24-08-2022, 02:27 PM
Waiting for new update
Romantic Thriller প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ (সমাপ্ত)
|
24-08-2022, 02:30 PM
24-08-2022, 02:49 PM
খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী আপডেট আসবে
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-08-2022, 04:03 PM
24-08-2022, 04:36 PM
(24-08-2022, 04:03 PM)Dushtuchele567 Wrote: Ok dada thnx.. Apnar sathe ki personally kotha bolte pari? ঠিক আছে ম্যাসেজ করুন I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-08-2022, 07:48 PM
24-08-2022, 08:38 PM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
24-08-2022, 11:27 PM
(This post was last modified: 26-08-2022, 08:49 AM by Monen2000. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
তৃতীয় পর্ব
সাধের হোটেলের কনস্ট্রাকশন সাইটে যখন পৌঁছালেন বীরেন ভট্টাচার্য তখন আর জায়গাটা ফাঁকা বা অন্ধকার কোনোটাই নেই, গাড়ি থেকে নামতেই এগিয়ে এলেন ভাই ধীরেন, তিনিই দাদাকে ফোন করে ডেকেছেন,গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই মিডিয়ায় লোকজন ঘিরে ধরলো "বীরেন বাবু আপনার সাইটে এরকম ঘটনা এবিষয়ে আপনার মতামত কি?" "বীরেন বাবু এবার কি হবে এই হোটেলের? এটা কি মাঝপথেই তৈরি হওয়া থেমে যাবে?" এরকম আরো প্রশ্নবাণ ঝেকে আসতে লাগলো কিন্তু ধীরেন বাবু কোনোমতে দাদাকে মিডিয়ায় আক্রমণ থেকে আগলিয়ে পুলিশের ঘেরাটোপের ভিতরে নিয়ে গেলেন, ভিতরে গিয়ে যা দেখলেন তাতে বীরেন বাবুর বুক একটু হলেও কেঁপে উঠলো, একটা জিপগাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে আর তার ভিতরে ছটা সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে যাওয়া ডেডবডি, কেউ যেন প্রথমে ছটা লোককে জিপের ভিতরে বসিয়ে তারপর আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে প্রত্যেকটা শরীরের মুখ বাধা এবং দুটো হাত পিছমোড়া করে বাধা।
মিডিয়াকে কে ডেকেছে? গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞেস করলেন বীরেন ভট্টাচার্য জানিনা, আমি যখন এলাম তখনই অলরেডি মিডিয়া এসে গেছে উত্তর দিলেন ধীরেন বাবু। একজন পুলিশ অফিসার এগিয়ে এলেন বীরেন বাবুর দিকে বললেন: স্যার, পোড়ানোর আগে ছজনকে টর্চার করা হয়েছে আমরা বেশ কয়েকজায়গায় রক্তের দাগ পেয়েছি, খুব সম্ভবত প্রথমে পিটিয়ে তারপর জ্যান্ত অবস্থাতেই জিপে তুলে আগুন লাগানো হয়। জ্যান্ত অবস্থাতেই? বললেন ধীরেন বাবু খুব সম্ভবত তাই তানাহলে হাত-মুখ বাঁধার দরকার হতোনা উত্তর দেন পুলিশ অফিসারটি। কিছু জানতে পারলেন কারা একাজ করেছে? জিজ্ঞেস করেন বীরেন বাবু, না স্যার তবে আমরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। নীচু স্বরে জবাব দেন পুলিশ অফিসারটি এমন সময় ধীরেন বাবুর মোবাইলে একটা ফোন আসে তিনি একটু সরে কিছুক্ষণ কথা বলে আবার ফিরে এসে দাদাকে বলেন "যে কোম্পানি ইনভেস্ট করছিল তারা খবর পেয়েছে, এবং এখানে যে এখন কাজ বন্ধ থাকবে সেটাও তারা বুঝতে পেরেছে" বীরেন বাবু ভাইয়ের মুখের দিকে তাকালেন কোনো কথা বললেন না ধীরেন বাবু আবার বলা শুরু করলেন "ওরা আর ইনভেস্ট করতে চাইছে না, ডিল ক্যানসেল করতে চাইছে আর.. যে টাকা ওরা অলরেডি দিয়েছে সেটা ফেরত দিতে হবে"। শুনে মুখ কঠিন হয়ে গেল বীরেন ভট্টাচার্যের, চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন: খোঁজ নাও কারা একাজ করেছে, এই শহরে কার বুকে এত সাহস যে আমার সাথে লাগতে আসে, আমার লোকের গায়ে হাত দেয়, আমার লোকদের পুড়িয়ে মারে খোঁজ নাও। উসমানের ডেরার ভিতরের ঘরে মিটিং চলছে, সবার মুখেই একটা খুশীর ভাব শুধু যাকে সবাই বস বলে ডাকে তার মুখই গম্ভীর, তাই দেখে আমির বললো: তুমি খুশী হওনি? খুশি হবার মত কিছুই হয়নি আমির। কি বলছো? একে তো ওই ছটা জানোয়ার মরলো তার উপর খবর পেয়েছি যারা ওই হোটেলের জন্য ইনভেস্ট করছিল তারা আর ইনভেস্ট করবে না এবং যত টাকা এতদিন দিয়েছে সেটাও ফেরত চেয়েছে। তাতে বীরেন ভট্টাচার্যের একটা ছোট চুলও ছেঁড়া যাবে না, তবে হ্যাঁ পৃথিবী থেকে ছটা জানোয়ার কমলো। এবার ঘরের একজন ছেলে বললো: স্যার, যদি কিছু মনে না করেন একটা প্রশ্ন করবো? লিডার ছেলেটি তার দিকে তাকিয়ে বললো: বলো সেই ছেলেটি: শুধু একটা পাগলীর জন্য শুধু যে এভাবে আপনি রেগে গেলেন তাই নয়, ওই জানোয়ারগুলোকে... বলছি স্যার ওই পাগলী মহিলাটি কি আপনার কেউ হতেন? লিডার ছেলেটি: শুধু পাগলী বলেই কি তাকে খুন করার অধিকার জন্মে যায়? তা নয় স্যার..