12-09-2023, 09:25 PM
বড় আপডেট
ভালো আপডেট
Romance স্মৃতি সুন্দরী
|
12-09-2023, 10:33 PM
The story is indeed much different from the stories that I am used to read in this site. It brings southern wind and I loved it very much.. However what I didn't understand how can a story like this get a two star rating? Are the readers here doesn't care about good and different stories? But I read some of baban's stories, they are different yet have good ratings. What is wrong with this story's rating? It's a pity to see such a good writing getting awful rating..Bichitro, please never mind those ratings and keep writing. At least I will read Vidya and Divya's story. I am giving it a 5 star rating. Kudos
Warm Greetings!
13-09-2023, 12:20 AM
Just awesome, keep it up, waiting for next update.
13-09-2023, 09:37 PM
13-09-2023, 09:39 PM
(12-09-2023, 10:33 PM)দত্তাত্রেয় বন্দ্যোপাধ্যায় Wrote: The story is indeed much different from the stories that I am used to read in this site. It brings southern wind and I loved it very much.. However what I didn't understand how can a story like this get a two star rating? Are the readers here doesn't care about good and different stories? But I read some of baban's stories, they are different yet have good ratings. What is wrong with this story's rating? It's a pity to see such a good writing getting awful rating..Bichitro, please never mind those ratings and keep writing. At least I will read Vidya and Divya's story. I am giving it a 5 star rating. Kudos বছর খানেক আগে এই রেটিং নিয়ে একটা ছোটখাটো কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়েছিল । আর সেই যুদ্ধে আমি পরাজিত পক্ষ । তাই রেটিং নিয়ে বা এই ফোরামের নিয়ম কানুন নিয়ে আর মাথা ঘামাই না । আমার লেখা আমি লিখছি , এবং লিখবো । চাপ নেই ❤️❤️❤️
13-09-2023, 09:39 PM
14-09-2023, 12:33 PM
বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছে গল্প। ভবিষ্যতে বিদ্যা আর দিব্যা, মা মেয়ের ভেতরে সম্পর্কটা কেমন দাঁড়ায় দেখার অপেক্ষা.......
24-09-2023, 09:26 PM
(14-09-2023, 12:33 PM)a-man Wrote: বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছে গল্প। ভবিষ্যতে বিদ্যা আর দিব্যা, মা মেয়ের ভেতরে সম্পর্কটা কেমন দাঁড়ায় দেখার অপেক্ষা....... বেশ কয়েকদিন ব্যাস্ত চলছে । দিব্যা আর বিদ্যার সম্পর্ক কেমন দাঁড়ায় আপনাকে সেটা জানার জন্য আমাকে আপডেট দিতে হবে । আপডেট লিখছি দেখি কবে শেষ হয় । খুব শীঘ্রই আপডেট দেব ❤️❤️❤️
25-09-2023, 08:52 AM
Update kbe pbo
25-09-2023, 03:29 PM
বহুদিন কোনো আপডেট পাওয়া যাচ্ছেনা, গল্পটা খুব সুন্দর ও আকর্ষনীয় ছিল, যাকগে এর পরের অংশ পড়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
25-09-2023, 11:29 PM
25-09-2023, 11:30 PM
26-09-2023, 06:54 PM
26-09-2023, 11:23 PM
27-09-2023, 02:13 PM
I simply loved it , nicely character gulo ke develop kora hoiche , love ,affection, seduction , emotion, lust well written ...
It is a highly potential story, with lots of aspects and perspective of seeing it .. Amra jara porn dekhi na , we love this kind of story .. this story has logic and a picture of regular social life ................. Kichu kichu writer der , story name deklei ghinna lage... vai we do have sexaul desire but we r not animals , kichu logic tu rakba story te .. Well, writer ke ektai request korte chai , female character gulo jate strong hoi , do not surrender so easily, logical and caused surrender we like ... best wishes to u once again ...
27-09-2023, 09:33 PM
(27-09-2023, 02:13 PM)Jyoti_F Wrote: I simply loved it , nicely character gulo ke develop kora hoiche , love ,affection, seduction , emotion, lust well written ... কমেন্টটা পেয়ে খুব ভালো লাগলো । মুড ভালো করে দেওয়ার মত কমেন্ট। গল্প যেমন চলছে তেমনই চলবে । সেক্স এনকাউন্টার বেশি নেই । যা আছে সেটাও গল্পের চাহিদা অনুযায়ী। চরিত্রের দূর্বলতা নয় । আশা করছি ভবিষ্যতেও এইরকম কমেন্ট পাব । আর কাল রাতে একটা আপডেট দেব ❤️❤️❤️
28-09-2023, 10:46 PM
২.৩
