Posts: 76
Threads: 0
Likes Received: 105 in 68 posts
Likes Given: 4
Joined: Sep 2020
Reputation:
8
Anek din por 1 ta bhalo thriller paoa galo!!! 1 ta request korchi thrill jano sesh abdhi tan tan thake!! Plot ta excellent!!! Jadi ei story ta sesh koren tahole no doubt ami apnake best thriller writer hisabe consider korbo!!
Posts: 1,271
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,891
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
নতুন পর্ব কবে আসছে ভাই
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(06-09-2022, 01:15 AM)Debartha Wrote: Anek din por 1 ta bhalo thriller paoa galo!!! 1 ta request korchi thrill jano sesh abdhi tan tan thake!! Plot ta excellent!!! Jadi ei story ta sesh koren tahole no doubt ami apnake best thriller writer hisabe consider korbo!!
ধন্যবাদ, আমি জাস্ট ভালো লেখার চেষ্টা করছি
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(06-09-2022, 01:28 AM)Boti babu Wrote: নতুন পর্ব কবে আসছে ভাই
খুব তাড়াতাড়ি
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
ট্রেলার
মন্দিরে সাধু তাথৈকে বলে সে যেন কোনোদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ না করে ,যদি করে তাহলে সব হারাবে।
ওদিকে বিদিশা রয়কে বলে সে তখনই রয়কে বিশ্বাস করবে যখন সে রকির দলের দুজনকে মারবে।
বিদিশা কি সত্যিই সাহায্য করবে রয়কে?
এদিকে বীরেন ভট্টাচার্য জানতে পারে যে রকির দলের দুজন লোককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তারা রকির খুব ঘনিষ্ঠ।
তাথৈ নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে যে আসছে জন্মদিনে যদি অভয় ওর সামনে না আসে বা অভয়ের কোনো চিহ্ন না পায় তাহলে সে সুইসাইড করবে।
অভয় কি বেঁচে আছে? থাকলেও সে কি আসবে?
জানতে নজর রাখুন পরবর্তী পর্বে
শীঘ্রই আসছে "প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ" এর ষষ্ঠ পর্ব
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
Posts: 1,271
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,891
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
বাকবাকুম বাক তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-09-2022, 12:15 PM)Boti babu Wrote: বাকবাকুম বাক তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও
বাকবাকুম বাক মানে??  Sad  Sad
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 1,813
Threads: 3
Likes Received: 1,131 in 988 posts
Likes Given: 1,479
Joined: May 2022
Reputation:
35
(05-09-2022, 11:14 AM)Monen2000 Wrote: তাহলে ভিতরের খবর জানবে কিভাবে??
রক্ষিতা পরিবারের ভিতরের খবর জানে?
তবে আপনার সাজেশনটা মাথায় থাকবে, দেখি অন্য কাউকে আনা যায় কিনা 
Thnq very much
•
Posts: 1,813
Threads: 3
Likes Received: 1,131 in 988 posts
Likes Given: 1,479
Joined: May 2022
Reputation:
35
(07-09-2022, 10:29 AM)Monen2000 Wrote: ট্রেলার
মন্দিরে সাধু তাথৈকে বলে সে যেন কোনোদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ না করে ,যদি করে তাহলে সব হারাবে।
ওদিকে বিদিশা রয়কে বলে সে তখনই রয়কে বিশ্বাস করবে যখন সে রকির দলের দুজনকে মারবে।
বিদিশা কি সত্যিই সাহায্য করবে রয়কে?
এদিকে বীরেন ভট্টাচার্য জানতে পারে যে রকির দলের দুজন লোককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তারা রকির খুব ঘনিষ্ঠ।
তাথৈ নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে যে আসছে জন্মদিনে যদি অভয় ওর সামনে না আসে বা অভয়ের কোনো চিহ্ন না পায় তাহলে সে সুইসাইড করবে।
অভয় কি বেঁচে আছে? থাকলেও সে কি আসবে?
জানতে নজর রাখুন পরবর্তী পর্বে
শীঘ্রই আসছে "প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ" এর ষষ্ঠ পর্ব
Waiting eagerly
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-09-2022, 02:27 PM)Dushtuchele567 Wrote: Waiting eagerly
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
Posts: 1,271
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,891
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
১৭০০০ পার হয়ে ১৮০০০ ভিউ সেরা এ ভাবেই এগিয়ে যাও পাশে আছি সব সময় থাকবো ।
মনে জখন লাড্ডু ফুটে তখন মন বলে বাকবাকুম বাক
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-09-2022, 05:32 PM)Boti babu Wrote: ১৭০০০ পার হয়ে ১৮০০০ ভিউ সেরা এ ভাবেই এগিয়ে যাও পাশে আছি সব সময় থাকবো ।
মনে জখন লাড্ডু ফুটে তখন মন বলে বাকবাকুম বাক
বুঝলাম।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 290
Threads: 0
Likes Received: 199 in 176 posts
Likes Given: 162
Joined: Dec 2021
Reputation:
0
আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(07-09-2022, 10:30 PM)Arpon Saha Wrote: আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
খুব তাড়াতাড়ি আসবে
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 290
Threads: 0
Likes Received: 199 in 176 posts
Likes Given: 162
Joined: Dec 2021
Reputation:
0
•
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
(08-09-2022, 04:46 PM)Arpon Saha Wrote: শনিবার এর আগেই আসবে?
সেরকমই চেষ্টা করছি
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
ষষ্ঠ পর্ব
সকালে ঘুম ভেঙ্গে বিদিশা কিছুক্ষণ সময় নিল কোথায় আছে সেটা বুঝতে, তারপর মনে পরলো গতরাতের সমস্ত ঘটনা এমনকি রয়ের প্রস্তাবটাও মনে পরলো। রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে কয়েকবার ডাক দিল "রয়.. রয়"।
"গুড মর্ণিং.... ঘুম হলো?" জিজ্ঞেস করলো রয়, সে তখন কিচেনে।
বিদিশা প্রত্তুত্তরে বললো: গুড মর্ণিং, বেশ ভালো ঘুম হয়েছে।
পিঠের ব্যাথা কমেছে?
