Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
HORROR ভয় ২ - বাবান
#61
Star 
পর্ব - ৪


দরজা খুলতেই হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে এলো জোজোর বাবা। আমি তো অবাক। ঢোকার সময় একবার পিছনে ফিরে কি যেন দেখার চেষ্টা করছিলো সে তারপরে সামনে তাকিয়ে ভ্রূকুটি করে কি যেন ভাবলো। ওকে অমন অবস্থায় দেখে আমিও ঘাবড়ে গেছিলাম। যদিও ওর মধ্যে বিশাল ভয়ের সেইভাবে কোনো ছাপ ছিলোনা কিন্তু ওকে দেখেই বুঝেছিলাম কিছু একটা হয়েছে নিশ্চই। ছেলেটার পাশে বসে পড়লো সে। আমি গ্লাসে করে জল এনে ধরতেই ঢকঢক করে পুরোটা খেয়ে নিলো।

- কি? হয়েছে টা কি? এমন লাগছে কেন তোমায়?

আমার প্রশ্নে সেইভাবে জবাব না দিতে চাইলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার ব্যার্থ অভিনয় করে নকল হাসি হেসে বললো - আরে কিছুনা। ও..... ও মনের ভুল আরকি ছাড়োতো। দাও চা দাও। 

- চা পরে হবে! আগে বলোতো কি হয়েছে? কিছুতো একটা হয়েছে। অতবার বেল টিপলে। টিপেই যাচ্ছিলে। তারপরে দরজা খুলতে অমন ঝড়ের বেগে ঢুকে পড়লে । উহু হয়েছে শিওর কিছু একটা। বলো আগে!

আমার প্রশ্নের চাপে শেষমেষ হার মেনে ও যা বললো তা হলো এই -

ওর আজকে কাজের চাপ বেশি ছিল তাই ফিরতে দেরী হয়েছে। যদিও সেটা ও আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো। এমন ওর লেগেই থাকে। কাজ শেষে বেরোতে সাড়ে সাতটা হয়ে গেছিলো। আজ আবার নাকি বেরিয়ে এসে একটাও যানবাহনের খোঁজ মেলেনি। অন্য সময় খুব সহজেই অটো পেয়ে যায়। আজ একটাও পায়নি। আর দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মানে আরও সময় নষ্ট। তাই কিছুটা হেঁটে মেন রোড থেকে অটো ধরতে হয়। সেও আবার যতক্ষণ না আরও কাস্টমার আসে ততক্ষন দাঁড়িয়ে এসে আরও দুজনকে তুলে স্টার্ট দেয়। থানার কাছে এসে ভাড়া মিটিয়ে যখন সে বাড়ির রাস্তা ধরেছে তখন নাকি অক্ষয় জ্যাঠার সাথে দেখাও হয়েছিল। উনি তখন কি একটা কাজে যাচ্ছেন। ওনার সাথে দেখা হওয়ায় দুপক্ষই সামান্য হেসে মাথা নাড়িয়ে বেরিয়েছে জান নিজ নিজ উদ্দেশে। কিন্তু আরেকটু এগিয়ে ওই xerox এর দোকানটা পার করে এগোনোর পর থেকে আর নাকি কারো দেখা পায়নি। মিষ্টির দোকানটাও নাকি আজ বন্ধ কি কারণে। সেখান থেকে দুটো রাস্তা দুদিকে চলে গেছে। যে রাস্তাটা বাঁ দিকে বেঁকে গেছে সেটা ধরে কয়েক মিনিট এগিয়েই ডানদিকে একটা লম্বা গলি পড়ে। সেটা  ধরে এগিয়ে কয়েকটা বাড়ি পেরিয়েই আমাদের বাড়ি। মিষ্টির দোকান পার করে রাস্তা ধরে কয়েক পা এগোতেই ও দেখে একজন মেয়ে ওপারে অর্থাৎ মিষ্টির দোকানের দিক থেকে হেঁটে আসছে। ওর থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে সে। খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ও ওতো নজর দেয়নি কিন্তু কি মনে হতে আবার পেছনে ফিরে ওপারে তাকাতেই মনে হলো সেই মহিলাও যেন ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল যেই ও ওনার দিকে তাকিয়েছে সেও অমনি মুখ নামিয়ে হাঁটতে লাগলো। পরনে তার বাড়িতে পড়ার নাইটি। কিন্তু মুখটা দেখা যাচ্ছেনা কারণ সে মুখ নামিয়ে হাঁটছে। ও আবার এগোতে শুরু করলো। আশ্চর্য যে রাস্তায় আগে এই সময় বেশ কয়েকজনকে দেখা যেত আজ যেন কেউ নেই। পুরো ফাঁকা রাস্তা। যেন সবাই যে যার বাড়িতে ঢুকে বসে আছে। শুধু কোনো কোনো বাড়ির ভেতর থেকে কারো কথা বা টিভির আওয়াজ ভেসে আসছে কানে। আরও কিছুটা এগোনোর পর কি মনে হতে ও আবারো ওই রাস্তার উল্টোদিকে তাকায়। কিন্তু সেখানে আর মেয়েটি নেই দেখে আবার সামনে ফিরতে যাবে এমন সময় তার চোখ স্বাভাবিক ভাবেই গিয়ে পড়ে নিজের একেবারে পেছনে আর তখনি চমকে ওঠে সে। মেয়েটি এবার এপারে! একেবারে তার  পেছনে! হাত বাড়ালেই হয়তো ছুঁয়ে ফেলবে ওকে! আর সবচেয়ে আজব ব্যাপার তখনো সে মাথা নামিয়েই হাঁটছে। যেন নিচে কিছু খুঁজছে।

