Thread Rating:
  • 83 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
-মন্দের ভালো (সমাপ্ত)
(04-07-2022, 12:52 PM)ddey333 Wrote: সত্যি কথা !! এই ব্যাপারটার খেয়াল রাখতে হবে আগে থেকে ... Tongue

Big Grin  Big Grin
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
আপনার লেখার মধ্যে মায়া আছে। গল্পে চরিত্রগুলোর মাঝে সম্পর্কগুলোকে খুব সুন্দরভাবে দেখাচ্ছেন। এবার দুই গোয়েন্দার অভিযানের পালা। আছি চমকের অপেক্ষায়। 

লাইক ও রেপু রইল।
[+] 2 users Like sudipto-ray's post
Like Reply
(04-07-2022, 09:14 PM)sudipto-ray Wrote: আপনার লেখার মধ্যে মায়া আছে। গল্পে চরিত্রগুলোর মাঝে সম্পর্কগুলোকে খুব সুন্দরভাবে দেখাচ্ছেন। এবার দুই গোয়েন্দার অভিযানের পালা। আছি চমকের অপেক্ষায়। 

লাইক ও রেপু রইল।

অনেক অনেক ভালোবাসা....
রসায়নে মাঝে মাঝে বিক্রিয়া ঘটানোর জন্য প্রভাবক বা উত্তেজকের দরকার হয়।
এই গল্পে দুই গোয়েন্দার প্রভাব অনেকটা রাই রুদ্রের জন্য প্রভাবকের মতই কাজ করবে আশা করি।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
নতুন পর্ব লেখা শুরু হয়ে গেছে।
ছোট্ট দুই গোয়েন্দার অভিযান কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটাই দেখার বিষয়।

আশা করি ঈদের দিনই নতুন পর্ব উপহার হিসেবে দিতে পারবো।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 4 users Like nextpage's post
Like Reply
সব মিলিয়ে ভালোই, কিন্তু আমি অঞ্জলির প্রেমে পড়েছি
[+] 1 user Likes Ilovematurewomen's post
Like Reply
(08-07-2022, 07:06 AM)girlslover Wrote: সব মিলিয়ে ভালোই,  কিন্তু আমি অঞ্জলির প্রমে পড়েছি

এত গুলো মেয়ে চরিত্রের মাঝে আপনি অঞ্জলি দেবীর প্রেমে পড়লেন??
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
(08-07-2022, 12:41 PM)nextpage Wrote: এত গুলো মেয়ে চরিত্রের মাঝে আপনি অঞ্জলি দেবীর প্রেমে পড়লেন??

নির্জন প্রান্তর থেকে সরে এসে আগে এখানে লিখুন ! ওখানে মায়া আছে এখানে রাই আছে ! রাইকে আমার খুব ভালো লাগে ! মায়াময় পৃথিবী আমি চাইনা ! কঠোর বাস্তব দরকার ! 
[+] 1 user Likes আমিও_মানুষ's post
Like Reply
(09-07-2022, 08:51 PM)আমিও_মানুষ Wrote: নির্জন প্রান্তর থেকে সরে এসে আগে এখানে লিখুন ! ওখানে মায়া আছে এখানে রাই আছে ! রাইকে আমার খুব ভালো লাগে ! মায়াময় পৃথিবী আমি চাইনা ! কঠোর বাস্তব দরকার ! 

আহা, তোমাকে  , মানে আপনাকে , যে আমার বাল লাগে ... কি করবো 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(09-07-2022, 08:51 PM)আমিও_মানুষ Wrote: নির্জন প্রান্তর থেকে সরে এসে আগে এখানে লিখুন ! ওখানে মায়া আছে এখানে রাই আছে ! রাইকে আমার খুব ভালো লাগে ! মায়াময় পৃথিবী আমি চাইনা ! কঠোর বাস্তব দরকার ! 

(09-07-2022, 09:01 PM)ddey333 Wrote: আহা, তোমাকে  , মানে আপনাকে , যে আমার বাল লাগে ... কি করবো 



Heart Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(08-07-2022, 12:41 PM)nextpage Wrote: এত গুলো মেয়ে চরিত্রের মাঝে আপনি অঞ্জলি দেবীর প্রেমে পড়লেন??

