Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.53 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance বজ্রাঘাত (সমাপ্ত)
#41
১৯।।


‘ঠিক আছে, আমি তো এই অসুধটা লিখে দিলাম, এটা আনাবার ব্যবস্থা করুন...’

‘এটা এক্ষুনি আনিয়ে নিচ্ছি... কি মনে হচ্ছে আপনার?’

বেশ কয়একটা অপরিচিত গলার স্বরে চোখ মেলে পৃথা... চোখ খুলেই ফের বন্ধ করে নেয় সাথে সাথে, কাঁচের জানলার শার্শির ভিতর দিয়ে ঘরের মধ্যে এসে পড়া দিনের উজ্জল আলো চোখের ওপরে পড়ার ফলে... তারপর আবার ধীরে ধীরে চোখ খোলে সে... বিছানার পাশে প্রণববাবুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে, আর তাঁর সাথে আরো একজন অপরিচিত বেশ বয়ষ্ক ভদ্রলোক... ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় প্রণববাবুর পানে...

‘এই তো উনি উঠে পড়েছেন...’ পৃথাকে চোখ খুলতে দেখে বলে ওঠেন প্রণববাবু, তারপর তাকে উদ্দেশ্যে করেই বলেন, ‘আর চিন্তা করার কিছু নেই মিস মুখার্জি... ডাক্তারবাবু আপনাকে দেখে নিয়েছেন, অসুধ পড়লেই ঠিক হয়ে যাবে...’

‘ডাক্তার?’ প্রশ্ন ভরা চোখে তাকায় অপরিচিত ভদ্রলোকের দিকে।

‘হ্যা মা... আমি ডাঃ বসাক... তুমি একটু হাতটা বের করো তো... একটা ইঞ্জেকশন দেবো... ইঞ্জেকশনে আশা করি তোমার কোন ভয় নেই...’

ডাক্তারের কথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বাঁ হাতটাকে চাঁদরের নিচ থেকে বের করে এগিয়ে দেয় পৃথা... ফের তাকায় প্রণববাবুর পানে... প্রণববাবু হাত তুলে ওকে আস্বস্থ করে ইশারায়... ততক্ষনে টি-শার্টের হাতাটাকে বাহুর ওপরে খানিকটা তুলে স্পিরিটে ভেজা তুলো ঘসতে শুরু করে দিয়েছেন ওই ডাক্তার।

ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে, সোজা হয়ে দাঁড়ান ডাক্তারবাবু, প্রণববাবুর দিকে ফিরে বলেন, ‘আর কোন ভয় নেই, সামান্যই জ্বর... আমিও একটা প্যারাসিটামল ইঞ্জেক্ট করে দিলাম, তাতে একটু তাড়াতাড়ি কাজ হবে, আশা করছি দুই একদিনের মধ্যেই একেবারে ঠিক হয়ে যাবে... সামান্যই ঠান্ডা লেগে জ্বর... তবে এই অসুধগুলো আনিয়ে নিন...’ তারপর পৃথার দিকে ফিরে বলে, ‘কোন চিন্তা নেই মা, সব ঠিক হয়ে যাবে, কেমন? নরমাল থাকবে... কোন অসুবিধা হলে আমাকে ফোন করবে...’ বলে নিজের ব্যাগ গোছাতে থাকেন।

‘উনি আজকে কি স্নান করবেন?’ ফের প্রশ্ন করেন প্রণববাবু।

‘হ্যা, হ্যা... করবে না কেন? তবে আজকের দিনটায় একেবারে ঠান্ডা জলে না করে একটু ইষদ্‌উষ্ণ জল করে নেবেন’খন...’ বলে ব্যাগ গুছিয়ে দরজার দিকে এগোতে থাকেন... ওনার সাথে প্রণববাবুও এগিয়ে যান... পৃথা বিছানায় শুয়ে চুপচাপ দেখতে থাকে ওদেরকে।

ডাক্তারকে দরজা অবদি এগিয়ে দিয়ে ফিরে আসে প্রণববাবু পৃথার কাছে, ‘আমি তাহলে অসুধগুলো আনাবার ব্যবস্থা করি গিয়ে... আপনি একটু শুয়ে রেস্ট নিন...’ বলে ফিরে যেতে উদ্যত হন।

‘এক মিনিট মিঃ কর্মকার... আচ্ছা, একটা কথা বলুন তো আমাকে, আমার জ্বর, সেটা আপনি জানলেন কি করে?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

পৃথার প্রশ্ন একটু থমকান ভদ্রলোক, আমতা আমতা করে বলেন, ‘না, মানে, ওই তো... সকাল বেলায় আপনার মেসেজ পেয়েই তো জানতে পারলাম...’

‘আমার মেসেজ পেয়ে?’ অবাক হয়ে তাকায় পৃথা। উঠে বসার চেষ্টা করে সে। এখন অনেকটাই আগের থেকে ভালো লাগছে তার।

তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এসে পৃথার পেছন থেকে বালিশটাকে টেনে খাটের রেস্টবোর্ডের ওপরে কাত করে রাখেন প্রণববাবু, পৃথা পিছিয়ে গিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে বসে ফের জিজ্ঞাসা করে, ‘আমার মেসেজ পেয়েছিলেন? সেটা কি করে সম্ভব? আমি কখন আপনাকে মেসেজ করলাম, আর আপনাকেই বা করব কেন?’

কাঁধ শ্রাগ করে ভদ্রলোক বলেন, ‘সে আমি কি করে জানবো বলুন, তবে এই তো দেখুন না...’ বলতে বলতে নিজের পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে মেসেজ লিস্ট খুলে পৃথার সামনে তুলে ধরেন উনি।

পৃথা চোখ সরু করে দেখে সত্যিই তার নাম্বার থেকেই মেসেজটা গিয়েছে --- ফিলিং ফিবারিশ... প্লিজ কাম শার্প... --- অবিশ্বাসী চোখে ফের তাকায় প্রণববাবুর দিকে... নিজেই বিড়বিড় করে বলে ওঠে, ‘আমি করলাম মেসেজ? কিন্তু... কখন?’ ফের তাকায় সামনে মেলে রাখা মেসেজটার দিকে... তারপরই যেন হটাৎ করে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায়... মুখটা সহসা উজ্জল হয়ে ওঠে... স্মিত হেসে ঘাড় নেড়ে বলে, ‘হুম... বুঝেছি... আর কিছু বলতে হবে না...’।

প্রণববাবুও ফের যাবার জন্য ঘোরেন... কিন্তু পেছন থেকে পৃথার আবার প্রশ্ন ভেসে আসে, যেন নিজে কিছু ব্যাপারে সঠিক হবার জন্যই প্রশ্নটা তাঁকে করা, ‘আচ্ছা মিঃ কর্মকার, আর একটা কথা জিজ্ঞাসা করার ছিল...’

‘হ্যা, বলুন...’ আর একটা কোন অস্বস্থিকর প্রশ্ন আসছে বুঝে গোবেচারার মত মুখ করে ঘুরে দাঁড়ান ভদ্রলোক...

‘আপনাকে দরজা কে খুলে দিল মিঃ কর্মকার?’ চোখটাকে তীক্ষ্ণ করে তাকিয়ে থাকে প্রণববাবুর মুখের পানে পৃথা।

‘দরজা...’ ঢোক গেলেন ভদ্রলোক... ‘না... মানে... বোধহয় খোলাই ছিল... মনে হয়...’ কোন রকমে আমতা আমতা করে জবাব খোঁজার চেষ্টা করেন।

আর কিছু বলে না পৃথা... ঠোঁটের হাসিটা আরো খানিকটা শুধু চওড়া হয় তার মুখের... সারা শরীরটা একটা ভিষন ভালো লাগায় ভরে ওঠে... অসম্ভব হাল্কা লাগে নিজেকে... শরীরের সমস্ত কষ্ট যেন নিমেশে উধাও হয়ে গিয়েছে... বেডরুম থেকে দ্রুত পায়ে প্রণববাবুকে বেরিয়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে, চোখের দৃষ্টিতে মিশে থাকে কৌতুক।

ভদ্রলোক বেডরুম থেকে বেরিয়েই ফের ফিরে আসেন, সাথে একটি মেয়ে... ‘ওহ! মিস মুখার্জি... এ হচ্ছে কাজল...’

পৃথা জিজ্ঞাসু চোখে তাকায় মেয়েটির দিকে... ছোট্ট খাট্টো চেহারার গোটা কুড়ি বছরের মেয়েটি... গায়ে একটি কম দামী হলেও বেশ পরিষ্কার চুড়িদার পরে রয়েছে... মুখটা বেশ মিষ্টি... মাথায় সিদুরের হাল্কা চিহ্ন প্রমাণ দেয় যে মেয়েটি বিবাহিত... এত অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছে?... অবস্য এদের আর্থসামাজিক অবস্থানে সেটাই স্বাভাবিক... পৃথা নজর করে মেয়েটিও এক নজরে তাকিয়ে রয়েছে তারই দিকে...

‘এ... কে? মিঃ কর্মকার?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘মানে, ও আগে এই ফ্ল্যাটেই অর্নবের কাছে কাজ করতো... খুব বিশ্বাসী... এই কাছেই থাকে... অনেক ছোট বেলায় এসেছিল... এখন তো অনেক বড় হয়ে গেছে, বিয়েও হয়ে গিয়েছে... খুব ভালো মেয়ে... মাঝের কিছুদিন ওই ইন্সিডেন্টটা ঘটার পর আমরা আসতে বারণ করে দিয়েছিলাম, কিন্তু আজ তাই ওকে আবার সাথেই নিয়ে এসেছি... আজ থেকে ও আপনার কাছেই কাজ করবে... আপনার কোন অসুবিধা হবে না... খুব কাজের মেয়ে... সব কিছু সামলে নেবে...’ এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলেন ভদ্রলোক।

‘কিন্তু আমি একা থাকি... সেখানে ও...’ কথা শেষ হয় না পৃথার, তার আগেই প্রণববাবু বলে ওঠেন, ‘আপনি একা থাকেন বলেই তো ওকে আনা... আপনার হাতে হাতে থাকবে... দেখবেন আপনার খুব উপকারে লাগবে... এমনিতেই বুঝতে পারি যে এই ভাবে সংসারের কাজ করার অভ্যাস নেই আপনার, আর তাছাড়া আপনি অফিস করেন, সেখানে এই ধরনের একটা হেল্পিং হ্যান্ড আপনার খুব উপকারে লাগবে...’ বলেই কাজলের দিকে ফিরে বলেন, ‘দিদিমনিকে সব সময় দেখাশুনা করবি, বুঝেছিস... ওনার যেন কোন অসুবিধা না হয়... যা বলবেন, মন দিয়ে শুনবি... কেমন?’

ঘাড় হেলায় কাজল, প্রণববাবুর কথায়।

‘না, সে তো না হয় বুঝলাম, কিন্তু আমি তো অফিস বেরিয়ে যাবো... ও কি সারাদিন থাকবে?’ জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘না, না, ও সকালে আসবে, আপনি বলে দেবেন কখন আসলে সুবিধা হবে আপনার... সেই মতই সময় করে এসে কাজ করে দিয়ে যাবে... রান্নাটাও খুব ভালো করে ও... সেটাও সামলে নেবে... আর সন্ধ্যেবেলাতে আপনি অফিস থেকে ফিরলে না হয় ও আরো একবার আসবে’খন...’ বলেন প্রণববাবু।

‘আমার দরকার খুব একটা যে ছিল তা নয়... একাই তো বেশ চালিয়ে নিচ্ছিলাম... হ্যা, মাঝে অবস্য ভাবছিলাম যে একটা লোক পেলে ভালো হয়, কিন্তু... আচ্ছা, ঠিক আছে... তবে সকালে আসলেই হবে, সন্ধ্যেবেলায় আর আসার প্রয়োজন নেই... আমি একা মানুষ... এক বেলা একটু হাতে হাতে কাজ করে দিলেই হবে...’ বলে কাজলের দিকে ফিরে বলে, ‘কি পারবে তো?’

ঘাড় হেলিয়ে বলে ওঠে মেয়েটি, ‘হ্যা, হ্যা, দিদিমনি, দেকবেন আপনার কোন অসুবিদা হবে না... আপনি যেমনটি বলবেন, আমি ঠিক তেমনটি করে দেব...’

‘হু... বুঝলাম... তা মাইনে কত নেবে?’ মনে মনে ভাবে পৃথা, এটাই আসল প্রশ্ন।

‘ও নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না... ওটা ওর সাথে আমার কথা হয়ে গিয়েছে...’ তাড়াতাড়ি করে উত্তরটা দেয় প্রণববাবু।

ভুরু কোঁচকায় পৃথা, ‘আমার কাজ করবে আর ওর মাইনে নিয়ে আমি চিন্তা করবো না, মানে? সেটা আবার হয় নাকি?’

‘না, মানে... সেটা বলতে চাইনি ঠিক... আসলে ও আগে যা মাইনে তে কাজ করতো, সেটাই ও পাবে... তাতেই ও রাজি...’ কাঁচুমাচু মুখে উত্তর দেয় ভদ্রলোক।

‘না, সেটা কত, সেটা তো আমাকে জানতে হবে... মাইনেটা তো আমি দেব... আপনি তো আর নয়...’ বলে পৃথা।

‘হ্যা, সেটা তো বটেই... ওই দেড় হাজার টাকা ও পেতো আগে...’

‘দেড় হা-জা-র? এটা একটু বেশিই নয় কি প্রণববাবু?’ টাকার অ্যামাউন্টটা শুনে একটু যেন অসন্তুষ্ট হয় পৃথা।

‘না মানে, ও আগে এটাই তো পেতো, তাই... তবে সব কাজই ও করবে... সব... রান্নাটাও করে দেবে আপনাকে...’ কাজলের হয়ে সাফাই গায় প্রণববাবু। ওনার কথার ধরন দেখে পৃথার যেন মনে হয় কাজলকে কাজে রাখার ব্যাপারটায় ওনার ওপরে আর কারুর কড়া নির্দেশ রয়েছে, তাই যে করেই হোক কাজলকে কাজে বহাল করতেই হবে। তারপরই দুম করে বলে বসেন, ‘আচ্ছা, আপনি ওকে পাঁচশ টাকাই দেবেন’খন...’

অবাক হয় পৃথা, ‘একেবারে দেড় হাজার থেকে পাঁচশতে নেবে গেলেন... ব্যাপারটা কি হলো? বাকি টাকাটা কে দেবে? আপনি?’

‘সে আপনাকে ভাবতে হবে না... ওটা ঠিক হয়ে যাবে...’

‘না, না, মিঃ কর্মকার, ঠিক হয়ে যাবে মানে? ও আমার কাজ করবে আর মাইনের বাকি টাকা অন্য কেউ দেবে... এটা আবার কেমন কথা?’ চোখ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

পৃথার মনে হল যেন ভদ্রলোককে কেউ ফাটা বাঁশের মধ্যে আটকে দিয়েছে... ব্যাপারটা নিয়ে এতটা জল ঘোলা হবে, সেটা বোধহয় উনি ঠিক আশা করেন নি... তাই কি বলবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না... ওনার অবস্থা দেখে মনে মনে হাসে পৃথা, কিন্তু মুখের সিরিয়াস ভাবটা সরায় না... এবার কাজলের দিকে ফিরে বলে, ‘ঠিক আছে... বুঝেছি... তুমি ওই দেড় হাজারই পাবে... ওটাই আমি দেব... তবে ঠিক মত কাজ করবে তো? আর হ্যা, রান্না সবসময় করার দরকার নেই, ওটা আমিই করে নেবো’খন... আমার রান্না করতে ভালোই লাগে, শুধু একটু হাতে হাতে এগিয়ে দিলেই হবে, বাকিটা আমিই সামলে নেব।’

এত্তো বড় একটা ঘাড় নেড়ে বলে ওঠে কাজল, ‘এক্কেবারে দিদিমনি... কোন এদিক সেদিক হবে না... এক্কেবারে ফাস্ট কেলাস কাজ পাবেন...’

ওর ফাস্ট কেলাস বলার ধরনে আর হাসি চেপে রাখতে পারে না পৃথা, ফিক করে হেসে ফেলে। ওকে হাসতে দেখে প্রণববাবুও হাসেন।

‘একটা কথা ভাবছিলাম মিঃ কর্মকার, কাজল যে আমার কাছে কাজ করবে, তাহলে ও অন্য বাড়ির কাছ কি হবে? প্রশ্ন করে পৃথা।

প্রণববাবু কিছু বলার আগেই উত্তরটা দেয় কাজলই, ‘ও সব তুমি চিন্তা কোরো না দিদিমনি, আমি সব সামলে নেব... আজকে তো ফোন করে বলেই দিয়েচি যে আমি আজ যাবো না... আমার পেট খারাপ হয়েচে... আর কাল থেকে আমি সব ঠিক করে নেব... আগে সকালে এসে তোমার কাজ সারবো, তারপর অন্য বাড়ি যাবো...’

‘কিন্তু আমার তো ব্যাপারটা খারাপ লাগছে না... অন্য বাড়ির লোকেরাও অপেক্ষা করবে তোমার জন্য... আর এই ভাবে হুট করে যদি...’ বলার চেষ্টা করে পৃথা।

‘বলচি তো দিদিমনি... সব আমার ওপরে ছেড়ে দাও... দাদাবাবুর বাড়ি আগে আসবো... তারপর সব...’ হাত তুলে মাথা নেড়ে আশ্বস্ত করে কাজল। পৃথাও আর কথা বাড়ায় না।

‘আমি তাহলে আসি মিস মুখার্জি... কাজল রইলো তাহলে, কেমন...’ বলে প্রণববাবু দ্রুত বেরিয়ে যান বেডরুম থেকে... পৃথার কানে আসে বাইরের দরজাটার বন্ধ হয়ে যাবার আওয়াজ।

গায়ের চাদরটাকে সরিয়ে বিছানার থেকে নামতে উদ্যত হয়... ঘুম ভাঙার পর থেকে ঘরের মধ্যে এত লোক থাকার ফলে সকালের বাথরুমটা আর তার সারা হয়ে ওঠে নি এখনও, তলপেটটা ভারী হয়ে রয়েছে... একবার না গেলেই নয়... কিন্তু চাঁদর সরাতে গিয়েই থমকায়... ঘরের মধ্যে কাজল এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে, আর সে কাল যখন শুয়েছিল, তখন শুধু মাত্র টি-শার্টটাই গায়ে চাপিয়েছিল, তার মানে... ভাবতে ভাবতে চাঁদরের খুটটা ধরে তুলে ভেতর দিকে নজর ফেলে... কিন্তু যা দেখে তাতে আর তাকে কাজলে সামনে অস্বস্তিতে পড়তে হবার কোন কারণ পায় না... পায়ে ওর একটা প্রিন্টেড পাতলা কটন পায়জামা পরা... তারমানে পরে কেউ... আবার একটা হাসি খেলে যায় ঠোঁটে... আর কিছু না ভেবে এবার নিশ্চিন্দে শরীরের ওপর থেকে চাঁদরটা সরিয়ে দিয়ে পা নামায় বিছানার থেকে... তারপর মেঝের দিকে তাকিয়ে খোঁজে কিছু...

‘কিচু খুঁজচো দিদিমনি?’ প্রশ্ন করে কাজল।

‘উ... না...’ আনমনে উত্তর দেয় পৃথা... আসলে ও খোঁজার চেষ্টা করছিল কালকের রাতে এনে রাখা বালতিটা... যেটাতে ওর মাথা ধুইয়ে দেওয়া হয়েছিল জ্বরের সময়... কিন্তু সেটার দেখা পায় না, শুধু শুকিয়ে যাওয়া কিছু জলের রেশ পড়ে থাকতে খেয়াল করে মেঝেতে। সন্তর্পনে উঠে দাঁড়ায় বিছানার থেকে... কিন্তু উঠে দাঁড়াতেই টলে যায় মাথাটা... বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে এই একটা রাতের মধ্যেই।

দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে ধরে নেয় কাজল পৃথাকে... ‘সাবধান দিদিমনি... তোমার সলিলটা একোনো খুব দুব্বল...’

কাজলের তৎপরতা দেখে ভালো লাগে পৃথার... হেসে বলে, ‘হু, ঠিক বলেছ... বুঝতে পারিনি এতটা দুর্বল হয়ে গেছি... থ্যাঙ্কস্‌...’

‘বাব্বা... থ্যাঙ্কুয়ের কি আচে গো? তুমি টলে গেলে, আর আমি ধরবো না? কলঘরে যাবে তো? চলো, আমি তোমায় নিয়ে যাই...’

‘না না, তোমাকে আবার যেতে হবে না... আমি নিজেই যেতে পারবো ঠিক...’ বলে ফের চেষ্টা করে এগোবার... কিন্তু কাজল পৃথার হাত ছাড়ে না... ‘না না দিদিমনি... একোন পারবে না... তুমি আমাকে এত পর পর ভাবচো কেন? দেকো, আমি কিন্তু এ বাড়িতে নতুন না... একানের সব কিচু আমার চেনা... তুমি কোনো চিন্তা কোরো না... আমি একা হাতে তোমার সংসারটা কেমন গুচিয়ে দিই দেকবে... কোন বোলতি থাকবে না...’

‘আমার সংসার গুছিয়ে দেবে...?’ কাজলের কথায় হেসে ফেলে পৃথা... আর কথা বাড়ায় না... ধীর পায়ে বাথরুমের দিকে অগ্রসর হয় কাজলের হাত ধরে। ওকে একেবারে বাথরুমের মধ্যে নিয়ে যায় কাজল, হাত বাড়িয়ে দেওয়ালটাকে ধরে পৃথা বলে, ‘এবার তুমি বাইরে গিয়ে দাঁড়াও কাজল, আমি ঠিক আছি...’

‘ঠিক বলচো তো দিদিমনি... পারবে তো?’ তবুও নিসন্দেহ হতে চায় কাজল।

‘হ্যা রে বাবা হ্যা... তুমি যাও দিকি...’ হাসি মুখেই ধমকায় কাজলকে। কাজল ওকে ছেড়ে বাথরুমের বাইরে এসে দাঁড়ায়, ‘আমি একানেই দাঁড়িয়ে রইলুম... তোমার হলে বলো, আবার নিয়ে যাবো...’

কোমর থেকে পায়জামাটা নামিয়ে কোমডে বসে পৃথা... বসার সাথে সাথেই ছরছর শব্দে জমে থাকা শরীরের জল বেরিয়ে আসে... এই রকম শব্দ হওয়াতে কেমন লজ্জা লাগে ওর... আগে একা থাকতো, তাই যেমন খুশি তেমনি ভাবেই চলতো... কিন্তু এখন বাথরুমের বাইরেই কাজল দাঁড়িয়ে... যদি হিসি করার আওয়াজ শোনে? অস্বস্তি হয় তার, কিন্তু কি আর উপায়!

ফ্ল্যাশের আওয়াজ পেতেই কাজল দরজা ঠেলে বাথরুমে ঢোকে... তখনও ও নিজের পায়জামাটা তোলার সুযোগ পায় নি... দুম করে কাজল ঢুকে পড়াতে থতমত খেয়ে যায়... ওকে এই রকম অপ্রস্তুত হতে দেখে কাজলের কিন্তু কোন হোলদোল দেখা যায় না... এগিয়ে এসে ঝুঁকে পায়জামাটাকে ধরে পৃথাকে পড়তে সাহায্য করে... মনে মনে খুশিই হয় পৃথা। কাজল ওকে ধরে থাকে, আর পৃথা বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁতটা মেজে মুখ ধুয়ে নেয়। তারপর মুখ ধোয়া হলে কাজলকে ধরে ধীর পায়ে ফিরে যায় বেডরুমে।

পৃথাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে গায়ের চাঁদরটাকে টেনে দেয় কাজল। তারপর বন্ধ জানলার দিকে এগিয়ে গিয়ে খুলে দেয় শার্শিগুলো... বাইরে তখন আর বৃষ্টি নেই... ঝলমলে রোদ উঠেছে... জানলাটা খুলে দিতেই সকালের মিঠে বাতাসে ঘরটা ভরে যায়। জানলার কাছ থেকে সরে এসে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় কাজল... পৃথা চুপ করে শুয়ে ভাবতে থাকে কাল রাত থেকে এখন অবধি ঘটনার প্রবাহটাকে।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ফের ফিরে আসে কাজল ঘরের মধ্যে, ‘ঘরে তো সে রকম কিছুই নেই দেকলাম, ফ্রীজও ফাঁকা... আমাকে পঞ্চাশটা টাকা দাও তো...’ বলতে বলতে বিছানার পাশে, পৃথার সামনে এসে দাঁড়ায় সে।

‘টাকা নিয়ে কি করবে?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘চিকেন আনতে হবে না? আর পাঁউরুটিও আনবো... তোমাকে উনি একোন জ্বরের মুখে ভালো মন্দ খাওয়াতে বলে গেচেন... তাই একোন সকালে তোমাকে চিকেন সুপ বানিয়ে দেব... আর সেই সাথে টোস্ট... তাই একটু বাইরে যেতে হবে ও গুলো আনতে... দাও... টাকা দাও...’ বলে ওঠে কাজল।

পৃথার বুঝতে অসুবিধা হয় না ইতিমধ্যেই কাজল ওর কথামতো সংসারের দ্বায়িত্ব তুলে নিয়েছে... এখন থেকে ওর কথা মতই চলতে হবে তাকে নাকি? কিন্তু কোন বিরক্ত আসে না মনের মধ্যে তার কাজলের এই স্বতস্ফুর্ততায়, সে বলে, ‘বাইরের ঘরে দেখ আমার ব্যাগটা আছে, নিয়ে এসো...’