অনেকটা।
চা না কফি?
কফিই হোক।
রয় একটা ট্রে তে দু-কাপের মতো গরম জল, দুধ, কফি আর সুগার কিউব নিয়ে এল তারপর কফি তৈরি করতে করতে জিজ্ঞেস করলো: সুগার কিউব কটা?
তিনটে।
রয় কফির পেয়ালা বিদিশার হাতে তুলে দিল, বিদিশা একটা চুমুক দিয়ে বললো: উমমম নাইস... আপনার তো অনেক ট্যালেন্ট, এরকম কফি বানাতে পারেন, কয়েক মিনিটের আলাপে একজন মেয়ে যে আবার একজনের বউ তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এলেন এবং নিজের বেডরুমে থাকতে দিলেন কিন্তু সেই মেয়েটার বাধা দেওয়ার প্রয়োজনটুকু মনে হলো না।
রয়: কফিটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
বিদিশা হটাৎ গম্ভীর হয়ে গেল বললো: আপনি কাল রাতে যা বলেছিলেন মনে আছে?
কোনটা?
ওই আমার মুক্তির ব্যাপারে
হ্যাঁ, মনে আছে।
আপনি সিরিয়াস?
একদম।
বীরেন ভট্টাচার্যকে ভয় পান না?
বলেছি তো আমি কাউকে ভয় পাইনা।
বিনিময়ে আপনি কি চান?
তার মানে আপনি রাজী?
আগে জানতে চাই আপনি কি চান?
আপাতত আপনার মুক্তি
ফ্লার্টিং বন্ধ করুন, সিরিয়াসলি বলুন কে আপনি? আমার পিছনে পরেছেন কেন? আর আমার এরকম উপকার করতে চাইছেন কেন?
কেউ তখনই বন্দী থেকে মুক্তি পায় যখন সে নিজে মুক্ত হতে চায়, আপনি যদি মুক্তি চান তাহলে আপনাকে যা করতে হবে তাতে আমারও উপকার হবে।
কিরকম উপকার?
সেটা না হয় এখন নাই শুনলেন।
আপনি বলছেন আপনাকে বিশ্বাস করতে অথচ আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন না।
আমি বীরেন ভট্টাচার্যের সর্বনাশ চাই।
স্তম্ভিত হয়ে গেল বিদিশা, কিন্তু রয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝলো রয় সিরিয়াস বললো: কিন্তু আপনি যে মাঝপথে আমাকে বিট্রে করবেন না তার প্রমাণ কি?
রয়: আমি তো আপনাকে বিশ্বাস করছি।
দুজনে বেশ কিছুক্ষণ পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকলো তারপর বিদিশা বললো: আমার মুক্তি শুধু মাত্র ওদের মৃত্যুতে সম্ভব, বলুন আপনার সাহস আছে? বলুন?
আমার সাহসের কি প্রমাণ চান?
যদি কাউকে মারতে বলি মারবেন?
আমি নির্দোষ, নিরপরাধ দের মারি না।
বীরেন ভট্টাচার্য বা রকি ভট্টাচার্যের দলের কেউ নির্দোষ নিরপরাধ নয়। বিদিশা চেঁচিয়ে উঠলো।
রয়: কাকে মারতে হবে?
সত্যি পারবেন তো?
কাকে?
"কিসব মেয়ের ছবি দেখাচ্ছেন ঠাকুরমশাই ধূর একজনকেও আমার ছেলের পাশে মানাবে না" বেশ কয়েকটা মেয়ের ছবি দেখতে দেখতে বললেন এআরসির মা।
ঠাকুরমশাই: মানাবে না? আচ্ছা তাহলে একে দেখুন। বলে আরো একটা ছবি বের করেন তিনি তারপর বলেন: অনেক বড়োলোকের মেয়ে,এর পরিবার এর জন্য খরচও করবে অনেক, অনেক কিছু দেবে।
কেন আমার ছেলে ভিখারী নাকি? ওর নিজের অনেক আছে তার পরে কারো থেকে কিছু দরকার নেই আমার টাকাপয়সা চাই না, কিন্তু মেয়েটি যেন ভালো হয় আমার ছেলেকে সুখী রাখে সে গরীব হলেও চলবে আমাদের আর কিছু চাই না।
এমন সময় এবাড়িতে যে মহিলা সবসময়ের জন্য থাকেন তিনি হাতে একটা ফোন নিয়ে এলেন বললেন: বোন নাও তোমার ছেলে ফোন করেছে।
হ্যালো,
তুমি আবার ওই পুরোহিতকে ডেকেছো মেয়েদের ছবি নিয়ে?
এই তোকে কে বললো বলতো? দিদি তুমি বলেছো?
আমি ওখানে নেই ঠিকই কিন্তু তোমার উপর সবসময় আমার নজর আছে।
মায়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে কেন?
মা, তোমাকে বলেছি না আমার বিয়ের চিন্তা ছাড়ো।
কেন ছাড়বো? আমার কোনো শখ-আহ্লাদ নেই?
কি শখ আহ্লাদ?
নাতি-নাতনীর মুখ দেখবো না?
মা, এসব ছাড়ো আর ঠাকুরমশাইকে ফোনটা দাও।
না, তুই ওনাকে কিছু বলবি না উনি আমার কথায় এসেছেন,বেচারী ভয়ে ভয়ে আছেন।
মা..
তুই আসবি কবে?
খুব তাড়াতাড়ি আসবো, আরো কয়েকটা মিটিং আছে সেগুলো শেষ করেই আসবো, আর এইসব ফালতু চিন্তা ছাড়ো।
তোর কথাতে নাকি?
