Thread Rating:
  • 167 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছিন্নমূল ঃ কামদেব
(03-05-2023, 11:23 AM)poka64 Wrote: সবার জন্যই চিতা
যদিও কথাটা তিতা

আপডেটের অপেক্ষায় আছি। 
লাইক ও রেপু দিলাম। 
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
পরবর্তী আপডেট কখন পাবেন?
Like Reply
Waiting for update dada
[+] 1 user Likes nightangle's post
Like Reply
Kumdev dada passed !!! ????
Like Reply
যদি কিছু মনে না করেন, নিজে থেকে ছোট খাটো একটা লেখা শুরু করেছি...
https://xossipy.com/thread-55195.html
যদি একটু পরে দেখতেন।
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
Like Reply
দাদা তি কোন কারণে আমাদের উপরে নাখোশ হয়ে আছেন??
না হলে এতো দেরি তো হয় না আপডেট দিতে।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
ত্র্যশীতিতম অধ্যায়




দশদিনের মাথায় শ্রাদ্ধ শান্তি মিটলো।পরেরদিনই দিব্য এসেছে।ক্রিশের আসার খুব ইচ্ছে ছিল গ্রামের বাড়ি তাকে নিয়ে একটা সিন ক্রিয়েট হবে ভেবে আনেনি।ক্রিশের ঈণ্ডিয়া খুব পছন্দ।ইণ্ডিয়াতে আসবে বলে ক্রিশ নাকি বাংলা শিখেছে।একজন বিদেশিনী মহিলা বাংলা বলছে ভেবে বেশ মজা লাগে। নিয়ম মেনে দিব্যজ্যোতি সব কাজ করেছে।কেবল মস্তক মুণ্ডণ করেনি তাহলে প্লেনে ফিরতে অসুবিধে হবে।গোপাল নগরের প্রতিটি বাড়ি নিজে গিয়ে দিব্য নেমন্তন্ন করেছে।ভালোয় ভালোয় সব মিটেছে, পাঞ্চালি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।সবাই এসেছিল কেবল মোমো আসেনি।সৌমিত্র শ্মশানে এসেছিল শ্রাদ্ধের দিনও এসেছিল।কলেজ জীবনের অনেক বন্ধুও এসেছিল।একজনের কথা খুব বেশী বেশী মনে পড়ছিল।কোথায় হারিয়ে গেল বেচারী কে জানে।সংসারে সে বড় একা ভেবে মনটা বিষণ্ণ হয়।একটা দীর্ঘ নিশ্বাস বেরিয়ে এল। দাদাভাই আজ চলে যাবে মামণি কান্না কাটি করছিল।দাদাভাই বলেছে,এজেন্সী মারফৎ কথা চলছে নিউটাউনে ফ্লাট হয়ে গেলেই ওরা এখানে পাকাপাকিভাবে আসবে।মাকেও নিজের কাছে নিয়ে যাবে।
পাঞ্চালি আবার চেম্বারে বসা শুরু করবে।বাপি নেই ভাবতে কেমন লাগে। গোবিন্দকাকুকে বলে রেখেছে দাদাভাইকে দমদম পৌছে দেবে।কটা দিন পারুলদিরও খুব খাটাখাটনি গেছে।মামণিকে আগলে আগলে রেখেছে সারাক্ষণ।দরজার সামনে মধুদা ঘোরাঘুরি করছে অনেক্ষন।পাঞ্চালী ডেকে বলল,মধুদা কিছু বলবে?
মধু ঘরে ঢুকে ইতস্তত করে।
কি বলো?
বলছিলাম কি আমারে কি আজ এয়াপোটে যেতি হবে?
না তোমার যাওয়ার দরকার নেই,গোবিন্দকাকা আছে।কাল থেকে আমি আবার চেম্বারে বসবো।
আচ্ছা দিদি।মধু চলে যাচ্ছিলো পাঞ্চালী ডেকে বলল,আচ্ছা মধুদা সেদিন পিসিমণি তোমাকে কিছু বলেছিল?
খুব কষ্ট পেইয়েছে।শত হলি নিজির মায়ের পেটের ভাই।
তুমি কি করে বুঝলে?
আমার সামনে বলে পেকাশ করছিল না।মাঝে মাঝে আচলে চোখ মুছতিছেল।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও।কাল আবার চেম্বার আছে মনে থাকে যেন।
মধু চলে গেল।মোমোর জন্য খারাপ লাগে।নিজের দোষেই আজ মোমোর এই অবস্থা।কিভাবে কাটিয়ে দিল সারাটা জীবন।  
বাজার থেকে ইলিশ মাছ এনেছিল সুখ।অনেকদিন পর আজ মাছ খাওয়া হল। ব্যালকনিতে গিয়ে সিগারেট ধরাতে গিয়ে খেয়াল হল সিগারেট নেই।মোমো একটু আগে কলেজ চলে গেল।
ডাক্তারবাবু মারা গেলেন যেন এক মহীরুহের পতন।বাবা অসুস্থ হলে ডাক্তার মিত্র যা করেছেন সেকথা ভুলবে কি করে।মোমো ডাক্তারবাবুর বোন জানার পর থেকেই কেমন একটা আড়ষ্টতা তাকে চারপাশ হতে জড়িয়ে ধরে।সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে হাওয়ায় ধোয়া ভাসিয়ে দিয়ে মনে হল এখনো দিন পাচেক সময় আছে মাটিগাড়া কলেজে যোগ দেবে।মোমো খুশি হবে আবার পরক্ষনে মনে হয় এসময় মোমোকে একলা ফেলে যাওয়াটা স্বার্থপরতা হবে।সিগারেট কিনতে যাবে কিনা ভাবে।যখন নেশা ছিল না অসুবিধে হয়নি।
