Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
HORROR ভয় ২ - বাবান
#1
Star 
[Image: 20221124-160810.jpg]


গল্প - ভয় ২
লেখক ও প্রচ্ছদ - বাবান 




ভূত বড়ো অদ্ভুত ব্যাপার। একে এড়িয়ে যেতে চাইলেও এর গপ্পোকে একদমই এড়িয়ে যাওয়া যায়না। সেই ছোটবেলা থেকেই যেন এই ব্যাপারটা আমাদের মজ্জায় ঢুকে গেছে। কম বয়সে বাড়ির বড়োরা, পরে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কিংবা পড়ার মাঝে বিরতি নিয়ে স্যারের কম বয়সের অভিজ্ঞতা। বারবার ফিরে এসেছে অলৌকিক কিছু না কিছু বিষয়বস্তু। তাই আমি এই ঠান্ডার সময় আবারো একটা ছোট গল্প নিয়ে হাজির হলাম। ভয় দুই রকমের হয়। এক হাড়হিম করা ভয়। এটা কিছুক্ষেত্রে এতটাই বীভৎস হয় যে তা সোজা মানব মস্তিষ্কে আঘাত হেনে পাগল করে দেবার ক্ষমতা রাখে কিংবা সোজা হৃদযন্ত্র বিকল করে দেবার মতো সাংঘাতিক রূপ নিতে পারে, আরেকটা হয়তো অতটাও প্রবল নয় আর তা শরীরে আঘাত না হানলেও পরবর্তী সময় বারবার ভাবতে বাধ্য করে যা ঘটেছিলো সেটা কি ছিল? কেনই বা এমন হলো? আমার কাছে এই দ্বিতীয় ভয়টার গুরুত্ব বেশি। নানান সব ভয়ানক ভুতুড়ে গল্প আজ পর্যন্ত শুনলেও নিজে লেখার সময় ওই বিশেষ ভয় পাওয়ানোর মাল মশলা গুলো বেশি পরিমানে যোগ করতে কেমন যেন লাগে। আমার পূর্বের দুটো গল্প (ভয় ১ এবং সেই রাত্রি) পড়েই হয়তো পাঠকেরা বুঝেছে আমি কিছুটা বাস্তবিক ভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি প্রতিটা ব্যাপার। তাতে সেই কেঁপে ওঠার মতন ভয় কম লাগলেও তাই সই। হ্যা সামান্য সুস্বাদু মসলা তো মেশাতেই হয়। নইলে কি চলে?




পর্ব - ১

মানব জীবনকে নানান সব পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে পার করতে হয় প্রতিটা দিন। কোনোটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা আবার কোনোটা হয়তো না চাইতেও কর্তব্য পালনের উদ্দেশে দিতেই হয় পরীক্ষা গৃহে গিয়ে। সে কক্ষ বিলাসবহুল হোক, বা ছোট্ট কামরা। যাইহোক এসব ফিলোসফিকাল জ্ঞানের কথা বলে আমি বেশি সময় নস্ট করবোনা। তার চেয়ে আসল ঘটনায় আসি। আসলে উপরের ওই কথা গুলি বলার কারণ হলো এই প্রতিদিনের কর্ম ব্যাস্ততায় ঘেরা চেনা জীবনেও হয়তো মাঝে মাঝে এমন কিছু দিনের সাক্ষী হতে হয় মানুষকে যা হয়তো সত্যিই অস্বাভাবিক, অবর্ণনীয়। যার সাক্ষী কেউ হয়তো হতে চায়না কিন্তু সেই অন্ধকার ঠিক নিজের রাস্তা খুঁজে নিয়ে ঢুকে পড়বে ঘরে..... আর তারপর.....!!

ঘুমটা হটাৎই ভেঙে গেছিলো সেদিন রাতে। এমন হওয়াটা কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। এর আগেও আমার সাথে এমন হয়েছে। উঠে বসলাম বিছানায়। পাশের টেবিলে রাখা ঘড়িটা হাতে তুলে নিয়ে দেখলাম রাত  আড়াইটে। একবার ওপাশ ফিরে তাকালাম। বাবা ছেলে দুজনেই একেবারে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আস্তে করে উঠে ঘড়িটা আবার টেবিলে রেখে  আমার পাশবালিশটা ছেলের পাশে দিলাম। উনি আবার ঘুমের মধ্যে মাঝে মধ্যেই গড়াগড়ি খান। একবার তো সকালে একা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বিছানা থেকে পড়েই যাচ্ছিলো সে। ঐটুকু বয়স ওর। পড়ে গেলে খুবই লাগতো। সেই থেকে নজর রাখি আমি। যাইহোক উঠে আরমোড়া ভেঙে এগিয়ে গেলাম বাথরুমের দিকে। আমাদের বাড়ি একতলা। কিন্তু বেশ বড়ো। আসলে পুরানো দিনের বাড়ি বলেই প্রতিটা ঘর বড়ো। এমনকি বাথরুমটাও বিশাল। শুধু সমস্যা একটাই....... ঘরের সঙ্গে সরাসরি যোগ নেই। তাই সোজা ভাষায় বাথরুম না বলে কলঘর বলাই উচিত হবে হয়তো। ঘরের দরজা খুলে বাইরে গিয়ে সেই কলঘরে যেতে হয়। যদিও পুরো জায়গাটাই উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। আর ওপর দিয়েও চাল করা আছে। তাই চোর ঢোকার কোনো ভয় টয় নেই।

