15-08-2022, 10:33 PM
Excellent update
-মন্দের ভালো (সমাপ্ত)
|
15-08-2022, 11:20 PM
(15-08-2022, 09:04 PM)Bumba_1 Wrote: বাথরুমে বসে রুদ্রর কাল্পনিক কনফেশনের সিকোয়েন্সটা খুব ভালো ছিলো। আজকের পর্বের পুরোটাই আঞ্চলিক বিবাহের নিয়ম কানুন এবং গানের পংক্তিতে ভরা ছিল .. বেশ লাগছিল পড়তে। তবে যাই বলো ভাই জীবনে অনেক ঢলানি মেয়েমানুষ দেখেছি, কিন্তু এই পল্লবীর মতো আর একটাও দেখিনি। ওর যা মতিগতি দেখছি সুযোগ পেলেই পা ফাঁক করে দেবে, এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যাইহোক ও কথা থাক .. সবশেষে বলি রুদ্রর প্রতি রাইয়ের ওই রাগ দেখানোটা "কপট রাগ" হলেই মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়ে যায় আর কি .. রিতা কি খেলা খেলেছে কে জানে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
15-08-2022, 11:22 PM
(15-08-2022, 09:05 PM)Baban Wrote: ওটা যে দুশ্চিন্তা থেকে আসা কল্পনা ছিল সেটা সন্দেহ হয়েছিল কারণ রাই ম্যাডাম ছেলেটাকে চেনে ভালোই অন্তত কিছুটা তো বটেই। সেই ব্যাগে দুস্টু বই থেকে আজকে পর্যন্ত। তবে বেচারা ছেলেটার যে লেভেলে ফেটেছে আর ফাটছে দেখে কষ্ট হচ্ছে। নিশ্চই ওই অন্য রূদ্রটাকে পেলে পিটিয়ে লাল করে দিতো। গানগুলো আর বিয়ের মুহূর্তটা খুব সুন্দর লাগলো সাথে বাবা মেয়ের একে ওপরের প্রতি টান। যতই হোক বাবা তো। এবার রূদ্র বাবুর সাথে কি হয় সেটাই দেখার। ♥️ রুদ্র ফাটা বাঁশর চিপায় পড়েছে। যত তাড়াতাড়ি বিষয়টা সলভ করা যায় ততটাই ভালো। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
15-08-2022, 11:22 PM
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
16-08-2022, 11:52 AM
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
16-08-2022, 11:59 AM
বরাবরের মতোই চমৎকার আপডেট। আমার শুধু একটা প্রশ্ন..... লেখক মশাই কি গল্পের ইতি টানতে চলেছেন??? নাকি সামনে আমরা আরও অনেক ঘটন বা অঘটন দেখতে পাব।
16-08-2022, 02:20 PM
দারুন আপডেট রিতা আর রাইয়ের যুগলবন্দিতে মনে হয় কিছুটা নাস্তানাবুদ হবে রুদ্র বাবু। হওয়াও উচিত, কারণ কম পাপ তো করেনি!
16-08-2022, 09:02 PM
(16-08-2022, 11:59 AM)sudipto-ray Wrote: বরাবরের মতোই চমৎকার আপডেট। আমার শুধু একটা প্রশ্ন..... লেখক মশাই কি গল্পের ইতি টানতে চলেছেন??? নাকি সামনে আমরা আরও অনেক ঘটন বা অঘটন দেখতে পাব। ইতি টেনে দেব শীঘ্রই হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
16-08-2022, 09:02 PM
(16-08-2022, 02:20 PM)Somnaath Wrote: দারুন আপডেট রিতা আর রাইয়ের যুগলবন্দিতে মনে হয় কিছুটা নাস্তানাবুদ হবে রুদ্র বাবু। হওয়াও উচিত, কারণ কম পাপ তো করেনি! সেটা তো হতেই হবে। তবে পাপ কে ঘৃনা করো পাপী কে নয়। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
19-08-2022, 11:55 AM
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
20-08-2022, 08:33 PM
আগের পর্ব এখনো যাদের পড়া হয় নি চটজলদি পড়ে ফেলুন পরিণয় নাকি পরিণতি। নতুন পর্বের লেখাও শুরু হয়ছে, খুব শীঘ্রই আপডেট চলে আসবে সে পর্যন্ত সঙ্গেই থাকুন।
24-08-2022, 12:52 PM
(23-08-2022, 08:35 PM)Arpon Saha Wrote: আপডেট কবে আসবে? লেখা প্রায় শেষের দিকে, আগামীকাল নাগাদ চলে আসবে। হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
24-08-2022, 08:55 PM
-আমার এখনো চেঞ্জ করা বাকি আছে, একটু পরে আসলে ভালো হয়। -আমার ঘরেই আমি অতিথি হয়ে গেলাম নাকি, আর আমার সামনে চেঞ্জ করতে পারো আমার কোন সমস্যা নেই। -আমি তোমার সমস্যার কথা তো বলিনি আমি আমার সমস্যার কথা বলছি। যাও বাইরে যাও নইলে আমি কিন্তু চেঁচাব বলে দিলাম। -এটা আবার কেমন কথা, তুমি তো আমার বউ তাই না তাহলে চেঁচাবে কেন লোকে শুনলে কি বলবে ছি ছি (রুদ্র রাইয়ের পেছনে গিয়ে দাড়ায়, রাই টুলে বসে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে) দাও আমি ক্লিপ গুলো খুলে দেই। উপরের আলোচনা সম্ভাব্য রাই রুদ্রের মাঝে, তবে কি ঘটে চলেছে অন্দরমহলে? জানতে হলে অপেক্ষা আগামীকাল অব্দি। আগামীকাল আসছে গল্পের নতুন পর্ব - লহরী