ডাক্তারবাবু নেই মানে পাঞ্চালী পিতৃহারা।পাঞ্চালীর জন্য খুব খারাপ লাগে।পাঞ্চালী বুদ্ধিমতী বাবা বলতো পাঞ্চালীর দৃষ্টি খুব গভীর।মোমো বলছিল পাঞ্চালী এখন ডাক্তার।ডাক্তারের মেয়ে ডাক্তার হবে স্বাভাবিক।কেমন দেখতে হয়েছে একবার দেখার ইচ্ছে হয়।কত ইচ্ছে মানুষের বুকে বাসা বাধে সব ইচ্ছে কি সবার পূরন হয়।পাঞ্চালী এখন দূর আকাশের চাঁদ।গোপালনগরের কথা মনে পড়ে।কেমন আছে দেবেন কাকু।মিলি নিশচয়ই এখন কলেজে পড়ে।সিধু তাপস সন্দীপনদের সঙ্গে দেখা হয়নি কতকাল।পূব বাংলা ছেড়ে একদিন এসে উঠেছিল গোপালনগরে মামার জন্য ছাড়তে হল সেই ভিটে।সুখ আর ভাবতে চায়না যা আছে অদৃষ্টে তাই হবে।মোমোর ফিরতে দেরী আছে সুখ জামা প্যাণ্ট পরে বেরিয়ে পড়ল। 
পলি ফোন করেছিল।দিব্যর সঙ্গেও কথা হয়েছে ফোনে।যখন যাবার তখন যাননি এখন আর ভাঙ্গা হাটে যেতে ইচ্ছে করে না।দীপশিখা জানিয়ে দিয়েছেন।
দিব্য শিগগির দেশে ফিরবে বলল।পরে একদিন সময় করে বৌদির সঙ্গে দেখা করে আসবেন।মনুকে সব বলেছেন কিছুই গোপন করেন নি।শুক্লা একটা লোকের খবর এনেছে।শুক্লা বলছিল ছুটি হলেই চলে যেও না।স্বামী পরিত্যক্তা মাধ্যমিক অবধি পড়াশুনা করেছে ড.চৌধুরীর গাড়িতে  কলেজে আসার কথা।সব সময়ের জন্য একটা লোক হলে ভালই হয়।এক্টু হাত লাগিয়ে সাহায্য করবে।
বিমান বন্দরে পৌছে দিব্য ঘড়ি দেখে বলল,ফ্লাইটের এখনো দেরী আছে।আমি ভিতরে চলে যাচ্ছি পলি তুই চলে যা।
দাদাভাই তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
জানি তুই কি জিজ্ঞেস করবি।দেখ আননেসেসারি মিথ্যে বলব কেন?নিউ টাউনে ফ্লাট পেয়েছি কিন্তু ক্রিশের ফ্লাট পছন্দ নয়।বাড়ী দেখছে ক্রিশ তো পা বাড়িয়ে আছে।আচ্ছা পলি তোর কি ব্যাপার মামণি বলছিল--।
বিয়ে করব না আমি তো বলিনি।বিয়ে করতে হবে বলে যাহোক একজনকে ধরে--।
দিব্য হো-হো করে হেসে উঠল।পলিও দাদার সঙ্গে হাসতে থাকে।দিব্য ভিতরে ঢুকে পিছন ফিরে যতক্ষন দেখা যায় হাত নাড়তে থাকে।চোখের আড়াল হয়ে গেলে পাঞ্চালির চোখ ছল ছল করে উঠল। 
আবার কবে কলকাতা আসবে তার ঠিক নেই।এবার মোমোর সঙ্গে দেখা করে যাবার কথা মনে হল। বলছিল শত হলি মায়ের পেটের ভাই মধুদার কথা মনে হল।হাটতে হাটতে গাড়ীতে গিয়ে বসে বলল,কাকু কলকাতার দিকে চলুন। 
 যশোর রোড ধরে গাড়ি দক্ষিনদিকে ছুটে চলেছে।দু-পাশে সারি সারি গাছ।অনেকবার কলকাতায় এলেও এই রাস্তা দিয়ে আসা হয়নি।পিসির বড় হয়ে ওঠা এক সময় গোপালনগরে  অথচ কতকাল যোগাযোগ নেই।কলকাতাতেই কেটে গেল সারাটা জীবন।বয়স হয়ে যাচ্ছে রীটায়ার করার সময় হয়ে এল।রিটায়ায়র করার পরও কি কলকাতায় থাকবে।জীবন বড় বিচিত্র কার যে কোথায় স্থান হবে কে বলতে পারে।বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল তাই পিসির সঙ্গে ভাল করে কথা বলা হয়নি।পিসি বলেছে পরে একদিন যাবে।এসে পড়েছে প্রায়।পিসি কলেজ থেকে ফিরেছে তো।বেশী দেরী করা যাবে না।মামণি একা বাড়ীতে আছে আজই ফিরতে হবে।    
সুখ এক প্যাকেট সিগারেট কিনে একটা বের করে ঝুলন্ত দড়ি হতে অগ্নি সংযোগ করতে থাকে।গাড়ী মৌলালীর কাছে আসতেই পাঞ্চালী বলল,কাকু বা-দিকে।গাড়ি বা-দিকে মোড় ঘুরে কমপ্লেক্সে ঢুকতে যাবে পাঞ্চালী বলল,কাকু দাড়ান এখানে দাড় করান।
পাঞ্চালী কি ভুল দেখল।গাড়ি দাড়াতে নেমে বলল,কাকু আপনি ভিতরে নিয়ে পার্কিং করুন।
পাঞ্চালী বাইরে বেরিয়ে এসে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে উল্টোদিকের ফুটপাথে দাঁড়ানো ছেলেটিকে লক্ষ্য করে।সিগারেট ফুকলেও মনে হচ্ছে তার ভুল হয়নি।রাস্তা পেরিয়ে ছেলেটির মুখোমুখি দাড়িয়ে পাঞ্চালী বলল,বাঃ অনেক উন্নতি হয়েছে।
সামনে পাঞ্চালীকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠল।সিগারেট ফেলে দিয়ে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থাকে।বুঝতে পারে পিসির কাছে এসেছে।