মিথ্যে বলবোনা.... এতো রকম প্রটেকশন থাকা সত্ত্বেও শুরুর দিকে রাতে একা একা টয়লেটে যেতে একটু কেমন যেন লাগতো। কয়েকবার তো ওকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছি। কিন্তু ধীরে ধীরে সেসব ভয় গায়েব হয়ে যায়। এখন তো কোনো ব্যাপারই নয়। তাই সেদিনও কোনো কিছু না ভেবে আমি সোজা গিয়ে দরজা খুলে কলঘরের দিকে চলে যাই। নিজের কাজ সারতে যাবার জন্য এগিয়ে যাচ্ছি এমন সময় যেন অদ্ভুত একরকমের আওয়াজ শুনতে পেলাম। একটু অন্যরকম আওয়াজ। কেউ  বমি করলে যেমন তার মুখ থেকে ওয়াক ওয়াক জাতীয় আওয়াজ বেরিয়ে আসে অনেকটা তেমনি। একবার যেন কেউ চিল্লিয়ে কিছু বলার মতোও হালকা আওয়াজ পেলাম, কাউকে ডাকছে যেন,তারপরে আবার সেই বমির মতো আওয়াজ। কিন্তু শুধুই যেন ঠিক বমির আওয়াজ নয়। যেন কাশির আওয়াজও পেলাম যেন। যদিও দূর থেকে আসছে তাই হয়তো ভুলই শুনছি ভাবলাম। সত্যিই হয়তো কেউ বমি করছে বা চেষ্টা করছে কোনো বাড়িতে।  কারো শরীর খারাপ হয়তো। কিছু পরে আর কিছু শুনতে পেলাম না। আমি আর কিছু না ভেবে নিজের কাজে চলে গেলাম।এমনিতেই এমন রাতে পুরো পাড়া স্তব্ধ ছিল। সেই শান্তি সাময়িক ভঙ্গ করে ওই আওয়াজ দূর থেকে ভেসে আসছিলো, এখন আবার সব শান্ত। ঝিঁঝিঁর ডাক স্পষ্ট কানে আসছে। পাড়ার ভেতর বাড়ি বলে সেইভাবে গাড়ি ঘোরার শব্দ দূষণের ঝামেলা নেই। নয়তো মেন রোডের ওপর হলে দিন রাত নির্বিশেষে প্যা পু করে কান ঝালাপালা করে দিতো যেমনটা আমার বাপের বাড়িতে শুনে বড়ো হয়েছি। আমি আমার কাজ সেরে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলাম। দড়িতে টাঙানো গামছায় হাত মুচ্ছি এমন সময় হটাৎ কেন জানি শরীরটা শিহরিত হয়ে উঠলো! কেন জানিনা! কিন্তু কেমন যেন কেঁপে উঠলাম আমি। ঘাড়ের পেছনটায় কেমন শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। কিন্তু এমন হবার কারণ কি? আজ এতদিন ধরে এই বাথরুমে রাতে আসছি, এমন কি এর থেকেও বেশি রাতে আমি একা এসেছি কলঘরে। কই? কোনোদিন তো এমন হয়নি। হ্যা শুরুতে এমন হতো ঠিকই। 

 এদিকে দরজার সামনে আলো জ্বলছে তাতে পুরো উঠোনের জায়গাটা আলোকিত। কিন্তু তাও আজ এই এতদিন পর কেন হটাৎ আমার এমন অনুভব হচ্ছে? জানিনা। কিন্তু এই মুহূর্তে অনুভব করলাম আমার এই অজানা ভয় যেন তিনগুন বেড়ে গেলো হটাৎ করেই। যেন কিছু একটা কারণে আমার প্রচন্ড ভয় হচ্ছে হটাৎ। গায়ের লোম খাড়া হয়ে ওঠা যাকে বলে সেই ভয়। যেন এখানে আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক নয়। আমি.... যে কিনা এই বাড়িতে এতোদিন রয়েছি সেই আমি টয়লেটের দরজা লাগিয়ে আলো নিভিয়ে দ্রুত গতিতে পা চালিয়ে দরজার দিকে এগোতে লাগলাম। আর ঠিক তখনি দরজার পাশে ঝুলন্ত বাল্বটা কেঁপে উঠলো। একবার, দুবার, তিনবার। ব্যাস আর আমি সেখানে চতুর্থ বার কম্পন দেখার জন্য অপেক্ষা করিনি। জীবনে প্রথম বার নিজের বাড়িতে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজায় ছিটকিনি দেবার কথা ভুলে ঘরে ঢুকে পড়েছিলাম। এতটাই ভয় হচ্ছিলো আমার! আর বেডরুমে ঢুকে ছেলের পাশে শুয়ে পড়েছিলাম। ওদিকে বর ছেলে দুজনেই আগের মতোই ঘুমিয়ে। কিন্তু আমি যেন ঘুমোতে পারছিনা। চুপচাপ শুয়ে রয়েছি। কি হলো হটাৎ করে? কেন অমন ভয় পেয়ে গেলাম আমি? কিসেরই বা ভয়? এই আমি যে কিনা স্কুলে পড়ার সময় বাপের বাড়িতে রাতে জেদ করে  ছাদে গরমের সময় শুতাম। যদিও একা নয় বাবার সাথেই,  তাছাড়া একা একা ফাঁকা জঙ্গলের রাস্তা ধরে শর্টকাটে কলেজ থেকে ফিরতাম, এমন কি কোচিং থেকে ফেরার সময় একটা শর্ট অন্ধকার গলি ধরে ফিরতাম, জোজো হবার পর কত রাত ওকে বার বার ওই কলঘরে নিয়ে যাওয়া আসা করেছি..... সেই আমি কিনা নিজের ঘরেই ঘাবড়ে গেলাম? আর এমন ভাবে পালিয়ে এলাম?

নিজের এমন একটা কাণ্ডে নিজের ওপরেই রাগ হলো ভীষণ। উঠে পড়লাম আবারো। কয়েক সেকেন্ড থেমে নিজেকে তৈরী করে আবারো এগিয়ে গেলাম আমার চেনা কলঘরের দিকে। যত এগোচ্ছে আমার পাদুটো ততই সাহসের সাথে মিশে যাচ্ছে ভয় আবারো। ওই যে রান্না ঘরের দিকটায় হালকা আলো দেখা যাচ্ছে। আচ্ছা? আমি দরজা ভিজিয়ে ছিলাম না? তাহলে আলো আসছে কিকরে? তারপরে মনে পড়লো আমি তো ছিটকিনিই দিইনি। হাওয়ায় খুলে গেছে। আবারো দাঁড়িয়ে পড়লাম। আগে হাত বাড়িয়ে ডাইনিং রুমের আলো জ্বালালাম। চোখের সামনে থেকে অন্ধকার কেটে যেতেই সাহস অনেকটা বেড়ে গেলো। আবারো এগিয়ে গিয়ে রান্নাঘরের আলো জ্বালালাম।  তারপরে ওই খোলা দরজার কাছে গিয়ে বাইরেটা দেখলাম। হ্যা..... এখনো আলোটা কাঁপছে। এখন যেন আরও বেশি বেশি করে কাঁপছে। আশ্চর্য! এই রাতে ঘুমাতে যাবার আগেও ওটা একদম ঠিক ছিল। হলোটা কি হটাৎ করে? তারপরে ভাবলাম এইসব আলো ও এমন হটাৎ করেই যায়। আমি সুইচ টিপে ওটা নিভিয়ে দিলাম। ঘন অন্ধকার এসে জড়ো হলো কলঘরে। আমি ইচ্ছে করেই ওখানে দাঁড়িয়ে রইলাম। দু পা এগিয়ে গেলাম। এই ভয়টা কিছুতেই চেপে বসতে দেওয়া যাবেনা। আমি কোনো ছোট বাচ্চা মেয়ে নই যে এমন সিলি একটা ব্যাপারে ভয় পাবো। আমি আজ নিজেই একজন মা। আমার ভয় পাওয়া মানায়না। যদিও এতো সাহসের কথা ভাবতে পারছিলাম কারণ পেছনে রান্নাঘরের আলোটা এসে কিছুটা সামনে পড়ছিলো। নয়তো এই এতো সাহসী কথা মাথাতে আসতো কিনা সন্দেহ। তবু অনেকটা ভয় কমেছে বুঝলাম। পুরোটাই একটা ফালতু ম্যাটার ছিল। এই ঠান্ডায় শীতল বাতাস ভেজা হাতে গায়ে লাগতেই ওই শিহরণ অনুভব। আর আমি কিনা আবোলতাবোল ভেবে...... যত্তসব!

