Posts: 1,265
Threads: 3
Likes Received: 1,443 in 961 posts
Likes Given: 3,874
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
Posts: 1,265
Threads: 3
Likes Received: 1,443 in 961 posts
Likes Given: 3,874
Joined: Apr 2022
Reputation:
152
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
•
Posts: 168
Threads: 2
Likes Received: 364 in 107 posts
Likes Given: 390
Joined: Jun 2022
Reputation:
51
যাক ! তাহলে রুদ্র রাইয়ের গাড়িতে চাপল ! এবং ওদের বাড়ির দোরগোড়ায় ও আসলো ! এবার বোম ফাটুক তাহলে ......
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তেমন কেউ নেই, এক হাতে টেনে রুপালি কে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আর পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটা এখনো হেসে চলেছে। রুপালি রুদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার চেষ্টা করে কিন্তু এ চোখ বড়ই দুর্ভেদ্য দুর্গের মত এত সহজে পড়া যায় না, কিন্তু চোখ গুলো আজ আর স্থির নেই এদিক ওদিকে ছুটছে বারংবার যেন কিছু খুঁজে চলেছে। মূহুর্তের মাঝেই রুদ্রের ঠোঁট নেমে আসে রুপালির ঠোঁটের উপর, হালকা করে একটা চুমো খায় সেখানেই।
রুপালি কে চুমো খাচ্ছে তাও আবার কারও সামনে, কিন্তু ঐদিকে দাড়িয়ে আছে কে আর রুদ্র কে দেখে হেসে চলেছে কেন?? জানাতে হলে পড়তে হবে নতুন পর্ব। আগামীকাল রাতে আসছে নতুন পর্ব - মনের খোঁজে-২
Posts: 6,160
Threads: 42
Likes Received: 12,436 in 4,169 posts
Likes Given: 5,339
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
(24-07-2022, 08:54 PM)nextpage Wrote:
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তেমন কেউ নেই, এক হাতে টেনে রুপালি কে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আর পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটা এখনো হেসে চলেছে। রুপালি রুদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার চেষ্টা করে কিন্তু এ চোখ বড়ই দুর্ভেদ্য দুর্গের মত এত সহজে পড়া যায় না, কিন্তু চোখ গুলো আজ আর স্থির নেই এদিক ওদিকে ছুটছে বারংবার যেন কিছু খুঁজে চলেছে। মূহুর্তের মাঝেই রুদ্রের ঠোঁট নেমে আসে রুপালির ঠোঁটের উপর, হালকা করে একটা চুমো খায় সেখানেই।
রুপালি কে চুমো খাচ্ছে তাও আবার কারও সামনে, কিন্তু ঐদিকে দাড়িয়ে আছে কে আর রুদ্র কে দেখে হেসে চলেছে কেন?? জানাতে হলে পড়তে হবে নতুন পর্ব। আগামীকাল রাতে আসছে নতুন পর্ব - মনের খোঁজে-২
নাহে লেখক মহাশয়, এই কাহিনীর বিভাগ ব্যাভিচার থেকে পরিবর্তন করিয়া ইরো থ্রিলার করিয়া দিলে বোধহয় উচিত হইবে। এতো ঝটকা তো বোধহয় থ্রিলারেও থাকেনা
অপেক্ষায় রইলাম ♥️
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(24-07-2022, 08:54 PM)nextpage Wrote:
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তেমন কেউ নেই, এক হাতে টেনে রুপালি কে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আর পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটা এখনো হেসে চলেছে। রুপালি রুদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার চেষ্টা করে কিন্তু এ চোখ বড়ই দুর্ভেদ্য দুর্গের মত এত সহজে পড়া যায় না, কিন্তু চোখ গুলো আজ আর স্থির নেই এদিক ওদিকে ছুটছে বারংবার যেন কিছু খুঁজে চলেছে। মূহুর্তের মাঝেই রুদ্রের ঠোঁট নেমে আসে রুপালির ঠোঁটের উপর, হালকা করে একটা চুমো খায় সেখানেই।
রুপালি কে চুমো খাচ্ছে তাও আবার কারও সামনে, কিন্তু ঐদিকে দাড়িয়ে আছে কে আর রুদ্র কে দেখে হেসে চলেছে কেন?? জানাতে হলে পড়তে হবে নতুন পর্ব। আগামীকাল রাতে আসছে নতুন পর্ব - মনের খোঁজে-২
রহস্য রোমাঞ্চয় ঘেরা হতে চলেছে পরবর্তী পর্ব .. মুখিয়ে আছি
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
•
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
(24-07-2022, 09:01 PM)Bumba_1 Wrote:
রহস্য রোমাঞ্চয় ঘেরা হতে চলেছে পরবর্তী পর্ব .. মুখিয়ে আছি 
দুটোই রাখার চেষ্টা করেছি।
গতকাল সারারাত বাস জার্নি করে একজন কে দেখতে এসেছি তাকে ছাড়া রাই কে আঁকতে পারছিলাম না। আর তাকে দেখেই পুরোটা পর্ব লিখে ফেললাম তাো ঘুম ঘুম চোখে, এখনো রিচেক দেয়া হয় নি আর দিবো না। যা আছে সেটাই সই।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 843
Threads: 0
Likes Received: 385 in 318 posts
Likes Given: 1,598
Joined: Feb 2022
Reputation:
15
Update er ashai bse achi dada
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
মনের খোঁজে-২