আশ্চর্য! কখন এলো মেয়েটা এপারে? আর চলেও যদি আসে এতটা কাছে এগিয়ে এলো অথচ কোনো আওয়াজ পেলোনা ও? নিজের জুতোর মচমচ আর শুকনো পাতা মারানোর আওয়াজ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলো অথচ পেছনে থাকা মানুষটার পায়ের কোনো শব্দই কানে আসছেনা ওর। অজান্তেই এবার ওর কেমন জানি একটা হতে শুরু করছিলো ওর ভেতর। অরিন্দম মোটেই ভীতু মানুষ নয়। সহজে সে ঘাবড়ে যায়না। কিন্তু আজ এই সামান্য একটা ব্যাপারেও কেমন যেন বুকটা কেঁপে উঠলো ওর। যেন কিছু একটা ঠিক হচ্ছেনা বা বলা উচিত কিছু একটা খারাপ হবে এখুনি ওর সাথে এমন ভয় পেয়ে বসছে ওর মধ্যে। ও তাড়াতাড়ি পা চালাতে শুরু করে। আর একটু দূরে এগোলেই আমাদের বাড়ি। কিন্তু যেন মনে হচ্ছে পথ শেষই হচ্ছেনা। স্পষ্ট দূরে নিজের বাড়ি যাবার গলিটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে কিন্তু যতই হাঁটছে দূরত্ব যেন একই রয়ে যাচ্ছে! শেষে কোনোরকমে আরও দ্রুত হেঁটে আর একবারও পেছনে না তাকিয়ে ও গলি ধরে এগোতে শুরু করে আর পৌঁছে যায় নিজের গেটের কাছে। তারপরে সেই বেল বাজানো। কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার বাড়ির কাছে পৌঁছানোর পর আর দেখা পায়নি সে ওই মহিলার। কিন্তু সে কোনো বাড়িতে ঢোকেনি কারণ কোনো গেট খোলার বা দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকার আওয়াজ পেছন থেকে আসেনি। সে পেছনেই আসছিলো আর তাকে যেতে গেলে এই গলি পার করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আর কেউ নেই। তাই তখন অরিন্দম ঘরে ঢুকেও বাইরেটা দেখছিলো।

পুরোটা শুনে এবার আমিও বরের পাশে বসে পড়লাম। হচ্ছেটা কি এসব? রাতের ওই কান্ড। তাও আবার শুধু আমাদের সাথেই নয়, অক্ষয় জেঠুদের বাড়িতেও। তারপরে আবার আজ সন্ধেবেলায় যেটা হলো আমার সাথে ওটাও তো আজব ব্যাপার। আমাকে অমন বসে পড়তে দেখে জোজোর বাবাও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো যে আমার আবার কি হলো? তাতে আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম সকালে সান্তার মুখে শোনা পুরোটা ওকে বললাম। শুনে এবার ও ভ্রূকুটি করে কি যেন ভাবলো। এখন সময় জোজো বলে উঠলো 'জানো বাবা মা আমায় বকেছে আজ।' যদিও এমন স্পষ্ট ভাবে নয়। এখনো ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারেনা ও। 

- ওমা সেকি কেন? কিগো? বকেছো কেন ছেলেকে?

আমি যদিও ওকে এই ব্যাপারটা বলতে চাইনি। কাজের থেকে ফিরেছে মানুষটা। তার ওপর আবার এমন আজব ব্যাপারের সাক্ষী হয়েছে। তাই এই সামান্য ব্যাপারটা বলে আরও চিন্তায় ফেলতে চাইনি। কিন্তু আমি নিজে তো জানি যে আমার কোনো ভুল হয়নি। শেষমেষ জোজোর বাবাকে জানাতেই হলো কেন বকেছি ছেলেকে ভুল করে। যদিও ওটাকে বকুনি বলেনা। সকালে ওই সান্তার মুখে ওসব শুনে এমনিতেই সব গুলিয়ে গেছিলো। কিন্তু সারাদিন কিন্তু কোনো ঝামেলা হয়নি। বেশ আরামে কেটেছে। স্নান, খাওয়া দাওয়া তারপরে দুপুরে একটু হালকা করে ঘুম। শশুর শাশুড়ি নেই তাই সেইভাবে আলাদা পরিশ্রমের কিছুই নেই। সন্ধে নাগাদ মুন্নিদি এলো প্রতিদিনের মতোই। আমাদের বেসিনটা ছোট তাই সে সব থালা বাসন একটা গামলায় নিয়ে কলঘরে গিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে। আজও ওগুলো নিয়ে সে চলে গেলো আর আমিও পুজো দেবার জন্য মায়ের অর্থাৎ শাশুড়ি মায়ের ঘরে গেলাম। আমাদের ঠাকুরঘর ওই ঘরেই। আমি প্রদীপ জ্বালিয়ে ধুপ জ্বালাতে যাচ্ছি এমন সময় মনে হলো পেছনে দরজায় আওয়াজ হলো। আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি জোজো। ও দাঁড়িয়ে আমাকেই দেখছে। আমিও আবার মুখ ফিরিয়ে ধুপ জ্বালাতে জ্বালাতে বললাম 'আয় ভেতরে' কিন্তু ওর থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে আবার ঘুরে তাকিয়ে দেখি বাবু ততক্ষনে সরে পড়েছেন। তার নতুন কিনে দেওয়া ফুটবলের লাফানোর আওয়াজ পাচ্ছি। মানে সে খেলছে এখন আসবেনা। আমিও শঙ্খ বাজিয়ে প্রণাম করছি এমন সময় আবারো দরজায় টোকা। একবার, দুবার, তিনবার। এবারে একটু ভুরু কুঁচকে ওদিকে তাকাই। ভেবেছিলাম আমায় এভাবে দেখে জোজোর শয়তানি বন্ধ হবে। যদিও এমন ও করেনা। কিন্তু কই? কোথায় জোজো? আমি তো আমাদের ঘর থেকে ওই বলের লাফানোর আওয়াজ পাচ্ছি। তারমানে ও আমাদের ঘরে। এর মধ্যে ও দৌড়ে ওই ঘরে চলে গেলো? এতো বড়োও সে হয়নি। আমি নিজে বাইরে এসে দাঁড়ালাম। তারপর ঘরের বাইরের আলোটা জ্বালিয়ে দিলাম। এতক্ষন সেটা নেভানো ছিল, শুধু ভেতরের আলো জ্বলছিল। নিজের ঘরে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম হ্যা ঠিক। ছেলে আপন মনে খেলছে বল নিয়ে। আমি ওই একটু দৃঢ় কণ্ঠে জিজ্ঞেস করি ওকে যে সে কেন এমন দুস্টুমি করছিলো। ওটাকেই ও বকুনি ভেবেছে। জোজো একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবারো নিজের ফুটবলে মনোযোগ দিয়ে মাথা নাড়িয়ে বললো সে অমন কিছুই করেনি। আমি তাকিয়ে রইলাম ছেলের দিকে। বল হাতের থেকে বেরিয়ে দূরে চলে গেলে ওটা নিয়ে আসতেই যার একটু হলেও সময় লাগছে, সে কিকরে ওতো দ্রুত দরজায় টোকা দিয়ে পালিয়ে যাবে? নানা ও মনের ভুল। আমি তখনো হাতে ধুপ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের ঘরে কৃষ্ণ ঠাকুরের একটা ছবি আছে সেটাতে ধুপ দিয়ে বেরিয়ে এসে আবারো শাশুড়ি মায়ের ঘরে গিয়ে সব ঠাকুরকে ধুপ দিচ্ছি এমন সময় মুন্নিদি আসলো এ ঘরে। তাকে একটু কেমন চিন্তিত দেখাচ্ছে যেন। আমি কি হয়েছে জিজ্ঞাস করাতে সেই উল্টে আমায় জিজ্ঞেস করলো  আমি একটু আগে কলঘরের দিকে গেছিলাম কিনা? আমি না বলতে সে অবাক হয়ে জানালো সে এতক্ষন বাসন মাজছিলো। হাঁটুমুড়ে একটা ছোট টেবিলে বসে সে একমনে নিজের কাজ করছিলো। বাইরের ওই বাল্ব আর ভেতরের একটা বাল্ব জ্বলছিল। কিন্তু তিনবার নাকি সেই লাইট কেঁপে ওঠে। একবার তো পুরো নিভে গিয়ে সামান্য পরে জ্বলে ওঠে। কারেন্টঅফ হতে পারে ভেবে মুন্নিদি একবার ভাবে যে আমায় ডাকবে কিন্তু আর ওসব কিছু না হতে দেখে সে আবার বসে কাজে মন দেয়। একটু পরে তার মনে হয় কেউ হেঁটে এসে ভেতরে ঢুকে তার পেছনে এসে দাঁড়ায়। মুন্নিদি ভাবে বোধহয় আমি এসেছি। কারণ এমন আমি কয়েকবার এসে কথা বলেছি কিংবা ছেলেকে হিসু করাতে নিয়ে এসেছি। আজও তাই ভেবেছিলো সে। কিন্তু আমি কিছুই বলছিনা বা করছিনা দেখে সে পেছন ফিরে তাকায় কিন্তু কাউকে দেখতে পায়না। অথচ সে স্পষ্ট শুনেছে দরজা দিয়ে বেরিয়ে কেউ হেঁটে ওই ছোট উঠোন পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলো আর পেছনে এসে সেই পায়ের আওয়াজ থামলো অথচ কেউ কোথাও নেই! ঠিক তখনি নাকি ঘরের ভেতর থেকে শঙ্খধ্বনি ভেসে আসে। তাই সে নিশ্চিত হতে উঠে এসেছিলো যে আমি গেছিলাম কিনা ওখানে কিন্তু আমি তো একটিবারের জন্যও ওদিক মারাইনি! আর ওই দরজায় তিনবার টোকা..... ওটাও কি তাহলে মনের ভুল ছিল? সব শুনে অরিন্দম কিছুই বল্লোনা। শুধু ভ্রূকুটি করে আবারো গ্লাসে চুমুক দিলো। 