ঘর থেকে বেরিয়ে হাতে ব্যাগ নিয়ে ফিরে আসে... ‘আচ্চা দিদিমনি, তুমি আমাকে সেই ফাস্ট থেকে তুমি তুমি করচো কেন বলতো? তুই করে বলতে পারো না? আমাকে তো দাদাবাবু তুই করেই বলতো...’

‘তোমার দাদাবাবু বলতো বলেই আমাকে বলতে হবে?’ হেসে বলে ওঠে পৃথা।

‘হ্যা, বলবে, আর তাচাড়া তুই বলে বললে না বেশ আপন আপন সোনায়... ওই তুমির মধ্যে সেটা থাকে না...’ মাথা নেড়ে নেড়ে বলে কাজল।

‘তাই? তুই বললে আপন শোনায়?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘সোনাই তো... আমার তুই করে বললেই বেসি ভালো লাগে...’

‘বেশ... তাই না হয় বলবো... আবার যখন তোমার দাদাবাবু বলতো... তখন আমাকে তো বলতেই হবে, তাই তো?’ বলে পৃথা।

‘ডাকতোই তো দাদাবাবু তুই করে... হেব্বি ভালো লোক ছিল, জানো...’ মাথা নেড়ে বলে কাজল।

‘তাই? খুব ভালো লোক ছিল?’ একটু কৌতুহলী হয়ে ওঠে পৃথা।

‘ছিলই তো... কোনদিন কক্কোনো আমাকে বোকতো না... আমিই তো বলতে গেলে সামলাতাম সব কিচু... দাদাবাবু সংসারের কিচ্চুটি দেকতো না...’

‘মানে তুই গিন্নি ছিলিস, বল্‌...’

‘এ মা, না, না, সেই রকম নয় গো...’ তাড়াতাড়ি হাত নেড়ে প্রতিবাদ করে ওঠে কাজল।

হাসে পৃথা... ‘বুঝেছি... আমাকে আর বোঝাতে হবে না তোকে, তুই বরং টাকাটা নে... আর পালা...’

পৃথার হাত থেকে টাকাটা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় কাজল। হটাৎ মনে হতে পৃথা হাঁক পাড়ে, ‘বেরিয়ে গেছিস নাকি?’

ও ঘর থেকে কাজলের গলা আসে, ‘না দিদিমনি, এই বেরুচ্চি, কিচু লাগবে?’

‘দেখ টেবিলের ওপরে বোধহয় আমার মোবাইলটা আছে, একটু দিয়ে যা না...’

মোবাইল নিয়ে ঘরে ঢুকে পৃথার দিকে বাড়িয়ে দেয় কাজল। ওর হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে হেসে বলে ‘থ্যাঙ্কস্‌’।

‘আবার ওই সব... বলেচি না ও সব থ্যাঙ্কু ট্যাঙ্কু আমায় বলবে না...’ বলতে বলতে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে... 

‘ফ্ল্যাটের চাবিটা যাবার সময় নিয়ে যেতে ভুলিস না...’ গলা তুলে বলে ওঠে পৃথা

‘আচ্চা...’ কাজলের উত্তর আসে ড্রইংরুম থেকে, দরজা বন্ধ হয়ে যাবার শব্দ হয়।

মোবাইলটাকে পাশে রেখে একটু অপেক্ষা করে বিছানায় শুয়ে চুপ করে... তারপর মৃদু গলায় ডাক দেয়, ‘অর্নব... আছো?’

কোন উত্তর আসে না। 

খানিক চুপ করে থাকে আরো পৃথা, তারপর ফের ডাকে, ‘অর্নব... আমি জানি তুমি আছো এই ঘরেই... একটু এসো না... ডাকছি তো...’

কোন উত্তর নেই।

আরো কয়’এক মুহুর্ত কেটে যায়... আর ডাকে না পৃথা, বিছানায় শুয়ে শুধু চুপ করে অপেক্ষা করে... তাকিয়ে থাকে বেডরুমের দরজার পানে। নিশব্দ ফ্ল্যাটের মধ্যে শুধু মাত্র ড্রইংরুমের বড় দেওয়াল ঘড়িটার টিকটিক আওয়াজটা ভেসে বেড়ায়।

হটাৎ বিছানার পায়ের কাছটার ফাঁকা জায়গাটা ভারী কিছুর চাপে দেবে, নেমে যায় খানিক... যেমন কারুর দেহের ভারে হয়ে থাকে। পৃথার মুখটা উজ্জল হয়ে ওঠে।

ক্রমশ...
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
আরে দাদা যে
Like Reply
#43
(27-12-2018, 02:31 PM)atanu Wrote: আরে দাদা যে

:P :P :P :P :P
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
#44
২০।।


বিছানার একটু ভেতর দিক করে সরে শোয় পৃথা... ‘আমি জানতাম তুমি আসবে... তুমি অশরিরী কি অশরিরী নও... সে কন্ট্রোভারসারির মধ্যে আমি যেতে চাই না... শুধু জানি তুমি আছো... এবং ভিষন ভাবেই আছো... আমি প্রতিটা মুহুর্তে তোমায় অনুভব করতে পারি... তাই তুমি আমার ডাক অস্বীকার করতেই পারো না... সে ব্যাপারে আমি একশ শতাংশ সুনিশ্চিত...’ পাশের খালি জায়গাটায় হাত বুলিয়ে বলে, ‘অত দূরে বসেছ কেন... এখানটায় এসে বসো...’

বিছানার চাঁদরে কোন ভাঁজ পড়ে না সে বলার পরও, ‘কই, এখানটায় এসো...’ বালিশ থেকে মাথাটা একটু তুলে আবার ডাক দেয় পৃথা।

এবার বিছানার পায়ের কাছের জায়গাটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে... দেবে যায় তার পাশের জায়গাটা। হাসি ছড়িয়ে পড়ে পৃথার মুখে... বালিশে মাথাটা ফের রেখে দিয়ে ডান হাতটাকে শূন্যে তুলে ধরে বলে, ‘আমার হাতটাকে ধর...’

ওই ভাবে শূণ্যেই থাকে পৃথার হাত, কেউ ধরে না এগিয়ে এসে। ‘কই... ধরবে না? আমি কিন্তু এতক্ষন হাতটা তুলে ধরে রাখতে পারছি না... এখনও দূর্বল আমি...’ গলার স্বরে আদর মিশে থাকে তার।

এবার পৃথার হাতের তালুটা একটা নিরাকার সবল পুরুষালী হাতের মুঠোয় ধরা পড়ে... পৃথার সারা শরীরে একটা শিহরণ খেলে যায় যেন... মনে হয় হাত নয়, সে ভুল করে খোলা কোন বিদ্যুতের তারে হাত ছুঁইয়ে কারেন্ট খেল... মাথার মধ্যেটায় কেমন বোঁ বোঁ করতে শুরু করে দেয়... পেটের মধ্যে মনে হয় হাজারটা প্রজাপতি ছটফট করছে... বুকের মধ্যে হৃদপিন্ডটার গতি নিশ্চয় চার কি পাঁচ গুন বেড়ে গিয়েছে... গলার মধ্যেটা কেমন শুকিয়ে আসে... নাকের পাটা ফুলে বড় বড় নিঃশ্বাস পড়তে শুরু করে... বুকটা হাপড়ের মত ওঠে, নামে... কপালের ওপরে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে ওঠে... একি হচ্ছে ওর মধ্যে? এরকম কেন হচ্ছে তার? নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে মনে মনে... নাকি সেটা করতেও ভুলে গিয়েছে ওই পরশের আবেশে? সাধারনতঃ মেয়েদের যে লজ্জা শরম এসে এই সময় ভীড় করা উচিত, কই, সেই রকম কোন অনুভূতি তো তার মধ্যে আসছে না, আসার কথাও নয়, কারণ ওই ধরণের মেয়েলী আচার আচরণ সে কোনদিনই করে উঠতে পারে নি, কিন্তু তাই বলে এখন কি হলো তার? কেমন যেন ওর সারা শরীরটায় থরথর করে কাঁপন ধরে। খানিক আগের ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা হাসিটাও কোথায় উধাও হয়ে যায়... একি স্বপ্ন? নাকি বাস্তব? এত দিন... এত দিন ধরে যেটা ও মনের গভীরে নিয়ে নাড়াচাড়া করে এসেছে প্রতি নিয়ত... সেটা সত্যিই... সত্যিই আজ তার হাতটা অর্নবের হাতের মুঠোয়... উফ্‌... এবার নিশ্চয় ও পাগল হয়ে যাবে আনন্দে... বাঁ হাতটা তুলে রাখে তার ডান হাতটাকে মুঠো করে ধরে রাখা নিরাকার হাতটার ওপরে... আহঃ... এই তো... কর্কশ একটা পুরুষালী হাত... এটা আঙুলগুলো... এটা হাতের পীঠ... কবজি... বুড়ো আঙুল... বাঁ হাতটাকে ওই না দেখতে পাওয়া অদৃশ্য হাতটার ওপরে বুলিয়ে বুলিয়ে অনুভব করতে থাকে পৃথা। হাতটাকে ছুয়ে দেখার সময় কিছুতেই নিজের হাতদুটোকে স্থির রাখতে পারে না সে... থরথর করে কেঁপেই চলেছে তার হাতদুটো... এটা কি জ্বরের দুর্বলতায়? নাকি মানসিক অস্থিরতায়? কেমন সমস্ত কিছু গোলমাল হয়ে যাচ্ছে আজ পৃথার... কাঁপা হাতেই অদৃশ্য হাতটাকে ধরে টেনে রাখে নিজের গালের ওপরে... চোখ বন্ধ হয়ে আসে আপনা থেকেই... গালের ওপরে হাতটাকে নিয়ে বুলিয়ে অনুভব করতে থাকে সেটার স্পর্শ নিজের ত্বকের ওপরে... আহ্‌... একি অপার্থিব অনুভুতি... আগে তো কতজনের ছোয়াই না সে পেয়েছে নিজের মুখের ওপরে... বাবা, মা, বন্ধু, বান্ধব... কিন্তু কই... এই রকম তো অনুভূতি কখনও হয়নি তার... এই রকম কাঁপুনি তো কেউ ধরাতে পারে নি তার শরীরে... তবে আজ কেন এমন হচ্ছে? কেন কিছুতেই নিজেকে নিজের বশে ধরে রাখতে পারছে না সে? তবে কি... তবে কি... আর ভাবতে পারে না... তার সমস্ত বোধ বুদ্ধি কেমন হারিয়ে যাচ্ছে... গালের ওপর থেকে হাতটাকে তুলে খুলে, মেলে ধরে আন্দাজ করে, তারপর সেই খোলা হাতের তালুটার মধ্যে নিজের মুখটাকে গুঁজে দেয়... আহঃ... কি প্রশান্তি... জোরে শ্বাস টেনে গন্ধ নেয় সেই না দেখা হাতের... হাতের তালুটাকে চেপে ধরে নিজের তপ্ত ঠোঁট দিয়ে... পাগলের মত চুমু খেতে থাকে একের পর এক... খেয়েই চলে... প্রান ভরে... নিজের মুখেরই লালা লেগে, মেখে যায় হাতের তালুর মধ্যে... লাগুক... ভিজে যাক তার লালায় হাতটা... যা খুশি সে করতে পারে... সম্পূর্ণ অধিকার আছে তার যা খুশি করার... এ শুধু তার... শুধু তার... মনে মনে ভাবে পৃথা... লালায় ভিজে ওঠা হাতটাকে নিয়ে নিজের সারা মুখে মাখিয়ে দিতে থাকে বুলিয়ে বুলিয়ে... আজ বোধহয় পাগলই হয়ে যাবে সে।

ধীরে ধীরে ওই ভাবেই হাতটাকে নিজের দুই হাতের মুঠোয় ধরে রেখে আস্তে আস্তে নামায় নীচের পানে... নাক, ঠোঁট, চিবুক, গলা হয়ে হাতটাকে নামিয়ে নিয়ে আসে নরম বুকের ওপরে... চেপে ধরে দুটো কোমল গোল মাংসপিন্ডের মাঝে। এবার কেঁপে ওঠার পালা বোধহয় অদৃশ্য হাতের... নরম স্তনের স্পর্শ পেতেই গুটিয়ে, সরে যাবার চেষ্টা করে নিরাকার হাতটা... সরে যাবার চেষ্টা করে পৃথার মুঠো ছাড়িয়ে নিয়ে সসংকোচে... কিন্তু পৃথা মুঠো আলগা করে না... সরাতেও দেয়না হাতটাকে নিজের বুকের ওপর থেকে... জোর করে চেপে রাখে... টি_শার্টের ওপর দিয়েই ছুইয়ে রাখে নিজের নরম স্তনদুটোতে... পৃথার অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন অনুভূত হয় হাতের ওপরে... হাতটাকে বুকের মধ্যে চেপে ধরে চোখ খুলে তাকায় পৃথা... শূন্যের পানে... চোখের মধ্যে তখন একরাশ ভালোবাসা উপচে পড়ছে... আর চোখ থেকে চুইয়ে বেরিয়ে এসে সেই সৃষ্টিছাড়া ভালোবাসাটা মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে সারা মুখমন্ডলে।

একটা ভরাট গলার স্বর ফিসফিসিয়ে বলে পৃথার খুব কাছ থেকে... ‘হাতটা ছাড়ো তিতির...’

‘না... ছাড়বো না...’ জেদি গলায় উত্তর দেয় পৃথা... মুঠোয় ধরে থাকা অদৃশ্য হাতটাকে আরো বেশি করে চেপে ধরে নিজের বুকের ওপরে... একটা স্তন দেবে যায় হাতের চাপে।

‘এ রকম পাগলামী করতে নেই... ছাড়ো এবার...’ আবার অনুরোধ করে অশরীরি।

‘না বললাম তো...’ হাতটাকে ধরে রগড়ায় নিজের নরম বুকের ওপরে... উত্তেজনায় শক্ত নুড়ি পাথরের মত হয়ে ওঠা বোঁটাটা যেন বিঁধে যেতে থাকে সেই অদৃশ্য হাতের তালুতে।

‘কি চাও?’ প্রশ্ন করে নিরাকার গলার স্বর।

‘তোমায়...’ ছোট্ট উত্তর দেয় পৃথা।

‘কিন্তু এ যে হয় না... এ হতে পারে না... সেটা বোঝার চেষ্টা করো... তুমি যা চাইছো... সেটা কোনদিনই সম্ভব হবে না...’ বোঝাবার ভঙ্গিতে ফের বলে ওঠে স্বরধ্বনি।

‘কেন হবে না? কিসের অসুবিধা? তুমি তো এখন বিবাহিতও আর নও... তাহলে কেন তুমি আমার হবে না?’ চোখ সরু করে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘সেটা কথা নয় তিতির... বিবাহিত হওয়া না হওয়াটাই শেষ কথা নয়...’ উত্তর দেয় না দেখা অর্নব।

‘তবে? আমি কি দেখতে কুৎসিত?’ অভিমান ভীড় করে আসে পৃথার গলায়।

‘তুমি আমার দেখা সব থেকে মিষ্টি একটা মেয়ে... কে বলে তুমি কুৎসিত? তোমার থেকে এত সুন্দর দেখতে মেয়ে হয়?’ শান্ত গলায় বলে অর্নব।

‘লিন্ডার থেকেও সুন্দর?’ প্রশ্নটা বেরিয়ে আসে পৃথার মুখ থেকে।

একটু চুপ করে থাকে সেই অশরীরি খানিক, তারপর গাঢ় স্বরে বলে, ‘লিন্ডা বিদেশী ছিল... ও এখন আর বেঁচেও নেই, তাই ওর ব্যাপারে কোন কথা বলতে চাই না... আর তা ছাড়া ওর সৌন্দর্য আর তোমার সৌন্দর্যের মধ্যে অনেক ফারাক... বলতে আমার দ্বিধা নেই, ও ছিল সত্যিই প্রকৃত সুন্দরী... কিন্তু সৌন্দর্যের সাথে যখন অসম্ভব মিষ্টতা আর নিষ্পাপতার মিশেল ঘটে, তখন আর সেটা শুধু সুন্দরের সঙ্গায় পড়ে থাকে না... তুমি তাই...’

‘তাহলে হাতটা টেনে নিতে চাইছ কেন?’ গলা নামিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা, গালের ওপরে লালীমার আভা খেলা করে।

‘তুমি যা চাইছ, সেটা হবার নয় বলেই হাতটা টেনে নিতে চাইছি... এটা তোমাকেও বুঝতে হবে...’ ফের বোঝাবার চেষ্টা করে অশরীরি।

‘আমি কিচ্ছু বুঝতে চাই না... আমি যা চাই, তুমি সেটা কি বুঝেছ?’ একটু গলার স্বর তোলে পৃথা।

কোন উত্তর দেয় না অশরীরি... চুপ করে থাকাই বোধহয় শ্রেয় বিবেচনা করে।

‘কি হলো? কিছু বলছো না যে? শোনো... আমি শুধু তোমাকে চাই... শুধু তোমায়... আমি চাই শুধু তোমার হতে... একেবারে... সারা জীবনের জন্য... শুধু তো-মা-র...’ শেষের কথাটা বেশ জোরের সাথে টেনে টেনে বলে পৃথা।

এরপরও কোন উত্তর আসে না অশরীরির থেকে। অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে পৃথা... হাতের মুঠোয় ধরা অদৃশ্য হাতটাকে ধরে ঝাঁকিয়ে বলে ওঠে... ‘কি হোলো... বলো কিছু... এই ভাবে তুমি চুপ করে থাকতে পারো না...’ বলতে বলতে হাঁফাতে থাকে উত্তেজনায়।

‘দেখো... তুমি অসুস্থ... এখনো অনেক দুর্বল... সবে তোমার জ্বরটা ছেড়েছে... এখন এই ভাবে উত্তেজনা তোমার পক্ষে ঠিক নয়... আমরা পরে না হয় এই নিয়ে কথা বলবো...’ শান্ত গলায় বোঝায় শরীরহীন স্বর।

‘না... পরে নয়... আজ... এক্ষুনি...’ জেদি গলায় বলে ওঠে পৃথা... অর্নবের না দেখা হাতটা তুলে গালের ওপরে ছোয়ায়... নিজের ত্বকের ওপরে অর্নবের স্পর্শে এক অপরিসিম ভালো লাগায় ভরে ওঠে মনটা।

এবার আর হাতটা টেনে নেবার প্রয়াশ করে না অশরীরি... একটুক্ষন চুপ থেকে ফের বোঝানোর সুরে বলে, ‘তুমি যা চাইছ, সেটা হয় না তিতির... আমি... আমি...’ বলতে বলতে থেমে যায়।

‘কি আমি? বলো...’ অধৈর্য পৃথা তাড়া দেয়।

‘দেখো তিতির... আজ আমি যদি একটা সাধারণ স্বাভাবিক আর পাঁচটা লোকের মত হতাম, তাহলে অন্য কথা ছিল... কিন্তু আমি যে থেকেও নেই... বুঝতে পারছ, আমি কি বলতে চাইছি?’ শেষের কথাটা বলার সময় গলাটা ধরে আসে কায়াহীনের।

‘এই তো তুমি আছো... আমার পাশে... আমায় ছুঁয়ে... তবে কেন বলছো তুমি নেই?’ বাচ্ছা মেয়ের মত অবুঝ গলায় প্রশ্ন করে পৃথা।

‘আমার এ থাকা যে না থাকার থেকেও কতটা নির্মম, তুমি বুঝবে না তিতির... এ যে কত কষ্টের সেটা কি করে বোঝাই তোমায়...’ ধরা গলায় বলে ওঠে না দেখা শরীরের স্বর।

তাড়াতাড়ি অর্নবের হাতটাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসে পৃথা... শূন্যে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাতড়ায়... হাত ঠেকে একটা লোমশ প্রশস্ত বুকের ওপরে... হাত বোলায় হাতের নাগালে পাওয়া অদৃশ বুকটায়... অনুভব করতে থাকে সেই না দেখতে পাওয়া শরীরটাকে... পেশিবহুল লোমশ বুক, হাত, কাঁধ, গলা... হাতে ঠেঁকে ঝুলতে থাকা মোলায়েম বড় বড় দাঁড়ির গোছায়... দুহাত তুলে আঁচলা করে ধরে মুখটাকে... তারপর আবার ডান হাতের তালু ঘসতে থাকে সেই মুখটার ওপরে... দাঁড়ি, ঠোঁট, গোঁফ, নাক, চোখ, ভুরু, কপাল, চুল... নিজের চোখটাকে বন্ধ করে ছবিতে দেখা অর্নবের মুখটাকে ভাসিয়ে রাখে চোখের সন্মুখে... আহ্‌... এই তো আমার অর্নব... এই তো... দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের নিরাররণ শরীরটাকে... মুখটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে রাখে তার সেই প্রশস্ত বুকের ওপরে... ‘আহহহহ... কি শান্তি... আমার অর্নব... উম্‌ম্‌... শুধু আমার...’ জড়িয়ে ধরে বিড়বিড় করে বলে ওঠে পৃথা... নিজের মুখটা ঘসতে থাকে ওই লোমশ বুকটায়... ‘মন খারাপ করো না গো... আর কোন কষ্ট তোমায় পেতে দেবো না... আমি তো আছি... আমি তোমাকে আর মন খারাপ করার সুযোগ দেবো না... দেখে নিও.. শুধু তুমি আমাকে নাও... আমাকে তোমার করে নাও অর্নব... আমি যে আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না...’ বলতে বলতে আরো এগিয়ে বসে পৃথা, নিজের শরীরটাকে প্রায় ঢুকিয়ে দেয় সেই অশরীরির শরীরের মধ্যে... নিজের বুকের ওপরের ব্রা-হীন নরম গোল সুগঠিত মাংসপিন্ডদুটো একেবারে চেপে বসে যায় বিদেহী পুরুষালী নগ্ন পেটের ওপরে।

এই ভাবে ওকে জড়িয়ে ধরার ফলে কি করবে বুঝে উঠতে পারে না অশরীরি... চেষ্টা করে নিজের শরীরটাকে পৃথার আলিঙ্গন থেকে পেছিয়ে নিতে, কিন্তু যে ভাবে পৃথা ওকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে, তাতে ওর পক্ষে সম্ভব হয়না নিজেকে বাঁচাতে... খুব কুন্ঠিত গলায় বলে, ‘এই রকম পাগলামী করে না তিতির... ছাড় আমায়... তুমি এখনও অসুস্থ... শুয়ে পড়ো...’

‘না ছাড়বো না... আমার অর্নবকে আমি পেয়ে গিয়েছি... আর ছাড়বো না কোনদিন...’ লোমশ বুকের মধ্যে মুখটাকে গুঁজে বলে ওঠে পৃথা... শ্বাস টেনে ঘ্রাণ নেয় নিজের কাছে পাওয়া প্রিয়তমের শরীরের।

‘কিন্তু এই রকম ভাবে কি একটা সম্পর্ক তৈরী হতে পারে? তুমিই বলো?’ বলে অর্নব।

‘পারে... নিশ্চয়ই পারে...’ জেদি গলায় বলে ওঠে পৃথা... মুখটাকে ঘসে বুকের লোমে... আজ তার মনে হয় যেন পৃথিবীটাই পুরো পেয়ে গিয়েছে এই বুকটার মধ্যে।

‘না... পারে না...’ এবার একটু দৃঢ় কন্ঠেই বলে অশরীরি... ‘এটা হয় না... বোঝো তুমি... আমার কোন শরীর নেই... আমি শুধুই শূণ্য... সেখানে তুমি এই নিরাকারের সাথে জীবনটাকে জড়াতে পারো না... এই সম্পর্কের কোন ভবিষ্যত নেই তিতির...’ বলে এবার পৃথার বাহুদুটোকে হাতের মুঠোয় ধরে প্রায় জোর করেই নিজের শরীর থেকে টেনে আলাদা করে দেয়...

জলে ভরে ওঠে পৃথার চোখদুটো... শুধু একবার চোখ তুলে শূন্যের পানে তাকিয়ে মুখটা নামিয়ে নেয়।

‘তুমি কাঁদছ?’ শশব্যস্ত হয়ে ওঠে অশরীরি... ‘প্লিজ কেঁদো না...’

মুখে কিছু বলে না পৃথা, চুপ করে মাথা নামিয়ে বসে থাকে সে, গাল বেয়ে টসটস করে গড়িয়ে পড়ে জলের ফোঁটা।

‘আছা পাগল মেয়ে তো...’ বলে নিজেই আবার পৃথার বাহু ধরে টেনে নেয় নিজের বুকের মধ্যে... বাঁধ ভেঙে যায় যেন... অশরীরির বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে এবার হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে পৃথা... কান্নার দমকে কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকে তার শরীর।

মাথায় হাত রেখে চুলের মধ্যে বিলি কেটে দিতে দিতে স্বর বলে ওঠে, ‘লক্ষ্মীটি... কাঁদছো কেন তিতির... আমি কি বলেছি যে তাতে এত দুঃখ পেলে?’