কিন্তু "বেশ বলছি শোনো, কোথা কবে জানলাম জিজ্ঞেস কোরো না আমি উত্তর দেবো না, শুধু ওই পাগলীটার কথাই বলছি, ওকে পাগলী বানিয়েছিল ওই বীরেন ভট্টাচার্য" বলে চলে লিডার ছেলেটি "ওই মহিলা একটা কলেজের শিক্ষিকা ছিলেন, ওনার একটা ছোট্ট মেয়ে ছিল আর এক স্বামী যিনি একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করতেন, মেয়ে-মহিলাদের প্রতি ওই বীরেন ভট্টাচার্যের লোভ বহু পুরনো, এবার ওর কুনজর পরে ওই শিক্ষিকার উপর একরাতে ওদের তিনজনকে তুলে নিয়ে যায় আর তার পরদিন ওনাদের বাড়িটা দগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় যার মধ্যে দুটি লাশ যার একটি একটা বাচ্চা মেয়ের, কিন্তু ওই শিক্ষিকার খোঁজ পাওয়া যায় না, পুলিশ বলে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছে তারপর বেশকিছুদিন পরে ওই মহিলাকে ছেঁড়া কাপড়ে রাস্তায় ঘুরতে দেখা যায়, দু-পা বেয়ে রক্ত ঝরছে তখন তিনি বদ্ধ পাগল, শুধু মুখে কটা কথা "আমার মেয়েকে খেয়েছে, আমার স্বামীকে খেয়েছে, ও মরবে" তারপর কোথাও আবার চলে যান" একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার শুরু করে লিডার ছেলেটি "কয়েকজন মিলে ওর চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান ডাক্তার বলেন ওকে রেপ করা হয়েছে এবং তারসাথে কোনো বড়ো মানসিক আঘাত পেয়েছেন যার ফলে ওনার মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটেছে".. "আমার ধারণা যেটা সেটা হলো খুব সম্ভবত ওনার চোখের সামনেই ওনার মেয়ে আর স্বামীকে খুন করে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় আর তারপর ওনার উপর অত্যাচার চালায় বীরেন ভট্টাচার্য" এবার বুঝলে? বুঝেছি স্যার কিন্তু উনি কি আপনার কেউ? শুধু রক্তের সম্পর্কটাই কি সব? রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও অনেক সম্পর্ক থাকে একজন ভালো মানুষের সাথে অন্য মানুষের। এবার উসমান বলে: স্যার আরেকটা খবর পেয়েছি, দরকারি হতে পারে। বলো বললেন লিডার ছেলেটি। এবার উসমান দেয়ালের পর্দায় একজন মহিলার ছবি দেখালো সাথে একটা বাচ্চা ছেলে মহিলার বয়স আন্দাজ ৪৫ কি ৪৬ হবে, শ্যামলা কিন্তু পরিষ্কার বয়সের সাথে মুখের শ্রীভাবটা নষ্ট হয়নি শরীরে এখনো একটা বাঁধুনি আছে যেটা এখনো যেকোনো পুরুষকে আকর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট আর বাচ্চার বয়স ৮ থেকে ১০ এর মধ্যে। ছবিটা কিছুক্ষণ ভালো করে দেখলো লিডার ছেলেটি তারপর জিজ্ঞেস করলো: কে ইনি? উসমান বলে চললো: এনার নাম শিউলী দেবী আর ওনার ছেলে রোহিত, এই শহরেই থাকেন তবে একটু বাইরের দিকে। আমির জিজ্ঞেস করলো: কিন্তু এনার সাথে বীরেন ভট্টাচার্যের কি সম্পর্ক? এরপর উসমান যা যা বলে গেল সেটা শুনে ঠোঁটের কোণে একটা মুচকি হাসি খেলে গেল লিডার ছেলেটির, তারপর বললো: আর এত ইম্পরট্যান্ট কথাটা এতদিন বলোনি? উসমান একটু থতমত খেয়ে গেল "আসলে স্যার সবে খবরটা পেলাম, আর তারপর ওই জানোয়ারগুলোকে.." মাঝপথেই থামতে হলো উসমানকে কারন লিডার ছেলেটি আবার কথা বলতে শুরু করেছে "খুব ভালো কাজ করেছো উসমান, এভাবেই করতে থাকো" ধন্যবাদ স্যার, উসমানের মুখে খুশি ফুটে ওঠে। "শোনো উসমান" বলে লিডার ছেলেটি "তোমাদের আরো দুজনের সম্বন্ধে জানতে হবে, পুরো ডিটেইলস" কারা স্যার? জিজ্ঞেস করে উসমান। "বৃষ্টি আর তাথৈ ভট্টাচার্য" বলে লিডার ছেলেটি, একটু চুপ থেকে