সেদিন রাতে আর কিছু আলোচনা করলাম না আমরা এসব নিয়ে। জোজোর বাবা নিজের বাবাকে যেমন ফোন করে তেমনি ফোন করে কথা বললো। যদিও এসব অদ্ভুত ব্যাপার নিয়ে কিছুই জানালো না তাদের। সেটা একদিকে ভালোই করেছে সে। শাশুড়ি মা আবার একটুতেই দুশ্চিন্তায় পড়ে জান। সামান্য ব্যাপারে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তাই তাকে এসব না জানানোই ভালো। কিন্তু আমি পরের দিন নিজের মাকে ফোনে সবটাই জানাই। সবটা শুনে প্রথমে মা কিছুক্ষন চুপ করে রইলো, তারপরে বললেন - আচ্ছা আমি কাল একবার তারক জেঠুর সাথে কথা বলবো। দেখি উনি কি বলেন। তুই বেশি এসব ভাবিসনা। হয়তো ব্যাপারটা কিছুই নয়। পুজো ঠিক মতো দিয়ে যা মন প্রাণ দিয়ে। আর ধুপ প্রতি ঘরে দেখাবি। নিজের ঘর শুদ্ধ থাকলে কোনো খারাপ কিছু সহজে ক্ষতি করতে পারেনা। আর একদম এসব নিয়ে ভাববিনা, কিছুই নয়..... হয়তো অরিন্দম ঠিকই বলেছে....তুই বেশি ভেবে ফেলছিস। আমি দেখছি কথা বলছি হ্যা? একদম চিন্তা করবিনা।

আমিও আর বেশি কথা বাড়াইনি। কারণ আমি নিজেই যেন মানতে চাইছিনা এসব। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত যতই ভুতের গল্প শুনিনা কেন বা হরর মুভি দেখিনা কেন বাস্তবে এমন কিছু যেন ব্রেন সহজে মেনে নিতে চায়না। কারণ সে এতদিন ধরে চলে আসা জীবনে হটাৎ করে পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনা। তাই সবকিছু বৈজ্ঞানিক পথে পর্যবেক্ষণ করে তবে সিধান্ত নেয়। কুন এই কদিনে যা হলো সেটা তাহলে কি? আর সবচেয়ে বড়ো কথা এখনই কেন? পুরোটা শুরু হলো মেয়েটা চলে যাবার পর থেকে.... এটাও তো অদ্ভুত। তবে সবচেয়ে অদ্ভুতকথা হলো ব্যাপারটা যে সবসময় ঘটে চলেছে তাও নয়। যেমন কাল রাত্রে একটুও কোনো অসুবিধা হয়নি। একদম স্বাভাবিক ছিল সবকিছু। রাতে নাকি জোজোর বাবা একা উঠে বাথরুমেও গেছিলো। সে কিছুই অনুভব করেনি। সেটাই তো স্বাভাবিক। তাহলে তার আগে পর্যন্ত যেটা হল সেটাকে কি বলা যায়? আমিও আর এসব বেশি কিছু না ভেবে নিজের বাড়ির কাজে মন দিলাম। তাও ভালো শাশুড়ি মা এখন নেই। নইলে আবার সে আমার থেকেও বেশি ভাবতে শুরু করতো। কদিন মেয়ের বাড়িতে শান্তিতে কাটাক। 

আজ পুরো দিন বেশ ভালো ভাবেই কাটলো। কোনো অস্বাভাবিক কিছুই আর হলোনা। আমি ছেলের সাথেই সময় কাটিয়ে দিলাম। বিকালে কিছুক্ষন ছাদে হাঁটাহাঁটিও করেছি। যদিও একবার মনে হয়েছিল সিঁড়িতে ধুপ ধুপ করে কিছুর আওয়াজ পেয়েছিলাম। তারপরে আর কিছুই শুনিনি। সন্ধে নাগাদ মুন্নিদি কাজে এসে সব কাজ মিটিয়ে কিছুক্ষন গল্প করে চলে গেলো। আজ আর কাজ করার সময় কিছুই মনে হয়নি তার। একসময় জোজোর বাবাও ফিরে আসলো। আজ আবার কিছু হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করায় সে হেসে বলে না...আর কোনো কিছু দেখেনি রাস্তায়। আমি যদিও ওকে বলেছিলাম একটা ঠাকুরের ফুল আজ থেকে ব্যাগে রেখে দিতে। সেও আমার কথা মেনে নিয়েছিল। বেশি কথা বাড়ায়নি। কিন্তু আসল কথা হলো সব আগের মতো স্বাভাবিক চলছিল। আমার মাথা থেকেও যেন একটা সময় ওসব চিন্তা বেরিয়ে গিয়ে গেছিলো। হয়তো ভেতর থেকে এটাই ভাবতে চাইছিলাম সব ঠিক আছে।