ফোঁপাতে ফোঁপাতে কান্না জড়ানো গলায় পৃথা বলে ওঠে, ‘আমাকে তোমার থেকে সরিয়ে দিলে কেন?’ বলে ফের হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে দেয়।

‘আরে আমি তো...’ বলতে গিয়ে চুপ করে যায় অশরীরি... তারপর একটু থেমে বলে, ‘আচ্ছা, অন্যায় হয়ে গেছে... এবার থামো... এই তো... তুমি আমার বুকের মধ্যেই আছো... আর কেঁদো না তাহলে...’ বলে আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে পৃথাকে নিজের শরীরের সাথে... পৃথাও দুহাতের বেড়ে আঁকড়ে ধরে অদৃশ্য শরীরটাকে, নতুন করে মুখটাকে গুঁজে দেয় লোমশ বুকের মধ্যে... বেগ থামলেও, তখনো মাঝে মধ্যে শরীরটা কেঁপে কেঁপে ওঠে কান্নার ধমকে... ‘তুমিই আমার অর্নব? তাই না?’ ফোঁপানোর মাঝেই প্রশ্ন করে পৃথা।

‘কেন? সন্দেহ হচ্ছে?’ এবার অশরীরির গলায় কৌতুকের মিশেল।

‘না... আমার কোন সন্দেহ নেই... তবুও তোমার মুখ থেকে একবার অন্তত শুনতে ইচ্ছা করছে... বলো না... তুমিই অর্নব... তাই না?’ আসতে আসতে স্বাভাবিক হয়ে আসে পৃথার গলার স্বর।

‘আমি তো মিথ্যাও বলতে পারি... নিজেকে অর্নব বলে চালিয়ে দিতে পারি... তুমি সত্যিটা বুঝবে কি করে?’ প্রশ্ন করে অশরীরি।

‘সেটা আমার ওপরেই ছেড়ে দাও না... আমি তো ইতিমধ্যেই সুনিশ্চিত হয়েই গিয়েছি... তাও... তোমার মুখ থেকে একবার শুনতে ইচ্ছা করছে আমার...’ আরো গভীর হয় পৃথার গলার স্বর।

‘হুম... আমিই তোমার সেই অর্নব... যাকে তুমি এতদিন ওই ছবিটাতেই দেখেছ... সেই আমি...’ খানিক চুপ থাকার পর গাঢ় স্বরে উত্তর দেয় অশরীরি।

হটাৎ কানে আসে বাইরের দরজায় চাবি খোলার আওয়াজ... দুজনেই দুজনকে ছেড়ে সোজা হয়ে বসে... ‘কাজল ফিরে এসেছে মনে হচ্ছে...’ ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে কায়াহীন অর্নব। পৃথা হাতড়ে অর্নবের হাতটাকে ধরে নিজের হাতের মধ্যে... তারপর তাড়াতাড়ি করে ফিরে যায় বালিশের দিকে, হাতটাকে সাথে টেনে নিয়ে গিয়ে।

‘আমার হাতটা ছাড়ো এখন...’ ফের ফিসফিস করে বলে ওঠে অর্নব।

‘নাঃ... নাঃ... তুমি যাবে না... তুমি এখানেই থাকবে... আমার পাশে... আমাকে ছুয়ে থাকবে...’ বলতে বলতে টান দেয় অর্নবের হাতে পৃথা।

অর্নব প্রায় বাধ্য হয়েই এগিয়ে যায় পৃথার দিকে... ‘আমি তো আছিই... এবার ছাড়ো...’

‘তুমি আমার বিছানার ওই দিকটায় চলে এসো চট করে... এসো...’ তাড়া দেয় পৃথা।

নিরুপায় অর্নব পৃথার শরীর টপকে বিছানার ভিতর দিকে গিয়ে বসে।

পৃথা আন্দাজ করে সরে যায় অর্নবের পানে... ওর অদৃশ্য বুকের ওপরে নিজের কাঁধটাকে ছুঁইয়ে রাখে। 

ঘরে ঢোকে কাজল, আর ওর পেছন পেছন ঢোকেন প্রণববাবুও... ‘এই নাও দিদিমনি... তোমার টাকার ফেরত... ছ’টাকা ফিরেচে... আমি কিন্তু মুর্গির মাংস, পাঁউরুটি, গাজর, পেঁপে আর বিন্‌ নিয়ে এয়েচি।’ বলে ওঠে পৃথাকে লক্ষ্য করে... তারপর পৃথার দিকে একটু অবাক চোখে তাকিয়ে বলে, ‘এই রকম বেঁকে বসেচো কেন দিদিমনি? বালিসটা ঠিক করে দেব?’

‘না, না, ঠিক আছি আমি... তোকে কিছু করতে হবে না...’ তাড়াতাড়ি বলে ওঠে পৃথা। নিজেও একটু সরে ভালো করে শোয় বালিশের ওপরে... কিন্তু এমন ভাবে থাকে যাতে একটু হলেও অর্নবের ছোঁয়া লেগে থাকে তার শরীরের সাথে। প্রণববাবুর সামনে রয়েছে বলে গায়ের ওপরে চাঁদরটাকে গলা অবধি টেনে দেয়, যতই হোক, টি-শার্টের ভেতরে ব্রা পরে নেই সে, বুকগুলো বিশদৃশ্য দেখাচ্ছে হয়তো।

‘এই যে মিস মুখার্জি... আপনার অসুধ... এই টেবিলের ওপরেই রাখলাম... প্যাকেটটার ভেতরে প্রেসক্রিপশনটাও আছে, আমি কাজলকে বরং বুঝিয়ে দিচ্ছি কখন কোন অসুধটা দিতে হবে।’

‘আরে আপনি এত ব্যস্ত হবেন না মিঃ কর্মকার... আমি দেখে নেব’খন... আর আপনি কেন শুধু শুধু আবার ওপরে উঠলেন, কাজলের হাত দিয়েই তো পাঠিয়ে দিতে পারতেন...’ বলে পৃথা।

‘পারতাম হয়তো, তবুও... আসতেই হলো...’ পৃথার মনে হলো কথাটা তাকে নয়, অন্য কাউকে খোঁচা মেরে বললেন প্রণববাবু। শুনে বুঝতে অসুবিধা হয় না পৃথার, কার উদ্দেশ্যে কথাটা ভদ্রলোক বললেন, তাই ফিক করে হেসে ফেলে।

‘হাসছেন যে?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন ভদ্রলোক।

‘না, আপনার অবস্থা দেখে...’ এবার হাসি আরো ছড়ায় মুখের ওপরে।

ব্যাপারটা না বুঝে মাথা চুলকান ভদ্রলোক।

পৃথা কাজলের দিকে তাকিয়ে বলে, ‘তা হ্যারে, একটু মিঃ কর্মকারকে চা করে দিবিনা?’

‘এ বাব্বা, হ্যা তো...’ বলে একটা এত্ত বড় জিভ কাটে কাজল, ‘আমি এক্কুনি করে আনচি...’ বলে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।

‘আমার জন্য আপনার ওপর দিয়ে খুব ঝড় গেলে যাহোক... অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে...’ কৃতজ্ঞ চোখে তাকায় ভদ্রলোকের পানে পৃথা।

‘না না, এ আর কি... আপনি একা থাকেন, সেখানে এতো আমার কর্তব্য...’ বলেন প্রণববাবু।

‘শুধুই কর্তব্য?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

ভুরু কুঁচকে তাকান পৃথার দিকে ভদ্রলোক, ‘মানে? বুঝলাম না ঠিক...’

‘না বলছি শুধুই কর্তব্যের খাতিরে করলেন, নাকি...’ বলে থামে পৃথা।

‘না, মানে, এটা আর কি... আপনি অসুস্থ হলে...’

‘হ্যা, সেটাই তো বলছি, আমি অসুস্থ হলে আর সেই ইন্সট্রাক্সনটা যদি বন্ধুর কাছ থেকে যায়, তাহলে তো করতেই হবে... তাই না?’ হেসে বলে পৃথা।

‘মানে?...’ এবার থতমত খাবার পালা ভদ্রলোকের।

‘অবাক হবার কিছু নেই মিঃ কর্মকার... আপনি যার ইন্সট্রাক্সনে আমার এত উপকার করছেন, উনি এই মুহুর্তে আমার পাশেই বসে রয়েছে...’ মুচকি হেসে বলে পৃথা।

‘অ্যাঁ?...’ এদিক ওদিক তাকান প্রণববাবু... তারপর নজর রাখেন পৃথার পেছন দিকে।

‘হ্যা... ঠিক দিকেই তাকিয়েছেন... আমি জানি আপনি জানেন অর্নব এখন কোথায়... তাই না মিঃ কর্মকার...’

‘না, মানে...’ মুখটা কাঁচুমাচু করে তাকায় পৃথার দিকে প্রণববাবু।

‘মানে আপনার বন্ধু আমার কাছে ধরা পড়ে গেছে মিঃ কর্মকার... সে আমার হাতে বন্দি হয়ে গেছে... আর তার পালাবার পথ নেই...’ হাসতে হাসতে উত্তর দেয় পৃথা।

কথাটা শুনে একটু খানি চুপ করে থাকেন ভদ্রলোক, তারপর হাঃ হাঃ করে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন... ‘জানতাম... আমি জানতাম... ও আপনার কাছেই ফাঁসবে... বেশ করেছেন মিস মুখার্জি... সারা জীবন বন্দি করে রেখে দিন আমার বন্ধুটাকে... আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হবে না এতে... উফ্‌, একটা কাজের মত কাজ করেছেন ব্যাটার জন্য... অনেক ভুগিয়েছে আমায়... এবার আপনার কাছেই বন্দি হয়ে থাকুক একেবারে...’

পৃথার ঠিক পেছন থেকে চাপা স্বরে বলে ওঠে অর্নব, ‘হ্যা, তুই তো খুশি হবিই... হবি না... বন্ধুর সর্বনাশেই তো বন্ধু খুশি হয়... ব্যাটা স্বার্থপর...’

‘আরে ভাই, এই খুশিটার জন্য কতদিন অপেক্ষা করেছি বল তো...’ বলে ওঠে প্রণববাবু।

‘আরে মাকাল, আস্তে কথা বল, কাজল রয়েছে, ও শুনলে ভিমরি খাবে... ভাববে তোরা ভুতের সাথে কথা বলছিস...’ ফের চাপা গলায় ধমকায় অশরীরি অর্নব।

‘না, সেটা ঠিক বলেছিস... সরি রে ভাই...’ এবার প্রণববাবুও গলা নামান।

তারপর পৃথার দিকে ঘুরে হাতটাকে বাড়িয়ে দিয়ে ওর হাতটাকে নিজের হাতের মধ্যে ধরে বলে ওঠেন, ‘থ্যাঙ্কস্‌ মিস মুখার্জি... অসংখ্য ধন্যবাদ... আমার এই বন্ধুটার ভিষন দরকার ছিল একটা কাঁধের... বড্ড অভাগা ও... অনেক কষ্ট পেয়েছে... ওর পাশে থাকার জন্য আপনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার সীমা রইল না...’

স্মিত হাসে পৃথা, বলে, ‘চিন্তা করবেন না মিঃ কর্মকার, আজ থেকে আপনার বন্ধুর পাশে আমি সর্বদা থাকবো... কথা দিলাম।’

পেছন থেকে অদৃশ্য অর্নব বলে ওঠে, ‘হ্যাঃ, নিজেই রুগী, ও দেখবে আমাকে...’

কপট রাগ দেখিয়ে চোখ পাকায় ঘাড় ফিরিয়ে পৃথা, তারপর হেসে ফেলে বলে, ‘দেখো... দেখি কি না...’

ঘরের বাইরে কাজলের পায়ের শব্দ শোনা যায়।

টেবিলের ওপরে প্রণববাবুর জন্য চা আর বিস্কুটের ট্রে নামিয়ে প্রণববাবুর উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, ‘প্রণবদাদাবাবু, দেকো তো, সেই আগের মতই চা করেচি কি না... ঠিক আপনি যেমনটি খেতেন, চিনি কম দিয়ে, সেই রকমই করেচি... একটুও কিচু ভুলি নি, হ্যা...’

ট্রে’এর ওপর থেকে চায়ের কাপটা তুলে নিয়ে চুমুক দিয়ে মুখ তোলেন ভদ্রলোক, ‘নাঃ, সত্যিই, এখনও ভুলিসনি দেখছি...’ তারপর আরো একটা চুমুক দিয়ে বলেন, ‘তা একদিনেই তো দেখছি দিদিমনির সংসারটা ধরে নিয়েছিস...’

‘নেবো না? আরে এটা দাদাবাবুর ফ্ল্যালাট, দাদাবাবু একোন নেই তো কি হয়েচে... দেকবেন, কেমন গুচিয়ে রাকি সংসারটাকে... কাজল এসে গেচে... দিদিমনির আর কোন চিন্তা নেই...’ বলেই ফেরে পৃথার পানে, ‘দিদিমনি, একন একটু চিকেন সুপ করে দিই?... আর সাথে পাঁউরুটির সেঁকা... খেয়ে তাপ্পর অসুদ খেও... বুজেচ... আর দুপুরে চিকেন ইস্টু করে রেকে দিয়ে যাবো, সেই জন্য গাজর, বিন, নিয়ে এয়েচি’ বলে আর দাঁড়ায় না, বাইরের দিকে যাবার জন্য পা বাড়ায়।

‘হ্যারে কাজল, প্রণবদাদাবাবুর জন্য কিছু ব্রেকফাস্ট করবি না? উনিও সেই সকাল থেকে না খেয়েই রয়েছেন...’ পেছন থেকে বলে ওঠে পৃথা।

কাজল উত্তর দেওয়ার আগেই তাড়াতাড়ি করে প্রণববাবু আধখাওয়া চায়ের কাপটা ট্রে’এর মধ্যে রাখতে রাখতে উঠে দাঁড়ান, ‘না, না, মিস মুখার্জি... আমার এখন আর দাঁড়াবার সময় নেই, আমি ফিরেই স্নান করে অফিস বেরুবো... ব্যাটা সব দ্বায়ীত্ব তো আমার ঘাড়েই দিয়ে রেখেছে, না?’

‘তাও, ব্রেকফাস্টটা অন্তত করে যান... বেলা অনেক হয়ে গেল আমার জন্য...’ পৃথা অনুরোধ করে।

‘হবে না মিস মুখার্জি, ওদিকে গিন্নি রেডি হয়ে রয়েছে আমার ব্রেকফাস্ট নিয়ে, এখন আমি যদি এখান থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে যাই তাহলে যুদ্ধের দামামা বাজবে... তার থেকে এখন আমি পালাই...’

প্রণববাবুর বলার ধরণে হেসে ফেলে পৃথা আর কাজল দুজনেই। হাসতে হাসতেই পকেট থেকে সিগারেটএর প্যাকেটটা বের করে খুলে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটের কোনে রেখে জ্বালাবার জন্য লাইটার বের করে, কিন্তু তারপরই থমকে যান, ‘নাঃ, রুগির ঘরে সিগারেট ধরানো ঠিক হবে না, থাক, পরে খাবো’খন... বলে ফের প্যাকেটের মধ্যে সিগারেটটা ঢুকিয়ে রেখে নিজের পকেটে চালান করে দেন।

‘একটা কথা বলবো মিঃ কর্মকার, এবার অন্তত ওই ফর্মাল সম্বোধনটা ছাড়ুন, আমাকে পৃথা বলে ডাকলেই বেশি খুশি হবো...’ স্মিত হেসে বলে পৃথা।

‘হু, বলতে পারি, যদি আমাকে মিঃ কর্মকার থেকে প্রণবদায়ে নামাতে পারেন, তবেই’ হাসতে হাসতে উত্তর দেন ভদ্রলোক।

‘তাহলে তো আমিও বলতে পারি ছোট বোনকে কেউ আপনি আঁজ্ঞে করে?’ ঘুরিয়ে বলে ওঠে পৃথা।

মাথা নাড়েন ভদ্রলোক, ‘ঠিক, ঠিক, সেটাও একেবারে ঠিক কথা বলেছেন... থুড়ি... বলেছ... বেশ... আর আপনি আজ্ঞে নয়... একেবারে তুমি... ঠিক আছে? কিন্তু উল্টো দিকে তোমাকেও তাহলে ওই আপনি আঁজ্ঞেটা ছাড়তে হবে কিন্তু...’

‘আচ্ছা, আচ্ছা, তাই হবে, আর আপনাকে...’ বলেই জিভ কাটে পৃথা... ‘তোমাকে আর আটকাবো না... তবে একদিন কিন্তু বৌদিকে নিয়ে আসতে হবে... বৌদির সাথে আলাপ করাবে না?’

‘আরে তুমি কি বলছো? তোমার বৌদি যদি শোনে আজকের ঘটনাটা, ওকে আর আসতে বলতে হবে না, দেখ না, আজ সন্ধ্যেবেলাতেই না নাচতে নাচতে চলে আসে... তোমাকে আর নতুন করে ইনভিটেশন পাঠাবার দেখবে দরকার পড়বে না...’ বলে হা হা করে হেসে ওঠেন প্রণববাবু।

কাজল কিছু না বুঝেই সেও হাসতে থাকে প্রণববাবুর হাসিতে।

‘তুই কেন হাসছিস রে ব্যাটা?’ ওর দিকে কপট চোখ পাকিয়ে বলে ওঠেন ভদ্রলোক।

‘ও মা, তুমি হাসচো, তাই তো হাসলাম... আমি আবার কি দোস করলাম?’ বলে বেরিয়ে যেতে যায় ঘর থেকে।

‘ওরে শোন শোন...’ পেছনে ফের ডাকে পৃথা। পৃথার ডাক শুনে ঘুরে দাঁড়ায় কাজল।

‘স্যুপ কতটা করবি?’

‘কেন? তুমি একা খাবে, এক বাটিই করবো... আর সেই সাতে দু পিস পাঁউরুটি সেকে দেবো...’ সহজ গলায় বলে কাজল।

‘এক বাটি না, তুই বরং তিন বাটি করিস... একটা তোর জন্য আর বাকি দু বাটি আমাকে এখানে দিয়ে যাস... আর তার সাথে ছ’পিস ব্রেড টোস্ট করিস...’ বলে আড় চোখে প্রণববাবুর দিকে তাকায় পৃথা।

‘দু বাটি?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে কাজল।

‘না, মানে...’ কি বলবে ঠিক করে উঠতে পারে না পৃথা।

‘আসলে দিদিমনি কাল রাত থেকে কিছু খায়নি তো, তাই এখন একটু বেশি করে খেতে হবে, আর অত অসুধ খাবে তো, সেই জন্য... তোকে বলছে যখন তুই করে দে না, এত প্রশ্নের কি আছে রে বাবা?’ বলে পরিস্থিতি সামলায় প্রণববাবু।

‘হ্যা, সেটাও ঠিক... কাল রাত থেকে খায় নি দিদিমনি, না? তবে আমি ও’সব সুপটুপ খাবো না, ও সব আমার সয়ে না, আমি বরং ক’টা পাঁউরুটিই খেয়ে নেব’খন, ও তোমায় ভাবতে হবে না।’ বলে মাথা নাড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

ঘরের মধ্যে দুজনেই হেসে ওঠে।

পৃথার পেছন থেকে ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে অর্নব, ‘তুমি একাই দু বোউল স্যুপই খাবে? পারবে?’

ওর কথায় দুজনে আরো জোরে হেসে ওঠে... পৃথা ঘাড় ঘুরিয়ে অর্নবের মত করে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘না, মশাই, শুধু আমার খাবার কথা চিন্তা করলে তো হবে না, আমার আর একজন আছে, যার সকাল থেকে তার তিতিরের জন্য পেটে কিচ্ছুটি পড়ে নি, তাই তার জন্যও স্যুপের অর্ডারটা দিয়ে দিলাম, বোঝা গেল? প্রণবদা বুঝে গেলো, আর এই লোকটা বুঝলো না... ইশ... এই নাকি ও আমাকে সামলাবে...’

অর্নব কিছু বলার আগেই প্রণববাবু বলে ওঠেন, ‘আপনারা দুজন দুজনকে সামলাও, আমি পালালাম, পরে দেখা হবে...’ তারপর পৃথার পেছনদিকে শূন্যতার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘এই মর্কট, পরে আমাকে ফোন করিস, বুঝলি...’

পৃথার পেছন থেকে ভেসে আসে গম্ভীর স্বরে... ‘হুম’।
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
#45
২১।। 


পৃথা কিছ বলার জন্য উদ্যত হয়, কিন্তু তার আগেই পাশে রাখা মোবাইলটা বেজে ওঠে... হাতে তুলে নিয়ে দেখে সুশান্ত... ‘ওহ্‌ ও... একবার অফিসে ফোন করা উচিত ছিল অনেক আগেই...’ সুশান্তর নামটা মোবাইল স্ক্রিনের ওপরে দেখে ভাবে পৃথা... ‘হ্যালো...’

‘আরে, তুমি এখনও অফিসে এলে না? মেট্রোর প্রবলেম নাকি? এদিকে ম্যানেজার বলছিল...’ ওপার থেকে সুশান্তর উদ্বিগ্ন গলা ভেসে আসে।

‘সরি সুশান্ত, আমার আগেই ফোন করা উচিত ছিল, আসলে...’ বলতে শুরু করে পৃথা।

‘কেন কি হয়েছে? আসবে না আজকে?’ প্রশ্ন ভেসে আসে সুশান্তের... ‘কাল তো কিছু বললে না যে ছুটি নেবে বলে... এদিকে...’

‘না, আসলে আমার গতকাল রাত থেকে একটু জ্বর মত হয়েছে, তাই আজকে আর ভাবছি অফিস যাবো না... একটু আজ রেস্ট নিয়ে নিই... কাল চেষ্টা করবো যাবার... তুমি একটু ম্যানেজারকে ইনফর্ম করে দিও না প্লিজ... আমি কাল গিয়ে বরং একটা মেল করে দেবো...’ বলে পৃথা।

‘জ্বর হয়েছে... আরে আমাকে আগে বলো নি কেন? আমি আসবো... ডাক্তার দেখাতে হবে তো...’ ব্যস্ত গলায় উদ্বেগের আভাস পাওয়া যায়।

‘না, না, আমি এখন মোটামুটি ঠিক আছি, ডাক্তার এসেছিল, দেখেছে আমাকে, ওই সামান্য জ্বর শুধু, অসুধ দিয়ে গেছে, কাল মনে হচ্ছে যেতে পারবো...’ তাড়াতাড়ি চেষ্টা করে সুশান্তের উদ্বেগটা কাটাবার।

কানের মধ্যে অর্নব ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে, ‘তুমি কথা বলো, আমি একটু আসছি...’

তাড়াতাড়ি করে ফোনটাকে বুকের মধ্যে চেপে ধরে পৃথা, যাতে তার কথা সুশান্তের কানে না যায়, সেও ফিসফিসিয়েই বলে ওঠে, ‘না... কোথায় যাচ্ছ... আমার পাশেই থাকো...’ চোখ পাকায় ঘাড় ফিরিয়ে।

‘আরে, আমি আসছি... একটু বাথরুমে যাবো... তুমি কথা বলো না...’ ফের সেই ভাবে বলে ওঠে অর্নব।

‘আচ্ছা... যাও... কিন্তু তাড়াতাড়ি আসবে... আমি একা থাকবো না... মনে থাকে যেন...’ খাটো গলায় বলে পৃথা।

‘আচ্ছা বাবা আচ্ছা, আসবো...’ বলে পৃথাকে টপকে বিছানার অপর দিকে চলে যায় অর্নব... পৃথা শুধু অনুভব করে বিছানার একপাশ থেকে অপর পাশে একটা মৃদু বাতাসের সরে যাওয়া, আর সেই সাথে বিছানার চাঁদরের ওপরে খানিকটা অংশ কুঁচকে যাওয়াটা। ওই দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই মোবাইলটাকে বুকের ওপরে থেকে তুলে কানে লাগায়... সুশান্ত তখন কিছু বলে চলেছে সম্ভবত।

‘অ্যা? বলো...’ সুশান্তের কথায় মনোযোগ দেবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘কি হলো, হটাৎ করে চুপ করে গেলে, কেউ এসেছে?’ প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘অ্যা... না... ওই কাজল...’ কোন রকমে বলে ওঠে পৃথা।

‘কাজল? সে আবার কে?’ অবাক হয় সুশান্ত।

‘আমার কাজের মেয়ে... আজ থেকেই জয়েন করেছে...’ বলে পৃথা।

‘আরে এই ভাবে হুটহাট কারুকে রেখো না... তুমি এখানে চেনো না শোনো না... এরা খুব একটা বিশ্বাসী হয়না... তোমার লোকের দরকার, আগে বলতে পারতে...’ ফের চিন্তিত হয়ে ওঠে সুশান্ত।

‘আরে না, না, অচেনা নয়... কাজল আগে এই ফ্ল্যাটেই কাজ করতো... খুব ভালো মেয়ে...’ আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে পৃথা।

‘তুমি বুঝছো কি করে যে ও ভালো না মন্দ... আগে কখনো ওকে দেখেছ?’ এবার যেন একটু বিরক্তই হয় পৃথার এই রকম একটা হটকারী সিদ্ধান্তে।

মুচকি হাসে পৃথা... যেখানে অর্নব আছে, সেখানে ওর চেনা বা জানার প্রয়োজন কি? ‘না আমার চেনা নয় ঠিকই, কিন্তু প্রণবদার চেনা... উনিই তো আজ সকালে সাথে করে ডাক্তার আর কাজলকে নিয়ে এসেছিলেন...’