হ্যাঁ
তুই কোথায় এখন? আমাকেও নিয়ে চল তোর কাছে
না মা আর তো কটা দিন তারপরেই আমি ফিরে আসবো ততদিন তুমি কিন্তু সাবধানে থাকবে সব ওষুধ ঠিকঠাক খাবে, আচ্ছা মাসিকে ফোনটা দাও।
তুই ভালো আছিস তো, ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করছিস তো?
হ্যাঁ, আমি ঠিক আছি
তোর গলাটা যেন কেমন লাগছে?
ও কিছুনা, মা।
তুই তাড়াতাড়ি ফিরে আয়, তারপর তোর একটা বিয়ে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত।
মা... মাসিকে ফোনটা দাও।
হ্যাঁ বাবু বল।
মায়ের যেন কোনোরকম অযত্ন না হয়, ওষুধ যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে আনিয়ে নেবে, ঠিক আছে?
ঠিক আছে বাবু।
আর নিজেরও খেয়াল রেখো, ছাড়ছি।
ঠিক আছে।
"দাদা দাদা রঘু আর লাল্টুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওদের ফোনও সুইচড অফ" হাঁফাতে হাঁফাতে একজন এসে খবরটা রকিকে দিল, রকি তখন ফোনে মামা বীরেন ভট্টাচার্যের সাথে কথা বলছিল। গলার স্বর নামিয়ে বললো: খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানেটা কি?
দাদা ওরা তো ওখানে গিয়েছিল অনেকক্ষণ আগে তারপর থেকে ওদের আর খোঁজ নেই ফোন করছি বন্ধ আছে।
কথাটা যে রকির ফোনের ওপারে থাকা বীরেন বাবুর কানেও গেছে সেটা এবার বোঝা গেল ফোনের থেকে তার গলা ভেসে এল: কি হয়েছে রকি? কাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না?
রঘু আর লাল্টুকে।
ওই যে দুজন সবসময় তোর সাথে থাকে? কোথায় গিয়েছিল ওরা?
আসলে ওরা গিয়েছিল... ওই একটু মেয়ে নিয়ে ফূর্তি করতে।
ওরা বিশ্বস্ত?
এতদিন আমার সাথে আছে কখনো অবিশ্বাস করার মতো কিছু করেনি।
ওদের খুঁজে বের কর, যদি অন্য কারো কাছে মুখ খোলে তখন...
খুলবে না ওরা জানে মুখ খুললে ওদের কি দশা হবে।
তবুও ওদের খুঁজে বার কর।
ঠিক আছে মামা।
"কোনোদিন মেয়ে দেখোনি?" আচমকা প্রশ্নে হতচকিত হয়ে যায় অভয়, সামনে দাঁড়িয়ে যে কিশোরীটি রাগী মুখে প্রশ্নটা করেছে সে এই বছরেই কলেজে এসেছে, যবে থেকে ওকে দেখেছে অভয়ের খালি ওকে দেখতে ইচ্ছা করে মাঝে মাঝেই তাকিয়ে থাকে ওর দিকে তার বেশি কিছু নয় কয়েকবার চোখাচোখিও হয়েছে আর আজ এই প্রশ্ন।
"কি হলো কোনোদিন মেয়ে দেখোনি?" আবার প্রশ্ন করে মেয়েটি, কি উত্তর দেবে ভেবে পায় না অভয় তাই চুপ করে থাকে। কলেজে টিফিনের সময় ক্যান্টিনে বসে ছিল অভয় তখনই তার কাছে এসে প্রশ্নটা করে মেয়েটা, ক্যান্টিনে বেশি কেউ ছিল না যারা ছিল তারা ওই মেয়েটার সাথেই থাকে সবসময় এবার তারা এগিয়ে এলো এদের মধ্যে একটা মেয়ে বললো: অই হয়েছে রে তাথৈ? কোনো প্রবলেম?
তাথৈ: না,তোরা যা আমি আসছি।
মেয়েটি: ঠিক তো?
তাথৈ: হ্যাঁ বৃষ্টি ঠিক।
ওই গ্ৰুপে আরো একটা ছেলে ছিল নাম সাম্য সে বললো: কিছু হলে বলো তাথৈ।
তাথৈ: না, সাম্য তুই যা। সবাই চলে গেলে তাথৈ আবার অভয়কে জিজ্ঞেস করলো: কি হলো উত্তর দাও।
অভয়: সরি, আমি বুঝতে পারিনি এতে তোমার সমস্যা হয় আর তাকাবো না।
তাথৈ কিছুক্ষণ রাগী চোখে অভয়কে দেখে চলে যায় এরপর থেকে তাথৈ লক্ষ্য করে সত্যিই অভয় আর তার দিকে তাকায় না, এমনিতে অভয় তার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি, কোনোদিন নিজে থেকে এসে কথাও বলেনি শুধু দূর থেকে তাকিয়ে দেখতো কিন্তু এখন সেটাও বন্ধ। আরও কিছুদিন লক্ষ্য করলো তাথৈ সত্যিই ছেলেটার কথার দাম আছে, আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করলো তাথৈ, অভয় পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী, ক্লাসের শিক্ষকরাও তাকে পছন্দ করেন।
