়নির্ভর, নির্জনসজনে সঙ্গে রহো। তার আমার সম্পর্কের লুকোচুরি এইভাবেই চলতে থাকুক।
|| সমাপ্ত ||
Posts: 422
Threads: 0
Likes Received: 381 in 294 posts
Likes Given: 1,202
Joined: Aug 2019
Reputation:
28
এটা আসলে একটা প্রেমের কাহিনীই বলা যায়। খুব খুব সুন্দর লাগলো গল্পটা। সেই মহিলা কে ছিল সেটা নিয়ে যে ধোঁয়াশা রয়ে গেল সেটাই বোধহয় ভালো হলো। লেখক ও তার প্রেম এইভাবেই অমর হয়ে থাকবে চিরকাল।
Posts: 128
Threads: 1
Likes Received: 311 in 69 posts
Likes Given: 155
Joined: Dec 2022
Reputation:
159
খুব সুন্দর গল্পটা। প্রেমের গল্প গল্প হিসাবে খুবই সুন্দর।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(24-10-2023, 12:25 AM)Avishek Wrote: এটা আসলে একটা প্রেমের কাহিনীই বলা যায়। খুব খুব সুন্দর লাগলো গল্পটা। সেই মহিলা কে ছিল সেটা নিয়ে যে ধোঁয়াশা রয়ে গেল সেটাই বোধহয় ভালো হলো। লেখক ও তার প্রেম এইভাবেই অমর হয়ে থাকবে চিরকাল।
হ্যা বলাই যায় একটা অন্যরকম ভালোবাসার কাহিনী। ♥️
অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।
(24-10-2023, 10:44 AM)লম্পট Wrote: খুব সুন্দর গল্পটা। প্রেমের গল্প গল্প হিসাবে খুবই সুন্দর।
অনেক ধন্যবাদ ♥️
গল্পটা তোমার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা সকলকে
Posts: 1,242
Threads: 2
Likes Received: 2,219 in 1,014 posts
Likes Given: 1,615
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
প্রথমে শাশুড়ি (যদিও ব্যাপারটা ধোঁয়াশা রয়ে গেল), তারপর বৌমা, তারপর ননদ -- লেখক একজন ছুপা রুস্তম, এটা মানতেই হবে। ভালো লাগলো overall
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(24-10-2023, 01:36 PM)Sanjay Sen Wrote: প্রথমে শাশুড়ি (যদিও ব্যাপারটা ধোঁয়াশা রয়ে গেল), তারপর বৌমা, তারপর ননদ -- লেখক একজন ছুপা রুস্তম, এটা মানতেই হবে। ভালো লাগলো overall
গল্পটা এমন ভাবেই লেখার চেষ্টা করেছি যাতে পাঠক নিজেদের মতন করে নিজের মনে নিজের একটা ভার্সন বানিয়ে উপভোগ করতে পারেন। তবে এইটুকুই বলবো বন্ধু মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ছাড়া আর কিছুই ছিলোনা কথকের। বাকি গুলোর ব্যাপারে একশো ভাগ খাঁটি কথা বলেছেন।
অনেক ধন্যবাদ ♥️
শুভ বিজয়া
•
Posts: 1,242
Threads: 2
Likes Received: 2,219 in 1,014 posts
Likes Given: 1,615
Joined: Jul 2021
Reputation:
658
(24-10-2023, 05:04 PM)Baban Wrote: গল্পটা এমন ভাবেই লেখার চেষ্টা করেছি যাতে পাঠক নিজেদের মতন করে নিজের মনে নিজের একটা ভার্সন বানিয়ে উপভোগ করতে পারেন। তবে এইটুকুই বলবো বন্ধু মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ছাড়া আর কিছুই ছিলোনা কথকের। বাকি গুলোর ব্যাপারে একশো ভাগ খাঁটি কথা বলেছেন।
অনেক ধন্যবাদ ♥️
শুভ বিজয়া
ওহো, তাহলে আমার বোঝার ভুল হয়েছে।
শুভ বিজয়া
Posts: 173
Threads: 0
Likes Received: 183 in 162 posts
Likes Given: 962
Joined: Feb 2022
Reputation:
12
26-10-2023, 12:08 AM
(This post was last modified: 26-10-2023, 12:10 AM by Papai. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Last part ta beshi valo hoyeche. Khub sundor.