‘প্রণবদা... সেটা আবার কে?’ একটু অবাক হয় সুশান্ত।

‘আরে প্রণবদা মানে প্রণব কর্মকার... আমার ফ্ল্যাটের বাড়িওয়ালা...’ বলে ওঠে পৃথা।

শুনে যেন একটু মনোক্ষুণ্ণ হয় সুশান্ত... ‘ওঃ... মিঃ কর্মকার নিয়ে এসেছেন...’ বলে একটু থামে, তারপর প্রশ্ন করে, ‘কিন্তু উনি তোমার জ্বরের কথা জানলেন কি করে? একেবারে ডাক্তার সাথে নিয়ে চলে এলেন?’

‘আসলে আমিই ওনাকে মেসেজ করেছিলাম আমার জ্বর হয়েছে বলে, তাই উনি সাথে করে ডক্টর নিয়েই এসেছিলেন...’ বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘হটাৎ আমাকে কিছু না বলে ওনাকে মেসেজ করলে?’ এবার যেন মনোক্ষুণ্ণতাটা আর একটু বাড়ে সুশান্তের গলায়... ‘আমি তো ভেবেছিলাম এই শহরে আমি ছাড়া তোমার নিজের বলতে কেউ নেই...’

‘না, না, আমাকে ভুল বুঝনা, তুমি তো এই শহরে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু... সেটা আমি অস্বীকার করছি না... আসলে...’ বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘না, সেতো দেখতেই পাচ্ছি... আজকাল অসুস্থ হলে আমার বদলে বাড়ীওয়ালাকে মেসেজ করছ...’ স্বরে একটু রূঢ়তা প্রকাশ পায়।

‘আরে চটছো কেন... আসলে ভাবলাম তুমি অত রাত্রে ঘুমাচ্ছ হয়তো, তাই আর ডিস্টার্ব করতে চাইনি...’ কোন রকলে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘পৃথা, আমি ঘুমাচ্ছি বলে তুমি আমাকে মেসেজ না করে বাড়ীওয়ালাকে মেসেজ করছ, কেন উনি কি সারা রাত জেগে থাকেন?’ এবার একটু যেন গলার স্বর চড়ে সুশান্তর।

কি করে বোঝাই তোমায় যে আমি মেসেজটা করিনি, করেছে অর্নব... আমি কি ছাই তখন জানতাম যে অর্নব এই সব কান্ড ঘটিয়ে বসে আছে? মনে মনে ভাবে পৃথা। মুখে বলে, ‘আরে তা নয়... আসলে হটাৎ করে প্রণববাবুর নামটা সামনে পেলাম, তাই ওনাকেই মেসেজটা করে দিয়েছিলাম, তোমার নাম তো ‘এস্‌’ দিয়ে, তাই ওটা পরের দিকে আসে, তাই না? পরে আমি তোমাকে জানাতামই’ ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে পৃথা।

‘কিন্তু কল্‌ লিস্টে তো আমার নামটাই থাকার কথা... সেখানে তো প্রণববাবুর নামটা আসার কথাই নয়...’ আরো কিছু বলতে চায় সুশান্ত কিন্তু তার আগেই পৃথা এবার একটু অসুন্তুষ্ট গলাতেই বলে ওঠে, ‘আমি তো বুঝতে পারছি না যে আমি কাকে ডাকবো তা নিয়ে এত কেন কথা উঠছে... আমি তো প্রণববাবুকে ডেকে কোন অপরাধ করি নি... আর তাছাড়া উনি তো এসে আমার উপকারই করেছেন, সাথে ডক্টর পর্যন্ত নিয়ে এসেছিলেন...’

পৃথার গলার ঝাঁঝে চুপ করে যায় সুশান্ত... তারপর একটু শান্ত গলায় বলে, ‘না, মানে আসলে...’

‘আসলে কিছুই নয় সুশান্ত... তুমি যেটা ভাবছ সেটা নয়... আমার নিশ্চয়ই সেই স্বাধীনতাটুকু আছে, যে আমি আমার বিপদে কাকে ডাকবো আর ডাকবো না...’ একটু একটু করে সে মনে মনে বিরক্তই হয়ে উঠতে থাকে সুশান্ত এই রকম একটা ন্যাগিং নেচারের জন্য। হটাৎ কাঁধের ওপরে হাতের চাপ পড়ে... মুখ তুলে শূন্যের পানে তাকায় পৃথা... কানে আসে অর্নবের খুব খাটো গলা, ‘কুল... মাথা ঠান্ডা রাখো... ভুলো না, ওই ছেলেটি আসলে তোমার শুভাকাঙ্খি... সেই জন্যই এতটা উতলা হয়ে উঠছে... ও কি করে জানবে বলো প্রণব কেমন?’

ওপার থেকে সুশান্তের গলা কানে আসে, ‘সরি... আমারই ভুল হয়েছিল... আসলে তুমি একা থাকো তো, তাই চিন্তা হয়...’

অর্নবের কথায় পৃথার মাথাটাও ততক্ষনে একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে, ‘না, না সুশান্ত, আমিও সেই ভাবে বলতে চাইনি... আসলে তুমিও বোঝ, তখন জ্বরের মধ্যে কাকে কি মেসেজ করেছি, আমিও ঠিক খেয়াল করে করিনি... যাই হোক, তুমি একটু আজ অফিসে ম্যানেজ করে নিতে পারবে তো?’ কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘হ্যা... সে আমি দেখে নেবো... তুমি চিন্তা করো না... তুমি রেস্ট নাও... ডক্টর কি বললেন?’ প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘না, সে রকম কিছু নয়, ওই একটু ঠান্ডা লেগেই জ্বরটা এসেছিল, অসুধ দিয়ে গেছেন, এখন মোটামুটি আগের থেকে ঠিক আছি।’ এবার অনেকটাই ঠান্ডা শান্ত গলায় উত্তর দেয় পৃথা।

‘যাক, তাহলেই ভালো... কিন্তু ঠান্ডাটা লাগালে কি করে?’ প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘কাল ফেরা পথে একটু ভিজে গিয়েছিলাম, তাই বোধহয়...’ উত্তর দেয় পৃথা।

‘কাল ভিজে গিয়েছিলে? কেন ছাতা আনো নি কাল?’ এবার আবার উদবিগ্ন হয়ে ওঠে সুশান্ত।

‘হ্যা, আসলে কাল ছাতাটা ব্যাগে ভরতে ভুলে গিয়েছিলাম, আর ফেরার পথে হটাৎ করে অমন বৃষ্টি নামতে একেবারে ভিজে চান করে গিয়েছি, সেখান থেকেই বোধহয় জ্বরটা এসে থাকতে পারে...’ বলে পৃথা।

‘ইশ... কি করো না তুমি... এই বর্ষার সময় কেউ ছাতা ভোলে... যাই হোক, এখন রাখছি... দেখি সন্ধ্যেবেলায় তোমার ওখানে যাব’খন...’ বলে ওঠে সুশান্ত।

‘হ্যা, হ্যা, এসো না... আর পারলে আসার সময় মৌসুমীকেও এনো না... ভালো লাগবে... অনেকদিন আসে নি ও...’ বলে পৃথা।

‘আবার মৌসুমী কেন... আমিই না হয় আসবো...’ বলে সুশান্ত।

‘কেন? মৌসুমীকে আনতে অসুবিধা কোথায়? মেয়েটাকে অনেকদিন দেখিনিও... ও আসলে ভালো লাগবে...’ জোর করে পৃথা।

‘না, মানে ভাবলাম এখন তোমার শরীরটা খারাপ, তাই শুধু আমি গেলেই...’ বলতে বলতে চুপ করে যায় সুশান্ত।

‘না, না, তুমি এলে আমার অসুবিধা কিছু নেই... কিন্তু তোমার সাথে মৌসুমী এলে আরো ভালো লাগতো, এই আর কি... বড্ড মিষ্টি মেয়েটা...’ সুশান্তের কথার রেশ টেনে বলে ওঠে পৃথা।

কানের মধ্যে অর্নব ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে ফের, ‘এবার ফোনটা রাখো... সবে জ্বরটা ছেড়েছে, এখন ফোনে এত কথা বলা ঠিক নয়... পরে ও এলে না হয় গল্প কোরো...’

অর্নবকে তার প্রতি এমন কনসার্ন হতে দেখে মনে মনে ভিষন খুশি হয় পৃথা, মাথা দোলায় সে, তারপর সুশান্তের উদ্দেশ্যে ফোনে বলে, ‘আচ্ছা, এখন রাখি কেমন, পরে না হয় এলে কথা হবে, এখন আর বেশি কথা বলতে ইচ্ছা করছে না...’

ও পাশ থেকে সুশান্ত ব্যস্তমস্ত হয়ে বলে ওঠে, ‘হ্যা, হ্যা, সেই ভালো... পরে দেখা হলেই কথা হবে’খন... আর তুমি চিন্তা করো না, আমি ম্যানেজারকে বলে দিচ্ছি... তুমি রেস্ট নাও...’

‘ওকে, থ্যাঙ্কস্‌... রাখি...’ বলে আর কথা বাড়ায় না, ফোনটাকে কানের থেকে নামিয়ে কেটে দেয় কলটা... তারপর মুখ তুলে শূন্যের পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘বাবুর কি হিংসা হচ্ছিল, ফোনে অন্য ছেলের সাথে কথা বলছিলাম বলে?’

‘না, না, হিংসার কি আছে, তোমার শরীরটা এখন যথেষ্ট দুর্বল, তাই বারণ করছিলাম, নয়তো আমি বাধা দেবো কেন?’ একটু যেন আহত হয় পৃথার কথায়।

‘আহা, অমনি খারাপ লেগে গেল... দূর বোকা... আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম... বরং তুমি বারণ করার সাথে সাথে দেখো ফোনটা কেটে দিয়েছি... কি? ভালো করি নি?’ হেসে বলে পৃথা।

হয়তো উত্তরে অর্নব কিছু বলতো, কিন্তু তার আগেই ঘরে কাজল ঢোকে... ‘একা একা কার সাথে বোকচো দিদিমনি?’ প্রশ্ন করে সে।

থতমত খেয়ে যায় পৃথা... কাজলের কথাটা একেবারেই ভুলে গিয়েছিল সে... তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, ‘দূর... একা একা বকবো কেন? এই তো ফোনেই কথা বলছিলাম...’

‘না, মানে আমার যেন মনে হোলো তুমি হাওয়ার দিকে তাকিয়ে কতা বলচো...’ পৃথার দিকে যেন একটু সন্দিহান চোখেই তাকিয়ে প্রশ্ন করে কাজল।

‘কি দেখতে কি দেখেছিস... ছাড়... কি বলতে এসেছিস বল...’ কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘না বলচি সুপটা করেচি... এখানে একসাতেই দু বাটি দিয়ে যাবো না আগে এক বাটি দিই, তারপর তোমার খাওয়া হলে বলবে আমি আর এক বাটি দিয়ে যাবো...’ বলে কাজল।

‘না, না, তুই দুটো বোউলই দিয়ে যা এখানে... আর দুটো চামচও দিস...’ নির্দেশ দেয় পৃথা।

‘কিন্ত এক সাতে দিলে যে ঠান্ডা হয়ে যাবে... তকোন আর খেতে ভালো লাগবে?’ ব্যাপারটা কেমন লাগে যেন কাজলের।

‘সে আমি বুঝবো’খন, তুই দুটো বোউলই দিয়ে যা না... এত গিন্নিগিরি করলে কি করে হয় বলতো?’

‘আমার কি... ঠান্ডা হয়ে গেলে ঠান্ডাটাই খাবে... তকোন কিন্তু আমাকে বলতে পারবে না যে আমি বলিনি...’ পরামর্শ দিতে ছাড়ে না কাজল।

‘আচ্ছা, সেটা আমিই বুঝবো না হয়... তুই দে তো...’ ফের বলে পৃথা।

ব্যাপারটা পছন্দ না হলেও বাধ্য হয়ে যেন রাজি হয় কাজল, ঘাড় হেলিয়ে বলে, ‘আচ্চা... তাই দিচ্চি...’ বলে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।

ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে পৃথা।

কাজল ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে, চাপা গলায় অর্নব বলে ওঠে, ‘আমি কিন্তু তোমার সামনে এই ভাবে খেতে পারবো না...’

‘খেতে পারবে না মানে... ইয়ার্কি নাকি? সেই সকাল থেকে কিচ্ছু খাওনি...’ খাটো গলায় কপট রাগান্বিত ভাবে বলে পৃথা।

‘সেটা নয়... আসলে তোমার সামনে খেতে অসুবিধা আছে...’ বোঝাবার চেষ্টা করে অর্নব।

‘কেন, কিসের অসুবিধা?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘তুমি বুঝছ না, এই ভাবে আমি কারুর সামনে খেতে পারি না... আমার অস্বস্থি হয়... আসলে ওই রকম ভূতের মত খেতে দেখলে তুমি...’ বলতে বলতে চুপ করে যায় অর্নব।

‘বুঝেছি... কিচ্ছু হবে না... আমি ভয়ও পাবো না, আর খারাপও ভাববো না... তুমি আমার সামনেই খাবে... এতদিন নিজে নিজে যা পেরেছো করেছো... কিন্তু আর নয়... এবার থেকে আমার সামনেই তোমাকে খেতে হবে... আমিই তোমার গার্জেন এখন থেকে... বুঝেছ...’ চাপা গলায় বলে পৃথা।

‘কিন্তু...’ আরো কিছু বলতে যায় অর্নব, কিন্তু পৃথা তাকে থামিয়ে দেয়, বলে, ‘কোন কিন্তু নয়... আমি যখন বলেছি তুমি আমার সামনে বসেই খাবে, তখন তাই খাবে... বুঝেছ?’

আর কোন উত্তর দেয় না অর্নব। এই জেদী মেয়েকে বোঝানোর কম্মো তার নয়, সেটা সে বুঝে গিয়েছে, তাই চুপ করে যাওয়াই শ্রেয় মনে করে সে। ঘরে কাজল ঢোকে একটা ট্রে’তে দু-বোউল স্যুপ আর একটা প্লেটে কড়করে টোস্ট নিয়ে... খাটের ওপরে পৃথার সামনে রেখে বলে, ‘আমি খাইয়ে দিই দিদিমনি?’

ওরে বাবা, তাহলে তো সর্বনাস... মনে মনে ভাবে পৃথা। তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, ‘আরে, না, না, তুই খাওয়াবি কি? আমিই খেয়ে নেবো... তোকে ভাবতে হবে না...’

‘কিন্তু তোমার তো সলিলটা খারাপ, বলো... তুমি কি নিজের হাতে খেতে পারবে?’ উদ্বিগ্ন গলায় বলে ওঠে কাজল।

‘হ্যা রে বাবা, ঠিক পারবো... এখন তো ঠিকই আছি... তোকে ভাবতে হবে না... তুই এখানে রেখে যা তো...’ তাকে তাড়াবার জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠে পৃথা।

‘ঠিক আচে, খাও তাহলে, আমি তাহলে এখানে তোমার কাচেই বসি... কেমন...’ বলে চেয়ারটা টেনে বসার উদ্যগ করে কাজল।

ওকে বসতে দেখে ব্যস্ত হয়ে ওঠে পৃথা, ‘আরে না, না, তোকে এখানে বসতে হবে না, তুই গিয়ে বরং খেয়ে নে... আমি ঠিক খেয়ে নিতে পারবো...’

‘ঠিক আচে তো, তুমি নিজেও খাও না, আমি সুদু একানে বসে থাকবো...’ বলে সত্যিই বসে পড়ে সে চেয়ারের ওপরে।

‘না, না, আমি একাই খাবো... আসলে কেউ সামনে থাকলে আমার খেতে ভালো লাগে না... তুই বরং এখন গিয়ে তোর খাবারটাও খেয়ে নে...’ আপ্রাণ কাজলকে ঘর থেকে তাড়াবার চেষ্টা করে পৃথা... মনে মনে ভাবে, ‘উফ্‌ কি জ্বালা, প্রণববাবু কি বাঁশটা আমাকে দিয়ে গেল... দিব্বি একা ছিলাম...’

‘সত্তি থাকবো না?’ যেতে ঠিক যেন মন চায় না কাজলের... ‘তোমার খাওয়া হলে ডেকো তা হলে... তোমাকে অসুদ দিতে হবে...’

‘হ্যা, হ্যা, আমি ডাকবো তোকে... চিন্তা করিস না অত... যা, তুইও গিয়ে খেয়ে নে...’ বলে ওঠে পৃথা।

অনিচ্ছা সত্ত্যেও চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায় কাজল, তারপর আরো একবার পৃথার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘অসুবিধা হলে ডেকো... কেমন...’

মাথা নাড়ায় পৃথা, ‘হ্যা, হ্যা, একটু অসুবিধা হলেই ডাকবো তোকে... চিন্তা করিস না...’

‘কিন্তু তুমি নেমন্ত বাড়ী গিয়ে সবার সামনে কি করে খাও?’ ফের প্রশ্ন করে কাজল।

‘না, মানে সেটা তো নিমন্ত্রন বাড়ী, তাই বাধ্য হয়েই সবার সামনে খাই আর কি, এখানে তো একা, তাই একা একা খেতেই ভালো লাগে...’ আপ্রাণ বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘তোমার মায়ের সামনেও তুমি খাও না? ওকানেও বাড়িতে একা একা খাও?’ ফের জিজ্ঞাসা করে কাজল।

‘হ্যা রে, বাড়ীতেও আমি একাই খাই... মায়ের সামনেও খাইনা...’ বাধ্য হয়েই মিথ্যা বলতে হয় পৃথাকে... অথচ সে এখনও এত বড় বয়সেও মায়ের হাত থেকে খেতে পারলে সব থেকে বেশি খুশি হয়।

‘ওওও...’ বলে ব্যাজার মুখ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় কাজল... ঠিক দরজার কাছে পৌছে একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে বলে, ‘কোন অসুবিধা হলে ডেকো কিন্তু দিদিমনি... আমি রান্নাঘরেই আচি... কেমন?’

মাথা নেড়ে হ্যা বলে পৃথা... কাজলও আর কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। একটা বড় হাঁফ ছাড়ে পৃথা।

ট্রে’টাকে একটু সরিয়ে রেখে চাপা গলায় বলে ওঠে পৃথা, ‘নাও, এবার খেয়ে নাও...’

‘আমার তোমার সামনে খেতে অস্বস্তি হবে তিতির, তুমি বরং খেয়ে নাও, আমি পরে খেয়ে নেবো...’ আরো একবার বোঝাবার উদ্দেশ্যে বলে অর্নব।

‘এই লোকটা কিছুতেই শোনে না তো...’ বলে চুপ করে পৃথা... সেও বোঝে যে তার সামনে কেন অর্নব খেতে চাইছে না... এই রকম একটা শূন্যের মধ্যে খাবারগুলো ঢুকে যেতে দেখলে ওর অদ্ভুত লাগতে পারে, আর সেই জন্যই অর্নবের এত অনিহা ওর সামনে খেতে। তাই শেষে ও বলে, ‘ঠিক আছে, তোমাকে আমার সামনে খেতে হবে না, এক কাজ কর, আমি ট্রে’টাতে তোমার স্যুপটা আমার পাশে দিয়ে দিচ্ছি... আর আমি তোমার দিকে পেছন করে বসছি... তুমি খাও, আমি তাকাবো না... তাহলে হবে তো?’

আর কিছু বলে না অর্নব... পৃথাও বোঝে এতে কাজ হয়েছে... নিজের বুদ্ধিমত্তায় মুচকি হাসে সে... তারপর নিজের স্যুপের বোউলটা আর দু-পিস টোস্ট তুলে নিয়ে ট্রে’টাকে ওর একটু পেছন দিকে ঠেলে দেয়। মন দেয় নিজের খাবারে... একটু পর কানে আসে বোউলের সাথে চামচের টুংটাং আওয়াজ। মনটা খুশিতে ভরে ওঠে তার।
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#46
২২।


‘কাল তাহলে সকাল সকালই চলে আসিস...’ ঘরের মধ্যে কাজল ঢুকতে বলে ওঠে পৃথা।

‘তুমি কাল আপিস যাবে?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে কাজল।

‘হ্যা রে... যেতে তো হবেই... আজ তো কামাই হয়ে গেল অফিসটা।’ উত্তর দেয় পৃথা।

‘কটার সময় বেরোও?’ জিজ্ঞাসা করে কাজল।

‘আমি তো মোটামুটি আটটা সোয়া আট্টার মধ্যেই বেরিয়ে যাই... কেন রে?’ জানতে চায় পৃথা।

‘না, তাহলে আমি ছ’টার মধ্যেই চলে আসবো... কেমন? তাতে হবে না?’ জিজ্ঞেস করা কাজল।

‘হ্যা, হ্যা... ছ’টার মধ্যে এলেই এনাফ... ঠিক আছে তাই আসিস... আয় তাহলে এখন...’ উত্তর দেয় পৃথা।

তবুও চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে কাজল।

‘আর কিছু বলবি?’ বালিশ থেকে মাথাটা একটু তুলে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘না, মানে, বলছিলাম...’ বলে একটু চুপ করে... তারপর একটু ভেবে নিয়ে বলে, ‘আমি আজকে দুপুরটা থেকেই যাই না দিদিমনি...’ বলে ওঠে কাজল।

‘কেন রে? কি দরকার তোর থাকার আবার?’ অবাক হয় পৃথা।

‘না, মানে তোমার সলিলটা এতোটা খারাপ... সেকানে তোমাকে একা রেকে যেতে মন চাইচে না...’ কাজলের মুখের মধ্যে সত্যিকারের উদবেগের ছায়া দেখে পৃথা... ভালো লাগে ওর এই ধরণের মানবিকতার প্রকাশে।

হেসে বলে সে, ‘দূর পাগলী... সামান্য তো জ্বর হয়েছে... এত চিন্তা করছিস কেন... আমি ঠিক পারবো...’ মনে মনে বলে আমার সাথে তোর দাদাবাবু আছে, তোর আর কিসের চিন্তা কাজল... সেই আমাকে সামলে রাখবে।

‘দেকো... আমি আর কি বলবো... আচ্চা... সোনো... আমি মুর্গির ইস্টু করে রেকে গেলাম... মোটামুটি দু-বেলাই হয়ে যাবে তোমার... একটু বেসি করেই করেচি... রাতে একটু গরম করে নিও... নাকি একবার আসবো সন্দের দিকে? এসে খাবার গরম করে দিয়ে যাবো... বলো... আমি কিন্তু কাচেই থাকি... বললে এসে যাবো... আমার কোন অসুবিদা হবে না...’ গড়গড় করে বলে থামে কাজল।

‘না রে বাবা, তোকে আর আসতে হবে না... আমি ঠিক করে নেবো... তুই পালা এখন...’ বলে পৃথা।

‘আচ্চা... তাহলে আসি...’ বলে চলে যেতে উদ্যত হয়... তারপর আবার কি ভেবে বলে ওঠে, ‘আরে তুমি আমার নাম্বারটাই তো নাও নি... ওটা নিয়ে নাও... অসুবিদা হলেই একটা ফোন করে দেবে, দেখবে তোমার কাজল ঠিক এসে গেচে...’ মুখে হাসি নিয়ে বলে ওঠে।

‘হ্যা, ভালো মনে করিয়েছিস... তোর নাম্বারটা বলতো...’ বলে নিজের মোবাইলটায় কাজলের নাম্বারটা সেভ করে নেয় পৃথা।

অনেক অনিচ্ছা নিয়ে বেরিয়ে যায় কাজল, যাবার সময় বাইরের দরজা টেনে দিয়ে যেতে ভোলে না, একবার শুধু গলা তুলে বলে যায়, ‘পরে পারলে উঠে দরজা বন্ধ করে দিও দিদিমনি... আমি শুধু টেনে দিয়ে গেলাম...’ ইয়েল লক থাকার ফলে সে নিয়ে চিন্তা নেই পৃথার।

‘বেলা অনেক হয়েছে... এবার উঠে স্নানটা করে নাও... এর পর করলে কিন্তু ঠান্ডাটা আবার লেগে যাবে...’ পৃথার কানে আসে একদম পাশ থেকে অর্নবের গলা।

হাসি মুখে মুখ তুলে তাকায়... ‘কেন, স্নানটা করিয়ে দেবে?’