ফিরে এসে দরজা এবার ভালো করে লাগিয়ে সব লাইট নিভিয়ে আবার ওদের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। অনেকটা রিলিফ লাগছিলো। কিন্তু আমি তো জানতাম না যে ওই সামান্য ভয়ের থেকেও বেশি কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য!



চলবে.....
[Image: 20230816-221934.png]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
ছোট্ট আপডেট কিন্তু শুরুটা বেশ থ্রিলিং, পরের পর্বের জন্য মুখিয়ে আছি।  yourock

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#3
  প্রথম পর্বেই বেশ একটা সাসপেন্স তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রকম কুসংস্কার, মনের ভুল এবং তার সঙ্গে অন্ধকার এসব মিলিয়ে ভয়ের সৃষ্টি হয় আমাদের মনে। কিন্তু এর পেছনে যদি সত্যিই গুরুতর কোনো কারণ থাকে তাহলে ব্যাপারটা ভৌতিক হয়ে যায়। এখন দেখার এই কাহিনী শুধুই ভয়ের নাকি এর মধ্যে ভৌতিক ব্যাপার আছে। অপেক্ষায় থাকবো .. 

[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#4
(15-01-2023, 09:47 PM)Sanjay Sen Wrote: ছোট্ট আপডেট কিন্তু শুরুটা বেশ থ্রিলিং, পরের পর্বের জন্য মুখিয়ে আছি।  yourock

অনেক ধন্যবাদ ♥️
হ্যা এটা ছোট পর্ব ছিল। কিন্তু আগে আরও বিশেষ কিছু হয়তো অপেক্ষায়...!!

(15-01-2023, 09:48 PM)Bumba_1 Wrote:   প্রথম পর্বেই বেশ একটা সাসপেন্স তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রকম কুসংস্কার, মনের ভুল এবং তার সঙ্গে অন্ধকার এসব মিলিয়ে ভয়ের সৃষ্টি হয় আমাদের মনে। কিন্তু এর পেছনে যদি সত্যিই গুরুতর কোনো কারণ থাকে তাহলে ব্যাপারটা ভৌতিক হয়ে যায়। এখন দেখার এই কাহিনী শুধুই ভয়ের নাকি এর মধ্যে ভৌতিক ব্যাপার আছে। অপেক্ষায় থাকবো .. 


খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে বলা সত্যি কথা। কিছু ব্যাপার কি সত্যিই মনের ভুল? নাকি পিছনে সত্যিই কোনো কারণ আছে? সেটাই হলো প্রশ্ন। উত্তর.... কে জানে? যার সাথে ঘটে বোধহয় সেই।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#5
Short but intersting chilo update ta. Voy pabar scene ta besh laglo. Ekhono asol incident shuru hoyni. Next update chai taratari dada.
[+] 1 user Likes Papai's post
Like Reply
#6
এতো অপেক্ষার পর অবশেষে আবার আরেকটি মাস্টারপিস আসছে দারুণ আপডেট দাদা। লাইক রেপু এডেড।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
#7
ভয়....কিসের ভয় কিছুর ভয় নেই...
তবে পেছনের শনশন আওয়াজ টা কানের কাছে বেজে উঠার ভয়। অনেকক্ষণ ধরে বাতাস না বইতেও কিছু নড়ে উঠার ভয়, আধো ঘুম চোখে ঘন ছায়ার মাঝেও অদ্ভুত কিছু দেখার ভয়...

কই আমি তো ভয় পাই না কিসের ভয়।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
#8
Khub sundor update... Interesting
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
#9
(16-01-2023, 12:48 AM)nextpage Wrote: ভয়....কিসের ভয় কিছুর ভয় নেই...
তবে পেছনের শনশন আওয়াজ টা কানের কাছে বেজে উঠার ভয়। অনেকক্ষণ ধরে বাতাস না বইতেও কিছু নড়ে উঠার ভয়, আধো ঘুম চোখে ঘন ছায়ার মাঝেও অদ্ভুত কিছু দেখার ভয়...

কই আমি তো ভয় পাই না কিসের ভয়।

ছেলে তো বেশ সাহসী আছে  Big Grin

(16-01-2023, 11:18 AM)Dushtuchele567 Wrote: Khub sundor update... Interesting

অনেক ধন্যবাদ ♥️
সাথে থাকুন।
Like Reply
#10
(15-01-2023, 10:53 PM)Papai Wrote: Short but intersting chilo update ta. Voy pabar scene ta besh laglo. Ekhono asol incident shuru hoyni. Next update chai taratari dada.

