Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা


সেই রাতের পর থেকে আমাকে অনবরত আমার সাথে লড়ে যেতে হচ্ছে। রাতে কয়েকবার বাথরুমে যেতে হয় বাবাকে। অন্ধকারে আমাদের শোবার ঘরের দরজাকে বাথরুমের দরজা মনে করে খোলার চেষ্টা করতো। আমি উঠে দরজা খুলে বাথরুমে নিয়ে যেতাম। 
 
সেদিনও ভুল করে আমাদের দরজার সামনে দাড়ায় কিন্তু চাপ সামলাতে পারে নি। দরজার সামনেই প্রস্রাব করে দেয়। লুঙ্গীও ভিজে যায়। বাবা সরারাত না ঘুমিয়ে বসে থাকে। 
 
সকালে ঘুম থেকে জেগে আমি বাবার চোখে মুখে ভয় দেখতে পেলাম। ছোট বাচ্চা যখন টেবিল থেকে খাবারের প্লেট ফেলে দিয়ে ভেঙে ফেলে ভয় পায় তেমন ভয়। বাবা ভয়ে ভয়ে আমার দিকে না তাকিয়ে বললেন,  
 
--  'চাপ সামলাতে পরি নি বাবা...' আমি বাবার পিঠে হাত দিয়ে বলি,
 
--  'কোন সমস্যা নেই বাবা, এমন হতেই পারে।' বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার চোখে জল প্রায় এসে যাচ্ছিলো। 
 
--  'ছোটকালে কতো কষ্ট দিয়েছি তোমাদের।' বাবার মুখে স্বস্তির ছাপ দেখতে পেলাম। বাবার মনে কোন কষ্ট পায় নি। 
 
সেদিন থেকেই আমি বুঝতে পারলাম মানুষ মাঝে মাঝে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। কিছু একটা অদৃশ্য শক্তি মানুষকে ঠেলে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়। তার তীব্র ইচ্ছা গুলোকে দুর্বল করে দেয়। তখন সে ভালো চিন্তা করতে চাইলেও পারে না। 
 
মনের মধ্যে মন্দের প্রভাব বেড়ে যায়। মন্দ শক্তিশালী হয় ভালো পরাজিত হয়। বাবার প্রতি আমার বিরক্তি যতোই মুছে ফেলি ততোই মাথা তুলে। মানুষ তার মনোভাব চেপে রাখতে পারে না। কোন না কোন ভাবে সে প্রকাশ পাবেই। 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


বয়স হলে মানুষ কিছু কিছু অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। কারো অবহেলা গায়ে মাখার শক্তি থাকে না। তখন শুধু সে ভালবাসাই ভালো বোঝে অবহেলা বোঝে না। বাবার এখন সেই বয়স। 
 
বাবা রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খায় আমি বাঁধা দেই না। সিগারেট খেয়ে শরিরের যে ক্ষতি হচ্ছে বাধা দিলে মনে যে কষ্ট পাবে তা হয়তো আরও বেশী ক্ষতি হবে। আমার বিরক্তি যদি প্রকাশ পেয়ে যায় সেও এক ভয়! 
 
শীত চলে যাচ্ছে। পাখি গুলো চলে যাওয়ার সময় হল। বাবা এর আগেও জানতে চেয়েছেন, 
 
--  'আমরা কবে যাচ্ছি?' আমি বললাম, 
 
--  'যাবো সময় করে, দুই দিনের জন্য।' 
 
তারপর প্রায় এক মাস কেটে গেছে। আমি ভুলে গেছি কিন্তু বাবা অপেক্ষায় আছে গ্রামে যাওয়ার জন্য। সামনে আমার অফিসের অনেক কাজ। এক দিনের জন্যও ছুটি নেয়া সমস্যা। বাসায় ফিরতে রাত এগারোটা কখনো তারও বেশী হয়। 
 
সেদিন বাসায় ফিরতেই বাবা সামনে এসে বললেন,  
 
--  'তুই কয়েক দিনের জন্য আমাকে গ্রামে রেখে আসতে পারবি?' 
 
আমার আসলে তখন খুব ক্লান্ত লাগছিলো। মেজাজটাও ভালো ছিল না। হঠাৎ একটু উত্তেজিত হয়ে বলি,
 
--  'গ্রামে গিয়ে তুমি করবেটা কি শুনি? কে আছে তোমার ওখানে?'
 
--  'আমাকে কিছু টাকা দিতে পারবি?' বাবা বললেন। 
 
--  'কি করবে তুমি টাকা দিয়ে?' 
 
--  'রাত বারোটায় হাওড়া এক্সপ্রেসে ট্রেন চলে। আমি একা চলে যেতে পারবো বাবা।'
 
--  'ঠিক আছে এখন ঘুমাও কাল দেখা যাবে।' 
 
বাবা কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন। সারা রাত আমার আর ঘুম হলো না। আমি জীবনে প্রথম বাবার সাথে এতোটা উত্তেজিত হলাম। ইচ্ছে হচ্ছিলো বাবার সাথে একটু কথা বলি। সেই অদৃশ্য শক্তিটা আমাকে পিছন থেকে আটকে রাখলো। আমাকে বিছানা থেকে উঠতে দিল না। 
 
মানুষ যখন পরনির্ভরশীল হয়ে যায় তখন তার ইচ্ছে গুলো তার চার পাশে কেমন ঘুরঘুর করে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আগামী শুক্রবারে বাবাকে গ্রামে নিয়ে যাবো। দুই চার দিন থাকবো সেখানে বাবাকে নিয়ে। 
 
পরদিন অফিসে বসের সাথে কথা বলে ছুটি নিলাম। কিন্তু আমি বাসায় এলে বাবা আর তার ইচ্ছের কথা বলে না। আমাকে দেখে ভয়ে ভয়ে দূরে সরে থাকে। 
 