Etakey Romantic Horror genre-e fela jetei parey. Tobey writer ar friend er
wife er moddhey story nie alochona ar dream sequence ta just darun. Subho Bijoyar suveccha neben.
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(26-10-2023, 12:08 AM)Papai Wrote: Last part ta beshi valo hoyeche. Khub sundor.
Etakey Romantic Horror genre-e fela jetei parey. Tobey writer ar friend er
wife er moddhey story nie alochona ar dream sequence ta just darun. Subho Bijoyar suveccha neben.
অনেক ধন্যবাদ ♥️
হ্যা রোমান্টিক হরর বলাই যায় এটাকে। আবার লেখক বাবাজির কল্পনাও ভাবা যেতে পারে। যে যেমন ইচ্ছে ভেবে নিতে পারেন। শুভ বিজয়া আপনাকেও।
শেষ পর্ব এসে গেছে। যাদের পড়া হয়নি, পড়ে নেবেন।
Posts: 548
Threads: 1
Likes Received: 627 in 383 posts
Likes Given: 1,639
Joined: Sep 2019
Reputation:
34
কিছু মনে করবেন না দাদা,কমেন্ট করতে দেরি হয়ে গেল। মাঝে মাঝে এমন গল্প পেলে মন্দ হয় না। মনে হয় কিছু একটা বাকি রয়ে গেল, থাক একসময় তো সবকিছুই শেষ হয়, এটা না হয় রহস্য হয়েই থাকলো।
প্রত্যেকটা লেখকের একটা " STRONG ZONE " থাকে। আপনার " STRONG ZONE " হচ্ছে অতিপ্রাকৃত (EROTIC HORROR) গল্পে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, আমি সহ বহু পাঠকের শত অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি আর সেদিকে পা বাড়ান নি। আশায় থাকবো একদিন হয়তো আপনার মন গলবে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন দাদা।
Posts: 173
Threads: 0
Likes Received: 183 in 162 posts
Likes Given: 962
Joined: Feb 2022
Reputation:
12
(04-11-2023, 07:31 PM)sudipto-ray Wrote: কিছু মনে করবেন না দাদা,কমেন্ট করতে দেরি হয়ে গেল। মাঝে মাঝে এমন গল্প পেলে মন্দ হয় না। মনে হয় কিছু একটা বাকি রয়ে গেল, থাক একসময় তো সবকিছুই শেষ হয়, এটা না হয় রহস্য হয়েই থাকলো।
প্রত্যেকটা লেখকের একটা " STRONG ZONE " থাকে। আপনার " STRONG ZONE " হচ্ছে অতিপ্রাকৃত (EROTIC HORROR) গল্পে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, আমি সহ বহু পাঠকের শত অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি আর সেদিকে পা বাড়ান নি। আশায় থাকবো একদিন হয়তো আপনার মন গলবে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন দাদা।
Totally agree. Baban dar thekey aro ekta Erotic Horror story chai.
