Thread Rating:
  • 83 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
-মন্দের ভালো (সমাপ্ত)
Khub sundar 2
yourock
[+] 1 user Likes agunpakhi69's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(09-08-2022, 01:39 AM)Boti babu Wrote: তাহলে তো কথাই নেই devil2
 এমনিতে আজ চার দিন ধরে ঝগড়া চলছে fight বাবার বাড়িতে গেছে আমি বলেছি বাড়ি চলে আসতে চার পাঁচ দিন থেকে বলে কিনা সামনের সাপ্তাহে আসবে। ভাই মেয়েরা বিয়ের আগে জাই বলুুক বিয়ের পর সব এক দিকে আর বাবার বাাড়ি এক দিকে। 

এক দিকে ভালোই আছি স্বাধীনতা পেয়েছি অনেক দিন পর  Big Grin ।হা হা হা

(09-08-2022, 01:40 AM)Boti babu Wrote: তুমি বিয়েটা কর ভাই তার পর বুঝতে পারবে কত ধানে কত চাল।  Big Grin Big Grin


যা যা শুনছি তাতে তো বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছি। বিয়ে করা ছাড়াই যে জ্বালাতনে থাকি বিয়ে করলে তো শেষ, এখন যাও এক দুটো কথা বলার সুযোগ পায় সেটাও তো পারবো না।

যা হয়েছে হয়েছে বৌদির কাছে ক্ষমা চেয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিলেই ভালো, কারণ যত দোষ নন্দ ঘোষ।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(09-08-2022, 10:44 AM)agunpakhi69 Wrote: Khub sundar 2

thanks
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
ভালো একটি পর্ব পড়লাম। এখন গল্পের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে, রুদ্রের সেই অজানা কালো অধ্যায় ও তার মনের অন্তর্দন্দ। এটার দ্বারা লেখক গল্পে অনেক কিছুই দেখাতে পারেন। বাকি সবার কথা বলতে পারব না, কঠিন কিছুর জন্য আমি নিজে প্রস্তুত আছি।
[+] 1 user Likes sudipto-ray's post
Like Reply
(09-08-2022, 12:41 PM)sudipto-ray Wrote: ভালো একটি পর্ব পড়লাম। এখন গল্পের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে, রুদ্রের সেই অজানা কালো অধ্যায় ও তার মনের অন্তর্দন্দ। এটার দ্বারা লেখক গল্পে অনেক কিছুই দেখাতে পারেন। বাকি সবার কথা বলতে পারব না, কঠিন কিছুর জন্য আমি নিজে প্রস্তুত আছি।

কঠিন কিছু? বিয়েটা হলেই হয়
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
আমি শুধু আপন মনে পড়ে যাচ্ছি ! কিছুই বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না ! লিখতে থাকুন ...... আমাদের পড়তে দিন ! 
[+] 1 user Likes আমিও_মানুষ's post
Like Reply
(09-08-2022, 09:41 PM)আমিও_মানুষ Wrote: আমি শুধু আপন মনে পড়ে যাচ্ছি ! কিছুই বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না ! লিখতে থাকুন ...... আমাদের পড়তে দিন ! 

আপনাদের জন্যই তো লিখি..
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
Waiting next
[+] 1 user Likes Johnnn63's post
Like Reply
(12-08-2022, 12:15 PM)Johnnn63 Wrote: Waiting next

লেখা শুরু হয়েছে।
খুব শীঘ্রই নতুন পর্ব চলে আসবে।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
এই গল্পটা আগে পড়িনি। কেন পড়িনি জানিনা। তবে একদিকে ভালই। একসাথে পড়ে নিলাম। অপেক্ষা কম করতে হল। মিষ্টি সুন্দর সেক্সি গল্প। 

দুটো প্রশ্ন রিতা বা তনয়া অত সহজে কি করে মিশে গেলো বিয়েতে? 
মানে জেলাস হল না? ওটা খানিকটা অবাক করলো আমায়। যেন খাপে খাপ টাইপ। 

বাই দা ওয়ে আমার মন বলছে বিয়ে বাড়িতে পল্লবীর সাথে কিছু ঘটবে! যেটার ফল খুব একটা সুখদায়ক হবে না!

লাস্টলি রাই এর মত কেউ খুব একটা পাওয়া যায়না আজকের দিনে। পুরুষ হোক বা নারী উভয় ক্ষেত্রেই বলছি। এত গভীরতা সবার থাকেনা। yes there can be exception and always is.

আপনার জীবনে এমন কোন রাই আছে? নাকি সবটাই কল্পনা!
[+] 1 user Likes pro10's post
Like Reply
(14-08-2022, 01:45 AM)pro10 Wrote: এই গল্পটা আগে পড়িনি। কেন পড়িনি জানিনা। তবে একদিকে ভালই। একসাথে পড়ে নিলাম। অপেক্ষা কম করতে হল। মিষ্টি সুন্দর সেক্সি গল্প। 

দুটো প্রশ্ন রিতা বা তনয়া অত সহজে কি করে মিশে গেলো বিয়েতে? 
মানে জেলাস হল না? ওটা খানিকটা অবাক করলো আমায়। যেন খাপে খাপ টাইপ। 

বাই দা ওয়ে আমার মন বলছে বিয়ে বাড়িতে পল্লবীর সাথে কিছু ঘটবে! যেটার ফল খুব একটা সুখদায়ক হবে না!

লাস্টলি রাই এর মত কেউ খুব একটা পাওয়া যায়না আজকের দিনে। পুরুষ হোক বা নারী উভয় ক্ষেত্রেই বলছি। এত গভীরতা সবার থাকেনা। yes there can be exception and always is.

