Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
18-08-2022, 11:53 PM
(This post was last modified: 08-12-2022, 11:39 PM by Monen2000. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ভূমিকা:
একটা রোমান্টিক থ্রিলার লেখার চেষ্টা করেছি, যদিও থ্রিলার হয়েছে কি না সেটা পাঠকরা বলবে, এর আগে এই সাইটের এক্সট্রিম হার্ডকোর ফোরামে বেশ কয়েকটা ছোটো এবং বড়ো গল্প লিখেছি সেক্স নিয়ে চটি গল্প, শেষ যে গল্পটা লিখেছিলাম "বন্ধুর মায়ের পেটে আমার বাচ্চা" সেটা ইনসেস্ট সেক্স দিয়ে শুরু করলেও পরে অন্য দিকে নিয়ে গিয়েছিলাম, এবং এই গল্পটাই আমার সবকটা লেখার মধ্যে সবথেকে বেশি পাঠকদের কাছে পছন্দ হয়েছিল, এবং তখনই আমার এক বন্ধু পাঠক আমাকে থ্রিলার লেখার জন্য উৎসাহ দেন, তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এর আগে কখনো থ্রিলার লিখিনি, তাই কিছু ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে আশা করছি পাঠকরা নিজগুণে ক্ষমা করে দেবেন।
আরেকটা কথা এই সাইটে প্রায় সবাই সেক্স সম্পর্কিত চটি গল্প পড়তে আসে সেক্স যে আমার এই গল্পে একেবারেই নেই সেটা বলবো না তবে সেটা গল্পের প্রয়োজনে আছে, গল্পের জন্য সেক্স, সেক্সের জন্য গল্প না।
খুব শীঘ্রই প্রথম পর্ব পোস্ট করবো, খারাপ ভালো যাই লাগুক আশা করছি পাঠকরা কমেন্ট করে জানাবেন।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 1,158
Threads: 0
Likes Received: 1,384 in 928 posts
Likes Given: 3,574
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
পাশে আছি তাহলে তাড়াতাড়ি শুরু হোক অপেক্ষায় থাকবো এবং আগামীর জন্য শুভকামনা রইল। ।।।।।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 12:12 AM)Boti babu Wrote: পাশে আছি তাহলে তাড়াতাড়ি শুরু হোক অপেক্ষায় থাকবো এবং আগামীর জন্য শুভকামনা রইল। ।।।।।
ধন্যবাদ পাশে থেকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 251
Threads: 0
Likes Received: 197 in 172 posts
Likes Given: 340
Joined: May 2022
Reputation:
11
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 05:45 AM)Jibon Ahmed Wrote: Waiting for update
খুব তাড়াতাড়ি শুরু করবো
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
•
Posts: 1,616
Threads: 3
Likes Received: 1,004 in 873 posts
Likes Given: 1,289
Joined: May 2022
Reputation:
29
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
ট্রেলার
একজন বিজনেস টাইক্যুন যাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে একটা স্বপ্ন নাকি দুঃস্বপ্ন?
একজন যুবতী যে তার ছোটোবেলার ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেলেছে, হারিয়ে ফেলেছে কিন্তু ভোলেনি আজও খুঁজে বেড়ায় তার প্রেমিককে যে তাকে আশ্বাস দিয়েছিল "আমি আছি তো"
একজন দোর্দণ্ডপ্রতাপ ব্যক্তি, পুরো শহরে যার আধিপত্য, পুরো শহরের লোক যার নামেই তটস্থ, যার বিরুদ্ধে কথা বললে আর বেঁচে থাকা যায় না।
একটা কালো ছায়া মূর্তি যে অতীতের অন্ধকার থেকে উঠে এসেছে অতীতের সব হিসেব বুঝে নেওয়ার জন্য।
শীঘ্রই আসছে "প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ" এর প্রথম পর্ব
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 759
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
স্বাগতম নতুন গল্প শুরু করার জন্য।
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 11:00 AM)Biddut Roy Wrote: স্বাগতম নতুন গল্প শুরু করার জন্য।
ধন্যবাদ
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
•
Posts: 1
Threads: 0
Likes Received: 1 in 1 posts
Likes Given: 0
Joined: Jul 2022
Reputation:
0
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 11:58 AM)মা বোনের প্রেমিক Wrote: আগে পর্ব দেন, পরে বুঝব
শীঘ্রই দেবো
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
•
Posts: 1,158
Threads: 0
Likes Received: 1,384 in 928 posts
Likes Given: 3,574