আগের দিনের মত আজকেও বিক্রম সকাল সকাল উঠে পড়লো । বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে এসে ব্রাশ করার জন্য কলগেট আর ব্রাশ হাতে নিয়ে বাথরুমে ঢোকার আগেই সে উপর থেকে বিদ্যার গানের গলা শুনতে পেল । বিদ্যা রেওয়াজ করছে হারমোনিয়াম বাজিয়ে । বিদ্যার সুরেলা কন্ঠ শুনে সকাল সকাল বিক্রমের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো । মনটা তরতাজা হয়ে উঠলো । সে উপরে ওঠার সিড়িতে বসে বসে হাতে কলগেট ব্রাশ নিয়ে বাসি মুখে বিদ্যার গান শুনতে লাগলো । একটা দুটো তিনটে গান পরপর শুনলো । গান গুলো সে আগে শোনেনি । রবীন্দ্র সংগীত না বোধহয় । বিদ্যা রেওয়াজ বন্ধ করতেই বিক্রম উঠে বাথরুমে ঢুকে গেল । গতকাল সকালে দোকানের মালপত্রের হিসাবে সাহায্য করা , দুপুরে স্নানের আগে কলঘরের মেঝে পরিষ্কার করা এবং সন্ধ্যা বেলায় সোনার বালা কিনে এনে দেওয়ার জন্য দিনটা বিক্রমের ভালোই কেটেছিল । দিনটা ব্যাস্ততার মধ্য দিয়েই কেটেছিল । কিন্তু আজ সকালে পান্তাভাত খেয়ে সে ভাবতে বসলো আজ কি করা যায় ? এমনিতেও তার চুপচাপ বসে থাকতে একেবারেই ভালো লাগে না । কিছু একটা না করলে তার কেমন একটা খালি খালি লাগে । বিদ্যার রেওয়াজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে , এখনো থামেনি । সেপ্টেম্বর মাসের আবহাওয়া খুবই অনিশ্চিত। সকালে কাঠ ফাটা রোদ তো বিকালে অঝোরে বৃষ্টি । আবার সারাদিন অল্প অল্প বৃষ্টি হয়ে রাতে ভ্যাপসা গরম । আবহাওয়া দপ্তরের খবর যেন দু-লাইনের হাস্যকৌতুকের ছড়া। কেউ আগে থেকে সুনিশ্চিত ভাবে বলতে পারবেনা । এখন বৃষ্টির ফোঁটা ইলশেগুঁড়িতে রুপ নিয়েছে । এখন সাতটা বেজে বার মিনিট । বাড়ির চৌকাঠে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিল বিক্রম । তার চোখ হঠাৎ বিদ্যার দোকানের ছাদে চলে গেল । ছাদ থেকে জল পাস হওয়ার জন্য একটা পাইপ ঠিক কলঘরের ছাদের দিকে মুখ করে আছে , কিন্তু সেই পাইপ দিয়ে জল বার হচ্ছে না । বিক্রম ভাবলো , ‘ বৃষ্টি তো ভালোই হলো । তাহলে ছাদ দিয়ে জল পড়ছে না কেন ? নিশ্চয়ই ওই কাঠগোলাপ গাছের ফুল পাতা পড়ে পাইপের মুখ বন্ধ হয়ে আছে । ‚ বৃষ্টি থামলেই সে উঠোন ঝাঁট দেওয়া ঝাঁটা নিয়ে প্রথমে কলঘরের ছাদে উঠলো , সেখান থেকে দোকানের ছাদে উঠে এলো , ‘ হ্যাঁ যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই । বাড়িতে কোন পরিষ্কার করার লোকও নেই । তাই কাঠগোলাপের ফুল পাতা পড়ে পাইপের মুখ বুঁজে আছে । এমনকি পাতা পচে দোকানের ছাদে মোটা আস্তরন পড়ে আছে । ‚ আর কিছু না ভেবে বিক্রম ছাদ পরিষ্কার করতে শুরু করলো । ঝাঁটা দিয়ে নতুন ঝড়াপাতা পরিষ্কার হলেও পুরানো পচে যাওয়া পাতা পরিষ্কার করা সম্ভব নয় । পাতাগুলো পচে ছাদের সাথে এঁটে মোটা আস্তরণের সৃষ্টি করেছে । কোদাল লাগবে পরিষ্কার করার জন্য। বৃষ্টি কমে আসার জন্য , ঠিক তখনই বিদ্যা দোকান খোলার জন্য উঠোনে এলো আর উঠোনের অবস্থা দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো । সে দেখলো উঠোনে পচা ফুল পাতা টাল হয়ে পড়ে আছে । আর ছাদে বিক্রম ঝাঁট দিচ্ছে। বিক্রম উপর থেকেই বিদ্যাকে দেখতে পেয়েছিল । আর বিদ্যাকে দেখা মাত্রই তার চোখ চলে গেল বিদ্যার বুকের শাড়ি আর ব্লাউজের সন্ধিক্ষণে। সামান্য হলেও বিদ্যার মহামূল্যবান স্তন বিভাজিকা দৃশ্যমান। আর তা দেখা সম্ভব হয়েছে বিক্রমের ছাদে দাঁড়িয়ে থাকার জন্যেই। বিক্রমের কোন ইচ্ছা ছিল না বিদ্যার দুই স্তনের মাঝের খাঁজ দেখার । কিন্তু চোখ কারোর কথা শোনে না । তাই বিক্রমের ইচ্ছা অনিচ্ছাকে তোয়াক্কা না করেই তার চক্ষু দুটো একটু তৃপ্তির জন্য বিদ্যার স্তন বিভাজিকা দেখতে চেয়েছিল । বিদ্যার কিছু বলার আগেই বিক্রম নিজেকে সামলে নিয়ে বললো , “ কোদাল আছে ? „ গতকাল বিক্রমের কলঘরের মেঝে পরিষ্কার করাটা বিদ্যার একেবারেই ভালো লাগেনি । বাড়ির জামাই শশুর বাড়ি এসে কাজ করছে এটা দৃষ্টিকটু দেখায় । কিন্তু তখন বিদ্যা কিছু বলতে পারেনি তাই এখন বিদ্যা আর না বলে থাকতে পারলো না , “ তুমি এসব করছো কেন ? আমি পরে কোন লোককে দিয়ে করিয়ে নেব । „ ছাদ থেকেই বিক্রম যে কথাটা বললো সেটা শোনার পর বিদ্যা যেন বোবা হয়ে গেল । বিক্রম বললো , “ আমাকে যখন আপন করে নিয়েছেন তখন আমাকেও এই বাড়িটাকে আপন করে নিতে দিন । „ বিদ্যা বিক্রমকে বারন করছিল কারন নতুন জামাই বাড়িতে এসেছে দুই দিনও হয়নি , আর তাকে যদি কেউ ছাদ পরিষ্কার করতে দেখে তাহলে লোকে উল্টো পাল্টা ভাববে । কিন্তু এখন বিক্রমের কথা শোনার পর বিদ্যার আর কিছু বলার রইলো না । সে সিঁড়ির তলা দিয়ে ঠাকুর ঘরের পিছনের ঘরে ঢুকে একটা ছোট কোদাল আর দুটো সিমেন্টের বস্তা এনে উঠোনে দাঁড়ালো । উঠোনে দাঁড়াতেই বিদ্যা দেখলো বিক্রম ততক্ষণে ছাদ থেকে নেমে এসে উঠোনে দাঁড়িয়ে আছে । বিক্রম বললো , “ চলুন সাটার তুলে দিই । „ দোকানের স্যাটার তুলে দেওয়ার আগে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বিক্রম বললো “ যা বৃষ্টি হলো ! আজকে আর রাস্তায় জল দিতে লাগবেনা । „ সাটার তুলে দিয়ে সে আবার ছাদ পরিষ্কার করতে চলে গেল । আর বিদ্যা আপন মনে নিজের মত কাজ করতে লাগলো । কিছুক্ষন পর শবনম এসে দোকানে ঢুকতে ঢুকতে বললো , “ তোমাল জামাই তো খুব কাজেল দিদি । „ শবনমের প্রশংসা শুনে বিদ্যার মনে হলো শবনম যেন তাকেই কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছে। কিন্তু এমন মনে হওয়ার কারন বিদ্যার বোধগম্য হলো না । কিছুক্ষন পর বিক্রম দুটো বস্তায় সব নোংরা ভর্তি করে এনে বললো , “ এখানে জঞ্জাল কোথায় ফেলে ? „ বিদ্যা বললো , “ ওইতো গঙ্গার পাশে একটা জায়গা আছে । আর না হলে বাজারের পাশে । „ শবনম উঠে দাঁড়িয়ে বললো , “ চলো । দেখিয়ে দিচ্ছি । „ বিক্রম দুই হাতে দুটো বস্তা নিয়ে শবনমের পিছন পিছন চললো । বিদ্যার দোকানের পাশের গলির ভিতর দিয়ে যেতে যেতে শবনম জিজ্ঞেস করলো , “ দাদা তুমি কি কলো ? „ “ আমি ! কোন