অফিস থেকে বেড়িয়ে রুপালির সাথে আগের ক্যানসেল করা লং ড্রাইভে যাচ্ছে রুদ্র। আজ রুদ্র বাইক আনলেও রুপালির জেদ করে বসলো তার স্কুটিতে করেই যেতে হবে, রুদ্রও আপত্তি করে না বেশি, ভালই রাগে স্কুটি রাইড বিশেষ করে বেশি ভালো লাগে যখন আশেপাশের মানুষ হা করে তাকিয়ে থাকে। তাদের কাছে এ যেন এক আশ্চর্য বিষয় যে মেয়ে বাইক চালাচ্ছে তার চেয়ে বেশি আশ্চর্যের যে একটা ছেলে পিছনে বসে আছে। মানুষ কতটা অলস হলে এমন বিষয় নিয়েও গসিপ করতে বসে যায়, যেন এটা নিয়ে সমালোচনা না করা পর্যন্ত পেটের ভাত হজম হবে না। রাস্তাটা ফাঁকা পেতেই গতি বাড়ায় রুপালি, হেলমেটের বাইরে থাকা চুলগুলো বাতাসে উড়ছে আর সেই উড়তে থাকা চুল মাঝে মাঝেই রুদ্রের মুখের উপর সৈকতের সমুদ্রের ঢেউয়ের মতই আছড়ে পড়ছে। চোখ খোলা রাখলে চোখে চুল পড়তে পারে তাই রুদ্র চোখ গুলো আবছা করে বুজে নেয়, উড়ে আসা চুলের ঘ্রাণে মনের ভিতরে আলোড়ন তৈরী করে সহসাই যেন কল্পনার জগতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। দু চোখ মেলে সামনে তাকায় রুদ্র স্কুটির লুকিং গ্লাসের দিকে তাকাতেই একটা মুখ দেখে চমকে উঠে সামনে যে বসা ওটা রুপালি না, একটা অন্য মেয়ে বছর তের কি চৌদ্দের ঠোঁটের কোনে সদা লেগে থাকা মিষ্টি হাসিতে যেন ভাসিয়ে দিবে সবকিছু। মেয়েটি লুকিং গ্লাসে রুদ্রের বিস্ময় ভরা মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে আর ছোট ছোট পলক ফেলে কিছু যেন একটা বলতে চাইছে, না কোন শব্দ রুদ্রের কান অব্দি আসতে পারছে কোথাও যেন আটকে গেছে, আর আটকে যাবারই তো কথা চোখের সামনে যে সেই কলেজে পড়া দু দিকে বেনী করে চুল বাধা ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা তিল নিয়ে সদা হাস্যজ্বল রাই কে দেখতে পারছে সে। সেই রাইকে যাকে সে শেষ বার দেখেছিলো কলেজের বারান্দায় দুদিকে বেনী করা চুল গুলো হাতে নিয়ে নাচাতে নাচাতে ওর দিকে আসছে, সেই হাসি সেই মিটমিট করে তাকিয়ে থাকা। নাহ রুদ্র আর ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছে না এই বুঝি সেই চোখের গভীরতায় এখনি ডুবে যাবে, মূহুর্তেই চোখ বন্ধ করে নেয়... ওদিকে আর তাকাতে পারছে না হয়তো আরেকবার তাকালে ও এতকাল ধরে যেটা বলতে চাইছিলো সেটাই মুখ থেকে বেড়িয়ে আসবে। না হঠাৎ করেই সব বদলাতে শুরু করলো ভেতরের আরেকটা রুদ্র আবার জেগে উঠেছে ঐ রুদ্রের কাছে কেন জানি মনে হলো সেই চোখের চাউনিতে ভালবাসা ছিল না যা ছিল সেটা ওর উপরে জন্মানো ঘৃনা আর রাগের ঝলকানি। রুদ্র কে ও ঘৃনা করে ওর কাছে রুদ্র একটা নষ্ট হয়ে যাওয়া পঁচে যাওয়া মানুষ ছাড়া আর কেউ না, তবে ও যে বারবার ভালোবাসি ভালোবাসি বলে তাহলে সেটা সেটাও কি ওর উপরে দয়া দাক্ষিণ্য মাত্র নাকি হাস্যরসের জন্যই। ঐ তো তাই মনে হচ্ছে রাই ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে ওকে তাচ্ছিল্য করছে, ব্যঙ্গবিদ্রূপ করে চলেছে৷ না এটা আর যাই হোক ভালবাসা না ভালোবাসলে তো ওভাবে চলে যেতে পারতো না, একটা কিছু বলে তো যেতে পারতো। নিজের মুখেও যদি রুদ্র কে খারাপ বলতো তাও সেটা মেনে নিতো৷ কিন্তু সেটা করেনি কারণ রাই তো কখনো ওকে ভালোই বসে নি, আর এখন যেটা করছে সেটা শুধুমাত্র ওকে নিয়ে খেলছে ওর অনুভূতি নিয়ে খেলছে শুধু ওকে আরও গহীনে নিয়ে যেতে চাইছে।
রুপালির ধাক্কায় সম্বিত ফেরে রুদ্রের, চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে না আশেপাশে সে মেয়েটি নেই, কোথাও উধাও হয়ে গেছে। নিজের উপর রাগ টা আবার বাড়তে থাকে, কিন্তু সেটা মুখের উপরের অভিব্যক্তিতে কেউ দেখে সেটা বুঝতে পারবে না। রুপালির সাথে হাটতে হাটতে নদীর ধারে চলে এসেছে, পাশেই বেঞ্চে বসে পড়ে দুজনে রুপালি তখন থেকেই কিছু একটা বলে চলেছে কিন্তু রুদ্রের মন বা কান কোনটাই সেদিকে নেই, মাঝে মাঝে শুধু মাথা হেলিয়ে সায় দিয়ে যাচ্ছে মাত্র। রুদ্র আবার নিজের দুনিয়াতে হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমে ক্রমে পুরনো রাগ ক্ষোভ গুলো আবার বেরিয়ে আসছে, নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছে রুদ্রের ঐদিনের মেসেজ টা পাওয়ার পর ওমন ছোটাছুটির জন্য, কেন কার জন্য এমন পাগলের মত ছুটছিলো সে যার কাছে ও একটা কীট সমতুল্য মানুষ মাত্র ওর কাছে রাই কিচ্ছু না আর রাইয়ের কাছেও রুদ্রের কোন অস্তিত্ব নেই। কেন যে ঐ পাগলামি টা করতে গেল কে জানে, নিজেই নিজেকে মনে মনে গালাগাল দিতে লাগলো। কতটা বোকা হলে এমন করা যায় এত বছর পর একটা মেসেজেই সব ভুলে গিয়ে ওকে একটাবার দেখার জন্য ওমন উতলা হবার মত কিচ্ছু হয়নি, সব সেই আগের মতই আছে কিচ্ছুটি পাল্টায় নি। নাহ ঐ নাম্বার টাই আর রাখবে না ওর থেকে কোন যোগাযোগ দরকার নেই কারও দরকার নেই রুদ্র যেমন ছিল বেশ ছিল, পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে সিম টা খুলে নদীতে ছুড়ে মারে। পাশে বসা রুপালি অবাক হয়ে রুদ্রের কান্ড দেখে, হঠাৎ করে এমন কি হলো যে ও সিমটা ফেলে দিলো রুপালি তো তেমন কিছুই বলে নি রুদ্র কে তাহলে
-কি হয়ছে রুদ্র সিমটা ফেলে দিলে কেন?
-এমনি একটা নাম্বার বারবার ডিস্টার্ব করছে তাই, এদিকে বসে থাকতে ভালো লাগছে না, চলো ওদিকে যাই একটু...
হাটতে হাটতো একটু এগিয়ে যায় এদিকটায় সারি সারি টগর ফুলের গাছ গুলো সুন্দর ঝুপের মত হয়ে আছে, গাছগুলো ফুল ফুলে ভরে গেছে সবুজ পাতার মাঝে মাঝে সাদা ফুল গুলো অপূর্ব লাগছে, হঠাৎ মনে হলো ওদিকে কেউ দাড়িয়ে আছে, ভাল করে খেয়াল করতেই রুদ্র খেয়াল করলো স্কুটির সেই মেয়েটা এখানেও দাড়িয়ে আছে আর ওর দিকে তাকিয়েই খিলখিল করে হাসছে। রুদ্রের রাগটা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়, ঐ হাসিটা যেন ও সহ্য করত পারছে না ওর কাছে মনে হয় সেই হাসিতে আছে তাচ্ছিল্যের উপযোগ আর হেরে যাওয়া রুদ্রের গ্লানি, রুদ্র আর হারতে চায় না আর কখনো না। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তেমন কেউ নেই, এক হাতে টেনে রুপালি কে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আর পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটা এখনো হেসে চলেছে। রুপালি রুদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার চেষ্টা করে কিন্তু এ চোখ বড়ই দুর্ভেদ্য দুর্গের মত এত সহজে পড়া যায় না, কিন্তু চোখ গুলো আজ আর স্থির নেই এদিক ওদিকে ছুটছে বারংবার যেন কিছু খুঁজে চলেছে। মূহুর্তের মাঝেই রুদ্রের ঠোঁট নেমে আসে রুপালির ঠোঁটের উপর, হালকা করে একটা চুমো খায় সেখানেই। কোন কিছু বুঝার আগেই পাগলের মত চুষতে থাকে রুপালির ঠোঁট গুলোকে, রুপালিকে নিজের সাথে আরও বেশি করে চেপে ধরে একদম নড়ার সুযোগ পায় না পর্যন্ত। একপাটি ঠোঁট ছেড়েই আরেক পাটিতে অসহ্য শক্তিতে চোষে চলেছে রুদ্র। এমন ভাবে রুদ্র ওর মাথা চেপে ধরেছে যে একটু দম নেবার মত সুযোগও পাচ্ছে না সে, এই রুদ্র কে রুপালি চিনে না সে এ এক অন্য বন্য রুদ্র ওর সামনে দাড়িয়ে নিজেকে একটু ছাড়ানোর জন্য বার কয়েকবার হয়তো নখও বসিয়ে দিয়েছে রুদ্রের পিঠে কিন্তু না ওদিকে রুদ্রের কোন মনযোগ নেই যেন অসুরের শক্তি ভর করেছে ওর উপর। টানা পাঁচ মিনিটের এই ঠোঁটের উপর অত্যাচার শেষ করে রুপালি কে মুক্তি দিয়ে পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটি এখনো দাড়িয়ে কিন্তু এখন যেন সেই হাসিটা নেই মুখটা কেমন কালো মেঘের আড়ালে হারিয়ে গেছে, মুখের বিষন্নতা বলে দিচ্ছে ও হেরে গেছে রুদ্রের কাছে ও হেরে গেছে। রুদ্রের ঠোঁটে কোনায় হাসি ফুটে উঠে যেন এই যুদ্ধে সে জয়ী হয়ে গেছে, যেই মানুষটাকে ও ঘৃনা করে ওর মুখ থেকে হাসিটা ও ছিনিয়ে নিতে পেরেছে। বারবার পাশ ফিরে তাকিয়ে কি যেন দেখছে আর বিড়বিড় করছে আর ওমন পাগলের মত কিস করা এসবে রুপালির কাছে রুদ্রের আজকের আচরণ স্বাভাবিক মনে হয় না তাই সে আজকে আর বেশি এগোতে চায় না এমনিতেই হালকা কামড়ে ঠোঁটের কিনারে একআধটু রক্তও জমে গেছে বোধ হয়। কিছু একটা হয়তো রুদ্রের ভিতরে ভিতরে ওকে এসব করিয়ে চলেছে। আর কিছুটা সময় কাটিয়ে ওরা সেখান থেকে আবার শহরের দিকে চলে আসে। রুপালির বাসার কাছে এসে বিদায় নিয়ে রুদ্র আবার অফিসের দিকে চলে যায় বাইক আনতে আর সেখান থেকে বাসা।
বাসায় ফিরে বাথরুমে ফ্রেশ হবার সময় আয়নার দিকে তাকিয়ে পাগলের মত হাসছে রুদ্র, চোখ বন্ধ করে সেই বিষন্ন মুখটা দেখতে পাচ্ছে আর তাতেই ওর হাসি পাচ্ছে, অবশেষে ও পেরেছে ঐ মুখের হাসিটা কেড়ে নিতে পেরেছে। ধীরে ধীরে নিজের মাথার উপর চেপে বসা ভেতরের রুদ্রটা আবার ভেতরেই শীতনিদ্রায় চলে যাচ্ছে মাথাটা ঠান্ডা হয়ে আসছে। চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে, মোবাইলটা হাতে নিয়ে চেক করতে যায় কোন মেসেজ এসেছে কিনা বারবার রিফ্রেশ দিতে থাকে হয়তো অন্য মেসেজে ভীরে হারিয়ে গেছে মন কেমন উতলা হয়ে আছে সেই নাম্বার থেকে একটা মেসেজ দেখার আসায়। তখনি মনে পরে সিমটা ও ফেলে দিয়েছে, একদিক থেকে ভালই হয়েছে এখন আর ওর কথা মনে পড়বে না একটু সময় লাগবে তবে আবার আগের মতই ভুলে যাবে কিন্তু ভুলতে কি কখনো পেরেছিল সেই প্রশ্ন টা আর কারও করা হয়ে উঠেনি।
রাতের খাবার খাওয়ার সময় অবিনাশ বাবু রুদ্র কে খাবার শেষে তার সাথে দেখা করতে বলে কোন একটা বিষয় নিয়ে কথা হবে, রুদ্র মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়। খাওয়া শেষে একটু রেস্ট নিয়ে রুদ্র বাবা মায়ের ঘরের দিকে এগিয়ে যায় দরজা টা খোলাই ছিল ভেতরে ঢুকতেই দেখে অঞ্জলি দেবীও ঘরেই আছে।
-বাবা ডেকেছিলে?
-হুম, বসো এখানে।(অবিনাশ বাবু বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ছিল তার সামনে হাতের ইশারায় রুদ্র কে বসতে বলে)। একটা জরুরি বিষয়ে কথা বলবো সেটাতে তুইও জড়িয়ে আছিস তাই তোর সাথেই কথাটা আগে বলছি।
-বাবা সিরিয়াস কিছু কি?(একবার বাবার মুখের দিকে তাকায় আরেকবার মায়ের মুখের দিকে, কি ঘটনা সেটা বুঝার চেষ্টা করে)
-সিরিয়াস তো বটেই, তোর মা আর আমি এবার তোর বিয়ের ব্যাপারে এগোতে চাইছি। তোর কি মত, পছন্দ অপছন্দ কিছু থাকলে বল আমাদের আমরা সেদিকেই এগোব।
-(রুদ্র ভাবতে থাকে সেদিন অফিসের ম্যাডাম বাসায় আসায় কি বাবা মা কিছু সন্দেহ করছে নাকি? না হলে হঠাৎ বিয়ের কথা কেন উঠছে কিন্তু সেটা তো তেমন কিছুই না) দেখো বাবা উনি আমার অফিসের ম্যানেজার, ওদিন বাইক টা নষ্ট ছিল বলে আমাকে ড্রপ করতে এসেছিল আর কিচ্ছু না, তোমরা হয়তো অন্য কিছু ভাবছো।
-(মুখ টিপে হাসছে অবিনাশ বাবু, দূরে বসা অঞ্জলি দেবীর মুখেও সেই হাসিটার রেখা ফুটে উঠেছে) আমরা কি তেমন কিছু বলেছি, শুধু জানতে চাইছি তোর কোন পছন্দ আছে কিনা, থাকলে আমাদের বল। জীবনটা তোর আর কার সাথে ভালো থাকবি সেটা তোর বেছে নেয়াটাই সবচেয়ে ভালো।
-(আয়নার সামনে বসে চুলে বেনী করতে থাকা অঞ্জলি দেবী বলে উঠে) দেখ বাবু আমরা আমাদের কোন সিদ্ধান্ত তোর উপর চাপিয়ে দিতে চাই না, তুই যথেষ্ট বড় হয়েছিস নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারার অধিকার তোর আছে। কোন সংকোচ না করে মনে কিছু থাকলে বলতে পারিস আমরা এতটুকু ফ্রি তোর সাথে তো আছিস।
-(রুদ্র কিছু বলতে পারে না, কি বলবে বলার মত কিছু পায় না। একবার ভাবে রাইয়ের কথা কি বলবে? কিন্তু কোন ভরসায় বলবে, ও কোথায় আছে কেমন আছে কিচ্ছু জানে না শুধু একটা নাম্বার ধরে কি কাউকে কিছু বলা যায়। কিন্তু ও তো এখনো ওকেই ভালোবাসে অপেক্ষা করে আছে একবার কি চেষ্টা করে দেখবে যদি খুঁজে বের করতে পারে, ইশ ঐ নাম্বার টা সেভ পর্যন্ত করা হয়নি সেভ করা থাকলে কিছু একটা করে খোঁজ তো নেয়া যেত। না ভেতরের রুদ্রটা আবার বেড়িয়ে আসতে চাইছে সেই পুরনো রাগ, ঘৃণা অভিমান গুলো চড় চড় করে মাথায় জেকে বসছে শত চেষ্টা করেও রুদ্র সেটা সামাল দিতে পারছে না। যত চাইছে সেই রাগ টাকে দমাতে ততই সেটা আরও প্রবল ভাবে ফিরে আসছে। আর পারছে না রুদ্র নিজের কাছেই নিজে হেরে যাচ্ছে একটু একটু করে, ভেতরের রুদ্রের কাছে ভালোবাসা বলে কিচ্ছু নেই সেখানে রাই নামে কেউ নেই সেখানে শুধু রুদ্রের একার রাজত্ব) না বাবা আমার কোন পছন্দ নেই। তোমরা যেটা ভালো মনে করো সেটাই করো, তোমাদের সিদ্ধান্তে আমার কোন আপত্তি নেই।