হুম
Like Reply
-না যোগাযোগ নেই আর ঐ শয়তানটার সাথে কথা বলতে যাবে কে? হারামি একটা(শেষের কথাটা মনে মনেই বলে)
-শয়তান? কেন?
-শয়তান কে শয়তান বলবো না তো কি বলবো। অনেক জ্বালিয়েছে এখনো জ্বালিয়ে চলেছে(এই কথাটা একটু নিচু স্বরে বলে) ওটা একটা উজবুক, পাজি, বদমাশ, কুত্তা, হাদারাম....(হঠাৎ করেই কেমন খেঁকিয়ে উঠে রাই)





বাপরে বাপ এত রাগ কার উপরে রাইয়ের?? কে সেই পুরনো ঘা তে খুঁচা দিচ্ছে? জানতে হলে অপেক্ষা নতুন পর্বের। আগামীকাল ঈদ উপলক্ষে আসছে নতুন পর্ব - "পাশা বদল"
[+] 5 users Like nextpage's post
Like Reply
রাগ করেছে বন্ধু আমার রাগ করিতে নাই
বন্ধু ওরে বন্ধু আজও তোরেই আমি চাই
তোকেই যেন এদিক ওদিক খুঁজে ফিরে যাই
পাইনা তোরে বন্ধু আমার মিষ্টি সোনা রাই
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
"পাশা বদল" এর অপেক্ষায়
[+] 1 user Likes Jibon Ahmed's post
Like Reply
(10-07-2022, 01:32 PM)Baban Wrote: রাগ করেছে বন্ধু আমার রাগ করিতে নাই
বন্ধু ওরে বন্ধু আজও তোরেই আমি চাই
তোকেই যেন এদিক ওদিক খুঁজে ফিরে যাই
পাইনা তোরে বন্ধু আমার মিষ্টি সোনা রাই

দোলন তথার পর এবার দাদা দেখি রাইয়ের প্রেমে পড়েছে  Heart Heart
(10-07-2022, 01:49 PM)Jibon Ahmed Wrote: "পাশা বদল" এর অপেক্ষায়

রাতেই আসছে...
[+] 1 user Likes nextpage's post
Like Reply
পাশা বদল






রুদ্রের মা বাবা কে যত সহজে মনের কথা গুলো বলতে পেরেছিলো নিজের বাসায় ততটা সহজে সে কাজ হচ্ছে না রাইয়ের জন্য। মা কে কোন ভাবে ম্যানেজ করা যাবে কিন্তু বাবা?? বিজয় চৌধুরী পরিবারের হর্তাকর্তা, তার ইচ্ছে মতই সবাইকে চলতে হয়, উনার কথাই বাড়িতে শেষ কথা৷ ভীষণ রাগি মানুষ বাকি সবাই বিজয় চৌধুরী কে বাঘের মত ভয় পায়৷ সেই ভয়ের জন্যই সেই ছোটবেলায় শহরে পাড়ি জমাতে হয়েছিল। রাইয়ের এই সিদ্ধান্ত ওর বাবা সহজে মেনে নিবে না সেটা রাই ভাল করেই বুঝতে পারে সেটার পেছনেও তো একটা কারণ লুকিয়ে আছে। কিন্তু আজ হোক কিংবা কাল নিজের ইচ্ছের কথাটা তো বাবার কাছে বলতেই হবে সেই কারণেই গত কয়েকদিন ধরে ভেবে চলেছে কিভাবে কথা গুলো বাবার সামনে বলবে, বাবার চোখের দিকে তাকাতেই তো ভয় ধরে যায়। কিন্তু অন্যদিকে রুদ্রের বাবা মা কতো ফ্রেন্ডলি সবার সাথে, ছেলে মেয়ের সাথে বন্ধুর সাথে মেশে এতদিন পরে এক দেখাতেই কত সুন্দর রাইকে আপন করে নিয়েছিল রুদ্রের বাবা।  তবে আশার কথাও আছে বিজয় চৌধুরী সেই আগের মত হম্বিতম্বি টা আর করে না, রাগটাও কমতির পথে। সুযোগ বুঝে নিজের কথাটা বলতে হবে। অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হবার পর বিছানায় শুয়ে শুয়ে এই কথা গুলোই ভাবছিলো রাই। রুদ্রের বাসায় কথা বলেছিল দশ বারো দিনের মত হতে চলেছে এখনো নিজের বাসায বলা হলো না। ঘরে তনু কখন এসেছে সেটা রাই খেয়াল করে নি, দিদিকে এমন আনমনে দেখে দিদির পাশে শুয়ে জড়িয়ে ধরে। তনু জড়িয়ে ধরতেই রাইয়ের ঘোর ভাবটা কেটে যায়, এক হাতে বোন কে জড়িয়ে ধরে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে।