হা করে কি দেখছো?চিনতে পারোনি?
চিনবো না কেন আসলে আপনি কত বড় হয়ে গেছেন--একেবারে লেডি।আমতা আমতা করে বলল।
চিনতে পারলে আপনি-আজ্ঞে করছো কেন?
না মানে অনেকদিন পর আপনাকে মানে তোমাকে দেখলাম--তুমি কি পিসির কাছে এসেছো?
পাঞ্চালী অবাক হয় পিসির কথা জানলো কি করে?জিজ্ঞেস করে তুমি কি আমার পিসিকে চেনো?
বারে চিনবো না কেন?ওর আশ্রয়েই তো আমি আছি,উনি আশ্রয় নাদিলে কোথায় ভেসে যেতাম।
এই তাহলে মোমোর সিকিউরিটি অনাথ মেধাবী ছেলে।পাঞ্চালীর কাছে সব পরিস্কার হয়ে যায়।জিজ্ঞেস করে,পিসি কি ফিরেছে?
ও একেই তাহলে সিউকিরিটির জন্য রেখেছে।অনাথ মেধাবী ছেলে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেছে।মোমোর কথাগুলো মনে পড়ল।পাঞ্চালী জিজ্ঞেস করল পিসি কলেজ থেকে ফিরেছে তো?
এই ফেরার সময় হল।তুমি একটু অপেক্ষা করো এসে যাবেন।
এখানে রাস্তায় অপেক্ষা করব?
ওঃ স্যরি চলো আমি দরজা খুলে দিচ্ছি।সুখ রাস্তা পেরোতে থাকে।
পাঞ্চালী পিছন পিছন যেতে যেতে ভাবে আগেও দু-একটা কথা হয়েছে,এ নাগাড়ে এতক্ষন কথা হয়নি।এত প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালো রেজাল্ট করেছে ভেবে ভাল লাগল।আমি বড় হয়ে গেছি আর ও ছোট্টটি আছে মনে মনে হাসল পাঞ্চালী।মনটা আগের মতই রয়ে গেছে।
তিনতলায় উঠে সুখ দরজা খুলে বলল,এসো।উনি যে তোমার পিসি আমি জানতাম না।পাঞ্চালীকে ফোনে কথা বলতে দেখে চুপ করে গেল।
তোমার ফ্লাটে এসেছি তোমার কি দেরী হবে...হ্যা দাদাভাই চলে গেল আজ...মনু কে? তোমার সিকিউরিটি গার্ড...হি-হি-হি তুমিই তো বলেছো একা থাকি ... ওই একই হল...মামণি ভালো আছে...আজই ফিরতে হবে...হ্যা হ্যা রাখছি তাড়াতাড়ি এসো।
অনেক্ষন থেকে গলা খুস খুস করছিল।তখন সিগারেটটা খেতে পারেনি।লাইব্রেরীতে ঢুকে সুখ সিগারেট ধরিয়ে মৌজ করে টানতে থাকে।পাঞ্চালীর কথা শুনে বুঝেছে ওর দাদাকে প্লেনে তুলে দিতে কলকাতায় এসেছে।গোপাল নগরে আজ ড মিত্র নেই।পুরানো দিনগুলো ছবির মত চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
পাঞ্চালী দরজার আড়াল থেকে দেখল বাবু ফুক-ফুক সিগারেট ফুকছে।এম এ পাস করেছে বয়স হলেও এখনো সেই ইনোসেণ্ট ভাবটা রয়ে গেছে।ইশারা ইঙ্গিত বোঝে না নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করে।পাঞ্চালী ঢুকে গলা খাকারি দিয়ে বলল,না না ফেলতে হবে নাখাও।তবে বেশী খাবে না।
আমি তো বেশী খাইনা,এই একটা ধরালাম।
রাস্তায় ধরিয়েছিলে না?
তখন তো খাইনি।
হ্যা তুমি কি বলছিলে?পাঞ্চালী পাশে বসে বলল।
সুখ লক্ষ্য করে মেয়েদের গায়ে একটা বেশ গন্ধ।পাঞ্চালী একেবারে তার গা ঘেষে বসেছে।
কি বলছিলাম?
আমার পিসি জানতে না।
ও হ্যা কদিন আগে ভোর বেলা আমাকে কিছু নাবলে বেরিয়ে গেল।আমি তো ভেবে মরি একা মহিলা কোথায় গেল? জরুরী কাজ আছে কি জরুরী কাজ আমাকে বললে আমি করে দিতাম।সারাদিন কিভাবে কেটেছে তোমায় কি বলব।ফোনটাও নিয়ে যায়নি ফোন করে খবর নেবো তারও উপায় নেই। ফিরল অনেক রাতে তারপর রান্না করল।সেদিন থেকে নিরামিষ।কাল তো ড.মিত্রের শ্রাদ্ধ হয়েছে তাই না?
পাঞ্চালী ঘাড় নাড়ে।
আজ আমাদেরও মাছ হয়েছিল। সেদিন শুনলাম উনি ড মিত্রের বোন।ড মিত্র নেই শুনে খুব কষ্ট হয়েছিল।গ্রামের মানুষের কাছে উনি ছিলেন ভগবান।লক্ষ করেছি সেদিন থেকে ম্যাডাম অন্য মানুষ।রান্না করা  কলেজ যাওয়া সবই করছেন কিন্তু চোখেমুখে ছেয়ে আছে কেমন এক বিষণ্ণতা।হবে নাইবা কেন নিজের দাদা--। সুখর চোখ ছল ছল করে উঠল। 
কষ্ট হয়েছিল একবার তো যেতে পারতে।
আমি তো জেনেছি অনেক পরে।আমার বাবার জন্য উনি যা করেছেন কোনোদিন ভুলব না।আমার বাবা নেই পাঞ্চালি তোমার মনের অবস্থা আমি বুঝি।
পাঞ্চালী চোখ মুছে বলল,তুমি অন্যের মনের অবস্থা বোঝো?

