Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
HORROR ভয় ২ - বাবান
#81
শেষ পর্ব

নিজেকে ওই সব অস্বাভাবিক অনুভূতি গুলো থেকে বাঁচাতে যে যুক্তির সাহায্য বারবার নিচ্ছিলাম এবং দেখি সেই যুক্তিই আমায় বাধ্য করছে আরও ভয় পেতে! এমন সব ভাবছি ঠিক তখনি আমার ডান হাতটা কে যেন হটাৎ চেপে ধরলো! চমকে উঠলাম আমি এমন হওয়াতে। সেটাই স্বাভাবিক। কেঁপে উঠে পাশে তাকিয়ে দেখি জোজো। উফফফফফ গা থেকে যেন জ্বর নেমে যাবার মতো শান্তি পেলাম। জোজো আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু তাকিয়ে আছে বারান্দার দরজার দিকে যেটা এখন বন্ধ। আমার হাতে ধরা টর্চটা আলো সোফার ওপর গিয়ে পড়েছে তাই পাশের ওই দরজার জায়গাটা অন্ধকারে ঢাকা। আমি ছেলের দিকে তাকিয়েই ছিলাম। জোজো একহাতে আমায় ধরে অন্য হাতের আঙ্গুল মুখে নিয়ে ওই দিকে তাকিয়ে। কি জানি কি হলো তারপরেই দেখলাম ও দুই হাতে আমার হাতটা ধরে আমার পেছনে লুকিয়ে পড়লো। যেন কিছুটা দেখে ও ভয় পেয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে টর্চটা ফেললাম দরজার দিকে। মনে প্রবল একটা ভাব জাগলো নিশ্চই কিছু একটা ওখানে আছে আর আমি সেটার সাক্ষী হতে চলেছি কিন্তু...... কই? কিচ্ছু নেই তো ওখানে। যেমন দরজা আগের মতো বন্ধ ছিল তেমনি বন্ধ। এমন সময় ও ঘর থেকে জোজোর বাবা উঁচু স্বরে ছেলের নাম ধরে ডেকে উঠলো। আমিও আর না দাঁড়িয়ে বেরিয়ে এলাম ও ঘর থেকে। কিন্তু আমি যখন দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসছি তখনি যেন মনে হলো দূরে একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম। কোনোরকমে হাসি চেপে রাখার চেষ্টা করেও যখন চেপে রাখা কষ্টকর হয় আর ঠিক তখনই ঘরঘর করে একটা অদ্ভুত আওয়াজ বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে একদম যেন ওটার মতো। কিন্তু এইবার আর আমি পেছনে তাকাইনি। ছেলের হাত ধরে সোজা ওর বাবার কাছে চলে গেলাম। আমাদের দেখে সে জিজ্ঞেস করলো ও ঘরে আমরা কি করছিলাম। তখন বলতেই হলো কিছুনা ওই দেখে এলাম একটু। তারপরেই হটাৎ একটা প্রশ্ন জাগলো মনে। আচ্ছা জোজো তখন ফুটবল নিয়ে খেলছিল। কিন্তু ওর বলটা তো টিভি দেখার সময় ওই বসার ঘরেই রাখা ছিল। তাহলে জোজো বলটা এখন পেলো কিকরে? ও কি একা একা এই ঘর থেকে বেরিয়ে ওই অন্ধকার ঘরে গিয়ে বল নিয়ে এসেছে? এটা যেন মানতে পারছিনা। ও ছোট মানুষ তাই ভয়ের ময় অনুভূতি হয়তো পুরোপুরি ভাবে পূর্ণতা লাভ করেনি কিন্তু বাবা পাশে থাকতেও ও উঠে বল আনতে চলে গেলো? নাকি বলটা এই ঘরেই ছিল আমি বেশি ভাবছি? জিজ্ঞেস করেই ফেললাম ব্যাপারটা ওর বাবাকে। কিন্তু মনের মতো উত্তর পেলাম না। শুধু এইটুকু বললো যে জোজো কিছুক্ষন পরে হটাৎ নেমে বলটা নিয়ে খেলতে শুরু করে দিয়েছিলো। অরিন্দম শুধু এইটুকুই বলেছিল যেন চুপচাপ নিজের মতো খেলে?

- আচ্ছা একটা বল নিয়ে তুমি দেখি দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলে গো? আরে নিশ্চই বলটা এখানে ওখানেই কোথাও ছিল। ওটা নিয়ে ছেলেটা খেলছিলো। কি? তাইনা জোজো?

বাবার প্রশ্ন শুনে জোজো কোনো উত্তর দিলোনা। শুধু বাবার গায়ে এলিয়ে পড়ে ফোনটা হাতে নিয়ে নিলো বাবার থেকে। ছেলেটা এমনিতেও বড্ড শান্ত স্বভাবের আমার। কিন্তু ওর এই চুপ করে থাকাটা যেন এই মুহূর্তে আমার ভালো লাগছিলো না। যেন মনে হচ্ছে ও কিছু একটা বারবার দেখেছে কিন্তু ওর ছোট্ট মস্তিস্ক সেটা বোঝার ক্ষমতা অর্জন করেনি সেইভাবে এখনো তাই হয়তো ও গুরুত্ব দিচ্ছেনা। নইলে কি দেখে অমন লুকিয়ে গেছিলো ও আমার পেছনে? এ যে কি অস্বস্তিকর একটা পরিস্থিতি সেটা আমিই টের পাচ্ছিলাম। আধঘন্টা আগেও আমি ও ঘরে ওদের সাথে বসে টিভি দেখার মজায় ডুবে ছিলাম। আর এখন সব কেমন যেন পাল্টে গেছে। আমি আর বেশি কিচ্ছু না ভেবে বিছানায় উঠে গিয়ে বসে পড়লাম আর খোলা জানলার সামনে হেলান দিয়ে বসে আমার ফোনটায় গান শুনতে লাগলাম। যদি একটু এসব থেকে বেরিয়ে মাথাটা শান্ত করতে পারি। কিন্তু আমি যেন কিছুতেই রবীন্দ্রসংগীতে মন দিতেই পারছি না। বার বার চোখ যাচ্ছে বাইরের পাঁচিল আর তার ওপাশের সুপারি গাছ গুলোর দিকে। হাওয়ায় নড়ে ওঠা পাতাগুলো যেন মনে হচ্ছে ইশারা করে কাছে ডাকছে। ওগুলো যেন পাতা নয়, হাত। সেগুলো নেড়ে এইদিকে তাকাতে বলছে। উফফফফফ! এই অন্ধকারে যেন সবকিছুই ভয়ের লাগে। ছোটোখাটো সামান্য ব্যাপার পর্যন্ত অন্য রূপ নেয়। আমি আর ওদিকে নজর না দিয়ে  ফোনের স্ক্রিনে মন দিলাম। এরপরেও যে পুরোপুরি সেই অনুভূতি গুলো পুরোপুরি চলে গেছিলো বললে ভুল বলা হবে। প্রায়ই মনে হয়েছে পাঁচিলের ওপাশ থেকে উঁকি মেরে কেউ জানলার দিকেই চেয়ে আছে, আবার একবার মনে হয়েছে জানলার বাইরে এপাশ থেকে ওপাশে ভয়ানক তীব্র গতিতে কিছু যেন একটা চলে গেলো। আর সবচেয়ে ভয়ের আর অস্বস্তিকর হলো যেটা সেটা হলো জানলার একেবারে বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছে একদম চুপ করে। আমার আর সাহস হয়নি তখন ঐদিকে তাকানোর। ভেতর থেকে আমিই যেন নিজেকে বলছিলাম একবারও তাকাবিনা ঐদিকে। চোখ যেন না যায়। ওই দৃশ্য সহ্য করতে পারবিনা তুই। সে চায় যে তুই তাকা কিন্তু তাকাবি না কিন্তু!

উফফফফফ!! এসব কি হচ্ছে ? পুরোটাই মনের ভুল? যাচ্ছেতাই একেবারে! ভাবলাম নিজেই সরে যাবো ওখান থেকে কিন্তু দেখলাম জোজোর বাবাই আমার পাশে এসে বসলো। "কি দেখছো দেখি " বলে আমার একটা ইয়ারফোন নিজের কানে লাগিয়ে চুপটি করে আমার কাঁধে মাথা রেখে শুনতে লাগলো সেই চিরদিনের প্রিয় মানুষটার সৃষ্টি। একটু পরেই বুঝলাম আর কোনো খারাপ অনুভূতির বিন্দুমাত্র নেই অন্তরে। নানান সব আজগুবি চিন্তায় ভোরে ওঠা মাথাটা যেন এতক্ষন ভারী হয়ে ছিল সেটা হালকা হয়ে গেছে। তার বদলে  আমি আবার দুজন মানুষের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করলাম। একজন ওই বিশ্ব বিখ্যাত মানুষটা যে বাড়িতে বসে সৃষ্টি করে গেছে একের পর এক সব জাদু ভরা লেখা যা একবার শুরু করলে থামা যায়না। আর দ্বিতীয় জন হলেন এই আমার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বুজে থাকা লোকটা। যে বিশ্ব বিখ্যাত না হতে পারে, কিন্তু আমার কাছে সব। কারণ সে আমাকে পৃথিবীর সেরা উপহারটা দিয়েছে। যেটা এখন ওই যে দূরে শুয়ে বাবার মোবাইলে ডোরেমন দেখছে। ও আসার পরেই তো বুঝলাম মা হবার মানে কি। ছোটবেলায় মা যখন বকতো কিংবা বেশি দুস্টুমি করলে হাত তুলতো তখন খুব রাগ হতো মায়ের ওপর। আজ বুঝি ওই সময় মায়ের ওপর দিয়ে কি যেত। আজ বুঝি তার দিকটা। আমার জোজো তো আমার মতো দুস্টু নয় তাতেই সামলে ওঠা যায়না, সেদিন মায়ের কি অবস্থা হতো। কিন্তু এটাই তো মা হবার সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। এই রাগ এই বকুনি আর তার সাথে অনেক অনেক আদর। সেই লোভে পড়েই তো মাঝে মাঝে আবার মা হতে ইচ্ছে করতো আমার। ছোট্ট জোজোর মুখটা মনে পড়তো। খুব সামলে কোলে নিয়ে ওর বাবা যখন তাকিয়ে থাকতো নিজের সৃষ্টির দিকে..... সেই দৃষ্টি, সেই মুহুর্তটর আবার সাক্ষী হতে ইচ্ছে জাগতো আমার। আমার এই ইচ্ছের কথা আমার কাঁধে মাথা রেখে বসে থাকা মানুষটাকে বললেই হেসে আমায় এইভাবেই জড়িয়ে ধরতো। বুঝতাম তারও লোভ জাগে। এমন লোভে ক্ষতি নেই বোধহয়।