আপনার জীবনে এমন কোন রাই আছে? নাকি সবটাই কল্পনা!

রিতা তনয়া কথটা আপনিই বললেন, আর ওরা কি করবে সেটা নতুন পর্বে জানা যাবে,
আর হ্যাঁ এমন একটা রাই আমার জীবনে আছে তবে আমার হয়ে নয়।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply

-প্লিজ আমার কথাটা শুনো, তুমি যা শাস্তি দিবে সব মেনে নেব তবুও আমাকে ভুল বুঝো না। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি কিন্তু....( রুদ্রকে থামিয়ে দেয় রাই)


-তুমি আর কোন কথা বলো না, তোমার কোন কথাই শুনার ইচ্ছে নেই আমার। এত কিছুর পর তুমি আবার কথা বলতে চাইছো। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছো, আমাকে ঠকিয়েছো শাস্তি তো পেতেই হবে তোমাকে, আমি ভেবে নিয়েছি এ বিয়ে হবে না (কথাটা বলেই রাই রুম থেকে বের হয়ে যাবে তখনি রুদ্র ওর হাত চেপে ধরে)







তবে কি এখানেই সব শেষ নাকি নতুন করে শুরু। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলবে তো? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল পর্যন্ত, আগামীকাল আসছে নতুন পর্ব - পরিণয় নাকি পরিণতি 
[+] 4 users Like nextpage's post
Like Reply
(14-08-2022, 09:06 PM)nextpage Wrote:
-প্লিজ আমার কথাটা শুনো, তুমি যা শাস্তি দিবে সব মেনে নেব তবুও আমাকে ভুল বুঝো না। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি কিন্তু....( রুদ্রকে থামিয়ে দেয় রাই)


-তুমি আর কোন কথা বলো না, তোমার কোন কথাই শুনার ইচ্ছে নেই আমার। এত কিছুর পর তুমি আবার কথা বলতে চাইছো। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছো, আমাকে ঠকিয়েছো শাস্তি তো পেতেই হবে তোমাকে, আমি ভেবে নিয়েছি এ বিয়ে হবে না (কথাটা বলেই রাই রুম থেকে বের হয়ে যাবে তখনি রুদ্র ওর হাত চেপে ধরে)







তবে কি এখানেই সব শেষ নাকি নতুন করে শুরু। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলবে তো? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল পর্যন্ত, আগামীকাল আসছে নতুন পর্ব - পরিণয় নাকি পরিণতি 

অপেক্ষায় থাকলাম।
[+] 1 user Likes pro10's post
Like Reply
(14-08-2022, 08:54 PM)nextpage Wrote: রিতা তনয়া কথটা আপনিই বললেন, আর ওরা কি করবে সেটা নতুন পর্বে জানা যাবে,
আর হ্যাঁ এমন একটা রাই আমার জীবনে আছে তবে আমার হয়ে নয়।

Heart Heart
[+] 1 user Likes pro10's post
Like Reply
(14-08-2022, 09:06 PM)nextpage Wrote:
-প্লিজ আমার কথাটা শুনো, তুমি যা শাস্তি দিবে সব মেনে নেব তবুও আমাকে ভুল বুঝো না। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি কিন্তু....( রুদ্রকে থামিয়ে দেয় রাই)


-তুমি আর কোন কথা বলো না, তোমার কোন কথাই শুনার ইচ্ছে নেই আমার। এত কিছুর পর তুমি আবার কথা বলতে চাইছো। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছো, আমাকে ঠকিয়েছো শাস্তি তো পেতেই হবে তোমাকে, আমি ভেবে নিয়েছি এ বিয়ে হবে না (কথাটা বলেই রাই রুম থেকে বের হয়ে যাবে তখনি রুদ্র ওর হাত চেপে ধরে)







তবে কি এখানেই সব শেষ নাকি নতুন করে শুরু। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলবে তো? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল পর্যন্ত, আগামীকাল আসছে নতুন পর্ব - পরিণয় নাকি পরিণতি 

এই ধরনের টিজার পেলে গল্পের আপডেট পড়ার ইচ্ছা হাজারগুন বেড়ে যায়।  clps
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ ই হবে✌️✌️??
[+] 1 user Likes Arpon Saha's post
Like Reply
(14-08-2022, 09:49 PM)pro10 Wrote: অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ 


(14-08-2022, 10:10 PM)Bumba_1 Wrote:
এই ধরনের টিজার পেলে গল্পের আপডেট পড়ার ইচ্ছা হাজারগুন বেড়ে যায়।  clps

ধন্যবাদ দাদা

(14-08-2022, 10:59 PM)Arpon Saha Wrote: শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ ই হবে✌️✌️??