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(04-11-2023, 07:31 PM)sudipto-ray Wrote: কিছু মনে করবেন না দাদা,কমেন্ট করতে দেরি হয়ে গেল। মাঝে মাঝে এমন গল্প পেলে মন্দ হয় না। মনে হয় কিছু একটা বাকি রয়ে গেল, থাক একসময় তো সবকিছুই শেষ হয়, এটা না হয় রহস্য হয়েই থাকলো।
প্রত্যেকটা লেখকের একটা " STRONG ZONE " থাকে। আপনার " STRONG ZONE " হচ্ছে অতিপ্রাকৃত (EROTIC HORROR) গল্পে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, আমি সহ বহু পাঠকের শত অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি আর সেদিকে পা বাড়ান নি। আশায় থাকবো একদিন হয়তো আপনার মন গলবে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন দাদা।
নানা, মোটেও কিছু মনে করিনি দাদা। আপনি যে মনে রেখে পড়ে মতামত দিয়েছেন সেটাই সবচেয়ে বড়ো কথা। অনেক ধন্যবাদ।
হ্যা, ভুল কিছু বলেননি। আমার ইরোটিক হরর এর প্রতি ভালোবাসা একটা শুরু থেকেই ছিল। সেই ভালোবাসা ও আকর্ষণ থেকেই এই ইরো ভৌতিক গল্প গুলো লেখা। আগে রূপকপোলো দাদা আমার ইচ্ছাটা পূরণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময় আর তেমন কিছু পাইনি। তাই নিজেই নিজের ইচ্ছে পূরণে লেগে পড়েছিলাম। আর সেই চেষ্টাকে আপনারা যে পরিমানে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়েছেন সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। বিশেষ করে আমার অভিশপ্ত সেই বাড়িটা গল্পটিকে আপনারা আলাদাই ভালোবাসা দিয়েছেন। গল্পটা আপনাদের মনে ও মাথায় জায়গা করে নিয়েছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ।♥️
আসলে গল্প মাথায় আছে। কিন্তু লেখা আর হয়ে উঠছেনা। আর আমি হুট্ করে উত্তেজনার বশে কিছু লিখিনা। যদি মনে করি সত্যিই লেখা যাবে তখনি শুরু করি। এমন সময় আবার হাতে পেলে আবারো ভৌতিক দুষ্টু কিছু উপহার দেবো। পাশে থাকুন।
(07-11-2023, 01:35 AM)Papai Wrote: Totally agree. Baban dar thekey aro ekta Erotic Horror story chai.
গল্প আছে মাথায় কয়েকটা। কিন্তু লেখার রূপ দেওয়া হয়ে উঠছেনা। ♥️
Posts: 694
Threads: 3
Likes Received: 590 in 350 posts
Likes Given: 2,253
Joined: Nov 2022
Reputation:
69
অনেক দিন পর বাবান ভাইয়ের একটি ধোয়াসা গল্প পড়লাম।
ভাই ঠিকই বলেছেন যে,যে ভাবে নিতে পারে।দ্বিতীয় পর্ব পড়ার সময় মনে হয়েছে।পারুল মৃত।কিন্তু বন্ধু পত্নী আল্পনা পারুলের আসার কথায় বুঝলাম। না পারুল মৃত নয়।তাহলে গল্পের নায়কের সবসময় সাথ দেয় কে ?
ঐ সময় দ্বিতীয় শংকা মনে এলো গল্পে নায়ক বাবার কথা বলেছে।কিন্তু মায়ের কোন কথা উল্লেখ করেনি।
আমার মতে গল্পের নায়কের প্রথম নারী দেহ তার ""মা"'
-------------অধম
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,075 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(23-12-2023, 04:38 AM)অভিমানী হিংস্র প্রেমিক। Wrote: অনেক দিন পর বাবান ভাইয়ের একটি ধোয়াসা গল্প পড়লাম।
ভাই ঠিকই বলেছেন যে,যে ভাবে নিতে পারে।দ্বিতীয় পর্ব পড়ার সময় মনে হয়েছে।পারুল মৃত।কিন্তু বন্ধু পত্নী আল্পনা পারুলের আসার কথায় বুঝলাম। না পারুল মৃত নয়।তাহলে গল্পের নায়কের সবসময় সাথ দেয় কে ?
ঐ সময় দ্বিতীয় শংকা মনে এলো গল্পে নায়ক বাবার কথা বলেছে।কিন্তু মায়ের কোন কথা উল্লেখ করেনি।
আমার মতে গল্পের নায়কের প্রথম নারী দেহ তার ""মা"'
-------------অধম
ওই যে আগেই বলেছি এটা এমন একটা গল্প যে যা ইচ্ছে ভেবে নিতে পারে। লৌকিক থেকে অলৌকিক। স্বাভাবিক ভারসাম্য থেকে বেরিয়ে মানসিক অসুস্থতা যা ইচ্ছে। গল্পটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ♥️
•
|