‘না, মানে সেটা বলি নি...’ অপ্রস্তুত জবাব অর্নবের... ‘বারোটা বাজতে যায়... এর পরে স্নান করা উচিত নয়, তাই বলছিলাম...’

‘জানি... কিন্তু উঠতে ইচ্ছা করছে না... মাথাটা এখনও বেশ ভার, জানো...’ জানায় পৃথা।

‘তবুও, দেখো... স্নান করলে একটু ভালো লাগবে... আমি গিজারটা চালিয়ে দিয়েছি... মাথায় জল দিও না, একটু গায়ে জলটা দাও... ফ্রেশ লাগবে...’ বলে ওঠে অর্নব।

‘বাব্বা... অনেক কিছুই জানো দেখছি?’ হেসে বলে পৃথা।

‘একটু তো জানতেই হয়... এতদিন তো নিজেকেই নিজে দেখাশোনা করতে হতো...’ অর্নব বলে।

‘ইশ... সত্যিই... একলাটি কি ভাবে থাকতে বলোতো...’ মুখটা করুন হয়ে ওঠে পৃথার।

‘খারাপ কি? একাই রাজা ছিলাম ঘরে... যেমন খুশি তেমনিই থাকতাম...’ হাসির আওয়াজ আসে।

‘ও... আচ্ছা... আমি এসে খুব অসুবিধা করে দিয়েছি, না?’ ছদ্ম রাগ প্রকাশ পায় কথায়।

‘আমি কি তা বলেছি?’ তাড়াতাড়ি সাফাই গায় অর্নব।

‘বললেই তো... একা রাজা ছিলে ঘরে... যা খুশি তাই করতে পারতে... এখন আমি আসাতে নিশ্চয়ই খুব অসুবিধা হয়ে গেল...’ কথার প্রসঙ্গে জবাব দেয় পৃথা।

‘আচ্ছা, আচ্ছা, হয়েছে... আমার বলা অন্যায় হয়েছে... আর একটা নিয়ে ঝগড়া করতে হবে না...’ কথা ঘোরাবার প্রয়াশ করে অর্নব।

‘ও... মানে আমি ঝগড়ুটে... এটাই বলতে চাইছ তো?’ অন্য ভাবে চেপে ধরার চেষ্টা করে পৃথা।

‘যা বাব্বা... সেটা আবার কোথায় বললাম?’ গলার স্বরে কাঁচুমাচু হয়ে ওঠার ভাব।

‘এই তো বললে আমি ঝগড়া করছি...’ চোখ পাকিয়ে শূন্যের পানে তাকিয়ে বলে পৃথা।

‘চলো... এতক্ষনে কিন্তু বাথরুমে জল রেডি হয়ে গেছে... এবার যাওয়া উচিত...’ পৃথার কথার উত্তর না দিয়ে বলে ওঠে।

‘ইশ... তুমি আমায় স্নান করিয়ে দেবে নাকি?’ পৃথার গালের ওপরে লালিমার আভা খেলে যায় চকিতে।

‘না, না, আমি তা বলি নি, আমি শুধু তোমাকে বাথরুম অবধি এগিয়ে দিতে চেয়েছি...’ বলে ওঠে অর্নব।

‘কেন? স্নান করিয়ে দিলেই বা কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে শুনি?’ ঘাড় বেঁকিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘এ বাবা, সে কি করে হয়... আমি তোমাকে বাথরুমে পৌছে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করবো...’ ফের আত্মপক্ষ রক্ষা করার চেষ্টা করে অর্নব।

‘কেন, আমি বললেও স্নান করিয়ে দেবে না?’ মিচকি হেসে প্রশ্ন করে পৃথা, বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায় বিছানা ছেড়ে... কিন্তু দাঁড়াতেই মাথাটা একটু টলে যায় যেন।

একটা অদৃশ্য বলিষ্ঠ হাত এসে পৃথার বাহু ধরে ফেলে... পৃথা আস্তে করে হেলে যায় হাতটাকে আন্দাজ করে... দেহটা গিয়ে সাহারা পায় চওড়া একটা প্রসস্ত লোমশ বুকের ওপরে... মুখের হাসিটা আরো চওড়া হয় তার। অদৃশ্য হাতটা তার দেহটাকে বেড় দিয়ে ধরে রাখে, যাতে কোনভাবে পড়ে না যায় পৃথা।

হটাৎ করে ঘুরে দাঁড়ায় পৃথা... দুহাত দিয়ে না দেখা শরীরটাকে হাতের বেড়ে আঁকড়ে ধরে মুখটা গুঁজে দেয় ওই লোমশ নগ্ন বুকটার মাঝে... মুখ ঘষে লোমশ বুকটায় মেঝের ওপরে দাঁড়িয়ে... তার হাতটা ঘুরে বেড়ায় চওড়া না দেখা পীঠের ওপরে... পেশল বুকের একটু নীচেই চেপে বশে পৃথার পরনের টি-শার্টটার নিচে থাকা ব্রা-হীন নরম গোলাকার দুটো মাংশপিন্ড... চকিতে যেন আপন উত্তেজনায় বেড়ে উঠতে থাকে বুকের বোঁটাদুটো।

‘চলো... এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে?’ ফিসফিসিয়ে তাড়া দেয় অর্নব... অস্বস্তি হয় তার পৃথার শরীরটার নিজের দেহের সাথে লেগে থাকার ফলে... শরীরের ওপরে ওই নরম দুটো বুকের সংস্পর্শে এসে।

‘উম্‌, কি ভালো যে লাগছে...’ বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে জানায় পৃথা। পীঠের ওপর থেকে ডান হাতটাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে তুলে দেয় ওপর দিকে, অর্নবের মুখ লক্ষ্য করে, হাতটা ঠেকে দাড়ির জঙ্গলের ঢাকা গালের ওপরে... সেই দাঁড়ির জঙ্গলের ওপরেই হাত বোলাতে বোলাতে আদুরে গলায় বলে ওঠে পৃথা, ‘অর্নব, আমায় একটু আদর করবে? ভিষন আদর খেতে ইচ্ছা করছে তোমার কাছে... করো না...’ বলতে বলত নিজের শরীরটাকে আরো বেশি করে চেপে ধরে সামনের অদৃশ্য দেহটার সাথে, নরম বুকদুটো আরো চেপে বসে সুঠাম পেটের ওপরে। নিজের তলপেটের ওপরে ছোঁয়া লাগে জড়িয়ে থাকা দেহটার দুই পায়ের ফাঁকে ঝুলতে থাকা একটা বিশেষ অঙ্গের সাথে... তলপেটটাকে আরো চেপে ধরে সে... পীঠের ওপর থেকে বাঁ হাতটাকে সরিয়ে নিয়ে এসে রাখে সুঠাম একটা নগ্ন নিতম্বের ওপরে... পরশ পায় সেখানেও লোমের আধিক্যের।

পৃথার বাহুদুটো ধরে সবল হাতে টেনে নিজের শরীর থেকে আলাদা করে দেয় অর্নব... ‘না তিতির না, এ হয় না... এটা হতে পারে না... তুমি যা চাইছ সেটা কখনো, কোনদিনও হবার নয়... প্লিজ, ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড...’ প্রায় হাঁফাতে থাকে অর্নব... নিজেই বুঝতে পারে আর একটু হলেই নিজের শরীর তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে শুরু করে দিত... তখন কি ভাবে সামলাতো নিজেকে? কি করে পারতো এই অসীম হাতছানী উপেক্ষা করতে?

‘কেন হয় না অর্নব? হোয়াই?’ করুন চোখে মুখ তুলে তাকিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা... এই ভাবে তাকে টেনে আলাদা করে দেওয়ার ফলে আহত হয় তার মনটা... নিথর হয়ে তার দেহের দুই পাশে ঝুলতে থাকে হাত দুটো।

‘দোহাই তিতির... একটু বোঝার চেষ্টা করো... আমি আগেও বলেছি... তুমি যে ভাবে আমাকে চাইছ, সে ভাবে তোমার কাছে যাবার ক্ষমতা আমার নেই... আমি যে দেহ-হীন... আমার কোন অস্তিত্বই যে নেই... সেটা কি তুমি বুঝতে পারছ না?’ বোঝাবার আকুল চেষ্টা করে অর্নব। ‘কি বলবে লোককে? কি বলবে তোমার বাবা মা কে? একটু বোঝার চেষ্টা করো তিতির, আমি যে থেকেও নেই... কেউ মেনে নিতে পারবে না আমাদের মধ্যের সম্পর্ক... আর তোমার জীবনটাকে আমি এই ভাবে নষ্ট হয়ে যেতে দিতে পারি না... কখনই না...’

‘আমায় ভালোবাসো না অর্নব? আমি তোমার ভালোবাসা পাবার যোগ্য নই?’ ভেজা চোখে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘ভালোবাসলেও আমি কিছু করতে পারি না তিতির... আমি মনে প্রাণে চাইলেও অপারগ... আমি যে অদৃশ্য... নিরাকার... সেখানে তোমায় কি করে এই ভূল সম্পর্কের মধ্যে রাখি বলো... এর থেকে তুমি বরং একটু নিজেকে সামলে রাখার চেষ্টা করো... দেখো, আসতে আসতে সব ঠিক হয়ে যাবে... তোমার এত ব্রাইট ফিউচার... সেখানে আমার মত একটা লোকের সাথে জড়িয়ে নিজের জীবনটাকে কেন নষ্ট করবে তুমি?’ গাঢ় গলায় বোঝাবার চেষ্টা করে অর্নব।

হটাৎ মাথাটা জ্বলে ওঠে পৃথার... শরীরটাকে ঝটকা দিয়ে অর্নবের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয় সে... আর এই ভাবে শরীরে ঝাকুনি লাগতে নিজের মাথাটা বোঁ করে ঘুরে যায়... টলে ধপ করে পড়ে যায় বিছানার ওপরে... প্রায় চিৎ হয় পড়ে...

ওকে এই ভাবে পড়ে যেতে ভয় পেয়ে যায় অর্নব, তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এসে ওর কাঁধের ওপরে হাত রাখে... শরীরে অর্নবের স্পর্শ পেতে আরো যেন তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে পৃথা... হাতের ঝটকায় কাঁধের ওপরে থাকা অদৃশ্য হাতটাকে সরিয়ে দিয়ে চোয়াল চেপে বলে ওঠে, ‘ডোন্ট... ডোন্ট টাচ্‌ মী... আই ডোন্ট রিকোয়াএর এনি অফ ইয়োর কনসার্ন... লীভ মী... লীভ মী অ্যালোন... বলে বিছানায় উপুড় হয়ে যায়... মুখটা গুজে রাখে বিছানার নরম তোষোকের মধ্যে... বড় বড় শ্বাস নিতে থাকে সে।

আবার পৃথার পীঠের ওপরে আলতো করে হাত রাখে অর্নব... ‘প্লিজ তিতির... রাগ কোরো না... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... আমি যেটা বলছি...’

শেষ করতে দেয় না অর্নবের কথার... মুখটাকে ঘুরিয়ে ঝাঁঝিয়ে ওঠে শূণ্যের পানে তাকিয়ে... ‘বললাম তো... আই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি অফ ইয়োর কনসার্ন... প্লিজ লীভ মী অ্যালোন...’ বলে ফের মুখটা গুঁজে দেয় বিছানায়।

‘কেন এমন ছেলেমানুষি করছ তিতির... আমি পারলে কি তোমার মত এমন একটা মিষ্টি মেয়েকে ফিরিয়ে দিতাম বলো... তোমার মত একটা মেয়েকে জীবনে পাওয়া তো স্বপ্নের ব্যাপার... কিন্তু কি করবো বলো... ইচ্ছা থাকলেও তো সব কিছু জীবনে পাওয়া সম্ভব হয় না... কিছু কিছু জিনিস কষ্ট হলেও মেনে নিতে হয়... ভাবো না আমার সাথে তোমার কোনদিন দেখাই হয় নি... একটা ফাঁকা ফ্ল্যাটে রয়েছ তুমি... যেখানে আমার কোন অস্তিত্বই নেই... দেখবে অনেক সহজ হয় যাবে পুরো ব্যাপারটা... আসলে...’

অর্নবের কথার ফাঁকেই ঘুরে উঠে বসে পৃথা... ওকে উঠে বসতে দেখে চুপ করে যায় অর্নব... মুখ তুলে একটুক্ষন চুপ করে তাকিয়ে থাকে নির্নিমেশ... তারপর হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে... ‘আমি জানি কেন তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারছো না... আসলে তুমি ভাবছ আমি খুব খারাপ একটা মেয়ে... তাই না... একটা বাজে, নষ্ট মেয়ে... আমি জানি দ্যাট ডে আই হ্যাড কনফেসড এভ্রিথিং টু ইয়ু, আন্ড ইয়ু নো নাউ মাই ডার্ক সাইড... আই অ্যাম আ ব্যাড গার্ল টু ইয়ু... আ স্লাট... ইস ইন্ট ইট... ইয়ু থিঙ্ক আই অ্যাম আ স্লাট... আ রটন পার্সন... দ্যাটস হোয়াই ইয়ু কান্ট লাভ মী... ইয়ু হেট মী অ্যাকচুয়ালি... আই ডোন্ট ডিসার্ভ ইয়োর লাভ...’ বলতে বলতে আরো হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে পৃথা... কাঁদতে কাঁদতে ফের গড়িয়ে পড়ে বিছানার ওপরে... বেঁকে চুড়ে পড়ে থাকে দেহটা বিছানায়... কান্না দমকে ফুলে ফুলে উঠতে থাকে তার নরম কোমল শরীরটা।

পৃথার পাশে বিছানার খালি জায়গাটায় অর্নব বসে জোর করে টেনে নেয় নিজের বুকের মধ্যে... দুহাতে আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে ফোঁপাতে থাকা দেহটা... ওর লোমশ বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে কেঁদে চলে পৃথা... ‘আমি খুব খারাপ... আমি জানি আমি খুব খারাপ... আমি ভার্জিন নই... সেটা তুমি জেনে গেছ... আর তাই আমাকে আর তোমার করে নিতে পারছো না... আমি আর কক্ষনো তোমার হতে পারবো না...’

পৃথাকে শক্ত করে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে ওর এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুলের ওপরে চুমু খায় অর্নব... তারপর খানিকটা সময় চুপ করে নিজের মুখটা ওর মাথার মধ্যে ডুবিয়ে রেখে অপেক্ষা করে কান্নাটা একটু স্তিমিত হবার... তারপর যখন বোঝে যে পৃথার কান্নাটা একটু ধরে এসেছে... তখন শান্ত গলায় বলে, ‘তুমি এত বোকা মেয়ে, তা তো জানতাম না... আমি তো ভেবেছিলাম খুব সাহসী একটা মেয়ে... কিন্তু এখন তো দেখছি একেবারে বাচ্ছা তোমার ভেতরটা... এই মানসিকতায় একটা অচেনা অজানা শহরে এলে কি করে? হু?’

আস্তে আস্তে নিজেও দুহাতের বেড়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবকে পৃথা... ওর বুকের মধ্যে মুখ রেখে ছোট্ট করে বলে, ‘জানি না...’

‘বোকা মেয়ে... আমি বলেছি তুমি বাজে, তুমি খারাপ? হু?’ মাথার চুলের মধ্যে বিলি কেটে দিতে দিতে শান্ত গলায় বলে অর্নব... ‘আচ্ছা আমাদের দুজনের বয়শের ডিফারেন্সটাও দেখবে না... আমার মত একটা বুড়োর সাথে নিজের জীবনটা জড়াবে? সেটা কি ঠিক?’

অর্নবের বুকের ওপর থেকে মুখ তোলে পৃথা... তুলে তাকায় ওপর পানে... ওই কান্না ভেজা চোখেও ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে তার... ‘তুমি বুড়ো? হি হি...’ বলে ফের মুখটা গুঁজে দেয় অর্নবের পেশল বুকের মধ্যে... অস্ফুট স্বরে বলে, ‘কে বলে তুমি বুড়ো?’ বলতে বলতে দুহাতের বেড়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের শরীরটাকে... এবার আর বাধা দেয় না অর্নব... শরীরের ওপরে নরম দুটো মাংসপিন্ডের ছোঁয়া পেতেও।

‘বুড়ো নই? তোমার সাথে আমার বয়সের কত ফারাক তোমার খেয়াল আছে? শুধু ওই ছবিতে আমাকে দেখলেই হবে? ওটা কত বছর আগের তোলা... তারপর কতগুলো দিন... মাস... বছর পেরিয়ে গিয়েছে সেটা জানো তুমি... আজ প্রায় পঞ্চাশের কোঠায় আমি... তোমার বয়সের ডবলেরও বেশি... সেখানে কি করে তোমার জীবনটাকে আমি জেনে শুনে নষ্ট করতে পারি? বলো তো?’ পৃথার চুলে বিলি কাটে অর্নব।

‘আমার বুড়ো আমার কাছে... তোমাকে কে এত মাথা ঘামাতে বলেছে শুনি?’ অর্নবের বুকের মধ্যে গুনগুনিয়ে ওঠে পৃথা... লম্বা শ্বাস টেনে অর্নবের গায়ের পুরুশালী গন্ধ নেয় সে... অনেকটাই এতক্ষনে সামলে নিয়েছে সে নিজেকে... অর্নবের বুকের ওপরে মাথাটা রাখার পরে অভিমানটাও এখন আর নেই।  

‘এটা কিন্তু তোমার পাগলামী...’ গাঢ় গলায় বলে অর্নব।

‘আমার পাগলামী... তোমার তাতে কি?’ ফিসফিসায় পৃথা, অর্নবের বুকের লোমের ওপরে এঁকে দিতে থাকে ছোট ছোট চুম্বন।

নিজের বুকের ওপরে পৃথার তপ্ত ঠোঁটের ছোয়ায় শরীরটা সিরসির করে ওঠে অর্নবের। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রাখে সে... ‘বাহ... আমাকে নিয়ে ঘটনা, আর আমার কিছু নয়? এ কেমন কথা? আর তাছাড়া তুমি আমাকেই বা কতটুকু চেন? বলো? আমার শরীরের কথা, বয়সের কথা, সব না হয় ছেড়েই দিলাম, কিন্তু কতদিন আর তুমি আমাকে চিনেছ? কিছুই না... শুধু ওই প্রণবের কিছুক্ষনের কথাতেই আমাকে চিনে গেলে? আমিও তো একটা বাজে, খারাপ লোক হতে পারি? আগে সেটা জানতে চাইবে না? একটা ছবিতে আমাকে দেখে আর প্রণবের কথা শুনেই আমাকে ভালোবেসে ফেললে? এত বোকামী কেউ করে? আমি তো তোমার ক্ষতিও করতে পারি? সেটা ভাববে না?’

অর্নবের কথা শুনে ওর থেকে ঝট করে আলাদা হয়ে বসে পৃথা... মুখ তুলে হি হি করে হাসতে শুরু করে সে... ওর এই ব্যবহারে অবাক হয়ে প্রশ্ন করে অর্নব, ‘কি হলো... এত হাসার কি হলো এতে? আমি আবার হাসির কথা কি বললাম?’

হাসতে হাসতেই মাথা নাড়ে পৃথা, হাসি মাখা মুখে বলে, ‘হাসবো না... জোক অফ দ্য ইয়ার...’ বলে আরো হি হি করে হাসতে থাকে... হাতের পীঠ দিয়ে জমে থাকা চোখের জলটুকু মুছে নেয় সাথে সাথে।

‘আশ্চর্য তো... হেসেই চলেছে... কি ভুলটা বললাম আমি?’ ফের প্রশ্ন করে অর্নব।

এবার হাসিটা থামায় পৃথা, মুখটাকে খানিক তুলে তাকিয়ে থাকে শূণ্যের পানে, যেখানে অর্নবের অদৃশ্য দাড়ি গোঁফে ভরা মুখটা বর্তমান... ‘মশাই... আমি মেয়ে... একটা ছেলে সে কতটা ভালো আর কতটা খারাপ... সেটা আমরা অনেক আগেই বুঝে যাই... বুঝেছেন?’

‘সে তো বুঝলাম... কিন্তু তুমি আমাকে দেখেছ কোথায় যে আমার সম্বন্ধে তোমার এত বড় ধারণা হয়ে যাবে? হু? দেখেছ তো ওই ছবিটায় শুধু... তাও সেই কত বছর আগের তোলা... আর তাছাড়া এতদিনে ওই ছেলেটা একটা শয়তান লোকে পরিণত হয়ে ওঠে নি, সেটাই বা কি করে এত জোর দিয়ে বলছ?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

এবার আসতে আসতে পৃথার মুখটা সিরিয়াস হয়ে ওঠে যেন... ধীর কন্ঠে বলে, ‘যে লোকটা একটা মেয়েকে একদম ফাঁকা ফ্ল্যাটের মধ্যে দিনের পর দিন পেয়েছে... পেয়েছে সেই মেয়েটিকে একেবারে অসহায় অবস্থায়, এমন কি সময় সময় মেয়েটি ছিল একেবারে নগ্ন... আবার কখন সে ছিল নেশায় ডুবে... কিন্তু সেখানে কখনও, কোন অবস্থাতেও, একবারের জন্যও তার এতটুকু ক্ষতি করার চিন্তাও করেনি, একবারের জন্যও ছুঁয়েও দেখেনি... সুযোগ নিতে কাছে আসে নি... তাকে শয়তান বলবো? তাকে... তাকে বিশ্বাস করব না?’ বলে থামে সে... গভীর দৃষ্টি ফেলে শূণ্যের পানে... তারপর মুখটাকে ফের গুঁজে দেয় অর্নবের বুকের মধ্যে... লোমশ বুকে মুখটাকে বারে বারে ঘষতে ঘষতে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘আমি যে সেই লোকটাকে আমার নিজের থেকেও বেশী বিশ্বাস করি গো... বোঝ না?’

অর্নবের মুখ থেকে কথা সরে না আর... কি বলবে সে? আর কি ভাবে বোঝাবে এই পাগলী মেয়েটাকে? কি ভাবে নিরস্ত্র করবে তার জীবনের সাথে জড়িয়ে না ফেলতে... সেও যে অস্বীকার করতে পারে না যে নিজেও কখন মনটা দিয়ে ফেলেছে এই মিষ্টি মেয়েটাকে... কিন্তু ভেবেছিল সেটা লোকানোই থাকবে শুধু তার নিজের ভেতরে... প্রকাশ্যে আসবে না কখনও... কিন্তু এই মেয়েটা তার সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে... কিছুতেই পারছে না নিজেকে সরিয়ে রাখতে মেয়েটির থেকে...

দুজনে দুজনকে চুপচাপ জড়িয়ে ধরে বসে থাকে... ঘড়ির কাঁটা সরে যায় টিকটিক শব্দ করতে করতে... দুটো শরীর যেন একে অপরের সাথে ছুঁয়ে থেকে নিশব্দ আলোড়নহীন তাদের ভালোবাসার আদানপ্রদানে ব্যস্ত হয়ে থাকে... ধীরে ধীরে অর্নবের একটা হাত উঠে এসে থামে পৃথার পীঠের ওপরে... আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে বুকের মধ্যে থাকা পৃথাকে... টেনে নেয় নিজের বুকের মধ্যে আর একটু ভালো করে... পৃথাও হারিয়ে যায় অর্নববের বুকের মধ্যে অক্লেশে... পরম আবেশে।
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
#47
২৩।।

‘তিতির...’ কিছু বলতে শুরু করেছিল অর্নব, কিন্তু তার আগেই ঝটিতে বুকের মধ্যে থেকে উঠে বসে পৃথা... হাত তুলে চেপে ধরে অর্নবের নিরাকার মুখটাকে... ‘ব্যস... আর একটাও কথা নয়... যা সংশয় ছিল তোমার মনের মধ্যে, আজ সেটার সব কিছু দূর হয়ে গেছে... আর নতুন করে তোমাকে ভাবার সুযোগ দেবো না আমি... দেবো না কোন সুযোগ নতুন করে আমাকে তোমার হতে বাধা দেবার... আমি তোমার... শুধু তোমার... আর এটাই শেষ কথা... শুধু আমার নয়, আমাদের, তোমার আর আমার, দুজনেরই... বুঝেছে...’ বলতে বলতে চোখদুটো চকচক করে ওঠে পৃথার নিরন্তর ভালোবাসায়।

আর কিছু বলার চেষ্টাও করে না অর্নব, সে বুঝে গেছে, এই মেয়েকে আর বুঝিয়ে লাভ নেই... এ মেয়ে তার হওয়া থেকে কিছুতেই বিরত থাকবে না, তা সে যতই ব্যাপারটা অস্বাভাবিক আর অবাস্তব হোক না কেন... এ মেয়ে নিজের মন প্রাণ সব কিছু তার কাছে সমর্পণ করে বসে আছে, একে ফেরানোর সাহস বা শক্তি, কোনটাই আর তার নেই। চেষ্টার তো কসুর করে নি, কিন্তু আজ নিজের কাছেই হেরে গিয়েছে সে।

‘এই... কি ভাবছ?’ অর্নবের মুখ থেকে হাত নামিয়ে তার বাহু ধরে নাড়া দেয় পৃথা... ‘চুপ করে গেলে যে?’