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
ট্রেলারেই পুরা আগুন লেগে গেছে ।।।।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 02:02 PM)Boti babu Wrote: ট্রেলারেই পুরা আগুন লেগে গেছে ।।।।
গল্পটাও সবার পছন্দ হবে এই আশাই করছি
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 548
Threads: 1
Likes Received: 627 in 383 posts
Likes Given: 1,634
Joined: Sep 2019
Reputation:
34
তাড়াতাড়ি শুরু করুন। দেখি গল্পটা কেমন হয়।
•
Posts: 1,158
Threads: 0
Likes Received: 1,384 in 928 posts
Likes Given: 3,574
Joined: Apr 2022
Reputation:
146
এতো লেখা শুরুই হয় নি আর রেটিং কমানো পাব্লিক এসে গেছে। যাই হোক লেখক কে বলছি হয়তো আপনি এই রেটিং এর দিকটা ইগনোর করে গল্প পোস্ট করবেন নয়তো যারা যারা রেটিং খারাপ দেয় তাদের ব্লক করে দেন। এসব মানুষরা নিজেরাতো লেখতে পারে না কিন্তু অন্যের লেখার রেটিং খারাপ করবে। আর এমন বাজে লোক এ ফোরামে ভরে আছে।কোনো কিছুতেই আপনি আপনার লেখা বন্ধ না করে পোস্ট করে যাবেন সে আসাই রইলাম।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
(19-08-2022, 06:38 PM)Boti babu Wrote: এতো লেখা শুরুই হয় নি আর রেটিং কমানো পাব্লিক এসে গেছে। যাই হোক লেখক কে বলছি হয়তো আপনি এই রেটিং এর দিকটা ইগনোর করে গল্প পোস্ট করবেন নয়তো যারা যারা রেটিং খারাপ দেয় তাদের ব্লক করে দেন। এসব মানুষরা নিজেরাতো লেখতে পারে না কিন্তু অন্যের লেখার রেটিং খারাপ করবে। আর এমন বাজে লোক এ ফোরামে ভরে আছে।কোনো কিছুতেই আপনি আপনার লেখা বন্ধ না করে পোস্ট করে যাবেন সে আসাই রইলাম।
ধন্যবাদ, রেটিং যেমন কমানোর লোক আছে তেমন আপনার মতো কমেন্ট করে পাশে থেকে উৎসাহ দেওয়ার লোকও তো আছে।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
19-08-2022, 11:44 PM
(This post was last modified: 25-08-2022, 04:44 PM by Monen2000. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
প্রথম পর্ব
ঘরে পুরো অন্ধকার কিছু দেখার উপায় নেই শুধু একজন নারী ও একজন পুরুষের কথাবার্তার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে
নারী: কি যে বলো, কিভাবে করবো উনি আমার দাদা
পুরুষ: তোমার নিজের দাদা নাকি? কোথায় কোন দূর সম্পর্কের দাদা
নারী: তাহলেও, দাদা তো
পুরুষ: তো সারাজীবন এইভাবেই থাকবে নাকি? আর তাছাড়া এতগুলো টাকাও হাতছাড়া হয়ে যাবে না করলে আমাদের ছেলের কথাটাও তো ভাবতে হবে ওরো তো একটা ভবিষ্যত আছে, না না মণি এই কাজটা করতেই হবে।
নারী: কত টাকা?
পুরুষ: অনেক, সেইসঙ্গে একটা ফ্ল্যাটও পাওয়া যাবে।
নারী: সত্যি বলছো?
পুরুষ: একদম সত্যি, দাদা তো বললেন, তুমি খালি জিনিসটা খাবারের সাথে মিশিয়ে ওদের তিনজনকে খাইয়ে দেবে বাকিটা দাদা বুঝে নেবে।
নারী: কোনো ঝামেলা হবে না তো?
পুরুষ: কিচ্ছু হবে না।
পুরুষের একটু হাসির আওয়াজ এলো সাথে নারীর আওয়াজ: উহ কি করছো ছাড়ো ছেলে জেগে যাবে
পুরুষ:এখন তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছা করছে না, চলো আজ একটু করি। একটু পরে নারীটার আঃ করে একটু আওয়াজের সাথে একটু হাসির আওয়াজ এলো তারপর পুরুষ নারী দুজনের ঘনঘন কিন্তু মৃদু শিৎকারের আওয়াজ আসতে লাগলো তারপর আবার চুপচাপ।
**----------**
শহরের এক বিলাসবহুল বাড়ি জুড়ে এখন চরম ব্যাস্ততা দেখা যাচ্ছে, চাকরদের দম ফেলবার ফুরসত নেই, দরজা সাজানো, ঘর ডেকোরেট করা, কোথায় কোথায় নোংরা জমে আছে সেটা চেক করা এবং পরিষ্কার করা ইত্যাদি আর সবকিছুর উপর কড়া দৃষ্টি রেখেছেন এক ষাটোর্ধ্ব মহিলা।