-(একটা পা রাইয়ে উপরে দিয়ে আরও কাছে সরে যায়) কিরে দিদি এখন শুয়ে আছিস তাও আবার মনমড়া হয়ে। কিছু হয়েছে কি? মন খারাপ নাকি শরীর?

-(বা হাতে তনুর থুতনি টা নাড়িয়ে দিয়ে কপালের বা দিকে একটা ছোট্ট চুমো একে দেয়) নারে কিচ্ছু হয় নি আমার এমনি শুয়ে আছি।

-আমাকে বলবি না নাকি?? কিছু একটা নিয়ে ভাবছিলি মনে হলো। তুই মনমড়া থাকলে আমার ভাল লাগে না তো।

-আরে কই মনমড়া হয়ে আছি, ওটা তুই ভাবছিস আর কি। আচ্ছা আমি যদি চলে যাই তোর অনেক খারাপ লাগবে তাই নারে?

-(বুকের উপর ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে মাথা টা উচু করে) কেন তুই কোথায় যাবি? কি হয়েছে?কোন কারণে আমার উপর রাগ করেছিস?

-ধুরু পাগলি, রাগ করবো কেন তোর উপর। তুই আমার সোনা বোন তোর উপর রাগ করে থাকতে পারবো আমি?

-তাহলে চলে যাবার কথা বললি কেন?

-বারে, আমার বিয়ে হয়ে গেলে তখন চলে যেতে হবে না। তখন তো আমাকে শশুরবাড়ি চলে যেতে হবে।

-তুই বিয়ে করবি? কবে? তুই বিয়ে করে চলে গেলে আমার খারাপ লাগবে কেন, আমি আরও খুশি হবো। এই ঘরটা আমার হয়ে যাবে, তোর সবকিছু আমার হবে, কত কসমেটিক জিনিস আর ওর্নামেন্ট পাবো। তোর বিয়েতে কত আনন্দ করবো কত মজা হবে। নতুন নতুন ড্রেস কিনবো, পার্লারে যাবো, বিয়েতে নাচবো, ছবি তুলবো আর কত কি করবো।

-সত্যিই তুই একটুও কষ্ট পাবি না এই যে আমি তোর থেকে দূরে চলে যাবো।

-একটুও না। আমি তো খুব মজা করবো, তুই চলে গেলে আমাকে আর এত শাসনে থাকতে হবে না, তুই তো শুধু শুধু বকাবকি করিস। সেই সাথে এই আলমারি, ওয়ারড্রব, ড্রেসিং টেবিল সব আমার হয়ে যাবে। এত বড় বিছানা আমার ইচ্ছে মত হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাবো, তোর সাজগোজের জিনিস গুলোও তো আমার হয়ে যাবে। তাহলে তুই বল আমি কষ্ট পাবো কেন।

-তাই, ঠিকি বলেছিস আমি তো তোর কেউ না, যা তোর সাথে আর কথাই বলবো না। ছাড় আমাকে আর জড়িয়ে ধরতে হবে না (অন্যদিকে পাশ ফিরে রাই)

-জানিস দিদি রাগ করলে তোকে না আরও বেশি ভালো লাগে। তোর গাল দুটো লাল হয়ে যায় (দিদির গাল দুটো টানতে থাকে)

-এসব ঝাড়ি মারা কথা কোথা থেকে শিখলি? বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে?