অনেক ধন্যবাদ ♥️
হ্যা প্রথম পর্ব ছোট ছিল। পরের গুলো এতটাও হবেনা। কিন্তু ভুললে চলবেনা এটা কোনো উপন্যাস বা বড়ো গল্প নয়, প্রথম ভাগের মতো চার পর্বেই শেষ হবে। সাথে থাকুন।

(16-01-2023, 12:20 AM)Boti babu Wrote: এতো অপেক্ষার পর অবশেষে আবার আরেকটি মাস্টারপিস আসছে দারুণ আপডেট দাদা। লাইক রেপু এডেড।

অনেক ধন্যবাদ দাদা ♥️
মাস্টারপিস কিনা জানিনা তবে পছন্দ হবে আশা রাখি  Shy
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#11
ভয়! আবারো ফিরে এসেছে। খেলা জমবে এবার। শুরুটাই তো বেশ গা ছমছমে!
[+] 1 user Likes Avishek's post
Like Reply
#12
ঠান্ডার কাঁপুনিতে এমনিতেই খারাপ অবস্থা তার ওপরে ভয়ের কাঁপুনি যোগ দিলো , কি করি কোথায় যাই !!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#13
(15-01-2023, 10:01 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ ♥️
হ্যা এটা ছোট পর্ব ছিল। কিন্তু আগে আরও বিশেষ কিছু হয়তো অপেক্ষায়...!!

সে তো বটেই, ভয় ২ বলে কথা, ভীতিটা আরো জোরালো হতে হবে বৈকি  Tongue

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#14
(16-01-2023, 12:31 PM)Avishek Wrote: ভয়! আবারো ফিরে এসেছে। খেলা জমবে এবার। শুরুটাই তো বেশ গা ছমছমে!

হ্যা ভয় ফিরে এসেছে আবার!
এবার নতুন অলৌকিক কারবার

(16-01-2023, 01:09 PM)ddey333 Wrote: ঠান্ডার কাঁপুনিতে এমনিতেই খারাপ অবস্থা তার ওপরে ভয়ের কাঁপুনি যোগ দিলো , কি করি কোথায় যাই !!

তাহলে বরং ভয় প্রথম ভাগের উল্লেখ করা ওই ভাড়া বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। এখন শুনেছি আর নাকি সেরকম প্যারানরমাল কিছু হয়না ও বাড়িতে  Big Grin


(16-01-2023, 02:11 PM)Sanjay Sen Wrote: সে তো বটেই, ভয় ২ বলে কথা, ভীতিটা আরো জোরালো হতে হবে বৈকি  Tongue

দেখা যাক। ভয় কেমন লাগবে সেটা তো আগে থেকে বলা যাবেনা কিন্তু মনে হয় গল্পটা প্রথম গল্পের থেকে বেশি ক্রিপি লাগবে। 
Like Reply
#15
যদিও এই গল্প আগের মতোই চার থেকে পাঁচ পর্বে শেষ হবে। আর পর্ব গুলোও বেশি বড়ো নয় তবু আমি তাড়াহুড়ো করে আপলোড করতে চাইনা। দ্বিতীয় পর্ব দিতে একটু দেরী হয়ে যাচ্ছে জানি কিন্তু আর অপেক্ষা নয়। আজ রাত্রেই আসছে নতুন পর্ব!
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#16
Star 
পর্ব - ২

খবরটা যখন পরেরদিন পেয়েছিলাম.... সত্যি বলছি প্রথমে হা করে সুপ্রিয়া বৌদির দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বিশ্বাস হচ্ছিলো না পল্লবী আর নেই! এই তো কয়েক মাস আগেই কথা হয়েছিল আমার সাথে রাস্তায়। আমার জোজোকে আদর করে গাল টিপে দিয়েছিলো, কোলে নিয়েছিল। অবাঙালি হলেও বেশ ভালোই বাংলা জানে সে। যদিও হিন্দির টান থাকতো কথায়। এমনকি এই পরশু সকালেও যখন ছেলেকে নিয়ে ছাদে গেছিলাম তখন দেখা পেয়েছিলাম ওর। দূর থেকে যতদূর বুঝে ছিলাম ফোনে কারোর সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছিলো হয়তো। একবার এদিকে তাকিয়ে আমাদের দেখে ছিল। তারপরে আবার ছাদের অন্য প্রান্তে চলে গেছিলো। আজ কিনা সে আর নেই!  এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেললো এক রাতের মধ্যে! অরিন্দম অর্থাৎ আমার স্বামী খবরটা পেয়ে ওদের বাড়ির কাছে গেছিলো সকালে কাজে বেরোনোর সময়। আমরা কয়েকজন আমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম তখন। ফিরে এসে ও জানায় খুব কান্নাকাটি চলছে। আমার না যাওয়াই ভালো। এই বলে সে বেরিয়ে যায় কাজে। আমিও আর যাইনি ওদিকে। এইটুকু ছেলেটাকে সাথে নিয়ে ওসব জায়গায় না যাওয়াই ভালো। আর নিজেও একা যেতে কেমন যেন ইচ্ছে করছিলো না। সুপ্রিয়া বৌদি আর তানিয়া বৌদির সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন কথা বলে ফিরে এলাম নিজের ঘরে। একরাশ মিশ্রিত অনুভূতি নিয়ে। আমার তার সাথে সেইভাবে ভাব বা বন্ধুত্ব কিছুই কোনোদিন ছিলোনা, ঠিকমতো চেনাও হয়নি তাকে। কিন্তু যে মানুষটা একবার আমার ছেলেটাকে কোলে নিয়ে আদর করেছিল, আমার সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করেছে...... সে কাল রাতে নিজেকে শেষ করে দিলো ঐভাবে!

কাল রাত!! তাহলে কি আমি......... ওই যে আওয়াজটা পেয়েছিলাম.... ওটা কি কোনোভাবে তাহলে !!