রাত সাড়ে দশটা বাজে। আমরা সবাই বসার ঘরে বসে সূর্যবংশ দেখছিলাম। ফিল্মটা এতবার দেখা তাও যেন বার বার দেখতে ভালো লাগে। এখনো মনে আছে তখন ওই ক্ষীরের মধ্যে বিষ মেশানোর সিনটা চলছিল। আমি ওই সময় রান্না ঘরে গেছিলাম কি একটা কাজে। ঠিক এমন সময় গেলো কারেন্ট অফ হয়ে। আলোতে এতক্ষন থাকার পর হটাৎ করে অন্ধকার ঘিরে ধরলো। মাথাটা গেলো গরম হয়ে। ওখান থেকে জোজোর বাবাও চিল্লিয়ে উঠলো ধ্যাৎতারিকা বলে। তারপরেই শুনলাম সে চেঁচিয়ে আমায় জিজ্ঞেস করছে আমি কোথায় আছি। আমিও চেঁচিয়ে উত্তর দিলাম আমি রান্নাঘরে। সে আবারো জিজ্ঞেস করলো সে আসবে কিনা আমার কাছে। আমি বললাম কোনো দরকার নেই। সে যেন জোজোর কাছেই থাকে। ওকে ছেড়ে আসতে হবেনা। আমি মোমবাতি নিয়ে আসছি। এই বলে আমি দেয়াল ধরে ধরে বেরিয়ে আসতে লাগলাম। রান্না ঘরের খোলা জানলা দিয়ে হালকা আলো আসছিলো। অন্ধকারে চোখ সয়ে যেতেই কিছুটা হলেও দেখতে পাচ্ছিলাম। আমাদের আগে দুটো এমার্জীন্সি লাইট ছিল কিন্তু দুটোই গেছে খারাপ হয়ে। কিনবো কিনবো করেও আর নতুন কেনা গোয়েন্দা ওঠেনি। তাছাড়া অনেকদিন লাইট অফ হয়েওনি। আমি বেরিয়ে এসে এগিয়ে যাচ্ছিলাম শাশুড়ি মায়ের ঘরের দিকে। ঠাকুর ঘরের পাশেই দুটো বড়ো মোমবাতি আছে। আমি আমার ফোনটাও আনিনি। নইলে ওটার ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়েই সহজে কাজ করে নিতাম। আমার মাথায় তখন একটাই ভাবনা যেন কোথাও ধাক্কা খেয়ে না যাই। আমি এইভাবে এগিয়ে সবে আমাদের সিঁড়ির কাছে পর্যন্ত পৌঁছেছি। হটাৎ কারোর সাথে যেন হালকা ধাক্কা লাগলো বাঁ হাতে। আমি তো রেগে গিয়ে বলেই ফেললাম - আরে বললাম তো আসতে হবেনা তোমায়! কথা শোনোনা কেন তুমি? কিন্তু ওপাশ থেকে দেখি কোনো উত্তর নেই। আমি আবারো জিজ্ঞাস করলাম - কি হলো কি? কিন্তু আবারো সব শান্ত। কি ভেবে আমি দুই হাত বাড়িয়ে এদিক ওদিক খুঁজলাম.....কিন্তু হাতে কিছুই ঠেকলোনা। কিন্তু এই কয়েক মুহূর্ত আগেও তো আমার বাঁ হাতে আমি কিছুর ধাক্কা অনুভব করেছি। দুটো মানুষ খুব পাশাপাশি গেলে যেমন বাহু স্পর্শ হয়ে যায় ঠিক তেমনি। আজ! এতক্ষন পর! আবারো আমার ভেতরের সেই অনুভূতিটা ফিরে এলো। সারাদিনের স্বাভাবিকতা এবং টিভি দেখতে দেখতে এতটাই নরমাল হয়ে গেছিলাম যে এসব অনেক্ষন মাথাতেও আসেনি কিন্তু এই আবার ঘিরে ধরলো আমায়। অন্ধকারের থেকেও ঘন যে অনুভূতি... ভয়!

- কি গো? কি হলো? কিছু বললে?

