30-08-2022, 07:56 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
Romantic Thriller প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ (সমাপ্ত)
|
30-08-2022, 07:56 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
30-08-2022, 11:38 PM
এই না হলো গল্প। রহস্য,ভালোবাসা,অ্যাকশন,,,,,কি নেই গল্পে। আসলে সরল গল্পে মজা নেই, গল্পে যত গরল থাকবে ততই মজা। নায়ক ও নায়িকার মধ্যে এই ভুল বোঝাবুঝিটাই চাইছিলাম।
আশা করি এভাবেই নিয়মিত আপডেট পাব। লাইক ও রেপু দিয়ে পাশে রইলাম।
31-08-2022, 12:43 AM
(30-08-2022, 11:38 PM)sudipto-ray Wrote: এই না হলো গল্প। রহস্য,ভালোবাসা,অ্যাকশন,,,,,কি নেই গল্পে। আসলে সরল গল্পে মজা নেই, গল্পে যত গরল থাকবে ততই মজা। নায়ক ও নায়িকার মধ্যে এই ভুল বোঝাবুঝিটাই চাইছিলাম। ধন্যবাদ I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
31-08-2022, 07:42 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
31-08-2022, 07:59 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
01-09-2022, 08:29 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
01-09-2022, 10:11 PM
ট্রেলার
শিউলী দেবী রয়কে বলেন ভট্টাচার্য পরিবারের ভিতরেই একজন আছে যে ভট্টাচার্য পরিবারের হয়েও তাদের নয়, সে রয়কে সাহায্য করতে পারে। কে সে? প্রতিবছরের মতো এবছরেও তাথৈ অভয়ের জন্য শিবরাত্রির উপোস রেখেছে, মন্দিরে পূজোর পরে তার সঙ্গে দেখা সেই সাধুর যে বীরেন ভট্টাচার্য কে সর্বনাশের অভিশাপ দিয়েছিল। সে কি তবে তাথৈ কেও অভিশাপ দেবে? নাকি আশীর্বাদ? জানতে নজর রাখুন পরবর্তী পর্বে শীঘ্রই আসছে "প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ" এর পঞ্চম পর্ব I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
01-09-2022, 11:14 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
02-09-2022, 09:04 AM
(01-09-2022, 10:11 PM)Monen2000 Wrote: Waiting dada
02-09-2022, 09:51 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
03-09-2022, 02:07 AM
Update??
03-09-2022, 07:43 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
03-09-2022, 04:27 PM
Update
03-09-2022, 08:12 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
04-09-2022, 12:03 AM
Update?
04-09-2022, 12:26 AM
পঞ্চম পর্ব
"কি রে তোর পূজো হলো?" প্রশ্নটা করলো বৃষ্টি উদ্দেশ্য তাথৈ, তাথৈ তখন শিবলিঙ্গের মাথায় দুধ ঢেলে পূজো দিয়ে হাতজোড় করে চোখ বুজে প্রণাম করছে, প্রণামটা একটু বেশি সময় ধরে চলছে দেখে প্রশ্নটা করে বৃষ্টি।
আরও একটুক্ষণ পরে চোখ খোলে তাথৈ বলে "তোর সবকিছুতে এত অধৈর্য কেন?" আমার ক্ষিদে পেয়েছে তাহলে উপোস রাখতে গেলি কেন? মা জোর করছিল তাই এখন চল। এমন সময় মন্দিরের পুরোহিত বললেন: তুমি একটুও বদলাওনি তাথৈ মা সেই ছোট্ট থেকেই দেখছি ভেবেছিলাম বাইরে পড়তে গিয়ে পাল্টে গেছো কিন্তু আজ বুঝলাম আমি ভুল ছিলাম। তাথৈ: আর আমি পাল্টাবোও না ঠাকুরমশাই। বলে তাথৈ প্রণাম করতে গেলো পুরোহিত মশাই তাথৈকে বাধা দিয়ে বললেন: ঠাকুরের সামনে অন্য কাউকে প্রণাম করতে নেই, কিন্তু আমি আশীর্বাদ করছি তুমি সুখী হও মা। এসময় বৃষ্টি আবার তাড়া দিল "তুই আসছিস কিনা বল?" তাথৈ: তুই এগো আমি আসছি। বৃষ্টি চলে গেল তারপর তাথৈ বললো: ঠাকুরমশাই একটা কথা জিজ্ঞেস করবো? ঠাকুরমশাই: বলো মা তাথৈ: অভয়ের কোনো খবর জানেন? পুরোহিত মশাই যেন একটু চমকে উঠলো তারপর বললো: তাকে তো বহুবছর দেখিনি, কিন্তু শুনেছি.. তাথৈ: সেটা আমিও শুনেছি যে একটা দুর্ঘটনায় অভয় আর ওর পরিবার মারা গেছে কিন্তু.. "কিন্তু তোর মন কি বলে?" হটাৎ তৃতীয় কণ্ঠস্বর শোনা গেল তাথৈ যেদিক থেকে আওয়াজ আসছে সেদিকে তাকিয়ে দেখলো একজন সাধু প্রশ্নটা করেছেন, একটু ভালো করে দেখতেই তাথৈএর মনে পরলো এই সাধুই কিছুদিন আগে তার জ্যেঠুমণিকে শাপ-শাপান্ত করেছিল। "কি রে তোর মন কি বলে?" আবার প্রশ্ন