হাওড়া এক্সপ্রেসের টিকিট কাটলাম। তিন দিন পর বৃহস্পতি বার রাত বারোটায় ট্রেন। বাবাকে বললাম, কিন্তু বাবা খুব আগ্রহ দেখালো না। 
 
মলি বাবার কাপড় ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছে দুই দিন আগেই। সকালে বাবার স্নানের জল গরম করে বাবার ঘরে ঢুকে দেখে বাবা ঘুমিয়ে আছে। বাবা এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমায় না। গায়ের কম্বলটায় অর্ধেক শরীর ঢাকা। ডান কাত হয়ে শুয়ে আছে। 
 
মলি বাবার কাঁধে হাত দিয়ে ঘুম থেকে জাগাতে চেষ্টা করে, শরীর ভীষণ শক্ত। মুখ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে বালিশে। খানিকটা ভিজে গেছে বালিশ। মলি আমাকে ফোন করে বাড়ি আসতে বলে। অফিস থেকে ছুটে আসি আমি। বাবার খাটের নীচে পড়ে আছে ছাইদানি তার চারপাশে কয়েকটি সিগারেটের ফিল্টার। 
 
আমার বাবা দলছুট ঋতুবিহারী পাখি দেখতে চেয়ে ছিল তা আর দেখা হল না। নিজের সাথে দলছুট পাখির কোথাও কি মিল খুঁজে পেয়ে ছিল? হয়তো পেয়ে ছিল। 
 
আমার ভবিষ্যত সন্তানের একটা কাল্পনিক মুখ ভেসে উঠলো চোখের সামনে। সেও কি একদিন এভাবে আমাকে কষ্ট দিবে? আমাকে অবহেলা করবে? বিরক্ত হবে? আমাকেও তার বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে হবে কয়েকটা দিন? 
 
আমি নিজেকে আবিস্কার করলাম দলছুট পাখিদের দলে। মানুষের ভিড়ে আমিও নিঃসঙ্গ এক মানুষ। সম্পর্ক আর ভালোবাসার মাঝখানে যে ফাঁকা জায়গাটুকু থাকে সেখানে কিছু একটা অজ্ঞাত কারণ বসবাস করে। 
 
তাই হয়তো সবাই একদিন দলছুট ঋতুবিহারী পাখি হয়ে নিঃসঙ্গ ঘুরে বেড়ায় উড়ে যাওয়ার আগে।
 

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
তোমার কাছে ফাগুন চেয়েছে কৃষ্ণচূড়া !
আমার কাছে আগুন চেয়েছে সর্বহারা ! 
কেউ গায় ফাগুনের গান
কারো ছেঁড়া কাপড়ে শীত ঢাকেনা 
মুখ বুক সব হয়েছে ম্লান !
না না এতো  নয় আমার অভিমান
যতই দুঃখ পাইনা কেন গাই  জীবনের গান
 
 
 
হৃদয়ের দরজা কেউ পারেনি খুলতে ! 
মুখফুটে কেউ পারেনি ভালিবাসি বলতে !
তবুও মন চেয়েছে বারবার কেউ আসুক একবার 
একাকিত্বের গ্লানি থেকে চেষ্টা করুক  ছিনিয়ে নেবার ......
পাতা ঝরানোর সময়ে এক অদ্ভুত আস্ফালন...
বেঁচে থাকার অলীক অবলম্বন ......।।
জরিয়ে ধরতে চাওয়া শীর্ণকায় দুই বাহু
আগ বাড়িয়ে জড়াতে চায় ... যেন রাহু ! 
কোন সকাল ...... রাতের চেয়েও অন্ধকার ! 
বন্ধনহীন জীবনের রোজ রোজ হাহাকার......
বাঁচিতে চাহিনা আমি এই কুৎসিত ভুবনে ! 
মরন আমার বড়ই আপন ।।জড়াতে চাই তার আলিঙ্গনে !!
 
 
দাদা অফ ইন্ডিয়া
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(02-03-2023, 06:03 PM)ddey333 Wrote:

বয়স হলে মানুষ কিছু কিছু অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। কারো অবহেলা গায়ে মাখার শক্তি থাকে না। তখন শুধু সে ভালবাসাই ভালো বোঝে অবহেলা বোঝে না। বাবার এখন সেই বয়স। 
 
বাবা রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খায় আমি বাঁধা দেই না। সিগারেট খেয়ে শরিরের যে ক্ষতি হচ্ছে বাধা দিলে মনে যে কষ্ট পাবে তা হয়তো আরও বেশী ক্ষতি হবে। আমার বিরক্তি যদি প্রকাশ পেয়ে যায় সেও এক ভয়! 
 
শীত চলে যাচ্ছে। পাখি গুলো চলে যাওয়ার সময় হল। বাবা এর আগেও জানতে চেয়েছেন, 
 
--  'আমরা কবে যাচ্ছি?' আমি বললাম, 
 
--  'যাবো সময় করে, দুই দিনের জন্য।' 
 
তারপর প্রায় এক মাস কেটে গেছে। আমি ভুলে গেছি কিন্তু বাবা অপেক্ষায় আছে গ্রামে যাওয়ার জন্য। সামনে আমার অফিসের অনেক কাজ। এক দিনের জন্যও ছুটি নেয়া সমস্যা। বাসায় ফিরতে রাত এগারোটা কখনো তারও বেশী হয়। 
 
সেদিন বাসায় ফিরতেই বাবা সামনে এসে বললেন,  
 
--  'তুই কয়েক দিনের জন্য আমাকে গ্রামে রেখে আসতে পারবি?' 
 