আমার আওয়াজ হয়তো একটু জোরেই ছিল বলে জোজোর বাবা বলে উঠলো। কিন্তু সেই ডাক এলো দূরে বসার ঘর থেকে। তারমানে সে নিজের ঘরেই ছিল। কিন্তু আমি যে এক্ষুনি......! আমি হয়তো একাই চলে যেতে পারতাম বাকি পথ টুকু। কারণ শাশুড়ি মায়ের ঘরের জানলা আর দরজা খোলা আর সেখান থেকেও কিছুটা আলো এসে মেঝেতে পড়েছে আমি দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু এখন আর যেন সাহস নেই একা একা বাকি টুকু যাবার। রান্নাঘরের গলিটার দিকে যে ঘুরে তাকাবো সেটাও আর পারলাম না। শেষে ওকে ডাকতেই হলো আমায়। সেও দেখি ফোনের লাইট জ্বালিয়ে এগিয়ে এলো,সাথে ছেলেও। ওর সাথেই গেলাম শশুর শাশুড়ি মায়ের ঘরে আর ঠাকুরের আসনের পাশেই দেয়ালে টাঙানো দুটো নতুন মোমবাতি তুলে সেখানেই একটা জ্বালিয়ে ফিরে এলাম নিজেদের বেডরুমে। ছেলেকে জড়িয়ে আমি বসে রইলাম চুপ করে। নানান সব মিশ্র অনুভূতি। যেন নিজের সাথেই নিজের লড়াই চলছে ভেতরের। বিশ্বাসের সাথে অবিশ্বাস এর, যুক্তির সাথে সম্ভাবনার। সাথে হচ্ছে রাগ। নিজের আপন বাড়িতে কিনা আমি ভয় পাচ্ছি? এই বাড়িতে আজ এতগুলো দিন পার করে ফেললাম, ছেলে একটু করে বড়ো হচ্ছে আর এই সময় এসে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে স্বামীকে ডাকতে হলো? ইচ্ছে করছে এক্ষুনি আবার এগিয়ে যাই রান্না ঘরের দিকে, গিয়ে দেখি কে আছে? তারপরে ভাবছি যদি সত্যিই কেউ থাকে? আমার শান্ত ভাব দেখে অরিন্দম একবার জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে? তারপরে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে নিজেই বললো - ভয় পেয়েছো? আমি  যদিও ভেবেছিলাম এসব বলে আবার ওর মধ্যে দুশ্চিন্তা জাগরণ করার কি মানে? কিন্তু তারপরে কি ভেবে বলেই ফেললাম হযেটার সাক্ষী হয়েছি আমি। শুনে যদিও ও বললো ওসব কিছুই নয় কিন্তু তারপরে নিজেই বললো আমি ঘুরে দেখে আসছি একবার। আমি ওকে বাঁধা দিয়ে বললাম যে যেতে হবেনা কিন্তু ও হেসে বললো - আরে ধুর তুমিও না! এমনিতেও তো বাথরুমে যাবোই। যেতেই হবে ওদিকে। তুমি এসব ভাবা বন্ধ করো তো। যত ভুলভাল ভাববে ততই এসব ফিল করবে। তারপরে নিজেই উঠে আরেকটা মোমবাতি জ্বালিয়ে উঠে চলে গেলো বাইরে। আমি দরজার বাইরে তাকিয়ে রইলাম। হলদে আলোটা ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলো। আবারো বাইরেটা অন্ধকার। শুধুই ঘরের মোমবাতির আলোয় দরজার সামনে টুকু আলোকিত কিন্তু রান্নাঘরের ঐদিকটা পুরো অন্ধকার। কিন্তু আমার ছেলের বাবার এই সাহস যেন আমাকেও সাহস জুগিয়েছে মানুষটা কেমন একাই চলে গেলো ওই বাথরুমের দিকে। ভাবলাম ও ফিরলে এবার আমিও একা যাবো। ছেলেকে বিছানায় বসিয়ে আমি উঠে গেলাম বাইরে। শুনতে পেলাম বাথরুমের দরজা বন্ধ করার শব্দ। কয়েক পা এগিয়ে শাশুড়ির ঘরের ভেতরটা দেখলাম। আগের মতোই অন্ধকার। খোলা জানলা আর পর্দাটা একটু উড়ছে। এগিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকে বিছানায় উঠে জানলাটা বন্ধ করে পুনরায় ফিরে এলাম নিজের ঘরে। এসেই দেখি আমার ছেলে ওটা স্পাইডারম্যান এর পুতুলটা ধরে ঘরের দরজার দিকেই তাকিয়ে। আমি ভাবলাম ও আমার পায়ের আওয়াজ পেয়ে এদিকে তাকিয়েছে। কিন্তু আমি ঢোকার পরেও ওর দৃষ্টি আমার দিকে নয়। দরজার সামনে আমার দাঁড়ানোয় বাইরের অনেকটা অংশ ঢাকা পড়ে গেছে। আর জোজো মাথা নিচু করে আবার বেঁকিয়ে বাইরের সেই দিকে কি যেন দেখার চেষ্টা করছে। আমি ওর দেখাদেখি নিজেও ঘুরে তাকালাম। কই? কিছুই তো নেই। আমি আবার তাকালাম সামনে। ও তখনো দেখছে সেদিকে। আমি আবার তাকালাম। কি দেখছে ছেলেটা? তারপরে আবার তাকালাম সামনে। তখন দেখি জোজো আর বাইরের দিকে দেখছেনা বরং খেলনাটা নিয়ে খেলছে।

- কিরে জোজো? কি দেখছিলি বাবু? জিজ্ঞেস করলাম আমি। কিন্তু ছেলে খেলনা থেকে মুখ না সরিয়ে মাথা নাড়লো না সূচক। বাচ্চাদের মাথায় কত কি চলে। এর আগেও ওকে অনেকবার খেলতে খেলতে থেমে জানলার বাইরের কিংবা আমি কোনো কাজে ব্যাস্ত থাকলে সেইদিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। আজকেরটাও তেমন কিছুই ভাবতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু অতটাও যেন স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছিলাম না। যতবার নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি এসব কিছুই নয় ততবার অসফল হয়েছি। আমি আবার শুনলাম বাথরুমের দরজার আওয়াজ। মানে ও এবার ফিরবে। সামান্য পরেই ওর বাবা ফিরেও এলো। ছেলের ওপাশে গিয়ে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আমায় ইশারায় আশ্বাস দিলো কিচ্ছু অসুবিধা হয়নি সব ঠিকাছে। ও ফিরতে টর্চটা নিয়ে আমি গেলাম এবার। হ্যা একাই। মিথ্যে বলবোনা..... আবারো ওই সিঁড়ির জায়গাটা পেরিয়ে তারপরে রান্নাঘরে যাওয়ার লম্বা গলি পার করে এগিয়ে  দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে বাথরুমে যাবার পথ টুকুতে দুবার থেমে ভাবতে হয়েছে ফিরে যাবো কিনা কিন্তু আমি এগিয়ে গেছি। কারণ মনে হয়েছে এই তো এক্ষুনি এই রাস্তা দিয়েই অরিন্দম একা গেলো আর ফিরে এলো। আমার মনে আছে এমনই রাতে আগেও একবার কারেন্ট গেছিলো আর আমাকে কলঘরে যেতে হয়েছিল। সেটা আরও রাতের দিকে। তখন অবশ্য জোজো হয়নি। সেদিনের পর এই আজ। 

