Thread Rating:
  • 83 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
-মন্দের ভালো (সমাপ্ত)
(30-07-2022, 09:03 PM)Boti babu Wrote: এ যে চিচিং ফাক হয়ে গেল

খানিকটা ওমনই  Smile
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
মুখোমুখি 







আমি জোয়ার-ভাটায় ভাসতে থাকা
শূন্য তরি
আমার নোঙর তো নেই মাঝিও নেই
ভয়ে মরি
সব অবাধ্য ঢেউ আছড়ে পড়ে
আমার ভেলায়
সব থেমে গেছে হারিয়ে গেছে
অবহেলায়
আমার অবহেলায়..


কতক্ষণ ওভাবে এক পলকে তাকিয়ে ছিল জানা নেই, যখনি বাস্তবতা পাশ কেটে আবার ফিরে আসে তখনি দ্রুত নজর সরিয়ে আবার নিজের জায়গায় বসে পড়ে রুদ্র। রুদ্রের ওভাবে তাকিয়ে থাকায় যতটা শান্তির পরশ পেয়েছিল এখন যেন ততটাই লাজে মরে যাচ্ছে রাই। ইশ ওমন করে কেউ তাকিয়ে থাকে নাকি, তেমন সাজগোজ করে নি তাতেই ওভাবে হ্যাংলার মত তাকিয়ে ছিল যেন চোখ দিয়েই গিলে নিবে। কই এতদিন তো সামনেই ছিল একটিবারের জন্য এমন করে তাকায় নি যদি একটাবার এমন করে দেখতো তবে তো ঠিকি চিনে নিতে পারতো, ইচ্ছে করছে চোখ দুটো গেলে দেই। কখনো কখনো মনে হতো এই বুঝি ওকে হারিয়ে ফেলবো কিন্তু আজ মনের কোনে অন্যরকম প্রশান্তির ঢেউ উঠেছে সেই ঢেউ যত শঙ্কা ভয় ছিল সব দূরে সরিয়ে দিয়েছে, ও তো চায় রুদ্র যেন সবসময় ওকে এমন করেই দেখতে থাকুক প্রিয়তমের এমন চাহনি তে যে কি সুখ সেটার অাভাস যে লেগেছে প্রেমিকার হৃদয়ে। আজ যেন অন্য এক রুদ্র কে দেখেছে রাই শান্ত মুখ, স্থির চোখ আর সেখানে অনেক অপেক্ষার পর পাওয়া কোন সুখের পরিতৃপ্তি, ভালবাসার অপার সম্ভার। এই রুদ্র কেই তো রাই চেয়ে এসেছে, নিজের করে নিতে চেয়েছে বরাবর আগলে রাখতে চেয়েছে নিজের থেকেও যে ওকে বড্ড বেশি ভালো বাসে সে। মায়ের পাশেই রাই গুটিসুটিয়ে দিয়ে বসে পড়ে, মাঝে মাঝে আড় চোখে বাকিদের মুখের অভিব্যক্তি পড়ার চেষ্টা করে, আঙ্কেল-আন্টি, মা, ছুটকি-তনু সবাই যেন চাপা হাসি আড়াল করছে শুধু ব্যতিক্রম রাই এর বাবা ওনার মুখের অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছে ওনার অসন্তুষ্টি। আর ওদিকে বুদ্ধু টা মাথা নিচু করে বসে আছে আর এক হাতে আরেক হাতের আঙ্গুল গুলো ঘসে যাচ্ছে, উহহ দেখে মনে হচ্ছে যেন সে কনে আর সবাই তাকে দেখতে এসেছে। ইচ্ছে করছে উঠে গিয়ে ওর কান দুটো টেনে দিতে, একটু জড়িয়ে ধরতে, গালে ছোট্ট চুমোতে ভরিয়ে দিতে। ধ্যাত... এসব কি ভাবছে রাই, যেন তর সইছে না এতদিন অপেক্ষা করতে পারলো আর আজ একটু চাহনিতেই সব অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে গেল। ছি ছি রাই তুই মেয়ে মানুষ একটু তো লজ্জা বলতে কিছু রাখ, এমন করে কেউ ভাবে নাকি.... নিজের মনে মনেই রাই কথা বলতে থাকে।



রুদ্রর কেমন জানি লাগছে একটা হাসফাস ভাব মনের ভিতর কাজ করছে, অবাধ্য মনে বান এসেছে ইচ্ছে হচ্ছে আরেকটু রাই কে দেখতে, ওতোটুকু দেখাতে যে মনের আশ যেন মিটছে না। ক্লান্ত পথিকের মত সহস্র ক্রোশ পথ পাড়ি দিয়ে যখন জলাধারের নাগাল পায় তখন যেন সমস্ত তৃষ্ণা এসে জমা হয় তেমনি করেই আজ চোখের মনের আত্মার সব তৃষ্ণা যেন একত্রে জমা হয়েছে আরেকটা বার দেখার জন্য মন টা কেমন আনচান করছে, এত উতলা মন নিয়ে কি ঠিক ভাবে বসে থাকা যায় নাকি। মনের সাথে শরীরটাও উশখুশ করছে, যেন বাহানা খুঁজে চলেছে আরেকবার সামনের দিকে তাকিয়ে প্রাণভরে রাই কে দেখতে। ইশশশ তখন ওমন বোকার মত কাজ না করলে এখন এতটা আনইজি লাগতো না, কি জানি মা বাবা কি না কি ভাবছে। ওদিকে ছুটকি তনু দুটো যে খুঁচা খুঁচি করছে ওদের জন্য স্বাভাবিক ভাবে বসতেও পারছে না, কি হচ্ছে নিজের সাথে নিজেই বুঝতে পারছে, আগে তো কখনো এমন হয় নি একজন কে এক নজর দেখবে তার জন্য এত তাল বাহানা তো আগে কখনো করতে হয় নি ওকে তাহলে আজ কেন এমন হচ্ছে। কতবছরের সাধনার সিদ্ধি লাভ করার মত করে তাকে সামনে পেয়ে কই তাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে দিবে, না সে এখানে বসে বসে লুকিয়ে একনজর প্রেয়সীকে এক নজর দেখার রনকৌশল সাজাতে হচ্ছে। না আর পারছে না রুদ্র, এ এক ভীষণ জ্বালা চোখের সামনে বসে আছে কিন্তু দু চোখ ভরে তাকে দেখা হচ্ছে না। যা হবার হবে সাহসী সৈনিকের মত কামানের সামনে দাড়িয়ে গোলা মোকাবেলা করার মত অটুট মনোবল বুকে জমিয়ে একটু আড় চোখে তাকাতেই রাইয়ের চোখে চোখ পড়ে যায় রুদ্রের, পলকেই আবার দৃষ্টি নেমে আসে নিচে, যেন চুরি করে ওকে দেখতে গিয়ে ওর চোখে ধরা পড়ে যাবার লজ্জা ওকে পেয়ে বসেছে ধ্যাত এখনি ওকেও তাকাতে হলো আরেকটু পড়েও তো তাকাতে পারতো। না না আর ওদিকে তাকানো হবে না।



বিজয় চৌধুরী এতক্ষণ গম্ভীর হয়ে বসেছিলেন, স্ত্রীর কয়েকদিনের চেষ্টা ফলে উনি রুদ্রের ফ্যামিলির সামনে আসতে রাজি হয়েছিলেন। উনার চেষ্টা এখনো সেই একই নিজের পছন্দ করা ছেলের সাথে বিয়ে দেয়া, কোন মতে আজকে এদের এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচে। কিন্তু মেয়েটা হঠাৎ করে এতোটা একরোখা হয়ে উঠলো কি করে কে জানে, আগের বাবার কথার উপর কোন কথা বলার সাহস ছিল না আর সেই মেয়ে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করার সিদ্ধান্তে একটা অনড় কি করে, সব ঐ বখাটে ছেলেটার জন্য। এমন বাজে ছেলের সাথে থাকলে যে কারো অধপতন তো হবেই। কিন্তু এই ছেলেকে আবার পেলো কোথায় ও, শহরের চলে আসার পর তো রাই কে সবসময়ই নজরে রাখতো যেন কারও সাথে মিশতে না পারে তাহলে এতবছর পর আবার কোথা থেকে উদয় হলো। না এভাবে চুপচাপ বসে থাকলে তো চলবে না, কিছু একটা করে সব জানতে তো হবে।

-(রুদ্রের দিকে তাকিয়ে)তা তুমি কি করছো এখন আই মিন কিসে জব করছো?