25-08-2022, 09:03 PM
লহরী
বৌভাতে ভোজ পর্বের শেষে সবকিছু গুছিয়ে রুদ্র রা সবাই বাড়িতে এসেছে, রাইয়ের বাবা মা আত্মীয় স্বজনরা সেন্টার থেকেই চলে গেছে শুধু তনু রুদ্রদের সাথে এসেছে, পরদিন আবার দ্বিরাগমনে ওদের সাথেই তনুও চলে যাবে রাইদের বাড়িতে। রাত বেড়ে চলেছে বাসার সব রুম আত্মীয় স্বজনে ঠাসা, রুদ্র জয় আরও কয়েকজন বসার ঘরে বসে কথাবার্তা বলছে। কেমন একটা ভ্যাপসা গরম লাগছে জামাকাপড় চেঞ্জ করে নিলে ভালো হতো কিন্তু রুদ্রের রুমটাও দখলে চলে গেছে অন্যদের। মেয়েদের একটা দল রাই কে নিয়ে ঐ ঘরেই ঢুকেছে সেই কখন থেকে কি করছে কে জানে। রুদ্র বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে অস্বস্তি নিয়ে বসে থাকা যায় নাকি। এর মাঝেই ছুটকি এসে রুদ্র কে ডাকতে থাকে -দাদা তুই তো বসেই আছিস আমার চুলে একটু তেল দিয়ে দিবি, কি সব স্প্রে করেছে পার্লারে চুল সব জট লেগে গেছে কাল শ্যাম্পু করতে হবে।( হাতের তেলের বোতল টা রুদ্রের দিকে এগিয়ে দেয়, রুদ্র হাত বাড়িয়ে বোতল টা নিজের কাছে নিয়ে নেয়) -তেল দিয়ে দেব নে, আগে আমার একটা কাজ করে দে। -কি কাজ? -ঘর থেকে আমার ট্রাউজার আর টিশার্ট নিয়ে আয়, আগে চেঞ্জ করা জরুরি। এসব পড়ে এতক্ষণ বসে থাকা যায় নাকি। -আচ্ছা তুই আমার ঘরে যা আমি নিয়ে আসছি, ঘরে তনু আছে। ছুটকির রুমের কাছে গিয়ে রুদ্র দরজায় নক করে, ভেতর থেকে তনু বলে ভেতরে আসতে। তনুও চেঞ্জ করে বিছানার কাছে টুল পেতে বসে আছে এর মানে ওর চুলেও তেল দিয়ে দিতে হবে। ছুটকি রুদ্রের জামাকাপড় নিয়ে এসেছে সাথে করে, রুদ্র বাথরুমে ঢুকে চেঞ্জ করে বেড়িয়ে এসে বিছানায় বসে ছুটকি আর তনুর চুলে তেল দিয়ে জট খোলার চেষ্টা করে। রুদ্রের মন এখনো ঐ খানেই আটকে আছে রিতা রাই কে কি কি বলেছে কে জানে, একবার ভাবছে রিতা হয়তো নরমাল কলেজের কথা গুলোই বলেছে ঐদিনের ঘটনা কিছু হয়তো বলে নি। আবার রাইয়ের মুখটা মনে করে ভাবছে যেভাবে তাকিয়ে ছিল তাতে তো মনে হয় কিছু না কিছু তো বলেছে না হয় হিন্ট দিয়েছে হয়তো। আনমনে রুদ্রের হাতের টান লাগে ছুটকির চুলে -উফফ দাদা, আস্তে টান দে চুল তো সব ছিড়ে ফেলবি মনে হয়। সেই কখন থেকে বলছি আস্তে করে জট গুলো ছাড়া। -সরি রে, বেশি লেগেছে কি? এখন থেকে সাবধানে জট ছাড়াবো। এতো জিনিস দিতে হয় কেন রে, এই দেখ আমরা কত সিম্পল ভাবেই সব সাজগোজ করে ফেলি, আর তোরা কত কি মাখিস আর এসবের জন্য কত গুলো টাকা দিয়ে আসিস শুধু শুধু। তোদের টাকায় ওরা কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে। -তোমার টাকা দিতে হয়েছে তাই এতো জ্বলছে বুঝি রুদ্র দা (পাশে বসা তনু ফোড়ন কাটে) -বেশি কথা বললে কিন্তু এখনি চুল ধরে টেনে দিব বলে দিলাম। -না না আর কিছু বলবো না মুখে কুলুপ দিলাম(তনু ছুটকি দুটোই হাসতে থাকে) রুদ্র তনু ছুটকির সাথে খুনসুটিতে মেতে আছে আর চুলের জট ছাড়াচ্ছে এর মাঝে রাই একবার এসে ওদের দেখে গেছে, ও শাড়িটা চেঞ্জ করে নিয়েছে বাকি সাজগোজ এখনো আগের মতই আছে। একবার রাইয়ের সাথে চোখাচোখি হতেই রুদ্র নজর অন্য দিকে সরিয়ে নেয়, এ যেন চোর পুলিশের খেলা চলছে। রাইকে দরজায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে ছুটকি আর তনুও হাসাহাসি শুরু করে -নে দাদা তোর ডাক এসে গেছে, এখন তো বোনের চেয়ে বউ তোর কাছে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট, দেখ বৌদির চুলেও হয়তো তেল দিয়ে দিতে