ঠিক নেই । যখন যে কাজ পাই সেই কাজই করি „ বিক্রমের কথার অন্তর্নিহিত অর্থ শবনম বুঝতে পারলো না । তাই সে জিজ্ঞেস করলো , “ মানে ? „ বিক্রম এই কোমল মিশুকে মেয়ের সাথে ইয়ার্কি করার সুযোগ হাতছাড়া করলো না । , “ এই এখন যেমন ছাদ পরিষ্কার করলাম । „ “ ধ্যাৎ , ইয়াল্কি মালছো । „ বিক্রম হেসে বললো , “ আমি এখন গাড়ি সাড়াই। গ্যারেজে কাজ করি । „ জায়গাটা গঙ্গার পাশে নয় । গঙ্গার বেশ কিছুটা দূরে রাস্তার উপর । যখন দুজনে জায়গাটায় পৌঁছালো তখন মিউনিসিপ্যালিটির কয়েক জন লোক বড় গাড়িতে ময়লা তুলছে । বিক্রম ময়লার উপর বস্তা খুলে পচা ফুল পাতা ফেলার আগেই এক মিউনিসিপ্যালিটির সাফাই কর্মী বললো , “ একেবারে গাড়িতে ফেলুন । „ বিক্রম বস্তা দুটো গাড়ির পিছনে ময়লা ফেলার জায়গায় ফেলে জিজ্ঞেস করলো , “ এই কাজে কত করে দেয় ? „ লোকটা অবাক হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো , “ এই ময়লা পরিষ্কার করতে ? „ বিক্রম মাথা নাড়তে লোকটা বললো , “ দেয় ওই আট নয় হাজার । „ বিক্রম জিজ্ঞাসা করলো , “ খাটনি কেমন ? „ লোকটা বললো , “ হাতের খাটনির থেকে নাকের খাটনি বেশি । „ তারপর লোকটা বিদ্রুপ করে জিজ্ঞেস করলো , “ করবেন নাকি একাজ ? „ বিক্রম লোকটার বিদ্রুপকে পাত্তা না দিয়ে বললো , “ করলে ক্ষতি কি ! টাকাটা একটু বেশি হলে অবশ্যই করতাম । „ শবনম যেন বোবা হয়ে গেল । এই দাদার চরিত্র তো দিব্যা দিদিমণির সাথে একবারেই যায় না । কোথায় দিব্যা দিদিমণি আর কোথায় এই দাদাটা যে অকপটে নিঃসঙ্কোচে বলছে টাকার পরিমাণ আর একটু বেশি হলে মিউনিসিপ্যালিটির সাফাই কর্মী হতে তার কোন বাঁধা নেই । শবনম ভাবলো হয়তো সে দিব্যাকে চিনতে ভুল করেছে । বিদ্যা দিদির মেয়ে তো বিদ্যা দিদির মতোই হবে । সময় নিজের মত বয়ে যায়। সে কারোর পরোয়া করেনা । সময় নিজের মত অতিবাহিত হলেও ব্যাক্তি বিশেষে সময়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায় । বিদ্যার কাছে একাকিত্বের মধ্য দিয়ে গত তিন মাস তিন বছরের মত কেটেছে । এখন তার সময় তিন জনের ছোট পরিবার সুখী পরিবারের মধ্য দিয়ে খুব ভালো সুন্দর কাটছে । বিক্রম সারাদিন বাড়ির বিভিন্ন কাজ করে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে কিন্তু কাজ তো সীমিত। তাই সে সকালে বিদ্যার গান শুনে নিজের দিন শুরু করে । তারপর দোকান খুলে দিয়ে চায়ের দোকানে গিয়ে খবরের কাগজ পড়ে । শবনমের সাথে অনেক কথা বলে । তারপর ঘর মুছে , ঝুল ঝেড়ে , বাসন ধুয়ে সময় কাটায় । এক রবিবার তো সে মাংস রান্না করে বিদ্যা আর দিব্যা কে খাইয়েওছে । বিক্রমের হাতের রান্না যতোই ভালো হোক বিদ্যার মতে বিক্রম তার থেকে ভালো রান্না করতে পারেনা । তারই রান্না ভালো । প্রথম প্রথম বিক্রমের এই সব কাজ করাতে বিদ্যা বাঁধা দিত , বারন করতো । কিন্তু বিক্রম হাসি মুখে বিদ্যার বারন অগ্রাহ্য করে এই সব কাজ করতো । যখন বিদ্যা দেখলো বিক্রম তার বারন শুনবে না তখন সে নিজেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। দোকানের কাজে বেশি সময় দিতে শুরু করলো । বিক্রম বাড়ির যাবতীয় এত কাজ করে নিজেকে কখনো কম পুরুষ মনে করেনি । বরং মানুষ হিসেবে নিজেকে সে আরো উন্নত মনে করে । এদিকে দিব্যার সময় তো চোখের পলকে কেটে যায়। সারাদিন সিরিয়াল , সিনেমা দেখে কাটিয়ে দেয় । একবার সে তার বান্ধবী সীমার বাড়ি যেতে চেয়েছিল তাই বিক্রম নিজের বাড়িতে ফেলে আসা দিব্যার স্কুটি এনে দিয়েছিল । এখন দিন স্থান একই হলেও তিন জনের তিন রকম সময় কাটে । এইভাবেই দশ বার দিন কেটে গেল । এই দশ বার দিনে বিদ্যা এবং বিক্রম দুজনেই দুজনকে গোপনে নিজের অজান্তেই লক্ষ্য করেছে । বিক্রম যে বাড়ির এই কাজ গুলো লোক দেখানোর জন্য করছে না এটা সে বুঝতে পেরেছে । ছেলেটা সত্যি সৎ এবং ভদ্র। বিক্রম লক্ষ্য করেছে বিদ্যার দোকানে এসে কোন খরিদ্দার দামাদামি করেনা । বেশিরভাগই বিদ্যার বাঁধাধরা পরিচিত খদ্দের । আর বিদ্যাও লোক ঠকায়না। ন্যায্য দামেই কাপড় বিক্রি করে । যৎসামান্য মজুরি নিয়ে সে সেলাইয়ের কাজ করে দেয় । এটা কি বিদ্যার সৎ চরিত্রের লক্ষণ নাকি খদ্দের হাতছাড়া হওয়ার ভয় সেটা বিক্রম এখনো বোঝেনি । তবে মনে মনে সে বিশ্বাস করে বিদ্যা সৎ । লোক ঠকিয়ে খাওয়ার মহিলা সে নয় । এই কয়দিনে শবনম আর বিক্রমের ভালোই বন্ধুত্ব হয়েছে । এখন বয়স অনুযায়ী শবনম বিক্রমকে তুমি আর দাদা বলে । বিক্রম শবনমকে তুই বলে সম্বোধন করে । আজ সকালে দোকান খোলার কিছুক্ষন পর শবনম আর বিক্রম বসে বসে গল্প করছিল । তাদের কথাবার্তা বিদ্যার কানেও আসছিল । শবনমের তোতলা শব্দ শুনে হেসে বিক্রম জিজ্ঞেস করল , “ তুই এটা কি ইচ্ছে করে করিস ? মানে একজন শুধু মাত্র ‘ র , উচ্চারণ করতে পারে না এরকম তো কোথাও দেখিনি ! „ শবনম বিক্রমের প্রশ্নে বলল , “ শুধু বয়শূন্য ল কেন ! ডয়শূন্য ল , ঢয়শূন্য ল , কোনটাই বলতে পালি না । „ শবনমের কথায় আবার বিক্রম হেসে উঠেছিল । বেশ মজার চরিত্র এই শবনম । মনটা শান্ত পুস্করিনীর মত স্বচ্ছ। রেগে গেলে গাল দুটো এমন ভাবে ফোলায় দেখে মনে হয় যেন আট নয় বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে । বিক্রম আর শবনমের বন্ধুত্ব বিদ্যার চোখ এড়ায়নি । সে এই সম্পর্কে কোন বিকৃতি সে খুঁজে পায়না । একটা ছেলে আর মেয়ের মধ্যে যে খাঁটি বিশুদ্ধ বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে এটা বিদ্যা বিশ্বাস করে । যদি নারী পুরুষের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক না গড়ে ওঠে তাহলে তো এই জগৎটাই মিথ্যা হয়ে যায়।