ইনি বৈশালী দেবী, আর এই বিলাসবহুল বাড়িটি শহরর দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজনৈতিক নেতা বীরেন ভট্টাচার্যের, যিনি সম্পর্কে বৈশালী দেবীর ভাই, জামাইবাবু মারা যাওয়ার পরে বীরেন ভট্টাচার্য দিদি ও তার একমাত্র ভাগ্নেকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন, সেই থেকে বৈশালী দেবী ও তার ছেলে এখানেই থাকেন। বীরেন ভট্টাচার্য শুধু যে একজন রাজনৈতিক নেতা তাই নয় পুরো শহর জুড়ে তার আধিপত্য, প্রথম জীবনে একজন প্রোমোটার ছিলেন বীরেন বাবু তারপর ধীরে ধীরে উন্নতি করে আজকে এই ক্ষমতা অর্জন করেছেন, নিজের ব্যাবসা যেমন বাড়িয়েছেন তেমনি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ভোটে জিতে নেতা হয়েছেন অবশ্য লোকমুখে এও শোনা যায় যে এই ক্ষমতা অর্জন টা সৎ উপায়ে করেননি বীরেন বাবু এর জন্য নাকি বহু লোককে খুন করেছেন কিন্তু কখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি তাই পুলিশ তার গায়ে হাত দিতে পারেনি আর এখন তো পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তার হাতের মুঠোয়, এখন তার লক্ষ্য নিজের শহর ছেড়ে অন্য শহরে তার ব্যাবসা আর ক্ষমতার প্রসার করা, বিশেষত বাণিজ্যনগরীতে পা জমানো কিন্তু সেখানে অন্য ক্ষমতাধর ব্যাবসায়ীদের ভিড় তাই তিনি ঠিক পাত্তা পাচ্ছেন না তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই নিজের শহরেই আরও বেশি করে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন,আর তার সবকাজে তার সাথে থাকে তার বিশ্বস্ত অনুগত ভাই ধীরেন ভট্টাচার্য, দাদার মতো এনাকেও শহরের লোক কম ভয় পায় না, দাদার হুকুমে করতে পারেন না এমন কাজ নেই দাদা অন্ত প্রাণ ধীরেন বাবুর।
এই ভট্টাচার্য বাড়িতে এই যে এত আয়োজন তার কারণ আজ বাড়ির সবার প্রিয় ছোটো মেয়ে তাথৈ তার পড়াশোনা শেষ করে বাড়ি ফিরছে, এই তাথৈ ধীরেন বাবুর একমাত্র মেয়ে আর বীরেন বাবুরও এক মেয়ে আছে নাম বৃষ্টি, কিছু বছর আগে দুই বোনকেই পড়াশোনা করার জন্য অন্য শহরে নিজের এক আত্মীয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন বীরেন বাবু, বৃষ্টি কিছুদিন আগে ফিরে এসেছে আর আজ আসছে তাথৈ।
প্লেনে ফার্স্ট ক্লাসে জানালার ধারের একটি সিটে বসে বাইরের দিকে দেখছে এক যুবতী, যুবতীটি ফর্সা গায়ে একটা সাদা শার্ট, আর নীল জিন্স, চোখে মাথায় চুলটা হাল্কা লাল রঙ করা পনিটেল করে বাধা, মুখে সবসময় একটা গাম্ভীর্য, অনেকদিন পরে নিজের শহরে নিজের বাড়িতে ফিরছে সে তবুও তার মুখে হাসি নেই।
বিমানবন্দরে প্লেন ল্যাণ্ড করলে পরে যুবতীটি চেকিংএর ফর্মালিটি শেষ করে বাইরে বেরিয়ে এল যেখানে তার জন্য নীল গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির ড্রাইভার তাকে দেখে বললো: ওয়েলকাম ম্যাডাম
যুবতী: থ্যাংক ইউ
ড্রাইভার লাগেজগুলো গাড়ির পিছনে ঢুকিয়ে দিল আর যুবতীটি গাড়ির ব্যাকসিটে উঠলো, তারপর ড্রাইভার সামনে স্টিয়ারিং এ বসে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করলো "বাড়ি তো ম্যাডাম?"
যুবতীটি: হুম।
ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করলো।
একটু ভুল হলেই চাকরদের কড়া বকুনি দিচ্ছেন বৈশালী দেবী, মাঝে মাঝে কিচেনে গিয়ে দেখছেন রান্না ঠিক ঠাক হচ্ছে কি না, আজ যে তার মেয়ে আসছে, কত বছর পরে ,মেয়ের প্লেন ল্যাণ্ড করে গেছে অনেকক্ষণ আগেই বাড়ির ড্রাইভার ফোন করে জানিয়েছিল, যখন তখন চলে আসবে, হটাৎ হাক পাড়লেন "বৌমা"
এক যুবতী তার সামনে এসে নতমস্তকে দাঁড়ালো, বৈশালী দেবী বললেন: সব ব্যবস্থা হয়েছে? ও কিন্তু এক্ষুনি চলে আসবে, নাকি নিজের কোনো পার্টিতে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত?
যুবতী: হয়েছে মা, আপনি একটু দেখে নিন। ইনি বৈশালী দেবীর ছেলে রকির বউ বিদিশা, ব্যবস্থা দেখে বৈশালী দেবী খুশী হলেও মুখে প্রকাশ করলেন না, বললেন: আরতির থালা সাজানো হয়েছে?
বিদিশা: হয়েছে মা।
এমন সময় কলিং বেল বাজার আওয়াজ, বৈশালী দেবী বিদিশাকে বলেন: যাও আরতির থালা নিয়ে এসো, একজন চাকর দরজা খোলে এবং দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন তিনিই তাথৈ তার জন্যই এত আয়োজন তাথৈ ঘরে তিনি ঢুকতে গিয়েই বাধা পায় সামনে বৈশালী দেবী দাঁড়িয়ে আছেন হাতে একটা থালায় জ্বলন্ত প্রদীপ আর কিছু ধান-দুব্বো নিয়ে।
বৈশালী দেবী তাথৈএর আরতি করেন তারপর বলেন : আয় এবার ভিতরে আয় মা।
তাথৈ ঘরে ঢুকে মহিলার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন, মহিলা আশীর্বাদ করেন "সুখে থাক মা, দীর্ঘজীবী হ"
তাথৈ: তুমি কেমন আছো পিসি?
বৈশালী দেবী: আমার মেয়ে চলে এসেছে, আর কিভাবে খারাপ থাকবো?