একসময় আমিও ফিরে এলাম। না কেউ বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দেয়নি বা নাকি গলায় হাসেনি। ছোটবেলা থেকে পড়ে আসা ও পরবর্তী সময় শোনা যত ভৌতিক গল্প কাহিনী শুনেছিলাম সব যেন ওই সময়তেই মনে পড়তে হবে। লজ্জার মাথা খেয়ে একবার ভেবেওছিলাম ওকে বাইরে দাঁড়াতে বলবো যতক্ষণ না আমি ভেতর থেকে বেরোই কিন্তু সেটা কি আর এখন এই সময় এসে মানায়? আমি তো আর জোজো নয়, ওর মা। ভাবতেও লজ্জা করে এসব। যত আমি নিজের ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম ততো যেন একটু একটু করে ভয়টা কমছিল। হাতে ধরা টর্চের আলোয় সামনেটা হলুদ আভায় আলোকিত কিন্তু আমার পাশে ও পিছনটা সেই আগের মতোই অন্ধকার। কেন জানি একবার পেছনে টর্চ ফেলে দেখলাম। কিছুই তো নেই। কিছু থাকার কথাও নয়। কিন্তু তাও আমি এমন কেন করলাম? আমি কি তাহলে চাইছিলাম ওখানে কিছু দেখতে পাই? কিসের এতো কৌতূহল আমার? নিজেও জানিনা আমি। সিঁড়ির কাছটায় পৌঁছে গেছি। ওখান থেকে ডাইনিং টেবিলটা স্পষ্ট দেখা যায়। আমি আলো হাতে দেখলাম ওখানে দাঁড়িয়ে জোজো আর জোজোর হাতে ওর ফুটবল। মেঝেতে বসে আছে ও। আর বলটা ও গড়িয়ে দিলো সামনের অন্ধকারে। আমার টর্চের আলো জোজোর পিঠে তাই বলটা যতক্ষণ ওর হাতে ছিল আমি দেখতে পেয়েছি কিন্তু সেটা সামনে এগিয়ে যাবার পরে আর আমি দেখতে পেলাম না। ঠান্ডায় মেঝেতে বসে আছে বলে এগিয়ে গিয়ে ওকে বকতে যাবো তার আগেই আমায় দাঁড়িয়ে পড়তে হলো। এটা কি দেখলাম আমি? আমার চোখের সামনে ওই বলটা আবার গড়িয়ে ফিরে এলো জোজোর পায়ের কাছে। জোজো আবার ওটা তুলে ওর গায়ের জোরে ওটা ছুঁড়ে দিলো আবারো সামনের দিকে। বলটার লাফানোর শব্দও কানে পাচ্ছি। কিন্তু ওকি? সামান্য পরেই বলটা আবার অন্ধকার থেকে ওর কাছে ওই একই গতিতে জাম্প করতে করতে ফিরে এলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে হাতের টর্চটার আলো সামনের দিকে ফেললাম। বসার ঘরের দরজাটা আগের মতোই খোলা। ভেতরে সোফা আর টিভি সেট সব দেখতে পেলাম। কিন্তু আর কিছুই নেই তো। আলোটা ঘরের ভেতর পড়াতে আর সেটা জোজো দেখতে পেয়ে ঘুরে আমার দিকে তাকালো আর হেসে আবার সামনে ঘুরে বলটা নিয়ে ছুঁড়ে দিলো সামনে। এইবার টর্চের আলোয় দেখলাম বলটা লাফাতে লাফাতে সোজা ঢুকে গেলো বসার ঘরে। আর সেই যে ঢুকলো আর বেরোলোনা। সোফার কাছে গিয়ে ঐভাবেই পড়ে রইলো। আমি এগিয়ে গেলাম ড্রইং রুমের দিকে। চারিদিকে আলো ফেলে দেখলাম একবার। সব একদম শান্ত। বড়ো ঘড়িটার টিকটক টিকটক শুনতে পাচ্ছি। নিচে তাকিয়ে দেখলাম বলটা স্থির হয়ে সোফার কাছে পড়ে। একটু আগেও এটা এই ঘরে ঢুকে পুনরায় ফিরে গেছিলো ছেলের কাছে। হয়তো এই সোফায় ধাক্কা লেগেই সেটা ফিরে গেছিলো। কিন্তু এইবারে আর তা হয়নি। কিন্তু এই সোফা আর ওই বাইরে যে জায়গায় জোজো ছিল মাঝে দূরত্ব অনেকটাই। জোজোর গায়ে এখনো ওতো জোর কি হয়েছে যে এতটা দূরে বলটা ছুঁড়ে দেবে আর সেটা দ্রুত গতিবেগে এগিয়ে এই সোফায় ধাক্কা লেগে পুনরায় ফিরে যাবে ওর কাছে? ও তো বড্ড হালকা ভাবেই ওটা ছুঁড়ে দিচ্ছিলো আর ড্রপ খেতে খেতে ওটা এগিয়ে যাচ্ছিলো। নিজেকে ওই সব অস্বাভাবিক অনুভূতি গুলো থেকে বাঁচাতে যে যুক্তির সাহায্য বারবার নিচ্ছিলাম এলং দেখি সেই যুক্তিই আমায় বাধ্য করছে আরও ভয় পেতে! এমন সব ভাবছি ঠিক তখনি আমার ডান হাতটা কে যেন হটাৎ চেপে ধরলো!


পরের পর্বে সমাপ্ত 
[Image: 20230816-221934.png]
[+] 9 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
গল্প তো নয়, পড়তে পড়তে ঠিক যেন মনে হচ্ছিল সিনেমা দেখছি। প্রতিটি লাইনেই রহস্য রোমাঞ্চ ফুটে উঠছিল। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 2 users Like Sanjay Sen's post
Like Reply
#63
টানটান উত্তেজনায় ভরা একটি পর্বের সাক্ষী রইলাম আমরা। প্রত্যেকটি লাইন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই আপডেট যে উপর উপর পড়ে বেরিয়ে যাবে সে অনেক কিছু মিস করবে। তাই সবাইকে অনুরোধ রইলো মন দিয়ে এই পর্বটি পড়ুন। অন্তিম পর্বে বোঝা যাবে পুরোটাই মনের ভুল নাকি ......... super natural কিছু ঘটনা সত্যিই ঘটে চলেছে।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
#64
(26-01-2023, 09:59 PM)Sanjay Sen Wrote: গল্প তো নয়, পড়তে পড়তে ঠিক যেন মনে হচ্ছিল সিনেমা দেখছি। প্রতিটি লাইনেই রহস্য রোমাঞ্চ ফুটে উঠছিল। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা ♥️♥️
জেনে সত্যিই ভালো লাগলো আপনাদের ভালো লাগছে গল্পটা  Namaskar

(26-01-2023, 10:01 PM)Bumba_1 Wrote: টানটান উত্তেজনায় ভরা একটি পর্বের সাক্ষী রইলাম আমরা। প্রত্যেকটি লাইন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই আপডেট যে উপর উপর পড়ে বেরিয়ে যাবে সে অনেক কিছু মিস করবে। তাই সবাইকে অনুরোধ রইলো মন দিয়ে এই পর্বটি পড়ুন। অন্তিম পর্বে বোঝা যাবে পুরোটাই মনের ভুল নাকি ......... super natural কিছু ঘটনা সত্যিই ঘটে চলেছে।