হয় নাকি। (মুচকি হাসির সাথে মুখে ভেংচি কাটে ছুটকি) -আমি যদি ভেতরে আসি তবে কিন্তু তোর খবর আছে বলে দিলাম, আর আমার চুলে তেল নিজেই দিতে পারি তোর দাদার দরকার নেই৷ তোর দাদার আর কত মানুষ আছে সেটা তো আর তোরা জানিস না ( দরজার এখানে দাড়িয়ে চড় দেবার ইশারা করে রাই, শেষে রুদ্রের দিতে তাকিয়ে ভেংচি কেটে ওখান থেকে চলে যায়) রুদ্র রাইয়ের শেষ কথাটা ধরার চেষ্টা করে, ওটা বলে কি বুঝাতে চাইলো সেটা তো রুদ্রের চেয়ে ভালো কারো জানার কথা নয়, এর মানে রিতা কি সব কিছুই বলে দিলো নাকি। না মনে সাহস জোগাতে হবে, যদি বলেই থাকে তবে সেটার সামনাসামনি হতে হবে আর না বলে থাকলে রুদ্রকে নিজেই বলতে হবে। আর কিছুক্ষণ ছুটকিদের রুমে থেকে রুদ্র হাত ধুয়ে নিজের রুমের দিকে বেড়িয়ে যায়। দরজার শব্দ হতেই ওদিকে তাকিয়ে দেখে রুদ্র ঘরে ঢুকছে, রাই তখনো ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুলে লাগানো লাগানো ক্লিপ গুলো খুলছে। -আমার এখনো চেঞ্জ করা বাকি আছে, একটু পরে আসলে ভালো হয়। -আমার ঘরেই আমি অতিথি হয়ে গেলাম নাকি, আর আমার সামনে চেঞ্জ করতে পারো আমার কোন সমস্যা নেই। -আমি তোমার সমস্যার কথা তো বলিনি আমি আমার সমস্যার কথা বলছি। যাও বাইরে যাও নইলে আমি কিন্তু চেঁচাব বলে দিলাম। -এটা আবার কেমন কথা, তুমি তো আমার বউ তাই না তাহলে চেঁচাবে কেন লোকে শুনলে কি বলবে ছি ছি (রুদ্র রাইয়ের পেছনে গিয়ে দাড়ায়, রাই টুলে বসে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে) দাও আমি ক্লিপ গুলো খুলে দেই। -(রুদ্রের হাত ধরে আটকে দেয়, মুখের অভিব্যক্তিতে কপট রাগের আভা) আমি কি বলেছি নাকি। -বলতে হয় নাকি, আমার একটা দায়িত্ব আছে না। (হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে রাইয়ের চুলে গুজা ক্লিপ গুলো এক এক করে খুলতে থাকে) রাই সোজা হয়ে বসে আছে আর আয়নায় রুদ্রকে দেখছে, যখনি রুদ্র আয়নার দিকে তাকাচ্ছে তখনি রাই চোখ সরিয়ে নিচ্ছে আয়না থেকে। কিছুটা লজ্জা কিছুটা ভালো লাগার মিশ্র অনুভূতির ছটা চেহারার মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে, তার উজ্জ্বল আভার দ্যুতি রাইয়ের মুখ জুড়ে খেলা করছে৷ এই ভাললাগার এই সুখের বর্ণনা ভাষার শব্দে প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। প্রেয়সীর সান্নিধ্যে প্রিয় কতটুকু শান্তি আর সুখের দেখা পায় সেটা কি আর মুখের ভাষায় প্রকাশ করা যায়, যতটুকু আছে সবটাই উপভোগের মাঝেই অনন্ত সময় চলে যায়। ক্লিপ গুলো খোলা শেষে রাইয়ের খোপা টা ছাড়িয়ে নিতেই লম্বা ঘন কালো চুল গুলো ছড়িয়ে পড়ে রাইয়ের পিঠ জুড়ে। রুদ্র কোমল পরশের মত আঙুল দিয়ে চুল গুলো আরও ছড়িয়ে দেয় দুই কাধের দিকে। -(দুই হাতে রাইয়ের কাধ ধরে দাড়িয়ে আছে রুদ্র) তোমাকে খোলা চুলেই বেশি ভালো লাগে, দেখো আগের চেয়ে এখন কত বেশি সুন্দর লাগছে। -(আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে একবার দেখে আরেকবার পেছনে দাড়ানো রুদ্রকে দেখতে থাকে রাই, সত্যিই বেশি ভালো লাগছে হয়তো রুদ্র পাশে দাড়ানো আছে দেখে আরও বেশি ভালো লাগছে। মনের মানুষ পাশে থাকলে পৃথিবীর নিকৃষ্টতর বিষয়টাও হয়তো ভালো লাগতে থাকে আর এ তো নিজেকে নিজের চোখে দেখা মনোরম সুখ ) আমি এমনিতেই সুন্দর তো তাই এখানে তোমার কোন কেরামতি নাই বুঝেছো, হয়ছে আর কিছু করতে হবে না এখন যাও আমি চেঞ্জ করবো। -বারে আমাকে তো পারলে বিদায় করে দিতে চাইছো, কই ভাবলাম একটু তোমার কাছে থাকি। থাক আমি চলেই যাই (রুদ্র ঘর থেকে চলে যাবার ভান করে, সাথে সাথে রাই রুদ্রের হাত ধরে নেয়। রুদ্র কাছে থাকলে এমনিতেই ভালো লাগে এখন চলে যাবে শুনে এমনিতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভালোবাসার এই এক যন্ত্রণা প্রেয়সী কে চোখের আড়াল হতে