‘যা বাব্বা, তুমিই তো চুপ করে থাকতে বললে, মুখ চেপে ধরলে যাতে না কিছু বলি...’ বলে হাসে অর্নব।

‘আহা, সেটা তো ওই সব উল্টো পালটা কথা যাতে না বলো, তার জন্য মুখ চেপে ধরেছিলাম, অন্য কথা বলতে কি বারণ করেছি আমি?’ গাঢ় স্বরে বলে পৃথা।

‘আমার যে সমস্ত কথা গুলিয়ে গেছে তিতির... কি যে বলবো, বুঝে উঠতে পারছি না...’ বলে ওঠে অর্নব... হাত বাড়িয়ে পৃথার ঝাঁকড়া চুলগুলোকে গোছা করে মাথার পেছনদিকটায় ধরে একটু নাড়িয়ে দেয়।

‘আহহহহ...’ কঁকিয়ে ওঠে পৃথা।

থতমত খেয়ে যায় অর্নব... তাড়াতাড়ি পৃথার চুলের গোছাটা ছেড়ে দিয়ে বলে, ‘লাগলো তিতির?’

‘হুম...’ মাথা হেলিয়ে উত্তর দেয়ে পৃথা, ‘মাথার ভেতরটা ঝনঝন করে উঠল যেন...’

‘ইশ... ছি ছি... আমার একদম খেয়াল ছিল না... সরি, এক্সট্রীমলি সরি... তোমার এখন দুর্বল শরীর... এই ভাবে চুল ধরে নেড়ে দেওয়া উচিত হয় নি...’ বিনীত গলায় ক্ষমা চায় অর্নব।

‘অত বিনয় দেখাতে হবে না মশাইকে... একটু চুল ধরে নেড়েছ তো কি হয়েছে?’ নিজেই চোখ পাকায় পৃথা। তারপর কি ভেবে বলে, ‘তবে জানো, মায়ের মুখে শুনেছিলাম মেয়েদের চুলের মুঠি ধরে টানতে নেই...’

‘তাই? কেন? কি হবে তাতে? মাথার থেকে চুল খুলে যাবে?’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব।

‘না গো, সত্যিই... মহাভারতে ছিল না, দ্রৌপদীর চুল ধরে দুঃশাসন টেনেছিল, তাই তাদের বংশ একেবারে লোপ পেয়ে গিয়েছিল... সেই জন্যই তো মা বলে, মেয়েদের চুলের মুঠি ধরে ছেলেরা টানলে নাকি ক্ষতি হয়।’

‘ইশ... তাহলে তো আরো একবার টেনে দিতে হয় দেখছি... আমার তো আর কোন বংশ নেই যে তার লোপ পাবে, যা ছিল তা তো অনেকদিন আগেই সব মুছে গিয়েছে... বাকি রইলাম আমি, সে তো তাহলে ভালোই হবে, তাড়াতাড়ি এই ধরাধাম ছেড়ে রওনা দিতে পারবো... কি বলো?’ মজা করে বলে অর্নব।

‘এ ভাবে একদম বলবে না আর... কোনদিন... খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু বলে দিলাম তাহলে...’ রেগে গিয়ে ঝেঁকে ওঠে পৃথা... হাত বাড়িয়ে দুমদুম করে কিল মারতে থাকে অর্নবের বুকের ওপরে... তাড়াতাড়ি করে অর্নব ওর হাত দুটো ধরে নেয়... বলে, ‘আচ্ছা, বাবা, আচ্ছা... বলবো না... হয়েছে?’

‘ভিষন বাজে লোক একটা... খালি বাজে বাজে কথা বলে...’ মুখটা ভার করে তোলে পৃথা।

‘ওহ! বাবা, সরি... বললাম তো... আর বোলবো না...’ পৃথার চিবুকটা ধরে নেড়ে দেয় একটু।

‘এই রকমভাবে বলার জন্য তোমায় শাস্তি পেতে হবে...’ ভুরু নাচিয়ে বলে ওঠে পৃথা।

‘বাবা... একটা কথা বলার জন্য শাস্তি... এতো দেখছি লঘু দোষে গুরু দন্ড...’ অর্নব হাসতে হাসতে বলে।

‘এই তুমি ছত্তিসগড়ের লোক না?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘হ্যা... তো? তাতে কি হলো?’ অবাক হয়ে ফিরিয়ে জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘না, তুমি এত ভালো বাঙলা প্রবাদ জানলে কি করে?’ আবার জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘আরে ছত্তিসগড়ের হলে কি হবে, আমি তো পুরোপুরিই বাঙালী... কেন আমাকে কি বিহারী ভেবেছিলে?’ হাসতে হাসতে উত্তর দেয় অর্নব।

নিজেই বোঝে একটা বোকার মত প্রশ্ন করে ফেলেছে সে, তাই লজ্জা পেয়ে যায় অর্নবের হাসিতে... ফর্সা গালটা লালের আভায় রেঙে ওঠে... ‘আহা, এত হাসার কি আছে এতে?’ বলে মাথা নিচু করে লজ্জায়।

‘বাবা, এমন একটা সাহসী মেয়ে, সে আবার লজ্জাও পায়? বাহঃ... লজ্জা পেলে তো বেশ দেখতে লাগে! এমন সুন্দর মুখের গালগুলো কেমন লাল লাল হয়ে ওঠে...’ বলে অর্নব।

অর্নবের কাছে নিজের রূপের প্রশংসা পেয়ে মনটা গলে যায় পৃথার... একটা ভিষন ভালোলাগায় ভরে ওঠে বুকের মধ্যেটায়... গালদুটোর সাথে কানের লতিতেও লালের আভা পড়ে... তাড়াতাড়ি ঝুঁকে পড়ে মুখ লুকায় অর্নবের বুকের মধ্যে... ‘ইশ... অমন ভাবে বলছো কেন...’ গলার স্বরে আদর ঝরে পড়ে তার।

অর্নব ওর ছেলেমানুষি রূপটা দেখে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের মধ্যে আরো বেশি করে, মাথার ওপরে হাত বুলিয়ে আদর করতে থাকে... অর্নবের আদরে যেন আরো গলে যেতে থাকে পৃথা ওর বুকের মধ্যে... মনে মনে ভাবে, আজ সে জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া পেয়ে গিয়েছে।

‘তিতির... এবার চলো... চানটা করে নিতে হবে তো... অনেক বেলা হয়েছে... খালি আদর খেলে হবে? চলো চলো... ওদিকে গিজার কতবার চালু হয়েছে আর বন্ধ হয়েছে কে জানে... এবার ওটা জ্বলে যাবে... দেখো...’ তাড়া দেয় অর্নব, প্রায় জোর করেই বুকের ওপর থেকে তুলে সরায় পৃথাকে।

অর্নবের থেকে সরে সোজা হয়ে বসে, বলে, ‘হ্যা, হ্যা... চলো... চানটা করে নিই... সেই তখন থেকে বলছি যে চলো... শুনছেই না লোকটা...’ হাসতে হাসতে বলে ওঠে পৃথা।

‘ওই দেখো... এ দেখি উল্টে আমাকেই ডাঁটে... নিজেই বসে বসে আদর খাচ্ছিল আর এখন আমাকেই ধমকাচ্ছে... কি মেয়েরে বাবা...’ অবাক গলায় বলে অর্নব।

‘এই লোকটা আমায় আদর করবে আর আমি আদর খাবো না? আমি কি অতই বোকা নাকি? হু?’ ঘাড় বেঁকিয়ে বলে ওঠে পৃথা, আর তারপরই পরণের টি-শার্টটার হেমটা ধরে ঝট করে মাথা গলিয়ে খুলে ফেলে গা’য়ের থেকে সেটাকে।

পৃথার কান্ড দেখে হাঁ হাঁ করে ওঠে অর্নব, ‘আরে, আরে... একি করছ...’

‘চান করবো কি জামা কাপড় পড়েই? নাকি?’ প্রশ্ন করে পৃথা।

‘ন...ন...না... মানে সেটা বলি নি... তবে... এই ভাবে... এখানেই... আমার সামনে...’ আমতা আমতা করে অর্নব... চোখের সামনে একটা তম্বী মেয়ের অর্ধনগ্ন দেহটাকে দেখে বুকের মধ্যেটায় কেমন দম আটকে আসে... ভরা দিনের আলোয় পৃথাকে এতটা সামনে থেকে এই ভাবে দেখে বুকের মধ্যেটায় ধকধক করে ওঠে হৃদপিন্ডের গতি... চেষ্টা করেও সরাতে পারে না চোখদুটোকে পৃথার শরীরটার ওপর থেকে... সত্যিই সুন্দরী... প্রকৃত সুন্দরী বলতে যা বোঝায়, ঠিক তাই... আর সেই সৌন্দর্যের সাথে যখন দূরন্ত যৌবনের সংমিশ্রণ ঘটে যায়, সেই দেহটার ওপর থেকে চোখ সরায় কি করে সে? পৃথার বুকের ওপরে থাকা স্তনদুটো যেন হাতছানি দিয়ে তাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে... ফর্সা সুগোল স্তন... বয়েসের সাথে একেবারে ঠিক পরিমাপের... আর সেই স্তনদুটোর ওপরে গাঢ় বাদামী বলয়... যার মধ্যে থেকে জাগে রয়েছে দুটো আরো গাঢ় রঙের লালচে বাদামী স্তনবৃন্ত... একেবারে সুঠাম পেট... এতটুকুও চর্বির লেশমাত্র নেই সেখানে... একটা হাল্কা লোমের আভাস স্তনবিভাজিকার মাঝখান থেকে সরাসরি নেমে গিয়েছে সেই মসৃন পেটটা বেয়ে নাভীর পানে... এত পেতে থাকা পেটের ওপরে কি সুন্দর গভীর নাভী... কিন্তু নাভীটা একটু লম্বাটে ধরণের... ঠিক গোল নয়... নাভীর নীচ থেকে ফের শুরু হয়েছে লোমের আভাসটা... তলপেট বেয়ে গড়িয়ে আরো নেমে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছে পরে থাকা সুতির পায়জামাটার কোমরের ব্যান্ডের আড়ালে... যদি ওটা না থাকতো... চমক ভাঙে পৃথার গলার আওয়াজে... তাড়াতাড়ি করে চোখ তুলে নেয় পৃথার মুখের পানে...

‘আহা... ন্যাকা... আমাকে যেন ন্যাংটো দেখেন নি উনি... এই প্রথম দেখছেন... কি লজ্জা দেখ বাবুর...’ বলতে বলতে ইচ্ছা করে নিজের যুবতী বুকদুটোকে হাতের তেলোয় নীচ থেকে কাঁচিয়ে তুলে ধরে... মুঠোর ফাঁক থেকে ফর্সা ত্বকের নরম মাংসের সাথে লালচে বাদামী রঙের শক্ত হয়ে থাকা বুকের বোঁটা দুটো উঁচিয়ে থাকে অর্নবের চোখের সামনে... হাল্কা চাপ দেয় হাতের মুঠোয় পৃথা... এই ভাবে পৃথা নিজের স্তনটাকে ধরে মর্দন করছে দেখে দম আটকে আসে অর্নবের...

‘অর্নববাবু কি চোখ বন্ধ করে নিয়েছেন, নাকি তার তিতিরের বুকের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রয়েছেন? হু?’ চোখ নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘এত সুন্দর জিনিসের থেকে কি চোখ ফেরানো যায়? সম্ভব?’ গাঢ় স্বরে উত্তর দেয় অর্নব।

‘বলছো? পছন্দ হয়েছে তাহলে?’ মুচকি হাসে পৃথা।

‘পছন্দ না হয়ে কি উপায় আছে?’ জবাব আসে অর্নবের।

‘হাত দুটো দাও...’ বলে নিজের বুকটা ছেড়ে সামনের পানে হাত বাড়ায় পৃথা... ওর হাতের মধ্যে নিজের হাতদুটো তুলে দিয়ে প্রশ্ন করে অর্নব, ‘কেন? কি করবে?’

‘দেখতেই পাবে...’ ফের চোখ নাচিয়ে উত্তর দেয় পৃথা। তারপর অর্নবের হাত দুটো টেনে এনে নিজের নরম বুকদুটোর ওপরে রাখে... কর্কশ কড়া পড়া পুরুশালী হাতের তেলোর ছোয়ায় আবেশে নিজেরই চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসে পৃথার... ‘আহহহহহ...’ মুখ দিয়ে আপনা থেকেই শিৎকার বেরিয়ে আসে তার... ভালো করে চেপে ধরে হাতের তেলোদুটোকে নিজের বুকের ওপরে... অনুভব করে এক একটা নরম মাংসপিন্ড প্রায় পুরোটাই ঢুকে গিয়েছে অর্নবের হাতের তেলোর মধ্যে... নুড়ি পাথরের মত শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে বুকের বোঁটাদুটো হাতের তেলোর মধ্যেতেই। চোখ বন্ধ করে হাতদুটোকে ঘসে নিজের বুকের ওপরে... সারা শরীরে একটা অদম্য রোমাঞ্চ খেলে বেড়ায় তার... সারা দেহ সিরসির করতে থাকে... গায়ের চামড়ায় কাঁটা দেয়... কেমন অদ্ভুত ভাবে বেঁকে যায় মুখটা, ঠোঁটদুটো ফাঁক হয়ে যায় একটু... নাক দিয়ে নয়, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেবার প্রয়োজন হয় পৃথার... বুকের ভেতরে হাজারটা দামামা বাজতে থাকে যেন... মনে হয় হৃদপিন্ডটা এবারে লাফিয়ে উঠে হয়তো মুখের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসবে... হাতদুটোকে আরো চেপে ধরে বুকের ওপরে... মাথাটা হেলে যায় পেছন দিকে খানিকটা... ঢোঁক গেলে বারে বারে...

‘কি হয়েছে?’ প্রশ্ন করে অর্নব, গলা কেঁপে যায় তারও যেন...

‘আহহহ... নাহঃ... কিছু না...’ অর্নবের প্রশ্নে মাথাটাকে আবার সামনে এনে তাকায়, কিন্তু চোখের মধ্যে যেন তখন কোথা থেকে এক রাশ কামনা এসে ভীড় করেছে... লাল হয়ে উঠেছে চোখের মণিদুটো... গলা শুকিয়ে আসে তার... ফের চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসে আরামে।

অর্নব বুঝতে পারে, আর বেশিক্ষন এই ভাবে থাকলে, দুজনেই হারিয়ে যাবে একে অপরে মধ্যে... তাই প্রায় জোর করেই বলে ওঠে, ‘এখন থাক এসব... এবার চলো...’ বলে নিজের হাতটা টেনে নেবার চেষ্টা করে।

‘নাহঃ... নাহঃ...’ অর্নব হাত টেনে নিচ্ছে বুঝে প্রায় আঁতকে ওঠে পৃথা, আরো জোরে চেপে ধরে হাতদুটোকে নিজের বুকের ওপরে... প্রায় চেপ্টে যায় হাতের চাপে বুকের নরম মাংসদুটো যেন... হাতের তালুতে ফোঁটে বোঁটাদুটো... ‘আর একটু... আর একটু থাকনা এখানে... প্লিজ...’ ফিসফিসিয়ে অনুনয় করে ওঠে পৃথা।

মেনে নেয় অর্নব... আর না মেনে উপায়ই বা কি... তারও তো অসম্ভব ভালো লাগছে পৃথার ওই নরম বুকের ওপরে হাত রেখে... যেন দুটো মাখনের তাল তার হাতের তালুর মধ্যে গলে যাচ্ছে আপন আলাপনে...

‘একটু চাপ দাও না... টেপো না এগুলোকে...’ ফিসফিসিয়ে বলে পৃথা।

মুঠো শক্ত করে একটু, চাপ দেয় নরম বুক দুটোর ওপরে... উফফফ... নিদারুন ভালো লাগায় অর্নবেরও মনটা ভরে ওঠে যেন... ইচ্ছাই করে না ছেড়ে দিতে... কত দিন... কত বছর পর এই ভাবে হাতের মুঠোয় একটা নারী শরীরের কোমল অঙ্গকে ধরল... অনুভব করে ধীরে ধীরে ফনা তুলে ধরছে তার পৌরষ... হারিয়ে যেতে থাকে সে শারিরীয় সুখের অতলে।

আকস্মাৎ, প্রায় জোর করেই হাতদুটো টেনে নেয় পৃথার বুকের ওপর থেকে অর্নব... ‘নাঃ... আর না... হয়েছে... এবার চান করতে যেতে হবে...’ বলে ওঠে সে।

‘উফফফ... কি রষকষহীন লোকরে বাবা...’ বিরক্ত হয়ে ভুরু কোঁচকায় পৃথা... পরক্ষনেই মুখ তুলে তাকিয়ে বলে, ‘এই শোনো... একবার শুধু তোমাকে এই ভাবে জড়িয়ে ধরবো... প্লিজ... প্লিজ... একবার... ভিষন ইচ্ছা করছে... প্লিজ না বোলো না... একবার... শুধু একবার... তারপর দেখো আমি বাধ্য মেয়ের মত চান করতে চলে যাবো... আর কিছু আবদার করবো না... ধরি না গো... ধরবো... ধরবো?’

পৃথার ছেলেমানুষিতে না হেসে উঠে পারে না অর্নব, আর বারণই বা করবে কি মুখে, তার মনেও যে পরম আকাঙ্খা পৃথার এই যুবতী নগ্ন দেহটাকে নিজের শরীরের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরার... পৃথার নবীন শরীরটার ওম নিজের শরীরে মেখে নেবার... মৃদু গলায় বলে, ‘আচ্ছা, এসো... কিন্তু, একটুখানিই কিন্তু...’ বলে হাত মেলে ধরে দুই ধারে।

‘হ্যা হ্যা... একবারই... বলে উঠে হাঁটুতে ভর দিয়ে এগিয়ে যায় সামনের পানে...’ চোখে না দেখতে পেলেও বুঝতে অসুবিধা হয় না পৃথার দুই ধারে মেলে রাখা অর্নবের হাতের হাতছানি। আন্দাজ করে এগিয়ে যায় সে, হাঁটু ঠেকে অর্নবের বাবু হয়ে বসে থাকা হাঁটুর সাথে। এবার সোজাসুজি উঠে দাঁড়ায় বিছানায়... ওর কান্ড দেখে অবাক হয় অর্নব, বোঝার চেষ্টা করে পৃথা কি করতে চাইছে... কিন্তু বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হয় না তাকে... পৃথা হাত বাড়িয়ে হাতড়ায় একটু... নাগালের মধ্যে পেয়ে যায় অর্নবের বলিষ্ঠ কাঁধটাকে... দুটো হাত নিয়ে দুই কাঁধের ওপরে রেখে দেহের ভরটার ভারসাম্য বজার রাখে... তারপর পা তুলে অর্নবের কোলের দুইপাশে একটা একটা করে রেখে ধীরে ধীরে বসে পড়ে একেবারে অর্নবের কোলের ওপরে, হাঁটু মুড়ে... পাতলা সুতির পাজামায় ঢাকা দুটো পুরুষ্টু মাংসল থাই চেপে বসে অর্নবের নগ্ন উরুর দুইপাশে... দুহাত দিয়ে অর্নবের বিদেহী শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে নিজের দেহটাকে সাঁটিয়ে দেয় অর্নবের লোমশ বুকের ওপরে... পৃথার নরম বুকদুটো চেপে বসে অর্নবের চওড়া ছাতির ওপরে... মুখটা গুঁজে দেয় অর্নবের ঘাড়ে... অর্নবের গালের দাড়িগুলো ঝাপটা দেয় তার মুখের ওপরে... কিন্তু সে দিকে তখন তার কোন খেয়াল নেই... সে তখন চোখ বন্ধ করে নিজের শরীরের সাথে তার একান্ত প্রিয়ের শরীরের স্পর্শ নিতে ব্যস্ত।

পৃথা এই ভাবে এসে তার কোলের ওপরে একেবারে বসে পড়বে, এটা সম্ভবত আশা করেনি অর্নব, তাই একটু সময় লাগে তার ধাতস্থ হতে... তারপর একটা সময় আসতে আসতে হাত দুটোকে দুইপাশে দিয়ে ঘিরে বেড় দিয়ে ধরে পৃথার কোমল শরীরটাকে... বুকের কাছে আরো শক্ত করে টেনে নেয়... পৌরষ তখন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে পড়েছে তার... সেই অনভিপ্রেত ঋজুতার অনুভুতি স্পর্শ করে পৃথাকেও... অনুভব করে অর্নবের পৌরষের উপস্থিতি পরণের পায়জামা ভেদ করে নরম বর্তুল নিতম্বের নীচে... অর্নবের কানের মধ্যে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে, ‘ইয়ু আর হার্ড...’

পৃথার কথা শুনে গুঙিয়ে ওঠে অর্নব... ‘আই অ্যাম অলসো ওয়েট... ডাউন দেয়ার...’ ফিসফিসিয়ে জানায় পৃথা।
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
#48
২৪।।


অর্নবের গলাটাকে বাঁহাতে পেঁচিয়ে ধরে ডান হাতটা ঘুরিয়ে পেছন দিকে নামিয়ে দেয় পৃথা... হাতের মুঠোয় ধরা পড়ে অর্নবের ঋজু পৌরষটা, যেটা এই মুহুর্তে তার নরম নিতম্বের নীচে চাপা পড়ে একটু খানি মুখ বার করে রয়েছে দুই পায়ের ফাঁকে... মুঠোর চাপ দেয় সামান্য... অনুভব করার চেষ্টা করে হাতের মধ্যে থাকা তার প্রিয়তমের কাঠিন্যটাকে।

‘উমমম... কি করছো...’ গুঙিয়ে ওঠে অর্নব এই ভাবে আকস্মাৎ আক্রমনের শিকার হয়ে... তাড়াতাড়ি হাত বাড়িয়ে পৃথার হাতটা নিজের পুরুষাঙ্গের ওপর থেকে টেনে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে... ‘বদমাইশি করে না... ছাড়ো ওটা...’

মুঠোয় ধরা পুরষাঙ্গটার মাথাটায় আঙুল বোলায় পৃথা... জোর করে ধরে রাখার চেষ্টা করে যাতে অর্নব ওর হাতটা ছাড়িয়ে নিতে না পারে... ‘উমমম... ইয়ু আর রিয়েলি হার্ড... আই লাইক ইট...’

এবারে সত্যিই জোর করেই হাতটা নিজের পুরুষাঙ্গের ওপর থেকে সরিয়ে দেয় অর্নব, বলে ‘বদমাইশ মেয়ে... অনেক হয়েছে... এবার চান করতে চলো...’

হাতটা ছাড়িয়ে দিতে তুলে নিয়ে আসে ফের ওপরে, ‘আচ্ছা, তুমি দাড়ি কামাও না কেন? তোমায় দাড়ি ছাড়া ভিষন সুন্দর দেখতে লাগে...’ ছবিতে থাকা মুখটা মনে করে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘মাথার মধ্যে এত দুষ্টুমী বুদ্ধি গজগজ করে, আর এই টুকু বুঝতে পারো না?’ হাসতে হাসতে প্রশ্ন করে অর্নব...

‘ও... আমার মাথায় খালি দুষ্টুমী বুদ্ধি দেখেছ? না?’ চোখ পাকায় পৃথা, তারপর ফের প্রশ্ন করে সে, ‘বলো না, কেন দাড়ি রেখেছ?’

‘আরে, আমি দাড়ি কামাবো কি করে? নিজেকে কি আয়নায় দেখতে পাই যে দাড়ি কাটবো? তারপর কাটতে গিয়ে একটা কেলেঙ্কারি হোক আর কি মুখটুক কেটে ফেটে... সত্যিই বাবা, মাঝে মাঝে যে কোথায় যায় তোমার বুদ্ধিগুলো কে জানে? এই জন্যই বলি, মাথার মধ্যেই দুষ্টুমীটাকে একটু কমাও...’ উত্তর আসে বিদেহী অর্নবের থেকে।

‘ওওওওও...’ মুখটাকে সরু করে বলে ওঠে সে, তারপর দুই হাত বাড়িয়ে দেয় আন্দাজ করে অর্নবের গাল লক্ষ্য করে পৃথা... হাতের নাগালে অর্নবের গালের বড় বড় দাড়িগুলো ঠেকতেই মুঠোর মধ্যে ধরে হাল্কা করে দেয় এক টান...

‘আআআ...’ ব্যাথায় কোঁকিয়ে ওঠে অর্নব... তাড়াতাড়ি হাত তুলে ছাড়িয়ে নেয় দাড়ির থেকে পৃথার হাতদুটোকে... বলে, ‘উফফফফ... কি হচ্ছেটা কি বদমাইশি... এই ভাবে কেউ দাড়ি টানে? লাগে না?’

খিলখিল করে হেসে ওঠে পৃথা... ‘বেশ করেছি... শোধ বোধ বাঘের পোঁদ...’