28-09-2023, 10:46 PM
(This post was last modified: 28-09-2023, 11:07 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বেশ কয়েকদিন বিদ্যা ভাবছে পূজার আগে নতুন কাপড় কেনার কথা । কাপড় না কিনলে সেলাইয়ের কাজ করা যাবে না । মনীষা থাকলে এতদিন সে চলেও যেত কেনাকাটা করতে কিন্তু মনীষা নেই । তাই সে ভাবছে বিক্রম কে নিয়ে যাবে । কিন্তু কোন মুখে সে বিক্রমকে বলবে সেটাই বুঝতে পারছে না । বিক্রম তাকে না বলবে না এটা বিদ্যা জানে । সারাদিন তো কি করবো কি করবো করতে করতে কাজের জন্য বাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায় । তাই সে এক পায়ে যেতে রাজি হয়ে যাবে । কিন্তু একটা কিন্তু আছে । তাই বিদ্যা এখনো বিক্রমকে কথাটা বলতে পারেনি ।
আজ সারাটা দুপুর বৃষ্টি হওয়ার পর এই বিকালে এখনো আকাশ মেঘলা । ছাদে নামার গ্রিলের পাশে দাঁড়িয়ে বিদ্যা আকাশের অবস্থা দেখছিল । মনে মনে ভাবলো ‘ এবারেও পূজাতে বৃষ্টি হবে । ‚ কি মনে হতে সে ভেজা ছাদে নগ্ন পায়ে গিয়ে নামলো । ছাদের কার্নিশে দুই হাত দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পরেই , বৃষ্টি হওয়ার পর হাওয়া লেগে গাছের পাতায় জমে থাকা জল যেভাবে ঝড়ে পড়ে ঠিক সেইভাবে কয়েক ফটো বৃষ্টির জল বিদ্যার মুখের উপর এসে পড়লো । সঙ্গে সঙ্গে কত পুরানো স্মৃতি এসে মনে ভিড় করতে লাগলো । সে বৃষ্টির জলে খুব ভিজতে ভালোবাসতো। তাই দিব্যার বাবাকে নিয়ে একসাথে এই ছাদে অনেকবার ভিজেছে। বৃষ্টির জলে দুজনে স্নান করেছে । কিন্তু দিব্যার বাবার একেবারেই বৃষ্টির জল সহ্য হতো না । একটু ভিজলেই সর্দি তারপর জ্বর । মেয়েটাও বাবার ধাৎ পেয়েছে । এইসব ভাবতে ভাবতেই সে ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে গঙ্গা থেকে ধেয়ে আসা মিষ্টি হাওয়া মুখে মাখতে লাগলো । আর বিক্রম এই বাড়িটাকে আপন ভেবে যেভাবে নিজের থেকে সব গুছিয়ে নিচ্ছে , পরিষ্কার করছে , সেটা বিদ্যাকে বারবার দিব্যার বাবার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। দিব্যার বাবাও একদন্ড চুপচাপ বসে থাকতো পারতো না । সবসময় কিছু না কিছু বাড়ির কাজ করতো । আজ সেই লোকটা নেই । বহুবছর ধরেই নেই । এত বছর যেন পরিবারটা অসম্পূর্ণ ছিল । দিব্যার বাবার মৃত্যুর ষোল সতেরো বছর পর বিদ্যার মনে হলো সে যেন একটা পরিবারের অংশ । এই পরিবারে বিক্রমের মত একজন দায়িত্বশীল পুরুষ সদস্য আছে , এবং এই পরিবারে দিব্যার মত অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে আছে । এই দুটো কারনেই বিদ্যার মনে হতে লাগলো পরিবারটা এখন সম্পূর্ণ। এই ভালোলাগার জন্যেই এক দমকা হাওয়ার মত তার অতীতের জীবনটা তার চোখের সামনে ভেসে উঠলো । বিদ্যা রায় । বিয়ের আগে ছিল সেন । বিদ্যা সেন । কলকাতায় যারা ক্ল্যাসিকাল সঙ্গীত নিয়ে চর্চা করে তারা সবাই হুগলির সেন পরিবারের কথা জানে। তিন পুরুষ ধরে এই পরিবার থেকে বেশ কয়েকজন কন্ঠশিল্পীর আবির্ভাব হয়েছে । বিদ্যার বাবা ছিল রাজ্যের বিখ্যাত ক্ল্যাসিকাল গীতিকার এবং সুরকার শ্রীবিষ্ণু সেন । শ্রীবিষ্ণু সেনের দুই ছেলে এক মেয়ে । হাজার চেষ্টা করেও ছেলে দুটোকে গানের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করতে পারেননি । তাই বিষ্ণু সেন একমাত্র মেয়েকেই ছোট থেকে গানের পাঠ দিতে শুরু করেন । একমাত্র মেয়েকে ছোট থেকেই নজরুলগীতি , রবীন্দ্র সংগীত , এমনকি তখনকার কিছু কিছু বাংলা হিন্দি সিনেমার গানও বিদ্যাকে দিয়ে রেওয়াজ করাতেন । হাতে চক ধরার আগে হারমোনিয়াম ধরেছিল বিদ্যা । একটু বয়স বাড়লে বাবার সাথে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যেত। তারপর কলেজে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার এক কলেজে ভর্তি হওয়া । সেখানে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে ভর্তি হয়েছিল । ঠিক সেই সময়ে এক দমকা হাওয়ার মতো তার জীবনে বিক্রম এলো । একটা চিঠি বা প্রেমপত্র দিয়েছিল বিক্রম রায় । তারপর পালিয়ে বিয়ে করা । দুই বাড়ির কেউই মেনে নেয়নি এসম্পর্ক । প্রথম এক মাস ভাড়া বাড়িতেই ছিল তারা । পরে বিক্রমের মা অর্থাৎ তার শাশুড়ির পৈতৃক সম্পত্তি এখনকার এই ডালহৌসির বাড়িটা তারা পায় । তারপর দিব্যার জন্ম । দিব্যার বাবা এই কাপড়ের দোকান খোলে । সবকিছু ভালোই চলছিল । সুখেই চলছিল বিদ্যার সংসার। কিন্তু এই সুখের সংসার চিরস্থায়ী হয়নি । দিব্যার তখন পাঁচ কি ছয় বছর বয়স হঠাৎ একদিন বিক্রমের ক্যান্সার ধরা পড়লো । লাং ক্যাংসার । রক্ত বমির মাধ্যমে রোগটা ধরা পড়লো । দেখতে দেখতে সুস্থ শরীরের লোকটা রোগা হয়ে গেল । চোখ মুখ ঢুকে গেল । হাড় বেরিয়ে এলো । চিকিৎসার অনেক চেষ্টা করেছিল বিদ্যা। কিন্তু সব চেষ্টায় জল ঢেলে চলে গেল দিব্যার বাবা । দিব্যার বাবার মৃত্যুর পর বিদ্যা এই শাড়ি সেলাইয়ের দোকান করেই একা হাতে দিব্যাকে বড় করেছে । তাকে ভালো কলেজে পড়িয়েছে । ভালো টিউশনে পাঠিয়েছে । তার সমস্ত আবদার সে রাখার