একথা বলল কেন সুখ কয়েক মুহূর্ত ভেবে বলল,দেখ পাঞ্চালী মনস্তত্ত না পড়লেও সকলেরই কম বেশি মনস্তাত্তিক জ্ঞান থাকে।পরস্পর কথা বলার সময় সেই জ্ঞানের প্রয়োগ দেখা যায়।মনের অবস্থা একেবারে বুঝিনা বললে ভুল হবে।
তুমি ছাই বোঝো।বলা হল এককথা শুরু করল লেকচার।পাঞ্চালী নানাভাবে খুচিয়ে ভিতরের মানুষটাকে জাগাতে চেষ্টা করে।
পলি এসেছে খবর পেয়েও ঈশানির জন্য দেরী হয়ে গেল।ড.চৌধুরীর গাড়ী এসে পৌছাতেই শুক্লা বলল,দীপুদি এই এসে গেছে।
গাড়ী থেকে নামল বছর চল্লিশের নীচে হবে একজন মহিলা হাতে একটা বড় ব্যাগ।সম্ভবত ওর জামা কাপড় হবে।শুক্লা বলল,এর নাম ঈশানী মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছে।সব কাজই পারবে।
শুক্লার বরকে জিজ্ঞেস করেন,কেমন আছেন?একদিন বউকে নিয়ে আসুন না।দীপশিখা দেরী নাকরে ঈশানীকে নিয়ে বাস স্টপেজে গিয়ে দাড়ালেন।
আচ্ছা ঈশানী তোমার স্বামীর সঙ্গে কি নিয়ে গোলমাল?
কোনো গলমাল তো হয়নি।আরো ভালো মেয়ে পেয়েছে তাই চলে গেল।
তোমার প্রতিবেশীরা কিছু বলেনি?
কি বলবে?যার মন নাই তারে জোর করে কি লাভ?
দীপশিখা ঘাড় ঘুরিয়ে একবার ঈশানীকে দেখলেন।বাস এসে দাড়াতেই দুজনে উঠে পড়ল। মৌলালী আসতে বাস থেকে নেমে কপ্লেক্সে ঢুকেই গাড়ীটা নজরে পড়ল।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,চিনতে পারছেন?
গোবিন্দ সোজা হয়ে বসে বলল,হ্যা আপনি তো ডাক্তারবাবুর বোন?
কতক্ষন এসেছেন?
মিনিট পনেরো-কুড়ি হবে।
দীপশিখা তিনতলায় উঠে কলিং বেলে চাপ দিতে গিয়ে হাত সরিয়ে নিলেন।পনেরো-কুড়ি মিনিট ধরে কি করছে ওরা?ব্যাগ থেকে চাবি বের করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে ঈশানীকে নিয়ে সোজা নিজের ঘরে চলে গেলেন।ওরা লাইব্রেরীতে গল্পে মশগুল খেয়ালই করল না।
সুখ বলতে থাকে,বাবার কাছে শুনেছি ডাক্তারবাবু গরীবদের সস্তার ওষূধ আর বড়োলোকদের দামী ওষূধ প্রেস্ক্রাইব করতেন।কেন জানো?
কেন?
বিশ্বাস না থাকলে ওষুধে রোগ সারেনা।সস্তার ওষূধ হলে বিশ্বাস হতোনা এতে রোগ সারবে।অনেকে ডাক্তার না দেখিয়ে জল পড়া তেল পড়া খায় তাদের রোগও সারে।জল পড়া খেলে কি রোগ সারে?আসলে মনের জোরে রোগ সেরে যায়।
কি সব হাবিজাবি আরম্ভ করলে?
হাবিজাবি নয় মনস্তত্তের কথা বলছি।
তোমার কাছে এই সব শুনতে চাইছি?
সুখ বুঝতে পারে পাঞ্চালী তাকে হেনস্থা করতে চাইছে।বলল,তুমি কি শুনতে চাইছো?
তোমার কথা বলো।
সুখ ফ্যাকাসে হাসল।তার দারিদ্র নিয়ে মজা করতে চাইছে।সুখ বলল,আমি খুব সাধারণ মা লোকের বাড়ীতে রান্নার কাজ করতো--।
এসব আমি জানি।
তুমি কি জানতে চাও বলতো?
বলব?তুমি সত্যি করে বলবে তো?পাঞ্চালী আর ধৈর্য রাখতে পারে না।
আমি মিথ্যে বলিনা।
আমার সঙ্গে কেউ অসভ্যতা করলে তোমার রাগ হয় কেন?
সুখ একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিল।
কি হল বলো?
কি বলবো?
তোমার রাগ হয় কেন?
রাগ হয় আমার তোমাকে ভালো লাগে।অন্য কেউ তোমার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বললে আমার ভালো লাগেনা।
পাঞ্চালী রক্তিম হয় তারপর বলল,একথা মুখ ফুটে বলতে কি হয়েছিল?
সব কথা সব সময় বলা যায় না।
তোমাকে আজ একটা কথা বলি।মাসীমা লোকের বাসায় রান্নার কাজ করতেন সেটাই তুমি দেখেছো।একজন মা তার সন্তানের জন্য লাজ লজ্জা অহঙ্কার ত্যাগ করে লোকের বাসায় কাজ করতেও দ্বিধা করে না সেটা তোমার নজরে পড়েনি।
ঈশানী দু-কাপ চা নিয়ে ঢুকতে ওরা অবাক।ঈশানী বলল,ম্যাডাম পাঠিয়ে দিলেন?
পিসি এসে গেছে! পাঞ্চালী চায়ের কাপ নিয়ে উঠে গেল।রান্না ঘরে গিয়ে বলল,তুমি এসে গেছো বুঝতেই পারিনি।
বুঝবে কিভাবে যেভাবে কথা বলায় মশগুল ছিলে।
বৌদি কেমন আছে?
ওই একরকম।আসলে বাড়ীতে লোকজন বেশী থাকলে ভুলতে সহজ হতো।
দিব্য নাকি দেশে ফিরে আসবে।
হ্যা নিউটাউনে বাড়ী কিনবে বলছিল। 
সুখ লাব্রেরীতে বসে চা খেতে খেতে পাঞ্চালীর কথাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকে।বাবা বলতো মেয়েটার চোখ অনেক গভীরে দেখতে পায়।
চা শেষ হতে পাঞ্চালীকে এক প্লেট মিষ্টি এগিয়ে দিল ঈশানী।পাঞ্চালী বলল,মোমো নীচে কাকু আছে ডাকি?
ঈশানী বলল,ওনারে চা জল খাবার দিয়ে এসেছি।
ইশানী মিষ্টির প্লেট নিয়ে লাইব্রেরীতে গেলে পাঞ্চালী জিজ্ঞেস করল,একে তো চিনলাম না।
ঈশানী আজ থেকে ওকে রাখলাম।বেশ চটপটে।
এবার তোমার সিকিউরিটি নিয়ে আর চিন্তা রইল না।
কথা বলে পছন্দ হয়ে থাকলে বল--।
তোমদের সবার ঐ এক কথা। 
তুই কি তাহলে চিরকাল আইবুড়ো থেকে যাবি?
তাতো বলিনি।
তাহলে ওকে পছন্দ নয়?
সে কথা কখন বললাম?
তাহলে কথা বলি?
জানি না যাও।যা ভালো বোঝো করো।মোমো অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে আমাকে বেরোতে হবে।
এ্যাই মনু ওকে এগিয়ে দিয়ে এসো।
পাঞ্চালী বেরিয়ে গেল পিছনে সুখ।নীচে নেমে গাড়ীতে বসে পাঞ্চালী বলল,আবার দেখা হবে।
আমি তো থাকবো না।
পাঞ্চালী অবাক হয়ে বলল,থাকবেনা মানে?
ভাবছি এপিসি কলেজে জয়েন করবো। 
সেটা কোথায় কবে জয়েন করবে?
আরো কিছুদিন সময় আছে।
বলদ কি সাধে বলে।পাঞ্চালী বলল,তুমি তো একথা আগে বলোনি?
গাড়ী ছেড়ে দিল।জানলা দিয়ে মুখ বের করে হাত নাড়ে পাঞ্চালী।মনে মনে ভাবে সেই আগের মতই আছে একদম বদলায়নি।     
  