কি জানি..
Like Reply
পরিণয় নাকি পরিণতি







লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
মাথা চাইয়া টিকা দিমু
জড়োয়া লাগাইয়া সই গো
জড়োয়া লাগাইয়া সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
নাক চাইয়া নাকফুল দিমু
পান্না লাগাইয়া সই গো
পান্না লাগাইয়া সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
কান চাইয়া পাশা দিমু
মতিয়া লাগাইয়া সইগো
মতিয়া লাগাইয়া সইগো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
গলা চাইয়া হার দিমু
হিরা লাগাইয়া সইগো
হিরা লাগাইয়া সইগো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
হাত চাইয়া বালা দিমু
সোনা লাগাইয়া সইগো
সোনা লাগাইয়া সইগো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
কোমর চাইয়া বিছা দিমু
রুপা লাগাইয়া সইগো
রুপা লাগাইয়া সইগো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
পাও চাইয়া পাঝর দিমু
ঘুঙ্গর ও লাগাইয়া সইগো
ঘুঙ্গর ও লাগাইয়া সইগো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
পিন্দন চাইয়া শাড়ি দিমু
ওড়না লাগাইয়া সই গো
ওড়না লাগাইয়া সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
আইছৈন লীলাবালী থমকি থমকি
বইছৈন লীলাবালী ভালা গো
না জানি কুন তামশে লীলাবালী
না জানি কুন ইস্কে লীলাবালী
ঘুন ঘুন সদা মাতৈন গো
নাকর কেশরী কানের পাশা
বইছৈন লীলাবালী ভালা গো
মাথার শিতাপাটি গায়ের উড়না
বইছৈন লীলাবালী ভালা গো
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে
লীলাবালি লীলাবালি
বড় যুবতী সই গো
বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে


গোধূলি লগ্নে রাই আর রুদ্রের বিয়ে, এখন অধিবাসের স্নান চলছে আর সেই স্নান শেষে পাত্র পাত্রীর সাজসজ্জার পর্ব শুরু হবে। উপরের গীত টা বিয়ের বাড়ির বড় আকর্ষণ। সেই সেন্টারেই বিয়ের আসর বসছে, সেই জন্য মাঝের বড় জায়গায় নয়নাভিরাম কুঞ্জ তৈরী করেছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের লোকেরা। চারদিকে সবাই ছোটাছুটি করছে, কেউ সাজসজ্জায়, কেউ খাওয়া দাওয়ায়, কেউ ছোট বাচ্চাদের সামলাতে আর কেউ কাজের ব্যস্ততায়। পুরো সেন্টার টা মানুষে গমগম করছে, এখনো নিমন্ত্রিত অতিথিরা তো আসেই নি।

রুদ্র অনেকক্ষণ ধরেই সুযোগ খুঁজছিল রাই কে একা পাবার জন্য, ওর সাথে বিষয়টা নিয়ে কথা না বলা পর্যন্ত ও শান্তি পাচ্ছে  না। রুদ্র একবার বাথরুম হয়ে রাইয়ের রুমে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়৷
রাইয়ের রুমের কাছে গিয়ে টুকা দিতেই পার্লারের একজন এসে দরজা খুলে, ভিতরে ঢুকে রাইয়ের সাথে একা কথা আছে বলতেই ওরা বেড়িয়ে যায়। রুদ্র একটা চেয়ার টেনে রাইয়ের সামনে বসে, ওর চোখে মুখে ভয়, অজানা আতংক আর দুশ্চিন্তা স্পট করেই ফুটে উঠেছে কপালে পাশ বেয়ে ঘাম ছুটেছে

-কি হয়েছে তোমার, এমন করে ঘামছো কেন? কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি? কেউ কিছু বলেছে তোমাকে (রুদ্রের এমন অবস্থা দেখে রাইও ঘাবড়ে যায়)

-(কোথা থেকে শুরু করবে বুঝতে পারছে না, বারবার গলার কাছে সব কেমন জড়িয়ে যাচ্ছে, পা দুটো কাঁপছে, ভাঙা ভাঙা স্বরেই বলতে শুরু করে) তোমাকে কিছু কথা বলা দরকার, কথা গুলো একটু শান্ত হয়ে শুনো। সবটাই আমার ব্যাপারে এগুলো তুমি জানতে না কিন্তু আমি মনে করি সেগুলো তোমার জানার দরকার।

-(রাইয়ের কপালে ভাজ পড়ে) সিরিয়াস কিছু? তুমি কোন মজা করছো না তো আবার?

-না না মজা নয়, সবটাই সত্যি (এক এক করে রুদ্র সব বলতে শুরু করে সেই রাই গ্রাম ছাড়ার পর থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো একএক করে রাইয়ের সামনে খোলা বইয়ের মত বলতে থাকে)

রাই স্তব্ধ হয়ে বসে আছে, ও চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে চোখের পাতি পড়ছে না। জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মত চোখ দুটো রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে এখনি হয়তো রুদ্র ভস্ম হয়ে যাবে সেই আগুনে। রুদ্রও নিজেও ভয় পেয়ে যায় রাইয়ের মুখের অভিব্যক্তি দেখে, হাত বাড়িয়ে রাইয়ের হাত টা ধরতে যাবে তখনি রাই এক ঝটকায় নিজের হাত সরিয়ে নেয়
-তুমি আমাকে ধরবে না, ঐ হাতে আমাকে কখনো স্পর্শ করবে না। তুমি আমার বিশ্বাস আশা ভরসা সব শেষ করে দিয়েছো, এক ঝটকায় আমার সব স্বপ্ন ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছো। আমার ভালোবাসা কে তামাশা বানিয়ে দিয়েছো, তুমি কখনো আমাকে ভালোই বাসো নি এখনো বাসো না। তুমি তো আমাকে ঘৃণা করো আর পরেও সেটাই করবে।

-প্লিজ আমার কথাটা শুনো, তুমি যা শাস্তি দিবে সব মেনে নেব তবুও আমাকে ভুল বুঝো না। হ্যাঁ আমি ভুল করেছি কিন্তু....( রুদ্রকে থামিয়ে দেয় রাই)