-ভেবে বলছিস তো? তোর মায়ের আর আমার একটা মেয়ে দেখা আছে, দুজনেরই খুব পছন্দ হয়েছে। তুই রাজি থাকলে সামনে একদিন ওদের বাসায় গিয়ে কথা বলে আসি আর তুইও সাথে গেলে তোরও দেখা হয়ে যাবে।
-তোমাদের পছন্দের উপর আমার কিছু বলার নেই। তুমি আর মা তো আমার জন্য ভালো কিছুই ভেবে রেখেছো, আমার দেখার দরকার নেই তোমরা কথা বলে আসো।
-না বাবু যতই আমাদের পছন্দ হোক তবুও তোর একবার দেখে আসা দরকার। তোর দেখে যদি পছন্দ হয়ে তবেই আমরা এগোব নইলে না।(এতক্ষণ আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকলেও এবার পিছন ফিরে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলে অঞ্জলি দেবী)
-ঠিক আছে মা তোমরা জানিও কবে যেতে হবে আমি তোমাদের সাথে যাবো। আমি এখন ঘরে যাই তাহলে।
-আচ্ছা যা, রাত করিস না বেশি।
রুদ্র ঘর থেকে বেড়িয়ে একটু এগিয়ে আবার থমকে যায়, কি থেকে কি হয়ে গেল সেটাই বুঝতে পারছে না রুদ্র৷ ও তো যেটা বলতে চেয়েছিল সেটা বলতেই পারলো না, যখনি রাই এর জন্য মনের কোনে সেই পুরনো টান টা জেগে উঠে তখনি কেন জানি সেই রুদ্রটাও জাকিয়ে বসে ওর উপর। শত চেষ্টাতেও নিজের মনের কথাটা বলতে পারলো না উল্টো যেটা বলতে চায় নি সেটাই বলে ফেললো। তবে কি এটাই নিয়তির খেলা নাকি নিজের তৈরী করা আলাদা জগতে নিজেই হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমে ক্রমে একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে অতল গহ্বরে, সেখান থেকে হয়তো আর ফির আসা হবে না কখনো। নিজের উপর ঘৃণা ধরে গেছে রুদ্রের এমন অবস্থায় রাই থেকে যত দূরে চলে যাবে ততই ভালো কারণ ও আর হয়তো রাই এর সামনে দাড়াতেই পারবে না। একবার ইচ্ছে হচ্ছিলো আবার ফিরে গিয়ে মা বাবার কাছে মনের কথা টা বলেই ফেলুক কিন্তু পরক্ষণেই পা দুটো থমকে দাঁড়ায়, যা হচ্ছে সেটাই হোক এটাই হয়তো ভাগ্যে লেখা ছিল। আর দাঁড়ায় না রুদ্র নিজের ঘরের দিকে চলে যায়। দাদাকে বেরোতে দেখেই নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিল ছুটকি এর আগে দরজার কাছে আড়ি পেতে শুনছিলো বাবা কি এত সিরিয়াস বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য দাদা কে ডেকেছিল। ঘরের ভেতরের রুদ্র আর বাইরের রুদ্র কে মেলাতে পারছে না সে, মুখ দেখে তো সেটাই মনে হলো ওর দাদা যেন নিজের মাঝেই নেই কিছু একটা ওকে গ্রাস করছে এমন ভাবে মুখটা অন্ধকার করে আছে। কিছু তো একটা রুদ্র লুকাচ্ছে সবার থেকে কিন্তু সেটা কি জানতেই হবে তার আগে তনুর সাথে কথা বলতে হবে।
ওদিকে রুদ্র বের হয়ে যেতেই অঞ্জলি দেবী রাই কে ফোন করেছিল, রুদ্রের সাথে কি কথা হলো আর তারা কবে আসবে সেটা জানিয়ে দেয়। এবার রুদ্রের সাথে সামনাসামনি দেখা হবে সেই আনন্দ রাই এর মনের আনন্দের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে। কখন সে আবার রুদ্র কে নিজের করে পাবে সেই জন্য আর তর সইছে না। না আজ আর মেসেজ করবে না, সরাসরি ফোন করবে যা খুশি হোক রুদ্র রাগ দেখালে দেখাক সেটা নিঃসংকোচে সয়ে নিবে কিন্তু ওর কন্ঠ টা শুনার জন্য মনের ভিতর তোফান শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কি হলো কল ডিসকানেক্ট হয়ে যাচ্ছে বারবার আনরিচেবল দেখাচ্ছে, ওর ফোন তো বন্ধ থাকার কথা না আর এটা ওর রেগুলার নাম্বার বন্ধ রাখার কথাও না। মনে একটু দুশ্চিন্তা উকি দিলেও আনন্দের আবহে বেশিক্ষণ টিকতে পারছে না।
★★★★
-একবার ভদ্রতা করেও তো বাসায় আসার জন্য বলতে পারতেন।
রুদ্র বুঝতে পারে অন্যমনস্ক থাকার ফলে সে বোকার মত বিদায় জানিয়ে চলে যাচ্ছিলো, ঠিকি তো ভদ্রতা করে হলেও তো ম্যাডাম কে একবার বাসায় আসতে বলা উচিত ছিল।
-স্যরি ম্যাম, আসলে আমি অন্য একটা বিষয় নিয়ে ভাবছিলাম তো তাই ভুল টা হয়ে গেছে। প্লিজ ম্যাম আপনি বাসায় আসলে খুব খুশি হবো।
-না না ওটা এমনি বলেছি আজ আর আসবো না অন্যদিন সুযোগ পেলে দেখা যাবে।
-আজ না আসলে আমার নিজেকে খুব ছোট লাগবে, মনে হবে আপনি রাগ করেছেন।
-আরে সবকিছুতেই আমাকে কি শুধু রাগতে দেখেন নাকি, খুব মুশকিলে পড়ে গেলাম তো আপনি তো আমাকে রাগী ছাড়া আর কিছুই ভাবেন না। আচ্ছা এত করে যেহেতু বলছেন তাহলে আসছি।
রুদ্র এগিয়ে এসে গাড়ির দরজা টা খুলে ধরে রিদ্ধিমা কে নামতে সাহায্য করে। রুদ্র একটু এগিয়ে এসে গেট টা খুলে দেয় রিদ্ধিমা ভেতরে ঢুকে। দরজার কাছে গিয়ে কলিং বেল বাজায় রুদ্র, খানিক বাদেই অঞ্জলি দেবী এসে দরজা খুলে। একটু আগেই অবিনাশ বাবুও বাসায় ফিরেছেন এখন তো রুদ্রের আসার কথা না আর ছুটকিও টিউশনে গেছে তাই রুদ্র কে দেখে অবাক হয়।
-মা দেখো সাথে কে এসেছে, আমাদের অফিসের ম্যানেজার ম্যাডাম। (মায়ের দিকে ইশারা করে) ম্যাম এটা আমার মা।
-(অঞ্জলি দেবীর আগে থেকেই জানা যে ও কার সাথে আসছে, তবুও এমন করে মুখের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছে যেন কিছুই জানে না আর খুবই অবাক হয়েছে) ম্যাডাম সাথে এসেছে কেন? তুই কি কিছু গড়বড় করেছিস নাকি অফিসে? কিছু তো একটা হয়েছে না হলে অফিস থেকে এতোদিন তো কেউ এলো না আজ তবে কেন?