এগুলোই ভাবতে ভাবতে নিজেও কখন যেন গুনগুন করতে শুরু করেছিলাম। লোকটা পাশে থাকলেই যেন সব ভুল চিন্তাগুলো গায়েব হয়ে যায়। কি যে জাদু আছে এই জোজোর বাবাটার মধ্যে কে জানে। কিছুক্ষন পরে আবার কারেন্ট ফিরে এলো। অন্ধকার কেটে গিয়ে আবার আলোয় ভোরে উঠলো ঘর গুলো। বসার ঘর এমনকি বাইরের বারান্দায় গিয়ে ঘরের গেট শেষবারের মতো দেখে এলাম। জোজোকে নিয়ে গিয়ে বাথরুম করিয়ে আনলাম। তারপরে শাশুড়ি মায়ের ঘর থেকে ঘুরে এসে বিছানায় উঠে ঘরের জানলা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে নাইট ল্যাম্প জ্বেলে ছেলেকে ঘুম পাড়াতে লাগলাম। এতক্ষন ধরে অন্ধকার ঘিরে থাকা ঘরে আলো ফিরে এলেও পুনরায় আবারো অন্ধকারে ডুবে গেলো ঘরটা। ঘরের ওই হালকা সবুজ আলোয় হালকা হালকা সব দেখা যাচ্ছিলো। দুজন শুয়ে কথা বলতে বলতে একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম আমি। আমার মনে নেই আর কিছু। জোজোর বাবাকে দেখেছিলাম শেষবারের মতো ফোন হাতে নিয়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়তে। আমিও আর চোখ খুলে রাখতে পারিনি। ওকে ফোন নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি না করতে বলে চোখ বুজি। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসায় একসময় ঘুমে হারিয়ে যাই।

কতক্ষন সময় পার হয়েছে কিচ্ছু মনে নেই। হটাৎ কেমন একটা অসস্তি অনুভব হতে শুরু করলো আমার। আমি বুঝতে পারছি কিছু একটা যেন হচ্ছে আমার সাথে। দম নিতে কষ্ট হচ্ছে যেন। যেন নিঃস্বাস নেবার স্বাভাবিক পক্রিয়ায় একটা বাঁধা আসছে। মাথাটা এদিক ওদিক করছি আমি। কিন্তু চোখ খুলছিনা কেন? এদিকে যে বুকের চাপ আরও বেড়েই চলেছে! আমি মাথা টুকু ছাড়া আর কিছুই যেন নাড়তে পারছিনা। হটাৎ করে পুরো শরীর অসার হয়ে গেছে আমার! এ কি হচ্ছে আমার সাথে? প্রচন্ড অসস্তিতে শেষমেষ অজান্তেই কোন সময় যেন খুলে গেলো আমার চোখটা! আর চোখ খুলতেই আমি চমকে উঠলাম। জোজো!! আমার ওপর উঠে বসে আছে! ওর ঠোঁটে হাসি। কিন্তু নিজের ছেলের এই হাসিটা চিনতে পারছিনা কেন আমি? আর ও এমন করে আমার ওপরে বসেই বা কেন? উফফফফফ বুকটা!! এ কি হচ্ছে কি! জোজো এতো ভারী হলো কিকরে? এর আগেও তো কতবার জোজো আমার ওপর উঠে বসেছে, খেলা করেছে। কিন্তু আজকেরটা যে আমি সহ্য করতে পারছিনা। ওহহহহ! এতো ভার কিকরে হয়ে গেলো ওর? ঐভাবে তাকিয়ে হাসছে কেন সে? আমি কোনোরকমে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সামান্য জোজো নামটুকু নিতে মনে হলো যেন অনেকটা সময় লেগে গেল। আমি উঠে বসতে চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই পারছিনা। কিন্তু আমি পুরো দমে চেষ্টা করে গেলাম। আমার ওই হালকা নড়ার ফলে একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো। আমার চোখের সামনে জোজো হটাৎ লাফিয়ে নেমে পড়লো বিছানা থেকে আর দ্রুত গতিতে ঘরের খোলা দরজার পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে গেলো। এ! একিকরে হতে পারে! ও এতো জোরে কিকরে ছুটতে পারে? এমন সময় বাইরে থেকে মেঝেতে কিছু পড়ার আওয়াজ আসলো আর তারপরেই মাআআআ!! বলে চেঁচিয়ে উঠলো জোজো! আমি আর থাকতে পারলাম না এরপরে। জোজো! বলে চেঁচিয়ে উঠে দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম বাইরে কিন্তু একি! কোথায় জোজো? বাইরে তো কিছু নেই। আলো জ্বালাতে গেলাম কিন্তু একি! আবারো কারেন্ট গেছে নাকি? উফফফফ জোজো কোথায়? সিঁড়ির দিকের কাঁচের জানলাটা দিয়ে বাইরের হালকা আলো ওই সিঁড়িতে পড়েছে। তাতেই যেন অনেকটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এখন। এগিয়ে গেলাম ওদিকে। এমন সময় শুনলাম ছাদের দরজার শব্দ। ওটা কেউ খুললো। তারপরেই সিঁড়িতে পায়ের শব্দ। কেউ যেন ওপর থেকে নিচে নামছে। এটা যে জোজো নয় সেটা ওই পায়ের আওয়াজ শুনেই বোঝা যাচ্ছে। কারণ ভারী পায়ের আওয়াজ। অন্ধকারের মাঝেই যেন আরও গভীর অন্ধকারে ঢাকা কিছু একটা সিঁড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো। অবয়বটা কোনো পুরুষের মনে হচ্ছেনা? একটু এগিয়ে যাবো? হ্যা তাই যাই। কে ওটা?

ওমা! একি? অরিন্দম কখন ছাদে গেছিল? এতো রাতে ছাদে কি কাজ ওর? ও হটাৎ নেমে আসছে যে । জোজোকে দেখতে পাচ্ছিনা। আমাকে দেখেই ও দ্রুত নেমে এসে আমার হাত ধরে বললো "চলো  চলো ছাদে চলো!" এদিকে আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। অবাক হয়ে ওর সাথে এগোতে লাগলাম। জিজ্ঞেস করলাম ছেলে কোথায়? ও কি তোমার সাথে? কোনো উত্তর দিচ্ছেনা সে। হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওপরের দিকে। কিন্তু ও যেন সিঁড়ি দিয়ে উঠছেনা.... দৌড়োচ্ছে। উফফফফ আমাকে একপ্রকার যেন জোরে টেনে নিয়ে উঠে যাচ্ছে ছাদে। আমি! আমি যেতে চাইনা কিন্তু আমি যে থামতেও পারছিনা! ওকে বললাম আমরা এখন ছাদে যাচ্ছি কেন? জোজো কোথায়? কিচ্ছু উত্তর দিচ্ছেনা ও। আচ্ছা ও ওই ভাবে হটাৎ হাসছে কেন? এই রাতে কি দেখাবে ও ছাদে? জোজো কোথায়? ওর বাবা ঐভাবে হাসছে কেন? পেছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকলো না? এদিকে আমি যেন আর হাটছিনা। আমার পা যেন আর সিঁড়ির ওপরে নেই। আমি কি হাওয়ায় ভাসছি নাকি? উফফফফ আবার কে নাম ধরে ডাকে আমায়? অরিন্দম? কিন্তু সেতো আমার সাথে!  তাহলে পেছনে কে ডাকে? ওই তো পৌঁছে গেছি দরজার সামনে। এবার ভেতরে যাওয়া বাকি। হটাৎ! কানের কাছে মুখ এনে কে যেন খুব জোরে আমার নাম ধরে ডাকলো তিন্নি!

--------------------------------------------

হটাৎ পেছন থেকে বেশ জোরে একটা হাতের চাপে চোখটা খুলে গেলো আমার। সাদা উজ্জ্বল আলোয় চোখটা এক মুহূর্তের জন্য ধাঁধায়ে গেল। আমি ঘুরে তাকাতেই দেখি জোজোর বাবা অবাক চোখে আমার দিকেই তাকিয়ে। আমি ঘেমে গেছি। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। যেন অনেক্ষন পরে নিঃশাস নিতে পারছি আমি।

- কি গো? কি হয়েছে? তুমি এইভাবে!! হটাৎ..... হটাৎ কি হলো তোমার!?

গভীর ঘুম থেকে জাগিয়ে দিলে যেমন প্রথম মুহূর্তে কিছুই বোঝা যায়না। দিনরাত গুলিয়ে যায় সাথে আশে পাশের চেনা দৃশ্যগুলো তেমনি অবস্থা তখন আমার। ওর কথাও যেন শুরুতে বুঝতে পারছিলাম না। যেন অন্য ভাষায় কিসব বলছে ও। মাথায় ঢুকছে না সেসব। তারপরে ওর ঝাকুনিতে ঘুমের রেশটা কাটলো। টানা টানা স্বরে জিজ্ঞেস করলাম " কি? কি হয়েছে? আমি....আমার আবার কি হবে? কেন কি হয়েছে? "

ও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো - কি হয়েছে মানে?  তুমি!..... তুমি.....তাকিয়ে দেখো তুমি কোথায়!তুমি এখানে কি করছো? আর ঐভাবে উঠে এলে কেন?

আমার চোখে যেন ভয়ানক ঘুম চেপেছিল। ওটা ভাঙিয়ে দিতে যেন মাথাটা হালকা গরম হয়ে যাচ্ছিলো। তাই ওই অবস্থাতেই রেগে বলেই ফেললাম " কি সব বলছো কি?  জাগালে কেন  আমায় এখন? আর কোথায় আবার আমি যাবো?... আমিতো......"

ব্যাস... শুধু এইটুকু বলার পরেই আর কিচ্ছুটি বেরোলো না আমার মুখ থেকে। আমি জানিনা কারোর সাথে এমন কখনো হয়েছে কিনা কিন্তু আমার ঘুম কি পরিমানে সাংঘাতিক এসেছিলো যে আমি আমার সেই মুহূর্তের অবস্থা টুকু নিজেই বুঝতে পারছিলাম না। আমার মস্তিস্ক আটকে ছিল শেষ ওই বিছানায় যখন চোখ বুজে ছিলাম। কিন্তু এখন চোখ খোলার পরে আমার চারিপাশের দৃশ্য গুলো চোখে পড়তেই চক্ষু চরকগাছ হয়ে গেলো! আমি কিচ্ছু বলার মতো অবস্থায় যেন রইলাম না। আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখান থেকে কয়েক পা এগোলেই সিঁড়ির প্রথম ধাপ শুরু। আমি এখানে কি করছি!? আমি এলাম কিকরে এখানে? আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম! আর তারপরে যা সব দেখলাম সেগুলো তো...... স্বপ্ন তাইনা? হ্যা তাই হবে। কিন্তু আমি তাহলে এখানে পৌঁছে গেলাম কিকরে! হে ভগবান! আমি এখানে কেন?