এই দিনের আলোতেও ছ্যাত করে উঠলো আমার গা টা। পল্লবীদের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে খুব একটা কাছে না হলেও দূরেও নয়। আমাদের ছাদ থেকে সহজেই ওদের বাড়ির তিনতলা বাড়িটার ছাদ দেখা যায়। অনেকবার ছাদে কাপড় দিতে গিয়ে দেখেছি মেয়েটাকে ওর বোনের সাথে ছাদে। দুই বোনে বয়সের বেশ তফাৎ। ছোটটা আজও বাবা মায়ের সাথে ঘুমায়। পল্লবী মেয়েটা বেশ তো ছিল হাসিখুশি। কি হলো হটাৎ করে? তাহলে কি প্রেম ঘটিত কিছু? আমি কোনোদিন কিছু না দেখলেও পাশের বাড়ির তানিয়া বৌদি নাকি ওকে দেখেছে এক দুবার একটা ছেলের সাথে। তাহলে কি সেই ব্যাপার কেন্দ্র করেই এমন কান্ড ঘটালো? নাকি বাবা মায়ের ওপর কোনো রাগ? আমার কোনোদিনই ওর সাথে খুব একটা মেলামেশা হয়নি। যতবারই দেখা হয়েছে ওই কেমন আছো আর ভালো আছোতো এর ওপর দিয়েই গেছে। কিন্তু ও বাচ্চা খুব পছন্দ করতো সেটা বুঝতাম। কারণ আমাদের ওই অল্প পরিচয়ের মধ্যেই সে একবার আমার জোজোকে এমন ভাবে আদর করেছিল যেন কতদিনের চেনা। আমার কোল থেকে নিজের কোলে নিয়ে ওকে আর তারপরে কত কথা তার সাথে। আমিও বাঁধা দিইনি । বুঝতাম মেয়েটা বড্ড বাচ্চা ভালোবাসে। সেই মেয়েটা কিনা শেষপর্যন্ত!

উফফফফ যতবার ওই শেষ কথাটা মনে পড়ছে, ততবার কেমন কেঁপে উঠছি। এদিকে সারা বাড়িতে এখন আমি একা। শশুর শাশুড়ি গেছেন নিজের ছোট মেয়ের বাড়িতে কদিন হলো। কদিন কাটিয়ে ফিরবে। ওনারা থাকলে তাও একটা আলাদা জাঁকজমক থাকে। এখন সারাদিন আমায় একা থাকতে হচ্ছে আমার জোজোকে নিয়ে। কাল পর্যন্ত এই বিষয়টা নিয়ে আমাকে এক মুহূর্ত ভাবতে হয়নি কিন্তু রাতের ওই ভয় আর আজকের এই দুসংবাদ মিলে গিয়ে এই আজকের এই শ্রেয়াকে ভাবতে ও দুশ্চিন্তা করতে বাধ্য করছে।

প্রতিদিনের মতো আজকেও একসময় দিন শেষে সন্ধে নামলো। আমিও এতো কিছুর মধ্যেই আমার প্রতিদিনের কাজ সেরেছি। মুন্নিদি এসে বাসন মেজে,ঘর ঝাড় দিয়ে গেছে। তার সাথেও কিছুক্ষন গল্প করে যেন কিছুটা শান্তি পেয়েছি। মুন্নিদি বহুদিন হলো এ বাড়িতে কাজ করে। তাই তাকে কাজের লোক ভাবাটা কবেই ভুলে গেছি। সে যতক্ষণ থাকে, বাড়িরই একজন হয়ে থাকে। শাশুড়ি মা ও আমরা একসাথে বসে চা খাই, টিভি দেখি তারপরে উনি চলে জান। অনেক সময় শাশুড়ি মায়ের পাড়ার এক বন্ধু সুজাতা কাকিমাও এসে আড্ডা দিয়ে জান আমাদের সাথে। এই কদিন আগে এসেও গল্প করে গেছেন আমাদের সাথে। আজ দুদিন হলো আমি আর মুন্নিদিই একসাথে গল্প করছি। ওনার সাথেও ওই বাড়ির দুর্ঘটনা নিয়ে কিছুক্ষন কথা বলি। যদিও নিজের সাথে ঘটা রাতের ব্যাপারে কাউকে কিচ্ছুটি বলিনি। ছেলের বাবাকেও নয়।বাড়ির কাজ সেরে কিছুক্ষন গল্প করে একসময় মুন্নিদিও চলে যায়। আবার আমি একা হয়ে যাই। একাকিত্ব কাটাতে কিছুক্ষন টিভিতে এদিক ওদিক দেখি। ছেলে তখনো ঘুমিয়ে আমাদের বেডরুমে।ওকে জাগাইনি। এইবার জাগাবো ভেবে ড্রইং রুম থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরের দিকে যাবো ভাবছি হটাৎ রান্না ঘরে কিছু পড়ার শব্দ পেলাম। যেন কৌটো জাতীয় কিছু পড়লো। আমি উঠে গিয়ে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। সত্যিই চাপাতার কৌটোটা পড়ে। হয়তো আমারই ভুল। অসাবধানে রেখে দিয়েছিলাম। ওটাকে তুলে যথাস্থানে রেখে দিলাম। তারপরে মনে পড়লো আমার শাড়িটা যে দুপুরে রোদে দিয়েছিলাম ছাদে, তোলা হয়নি। সেটা আনতে গেলাম আমাদের ছাদে। তখনও আলো কিছুটা আছে। যদিও অনেকটা কমে এসেছে। তাই আলো জ্বালার প্রয়োজন হলোনা। শাড়ীটা তুলে নিয়ে ফিরে আসবো.....কি মনে হতে একবার পশ্চিমের দিকে তাকালাম। ওদিকেই ওদের বাড়িটা। ঐযে দেখা যাচ্ছে। একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে বাড়িটায় কালকে রাতে। অন্ধকার আর শান্ত বাড়িটা দেখে আবার কেমন করে উঠলো আমার ভেতরটা। চোখ সরিয়ে নিলাম। তাড়াতাড়ি শাড়ীটা নিয়ে ছাদের দরজা বন্ধ করে ফিরে এলাম। এসে দেখি জোজো উঠে পড়েছে। চোখ ডলছে। ওকে কমপ্লান করে দিলাম। একটু পরেই জোজোর বাবা ফিরে এলো। আমারও একাকিত্ব সঙ্গে সঙ্গে দূর হয়ে গেলো। বুঝলাম এটা সাময়িক একটা সমস্যা। আসলে এমন একটা খবর প্লাস রাতের ওই ভুলভাল ভয় মিলেমিশেই এই একটা অনুভূতির জাগরণ। এটা খুব শীঘ্রই কেটে যাবে। এই প্রথম কি আমি সারাদিন একা থেকেছি নাকি? জোজো যখন হয়নি তখনও তো একবার শশুর শাশুড়ি মেয়ের বাড়ি গেছিলো। সারা বাড়িতে একা কাটিয়েছিলাম এমনই। পাঁচ দিন। এক বিন্দুও ভয় লাগেনি।