আবার বলে "ওরা বাইরে পড়াশোনা করেছে সেখানে ওরা কি কি করেছে কাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে সব ডিটেইলস, বুঝেছো?" "হয়ে যাবে স্যার" উসমান জবাব দেয়। তারপর আবার সামনের পর্দায় ভেসে ওঠা শিউলী দেবী নামক মহিলার ছবির দিকে তাকিয়ে লিডার ছেলেটি বলে "এনার ঠিকানাটা আমাকে ম্যাসেজ করে দাও, আর.." তারপর ঘরে উপস্থিত সবার দিকে তাকিয়ে বলে "কারো কোনো সমস্যা নেই তো? থাকলে বলতে পারো সবার বাড়ির লোকজন ঠিক আছে?" সবাই একযোগে জানায় আপাতত সব ঠিক আছে, এবার লিডার ছেলেটি বলে "যখনই কোনো দরকার হবে তা সে টাকা হোক বা অন্য কোনো সমস্যা আমাকে জানাবে, আমাকে না পারলে আমিরকে জানাবে,ঠিক আছে?" অবাক হয়ে যায় উসমান, এই লোকটাকে সে ঠিক মতো চিনতে পারে না, এতদিন তার হয়ে কাজ করছে অথচ তাও চিনতে পারে না ,লোকটার আসল নাম আজ অবধি জানেনা উসমান, লোকটা যেমন প্রয়োজনে প্রচণ্ড পরিমাণে নিষ্ঠুর, হিংস্র আর ক্রুর হতে পারে ঠিক তেমনই একই সাথে নিয়মিত দলের প্রত্যেকের খোঁজখবর নেয়, দরকারে সবার পাশে দাঁড়ায় যদি জানতে পারে কেউ ভীষণ সমস্যায় পরেছে অথচ জানায়নি তখন ধমক দিতে ছাড়ে না ঠিক বড়ো দাদার মতো, পুরো দেশেই লোকটার দলের লোকজন ছড়িয়ে আছে আর প্রত্যেকের সাথেই সমান ব্যবহার, দলের প্রত্যেকেই তাকে যেমন ভয় করে তেমনি সম্মান করে আবার ভরসাও করে, দলের সবাই জানে প্রয়োজনে তাদের পাশে এই লোকটি দাঁড়াবেই তাই তারাও লোকটার জন্য নিজেদের জান কবুল করতে দুবার ভাবে না। বীরেন ভট্টাচার্যের অফিসে আলোচনা চলছে, টেবিলের একদিকে একটা চেয়ারে বসে বীরেন ভট্টাচার্য ,তার সামনে একটা চেয়ারে বসে ধীরেন বাবু আর বাকি দুটি চেয়ারে বসে আছেন দুইজন পুলিশ অফিসার সবার মুখ গম্ভীর ও চিন্তার ভাব প্রকট। তুলনায় জুনিয়র পুলিশ অফিসারটির নাম অসীম,তিনি বললেন: আমরা পুরো চেষ্টা করছি স্যার কারা এই কাজ করেছে, আমাদের সবকটা খবরিকে অ্যাক্টিভেট করেছি, আপনার যেকজন অপজিশন আছে তাদের প্রত্যেকের পিছনে লোক লাগানো হয়েছে। সিনিয়র অফিসারটি বললেন: চেষ্টা নয়, রেজাল্ট চাই অসীম, যে করে হোক ধরতেই হবে। তারপর বীরেন বাবুর দিকে ফিরে বললেন: আপনি চিন্তা করবেন না স্যার, যেই করুক ধরবোই। বীরেন ভট্টাচার্য বললেন: ঠিক আছে আপনারা আসুন এবার। অফিসার দুজন ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, গম্ভীরমুখে বসে কিছু একটা ভাবতে থাকেন বীরেন বাবু। কি ভাবছো দাদা? জিজ্ঞেস করলেন ধীরেন বাবু। ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে জবাব দেন বীরেন বাবু "ভাবছি এটা যদি অপজিশন পার্টির লোকের কাজ না হয় তখন?" মানে? কি বলতে চাইছো তুমি দাদা? যদি নতুন কোনো শত্রু হয়? কিন্তু এই শহরে তোমার সাথে শত্রুতা করার সাহস কারো নেই, এটাও তো হতে পারে যে ওরাই কারো সাথে ঝামেলা করেছিল তারই প্রতিশোধ নিয়েছে সে। তবুও সাবধানের মার নেই তুই সিকিউরিটি বাড়িয়ে দে, পরিবারের প্রত্যেকের জন্য এক্সট্রা বডিগার্ড লাগিয়ে দে। ঠিক আছে দাদা আমি আজকেই ব্যবস্থা করে ফেলছি। বলে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন ধীরেন বাবু। বীরেন বাবু বসে বসে কিছু একটা ভাবতে থাকেন। শহরের বাইরের দিকে থাকেন শিউলী দেবী ছেলে রোহিত কে নিয়ে, সকালে ঘরের কাজ করে, ছেলের খাবার তৈরি করে ছেলেকে রেডি করে কলেজে দিয়ে আসেন তারপর বাড়ি এসে লাঞ্চ সেরে একটু বিশ্রাম তারপর বিকেলে কলেজ থেকে ছেলেকে নিয়ে আসেন আবার খাইয়ে টিউশনিতে নিয়ে যান, ছুটির দিন পাড়ার পার্কে নিয়ে যান ছেলেকে খেলার জন্য এই তার প্রাত্যহিক রুটিন কিন্তু ইদানিং ছেলের কলেজ-টিউশনি বন্ধ আছে, ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গেছে রেজাল্ট না বেরোনো পর্যন্ত নতুন ক্লাস শুরু হবে না, তাই এখন কলেজ-টিউশনি বাদ গেছে রুটিন থেকে, এখন শুধু বিকেলে ছেলেকে পার্কে নিয়ে যান খেলার জন্য। এরকমই একদিন ছেলে পার্কে খেলছে শিউলী দেবী পার্কের একধারে বসার বেঞ্চিতে বসে আছেন, আশেপাশের আরো কয়েকটা বেঞ্চে