আমার আসলে তখন খুব ক্লান্ত লাগছিলো। মেজাজটাও ভালো ছিল না। হঠাৎ একটু উত্তেজিত হয়ে বলি,
 
--  'গ্রামে গিয়ে তুমি করবেটা কি শুনি? কে আছে তোমার ওখানে?'
 
--  'আমাকে কিছু টাকা দিতে পারবি?' বাবা বললেন। 
 
--  'কি করবে তুমি টাকা দিয়ে?' 
 
--  'রাত বারোটায় হাওড়া এক্সপ্রেসে ট্রেন চলে। আমি একা চলে যেতে পারবো বাবা।'
 
--  'ঠিক আছে এখন ঘুমাও কাল দেখা যাবে।' 
 
বাবা কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন। সারা রাত আমার আর ঘুম হলো না। আমি জীবনে প্রথম বাবার সাথে এতোটা উত্তেজিত হলাম। ইচ্ছে হচ্ছিলো বাবার সাথে একটু কথা বলি। সেই অদৃশ্য শক্তিটা আমাকে পিছন থেকে আটকে রাখলো। আমাকে বিছানা থেকে উঠতে দিল না। 
 
মানুষ যখন পরনির্ভরশীল হয়ে যায় তখন তার ইচ্ছে গুলো তার চার পাশে কেমন ঘুরঘুর করে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আগামী শুক্রবারে বাবাকে গ্রামে নিয়ে যাবো। দুই চার দিন থাকবো সেখানে বাবাকে নিয়ে। 
 
পরদিন অফিসে বসের সাথে কথা বলে ছুটি নিলাম। কিন্তু আমি বাসায় এলে বাবা আর তার ইচ্ছের কথা বলে না। আমাকে দেখে ভয়ে ভয়ে দূরে সরে থাকে। 
 
হাওড়া এক্সপ্রেসের টিকিট কাটলাম। তিন দিন পর বৃহস্পতি বার রাত বারোটায় ট্রেন। বাবাকে বললাম, কিন্তু বাবা খুব আগ্রহ দেখালো না। 
 
মলি বাবার কাপড় ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছে দুই দিন আগেই। সকালে বাবার স্নানের জল গরম করে বাবার ঘরে ঢুকে দেখে বাবা ঘুমিয়ে আছে। বাবা এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমায় না। গায়ের কম্বলটায় অর্ধেক শরীর ঢাকা। ডান কাত হয়ে শুয়ে আছে। 
 
মলি বাবার কাঁধে হাত দিয়ে ঘুম থেকে জাগাতে চেষ্টা করে, শরীর ভীষণ শক্ত। মুখ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে বালিশে। খানিকটা ভিজে গেছে বালিশ। মলি আমাকে ফোন করে বাড়ি আসতে বলে। অফিস থেকে ছুটে আসি আমি। বাবার খাটের নীচে পড়ে আছে ছাইদানি তার চারপাশে কয়েকটি সিগারেটের ফিল্টার। 
 
আমার বাবা দলছুট ঋতুবিহারী পাখি দেখতে চেয়ে ছিল তা আর দেখা হল না। নিজের সাথে দলছুট পাখির কোথাও কি মিল খুঁজে পেয়ে ছিল? হয়তো পেয়ে ছিল। 
 
আমার ভবিষ্যত সন্তানের একটা কাল্পনিক মুখ ভেসে উঠলো চোখের সামনে। সেও কি একদিন এভাবে আমাকে কষ্ট দিবে? আমাকে অবহেলা করবে? বিরক্ত হবে? আমাকেও তার বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে হবে কয়েকটা দিন? 
 
আমি নিজেকে আবিস্কার করলাম দলছুট পাখিদের দলে। মানুষের ভিড়ে আমিও নিঃসঙ্গ এক মানুষ। সম্পর্ক আর ভালোবাসার মাঝখানে যে ফাঁকা জায়গাটুকু থাকে সেখানে কিছু একটা অজ্ঞাত কারণ বসবাস করে। 
 
তাই হয়তো সবাই একদিন দলছুট ঋতুবিহারী পাখি হয়ে নিঃসঙ্গ ঘুরে বেড়ায় উড়ে যাওয়ার আগে।
 


লেখকের নাম নেই কেন?
Like Reply
(03-03-2023, 07:10 PM)আমিও_মানুষ Wrote: লেখকের নাম নেই কেন?

কারণ , অনেক পুরোনো একটা লেখা

তোমার নয় , তাই বলে .
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(03-03-2023, 10:25 PM)ddey333 Wrote: কারণ , অনেক পুরোনো একটা লেখা

তোমার নয় , তাই বলে .

লেখকের নাম Arjya Tirthya
Like Reply
(03-03-2023, 10:25 PM)ddey333 Wrote: কারণ , অনেক পুরোনো একটা লেখা

তোমার নয় , তাই বলে .

Writer is Aryatirtha
[+] 1 user Likes আমিও_মানুষ's post
Like Reply
(04-03-2023, 07:08 PM)আমিও_মানুষ Wrote: Writer is Aryatirtha

জানতাম , কিন্তু ওই লোকটাকে পছন্দ করি না কিছু কারণে। তাই তোমার নামএ চালাতে চাইছিলাম।

Everything is fair in love and war.


Some people have started realizing it .

সহ্যের একটা সীমা আছে । 
Like Reply
#Collected

 
২৪/২৫ বছর বয়সী এক সুদর্শন যুবক উপহারের দোকানের মাঝারি বয়সী দোকানদারের উদ্দেশ্যে বলছেন -
আচ্ছা বিধবার জন্মদিনে কী উপহার দেয়া যায় বলুন তো ?
 