বলে তাথৈকে বুকে জড়িয়ে আদর করতে থাকেন। তারপর খোশগল্প চলতে থাকে
তাথৈ: বাপি কোথায়? আর মা? আর জ্যেঠুমণি-বড়মা?
বৈশালী দেবী উত্তর দেবার আগেই দরজার বাইরে থেকে সমবেত কণ্ঠস্বর ভেসে আসে এইতো আমরা, আমাদের তাথৈ মার জন্য গিফ্ট নিতে গিয়েছিলাম। তাথৈ এবার একে একে সবাইকে প্রণাম করে তারপর বলে কি গিফ্ট?
দুজন পুরুষেরই গলায় মোটা সোনার চেন, পুরুষ্ট গোঁফ হাতের আঙ্গুল জুড়ে সোনার আংটি মাথায় কাচাপাকা মেশানো চুল, যিনি বয়সে বড়ো তার মুখ ঔদ্ধত্য ফুটে বেরোচ্ছে তিনিই যে বীরেন ভট্টাচার্য সেটা আর বলে দিতে হয় না, তিনি বলেন: তার জন্য তো বাইরে আসতে হবে, এসো বাইরে এসো।
সবাই বাইরে যায় গিয়ে দেখে বাড়ির গেটের বাইরে আরো একটা নতুন কেনা সিলভার রঙের গাড়ি দাঁড়িয়ে
তাথৈ: এটা আমার জন্য?
বীরেন বাবু: একদম, এটা শুধু আমার তাথৈ মার জন্য।
তাথৈ আনন্দে লোকটির গলা জড়িয়ে ধরে "থ্যাংক ইউ জ্যেঠুমণি"।
সন্ধ্যাবেলায় তাথৈ একটা ফোন করে "হ্যালো, মিস্টার গুপ্ত?
ফোনের অপর প্রান্তে: বলুন ম্যাডাম
তাথৈ: আপনার সাথে দেখা করতে চাই, আধঘন্টার মধ্যে আপনার অফিসে আসছি
ফোনের অপর প্রান্তে:ঠিক আছে ম্যাডাম
মিস্টার গুপ্ত নামক ভদ্রলোকের অফিসে টেবিলের একদিকের চেয়ারে স্যুট-বুট পড়া ব্যাক্তি অর্থাৎ মিস্টার গুপ্ত বসে আছেন আর অপর দিকের একটা চেয়ারে তাথৈ বসে আছে।
মিস্টার গুপ্ত: এবার বলুন ম্যাডাম?
তাথৈ: আপনাকে যে কাজটা দিয়েছিলাম করেছেন?
মিস্টার গুপ্ত: হ্যাঁ
তাথৈ: খোঁজ পেয়েছেন?
মিস্টার গুপ্ত: না, ম্যাডাম, ওদের এক আত্মীয় থাকে আপনার জ্যেঠুর খুব পরিচিত তারা তাদের কাছেও গিয়েছিলাম কিন্তু তারা তো শুনে আকাশ থেকে পড়লেন বললেন ওরা তো বহুবছর আগে এক দুর্ঘটনায় সবাই মারা গেছে।
তাথৈ হতভম্ব হয়ে গেল বললো: সবাই মারা গেছে? কিভাবে?
মিস্টার গুপ্ত: বললাম যে একটা দুর্ঘটনায়, কি দুর্ঘটনা সেটা অবশ্যি বললেন না তারা।
তাথৈ: ওই আত্মীয়ের কাছে ছেলেটির কোনো ছবি আছে?
মিস্টার গুপ্ত: সেই ছোটোবেলার একটা ছবি পেয়েছি
তাথৈ: দিন
মিস্টার গুপ্ত তাথৈকে একটা ছবিটা দিল
তাথৈ: ধন্যবাদ, আপনার পেমেন্ট আপনি পেয়ে যাবেন আর এই ব্যাপারে যেন আর কেউ না জানে
মিস্টার গুপ্ত: ঠিক আছে ম্যাডাম, একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ম্যাডাম?
তাথৈ: কি?
মিস্টার গুপ্ত: ছেলেটি কি বিশেষ কেউ?
এবারে জ্বলে উঠলো তাথৈ: সে কৈফিয়ত আপনাকে দিতে আমি বাধ্য নই, আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে আর এই সম্বন্ধে কেউ যেন কিছু না জানে।
"কোথায় গিয়েছিলি তুই?" ঘরে ঢুকতেই প্রশ্নটা করেন বৈশালী দেবী উদ্দেশ্য তাথৈ
তাথৈ উত্তর দিল: একটু বেরিয়েছিলাম
বৈশালী দেবী: কোথায়?
তাথৈ: একটু শহর দেখতে
বৈশালী দেবী: ঠিক আছে বলবিনা যখন আর কি বলবো, আমি তো আর মা নই, যে আমাকে সব কথা বলবি
তাথৈ (একটু রাগের সাথে): পিসি, বলেছি না এসব কথা কখনো বলবে না, এসব কথা আমার পছন্দ নয়
বৈশালী দেবী: তাহলে বল কোথায় গিয়েছিলি?