দেয়ার চেয়ে যেন মৃত্যু কে আলিঙ্গন করা অতীব সহজ পরিক্ষা) -(মুখটা ভার করে কাঁদো কাঁদো স্বরে) আমি আবার চলে যেতে বলেছি কখন, না তোমার যেতে হবে না। কাজ আছে, আন্টি তখন ধ্যাত মা তখন দুটো বক্স দিয়ে গিয়েছিল সবসময় ব্যবহার করার গয়না আছে ওতে, আলমারিতে আছে ওগুলো এনে দাও। -(আলমারি থেকে বক্স গুলো বের করতে করতে) আমার দেখি প্রমোশন হয়েছে, এখন এসব কাজও আমাকে করতে হবে( বক্স গুলো ড্রেসিং টেবিলে রেখে) তবে যদি কেউ বলে তবে আমি পড়িয়ে দিতেও পারি। -ন্যাকা, আমি কি না করেছি নাকি( কথাটা বলেই রাই মাথা নিচু করে ফেলে, ভালবাসার মানুষের কাছে ভালবাসা পাওয়ার মূহুর্ত গুলোও অনেক দামি হয়ে উঠে। রুদ্র নিজ হাতে ওকে গয়না পড়িয়ে দিবে সেটা ভাবতেই যেন শরীরে শিহরন জেগে উঠে। অদ্ভুত এক ভাললাগার অনুভূতি ঘিরে ধরে রাই কে) আরেকটা টুল নিয়ে এসে রাইয়ের পাশে বসে রুদ্র, এক হাতে মুঠো করে চুল গুলো সড়িয়ে দেয় একপাশে সাথে সাথেই অনাবৃত রাইয়ের পিঠ দৃষ্টিগোচর হয়ে উঠে রুদ্রের। রুদ্রের পুরুষালী হাতের স্পর্শ ঘাড়ের কাছে পেতেই শিহরন অনুভব হতেই কেমন একটু নড়েচড়ে বসে রাই, খুব সন্তপর্ণে রুদ্র রাইয়ের গলার হার টা খুলে বক্স থেকে একটা লকেট সহ চেইন পড়িয়ে দেয়। নিজের ঘাড়ের কাছে রুদ্রের নিঃশ্বাস টা স্পষ্ট অনুভব করতে পারছে রাই সারা শরীরের লোম গুলো শিউরে উঠছে বারবার , দুচোখ বন্ধ করে মূহুর্ত টা উপভোগ করতে থাকে সে। ভারী টানা কানের দুল গুলো এক এক করে খুলে নিয়ে, তাতে অন্য কানের দুল গুলো পড়ানোর সময় নিজের কানের নরম লতিতে রুদ্রের হাতে স্পর্শ যেন তপ্ততা ছড়াচ্ছে বারংবার, নিজের নিঃশ্বাসের গতি বেড়েই চলেছে কখন থেকে, চেষ্টা করেও সেটা বাগে আনতে পারছে না রাই৷ রুদ্রের স্পর্শ ওকে সেটা করতেই দিচ্ছে না, সব চেষ্টা বিফলে চলে যাচ্ছে। আর চেষ্টা করতে ইচ্ছে হয় না, ইচ্ছে হয় এই ভাললাগার মূহুর্ত গুলোর সুখ নিজের করে নিতে, রাইয়ের মন চাইছে পেছনে বসা রুদ্রের গায়ে নিজেকে এলিয়ে দিতে। রুদ্র যেন ওকে একবার জড়িয়ে ধরুক নিজের বুকের সাথে, ওর ভেতরের অস্থিরতা টা যেন নিজের কাছে নিয়ে নেক রুদ্র। রাই স্থির হয়ে চেয়ে আছে আয়নার দিকে আর রুদ্রের মুখটা দেখছে পলকহীনভাবে, রুদ্রও আয়নার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে পেছন থেকে নিজের বাহুডোরে জড়িয়ে নেয় রাই কে। -কি হলো, এমন করে তাকিয়ে আছো কেন? কি দেখছো ওমন করে। -কি দেখবে কিছুই না। তুমি এমন করে জড়িয়ে ধরেছো কেন, এখন যদি কেউ এসে পড়ে তখন কি হবে। লজ্জায় আমি মুখ দেখাতে পারবো না সবার সামনে ( নিজেকে রুদ্রের বন্ধন থেকে ছাড়াবার মেকি অভিনয় করে চলে রাই, রুত্রও যেন ততবার আরও শক্ত করে আকড়ে ধরে রাই কে) -আসলে আসুক আমি ভয় পাই নাকি? আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরবো তাতে কে কি ভাববে তাতে আমার কি। তোমার এত লজ্জা করে কেন? এত লজ্জাবতী হলো কীভাবে অফিসের কড়া ম্যাডাম টা। -ধ্যাত ওসব তুমি বুঝবে না, অফিসে তো আর কেউ জড়িয়ে ধরে না। একবার দেখে নিলে কে কি ভেবে কি না কি বলবে, আমাকে সামনে পেলে এটা নিয়ে মজা করবে। তোমার কি লাজ লজ্জা কিছুই নেই। -হুম আমার লজ্জা একটু কমই, বউয়ের সামনে লজ্জা নিয়ে বসে থাকলে ভালোবাসবো কখন ( রুদ্র পেছন থেকেই রাইয়ের গালে ছোট্ট একটা চুমু দেয়) -ইশশ, সখ কতো। খবরদার আর চুমো দেবে না বলে দিলাম৷ -কেন, বউকে আদর করা মানা নাকি ( রুদ্র রাইয়ের গলার কাছে নিজের মুখ চেপে ধরে নিজের গরম নিঃশ্বাসে রাইকে আরো তাতিয়ে দিতে থাকে, রাইয়ের অনাবৃত ফর্সা পিঠে হালকা করে চুমু খায়) -ছাড়ো বলছি আমার সুড়সুড়ি লাগে তো ( রাই হি হি হি করে হাসতে থাকতে) প্লিজ ছাড়ো এখন, হাসি শুনে কেউ এসে গেলে তখন কি হবে ভেবে দেখেছো, তোমার তো কিছুই হবে না আমি তো লজ্জায় মরে