চেষ্টা করেছে । সেইজন্য বিদ্যা সমস্ত সুখ হাসি মুখে বিসর্জন দিয়েছে । এখানে উঠে আসার পরেই দোকান সূত্রেই মনীষার সাথে পরিচয় । দিব্যার বাবার মৃত্যুর পর মনীষা কোথা থেকে এক ক্লাসিক্যাল গানের রিয়েলিটি শোয়ের খোঁজ নিয়ে এসেছিল । রিয়েলিটি শোয়ের লোকরা বিদ্যাকে নেওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিল কিন্তু বিদ্যা মেয়ের মুখ চেয়ে রাজি হয়নি । না হলে বিদ্যার তখনকার পরিস্থিতি অর্থাৎ একজন বিধবা যার স্বামী ক্যান্সারে মারা গেছে । এক মেয়েকে নিয়ে থাকে । নিজে সেলাইয়ের কাজ করে এবং শাড়ির দোকান করে মেয়ের পড়াশোনার খরচা জোগায় । এবং তার ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করা । সবকিছুই সেই রিয়েলিটি শোয়ের trp বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল । নিজের অতীতের স্মৃতিচারণ হয়ে গেলে বিদ্যার বর্তমান পরিস্থিতি মনে পড়লো । আজ সকালে একবার তীর্থঙ্কর এসেছিল । বিয়ের ব্যাপারে কিছু না বললেও ওর আসার উদ্দেশ্য ওটাই ছিল । বিদ্যা মনে মনে বললো , ‘ না আর বিয়ে করবো না । অর্ধেক বয়স শেষ। যৌবন শেষ । এখন আর বিয়ে করার কোন মানেই হয়না । উপরন্তু কয়েক মাস পর বাড়িতে নতুন সদস্য আসবে । এখন তো আর নয়ই। দিব্যার বেবি হওয়ার পর যদি সে মুখ ফুটে বলে আমি তোমাদের সাথে থাকবো তাহলে বিক্রম মানা করতে পারবে না । করবে না নিশ্চয়ই। কিন্তু এই গত দশ বার দিনে একটা জিনিষ সে লক্ষ্য করেছে । আর সেটা বারবার তার মনে খোঁচা দিচ্ছে। কথাটা হলো দিব্যা আর বিক্রমকে নিয়ে । তার মেয়ে জামাইয়ের সম্পর্ক যেন কেমন একটা । দুজনেই দুজনের সাথে তেমন কথা বলতে দেখা যায় না । এখানে আসার পরের দিন বিক্রম যখন সোনার বাংলা এনে দিয়েছিল তখন যেন দিব্যা ঠিক খুশি হয়নি । আর তাকে দেওয়া মোটা বালাটাও তার সরু বালা দিয়ে বদল করে নিয়েছিল । তখন থেকেই সে লক্ষ্য করেছে দুজন দুজনের সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেনা । বিদ্যা যখন ছাদের কার্নিশে হাত দিয়ে নিজের অতীতের স্মৃতিচারণ , বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিজের পরিবার নিয়ে চিন্তায় ব্যাস্ত তখন ছাদে নামার গ্রিলের কাছে এসে দাঁড়িয়ে ছিল বিক্রম । এসেছিল দোকান খোলার জন্য বিদ্যা কে ডাকতে। কিন্তু বিদ্যাকে পিছন থেকে দেখার পরেই সে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো। দুই হাত রেলিংয়ে দিয়ে দাঁড়ানোর জন্য বিদ্যার কোমর বেঁকে আছে । ভারী নিতম্ব সগর্বে উঁচু হয়ে সগর্বে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে । ঘাড়ের ঠিক নিচ থেকে এক শুকিয়ে যাওয়া নদী শুরু হয়েছে । যা ব্লাউজের ভিতর দিয়ে পিঠের মাঝ বরাবর গিয়ে কোমরের শাড়ির মধ্য দিয়ে সেই সুউচ্চ ভারী নিতম্বের মাঝে গিয়ে মিশেছে । এক দুই ফোঁটা জল যদি ঘাড়ে ফেলা যায় তাহলে ঠিক যেমন নদীর জল উৎস হতে মোহনায় গিয়ে মেশে তেমনি সেই জলের ফোঁটা ব্লাউজের ভিতর দিয়ে শিরদাঁড়া বরাবর গিয়ে নিতম্বের ফাঁকে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাবে । এক নারীর পিঠ যে তার কাছে এতোটা আকর্ষনীয় হতে পারে সেটা বিক্রম বিদ্যাকে এইভাবে দেখার পর জানতে পারলো । বিদ্যার চুল বিনুনি করেই থাকে । কিন্তু এখন সে চুল খুলে রেখেছে । হয়তো খোঁপা করে বাঁধবে বলে । আর সেই খুলে রাখা কালো রেশমী চুল গঙ্গার হাওয়ায় উড়ছে । যেন খাঁচার পাখির মত বন্দী ছিল । এখন খাঁচা খুলে দেওয়ায় উড়ছে নিজের মন মত । বিদ্যার এই রূপেই তো পাগল । দিব্যাকে সে উলঙ্গ নগ্ন দেখেছে । কিন্তু দিব্যার নগ্ন শরীরের চেয়ে শাড়ী পরিহিতা বিদ্যার এই গৃহীনির রূপ যেন বিক্রমের কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয়। মা মেয়ের মধ্যে তুলনা সে করতে চায়না । কিন্তু মাঝে মাঝে তার মনে হয় দিব্যার মধ্যে যা অনুপস্থিত তা এই মহিলার মধ্যে উপস্থিত। এমন কিছু যা একটা আছে যা দিব্যার নেই তাই সে অসম্পূর্ণ কিন্তু বিদ্যার তা আছে তাই সে সম্পূর্ণা। কিন্তু কি সেটা ? বিক্রম সেখান থেকে চলে এলো । এসে রান্নাঘরের পাশে নিজের ঘরে ঢুকলো । দিব্যা সবে ভাতঘুম থেকে উঠে চোখ ডলছে। নিজের আগত সন্তানের মায়ের মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পরেও বিক্রম বুঝতে পারলো না দিব্যার মধ্যে কিসের অভাব ? রাতের ডিনার খাওয়ার সময় বিদ্যা ইতস্তত করে বিক্রমকে বলেই ফেললো , “ দোকানের কাপড় আর বেশি নেই । না কিনলেই নয় । তুমি যাবে আমার সাথে ? „ “ হ্যাঁ অবশ্যই। সাহায্য করতে পারলে আমার ভালোই লাগবে । „ বিদ্যা আরো বললো , “ আসলে ভারী ব্যাগ চাগিয়ে আনতে একটু অসুবিধা হয় । আগে মনীষা আমার সাথে যেত। এখন তো আর .... বিক্রমের বিদ্যার অসমাপ্ত কথার মানে বুঝতে অসুবিধা হলো না । মনীষা অর্থাৎ একসময়ের তার আবাসিকের শিক্ষিকা এবং তীর্থঙ্করের স্ত্রী । এখন তো আর বেঁচে নেই । তিন মাস আগে মারা গেছে । বিক্রম এটাও বুঝতে পারলো যে বিদ্যা তিন মাস ধরে দোকানের জন্য কাপড় কিনতে যাইনি। তাই দোকানটা এত খালি খালি লাগে । কিছুক্ষন পর বিদ্যা দিব্যাকে বললো , “ আমি সীমা কে আসতে বলেছি । এসে একবেলা থেকে যাবে । „ পরের দিন সকালে বড়বাজার যাওয়ার জন্য বিক্রম নিজের গাড়িটা স্টার্ট করার চেষ্টা করলো । হ্যাঁ যা ভেবেছে ঠিক তাই । এতদিন ইঞ্জিন বন্ধ ছিল বলে ব্যাটারি বশে গেছে । আগেও এরকম হয়েছে । তখন গাড়িটা প্রফুল্লদাকে দেখিয়েছিল । বলেছিল ব্যাটারি বদলালেই গাড়ি মাখনের মত চলবে । কিন্তু কিপ্টে বিক্রম ব্যাটারি কেনার জন্য টাকা খরচা করতে রাজি ছিল না । তাই অগত্যা গাড়ি থাকতেও অটো কিংবা বাসে ধাক্কাধাক্কি করে যেতে হবে । দুপুরে যথারীতি সবাই তাড়াতাড়ি খেয়ে দেয়ে এক ঘন্টা মত বিশ্রাম করে নিল । এর মধ্যে সীমা চলে এলো । বার হওয়ার আগে বিদ্যা সীমাকে বললো , “ কোন সমস্যা হলে ফোন করিস কিন্তু । „ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিক্রম জিজ্ঞেস করলো , “ কিসে যাবেন ? „ “ অটোতেই যাই। এখান থেকে বড়বাজার অটো যায় । „ বিক্রম ভাবলো বড়বাজার এখান থেকে বেশি দূরে না । অটো যেতেই পারে । রুট থাকলেই হলো । দুটো গলি পার করে বিক্রম যেখান থেকে বাজার করে সেখান থেকেই বড়বাজার যাওয়ার অটো পাওয়া গেল । বড়বাজার পৌঁছে বিদ্যা এদোকান ওদোকান ঘুরে ঘুরে ব্লাউজ , শায়া , জামা , প্যান্টের কাপড় কিনলো । আর বেশ কিছু আটপৌরে সুতির শাড়িও কিনলো । আর বিক্রম সেগুলো বড় চটের ব্যাগে ভরে বিদ্যার পিছন পিছন ঘুরতে লাগলো । কিছুক্ষন পর বিক্রম যে দোকানে কাজ করতো সেই দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বিক্রমের মনে হলো তার অতীতের কর্মস্থান বিদ্যাকে দেখানো উচিত। কিন্তু কেন এমন মনে হলো সেটা বিক্রম বুঝতে পারলো না । আগে তো কখনো এরকম অনুভুতি হয়নি । তাহলে আজ হঠাৎ এরকম অনুভুতি হওয়ার কারন কি ? বিক্রম গলা ঝেড়ে নিয়ে বললো , “ আমি আগে এই দোকানে কাজ করতাম । „ বিদ্যা বিক্রমের ডান পাশে হেঁটে যাচ্ছিল । দোকানটাও ডানদিকেই। বিদ্যা দোকানটা দেখলো । পাইকারি চালের দোকান । দোকানের ভিতরে বড় বড় বস্তা রাখা আছে । বিক্রম এখানে কি কাজ করতো সেটা বিদ্যার বোধগম্য হলো না তাই সে জিজ্ঞেস করলো , “ এখানে কি কাজ করতে ? „ “ চালের বস্তা গাড়িতে তুলে দিতাম । „ বিদ্যা এই ছেলেটাকে যত জানছে তত অবাক হচ্ছে । এক সময় সে মোটবোঝাই এর কাজ করতো । এখন সে গ্যারাজে কাজ করে । আর একসময় মেয়ের মুখে বিক্রম গ্যারাজে কাজ করতো শুনেই সে এই সম্পর্কে রাজি হয়নি । কথাটা মনে পড়তেই বিদ্যার অনুশোচনা হলো । কিছুক্ষন পর একটা ফুচকার দোকানের সামনে দিয়ে যেতে যেতে বিদ্যা ভাবলো ‘ কতদিন খাওয়া হয়নি । শেষ কবে খেয়েছিলাম সেটাও মনে নেই । ‚ বিক্রম বিদ্যার চোখের চাউনি দেখেই তার মনের কথাটা হয়তো বুঝতে পারলো । সে জিজ্ঞেস করলো , “ খাবেন ? „ বিদ্যা মুখে কিছু না বললেও বিক্রম বুঝতে পারলো বিদ্যার ফুচকা খেতে কোন অসুবিধা নেই , “ আসুন । „ বিদ্যা বিক্রম দুজনেই ফুচকা খেল । বিদ্যার সাথে শপিং করাটা ভালোই লাগলো । কিন্তু ফেরার সময় এক বিচ্ছিরি নোংরা ঘটনা ঘটলো । যা বিদ্যার মনে বিক্রমের জন্য শ্রদ্ধা এবং সম্মান আরো বেড়ে গেল । ফেরার সময় কোন অটো ভাড়া পাওয়া গেল না । কেউ এত মালের সাথে যেতে রাজি নয় । এক অটোওয়ালা কে বিক্রম বললো , “ একটু বেশি দেব । চলুন না । „ অটোওয়ালা বিরক্ত হয়ে বললো , “ আরে মশাই বললাম তো যাব না । এই কিছুক্ষণ আগে এক পুলিশ আমাদের এক অটো ড্রাইভারকে চড় মেরেছে । তাই এখন এই লাইনের কারোর অটোই যাবে না । আপনারা বাস ধরুন । „ অগত্যা তাদের বাসই ধরতে হলো । আর বাসেই ঘটলো সেই ঘটনা । বাসে ওঠার আগে মোট চারটে ব্যাগের তিনটে ব্যাগ বিক্রম নিজের কাছে রাখলো । বিদ্যা দুটো চেয়েছিল কিন্তু বিক্রম তাকে একটাই ব্যাগ দিয়েছে । বিদ্যা বাসে উঠে একটা ব্যাগ নিয়ে একেবারে শেষের দিকে চলে গেল । আর বিক্রম তিনটে ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে পারলো না । তাই দরজার সামনের দিকেই রইলো । বেশ কিছুটা যাওয়ার পর বাসে আরো লোক উঠলো । অটো বন্ধই এই ভীড়ের কারন সেটা বিক্রম বুঝতে পারলো । বাসে এখন দাঁড়ানোরও জায়গা নেই । হঠাৎ পিছন থেকে বিক্রম এক মহিলার গলা পেল , “ আপনি একটু সড়ে দাঁড়ান । „ “ দেখতে পাচ্ছেন না কি অবস্থা। এই ভীড়ে আমাকে সড়ে দাঁড়াতে বলছেন । „ বিক্রম কথাটাকে তেমন আমল দিলনা । বাসে এরকম ধাক্কাধাক্কি প্রায়ই হয় । এক দুই মিনিট পরেই এবার বিক্রম স্পষ্ট শুনলো মহিলার কন্ঠস্বর। এবার সে চিনতেও পারলো এটা বিদ্যার গলা । বিদ্যা বলছে , “ লম্পট কোথাকার । তখন থেকে আপনাকে সড়ে দাঁড়াতে বলছি কথা কানে যাচ্ছে না আপনার । „ এবার বিক্রম পায়ের টোয়ের উপর ভর করে পিছনে তাকিয়ে দেখলো একটা বুড়ো মত লোক বিদ্যার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে । সে কি করছে সেটা বিক্রম বুঝতে দেরি হলো না । রাগে তার শরীর রিরি করে জ্বলতে লাগলো । দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে থাকার জন্য কন্ডাকটার কে সে দেখতে পাচ্ছে । সে সঙ্গে সঙ্গে বললো , “ বাস থামান । থামান বলছি । „ তারপর যা হওয়ার তাই হলো । বাস মাঝ রাস্তায় থেমে গেল । বিক্রম তিনটে ব্যাগ ফেলে পিছনে গিয়ে লোকটাকে ধাক্কা দিতে দিতে বাসের বাইরে বার করে দিল , “ বেরোন আপনি । এইসব করতেই বাসে ওঠেন নাকি আপনারা । আপনাদের জন্যেই তো রাস্তায় চলা ফেরা করা দায় হয়ে উঠেছে । „ অন্য জায়গা হলে বিক্রম অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি দিত । কিন্তু এখানে নিজেকে সামলে নিল । লোকটা কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আর এক মহিলা বললো , “ আমিও দেখেছি লোকটার নোংরামি । তখন থেকে এর ওর গায়ে হাত দিচ্ছিল । „ লোকটাকে ধাক্কা মেরে বাসের বাইরে বার করে দিয়ে বিক্রম বললো , “ আপনার ভাগ্য ভালো আপনাকে আমি পুলিশে দিইনি । „ লোকটা মাথা নিচু করে রাস্তা পার করে একটা গলির ভিতর ঢুকে গেল । তারপর বাস আবার চলতে শুরু করলো । তারপর সারা রাস্তা এই ঘটনা নিয়েই চাপা গুঞ্জন চললো । বিক্রামের ডান হাতে দুটো আর বাম হাতে একটা , মোট তিনটে বড়ো চটের ব্যাগ। আর বিদ্যার হাতে একটা চটের ব্যাগ । বিক্রমের ব্যাগ দুটোর তুলনায় বিদ্যার ব্যাগে কম কাপড় আছে তাই এটা তুলনায় হালকা । বিক্রম আগে আগে চলছে । আর বিদ্যা বিক্রমের পিছন পিছন । আর মাত্র একটা গলি বেঁকে গিয়ে কিছুটা গেলেই চায়ের দোকান পড়বে । বিদ্যা বিক্রমের পিঠ দেখছে তাই বিক্রমের মুখে ফুটে ওঠা রাগ সে দেখতে পাচ্ছে না । এ রাগ সেই বাসের লম্পট বুড়ো লোকটার উপর না । নিজের উপর । বিক্রম নিজের উপরেই রেগে আছে । যদি সে প্রফুল্লদারকথা মত গাড়ির ব্যাটারিটা বদলে নিতে তাহলে আর এইরকম ঘটনা ঘটতো না । গাড়ি স্টার্ট নিলে বাসে উঠতেই হতো না বিদ্যা আর বিক্রমকে । কালকেই গাড়ির ব্যাটারি বদল করবে সে মনে মনে ভেবে নিল । বিক্রম নিজের উপর রাখে ফুসলেও বিদ্যা অন্য কিছু ভাবছে । পথ চলতে চলতে সে বিক্রমের পিঠের দিকে তাকিয়ে হাঁটছে। চওড়া শক্তিশালী পিঠ , তার হাতে ভারী ব্যাগ থাকায় হাতের পেশী ফুলে আছে , হাতের পেশীর উপর ফুলে উঠা শিরা গুলোও এখন বিদ্যার চোখে দৃশ্যমান । জিন্স পড়ে থাকায় বিক্রমের পাছাও বিদ্যার কাছে গম্বুজের মতো মনে হতে লাগলো । আজ যা বাসে হয়েছে তাতে খুব একটা অস্বস্তি হচ্ছে না এমন নয় । খারাপ লাগছেই । তবে খারাপ লাগার অনুভূতির থেকেও বিক্রমের আচরণে সে অভিভূত। বিদ্যা তো বিক্রমকে বলেনি যে এক লম্পট পাষন্ড তার নোংরা মনস্কামনা চরিতার্থ করছে । বিক্রমকে সে সিনেমার হিরো ভাবছে না । এই কাজটা সকল পুরুষেরই কর্তব্য। বাসে তো আরো লোক ছিল কিন্তু তারা তো এগিয়ে আসেনি । কাপুরুষের দল সব । কিন্তু বিক্রম ব্যাতিক্রম। এরকম পুরুষই তো চাই জীবনে । আসলে বহুদিন পর । না , বহুদিন না । বহু বছর পর আজ বিকালটা বিদ্যার মনোরম কাটলো । বাসের ঘটনায় মনটা বিষিয়ে গেলেও বিক্রমের পুরুষশুলভ আচরণে মনটা এখন হালকা । বিক্রমের সাথে ফুচকা খাওয়া । বিক্রমের হাতে ব্যাগ দিয়ে নিজে পছন্দ করে শপিং করা । ঠিক যেমন দিব্যার বাবার সাথে দোকানের মাল কিনতে যেত তখনকার মত । তাই এই মানুষকে চোখভরে দেখতে ইচ্ছে করছে তার । আর তাই সে বিক্রমের পিঠের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটছে। হঠাৎ বিদ্যার ঈর্ষা খুব হলো । এই পুরুষের উপর প্রথম তার অধিকার ছিল । দিব্যার না । বিক্রম তাকে গোলাপ দিয়েছিল । দিব্যাকে না । কথাটা মনে আসতেই মাথা নিচু করে আপন মনে বললো , ‘ না না এ আমি কি ভাবছি । নিজের মেয়েকে ঈর্ষা করছি । কেমন মা আমি ! ‚ বিক্রমের চওড়া পিঠের দিকে তাকিয়ে বিদ্যা নিজেকে একটা প্রশ্ন করলো , ‘ আমি কি সত্যিই এই ছেলেটাকে পছন্দ করি ? শুধু এর নাম দিব্যার বাবার নামের সাথে মিলে যায় । আর এগারো বছর আগে এই ছেলেটা আমাকে গোলাপ দিয়েছিল বলে কি আমি একে ভালোবাসি ? না কখনোই না । কিন্তু দিব্যার বাবাও তো শুধু একটা গোলাপ দিয়েছিল তারপর একটা প্রেমপত্র । সেই চিঠিতে দিব্যার বাবা নিজের মনের কথা বলেছিল বলে দিব্যার বাবাকে ভালোবেসে আমি দিব্যার বাবার সাথে পালিয়েছিলাম । , নিজের মনের সাথে প্রশ্ন উত্তর খেলতে খেলতে কখন সে বাড়ির সামনে চলে এসেছে সেটা বিদ্যা খেয়াল করেনি । বিক্রম লোহার গেট খুললে বিদ্যার চটক ভাঙলো । তারপর সে ভুলেও গেল এতক্ষন ধরে নিজের মনের সাথে চলা তর্কাতর্কি। বিক্রম পরের দিন গিয়েই গাড়ির ব্যাটারি বদলে এসেছে । তারপর এক সপ্তাহ কেটে গেছে । সবকিছুই স্বাভাবিক । তিনজনের দৈনন্দিন জীবন স্বাভাবিক ছন্দেই কাটছে । কিন্তু এই স্বাভাবিকের মধ্যেই কিছু অস্বাভাবিক জিনিস বিদ্যার চোখে ধরা দিয়েছে । তার মনে হচ্ছে বিক্রম আর তার মেয়ের মধ্যে সেই স্বামী স্ত্রীর রোমান্সটা যেন নেই । কখনো তাদের দুজনকে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে বিদ্যা দেখেনি । কিন্তু দেখাটাই তো স্বাভাবিক। একটা ছোট বাড়িতে একে অপরের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখে ফেলাটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কিছুই বিদ্যা গত সতের আঠারো দিনে দেখেনি । কখনো দুজনকে হাসি ঠাট্টা ইয়ার্কি করতেও সে শোনেনি । এমনকি দিব্যার পেটে বিক্রম কান দিয়ে তার সন্তানের আওয়াজও শোনেনা । যা সব বাবাই করে থাকে । দিব্যার বাবা তো প্রতিদিন দুই তিনবার বিদ্যার পেটে কান পেতে দিব্যার নড়াচড়া শোনার চেষ্টা করতো । বিদ্যার চোখে যেমন বিক্রম আর দিব্যার রোমান্সহীন অস্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন ধরা দিয়েছে ঠিক বিক্রমের চোখেও মা মেয়ের অস্বাভাবিক সম্পর্ক ধরা দিয়েছে । দিব্যা কখনোই তার মায়ের সাথে সোজা মুখে বা মিষ্টি মুখে কথা বলে না । এমনকি বিদ্যাও দিব্যাকে বেশি ঘাঁটায় না। প্রয়োজন ছাড়া কেউই কারোর সাথে কথা বলে না । এমনকি বিদ্যা দিব্যাকে কোন কাজ করতেও বলে না । এটা কি প্রেগনেন্সির কারনে