আরো কয়েকজন বসে আছে, শিউলী দেবী ছেলের দিকে নজর রেখে বসে আছেন এমন সময় "শিউলী দেবী" ডাকটা শুনে চমকে উঠলেন, দেখলেন বেঞ্চের পাশে একটা ছেলে এসে দাঁড়িয়েছে, পরনে কালো রঙের হুডি আলা জ্যাকেট, জ্যাকেটের চেন খোলাআর কালো জিন্স,হুডিটা মাথায় পরে আছে চোখে কালো গগলস্, মুখ একটা রুমাল দিয়ে বাঁধা রুমালটায় একটা মানুষের স্কালের ছবি ,ছেলেটার দুটো হাত জ্যাকেটের পকেটে ঢোকানো ,ছেলেটার হাইট সাড়ে ৫ ফুট কি তার থেকে একটু বেশি, মুখ যদিও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না ঢেকে রাখার কারনে তবে বয়স আন্দাজ ৩০ এর আশেপাশে হবে, ছিপছিপে চেহারা, খুব বেশি রোগা নয় আর মোটা তো নয়ই,জিম করা শরীর কিন্তু পেশীর আধিক্য নেই সেটা বোঝা যাচ্ছে। ছেলেটা আবার বললো: শিউলী দেবী আপনার সাথে আমার একটু কথা ছিল যদি.. শিউলী দেবী: কে আপনি? আপনাকে আমি চিনি বলে তো মনে হয় না। ছেলেটি বললো: না, আমাকে চেনেন না কিন্তু আমি একটা দরকারে আপনার কাছে এসেছি শিউলী দেবী: কি দরকার? ছেলেটি: এখানেই শুনবেন? এখানে অনেক লোক যদি কিছু মনে না করেন তাহলে সামনের ওই রেস্টুরেন্টে বসে কফি খেতে খেতে কথা বলা যাক? রেগে উঠলেন শিউলী দেবী বললেন: আপনার সাহস তো কম নয়? এক্ষুনি যদি আমি চিৎকার করি তাহলে আশেপাশের লোক এসে আপনার কি অবস্থা করবে জানেন? ছেলেটি: কিন্তু আমি তো আপনার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি, আমি শুধু আপনার সাথে কয়েকটা কথা বলতে চাই কারণ আমার আপনার সাহায্য চাই। শিউলী দেবী: আপনাকে আমি চিনিনা জানিনা তাই সাহায্য করার প্রশ্নই বা উঠছে কেন? ছেলেটা বললো: আমি যে কাজের দরকারে আপনার সাহায্য চাইছি সেটা আপনিও চান আর সেটা বীরেন ভট্টাচার্য সম্পর্কিত। নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না শিউলী দেবীর, এই ছেলেটা কি বলছে এইসব? এই এলাকায় কেউ জানেনা যে তিনি বীরেন ভট্টাচার্যের পরিচিত তবে এই ছেলেটা কিভাবে জানলো? আপনি কি বলছেন আমি কিছু বুঝতে পারছি না কোনোমতে বলেন শিউলী দেবী। বোঝানোর জন্যই তো একটু কথা বলতে চাইছি জবাব দেয় ছেলেটি। এবারে একটু ঝাঁঝালো গলায় শিউলী দেবী বলেন: আপনি জানেন আপনি কার সাথে কথা বলছেন? জানেন আমি কে? ছেলেটি বললো: জানি শিউলী দেবী অবাক হন "জানেন?" জানি বলে ছেলেটি তারপর একটু চারিদিকে দেখে নিয়ে গলার স্বরটা কমিয়ে বলে আপনার একটা লোক দেখানো পরিচয় আছে সেটা হলো আপনি বীরেন ভট্টাচার্যের শ্যালিকা এবং লোকের থেকে লুকোনো আরেকটা পরিচয় আছে সেটা হলো আপনি বীরেন বাবুর একসময়ের.. রক্ষিতা আর তার প্রমাণ আপনার ছেলে রোহিত। স্তব্ধ হয়ে ছেলেটির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন শিউলী দেবী তারপর তোতলাতে তোতলাতে কোনোমতে বলেন: আপনি কিভাবে জানলেন, আপনি কে বলুন তো? ছেলেটি: চলুন কফি খেতে খেতে বলছি, এখানে আপনার অনেক পরিচিত আছেন তাদের বলুন আপনার ছেলের দিকে কিছুক্ষণের জন্য একটু নজর রাখতে, ঘাবড়াবেন না আমি আপনার শত্রু নই। পা কাঁপছে শিউলী দেবীর তাও কোনোমতে উঠে পাশের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে গিয়ে সেখানে বসা একজন মহিলাকে কিছু বলেন তারপর ফিরে এসে ছেলেটিকে বলেন "আসুন" রেস্টুরেন্টে এক কোণে একটা ফাঁকা টেবিল ছিল দুজনে সেখানে বসলেন, কফি অর্ডার দেওয়ার একটু পরেই চলে এল, কফিতে এক চুমুক দিয়ে শিউলী দেবী বলেন: এবার বলুন, আমার সম্পর্কে এত কথা কিভাবে জানলেন আপনি, আর তার আগে আপনার পরিচয় দিন। ছেলেটি বলে: আমি আরো অনেক কথাই জানি যেমন আপনি একবার বীরেন ভট্টাচার্য কে তারই বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করে এসেছিলেন খুব সম্ভবত আপনাদের সম্পর্ক ফাঁস করে দিয়েছিলেন কিন্তু কেউ আপনার কথা বিশ্বাস করেনি এমনকি আপনার দিদিও না, তখন আপনি সেখান থেকে চলে আসেন কিন্তু একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না সেটা হলো বীরেন ভট্টাচার্য যে ধাঁচের লোক তাতে উনি আপনাকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছেন কেন? শিউলী দেবী: কারণ আমাকে তখন মারলে ওর পলিটিক্যাল কেরিয়ার ঝামেলায় পড়ে যেত, একজন মহিলা ওর বাড়িতে ঝামেলা করার পরপরই মারা গেল এটা.. ছেলেটা: বুঝেছি, কিন্তু তাও তারপর এত বছর রাখলেন কেন? শিউলী দেবী: আমার দিদির জন্য, ও আমার কথা বিশ্বাস করেনি ঠিক কিন্তু আমার কোনো ক্ষতি হোক সেটা চায়না বীরেন ভট্টাচার্য আমার ক্ষতি করতে পারে তাই ও আমার প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল। ছেলেটি: কিন্তু আপনি তো এখনো বীরেন ভট্টাচার্যের কীর্তি ফাঁস করে দিতে পারেন ,তাহলে এখনো.. শিউলী দেবী: ও জানে যে এখন আমি ওর বিরুদ্ধে কিছু করবো না, কারণ করলে ও আমার.. আর কোনো কথা বলতে পারলেন না শিউলী দেবী। ছেলেটা ইতিমধ্যে মুখ থেকে রুমাল আর চোখ থেকে গগলস্ খুলে ফেলেছে, মাথা থেকে হুডিটা সরিয়েছে, শিউলী দেবী দেখলেন মাথায় চুল অনেকটা লম্বা ঘাড় পর্যন্ত নেমে এসেছে আর সামনের দিকে মাঝখানে সিথি কাটা তারপর দুসাইডে আলাদা ভাবে ব্যাকব্রাশ করা কপালের উপরে চুলটা ঢেউ এর মতো উঁচু হয়ে দুদিকে নেমে পিছনে চলে গেছে, সাথে একেবারে ক্লিন শেভড মুখ ছেলেটার, একদম ফর্সা সাদা না হলেও গায়ের রঙ ফর্সাই বলা চলে বেশ সুদর্শন দেখতে, ছেলেটার মুখ এখন রাগে লাল হয়ে গেছে, ফলে তাকে আরো ধারালো এবং সুন্দর লাগছে দেখতে, শিউলী দেবী বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন ছেলেটার দিকে, ছেলেটা বললো: নিজের ছেলের প্রতি ও ওর টান নেই? লোকটার মধ্যে কি এতটুকুও মনুষ্যত্ব নেই? মানুষ হলে তো মনুষ্যত্ব থাকবে? জবাব দেন শিউলী দেবী ,একটু থেমে আবার বললেন: ও একটা জানোয়ার এবার বুঝতে পারছেন তো যে আমি আপনার কোনো কাজে আসবো না, কোনো সাহায্য করতে পারবো না। ছেলেটা বললো: আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু আমি যদি বলি আপনার আর আপনার ছেলের কোনো ক্ষতি আমি হতে দেবো না, তাহলে বিশ্বাস করবেন? শিউলী দেবী আরও অবাক হন এ ছেলেটা বলে কি? পুরো শহর জুড়ে যার আধিপত্য তার বিরুদ্ধে এই ছেলেটা যাবে? বিশ্বাস হয় না শিউলী দেবীর। ছেলেটা আবার বলে "আমি জানি এভাবে অচেনা কাউকে বিশ্বাস করা কঠিন কিন্তু চেনা লোককে বিশ্বাস করে তো ঠকেছেন এবার নাহয় অচেনা একজনকে বিশ্বাস করে দেখুন নাও ঠকতে পারেন। শিউলী দেবী বলেন: আপনার নাম পর্যন্ত আমি জানিনা আর আপনি বলছেন আপনাকে বিশ্বাস করতে? আর আমি নিজেকে রক্ষা করতে পারি ছেলেটা বলে: সেতো দেখতেই পাচ্ছি, যে কোনো কারনেই হোক বীরেন ভট্টাচার্য আপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, কিন্তু যেদিন উনি আপনার আত্মরক্ষার বর্মে ছিদ্র পাবেন সেদিন কিন্তু... শিউলী দেবী: কিন্তু আমি আপনাকেই বা বিশ্বাস করবো কেন? ছেলেটা: কারণ দরকারটা আমারও আর আমার নাম রয়। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আপনার আর আপনার ছেলের ক্ষতি তো হতে দেবোই না এমনকি আপনি যদি চান তাহলে আপনাদের দুজনকে বীরেন ভট্টাচার্যের কবল থেকে মুক্ত করতে পারি। শিউলী দেবী যেন চমকে ওঠেন কাঁপতে কাঁপতে বলেন: ওর অনেক ক্ষমতা, আপনি জানেন না, ও আপনাকে মেরে ফেলবে, আর তারপর আমাদের রয় বলে: ও আমাকে অনেক বছর আগেই মেরে ফেলেছে, আর এখন আমি ওর মৃত্যু হয়ে ফিরে এসেছি, আচ্ছা এক কাজ করা যাক আগে আমি আপনাদের ওর কবল থেকে উদ্ধার করে একটা সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে যাই,আপনার ছেলেকে সুরক্ষিত করি তারপর নাহয় যদি আমাকে বিশ্বাস হয় তো আমাকে সাহায্য করবেন, আপনি এক কাজ করুন আজ রাতের মধ্যেই আপনাদের দুজনের দরকারি জিনিস গুছিয়ে নিন কাল সকালেই আমি নিজে এসে আপনাদের সেফ জায়গায় নিয়ে যাবো, আপাতত তো আপনার ছেলের কলেজ ছুটি তাই অসুবিধা হবে না। শিউলী দেবীর যেন তাও বিশ্বাস হতে চায় না তিনি একদৃষ্টিতে দেখতে থাকেন রয়কে, সেটা দেখে রয় বলে: আমি আপনার পরিচিত নই, কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি আপনার শত্রুও নই। রাতে ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে ড্রয়িংরুমে বসে বিকেলে রয় নামের ছেলেটার কথাই ভাবছিলেন শিউলী দেবী, ছেলেটা কি সত্যিই তাদের ভালো চায়? নাকি নিজের কোনো স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছে, পরক্ষনেই তার মনে হয় ছেলেটা তো বলেইছে যে বীরেন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ওর সাহায্য লাগবে, কিন্তু বীরেন যদি জানতে পারে তাহলে তাকে আর রোহিতকে মেরে ফেলবে, কাল সকালে কি ছেলেটা সত্যিই আসবে? এলে কোথায় নিয়ে যাবে? এইসব কথাই ভাবছিলেন এমন সময় দরজায় ঘনঘন কলিং বেল বেজে উঠলো, চমকে উঠলেন তিনি এতরাতে আবার কে এল? যে খবর জোগাড় করতে বলেছিলাম হয়েছে? জিজ্ঞেস করলো রয় হ্যাঁ, ছোট্ট উত্তর উসমানের। ঠিক আছে আগে বৃষ্টির সম্পর্কে বলো বীরেন ভট্টাচার্যের মেয়ে এটা তো জানেন স্যার, খুব ছোটোবেলায় একেও তাথৈ এর সাথে বাইরে পড়তে পাঠিয়ে দেন বীরেন বাবু, ওখানে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়েছে তবে কোথাও কাজ করে না, অবশ্য তার দরকারো নেই কিন্তু মাঝে মাঝে শখের বশেই কোনো কোনো কোম্পানির হয়ে কিছু কিছু কাজ করে দেয়, নাইটক্লাব, পার্টি এইসব খুব পছন্দ করে ,সবথেকে বড়ো কথা ছেলেদের খেলাতে ভালোবাসে, অনেক ছেলেই এর পিছনে ঘোরে কিন্তু সেই অর্থে কারো সাথেই রিলেশন নেই, এবং এখানে এসেও ওই নাইট ক্লাব, বারে গিয়ে পার্টি করা, ড্রিংক করা এইসব নিয়েই আছে, কথা শেষ করলো উসমান। আর তাথৈ? প্রশ্ন করে রয় উসমান শুরু করে: তাথৈ এর একদম উল্টো, পড়াশোনায় বৃষ্টির থেকে অনেকটাই ভালো, ইকোনমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করেছে, বর্তমানে মাঝে মাঝে বাবা ধীরেন বাবুর সাথে অফিসে যায় ব্যাবসা বোঝার জন্য বোধহয়, ভট্টাচার্য পরিবারের বাকীদের থেকে তাথৈ অনেকটাই আলাদা, অন্যায়ের সাথে কখনো আপস করে না, অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করে, গরীব-দুঃখীদের অনেক সাহায্য করে, তবে এও কোনো ছেলেকেই পাত্তা দেয়না তার একটা কারনও আছে অবশ্য কি কারন? প্রশ্নটা করেন আমির ওর সাথে পড়েছে এমন কিছু মেয়ের সাথে কথা বলেছিল আমার লোক, প্রায় প্রতিটা মেয়েই বলেছে তাথৈকে কখনো কোনো ছেলের সাথে দেখেনি এমনকি কোনোদিন কোনো ছেলের পাশেও বসেনি, তবে অনেকেই ওর মন পাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু কাউকেই পাত্তা দেয়নি, বান্ধবীরা তাকে এ নিয়ে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিল প্রতিবারই নাকি তাথৈ তাদের একই কথা বলেছে যে সে অন্য একজনের প্রতি কমিটেড কিন্তু কে সেটা সে কোনোদিন কাউকে বলেনি, কিন্তু আমি নিজের চেষ্টায় আরো কিছু জানতে পেরেছি কি? জিজ্ঞেস করে আমির উসমান উত্তর দেয়: তাথৈএর ছোটোবেলা এই শহরেই কেটেছে তারপর তাকেও বাইরে পাঠানো হয়, এখানে তাথৈএর সাথে কলেজে পড়া কিছুজনের সাথে কথা বলেছিলাম তারা একটা খবর দিল কি খবর? আবার প্রশ্ন করে আমির এটা গুজব হতে পারে কিন্তু তারা বলে কলেজে থাকতে তাথৈ একটা ছেলের প্রেমে পড়েছিল, ওর সাথেই পড়তো ছেলেটা পড়াশোনায় অসাধারণ ছিল কিন্তু আর্থিক সামর্থ্যের দিক থেকে বীরেন ভট্টাচার্যের থেকে অনেক নীচে ছিল তার পরিবার। ছেলেটা কে? এখন কোথায় থাকে? জিজ্ঞেস করে আমির ছেলেটার নাম অভয়, অভয় রায় চৌধুরী আর ছেলেটা এখন বেঁচে নেই বহুবছর আগে এক দুর্ঘটনায় সে ও তার পরিবার মারা যায়। কি দুর্ঘটনা? যতদূর জানতে পেরেছি বাড়িতে আগুন লেগে যায়, বীরেন ভট্টাচার্যের হাত ছিল? বলা মুশকিল ভাইজান, কেউ সে-বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছে না ছেলেটার কোনো আত্মীয়ের খোঁজ পেয়েছো? এতক্ষন চুপচাপ সব কথা শুনছিল রয়, এবার প্রশ্নটা করে সে আছে এক দূরসম্পর্কের পিসি আর তার পরিবার আছে ,ওই যে তিনজনের খবর নিতে বলেছিলেন বীরেন ভট্টাচার্যের পরিবার ছাড়া মনে আছে? সেই আর কেউ? না স্যার তবে শুনেছি এখান থেকে কিছুটা দূরে এক বস্তিতে এক বুড়ো মানুষ থাকেন তার স্ত্রী ও এক নাতনি