-(রাইয়ের হাতে হালকা চিমটি কেটে) আমার বয়ফ্রেন্ড নেই বুঝলি। এসব শিখাতে হয় না এমনি জানা যায়। তোর বয়ফ্রেন্ড কি তোকে এসব বলে পটানোর চেষ্টা করে বুঝি।

-বললেও সেটা তোকে বলতে যাবো কেন এমনিতেই অনেক কিছু শিখে ফেলেছিস দেখছি। মা কে বলতে হবে আমার আগে যেন তোকেই বিয়ে দিয়ে দেয়।

-তোর ঐ সব মাকেই বলতে হবে কেন, আমাদের মাঝেও তো কিছু সিক্রেট থাকতে পারে তাই না। সব কথাতে বড়দের টানতে নেই বুঝলি দিদি।

-হুম সেটা ঠিক। দুই বোনের মাঝে অনেক কিছুই সিক্রেট থাকতেই পারে, ওটা বাকিরা কেউ জানবে না।

-(আসল কথা বলার সময় এসে গেছে বুঝতে পারে তনু) দিদি একটা কথা বলবো রাগ করবি নাতো?

-রাগ করার মতো হলে তো করবোই। আগে বল শুনি তারপর 
ভেবে দেখবো।

-(একটু ভয়ে ভয়ে) তোর একটা ডায়েরি আছে ঐ ড্রয়ারে, সেটা আমি লুকিয়ে দেখেছিলাম।

-আমি জানি, ঐ ছবি গুলোও দেখেছিস। ছবি গুলো উল্টানো দেখেই বুঝেছি কারো হাত পড়েছে সেখানে আর সেটা যে তুই সেটাও ভালো করে জানি।

-তার মানে তুই রাগ করিস নি। আচ্ছা ঐ ছবি গুলো কার রে দিদি? অনেক পুরনো ছবি।

-আমার স্কুলের বন্ধুদের। ছোট থেকে একসাথে পড়েছি আমরা। কেজি থেকে শুরু করে সেই হাইস্কুল অব্দি।

-(বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে ডায়েরি টা বের করে ছবি গুলো হাতে নিয়ে রাই এর কাছে যায়) তোর বন্ধুদের কথা তো কখনো বলিস না আমাকে, কারও নামটা পর্যন্ত জানি না। তাও আবার ছবি গুলিও লুকিয়ে রাখিস কেন রে?

-কারণ আছে তুই বুঝবি না।(হাত থেকে ছবি গুলো নিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে) অনেক মিস করি সেই সময়টাকে, কত হাসি খুশি আনন্দে কাটতো সেই সময় গুলো। যদি আবার ফিরে পেতাম সবাই কে। সারাদিন কত হৈ-হুল্লোড় করতাম, সবকিছুই আমাদের একসাথে করতেই হবে এমন একটা চিন্তা কাজ করতো। একই টিউশনে পড়তে যেতাম, একই রঙের জামা বানাতাম, টিফিনে এক সাথে খাওয়া সব কিছু। কত তাড়াতাড়ি দিনগুলো চলে গেল মনে হয়।

-আচ্ছা দিদি এই ছবিতে মাঝখানে তুই সেটা বুঝতে পারছি তোর বন্ধু গুলো কে কে?

-বা পাশে যে আছে ওর নাম জয় আর ডান দিকে বাবু ওটা ওর ডাকনাম ভালো নাম রুদ্র।

-ওদের সাথে যোগাযোগ নেই? কাউকে তো আজ পর্যন্ত দেখলাম না।

-আছে..... শুধু জয়ের সাথে, অনেক বছর আগে এক জায়গায় দেখা হয়েছিল তখন থেকে মাঝে মাঝে কথা হয়। ও একটা কোম্পানিতে জব করে অন্য শহরে থাকে।

-আর রুদ্র? তার সাথে যোগাযোগ নেই?

-না যোগাযোগ নেই আর ঐ শয়তানটার সাথে কথা বলতে যাবে কে? হারামি একটা(শেষের কথাটা মনে মনেই বলে)

-শয়তান? কেন?

-শয়তান কে শয়তান বলবো না তো কি বলবো। অনেক জ্বালিয়েছে এখনো জ্বালিয়ে চলেছে(এই কথাটা একটু নিচু স্বরে বলে) ওটা একটা উজবুক, পাজি, বদমাশ, কুত্তা, হাদারাম....(হঠাৎ করেই কেমন খেঁকিয়ে উঠে রাই)

-ছি দিদি তুই এত পঁচা কথা বলিস। ছবিতে কত কিউট লাগছে রুদ্র দা কে আর তুই কি কি না বলছিস। যে কেউ দেখলেই প্রেমে পড়ে যাবে।