তাথৈ: বললাম তো একটু ঘুরতে। বলে আর প্রশ্ন করার অবকাশ না দিয়ে উপরে চলে এল, উপরে নিজের রুমে এসে বিছানায় বসে তাথৈ ছবিটি খুলে দেখে, একজন কিশোরের ছবি, ফর্মাল শার্ট প্যান্ট পরা, শার্টের হাতা দুটো কবজির একটু উপর পর্যন্ত গোটানো, গলার কাছে শার্টের একদম উপরের একটা বোতাম খোলা, পায়ে বুট, চোখে সানগ্লাস, হাতে একটা ঘড়ি একটা ব্যাগ একটা কাঁধ থেকে পিছনে ঝুলছে, ছেলেটি হাঁটছে পাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে, ছেলেটি হাঁটছে বা ওই ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে তখনই তোলা হয়েছে ছবিটা।
তাথৈ একদৃষ্টিতে অনেকক্ষণ দেখতে থাকে ছবির কিশোরটিকে, চোখ ঝাপসা হয়ে আসে মনে মনে ভাবে "তাহলে কি সত্যিই সে হারিয়ে ফেললো অভয়কে?" ছবিটি দেখতে দেখতে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে চোখ থেকে, কিছুক্ষণের জন্য তাথৈ ফিরে গেল তার ছোটোবেলায় কলেজ জীবনে যখন একটা ছেলে রোজই দূর থেকে তাকে লক্ষ্য করতো, কাছে আসতো না কিন্তু লক্ষ্য করতো তারপর ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব হলো, নাম জানলো ছেলেটার নাম অভয়, খুব ভালো লাগতো তাথৈ এর অভয়ের সাথে থাকতে ওর সাথে ছুটির পরে ঘুরতে, একদিন ঘুরতে ঘুরতে দুজনে পাড়ার এক শিব মন্দিরের পিছনে গিয়েছিল জায়গাটা দিনের বেলাতেও অন্ধকার থাকে ঘন গাছপালার জন্য, অন্ধকারে ছোটো থেকেই ভয় তাথৈ এর সেদিন ও মন্দিরের পিছনে গাছপালার অন্ধকারেও ভয় পাচ্ছিল সেটা বুঝেছিল তার সঙ্গীটি তার হাত ধরে বললো "ভয় নেই, আমি আছি তো",..
"তাথৈ এই তাথৈ" হটাৎ সম্বিত ফিরে পেল তাথৈ বৃষ্টি এসেছে তার বন্ধু তার দিদি বৃষ্টি। তাড়াতাড়ি ছবিটা নিজের ব্যাগে লুকিয়ে রাখলো তাথৈ। ঘরে ঢুকলো আরো একজন তন্বী যুবতী বয়স তাথৈ এর মতোই তবে কথাবার্তায় তাথৈ এর উল্টো, তাথৈ এর কথাবার্তা ভদ্র মার্জিত কিন্তু এর কথার প্রতিটা স্বরে অহংকার ফুটে বেরোয় এরই নাম বৃষ্টি, পরনে একটা টপ আর হট প্যান্ট, স্তনদুটো যেন টপ ফেটে বেরোতে চাইছে কিন্তু পারছে না।
দুই বোন একে অপরকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরলো তারপর তাথৈ বললো: কি রে কোথায় ছিলি? আমাকে আনতেও যাসনি,এসেও এতক্ষণ পরে দেখা দিলি
বৃষ্টি: ওই একটু কাজ ছিল
কি কাজ?
তোর জন্য গিফ্ট আনতে গিয়েছিলাম
কি?
"এই দেখ" বলে বৃষ্টি তাথৈকে একটা প্যাকেট দিল, বললো: এটা কাল পড়বি।
কাল কি আছে?
আরে ড্যাডি তোর আসার জন্য মন্দিরে পূজো রেখেছে,
জ্যেঠুমণি সত্যিই পারে বটে
তুই ড্যাডির লাডলি আর আমি কাকাইয়ের
দুজনেই হাসতে লাগলো
গভীর রাত, কিন্তু রাতের অন্ধকার দূর হয়ে গেছে আগুনের লেলিহান শিখায়, আগুন লেগেছে, বাইরে কিছু লোকের পৈশাচিক উল্লাস তাদেরই একজন বললো "দেখিস যেন কেউ বাঁচতে না পারে, সবকটাকে একসাথে পুড়িয়ে মারবো আজ, আমার সাথে লাগতে আসা, আমাকে অপমান করা" লাগা আগুন, আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে সাথে লোকগুলোর অট্টহাসি...
ঘুম ভেঙে চমকে উঠলো এআরসি, একটা বিশ্রী স্বপ্ন দেখেছে সে, কপালে ঘাম জমে গেছে, এই একটা দুঃস্বপ্ন বিগত ১৫ বছর ধরে নিয়মিত দেখে আসছে সে, কিছুতেই এই স্বপ্ন পিছু ছাড়ছে না, হয়তো সে নিজেই পিছু ছাড়াতে চাইছে না।
সে হাতঘড়ি দেখলো তখনও সকাল হতে কিছু দেরী আছে, সে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লো, বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল তারপর ট্রেনিং রুমে ঢুকলো প্রথমে কিছু ফ্রি হ্যাণ্ড এক্সারসাইজ, তারপর কিছু যোগ-ব্যায়াম আর শেষে মার্শাল আর্ট প্র্যাকটিস, তারপর স্নান করে ব্রেকফাস্ট করে অফিস এটা তার রোজকার রুটিন, শহরের তো বটেই দেশের বড়ো ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টদের একজন এআরসি, বাণিজ্য নগরীর তো বটেই দেশের সবথেকে ইয়ং বিজনেস টাইক্যুন, টাকার অভাব তো নেই তার সাথে সমাজে বেশ কিছুটা প্রভাব প্রতিপত্তি আছে, কিন্তু তাও যেন কিছু আছে যেটা এখনো তার পাওয়া বাকি, সেটার জন্যই সে ছুটে চলেছে।
ওয়ার্কআউট শেষে বাথ নিয়ে ব্রেকফাস্ট টেবিলে এসে বসলো, বাড়ির পরিচারক-পরিচারিকারা পরিবেশন করছে, খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলো: মা কোথায়?