করেন সাধু। "আমার বিশ্বাস ও বেঁচে আছে, একদিন ও ফিরবেই" উত্তর দেয় তাথৈ। আর যদি না ফেরে? যদি সত্যিই ও মারা গিয়ে থাকে? তবুও আমি ওর জন্য অপেক্ষা করবো, দরকার পরলে পরজন্মেও করবো। সাধু একটু স্মিত হেসে বলেন: তাহলে নিজের বিশ্বাসের ভিত দুর্বল হতে দিস না, এই বিশ্বাসের জন্যই একদিন তাকে তোর কাছে ফিরতেই হবে, কিন্তু তার আগে যে তোকে পরীক্ষা দিতে হবে। তাথৈ একটু অবাক হয় বলে: কিসের পরীক্ষা? সাধু: সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিস কি না? তাথৈ: মানে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না সাধু: সময় হলেই বুঝতে পারবি তবে একটা কথা মনে রাখবি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোস করবি না, অন্যায় যেই করুক যত আপন জনই করুক যদি অন্যায়ের সাথ দিস তাহলে সব হারাবি আর যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিস তাহলে যা খুঁজছিস তা পাবি। বলে সাধু চলে গেল তাথৈ কিছুক্ষণ হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। "আপনার ছেলের অ্যাডমিশন হয়ে গেছে, ওকে ওখানে যেতে হবে" শিউলী দেবীকে খবরটা দিল রয় শিউলী দেবী: কিন্তু ওখানে ওর দেখাশোনা কে করবে? ওখানে আরও অনেক বাচ্চারা পড়াশোনা করে, তাদের দেখাশোনা করার জন্য লোক থাকে তারাই করবে। কিন্তু.. আর কোনো কিন্তু নয়, বীরেন ভট্টাচার্য কিন্তু আপনাদের পাগলা কুকুরের মতো খুঁজছে, তাই আগে আপনার ছেলেকে এখান থেকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে ফেলা দরকার। শিউলী দেবী আর দ্বিরুক্তি করলেন না তিনি জানেন রয় যেটা বলেছে সেটা ভীষণ সত্যি। রাতে শিউলী দেবী রয়কে ওখানেই খেয়ে যেতে বললেন রয় বারণ করলো না, সে লক্ষ্য করেছে এই কদিনে তির প্রতি শিউলী দেবীর ব্যবহার একটু পাল্টে গেছে একটু গা ঘেঁষে বসা, জল দেবার সময় বুক থেকে আঁচল পরে যায় ইত্যাদি মনে মনে হাসে রয় শিউলী দেবী যে তাকে সিডিউস করার চেষ্টা করছেন এটা সে ভালোভাবেই বুঝতে পারে,কম মহিলা তো দেখেনি সে প্রায় সবাই শিউলী দেবীর মতো এরা প্রত্যেকেই যৌনপিপাসু, এদের যৌন ক্ষিদে প্রবল আর যদি এদের সেই ক্ষিদে মেটানো যায় তাহলে তাদের মুখ থেকে অনেক কথাই বেরিয়ে আসে। ডিনার করার সময় বাইরে হটাৎ বজ্রপাতসহ জোরে বৃষ্টি শুরু হলো, ডিনার কমপ্লিট করে দুজনে অনেকক্ষণ গল্প করলো মূলত শিউলী দেবীই বলছিল রয় শুনছিল কিন্তু এমন কোনো কথা মুখ থেকে বেরোলো না যা রয়ের কাজে আসতে পারে তবুও সে মন দিয়ে শুনতে লাগলো, রোহিত মানে শিউলী দেবীর ছেলে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন বৃষ্টি থামলো না তখন রয় শিউলী দেবী বললেন: আজ আর আপনার যাওয়া হবে না, এই বৃষ্টি থামবে না। রয়: অসুবিধা নেই, আমার গাড়ি আছে আমি চলে যাবো। কিন্তু কেন? এখানেই থেকে যান আজ রাতটা, বেকার বেকার ভিজবেন কেন? দুজনে জানলার কাছে এসে দাঁড়ায়। রয়: কি ব্যাপার বলুন তো? আপনি আমাকে এখানে আটকাতে চাইছেন? শিউলী দেবী: না মানে ঠিক তা নয় আসলে.. রয় জানে শিউলী দেবী কি চান সে মনে মনে হাসলো বেশ তবে তাই হোক, সে বললো: আসলে কি? আমি কিছু বুঝিনি ভেবেছেন? আমার গা ঘেঁষে বসা, আমার সামনে আঁচল ফেলে দেওয়া, লুকিয়ে লুকিয়ে আমার ড্রেস চেঞ্জ করা দেখা এসবই লক্ষ্য করেছি আমি। শিউলী দেবী কিছুক্ষণ রয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন, রয় আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে যায়, শিউলী দেবীর কোমর ধরে একটানে নিজের কাছে টেনে আনে, তারপর আস্তে আস্তে শিউলী দেবীর ঠোঁট লক্ষ্য করে নিজের ঠোঁট এগিয়ে আনে, শিউলী দেবী বলেন "আমার ছেলে ওঘরে শুয়ে আছে আর আমি তোমার থেকে বয়সে অনেক বড়ো"। রয় শিউলী দেবীর কোমর ছেড়ে পিছনে সরে গেল বললো: অলরাইট হয়তো আমারই ভুল। শিউলী দেবী সোজা রয়ের আস্তে আস্তে পিছনে সরে যাওয়া দেখছেন। রয় জানে শিউলী দেবী তাকে যেতে দেবেন না আর ঠিক সেটাই হলো "দাঁড়াও" বলে উঠলেন শিউলী দেবী তারপর দ্রুতপায়ে রয়ের দিকে এগিয়ে গিয়ে রয়ের দুকাঁধ ধরে নিজের দিকে টেনে এনে নিজের ঠোঁট রয়ের ঠোঁটে লাগিয়ে দেন। বেশ কিছুক্ষণ দুজনেই চুম্বনে লিপ্ত থাকে তারপর শিউলী দেবী একটু পিছনে সরে বুক থেকে আঁচলটা সরিয়ে সেটা রয়ের দিকে বাড়িয়ে দেন রয় আঁচলটা ধরে আস্তে আস্তে টানতে থাকে আর শিউলী দেবী ঘুরতে থাকেন ফলে খুব তাড়াতাড়ি তার শরীর থেকে পুরো শাড়িটা খুলে যায়, এরপর দুজনেই ড্রয়িংরুমে মেঝেতেই শুয়ে পরে নীচে শিউলী দেবী আর তার উপরে রয়, সে তখন শিউলী দেবীর শরীরের বাকি কাপড়গুলো এক এক করে খুলছে আর শিউলী দেবীর পুরো শরীরে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে। শিউলী দেবী ভাবছেন "অবশেষে রয় তার কাছে ধরা দিল", তিনি চোখ বুঝে তার শরীরের উপর রয়কে উপভোগ করতে থাকেন, তার দুটো উদ্ধত স্তনের উপর রয়ের হাতের চাপ তাকে ব্যাথা দিচ্ছে না, সুখের আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে। একটু পরেই দুটো সম্পূর্ণ নগ্ন মানুষকে একে অপরের সাথে জড়িয়ে থাকতে দেখা গেল, প্রতিবার শিউলী দেবীর দুপায়ের মাঝের গহ্বরে রয়ের পুরুষাঙ্গ যখন ঢুকছে তার মুখ থেকে শিৎকার বেরোচ্ছে, তিনি রয়কে দুহাতে আরো আঁকড়ে ধরছেন নিজের উপর, দুপা দিয়ে রয়ের কোমর জড়িয়ে ধরেছেন, রয় যখন তার স্তনবৃন্ততে মুখ দিচ্ছে জিভ দিচ্ছে শিউলী দেবী বুঝছেন এত সুখ তিনি এর আগে কোনোদিন পাননি ,দুজনেই ঘেমে একসার হয়ে গেছে কিন্তু তাও তাদের কামক্রীড়া শেষ হয়নি কতক্ষণ এভাবে তারা ছিল দুজনের কারোরই হুশ নেই শেষে একসময় শেষ হলো দুজনের মুখ থেকেই আরামদায়ক শিৎকার বেরিয়ে এল, রয় এবার শিউলী দেবীর শরীরের উপর থেকে নেমে তারপাশেই শুয়ে পরলো, আর শিউলী দেবী.. তিনি চোখ বন্ধ করে এতক্ষণ ধরে কাটানো মুহুর্তগুলো উপভোগ করতে থাকলেন। বীরেন ভট্টাচার্যের নিজস্ব অফিস ঘরে মুখোমুখি বসে বীরেন এবং ধীরেন ভট্টাচার্য দুজনের মুখেই চিন্তার ছাপ কিছুতেই তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না যে তার দশজন লোককে মেরে ফেলেছে তার শিউলীকে নিয়ে গেছে, ওদিকে সমর সরকার কে এমন মারধর করেছেন যে লোকটা মারাই গেছে, যদিও অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে বলে ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছেন কিন্তু মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত তার মুখে একটাই কথা ছিল যে তিনি বীরেন ভট্টাচার্যের লোকদের মারেননি। "এবার কি করবে দাদা?" জিজ্ঞেস করলেন ধীরেন বাবু। সেটাই তো ভাবছি, মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না, সরকার যদি এটা না করে থাকে তাহলে কে? আমাদের পুরনো কেউ কি যাকে আমরা ভাবছি মেরে ফেলেছি কিন্তু সে বেঁচে আছে? যদি সেটা হয় তাহলে কে হতে পারে? রুদ্র রায়চৌধুরী আর তার বউ আর ছেলে? চমকে ওঠেন বীরেন ভট্টাচার্য যেন বহু পুরনো কোনো কথা মনে পরে যায়। ধীরেন বাবু আবার বলেন: ওদের তিনজনের কারো লাশই কিন্তু আমরা দেখিনি শুধু জগার কথায় বিশ্বাস করেছিলাম। বীরেন বাবু তৎক্ষণাৎ বেল বাজান, ঘরে একজন লোক ঢুকলো তাকে বললেন: জগা কোথায়? তাকে ভিতরে পাঠা। একটু পরে জগা ভিতরে ঢুকলো লোকটার পালোয়ানের মতো চেহারা মাথায় খুব ছোট করে ছাটা চুল, পুরুষ্ট গোঁফ, গালে হাল্কা দাঁড়ি তবে যেটা দেখার সেটা হলো চোখ, একদম খুনে চোখ যে কেউ দেখলে ভয় পাবে, এই লোকটা বীরেন বাবুর বশংবদ, তার হুকুমে করতে পারেন না এমন কাজ নেই কতলোকের যে লাশ ফেলেছেন তার ইয়ত্তা নেই। "ডাকছিলেন দাদা?" ভিতরে ঢুকে বলেন জগা। হ্যাঁ, তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করছি সত্যি কথা বলবি কি দাদা? তোর রুদ্র রায়চৌধুরী কে মনে আছে? একটু ক্ষণ ভুরু কুঁচকে মনে করার চেষ্টা করলো তারপর বললো ওই মদনের বউএর দাদা? হ্যাঁ সেই, ওর সাথে ওর বউ অমৃতা ছিল আর একটা ছেলে ছিল, মনে আছে? আছে দাদা, ছেলেটার তো আবার বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার শখ হয়েছিল তাথৈ দিদিমণির সাথে ঘুরতো, কি যেন নাম ছিল হ্যাঁ মনে পরেছে অভয় কিন্তু এতবছর পরে ওদের কথা