-------------------------------------

রান্না ঘরে রান্না করছিলাম আর আমার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলছিলাম। মায়ের শরীরটা কদিন একটু খারাপ যাচ্ছে। ঠান্ডা গরমের ফল আরকি। আমি আর ওর জামাই অরিন্দম অনেকবার বাবা মাকে বলেছি কটা দিন আমাদের এখানে এসে থেকে যেতে। শাশুড়ি মাও কতবার এসে থেকে যেতে বলেছেন। কিন্তু আসবো আসবো করেও ওদের আসা হলোনা। কিন্তু এবার ভাবলাম মাকে কদিন আমার কাছে এনে রাখবো। সেই নিয়েই কথা বলছিলাম মায়ের সাথে ভিডিও কলে। আমিই মাকে শিখিয়েছিলাম এসব চালানো। কি প্যাড চালাতে অভ্যস্ত মায়ের একটু সময় লাগলেও বেশ তাড়াতাড়ি শিখে ফেলেছিলো স্মার্টফোন চালানো। ওনার জামাই ভালোবেসে কিনে দিয়েছিলো মাকে একটা স্মার্ট ফোন। মাকেও জানালাম আজ যা ঘটেছে। সেও দুঃখ প্রকাশ করলো। সাথে যুব সমাজের এই ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকেই দু কথা শুনিয়ে দিলো। আমরা নাকি সত্যিই ভয়ানক চঞ্চল আর অদ্ভুত।কথা বলার মাঝেই মা মা হটাৎ বলে উঠলো -

- এই তিন্নি? তোর পেছনে কে রে? অরিন্দম?

তিন্নি আমার ডাক নাম। বাড়িতে আমায় বাবা মা এমনকি আমার বরটাও ওই নামেই ডাকে। মায়ের প্রশ্ন শুনে আমি তখনি পেছনে ফিরে তাকালাম। কই? কোথায় কে? পুরো গলিটা ফাঁকা। দূরের ডাইনিং রুমটা অন্ধকার। আর পাশের বেডরুমে আলো জ্বলছে। আমি আবার ফোনে মাকে বললাম - কই? কে মা? কেউ নেই তো?

- কিন্তু....... মনে হলো যে......

- কি?

- কেউ ছিল না তোর পেছনে?

- কোথায়? তুমিই দেখো? কোথায় কে?

- ওমা! তাইতো! ভুলভাল দেখছি নাকি? তিন্নি তোর বাবার মতো আমার চোখটাও গেলো মনেহয় বুঝলি..... পুরো মনে হলো তোর পেছনেই কেউ ছিল। তুই ওই কি একটা নিতে হাত বারালি না..... তখন তুই তো ফোনের ক্যামেরার বাইরে বেরিয়ে গেছিলি..... মনে হলো কেউ একজন তোর সঙ্গে সঙ্গেই তোর পেছনে সেও ক্যামেরার বাইরে চলে গেলো.....মানে সরে গেলো যেন। 

মায়ের কথাটা শুনে কি ভেবে আবারো তাকালাম পেছনে। ছোট্ট রান্নাঘর। আর তার বাইরে ফাঁকা লম্বা গলি। আর রান্না ঘরের সঙ্গে লাগোয়া ওই কলঘরের দরজা। সেটা এখন খোলা! আর আমি সেই দরজার খুব কাছেই দাঁড়িয়ে মায়ের সাথে গপ্পো করছি। এতক্ষন এটা নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু এখন সেটা ভাবতেই আবারো কেমন করে উঠলো আমার ভেতরটা যেন । একবার রান্নাঘরের থেকে সরে এসে ওই খোলা দরজার বাইরে তাকালাম। বাল্বটা আজ আগের মতোই জ্বলছে। তাতে ভালো করে দেখে নিলাম পুরো জায়গাটা। ফাঁকা উঠোনের মতো খোলা জায়গাটা আর একধারে কলঘর। সেখানে কোনো আলো  জ্বলছেনা তাই অন্ধকার। কিন্তু টয়লেটের দরজার নিচের ফাঁকা জায়গাটা দিয়ে ভেতরের দিকে চোখ পড়তে মনে হলো যেন কিছু নড়ে উঠলো। হালকা আলোছায়ার মাঝে স্পষ্ট মনে হলো একটা কিছু যেন টয়লেটে রয়েছে! কি ওটা? সত্যিই কি কিছু আছে নাকি চোখের ভুল? আমি ভ্রূকুটি নিয়ে হালকা ঝুঁকে নিচে আবার তাকালাম। না আর কিছু  দেখলাম না। শুধুই অন্ধকার।

- কিরে? কি হলো? কোথায় গেলি?

কানে লাগানো ইয়ারফোনে মায়ের গলা পেয়ে ফোনটা আবার সামনে এনে ধরলাম। মা কি হয়েছে জিজ্ঞাস করায় বললাম কিছুই নয়। তারপরে আবার মায়ের সাথে অন্য বিষয় গল্প করতে লাগলাম। এর মধ্যেই জোজোর বাবাও এসে একবার কলঘরে গেছিলো। আমি মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে সেইদিকেই চেয়ে ছিলাম তখন। যেন একবার মনে হচ্ছিলো ও ঠিক আছে তো ওখানে? কেন এমন একটা খেয়াল এসেছিলো নিজেই জানিনা আমি। নিজের বাড়ির বাথরুমে গেছে মানুষটা, তাতে দুশ্চিন্তার কি আছে? হয়তো ওই একটু আগের ব্যাপারটার জন্য অমন মনে হচ্ছিলো। আমার সামনেই জোজোর বাবা বাথরুম করে বেরিয়ে এসে আবারো ঘরে চলে গেলো। যেন কিছুই হয়নি। আর সত্যিই তো! কি হবার কথা? কেন আমি একটা সাধারণ ব্যাপার নিয়ে এতো ভেবে ফেলছি?

রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে আমি ছেলেকে ঘুম পাড়াচ্ছি আর ওর বাবা নিজের বাবা মায়ের সাথে ফোনে কথা বলছে। শুনলাম ও পল্লবীর সাথে ঘটে যাওয়া ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করছে ওদের সাথে। ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে দেখে আমিও উঠে লাইটটা নিভিয়ে নাইট ল্যাম্পটা জ্বেলে বারান্দায় অরিন্দমের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। অন্ধকারে বারান্দায় বসে সে চেয়ারে বসে কথা বলছে। বাইরের চাঁদের আলোয় জায়গাটাতে বেশ আলো আছে বলেই হয়তো আর আলো জ্বালায়নি ও। ওর কথা হলে গেলে আমিও শাশুড়ি মায়ের সাথে কথা বললাম কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে। ওরা জানালো দুদিন পরেই ফিরে আসছে। বুঝলাম দাদুভাইকে ছাড়া আর বয়স্ক দুজন থাকতে পারেনা। জোজোই এখন ওদের প্রাণ। মেয়ের কন্যাও ততোধিক প্রিয় কিন্তু সে তো অনেকটা বড়ো হয়ে গেছে। কিছুক্ষন কথা বলে ওই দুর্ঘটনা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে শেষে শুভরাত্রি বলে কলটা কেটে দিলাম। ফোনটা ওকে দিয়ে শুতে আসার জন্য বলে আমি আবার বেরিয়ে যাচ্ছিলাম এমন সময় ও বলে উঠলো -

- অমন উঁকি দিয়ে দেখছিলে কেন?

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম - মানে? কিসের উঁকি?

অরিন্দম উঠে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল মটাকাতে মটকাতে বললো - এই যে একটু আগে কথা বলার সময়। অমন লুকিয়ে তখন মুখ বাড়িয়ে দেখছিলে কেন? কি ভাবছিলে? আমি কি অন্য করো সাথে কথা বলছিলাম নাকি হুম? হেহে হেহে

মানুষটা বলে কি? আমি আবার কখন উঁকি মেরে ওকে দেখলাম। আর অমন করে দেখবোই বা কেন ? সেটা জানাতেই সে দৃঢ় কণ্ঠে বললো সে যখন সবে শশুর মশাইয়ের সাথে ওনার ওষুধ নিয়ে কথা বলছিলো তখন নাকি একবার। চোখ যায় ডান পাশে দূরের দরজার দিকে। হালকা আলোয় নাকি সে স্পষ্ট দেখেছে আমি উঁকি দিয়ে দেখছি ওকে। সে হাত নেড়ে ইশারায় জিজ্ঞেসও করে কি ব্যাপার? আমি নাকি কোনো জবাব না দিয়ে ওই একি ভাবে মাথাটা বাড়িয়ে ওর দিকে চেয়ে। ছিলাম। কিন্তু ওই সময় তো আমি....... আমি নিজের ঘরে জোজোকে ঘুম পাড়াচ্ছিলাম। হ্যা আমিও ওর কথা সব শুনতে পাচ্ছিলাম যে ও বাবাকে ঠিক সময় ওষুধ খেতে বলছে, তারপরে নিজের মাকে জানালো ওই পল্লবীর ব্যাপারটা কিন্তু তার আগে পর্যন্ত তো আমি ছেলের সাথেই ছিলাম।

আমার কথা শুনে ও অবাক হয়ে বললো - আমি যে দেখলাম তোমাকে? যাচ্চোলে! এতো বড়ো ভুল হলো আমার? তুমি ছিলেনা?

হটাৎ করেই আমার ভেতরটা আবার কেমন করে উঠলো। আমি ঘুরে তাকালাম আমার পেছনে। আমার ঘর পেরিয়ে ড্রইং রুম আর তার  দক্ষিণ দিকে এই বারান্দা। এখন আমি ঠিক বারান্দা আর বসার ঘরের মাঝে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে। পেছনে পুরোটাই অন্ধকার। কারণ আমি নিজে একটু আগেই ঘরের আলো নিভিয়ে এসেছি। আর ঘরে আমার ছেলে ঘুমিয়ে। আমাকে পাশ কাটিয়ে অরিন্দম চলে গেলো ঘরের দিকে। আমিও ঘরে ঢুকে দরজা বারান্দার দরজা বন্ধ করতে গেলাম। স্বাভাবিক ভাবেই চোখ গেলো সামনের দিকে। এদিকটায় বেশ অনেকগুলো সুপারি গাছ আছে আর একটা পাঁচিল আছে। আমাদের বাড়িরই উঁচু পাঁচিল। অন্ধকারে যেন একবার মনে হলো! .......... নানা.......ওসব চোখের ভুল। কি যে হচ্ছে আমার সাথে ধুর! আমি দরজা লাগিয়ে ফিরে এলাম। অরিন্দম কলঘর থেকে ঘুরে আসতে আমিও শেষবারের মতো কাজ সেরে সব আলো নিভিয়ে ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম। না..... একটুও কোনো ভয় পেলাম না এবারে। আশ্চর্য! তাহলে ওই মায়ের সাথে কথা বলার সময় কেন অমন হলো?

আমি শুয়ে পড়েছিলাম। অরিন্দম একটু কিছুক্ষন ফোনে খবর বা ইউটিউবে অ্যাকশন ফিল্মের ভিডিও দেখার নেশা ধরিয়েছে। আগে ওসব কিছুক্ষন দেখে সময় নস্ট করবে তারপরে ঘুমোবে। আজকেও তাই হলো। আমি ওকে তাড়াতাড়ি ওসব রেখে শুয়ে পড়তে বলে জোজোকে জড়িয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। কখন যেন হালকা তন্দ্রায় ডুবেও গেছিলাম। হটাৎ বিছানাটা হালকা নড়ে ওঠার কম্পনে সেটা যেন কেটে গেলো।  চোখ খুলে মাথাটা তুলে দেখি জোজোর বাবা কান থেকে হেডফোন খুলে স্থির হয়ে বসে। তারপরেই ও হটাৎ টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে ভুরু কুঁচকে ওপরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমি ঘুমের ঘোরেই জড়ানো গলায় বললাম - কি হয়েছে? আবার আলো জ্বালালে কেন? ছেলেটা জেগে যাবে তো। নেভাও।

- একটা আওয়াজ পাচ্ছ?

ওর প্রশ্নে সামান্য অবাক হয়ে হয়তো উল্টে ওকে জিজ্ঞেস করতেই যাবো কিসের আওয়াজ তার আগেই কান পর্যন্ত পৌঁছে গেলো সেই ধ্বনি। হ্যা প্রাথমিক তন্দ্রার কারণে আমি নজর না দিলেও এবার সত্যিই শুনতে পাচ্ছি আওয়াজটা।

- কেউ কাঁদছেনা? অমনই না আওয়াজটা?