দোকানদার
ভদ্রমহিলার বয়স কী রকম হবে?
 
যুবক 
ধরুন কুড়ি একুশ ।
 
দোকানদার
আচ্ছা বিধবা মহিলাটি আপনার নিকট আত্মীয়, মানে বোন, মামাতো বোন এই ধরনের কেউ নন তো?
 
যুবক 
না না সেরকম কিছু নয় ।
 
দোকানদার 
আচ্ছা আপনি কি বিবাহিত?
 
যুবক 
  তো পুলিশের মত জেরা ।
 
দোকানদার
সেরা উপহার এর জন্য জেরার প্রয়োজন আছে স্যার।
 
যুবক 
আমি এখনো পর্যন্ত অবিবাহিত ।
 
দোকানদার 
তাহলে তো সোনায় সোহাগা,আচ্ছা একটু কম দামের মধ্যে খুবই কম দামের, ধরুন ৬ টাকা, একটা ভালো উপহার আপনার চলবে?
 
যুবক 
দাদা আপনি কি লটারির  টিকিটের কথা বলছেন?
 
দোকানদার 
আজ্ঞে না স্যার না ,লটারির চেয়েও অনেক দামি জিনিস সম্ভবত আপনারা দুজনেই জিততে চলেছেন।
 
যুবক 
তাহলে কী?
 
দোকানদার 
টাকা দিয়ে একপাতা সিঁদুর নিয়ে চলে যান, কয়েকজনকে সাক্ষী রেখে সুন্দর করে এটা মহিলার সিঁথিতে ঘষে দিন ।
 
যুবক 
আপনি দোকানদার নন ,আপনি প্রকৃত অর্থেই দার্শনিক, দিন আপনার ৬ টাকার উপহার, দেখি ৬ টাকার বিনিময়ে জীবনের সেরা ছক্কাটা মারা যায় কিনা!
 
গোপাল সরকার
 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
অনেকেই অভিযোগ করেন আমার লেখায় কেন পায়খানা শব্দটি আসে ? আমি স্বেচ্ছায় আনি না । বিশ্বাস করুন । এসে যায় । কারণ , আমি অনেক সময় কলেজজীবনের , কলেজজীবনের কোন স্মৃতিকথা লিখি । তখন অনিবার্যভাবে এই শব্দটি এসে যায় । কারণ , সত্যি সত্যিই আমাদের কলেজে একটি ছেলে ছিল যে ক্লাসে পায়খানা করে রাখতো । এবার এই ঘটনার কথা লিখতে গিয়ে আমাকে ওই অপছন্দের শব্দটি আনতেই হয় । একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় , আপত্তি মূলত শব্দটিকে নিয়েই । বাংলার  নবজাগরণের লাস্ট ব্যাচের প্রখ্যাত দার্শনিক শ্রী চন্দ্রিল বলেছেন , বাঙালির সবচেয়ে আনস্মার্ট শব্দ হল - ' পায়খানা ' । তাই বাঙালি ওই শব্দটি এড়িয়ে চলে । পটি শব্দটি অনেক বেশি ভদ্র । বলা উচিত অফিসিয়াল ! কর্পোরেট তো বটেই । 

 
সংবাদপত্রে এই নিউজটি অনেকেই পড়েছেন , যে কামারহাটির কাছে একটি জায়গায় নাম পরিবর্তনের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছেন । জায়গাটির নাম , জোড়াপায়খানা মোড় ! ভাবছি , যদি ওখানে আমার বাড়ি হতো! হয়তো বিয়ের আগে আমার বউয়ের সঙ্গে প্রথম দেখা । আমি নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বললাম , আমার বাড়ি জোড়াপায়খানার মোড় ! তারপর সে কি আমাকে বিয়ে করতো । উত্তর নিশ্চয়, না । সাহেব কবি বলেছেন , গোলাপ কে যে নামেই ডাকা হোক, গোলাপ তো গোলাপই থাকে । আমি বলি , গোলাপকে পায়খানা বলে ডাকুন । পারবেন ? কি বলবেন , ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে অমুকের বয়ফ্রেন্ড তার প্রেমিকাকে ১৪ টি পায়খানা গিফট করেছে ! কেন, কবি যে বলেছেন , গোলাপকে যে নামেই ডাকা হোক .... !  সত্যি কথা বলতে , এই আপত্তিকর শব্দটি বাংলা নয় , ফারসি শব্দ থেকে এসেছে । তবু এটা চেঞ্জ করে অন্য কোন ভালো বাঙালি নাম দেওয়া যায়নি । এক বিদেশি শব্দের পাপ ঢাকতে আশ্রয় নেওয়া হয়েছে অপর বিদেশি শব্দের । এ ঘোর অন্যায় । আর সাহেব কবির ওই কথাটি আদ্যন্ত ভাট! গোলাপকে গোলাপ বলেই ডাকুন , জোলাপকে জোলাপ । নামে অনেককিছুই এসে যায়  । 
 