অনেক ধন্যবাদ ♥️♥️
গল্পটা যে তোমাদের নজর কাড়তে পেরেছে দেখে সত্যিই ভালো লাগছে  Namaskar
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#65
(25-01-2023, 08:59 PM)Boti babu Wrote: অবশ্যই দাদা আমিও কথা গুলি বলতে চাই । আসলে কেউ বিশ্বাস করে আবার কেউ বিশ্বাস করে না তাই সবার সামনে এগুলো নিয়ে আলোচনা করি না। আগামী পর্ব আপলোডের পড়ে আমার অভিজ্ঞতা গুলি বলবো । এখন এটাই বলবো তিনটি অভিজ্ঞতা তিন রকমের । যারা বিশ্বাস করবে তাদের একটু ভয় লাগবে যারা বিশ্বাস করবে না তাদেরও মজা লাগবে।

কে বিশ্বাস করবে কি করবেনা সেই ভেবে চললে তো অনেক অসাধারণ সত্যি ঘটনা চিরতরে চাপা পড়ে থাকবে কোনো মনের অন্তরে। তার চেয়ে সে সব সকলের মাঝে প্রকাশ করাতেও আনন্দ। যে করবে সে দারুন উপভোগ করবে, আবার ভয়ও পাবে। এটাই তো আসল ব্যাপার। একদমই ঠিক। যারা বিশ্বাস করে তাদের একরকম অনুভূতি আর যারা করেনা তাদের গল্প হিসাবে মজা। 

আমি কিন্তু অপেক্ষায় আছি সেই ঘটনা গুলোর। নতুন পর্ব এসে গেছে। পড়ে ফেলুন আর লিখে ফেলুন নিজের ঘটনা ♥️ Shy
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#66
ভালো লাগলো

আসলে সবাই ছেড়ে চলে যাচ্ছে  এই ফোরাম , আমরা কয়েকজন টিকে আছি এখনো


Sad
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#67
(26-01-2023, 11:06 PM)ddey333 Wrote: ভালো লাগলো

আসলে সবাই ছেড়ে চলে যাচ্ছে  এই ফোরাম , আমরা কয়েকজন টিকে আছি এখনো


Sad


হমমম  Sad
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ♥️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#68
-ভয় পেয়েছো!
কানের সামনে হঠাৎ করে কেউ এটা বললে এমনিতেই তো পিলে চমকে উঠবে। 
সবকিছুই মনের ভুল ভেবে নিতে গিয়ে কাপালের পাশে জমা হওয়া ঘামের বিন্দু হৃৎপিণ্ডের গতি বাড়ায় সাথে মনের ভয়।
রহস্যের জালে বন্দী হতেও যে ভয় লাগে যদি নিজেকে ছাড়ানোর বদলে উল্টো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে হারিয়ে যাই কালের গর্ভে।
ধ্যাত আমি কি ভয় পাই নাকি...
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 3 users Like nextpage's post
Like Reply
#69
এই পর্বটা এখন পর্যন্ত এই গল্পের সেরা পর্ব ছিল। জোজোর বাবার ওই রাস্তায় ভয় পাবার দৃশ্য থেকেও বেশি ভয়ের ছিল জোজোর ওই বল খেলার দৃশ্যটা। বাবান দাদা সত্যিই বলছি আপনি ভয় পাওয়াতে পারেন। ভয় একের থেকে দুই বেশি ভয়ের। yourock
[+] 1 user Likes Avishek's post
Like Reply
#70
(27-01-2023, 12:52 AM)nextpage Wrote: -ভয় পেয়েছো!
কানের সামনে হঠাৎ করে কেউ এটা বললে এমনিতেই তো পিলে চমকে উঠবে। 
সবকিছুই মনের ভুল ভেবে নিতে গিয়ে কাপালের পাশে জমা হওয়া ঘামের বিন্দু হৃৎপিণ্ডের গতি বাড়ায় সাথে মনের ভয়।
রহস্যের জালে বন্দী হতেও যে ভয় লাগে যদি নিজেকে ছাড়ানোর বদলে উল্টো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে হারিয়ে যাই কালের গর্ভে।
ধ্যাত আমি কি ভয় পাই নাকি...

রহস্যে জড়িয়ে আরও গভীরে তলিয়ে যাবার অদ্ভুত আকর্ষণ আছে। যেমন গল্পে গোগোল বাবুর মা মজেছে না চাইতেও। আর এমনিতেই মানুষ গুলো ঘাবড়ে আছে, এবার কানের সামনে কেউ ফিসফিস করলে কি হবে ভাবতো?

তুমি ভয় পাবে কেন? তুমি হবে সুপার সাহসী। শুধু ওই একটু ইয়ে লাগে মাঝে মাঝে আরকি  Big Grin

(27-01-2023, 01:34 AM)Avishek Wrote: এই পর্বটা এখন পর্যন্ত এই গল্পের সেরা পর্ব ছিল। জোজোর বাবার ওই রাস্তায় ভয় পাবার দৃশ্য থেকেও বেশি ভয়ের ছিল জোজোর ওই বল খেলার দৃশ্যটা। বাবান দাদা সত্যিই বলছি আপনি ভয় পাওয়াতে পারেন। ভয় একের থেকে দুই বেশি ভয়ের। yourock

অনেক অনেক ধন্যবাদ ♥️
চেষ্টা করি মাত্র। আমি কখনোই চাইনি গল্প গুলো অতি মাত্রায় ভৌতিক হয়ে উঠুক। একটু ভয় একটু কৌতূহল একটু চিন্তা এই নিয়ে এগিয়ে চলুক।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#71
Osadharon... Please eivabei likhe jan
[+] 1 user Likes Dushtuchele567's post
Like Reply
#72
(27-01-2023, 03:52 PM)Dushtuchele567 Wrote: Osadharon... Please eivabei likhe jan

অনেক ধন্যবাদ ♥️
Like Reply
#73
undoubtedly best porbo cholo eta ei golper. Ekta ga chom chomey vibe pelam. Jojor baba ke follow korey ki khoti kortey chaichilo naki oi pollobi? Naki jojor kono khoti kortey chay se? Dekha jak sesh porbey ki hoy.
[+] 1 user Likes Papai's post
Like Reply
#74
কি বলবো দাদা ভয় ধরে গেছে এমন পর্ব পরে । পড়তে বসে একবারের জন্য মনে হয় নি কোনও গল্প পড়ছি মনে হচ্ছিল বাস্তব ঘটনা ঘটে চলছে চোখের সামনে দাদা। লাইক রেপু এডেড দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
#75
ভয়! ভয়! ভয়! বাবান বড্ডো ভয়!
                            Namaskar
[Image: 20230923-133529.png]
Like Reply
#76
(28-01-2023, 06:37 PM)Papai Wrote: undoubtedly best porbo cholo eta ei golper. Ekta ga chom chomey vibe pelam. Jojor baba ke follow korey ki khoti kortey chaichilo naki oi pollobi? Naki jojor kono khoti kortey chay se? Dekha jak sesh porbey ki hoy.