-আমার তো প্রেম উতলে পড়ছে না তাই আমার কাছে ওকে ওমনি মনে হয়। ওটা একটা কুত্তা কুত্তা কুত্তা। সামনে পেলে ইচ্ছে হয় মন ভরে যদি কিল ঘুসি মারতে পারতাম তবে মনটা শান্তি পেত।

-দিদি খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম, রুদ্র দা কে একদম বাজে কথা বলবি না।(মুখ ফসকে কথা গুলো বলে ফেলে)

-আমার যা খুশি যা ইচ্ছে তাই বলবো তোর কি।(হালকা ভ্রু কুঁচকে তনুর দিকে তাকিয়ে) কিরে হঠাৎ করে তোর ওকে নিয়ে এত আগ্রহ কেন সেটা বলতো আগে। ছবি দেখেই প্রেমে পড়ে গিয়ে একেবারে ডিফেন্ড করা শুরু করে দিয়েছিস,ঘটনা কি?

-(ধরা পড়ে যাবার ভয়ে ভ্রু কুচকে আসে) কেন আবার এমনিই হঠাৎ মনে হলো তাই, যাই মা তখন কেন জানি ডেকে ছিল দেখে আসি। তুই শুয়ে থাক।(তড়ি ঘরি করে গুটি গুটি পায়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়)

তনুর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রাই রুদ্রের ছোটবেলার একটা ছবি নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে। যেভাবেই হোক বাবাকে ওর রাজি করাতেই হবে আর যদি রাজি না হয় তবে? তবে অন্য পথে যেতে হবে তবুও আর ওকে হারানো যাবে না, একবার হারিয়ে আবার পেয়েছে এবার আর ছাড়বে না।




অফিস থেকে এসে সোজা বাথরুমে ছুটেছিল রুদ্র, আসার পথেই চাপ টা বুঝতে পারছিলো কোনমতে আটকে বাড়ি পর্যন্ত এসেছে। কোনমতে প্যান্টের জিপার খুলে নিজের পুরুষাঙ্গ টাকে অবমুক্ত করতেই এক ঘোড়া পাম্পের মত প্রেসার রিলিজ হতে থাকে। তখন যে শান্তি টা পাওয়া যায় সেটা সেসব মানুষরাই জানে যারা কখনো না কখনো বা এমন সিচুয়েশনে পড়েছে। জামাকাপড় চেঞ্জ করে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে পড়ে এক হাতে মোবাইলটা সামনে নিয়ে আসে। একটা মেসেজ দেখে অবাক হয় সে। মেসেজ টা খুলতেই দেখে একটা গানের কয়েকটা কলি

হাজার বছর এমনি করে
আকাশের চাঁদটা আলো দেবে,
আমার পাশে ক্লান্ত ছায়া
আজীবন রয়ে যাবে,
তবু এই অসহায় আমি
ভালবাসবো তোমাকে,
শুধু যে তোমাকে
ভালবাসবো তোমাকে।। 


গত কিছুদিন ধরেই এমন মেসেজ আসছে এই নাম্বার টা থেকে। নাম্বার টাতে সাথে সাথে ফোন করে কিন্তু আগের বারের মত এবারও বন্ধ দেখাছে, কে এমন মেসেজ পাঠাচ্ছে বুঝতে পারছে না। প্রথমে ভেবেছিল রিতা কিংবা তনয়ার মাঝে কেউ হতে পারে, ওরা দুজনেই অনেকটাই দুর্বল হয়ে আছে সেটা রুদ্র ওদের হাভভাব দেখেই বুঝতে পারে। রিতার টা তো সেই কলেজ থেকেই জানা এত বছর পর আবার সেই প্রেম মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো কিনা কে জানে। আর তনয়ার ব্যাপার টা একটু কমপ্লিকেটেড, ও মর্ডান মেয়ে এসব রিলেশনশিপে জড়িয়ে একমুখী জীবনে আগ্রহী হবার মত মেন্টালিটি নেই তবে মাঝে মাঝে ও যেভাবে রুদ্রের এটেনশান নিজের দিকে নেবার জন্য হামলে পড়ে সেটা একটু ভয়ের কারণ হতেই পারে। তবে রুদ্র তো কোন রিলেশনে জড়ানোর মত মনোভাব ওদের কে দেখায় নি৷ এই পর্যন্ত যা হয়েছে সবটাই ক্যাজুয়াল দুই দিক থেকেই, সেখানে কোন জোর জবরদস্তি ছিলো না আবার না ছিলো কোন কমিটমেন্ট তবুও একবার ব্যাপার টা নাড়িয়ে চাড়িয়ে দেখতেই হচ্ছে রুদ্র কে। তাই কৌশলে ওদের এই ম্যাসেজ এর ব্যাপারে জানার চেষ্টা করেছিল কিন্তু রেজাল্ট নেগেটিভ। ওরা যে নয় ওটা কর্নফাম তবে কি রুপালির কাজ এটা, ওকে দেখে তো মনে হয় না ও এমনটা করবে। কিছু বলার থাকলে তো সরাসরি বলতেই পারে। আর রুপালি কাছে এমন কিছু এক্সপেকটেশান রুদ্র করে না আর রুপালিও যাতে না করে সেটাও অনেক আগেই ক্লিয়ার করে দিয়েছিল। তাও তো মেয়ে মানুষের মন কখন বদলে যায় বলা তো যায় না। একবার ওর সাথে কথা বলতে হবে সেটা ভাবতে ভাবতে কপালে হাত দিয়ে হালকা মেসেজ করতে থাকে৷ মাথা একটু চিনচিন করছে, চা খেলে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।