আমার হোস্টেল লাইফে কেউ বলতো না , পায়খানা যাচ্ছি ।  বিভিন্ন কোডনেম ছিল । কেউ বলতো ডাউনলোড করে আসি , কেউ বলতো ধ্যানে বসবো , কেউ বলতো অনেক জমিয়েছি খরচ করে আসি । এক অতি বদ সিনিয়র গভীর রাতে একটি হুইসেল ফুঁকতে ফুঁকতে বাথরুম যেতো । আবার বাথরুমে গিয়েও হুইসেল ফুঁকতো । সে ফুটবলের রেফারি হতে চেয়েছিল , পারেনি । এক বন্ধু প্রেমে এতো আঘাত পেয়েছিল যে , সে বলতো সকাল সকাল বড্ড প্রেম পেয়েছে , করে আসি । এই ছিল বিষাক্ত প্রেমের প্রতি তার শাব্দিক প্রতিবাদ । এক রসিক বন্ধু বলতো , ভাই বেহালা যাচ্ছি । তার কোষ্ঠকাঠিন্য ছিল । অনেক সময় লাগতো । আর হস্টেলের যে টয়লেটটা কেউ ইউজ করে না , সেখানে সে প্রায় এক দু ঘণ্টা কাটিয়ে আসতো । রুম থেকে টয়লেট অবধি যেতে অনেক টাইম লাগতো । তাই , টয়লেটকে সে বেহালা বলে ডাকতো ! আজ সেখানে মেট্রো হয়েছে জেনে সে নিশ্চয় খুব খুশি । আমার এইসব রসিক বন্ধুরা অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে একটি আনস্মার্ট বাঙালি শব্দকে এড়িয়ে গেছে । এমনকি তারা পটি শব্দটিও ব্যবহার করতো না । 
 
আমার কেন জানিনা মনে হয় , পায়খানা শব্দটির মধ্যে একটা অপমানও লুকিয়ে আছে । আমার এক সাংঘাতিক মেধাবী বন্ধু তিন ঘণ্টার কঠিন ফিজিক্স পরীক্ষা দু ঘণ্টায় শেষ করে । স্যারকে খাতা জমা দিতে গেলে স্যার গোটা ব্যাচের সামনে বলে ওঠেন , তোমার কি পায়খানা পেয়েছে , এতো তাড়াতাড়ি শেষ করলে ! ওখানে উপস্থিত প্রায় দশটি মেয়ে আর পাঁচটি ছেলে খিলখিল করে হেসে ওঠে । আমার মেধাবী বন্ধুটির খিল্লি উড়ে যায় বিনা দোষে ।  আমার তো মনে হয় এই শব্দটি চেঞ্জ করে অন্য কিছু বলা গেলে এই অপমান , আপত্তি , অস্বস্তির অবসান ঘটবে । যেমন ধরুন , সেপটিক ট্যাংকের নাম হয়ে গেলো - রুপসাগর ! খুব ভালো হল না ? আপনি বলবেন , কাল লোক আসবে বাড়ির রূপসাগর পরিষ্কার করতে । কি স্মার্ট শোনাবে বলুন ! ধরা যাক পায়খানার নাম পাল্টে  , মিহিমেঘ রাখা হল । লোকে বলবে , সকালে মিহিমেঘ যেতে গিয়ে দেরি হয়ে গেলো । অথবা সে মিহিমেঘ চাপতে পারেনি , করে ফেলেছে । অথবা কাল রাতে আমাদের বাড়ির উঠোনে কেউ মিহিমেঘ করে রেখে গেছে । আমি জাস্ট একটা কথার কথা বললাম । যে বাঙালি ফেসবুকে দিনরাত সাহিত্য করছে সে একটা আনস্মার্ট শব্দকে এড়িয়ে যেতে কেন একটা বিলিতি শব্দের সাহায্য নেবে ! নিজে কিছু বানাতে পারবে না ! বাদ দিন মশয় ঝগড়ানন্দ চ্যানেলের বাংলা ভাষা নিয়ে বাসিসিঙ্গারালোভী বিতর্কসভার। আগে একটা ভালো একটা শব্দ বানান , তারপর কথা হোক ....
 
 
--Bourses--
Like Reply
অনবদ্য চিন্তা!
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
(05-03-2023, 10:12 PM)ddey333 Wrote:  
যুবক 
আপনি দোকানদার নন ,আপনি প্রকৃত অর্থেই দার্শনিক, দিন আপনার ৬ টাকার উপহার, দেখি ৬ টাকার বিনিময়ে জীবনের সেরা ছক্কাটা মারা যায় কিনা!
 

 


আমার কাছে দোকানদার লোকটাকে দার্শনিক বলে মনে হলো না । আমার কাছে মনে হলো সে থট রিডার । যুবক ছেলের মনের কথাটাই সে বলেছে  Cool
[+] 2 users Like cuck son's post
Like Reply
(06-03-2023, 02:03 PM)ddey333 Wrote: যে বাঙালি ফেসবুকে দিনরাত সাহিত্য করছে সে একটা আনস্মার্ট শব্দকে এড়িয়ে যেতে কেন একটা বিলিতি শব্দের সাহায্য নেবে ! নিজে কিছু বানাতে পারবে না ! বাদ দিন মশয় ঝগড়ানন্দ চ্যানেলের বাংলা ভাষা নিয়ে বাসিসিঙ্গারালোভী বিতর্কসভার। আগে একটা ভালো একটা শব্দ বানান , তারপর কথা হোক ....
 
 
--Bourses--

আমার কাছে পায়খানার একটা সমার্থক শব্দ আছে , সেটা হল "সুখকুঞ্জ" । যেহেতু ওখানে সবাই ত্যাগ করতে যাবে , আর ত্যাগেই মহাসুখ (ত্যাগেই যে মহা সুখ সেটা অনেক আগেই প্রমানিত) তাই অনায়েসে সুখকুঞ্জ নাম করন করা যায় ।
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
[Image: 111.jpg]
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
নারীদিবস

উপলক্ষে লেখা।
  ( অনুগল্প ) 
 