-(রুদ্র অন্যমনস্ক হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল, পাশে বসা মায়ের হালকা ধাক্কায় সম্বিত ফেরে) আমি একটা ওয়েল নোন কনস্ট্রাকশান কোম্পানিতে প্রজেক্ট ইনচার্জ পদে চাকরি করছি। রাই ও ঐ কোম্পানিতেই আছে।
-আমার মেয়ে তো ম্যানেজার পদে আছে, তুমি কি মনে করো তুমি ওকে বিয়ে করার মত যোগ্য?

-(রুদ্র উনার গলার টোন শুনেই বুঝতে পারে ওকে অপমানের স্বরেই কথা টা বলছে, বাকিরা সবাইও এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিল না, রাই তো ওর বাবার উপর রেগেই গেছে) আপনি কি বলতে চাইছেন সেটা হয়তো বুঝতে পারছি। যদি বলেন চাকরির যোগ্যতার কথা তবে আমি বলবো আমার দক্ষতা অনুযায়ী আমি আরও বেটার জব করতে পারি এমন অফার অনেক এসেছে কিন্তু আমি এখানে রয়ে গেছি। আর যদি মানুষ হিসেবে যোগ্য কিনা জানতে চান তবে আমাকে আগে জানতে হবে বাকিটা তারপর আপনিই বলবেন। হ্যা মানুষ হিসেবে অনেক ভুল ক্রটি আছে, আমি শতভাগ নিষ্কলুষ সেটা কখনই দাবি করবো না। তবে একজন সন্তান, একজন বন্ধু, একজন সহকর্মী হিসেবে আমি আমার শতভাগ টাই দেবার চেষ্টা করি আর সেটা ভবিষ্যতেও থাকবে।

বিজয় চৌধুরী এমন ভাবে প্রতিত্তোর আসবে আশা করে নি, এখন কি জিজ্ঞেস করবে সেটা মনে মনে সাজাতে থাকে।

-(পাশ থেকে অবিনাশ বাবু ব্যাপারটা একটু সামাল দিতে বলে উঠে) রুদ্র যেই কোম্পানিতে আছে পূর্বে এই কোম্পানি আমাদের বিপদে অনেক হেল্প করেছে, আমার অসুস্থতার সময় বাবু কলেজে পড়ে তখন সংসারের হাল ধরার জন্য ওর কিছু একটা করার দরকার ছিল সেই সময়ে ওকে ওরা চাকরি দিয়েছে। ওদের কাছে আমাদের অনেক ঋন তাই আমিই ওকে বলেছি যত ভালো অফারই আসুক না কেন এই কোম্পানি  না চাওয়া পর্যন্ত ও যেন এই চাকরি টা না ছাড়ে। নইলে অনেক বিদেশি কোম্পানি ওকে হাই প্রোফাইল চাকরি অফার করেছে চাইলেই যেতে পারতো। আমার ছেলে বলে বলছি না কমার্শিয়াল দৃষ্টিতেই বলছি রুদ্রের সেই দক্ষতা আছে সেটা বাকি যে কোম্পানি গুলো আছে তাদের ওর উপর নজর দেখেই বুঝা যায়।

-(রাই এর নিজের বাবার উপর রাগ হয় খুব, রুদ্র কে কোন ভাবেই ছোট হতে দিতে চায় না সে) বাবা আমিও কিন্তু নিজের দক্ষতা থেকে ম্যানেজার হই নি, ওটা তো তোমার সুপারিশ ছিল সেটা আমার ভালো করেই জানা। আর ওর পদ দিয়ে ওকে জাজ করা যাবে না, আমাদের বস তো রুদ্র কে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারে না, সবকিছুতেই ওর মতামত সবার আগে নেয়। রুদ্রের ফিল্ড পারফরম্যান্স খুব ভালো আমাদের সব ইনভেস্টরস আর ক্লাইন্টরা চায় যেন ও সবটা দেখাশুনা করে। আমাদের এই সেক্টরে সব কোম্পানি ওকে জিনিয়াস হিসেবেই চিনে, ও কোন ডিল হাতে নিলে সেটা আর কারও হাতে যাবার চান্স নেই।

রাই কে ওমন ভাবে ওর হয়ে কথা বলতে দেখে অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে রুদ্র। রাই খেয়াল করে রুদ্র চাতকের মত ওর দিকে তাকিয়ে আছে, শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু একটা বলে রুদ্রের উদ্দেশ্যে সাথে সাথেই রুদ্র দৃষ্টি নামিয়ে নেয়।

-হুম সেটা বুঝলাম, কিন্তু এসব আবেগের কথাবার্তায় তো জীবন চলে না। জীবন চলে বাস্তবতায়, আর সেখানে বিয়ের পর অনেক দায় দায়িত্ব আছে। আমার মেয়েকে যে আয়েসি জীবন যাপনে বড় করেছি ওর চাহিদার খেয়াল রেখেছি সেটা কি ও পারবে? মানে সহজ কথায় ফাইন্যান্সিয়াল দিকটা সামলাতে পারবে( চিবিয়ে চিবিয়ে কথা গুলো বিজয় চৌধুরী বলতে থাকে)

-(রুদ্র কিছু একটা বলতে যাবে তখনি অবিনাশ বাবু ওকে থামিয়ে দেয়) আপনি বোকার মত কথা বলছেন তো, সেই যুগ কি এখনো আছে নাকি? আপনার মেয়ে নিজেই চাকরি করে ভালো একটা ইনকাম ওর আছে। ও কেন আরেকজনের উপর ডিপেন্ড করতে যাবে, হ্যাঁ দুজনে মিলে আরও ব্যাটার কিছু করতে পারবে ভবিষ্যতে। সব কিছু দুজনে ভাগ করে নিবে সেটা যাই হোক না কেন। তাতে তো রুদ্রের উপর ডিপেন্ড করতে হবে না দরকার হলে রুদ্র ওর উপর ডিপেন্ড করতে পারে আপনার কথা অনুযায়ী যেহেতু ওর ইনকাম কম। একজন আরেকজন কে সাপোর্ট না করতে পারলে সম্পর্কের কি লাভ বলুন তো। মেয়েকে শিক্ষিত করে লাভ কি বলুন সে যতি ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্ট না হতে পারে।

বিজয় চৌধুরী মুখ চুপসানো বেলুনের মত হয়ে যায়, কোথায় ভেবেছিল ওদের অপদস্ত করবে এখন ওদের উত্তরে নিজেই অপদস্ত হয়ে যাচ্ছে। আর ঘর শত্রু বিভীষণের মত নিজের মেয়ে তো ওদের হয়ে কথা বলছে। তবে সে যে খবর নেয় নি তা নয়, যেদিন মেয়ের মুখে নাম টা শুনেছিল সেদিনই খবর নেবার জন্য লোক লাগিয়েছিলেন। খবর অনুযায়ী ছেলেটা খারাপ না, আর মার্কেটে প্রচুর সুনামও আছে, যে কোম্পানি নাম মাত্র কাজ করতো আগে সেটাই এখন এই ছেলের বদৌলতে টপ টেন কোম্পানির মাঝে একটা। যে কাজে হাত দেয় সেটাই সবার নজরে চলে আসে। যদি কোন ভাবে এই ছেলেকে নিজের বিজনেসে আনতে পারে তবে আর বিজয় চৌধুরী কে পেছন ফেরে দেখতে হবে না, ওনার অনেক দিন থেকেই টার্গেট কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগ করা।