আমার ওই অবস্থা দেখে জোজোর বাবা কাছে টেনে নিলো আমায়। আমি তাকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরলাম। আমার চোখ বিস্ফোরিত। আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা। তাই তাকে নানান সব উল্টোপাল্টা প্রশ্নে জর্জরিত করতে লাগলাম। অরিন্দম আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে একটা চেয়ারে আমায় বসিয়ে নিজেও একটাতে বসে আমার হাত চেপে ধরে রইলো। আমি কাঁপতে শুরু করেছি যেন ভয়। এসব কিকরে হয়ে গেলো? তখনই আমার মনে পড়লো একটু আগের দেখা ওই অদ্ভুত স্বপ্নটা। আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো জোজো কোথায়? অরিন্দম আমায় জানালো সে ঘুমোচ্ছে। তারপরে সে জানালো যা হয়েছে। আমি নাকি জোজো বলে চেঁচিয়ে উঠি। তাতেই ওর তন্দ্রা ভেঙে যায়। উফফফ ভাগ্গিস ও কিছুক্ষন আগে পর্যন্ত ফোন ঘাঁটছিলো। সবে ওর চোখে ঘুম এসেছে এমন সময় ওই কান্ড। ও ঘুরে দেখে আমি নাকি টলতে টলতে এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। ও বোধহয় ভেবেছিলো আমি বাথরুমে যাচ্ছি। কিন্তু ওর সেই ভুল ভেঙে গেছিলো যখন ও শুনেছিলো আমি নাকি জড়ানো গলায় ছেলের নাম নিতে নিতে টলতে টলতে ঘর থেকে বেরিয়ে অন্ধকারে হেঁটে চলে যাচ্ছিলাম। অথচ ছেলে তো পাশেই শুয়ে। তখনি ও উঠে বেরিয়ে আসে আর দেখে আমি নাকি ওই অন্ধকারেই হেঁটে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। ও দুবার নাকি আমার নাম ধরে ডাকেও। আমি নাকি শুনতেই পাইনি। তখন সে বুঝতে পারে আমার কিছু একটা হয়েছে। তক্ষুনি বাইরের আলো জ্বালিয়ে সে দৌড়ে আসে আমার কাছে আর আমায় জাগিয়ে দেয়।

আমি সব শোনার পরে কিচ্ছু বলতে পারিনি। শুধুই অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার সাথে এটা কি হলো?কেন হলো। আমার তো কক্ষনো কোনো স্লিপ ওয়াকিং এর প্রব্লেম ছিলোনা। তাহলে হটাৎ এসব কি? আর এখুনি বা এমন হলো কেন? ও আমার অবস্থা দেখে জোজোর বাবাও বোধহয় গুরুত্বটা বুঝলো। তাই বার বার আমাকে শান্ত হতে বলছিলো। কিন্তু ও নিজেও যে ঘাবড়ে গেছে সেটা দেখলেই বোঝা যায়। এই কদিনে যা যা আমরা অনুভব করেছি সেসব যে আর অগ্রাহ্য করা যাবেনা সেটা দুজনেই বুঝে গেছিলাম। আমি তো উত্তেজনার বশে বলেই ফেললাম যে কালকেই চলো আমারা বাবা মায়ের কাছে চলে যাই। আমি আর থাকবোনা এখানে। তারপরে ভাবলাম এসব কি বলছি আমি! ছি ছি! আর তাছাড়া পালিয়ে গিয়ে হয়তো সাময়িক মুক্তি পেলেও পাবো কিন্তু তারপরে? ফিরে তো আসতেই হবে কিছুদিন পরে। তখন?

আমার অবস্থা দেখে জোজোর বাবাও দেখি রাজি হয়ে গেলো। বললো আমাকে আর ছেলেকে কদিন ও বাড়িতে দিয়ে আসবে। আমি যেন একটুও ভয় না পাই। ওর কথা শুনে আরও ঘাবড়ে গেলাম। তার মানে কি বলছে ও? অরিন্দম একা এই বাড়িতে ফিরে আসবে!? নানা! কিছুতেই না। ওকে একা এখানে রেখে আমি ও বাড়িতে শান্তিতে থাকতে পারবোনা। আমি কোনো রিস্ক নিতে পারবোনা। একবার রাস্তায় ও কাকে না কাকে দেখেছে। সে আবার পিছন পিছন ফলো করেছিল। ওরে বাবা নানা! আমি পারবোনা মানুষটাকে একা ছাড়তে। আর পালিয়ে গিয়েও কি রক্ষা হবে ? যদি ওখানেও...!! তার চেয়ে এখানে যেমন আছি তেমনি থাকবো।

প্রচন্ড ভয় যেমন একদিকে ভীতু বানিয়ে দিতে পারে, তেমনি হয়তো একসময় ভয়ানক সাহসও যোগায়। কিছুটা হয়তো রাগ থেকে। রাগের ফলে আসে জেদ আর সেই জেদ যোগায় সাহস। আমি শুরুতেই বলেছি আমি ভয়ানক সাহসী মেয়ে না হলেও সহজে ভয় পাইনি কোনোদিন। কিন্তু এই কদিনে আমার ভিতরে কেমন যেন কমজোরি অনুভব করছিলাম। একটুতেই ঘাবড়ে যাওয়া, সামান্য ব্যাপারে চিন্তায় পড়ে যাওয়া এমন কি এর মধ্যে নানা ছোট কারণে মাথায় রাগও এসে যাচ্ছিলো। জোজোকে সামলাতে গিয়ে বিশেষ করে। কিন্তু আজ এখন যেটা হলো তারপরে আর শান্ত থাকা যায়না। আমি ভেবে নিলাম বাড়ি ছেড়ে তো যাবোই না বরং দেখবো কতদূর যায় এই ব্যাপারটা। কালকেই মাকে সব জানাবো। আমাদের বাড়ির পরিচিত পুরোহিত মানুষ আছেন। তারক জ্যাঠু। আমি তাকে সেই নামেই চিনি। তিনি নাকি অনেক কিছু জানেন, বোঝেন। আর আমি মোটেই ঈশ্বর শক্তির কথা বলছিনা। তার দাদু নাকি নিজের যৌবনে প্রেত চর্চা করতেন । অনেক কিছু জানতেন। সেখান থেকেই নাতি সেই শিক্ষা পেয়েছে। যদিও আমাদের কাছে সে পুরোহিত হিসেবেই এতদিন পরিচিত। ঈশ্বর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা এক শান্ত স্বভাবের মানুষ।দরকার হলে কালকেই গিয়ে কথা বলবো ওনার সাথে। উনি যদি কোনো সুরাহা......

আমার এসব কথা শুনে জোজোর বাবাও আর যেন আমাকে বাঁধা দেবার মতো সাহস পেলোনা। সেটা আমার দৃঢ়তা দেখে নাকি তার ভেতরের ভয় থেকে জানিনা। সেদিন রাতে যে ঘুমের বারোটা বেজে গেছিলো সেটা বলাই বাহুল্য। এরপর আর ঘুম হয়? কোনোরকমে দুটো প্রাণী জেগে কাটিয়ে দিয়েছিলাম রাত। ভোরের দিকে আমি ওকে জোর করে ঘুমাতে বললাম। দেখেই বুঝেছিলাম ওর ঘুমটা এসেছে কিন্তু আমার চিন্তায় সেটাকে কাটিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। ধমক দিয়ে শুইয়ে দিলাম ওকে। বালিশে মাথা দিতেই জোজোর বাবা থাকতে না পেরে চোখ বুজেছিলো। কিন্তু আমি আর ঘুমাইনি। আশ্চর্যজনক ভাবে ঘুমও যেন আর ছিলোনা চোখে। সব ঘুম যেন তখন রাতে চেপে বসেছিল। এতো গভীর ঘুম যে চোখে নেমে আসতে পারে ভাবতেই পারিনি। এতটাই যে জেগে ওঠার পরেও সব বুঝতে কিছুক্ষন সময় লেগেছিলো। মাঝে মাঝেই চোখ চলে যাচ্ছিলো পাশে শুয়ে থাকা ছেলেটার দিকে। নিজের ছেলের এই ঘুমন্ত শরীরটা দেখতে দেখতে রাতে  স্বপ্নে দেখা ওই দৃশ্য মনে পড়ে যাচ্ছিলো। উফফফফ শরীরের ওপর বসে আছে জোজো! আর কেমন ভাবে তাকিয়ে হাসছে! আর ওই ছিটকে পালিয়ে যাওয়াটা তো আরও....! মাগো মা! উফফফ। শরীরটা কেঁপে উঠেছিল। মা আর সন্তানের মাঝে যে অনুভূতি থাকে এক মুহূর্তের জন্য যেন সেটাকে ছিন্ন করে দিয়েছিলো ওই স্বপ্ন। আচ্ছা নিজের সন্তানকে কি কেউ ভয় পেতে পারে? তাও আবার এইটুকু বাচ্চাকে যে একটু একটু করে বড়ো হচ্ছে? ওই স্বপ্ন যেন তাই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যতই হোক সে আমার জোজো। আমার প্রাণ। ওই ঘুমন্ত ছেলেটাকেই জড়িয়ে গালে চুমু খেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে অদ্ভুত শান্তি পেয়েছিলাম।

ভোরের আলো ফুটলো। পাখির কুঞ্জনে চারিপাশ ভোরে উঠলো। এই পাখির ডাক যেন অদ্ভুত এক শক্তি যোগায়। যেন মনে হয় ওরা বলছে কোনো ভয় নেই..... কিচ্ছু হয়নি তো....সব আগের মতোই তো আছে। তখন গিয়ে চোখ কিছুক্ষনের জন্য বুঝে এসেছিলো। শান্তির এক ঘুম। বেশ অনেক্ষন পরে উঠেছিলাম সেদিন। ওর বাবা উঠেও আমাকে জাগায়নি। মা ছেলেতে দেরী করে বিছানা ছেড়েছিলো। রাতের একটা ঘটনা এমন ভাবে প্রভাব ফেলেছিলো আমাদের ওপর যে দিনের আলোতেও যেন চেনা বাড়িতে একা হতেই কেমন যেন ভয় লাগছিলো। হয়তো পুরোটাই অলীক কিন্তু তাও তো ভয়। এ জিনিস একবার ভেতরে ঢুকে গেলে সহজে মুক্তি নেই। সকালেই মাকে ফোনে সব কিছু জানাই। এমনকি বাবার সাথেও কথা হয় অরিন্দমের। বাবা যদিও এসব বিষয় আলোচনা কোনোদিনই তুলতে পছন্দ করেনি কিন্তু অবিশ্বাসও করেনি কোনোদিন। কারণ বাবাও নিজের কম বয়সে এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছিল। তখন সে স্কুলের ছাত্র। নুড়ি পাথরের বৃষ্টির ওই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা বাবা কোনোদিন ভুলতে পারেনি। টিনের চালে শিলা বৃষ্টির মতো নুড়ি বৃষ্টি অথচ একটাও কিছু মাটিতে পড়ছেনা। এই একই রকম ঘটনাটা নাকি আমার এক বান্ধবীর কাকার সাথেও একবার হয়েছিল। যাইহোক সব শুনে মা বললো চিন্তা না করতে।  তারক জ্যাঠুর সাথে নাকি কাল সকালেই বাবার দেখা হয়েছিল। আমার কথা জিজ্ঞেস করছিলো কেমন আছি আমি। বাবা একটু পরেই যাবে ওদের বাড়ি জেঠুর সাথে কথা বলতে। যদি উনি বলেন ওনার কাছে যেতে তাহলে আমরা গিয়ে দেখা করে আসবো। এর একটা রাস্তা বার করতেই হবে। আর এসব এড়িয়ে যাওয়া যায়না। ভাগ্য ভালো যে সেদিন রবিবার ছিল। তাই আর জোজোর বাবার কাজে যাওয়ার তাড়া ছিলোনা। রাতে যা হলো এমনিতেও প্রয়োজনে ছুটি নিয়ে নিতো সে।


পরের অংশ এখুনি আসছে...
[+] 7 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
Star 
আগের পর্বের পর