যাবো৷ (দু হাতে রুদ্র কে কিল ঘুষি দিতে থাকে) যাও এখন একটু আমার তো চেঞ্জ করা বাকি (মুখে যদিও একথা বলছে কিন্তু রুদ্রের স্পর্শে যেই সুখের আবেশে মনের ভেতর ভালোবাসার ঢেউ উঠেছে সেটা ধরে রাখতে ইচ্ছে হচ্ছে, মন চাইছে এমনে করেই রুদ্রের বুকে নিজের মাথা টা পেতে রাখতে) -না না তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। থাকি না আর কিছুক্ষণ প্লিজ... -একদম না, আমি চোখবুঁজে দশ পর্যন্ত গুনবো এর মাঝেই চলে যাবে বলে দিলাম.... এক.. দুই.... তিন...... দরজার শব্দ হতেই রাই চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রুদ্র ভেতরে আসছে, রাই কিছুটা হতভম্ব হয়ে যায়। রুদ্র এখন আসছে এতক্ষণ সবটাই তাহলে নিজের মনের খেয়াল ছিল। মনে মনেই একটা ছোট্ট হাসি খেলে যায় রাইয়ের মুখে একটু আগের নিজের কল্পনা পাগলামো গুলো ভাবতে ভাবতে। নিজের খুশি টা একটু আড়াল করে কপট রাগভাব নিয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে -কি দরকার, কোন কাজ আছে নাকি? আমার এখনো চেঞ্জ হয়নি দেখছো না যাও আরেকটু পরে আসবে। -না মানে, মানে সেটাই দেখতে এসেছিলাম আর৷ কি। আর জামাকাপড় গুলো রেখেই চলে যাচ্ছি ঠিক আছে ওমন করে রাগী চোখে তাকাতে হবে না। -আমি ওমন করেই তাকাই রাগ টাগ কিছু না। -ওহহ তাই নাকি, কি জানি আগে কখনো দেখেনি(একটু আস্তে করে বলে) আগে জানলে তো... -ঐ বিড়বিড় করে কি বলছো হ্যাঁ। নিশ্চয়ই আমাকে বকাবকি করছো ঐটা ছাড়া পারো টা কি, আর তোমার তো আবার অন্য মানুষ আছে... -বুঝেছি বুঝেছি, আর কিছু বলতে হবে না, তুমি চেঞ্জ করো আমি বাইরে আছি ঠিক আছে (রুদ্র বিড়বিড় করতে করতে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়, রাই আয়নার সামনে বসে মুচকি হাসতে হাসতে গায়ের গয়না গুলো খুলতে থাকে) রুদ্র জয় আর বাকিরা বসার ঘরে টিভি দেখছে আর গল্পগুজবে মেতে আছে। মাঝে মাঝে জয় আর বাকিরা রুদ্রের পেছনে লাগছে ওকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করছে, রুদ্রের হলো আরেক মরন বিয়ে করেছে তাই এখন ওভাবে মুখ খুলে গালিগালাজ ও করতে পারছে না বাকিদের সামনে, শুধু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবছে আরেকবার বাগে পেলে সবগুলোকে ইচ্ছে মত ধরাবে। ওদের সামনে দিয়ে হাত ভর্তি ফুল নিয়ে রুদ্রের ঘরের দিকে যেতে দেখলো তনু ছুটকি আর পল্লবীদের কে, সামনে দিয়ে যাবার সময় পল্লবী চোখের ইশারায় রুদ্র কে কিছু একটা বলে খেপানোর চেষ্টা করে। সবার সামনে রুদ্র আর তেমন কোন রিয়্যাক্ট না করে মাথা নিচু করে মুচকি হাসতে থাকে। বেশ কিছুক্ষন পর রুদ্রের ডাক পড়ে, কিন্তু রুমে ঢুকতে যাবার আগেই ছুটকি আর তনু দরজা আগলে দাড়িয়েছে। ওদের আনা ফুল আর সাজসজ্জার খরচ মেটাতে হবে আগে, সঙ্গে সঙ্গেই বাকিরা সবাই যেন ওদের দলে যোগ দিয়ে দিল। ভেতর থেকে রাই ও বাকিদের উৎসাহ যোগাতে কোন কার্পণ্য করছে না, সে তো পারলে বিডে বারবার বেশি টাকা হাঁকাচ্ছে। রুদ্রও নাছোড়বান্দা সে টাকা দিবে না আর যাই হোক ও তো বিছানা ফুল দিয়ে সাজাতে বলে নাই, রুদ্র উল্টো ওদের ফুল ওদের কে নিয়ে যেতে বলছে। হইহট্টগোল চলছে তো চলছেই এক পর্যায়ে অঞ্জলি দেবী এসে রুদ্র কে বলে দেয় ওদের কে টাকা দিয়ে দিতে, এমনিতেই অনেক রাত হতে চলেছে ওদের চেচামেচিতে বাকিদের আর ঘুমানোর উপায় নেই। তনু ছুটকিদের আবদার মেটানোর পর রুদ্র রুমের ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দেখে সামনে টেবিলে থালা ভর্তি কি কি জিনিস যেন সাজানো আছে, এর মানে এখনো কোন রীতিনীতি বাকি আছে নাকি কে জানে। রুদ্র আর রাইকে পাশাপাশি বসিয়ে পল্লবী বাকি রীতি গুলো সেরে নেয়। ওসব পর্ব শেষ করেই পল্লবী বাকিদের নিয়ে রুম থেকে বেরিযে যায়। রুদ্রকে বসে থাকতে দেখে রাই বরে উঠে -বিছানার থেকে ফুল গুলো সরিয়ে কোথাও একটা রাখো নইলে ঘুমবো কি করে, আমার খুব ঘুম পেয়ে মাথাটাও ব্যাথা করছে সেই কখন থেকে যাই একটু ফ্রেশ হয়ে আসি। তুমি বিছানা টা একটু পরিষ্কার করো তাড়াতাড়ি। -মাথা কি বেশি ব্যাথা করছে? ও ঘর থেকে ঔষধ নিয়ে আসবো কি? -না না ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে।( রাই বাথরুমে চলে যায়, রুদ্র বিছানার উপর থেকে চাদর টা টেনে একসাথে করে ফুল গুলো একটা কোনে রেখে আবার চাদরটা বিছিয়ে দেয়) রুদ্র একবার ভাবে ও ঘর থেকে ঔষধ নিয়ে আসবে গিয়ে আরেকবার ভাবে এখন ও ঘরে যেতে দেখলে বাকিরা আবার হাসাহাসি শুরু করবে। ধ্যাত ভালো একটা সমস্যা হলো নিজের বাড়িতেও এখন নিজের ইচ্ছে মত চলাফেরাো করা যাবে না। -(রাই বাথরুম থেকে বের হয়ে খেয়াল করে রুমের দরজা নড়াচড়া করছে) কি হলো দরজায় ছিটকিনি দেও নি এখনো। ওই পাজির দল গুলো হয়তো ওখানে লুকিয়ে দাড়িয়ে আছে। -(রাই এর কন্ঠ শুনে পেছন ফেরে তাকাতেই দেখে রাই শাড়ি কাপড় বদলে একটা ট্রাউজার আর টিশার্ট পড়ে আছে, আর সেগুলো যে রুদ্রের নিজের চিন্তে অসুবিধা হয় না) না মানে এতোদিন তো আর দরজায় ছিটকিনি দেই নি তাই মনে ছিল না। (দরজার দিকে যেতে যেতে) তুমি আমার টিশার্ট ট্রাউজার পড়লে যে। -আমি না শাড়ি পড়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারি না আর ঘুমানো তো দূরের কথা, আমার জামাকাপড় তো সব এখনো আনা হয় নি তাই তোমার গুলোই পড়ে নিয়েছি। (হঠাৎ চোখ দুটো একটু বড় বড় করে) তোমার টিশার্ট মানে কি? এখন আর তোমার আমার বলতে কিছু নেই বুঝলা, আমি তোমার বউ আর তোমার সব আমার। আমাকে কেমন মানিয়েছে সেটা বলো। -(দরজা টা চাপাতে গিয়ে বুঝলো ওখানে ওরা দাড়িয়ে ছিল, রুদ্র কে আসতে দেখেই সড়ে গেছে) হুম বুঝেছি ভুল হয়ে গেছে আমার সব তোমার আমিও তোমার ঠিক আছে।(টিশার্ট ট্রাউজার দুটোই ঢিলেঢালা হয়েছে রাইয়ের গায়ে) আমার টি শার্টে তো আমার চেয়ে তোমাকে বেশি ভালো লাগছে। -(বিছানায় বসে একটা বালিশ কাছে টেনে নিজের কোলে নিয়ে) আমি বলার আগে তো নিজ থেকে কিছু বললে না, আসলে তুমি আমাকে ভালোবাস না। তোমার তো আবার ঐ যে একজন আছে.... -(রুদ্র এসে রাই এর সামনে বসে) কি যে মুশকিলে পড়লাম, আমার আবার কে থাকবে। আর কেউ নাই, আর তোমাকে বলে কি লাভ তুমি তো বিশ্বাস করবে না। আমারও ঘুম ধরছে যাই আমিও ঘুমাই( রুদ্র উঠে গিয়ে লাইট অফ করে নাইট ল্যাম্প টা ওন করে বিছানায় এক পাশে শুয়ে পড়ে) -(রুদ্র কে রাগতে দেখে রাইয়ের ভালো লাগে, এখনো রেগে গাল ফুলিয়ে আছে রুদ্র। রিতা কে নিয়ে কিছু বললেই রুদ্রের চেহারা যা অবস্থা হয় সেটা দেখার মত। রাইয়ের তখন খুব হাসি পেলেও গম্ভীর ভাবটা ধরে রাখতে চাইলেও হাসতে পারে না। রুদ্র উপুর হয়ে ওপাশে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আর পা দুটো বারবার নাড়াচ্ছে) কি হলো ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? -(একটু রাগী স্বরে) এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারে নাকি কেউ, কেন কি দরকার? -এই বালিশ গুলো না বেশি নরম, আমার না আবার এত নরম বালিশে ঘুম আসে না। -এখন আমি শক্ত বালিশ কই পাবো? -বালিশ লাগবে না তুমি একটু এদিকে ফেরো আগে। -(রুদ্র উপুড় হওয়া থেকে সোজা চিৎ হয়ে শুয়ে বলে) এখন বলো কি করবো? -(রাই আরেকটু এগিয়ে এসে রুদ্রের ডান হাত টা টেনে মেলে নেয় আর তাতে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে) হুম ঠিক আছে তোমার কিছু করতে হবে না, আমি নিজের ব্যবস্থা নিজেই করতে পারি। -সেটা তো করবেই, আমার তো আবার অন্য.... (রাই রুদ্রের মুখটা চেপে ধরে) -(দ্বরাজ কন্ঠে রাই বলে উঠে) আমার মেজাজের আজকাল যা অবস্থা তাতে খুব শীঘ্রই আমার হাতে হয়তো একটা খুন হবে, তবে সেটা আজ হোক সেটা চাই না কথাটা যেন মাথায় থাকে।