       
 
Like Reply
অসাধারণ অপূর্ব।
[+] 3 users Like pradip lahiri's post
Like Reply
Classic update boss ..
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
অসাধারণ লেখা, ট্রাজেডি শুরু এবারে |
Like Reply
সুখের সাথে পালির বাক্যালাপ গুলো ওয়ান সাইডেড। পালি যেটা জানতে চায় সুখ সেটার ধারে কাছেও নেই। হয়তঁ সুখের মনেও পালি নেই?

তবে কেন সহজ সরৱ স্বীকারোক্তি যে পালি কে তার ভালো লাগতো? সেটা কি আজও আছে সেটা কি শুধুই ভালো লাগা নাকি ভালোবাসা? যদি তেমন কিছু হয় তবে মোমোর সাথে যেটা সেটা কি? শারীরিক সম্পর্ক মাত্র??

মোমো কি পালির সাথে সুখের কথা ভাবছে? কি করে? যাকে কি না সে নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহন করেছে। তবে সেই সম্পর্কের ভিত টা কই আজও যেখানে সবার কাছে লুকোতে হয়।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 2 users Like nextpage's post
Like Reply
Oshadharan.....opurbo......
Like Reply
Music 
(09-05-2023, 09:06 PM)কুমদেব Wrote: ত্র্যাশীতম অধ্যায়




দুদিনের শ্রাদ্ধ শান্তি মিট পরেরদিনই দিলো। ক্রিশের ফরোয়ার্ড খুব ইচ্ছা করছিল তাকে বাড়ি নিয়ে ক্রিয়েট করতে হবে আনেনি। নিয়মাবলী দিজ্যোতি সব কাজকেবল মস্ত মুণ্ড করেনি বিদেকে ভালো করে ফিরতে অসুখ হবে। কলেজের অনেক বন্ধুও তোমার মনে খুব ভালো শব্দ পড়েছিল। দাদাভাই আজকে যাবে মামণি কান্না কাটিল করছি।দাভাই বলেছে,এজেন্সী মারফৎ কথাবার্তা নিউটাউনে ফ্লাট হতে অনেকটাই ওরা এখানে পাকাপাকি ভাবে।মাকে নিজের কাছে নিয়ে যাবে।
পাঞ্চালি আবার চেম্বারে বসার শুরু করবে। গোবিন্দকাকুকে বলে বেড়া দাদাভাইকে খুব দম পৌছে।
কারণ ব্যবহারে ইতস্তত করে।
কি বলো?
বল কি আমারে কি আজ এয়াপোতে যেতি হবে?
না তোমার যাওয়া দরকার নেই, গোবিন্দকা আছে কাল থেকে আমি আবার চেম্বারে বসবো।
ভালো দিদি।
খুব কষ্ট হচ্ছে।
তুমি কি বুঝলে?
আমার কাছে বলে পেকাশ করছি নামাঝেতে আচলে মুছতিছেল।
ঠিক আছে যাও।কাল আবার চেম্বার আছে মনে হয়।
মধুর মধুর খারাপ জন্য।নিজের সামনে আজ মোর এই অবস্থা।  
বাজার থেকে ইলিশ মাছ ছিল সুখ। দেখতে গেলে সিগারেট নেই।
ডাক্তারবাবু মারামানা মারা যান এক মহীরহের পতন।বাবা রোগী হলে ডাক্তার মিত্র যাকে ভুল করবেন।মো ডক্টর বাবুর বোন জানার পর একটা আড়ষ্টতা তাকে চারপাশ হতে জোর করে ধরেছে। মাটিগাড়া করা।
ডক্টর বাবুর মধ্যে পাঞ্চালী পিতৃহারা।পাঞ্চালীর জন্য খুব ইচ্ছা।পাঞ্চালী বুদ্ধিমতী বাবা পাঞ্চালীর দৃষ্টি খুব গভীর। মোমোর পাঞ্চলি এখন ডাক্তার। সব পূরন হয়। ভাবতে চায়না যা আছে অদৃষ্টে তাই হবে। 
পলি রাজ্যের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।
দিব্য শিগগির দেশে ফিরবে বলল।পরে একদিন সময় করে বৌদির সঙ্গে দেখা করে আসবেন।মনুকে সব বলেছেন কিছুই গোপন করেন নি।শুক্লা একটা লোকের খবর এনেছে।শুক্লা বলছিল ছুটি হলেই চলে যেও না।স্বামী পরিত্যক্তা মাধ্যমিক অবধি পড়াশুনা করেছে ড.চৌধুরীর গাড়িতে  কলেজে আসার কথা।সব সময়ের জন্য একটা লোক হলে ভালই হয়।এক্টু হাত লাগিয়ে সাহায্য করবে।
বিমান বন্দরে পৌছে দিব্য ঘড়ি দেখে বলল,ফ্লাইটের এখনো দেরী আছে।আমি ভিতরে চলে যাচ্ছি পলি তুই চলে যা।
দাদাভাই তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
জানি তুই কি জিজ্ঞেস করবি।দেখ আননেসেসারি মিথ্যে বলব কেন?নিউ টাউনে ফ্লাট পেয়েছি কিন্তু ক্রিশের ফ্লাট পছন্দ নয়।বাড়ী দেখছে ক্রিশ তো পা বাড়িয়ে আছে।আচ্ছা পলি তোর কি ব্যাপার মামণি বলছিল--।
বিয়ে করব না আমি তো বলিনি।বিয়ে করতে হবে বলে যাহোক একজনকে ধরে--।
দিব্য হো-হো করে হেসে উঠল।পলিও দাদার সঙ্গে হাসতে থাকে।দিব্য ভিতরে ঢুকে পিছন ফিরে যতক্ষন দেখা যায় হাত নাড়তে থাকে।চোখের আড়াল হয়ে গেলে পাঞ্চালির চোখ ছল ছল করে উঠল। 
আবার কবে কলকাতা আসবে তার ঠিক নেই।এবার মোমোর সঙ্গে দেখা করে যাবার কথা মনে হল। বলছিল শত হলি মায়ের পেটের ভাই মধুদার কথা মনে হল।হাটতে হাটতে গাড়ীতে গিয়ে বসে বলল,কাকু কলকাতার দিকে চলুন। 
 যশোর রোডের দিকে ছুটে গাড়ি চালান।দু-পা সারি সারি গাছ।অকবার কোলে এপিনে এই পিনে যোগাযোগের মাধ্যমে আসা হয়নি।কালসিরের বড় হওয়া ওঠা এক সময় গোপালনগরে কত নেই। যে স্থানে থাকতে হবে তা বলতে বাবাকে নিয়ে কাজ করছিল তাই পিসির সঙ্গে ভাল কথা বলা যাবে না। দেরী করা যাবে না।মামণি একা বাড়িতে আছে আজই ফিরতে হবে।    
সুখ এক প্যাকেট সিগারেট সমাজের বাইরে বের করে ঝুলন্ত দড়ি হতে অগ্নি করতে থাকে গাড়ী সংযোগলাল মৌর কাছে আসতে পাঞ্চালী জানাতে, গাড়ি বা-দিকে মোড় কমপ্লেক্সে চাপতে যাবে পাঞ্চলী দোকাকু দাড়ান।
পাঞ্চলি কি ভুল দেখল।গাড়ি দাড়াতে কথা বলুন, আপনি ভিতরে পার্কিং করুন।
পাঞ্চালী বাইরে বেরিয়ে এসে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে উল্টোদিকের ফুটপাথে দাঁড়ানো ছেলেটিকে লক্ষ্য করে।সিগারেট ফুকলেও মনে হচ্ছে তার ভুল হয়নি।রাস্তা পেরিয়ে ছেলেটির মুখোমুখি দাড়িয়ে পাঞ্চালী বলল,বাঃ অনেক উন্নতি হয়েছে।
সামনে পাঞ্চালীকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠল।সিগারেট ফেলে দিয়ে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থাকে।বুঝতে পারে পিসির কাছে এসেছে।
হা করে কি দেখছো?চিনতে পারোনি?
চিনবো না কেন আসলে আপনি কত বড় হয়ে গেছেন--একেবারে লেডি।আমতা আমতা করে বলল।
চিনতে পারলে আপনি-আজ্ঞে করছো কেন?
না মানে অনেকদিন পর আপনাকে মানে তোমাকে দেখলাম--তুমি কি পিসির কাছে এসেছো?
পাঞ্চালী অবাক হয় পিসির কথা জানলো কি করে?জিজ্ঞেস করে তুমি কি আমার পিসিকে চেনো?
বারে চিনবো না কেন?ওর আশ্রয়েই তো আমি আছি,উনি আশ্রয় নাদিলে কোথায় ভেসে যেতাম।
এই তাহলে মোমোর সিকিউরিটি অনাথ মেধাবী ছেলে।পাঞ্চালীর কাছে সব পরিস্কার হয়ে যায়।জিজ্ঞেস করে,পিসি কি ফিরেছে?
ও একেই তাহলে সিউকিরিটির জন্য রেখেছে।অনাথ মেধাবী ছেলে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেছে।মোমোর কথাগুলো মনে পড়ল।পাঞ্চালী জিজ্ঞেস করল পিসি কলেজ থেকে ফিরেছে তো?
এই ফেরার সময় হল।তুমি একটু অপেক্ষা করো এসে যাবেন।
এখানে রাস্তায় অপেক্ষা করব?
ওঃ স্যরি চলো আমি দরজা খুলে দিচ্ছি।সুখ রাস্তা পেরোতে থাকে।
পাঞ্চালী পিছন পিছন যেতে যেতে ভাবে আগেও দু-একটা কথা হয়েছে,এ নাগাড়ে এতক্ষন কথা হয়নি।এত প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালো রেজাল্ট করেছে ভেবে ভাল লাগল।আমি বড় হয়ে গেছি আর ও ছোট্টটি আছে মনে মনে হাসল পাঞ্চালী।মনটা আগের মতই রয়ে গেছে।
তিনতলায় উঠে সুখ দরজা খুলে বলল,এসো।উনি যে তোমার পিসি আমি জানতাম না।পাঞ্চালীকে ফোনে কথা বলতে দেখে চুপ করে গেল।
তোমার ফ্লাটে গেল... তোমার কিদের হবেহ্যা দাদাভাইয়ের জন্য আজ...মনু কে? তোমার সিকিউরি গার্ড...হি-হি তুমি বলেছো একা একা...সাথে আছে...মামণ ভালো আছে...আজই ফিরতে হবে...হ্যা রাখছি তাড়াতাড়ি এসো।
অনেক্ষন থেকে গলা খুস করছি।
পালাঞ্চী পুরনো আড়াল থেকে দেখল বাবু ফুক-ফুক সিগারেট ফুকছে। ভালো খাবে না।
আমি তো পাও খাইনা, এই একটা ব্যাপার।
মান ধরিয়েছিল না?
তখন তো খাইনি।
হ্যা তুমি কি বলছিলে?পাঞ্চালী পাশে বসে বলল।
সুখ লক্ষ্য করে মেয়েদের গায়ে একটা বেশ গন্ধ।পাঞ্চালী একেবারে তার গা ঘেষে বসেছে।
কি বলছিলাম?
আমার পিসি জানতে না।
ও হ্যা কদিন আগে ভোর বেলা আমাকে কিছু নাবলে বেরিয়ে গেল।আমি তো ভেবে মরি একা মহিলা কোথায় গেল? জরুরী কাজ আছে কি জরুরী কাজ আমাকে বললে আমি করে দিতাম।সারাদিন কিভাবে কেটেছে তোমায় কি বলব।ফোনটাও নিয়ে যায়নি ফোন করে খবর নেবো তারও উপায় নেই। ফিরল অনেক রাতে তারপর রান্না করল।সেদিন থেকে নিরামিষ।কাল তো ড.মিত্রের শ্রাদ্ধ হয়েছে তাই না?
পাঞ্চালী ঘাড় নাড়ে।
আজ আমাদেরও মাছ হয়েছিল। শুনলাম কষ্ট ড মি বোনেরা। -। সুখের দেখা ছল করে উঠল। 
কষ্ট হয়েছিল একবার তো যেতে।
আমি তোমার জন্য অনেক পরে আছি।
পাঞ্চালী চোখে মুছে বলল,তুমি অন্য মনের অবস্থা বোঝো?