কেন দাদা? তুই বলেছিলি তুই নিজের হাতে ওদের তিনজনকে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলেছিস। একটু ঢোঁক গিলে জগা বললো: হ্যাঁ দাদা, সেটাই করেছিলাম। "তুই সত্যি বলছিস?" এবার প্রশ্নটা করলেন ধীরেন ভট্টাচার্য। জগা উত্তর দেয়: মিথ্যা বলবো কেন? যেটা করেছিলাম সেটাই বলেছিলাম কিন্তু কেন দাদা? বীরেন বাবু গম্ভীর গলায় বলেন "জগা কেউ একজন আমার পিছনে লেগেছে, শিউলীকে নিয়ে গেছে যদি শিউলী মুখ খোলে ভেবে দেখেছিস কি হবে? কি করছিস তুই আর তোর লোকেরা? এখনো ওর কোনো খোঁজ পেলি না, হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে নাকি? দাদা, আমার লোকেরা এখনো পুরো শহর জুড়ে খুঁজেই চলেছে। খুঁজে বের করতেই হবে জগা, খুঁজে বের করতেই হবে, যা এখন। জগা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বীরেন ভট্টাচার্য ভাইকে বললেন: আরেকটা খবর এসেছে ধীরেন কি দাদা? কেউ বৃষ্টি আর তাথৈএর ব্যাপারে খোঁজখবর করছে সে কি? কে? সেটা জানলে তো হয়েই যেতো যদি খুব ভুল না করি তাহলে আমাদের এই নতুন বা পুরনো শত্রু। রকিকে ডেকে নেবো? এখনই ডাকার দরকার নেই, তুই ওর কাছে আরও কজন বডিগার্ড পাঠিয়ে দাও আর বাড়ির দুই মেয়ের সুরক্ষা বাড়িয়ে দে। "তুমি নিশ্চিত ওখানে বীরেন রোহিতের ক্ষতি করতে পারবে না?" শিউলী দেবী রয়কে প্রশ্নটা করেন, দুজনেই তখন নগ্ন হয়ে পাশাপাশি শুয়ে আছে ড্রয়িংরুমে মেঝেতে, কিছুক্ষণ আগেই তারা ইন্টিমেট হয়েছিল ,তারপরেই এই প্রশ্ন। "ওখানে খোঁজই পাবে না আর যদি পায়ও যদিও সেটার চান্স প্রায় নেই কিন্তু যদি পায় তাহলেও ওর ক্ষতি করতে পারবে না কারণ ওর সুরক্ষার জন্য লোক থাকবে" বললো রয়। শিউলী দেবী: বীরেন ভট্টাচার্যের সাথে তোমার কিসের শত্রুতা? রয়: উনি আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন শুধু তাই নয়, আমার পরিবারেরও। শিউলী দেবী: ওকে শেষ করতে হলে আগে ওর ক্ষমতাকে শেষ করতে হবে, আর সেটার জন্য ওর ব্যাবসাগুলোকে কারণ ওখান থেকেই ও অঢেল টাকা ইনকাম করে। রয়: সেটা আমিও জানি, কিন্তু লিগ্যাল বিজনেস ছাড়াও তো ইল্লিগ্যাল বিজনেস আছে। শিউলী দেবী: আছে কিন্তু সেগুলোর খবর আমি জানিনা তাই.. আমি বলতে পারবো না। রয়: সেটা জানা তোমার পক্ষে সম্ভবও নয়, ওগুলোর খবর প্রধানত খুব বিশ্বস্ত লোকের কাছেই থাকে, আর নতুবা থাকে পরিবারের লোকের কাছে, কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ওর পরিবারের কেউ সে খবর বাইরের কাউকে দেবে না। দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকলো তারপর শিউলী দেবী হটাৎ বললেন: আছে, একজন আছে যে তোমাকে সবটা না হলেও কিছু খবর দিতেই পারে রয় একটু অবাক হয় বলে: কে? শিউলী দেবী: বিদিশা রয়: বিদিশা মানে বীরেন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে রকির বউ? শিউলী দেবী: হ্যাঁ,ওই রয়: কিন্তু উনি কেন আমাকে সাহায্য করবেন? কারণ ও নিজেও ওই পরিবারকে খুব একটা পছন্দ করে না, তোমাকে সাহায্য করতে পারলে ওই পারবে। "রকি, রকি ভট্টাচার্য" দেওয়ালের পর্দায় একজনের ছবি ফুটে উঠেছে সেটা দেখিয়েই কথাটা বললো উসমান "বীরেন ভট্টাচার্যের দিদি বৈশালী ভট্টাচার্যের ছেলে মহিলা স্বামী মারা যাওয়ার পরে ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন এবং বাপের বাড়ির নামটাই ব্যবহার করেন তাই রকির নামের পরে ভট্টাচার্য"। তা এই রকি করেটা কি? বীরেন আর ধীরেন ভট্টাচার্যের মতো এটাও শয়তানের আরেকটা অবতার, নেশা, মারামারি মেয়ে এসব ছাড়া কিছুই জানেনা, তবে এখন নাকি মামার অবৈধ ব্যাবসাগুলো সামলায়, কিছু বছর আগে বীরেন ভট্টাচার্য এর বিয়ে দেন কিন্তু তারপরেও এর বাইরের মেয়েদের দিকেই নজর বেশি। কি ধরনের ব্যাবসা? আর সেগুলো অপারেট করে কোথা থেকে? এক্সটর্শান, কিডন্যাপিং তো আছেই এছাড়া মদের ঠেক চালায় তার পরে ইমপোর্ট এক্সপোর্টের ব্যাবসাও চালায়, আর অফিস তো একটা নয় তবে মেইন অফিসে সে কম আসে ওখানে বীরেন ভট্টাচার্য বসেন। কোথায় সেটা? আপনার মনে আছে স্যার তাথৈ ভট্টাচার্যের এক প্রেমিকের কথা বলেছিলাম অভয়। হ্যাঁ, তো তাতে কি? যে জমিটায় ওই অভয়দের বাড়ি ছিল ওটা এখন বীরেন ভট্টাচার্যের, ওখানেই ওনার অফিস, ওখান থেকেই বীরেন ভট্টাচার্য সব কন্ট্রোল করেন। আর বিদিশা ভট্টাচার্য? এরপর পর্দায় একটা মেয়ের ছবি ভেসে আসে বয়স রয়ের থেকে একটু ছোটো ২৯-৩০এর মধ্যে, স্লিম চেহারা, পরিষ্কার রঙ, মাথায় লম্বা কোকড়ানো চুল। ইনি বিদিশা ভট্টাচার্য নেতা অনিমেষ ব্যানার্জীর মেয়ে, কিছু বছর আগে অনিমেষ ব্যানার্জী একটা কেসে ফেঁসে যান তার চেয়ার তো যাবেই এমনকি তিনি জেলেও যেতে পারেন এমন অবস্থায় বীরেন ভট্টাচার্য তাকে বাঁচিয়ে দেন এবং বিনিময়ে.. বিনিময়ে বীরেন ভট্টাচার্য ভাগ্নে রকির জন্য এই ব্যানার্জীর মেয়েকে বউ করে নিয়ে আসেন। "তাহলে অবশেষে তোমার শিউলী দেবী মুখ খুললেন?" প্রশ্নটা এল আমিরের মুখ দিয়ে। আমার শিউলী দেবী? তাছাড়া আর কার? যারই হোক আমার নয়। তোমাদের মধ্যে যা হয়েছে তার পরেও বলছো? বলছি। সত্যি মহিলা পারেন বটে, পাশের ঘরে ছেলে ঘুমিয়ে আছে আর এদিকে উনি বয়সে অনেকটা ছোটো ছেলের সাথে ইন্টিমেট হচ্ছেন। যে মহিলা নিজের দিদির স্বামীর সাথে দিদি বেঁচে থাকতে সম্পর্কে জড়াতে পারেন তার থেকে আর কি আশা করো তুমি? তোমার কি মনে হয়? বিদিশার সম্পর্কে যা বললেন সেটা সত্যি? মানে ওই মেয়ে কি আমাদের হেল্প করবে? দেখা যাক তবে যদি এটা সত্যি হয় যে রকি ওকে মারধর করে, আর ওনার বিয়েটা যদি একটা ব্যাবসা হয় তাহলে করতেও পারেন। আর সেটা কিভাবে বুঝবে? বীরেন ভট্টাচার্যের বাড়িতে তোমার লোক আছে বলছিলে না? তাকে বলো নজর রাখতে। তাতে হবেটা কি? কোন খবর কখন কাজে লেগে যায় সেটা কে বলতে পারে? একটা রেললাইনের উপরের গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরী ওভারব্রিজের ধারে একাকী দাঁড়িয়ে নীচের দিকে দেখছিলেন বিদিশা ভট্টাচার্য, হাতে একটা ছোট পকেট ফ্লাস্ক, বলাইবাহুল্য সেটা অ্যালকোহলের সেটা মাঝে মাঝে মুখে দিয়ে একটু একটু করে পান করছিলেন তিনি, পরনে একটা সিল্কের ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি, স্লিভলেস ব্লাউজ যার পিঠ অনেকটা খোলা, মাথায় চুলটা খোপা করে রেখেছে, ঠোঁটে লিপস্টিক, গলায় একটা মঙ্গলসূত্র, সিঁথিতে অল্প একটু সিঁদুর, দুহাতে ভর্তি চুড়ি, নিজের মনে ড্রিংক করছিলেন আর আনমনে কি যেন ভাবছিলেন এমন সময় কাছেই একটা ছেলের "হ্যালো বিউটিফুল" শুনে না তাকিয়েই "গেট লস্ট" বলে একই ভাবে নীচে রেললাইনের দিকে তাকিয়ে রইলেন আর ক্রমাগত ফ্লাস্ক থেকে ড্রিংক করতে লাগলেন, ছেলেটা কিন্তু গেলোনা তার পাশে এসে বললো "নীচে ঝাঁপ দেওয়ার প্ল্যান করছেন? তা পঞ্জিকা দেখে এসেছেন?" এবার বিদিশা একটু চেঁচিয়ে উঠলো "আই সে গেট লস্ট"। আর যদি না যাই? জুতিয়ে গাল ছিঁড়ে নেবো ইউ স্কাউন্ড্রেল। এইভাবে একা করে ড্রিংক করে কোন ব্যাথাটা ভুলতে চাইছেন মনের না শরীরের? এবার বিদিশা পাশে তাকালো দেখলো প্রায় তারই বয়সী একটা ছেলে, মাথায় ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল, বেশ হ্যাণ্ডসাম চেহারা, পরনে একটা জ্যাকেট আর জিন্স। কিছুক্ষণ ছেলেটাকে নিরীক্ষণ করে বললেন: আপনি কি বলতে চাইছেন? "আপনি যে ব্লাউজটা পরেছেন সেটা পিঠের দিকে অনেকটাই ডিপ করে খোলা আর একটু ভালো করে দেখলেই সেখানে লম্বা দাগগুলো বোঝা যাচ্ছে আর এখন স্পষ্ট বুঝতে পারছি আপনার চোখের পাতা ভেজা অতএব.." চুপ করলো ছেলেটা। বিদিশা: আমাকে একটু একা থাকতে দিন, প্লিজ আপনি চলে যান। ছেলেটা: কেউ একজন বলেছিল দুঃখ শেয়ার করলে কমে আর আনন্দ শেয়ার করলে বাড়ে। বিদিশা: আমি কোনোকিছু শেয়ার করতে চাই না। ছেলেটা: আচ্ছা বেশ, আপনাকে শেয়ার করতে হবে না কিন্তু আমি তো এখানে থাকতে পারি। বিদিশা: বেশ, আপনি থাকুন আমি চললাম। বলে বিদিশা চলে যাচ্ছিল কিন্তু ছেলেটা বললো: অন্য কোথাও যাচ্ছেন সুইসাইড পয়েন্ট দেখতে? বিদিশা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো: আমি সুইসাইড করতে যাচ্ছি এটা আপনার মনে হলো কেন? ছেলেটা: অনুমান, ঠিক নাও হতে পারে। বিদিশা: না ঠিক নয়, আমি সুইসাইড করতে যাচ্ছি না আমার সে উপায় নেই। ছেলেটা: যদি কিছু মনে না করেন কেন একথা বলছেন জানতে পারি? বিদিশা: সবকথা আপনাকে বলতে যাবোই বা কেন? কে আপনি? ছেলেটা: আমার নাম রয়, আর আমি আপনার বন্ধু বা পরিচিত না হতে পারি কিন্তু শত্রু নই। বিদিশা রয়ের মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সুদর্শন দেখতে তাতে সন্দেহ নেই কি মনে হতে সে।