-আরে মা কিছু করিনি, আজ বাইক নেই নি তাই ম্যাডাম আমাকে ড্রপ করতে এসেছিল আর কি।
দরজার কাছে কথাবার্তার আওয়াজ শুনে ভেতরের ঘর থেকে অবিনাশ বাবু বের হয়ে আসে
-কি ব্যাপার কি হলো গো, কে এসেছে?(দরজার কাছে এসে রুদ্রের সাথে রাই কে দেখে চমকে যায়, মুখ ফুটে রাই এর নামটা বলেই ফেলছিল তখনি অঞ্জলি দেবী পিঠে দিকে খুঁচা দিয়ে থামিয়ে দেয়)
-আরে দেখো বাবুর অফিসে ম্যানেজার এসেছে।
-কি বলছো, কি সৌভাগ্য আমাদের আসুন আসুন ম্যাডাম ভিতরে আসুন।
রিদ্ধিমা মিটিমিটি করে হাসছে, ঘরের ভেতরের ঢুকার সময় রুদ্র খেয়াল করলো ওর বাবা মাও যেন হাসিটা লুকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কি এমন হলো যে সবাই এমন আড়াল করে হাসছে কে জানে৷ রিদ্ধিমা ভেতরে গিয়ে সোফায় বসে, অঞ্জলি দেবী ভেতরের দিকে চলে যায় হালকা জল খাবার আনতে। অবিনাশ বাবু বিপরীত দিকের সোফাতে বসতেই রিদ্ধিমা উঠে গিয়ে প্রণাম করে
-(হালকা বাঁধা দেবার চেষ্টা করে) এই দেখো, এসবের কি দরকার ছিল ম্যাডাম।
-আপনি আমাকে ম্যাডাম ডাকছেন কেন, আমি মি রুদ্রের ম্যাডাম তাও অফিসে আপনার না। আপনি আমার গুরুজন আপনি ম্যাডাম ডাকলে কেমন অস্বস্তি হয়।(কোন মতে হাসিটা ভেতরে চেপে রেখে সুন্দর অভিনয় টা চালিয়ে যায় রিদ্ধিমা)
-(একটু গলা ছেড়ে) দেখে যাও অঞ্জলি, এত বড় একটা অফিসের এত বড় পদে থেকেও কত নম্র ভদ্র আচরণ মনে টা গলে গেলো আমার।(মাথায় হাত রেখে) সুখী হও মা।
এর মাঝেই অঞ্জলি দেবী ফিরে আসে কিছু খাবার নিয়ে,
-এগুলো কিন্তু আপনাকে খেতেই হবে কোন বারণ শুনবো না, কিরে বাবু তুই কিছু বল তোর ম্যাডাম কে।
-হ্যাঁ ম্যাডাম আপনাকে এগুলো কিন্তু খেতেই হবে, মা অনেক আশা করে এনেছে।
-আচ্ছা আচ্ছা এত করে বলতে হবে না, আমি খেয়ে নেব এমনিতেও খিদে পেয়েছে।(কথাটা শেষ করেই সামনের প্লেট থেকে এক মিষ্টি তুলে মুখে পুড়ে দেয়)
-দেখেছো কত মিষ্টি মেয়ে, একবার বলতেই কেমন খেয়ে নিচ্ছে। এমন লক্ষ্ণীমন্তর মেয়েকে সবাই ছেলের বউ করতে চাইবে (পাশে দাড়ানো অঞ্জলি দেবী বলে উঠে)
-(মায়ের মুখে কথাটা শুনে ভীমড়ি খায় রুদ্র, একি বলতে শুরু করেছে তাও আবার ম্যাডামের সামনে। ম্যাডাম আবার কি না কি ভাবে কে জানে) হালকা নিচু স্বরে মা উনি আমার ম্যাডাম আর তুমি কি সব বলছো, উনি রেগে গেলে আমার চাকরি যাবে।
-আমি খারাপ কি বলেছি, দেখতে শুনতেও ভালো কি মিষ্টি মুখটা আর আচার আচরণও দেখলি কত ভালো, এমন মেয়েকে তো সবাই ছেলের বউ করে নিতে চাইবেই।
-(পাশ থেকে অবিনাশ বাবুো বলে উঠে) হুম তুমি কথাটা খারাপ বলো নি।
মা বাবার এমন কথায় রুদ্র অস্বস্তিতে পড়ছে বারবার, আড় চোখে তাকিয়ে ম্যাডামের ভাব বুঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু রিদ্ধিমার এদিকে যেন কোন মনযোগ নেই সে তার মত খেয়ে চলেছে, সত্যিই খুব খিদে পেয়েছিল হয়তো নইলে এমন করে কেউ খায় নাকি। কিন্তু মা বাবার আজ কি হলো কোন দিন তো এমন করে কথা বলে না তাহলে আজ এমন সুরে কথা তাও আবার ওর অফিসের ম্যানেজারের সামনে, রুদ্রের কি অবস্থা হচ্ছে সেটা কি তারা বুঝতে পারছে না। আর এক মূহুর্ত এখানে ওর থাকা যাবে না
-ম্যাম আপনি মা বাবার সাথে কথা বলুন আমি একটু ঘরে যাচ্ছি।
রুদ্রের চলে যাওয়ার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে, দরজার ও পাশে হারিয়ে যেতেই তিনজনেই এতক্ষণের জমানো হাসিটা প্রাণখুলে হাসতে থাকে তবে শব্দ কম করে না হলে আবার রুদ্রের কানে পৌঁছে যেতে পারে৷ এরপর রাই নিজেই কি ঘটনা সেটা অবিনাশ বাবুর কাছে বলতে থাকে। এতক্ষণ ওরা সবাই খেয়াল করেছে রুদ্র কেমন করে মিইয়ে ছিল ওদের উদ্ভট কথাবার্তার কারণে। বেচারা তো এসবের কিছুই না মাঝখান থেকে ভাবছিলো কি হচ্ছে এসব। রাই ফোন বের করে ওর মা দেবীকা চৌধুরীর কাছে ফোন করে, কল রিসিভ করতেই অঞ্জলি দেবীর দিকে এগিয়ে দেয়
-হ্যালো, নমস্কার আমি অঞ্জলি রায় বলছি রুদ্রের মা, রাই
আমাদের এখানে এসেছে একটু আগেই।
-নমস্কার, হুম রাই আমাকে মোবাইল করে জানিয়েছিল যে আপনাদের এখান যাবে। তা আপনার সবাই ভালো আছেন?
-হুম ভালোই আছি এখন ওকে দেখে আরও বেশি ভালো লাগছে। আপনারা কেমন আছেন?
-আমরাও ভালো আছি, আপনার সাথে কথা বলতে পেরে ভালো লাগছে।
-তা দিদি যেটার জন্য ফোনটা করা, ঐ বিষয়টা নিয়ে ভেবেছিলেন? আমরা তো কথা বলার জন্য আসতে চাইছিলাম, আপনারা কি বলেন?
-রাই এর বাবার কথা তো মনে হয় ওর কাছেই শুনেছেন, ও কি বলবে জানা নেই তবে রাই তো আমারও মেয়ে তাই আমিই আমার মত জানিয়ে দিলাম। আপনারা একদিন সময় করে আসুন সামনাসামনি কথা বলি, আর রুদ্রকেও দেখার ইচ্ছে আছে।
-ঠিক আছে দিদি, তাহলে আমরা পরে জানিয়ে দেব কবে আসছি আমরা।
-ওকে দিদি, ভালো থাকবেন।
-আপনিও ভালো থাকবেন।
কল টা কেটে রাই কে আবার ফোনটা দিয়ে দেয়।
-কিন্তু আন্টি রুদ্র কে কি কিছু বলেছো?
-নারে বলা হয় নি, তবে চিন্তা করিস না তোর আঙ্কেল কথা বলবে।
-হুম মা, এক দুদিনের মাঝেই ওর সাথে আমি কথা বলবো, কোন সমস্যা হবে না।
-তোমরা থাকতে আমার টেনশন কিসের।
আর কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে সেদিনের মত রুদ্র আর ওর মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পরে রিদ্ধিমা, ম্যাডাম কে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসে রুদ্র। একটু আগের মা বাবার ওমন কথা বার্তার জন্য চূড়ান্ত রকমের অস্বস্তি বোধ করছে রুদ্র সেটার জন্যই ঘর থেকে বের হয়ে গাড়ি অব্দি আসা পর্যন্ত উপরে আর মুখ তুলে তাকায় নি সে। মনে মনে ভাবছে ম্যাডাম কি না কি ভাবছে কে জানে, আজ আর কিছু বলা যাবে না কাল অফিসে গিযে
আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিবে।
★★★★
গতকাল রাতেই বাবা জানিয়ে দিয়েছিল আজ দাদা বিয়ের কথাবার্তা বলার জন্য মেয়ের বাড়িতে যাবে তাই আজ সকাল থেকেই সেটার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বাসায়। দাদার বিয়ে কিন্তু ছুটকির মনে তেমন কোন আনন্দ নেই, কোথায় ওরা ভেবেছিলো রাই দির সাথে দাদার ঝামেলা টা মিটিয়ে দিবে আর জয় দা যা বলেছে তাতে করে দাদার সাথে বিয়ের ব্যাপারেও এগোনো যেত কিন্তু কিছুই তো হলো না। তনু কে মোবাইল করেছিল গত রাতেই ওদিকেও একি অবস্থা আজ নাকি ছেলে পক্ষ রাই দি কে দেখতে আসবে। ধুর ভালো লাগছে না কিছুই কি এমন রাগ দুজনের মাঝে যে একটা বার যোগাযোগ পর্যন্ত করে না। মোবাইলটা বের করে জয় কে ফোন করে, সব শুনে জয় চিন্তা করতে বারণ করে। জয় বলেছে রাই এর সাথে কথা বলবে, আর দেখতে আসা মানেই তো আর বিয়ে হয়ে যাওয়া নয়। আগামী সপ্তাহের মাঝেই জয় দা আসার চেষ্টা করবে, তখন না হয় কিছু একটা উপায় বের করতে হবে।