(বিপদ সংকেত অবজ্ঞা করার সাহস পায় না রুদ্র, চুপচাপ মুখে কুলুপ এটে নেয়) রাই আরেকটু এগিয়ে এসে রুদ্রের বুকের কাছে নিজের মাথা গুজে দেয়, নিজের বুকের লোম গুলোতে রাইয়ের শ্বাসের আনাগোনার অনুভূতিতে শিউরে উঠে রুদ্রের শরীর মন দুটোই। রাইয়ের দিকে পাশ ফিরে আরেক হাতে রাইকে জড়িয়ে ধরে। মাথাটা একটু নিচু করে রাইয়ের মুখের দিকে তাকাতেই দেখে রাইও ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে অপলক গভীর চাহনিতে। রুদ্রের ইচ্ছে হয় সেই গভীরতায় হারিয়ে যেতে, এতবছর যার জন্য এত অপেক্ষা সেই মানুষটা আজ তার এত কাছে নিজের বাহুডোরে শুয়ে তবুও ইচ্ছে জাগে আরও নিজের কাছে করে নিতে। রুদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে ওর মনের কথা যেন রাই সব পড়ে নিয়েছে নিমিষেই, একহাতে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে নিজেকে যেন রুদ্রের বুকের সাথে মিশিয়ে দিতে চাইছে। রুদ্রের হালকা লোমশ বুকে ছোট্ট করে চুমু খায় রাই, রুদ্রের মুখে ছোট্ট হাসির ঝিলিক উঁকি দিয়ে যায় ঠোঁট দুটো নামিয়ে এনে রাইয়ের কপালে একটা নাতিদীর্ঘ চুমু একে দেয়। -ব্যাস শুধু এখানেই? আর কোথাও আমার কি চুমু পাওনা নেই নাকি সেটা আবার.... -(কথাটা শেষ করবার আগেই রুদ্রের ঠোঁট দুটি রাইয়ের ঠোঁটের দখল নিয়ে নেয়, উষ্ণ আলিঙ্গনে প্রেমভরা চুম্বনে সিক্ত করে দেয় প্রেয়সীর ওষ্ঠ কে) এখনো কি মাথা ব্যাথা করছে? -(রুদ্রের ঠোঁট থেকে ছাড়া পেতেই অজানা এক ভালোলাগা আর প্রেমিকের চুম্বনের লাজের মিশেলের আনন্দে প্রানবন্ত হয়ে উঠে রাইয়ের চোখ মুখ) না মশাই মাত্রই যে ঔষধ পেলাম সেটার পর মাথা ব্যাথা কেন আর কোন ব্যাথাই থাকার কথা না। (কথা গুলো বলার সময় কেন জানি রুদ্রের চোখে স্থির রাখতে পারে না নিজের নজর, অদ্ভুত এক অনুভবের ভেলায় ভেসে যেতে চায় সব কিছু) -আরেক ডোজ চলবে কি তাহলে? -তুমি মশাই ডাক্তার আমি রোগী, ডাক্তারের কথা কি করে ফেলি (কথা টা বলেই হি হি করে হাসতে হাসতে নিজ থেকেই একটু আগে প্রেয়সীর প্রেমরসে সিক্ত হয়ে থাকা রুদ্রের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট গুজে দিয়ে উষ্ণতার ভাগ করে নিতে থাকে রাই) রুদ্র বা হাতে রাইয়ের চুলে বিলি কাটতে থাকে, কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে চুম্বনরত ঠোঁট গুলো গতি কমাতে থাকে রাই, রাই দুচোখ বন্ধ করে আছে রুদ্র সেই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে। একটুপর বুঝতে পারে রাই হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে, আর গত কদিন ধরে যে চাপ যাচ্ছে সেটাও তো কম না। নিজের বাহুডোরে ঘুমন্ত রাইকে দেখতে থাকে রুদ্র, অপরূপ সৌন্দর্যে ছেয়ে আছে মুখ জুড়ে, এখন আর সেখানে চঞ্চল চোখ জোড়ার দৌরাত্ম্য নেই তবু অদৃশ্য মায়ার জাল যেন রুদ্রকে সেদিকেই টানছে। শান্ত নিবিড় মুখমণ্ডলে পরম নিরাপত্তার বিশ্বাসে ঘুমন্ত পরীর মত রাইয়ের ঠোঁটের নিচের তিল টা যেন আলাদা করে নজর কাড়ছে। রুদ্র সেখানে আলতো করে হাত বুলিয়ে চুমু খায়, রাই যেন একটু নড়ে উঠে তখনি। রুদ্র একটু স্থির হয়ে চোখবুঁজে থাকে, ও ভাবে রাই হয়তো জেগে গেছে কিন্তু খানিক বাদে বুঝতে পারে রাই ঘুমের মাঝেই নড়ে উঠেছিল। মনে মনেই হাসতে থাকে নিজের খানিক আগের কাজকর্মে, ধীরে ধীরে দু চোখ বুঝে আসে রুদ্রের। হঠাৎ করে চোখের কাছে আলোর উপস্থিতি পড়তেই রুদ্র একটু বিব্রতকর বোধ করে -ছুটকি জানলার পর্দা টা টেনে দে, চোখে আলো পড়লে ঘুমাবো কেমন করে ( এতোদিনের অভ্যাসে রুদ্র ভাবে যে ছুটকিই হয়তো জানালার পর্দা সরিয়েছে, ওর মনেই নেই গতকাল থেকে এ ঘরের মালিকানা আরেকজনের হাতে চলে গেছে) -(জানলার কাছে দাঁড়ানো সদ্যস্নাত রাই চুল গুলো আগত বাতাসে হালকা উড়ছে, ঘুমের ঘোরে রুদ্রের কথা গুলো শুনে রাই এর মুখে হাসি