আমি রান্না ঘরে চা করছি আর ওরা ঘরে রয়েছে। জোজো ওর বাবার সাথে খেলছে। ছোট মানুষটা কিছুই বুঝছেনা যে বাবা মায়ের মুখের হাসিটা আজ বড্ড নকল। একটু পরেই শুনলাম আমার ফোন বেজে উঠলো ঘরে। কাজ বন্ধ রেখে দৌড়ে এলাম ঘরে। বাবা ফোন করেছে। রিসিভ করতেই বাবা বললো যে জেঠু নাকি কথা বলতে চায় আমার সাথে। ওনার বাড়িতেই বাবা রয়েছে। পরোক্ষনেই একটা অন্য গলার স্বর কানে ভেসে আসলো। চিনতে অসুবিধা হলোনা আজও। শুধু একটু জড়িয়ে যায় এখন মানুষটার কথাগুলো। আমি ও আমরা কেমন আছি জানার পরে সে জিজ্ঞেস করলো কি অসুবিধা হয়েছে। যা যা হয়েছে সব খুলে বলতে। আমি সেই শুরু থেকে কাল রাত পর্যন্ত যা যা ঘটেছে সব বললাম। এমন কি পল্লবীর ব্যাপারটাও বলতে ভুললাম না। সব শুনে উনি আমায় কয়েকটা প্রশ্ন করোছিলেন। সেগুলো এবার জানাচ্ছি-


১ আমি এর মধ্যে কোনো খারাপ বিশ্রী পোড়া গন্ধ বা নতুন ধরণের কোনো পেয়েছিলাম কিনা

২ আমার কি বিনা কারণে হটাৎ করে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগতো কিনা অর্থাৎ হটাৎ করে কম্পন।

৩ একা হলেই আমার কখনো মনে হয়েছে কিনা যে আসে পাশে কেউ আছে 

৪ বমি বমি ভাব কখনো হয়েছে কিনা

৫ বিনা কারণে খুব রেগে যাচ্ছি কিনা। অর্থাৎ স্বামী বাঁ বাচ্চার ওপর অকারণে রাগ বাঁ ঝগড়া হয়েছে কিনা।

৬ রোজ পূজা করার সময় কোনো বাঁধা আসছে কিনা বা পুজো দিতে গিয়ে অনীহা।

৭ ধুপ জ্বালানোর সময় তার সুগন্ধ আগের মতোই পাচ্ছি কিনা 

এর মধ্যে হালকা রেগে যাওয়া আর ওই অন্ধকারে কারোর স্পর্শ অনুভব ছাড়া বাকি কোনোটাই আমার সাথে হয়নি। রেগে যাওয়াটা তাও মেনে নেওয়া যায় কিন্তু রাতে ওই স্পর্শ! ওটা যে আমি অনুভব করেছি তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর তখন জোজো আর ওর বাবা বসার ঘরে ছিল। শুনে উনি যেটা বললেন সেটা শোনার পরে কিছুটা যেন আশার আলো দেখলাম। উনি বললেন যতটা উনি বুঝেছেন তাতে বিশাল ভয়ের কিছু নেই। আর তাছাড়া উনি নিজেই এ বাড়িতে আসবেন আমাদের সাথে দেখা করতে। এটা একদিকে ভালোই হলো। উনি নিজে এসে সব দেখে বুঝুন। উনি জানান আজ সন্ধের দিকে উনি আসবেন আমাদের বাড়ি। বাবাই নিয়ে আসবেন ওনাকে। আমি বাবাকে জানালাম মাকেও নিয়ে আসতে। তবে আমার সাথে ফোনে কথা বলার শেষে উনি এটাও জানিয়ে ছিলেন আমি যেন আজ রান্নাঘরে সামলে সকল কাজ করি। অর্থাৎ রান্না করার সময় যেন সাবধানে থাকি। এটা উনি কেন বলেন সেটা বুঝলাম না কিন্তু উনি যখন বলেছেন আমি আচ্ছা ঠিকাছে ছাড়া আর কি বা বলতাম। হয়তো উনি কিছু একটা আন্দাজ করেছেন। তবে এসবের মাঝেও একটা ভালো লাগায় মনটা অনেক ভালো লাগছিলো। বাবা মা আজ অনেকদিন পরে আসছে আমার কাছে। সাথে তারক জ্যাঠু নিজে আসছেন। দেখা যাক কি হয়। এইসব অদ্ভুতুরে সমস্যার মাঝেও জোজোর বাবা বাজারে গেলো। মাছ কিনে আনলো, সাথে মিষ্টির দোকান থেকে সন্দেশ আর স্পঞ্জ রসগোল্লা (বাবার প্রিয়) । আজ এতদিন পরে বাবা মা আসছে। ওদের আসার অপেক্ষায় আর আশার আলোয় সময় কখন যেন পার হয়ে গেলো। নিজের মধ্যে কয়েকবার হালকা ভয় জাগলেও সত্যি বলছি র কিচ্ছুটি অনুভব করিনি। আমি বা অরিন্দম। ভালো করে রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে একসাথে তিনজনে সময় কাটালাম। হ্যা অবশ্যই রান্নার সময় কেয়ারফুল ছিলাম। আমি সবসময়ই থাকি। এর মাঝেই শশুর মশাই এর ফোন এসেছিলো। অরিন্দম কথা বললো কিন্তু আমি আগেই বারণ করে রেখেছিলাম যেন রাতের ব্যাপার ওদের না জানাতে। মানুষ গুলো চিন্তায় পড়ে যাবে। নিজের বাড়ির আর বাড়ির ছেলে বৌয়ের এমন সমস্যা শুনলে বয়স্কা শাশুড়ি মায়ের আবার কি হয় কে জানে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ ওরা সবাই এলো। তার আগেই মাসি এসে সব কাজ করে গেছে। আমারও পূজা দেওয়া হয়ে গেছে। ট্যাক্সি থেমে নেমে এলো বাবা মা আর রোগা করে একজন বয়স্ক মানুষ। আমাকে দেখেই বাবা মায়ের মতো তার মুখেও একটা হাসি ফুটে উঠলো। বয়সের কারণে মুখে অনেকটা পরিবর্তন আসলেও জ্যাঠার হাসিটা আজও বড্ড চেনা, বড্ড মিষ্টি। সাদা পাঞ্জাবী আর ধুতি আর কাঁধে একটা ঝোলা। জোজোর বাবা দ্রুত এগিয়ে গিয়ে ওদের নিয়ে এলো ঘরে। আমিও ছেলের হাত ধরে এগিয়ে গিয়ে প্রণাম করলাম বড়োদের। জোজো বাবুকে তো বাবা কোলেই তুলে নিলো। বড্ড ভালো লাগছিলো এতদিন পরে বাবা মাকে কাছে পেয়ে। আমরা সবাই আবার ঘরে প্রবেশ করলাম। বাবা মা জোজোকে নিয়ে বসার ঘরে ঢুকে গেলেও অরিন্দম আর আমি দেখলাম তারক জ্যাঠা দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক দেখছেন। বিশেষ করে ওই সুপারি গাছ আর জামরুল গাছটার দিকে। তারপরে কিছুই যেন হয়নি এমন ভাব নিয়ে সোজা ঢুকে গেলেন ঘরে। সোফায় সবাই বসতে না বসতেই মা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো - কিরে? আবার কিছু হয়েছে নাকি এর মধ্যে? আমি হেসে মাথা নেড়ে না জানালাম।

- সত্যিই মানে কি বলবো.... তোমাদের ডেকে আনলাম তাও আবার কিনা এসব ঝামেলায় পড়ে। অদ্ভুত যে কি সব শুরু হলো। নিজের বাড়িতে এই ভাবে যে......

- আচ্ছা মা কাল রাতে ঠিক কি হয়েছিল আরেকবার বলতো?

আমার কথার মাঝেই জ্যাঠা জিজ্ঞেস করলো আমায় কথাটা। আমি পুনরায় রাতের ঘটনাটা খুলে বললাম। ফোনে তাড়াতাড়ি করে বলা একরকম ছিল কিন্তু এখন মানুষটাকে সামনে পেয়ে সবটা গুছিয়ে বললাম যে রাতে যা যা হয়েছে। সবটা শুনে বাবা মাও অবাক হয়ে গেলো। সত্যি তো এ কি হচ্ছে? মা তো ভয়ে পেয়ে বলেই ফেললো - ও দাদা? কি হচ্ছে এসব মেয়েটার সাথে আমার? এ কি নজর পড়েছে নাকি আমার মেয়েটার ওপর। মরলো ওই বাড়িতে আর কিনা আমার মেয়েটার ওপর নজর দিলো।

তারক জ্যাঠা হালকা হাসি হেসে মাকে সান্তনা দিয়ে বললো - আপনি চিন্তা করবেন না। আমার কিন্তু মনে হয় তেমন কিছু নয়। তিন্নি মা ভয় পাবার কিছু নেই। একটা কথা মনে রাখবি.... যত ভয় পাবি ততো বিপদ। তুই তো আর কোনো খারাপ কাজ করিসনি তাহলে কিসের ভয়? মনের জোর থাকলে কোনো কিছু সহজে ক্ষতি করতে পারেনা। কিন্তু আমরা কিন্তু ভয় পেয়ে নিজের ক্ষতি করে দিতে পারি। তবে এটাও ঠিক কোনো ব্যাপারে অতি সাহস দেখানো উচিত নয়। মানুষের কৌতূহল অনেক সময় তার বিপদ ডেকে আনে। আজকাল তো এসব নিয়েও নাকি মজার খেলা শুরু হয়েছে। ভূত প্রেত নিয়েও খেলা। প্ল্যানচেট তাও একটা অন্য জিনিস ছিল এসব তো আরও সাংঘাতিক। ওই আমার ছোট নাতিটা সেদিন দেখাচ্ছিল ফোনে কি সব যেন বেরিয়েছে.... আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তিনবার একটা নাম নিতে হয়, আবার চার্লি চার্লি না কি যেন একটা খেলা। এসব কি টাইম পাসের মতো জিনিস? এসব নিয়ে মজা করতে নেই। যত্তসব! তা যা হোক আমি কিন্তু এ বাড়িতে খারাপ কিছু বুঝতে পারছিনা। তবে অরিন্দম বাবার সাথে যেটা হয়েছে ওটা আমায় বেশি ভাবিয়েছে। আর কাল রাতের ঘটনাটা। হটাৎ করে............আচ্ছা অরিন্দম? আমি একটু তোমাদের সব ঘর গুলো ঘুরে দেখবো বাবা। তিন্নি তুই এখানেই থাক।

জোজোর বাবা আর জ্যাঠা বসার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি মায়ের পাশে বসে  এইসব নিয়েই আলোচনা করতে লাগলাম। জোজো নিজের দাদুর সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত। কিছুক্ষন পরে আমি সবার জন্য চা বানাতে যাবো এমন সময় দেখি অরিন্দম ফিরে এলো। উনি কোথায় জিজ্ঞেস করাতে সে বললো উনি ছাদে গেছেন। একটু ঘুরে দেখবেন একা। প্রথমে উনি গেছিলেন বাবা মায়ের ঘরে। ঠাকুর এর মন্দিরের কাছে গিয়ে আগে কালী মায়ের ছবির সামনে বসে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করেন। তারপরে ঘরটায় চোখ বুলিয়ে পাশের ঘরে অর্থাৎ আমাদের বেডরুমে যান। সেটা দেখে অরিন্দম তাকে নিয়ে যায় রান্নাঘর আর কলঘরটা দেখাতে। কিন্তু ফেরত আসার সময় উনি সিঁড়ির সামনে পৌঁছে নাকি দাঁড়িয়ে পড়েন। তারপরে অরিন্দমকে বলেন উনি ছাদে যাবেন। সে বলে চলুন কিন্তু উনি বলেন উনি একাই যাবেন। জোজোর বাবা যেন সিঁড়ির আলোটুকু জ্বালিয়ে ফিরে যায়। সবটা শুনে আমি রান্না ঘরে গেলাম সকলের জন্য চা বানাতে। মাও এলো সাথে। আমি আর মা ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, সেদিন মা আমার পেছনে যে কিছু একটা দেখেছিলো সেটা নিয়ে মা আর আমি কথা বলছিলাম। আমরা শুনতে পেলাম ওপর থেকে যেন জোরে জোরে তিনবার হাততালি দেবার মতো আওয়াজ এলো। একেবারে পরপর। এমন ভাবে ছয় বার উনি করলেন এটি। আমি আর মা মুখ চাওয়াচায়ী করলাম। উনি হটাৎ এমন করলেন কেন বুঝলাম না। একটু পরেই শুনতে পেলাম সিঁড়িতে পায়ের শব্দ। উনি নামছেন। ওনাকে নামতে দেখে মা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে ওনার কাছে গিয়ে কথা বলতে লাগলো। আমি রান্নাঘর থেকে শুনতে পাচ্ছি মা বলছে-

- দাদা? কি কিছু সমস্যা আছে নাকি? কি বুঝলেন?