কিন্তু ক্লাসের যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনায় ভালো বা শিক্ষকদের প্রিয় তারা মূলত ক্লাসের সামনের দিকে বেঞ্চগুলোতে বসে ব্যতিক্রম অভয় তাকে কোনোদিন সামনের দিকে বসতে দেখা যায় না সে বসে পিছনের দিকের বেঞ্চগুলোতে আর তার সাথে যারা বসে তাদের ভালো ছাত্র যাকে বলে তাদের মধ্যে ধরা যায় না, ওই সোজা ভাষায় 'ব্যাকবেঞ্চার', কিন্তু অভয় ওদের সাথে কেন মেশে, ওদের সাথেই কেন ক্লাসে বসে সেটা শিক্ষকরা ভেবে পান না অনেক চেষ্টা করেন অভয়কে সরিয়ে আনতে, কখনো যদি ওদের পাশ থেকে উঠিয়ে অন্য জায়গায় বসান তো ক্লাস শেষে আবার অভয় ফিরে যায় নিজের বন্ধুদের কাছে, কিন্তু অভয়কে কিছু বললেই সে শুধু সুন্দরভাবে একটা হাসি দেয়।
শিক্ষকরা অভয়কে যেমন ভালোবাসেন তেমন মাঝে মাঝে রেগেও যান রাগের কারন আর কিছুই না ক্লাসের পরীক্ষার খাতায় লেখা উত্তর, সেটা অভয়সহ আরো চার থেকে পাঁচ জন ছেলের পুরো একই হয় কয়েকজন বানান ভুল করে এই যা, আর শিক্ষকেরা ভালো করেই জানেন যে উত্তরের মূল উৎস অভয়ের খাতা তার থেকেই বাকীদের উত্তর সরবরাহ হয় অভয়ের যেখানে ভুল হয় তাদেরও সেখানে ভুল হয়।
তাথৈ এবার সত্যিই কৌতূহলী হলো অভয়কে মতো মেধাবী ছেলে ব্যাকবেঞ্চার কেন? এব্যাপারে একদিন ক্লাসের একটা মেয়েকে জিজ্ঞেস করায় মেয়েটা বললো "ও ওইরকম, যাদের সাথে কেউ মেশেনা ও তাদের সাথেই থাকে মেশে, এমনকি পরীক্ষাতেও ওর জন্যই ওই ছেলেগুলো পাশ করে"।
একদিন পরীক্ষা হলে অঙ্ক পরীক্ষার দিন যথারীতি অভয় লিখে যাচ্ছে এবং তার বন্ধুদের সরবরাহ করে যাচ্ছে, একসময় অ্যাটেণ্ডেন্ট ধরে ফেললেন এবং অভয়কেই সরিয়ে দিলেন বসালেন তাথৈএর পাশে, তাথৈ লেখার সাথে মাঝে মাঝেই দেখছিল যে অভয় ওর বন্ধুদের সাহায্য করছে লিখতে, কিন্তু ওকে সরিয়ে দেওয়ায় ওর বন্ধুদের মুখ কালো হলেও অ্যাটেণ্ডেন্টের মুখে একটু হাসি দেখা গেল।
বললেন: এবার মন দিয়ে পরীক্ষা দে অভয়।
অভয় একবার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে আবার পরীক্ষায় মন দিল, একটু পরে পিছন থেকে আওয়াজ এল "অভয় অভয়"
অভয় বুঝলো তার পিছনে বসা মেয়েটা ডাকছে, ও একটু পিছনে সরে গেল। তাথৈএর কানেও গেল ডাকটা সে ঘাড়টা একটু ঘুড়িয়ে দেখলো সুস্মিতা ডাকছে অভয়কে, অবাক হলো তাথৈ সুস্মিতা কোনোদিন অভয়ের সাথে কথা বলেনি সে থাকে তাথৈদের সাথে মাঝে মাঝে তো সাম্যর সাথে মিলে অভয়কে ব্যঙ্গ করতে ছাড়ে না।
সুস্মিতা বললো: কটা অঙ্ক দেখা না অভয় নাহলে ফেল করে যাবো, প্লিজ দেখা।
অভয়: আমি চাপা দিইনি পাশে রাখছি দেখে দেখে লিখে নাও। দুজনেই ফিসফিসিয়ে কথা বলছে, বলাইবাহুল্য যে সুস্মিতার পরীক্ষা ভালোই হলো এবং সেটা অভয়ের জন্যই, কিন্তু পরীক্ষার পরে অভয় আবার ওর বন্ধুদের কাছে, সুস্মিতাকে সে চেনেই না।
তাথৈ এবার বাস্তবিকই আকৃষ্ট হলো অভয়ের প্রতি এখন সেই মাঝে মাঝে অভয়কে দেখে কিন্তু অভয় তাথৈএর দিকে আর তাকায় না এমনকি তাথৈকে এড়িয়ে চলে ওর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে।
একদিন ক্যান্টিনে তাথৈ, বৃষ্টি আর তাদের বন্ধুরা বসে গল্প করছে, তাথৈ কিছু বলছে না সে অভয়ের কথা চিন্তা করছে এমন সময় সাম্য বললো: কাল বিকেলে কি করছো তাথৈ? কাল তো রবিবার বিকেলে ফ্রী আছো তো?
তাথৈ: কেন?
সাম্য: কাল বিকেলে আমাদের পাড়ার মাঠে এসো একটা ফুটবল ম্যাচ আছে, ওই অভয়দের পাড়ার টীমের সাথে।
বৃষ্টি: তুই খেলতে পারিস? হারাতে পারবি?
সুস্মিতা: কি যে বলিস বৃষ্টি সাম্য খেলবে ফুটবল?
বৃষ্টি আর সুস্মিতা হাসছে দেখে সাম্য যেন রেগে গেল বললো: ঠিক আছে তোরাও আয় দেখবি, আসবে তো তাথৈ?
তাথৈ যেন অন্যমনস্ক ভাবটা কাটিয়ে বললো: কি কি বলছিস?
বৃষ্টি: সাম্য খেলা দেখতে আমণ্ত্রন করছে, ওদের পাড়ার টীমের সাথে অভয়দের পাড়ার টীমের খেলা।
তাথৈ: অভয় খেলবে?
সাম্য: এখনো জানিনা, খেলতে পারে, আসবে তো?