‘ওটা আবার কি?’ অবাক প্রশ্ন অর্নবের।

‘তখন আমার চুলের মুঠি ধরে নেড়ে দিয়েছিলে, তাই আমিও শোধ নিলাম... তাই শোধ বোধ বাঝের পোঁদ... হি হি...’ হাসতে হাসতে বলে সে।

‘এতো গুন্ডা মেয়ে... উফফফ... আগে যদি জানতাম...’ রাগ দেখায় অর্নব।

‘কি? কি? কি করতে শুনি আগে জানলে?’ চোখ পাকায় পৃথা অর্নবের গলা জড়িয়ে ধরে রেখে তার কোলের ওপরে বসে... কোমরটাকে দোলায়, আগু পিছু করে।

‘আগে জানলে এই ফ্ল্যাটে ঢুকতেই দিতাম না এই মেয়েটাকে...’ বলে অর্নব... হাত দিয়ে থামাবার চেষ্টা করে এই ভাবে কোমর দোলানোর... যে ভাবে নরম নিতম্বটা ঘসা খাচ্ছে তার পুরুষাঙ্গের ওপরে, তাতে অস্বস্থি বাড়াটাই স্বাভাবিক।

‘ইশ... না দিলেই হলো... আর তুমি দিয়েছ নাকি? আমি তো ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিয়েছি প্রণবদার কাছ থেকে... তুমি তখন কোথায় ছিলে মশাই? হু?’ অর্নবের গলা থেকে হাত নামিয়ে কোমরে রাখে পৃথা... থেমে যায় তার কোমর দোলানো।

‘বাব্বা, দেখ, একেবারে কোমর বেঁধে ঝগড়া করতে শুরু করেছে, কি ঝগড়ুটে মেয়েরে বাবা...’ ছদ্ম রাগ দেখায় অর্নব।

‘কি? আমি ঝগড়ুটে?’ বলে আবার হাত তোলে অর্নবের দাড়ি লক্ষ্য করে।

‘এই... না, না... একদম না...’ বলে তাড়াতাড়ি মুখটা পিছিয়ে নিয়ে পৃথার হাতদুটো ধরে নেয় সে।

‘তাহলে সরি বলো...’ ফের কোমরের ওপরে হাত চলে আসে।

‘ইশ... ঝগড়া করবে উনি, আর সরি বলতে হবে আমাকে...’ বলে ওঠে অর্নব।

‘ফের?’ আবার হাত তোলার উদ্যগ করে পৃথা।

‘আছা, আচ্ছা, সরি সরি... ঘাট হয়েছে’ বলে তাড়াতাড়ি ক্ষমা চায়।

‘হু হু বাবা, দেখেছ... ক্ষমা চাইতেই হলো আমার কাছে... কেমন?’ বলে অর্নবের কোলের ওপরে বসেই শরীরটাকে ফের আগুপিছু করা শুরু করে সামনে পেছনে করে... যার ফলে আবার নিতম্বের নীচে চাপা পড়ে থাকা পুরুষাঙ্গটা ঘসা খেতে থাকে পায়জামার আড়ালে থাকা পাছার দুটো দাবনার মাঝে আর ভিজে ওঠা যোনির পাপড়িগুলোতে চাপা পড়ে... নিজের শরীরের সাথে এই ভাবে দৃঢ় পুরুষাঙ্গের স্পর্শে সিরসির করে ওঠে তার... আরামে চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসে পৃথার।

অর্নব প্রমাদ গোনে... এবারে পৃথাকে সামলাতে না পারলে আর কিছু আটকানো যাবে না, তখন সে হয়তো নিজেকেই আর সামলাতে পারবে না... ভাবতে ভাবতে প্রায় জোর করেই পৃথাকে নিজের কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে নেমে যায় বিছানার থেকে।

‘কোই গেলে?’ প্রশ্ন করে পৃথা... শূন্যে হাতড়ায় অর্নবের দেহের স্পর্শ পাবার আশায়।

‘আমি বিছানায় আর নেই... এখানে নেমে এসেছি... এবার তুমিও নামো... চান করতে যাও...’ পৃথার পেছন থেকে বলে অর্নবের।

ঘুরে বসে আওয়াজ লক্ষ্য করে পৃথা, ‘তুমি এই ভাবে নেমে গেলে কেন?’ গোলা পায়রার মত ঘাড় বেঁকিয়ে প্রশ্ন করে সে।

‘না নামলে তোমার দুষ্টুমী থামাতে পারতাম না... যা বদমাইশি শুরু করেছিলে, তাতে...’ বলতে বলতে থমকায়।

‘কি? তাতে কি?’ কোমরে হাত রেখে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘তাতে আর কিচ্ছু না... এবার চলো তো... লক্ষ্মী মেয়ের মত চান করে আসবে... এরপর তোমাকে লাঞ্চ করে অসুধ খেতে হবে... এই রকম শুধু বদমাইশি করলেই হবে?’ বলে অর্নব।

চুপ করে বসে কিছু একটা ভাবে পৃথা... তারপর বিছানার ওপরে সটাং উঠে দাঁড়ায়... পরক্ষনেই যেটা করে সেটার জন্য অর্নব একেবারেই প্রস্তুত ছিল না... ঝট করে পরনের পায়জামাটা কোমরের কাছটায় ধরে একটানে শরীর থেকে নামিয়ে দেয়... একেবারে খুলে ফেলে দেয় বিছানার অপর দিকে... তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে চোখ নাচায়... ‘এবার চলো...’

চোখের এইবার একেবারেই নগ্ন হয়ে যাওয়া পৃথার শরীরটা দেখে ঢোঁক গেলে অর্নব... মনে মনে ভাবে, ভাগগিস আমাকে ও দেখতে পাচ্ছে না... ছি ছি... ওর শরীরটার দিকে এই ভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রয়েছি জানতে পারলে কি বিচ্ছিরি ভাবতো আমার সম্বন্ধে... ভাবে, কিন্তু চোখ সরাতে পারে না পৃথার নগ্ন দেহটার ওপর থেকে... প্রায় বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে থাকে সুঠাম দেহটার দিকে... আগেও যে লুকিয়ে চুরিয়ে দেখেনি পৃথাকে তা নয়, কিন্তু সেটা হয় ছিল দূরের আড়াল থেকে অথবা নিঝুম রাতের আলো আধারির মধ্যে। কিন্তু এই ভাবে দিনের স্পষ্ট আলোয় হাতের নাগালের মধ্যে থেকে এত সুন্দরী মেয়ের এই রকম হিল্লোল তোলা শরীর দেখে সে তো কোন ছাড়... দূর্বাসাও চমকে যেত নিশ্চয়। খানিক আগেই দেখা নগ্ন সুগোল দুটো স্তনের সাথে এখন সামনে প্রকাশ পাওয়া  দুটো সুঠাম পুরুষ্টু মাংসল থাই সমেত পা, আর সেই অত্যন্ত লোভনীয় পায়ের ফাঁকে হাল্কা লোমের আড়ালে ফুলে উঁচু হয়ে থাকা যোনিবেদীটা... দেহের আড়াল থেকে উঁকি মারা নিতম্বের স্ফিতি... সব দেখতে দেখতে কেমন নেশা ধরে যায় তার...

‘কি হোলো? বাক্কি বন্ধ্‌?’ পৃথার গলার আওয়াজে চটকা ভাঙে অর্নবের।

‘অ্যাঁ?’ বলে ওঠে সে।

‘অ্যাঁ কি? বলছি যে আমাকে দেখে তো বাবুর কথা সরছে না দেখছি... কি? পছন্দ হয়েছে?’ কোমরে হাত রেখে পা দুটোকে একটু ফাঁক করে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘তু...তুমি চান করতে যাবে?’ তোতলায় একটু কথা বলতে গিয়ে, কিন্তু এবারে যদি না সামাল দিতে পারে, তা হলে যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে মুহুর্তের মধ্যে, নিজেই ভয় পায় সে সম্ভাবনার কথা ভেবে অর্নব।

‘যেতে পারি... কিন্তু আমার দুটো শর্ত আছে...’ বলে বিছানার ওপরে ওই রকম পাদুটোকে ফাঁক করে দাঁড়িয়ে শরীরটাকে দোলায় ডাইনে বাঁয়ে।

চোখ সরাতে পারে না অর্নব কিছুতেই পৃথার ওমন লোভনীয় শরীরটার থেকে... অনেক কষ্টে প্রশ্ন করে, ‘আবার কি শর্ত?’

হাত তুলে একটা আঙুল সামনে রেখে বলে পৃথা, ‘শর্ত এক, আমাকে চান করাবে তুমি... আমি নিজে চান করবো না... কি? রাজি?’

‘আমি চান করাবো? ইয়ার্কি নাকি? তুমি কি বাচ্ছা মেয়ে যে চান করিয়ে দিতে হবে?’ জিজ্ঞাসা করে অর্নব... সে জানে, এখনই যদি এই রকম শুরু করে পৃথা, তাকে বাথরুমে স্নান করার সময় আরো কাছে পেয়ে কি করতে পারে...

হাতের তালুদুটো দুইপাশে ছড়িয়ে ধরে কাঁধ তুলে শ্রাগ করে পৃথা উত্তর দেয়, ‘তাহলে চান করবো না... ব্যস... হয়ে গেলো...’

‘আচ্ছা, এটা কি ধরণের ছেলেমানষি হচ্ছে? হু? এই ধেড়ে মেয়েকে এখন চান করাতে হবে? এটা হয়?’ কাঁচুমাচু গলায় বলে অর্নব।

‘হয় না যদি, তাহলে এখন হঅঅঅবেএএএএ... আমি তো আর নিজে চান করবো না... আমাকে করিয়ে দিতে হবে... এবার দেখো... কি করবে তুমি... ইটস ইয়োর চয়েস বেবী...’ সেই একই রকম হাত তুলে কাঁধ ঝাকিয়ে বলে পৃথা।

‘হুম, বুঝলাম, তা তোমার দ্বিতীয় শর্তটা কি শুনি...’ জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘আগে প্রথম শর্তটাতে রাজি কি না শুনি, তারপর তো দ্বিতীয় শর্তের কথা আসবে...’ কথার ফাঁকে ইচ্ছা করে শরীরটাকে আবার দোলায় পৃথা... সামনে দাঁড়ানো অদৃশ্য লোকটার মধ্যে কি হচ্ছে, সেটা নিজে না দেখতে পেলেও, মনের আয়নায় বুঝতে অসুবিধা হয় না তার, আর সেটা ভেবেই আরো মজা পায় সে।

একটু চুপ থেকে প্রায় বাধ্য হয়েই মেনে নিয়ে বলে, ‘আচ্ছা, সেটা না হয় দেখছি কি করা যায়...’

‘নো বেবী নো... নো পরে টরে... এখনই বলতে হবে... আমাকে চান করিয়ে দেবে কি দেবে না... ইয়েস অর নো... ওনলি টু অপশনস্‌...’ বলে ফের দেহটাকে দোলায় ডাইনে বাঁয়ে কোমরে হাত রেখে।

‘বড্ড জেদী মেয়ে...’ বলে ওঠে অর্নব, তারপর প্রায় হাল ছেড়েই শেষে মানতে বাধ্য হয়, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে, আমিই না হয় চান করিয়ে দেবো... এবার খুশি তো... তাহলে চলো...’

‘আঃ... হাঃ... অসুবিধা আছে...’ বলে ঠোঁটদুটোকে সরু করে চুমুর মত করে পৃথা।

‘আবার কি হলো... বললাম তো যে ঠিক আছে, আমিই চান করিয়ে দেবো, তাহলে আবার কি অসুবিধা?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

‘আমার দ্বিতীয় শর্ত রয়েছে এখনও...’ চোখ নাচিয়ে বলে পৃথা।

‘ও... বলো তোমার দ্বিতীয় শর্ত...’ মাথা চুলকায় অর্নব, কথার মাঝে চোখ ঘোরে পৃথার শরীরটার ওপরে নীচে... হাজার চেষ্ট সত্তেও কিছুতেই চোখটা সরিয়ে নিতে পারে না দোলাতে থাকা হিলহিলে দেহটার ওপর থেকে।

‘তুমি জানো আমার জ্বর হয়েছিল... কি তাই তো?’ শরীর দোলানো থামিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘হ্যা, হয়েছিলই তো... তো?’ ফিরিয়ে জিজ্ঞাসা রাখে অর্নব।

‘আমার জ্বর হয়েছিল আর সেই জন্য আমি খুব দুর্বল... ঠিক কি না?’ উত্তর দেবার বদলে ফের প্রশ্ন করে পৃথা।

‘হ্যা, সে তো হবেই দুর্বল, জ্বর হলে তো দুর্বল হয়ই মানুষ, এ আর এমন কি কথা?’ অর্নব বোঝার চেষ্টা করে পৃথার অভিসন্ধি।

‘তাহলে মেনে নিচ্ছ তো যে আমি দুর্বল?’ ফের জিজ্ঞাসা করে পৃথা।

‘সে তো তাই জানতাম... হ্যা, তো কি হলো তাতে?’ এবার একটু যেন তটস্থ হয়ে ওঠে অর্নব, একটু যেন বুঝতে পারে যে কি বলতে চলেছে পৃথা।

ফের শরীরটাকে আগের মত করে দোলাতে শুরু করে বলে পৃথা, ‘তাই... আমাকে... তোমায়... কোলে করে বাথরুমে নিয়ে যেতে হবে, আমি হেঁটে যাবো না... বুঝেছ?’

‘কো... কোলে...!!!’ বিশ্ময় ঝরে পড়ে অর্নবের গলায়... ‘এই ধেড়ে মেয়ে উঠবে কোলে... তুমি কি পাগল হয়ে গেছ একেবারেই?’ বলে হা হা করে হাসতে থাকে।

পৃথার শরীর দোলানো ততক্ষনে থেমে গিয়েছে... কোমরে হাত রেখে চুপ করে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকে অর্নবের হাসি থামার... তা থামতে বলে ওঠে... ‘হয়েছে?... যতটা হাসবার হেসে নিয়েছো? নাও এবার আমাকে নিয়ে চলো চান করাতে...’

‘তিতির... তুমি কি বলছ জানো?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

‘কি আশ্চর্য, আমি বলছি, আর জানবো না যে কি বলছি? আমি কি বাচ্ছা মেয়ে নাকি?’ চোখ পাকিয়ে বলে পৃথা।

‘বাচ্ছা ছাড়া আর কি বলবো তোমায়? এখন এই বয়শে এসে আমার কোলে উঠবে তুমি? এটা কোন একটা আবদার হলো...?’ বলতে বলতে ফের হেসে ফেলে অর্নব।

‘ঠিক আছে, ছেড়ে দাও... নিতে হবে না আমাকে... এই আমি শুয়ে পড়লাম... আমি চানও করবো না, খাবারও খাবো না... আর অসুধও খাবো না... তোমার যা ইচ্ছা তাই করো তুমি...’ বলে সত্যি সত্যিই শুয়ে পড়ার উদ্যগ করে বিছানায়।

ওকে এই ভাবে ফের শুয়ে পড়তে দেখে হাঁ হাঁ করে ওঠে অর্নব, ‘আরে তুমি দেখি সত্যিই শুয়ে পড়ছ... আচ্ছা দাঁড়াও বাবা দাঁড়াও...’

অর্নবের কথায় থমকায় পৃথা... চোখ তুলে তাকায় একবার... মনে মনে ভাবে, হু হু বাবা, কেমন গেঁড়াকলে ফেলেছি তোমায়... নাও, এবার তোমার আদরের তিতিরকে কোলে তুলে নিয়ে যাও... যাবে না মানে... তোমার ঘাড় নেবে কোলে... আমিও পৃথা মুখার্জি... বুঝলে!!!

‘একটু এগিয়ে এসো এদিকে...’ কতকটা বাধ্য হয়েই বলে অর্নব।

বিজয়ীর হাসি খেলে যায় পৃথার ঠোঁটের ওপরে... ফিক করে হেসে ওঠে সে... তারপর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় বিছানার কিনারে... দুটো হাত তুলে দেয় শূণ্যের পানে... পরক্ষনেই হটাৎ করে তার শরীরটা ভেসে যায় শূণ্যে... ‘ওহ! মা গো...’ ভয়ে কোঁকিয়ে উঠে চোখ বন্ধ করে নেয় পৃথা... তাড়াতাড়ি একটা হাত ছোঁড়ে সামনের পানে... স্পর্শে বোঝে অর্নবের গলা... প্রাণপনে আঁকড়ে ধরে হাতের মধ্যে পেঁচিয়ে... তারপর আস্তে আস্তে চোখ খোলে... দেখে তখনও সে শূণ্যে ভেসে রয়েছে... উপলব্ধি করে একটা সবল হাতের পরশ তার ঘাড়ের নীচে, আর ঠিক একই রকম ভাবে তার দুটো পা’য়ের হাঁটুর নীচ থেকে সাপোর্ট দিয়ে পুরো দেহটাকে ধরে রেখেছে অপর আর একটি সবল হাত।

‘কি? ভয় পেয়ে গিয়েছিলে?’ কানে আসে অর্নবের প্রশ্ন।

ঘাড় নেড়ে হ্যা বলে পৃথা... তারপর তার অপর হাতটাকে তুলে জড়িয়ে ধরে অর্নবের গলাটাকে ভালো করে দুই হাতে... নরম বুকদুটো ছুঁয়ে থাকে অর্নবের চওড়া পেষল অদৃশ্য বুকের ওপরে।

আর ভয় পায় না সে... বরং বেশ মজা লাগে এই ভাবে অর্নবের হাতের মধ্যে উঠে শূন্যে ঝুলে থাকাতে... খিলখিল করে হেসে ওঠে... গলা জড়ানো অবস্থাতেই মুখ তুলে চুমু খায় দাড়ি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অর্নবের গালের ওপরে... ‘লাভ ইয়ু বেবী... লাভ ইয়ু সো সো মাচ...’

‘এখন দেখছি পাগলীটার মুখে খুব হাসি ফুটেছে... আর কিছুক্ষন আগেই তো আঁৎকে উঠেছিলে... চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলে ভয়...’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব... পৃথার দেহটা অবলীলায় শক্তিশালী হাতের ওপরে তুলে এগিয়ে যায় ঘর থেকে বেরিয়ে বাথরুমের দিকে।

খিলখিল করে হেসে ওঠে একটা বাচ্ছা মেয়ের মত... পা দোলায় অর্নবের গলাটাকে জড়িয়ে ধরে রেখে... আর তার কোন ভয় করে না... ও এখন নিশ্চিন্ত... একটা প্রকৃত পুরুষের হাতে নিজেকে সঁপে দিতে পেরে... বদমাইশি করে হাত তুলে ধরতে যায় অর্নবের দাড়িটা আবার... অর্নব ধমকায় তাকে, ‘আহ... আবার দুষ্টুমী... ফেলে দেবো কিন্তু এবার হাত থেকে...’
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
#49
ফের খিলখিলিয়ে ওঠে পৃথা... ‘দাও না... তোমার তিতিরের লাগবে... আমার কি? তারপর তুমিই দেখবো আগে দৌড়েছো অসুধ আনতে...’

‘সব বুঝে গেছ দেখছি...’ গাঢ় গলায় বলে অর্নব... ততক্ষনে বাথরুমের সামনে পৌছিয়ে গিয়েছে তারা... ভেতরে ঢুকে সাবধানে নামিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয় পৃথাকে বাথরুমের মধ্যে... তারপর বালতি এগিয়ে রাখে কলের নীচে... দুটো কল খুলে দেয় জলের... একটা গীজারের আর অপরটা ঠান্ডা জলের।

পৃথা অবাক হয়ে দেখে কেমন বালতিটা হাওয়া ভেসে এগিয়ে গেল কলের কাছে, জলের কলটার প্যাঁচ ঘুরে গেলো... জল পড়তে শুরু করল... দেখতে দেখতে ফের খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে সে।

‘হাসির কি হলো আবার?’ প্রশ্ন করে অর্নব।

‘হি হি... তুমি বালতিটা কলের নীচে পাতলে, কেমন ভূতের মত মনে হলো... যেন নিজের থেকেই ওটা এগিয়ে গেল... সত্যিই অর্নব, যদি না জানতাম, আমি হয়তো হার্টফেল করেই পড়ে থাকতাম এখানে...’ বলে আরো হাসতে থাকে সে।

পৃথার হাসিতে যোগ দেয় অর্নবও, বলে, ‘ইশ... ব্যাপারটা তো আগে ভেবে দেখি নি...’

মুখ ফিরিয়ে চোখ অবাক চোখে তাকায় পৃথা, ‘আগে ভাবলে কি হতো?’

‘না, মানে আগে ব্যাপারটা মাথায় এলে এই রকম ভয় দেখিয়ে একটা পেত্নিকে তাড়াতাম এখান থেকে, তাহলে তাকে আর কোলে তুলে ঘুরে বেড়াতে হতো না আমায়...’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব।

চোখ সরু হয়ে যায় পৃথার... কোমরে হাত দিয়ে বলে ওঠে, ‘কি? আমি পেত্নি?’ বলে হাত তুলে দুম দুম করে কিল বসাতে থাকে অর্নবের গায়ে।

‘না, না, তুমি নও... তুমি নও...’ তাড়াতাড়ি বলে ওঠে অর্নব।

হাত থামিয়ে কটমট করে তাকায় পৃথা... ‘আমি ছাড়া আর কোন পেত্নি এসেছিল তোমার কাছে, এই ফ্ল্যাটে শুনি?’

‘কেন? আর কেউ আসতে পারে না?’ জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘না... আর কেউ আসতে পারে না...’ বলে দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের বিদেহী শরীরটাকে... বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে দিয়ে বলে, ‘এই পেত্নিটা ছাড়া আর কেউ তোমার জীবনে আসবে না... আসলে খুন করে দেবো না...’

‘তাই? একেবারে খুন করে দেবে?’ হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করে অর্নব।

‘হু...’ ছোট্ট করে উত্তর দেয় পৃথা... মুখটাকে গুঁজে রাখে অর্নবের নগ্ন বুকের মধ্যে।

‘পাগলী একটা... আচ্ছা... হয়েছে... এবার ছাড়... জলটা দেখতে দাও আমায়...’ বলে পৃথাকে বুকের থেকে সরিয়ে জলে হাত রেখে তাপ পরীক্ষা করে।

সন্তুষ্ট হলে মাগের মধ্যে নিয়ে পৃথার গায়ে ঢালে... বেশ আরাম লাগে গায়ের ওপরে উষ্ণ জলের ছোয়ায়... চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখে কি ভাবে মগটা শূণ্যে ভেসে ভেসে বালতির থেকে জল তুলে তার গায়ে ঢেলে দিচ্ছে... ঢেলে দেওয়া জলগুলো কাঁধের ওপর থেকে গড়িয়ে তার তম্বী শরীরটা বেয়ে নেমে যায় নীচের পানে... ভিজিয়ে তোলে মাতাল করে দেওয়া দেহের প্রতিটা চড়াই উৎরাই।

‘কই... গা’টা একটু ডলে নাও... আমি জল ঢেলে দিচ্ছি তো...’ চটকা ভাঙে অর্নবের গলার স্বরে।

‘আমি তো অসুস্থ... আমি কি করে গা ডলবো... ওটা তুমিই ডলে দাও...’ মুচকি হেসে বলে পৃথা, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে অর্নবের সামনে ভিজে গায়ে।

‘সেটাও আমাকেই করতে হবে?’ অপ্রস্তুত অর্নব জিজ্ঞাসা করে।

ঘাড় হেলায় পৃথা, ‘তুমি করবে না তো আর কোন ভূত আছে যে সে করবে? এই পেত্নিটার তো এই ভূতটাই আছে, না?’ হেসে উত্তর দেয় সে।

আর কথা বাড়ায় না অর্নব, কারণ এখনও হয়তো জ্বর রয়েছে শরীরে পৃথার, তাই বেশিক্ষন জলে ভিজিয়ে রাখা যাবে না... মাগটাকে এক হাতে ধরে অন্য হাতটা বাড়ায় পৃথার পানে... রাখে কাঁধের ওপরে... রগড়াতে থাকে কাঁধ... আসতে আসতে হাত নামতে থাকে শরীর বেয়ে... বুকের ওপরে এসে কয়’এক সেকেন্ডের জন্য যেন থমকে যায়... তারপর তাড়াতাড়ি নেমে যায় পেটের দিকে।

অর্নবের অস্বস্থি উপভোগ করে পৃথা... পেটের ওপরে হাত পৌছাতেই পা দুটোকে দুই পাশে সরিয়ে ফাঁক করে মেলে ধরে নিজের জঙ্ঘাটাকে... হাসে মুখ চেপে মুচকি মুচকি... অপেক্ষা করে হাতটার স্পর্শ পাবার নিজের শরীরের সবচেয়ে গোপনতম অঙ্গের ওপরে... কিন্তু পেটের ওপরেই যেন অনন্তকাল ঘোরাঘুরি করতে থাকে অর্নবের হাতটা... কিছুতেই নামতে চায় না পৃথার অভিষ্ট লক্ষবস্তুর ওপরে... শেষে ধৈর্যচ্যুতি ঘটে তার... নিজেই হাতটাকে ধরে চেপে ধরে পায়ের ফাঁকে, যোনিবেদীটার ওপরে... ফিসফিসিয়ে বলে... ‘এখানটাও তো রগড়ানোর দরকার... নাকি?’ কানে আসে অর্নবের ভারী নিঃশ্বাসের আওয়াজ... সেই নিঃশ্বাসের শব্দে ভিজে ওঠে তার নারী অঙ্গ।   

সেকেন্ড’এর কয়’এক ভগ্নাংশর জন্য সম্ভবত হাতটা থমকে লেগে থাকে পৃথার পাতলা লোমে ঢাকা কোমল যোনির সাথে... শরীরের গভীর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসা রসে ভিজে ওঠে অদেখা হাতের আঙুলগুলো... পরক্ষনে ঝটিতে সরে যায় সেখান থেকে... পৃথা অনুভব করে খুব দ্রুত হাতটা তার পুরুষ্টু মাংসল থাইদুটো রগড়াতে রগড়াতে নেমে যাচ্ছে নীচের পানে... মুচকি হাসে সে, কিন্তু আর কিছু বলে না মুখে।

‘এবার পেছন ফেরো দেখি... তাড়াতাড়ি করতে হবে, বেশিক্ষন এই ভাবে জল গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তোমার ঠিক নয়...’ কানে আসে অর্নবের গলা।

দেহে হিল্লোল তুলে ঘুরে দাঁড়ায় পৃথা... দম বন্ধ হয়ে আসে অর্নবের যেন... মাথার চুলগুলো কাঁধের খানিকটা নেমেই থমকে গিয়েছে... আর সেই চুলের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে নিটোল ফর্সা পীঠ... পীঠের ঠিক ডানদিকের ডানার ওপরে একটা লাল তিল, বেশ বড়... অর্নবের ইচ্ছা করে তখনই জিভটা নিয়ে ছোয়ায় তিলটার ওপরে... পীঠের ঢাল নেমে গিয়েছে বাঁক খেয়ে নীচের দিকে... কোমরের শেষে দুই পাশ থেকে শরীরটা অস্বাভাবিক ভাবে স্ফিত হয়ে গিয়েছে... শুরু হয়েছে নিতম্ব... স্পর্শ না করেও বোঝা যায় সেদুটির কোমলতা... আর সেই বর্তুল নিতম্বের তালদুটির মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে গভীর অববাহিকা... টাল খেয়ে হারিয়ে গিয়েছে দুই পায়ের ফাঁকের আড়ালে... যেখান থেকে শুরু হয়েচে সুঠাম পুরুষ্টু দুটো উরু... নির্বাক অর্নব স্থায়ুর মত ওখানে দাঁড়িয়ে থাকে পৃথার রূপশোভার দিকে তাকিয়ে।

‘কোই... কি হলো... শুধু দেখবে? না কি কাজের কাজ কিছু করবে?’ তাড়া দেয় পৃথা, ঠোঁটের কোনে লেগে থাকে তার প্রশ্রয়ের হাসি।

সম্বিত ফেরে অর্নবের... তাড়াতাড়ি সাফাই গায় নিজের পরে... ‘না, এই তো... সবে তো ফিরলে...’