- আমি কি বললাম তখন? ভয় পাবেন না। ভয়ের কিছুই নেই। আর তিন্নি মায়ের কোনো বিপদ হবেনা আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন তো। তিন্নি মা? ও কোথায়?

- রান্না ঘরে... চা বানাচ্ছে।

- আচ্ছা আচ্ছা। আমি কিন্তু কিচ্ছু খাবোনা চা ছাড়া। আমায় ফিরে যেতে হবে একটু পরেই। এতো ভাববেন না। তখন গাড়িতেও দেখছিলাম আপনাকে চিন্তিত ছিলেন।আমি বুঝতে পারছি আপনার দিকটা। আমি আবারো বলছি ভয়ের কিচ্ছু নেই। আসলে ওই ওর রাশিটা হালকা তো। তাই একটু ঝামেলা আরকি। আপনি ভাববেন না। কিচ্ছু নেই এই বাড়িতে আপনি যা ভাবছেন। হ্যা একটা হাওয়া হয়তো লেগেছে কিন্তু সেটাও হয়তো কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। ওই যে তখন গাড়িতে বললাম না আপনাদের....আসলে ওই সময় অমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়া আর ঠিক ওই সময়তেই আপনার মেয়ের বাথরুমে যাওয়া এই দুই সময় মিলে গিয়েই এইটা হলেও হতে পারে। কিন্তু শুধুই তিন্নির ওপর যে কোনো কু-দৃষ্টি পড়েছে সেটা বোধহয় নয়।যদি তাই হতো তাহলে এতক্ষনে অনেক বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যেতে পারতো। সেতো আবার নাকি আসে পাশের বাড়িতেও জানান দিয়েছে। আমার কেমন যেন খটকা লাগছে।

- কেমন খটকা দাদা?

- যদি সে.... কি যেন নাম? পল্লবী হ্যা পল্লবী..... তা সে যদি আত্মহত্যাই করে তবে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা তো ওর নিজের বাড়িতে হবে। সে এইভাবে সারা পাড়া ঘুরে ভয় দেখাবে কেন? আচ্ছা সেই মেয়ের নিজের বাড়িতে কি কিছু এমন ঘটেছে? কিছু জানেন?

- না তিন্নি তো তেমন কিছু বলেনি। ওদের সঙ্গে তেমন খুব একটা যোগাযোগ ছিলোনা। ওই টুকটাক।

- হুমমমম..... আমার মনে হয় আসলে মেয়েটি যখন কাজটি করে তখন হয়তো সে কোনো একটা দোষ পেয়েছে। তাই সে এতটা প্রকাশ করছে নিজেকে। হয়তো কষ্ট পাচ্ছে তাই...... কিন্তু এটা বেশিদিন হবেনা। বাড়ির লোকেরা সব ব্যবস্থা নিলেই সব শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুদিন এই ব্যাপারটা থাকবে। আমি ভেবেছিলাম ব্যাপারটা বাড়াবাড়ির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু যা বুঝলাম সেরকম কিছু না।

- কিন্তু দাদা! কাল রাতে যে ওই যেটা হলো সেটা? মেয়ে নাকি আমার হেঁটে হেঁটে ঘুমের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে.....

- আপনি আপনি ভয় পাবেন না। আমি বলছি তো কিচ্ছু ভয় নেই। ঝামেলাটা থাকবে। কিন্তু সেটা বেশিদিন থাকবেনা। আমি এসেছি তো। সব ঠিক হয়ে যাবে। চা হোক আমি বরং একবার বাড়িটা বাইরে থেকে ঘুরে দেখে আসছি ততক্ষনে। আমি বলি কি বৌদি? আপনি কদিন মেয়ের সাথে এখানেই থাকুন। এতে ওর মনটাও ভালো থাকবে আর একা একা লাগবেনা। ভয় টয় আর লাগবেনা ওর। আচ্ছা আমি বরং যাই বাইরেটা একটু দেখে আসি। 

------------------------------------------

আমরা সবাই বসার ঘরে অপেক্ষা করছি ওনার। একটু পরেই আবারো হাজির হলেন তারক জ্যাঠা। এবারও তিনি একাই কাজটা করতে গেছিলেন। জোজোর বাবা সঙ্গে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু তিনি বললেন কাজটা তাকে একাই করতে হবে। ওর প্রয়োজন নেই। অরিন্দম দাঁড়িয়ে দেখেছিলো ভদ্রলোক মাথায় দু হাত ঠেকিয়ে চোখ বুজে কি একটা বলে বাইরে চলে যায়। গেট পার করে যখন উনি বাইরে গেলেন তখন জোজোর বাবাও দেখেছিলো উনি হাতের সাথে অন্য হাত ঘষছেন। যেমন খুব ঠান্ডায় আমরা হাতে হাত ঘসি অনেকটা এরকম। কিন্তু কয়েকবার এমন করার পরেই উনি সেই একই কাজ করলেন। সজোরে হাতে পরপর তিনবার তালি বাজিয়ে আবার হাতে হাত ঘষতে ঘষতে বাইরে চলে গেলেন। জোজোর বাবা ব্যাপারটা দেখে অবাক হয়েছিল বটে। আমরাও ওর মুখে শুনে একটু অবাক হয়েছিলাম। কিছু সময় পর ওনার আসার পরে দেখলাম ওনার ঠোঁটে হালকা হাসি। এসেই বললেন - ওহ চা হয়ে গেছে না। এহে হে আমার জন্য অপেক্ষায় না থেকে আপনারা শুরু করেননি কেন?

- কি বুঝলেন তারক দা? চিন্তিত মুখে জিজ্ঞাসা করলো বাবা। তাতে উনি আগের মতোই মিষ্টি করে হেসে মাথা নাড়িয়ে নিজের থলিতে হাত ঢুকিয়ে একটা লাল জবা ফুল বার করে এনে সবার আগে এগিয়ে এলেন জোজোর কাছে। জোজোও তাকিয়ে ছিল যতীন দাদুর দিকে। ওর মাথায় ফুলটা ঠেকিয়ে তারপরে বুকে ঠেকিয়ে কি যেন বিড়বিড় করে বললেন। তারপরে জোজোকে বাঁ দিকের খোলা জানলার দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে তাকাতে বললেন। জোজো তাকাতেই উনি আদর করে ওর পেটে কাতুকুতু দিতেই জোজো খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো। তারপরে ওর গাল দুটো টিপে আদর করে জ্যাঠা আমাদের দুজনকে অর্থাৎ আমাকে আর জোজোর বাবাকে ওনার কাছে যেতে বললেন। আমরা গিয়ে দাঁড়াতেই উনি সেই একই কাজ আমাদের সাথেও করলেন। ফুলটা আমাদের মাথায় ধরে চোখ বুজে কিছু বললেন। তারপরে আমাদের দুজনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। যেন আশীর্বাদ করলেন মনে হলো। তারপরে আমার হাতে ফুলটা দিয়ে বললেন আমি যেন এটা ঠাকুর ঘরে মায়ের পায়ের কাছে রেখে আসি।

- এই নে মা ধর। দু হাত জড়ো কর আগে.... হ্যা নে এবার ধর। এটা তোদের ঠাকুর ঘরের মায়ের পায়ের কাছে রেখে আয় তো। মায়ের ফুল মায়ের কাছেই থাকুক। শুধু এক স্থান থেকে আরেক স্থানে এলো আরকি হাহাহা। নে মা রেখে আয়। আর হ্যা প্রদীপটা জ্বালিয়ে দিস। কিছুক্ষন জ্বলুক পরে নিভিয়ে দিস। 

ঠাকুরের পায়ের কাছে ওটা রেখে  প্রদীপ জ্বালিয়ে আবারো প্রণাম করে ফিরে এলাম ঘরে। কিন্তু একটা জিনিস অবাক লাগলো। আমি যখন কাজটা করতে যাচ্ছিলাম তখন জোজো আমার পিছনে পিছনে আসছিলো। তখনি জ্যাঠা ওকে হাত ধরে থামিয়ে দিয়ে ওনার কাছে থাকতে বলে আমাকে একাই যেতে বলেছিলো। কেন জানিনা। কিন্তু কাজটা করে ভক্তি ভোরে মাকে প্রণাম করার পরে যেন সত্যিই মনে হচ্ছিলো এবার আর কিচ্ছু হবেনা হয়তো। যেন একটা অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করছিলো ভেতরে। যেন একটা শান্তি পেলাম আমি হটাৎ করেই। প্রদীপের আলোয় মায়ের মুখটা যেন জ্বলজ্বল করছে। কি সুন্দর লাগছে মায়ের মুখটা। এ মুখ তো আমি রোজ দেখি। রোজ পূজা করি কিন্তু এতো ভালোলাগা আগে অনুভব হয়েছিল কি? জানিনা। ফিরে আসি আবারো বসার ঘরে। আমায় দেখেই ওনার মুখে ওই মিষ্টি হাসিটা আবার ফুটে উঠলো। আমার মুখেও একটা হাসির রেখা ফুটে উঠলো। কেন? নিজেই জানিনা।