-কিরে দাদা মাথা ব্যাথা করছে? (চায়ের কাপ হাতে ঘরে ঢুকে 
ছুটকি)

-না ঐ আরকি, রোদের মাঝে এদিক ওদিক যেতে হয় তাই একটু টায়ার্ড লাগছিলো আর কি। চা খেলেই ওটা কেটে যাবে।

-চা খেলেই যদি সব ঠিক হয়ে যেত তবে তো ডাক্তার রা এত এত ঔষধ না লেখে তিন বেলা চা খেতে বলতে। তোর আর চা খেতে হবে না, তুই বস আমি একটু গ্লুকোজ দিয়ে শরবত করে নিয়ে আসি।

-আরে শরবত লাগবে না, চা হলেই হবে তো। তোকে কষ্ট করতে হবে না।

-কষ্ট যেহেতু আমার হবে তাহলে তুই এত চেচামেচি করছিস কেন, শরবত আনছি সেটাই খাবি। (কিছুক্ষণ পর একটা জগ আর গ্লাস হাতে ঘরে আসে ছুটকি, জগ থেকে গ্লাসে শরবত ঢেলে দাদার দিকে এগিয়ে দেয়) নে দাদা খা, এটা শেষ করে আরেক গ্লাস খাবি কোন কথা শুনবো না।

-বুঝেছি আর বলতে হবে না, দে আমি চুপচাপ খেয়ে নিচ্ছি(এক চুমুকে সবটা শেষ করে গ্লাস টা আবার সামনে এগিয়ে দেয়) তুই আমার বোন না হয়ে মা হলে ভালো হতো। বাপরে বাপ মাও আমাকে এত শাসন করে নি তুই যতটা করিস।

-(খিল খিল করে হাসতে থাকে ছুটকি) তাই নাকি, তাহলে আমাকে ছোট মা বলে ডাকবি।

-কিরে তোর দাদাকে শরবত টা দিয়েছিস, মিষ্টি ঠিক আছে তো (জোরে জোরে কথা গুলো বলতে বলতে অঞ্জলি দেবী ওদের দিকে আসতে থাকে)

-(রুদ্র অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে) ওকে জিজ্ঞেস করছো কেন ওই তো শরবত বানিয়ে এনেছে মিষ্টি তো ও জানবেই।

-তোর বোন শরবত বানালে তো আমার ছুটিই হয়ে যেত, বসে বসে খেতে পারতাম। সেই কপাল তো নেই ওঘরে গিয়ে হম্বিতম্বি করে শরবত টা আমাকে দিয়ে বানিয়ে নিয়ে আসলো, দে খাওয়া শেষ হলে জগ আর গ্লাস টা দে আমাকে (জগ আর গ্লাস নিয়ে উনি বের হয়ে যায়)

-(পাশে বসে মিটিমিটি হেসে চলেছে ছুটকি) ওইটুকু পথ তো আমিই এনেছি সেটা তো সত্যি।

-হুম খুব সত্যি।

-দে দাদা আমি তোর চুলে বিলি কেটে দেই দেখবি তোর ভালো লাগবে।(আসন করে বসে রুদ্রের মাথাটা নিজের কোলে রেখে লম্বা আঙুল গুলো দিয়ে চুলে বিলি কাটতে থাকে, মাঝে মাঝে কপালে ম্যাসেজ করে দিচ্ছে। শান্তির আবেশে চোখ দুটো বুজে নেয় রুদ্র)

-খুব ভালো লাগছেরে। তা আজ খাতিরযত্ন টা বেশি করছিস তা কিছু বলার আছে না কিছু লাগবে নাকি?