‘এই সবেটা তো প্রায় মিনিট দুয়েক হয়ে গেল... এতক্ষন দেখতে লাগে আমাকে? কম তো দেখনি এর আগে...’ হাসতে হাসতে বলে পৃথা।

‘মোটেই না... এই তো সবে ঘুরলে তুমি...’ বলে হাত চালায় পীঠের ওপরে... বেশ কয়একবার হাত ফেরে পীঠের তিলটার ওপরে... তারপর ধীরে ধীরে নামতে থাকে আরো নীচের পানে... নিতম্বের ওপরে পৌছবার পর নিজেকে ধরে রাখা যেন ভিষন কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে তার পক্ষে... হাতটা প্রায় ডুবে যায় নরম নিতম্বের তালের মধ্যে... হাতের চাপে তলতল করে দুলে উঠতে থাকে দাবনার এক একটা তাল... যতটা সম্ভব দ্রুত শেষ করে মগের মধ্যে জল তুলে ঠেলে দেয় পৃথার গায়ে... তারপর দেওয়ালের হ্যাঙ্গার থেকে তোয়ালে টেনে নিয়ে মুছিয়ে দিতে থাকে জলে ভিজে ওঠা পৃথার গা’টা... অর্নবের দিকে ফিরে দাঁড়ায় ফের সে... মুখ তুলে তাকিয়ে থাকে সামনের পানে এক দৃষ্টিতে... যদিও চোখে পড়ে না অর্নবের মুখ... কিন্তু বুঝতে অসুবিধা নয় না কি চলছে এই মুহুর্তে ওই না দেখা চোখের মধ্যে... আর যত ভাবে সেটা... ততই চওড়া হয় ঠোটের ওপরে লেগে থাকা হাসি।

যতটা দ্রুত সম্ভব শেষ করে পৃথার গা মোছানো... শেষ হলে একটা শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে যেন অর্নব। তোয়ালেটাকে ঘুরিয়ে, জড়িয়ে দেয় পৃথার গায়ের ওপরে... তারপর একবার ইতস্থত করেও তোয়ালেটার প্রান্তটা ধরে গিঁট বেঁধে দেয় পৃথার বুকের ঠিক মাঝখানে।

এতক্ষন পৃথা একটাও বাক্য ব্যয় করে নি... চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল গা মুছিয়ে দেবার পুরোটা সময়ই... কিন্তু তোয়ালের গিঁট বাঁধা শেষ হতেই হাতটা বাড়িয়ে দেয় সামনের পানে... অর্নবের পৌরষের নিদর্শন যেখানটা থাকতে পারে, সেটা আন্দাজ করে... খপ করে হাতের মুঠোয় ধরে ফেলে পুরুষাঙ্গটাকে... চমকে পিছিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে... কিন্তু পৃথার হাতে মুঠোর মধ্যে পুরুষাঙ্গটা বাঁধা পড়ে থাকার দরুণ পারে না... ‘এই... একি করছ?’ প্রায় ছটফটিয়ে ওঠে অর্নব।

ততক্ষনে আরো খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে পৃথা... হাতের মুঠোয় ধরা পুরুষাঙ্গটাকে আরো ভালো করে চেপে ধরে... সেটার কাঠিন্য উপভোগ করে নিজের হাতের তালুবন্দি করে... ‘ইয়ু আর স্টিল হার্ড...’ ফিসফিস করে বলে সে।

‘প্লিজ... ছাড়ো...’ অনেক কষ্টে যেন অনুণয় করে অর্নব।

‘দাঁড়াও না... এটাকে একটু ছুঁয়ে বুঝতে দাও না কেমন...’ হাতের মুঠোয় নিয়ে কচলায় শক্ত পুরুষাঙ্গটা... দ্বিতীয় হাতটাকেও এগিয়ে নিয়ে আসে সে... দুই হাতের মুঠোয় বন্দি হয়ে যায় অর্নবের পৌরষ।

‘না... প্লিজ...’ কাতর গলায় ফের অনুনয় করে অর্নব... নিজেকে সামলে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়।

আন্দাজের ভর করে একটা হাত বাড়িয়ে দেয় আরো সামনের দিকে... ছোঁয়া পায় অর্নবের পেশল তলপেটের... যেখানের লোমের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে পুরুষাঙ্গটা... মুঠো পাকায় পুরুষাঙ্গের গোড়ায়... তারপর অপর হাতটাকে এবার এনে ধরে পুরুষাঙ্গটাকে বেড় দিয়ে ঠিক আগের হাতের মুঠোর ওপরে... অনুভব করে দুটো মুঠোর পরেও আরো খানিকটা বেরিয়ে রয়েছে সেটার অংশ... খুশি হয় মনে মনে... ফিসফিসিয়ে বলে, ‘ইয়ু আর কোয়াইট বিগ... কোয়াইট বিগ বেবী... অ্যান্ড ইটস ফ্যাট আলসো’ পুরুষাঙ্গটার গা’টার বেড়ে মুঠো দুটোকে আগু পিছু করে ওটার চামড়াটাকে নাড়াতে থাকে... চোখে দেখে না, কিন্তু অনুভব করে হাতের মুঠোর মধ্যে সেটার স্পর্শ... সামনের হাতের মুঠোর আঙুল খুলে তুলে ঠেকায় পুরুষাঙ্গটার মাথায় আন্দাজ করে... সেখানে আঙুলের ছোঁয়া পড়তেই সিঁটিয়ে ওঠে অর্নব... ‘আহহ... নাহ... প্লিজ... ছাড়ো...’             

গুরুত্ব দেয় না অর্নবের কাতর কন্ঠের, সেই মুহুর্তে তার কটা চোখের মণিতে কালোর ঝিলিক... মুঠোর মধ্যে পুরুষাঙ্গটাকে ধরে ওটার চামড়াটাকে আগুপিছু করতে করতে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে বাথরুমের জলে ভেজা মেঝেতেই... নাকের মধ্যে বন্য গন্ধ ঝাপটা মারে... একবার মুখ তুলে তাকায় পৃথা... জানে দেখা যাবে না কিছুই, গেলে আরো খুশি হতো হয়তো... মনে মনে এই মুহুর্তে অর্নবের মুখের ওপরে খেলতে থাকা অভিব্যক্তিগুলো দেখার খুব ইচ্ছা করছে... কিন্তু কি আর করা যাবে... এই সই... ভাবতে ভাবতে মুখ নামিয়ে জিভটাকে বের করে সামনে বাড়িয়ে দেয়... নরম ভেলভেটি একটা কিছুর সাথে স্পর্শ পায় এগিয়ে দেওয়া জিভটার... কানে আসে অর্নবের হাল্কা ছোট্ট শিৎকার, ‘আহহহ...’ হাসে মনে মনে... তারপর ফের জিভ ছোয়ায় না দেখা পুরুষাঙ্গটার মাথায়... এবারে যেন জিভের ডগায় অনুভূত হয় ছোট্ট একটা ছিদ্রের মুখ... জিভটাকে ধীরে ধীরে বোলাতে থাকে গোলাকৃত মাথাটার ওপরে... ভারী নিঃশ্বাসএর শব্দে ভারী হয়ে ওঠে বাথরুমের মধ্যেটা... সেটা অর্নবেরই, বোলে দিতে হয় না তাকে... মুখটাকে ফাঁক করে ঠোঁট দুটোকে ইংরেজির ‘ও’ এর মত করে ঠেলে দেয় নিজের মাথাটা... দুটো ঠোঁটের সামনে লেগে থাকে সেটা... ভেতরে যায় না... আটকায়... পৃথা বোঝে আরো বেশি করে হাঁ করতে হবে তাকে... অতটুকু মুখ খুললে ঢুকবে না ওটা... এবার আর ‘ও’ নয়, বেশ বড় করেই হাঁ করে মুখের মধ্যে পুরে নেয় অদৃষ্য পুরুষাঙ্গের মাথাটাকে... বন্ধ করে দেয় মুখের হাঁ... ‘ন...না... ছাড়োওওও...’ ফিসফিসায় অর্নব... আপ্রাণ চেষ্টা করে নিজের শরীরটাকে পিছিয়ে নেবার... কিন্তু যে ভাবে মুঠোয় পৃথা তার পুরুষাঙ্গটাকে ধরে রেখেছে, সেখানে ওই ভাবে টেনে পিছিয়ে যেতে সক্ষম হয় না...

মুখের মধ্যে মাথাটাকে পুরে নিয়ে জিভ বোলায় সেটার চারিপাশে পৃথা... সেই সাথে দুইহাতের মধ্যে চেপে ধরে আগুপিছু করে চলে পুরুষাঙ্গের চামড়াটাকে...

কতদিন... না, না, ভুল... দিন নয়... বছর... কত কত বছর পর এই অনুভূতিটা পাচ্ছে আজ অর্নব... সারা শরীরটা তার বাঁধ ভাঙা সুখে ভরে উঠতে থাকে যেন... মাথাটাকে হেলিয়ে দেয় পেছন দিকে, হাতটাকে দেওয়ালের ওপরে ভর রেখে... না চাইতেও কোমর থেকে দেহের নিম্নাংশটা এগিয়ে বাড়িয়ে ধরে পৃথার দিকে আরো একটু... উফফফ... আরো... আরো চায় তার মনের মধ্যেটায়... অনেক কিছু শেখার বাকি মেয়েটার... কিন্তু এখন এই মুহুর্তে যেটা করছে, সেটাই বা কম কি? তাতেই তো সে পাগল হয়ে যাচ্ছে... এ ভাবে বেশিক্ষন নিজেকে সামলে রাখা সম্ভব নয় সেটা বুঝতে পারে... এত দিন পর এই সুখ পেয়ে কিই বা করার আছে তার? মন চায় আরো বেশিক্ষন সুখটার আবেশ পেতে, কিন্তু অন্ডকোষে ইতিমধ্যেই কম্পন শুরু হয়ে গিয়েছে... কতক্ষন নিজেকে ধরে রাখতে পারে সেটাই সন্দেহের... দেহের পাশে ঝুলে থাকা হাতটাকে আনমনেই তুলে রাখে পৃথার মাথার ওপরে... ‘আহহহ...’ মুখ দিয়ে আপনা থেকেই বেরিয়ে আসে সুখোশিৎকার... ‘উমমম...’ চোয়াল চেপে চাপার চেষ্টা করে মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে থাকা আওয়াজটাকে... লজ্জা করে মেয়েটার সামনে নিজের সুখের অনুভূতিটার ধরা পড়ে যাওয়ার... কিন্তু সে কি করবে? এত দিন বাদে মেয়েটির মুখের মধ্যের ওই উষ্ণ ভেজা অনুভূতি... এযে সে চাইলেও এড়াতে পারছে না...

দুপাশ থেকে ঠোঁট দুটো দিয়ে চেপে ধরেছে ততক্ষনে পৃথা... পুরুষাঙ্গটাকে দুহাতের মুঠোয় ভালো করে ধরে রেখে মাথাটাকে সামনে পেছনে করে নাড়াতে শুরু করে সে... উত্তেজিত দৃঢ় পুরুষাঙ্গটা মুখের মধ্যে যাতায়াত করতে থাকে তার তৈরী করা ছন্দে তালে তাল মিলিয়ে... লালা ভেজা জিভের ওপরে খেলে বেড়ায় সেটা... মাথাটাকে আরো সামনে ঠেলে দেয় সে... মুখের আরো গভীরে পুরে নেয় অর্নবের ঋজু পৌরষটাকে... গলার একেবারে আলটাগরায় গিয়ে ঠেকে সেটার নরম মাথাটা... ওয়াক উঠে আসে... গলার মধ্যে থেকে দলা করে থুতু উঠে এসে ভিজিয়ে তোলে পুরুষাঙ্গটাকে আরো বেশি করে... চেপে রাখা ঠোঁটের কোনা দিয়ে গড়িয়ে পড়ে কিছুটা লালা নিজের তোয়ালে বাঁধা তম্বী বুকের ওপরে... আইসক্রীম খাওয়ার মত করে চুষতে থাকে মুখের মধ্যে রেখে ওই দৃঢ় অঙ্গটাকে... অনুভব করে তিরতিরে কাঁপন সেটার চামড়ার আড়ালে, শিরা উপশিরায়...

নাঃ... আর পারে না নিজেকে ধরে রাখতে অর্নব... পৃথার সাংঘাতিক চোষণের ফলে নিজের সংযমের সব বাঁধ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়... মুঠোয় খামচে ধরে হাতের নাগালে থাকা পৃথার চুলটাকেই... কোঁকিয়ে ওঠে... ‘ওহহহ... আহহহহ... ননননআআআ...’ বার খানেক ঝিনিক দিয়ে কেঁপে ওঠে গোটা পুরুষাঙ্গটা পৃথার মুখের মধ্যে...

অর্নবের গোঙানী পৃথার কানেও পৌছেছে... সেই সাথে অনুভব করে সে মুখের মধ্যে থাকা পুরুষাঙ্গটার কাঁপন... বুঝতে অসুবিধা হয় নি তার যে যেকোন মুহুর্তে বেরিয়ে আসবে অর্নবের শরীরের মধ্যে জমে থাকা উষ্ণ বীর্য... চট করে একটা হাত তাই পুরুষাঙ্গর থেকে সরিয়ে নিজের বুকের ওপরে তোয়ালের বাঁধনটা খুলে দেয়... বাঁধন ছাড়া তোয়ালে গড়িয়ে সরে যায় শরীর থেকে... খুলে পড়ে মেঝেতে, তার দেহের পাশে... মুখ থেকে পুরুষাঙ্গটাকে বের ওটার মুখটাকে তাক করে নিজের নরম বুকটার দিকে... ও দেখতে চায় অর্নবের শরীরের ওই বীর্য কি ভাবে ছিটকে এসে পড়ে নিজের বুকের ওপরে... 

পৃথাকে নিজের তোয়ালে খুলে তার লিঙ্গটাকে নিজের বুকের দিকে তাক করে ধরা দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না অর্নবের পৃথার অভিসন্ধি... আর সেটা বুঝে যেন আরো বেশি করে উত্তেজিত হয়ে ওঠে সে... থরথর করে কেঁপে ওঠে তার অদৃশ্য অন্ডকোষটা... আর পারে না...

হটাৎ করে শূন্য থেকে তীব্র গতিতে এক ঝলক বর্নহীন তরল আঠালো উষ্ণ পদার্থ এসে আঘাত হানে পৃথার খোলা নগ্ন বুকের ওপরে... পরক্ষনেই আরো একবার... তার মনে হয় যেন যেই খানটায় এসে ওই পদার্থটা পড়েছে, সে জায়গাটা যেন পুড়ে গেলো... এত গরম সেটা... আর বেরোবেনা ভেবে একটু তুলে ধরে লিঙ্গটাকে মুখের সামনে... আর তখনই আরো এক দলা বীর্য বেরিয়ে আসে ছিটকে... এসে সোজা গিয়ে পড়ে সামান্য হাঁ করে থাকা মুখের একেবারে মধ্যে... লেগে, মেখে যায় ওই পাতলা ঠোঁটগুলোয়... প্রায় চমকেই ওঠে পৃথা... এই তৃতীয় আঘাতটার জন্য তৈরীই ছিল না সে... হাতের মুঠোয় পুরুষাঙ্গটাকে ধরে রেখে জিভটাকে বের করে ঠোঁটের ওপরে একবার ঠেকায়... স্বাদ নেয় বীর্যের... খারাপ লাগে না... বেশ রোমাঞ্চকর লাগে পুরো ব্যাপারটা... কি ভেবে মাথাটাকে সামনে এগিয়ে ফের পুরে নেয় মুখের মধ্যে হাতের মুঠোয় ধরে থাকা পুরুষাঙ্গটার মাথাটাকে... ওটার ছিদ্র থেকে চুইঁয়ে বেরিয়ে আসা বীর্যগুলো চেটে নেয় জিভ দিয়ে...

এই ভাবে পৃথাকে তার লিঙ্গের মাথা থেকে বীর্য চেটে খেয়ে নিতে দেখে বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে থাকে অর্নব... বিশ্বাসই করতে পারে না পৃথার মত এত সফিস্টিকেটেড মেয়ে এই ভাবে তার সামনে বসে তারই লিঙ্গ থেকে বেরুনো বীর্য চেটে চেটে খেতে পারে... ফের কুঁচকে ওঠে অন্ডকোষটা তার... ভাবতে ভাবতেই আরো খানিকটা বীর্য তার লিঙ্গের শিরা বেয়ে উঠে আসে... গড়িয়ে পড়ে পৃথার মুখের মধ্যে...

থামে না পৃথা... চুষেই চলে লিঙ্গের মাথাটা... আরো, আরো বেরিয়ে আসছে ওই স্বাদহীন ভালোবাসা... আরো লালায়িত হয়ে ওঠে সে... মুখের মধ্যে লিঙ্গের মাথাটাকে পুরে রেখে চোঁ চোঁ করে টেনে চুষে চলে... তারপর যখন বোঝে যে না, আর এখন বেরুবে না কিছু... ধীরে ধীরে মুখ থেকে বের করে দেয় পুরুষাঙ্গটাকে... মেঝেতে বসেই হাঁফাতে থাকে ঘটনার প্রত্যাঘাতে... ক্লান্ত সে... অবসন্ন দেহ নিয়ে।

ক্লান্ত অর্নবও... এই ভাবে বীর্যস্খলনে... দেওয়ালে হাত রেখে হাঁফায় খানিকক্ষন... তারপর ধীর কন্ঠে বলে, ‘এবার ওঠো... ঘরে চলো... আর বেশিক্ষন এই ভাবে থাকলে আবার ঠান্ডা লেগে যাবে...’

মাথা নেড়ে শায় দেয় পৃথা, চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মত উঠে দাঁড়ায় সে... অর্নব মেঝের ওপরে পড়ে থাকা তোয়ালেটা তুলে পরম ভালোবাসায় মুছে দেয় বুকের মুখের ওপরে লেগে থাকা বীর্যগুলোকে, তারপর তোয়ালেটাকে জড়িয়ে দেয় তার গায়ে... খুঁটটা গুঁজে দেয় নরম বুকের মাঝে... তারপর আর বলতে হয় না পৃথাকে... এক লহমায় দুই হাতের মধ্যে তুলে নেয় পৃথার সুঠাম শরীরটাকে... শূণ্যে ভেসে ওঠে পৃথা... এবার আর ভয় পায় না সে... শুধু হাতটা তুলে গলাটা জড়িয়ে ধরে দুই হাত দিয়ে তার প্রিয়তমের... মুখটা গুঁজে দেয় লোমশ চওড়া পেশল ছাতির মধ্যে... পাঁজাকোলা করেই পৃথাকে নিয়ে ফিরে যায় অর্নব তাদের শোবার ঘরের দিকে... বুকের সাথে চেপে বসে থাকে পৃথার নরম স্তন।

ক্রমশ...
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
#50
অসাধারণ এক লেখক আর তার গল্প! এখানে আপনাকে দেখে ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ মামা।
Like Reply
#51
(27-12-2018, 06:54 PM)pondpaka Wrote: অসাধারণ এক লেখক আর তার গল্প!  এখানে আপনাকে দেখে ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ মামা।

ধন্যবাদ বন্ধু... Heart Heart
Like Reply
#52
AMI APNAKE KI VABE THANK U BOLBO....SATTTI AMI BUJTE PACHI NA...ATO SUNDOR APNAR LEKHA...APNI AKJN SECRET STAR....
Like Reply
#53
DADA AAJ KI RATE AKTA UPDATE DEWA JAI NA?? AAJ JE GHUM HBE NA AMR
Like Reply
#54
(27-12-2018, 09:01 PM)SRK_999 Wrote: AMI APNAKE KI VABE THANK U BOLBO....SATTTI AMI BUJTE PACHI NA...ATO SUNDOR APNAR LEKHA...APNI AKJN SECRET STAR....

Ei vabe bolben na.... Ami khubi samanyo ekjon ameture writer... Shokhe likhi.... Apnader valo laglei amar lekha swarthok. .
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
#55
(27-12-2018, 09:08 PM)SRK_999 Wrote: DADA AAJ KI RATE AKTA UPDATE DEWA JAI NA?? AAJ JE GHUM HBE NA AMR

Sorry bhai. ..agami Sombar er age r kono update dite parbo na. . Ektu baire jachhi... 


Repu added...
Like Reply
#56
(27-12-2018, 09:47 PM)bourses Wrote: Sorry bhai. ..agami Sombar er age r kono update dite parbo na. . Ektu baire jachhi... 


Repu added...                                     PLZ DADA KICHU KORUN..ATO DIN WAIT KORABEN NA..PLZ AKTA UPDATE TOA DIN...PLZ PLZ DADA...REQUEST
Like Reply
#57
(27-12-2018, 09:45 PM)bourses Wrote: Ei vabe bolben na.... Ami khubi samanyo ekjon ameture writer... Shokhe likhi.... Apnader valo laglei amar lekha swarthok. .

KHUB I VALO LAGCHE...XOSSIP CHOLE JOWAR POR BORING KATCHILO LIFE...AAJ SEI SWAD ABR FIRE PELAM..........
Like Reply
#58
Chesta korleo hobe na.... Golpota ofc er computer e achhe.... Opekhya kortei hobe... Extremely sorry...
Like Reply
#59
OK...THEN 31ST AKTA BORO KRE UPDATE DIA DEBEN PLZ...OI DIN TARPOR R KAHANI AND ODER MILON ER PORBO.....THANKS AGAIN
Like Reply
#60
Heart 
(27-12-2018, 11:50 AM)bourses Wrote: তোমার মত পাঠককে ফিরে পেয়ে আমিও খুশি... আর কি রকম সমাপতন দেখ... আমার গল্পের নায়কও অদৃশ্য মানুষ... হা হা হা...

রেপু রইল...

Xossip a ei golper suru ta porei bujte peresilam j eti onnorokom golpo hote solese, jemon ti hoyesilo salinir ophohoron,jodim  golpe.apnar golpe sobsomoy notun taste paowa jay.tai apnar golpo pori.

Apni hoyto janen na ami apnar onek purono pathok.xossip a niyomito portam.but acc silo na kono.Hotat xossip bondo hoye jaoway khub kosto peyesilam.Tai eibar ekhane acc khulei pellam
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)