    চার বাড়ী কাজ সেরে বিমলা বাড়ী ফিরছে । ১ টা বাজলো । মার্চ এর শুরু তাতেই কি রোদের তাপ গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মতো । সকাল থেকেই ক্লাবে কিসের গান বাজছে । বাবুদের কত উৎসব ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিল বিমলা ।
ক্লাবের কাছে আসতেই অপুর্ব এক গাল হেসে বিমলা কে ডেকে একটা প্যাকেট ধরালো ।  ছেলেটা বড় ভালো । বিমলা জিজ্ঞেস করলো - আজ তোমাদের কেলাবে কি পুজা গো ? 
অপুর্ব হো হো  করে হেসে বলল - কোনও পুজো টুজো না গো মাসি আজ নারীদিবস । বিমলা হাঁ করে চেয়ে বলল - সেটা কি গো দাদা বাবু ? অপুর্ব ফ্যাসাদে পড়লো কাজের মাসিকে নারীদিবস কি বোঝাবে সে ।  একটু ভেবে বলল 
নারীদিবস মানে মেয়েদের দিন , এই তোমাদের দিন । 
- এই দিনে কি হয় গো দাদাবাবু ?  আচ্ছা ঝামেলায় পরা গেলো মনে মনে ভাবল অপুর্ব । 
- হয় বলতে এই দিনে মেয়েদের সম্মান দেখান হয় । তাদের সাথে ভালো করে কথা বলতে হয় । এই সব আর কি ..................
- ও ! এই দিনটা আজ প্রথম এলো ।
- আরে না না প্রতি বছর ৮ ই মার্চ এই দিন টা আসে । আমাদের ক্লাব এ বছর থেকে পালন করছে ।
- আগেও আসতো ? আমার বাবা মুখ্যু মানুষ এই দিনটার কথা জানতই না । আমাকে গালি না দিয়ে কোন দিন জল খায় নি  - পোড়ারমুখী , হারামজাদি , ভাতারখাকি কত কি ? এই ভালো কথা বলার দিনেও বলতো হয়তো । কি জানি ? আচ্ছা সে
তো মুখ্যু নয় কিন্তু ওই দত্ত বাড়ির গিন্নী তো মুখ্যু না বলো । বৌ এর জোড়া মেয়ে হয়েছে বলে আজও বসে বৌ এর গুষ্টি উদ্ধার করছে । ৮ মাস হল হাসপাতাল থেকে বাপের বাড়ী পাঠিয়েছে আজও আনল না ।  আজ মেয়েদের দিনে মেয়েগুলো কে 
নিজের বাড়ী আনা উচিৎ নয় বলো দাদাবাবু । আর ওই যে মিতু বৌদির বর সে কি জানে না আজ মেয়েদের দিন । সকালে পোঁচের কুসুম টা ছেদরে গ্যাছে বলে পেলেট টা ছুঁড়ে মারল বৌ এর দিকে । ভাগ্যিস সরে গেছিল নইলে রক্তারক্তি হতো ।
তোমরা খুব ভালো কাজ করছ গো দাদা মেয়েদের দিন পালন করে । যাও না গো দত্ত বাড়ী গিয়ে গিন্নী কে বলো আজ মেয়েদের দিন মেয়ে দুটো কে বাড়ি নিয়ে আসে যেন । আর ওই মিতু বউদির বর কেও বোলো আজ মেয়েদের দিন ,আজ যেন 
বৌ কে না মারে । আর হ্যাঁ আমার বাড়ী এই বস্তিতে তুমি তো চেন , আমার ছেলেকে বলে এস আজ মায়ের গায়ে হাত তুলতে নেই , মা ও তো মেয়ে ই ।
অপুর্ব আমতা আমতা করে বলল - এসব কথা আমরা কি করে বলব মাসি ।
- পারবে না ? জানতাম পারবে না ! মেয়েছেলের আবার মেয়েছেলে দিন হাহ ! প্যাকেট টা অপুর্ব র হাতে ধরিয়ে বিমলা এগিয়ে গেলো । অপুর্ব বিমলার যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে দেখল রোদে শুধু চামড়া পুড়ছে না । বিমলার কথা গুলোয় ভেতর টাও পুড়ছে ।
অপুর্বর মনে পড়লো রিম্পির জন্মের পর বউদি যেদিন প্রথম বাড়ী ফিরল সেদিন অপুর্বর মা বলেছিল - প্রথম টাই মেয়ে হল , কি আর করা যাবে ! পরের বার কিন্তু নাতি চাই । বউদির নতুন মা হওয়ার খুশি টা কিরম অব্যাক্ত ব্যাথায় বদলে গেছিল ।
সেদিনও অপুর্ব কিছু বলতে পারে নি । ধুত শালা কিসের নারী দিবস ? প্যাকেট খুলে মিষ্টি আর নিমকি গুলো রাস্তার কুকুর টার দিকে ছুঁড়ে দিলো । আশ্চর্য কুকুর টাও শুঁকে চলে গেলো মুখে দিলো না । শেষে কুকুর ও কি মানুষের ভড়ং বুঝে ফেলল নাকি ?

(সংগৃহীত)

[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
[Image: 111.jpg]
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
একটা ঝড়ের দরকার খুব !
বড্ডো বেশি ময়লা জমেছে মনে !
একটা শিলাবৃষ্টি আসুক এখুনি 
প্রলয়ের সাথে নাচন বনে  বনে  !
 
সবাই এখানে  স্বার্থপর ! 
মেকি হাসি দিয়ে ভোলায় মন !
মেকাপি  মুখের মিষ্টি হাসি 
জলের ধারায় ডরায়  ভুবন ! (মেকআপ ধোয়ার পর ! )
 
আসুক ঝড় ! ভাঙুক ঘর 
মারুক শত মলিন প্রাণ !
আসুক বৃষ্টি ঝরুক শিলা 
বাজুক নতুন জীবনের গান !
 