রুদ্র রেডি হয়ে ঘরেই বসে ছিল, এশ কালারের একটা শার্ট আর সাথে ব্ল্যাক কালারের গেবাডিন প্যার্ট পড়েছে সে। অন্যদিন হলে আরেকটু সাজগোজ করতো কিন্তু আজ মনটা সেখানে নেই ক্ষণে ক্ষণেই রং পাল্টাছে, এই মনে হচ্ছে মা বাবার পছন্দ মতই বিয়ে হয়ে যাক আবার মন চাইছে রাই এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়তো রাই ও ওর জন্য অপেক্ষা করে আছে, নয়তো এতবছর পর মেসেজ গুলোর কারণ কি। না বেশি কিছু ভাবতে পারছে না রুদ্র ভেতরের রুদ্র তাতে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একদিকে এতকালের লুকানো ভালোবাসা, জন্মানো টান মায়া অফুরন্ত অনুভূতি আর অন্যদিকে জমে থাকা রাগ ক্ষোভ আর নিজের উপর তৈরী হওয়া ঘৃণা। গত কয়েকদিন ধরেই এদুটোর যুদ্ধ হয়ে চলেছে, কখনো এ জিতে যায় তো আরেকবার আরেক পক্ষ কিন্তু এভাবে কি শান্তি ফিরে আসে মনে? আসতে পারে কখনো।
ছুটকি এসে ডেকে যায় রুদ্র কে বাইরের ঘরে সবাই তৈরী হয়ে অপেক্ষা করছে ওর জন্য। ও ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে
-(এতক্ষণের চলা মনের যুদ্ধের বিধস্ত চেহারা আড়াল করে নেয় সবার কাছ থেকে) চলো সবাই আমি রেডি হয়ে গেছি।
-(অবিনাশ বাবু হাতের ইশারায় নিজের কাছে ডেকে নেয় রুদ্র কে) বাবু আরেকবার বলছি ভেবে দেখ এখনো সময় আছে, তোর মতামত সবার আগে।
-না বাবা, আমি তো সেদিনই বলেছি তেমন কিছুই নেই। তোমরা যেটা সিদ্ধান্ত নিবে তাতেই আমি রাজি।
-আমার আর তোর মায়ের কিন্তু একরকম বিয়েতে মত আছে, আমরা তাদের সাথে সেরকম কথা বলেছি আর এখন তুইও মত দিলি পরে আবার যদি মত বদলে নিস তবে কিন্তু তোর মা আর আমার সম্মান বলতে কিছুই থাকবে না তাদের কাছে।
-চিন্তা করো না তোমরা, তেমন কিছুই হবে না। তোমাদের উপর কিচ্ছু বলবো না।
-ওকে তাহলে চলো সবাই, না হলে আবার দেরি হবে।
ওদের গাড়িটা সেনবাড়ি মোড়ে ঢুকতেই রুদ্র আশ্চর্য হয় এদিকে কোথায় যাচ্ছে, গাড়িটা যখন আলিশা টাওয়ারের সামনে এসে দাঁড়ায় তখন আরও অবাক হয় সে, মনে মনেই বলতে থাকে এখানে তো তনু রা থাকে তবে কোন ইউনিটে সেটা জানা নেই ওর। ছুটকিও অবাক হয় ওরা এখানে এসেছে দেখে, দাদার মুখে দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে দাদা কি ভাবছে। কিন্তু দাদার মুখের অবস্থা বলে দিচ্ছে ওর দাদা ওর থেকেও বেশি অবাক হয়েছে। লিফটে উঠে ষষ্ঠ তালার বোতাম টিপে দেয় অবিনাশ বাবু, লিফট থামতেই ওরা বেড়িয়ে বা দিকে এগিয়ে যায় সামনের দরজার পাশেই বড়বড় করে লেখা বিজয় চৌধুরী। দুবার কলিং বেল টা বাজায়।
তনু মাত্রই রেডি হয়েছে ওর মা বলেছে ছেলে পক্ষ এক্ষুনি এসে পড়বে। ঘরে দিদি শাড়ি পড়েছে তবে তেমন কোন সাজ সাজে নি, তনু ভেবেছিল দিদির মত নেই তাই হয়তো কিন্তু সকাল থেকেই রাই এর হাসিখুশি মুখটা ওর চিন্তা চেতনার হিসেবনিকেশ সব পাল্টে দিচ্ছে।ঘটনাটা কি সেটাই বুঝতে পারছে না যে দিদি সেদিন বিয়ের কথা শুনে এমন কাণ্ড ঘটালো সেই দিদিই আজ গুনগুন গান গাইছে, আয়নার সামনে বসে সাজগোজ করছে। একবার ভাবে দিদিকে জিজ্ঞেস করবে কিন্তু দিদি যদি বকা দেয় তাই আর সেদিকে পা বাড়ায় না। হঠাৎ কলিং বেল টা বেজে উঠতেই দেবীকা দেবী তনু কে বলে কে এসেছে দেখতে৷
আরেক বার কলিং বেল বাজাতে যাবে তখনি দরজা টা খুলে যায়, দরজার পাশে তনু কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে হতবাক হয়ে যায় রুদ্র ও ভাবে ভুল ঠিকানায় চলে আসে নি তো ওরা।
-বাবা আমার মনে হয় আমরা ভুল ঠিকানায় চলে এসেছি।
-আরে না ঠিক জায়গায় এসেছি, দাঁড়া এরপরও জিজ্ঞেস করি(তনুকে দেখে একটু এগিয়ে যায়) কেমন আছো তুমি, তুমিই সেদিন আমাদের বাসায় গিয়েছিলে পার্টি থেকে, তা এটা বিজয় চৌধুরীর বাসা তাই না?
-(দরজা খুলেই রুদ্র দা, ছুটকি আন্টি আঙ্কেল কে দেখে তনু হতভম্ব হয়ে যায়, আজ হঠাৎ তারা ওদের বাসায় কেন। আসার কথা তো ছেলে পক্ষ, কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না, কি বলবে সেটাও বুঝতে পারছে না) হুম আমি ভালো আছি তোমরা সবাই কেমন আছো। বিজয় চৌধুরী আমার বাবা৷ আসো ভিতরে আসো।
রুদ্র ছুটকি তনু তিন মূর্তি কারও মাথায় কাজ করছে না, ওরা এটাও বুঝতে পারছে না ঘটছে টা কি। ওদের কে নিয়ে তনু বসার ঘরে চলে আসে, ততক্ষণে দেবীকা দেবীও ভেতরের ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে অবিনাশ বাবু আর অঞ্জলি দেবীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছে। পাশে বসা রুদ্রের তনুর মা কে কেমন চেনা চেনা লাগছে কোথায় যেন দেখেছে আগে কিন্তু মনে করতে পারছে না। এর মাঝেই ভেতর থেকে চা নাস্তা, জুস, বাহারি ফল আর মিষ্টি এক এক করে এসে চলেছে। ছুটকি তনু একে অন্যের মুখ দেখাদেখি করছে সামনে মা বাবা থাকায় কথাও বলতে পারছে না, মাঝে মাঝে রুদ্রের দিকে তাকাচ্ছে কিন্তু সেখানে আরও মেঘের কালো ছায়া, সে তো নিজেও বুঝতে পারছে না হচ্ছে টা কি৷ বিজয় চৌধুরী এসে ওদের সামনের সোফাতে বসে কোন রকম করে কথা বলা শুরু করে, এটা তনুর বাবা কিন্তু ওনাকে তো আগেও দেখে কিন্তু কার সাথে দেখেছে কোথায় দেখেছে কিচ্ছু মনে পড়ছে না, উফফ মাথাটা বড্ড ব্যাথা করছে তখন থেকে। হঠাৎ করেই মনে পড়লো সবাইকে দেখছে কিন্তু তনুর দিদি মানে ম্যাডাম কে দেখছে না বাসায় উনি কোথায় কোন কাজে গিয়েছে নাকি? বাবা মা মেয়ে দেখতে যাবে বলে বের হলো কিন্তু এখানে কেন
এলো সেটাই তো বুঝতে পারছে না।
দেবীকা দেবী তনু কে ডেকে রাই কে আসতে বলে, তনু মাথা নাড়িয়ে ঘরে দিকে যেতে যেতে ভাবে দিদি কে এখন কেন ডাকছে। একটু পরে তো আবার ছেলে পক্ষ চলে আসবে। যাই হোক তনু দৌড়ে গিয়ে মা যা যা বলতে বলে সেটা দিদি কে বলে চলে আসে। একটু পরেই ছোট ছোট পা ফেলে বসার ঘরে ভেতরে এসে মায়ের পাশে এসে দাড়ায় রাই। রুদ্র নিচের দিকে তাকিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে ফ্লোরে কিছু একটা আঁকার চেষ্টা করে চলেছে তখন থেকে তাই রাই কখন এসে দাড়ালো সেটা ও খেয়াল করে নি৷ ও পাশ থেকে দেবীকা দেবী বলে উঠে
-এইতো রাই এসে গেছে...