আমি ওর প্রশ্নে আমিও ভালো করে কিছুক্ষন শুনে ওর দিকে তাকিয়ে হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম। কেউ যেন সত্যিই কাঁদছে। আর সে কান্নাটা যেন বড়ো বেদনাময়। আর সেটাই এতো রাতে ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। ঠিক এর সাথেই সামান্য পরেই শুরু হলো কুকুরদের আউউউউউ জাতীয় আওয়াজটা। ও গুলো ঘেউ ঘেউ করছে না। বরং যেন ওদের ওই আওয়াজেও কিছু মিশে। আর এই দুই মিলে কি যে সাংঘাতিক এক মুহূর্ত ফুটিয়ে তুলেছে সেটা ভালোই টের পাচ্ছি। আমাদের যে ঘরে আমরা শুই অর্থাৎ সেই বেডরুমের বাইরের দিকেই ওই সুপারি গাছ গুলো আছে। জানলা খুললেই ওগুলো দেখা যায়। আর তার পাশে একটা জামরুল গাছ। সেটা আমার শশুর মশাই নিজের যুবা বয়সে রোপন করেছিলেন। আর তার থেকে কয়েক পা এগোলেই অক্ষয় জেঠুর দোতলা বাড়ি। বাড়িতে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা এই দুজনেই থাকে। আর এক তলায় থাকে ওদের এক কাজের মেয়ে। ওনাদের মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। আমার মনে হলো আওয়াজটা যেন ঠিক ওদিক থেকেই আসছে।

এরই মধ্যেই একটা কুকুর শুনলাম ঠিক আমাদের এই শোবার ঘরের বাইরে পাঁচিলের ওপাশের জায়গাটা দিয়েই অমন করুন সুরে আউউউউউ করতে করতে জায়গাটা ক্রস করলো। মিথ্যে বলবোনা এমন একটা পরিবেশে গা টা ছম ছম করে উঠলো একবার। ওদিকে কান্নার আওয়াজটা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি দুজনেই। এতক্ষন একটানা কাঁদছিলো, এবার ফুপিয়ে কাঁদছে। আর ওটা যে কোনো মেয়ের গলা আর তাও কম বয়সী কেউ সেটা বুঝতে অসুবিধা হলোনা।

- কে রে ভাই? এতো রাতে কাঁদে? আজব তো?

অরিন্দমের প্রশ্নে কোনো জবাব আমি দিলাম না। শুধু ইশারায় বললাম শুয়ে পড়তে। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ও কি বুঝলো জানিনা কিন্তু আর কিচ্ছু না বলে ফোনটা পাশের টেবিলে রেখে শুয়ে পড়লো আলোটা নিভিয়ে। প্রায় অন্ধকার ঘর, বাইরেও রাতের অন্ধকার, সারা পাড়া নিঝুম। আর শান্ত পরিবেশ কে চঞ্চল করে তোলা ওই মিশ্রিত নারী পশুর কান্না। এ যে না শুনেছে সে বোধহয় অনুধাবন করতে পারবেনা কতটা অদ্ভুতুরে! চুপচাপ দুজন শুয়ে শুনে চলেছি ওই কান্না। হটাৎ করেই এর মাঝে আরও কিছু গলার শব্দ শুনতে পেলাম আমরা দুজন। খুব ক্ষীণ হলেও বুঝতে পারলাম কোনো বাড়ির থেকে কেউ বা কারা যেন কিছু বলাবলি করছে। মাঝে একবার 'কে রে?'  বলে কেউ চিল্লিয়ে উঠলো, তারপরে 'এই হ্যাট হ্যাট ' জাতীয় কিছু শুনলাম। তখনো কিন্তু কান্না থামেনি বরং আর আরও বড়ো ব্যাপার হলো এবার সেই কান্নার আওয়াজ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 অর্থাৎ..... এবার সেই আওয়াজ  এগিয়ে আসছে আমাদের বাড়ির দিকে!




চলবে.....
[Image: 20230816-221934.png]
[+] 9 users Like Baban's post
Like Reply
#17
এই তিন্নি? তোর পেছনে কে রে? এই সংলাপটাই যথেষ্ট হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। একদম পারফেক্ট ভয়ের গল্প যেভাবে এগানো উচিৎ , সেভাবেই এগোচ্ছে এবং সাসপেন্স ক্রিয়েটের জন্য যেখানে থামা উচিৎ সেখানেই থামা হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই পরের পর্বের জন্য মুখিয়ে থাকলাম।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
#18
দুর্দান্ত একটি horror story উপহার পেতে চলেছি আমরা, এটা বেশ বুঝতে পারছি। এটা পড়ার পর রাতে বাথরুমে যেতে একটু তো ভয় করবেই  Tongue
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
#19
(18-01-2023, 10:10 PM)Sanjay Sen Wrote: এই তিন্নি? তোর পেছনে কে রে? এই সংলাপটাই যথেষ্ট হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। একদম পারফেক্ট ভয়ের গল্প যেভাবে এগানো উচিৎ , সেভাবেই এগোচ্ছে এবং সাসপেন্স ক্রিয়েটের জন্য যেখানে থামা উচিৎ সেখানেই থামা হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই পরের পর্বের জন্য মুখিয়ে থাকলাম।

অনেক ধন্যবাদ।♥️
সত্যিই এই পেছনে কেউ দেখতে বললেই কেমন ভয় লাগে একটা।
দেখা যাক পরবর্তী পর্বে আর কি কি হয়।

(18-01-2023, 10:25 PM)Bumba_1 Wrote: দুর্দান্ত একটি horror story উপহার পেতে চলেছি আমরা, এটা বেশ বুঝতে পারছি। এটা পড়ার পর রাতে বাথরুমে যেতে একটু তো ভয় করবেই  Tongue

সেটা হলেই তো লেখা সার্থক  Big Grin
দেখা যাক আগে গল্পে আর কি হয়।
Like Reply
#20
এক বিন্দুও ভয় পাই নি...

কিন্তু একা বাড়িতে হঠাৎ যদি মনে হয় কেউ একজন আছে যদিও জানি কেউ থাকার কথাই না তবে তো আর ভয় পাবার বাকি থাকে না।  গা পা ছমছমিয়ে উঠে এই বুঝি কারও পায়ের শব্দ পেলাম কিংবা আবছায়া ছায়া।  মনে হয় কেউ একজন তো আছে এইতো আশে পাশে...

রাতে বাইরে যেতে গিয়ে আরেকবার আশপাশটা ভালো করে দেখে নিতে হবে।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)