-তুমি আর কোন কথা বলো না, তোমার কোন কথাই শুনার ইচ্ছে নেই আমার। এত কিছুর পর তুমি আবার কথা বলতে চাইছো। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছো, আমাকে ঠকিয়েছো শাস্তি তো পেতেই হবে তোমাকে, আমি ভেবে নিয়েছি এ বিয়ে হবে না (কথাটা বলেই রাই রুম থেকে বের হয়ে যাবে তখনি রুদ্র ওর হাত চেপে ধরে)

-তুমি এটা বলতে পারলে? এটা শাস্তি দিচ্ছো নাকি আমাকে কষ্ট দিতে চাইছো। বিয়েটা ভেঙে গেলে সেটার কারণ জানতে চাইলে মা বাবার কাছে মুখ দেখাতে পারবো না।

-সেটা তোমার আগেই ভাবা উচিত ছিল, এখন তো আমি সবার আগে আন্টিকেই বলবো, আন্টিই যা সিদ্ধান্ত নেবার নিবে ( রুদ্রের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে রাই হনহন করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়, রুদ্র ধপ করে চেয়ারের উপর বসে পড়ে)

কিছুক্ষণ পর মায়ের আওয়াজ শুনে রুদ্রের শরীর  কেঁপে উঠে, রুমের দরজা খোলার শব্দ হতেই সেদিকে ভয়ার্ত চোখ নিয়ে রুদ্র তাকাতেই দেখে ওর মা আর রাই ঢুকছে রুমে। মায়ের মুখ দেখেই রুদ্রের যায় যায় অবস্থা। চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে মায়ের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে, যে ভুল ও করেছে এই কান্নায় যে মুক্তি নেই সেটা রুদ্র ভালো করেই জানে। তবুও শেষ চেষ্টা করতে ক্ষতি কি, রাই কি শুধু মা কে বলেছে নাকি বাবাকেও বলে দিয়েছে নাকি কে জানে। বাবার কানে কথাটা গেলে ওকে মেরেই ফেলবে, মা না হয় একটু ধমকে মেরে শেষ করবে কিন্তু বাবা? আর যে অন্যায় সে করেছে তাতে করে এমন অবস্থা হবে সেটা অবাক হবার মত নয়। চোখ বুজে শাস্তির প্রহর গুনতে থাকে সে...


বাথরুমের দরজায় কেউ ধড়াস ধড়াস করে হাত চালাচ্ছে, সেটার শব্দে রুদ্রের সম্বিত ফিরে। ওর শরীর ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে আছে, একটু ধাতস্ত হতেই বুঝতে পারে ও রাইয়ের রুমে নয় ও এখনো বাথরুমেই আছে। এতক্ষণ যেটা ছিল সবটাই ওর কল্পনা মাত্র কিন্তু তাতেই ওর হাত পা কাঁপছে, নিঃশ্বাসের গতি বেড়ে গেছে। কিছুটা সামলে নিয়ে বাথরুমের দরজা খোলে দেখে জয় দাড়িয়ে

-কিরে বাথরুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলি নাকি, সেই কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি তোর কোন খবর নেই, আরেকটু হলে তো আমি সবাইকে ডাকতে চলে যেতাম ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলি।

-ঐ একটু চোখ লেগে গিয়েছিল ( কি বলে ব্যাপারটা কাটাবে সেটা বুঝতে পারে না, তাই এটাই বলে দেয় রুদ্র)

-কি জানি, অন্য কিছুই করছিলি নাকি কে জানে। তর সইছে না নাকিরে ভাই, এইতো আজ আর কাল তারপর তো... (জয় খিলখিল করে হাসতে থাকে)

-তোর তো সবকিছুতেই এমন মনে হয়, আমার জন্য এতো কষ্ট হলে তোর বউটাকে দিয়ে দে।

-তোর নজর তো ভালো নারে, যাই আমার বউকে আগে আগলে রাখি। তুই তাড়াতাড়ি রেডি হ আন্টিরা ডাকছে (জয় রুম থেকে বেড়িয়ে যেতেই রুদ্র কোন মতে বিছানায় গিয়ে বসে পড়ে)

রুদ্রের হাত পা অবশ হয়ে গেছে, গলা কেমন শুকিয়ে আসছে এমন ভাবে ভয় ওর উপর আগে কখনো চেপে বসে নি। এজন্যই হয়তো কাছের কাউকে হারানোর ভয় মানুষকে দিয়ে যা খুশি তাই করিয়ে নিতে পারে। যতবারই রুদ্র ভেবেছে এবার রাইকে সবটা বলে দিবে ততবারই হারিয়ে ফেলার ভয় ওকে চেপে ধরেছে, আচ্ছা রাই যদি সত্যি সত্যি ওকে ছেড়ে চলে যায়, মাকে সব কিছু বলে দেয় তবে কি হবে, সে কি আটকাতে পারবে রাই কে? কোন মুখে আটকাবে। মায়ের কাছেই বা দাঁড়াবে কি করে, মায়ের সব বিশ্বাস আস্থা নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে। দরজা খোলায় আওয়াজে সামনের দিকে তাকায় রুদ্র

-(দরজা ঢেলে রুমে ঢুকে অঞ্জলি দেবী) কিরে তুই এখনো রেডি হস নি কেন? সব কিছুতো তোর সামনেই রাখা আছো, নে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।

-ধুতি টা কিভাবে পড়বো সেটাই বুঝতে পারছি না। তাই তো দেরি হচ্ছে।

-এত বড় হয়ে এই কথা বলিস, ছি ছি। দাঁড়া আমি দেখি বাইরে জয় বা তোর বাবা কাউকে পাই কিনা।(অঞ্জলি দেবী ঝটপট রুম থেকে বেড়িয়ে যায়)