- শোন মা! তুই একেবারে নিশ্চিন্ত থাক। তোর সাহস অনেক। তাই সহজে তোকে কেউ কিচ্ছু করতে পারেনি, পারবেও না। শুধু ওই সময় তোর ওই বাইরে বেরোনোটা সেদিন উচিত হয়নি। কিন্তু তুইও বা বুঝবি কিকরে। তোর দোষ নেই....ওটা হবার ছিল হয়ে গেছে। কিন্তু তোকে তোর সাহস আর মা রক্ষা করেছে। কালকে যা হয়েছে ওসব ভুলে যা। কিচ্ছু হয়নি তোর সাথে। ওই একটা হয়তো কিছু ছিল.......সেটা কেটে যাবে। তুই ভগবানের ওপর এই ভাবেই বিশ্বাস রাখ। যেমন পূজা করছিস করে যা। শুধু দুটো জিনিস কর। এই আসন্ন এক সপ্তাহ রোজ বাড়িতে ধুনো দিবি। জানি একটু চোখ জ্বালা করবে কিন্তু তাও করবি। আর হ্যা এই কদিন তোরা তোদের ঘরে ঘুমাবিনা। তোর শশুর শাশুড়ির ঘরটায় ঘুমাবি। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে তারা এখন এখানে নেই। তাই কোনো অসুবিধা নেই। আর বাড়ির দরজায় দরজায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিবি প্রতিদিন। ব্যাস....দেখবি  সব ঠিক হয়ে গেছে। কিচ্ছু চিন্তার ব্যাপার নেই। আর অরিন্দম বাবা তুমি প্রতিদিন কাজে যাবার আগে একবার করে ঠাকুর ঘরে গিয়ে মাথা ঠেকিয়ে পেন্নাম করে তবে বেরোবে। আর এই হনুমানজির ছবিটা সাথে রাখো। এটা সবসময় সাথে রেখো। ব্যাস আর কিচ্ছু চিন্তা নেই। এবার সব ঠিক হয়ে যাবে। আশা করি আর কোনো ঝামেলা হবেনা। আর কিছু হলে আমি তো আছিই। আর হ্যা মা আরেকটা কথা। প্রতিদিন ওই ফুলটায় একটু জলের ছিটে দিস। যতদিন না শুকিয়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে যাবার পরে ওটাকে আর মায়ের পায়ের কাছে রাখতে হবেনা। কিন্তু জলে দিবিনা। ওটাকে একটা কাগজে মুড়ে ওখানেই কোথাও রেখে দিবি। আমি জানিয়ে দেবো একদিন যে কবে ওটাকে জলে দিবি কেমন? আচ্ছা নে আমার যাবার সময় হয়ে গেলো। চাটা খেয়ে নি।

-------------------------------------

উনি আর বেশিক্ষন থাকেননি আমাদেরর বাড়িতে। চা পান করেই উনি কিছুক্ষন গল্প করে চলে যান। বাবা মা আমাদের সাথেই থেকে যান। কটা দিন না হয় মেয়ের কাছেই কাটিয়ে গেলো দুজনে। এরপর সেই রাত আর তারপরে আরও অনেক গুলো রাত কেটে গেছে। কিন্তু আর কোনো অস্বাভাবিক কিছুর সাক্ষী হতে হয়নি আমাকে বা আমাদেরকে। কিন্তু এর পরে নাকি আমাদের বাড়ির বাইরের ঐ রাস্তায় রাতে দু জনের এক্সিডেন্ট হয়েছিল। একজন সাইকেল থেকে পড়ে যান। আর একজন নিজের বাড়ির গেট থেকে বেরিয়ে দুপা এগোতে না এগোতেই কিসে ধাক্কা খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়েন। দুটোই ঘটেছে রাত নটা থেকে নটা দশ পনেরোর মধ্যে। আর দুটো জায়গাই একবারে কাছাকাছি। ওই মিষ্টির দোকানের রাস্তায়। ঠিক যেখানে একদিন জোজোর বাবা দেখে ছিল কে যেন ওর পেছনে আসছে। এছাড়া আমার শাশুড়ি মায়ের যে বন্ধু সুজাতা কাকিমা মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে আসতো তিনি আর ওনার বড়ো ছেলে নাকি একদিন রাত করে কোথা থেকে ফিরছিলেন বাইকে। বাড়ি পৌঁছে বাইক থেকে উনি যখন নামতে যান তখন উনি পড়তে পড়তে বাঁচেন। পরে উনি একদিন আমাদের বলেছিলেন ওনার নাকি মনে হয়েছিল ওনার শাড়িটায় নাকি উনি টান অনুভব করেছিলেন জোরে। এতটাই জোরে যে পেছনের দিকে কয়েক পা পিছিয়ে যান। যদিও নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন। তবে এই ঘটনার সাথে ওই ব্যাপারটার কোনো যোগাযোগ ছিল কিনা জানিনা। কারণ ওনার বাড়ি অনেক ভেতরের দিকে। তবে আমাদের আর কোনো অসুবিধা হয়নি এই যা শান্তি। কিন্তু আজও কিছু প্রশ্ন যেন আমায় ভাবতে বাধ্য করে। আজও আমার মনে হয় তারক জ্যাঠা সেদিন কিছু একটা বুঝেছিলেন যেটা তিনি প্রকাশ করেন নি। তাছাড়া ছাদে তিনি একা ছিলেন আর একা বেরিয়ে আমাদের বাড়িটা ঘুরে দেখেছিলেন। ওই সময় টুকুতে কি হয়েছিল আমাদের জানা নেই। ফিরে আসার সময় ওনার মুখে হাসি ছিল কেন? আচ্ছা সবকিছু জানার পরেও উনি এতটা নিশ্চিন্ত ছিলেন কিকরে? ঐভাবে তালি বাজানোর মানে কি? উনি বারবার বলছিলেন যে বেশি দুশ্চিন্তা না করতে। সব ঠিক আছে। এতটা শিওর উনি কিকরে ছিলেন। নাকি আমরা যাতে প্যানিক না করি সেই জন্য সান্তনা? রাতে ওই ভাবে আমার ঘুমের মধ্যে একা বেরিয়ে যাওয়া শুনে ওনার ভ্রূকুটির মানে কি? আর তার চেয়েও বড়ো কথাটা আজও সবচেয়ে বেশি ভাবায় আমায়। বিদায় নেবার সময় উনি আলাদা করে আমায় ডেকে আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন আমি যেন কোনো ভয় না পাই। আর বাচ্চাকে সামলে রাখি, খেয়াল রাখি। আমি হেসে বলেছিলাম হ্যা জোজোর খেয়াল তো আগে রাখবো। সেটা শুনে উনি মিষ্টি করে হেসে মাথা নেড়ে বলেছিলেন - "আমি জোজোর কথা বলছিনা, যে আসবে তার কথা বললাম, আসি হ্যা কেমন। ভালো থাকিস মা। কোনো ভয় নেই "

এই বলার পর আর দাঁড়াননি তিনি। বেরিয়ে যান। অরিন্দম ওনাকে ছাড়তে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু উনিই বারণ করেন। আমি শুধু ওনার বিদায় দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারিনি। আজও জানলাম না উনি কিকরে জানলেন যে আমার  আর জোজোর বাবার ভালোবাসা আবারো একটু একটু করে বাস্তবের রূপ নিচ্ছে আমার অন্তরে? কিন্তু তারপরেই কেঁপে উঠি একটা কথা ভেবে........ যে এতদিন আশেপাশে ছিল সেও কি একই ভাবে এই কথাটা জানতে পেরেছিলো? সেই জন্যই কি আমার সাথে ঐসব ঘটেছে? সেই জন্যই কি আমাকে কোনোভাবে টেনে নিয়ে গেছিলো সিঁড়ির কাছে? কি উদ্দেশ্য ছিল তার? তাহলে কি......!!

আজও যখন এই শেষ কথাটা ভাবি আমায় ঘিরে ধরে ভয়!



|| সমাপ্ত ||

[Image: 20230816-221934.png]
Like Reply
#83
এক দিকে বুম্বাদা আরেক দিকে দুই রত্ন যদি এক সাথে পর্ব দেয় তাহলে আমরা পাঠকরা কোনটা ছেড়ে কোনটা পড়বো । তাই আজকের পর্ব না পড়েই লাইক রেপু দিয়ে রাখলাম রাতে যখন একা থাকবো তখন আরামসে পড়বো জানি ভালো কিছু পাবো। আজকেই আমার তিন অভিজ্ঞতা জানাবো দাদা।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
#84
লাইক   দিয়ে রাখলাম কিন্তু কাল পড়বো।

রেপু  শেষ , পরে মেকআপ করে দেবো।

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#85
শেষ হয়েও হইল না শেষ। মনে অনেক প্রশ্ন রেখে গেল এই কাহিনী। তবে এটা বোঝা গেল ওই মেয়েটির মৃত্যুর পর থেকেই তার অশরীরী ঘটিয়ে চলেছে এই সমস্ত ঘটনা। তারক জ্যাঠা মহাপুরুষ তাই তিনি সবকিছুই জানেন সবকিছুই বোঝেন। ভালো থাকুক জোজো, ভালো থাকুক অরিন্দম,‌ তিন্নি আর তাদের আগত সন্তান।  yourock

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#86
 জোজোর মায়ের স্বপ্নের দৃশ্যটা, বলা ভালো নিশির ডাকের যে সিকোয়েন্সটা তুমি সৃষ্টি করেছো .. সেটা এক কথায় অসাধারণ। পড়তে পড়তে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিলো। জ্যাঠামশাই যতই অ্যাসিওরেন্স দিক না কেন, আমি হলে বাপু ওই বাড়িতে আর একটা দিনও থাকতাম না। এসব অপঘাতে মৃত্যু হওয়া আত্মাদের একদম বিশ্বাস নেই, কোথা থেকে সুপার পাওয়ার নিয়ে এসে যদি ঘাড়ে চেপে বসে, তখন জ্যাঠামশাইয়ের ফুলও কোন কাজ করবে না। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি গল্পের সাক্ষী থাকলাম আমরা।  clps
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#87
(30-01-2023, 10:02 PM)ddey333 Wrote: লাইক   দিয়ে রাখলাম কিন্তু কাল পড়বো।

রেপু  শেষ , পরে মেকআপ করে দেবো।


ওকে। নো প্রব্লেম  Shy
মতামত এর অপেক্ষায় রইলাম।

(30-01-2023, 10:07 PM)Sanjay Sen Wrote: শেষ হয়েও হইল না শেষ। মনে অনেক প্রশ্ন রেখে গেল এই কাহিনী। তবে এটা বোঝা গেল ওই মেয়েটির মৃত্যুর পর থেকেই তার অশরীরী ঘটিয়ে চলেছে এই সমস্ত ঘটনা। তারক জ্যাঠা মহাপুরুষ তাই তিনি সবকিছুই জানেন সবকিছুই বোঝেন। ভালো থাকুক জোজো, ভালো থাকুক অরিন্দম,‌ তিন্নি আর তাদের আগত সন্তান।  yourock

এটাই হলো আসল কথা। ওরা সবাই ভালো থাকুক।
অনেক ধন্যবাদ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জুড়ে থাকার জন্য  Namaskar

(30-01-2023, 10:08 PM)Bumba_1 Wrote:  জোজোর মায়ের স্বপ্নের দৃশ্যটা, বলা ভালো নিশির ডাকের যে সিকোয়েন্সটা তুমি সৃষ্টি করেছো .. সেটা এক কথায় অসাধারণ। পড়তে পড়তে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিলো। জ্যাঠামশাই যতই অ্যাসিওরেন্স দিক না কেন, আমি হলে বাপু ওই বাড়িতে আর একটা দিনও থাকতাম না। এসব অপঘাতে মৃত্যু হওয়া আত্মাদের একদম বিশ্বাস নেই, কোথা থেকে সুপার পাওয়ার নিয়ে এসে যদি ঘাড়ে চেপে বসে, তখন জ্যাঠামশাইয়ের ফুলও কোন কাজ করবে না। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি গল্পের সাক্ষী থাকলাম আমরা।  clps