বৃষ্টি: ঠিক আছে আমরা আসবো।
পরদিন বিকেলে ফুটবল ম্যাচ দেখতে তাথৈ, বৃষ্টি, সুস্মিতা এবং আরো কয়েকজন মেয়ে খেলা দেখতে এসেছিল, মাঠে অনেক দর্শক হয়েছে এবং তাদের মধ্যে আরো অনেক মেয়েও আছে যাদের কেউ সাম্যদের জন্য হাততালি দিচ্ছে তো কেউ অভয়দের জন্য, অভয় খেলছে। দুটো দলই ভালো খেলছে বৃষ্টি, সুস্মিতা সহ আরো অনেকেই সাম্যর জন্য চিয়ার করছে শুধু তাথৈ বাদে সে অভয়কে একদৃষ্টে লক্ষ্য করছে।
খেলায় কিন্তু সাম্যর দল হেরে গেল অভয়ের দল জিতলো বটে কিন্তু সাম্যর একটা ট্যাকেলে পায়ে চোট পেল অভয়, একটু খেলা শেষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে লাগলো অভয়কে ওভাবে দেখে তাথৈএর যেন কি একটা হয়ে গেল কিন্তু কেন হচ্ছে বুঝতে পারছিল না তার ইচ্ছা করছিল অভয়ের কাছে যেতে অথচ অভয়ের কাছে যেতেও পারছে না কারন সে তখন তার দলের ছেলেদের সাথে আছে, এদিকে বৃষ্টি ক্রমাগত সাম্যকে টিটকারী দিয়ে যাচ্ছে সাম্য মাথা নীচু করে আছে, যদিও তাথৈএর ভীষণ রাগ হচ্ছিল অভয়কে ওভাবে মারার জন্য।
এমন সময় পাশ থেকে একজন অচেনা মেয়ে কাকে যেন বললো: আরিব্বাস ছেলেটাকে দেখ কি হ্যাণ্ডসাম রে।
তাথৈ ওদের দৃষ্টিকে অনুসরণ করে দেখলো ওরা অভয়কে দেখে কথাটা বলছে, সে এখন জার্সি খুলে ফেলেছে খালি গা বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পরছে, এবার একজন জলের বোতল এগিয়ে দিল অভয় সেটা উঁচু করে জল খেতে লাগলো কিছুটা জল মুখ থেকে বেরিয়ে গলা বেয়ে পরতে লাগলো, তাথৈ লক্ষ্য করলো শুধু সেই মেয়েটা না আরও কয়েকটা মেয়ে অভয়ের দিকে একদৃষ্টিতে হা করে তাকিয়ে আছে এমনকি সুস্মিতাও..
একটু পরে অভয় সাম্যর দিকে এগিয়ে এল হ্যাণ্ডশেকের জন্য হাতটা বাড়িয়ে বললো: তুইও ভালো খেলেছিস সাম্য, খেলায় হারজিত আছেই সো মাইণ্ড করিস না। সাম্য কিন্তু হাত মেলালো না রাগী চোখে অভয়কে যেন মাপতে লাগলো। অভয় এখনো খালি গায়ে, তাথৈ দেখলো আশেপাশের মেয়েগুলো তখনও অভয়ের দিকে তাকিয়ে আছে ,তাথৈএর মাথায় কেন যেন রাগ উঠে গেল সেটা সে নিজেও বুঝলো না অভয়কে বললো: তোমার মতো অসভ্য ছোটোলোকের সিমপ্যাথির দরকার নেই সাম্যর, ও নীচু মনের ছেলে নয় যে এরকম একটা ম্যাচে হেরে মনখারাপ করে বসে থাকবে।
এই অতর্কিত আক্রমণ এবং অপমানে অভয় হতভম্ব হয়ে গেল সে বললো: আমি তো জাস্ট...
তাথৈ: দরকার নেই বললাম তো, এখন এখান থেকে বিদায় হও।
অভয় আর কিছু না বলে মাথা নীচু করে যেতে যেতে শুনলো পিছনে তাথৈ বলছে: নির্লজ্জ ছোটোলোক ছেলে কোথাকার?
পরদিন কলেজে যথারীতি তাথৈ ক্লাসের প্রথমদিকে ওর গ্ৰুপের সাথে বসেছে, একটু পরেই অভয় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসে পিছনের দিকে চলে গেল বোঝাই যাচ্ছে ওর পায়ের ব্যাথাটা এখনো কমেনি। ছুটির পরে কিন্তু তাথৈ অভয়কে খুঁজতে লাগলো, অভয়ের বন্ধুদের জিজ্ঞেস করে জানলো যে ওকে কলেজের মাঠের দিকে যেতে দেখা গেছে তাথৈ ওইদিকে দ্রুত পায়ে চলে গেল।
মাঠে গিয়ে একটু এদিক ওদিক খুঁজতেই অভয়কে দেখতে পেল তাথৈ, অভয় তখন কাছেই একটা বড়ো গাছের ছায়ায় বসে আঘাত প্রাপ্ত পা থেকে বুট মোজা খুলে তাতে বরফ ঘষছে, ওর ব্যথাটা যে এখনো বেশ ভালো মতোই আছে সেটা মাঝে মাঝে ওর চোখ-মুখ কুঁচকে যাওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
তাথৈ জানতো কলেজের পাশের এক দোকানে ছোটো পাউচে করে ঠান্ডা জল কিনতে পাওয়া যায় সে তাড়াতাড়ি ওই দোকানের দিকে গেল।
পায়ের ব্যাথাটা যে এত সহজে কমবে না বুঝতে পারছিল অভয়, সাম্য যে ওকে কাল ইচ্ছা করে মেরেছে সেটাও বুঝেছিল কিন্তু সবথেকে যেটা খারাপ লাগছিল সেটা তাথৈএর ব্যবহার কিন্তু কেন খারাপ লাগছিল সেটা বুঝতে পারছিল না। আজ কলেজে ঢোকার আগে পাশের দোকানে বরফের কথা বলে রেখেছিল ছুটির পর ওখান থেকেই বরফ নিয়ে গাছের ছায়ায় বসে পায়ে ঘষছিল আর তাথৈএর খারাপ ব্যবহারের কথা ভাবতে লাগলো কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পরেছিল এমন সময় পায়ে একটা নতুন স্পর্শ পেয়ে চমকে তাকিয়ে দেখে তাথৈ ওর সামনে বসে ওর পায়ে বরফ ঘষছে।
তাড়াতাড়ি বলে উঠলো: কি করছো পা ছাড়ো।
তাথৈ উত্তর না দিয়ে অভয়ের পায়ে বরফ ঘষতে লাগলো অভয় এবার একটু রাগের সঙ্গেই বললো: দেখো আমার আর অপমানিত হবার শখ নেই, প্লিজ তুমি এখান থেকে যাও... ছাড়ো আমিই চলে যাচ্ছি। বলে উঠতে যেতেই তাথৈ ধমকে উঠলো: চুপচাপ বসো এখানে, ওঠার চেষ্টা করলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।
অভয়: পা থেকে হাত সরাও। অভয় তাথৈএর হাত সরাতে গেল, তাতে তাথৈ যেন আরো রেগে গেল আবার ধমক দিল: চুপ করে বসতে পারছো না?