নিয়ে, তিনি নাকি অভয়ের বাবা রুদ্রবাবুর খুব পরিচিত ছিলেন, তার সাথে এখনো কথা বলতে পারিনি কিন্তু.. দরকার নেই, ওনার সাথে আমি কথা বলবো, উসমানকে থামিয়ে কথাটা বললো রয়। এইসময় রয়ের মোবাইল বেজে উঠলো, মোবাইলটা কানে দিয়ে শুধু একটা শব্দ করলো "হুমম" তারপর হটাৎ "তুমি ফলো করে যাও" বলে মোবাইল রেখে চেয়ার থেকে উঠে বললো "কুইক, উই হ্যাভ টু সেভ হার, তাকে বাঁচাতেই হবে'"। শিউলী দেবী দরজা খুলে দেখেন, দুজন গুণ্ডা প্রকৃতির লোক দাঁড়িয়ে, স্বভাবতই ভয় পেয়ে গেলেন তিনি, ভয়ার্ত গলায় জিজ্ঞেস করলেন "আপনারা কারা?" "আমরা বীরেন ভট্টাচার্যের লোক" গুণ্ডা দুজনের একজন উত্তর দিল। অপরজন বললো "আপনাকে আর আপনার ছেলেকে আমাদের সাথে যেতে হবে, দাদা ডেকেছেন"। শিউলী দেবীর ভয় আরো বেড়ে গেল জিজ্ঞেস করলেন: কেন? আমি তো কিছু করিনি। সেটা দাদা জানেন, আমরা শুধু ওনার হুকুম তামিল করছি, তাড়াতাড়ি চলুন গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দুজন গুণ্ডা এবার রিভলবার বার করলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুণ্ডাদুটো শিউলী দেবী ও রোহিতকে প্রায় জোর করে একটা মারুতি গাড়িতে তুলে রওনা দিল যে গাড়িতে আগে থেকেই আরো দুজন বসে ছিল, তারা লক্ষ্যও করলো না যে তাদের গাড়ি থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে আরো একটা গাড়ি তাদের ফলো করছে। শিউলী দেবী ও রোহিত কে নিয়ে চারজন গুণ্ডা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে চলেছে, দুজন লোক গাড়ির সামনে আর দুজন পিছনে, পিছনের সিটে মাঝখানে রোহিতকে কোলে নিয়ে ভয়ার্ত মুখে বসে আছেন শিউলী দেবী। সামনের সিটে ড্রাইভারের পাশে বসা গুণ্ডাটা ড্রাইভার কে বললো "দেখে চালা, সামনে একটা চৌমাথা আছে, তুই তো আবার.." ড্রাইভার: ভয় নেই দাদা আজ মাল খাইনি গাড়ি ছুটে চলেছে ,রাত একটু গভীর হয়েছে রাস্তাটা বেশ নির্জন গাড়ি চলাচল প্রায় নেই বললেই চলে, রাস্তার দুপাশে ঝোঁপঝাড় গজিয়ে আছে, ল্যাম্পপোস্টগুলো একটা অপরটার থেকে বেশ কিছুটা দূরে দূরে তাই রাস্তা জুড়েই বেশ অন্ধকার, সামনেই চৌমাথা ড্রাইভারের পাশে বসা গুণ্ডাটা বললো: সোজা চল। তারপর পিছন ফিরে শিউলী দেবীকে দেখতে থাকলো, এতে শিউলী দেবীর প্রচণ্ড অস্বস্তি হতে লাগলো এর মধ্যেই তার মনে হতে লাগলো রয়ের কথা ছেলেটা সকালে আসবে বলেছিল তাদের নিয়ে যেতে, কিন্তু সে জানতেও পারলো না যখন সে আসবে তখন হয়তো বীরেন ভট্টাচার্য শিউলী দেবী এবং রোহিতের লাশ কোথাও চাপা দিয়ে দেবেন, বুক ফেটে কান্না এল ওনার, হটাৎ ড্রাইভারটা ব্রেক কষলো এবং গাড়ির ভিতরের সবাই হুমড়ি খেয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেল ,শিউলী দেবী কোনোমতে রোহিতকে আগলে রাখলেন যাতে ওর আঘাত না লাগে। সামনে ড্রাইভারের পাশে বসা চারটে গুণ্ডার একজন ড্রাইভারকে গালাগালি দিয়ে উঠলো "এই শূয়োরের বাচ্চা, বললাম না দেখে গাড়ি চালা, এভাবে কেউ ব্রেক লাগায়? পিছন থেকে আরেকজন বললো: শালা হটাৎ ব্রেক মারলি কেন বে? ড্রাইভারটা সামনের দিকে দেখিয়ে বললো: ওদিকে দেখো সবাই। সামনের দিকে তাকালো সবাই, শিউলী দেবীও উঁকি মেরে দেখছেন যা দেখলেন তাতে তার বুক ভিতর ধপধপানি শুরু হয়ে গেল, সামনে কিছুটা দূরে রাস্তার মাঝ বরাবর যাতে অন্য গাড়ি পাশ কাটিয়ে যেতে না পারে এমনভাবে একটা কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে আর সেই গাড়ির সামনে কালো জ্যাকেট গায়ে দিয়ে দুজন লোক দাঁড়িয়ে আছে শিউলী দেবীও দেখেছেন লোকদুটোকে, তাথ চোখ আটকে গেল একজন লোকের উপর, লোক নয় ছেলে সে এই রাতের বেলাতেও চোখে কালো গগলস্ পরে আছে ,ছেলেটা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত জ্যাকেটের পকেটে ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, শিউলী দেবী অবাক হলেন ঠিক এইভাবেই বিকেলে তিনি প্রথমবার একজনকে দেখেছিলেন যে তাকে তার অন্ধকার জীবনে একটু আশার আলো দেখিয়েছিল রয়.. পার্থক্য হলো বিকেলে রয় মাথায় হুডি