মূহুর্তের মাঝেই রাই নাম টা কানে বাজতেই তড়িৎ গতিতে উপরের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় রুদ্র হাত তিনিকের দূরত্বে দাড়িয়ে আছে সেই মানুষটা টা যাকে নিয়ে গত কয়েকদিন যাবত মনের ভেতরে কি যুদ্ধ করে চলেছে সেটা রুদ্র ছাড়া আর কেউ জানে না। নিজের চোখ কে বিশ্বাস যেন সে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না, সারা শরীরে লোম গুলো দাড়িয়ে গেছে তাৎক্ষণিকের শিহরণে।
সময় যেন থমকে গেছে আসে পাশের কোন কিছুই যেন আর নড়াচড়া করছে না সব কেমন স্থির হয়ে আছে যেমনি করে স্থির দৃষ্টিতে রুদ্র তাকিয়ে আছে রাইয়ের দিকে। এখনো নিজেকে ধাতস্থ করতে পারছে না রুদ্র সামনে দাড়ানো মানুষটাকে তো সে চিনে কিন্তু কতটা? এতোদিনে একবারও ভালো করে তাকিয়ে দেখাও হয় নি হয়তো, সত্যিই তো একবারের জন্যেও তো তেমন করে দেখাই হয়নি মনে সে খেয়াল কোন খেয়ালি আচরণে আসলো না কে জানে। দেখা হলে তো আগেই চিনে নিতে পারতো, সত্যিই কি পারতো রুদ্র? চেষ্টা করে তো দেখতে পারতো। এতোদিনে মনের ভেতরে আকা ছবিটার সাথে মিলিয়ে দেখতে। হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে রুদ্রের, হার্টবিট বেড়ে গেছে এতোটাই যে কাছাকাছি
কেউ দাঁড়ালে হৃদকম্পের আওয়াজ তার কানে পৌঁছে যাবে।
The following 15 users Like nextpage's post:15 users Like nextpage's post
• Ari rox, ashim, auditore035, Baban, bad_boy, Bansali, Boti babu, free123skk, Indrakumar, kapil1989, ppbhattadt, Roy234, Somnaath, Tiger, WrickSarkar2020
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
হালকা লাল কালারের একটা জামদানি শাড়ি পড়েছে রাই সাথে ম্যাচিং করা ব্লাউজ কানে পুতি আর স্টোনের কাজ করা ঝুমকা, গলাতেও ম্যাচিং করা পুতি আর স্টোনের হার। সেই ছোট থেকে ঘন লম্বা চুল ছিল রাইয়ের সেটা আছে এখনো কোমড় অব্দি ছাড়ায় তবে খোপা করে রাখায় তেমন বুঝা যায় না আজও খোপা করে আছে আর তাতে রুদ্রের অজানা সাদা রঙের কয়েকটা ফুল গুজে রাখা, ওর দুধে আলতা গালে তেমন কোন ভারী মেকাপের প্রলেপ নেই আর তাতেই ওর সৌন্দর্য আরও দ্বিগুন বেড়ে গেছে, শিশুদের মতই কাজলে আঁকা বড় বড় চোখ যেখানে কোন ভয় নেই শুধুই দুরন্তপনা আর গভীর ভালোবাসার আঙিনা তার উপরেই ঘন চিকন ভ্রু যোগলের মাঝে কালো টিপে অপূর্ব লাগছে রাই কে। গাঢ় খয়েরী রঙের লিপস্টিকের ছোঁয়ায় আকা কমলার কোয়ার মত ঠোঁটের নিচে সেই কালো তিলটা এখনো আছে৷ এমনিতেই ওর হাসিটা এত দুষ্টু আর মিষ্টি কিন্তু সেই তিলের উপস্থিতি যেন সেই হাসির মিষ্টতা বাড়িয়ে দেয় বারংবার। খোপা করা চুলের বাইরেও কপালের দুপাশেই ঢেউ খেলানো কয়েকটা কালো চুল যেন শিল্পী তুলিতে আঁকা মনোহর রূপে আলাদা মায়া যোগ করেছে। পাতলা গড়নের শরীর না ততটাও পাতলা না তবে মেদহীন ৫ ফুট ৪ ইঞ্চির শরীরে এটা পারফেক্ট বলা চলে, যেন কোন ভাষ্করের নিপুন হাতে খোদাই করা গ্রীক দেবীর মূর্তি যেখানে প্রতিটা অংশে যতটুকু বাঁকের প্রয়োজন ছিল ততটাই আছে আর তার সাথে সোনালী আভার মত ত্বকের ঠিকরে পড়া উজ্জ্বল জ্যোতির প্রভাব, শাড়ি পড়লে এই দেহবল্লরীর সৌন্দর্যের অপরূপ শোভা যেন আরও বেড়ে যায়। চাইলেও কেউ চোখ সরাতে পারবে না যেমন রুদ্র পারছে না হয়তো ও চোখ সরাবার কোন বৃথা চেষ্টাই করে নি। যত দেখছে ততই বেড়ে চলেছে দেখার ইচ্ছে, এ তৃষ্ণা কখনো ফুরাবার না। রাইয়ের চোখের দিকে চোখ পড়তেই বিদ্যুৎ খেলে যায় রুদ্রের শরীরে, বারবার চোখের পলক ফেলে রুদ্রকে কিছু যেন একটা বলতে চাইছে রাই, হয়তো জিজ্ঞেস করছে "কেমন লাগছে আমাকে বলো"। রাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে সোফা ছেড়ে দাড়িয়ে গেছে রুদ্রের মস্তিষ্কে হয়তো সেটার জানতেি পারে না,
গলা ধরে আসে, ভেতর থেকে একটা আকুতিভরা স্বরে রুদ্রের গলা থেকে বেড়িয়ে আসে সেই একটা নাম, পরম আকাঙ্খিত, এতদিনের সুপ্ত আশা ভালোবাসার মিশে গেছে যেখানে, যার দর্শনে সমস্ত গ্লানি, ক্লেদ মূহুর্তেই বিলীন হয়ে যায়
-রাইইইইই.....
নিজের ভেতরে সব রাগ ক্ষোভ ঘৃণা যেন রাইয়ের সামনে এক এক করে শৃঙ্খল ভেঙে পালিয়ে যাচ্ছে, ইচ্ছে হচ্ছে কত কি বলার কিন্তু বলার শক্তি পাচ্ছে না কন্ঠ নালীতে কেউ যেন চেপে ধরে আছে। এতক্ষণে এতদিনের আজ এখন অব্দি ঘটে চলা সবকিছুর উত্তর এক এক করে পেয়ে যাচ্ছে সে, এখন তো মনে হচ্ছে ও রাই কে না রাই ওকে ভালবাসতো ওর থেকে বেশি তাই তো এমন করেই খুঁজে নিয়েছে কিন্তু রুদ্র সে কি করেছে শুধু ভালোবেসে গেছে, কিন্তু ভালো বাসা কে নিজের করে নিতে কি করেছে সে?? উল্টো ভালোবাসার উপর তৈরী করা অভিমানের পাহাগে একের পর এক ভুল করে গেছে
মনের মাঝেই নিজে নিজে বলে উঠে
কিছু মানুষ আছে কখনো কষ্ট পেলে কাউকে বলতে পারে না, নির্বাক নয়নে চেয়ে থাকে মৃত খরঘোশের মত, ঠোটের কিনারায় শুষ্ক হাসি ছাড়া,
কিছুই অবশিষ্ট থাকে না তার...
আবার কিছু মানুষ আছে অপেক্ষা করতে ভালোবাসে, রাত যায় দিন যায় তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না, অপেক্ষার মত নিকৃষ্ট সুখে সে বুদ হয়ে থাকে আনমনে।
আর কিছু মানুষ আছে বৃক্ষের মত, কাঁদতে পারে না চোখের পাতা শুকিয়ে হয় মরুময়, অথচ তারা যেন পুর্নিমার চাঁদ আলো ছড়ায় হারাতে চায় মেঘের আড়ালে, হারাতে পারে না কাঁদতে পারে না...