-ঠিক বলেছেন দাদা, আমার মেয়ে ফেলনা নাকি। আর ও নিজে যখন পছন্দ করে সবদিক বিবেচনা করেই করেছে। সম্পর্ক তো আর টাকা পয়সা দেখে হয় না, হয় দুজনের বুঝাপড়ায় আর ভালোবাসায়।(পাশ থেকে দেবীকা চৌধুরীর এমন কথায় বিজয় চৌধুরীর চুপসানো বেলুন টা যেন আরও চুপসে গেছে)

-সেটাই তো দেখছি, আগে থেকেই সব ঠিক করা আছে। এখানে আমার সবকথাতেই উল্টো মানে ধরা হচ্ছে। সোজা করে বলতে গেলে আমার ইচ্ছে আমার পছন্দ মত মেয়ের বিয়ে দেয়া। কিন্তু মেয়ে মা বাকিরা সবাই যেহেতু এই বিয়েতেই রাজি সেখানে আমার মতামতের প্রয়োজন আছে কি? তারপরও আমার মত চাইবেন তাই আমার মতামত জানিয়ে দিলাম, মেয়ে যদি এখানে সুখী হয় তবেই সেটাই হোক।


এতক্ষণ চুপ করে বসে থেকে অবস্থা পর্যবেক্ষণের করে কি হচ্ছে সেটা বুঝতে থাকা দুই ছোট সদস্য ছুটকি আর তনু হঠাৎ করেই হুররেএএএএ বলে চিৎকার করে উঠে। ওরা দুজনে মিলে যেটা করতে চাইছিলো সেটা এমন করে হয়ে যাবে সেটা বুঝতেও পারে নি। কোথায় ওরা ভেবেছিল আবার কোন একটা বাহানা করে হলেও দুজনকে সামনাসামনি এনে দাঁড় করাবে এবার আর প্ল্যানে কোন গড়বড় হবে না আর তাতেই পুরনো রাই আর রুদ্রের দেখা মিলবে যেখানে সমস্ত রাগ অভিমান সব ভেঙে গিয়ো নতুন করে সব শুরু হবে। সকাল থেকে ওরা একটা টেনশনে ছিল সেই সাথে তনুদের বাসায় আসার পর থেকে একের পর এক ঘটনা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিলো। এরপর রাই এর ওদের সামনে আসা, রুদ্রের ওমন করে তাকিয়ে থাকা আর তারপর বিজয় চৌধুরীর ওমন বাঁকা প্রশ্ন সব কিছু যেন ওদের কাছে গোলকধাঁধার মত লাগছিল কি থেকে কি হচ্ছে হিসেবটা মেলাতে পারছিলো না। কিন্তু যখনি তনুর বাবা নিজের সম্মতির কথা জানালো তখনি ওদের আনন্দ দেখে কে, ওদের করতে চাওয়া কাজ টা এমন ভাবে ঘটে যাবে সেটা একটিবার আন্দাজও করতে পারেনি। দুটো মিলে লাফালাফি শুরু করে দিলো, বাকিরা যে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে সেদিকে কোন খেয়ালই নেই। ওদের খুশির রেশ টা বাকিদের মাঝেও ছড়িয়ে যেতে সময় নিলো না বেশি। ছুটে গিয়ে দুজনে রাই আর রুদ্র গলা জড়িয়ে ধরলো।


রাই চোখের ভাষায় অঞ্জলি দেবীর দিকে ইশারা করে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলো, অঞ্জলি দেবীও হাতের ইশারায় রাই কে আশ্বস্ত করলো।

-আমরা বড় রা এখানে কথা বলি ওরা ছোট রা না হয় ওদের মত করে একটু সময় কাটাক।

-(অঞ্জলি দেবীর কথায় দেবীকা চৌধুরীও সায় দেয়) ঠিকি বলেছেন দিদি।(তনু ছুটকির দিকে তাকিয়ে) যা তরা ভিতরের ঘরে গিয়ে তোদের মত করে কথা বল।(রাই কে ইশারা) তুই ও যা রুদ্র কে বাসাটা ঘুরিয়ে দেখা।

তনু ছুটকি ততক্ষণে ওদের মত করে ওদিকে কোন একটা রুমে চলে গেছে। রাই ও উঠে ওর রুমের দিকে যেতে গিয়ে পিছনে তাকিয়ে রুদ্র কে আসতে না দেখে দাড়িয়ে থাকে। রুদ্র কি করবে ভাবতে থাকে এখানেই বসে থাকবে নাকি রাই এর সাথে ভিতরে যাবে বুঝতে পারে না। কি কথা বলবে সেটাই মাথায় আসছে না সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। ছেলেকে নির্জীব মত বসে থাকতে দেখে রুদ্র কে রাই এর সাথে যাবার জন্য ইশারা করে।  কিছুটা দুনামোনা মন নিয়েই উঠে দাড়ায়, রুদ্র কে উঠে দাঁড়াতে দেখে মুচকি হাসি হেসে হাত নেড়ে রুদ্র কে ওর দিকে আসতে বলে।
রাই এর পেছন পেছন একটা রুমে ঢুকে রুদ্র, রুমের ডেকোরেশন থেকে বুজা যাচ্ছে ওটা রাই এর রুম। রুদ্র একটু ভিতরে আসতেই রাই এগিয়ে গিয়ে রুমের দরজা টা হালকা করে ভেজিয়ে আসে। দরজা ভেজাতে দেখে রুদ্র একটু ভড়কে যায় সামনে কি ঘটতে পারে সেটার একটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছে৷ রুদ্রের দিকে ফিরে তাকাতেই রাই কে কেমন অচেনা অচেনা লাগছে। একটু আগেও কেমন হাস্যোজ্জ্বল ছিল এখন কেমন একটা রাগান্বিত ভাব নিয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে, যেন ও দুটো চোখ নয় গনগণ জ্বলতে থাকা উনুন যার উত্তাপে রুদ্রের শরীর পুড়ে যাচ্ছে। একটু একটু করে রাই এগিয়ে আসছে আর রুদ্র পিছিয়ে যাচ্ছে। পেছাতে পেছাতে হঠাৎ দেয়ালে পিঠ ঠেকে রুদ্রের পলক ফেলতেই ওর সামনে রাই দাড়িয়ে। ও যেন আরও এগিয়ে আসছে রুদ্রের দিকে, রুদ্র নড়তে পারছে পা দুটোতে কেমন জড়তা কাজ করছে। রাই এর গরম নিঃশ্বাস ও নিজের বুকের কাছে অনুভব করতে পারছে, একটু আগেও যে চোখ মোহনীর মত আকর্ষণ করছিলো সেই চোখ গুলো লালচে হয়ে আছে।

-মোবাইল টা কই তোমার, বের করো তাড়াতাড়ি।

-(হঠাৎ করে মোবাইল চাওয়ার কারণ বুঝতে না পেরে আমতা আমতা করেই বলে) আমার মোবাইল কেন? ওটা দিয়ে কি হবে?