সাবধানতা বজায় রাখার জন্য নাকি সম্পর্কটাই এরকম সেটা বিক্রমের কাছে একটা ধাঁধা। তবে মা মেয়ে যখন কথা বলে তখন বিক্রম দিব্যার মুখে রাগ লক্ষ্য করেছে । আর বিদ্যার মুখে কিছুটা অনুসূচনা বা অনুতপ্তের আভাস দেখেছে । তবে মায়ের জন্য মেয়ের এত কিসের রাগ সেটা বিক্রম বুঝতে পারেনি । দিব্যাকে একবার জিজ্ঞেস করেও কোন উত্তর সে পাইনি । আর বিদ্যাকে জিজ্ঞেস করা যায় না যে আপনার মেয়ে আপনার উপর রেগে থাকে কেন ? জিজ্ঞাসা করা গেলে সে অনেক আগেই জিজ্ঞেস করতো । এখন মাঝেমধ্যেই আবহাওয়া বদল হচ্ছে। সকালে তপ্ত রোদ তো বিকালে কুড়ি মিনিটের বৃষ্টি । আর বিকালে বৃষ্টি হওয়ার জন্য সন্ধ্যায় ভ্যাপসা গরম । ঠিক এইরকম ক্ষনিকের এক বৃষ্টিতে ভিজে দিব্যা বৃষ্টিতে ভিজে দিব্যা জ্বর বাঁধলো । বিদ্যা রেগে বললো , “ কি দরকার ছিল ভেজার । যখন জানিস তোর সহ্য হয়না । „ বিক্রম লক্ষ্য করলো এই প্রথম দিব্যা পাল্টা কিছু বললো না । কিন্তু অন্য সময় তো দিব্যা কিছু কথা শোনাতোই শোনাতো । রাতে বিদ্যা দিব্যার ঘরে শুয়ে রাত জেগে জলপট্টি করে দিল। তাই বিক্রম শুলো গেস্টরুমে। বিদ্যার এই রাত জেগে মেয়ের সেবা করাটা বিক্রমকে কিছুটা হলেও বিদ্যার প্রতি টান বাড়ালো । দিব্যার বয়স কম এবং ডাকসাইটে সুন্দরী আর বিদ্যার এখন মধ্যবয়স্কা । রূপের দিক থেকে দিব্যা মায়ের থাকে এগিয়ে। কিন্তু একজন পুরুষের কাছে বিদ্যার মত গৃহীনি যে রাত জেগে একজন অসুস্থের সেবা করে , নিজের হাতে পরিবার টেনে নিয়ে যায় , ভালো রান্না করে খাওয়ায় । তাকেই তো বেশি গ্রহনযোগ্য মনে হবে । দিব্যা তো কখনো রান্না করে না । নিজের ঘর বাদে অন্য কিছু গোছায় না । কে খেলো কি খেলো না সেটা দেখে না । তাই এই শশুর বাড়িতে এসে বিদ্যার প্রতি টান দিন দিন যেন বাড়ছে বৈ কমছে না । বিক্রমের মনে হলো একটা পরিবারে শুধু স্বামী স্ত্রী যথেষ্ট নয় । বিদ্যার মত এক গুরুজন দায়িত্বশীল মহিলাও দরকার । তারপরেই সেটাকে পরিবার বলা যায় । বিদ্যার সাথে শপিং করতে খুব ভালো লেগেছিল বিক্রমের । বলা যায় বিক্রমের জীবনের সুন্দর এবং মনে রাখার মত একটা দিন । কিন্তু বিদ্যার সাথে শপিং করার সুযোগ আর একবার আসবে সেটা বিক্রম ভাবেনি । অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ। মহালয়া হতে আর ঠিক দশ দিন বাকি । সকাল বেলা শবনম এসে বললো , “ তোমলা পুজায় কেনাকাটা কলবে না ? কালকে ওই পাশেল বাসাল পায়েল খুব সুন্দল একটা শালী দেখাচ্ছিল। „ বিক্রম শাড়ি কে শালী বললো তাই বিক্রম আর হাসি চেপে রাখতে পারলো না । ফিক করে হেসে ফেললো । শবনম মুখ ফুলিয়ে বললো , “ হেসে নাও দাদা । হেসে নাও । „ বিক্রম শবনমের রাগ দেখে বললো , “ আচ্ছা ঠিক আছে । তোকে এবার আমি একটা খুব সুন্দর জামদানী শাড়ী দেব । „ শবনমের চোখ ঝিলিক দিয়ে উঠলো , “ সত্যি । „ এই চোখ লোভী চোখ নয় । খুশির চোখ । “ তিন সত্যি । কোন রঙের শাড়ি নিবি বল ? „ “ তোমাল যেটা পছন্দ হবে সেটাই এনো । „ যথারীতি তিনজন নিজেদের জন্য পূজার কেনাকাটা করতে বার হলো । বিকাল বিকাল তিন জন ক্যামাক স্ট্রিটের প্যান্টালুনসে চলে এলো । বিদ্যা একবার বলেছিল , “ নিউমার্কেট থেকেই তো কিনলে হয় । প্যান্টালুনসে তো সব কাপড়ের দাম বেশি। „ বিক্রম হেসে বললো , “ এটা আমার তরফ থেকে পূজার উপহার ভেবে নিন । পরের বছর থেকে আপনি যেখান থেকে বলবেন সেখান থেকেই কেনা হবে । „ পার্কিংয়ে গাড়ি রেখে তারা ঘুরে ঘুরে শপিং করা শুরু করলো । দিব্যা নিজেই একটা সুন্দর চুড়িদার পছন্দ করার পর বিক্রম তাকে আর একটা অন্য রঙের কুর্তি দেখিয়ে বললো , “ এটা নাও । ভালো মানাবে তোমায় । „ দিব্যা বললো , “ আর নেব না । এই একটাই ঠিক আছে । „ মেয়ের কথা শুনে বিদ্যার বিস্ময়ের অন্ত রইলো না । দিব্যা বললো , “ এবছর তো আর পড়ে ঘুরতে পারবো না । তাই নিয়ে কি লাভ ? „ তারপর শবনমের জন্য বিক্রম একটা ভালো ময়ূরী রঙের জামদানি শাড়ি কিনলো । বিক্রম বিদ্যার জন্যেও দুটো শাড়ি পছন্দ করে দিল । কিন্তু নিজের জন্য কিছু কিনলো না । বিদ্যা মেয়ের উপর খুব রাগ হলো । স্বামীর জন্য পছন্দ করে জামা প্যান্ট কিনে দেওয়া তার বৌয়ের দায়িত্ব। কিন্তু দিব্যার সেদিকে তেমন একটা আগ্রহ নেই । কিন্তু মেয়েকে সবার সামনে কিছু বলাও যায় না । তাই বিদ্যা নিজে দুটো জিন্স আর দুটো জামা পছন্দ করে দিল । বাড়ি ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেল । পরের দিন সকালে বিক্রম শবনমকে শাড়িটা দিল । শাড়িটা হাতে নিয়ে শবনমের চোখে মুখে ফুটে উঠলো খুশীর উচ্ছাস । সে বললো , “ এত খুব দামী শালি ! কত নিল ? „ “ দাম জেনে কি হবে তোর । পছন্দ হয়েছে কিনা বল ? „ শবনমের গলাটা ধরে এলো , “ খুব । „
28-09-2023, 11:14 PM
(This post was last modified: 28-09-2023, 11:18 PM by Somnaath. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
খুব সুন্দর ভাবে এগোচ্ছে গল্পটা শবনমের র ড় এবং ঢ় কে 'ল' বলার ব্যাপারটা unique লাগলো। যদিও কোনো চরিত্রের বাচনভঙ্গি বা নির্দিষ্ট কোনো অক্ষর নিয়ে experiment এর আগে মাত্র একজন লেখকই করেছে।
29-09-2023, 08:38 AM
(28-09-2023, 11:14 PM)Somnaath Wrote: আপনি মনে হয় বুম্বাদার চক্রবুহ্যে শ্রীতমার কথা বলছেন । শ্রীতমা ট কে ত বলতো । ❤️❤️❤️ |
« Next Oldest | Next Newest »
|