তারপর আবার নিজে নিজেই গজরাতে লাগলো: অসভ্য অভদ্র ছেলে..
এবার অভয়ও রেগে গেল বললো; তুমি ছাড়ো, যা করেছো তারজন্য ধন্যবাদ। বলে আবার উঠতে গেল অমনি তাথৈ বললো: প্লিজ বসো। কিন্তু এবারে তাথৈএর গলায় ধমক নেই উল্টে তার গলা কাঁপছে অভয় অবাক হয়ে দেখলো তাথৈ হাতের উল্টোপিঠে নিজের চোখদুটো মুছে নিল, তাথৈ কাঁদছে..
অভয় বললো: বাঃ চোট লেগেছে আমার, আবার আমাকেই বারবার অপমান করছো সেটাও মেনে নিলাম কিন্তু তুমি কাঁদছো কেন?? কেউ দেখলে ভাববে আমি তোমাকে কাঁদিয়েছি। তাথৈ আবার নিজের চোখ মুছলো, অভয় তাথৈএর হাত থেকে বরফ নিতে গেল কিন্তু তাথৈ দিল না নিজেই চেপে ধরে থাকলো, অভয় বললো: তুমি কাঁদছো কেন সেটা তো বলবে?
তাথৈ: তোমার খুব ব্যথা করছে না?
অভয় একটু অবাক হলো এই মেয়েটার হয়েছে টা কি? কাল এত অপমান করলো আজ আবার নিজে এসে বরফ লাগাচ্ছে, একটু পরে তাথৈ বললো: তুমি বসো আমি আরেকটু বরফ নিয়ে আসি। বলে তাথৈ উঠতে যেতেই অভয় বাধা দিল "এই না তার দরকার নেই আমি ক্রেপ বেধে নিচ্ছি, কিন্তু তুমি কাঁদছিলে কেন?"
তাথৈ আবার বসে বললো: দাও আমি বেধে দিচ্ছি। বলে অভয়ের হাত থেকে ক্রেপটা নিয়ে নিল, অভয় বললো: সত্যি বলোতো কি হয়েছে তোমার? কাল আমাকে কত অপমান করলে আর আজ আমার চোটে বরফ লাগালে এখন ক্রেপ বাঁধছো, ব্যাপারটা কি?
তাথৈ এবার আবার ঝাঁঝিয়ে উঠলো: বেশ করেছি, পায়ে চোট লেগেছে হাঁটতে পারছে না সেদিকে হুঁশ নেই উনি জার্সি খুলে বডি দেখাচ্ছেন.. আর ওদেরও লজ্জা নেই একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
অভয়: আমি জার্সি খুলেছি বলে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন? আমার গরম লাগছিল তাই খুলেছি আর কারা দেখছিল?
দেখোনি? ওই মেয়েগুলো।
তাতে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন?
না দেখবে না।
অভয় কিছুটা বুঝতে পারলো মনে মনে হাসলো তারপর বললো: কেন? দেখবে না কেন?
অভয়ের পায়ে ক্রেপ বাঁধা হয়ে গিয়েছিল, তাথৈ এবার অভয়ের পাশে ওর গা ঘেঁষে বসে বললো: না দেখবে না আমার ভালো লাগে না।
অভয় হেসে উঠলো সেটা দেখে তাথৈ একটু রেগে গেল বললো: তুমি হাসছো কেন?
কিছুনা, এমনি।
এইভাবেই তাথৈ আর অভয়ের বন্ধুত্ব হলো, এরপর দিন তাথৈ ক্লাসে সামনের দিকে না বসে পিছনে চলে এল, যে বেঞ্চে অভয় বসেছিল সেখানে, অভয়ের পাশে একটা ছেলে বসে ছিল তাকে বললো: এই তুই অন্য জায়গায় বস, আমি এখানে বসবো।
শুনে অভয় ও তার বন্ধুরা অবাক হলো, তাথৈএর বন্ধুরাও অবাক হলো সাম্য তো এসে বললো: তুমি এখানে বসবে কেন? আমাদের সাথে বসবে চলো।
তাথৈ বললো "না, আমি এখানে বসবো" তারপর আবার অভয়ের পাশে বসা ছেলেটাকে বললো: কি হলো? বললাম যে অন্য জায়গায় বসতে। ছেলেটা একবার অভয়ের দিকে তাকালো অভয় ইশারা করতে সে উঠে পিছনের বেঞ্চে গেল এবং তাথৈ সেখানে বসলো, সাম্য অভয়ের দিকে অগ্নিদৃষ্টি দিয়ে চলে গেল।
অভয় বললো: ও কিন্তু রেগে গেল।
রাগুক...তোমার পায়ের ব্যথা কমেছে?