-এতো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না, যেটা বলেছি সেটা করো (কথাটা শেষ করেই বা হাতে জোরে চিমটি কাটে রাই)

-উহহ,(হাতে চিমটি কাটার যন্ত্রণায় মুখের মানচিত্র বদলে যায়) দিচ্ছি দিচ্ছি, এটার জন্য এমন করে চিমটি কাটতে নাকি কেউ?(পকেট থেকে মোবাইল টা বের করে রাই এর হাতে দেয়) নখ বসে গেছে।

-চিমটি না আমি কামড়েও দিতে পারি দিয়ে দেখাবো? মোবাইলের লকটা কে খুলে দিবে।

-(মোবাইলের লকটা খুলে দিতে দিতে) না সেটার দরকার নেই।

-আগের সিম টা কই? আর নতুন নাম্বারের আমার নাম্বার টা ব্লক করার সাহস হলো কি করে।(ধমকানো সুরে)

-(শুরুতেই এমন প্রশ্ন আসবে ভাবতে পারেনি, আমতা আমতা করে বলে উঠে) আ...মার আমার সিম আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই ফেলে দিয়েছি।

-(রাগে মুখটা লাল হয়ে উঠছে) ওহ, তাহলে এখন আমার ইচ্ছে হচ্ছে বারান্দায় নিয়ে ধাক্কা দিয়ে তোমাকে নিচে ফেলে দিতে, দেব?

-(চমকে উঠে) কেন আমাকে ফেলে দিবে কেন, আমি কি তোমার....

কথাটা শেষ হবার আগে রুদ্রের মুখ চেপে ধরে রাই আরেকটু এগিয়ে আসে, ওর মুখটা এখন রুদ্রের মুখের কাছে। হতবাক নয়নে রুদ্র অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে রাইয়ের মুখের দিকে
-হুম তুমি শুধু আমার, আর কথাটা যেন মনে থাকে। যদি একটু এদিক সেদিক হইছে তাহলে একদম...

হঠাৎ করেই রাই এর ফোনটা বেজে উঠে, হাত বাড়িয়ে টেবিল থেকে ফোনটা নিতেই দেখে জয় ফোন করেছে কলটা রিসিভ করে
-কিরে তোকে নাকি আজ ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছে একবার বললি না তো।

-হুম বলবো বলবো করে আর বলা হয়ে উঠেনি। দেখতে এসে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। মেজাজ টা একটু গরম আছে, হাতের সামনে পাত্র দাড়িয়ে আছে ওটাকে মার্ডার ও করে ফেলতে পারি। পরে কথা হবে এখন রাখি।

-(রাই এর এমন রূপ দেখে রুদ্রের গলা শুকিয়ে আসছে) এসব কি ধরণের কথা বার্তা, আমি কি করেছি যে মার্ডার করার কথা আসছে।

-কি করো নাই সেটা বলো। তখন ওমন করে তাকিয়ে ছিলে কেন?

-কই তাকিয়ে ছিলাম, না তো।

-ওহ তাকিয়ে ছিলে না? তাহলে এখন তাকিয়ে থাকবে না হলে চোখ দুটো গেলে দেব।

-এমন দস্যুর মত আচরণ করছো কেন তুমি তো আগে এমন ছিলে না(রাইয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে রুদ্র)

-আমার কথা মনে আছে তাহলে? আমি তো ভেবেছিলাম ভুলেই গেছো হয়তো। নইলে এতদিনেও সামনে থাকার পরও চিনতে পারলে না। আমার যে কতটা কষ্ট লেগেছে সেটা বুঝতে পারবে না।

-হুম, সেটার জন্য ক্ষমা চাইতে রাজি আছি, সত্যি বললে ওমন করে তোমার দিকে কখনো তাকাই নি, নইলে ঠিকি চিনে নিতাম। অফিসের আসার পর থেকে যে গম্ভীর আর রাগ রাগ ভাব নিয়ে থাকতে ম্যাডামের দিকে তাকাতেই ভয় পেতাম।

-ওমন করে মানে কেমন করে তাকানো? তুমি কি তাহলে 
আরও মেয়ে দেখো বুঝি। তাদের দিকে কেমন করে তাকাও দেখাও আমাকে।

-না মানে তেমন কিছু না, আমি আবার মেয়ে দেখবো কেন?? (রাই এর হাতে থাকা রুদ্রের ফোনটা বেজে উঠে, তনয়া ফোন করেছে। তনয়ার নাম টা দেখেই রাই এর মেজাজ টা গরম হয়ে যায়। আর রুদ্র ভাবে ফোনটা আসার আর সময় পেল না। রাই কলটা রিসিভ করে)

-রুদ্র, গতকাল যে ফাইল টা দিয়েছিলে সেটার হিসেব টা মেলাতে পারছি না। একটু সময় করে আসতে পারবে, তুমি একটু যদি দেখে দিতে।

-(রাইয়ের মেজাজের কি অবস্থা সেটা ওর মুখ দেখেই বুঝতে পারছে রুদ্র, কিন্তু কি করবে সেটাই বুঝতে পারছে না। রাই চড়া গলায় বলে উঠে) তোমার রুদ্র এখন ব্যস্ত আছে ও আসতে পারবে না, আসতে চাইলেও পা ভেঙে দেব।(কথাটা শেষ করেই কল টা কেটে দেয়)

-রাই প্লিজ প্লিজ প্লিজ রাগ করো না। আসলে অফিসে আমিই আমাকে স্যার বলতে না করি তাই আর কি।

-আমি রাগ করিনি। অফিসে তো তোমাকে কেউ স্যার ডাকতে দেখি না, আর মেয়েদের আড্ডায় হট টপিক তো তুমি, সবাই তোমার উপরে ক্রাশ। জাদু টাদু করো নাকি।

-তুমি গোয়েন্দা গিরি করতে নাকি? সবার সাথে সারাদিন থাকি তবু আমিও তো এতো কিছু জানি না। আর তুমি রুমে বসেই এত খবর কি করে রাখো।

-করতে হয়, নইলে তোমাকে ধরে রাখবো কি করে। দেখি হাত টা দেখি(রুদ্রের বা হাত টা কাছে টেনে নেয়)

-কেন আবার কি হয়েছে।

-এত কথা বলো কেন একদম চুপ। (রুদ্রের বা হাতে যেখানে চিমটি দিয়েছিল সেখানটাতে সত্যিই নখের দাগ বসে গেছে, সেখানে হালকা করে ফু দিয়ে চুমো খায়) আচ্ছা তুমি আমাকে ভালোবাসো?

-এত খবর নিয়েছো এটা নেও নি। কি মনে হয়?

-না ভালো বাসো না, যদি বাসতে ঠিক একটাবার জড়িয়ে ধরতে, কত কাঠখড় পুড়িয়েছি আজকের দিনটার জন্য এতোটুকু তো আমি আশা করতেই পারি, তাই না।

-(রুদ্র ভাবে সত্যিই তো এতো বড় ভুল কি করে হলো, আসলে সকাল থেকে ও নিজেই তো ঘোরের মাঝে আছে আর রাই কে দেখার পর তো নিজের সব কিছুই ভুলে যাচ্ছে বারবার। এত বছর পর নিজের মানুষটাকে কাছে পেয়েও এখনো কাছে টেনে নিতে পারে নি। আগের যত রাগ অভিমান ছিল সব নিমিষেই উধাও হয়ে গেছে। এতক্ষণ ধরে একটু ভয় হচ্ছিলো রুদ্রের কখন না আবার সেই ভিতরের রুদ্র টা বেড়িয়ে আসে, তখন তো ও নিজেকে সামলে রাখতে পারে না। তবে আজ মিরাকল হয়েছে এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই হয় নি, রুদ্র ভাবছে হয়তো রাই সামনে আছে বলেই এমন টা হচ্ছে। তবে তো রাই কে আর দূরে থাকতে সে দিবেই না।) ভুল হয়ে গেছে, আমার না সবকিছু কেমন স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে তাই ঠিকমত কথাও বলতে পারছি না।(দু হাত প্রসারিত করে রাই কে নিজের আরও কাছে আসার আহবান জানায় সে)