একজন পরিচারকের উত্তর: ম্যাডাম পূজোয় বসেছেন।
এআরসি: শোনো আমি কিছুদিনের জন্য শহরের বাইরে যাচ্ছি, মায়ের খেয়াল রাখবে তোমরা আর কোনো দরকার বা অসুবিধা হলে আমাকে ফোন করবে, ঠিক আছে? আর মাকে ওষুধপত্র যেন ঠিকঠাক খাওয়ানো হয়।
"এতই যদি মায়ের জন্য চিন্তা তাহলে এবার একটা বউ নিয়ে আয় ঘরে" কথাটা এলো ঠাকুরঘরের দরজার দিক থেকে, এক মহিলা হাতে থালায় কিছু নিয়ে আসছেন।
এআরসি: তোমার পূজো হয়েছে? তো এবার খাবে এসো।
মা: আগে মাথাটা এদিকে আন,ঠাকুরের আরতি নে আর টিকা লাগা
"তুমি জানো আমি এসব বিশ্বাস করি না, তুমি করো তাই আমি তোমার জন্য ঠাকুরঘর বানিয়ে দিয়েছি, আমাকে এর মধ্যে জড়িও না" গম্ভীর গলায় বলে এআরসি।
মহিলা তাও ছেলের মাথায় প্রদীপের আরতি দিয়ে কপালে টিকা পড়িয়ে দেন, তারপর বলেন: কোথায় যাচ্ছিস তুই?
একটু কাজ আছে, কদিনের জন্য শহরের বাইরে যাচ্ছি ব্যাবসার জন্য তবে তোমার চিন্তা নেই কোনো দরকার পড়লেই ফোন করবে চলে আসবো।
খালি কাজ আর কাজ এবার একটু নিজের কথা ভাব কতবার বলেছি বিয়ে কর কিন্তু তুই..
মা তোমাকে বলেছি না..
কথা শেষ করতে দেন না মহিলা বলেন: তোর অফিসে তো অনেক মেয়ে কাউকে তোর পছন্দ হয়না? হলে নিয়ে আয় বাড়িতে একদিন
গুরুগম্ভীর গলায় উত্তর আসে: মা তোমাকে কতবার বলেছি না এইসব বিয়ের প্ল্যান এই মুহূর্তে আমার নেই।
তোর বাবার কত ইচ্ছা ছিল ছেলের বিয়ে দেবেন, নাতি-নাতনীদের সাথে খেলা করবেন কিন্তু.. কথা শেষ করতে পারেন না মহিলা চোখে জল চলে আস, আঁচলের খুট দিয়ে চোখ মোছেন। এআরসি নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে মায়ের কাছে গিয়ে মায়ের মাথাটা নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে, কিন্তু তার চোয়াল কঠিন হয়ে যায় যেন নিজেই কোনো কাজ সম্পন্ন করার প্রতিজ্ঞা করে। তারপর নরম গলায় মাকে বলে: তুমি সাবধানে থাকবে, ওরা সবাই থাকবে তোমার দেখাশোনা করার জন্য।
মা: আমাকেও নিয়ে চল তোর সাথে
এবার নয়,এবার আমাকে একাই যেতে হবে।
কখন বেরোবি?
কাল সকালে, আজ কয়েকটা মিটিং আছে সেগুলো সেরে নিয়ে কাল বেরোবো
কবে ফিরবি?
ঠিক নেই, চেষ্টা করবো তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে ফিরতে।
বাণিজ্য নগরীর এক বহুতল অফিস, এআরসি এর অফিস কনফারেন্স রুমে মিটিং চলছে, বেশ কিছুক্ষণ পরে মিটিং শেষে কনফারেন্স রুম খালি হলো শুধু রয়ে গেলেন এআরসি তার পিএ ও একজন এমপ্লয়ী।
একটা ফাইল চেক করে দরকার মতো সই করতে করতে এআরসি কথা বললো: শুনুন আমি কিছুদিনের জন্য বিজনেস পারপাসে শহরের বাইরে যাচ্ছি, কবে ফিরবো কিছু ঠিক নেই আমি যতদিন না আসছি কোনো ডিলের কনফার্মেশন করবেন না, আর মিটিংগুলো সব পোস্টপোন করুন নিতান্তই যদি না করা যায় তাহলে বলবেন আমি ভিডিও কলে আমি জয়েন করবো ঠিক আছে?
রুমে উপস্থিত বাকি দুজনে ঘাড় নেড়ে বললো: ঠিক আছে স্যার
আর যদি কোনো দরকার মনে করেন তো তৎক্ষণাৎ আমাকে ফোন করবেন, মনে থাকবে?