হ্যাঁ, অনেকটা কম।
এরপর তাথৈ আর অভয়ের ঘনিষ্ঠতা ক্লাসের প্রায় সবাই লক্ষ্য করলো, সে এখন অভয়ের পাশে ছাড়া বসে না, দিনে দিনে দুজনেই বুঝলো তাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা শুধু বন্ধুত্ব না, সেটা তার থেকে বেশী কিছু, দুজনে পরের ক্লাসে উঠলো, কলেজ ছুটির পরে দুজনে একসাথে ঘোরে ,বেশিরভাগ সময় পাড়ার শিবমন্দিরের পিছনের বাগানে একটা বটগাছের তলায় বসে গল্প করে। তাথৈ এর অভয়ের আরেকটা স্বভাব ভালো লাগে সেটা হলো অভয় কিন্তু কখনো তাদের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে তাথৈকে স্পর্শ করে না বা এমন কিছু দাবী করে না যেটাতে তাথৈ অস্বস্তি বোধ করবে এমনকি কখনো নিজে থেকে তাথৈএর হাতও ধরে না একটা শালীনতার দূরত্ব বজায় রাখে, তাথৈই বেশিরভাগ সময় অভয়ের পাশে হাঁটতে হাঁটতে ওর হাতটা জড়িয়ে ধরে। একদিন অভয় তাথৈএর সাথে ঘুরছিল আরেকটু হলেই মায়ের মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছিল, তাড়াতাড়ি পাশে আড়ালে তাথৈকে নিয়ে লুকিয়ে পরে, তাথৈ জিজ্ঞেস করে: কি হলো?
অভয়: আমার মা
তাথৈ এবার দুষ্টুমি শুরু করলো "আমি আলাপ করবো"বলে অমৃতা দেবীর দিকে যেতেই অভয় পথ আটকে দাঁড়ালো বললো "দেখা করবে মানে?"
তাথৈ: কথা আছে
কি কথা?
আছে
কোনো কথা নেই, এখানে লুকিয়ে থাকো
না আমি দেখা করবো আন্টির সাথে, কথা আছে
আবার.. কি কথা?
আমাদের সম্পর্কের কথা বলবো, ওনাকে জানিয়ে রাখতে হবে তো নাকি?
কি জানাবে?
তোমার জন্য যাতে মেয়ে না দেখে
মানেটা কি? আমাকে আজ বাড়ি থেকে তাড়ানোর প্ল্যান করছো নাকি? প্লিজ এরকম কোরো না
তাথৈ হো হো করে হাসতে লাগলো, অমৃতা দেবী আশেপাশে নেই এটা নিশ্চিত হবার পর আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে দুজন তাথৈএর হাসি তখনও থামেনি দেখে অভয় গম্ভীরমুখে বলে: এবার কিন্তু আমিও আন্টির সামনে গিয়ে বলবো...
তাথৈ: আমার মা সব জানে
কি? কিভাবে?
আমাদের একসাথে দেখে ফেলেছিল, বাড়ি যেতেই চেপে ধরেন।
কি বললেন?
সব শুনে বললেন এখন এসবের সময় নয় মন দিয়ে পড়াশোনা করো, আমি তোমার কথা বললাম যে তুমিও সবসময় এই কথাই বলো।
তোমার সেটাই করা উচিত।
মনে আছে তো দুদিন পর শিবরাত্রি?
কি? শিবরাত্রি তো কি হয়েছে?
আমি উপোস রাখবো তোমার জন্য।
কেন কি দরকার?
দরকার আছে তোমাকে কিন্তু ওইদিন দেখা করতে হবে।
কি? কেন?
ওইদিন সন্ধ্যায় মন্দিরের পিছনের বাগানে আসবে, আমি তোমার হাতে জল খেয়ে উপোস ভাঙবো।
তাথৈ ওসব সিনেমায় ভালো লাগে, তোমার উপোস রাখার দরকার নেই।
ঠিক আছে তোমাকে আসতে হবে না। বলে অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে থাকে।
তাথৈ শোনো তুমি এর আগে উপোস করেছো? করোনি তো তাহলে?
তাথৈ কোনো কথা বলছে না দেখে শেষে বলে: ঠিক আছে আমি আসবো।
তবুও তাথৈ কথা বলছে না দেখে বললো: আবার কি হলো? বললাম তো আমি আসবো।
তাথৈ এবার মুখ ফেরায় বলে: সত্যি বলছো?
তোমাকে মিথ্যা বলেছি কখনো?