-এত ভুল করলে কিভাবে চলবে স্যার।(রাই নিজেকে রুদ্রের বুকের সাথে মিশিয়ে দেয়, কান পেতে ওর হৃৎস্পন্দন শুনতে থাকে। অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করছে ওর মনে এমন এক শান্তির আবাস পেয়েছে যে মাথা টা সরাতে ইচ্ছে করছে না৷ ভালোবাসার মানুষ কাছে থাকলে সেটা পথ্যের মত কাজ করে সব কষ্ট যন্ত্রণা মান অভিমান রাগ ক্ষোভ নিমিষেই উধাও করে দেয়)

-(রাই এর স্পর্শে মনের সব সংশয় এক এক করে দূর হয়ে যাচ্ছে, ওর জড়িয়ে ধরায় এমন এক সুখ হচ্ছে যেটা আগে কখনো হয় নি, সেভাবে কখনো ভেবেই দেখা হয় নি, এ জড়িয়ে ধরায় কোন কাম ভাব নেই নেই কোন শারীরিক উত্তেজনা, যতটুকু আছে সবটা প্রগাঢ় নির্মল ভালোবাসার হাতছানি, একে অন্যের শরীরে উষ্ণতায় ভাগ বসাছে তবে সেই উষ্ণতায় শরীর জাগে না জেগে উঠে মন, মনের কুঠরিতে জমে থাকা অফুরান প্রেমখনি) রাই এর কপালে ছোট করে একটা চুমো খায়।

-এখন ভালোবাসা দেখানো হচ্ছে, (হঠাৎ রাই এর মনে কি খেলে গেল কে জানে, ও রুদ্রের শার্টের বোতাম খুলতে থাকে)

-(রাইয়ের এমন কান্ডে রুদ্র হতভম্ব হয়ে যায়) এই কি করছো কেউ এসে যাবে, পাগল হলে নাকি। কেউ দেখলে কি ভাববে বলো।

-(রাই কোন বারণ শুনে না, উপরের দিকের কয়েকটা বোতাম খুলে কাঁধের দিক থেকে শার্ট টা একটু সরিয়ে নেয়, এখনো সেখানে কামড়ের দাগ টা রয়ে গেছে সেখানটাতে রাই হাত বুলাতে থাকে)

-আবার কামড়ে দিবে নাকি?

-দিলে দিবো কোন সমস্যা(রাই সেই ক্ষত দাগটাতে ঠোঁট নামিয়ে এনে চুমো খায়, কোমল ঠোঁটের স্পর্শে রুদ্রের সারা শরীরে শিহরণ জেগে উঠে। (রাই শার্টের বোতাম গুলো লাগাতে থাকে)

-(রুদ্র দুহাতে রাইয়ের মুখ খানা তুলে ধরে, একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে। রাইয়ের কপাল ঠেকে থাকে রুদ্রের কপালে, দু জোড়া চোখ খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। রাইয়ের খাড়া নাকের ডগায় প্রায়ই রুদ্রের ছোয়া লেগে যাচ্ছে, একে অন্যের নিঃশ্বাস টা অনুভব করতে পারছে। এতবছরের জমানো ভালোবাসা সবটা আজই দিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে, ওর চোখ মুখে লেগে থাকা মায়ার আবেশে যেন রুদ্র হারিয়ে যাচ্ছে। না এ হারানো তে কোন ভয় নেই নেই কোন সংশয় যেটুকু আছে সবটা ভালোবাসাময়। আজ শুধু ওকে দেখতেই ইচ্ছে করছে, এতবছরে কল্পনায় যে ছবিটা একেছিল সেটার সাথে মিলিয়ে দেখছে, না কল্পনার চেয়েও বেশি সুন্দর বাস্তবের রাই। এমন স্নিগ্ধ শীতল অপরূপ মুখটার কাছে আজ রুদ্রের সেই ভেতরের মানুষটা আর বেড়িয়ে আসার সাহস পাচ্ছে না, কোথায় যেন গুম হয়ে গেছে। এটাই বোধ হয় ভালবাসার শক্তি)


অনেকক্ষন ধরে রুদ্র আর রাইয়ের কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছে না, কোন কথাও বলছে না। ওদের একটু ভড়কে দিতে হঠাৎ করেই ছুটকি আর তনু ঘরে ঢুকেই রাই আর রুদ্র কে দেখে দুহাতে চোখ ঢেকে নেয়

-(হিহিহিহি করে হাসতে হাসতে দুজনেই একসাথে বলে উঠে) আমরা কিন্তু কিছু দেখি নি, শুধু তোমাদের খুঁজতে এসেছিলাম। তোমরা থাকো আমরা চলে যাচ্ছি।

তনু আর ছুটকির আওয়াজ শুনে রুদ্রের বাঁধন ছেড়ে রাই একটু দূরে চলে আসে, কিছুটা লজ্জা ওকে পেয়ে বসেছে যতই হোক ওরা দুটো ছোট বোন ওদের ওমন করে দেখে কি রা কি ভাবছে কে জানে। আর ঐ হ্যাংলা টাও কিভাবে জড়িয়ে ধরিয়েছিল আর সে নিজেও তো একদম মিশে গিয়েছিল ওর বুকের সাথে। রুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে ও অন্যদিকে তাকিয়ে আছে আর বিড়বিড় করে কিছু একটা বলছে। পরিস্থিতির সাথে একটু ধাতস্ত হয়ে রাই তেড়ে যায় তনু আর ছুটকির দিকে

-তোরা দুই পাজি এখানে কি করিস হুম, ঘরে ঢুকলে নক করে ঢুকতে হয় জানিস না। ইচ্ছে করছে কান দুটো ছিড়ে দেই( দুই হাতে ছুটকি আর তনুর কান ধরে)

-ইশশ দিদি ছাড় লাগছে তো, আমরা কি সাধে এসেছি নাকি। মা বলেছে তোদের খাবার জন্য ডাকতে। আর এতদিন তো নক করে ঢুকি নি তাই ওটা মনে ছিল না তবে এখন থেকে দেখছি নক করেই ঢুকতে হবে।

-(পাশ থেকে ছুটকিও বলে উঠে) কিরে দাদা আমাকেও কি নক করে ঢুকতে হবে? তোর ঘরে তাহলে আর আমার অধিকার থাকবে না কি তাইতো (খিলখিল করে হাসতে থাকে)

-তরা দুটো খুব পেকেছিস মার খাবি বলে দিলাম (রুদ্র মুচকি হাসির সাথে হালকা শাসিয়ে উঠে)

-দে দে দুজন এক হয়েছিস এখন কত কি সহ্য করতে হবে, কান একটা করে তো খালি আছে ওটা তুই ধর।

-(ওদের কথা শুনে রাই আর হাসি আটকে রাখতে পারে না, ঝকঝকে দু পাটি দাঁত বের করে হাসতে থাকে) অনেক পাকনামি হয়েছে এখন যা তোরা আমরা আসছি।

-(কান থেকে হাত সরিয়ে নিতেই ছুটকি আর তনু একটু দূরে সরে গিয়ে) চল চল আমরা চলে যাই, তাদের কোন কাজ বাকি থাকতে পারে, একটু স্পেস তো দরকার( কথাটা শেষ করেই দুটো দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়, রাই ও পিছন পিছন একটু দৌড়ে গিয়ে দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসে)

-(রুদ্রের কাছে এসে) ওমন করে জড়িয়ে ধরতে হয় নাকি, দেখতো ওরা দুটো দেখে নিল।

-বাহ! তুমিই তো বললে জড়িয়ে ধরতে তাই ধরলাম এখন আবার আমার দোষ। তখন যদি জড়িয়ে না ধরতাম তখন তো আবার ঠিকি বকাবকি করতে।