ফুটে উঠে। ধীর পায়ে হেটে রুদ্রের মাথার কাছে বসে ওর মুখের উপর নিজের ভিজে চুল দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে থাকে) এই যে মশাই এখানে ছুটকি নেই, আমি আছি। সকাল হয়ে গেছে ও ঘরে সবাইকে চা খাবার জন্য ডাকছে উঠো তাড়াতাড়ি। -(মুখের উপর ভিজে ভাবটা পেতেই পিটপিট করে আধবোজা আধখোলা চোখে রাইয়ের দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দেয়) গুড মর্নিং জান, তুমি তো দেখি উঠে একদম স্নান করে রেডি হয়ে গেছো। (ডান হাত টা তুলতে গিয়ে বুঝতে পারে হাতটা ব্যাথা করছে, কিন্তু সেটা রাই কে বুঝতে দেয় না, বা হাতে রাইয়ের মুখের সামনে চলে আসা চুল গুলো কানের পাশে গুজে দিয়ে) তোমাকে কিন্তু আজ বেশি সুন্দর লাগছে। -তাই বুঝি, সকাল সকাল বরের কাছে এমন কমপ্লিমেন্ট পেয়ে মনটা খুশি হয়ে গেল ( মাথাটা নিচু করে রুদ্রের গালে ছোট্ট চুমু একে দেয়) নাও উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও৷ আমাদের তো আবার ও বাড়ি যেতে হবে দ্বিরা গমনে। রাই স্নান করেই শাড়ি পড়ে নিয়েছিল লম্বা আঁচলের ঘুমটা টেনে রুম থেকে বের হয়ে যায়, রুদ্রও সাথে সাথে উঠে বাথরুমে চলে যায়। ডান হাত টা একদম নাড়াতেই পারছে না, কোন মতে ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে রুদ্র খাবার টেবিলের দিকে যেতে থাকে৷ টেবিলে আগে থেকে অবিনাশ বাবু, জয়, ছুটকি তনু আরও অনেকেই বসে আছে। অঞ্জলি আর পল্লবী হাতে হাতে খাবার গুলো টেবিলে গুছিয়ে রাখছে আর রাই টেবিলের এক কোনে দাড়িয়ে প্লেটে খাবার গুলো সার্ভ করছে, রুদ্র একটা চেয়ার টেনে বসতে গিয়ে দেখে বাকিরা কেমন মুচকি মুচকি হাসছে ঘটনা কি সেটাই বুঝতে পারছে না। রাইয়ের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে রাই যেন কিছু একটা ইশারায় বলতে চাইছে কিন্তু কি বলতে চাইছে সেটাই তো রুদ্রর বুঝতে পারছে না। রুদ্রের খাবার প্লেট টা দিতে এসে পল্লবী একটু ঝুঁকে রুদ্রের কানের সামনে এসে বলে -(চাপা স্বরে হাসি মিশ্রিত কন্ঠে) কাল রাতে তাহলে প্রেম টা ভালোই জমেছে দেখছি, আর সেটার চিহ্ন ও তো দেখি নিজের সাথে নিয়ে ঘুরছো। -কি বলছো হেয়ালি ছেড়ে খুলে বলো তো। -নিজের টিশার্টে দেখো আগে (রুদ্রের কাঁধের দিকে ইশারা করে পল্লবী) রুদ্র ভালো করে খেয়াল করে দেখে সেখানে সিঁদুর লেপ্টে আছে। এবার বুঝতে পারে কেন সবাই ওভাবে মুখ লুকিয়ে হাসাহাসি করছিলো, রাতে রাই যখন ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিল তখন হয়তো লেগে গিয়েছে সেটা দেখেই বাকিরা কি না কি ভাবতে শুরু করেছে কি জানে। রুদ্র চেয়ার ছেড়ে উঠে ঘরে চলে যায় টিশার্ট টা বদলে নিতে, পেছনে হাসাহাসির শব্দটা বেশ কানে আসছে ওর। দুপুরের দিকে রাই রা দ্বিরাগমনে যাবে, ওদের ইচ্ছে ছিল জয় পল্লবীও যেন ওদের সাথে যায় কিন্তু জয়ের অফিসে কাজের খুব চাপ আছে ছুটিও শেষ তাই বিকেলের ফ্লাইটে ওরা ফিরে যাবে। রাই, তনু, ছুটকি ওরা রেডি হচ্ছে দ্বিরাগমনে রাইদের বাড়ি যাবার জন্য।
25-08-2022, 09:37 PM
প্রথমে কিছুটা কল্পনা এবং পরবর্তীতে ঘোর বাস্তবের মধ্যে দিয়ে রুদ্র এবং রাইয়ের ফুলশয্যার রাত বেশ ভালোই কাটলো। তার সঙ্গে বাকিদের অর্থাৎ ছুটকি এবং তনুর উপস্থিতিও বেশ উপভোগ্য। সব মিলিয়ে একেবারে জমজমাট পর্ব।
25-08-2022, 09:49 PM
খুব মিষ্টি একটা পর্ব পেলাম আজকে। প্রথমে কল্পনার জগতে কিছুক্ষন সময় কাটানো আর পরে বাস্তবেও আরও মিষ্টি কিছু মুহূর্তের সম্মুখীন হওয়া। রাগী রাগী দুস্টু চোখ দুটো দেখে স্বামী বেচারার যে বুকের হৃদস্পন্দন কি লেভেলে বেড়ে গেছিলো সেটাই ভাবছি। এড়িয়ে যেতেও ইচ্ছে করছিলো আবার পারছিলোও না এড়াতে। দুজনের এই একান্তে কাটানো সময় টুকু ওদের কাছে অন্যতম স্মরণীয় সময় হয়ে থাকবে। ♥️
|
« Next Oldest | Next Newest »
|