অনেক অনেক ধন্যবাদ ♥️
সত্যিই এটা দেখে ভালো লাগছে যে গল্পটা পছন্দ হচ্ছে সকলের।

প্রশ্নের উত্তর আমিও জানিনা। তাছাড়া সবপ্রশ্নের উত্তর পাওয়া কি অতই সোজা? দেখা যাক কি হয়। লেখা চলছে।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#77
(28-01-2023, 09:06 PM)Boti babu Wrote: কি বলবো দাদা ভয় ধরে গেছে এমন পর্ব পরে । পড়তে বসে একবারের জন্য মনে হয় নি কোনও গল্প পড়ছি মনে হচ্ছিল বাস্তব ঘটনা ঘটে চলছে চোখের সামনে দাদা। লাইক রেপু এডেড দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।

অনেক ধন্যবাদ দাদা  Namaskar
আমি তো শুরুতেই উল্লেখ করেছি ওই অতিরঞ্জিত ব্যাপার গুলো আর বেশি রঙ মেশানো গল্প কোথাও যেন মনকে বুঝিয়ে দেয় ওগুলো শুধুই গল্প। তাই এমন ভাবে লেখা হোক যাতে ভয় কম লাগলেও হালকা শিহরিত হয়ে ওঠাই যথেষ্ট। চেষ্টা করেছি তেমনি কিছু লেখার। আপনার ভালো লাগছে জেনে সত্যি ভালো লাগলো। সাথে থাকুন। আর হ্যা..... আপনার তিনটে কিন্তু জানাবেন সময় করে। ❤

(28-01-2023, 09:25 PM)মহাবীর্য্য দেবশর্ম্মা Wrote: ভয়! ভয়! ভয়! বাবান বড্ডো ভয়!

একটু না হয় পেলেই ভয়
না পেলে কি মজা হয়
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#78
হাওয়ায় নড়ে ওঠা পাতাগুলো যেন মনে হচ্ছে ইশারা করে কাছে ডাকছে। ওগুলো যেন পাতা নয়, হাত। সেগুলো নেড়ে এইদিকে তাকাতে বলছে। উফফফফফ! এই অন্ধকারে যেন সবকিছুই ভয়ের লাগে। ছোটোখাটো সামান্য ব্যাপার পর্যন্ত অন্য রূপ নেয়। আমি আর ওদিকে নজর না দিয়ে  ফোনের স্ক্রিনে মন দিলাম। এরপরেও যে পুরোপুরি সেই অনুভূতি গুলো পুরোপুরি চলে গেছিলো বললে ভুল বলা হবে। প্রায়ই মনে হয়েছে পাঁচিলের ওপাশ থেকে উঁকি মেরে কেউ জানলার দিকেই চেয়ে আছে, আবার একবার মনে হয়েছে জানলার বাইরে এপাশ থেকে ওপাশে ভয়ানক তীব্র গতিতে কিছু যেন একটা চলে গেলো। আর সবচেয়ে ভয়ের আর অস্বস্তিকর হলো যেটা সেটা হলো জানলার একেবারে বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছে একদম চুপ করে।

আমি জানি একটু সময় লাগছে কিন্তু শেষ পর্বটা লিখতে একটু নিজেকে সময় দিতেই হয়। আমি কখনোই বলবোনা ফাটাফাটি একটা চমক থাকবে বা এমন কিছু। কারণ এটা তেমন গল্প নয়। যাই হবে তা সামান্যই হবে। আর সেই সামান্যটাই হয়তো সবচেয়ে ভয়ানক! কোনো উত্তর পাওয়া যাবে কিনা জানিনা কিন্তু একটা অনুভূতি একটু হলেও জাগবে আশা করি। ভয়! নিজের জন্য না হোক..... গল্পের চরিত্রদের জন্য।

কাল রাত্রে আসছে দুই আপডেটের শেষ পর্ব!
[+] 5 users Like Baban's post
Like Reply
#79
(29-01-2023, 08:16 PM)Baban Wrote: হাওয়ায় নড়ে ওঠা পাতাগুলো যেন মনে হচ্ছে ইশারা করে কাছে ডাকছে। ওগুলো যেন পাতা নয়, হাত। সেগুলো নেড়ে এইদিকে তাকাতে বলছে। উফফফফফ! এই অন্ধকারে যেন সবকিছুই ভয়ের লাগে। ছোটোখাটো সামান্য ব্যাপার পর্যন্ত অন্য রূপ নেয়। আমি আর ওদিকে নজর না দিয়ে  ফোনের স্ক্রিনে মন দিলাম। এরপরেও যে পুরোপুরি সেই অনুভূতি গুলো পুরোপুরি চলে গেছিলো বললে ভুল বলা হবে। প্রায়ই মনে হয়েছে পাঁচিলের ওপাশ থেকে উঁকি মেরে কেউ জানলার দিকেই চেয়ে আছে, আবার একবার মনে হয়েছে জানলার বাইরে এপাশ থেকে ওপাশে ভয়ানক তীব্র গতিতে কিছু যেন একটা চলে গেলো। আর সবচেয়ে ভয়ের আর অস্বস্তিকর হলো যেটা সেটা হলো জানলার একেবারে বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছে একদম চুপ করে।

আমি জানি একটু সময় লাগছে কিন্তু শেষ পর্বটা লিখতে একটু নিজেকে সময় দিতেই হয়। আমি কখনোই বলবোনা ফাটাফাটি একটা চমক থাকবে বা এমন কিছু। কারণ এটা তেমন গল্প নয়। যাই হবে তা সামান্যই হবে। আর সেই সামান্যটাই হয়তো সবচেয়ে ভয়ানক! কোনো উত্তর পাওয়া যাবে কিনা জানিনা কিন্তু একটা অনুভূতি একটু হলেও জাগবে আশা করি। ভয়! নিজের জন্য না হোক..... গল্পের চরিত্রদের জন্য।

কাল রাত্রে আসছে দুই আপডেটের শেষ পর্ব!

টিজার দেখেই বুঝতে পেরে গিয়েছি কাল কি কামাল দেখাতে চলেছো তুমি। বাবান সবসময় নিজের সেরাটাই দেয় .. এটা আমরা সকলেই জেনে গেছি এতদিনে। তাই কালকেও সেরা কিছু একটা উপহার পেতে চলেছি আমরা। অপেক্ষায় থাকলাম  Namaskar
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
#80
Waiting dada
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)