আবার এসে রয়ের পাশে দাঁড়ালো বললো: আমি বিদিশা, বিদিশা ভট্টাচার্য, বীরেন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে রকির বউ। রয়: আচ্ছা তা বীরেন ভট্টাচার্যের ঘরের বউ এইভাবে এখানে একা কেন? বিদিশা: ভাবছি যে আমি কি অপরাধ করেছি যে আমাকে... বিদিশা চুপ করে গেল রয়: আপনাকে একা বেরোতে দিয়েছে? স্ট্রেঞ্জ। বিদিশা একটু বিষন্ন হেসে বললো: আমার প্রতি নজর দেওয়ার প্রয়োজননেই ওদের, আমাদের বিয়েটা শুধু একটা বিজনেস, রকি কোনোদিনই আমার প্রতি মনোযোগ দেয়নি ভালোবাসা তো কোন ছাড় রয়: আর আপনি? আপনি ওকে ভালোবেসেছিলেন? বিদিশা: ওরকম শয়তান কে ভালোবাসা যায় না, ও শুধু জানে অত্যাচার করতে মারধর করতে। বলতে বলতে বিদিশার মুখে একটু রাগ ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল, তারপর দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো:মাপ করবেন আপনাকে এসব বলা ঠিক হয়নি, আমি যাই বলে চলে যাচ্ছিল। রয় বললো: যাবেন কিভাবে? গাড়ি আছে? বিদিশা: না, দেখি ক্যাব নিয়ে নেবো। রয়: যদি আমাকে বিশ্বাস করেন তাহলে আমি লিফট দিতে পারি। বিদিশা: আপনি বীরেন ভট্টাচার্য আর রকিকে ভয় করেন না? ওরা যদি জানতে পারে যে আপনি ওদের ঘরের বউএর সাথে ফ্লার্ট করছেন তাহলে আপনাকে খুন করতে দু-বার ভাববে না। রয়: আমার কাউকে ভয় করে না আর তাছাড়া আপাতত আমার চিন্তা না করলেও চলবে আপনার। বিদিশা: আপনি কে বলুন তো? কি চান আপনি? রয়: বললাম তো আমি রয়, আর ধরে নিন আপাতত আপনার একাকীত্বে সঙ্গ দিতে চাই। বিদিশা: আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি যার ভয়ে পুরো শহরের লোক তটস্থ হয়ে থাকে আপনি সেই বীরেন ভট্টাচার্যের বাড়ির বউএর সাথে ক্রমাগত ফ্লার্ট করে যাচ্ছেন। রয়: আর আপনি সেটা এনজয়ও করছেন, তাইতো? বিদিশা কিছু বললো না রয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো, আবার ফ্লাস্কটা মুখে দিতে যাবে এমন সময় রয় বললো: ওটা রেখে দিন, ওটা খেয়ে কিছু হয় না। বিদিশা: আপনি জানেন না, এটা ব্যাথা কমাবার অব্যর্থ ওষুধ। রয়: না, ওটা ব্যাথার ওষুধ নয়, ওটা কোনো কিছুরই ওষুধ নয়। বিদিশা: আপনি কেন আমার সাথে লেগে আছেন? রয়: বললাম তো আমি আপনার একাকীত্বের সঙ্গী। বিদিশা: এটা মনের আর শরীরের দুজায়গারই ব্যাথার ওষুধ। রয়: আপনার ব্যাথা কমে? বিদিশা চুপ করে রইলো। রয়: চলুন আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দিই বিদিশা: আমি তো এখন বাড়ি যাবো না। তাহলে কি করবেন? জানিনা, এখন এভাবেই থাকবো। আপনার হাজবেন্ড এবং বাড়ির লোক চিন্তা করবে। বললাম না আমার জন্য চিন্তা করার সময় ওদের নেই। বিদিশা আবার ফ্লাস্কটা মুখে দিতে যেতেই রয় সেটা কেড়ে নিল। কি হলো ওটা ফেরত দিন। না। আপনার মর্জি নাকি? হ্যাঁ। কে আপনি, যে আপনার মর্জি মতো চলতে হবে আমাকে? আপাতত বন্ধু ভেবে নিন। আমার কোনো বন্ধু নেই। আমি আছি তো। আপনার নাম ছাড়া কিছু জানিনা আর বলছেন বন্ধু? এইবলে বিদিশা ব্রিজের ধারে ঘুরে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো এবং তক্ষুনি ব্যাথায় একটু চোখ বন্ধ করে সরে এলো, রয়ের বুঝতে বাকি রইলো না যে ওর পিঠে মারের জায়গায় ব্যাথাটা আছে এখনো। সে বললো: চলুন। কোথায়? বললাম না আমি এখন বাড়িতে ফিরবো না। আপনার বাড়িতে না, আমার বাড়িতে। বিদিশার মুখে আবার একটু রাগের আভাস দেখা গেল, বললো: আপনার সাহস তো কম নয়? আপনার পিঠে এখনো ব্যাথা আছে, ওখানে মলম লাগাবেন, তাহলে ব্যাথাটা কমবে, আপনি যখন নিজের বাড়ি যেতে চান না তখন আমার বাড়ি