খানিক বাদে রুদ্রের বাবা জয় দুজনেই রুমে ঢুকে, দুজনে মিলে রুদ্র কে তৈরী করতে থাকে। ধুতি পড়িয়ে পাঞ্জাবি গলিয়ে মাথায় টুপুর দিয়ে রুদ্রের বরের সাজে তৈরী হয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসে আরও অনেকের সাথে। কুঞ্জের ভিতরে রাই এর বাবা বিজয় চৌধুরী অপেক্ষা করছে সম্প্রদানের জন্য। বরের স্টেজে রুদ্র বসে আছে, দেবীকা দেবী আরও কয়েকজন মহিলা হাতে পঞ্চপ্রদীপ, ধান-দুর্বা, কলার ছড়ি, কড়ি এসবের ডালা হাতে এদিকে আসছে। কারও হাতে মিষ্টি আর জলের গ্লাস, আবার কারও হাতে মেকাপ বক্স। প্রথমেই রুদ্রের বরণ হয় তারপর মিষ্টি মুখ আর শেষে রুদ্রের কপালে হালকা চন্দনের ফোঁটায় সাজানো হয়েছে। কুৃঞ্জের ভেতর থেকে ডাক এসেছে রুদ্রকে নিয়ে যাবার জন্য।

দান করার পর রাইকে নিয়ে আসা হয় পিড়িতে বসিয়ে, পিড়ির সামনের একপাশে জয় ধরে আছে অন্যদিকে আরও তিনজন আছে। প্রথমেই শুভদৃষ্টি, মুখের সামনের ধরা পানপাতা সরিয়ে এক অন্যের চোখে চোখ রাখা। কিন্তু রুদ্রের কেন জানি একটু অস্বস্তি হচ্ছে রাইয়ের চোখে চোখ মেলাতে, নিজের ভেতরের অপরাধ বোধটা জেগে উঠছে। রুদ্রের মনে হচ্ছে ও হয়তো রাই কে ঠকাচ্ছে, এমন এক অবস্থায় দাড়িয়ে আছে এখান থেকে এখন পিছু হাঁটা অসম্ভব ওর পক্ষে। আশপাশে তাকিয়ে সবার চোখে মুখে আনন্দের রেশ খানা দেখেও রুদ্রের অশান্ত মন শান্ত হচ্ছে না। রুদ্রের চোখের মুখের ছটফটানি ভাবটা রাইয়ের দৃষ্টি এড়ায় না, রাই বুঝতে পারছে না রুদ্রের হঠাৎ কি হলো যে রুদ্র বারবার ওর চোখ এড়িয়ে যেতে চাইছে। রাইয়ের মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলেও সবার সামনে সেটা আর প্রকাশ্যে আনলো না, ওদিকে রুদ্রও খেয়াল করেছে আড় চোখে রাইয়ের ওর দিকে তাকিয়ে থাকাটা তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক করার জন্য একটা স্ফীত হাসি ফুটায় মুখে পরক্ষণেই রাইয়ের মুখেও সেই হাসি খেলা করতে থাকে।
কন্যা সম্প্রদান শেষে রুদ্রের আর রাইয়ের হাত ধরে থাকা বিজয় চৌধুরীর চোখের কোনে অশ্রু বিন্দু চিকচিক করতে থাকে। রাইয়ের চোখে ধরা খেতেই একহাতে ঝটপটে চোখ দুটো মুছে নিয়ে বৃথা হাসির চেষ্টা করে বিজয় চৌধুরী, রাই দুহাতে বাবাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করে। আশেপাশে দাঁড়ানো যারা ছিল তারা এসে ওদের দুজন কে শান্ত করে। বর কনে কে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় পাশা খেলার জন্য এর পর বাসি বিয়ে আর সিঁদুর দান পর্ব হবে। পাশা খেলা, বর কনের মান ভাঙানো, মিষ্টিমুখ ইত্যাদি রীতি পালন শেষে আবার বর কনে কুঞ্জে ফিরে আসে বাসি বিয়ে আর সিঁদুর দানের জন্য। সাত পাক ঘোরা শেষে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ের পর্ব শেষ হয়। সেখান থেকে বর কনে কে স্টেজে নিয়ে যাওয়া হয় ফটোসেশানের জন্য। স্টেজের মাঝখানে রাজকীয় চেয়ার বসানো হয়েছে বর কনের জন্য, তার পাশে আরও কয়েকটা চেয়ার রাখা আছে বাকিদের জন্য। প্রথমে বাবা মা, ভাই বোন দের সাথে ফটোসেশান শুরু হয় এরপর বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের সাথে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলতেই থাকে।
অতিথিদের বেশির ভাগ খাওয়া দাওয়া করে বিদায় নিয়েছে, খুব কাছের কয়জন রয়ে গেছে, অফিসে কলিগদের মাঝেও কয়েকজন আছে আর তাদের মাছে রিতার চঞ্চলতা সবার দৃষ্টি কারছে। ফটোসেশানের পর বর কনে কে খাবার খাওয়ার জন্য ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে ছুটকি আর তনু আছে আপ্যায়নের জন্য। টেবিলে বাহারি সব পদ সাজিয়ে রাখা আছে, শুরুতেই হাত ধোয়ানোর জন্য তনু আর ছুটকি রুদ্র আর রাই এর কাছে টাকা দাবি করে সেটা নিয়ে কিছুক্ষণ ভালই দর কষাকষি হয়। শেষ পর্যন্ত দুজনের কাছ থেকে ভাল পরিমানে টাকা খসানো শেষে খাওয়া শুরু হয়, রাইয়ের হাতে গ্লীটারের নকশা আরো অন্যান্য সাজ সজ্জার কারণে রাই নিজ হাতে খেতে পারছিল না দেখে  রুদ্র ওর মুখে তুলে খাইয়ে দেয় সেটা নিয়ে বাকিরা বেশ ঠাট্টা তামাশায় মেতে উঠে, পল্লবী আর রিতা দুটো মিলে তো রুদ্র কে ঠিকমত খেতে পর্যন্ত দিচ্ছে না। শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে পল্লবী রিতা তনু ছুটকি সবাইকেই মুখে তুলে খাইয়ে দিতে হয়েছে রুদ্রের, আর পাশে বসা রাই মুখ টিপে হেসে চলেছে তখন থেকে ও খেয়াল করেছে তখনকার রুদ্রের সেই ছটফটানি ভাবটা এখন আর নেই পরে এক ফাঁকে রুদ্রের সাথে কথা বলবে ভেবে রাখে।