 
Dada_of_India
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
[Image: 111.jpg]


#নস্টালজিক_রসিকতা

 
সেদিন এই গাছটা হেঁটে আসছিল ফুটপাথ দিয়ে। হঠাৎ দূরে একটা কালো পরীকে দেখতে পায়। পরীটাও ওড়েনি আর গাছটাও সেই থেকে ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে। দশকের পর দশক। আশি, নব্বই... এখনও।
 
বিশ্বাস হলো না? ভিক্টরিয়ার ওখানে মোহরকুঞ্জর পাশে গেলেই দেখতে পাবেন। দেখলে ওকেই জিজ্ঞেস করবেন সত্যি বলছি কিনা।
 
হ্যাঁ, গাছেরও প্রাণ আছে, তাই তার প্রেমও পায়। কিছু কিছু গাছের তো সেন্স অফ হিউমার আমার থেকেও বেশি।
 
পরম শ্রদ্ধেয় অ্যাডমিন এটি অ্যাপ্রুভ করলে আপনারাও সে প্রমান পেয়ে যাবেন।
 
••
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
আজ থেকে অনেক বছর আগে এক বসন্তের সন্ধেতে আমি আর ব্যাম্বিনো দুজনই হাফপ্যান্ট পরে দমদমের বেদিয়াপাড়া গেছিলাম কাউকে দেখতে। তখন ওসব জায়গা এত ঝলমলে ছিল না।

 
আমাদের দুজনেরই পকেটে যা ছিল সেসবটুকু দিয়ে কচুরি আর মালপো সাঁটিয়েছি। এবার যাকে দেখতে এসেছি তার কোচিং থেকে বেরোনোর অপেক্ষা করার পালা। হঠাৎ ব্যাম্বিনো বলে,"আমার শরীরটা না একটু খারাপ লাগছে! কালবৈশাখী আসতে পারে! বাড়ি চ।"
 
শরীর খারাপের সাথে কালবৈশাখীর কি সম্পর্ক সেটা আমি বুঝলাম না। কোনো শরীর খারাপই তো শোভনীয় নয়! আমি ওকে জিজ্ঞেস করাতেও বললো না যে কি হয়েছে!
 
তখন বেদিয়াপাড়া থেকে দমদম স্টেশানের দিকে আসার রাস্তার একধারে ঝোপের উপরে রেললাইন, আর আরেকধারে ঝোপ আগাছার নীচে বড় নর্দমা ছিল। প্রায় অন্ধকার থাকা রাস্তাটা দিয়ে হেঁটেই ফিরছি। কিছুটা যেতেই ব্যাম্বিনো বলে,"তোর কাছে একটা টাকাও নেই?"
 
আমি এবারে ব্যাপারটা আঁচ করে বললাম,"নাহ, তবে থাকলেও তোর লাভ হতো না। এখানে সুলভ খুবই দুর্লভ!"
 
সেটা শুনেই ব্যাম্বিনো বললো,"ঠিক আছে, দু মিনিট দাঁড়া।"
 
বলেই অন্ধকারের মধ্যে বিদ্যুৎগতিতে রাস্তার এক পাশের ঝোপে ঢুকে গেল। কিছুক্ষণ পর দেখি মুখে একরাশ প্রশান্তি নিয়ে বেরিয়ে আসছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,"মুছলি কিসে?"
 
বললো,"গাছের প্রাণ আছে রে ভাই। সেই প্রাণে মায়াদয়াও আছে। পাতা এগিয়ে দিলো মোছার জন্য।"
 
বুঝলাম চাপ কমায় প্রাণে ফুরফুর্ লেগেছে বোকা ব্যাম্বিনোর। বললাম,"একটু পর বুঝবি গাছ রসিকতাও করতে পারে।"
 
ব্যাম্বিনো দাঁত কে*লিয়ে বললো,"কি করে??"
 
তারপর ওই আবার বলে উঠলো,"ডানহাতের তালুটা চুলকাচ্ছে, পয়সা আসবে মনে হয়।"
 
আমি বললাম,"না, আমার তা মনে হচ্ছেনা। তবে মনে হচ্ছে তোর ঘোর বিপোঁদ এলো বলে!"
 
বলতে না বলতেই দেখলাম ব্যাম্বিনোর মুখে বিপদের ছায়া প্রকট হলো। কেমন যেন চিঁড়চিঁড়িয়ে উঠে বললো,"ভাই, কোনো জলের কল খোঁজ সিগগির! বা কারোর বাড়িতে নিয়ে চল এক্ষুনি! ভীষন কুটকুট করছে ভাই....!!"
 
ওখানে কোনো কলও ছিল না। দুটো বাড়িতে সত্যি প্রবলেমটা জানিয়ে দু মিনিটের জন্য ব্যাম্বিনোকে তাদের বাথরুম ব্যবহার করতে দেওয়ার রিকুয়েস্ট করাতেও ঢুকতে দিলো না তারা। বরং পাশবিক প্রবৃত্তি দেখিয়ে চেঁচিয়ে তাড়ালো,"হেগে ছোচাঁনোর জায়গা নাকি এটা???"
 