অনেক ধন্যবাদ ♥️
হ্যা সত্যিই ওই স্বপ্নের দৃশ্যটা লেখার সময় নিজেও ভাবছিলাম কল্পনায় দৃশ্যটা। বাবারে!! তবে আমার মনে হয় তারক জ্যাঠামশাইয়ের ওষুধে কাজ দেবে    Big Grin
Like Reply
#88
(30-01-2023, 09:57 PM)Boti babu Wrote: এক দিকে বুম্বাদা আরেক দিকে দুই রত্ন যদি এক সাথে পর্ব দেয় তাহলে আমরা পাঠকরা কোনটা ছেড়ে কোনটা পড়বো । তাই আজকের পর্ব না পড়েই লাইক রেপু দিয়ে রাখলাম রাতে যখন একা থাকবো তখন আরামসে পড়বো জানি ভালো কিছু পাবো। আজকেই আমার তিন অভিজ্ঞতা জানাবো দাদা।

হ্যা। সেই ভালো। রাতে আয়েশ করে পড়বেন।
আশা করি ভালো লাগবে শেষ পর্ব।
হ্যা আমিও অপেক্ষায় রইলাম সত্যি ঘটনা গুলোর।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#89
কিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে রেখে শেষ হলো গল্পটা। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। যে যার মতো ভেবে নিক। কিন্তু আমার মনে হয় জোজোর মায়ের ওপর বিশেষ করে নজর ছিল। আর তার কারণটা শেষে জানাই গেলো। তবে স্বপ্নের অংশ টা সাংঘাতিক ছিল। হয়তো টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো ক্ষতি করার জন্য। ওই তারক বাবু মানুষটা নিশ্চই কিছু একটা বুঝতে পড়েছিল যেটা এদের বলেনি। গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছিলো যেন সত্যি কোনো ঘটনা পড়ছি। দারুন দারুন।
ভয় ১ এর থেকেও ভালো হয়েছে এই ভয় ২ এর শেষ পর্ব। clps yourock yourock

আবারো তাড়াতাড়ি নতুন কিছু চাই দাদা। অপেক্ষায় থাকবো।
[+] 1 user Likes Avishek's post
Like Reply
#90
প্রথম অভিজ্ঞতা তখন ছয় সাত বছরের তাই যতটা মনে আছে ততটা বলছি তার আগে সময় বুঝার জন্য কয়েকটা কথা বলছি আমাদের গ্রামে বাড়ি আছে এখনো, যেটা দাদুর আমলের তো আমরা মাঝে মধ্যেই দিদিদের স্কুলের ছুটিতে ওখানে ঘুরতে যেতাম বাবা মার সাথে বিশেষ করে দোল পূর্ণিমা, তারপর কালি পূজা যেখানে ব্রহ্মা শীতলা পূজা হতো আমাদের বাড়িতে ।তখন ওখানে সব কাকাত ভাই বোন পিসির ছেলে সব আসতো সব মিলিয়ে আমরা ভাইবোন ছিলাম 22 জন তো বুঝতেই পারেন সব বাচ্চারা মিলে কেমন ধামাল করতাম। তখন গ্রাম মানে পুরো একদম গন্ড গ্রাম যাকে বলে, যেখানে বিদ্যুতের আসে নি তখন, যেখানে সন্ধের সাথে সাথে রাত হয়ে যেত তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে আটটাতে ঘুম, রাতে বাড়ির সাথের জঙ্গল থেকে শিয়াল এর আওয়াজ শুনা যেত ভোর বেলা সব ভাই বোনেরা মিলে ফুল তুলতে যেতাম তখন বন মোরগ দেখাযেত । তারপর ছোট ভাই বোনের গ্রামের বালুওয়ারি স্কুলে খিচুড়ি খেতে চলে যেতাম সেখান থেকে এসে পুকুরে দাপাদাপি এক দের ঘন্টা দাদু ঠাকুমার চিল চিৎকার করলে তারপর ঘরে বিকালে আম গাছে উঠে কে কত উপরে উঠতে পারবে তার কম্পিটিশন এই ছিল আমার ছোট বেলা । তো আমার ঠাকুমার এক বোনের বাড়ি ছিল আমাদের বাড়ির থেকে একটু দুরে ঠাকুমা সব সময়ই বলতো দুপুরে যেন ঐ দিদার বাড়ি দিকে একা একা না যাই রাস্তা ভালো না । বাচ্চার মন বুঝতেই পারেন বড়রা যেটা মানা করবে সেটা বেশি করে করবে । একদিন দুপুরের সবাই যখন ঘুমে আমি ঐ দিদার বাড়ি চলে গেলাম। বিকাল বেলা চলে আসলাম দিদা নিজে এসে আমাকে দিয়ে যান । কেউ কিছু বলেন নি কিন্তু ঠাকুমা একটু আমাকে বকাবকি করলো। কাকতালীয় ভাবে ঐ রাতে আমার ধুম জ্বর বাবা মা বলছে সারা দিন না খেয়ে ঘুরলে এমন হবেই। কিন্তু ঠাকুমা একদম চুপ। পরের দিন আমার জন্য সবাই চলে আসলাম শহরে । এবার আরেকটা কথা আমরা যারা বাঙাল তারা সুকনু মাছ যেটাকে সুটকি বলে ওটা রান্না করে খেতে খুব ভালো বাসি। ইলিশ মাছ কে ছয় সাত মাস লবন দিয়ে প্রিসার্ভ করে রান্না করে খায় ওটাকে লোনা ইলিশ বলে। তো গ্রামের থেকে আসার পর থেকে আমি চুপচাপ থাকি বেশি কেউর সাথে কথা বলি না। এ ভাবেই কিছু দিন চলেছে , এক দিন বাবা বাজার থেকে ঐ লোনা ইলিশ এনেছে বাস ঘরে আনার সাথে সাথে আমার তো সুরু হলো পাগলামি ঐ ইলিশের গন্ধ নেওয়ার লোভ ঐ দিন সন্ধ্যার সময় আমি হঠাৎই কি মনে হলো আমি চুপচাপ রান্না ঘরে গিয়ে ইলিশের ব্যাগ থেকে ইলিশ বের করে কাঁচা ইলিশ খাওয়া শুরু করলাম ঐ স্বাদ আমি জীবনে এখনো কোনও কিছুতে পাইনি। যাইহোক তারপরের সব কিছু খুব ঝাপসা ঠিক মনে নেই আমার, বাকিটা আমার মার ঠাকুমার মুখ থেকে শোনা, আমি যখন রান্না ঘরে এই কান্ড করছিলাম আমার দিদি দেখে ফেলে ও সোজা গিয়ে মা কে বলেছে মা তো শুনেই রান্না ঘরে আমার কাছে। তারপর সেখান থেকে আমাকে ঘরে নিয়ে আসলো ঐ সময়ের পর ধীরে ধীরে আমার ধুম জ্বর একেবারে ১০৩''। রাত কোনও ভাবে কাটানোর পর সকালে ডাঃ কাছে নিয়ে যায় বাবা। ওখান থেকে বাড়ি এসে দেখি ঠাকুমা আর দাদু গ্রাম থেকে এসেছে আসার সময় কি এক তাবিজ নিয়ে এসেছে আমার জন্য। আর ঐ দিন ভর সন্ধ্যার সময়ের রাস্তার তেমাথায় আমাকে রান্না করে দিয়েছে কিছু খাওয়ার জন্য পরের দিন থেকে আমি একদম ঠিক। মাঝের দুই দিন আমার জীবন থেকে পুরোটাই মুছে গেছে । তারপর অনেক পরে ঠাকুমা আর মা কাছে যেটা শুনেছি আমি যে দিন ঠাকুমার বোনের বাড়ি গিয়েছিলাম তার কিছুদিন আগে ঐ দিদার বড় ছেলের বৌ সুইসাইড করে ছিল কাকুর অন্য মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল ঐ বাড়ি থেকে আসার সময়ে কিছু একটা আমার সঙ্গে এসেছিল। আমার ঠাকুমা এক ওঝার কাছে যাই আমার শহরে চলে আসার পর কারন ওনার সন্দেহ হয়েছিল আমার চাঞ্চল্য দেখে এবং ঐ ওঝা গণনা করে বলে দেন কি হয়েছে এবং কি করতে হবে । যদিও আমার এখনও বিশ্বাস হয় না এমন কিছু হয়ে ছিল আমার কাছে পুরো ঘটনাটা একটা শপ্নের মত মনে হয় এখনও । আমার মনে হয় তখন আমি কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়েছিলাম।

এই কথা গুলি বলতে যত আরামে বলা যাই লেখতে ততটাই কষ্ট হয় । এই গেল এক রইলো বাকি দুই কালকে আবার বলবো দাদা।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 7 users Like Boti babu's post
Like Reply
#91
শেষের দিকে বেশ গা শিরশির করছিলো।  