একটা বড় রুমের ফ্লোরে তোশক বিছিয়ে গদি বানানো হয়েছে, অনেক গুলো কুশন আর কোলবালিশ সাজিয়ে রাখা আছে। এখানেই বাসর রাতের এর আসর বসেছে। মাঝখানে রুদ্র আর রাই বসে আছে দুপাশে বাকিরা বসেছে। হাসিঠাট্টা গল্পগুজবে আসর জমে উঠেছে, বাড়ির বড় রা এখানে তেমন কেউ নেই বড়দের দলটা আরেকটা রুমে তাদের মত করেই গল্প করে সময়টা কাটিয়ে দিবে। বাসর ঘরের রাতজাগা মানুষ গুলো দুই পক্ষ নিয়ে হুলস্থুল কান্ড ঘটাচ্ছে, কেউ কেউ রাই এর দলে আবার কেউ কেউ রুদ্রের দলে। একটু পরপর অট্টহাসি শব্দ রুমের দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে কানে ফিরে আসছে, সবাই আনন্দে মশগুল হয়ে আছে কিন্তু রাইয়ের পাশে বসা রুদ্রের চোখে মুখে সেই আনন্দের ছাপ টা নেই। বাকিরা হয়তো দেখে বুঝবে না কিন্তু রাইয়ের চোখে সেটা ঠিকি ধরা দিয়েছে, রুদ্রের মাঝে একটা অস্থিরতা কাজ করছে স্পষ্ট বুঝতে পারছে৷ সবার সামনে কিছু বলতেও পারছে না কিছু বলতে গেলেই ওমনি সবাই হুমড়ি খেয়ে পরবে ওদের দিকে, রাই আস্তে করে ওর বা হাতে রুদ্রের ডান হাতটা চেপে ধরে। রাইয়ের স্পর্শ পেতেই রুদ্র ওর দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা হাসি দেয়, হয়তো বুঝানোর চেষ্টা করে এভ্রিথিং ইজ অলরাইট রাই ও উত্তরে ছোট হাসিতেই বুঝাতে চায় ও রুদ্রের পাশেই আছে সবসময়।

এবার গানের আসর বসবে, কে প্রথমে গান করবে সেটা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে। এর মাঝেই রুদ্রের পাশে বসা পল্লবী আর রাইয়ের পাশে বসা জয় গান ধরে

যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে
জীবনে অমর হয়ে রয়
যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে
জীবনে অমর হয়ে রয়
সেই প্রেম আমাকে দিও
জেনে নিও
তু়মি আমার
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়
তুমি আর আমি আর কেউ নাই
এমন একটা যদি পৃথিবী হয়
মিলনের সুখে ভরে যায় বুক
যেখানে আছে শুধু সুখ আর সুখ
সেই সু়খ আমাকে দিও
জেনে নিও
তুমি আমার
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়
তুমি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়

জয় আর পল্লবীর গান শেষ হতেই সবাই তুমুল করতালি তে ওদের স্বাগত জানায়, ওদের কন্ঠে রোমান্টিক গানে বাসর রাতের আবহ টাই পাল্টে যায়৷ গানের পুরষ্কার হিসেবে রাই রুদ্র ওদের দুজনকেই গিফট দেয়। এরপর একে একে অন্যরাও যার যার পছন্দের আর গান গাইতে থাকে, কিন্তু রাইয়ের মন সেদিকে নেই ওর চোখ বারবার আনমনা রুদ্র কে পরখ করে যাচ্ছে। রুদ্রের কিছু তো একটা হয়েছে হয়তো সেটা রাই কে বলতে পারছে না, কিন্তু রুদ্র কে এমন অবস্থায় দেখে রাইয়ের মন শান্তি পাচ্ছে না সবার কথার মাঝে সায় দিলেও আড় চোখে বারবার রুদ্রের মুখটা দেখছে৷ এর মাঝেই তনু আর ছুটকি রাই কে চেপে ধরেছে গান গাইবার জন্য, রাই প্রথমে না না করছি এক ফাকে রুদ্রের দিকে তাকাতেই রুদ্র চোখের ইশারায় ওকে গাইতে বলে। রাই কি যেন ভেবে গান গাইতে শুরু করে