চলুন রাস্তায় ওখানে মলম লাগানো যাবে না। আমার দরকার নেই আমি ঠিক আছি, আপনি চলে যান। আপনার এখনো ব্যাথা আছে, তাই কথাটা বললাম। বিদিশা আবার রয়ের দিকে তাকালো। রয় বললো: আমি কাউকে জোর করিনা বেশ আমি চলে যাচ্ছি, গুড বাই। বলে সে চলে গেল একটু দূরে তার গাড়ি দাঁড় করানো ছিল গাড়িতে উঠে সবে চাবি লাগিয়ে স্টার্ট দিতে যাবে এমন সময় জানালায় ঠকঠক আওয়াজ হলো তাকিয়ে দেখে বাইরে দাঁড়িয়ে বিদিশা, রয় একটু অবাকই হলো কারণ সে ভেবেছিল বিদিশা আসবে না। সে দরজার লক খুলে দিলে বিদিশা গাড়িতে উঠে সামনে তার পাশে বসলো। রয়: কোথায় যাবেন? বিদিশা: কেন? আপনিই তো আপনার বাড়িতে ইনভাইট করলেন। আপনার বাড়িতে খুঁজবে না? ওরা জানে আমি আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে আছি। শহরের একটু বাইরের দিকে রয়ের নিজস্ব একটা বাড়ি আছে, মানে ওই বাগানবাড়ি টাইপের, একতলা একটা বাড়ি দেখতে খুবই সাধারণ কিন্তু আশেপাশে অনেকটা এরিয়া জুড়ে এলাকার সাধারন বাসিন্দাদের সাথে মিশে তার দলের লোক বাস করে তারা সশস্ত্র খালি চোখে দেখে তাদের সাধারণ লোকই মনে হয় কিন্তু তাদের রাখা হয়েছে রয়ের বডিগার্ড হিসেবে যাতে কোনো শত্রু আচমকা আক্রমণ না করতে পারে। "এখানে আপনি একা থাকেন?" রুমে ঢুকে বিদিশা জিজ্ঞেস করলো। হ্যাঁ, তবে আপনার ভয়ের কিছু নেই আমি রেপিস্ট নই, আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন, ডিনারে কি খাবেন? আপনার চাহিদা তো বেড়েই চলেছে এখন আবার আমাকে ডিনারে ইনভাইট করছেন? আপনি আমার গেস্ট গেস্টকে তো খালি পেটে রাখা যায় না, বলুন কি খাবেন? আপনি যা খাওয়াবেন। বলে রয়ের দেখানো ওয়াশরুমে চলে গেল বিদিশা, যেতে যেতে শুনলো রয় কাকে যেন ফোন করে রুমালি রুটি, ডিম তরকা আর মাটন কষা অর্ডার করলো। একটু পরে ওয়াশরুম থেকে জিজ্ঞেস করলো বিদিশা: আপনার কাছে আমার পরার জন্য কিছু আছে? রয় একটা গাউন ওয়াশরুমে এগিয়ে দিল, একটু পরে সেটা পরেই বেরিয়ে এল বিদিশা ভিজে চুলগুলো পিঠের উপর এলানো, বললো: নতুন গাউন কার জন্য কিনেছিলেন? ধরে নিন আপনার জন্য। মলমটা কি আমাকেই লাগাতে হবে কারণ সেটা সম্ভব নয়। আপনি বিছানায় উবুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন আর গাউনটা পিঠের উপর থেকে একটু নামিয়ে নিন, আমি লাগিয়ে দিচ্ছি। আমি নিজেও বুঝতে পারছি না কেন আপনার সব কথা আমি মেনে চলেছি। মেনে এখনো পর্যন্ত তো আপনার ক্ষতি হচ্ছে না। বিদিশা বেডরুমে গিয়ে নরম বিছানায় উবুড় হয়ে শুয়ে পরলো তারপর গাউনটা সামনের দিক থেকে খুলে পিঠের উপর থেকে কিছুটা নামিয়ে দিল যদিও কোমর থেকে বাকি নিম্নাঙ্গ ঢাকা, আর উবুড় হয়ে থাকার জন্য সামনের দিকটাও চাপা পরে গেছে, পিঠের উপর থেকে ভেজা চুলগুলো সরিয়ে ফেললো, এতে রয়ের সামনে বিদিশার খোলা পিঠের উপর আঘাতের দাগগুলো স্পষ্ট উন্মুক্ত হলো। রয় প্রথমে একটা আইসপ্যাকে কিছুটা বরফ নিয়ে আঘাতের জায়গাগুলোয় লাগাতে লাগলো, মাঝে মাঝে বিদিশা ব্যাথায় আঃ করতে থাকে, একটু পরে মলম লাগিয়ে দিল। তারপর বললো "আপনি কিছুক্ষণ এইভাবে শুয়ে থাকুন, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি"। কিন্তু বিদিশা একটু পরেই উঠে পরলো ঘরের ভিতরে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। "কি দেখছেন?" রয় ফ্রেশ হয়ে চেঞ্জ করে এসে বললো। আপনার ঘরটা। আরো একটু পরে অর্ডার দেওয়া খাবার চলে এল। রয় বললো: আসুন ডিনার রেডি। বিদিশা ডাইনিং টেবিলে বসতে রয় বললো: আপনি কখনো ক্যাণ্ডেল লাইট ডিনার করেছেন? না, আমার হাজবেন্ডের মধ্যে এতটুকুও রোমান্টিকতা নেই। যদি আপত্তি না থাকে তাহলে আজ আমি ব্যবস্থা করতে পারি। আপনি কি চাইছেন বলুন তো?