পরে ছিল আর এখন পরে নেই। ড্রাইভার সহ চারজন গুণ্ডা সামনের দিকেই দেখছিল, একজন বললো: এটা কে বে? আরেকজন বললো: চলতো গিয়ে দেখি। চারজনই গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো, কোমর থেকে রিভলবার বার করে এগোতে গিয়েও থামতে হলো কারণ য়এমন সময় হটাৎ ড্রাইভার লোকটা ভয়ার্ত গলায় ডাকলো: দাদা। এবার বাকী তিনজন লক্ষ্য করলো ব্যাপারটা তারা চৌমাথার চারটে রাস্তার একেবারে মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে আর তাদের সামনে তো বটেই সেটা ছাড়াও বাকী তিনদিকেই তিনটে গাড়ি চলে এসেছে এবং নিঃশব্দে প্রায় ২৫-৩০ টা কালো মূর্তি তাদের চারিদিক থেকে ঘিরে ধরেছে আর তাদের প্রত্যেকের হাতেই পিস্তল উঁচু করা, তাদের সামনে যে দুজন দাঁড়িয়ে আছে তাদের একজন জ্যাকেটের পকেট থেকে ডানহাত বার করে তর্জনীটা দিয়ে কিছু ফেলে দেওয়ার ইশারা করলো, চারজন গুণ্ডা বুঝলো তাদের হাতের রিভলবার ফেলে দিতে বলছে, সাথে এটাও বুঝলো এই মুহূর্তে কোনো চালাকি করার চেষ্টাও করলে তাদের ঝাঁঝরা করে দেবে ওই কালো মূর্তি গুলো। একসাথে চারটে রিভলবার মাটিতে পড়ার ধাতব শব্দ হলো, এবার চোখে গগলস্ পরা ছেলেটা এগিয়ে এল, চারটে গুণ্ডাকে পার করে মারুতির পিছনের জানালায় উঁকি মেরে পিছনের সিটে বসে থাকা শিউলী দেবীকে উদ্দেশ্য করে বললো: নেমে আসুন শিউলী দেবী কি বলবেন ভেবে পেলেন না, ছেলে রোহিতকে নামিয়ে তারপর নিজে নেমে বললেন: আমি ভাবতে পারিনি যে আপনি আসবেন। রয়: আমি বলেছিলাম তো আমি থাকতে আপনাদের কোনো ক্ষতি হবে না, আসুন। শিউলী দেবী আর রোহিত কে নিয়ে নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল রয়, চারজন গুণ্ডার একজন ঘড়ঘড়ে গলায় বললো: তুই জানিস না কার সাথে পাঙ্গা নিচ্ছিস? আমরা বীরেন ভট্টাচার্যের লোক। রয় তাদেরকে সম্পূর্ণ অগ্ৰাহ্য করে এগিয়ে গেলো তারপর আমিরের পাশ থেকে যাওয়ার সময় তাকে বললো: তুমি জানো এবার কি করতে হবে। শুনে আমির বন্দুক হাতে এগিয়ে গেলো আর রয় তার গাড়ির পিছনের দরজা খুলে শিউলী দেবীকে বললো যান উঠে পড়ুন আর নিজের দুকান বন্ধ করুন ছেলেকেও বলুন কান বন্ধ করতে, এখানে এখন একটু বাজী ফাটবে। শিউলী দেবী আর রোহিত গাড়িতে উঠে দরজা বন্ধ করার সাথে সাথেই চৌমাথার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা চারজন গুণ্ডাদের চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা ২৫-৩০ টা কালো মূর্তির প্রত্যেকের হাতের পিস্তল গর্জে উঠলো অবিরাম গুলি বর্ষণ চললো কিছুক্ষণ তারপর কালো মূর্তি গুলো সরে গেল, একটু পরেই চৌমাথার চারপাশের গাড়িগুলো চলে গেল, শুধু আকাশের অন্ধকার তাকিয়ে রইলো রাস্তার উপর বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া, রক্তমাখা চারটি মৃতদেহ ও মারুতি গাড়ির দিকে। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-08-2022, 07:44 AM
প্রত্যেককে ধন্যবাদ
আপনাদের এইভাবে পাশে থাকাই আমাকে উৎসাহ জোগায়। I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-08-2022, 10:31 AM
অসাধারণ দুর্দান্ত আপডেট দাদা জমে উঠেছে চালিয়ে যান।
25-08-2022, 10:59 AM
(25-08-2022, 10:06 AM)Devil07 Wrote: dada jodi hoy protidin update dan চেষ্টা করি তাড়াতাড়ি আপডেট দিতে কিন্তু প্রতিদিন দেওয়া সম্ভব নয় কারণ সেক্ষেত্রে এতটাই ছোট হবে যে পছন্দ হবে না, তাই একটু সময় নিয়ে বড়ো করে আপডেট দেই, তবে আশা করবো এভাবেই পাশে থাকবেন I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-08-2022, 10:59 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-08-2022, 11:00 AM
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils
25-08-2022, 12:22 PM
লেখায় বেশ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। এমনভাবে লিখুন, যাতে আমরা সবাই ধাঁদায় পড়ে যাই। রহস্যের সাথে সাথে যৌনতাকেও একটু গুরুত্ব দেবেন।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|