যেখানে সীমান্ত তোমার
সেখানে বসন্ত আমার,
ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে
আমি বারে বার আসি ফিরে
ডাকি তোমায় কাছে।
হাজার ফুলে ছেয়েছে যে পথ
আমি চিনি, চিনি সে ঠিকানা,
তোমার মনের নীরব ভাষা
সেওতো আমার আছে জানা।
আমি তো চাইনা তোমার এ দ্বিধা
ভেঙ্গে দাও কাঁচেরই বাধা,
সীমার বাঁধন ছিঁড়ে তুমি
ধরা দাও আমারই কাছে।
যেখানে সীমান্ত তোমার
সেখানে বসন্ত আমার,
ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে
আমি বারে বার আসি ফিরে
ডাকি তোমায় কাছে।

রুদ্র একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রাই এর দিকে, ও হয়তো বুঝতে পারে রাই ওর মনমরা হয়ে থাকাটা লক্ষ্য করেছে তাই হয়তো এত গান থাকতেও এই গানটা গাইলো৷ কিন্তু রুদ্র কেন নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না কি হয়ে চলেছে ওর ভিতরে সেটা তো বলতে পারছে না কাউকে, রাই কে কি করে সব বলবে সেটাই তো এখনো বুঝে উঠতে পারলো না। গান শেষ করে রাই খেয়াল করে রুদ্র ওর দিকে ওমন করে তাকিয়ে আছে, সবাই সেটা নিয়ে টিপ্পনী কাটা শুরু করতেই ওরা আবার স্বাভাবিক হয়ে বসে থাকে। এবার সবাই রুদ্র কে চেপে ধরে গান গাইবার জন্য, রুদ্র খেয়াল করে রাই এক হাতে ওর হাত টা চেপে ধরে আছে শাড়ির আঁচলের আড়ালে। রুদ্রের ইচ্ছে হয় এখনি সব চিৎকার করে ওকে বলে দিতে কিন্তু রুম ভর্তি মানুষের সামনে কিছুই বলা হয়ে উঠে না, রাই এর মনেও যে কিছু একটা চলছে ওকে নিয়ে সেটা রুদ্র বুঝতে পারে কিন্তু ওর হাত পা বাঁধা ওর নিজের কাছেই নইলে একটু একটু করে সময় চলে যাচ্ছে কিন্তু কিছুই বলা হয়ে উঠলো না। ওদিকে সবাই গান গাইবার জন্য তারা দেয়, কিন্তু রুদ্রের তেমন কোন গান মুখস্থ নেই, ও টুকটাক ব্যান্ডের গান শুনে এই পর্যন্তই, শেষমেশ একটা গান ধরে

সেই কবে ছিল উচ্ছ্বাস, কিছু শঙ্কায়ভরা চুম্বন
ছিল প্রেমিকার ঘন নিঃশ্বাস, হাসিমুখে ফোয়ারা
এই অবেলায় ফোঁটা কাশফুল, নিয়তির মত নির্ভুল
যেন আহত কোন যোদ্ধার বুকে বেঁচে থাকা এক মেঘফুল
যদি ঘরে ফেরা পাখি নিশ্চুপ, হৃদয়ে ঢেউ ভাঙে চুপচুপ
যদি জাহাজীর নাগরিক ঢেউ, অপরাধ মেনে নিয়ে কেউ কেউ
যদি শোঁকগাথা হাতে বহুদূর যাও, একদিন ঠিকই এনে দেব হাসিমুখ
রোদ্দুর...
একসাথে হেঁটে হেঁটে যেতে চাই বহুদূর...
বুকের ভেতর ডানা ঝাপটায় পাখি, বেপরোয়া ভাংচুর...
তুমি চেয়ে আছ তাই আমি পথে হেঁটে যাই
তুমি চেয়ে আছ তাই আমি পথে হেঁটে যাই
বুকের পাঁজরে ওড়ে প্রজাপতি, স্বপ্নের দিগন্ত রঙিন
ইচ্ছে হলেই এনে দিতে পারে বেপরোয়া, রোদ্দুর ঝলমল দিন
প্রেমিকার মুখ রক্তিম ছিল, রোদ উঠে গেছে তাই
তোমাদের নগরীতে আমি আজও হেঁটে বেড়াই


গানটা শেষ হতেই রুদ্র খেয়াল করে সবাই ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে, ঘটনা কি সেটাই তো বুঝছে না কোন ভুল টুল গাইলো কি না কে জানে। রাইয়ের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর চোখ দুটো চিকচিক করছে, হঠাৎ হলো টা কি সেটাই বুঝতে পারছে না। খানিক পড়েই সবাই চিৎকার করে করতালি তে রুদ্র কে অভিবাদন জানাতে শুরু করে এতো সুন্দর একটা গান গাওয়ার জন্য৷ রাত বাড়তে থাকে সাথে বাসর রাতের আসরও আরও জমতে থাকে।