বটি বাবুর সত্যি ঘটনা বোনাস !!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#92
(31-01-2023, 01:27 AM)Boti babu Wrote: প্রথম অভিজ্ঞতা তখন ছয় সাত বছরের তাই যতটা মনে আছে ততটা বলছি তার আগে সময় বুঝার জন্য কয়েকটা কথা বলছি আমাদের গ্রামে বাড়ি আছে এখনো,   যেটা দাদুর আমলের তো আমরা মাঝে মধ্যেই দিদিদের স্কুলের ছুটিতে ওখানে ঘুরতে যেতাম বাবা মার সাথে বিশেষ করে দোল পূর্ণিমা, তারপর কালি পূজা যেখানে ব্রহ্মা শীতলা পূজা হতো আমাদের বাড়িতে ।তখন ওখানে সব কাকাত ভাই বোন পিসির ছেলে সব আসতো সব মিলিয়ে আমরা ভাইবোন ছিলাম 22 জন তো বুঝতেই পারেন সব বাচ্চারা মিলে কেমন ধামাল করতাম।  তখন গ্রাম মানে পুরো একদম গন্ড গ্রাম যাকে বলে, যেখানে বিদ্যুতের আসে নি তখন, যেখানে সন্ধের সাথে সাথে রাত হয়ে যেত তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে আটটাতে ঘুম,  রাতে বাড়ির সাথের জঙ্গল থেকে শিয়াল এর আওয়াজ শুনা যেত ভোর বেলা সব ভাই বোনেরা মিলে ফুল তুলতে যেতাম তখন বন মোরগ দেখাযেত । তারপর ছোট ভাই বোনের গ্রামের বালুওয়ারি স্কুলে খিচুড়ি খেতে চলে যেতাম সেখান  থেকে এসে পুকুরে দাপাদাপি এক দের ঘন্টা দাদু ঠাকুমার চিল চিৎকার করলে তারপর ঘরে বিকালে আম গাছে উঠে কে কত উপরে উঠতে পারবে তার কম্পিটিশন এই ছিল আমার ছোট বেলা । তো আমার ঠাকুমার এক বোনের বাড়ি ছিল আমাদের বাড়ির থেকে একটু দুরে ঠাকুমা সব সময়ই বলতো দুপুরে যেন ঐ দিদার বাড়ি দিকে একা একা না যাই রাস্তা ভালো না ।  বাচ্চার মন বুঝতেই পারেন বড়রা যেটা মানা করবে সেটা বেশি করে করবে । একদিন দুপুরের সবাই যখন ঘুমে আমি ঐ দিদার বাড়ি চলে গেলাম। বিকাল বেলা চলে আসলাম দিদা নিজে এসে আমাকে দিয়ে যান । কেউ  কিছু বলেন নি কিন্তু ঠাকুমা একটু আমাকে বকাবকি করলো। কাকতালীয় ভাবে ঐ রাতে আমার ধুম জ্বর  বাবা মা বলছে সারা দিন না খেয়ে ঘুরলে এমন হবেই। কিন্তু ঠাকুমা একদম চুপ।  পরের দিন আমার জন্য সবাই চলে আসলাম  শহরে । এবার আরেকটা কথা আমরা যারা বাঙাল তারা সুকনু মাছ যেটাকে সুটকি বলে ওটা রান্না করে খেতে খুব ভালো বাসি। ইলিশ মাছ কে ছয় সাত মাস লবন দিয়ে প্রিসার্ভ করে রান্না করে খায় ওটাকে লোনা ইলিশ বলে। তো গ্রামের থেকে আসার পর থেকে আমি চুপচাপ থাকি বেশি কেউর সাথে কথা বলি না। এ ভাবেই কিছু দিন চলেছে , এক দিন বাবা বাজার থেকে ঐ লোনা ইলিশ এনেছে বাস ঘরে আনার সাথে সাথে আমার তো সুরু হলো পাগলামি ঐ ইলিশের গন্ধ নেওয়ার লোভ ঐ দিন সন্ধ্যার সময় আমি হঠাৎই কি মনে হলো আমি চুপচাপ রান্না ঘরে গিয়ে ইলিশের ব্যাগ থেকে ইলিশ বের করে কাঁচা ইলিশ খাওয়া শুরু করলাম ঐ স্বাদ আমি জীবনে এখনো কোনও কিছুতে পাইনি। যাইহোক তারপরের সব কিছু খুব ঝাপসা ঠিক মনে নেই আমার, বাকিটা আমার মার ঠাকুমার মুখ থেকে শোনা, আমি যখন রান্না ঘরে এই কান্ড করছিলাম আমার দিদি দেখে ফেলে ও সোজা গিয়ে মা কে বলেছে মা তো শুনেই রান্না ঘরে আমার কাছে। তারপর সেখান থেকে আমাকে ঘরে নিয়ে আসলো ঐ সময়ের পর ধীরে ধীরে আমার ধুম জ্বর একেবারে ১০৩''।  রাত কোনও ভাবে কাটানোর পর সকালে ডাঃ কাছে নিয়ে যায় বাবা। ওখান থেকে বাড়ি এসে দেখি ঠাকুমা আর দাদু গ্রাম থেকে এসেছে আসার সময় কি এক তাবিজ নিয়ে এসেছে আমার জন্য। আর ঐ দিন ভর সন্ধ্যার সময়ের রাস্তার তেমাথায় আমাকে রান্না করে দিয়েছে কিছু  খাওয়ার জন্য পরের দিন থেকে আমি একদম ঠিক। মাঝের দুই দিন আমার জীবন থেকে পুরোটাই মুছে গেছে । তারপর অনেক পরে ঠাকুমা আর মা কাছে যেটা শুনেছি আমি যে দিন ঠাকুমার বোনের বাড়ি গিয়েছিলাম তার কিছুদিন আগে ঐ দিদার বড় ছেলের বৌ সুইসাইড করে ছিল কাকুর অন্য মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল ঐ বাড়ি থেকে আসার সময়ে কিছু একটা আমার সঙ্গে এসেছিল।  আমার ঠাকুমা এক ওঝার কাছে যাই আমার শহরে চলে আসার পর কারন ওনার সন্দেহ হয়েছিল আমার চাঞ্চল্য দেখে এবং ঐ ওঝা গণনা করে বলে দেন কি হয়েছে এবং কি করতে হবে । যদিও আমার এখনও বিশ্বাস হয় না এমন কিছু হয়ে ছিল আমার কাছে পুরো ঘটনাটা একটা শপ্নের মত মনে হয় এখনও । আমার মনে হয় তখন আমি কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়েছিলাম।

এই কথা গুলি বলতে যত আরামে বলা যাই লেখতে ততটাই কষ্ট হয় । এই গেল এক রইলো বাকি দুই কালকে আবার বলবো দাদা।

বেশ interesting .. এটা নিয়ে গল্প লেখা যায় 
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
#93
(31-01-2023, 12:57 AM)Avishek Wrote: কিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে রেখে শেষ হলো গল্পটা। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। যে যার মতো ভেবে নিক। কিন্তু আমার মনে হয় জোজোর মায়ের ওপর বিশেষ করে নজর ছিল। আর তার কারণটা শেষে জানাই গেলো। তবে স্বপ্নের অংশ টা সাংঘাতিক ছিল। হয়তো টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো ক্ষতি করার জন্য। ওই তারক বাবু মানুষটা নিশ্চই কিছু একটা বুঝতে পড়েছিল যেটা এদের বলেনি। গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছিলো যেন সত্যি কোনো ঘটনা পড়ছি। দারুন দারুন।
ভয় ১ এর থেকেও ভালো হয়েছে এই ভয় ২ এর শেষ পর্ব। clps yourock yourock

আবারো তাড়াতাড়ি নতুন কিছু চাই দাদা। অপেক্ষায় থাকবো।

অনেক ধন্যবাদ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জুড়ে থাকার জন্য ♥️
স্বপ্নের অংশটা সত্যিই লিখতে গিয়ে আমার নিজেরও কেমন লাগছিলো!
আমারও মবে হয়েছে ভয় ৩ এর সমাপ্তি বেশি ইন্টারেষ্টিং  Namaskar

(31-01-2023, 10:05 AM)ddey333 Wrote: শেষের দিকে বেশ গা শিরশির করছিলো।  

বটি বাবুর সত্যি ঘটনা বোনাস !!

যাক ভালো লেগেছে তাহলে
সত্যিই বটি বাবুর ঘটনা ভাবতে বাধ্য করে কি হয়েছিল!!
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#94
(31-01-2023, 01:27 AM)Boti babu Wrote: প্রথম অভিজ্ঞতা তখন ছয় সাত বছরের তাই যতটা মনে আছে ততটা বলছি তার আগে সময় বুঝার জন্য কয়েকটা কথা বলছি আমাদের গ্রামে বাড়ি আছে এখনো,   যেটা দাদুর আমলের তো আমরা মাঝে মধ্যেই দিদিদের স্কুলের ছুটিতে ওখানে ঘুরতে যেতাম বাবা মার সাথে বিশেষ করে দোল পূর্ণিমা, তারপর কালি পূজা যেখানে ব্রহ্মা শীতলা পূজা হতো আমাদের বাড়িতে ।তখন ওখানে সব কাকাত ভাই বোন পিসির ছেলে সব আসতো সব মিলিয়ে আমরা ভাইবোন ছিলাম 22 জন তো বুঝতেই পারেন সব বাচ্চারা মিলে কেমন ধামাল করতাম।  তখন গ্রাম মানে পুরো একদম গন্ড গ্রাম যাকে বলে, যেখানে বিদ্যুতের আসে নি তখন, যেখানে সন্ধের সাথে সাথে রাত হয়ে যেত তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে আটটাতে ঘুম,  রাতে বাড়ির সাথের জঙ্গল থেকে শিয়াল এর আওয়াজ শুনা যেত ভোর বেলা সব ভাই বোনেরা মিলে ফুল তুলতে যেতাম তখন বন মোরগ দেখাযেত । তারপর ছোট ভাই বোনের গ্রামের বালুওয়ারি স্কুলে খিচুড়ি খেতে চলে যেতাম সেখান  থেকে এসে পুকুরে দাপাদাপি এক দের ঘন্টা দাদু ঠাকুমার চিল চিৎকার করলে তারপর ঘরে বিকালে আম গাছে উঠে কে কত উপরে উঠতে পারবে তার কম্পিটিশন এই ছিল আমার ছোট বেলা । তো আমার ঠাকুমার এক বোনের বাড়ি ছিল আমাদের বাড়ির থেকে একটু দুরে ঠাকুমা সব সময়ই বলতো দুপুরে যেন ঐ দিদার বাড়ি দিকে একা একা না যাই রাস্তা ভালো না ।  
এই ঘটনা সত্যিই ভাবতে বাধ্য করে তাহলে হয়েছিলটা কি?
বিনা কারণে একটা বাচ্চা কেন এমন করবে? নিশ্চই কিছু তো ঘটেছিলো সে দুপুরে তার সাথে। উফফফ সাংঘাতিক। হয়তো বিরাট কোনো কিছু নয় কিন্তু সেটাই তো বাস্তবিক। এ তো আর ফিল্ম নয় যে বাড়িয়ে দেখানো হবে। বেশ ভয় লাগলো দাদা। তবে সবচেয়ে ভালো লাগলো কো জানেন? ছোটবেলার ওই সহজ সরল জীবনের অংশটা। আনন্দে হই হুল্লোড় করে ভাই বোনদের সাথে একসাথে কাটানো সময়। ওটার অনুভূতি আলাদাই ♥️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#95
শেষ পর্ব এসে গেছে পাঠক বন্ধুরা। যাদের পড়া হয়নি পড়ে ফেলুন। আর কেমন লাগলো জানাবেন ♥️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#96
দাদা হরর সেক্স নিয়ে কি আর কখনও লিখবেন  না?
[+] 1 user Likes Shuhasini22's post
Like Reply
#97
Just fatafati chilo golpota. Sotti bhoy kake bole dekhalo. Sobcheye valo legeche je voyonkor kono kichu na dekhieo bhoy pawano ta. Dream scene ta darun vabe lekha hoechey. Ota sotti bhoy pawai amader. Ar oi Tarok uncle sure kichu bujhechilo kintu lukiye gelen oder theke. Bhoy 1 ke surpass korey gelo part 2. Apnar sobkota horror story just darun hoy. Abaro kichu emn chai dada.
[+] 1 user Likes Papai's post
Like Reply
#98
Khub valo chilo.. But ro ekta golpo sesh hoye galo.. Sad

Please come with more
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
#99
শেষ হতে হতেও কোথাও গিয়ে আবার শেষের শুরু হয়ে গেল...
আর সেটাই তো হবার কথা ভয়ের কি শেষ আছে কিংবা হয় কি কখনো?? ভয় টা না হয় চলতেই থাকুক...
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(01-02-2023, 08:29 AM)Dushtuchele567 Wrote: Khub valo chilo.. But ro ekta golpo sesh hoye galo.. Sad

Please come with more

অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য ♥️
হ্যা শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু এই কদিনের যাত্রার সঙ্গী হয়ে আশা করি ভয় ও ভালো দুই লেগেছে।

(02-02-2023, 01:22 PM)nextpage Wrote: শেষ হতে হতেও কোথাও গিয়ে আবার শেষের শুরু হয়ে গেল...
আর সেটাই তো হবার কথা ভয়ের কি শেষ আছে কিংবা হয় কি কখনো?? ভয় টা না হয় চলতেই থাকুক...

হক কথা কইসো ভায়া। ভয়ের কোনো শেষ নাই। ♥️
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)