একথা বলে কেন সুখ মুহূর্ত কথা বললেন, দেবখ পাঞ্চী মনস্তত্ত না পড়ুন সবার কম বেশি মন জ্ঞানিক জ্ঞানী হয়।
তুমি ছাই বোঝো।বলা একথা শুরু করে লেকচার।পাঞ্চালী হল খুচিয়ে ভিতরের মানুষগুলোকে জাগাতে চেষ্টা করে।
পলির জন্য খবর পাওয়াও ঈশাদের হয়েছে।
এক থেকে নামল বছর চল্লিশের একজন একজন মহিলাকে হাতে তুলে নেবেন একটি বড় ব্যাগ। আমাদের জামা কাপড় হবে।
শুক্লার বরকে খরচ করেন, কেমন এক দিন বকে নিয়ে না থাকেন।
ভালো ঈশানী স্বামীর সাথে কি নিয়ে গোলমাল?
কোনো গলমাল তো হয়নি।আরো ভালো মেয়ে তাই দেখতে গেল।
আপনার প্রতিবেশীরা কিছু বলেন?
কি বলে? মন নাই তার জোর করে কি লাভ?
দীপ শিখা ঘাড় ঘুরিয়ে একবার ঈশানীকে পুড়ন। মৌলালী আসতে বাস থেকে কপ্লেক্সে ব্যবহার করেই নজরে পড়ল।
গোবিন্দ সোজা হয়ে বলল, হ্যা আপনি ডক্টর বাবুর বোন?
কতক্ষন আসান?
মিনিট পনেরো-কুড়ি হবে।
শিক্ষয়িত্রী তিনবেলা কলিংবেলে চাপ দিতে গিয়ে হাত নেবেন।
সুখ বলতে থাকে,বাবার কাছে আমি ডাক্তারবাবু গরীবদের সস্তার ওশুধ বড়োলোকদের দামী ওষুধ প্রেস্ক্রাইব করতে জানি?
কেন?
বিশ্বাস না থাকলে রোগে রোগ সারেনা।
কি সব হাবিজাবি আরম্ভ করে?
হাবিজাবি নয় মনস্ততের কথা।
তোমার কাছে এই সব শুনতে চাই?
সুখ আলোচনা করতে পারে পঞ্চালি তাকে হেনস্থা করতে চাইছে,তুমি কি শুনতে চাই?
তোমার কথা বলো।
সুখ ফাকসে হাসল।তার দারিদ্র নিয়ে মজা করতে চাইছি, আমি খুব মা লোকের বাড়ির সাধারণ রান্নার কাজ করতো-।
আমি জানি।
তুমি কি জানতে চাও বলতো?
কথা?তুমি সত্যি করে বলে তো?পাঞ্চালি আর ধৈর্য রাখতে পারে না।
আমি মিথ্যে বলিনা।
আমার সঙ্গে কেউ অসভ্যতা করতে তোমার রাগ হয় কেন?
সুখ একবার চোখ নামিয়ে নিল।
কি হল বলো?
কি বোলো?
তোমার রাগ হয় কেন?
রাগ হয় আমার যথেষ্ট ভালো।
পাঞ্চী রক্তিম হয় তারপর বলে, একথা মুখ ফুটে বলতে কি হয়েছিল?
সব কথা বলা যায় না।
এখনও একটা কথা বলি।
ঈশানী দু-কাপ নিয়ে চা ব্যবহারে ওরা ভাব।
পিসি এসেছে! পাঞ্চালী চায়ের কাপ নিয়ে মারা গেল।
বুঝবে যেভাবে কথা বলা মশগুল ছিল।
বৌদি কি আছে?
টেবিল এক ভিন্ন আস্লে বাড়িতে পছন্দ থাকতে ভুলতে সহজ।
দিব্য বার বার ফিরে।
হ্যা নিউটাউনে বাড়ী কিনবে বলছিল। 
সুখ লাব্রেরীতে বসে চা খেতে খেতে পাঞ্চালীর কথাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকে।বাবা বলতো মেয়েটার চোখ অনেক গভীরে দেখতে পায়।
চা শেষ হতে পাঞ্চালীকে এক প্লেট মিষ্টি এগিয়ে দিল ঈশানী।পাঞ্চালী বলল,মোমো নীচে কাকু আছে ডাকি?
ঈশানী বলল,ওনারে চা জল খাবার দিয়ে এসেছি।
ইশানী মিষ্টির প্লেট নিয়ে লাইব্রেরীতে গেলে পাঞ্চালী জিজ্ঞেস করল,একে তো চিনলাম না।
ঈশানী আজ থেকে ওকে রাখলাম।বেশ চটপটে।
এবার তোমার সিকিউরিটি নিয়ে আর চিন্তা রইল না।
কথা বলে পছন্দ হয়ে থাকলে বল--।
তোমদের সবার ঐ এক কথা। 
তুই কি তাহলে চিরকাল আইবুড়ো থেকে যাবি?
তাতো বলিনি।
তাহলে ওকে পছন্দ নয়?
সে কথা কখন বললাম?
তাহলে কথা বলি?
জানি না যাও।যা ভালো বোঝো করো।মোমো অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে আমাকে বেরোতে হবে।
এ্যাই মনু ওকে এগিয়ে দিয়ে এসো।
পাঞ্চালী পাওয়া গেল পিছনে সুখ।
আমি তো থাকবো না।
পাঞ্চালী মনে মনে বলা,থাকবে?
ভাবছি এপিসি ফল জয়েন। 
যোগাযোগ কবে জয়েন করবে?
আরো কিছু সময় আছে।
বলদ কি সাধে বলে।পাঞ্চালী বলে,তুমি তো একথা আগে বলোনি?
ছেড়ে দিল।     
  