অন্যদিকে কিছু মানুষের বুক নেই পুরোটাই আশার গুদামঘর, জীবনের শেষ নিশ্বাসেও বিশ্বাস করে, তার প্রিয়তমা তাকে ভালোবাসে, অথচ ভালোবাসা কি তা সে মানুষটার অজানা।
আর আমি হয়ত কিছু মানুষের মত ভালোবাসতে পারি না, কাছে টেনেও ঠিক অতটা কাছে টানতে পারি না, শুধু পারি বিষন্ন অভিমানে বুনো অন্ধকারে নাম না জানা পাখির মত হারিয়ে যেতে...
কিছু মানুষ সত্যিই ভালোবাসতে জানে না সত্যি আমিও পারিনি ভালোবাসতে।
The following 19 users Like nextpage's post:19 users Like nextpage's post
• Ari rox, auditore035, Baban, bad_boy, Boti babu, Bumba_1, dreampriya, free123skk, Indrakumar, Jibon Ahmed, kapil1989, kublai, ppbhattadt, pro10, sudipto-ray, Tiger, tuhin009, WrickSarkar2020, আমিও_মানুষ
Posts: 6,160
Threads: 42
Likes Received: 12,436 in 4,169 posts
Likes Given: 5,339
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
25-07-2022, 09:43 PM
(This post was last modified: 25-07-2022, 09:48 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ওরে বাপরে বাপ!! উফফফফ এক পর্বেই এত্ত কিছু বয়ে গেলো বেচারা রূদ্র (বেচারা নয় যদিও, পাক্কা ঘুঘু ) ওপর দিয়ে যে দুঃখে আর খুশিতে একসঙ্গে মিলে আধপাগলা না হয়ে যায়।
তারমানে শুধুই আমার গপ্পের বাবলি নয়, এই রূদ্র বাবুরও আরেকটা গোপন রূপ আছে। যদিও সেটা সেই শুরু থেকেই জেনে আসছি কিন্তু আজ এতটা স্পষ্ট ভাবে মানসিক দ্বন্দ্বটা তুলে ধরেছো যে সেটা সত্যিই দারুন লাগলো। যাকে সবকিছু দিয়ে ভালোবাসে, তাকেই নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চাওয়া, যাকে নিজের সবচেয়ে আপন মনে করে তাকেই কল্পনার রূপ দিয়ে দার করিয়ে তার সামনে অন্য নারীকে চুম্বন করা। রাইকে দুঃখ দিয়ে সেই নিষ্ঠুর রূদ্রর সুখ ব্যাপারটা কিন্তু সত্যিই দারুন লাগলো। অনেকেই প্রেমে হেরে যাওয়া পুরুষের নিঃসঙ্গ জীবন ও মানসিকতা তুলে ধরে কিন্তু এইভাবে খুব কম মানুষই অন্য একটা রূপ তুলে ধরতে পারে।তুমি সেটা পেরেছো।
আর শেষের ওই মেয়ে দেখতে গিয়ে চরম ধাক্কা। এ ছেলে এবার আধপাগলা হবেই।
Posts: 6,160
Threads: 42
Likes Received: 12,436 in 4,169 posts
Likes Given: 5,339
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
25-07-2022, 09:47 PM
(This post was last modified: 25-07-2022, 09:50 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(25-07-2022, 09:21 PM)nextpage Wrote: আবার কিছু মানুষ আছে অপেক্ষা করতে ভালোবাসে, রাত যায় দিন যায় তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না, অপেক্ষার মত নিকৃষ্ট সুখে সে বুদ হয়ে থাকে আনমনে।
আর কিছু মানুষ আছে বৃক্ষের মত, কাঁদতে পারে না চোখের পাতা শুকিয়ে হয় মরুময়, অথচ তারা যেন পুর্নিমার চাঁদ আলো ছড়ায় হারাতে চায় মেঘের আড়ালে, হারাতে পারে না কাঁদতে পারে না...
অন্যদিকে কিছু মানুষের বুক নেই পুরোটাই আশার গুদামঘর, জীবনের শেষ নিশ্বাসেও বিশ্বাস করে, তার প্রিয়তমা তাকে ভালোবাসে, অথচ ভালোবাসা কি তা সে মানুষটার অজানা।
আর আমি হয়ত কিছু মানুষের মত ভালোবাসতে পারি না, কাছে টেনেও ঠিক অতটা কাছে টানতে পারি না, শুধু পারি বিষন্ন অভিমানে বুনো অন্ধকারে নাম না জানা পাখির মত হারিয়ে যেতে...
কিছু মানুষ সত্যিই ভালোবাসতে জানে না সত্যি আমিও পারিনি ভালোবাসতে।
হারিয়ে যাওয়া মুক্ত ঝিনুক কয়েক বছর পরে
খুঁজে পেলে মনটা যেন কানায় কানায় ভরে
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
25-07-2022, 10:10 PM
(This post was last modified: 25-07-2022, 10:11 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
এযাবৎকাল এই উপন্যাসের যে কটা আপডেট দিয়েছো তার মধ্যে এটা সেরার সেরা আমাদের রুদ্র বাবুর মধ্যে Dr jackal & Mr Hyde এর একটা সত্তা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করা গিয়েছে যেটা এই পর্বে রুপালির সঙ্গে ওষ্ঠ চুম্বনে আরও দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হলো। কিন্তু সিমটা যে ছুঁড়ে ফেলে দিলো, এবার কি হবে তাই ভাবছি। আর শেষে কোনে দেখতে গিয়ে রুদ্রর মনের অভিব্যক্তি .. জাস্ট অসাধারণ
থাক আর বেশি প্রশংসা করবো না, তাহলে ছেলের আত্ম অহংকার এসে যাবে।
Posts: 294
Threads: 0
Likes Received: 216 in 188 posts
Likes Given: 401
Joined: May 2022
Reputation:
11
আহা! কি আপডেট দাদা, সত্যিই অসাধারণ
Posts: 1
Threads: 0
Likes Received: 1 in 1 posts
Likes Given: 7
Joined: Jul 2022
Reputation:
0
Posts: 1,474
Threads: 7
Likes Received: 2,548 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
522
(25-07-2022, 09:43 PM)Baban Wrote: ওরে বাপরে বাপ!! উফফফফ এক পর্বেই এত্ত কিছু বয়ে গেলো বেচারা রূদ্র (বেচারা নয় যদিও, পাক্কা ঘুঘু ) ওপর দিয়ে যে দুঃখে আর খুশিতে একসঙ্গে মিলে আধপাগলা না হয়ে যায়।
তারমানে শুধুই আমার গপ্পের বাবলি নয়, এই রূদ্র বাবুরও আরেকটা গোপন রূপ আছে। যদিও সেটা সেই শুরু থেকেই জেনে আসছি কিন্তু আজ এতটা স্পষ্ট ভাবে মানসিক দ্বন্দ্বটা তুলে ধরেছো যে সেটা সত্যিই দারুন লাগলো। যাকে সবকিছু দিয়ে ভালোবাসে, তাকেই নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চাওয়া, যাকে নিজের সবচেয়ে আপন মনে করে তাকেই কল্পনার রূপ দিয়ে দার করিয়ে তার সামনে অন্য নারীকে চুম্বন করা। রাইকে দুঃখ দিয়ে সেই নিষ্ঠুর রূদ্রর সুখ ব্যাপারটা কিন্তু সত্যিই দারুন লাগলো। অনেকেই প্রেমে হেরে যাওয়া পুরুষের নিঃসঙ্গ জীবন ও মানসিকতা তুলে ধরে কিন্তু এইভাবে খুব কম মানুষই অন্য একটা রূপ তুলে ধরতে পারে।তুমি সেটা পেরেছো।
আর শেষের ওই মেয়ে দেখতে গিয়ে চরম ধাক্কা। এ ছেলে এবার আধপাগলা হবেই।
(25-07-2022, 09:47 PM)Baban Wrote:
হারিয়ে যাওয়া মুক্ত ঝিনুক কয়েক বছর পরে
খুঁজে পেলে মনটা যেন কানায় কানায় ভরে
আমার কাছে মনে হয় আমরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন সত্তা নিয়েই সমাজে বাস করি, স্থান কাল পাত্র এসব দেখে একেক সত্তা তার মত করে চালনা করে। রুদ্রের ক্ষেত্রেও তাই, আর সেটা সে নিজেই জানে। এবার সেটা কন্ট্রোল করবে কি করে কে জানে।
রাই যদি কোন পথ্য দেয় এই রোগের...
মানসিক দ্বন্দ্ব টা কোন পর্যায়ে যায় কে জানে।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
•
|