আমার জন্য এতকিছু কেন করছেন? আমি শুধু আপনার মুখে হাসি ফোটাতে চাইছি, তো আপত্তি আছে? না, নেই। রয় তখন রুমের লাইট নিভিয়ে ডাইনিং টেবিলে কয়েকটা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখলো, দুজনে চুপচাপ ডিনার করতে থাকলো মাঝে মাঝেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে দেখছিল। ডিনারের পরে কিছুক্ষণ বসে দুজনে গল্প করলো দুজনেই নিজেদের কিছু কিছু কথা বললো যেমন পছন্দের হিরোইন কে, কেমন সিনেমা পছন্দ এইসব। একসময় বিদিশা জিজ্ঞেস করলো: এই যে কয়েক মিনিটের আলাপে আমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এলেন, এবং প্রায় অর্ধনগ্ন করেও ফেললেন এরকম কটা মেয়েকে করেছেন? রয়: বাড়িতে আপনিই প্রথম। আর বাইরে? না, বাইরেও খুব বেশি না তবে বিশ্বাস করুন আমি কাউকেই জোর করিনা, আমার কথা তো শুনলেন এবার আপনি বলুন। আমি পড়তে চেয়েছিলাম, লয়্যার হতে চেয়েছিলাম কিন্তু... তা এখন পড়ছেন না কেন? আপনিই তো বললেন ও বাড়িতে আপনার প্রতি নজর দেওয়ার কেউ নেই। কি হবে? আমি একজন বন্দী, লয়্যার হলেও সেটা পাল্টাবে না। আমি মুক্ত হতে চাইছেন না কেন? আপনার হাজবেন্ডের কাছে মুক্তি চান। সেটা সম্ভব নয়, বীরেন ভট্টাচার্য হতে দেবেন না। তার মানে সারাজীবন এইভাবেই থাকবেন? অত্যাচার সহ্য করবেন? এছাড়া আর উপায় নেই। আছে, উপায় আছে। মানে? আমি আপনাকে মুক্ত করতে পারি। বিদিশা যেন হতবাক হয়ে গেল এই কথা শুনে বললো: আপনি জানেন আপনি কি বলছেন? জানি। আর তারপর কি আপনার কাছে আসবো? না, নিজের মতো করে বাঁচবেন লয়্যারের পড়াশোনা কমপ্লিট করবেন। বিদিশা হো হো করে হেসে উঠলো, বেশ কিছুক্ষণ হেসে বললো: আপনি কি বলুন তো? আমার সাথে যে ফ্লার্টিং করছেন সেটা এবার থামান, আপনি বোধহয় এই শহরে নতুন তাই জানেন না যে বীরেন ভট্টাচার্য কে? তার ক্ষমতা কত? তাই এসব কথা বলেছেন। "আমি সিরিয়াস" গম্ভীরভাবে বললো রয়। বিদিশা ও কিছুক্ষণ গম্ভীর হয়ে বললো: আমার মনে হয় এবার আমার যাওয়া উচিত। বলে উঠতে যেতেই রয় বললো "রাত অনেক হয়েছে শুয়ে পড়ুন"। বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। বিদিশা ভেবে পেলনা যে রয় ওকে যেটা বললো সেটা সত্যি না ও মশকরা করছে, কিন্তু বীরেন ভট্টাচার্য নিজের স্বার্থে ওকে নিজের বাড়ির বউ করে এনেছেন তাই উনি কিছুতেই চাইবেন না যে বিদিশা ওনার কবল থেকে মুক্তি পাক তাহলে বিদিশার বাবাও বীরেন ভট্টাচার্যের কবলে থাকবে না আর এই শহরে বীরেন বাবুর বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস কারও নেই, কিন্তু বিদিশা যে আর সত্যিই পারছে না শুধু যে রকির অত্যাচার তা তো নয় ওর মা বৈশালী দেবীও একই রকম। এইসব ভাবতে ভাবতেই বিদিশা ঘুমিয়ে পড়লো। ওদিকে ড্রয়িংরুমে একটা সোফায় শুয়ে রয় ভাবছে, বিদিশার উপর বাজী খেলে ও ভুল করলো না তো, শিউলী বলেছে বিদিশা সাহায্য করতে পারে, কিন্তু যদি না করে? বা আদৌ ওর সাহায্য করার মতো কোনো ক্ষমতা আছে কিনা সেটারই তো ঠিক নেই, বিদিশা যদি সাহায্য না করে তাহলে আবার নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে হবে, আবার নতুন করে প্ল্যানিং করতে হবে, শেষটায় নিজের মনেই বললো রয়: যাই হয়ে যাক সে বীরেন ভট্টাচার্যের শেষ দেখে ছাড়বে। "এখন তো মনে হচ্ছে ওই সরকারই সব করেছিল" বললেন ধীরেন বাবু উদ্দেশ্য দাদা বীরেন ভট্টাচার্য। অফিসে বসে কথা বলছিলেন দুজনে। বীরেন বাবু: কিন্তু খটকাটা কিছুতেই যাচ্ছে না। কিসের খটকা? মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না, আর তাছাড়া শিউলীরও তো কোনো খোঁজ পেলাম না, ওর ছেলের কলেজে খোঁজ নিয়েছিলাম। কি বললো? টিসি নিয়ে গেছে। তার মানে নিজেই পালিয়েছে। ওকে খুঁজতেই হবে ধীরেন, নাহলে ফাঁড়াটা রয়েই যাবে কখন যে কি করে বোঝা মুশকিল। আমাদের লোক খুঁজেই চলেছে, কতদিন আর লুকোবে? কিন্তু ধর যদি কেউ সাহায্য করে তখন? কে হতে পারে? তোর বৌদি, হাজার হোক বোন তো, আর তাছাড়া... তাছাড়া কি? কে বৃষ্টি আর তাথৈএর সম্বন্ধে খোঁজখবর করছিল? হয়তো সে এই সরকারের লোক? তাহলে তো বলতে হয় বিপদ এখনো কাটেনি। তাহলে এখন কি করতে বলছো? সরকারের অনুগত যারা ছিল তাদের সাথে কথা বল, হয় তারা আমাদের সাথ দেবে আর নাহয়... বুঝেছি, ঠিক আছে তাই হবে। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
|
« Next Oldest | Next Newest »
|