ওকে স্যার।
আর একটা কথা অফিসের সবাইকে একটা ব্রিফিংয়ে ডাকুন আমি কথা বলবো।
ব্রিফিংয়ে অফিসের সবাইকেই মোটামুটি একই কথা বললো এআরসি, অফিসের সবাই জানে যে যেকোনো দরকারেই তাদের বস তাদের পাশে থাকে তারাও বসের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে, তাই অফিস ছেড়ে কদিনের জন্য বাইরে যেতে বেশি ভাবতে হয় না এআরসিকে।
শহরের একটা ঘিঞ্জি এলাকা, যেখানে মূলত ছোটো বড়ো অপরাধীরা থাকে, গুণ্ডা-মস্তানদের এলাকা এখানেই একটা ছোটো ঘরে কয়েকজন বসে তাস পেটাচ্ছে সামনে কয়েকটা কাঁচের বোতল রাখা আর কয়েকটা গ্লাস। একমনে তাস খেলছে, কয়েকজন দেখছে আর মাঝে মাঝে টিপ্পনী কাটছে, হটাৎ একজনের মোবাইল বেজে উঠলো নাম্বারটা দেখে যেন চমকে উঠলো শহরের নামকরা মাস্তান উসমান, রিসিভ করে কানে দিল ফোন "হ্যালো, আদাব সার"
আদাব উসমান
বলুন কি হুকুম?
হুকুম এবার থেকে বস দেবেন
বস? যেন অবাক হলো উসমান
হ্যাঁ, তিনি শহরে এসে গেছেন, তোমার ওখানে আসছেন যে কোনো সময় পৌঁছে যাবেন, তৈরী হও আমরা আসছি
কি বলছেন? বস এখানে? হটাৎ?
সেটা নাহয় তাকেই জিজ্ঞেস করো,
থতমত খায় উসমান না না ঠিক আছে, কিন্তু...
কথা আর শেষ হলোনা ফোন কেটে গেছে, বাকি সাথীরা খেলা বন্ধ করে অবাক হয়ে তাদের নেতার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, নেতার মুখে এখন স্পষ্ট ভয়ের ছাপ
একজন জিজ্ঞেস করলো: কি হলো ভাইজান?
উসমান একটা ঢোঁক গিলে উত্তর দিলো: এগুলো সব সরিয়ে ফেল, বস আসছেন।
এই একটা কথাতেই ভয়টা সবার মধ্যে সঞ্চারিত হলো তারা কিছুক্ষণ একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর তাড়াতাড়ি উঠে সবকিছু সরিয়ে ফেললো। খানিক পরেই ওই ছোট্ট ঘরটাতে দুজন লোক ঢুকলো তার মধ্যে যিনি লিডার গোছের তিনি বয়সে যুবক, তার পরনে কালো জ্যাকেট কালো জিন্স, পায়ে কালো বুট, চোখে কালো গগলস্, নাকের একটু উপর থেকে গলা পর্যন্ত একটা রুমাল দিয়ে বেঁধে ঢাকা আছে, উসমান তাদের দেখে বললো: সেলাম বস, সেলাম ভাইজান আসুন
আগন্তুক দুজন ভিতরে ঢুকলো, লিডার যুবকটি ঢুকে একবার সবার দিকে তাকিয়ে দেখলো তারপর নিজের সঙ্গীর উদ্দেশ্যে বললো "ইনফরমেশন জোগাড় করতে বলেছিলাম, হয়েছে আমির?"
লিডারটির সাথে যিনি এসেছিলেন তিনি বললেন: ভিতরে চলো, বলে দুজন ভিতরে ঢুকলো ছোটো ঘরটার ভিতরের দিকে আরো একটা দরজা আছে সেটা খুলে ভিতরের অন্য আরেকটা ঘরে সবাই ঢুকলো, বাইরের দরজাটা একজন বন্ধ করে দিল, এই ঘরটা আগেরটার থেকে তুলনামূলকভাবে বড়ো একদিকের দেয়ালে সাদা পর্দা আছে আর সামনে টেবিলে প্রজেক্টার, উল্টোদিকের একটা চেয়ারে লিডার যুবকটি বসলো বললো: এবার বলো কি খবর জোগাড় করেছো তোমরা?
প্রজেক্টার চালু হলো,সামনের পর্দায় ছবি ফুটে উঠলো এরপর অনেকক্ষণ ধরে পর্দায় কখনো কিছু পুরুষের, কখনো কিছু মহিলার কখনো কিছু মেয়েদের আবার কখনো কয়েকটা বাড়ির ছবি ভেসে উঠতে লাগলো আর তার সম্পর্কে জানতে লাগলো লিডার যুবকটি।
এই কজন ছাড়া কয়েকজনের সম্পর্কে জানতে বলেছিলাম
হ্যাঁ, সেটাও হয়েছে
পর্দায় এবার পরপর একজন পুরুষ একজন মহিলা আরেকজন যুবকের ছবি ভেসে উঠলো এবং আমির নামের লোকটি তাদের সম্পর্কে বলে যেতে লাগলো
এই দুজন স্বামী-স্ত্রী আর ইনি এনাদের ছেলে, স্বামী-স্ত্রী বহুবছর আগে মহিলার কোনো এক দূর সম্পর্কের দাদার আশ্রয়ে এসেছিলেন কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় ওই দাদা আর তার পুরো পরিবার মারা যায় তারপর কিছুদিনের জন্য এনাদের অবস্থা ফিরে যায়, কিন্তু বর্তমানে লোকটির মদ আর জুয়ার অভ্যাসের জন্য আবার পুরনো অবস্থায় ফিরে এসেছে।
আর ওনাদের ওই ছেলে?