       
 

অসাধারণ  গল্প  2 - 1পর পর দিলে খুব ভালো  হয়
Like Reply
যত যাই বলেন অবশেষে যে সুখ আর পাঞ্চোলির দেখা হয়েছে, এটাই অনেক বড় কথা।
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
Like Reply
(10-05-2023, 02:08 AM)nextpage Wrote: মোমো কি পালির সাথে সুখের কথা ভাবছে? কি করে? যাকে কি না সে নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহন করেছে। তবে সেই সম্পর্কের ভিত টা কই আজও যেখানে সবার কাছে লুকোতে হয়।
যাই হোক দাদা আপনার কমেন্ট আমার ভালো লাগছে। তবে ওই কথায় আছে না, যদি সত্যি কারের ভালোবাসা হয় তবে ত্যাগেও প্রেম থাকে...

Mohabbat hai is liye jaane diya; zidd hoti toh baahon mein hoti
_Irrfan Khan ( Movie: Jazbaa )
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
[+] 2 users Like Dead people's post
Like Reply
পাঞ্চালি আবার সুখকে বলদ বলেছে, অবশ্য মনে মনে।

লাইক ও রেপু দিলাম। 
Like Reply
(10-05-2023, 01:00 PM)Dead people Wrote: যাই হোক দাদা আপনার কমেন্ট আমার ভালো লাগছে। তবে ওই কথায় আছে না, যদি সত্যি কারের ভালোবাসা হয় তবে ত্যাগেও প্রেম থাকে...

Mohabbat hai is liye jaane diya; zidd hoti toh baahon mein hoti
_Irrfan Khan ( Movie: Jazbaa )

লাইক ও রেপু দিলাম। 
Like Reply
(10-05-2023, 02:08 AM)nextpage Wrote: সুখের সাথে পালির বাক্যালাপ গুলো ওয়ান সাইডেড। পালি যেটা জানতে চায় সুখ সেটার ধারে কাছেও নেই। হয়তঁ সুখের মনেও পালি নেই?

তবে কেন সহজ সরৱ স্বীকারোক্তি যে পালি কে তার ভালো লাগতো? সেটা কি আজও আছে সেটা কি শুধুই ভালো লাগা নাকি ভালোবাসা? যদি তেমন কিছু হয় তবে মোমোর সাথে যেটা সেটা কি? শারীরিক সম্পর্ক মাত্র??

মোমো কি পালির সাথে সুখের কথা ভাবছে? কি করে? যাকে কি না সে নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহন করেছে। তবে সেই সম্পর্কের ভিত টা কই আজও যেখানে সবার কাছে লুকোতে হয়।

লাইক ও রেপু দিলাম। 
Like Reply
(09-05-2023, 11:39 PM)Boti babu Wrote: Classic update boss ..

লাইক ও রেপু দিলাম। 
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
(09-05-2023, 09:22 PM)pradip lahiri Wrote: অসাধারণ  অপূর্ব।

লাইক ও রেপু দিলাম। 
Like Reply




Users browsing this thread: 28 Guest(s)