শিবরাত্রির সন্ধ্যায় পূজোর পরে অভয়কে মন্দিরের পিছনে আসতে ম্যাসেজ করে নিজে যায় কিন্তু অন্ধকারে বরাবরই ভয় তাথৈএর, মন্দিরের সামনেটা আলোয় ঝলমল করছে কিন্তু পিছনে বাগানে আলো নেই তাই বেশ অন্ধকার, তাথৈ ভয় পেলেও চলে যায় না হটাৎ পিছনে পায়ের শব্দ শুনে চমকে ঘুরে দাঁড়ায়, অভয় এসেছে সে এসে এই প্রথম নিজে থেকে তাথৈএর একটা হাত ধরে বলে "ভয় নেই আমি আছি তো"।
একটা জিনিস তাথৈর সহ্য হয় না সেটা হলো অন্য কোনো মেয়ের অভয়ের ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করা যদি কেউ করে তাহলে প্রচণ্ড রেগে যায় আর ঝালটা মেটায় অভয়ের উপর। একদিন ক্লাসে তাথৈ আসার আগে অভয়ের পাশে এসে বসেছিল সুস্মিতা তাথৈ এসে ওকে বারবার সরতে বলার পরেও সে সরলো না অভয়ও কিছু বললো না দেখে সে পিছনের বেঞ্চে ঠিক অভয়ের পিছনে বসলো, এবং পুরো দিনটা পিছন থেকে অভয়কে খোঁচা দল আর চিমটি কাটতে থাকে, সুস্মিতা যতবার অভয়ের গা ঘেঁষে আসে ততবার অভয় হয় খোঁচা নয়তো চিমটি অনুভব করে, একবার তো সুস্মিতা কি একটা কথায় হাসতে হাসতে অভয়ের হাত ধরতেই একটা জোড়ে চিমটি খেল অভয়।
ছুটির পরে তাথৈ রেগে কোনো কথা না বলে হনহন করে বেরিয়ে গেল, অভয়ও কোনোমতে ব্যাগ গুছিয়ে ছুট লাগালো। "তাথৈ এই তাথৈ শোনো" অভয় ডাকতে লাগলো কিন্তু তাথৈ কোনো কথা না বলে জোরে জোরে হাঁটতে লাগলো, অভয় এবার তাথৈএর কাছে গিয়ে বললো: কি হয়েছে বলবে তো? তুমি কথা বলছো না কেন?
তাথৈ ঝংকার দিয়ে উঠলো: কেন যার সাথে বসেছিলে তার কাছে যাও, আমার কাছে কেন?
অভয়: আমি কোথায় বসেছিলাম? ওই তো এসে বসলো।
তাথৈ তেমনি তেজের সঙ্গে বললো: ও এসে বসলো আর তুমি বসতে দিলে?
কি করবো বলো? বেঞ্চটা তো আমার একার নয়..
তুমি ওকে ওঠালে না কেন?
ও তোমার কথা শুনলো? তোমারই তো বন্ধু।
তুমি উঠে এলে না কেন? তুমি জানোনা তোমার পাশে আমি বসি?
এবার অভয় ফাঁপড়ে পরলো বললো: আচ্ছা নেক্সট টাইম যদি বসে তাহলে উঠে আসবো।
ঠিক তো?
ঠিক।
এবার তাথৈ অভয়ের একটা হাত জড়িয়ে ধরলো অভয় একটা হাঁফ ছেড়ে বললো: যাক রাগ কমলো।
তাথৈ: তুমি জানোনা তোমার পাশে অন্য মেয়েকে আমার সহ্য হয় না, তুমি শুধু আমার, শুধু আমার।
নিজের রুমের ব্যালকনিতে একটা আরামকেদারায় বসে অভয়ের সাথে পরিচয় থেকে ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তের কথা ভাবছিল তাথৈ হাতে অভয়ের সেই ছবিটা যেটা মিস্টার গুপ্তকে দিয়ে জোগাড় করিয়েছিল, এবার অভয়ের ছবিটার দিকে তাকিয়ে যেন অভয়কেই বলছে এমনভাবে বলতে থাকে "কাল আমার জন্মদিন অভয়, এরকমই এক জন্মদিনের ঠিক আগের দিন তোমার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল তারপর আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি, তোমার ফিরে আসার অপেক্ষা করে যাচ্ছি, জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো সেদিন বাইরে যাওয়ার আগে তোমাকে বলে যেতে পারিনি, কিন্তু তার কারণ ছিল সেটা তুমি ফিরে এলেই বলবো কিন্তু এবার তোমাকে ফিরতেই হবে আমার কাছে, আমি আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না। আমার উপর তোমার রাগ অভিমান সব আমি মেনে নেবো তোমার অধিকার আছে সেটার কিন্তু আমাকে ছেড়ে যাওয়ার অধিকার নেই। আজ আমি তোমাকে বলছি এই জন্মদিনে যদি তুমি না আসো বা তোমার বেঁচে থাকার কোনো চিহ্ন না পাই তবে বুঝবো তুমি আর বেঁচে নেই আর তাহলে আমারও বেঁচে থাকার কোনো মানে থাকবে না তাই এই জন্মদিনে যদি তোমাকে বা তোমার উপস্থিতির কোনো প্রমাণ না পাই তাহলে এই জন্মদিনই আমার মৃত্যুদিন হবে,আমি নিজেকে শেষ করে দেবো... আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে তোমাকে ফিরতেই হবে...প্লিজ অভয় এবার ফিরে এসো, ফিরে এসো আমার কাছে"। তারপর যেন অভয়কেই চুম্বন দিচ্ছে এমনভাবে ছবিটা নিজের ঠোঁটে ছোঁয়ালো তাথৈ।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
The following 21 users Like Monen2000's post:21 users Like Monen2000's post
• Anwarr khan, Ari rox, behka, Biddut Roy, bismal, Bondhon Dhali, Boti babu, ddey333, DEEP DEBNATH, Dushtuchele567, free123skk, kingaru06, Lajuklata, ojjnath, Ptol456, Qkykx, S.K.P, Somnaath, sudipto-ray, Uzzalass, মাগিখোর
Posts: 1,271
Threads: 3
Likes Received: 1,446 in 962 posts
Likes Given: 3,891
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
যত দিন যাচ্ছে আর গল্প টা এগিয়ে যাচ্ছে ততই ভালো হচ্ছে এভাবেই চালিয়ে যাও।।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 1,409
Threads: 2
Likes Received: 1,435 in 991 posts
Likes Given: 1,761
Joined: Mar 2022
Reputation:
82
খুব সুন্দরভাবে এগিয়ে চলেছে গল্পটি, সঙ্গে আছি এবং থাকবো।
Posts: 925
Threads: 3
Likes Received: 1,961 in 419 posts
Likes Given: 966
Joined: Sep 2021
Reputation:
636
ধন্যবাদ
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
D:) D:)
•
|