-থাক এত সাফাই গাইতে হবে না, সুবোধ ছেলের মত চলো এখন। মা ডাকছে খাবার জন্য ওরা দুটো আবার কি না কি বলে ওখানে গিয়ে কে জানে।

যেমন করে রাইয়ের পেছন পেছন এসেছিল তেমন করেই আবার বসার ঘরের দিকে যেতে থাকে ওরা। বাকিরা আগেই খাবার টেবিলে বসে ছিল রাই আর রুদ্র দুজনেই বিপরীতমুখী দুটো চেয়ারে বসে পড়ে।




হঠাৎ শুয়া থেকে উঠে বসে রুদ্র, চোখটা লেগে এসেছিল খুব বাজে একটা স্বপ্নে ঘুমটা ভেঙে গেছে৷ স্বপ্নের রেশটা মনে এখনো রয়ে গেছে, খুব দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে, হার্টবিট বেড়ে গেছে আর কোন এক অজানা ভয়ে ফুল স্পিডে ফ্যান চলতে থাকা সত্ত্বেও সারা শরীর দরদর করে ঘামছে। এখনো বাস্তবতায় ফিরে আসতে পারছে না রুদ্র, বারবার চোখ বন্ধ করে কি ঘটেছে সেটা মেলাবার চেষ্টা করছে। কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে এখন রুদ্র বুঝতে পারছে যেটা এতক্ষণ ওকে ওমন ভাবে ভীত করে তুলেছিল সেটা একটা বাজে স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে জল দিয়ে আসে। রাইদের বাসা থেকে ফিরতে ফিরতে বিকেল হয়ে গিয়েছিল বাসায় এসে জামাকাপড় চেঞ্জ করে একটু শুয়েছিল কখন যে চোখ লেগে গেছে টের পায় নি।


মোবাইলটা একটু দূরে ছিল উঠে গিয়ে নিয়ে আসতেই দেখে রাই মেসেজ করেছিল, নাম্বার টা তখন রাই নিজেই সেভ করে দিয়েছিল মনে হয়। রাই এর মেসেজ টা দেখার সময় রুদ্রের কেমন একটা অদ্ভুত অস্বস্তি লাগতে থাকে। ভেতরের রুদ্র টা জেগে উঠতে চাইছে, রুদ্র দু হাত শক্ত করে মুঠ করে নেয়, মাথাটায় ভীষণ রকমের যন্ত্রণা করছে। চোখ বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে ভিতরের রুদ্রটাকে আটকাতে চেষ্টা করতে থাকে। শরীরে ভয়ংকর রকমের শক্তি কাজ করছে, নিজেকে এক জায়গায় স্থির রাখতে পারছে না, পা দুটো ফ্লোরের সাথে চেপে ধরেছে। না আর পারছে না রুদ্র, ভেতরটাকে আটকাতে পারছে না।

রুদ্র নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে থাকে, আগে যাই হয়েছে হোক এখন সে জানে রাই ওকে ভালোবাসে ওর জন্য এতবছর অপেক্ষা করে ছিল এখন এতটা কাছে এসে আবার দূরে ঠেলে দিতে পারবে না৷ যা ভুল হবার হয়ে গেছে আর ভুল করা যাবে না। রাইকে আর কোন মতেই রুদ্র হারাতে চায় না, যেমন করেই হোক ওকে আকড়ে ধরে রাখতে চায়।
ভেতরের রুদ্র ওর সামনে দাড়িয়ে হাসছে, না স্বাভাবিক কোন হাসি নয় সেটা, সেই হাসিতে কটাক্ষের সংমিশ্রণ স্পষ্ট। যেন বলতে চাইছে কিসের ভালোবাসা? কার ভালোবাসা? রাই তোকে ভালোবাসে কিন্তু তুই ওকে ভালোবাসিস? যদি ভালোবাসতি তবে এতোদিন যে ওর উপরে তোর রাগ ছিল অভিমান ছিল অভিযোগ ছিল তাহলে সেগুলো কেন? ওর উপরের রাগ থেকে যে তুই এতোদিন ওতো মেয়ের সাথে মেলামেশা করলি সেগুলো কেন? তাহলে তোর ভালোবাসা কই? রাই কে সব কিছু বলেছিস, বলতে পারবি তো নাকি সবকিছু লুকিয়ে রাখবি এতোদিন যেমন লুকিয়ে রেখেছিস। কারও কাছে নিজের এতবড় একটা অংশ লুকিয়ে রাখাটা কি ভালোবাসার মাঝে পড়ে, নাকি এটা ধোঁকা দেয়া। তোর সব জানার পরেও কি ও তোকে তেমন করেই ভালোবাসবে? না বাসবে না তোকে ছেড়ে চলে যাবে, এমন কোন মানুষকে কেউ ভালোবসে না রুদ্র কেউ ভালোবাসে না তোকেও বাসবে না। তোর নিজের উপর বিশ্বাস আছে নাকি তোর ভালোবাসার উপর বিশ্বাস আছে, কোনটাই নেই তোর। তুই হাওয়ায় ভেসে থাকা পাখির পালকের মত, তোর নিজের বলে কিছু নেই। দেখ পরীক্ষা করে তুই বলতে পারিস কিনা, তুই পারবি না কখনই বলতে পারবি না। আর তোর অতীত শুনে ও তোকে কখনই ক্ষমা করবে না, এটা ক্ষমা করার মত না তুই রাই কে আবারও হারিয়ে ফেলবি বরাবরের মতই হারিয়ে যাবে তোর কাছে। তাহলে কি তুই মিথ্যা বলে ধরে রাখতে চাস তাহলে সেটা তো ওকে ঠকানো ছাড়া আর কিছুই না। 

রুদ্র আর সহ্য করতে পারছে দু হাতে মাথা চেপে ধরে মুঠোভর্তি চুল টেনে ধরে, ও আর কিছুই ভাবতে পারছে না। প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে মাথায় আর বুকের ওপর ভারী কিছু চেপে বসার কষ্ট। ইচ্ছে হচ্ছে মাথাটা ভারী কিছু দিয়ে থেতলে দিতে। বালিশে মাথা চেপে ধরে গা এলিয়ে দেয় বিছানায়। পাশেই পড়ে থাকা মোবাইলের শব্দে মাথা তুলে তাকায়, এতোক্ষণের ঘোর ভাবটা কেটে গেছে নিজের সম্বিত ফিরে পেয়েছে রুদ্র। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে রাই ফোন করেছে। রুদ্র ঠিক করে আজই সব বলে দিবে যা হবার হোক যদি ভালোবাসা সত্যি হয় তবে ওর রাই ওরই থাকবে তবুও এই বোঝাটা নিয়ে আর চলতে পারছে না সে। শেষ মূহুর্তে কল টা রিসিভ করে কানে মোবাইলটা ধরে

-কোথায় ছিলে এতক্ষণ, মেসেজ এর রিপ্লাই করলে না কল ও রিসিভ করতে এতো দেরি। 

-(রুদ্রের গলা কাঁপতে থাকে, অজানা আতংকে গ্রাস করে নিচ্ছে গলার স্বর তবুও আজ বলতেই হবে ওকে) বাআআথরুমে... ছিলাম, তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।

-যা বলার দেখা হলে সামনাসামনি বলবে কেমন। এখন যেটার জন্য ফোন করেছি সেটা বলি পরশু সময় বের করে রেখ। বিয়ের তো মাত্র দিন পনের বাকি শপিং এ যেতে হবে সাথে তনু ছুটকিও সাথে তোমার যেন মনে থাকে।