★★★★


পরদিন ভোর বেলায় সেন্টার থেকে কনে বিদায় শেষে কনে সহ বরযাত্রী রা চলে আসে রুদ্রদের বাড়ী। সেদিন কালরাত্রি পালন শেষে আজ বৌভাত আর রিসেপশন অনুষ্ঠান। সকালে বাড়িতে বৌভাতের রীতি শেষ হওয়া পরপরই মেয়েদের একটা দল রাই কে নিয়ে চলে গেছে পার্লারে সেখান থেকেই ওরা কমিউনিটি সেন্টারে চলে যাবে অনুষ্ঠানে৷ অবিনাশ বাবু আগেভাগেই চলে গেছে সেন্টারে কাজের দেখাশোনা করতে, দুপুরে ভোজের আয়োজন করা হয়েছে সবকিছু ঠিকঠাক মত পৌছেছে কি না সেটাই আরেকবার দেখে নিচ্ছে। রুদ্র জয় আর ওদের গ্রুপের কয়েকজনকে নিয়ে সেন্টারের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে, বাড়ির বাকিদের জন্যও গাড়ি রাখা আছে একেকবার একেক দল বেড় হয়ে যাচ্ছে। রুদ্ররা পৌছানোর কিছুক্ষণের মাঝেই রাই তনু ছুটকি পল্লবীরাও সেন্টারে পৌঁছে যায়। স্টেজে রাই বসে আছে বাকিদের সাথে আর রুদ্র রিসিপশন এরিয়াতে আছে নিমন্ত্রিত অথিতিদের ওয়েলকাম করতে। এর মাঝেই ওদের অফিসের স্টাফ আর অন্যান্য অফিসার বস তারাও এসে উপস্থিত হয়েছে, একে একে সবাই স্টেজে রাইয়ের সাথে দেখা করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে গিফট দিচ্ছে ছবি তুলছে, ছবি তোলার জন্য মাঝে মাঝেই রুদ্রের ডাক পড়ছে স্টেজে। রুদ্র কে মাঝে মাঝে খাবারের জায়গাতেও যেতে হচ্ছে, সবাইকে ঠিকঠাক মত পরিবেশন করা হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য।

এসবের মাঝে একবার খেয়াল করলো রাই আর রিতা একান্তে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে সেই তখন থেকে, রাই ওর কথা শুনছে আর এদিক ওদিক তাকিয়ে রুদ্রকে দেখছে। কয়েকবার রাইয়ের সাথে রুদ্রের চোখাচোখি হয়েছে, রাই কেমন বড়বড় চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে মুখের ভাবও একটু অন্যরকম। রুদ্রের মনে কু ডাক ডাকতে শুরু করেছে, রিতা কিছু বলে কয়ে দেয় নি তো ওদের আগের ঘটনাটা নিয়ে, যদিও বলার কথা না কিন্তু বলে দিলে তো যা হবার তাই হবে৷ কিন্তু সেটা কিভাবে সামলাবে সেটাই ভাবছে, রুদ্রের বুকের ধুকপুকানির শব্দ ওর কান পর্যন্ত পৌছে গেছে ও যতটুকু পারছে ওদিকটা এড়িয়ে যেতে চাইছে। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠে পকেট থেকে বের করে দেখে রাই ফোন করেছে, রিসিভ না করে স্টেজের সামনে যেতেই রাই হাতে ইশারায় ওকে কাছে যেতে বলে। ধুরু ধুরু বুকে রুদ্র স্টেজে রাইয়ের কাছে গিয়ে দাড়ায়, পাশে বসা রিতা মুচকি মুচকি হাসছে কিন্তু রাইয়েন চোখে মুখে রাগের ছটা।

-রুদ্র দা তোমার মনে আছে কলেজে থাকতে আমাকে একবার বলেছিলে তুমি কারও জন্য অপেক্ষা করে আছো, রাই দি কি সেই মানুষটা?(হঠাৎ রিতার এমন প্রশ্নে রুদ্র একটু থমকে যায় পরক্ষণেই মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়)

-তুমি তো আমাকে কখনো বলো নি যে ও তোমাকে কলেজ পড়ার সময় থেকেই পছন্দ করতো, ও না বললে তো জানতেই পারতাম না। তুমি তো দেখি কিছুই বলো না আমাকে, রিতাই সব বললো আজ(রাগত স্বরে রাই রুদ্রের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলে)

-ও কি কি বলেছে ( রুদ্র ভীত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে)

-সব বলেছে, তোমার আর ওর সব কথাই বলেছে আমাকে (রাইয়ের কন্ঠের আওয়াজের রুক্ষতা আর কথা গুলো শুনে রুদ্রের দৌড়ে পালাতে ইচ্ছে করছে, কি কি বলেছে কে জানে)
[+] 11 users Like nextpage's post
Like Reply
বাথরুমে বসে রুদ্রর কাল্পনিক কনফেশনের সিকোয়েন্সটা খুব ভালো ছিলো। আজকের পর্বের পুরোটাই আঞ্চলিক বিবাহের নিয়ম কানুন এবং গানের পংক্তিতে ভরা ছিল .. বেশ লাগছিল পড়তে। তবে যাই বলো ভাই জীবনে অনেক ঢলানি মেয়েমানুষ দেখেছি, কিন্তু এই পল্লবীর মতো আর একটাও দেখিনি। ওর যা মতিগতি দেখছি সুযোগ পেলেই পা ফাঁক করে দেবে, এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যাইহোক ও কথা থাক .. সবশেষে বলি রুদ্রর প্রতি রাইয়ের ওই রাগ দেখানোটা "কপট রাগ" হলেই মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়ে যায় আর কি ..  Smile
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
ওটা যে দুশ্চিন্তা থেকে আসা কল্পনা ছিল সেটা সন্দেহ হয়েছিল কারণ রাই ম্যাডাম ছেলেটাকে চেনে ভালোই অন্তত কিছুটা তো বটেই। সেই ব্যাগে দুস্টু বই থেকে আজকে পর্যন্ত। তবে বেচারা ছেলেটার যে লেভেলে ফেটেছে আর ফাটছে দেখে কষ্ট হচ্ছে। নিশ্চই ওই অন্য রূদ্রটাকে পেলে পিটিয়ে লাল করে দিতো। গানগুলো আর বিয়ের মুহূর্তটা খুব সুন্দর লাগলো সাথে বাবা মেয়ের একে ওপরের প্রতি টান। যতই হোক বাবা তো। এবার রূদ্র বাবুর সাথে কি হয় সেটাই দেখার। ♥️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)