আর কোনো উপায় না দেখে আমি ব্যাম্বিনোকে বললাম,"ঝোপের পাশে নর্দমা আছে, নেমে যা।"
 
শুনেই ও কোনো কথা না বাড়িয়ে সুরসুর করে নেমে গেল। সে কারনেই সে যাত্রায় ব্যাম্বিনোর 'গ' রক্ষা পেয়েছিল।
 
বুঝলেন গাছের রসিকতা? কচুগাছ কিন্তু মহা খিল্লিবাজ l
 

[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
*রিকশাওয়ালা*

 
  কোচিং ক্লাস শেষ করে প্রতিদিনের মতো বেলঘড়িয়া স্টেশন  থেকে বাড়ি ফেরার উদ্যোগে রিক্সা ধরলাম। পাঞ্জাবীর পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বার করে সিগারেট ধরাতে যাব,এমন সময় মনে হলো রিক্সা কাকুকেও একটা অফার করি। কাকু আমার অফার প্রত্যাক্ষান করে পকেটে রাখা বিড়ি ধরিয়ে রিক্সা চালু করলো। দিনটা আর পাঁচটা দিনের মতো নয়। রাত দশটায় মনে হলো, আমার শহর আজ অন্যভাবে ধরা দেওয়ার অপেক্ষায়। 
     মেন রাস্তার ধার ঘেষে একের পর এক অট্টালিকা ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে আমাদের  রিক্সা।নিস্তব্ধতা ভাঙলো কাকুর বাড়ির ঠিকানা জানতে চাওয়াতে।কাকুর উত্তরে বুঝলাম সেটা বস্তি এলাকা সংলগ্ন। বাড়ির কথা জানতে চাওয়াতে হঠাৎ করেই রিক্সা থামিয়ে দিল। রিক্সা থেকে নেমে বললো,চলো এক কাপ চা খাই। চা-এর দোকানের দিদি টা দু'ভাড় চা এগিয়ে দিল। এক মুখ হাসি নিয়ে আমাকে বললো,'তখনের সেই সিগারেটের অফার টা আছে নাকি?'প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট কাকুর দিকে এগিয়ে দিলাম। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট আর চা এর ভাড়ে চুমুক দিয়ে বলা শুরু করল। বাড়িতে মারনরোগে আক্রান্ত স্ত্রী,ছেলে আর শ্বশুরবাড়ি ফেরত মানসিক ''.ের শিকার ছোট বোন। বোনের বিয়ে দিতে যৌতুকের টাকা জোগাড়ের জন্য নিজের কিডনিটাকেও রেহাই দেয়নি। জামা তুলে দেখানো দাগ এখনও স্পষ্ট। চায়ের কাপে বেশ কয়েকবার চুমুক দেওয়া সত্বেও চাএর পরিমাণ কমতে না দেখে অবাক হলাম। লক্ষ্য করলাম চোখের জলের সাথে চা-এর দুধ মিশে এক অন্য মাত্রা নিয়েছে। কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো চলো তোমাকে বাড়ি পৌঁছে আমাকেও বাড়ি পৌঁছতে হবে। নাহলে আজ রাতেও ছেলেটা উপোস করে ঘুমিয়ে পড়বে। ছেলের কথা বলতেই কাকুর মুখে হাসির ঝিলিক লক্ষ্য করলাম। কাকু বলে চললো, ছেলে গত বছর পদার্থ বিদ্যায় গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। বাবু দা(কাকুর রিক্সার মালিক)-কে ধরে ছেলের জন্য একটা রিক্সার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কাকুর শেষের কথাটা হজম করতে না পেরে চলন্ত রিক্সা থেকে লাফ দিয়ে নেমে, কাকুর প্রতি সমস্ত সন্মান ভুলে গিয়ে বেড়িয়ে এলো দুটো খিস্তি। কেমন বাপ তুমি?? এতো ভালো ছেলেকে এগিয়ে না দিয়ে, হাতে রিক্সা ধরিয়ে দিয়েছো। কাকু আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। সমস্যার বাধ ভেঙে অশ্রুধারা নেমে এল। কাদতে কাদতে বললো, আমার শরীরের যা অবস্থা তাতে দিনে দশটা ভাড়াও খাটতে পারি না। বাড়িতে তোমার কাকিমার খরচ, সংসার খরচ দরকার, তা আমার কল্পনার অতীত। কাকুর হাতটা চেপে ধরে, আমার টিউশন ফিজের দুটো খাম গুজে দিলাম। আর শাসানির সুরে বললাম, ছেলে রিকশা চালাচ্ছে চালাক। কিন্তু কাল থেকে যেন আমার কাছে ক্লাস করতে যায়। না হলে বাবা-ছেলে দুজনেরই রিকশা চালানো বন্ধ করে দেব। পরদিন সকালে ক্লাসে ঢুকে দেখি ছিপছিপে একটা ছেলে আমার ক্লাস আলো করে বসে আছে। বেশীদিন ওকে আটকে রাখা যায়নি। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের অফিসার পদের  পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে, কাজের জন্য আজ ও সোদপুর ছেড়ে দিলে দিল্লী পৌছে গেছে। 
 
সুশান্ত কাকু (আমার গল্পের নায়ক) আজও রিক্সা চালায়। ব্যতিক্রম শুধু এটাই যে, আজ কাকু আমাকে বাড়ি থেকে আনা আর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্যেই রিকশা টা চালায়। আর মাস শেষে আমার কাছ থেকে হাত পেতে "একটাকা" নেয়। যা এত দিন গুরুদক্ষিণা হিসেবে আমি নিয়ে এসেছি। আজ কাকুর রিকশায় আসতে আসতে পুরোনো স্মৃতিচারন করছিলাম। কখন যে আমি পাড়ার মোড়ে পৌছে গেছি খেয়ালই হয়নি। হুশ ফিরল,যখন কাকু প্রতিদিনের মতো সিগারেট অফার করল। রিকশা থেকে নেমে কাকুর দিকে হাত নেড়ে সিগারেট জ্বালিয়ে বাড়ির পথ ধরলাম। অপেক্ষা করে রইলাম কাল সকালে কাকু আসার।।।।।।। 
 
*অরুণাং‌শু'র ডায়েরী*
 
*রিকশাওয়ালা* কোনো গল্প নয়। আমার জীবনের সত্যিকারের একটা অধ্যায়কে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। শুধু কথাগুলো  নিজের মত করে সাজানো।
 

Like Reply




Users browsing this thread: 21 Guest(s)