-ঠিক আছে। 

-এখন রাখি পরে কথা হবে, বাই। উম্মাহহহহ..
Like Reply
something
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
ভবিষ্যতে সুখের জীবন কাটাতে চাইলে জীবন সঙ্গীর কাছে কোনো কিছু লোকানো উচিত্ নয়। মানুষ মাত্রই ভুল করে, তোমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে যেটা তোমার সেটা তোমার কাছেই থাকবে।

পরপর দুটি পর্ব ফাটিয়ে দিয়েছ ভাই
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 1 user Likes Boti babu's post
Like Reply
বিজয় চৌধুরীকে আচ্ছা করে ঠাপন দিয়েছে রুদ্র, আমি হলে ধরে কেলিয়ে দিতাম মালটাকে।

আর রুদ্রর তার বিবেকের সঙ্গে পরস্পর বিরোধী মনের লড়াইয়ের প্রসঙ্গে বলি .. ভালোবেসেছে বলে তবেই তো অভিমান হয়েছিল রাইয়ের উপর আর সেই অভিমান থেকেই রাগ এবং রাগ থেকেই তো বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। এই ব্যাপারটা যবে অনুধাবন করতে পারবে রুদ্র নিজে, তবেই সে প্রকৃত ভালবাসার মানে বুঝবে এবং মধুরেণ সমাপয়েৎ হবে। এই উপন্যাসটি আমার দেখা এখনো পর্যন্ত এই ফোরামের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাস। keep going bro  horseride
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
Excellent update dada
[+] 1 user Likes Jibon Ahmed's post
Like Reply
Ahhh,onk sndr dada
[+] 1 user Likes Ari rox's post
Like Reply
(31-07-2022, 09:51 PM)Boti babu Wrote: ভবিষ্যতে সুখের জীবন কাটাতে চাইলে জীবন সঙ্গীর কাছে কোনো কিছু লোকানো উচিত্ নয়। মানুষ মাত্রই ভুল করে,  তোমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে যেটা তোমার সেটা তোমার কাছেই থাকবে।

পরপর দুটি পর্ব ফাটিয়ে দিয়েছ ভাই

হুম ভালোবাসার মানুষের কাছে কিছুই লুকাতে নেই কিন্তু এখানে ব্যাপারটা তো সেনসেটিভ।
আজ যদি রাই একই ভুল করতো তবে কি পাঠক তাকে প্রেমিকা হিসেবে রুদ্রের পাশে মেনে নিতো, ভাববার বিষয়..
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(31-07-2022, 09:58 PM)Bumba_1 Wrote: বিজয় চৌধুরীকে আচ্ছা করে ঠাপন দিয়েছে রুদ্র, আমি হলে ধরে কেলিয়ে দিতাম মালটাকে।

আর রুদ্রর তার বিবেকের সঙ্গে পরস্পর বিরোধী মনের লড়াইয়ের প্রসঙ্গে বলি .. ভালোবেসেছে বলে তবেই তো অভিমান হয়েছিল রাইয়ের উপর আর সেই অভিমান থেকেই রাগ এবং রাগ থেকেই তো বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। এই ব্যাপারটা যবে অনুধাবন করতে পারবে রুদ্র নিজে, তবেই সে প্রকৃত ভালবাসার মানে বুঝবে এবং মধুরেণ সমাপয়েৎ হবে। এই উপন্যাসটি আমার দেখা এখনো পর্যন্ত এই ফোরামের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাস। keep going bro  horseride

ধন্যবাদ দাদা... বিজয় চৌধুরী ক্যালানি খাবার যোগ্য এখনো জামাইকে দিয়ে ব্যবসা করার ধান্দা করছে।

মনের মাঝে লড়াই টা ভালোবাসা দিয়েই লড়তে হবে আর এখন তো পাশে রাই ও আছে বাকিটা দেখা যাক কি হয়।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(31-07-2022, 10:16 PM)Jibon Ahmed Wrote: Excellent update dada

thanks
ব্রো Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(31-07-2022, 10:25 PM)Ari rox Wrote: Ahhh,onk sndr dada

অনেক অনেক ধন্যবাদ
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
Wow .... Darun update .... Ato sundor miloner muhurto ta .....
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
অন্যতম সেরা বা বলা উচিত সেরার সেরা পর্ব ছিল এটি!! কত কিছু ছিল এই একটা পর্বে। শশুরের অপমানকর প্রশ্নের উত্তরে হবু জামাইয়ের শান্ত গলায় জবাব দেওয়া (থাপ্পড় মারাও বলা যায়), সাথে রূদ্রর পিতাও অসাধারণ মানুষ।

এর পরে রূদ্র রাইয়ের এতদিনের জমে থাকা অনেক কথা, প্রেম, রাগ অভিমান সব একত্রিত হয়ে এক অন্য রূপে বেরিয়ে আসার সাক্ষী হলাম আমরা। একটা মেয়ের মন যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছো সেটা দারুন ভায়া। সাথে দুজনের একান্তে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত ঠোঁটে হাসি ও বুকে ব্যাথা আনতে বাধ্য।

আর শেষের রূদ্র বনাম রুদ্রর কথোপকথন ও দুশ্চিন্তা, ভয় পাবার অংশটা তো পুরো চুমু। কাউকে পেয়ে আবারো হারিয়ে ফেলার ভয়, কাউকে হারিয়ে আবার পাবার ভয়, আবার এক অদ্ভুত দোটানা, এক অদ্ভুত রাগ নিজের প্রতি যেটা একসময় নিজের স্বার্থে অন্যের দিকে চালান হয়ে যায়। মানুষ যে নিজেকে না চাইতেও খারাপ ভাবতে চায়না। তাই কোনো না কোনো বাহানা খোঁজে অন্যের দোষ প্রমান করতে নিজের কাছেই। যাতে নিজেকে সান্তনা দেওয়া যায়। এদিকে সেই অন্য রূদ্র সেই অহংকারী রাগী হারতে থাকা রূদ্র নিজের হেরে যাওয়া মেনে নিতে না পেরে রুদ্রকে নানা ভাবে ভয় দেখাচ্ছে।

অসাধারণ ♥️♥️
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
(31-07-2022, 11:46 PM)dreampriya Wrote: Wow .... Darun update .... Ato sundor miloner muhurto ta .....

কাছাকাছি আসা হলো মিলন তো সামনে অপেক্ষমান।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(01-08-2022, 12:00 AM)Baban Wrote: অন্যতম সেরা বা বলা উচিত সেরার সেরা পর্ব ছিল এটি!! কত কিছু ছিল এই একটা পর্বে। শশুরের অপমানকর প্রশ্নের উত্তরে হবু জামাইয়ের শান্ত গলায় জবাব দেওয়া (থাপ্পড় মারাও বলা যায়), সাথে রূদ্রর পিতাও অসাধারণ মানুষ।

এর পরে রূদ্র রাইয়ের এতদিনের জমে থাকা অনেক কথা, প্রেম, রাগ অভিমান সব একত্রিত হয়ে এক অন্য রূপে বেরিয়ে আসার সাক্ষী হলাম আমরা। একটা মেয়ের মন যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছো সেটা দারুন ভায়া। সাথে দুজনের একান্তে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত ঠোঁটে হাসি ও বুকে ব্যাথা আনতে বাধ্য।

আর শেষের রূদ্র বনাম রুদ্রর কথোপকথন ও দুশ্চিন্তা, ভয় পাবার অংশটা তো পুরো চুমু। কাউকে পেয়ে আবারো হারিয়ে ফেলার ভয়, কাউকে হারিয়ে আবার পাবার ভয়, আবার এক অদ্ভুত দোটানা, এক অদ্ভুত রাগ নিজের প্রতি যেটা একসময় নিজের স্বার্থে অন্যের দিকে চালান হয়ে যায়। মানুষ যে নিজেকে না চাইতেও খারাপ ভাবতে চায়না। তাই কোনো না কোনো বাহানা খোঁজে অন্যের দোষ প্রমান করতে নিজের কাছেই। যাতে নিজেকে সান্তনা দেওয়া যায়। এদিকে সেই অন্য রূদ্র সেই অহংকারী রাগী হারতে থাকা রূদ্র নিজের হেরে যাওয়া মেনে নিতে না পেরে রুদ্রকে নানা ভাবে ভয় দেখাচ্ছে।

অসাধারণ ♥️♥️

Heart Heart Heart
চেষ্টা করেছি ভালো কিছু মূহুর্ত তুলে ধরার...
বাকিটা তোমাদের উৎসাহ..
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(31-07-2022, 11:23 PM)nextpage Wrote: হুম ভালোবাসার মানুষের কাছে কিছুই লুকাতে নেই কিন্তু এখানে ব্যাপারটা তো সেনসেটিভ।
আজ যদি রাই একই ভুল করতো তবে কি পাঠক তাকে প্রেমিকা হিসেবে রুদ্রের পাশে মেনে নিতো, ভাববার বিষয়..