ও বাপের চেয়ে দু কাঠি উপরে মদ-জুয়ার সাথে ড্রাগস আর মেয়েদের অভ্যাসও আছে, আরেকটা খবর আছে বস
বলো
শোনা যায় এই মহিলা নাকি ওই নেতার..
কি?
মানে..
রক্ষিতা?
হ্যাঁ, বস এবং সেটা এখনও
ওনার ছেলে আর স্বামী জানেন?
ছেলে জানেন কি না শিওর নই তবে স্বামী হয়তো জানেন নাহলে ওর মদ আর জুয়ার টাকা আসবে কোথা থেকে? আর ছেলেটি অবশ্য এখন ওই নেতার ভাগ্নে রকির গ্ৰুপ জয়েন করেছে, ওদের সাথেই থাকে।
গুড, তবে ইনফরমেশন জোগাড় ছাড়া আরও কিছু কাজ বলেছিলাম
এবার উসমান উত্তর দিল: হয়েছে বস, এই শহরে এই এলাকার মতো আরো এলাকা আছে যেখানে আমাদের মতো ছেলেরা থাকে যাদের ওই বড়ো বড়ো উঁচু মহলের লোকজন ব্যাবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তারা এবার থেকে আপনার হয়ে কাজ করবে।
তারা বিশ্বস্ত? তোমার কি মনে হয়?
সেটা তো ঠিক বলা মুশকিল
আর তোমার নিজের লোকজন?
ওরা পুরো বিশ্বস্ত স্যার কেউ নেমকহারামি করবে না
আর করলে কি হতে পারে সেটাও নিশ্চয়ই বলে দিয়েছো?
দিয়েছি স্যার
আমির.. লিডার যুবকটি তার সঙ্গীকে কিছু একটা ইশারা করলো, আমির নামের লোকটি দুটো টাকার বাণ্ডিল উসমানের হাতে দিল এবার আবার লিডার যুবকটি বললো "শোনো উসমান তোমার দলের প্রতিটা লোক যেমন খবর জোগাড় করছে তেমনি করে যাবে ওই লোকগুলোর প্রতিটা পদক্ষেপের খবর আমার চাই কার সাথে দেখা করছে কি করতে চাইছে, ওদের ব্যাবসা, ওদের বাড়িতে কে কে আসছে সব বুঝেছো?
উসমান: বুঝেছি বস আর চিন্তা করবেন না ওই বাড়িতে আমাদের লোক আছে সব খবর আপনি পাবেন।
-গুড।
এবার আমির নামের লোকটি বললো: আগামীকাল মন্দিরে পূজো দিতে আসবেন সপরিবারে, যদি হুকুম করো তো ওখানেই সবকটাকে..
লিডার যুবকটি: না, এত সহজে যদি ওকে মারতে হতো তাহলে আমার এখানে আসার দরকারই বা কি ছিল? তোমার কি মনে হয়? আমি এখানে না এসে ওকে খতম করাতে পারতাম না?
আমি: তা নয় বস
লিডার যুবক: ওকে আমি এত সহজে মারবো না, তিলে তিলে একটু একটু করে শেষ করবো, ওর থেকে সবকিছু কেড়ে নেবো
কিন্তু স্যার লোকটার ক্ষমতা অনেক এখন আবার মণ্ত্রীও হয়েছে, পুলিশের উঁচু কর্তারা ওর হাতের মুঠোয়
সেইজন্যই তো বলছি, ওর থেকে ওর সব ক্ষমতা অধিকার কেড়ে নেবো ওর সম্মান ধূলোয় মিশিয়ে দেবো। তারপর নিজেই রিমোট দিয়ে ছবি ঘুরিয়ে একটা ছবি পর্দায় আনে যুবকটি সামনের স্ক্রিনের উপর ওঠা প্রৌড় লোকের ছবির দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো যুবকটি, তারপর নিজের মনে মনে বললো: বীরেন ভট্টাচার্য নিজের বাকি দিনগুলো আনন্দ করে নাও পরিবারের সাথে, তোমার অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে, তোমার অতীতের কুকীর্তির সব হিসাব নেওয়ার জন্য তোমার অতীতের অন্ধকার থেকে উঠে এসেছি আমি।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
The following 18 users Like Monen2000's post:18 users Like Monen2000's post
• Abarif, Ami Raja, Ari rox, auditore035, Biddut Roy, bloodbampair, Bondhon Dhali, Crezy4girls, ddey333, DEEP DEBNATH, free123skk, Jibon Ahmed, Lajuklata, nextpage, ojjnath, sudipto-ray, swank.hunk, Uzzalass
Posts: 759
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
অসাধারণ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Posts: 928
Threads: 9
Likes Received: 1,806 in 406 posts
Likes Given: 939
Joined: Sep 2021
Reputation:
618
20-08-2022, 07:54 AM
(This post was last modified: 20-08-2022, 07:54 AM by Monen2000. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(20-08-2022, 12:53 AM)Biddut Roy Wrote: অসাধারণ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ
এইভাবেই পাশে থাকুন
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Posts: 1,616
Threads: 3
Likes Received: 1,004 in 873 posts
Likes Given: 1,289
Joined: May 2022
Reputation:
29
Darun... Waiting for next part
|