দাদা রাই কিছু করলে কি হতো সেটা নিয়ে কিছু বলবো না, কিন্তু রুদ্রর ব্যাপার নিয়ে এখানে বলছি।



 তার আগে কিছু কথা না বললেই নয়, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক টা দাড়িয়ে থাকে বিশ্বাস এর উপর আমি যখন কাজের জন্য 15/20 দিন বাড়ির বাইরে থাকি তখন আমার স্ত্রী জানে আমি কোনো উল্টো পাল্টা কিছু করবো না, ঠিক তেমনি আমি জানি ও আমার অবর্তমানে আমাদের সংসার ঠিক রাখবে, এটি আসে দীর্ঘ দিনের বিশ্বাস থেকে। 

এই স্বামী স্ত্রী মধ্যের সম্পর্কটা একটা কাচের মতো যত কিছু হোক কোনো ভাবেই এই কাঁচে দাগ লাগতে দেওয়া যাবে না। যদি কোনো ভাবে এই কাঁচে দাগ লেগে যায় তা হলে এই সম্পর্ক ভাঙতে বেশি সময় লাগে না।

 ঠিক তেমনি বিয়ের আগে কে কি করলো এটার থেকে বেশি জরুরি বিয়ের পরে কে কি করেছে। এখন রুদ্র দেখা গেল রাই কে হারিয়ে ফেলার ভয়ে রাই কে কিছু বললো না কিন্তু রাই যদি পরে কোনো ভাবে রুদ্রের আগের জীবনে কি কি করেছে তা জানতে পারে তখন রুদ্র কি ভাবে সামলাবে বলুন। আর যদি এখন রুদ্র সাহস করে রাইকে নিজে সব বলে দেয় তাহলে রাইয়ের রাগ অভিমান ঘৃণা হতে পারে রুদ্রের উপরে কিন্তু রাই রুদ্রকে ক্ষমা করে দিতেও পারে এত দিনের ভালোবাসার জন্য।

দেখুন যে কথাগুলো বললাম তা আমি নিজে 2012তে প্রয়োগ করেছিলাম তারপর 2018 ওনার সাথে বিয়ে আর এখন উনি আমার ছেলের মা।

তাই এতটা জোরের সাথে বলছি রুদ্রের সব কিছু বলা উচিত রাইকে । বাকিটা লেখক দাদার ইচ্ছা গল্পকে কোথায় নিয়ে যাবেন, ভালো থাকবেন তাড়াতাড়ি আপডেট নিয়ে ফেরত আসবেন সে আসা থাকলো
horseride আমাকে আমার মত থাকতে দাও horseride
[+] 2 users Like Boti babu's post
Like Reply
clps one of the best update, সেরার সেরা  clps

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
(01-08-2022, 01:02 AM)Boti babu Wrote:
দাদা রাই কিছু করলে কি হতো সেটা নিয়ে কিছু বলবো না, কিন্তু রুদ্রর ব্যাপার নিয়ে এখানে বলছি।



 তার আগে কিছু কথা না বললেই নয়, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক টা দাড়িয়ে থাকে বিশ্বাস এর উপর আমি যখন কাজের জন্য 15/20 দিন বাড়ির বাইরে থাকি তখন আমার স্ত্রী জানে আমি কোনো উল্টো পাল্টা কিছু করবো না, ঠিক তেমনি আমি জানি ও আমার অবর্তমানে আমাদের সংসার ঠিক রাখবে, এটি আসে দীর্ঘ দিনের বিশ্বাস থেকে। 

এই স্বামী স্ত্রী মধ্যের সম্পর্কটা একটা কাচের মতো যত কিছু হোক কোনো ভাবেই এই কাঁচে দাগ লাগতে দেওয়া যাবে না। যদি কোনো ভাবে এই কাঁচে দাগ লেগে যায় তা হলে এই সম্পর্ক ভাঙতে বেশি সময় লাগে না।

 ঠিক তেমনি বিয়ের আগে কে কি করলো এটার থেকে বেশি জরুরি বিয়ের পরে কে কি করেছে। এখন রুদ্র দেখা গেল রাই কে হারিয়ে ফেলার ভয়ে রাই কে কিছু বললো না কিন্তু রাই যদি পরে কোনো ভাবে রুদ্রের আগের জীবনে কি কি করেছে তা জানতে পারে তখন রুদ্র কি ভাবে সামলাবে বলুন। আর যদি এখন রুদ্র সাহস করে রাইকে নিজে সব বলে দেয় তাহলে রাইয়ের রাগ অভিমান ঘৃণা হতে পারে রুদ্রের উপরে কিন্তু রাই রুদ্রকে ক্ষমা করে দিতেও পারে এত দিনের ভালোবাসার জন্য।

দেখুন যে কথাগুলো বললাম তা আমি নিজে 2012তে প্রয়োগ করেছিলাম তারপর 2018 ওনার সাথে বিয়ে আর এখন উনি আমার ছেলের মা।

তাই এতটা জোরের সাথে বলছি রুদ্রের সব কিছু বলা উচিত রাইকে । বাকিটা লেখক দাদার ইচ্ছা গল্পকে কোথায় নিয়ে যাবেন, ভালো থাকবেন তাড়াতাড়ি আপডেট নিয়ে ফেরত আসবেন সে আসা থাকলো

দাদা আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্য গুলো আমাকে ভাবতে সাহায্য করে। আপনি পুরো পরিস্থিতি টা দারুন ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

বিশ্বাস, শব্দ টা খুব ছোট কিন্তু এর ব্যাপকতা বিশাল। এই একটা শব্দের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠে সম্পর্ক। যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালোবাসা কেন কোন সম্পর্কই মজবুত ভিত্তি পায় না। হুম নতুন করে যে সুযোগ রুদ্র পেয়েছে সেটা ওর কাজে লাগানো দরকার।
দেখা যাক ভবিষ্যতে কি হয়...
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(01-08-2022, 09:50 AM)Somnaath Wrote:
clps one of the best update, সেরার সেরা  clps

thanks
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
রুদ্র কি করবে তা জানি না, কিন্তু এতটুকু জানি, রাগ-অভিমান, সিদ্ধান্তহীনতা, ভুল-বোঝাবুঝি এগুলোই হচ্ছে গল্পের রসদ। এগুলোই গল্পকে জীবন্ত রাখে। আমরা অনেক কিছুই সরলভাবে ভাবি, কিন্তু জীবন অতটাও সরল নয়। তবে সবশেষে সুখী একটা মূহুর্তই আমরা সকলে কামনা করি।

আশা করি লেখক কথাগুলো বুঝতে পারবেন।
[+] 1 user Likes sudipto-ray's post
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)