-(কতকগুলো চুল মুঠি করে জোরে টান দেয়, অল্প যন্ত্রণায় রুদ্রের মুখে অভিব্যক্তি বদলে যায় আর মুখ থেকে অস্পষ্ট স্বরে উফফ শব্দটা বের হয়ে আসে) তোর কি এমনই মনে হয় যে আমি সবসময় তোর কাছে কিছু চাওয়ার জন্য আসি। যা তোর কাছে আসবো না আর চলে যাচ্ছি।

-(হাত টেনে ধরে ছুটকিকে আবার বসিয়ে দেয়) আজকাল খুব গাল ফুলানো শিখেছিস। আমার বোন গাল ফুলিয়ে থাকলে কি আমার ভালো লাগে নাকি। আমি আর এমন করে বলবো না এই কান ধরলাম।

-কান ধরতে হবে না, আচ্ছা দাদা একটা কথা জিজ্ঞেস করি।

-কর না(চোখ বন্ধ করেই উত্তর দেয়)

-তোর স্কুল লাইফের কথা মনে পড়ে না? তোর বন্ধু দের সাথে কি যোগাযোগ হয় না। এত বছরে কাউকেই তো দেখলাম না আমি। আগের জায়গাটা তোকে টানে না।

-(কতটা সময় নিশ্চুপ থাকার পর একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে) নারে। কলেজে থাকতে জয়ের সাথে শেষ যোগাযোগ করেছিলাম এরপর আর হয় নি৷ আমার কেন জানি আগের কোন কিছুর প্রতি আর টান টা নেই। স্কুলে থাকতে আমি যেমনটা ছিলাম কলেজে উঠার পর থেকে আমি সেখান থেকে অনেকটা বদলে গেছি। আগের কিছু আমাকে আর তেমন টানে না। নিজেকে একা করে ফেলেছি ধীরে ধীরে।

-আরেকজন যে ছিল কি নাম যেন রাই দি তার সাথেও যোগাযোগ নেই?

-ওর সাথে স্কুল থেকেই যোগাযোগ বন্ধ, কোথায় আছে জানি না। শুনেছিলাম শহরে চলে এসেছে এত মানুষের ভীড়ে খুজে পাবো কোথায়? আমার উপর রাগ অভিমান আর ঘৃণা নিয়ে দূরে চলে গেছে। জানিস তোর দাদা টা না বড্ড বাজে, খারাপ মানুষ। তাই তো একটাবারো আমার কোন কথা না শুনেই চলে গেলো। অনেকেই মনে মনে আমাকে খুব খারাপ ছেলে ভাবে কিন্তু বাইরে সেটা প্রকাশ করে না। হয়তো আমি সত্যিই খারাপ ছেলে এইজন্যেই কাউকে নিজের করে ধরে রাখতে পারি না। দিন দিন যেন আমি আরও নিচের দিকে নামছি। সবাই দূরে সরে গেছে আর না হয় আমি সরিয়ে দিয়েছি। নিজেকে আজকাল নিজের কাছেই ছোট ছোট লাগে, জানিস ছোট থাকতে মা বাবা শাসন করতো তখন খুব মন খারাপ হতো, এখন তো শাসন করে না কিন্তু খুব মন চায় কেউ একটু শাসন করুক তবে হয়তো নিজেকে শুধরে নিতে পারতাম৷ জানিস ছুটকি এই যে সারাদিন সবার সাথে এতো হাসিখুশি হৈ-হুল্লোড়েে থাকি এর পরও নিজেকে খুব একা লাগে মাঝে মাঝে। নিজের মাঝে নিজেকে খুঁজতে থাকি, আমি কি ছিলাম আর এখন কোথায় এসে দাড়িয়েছি। অনেক মানুষের কাছে অপরাধী আমি, তারা কি কখনো ক্ষমা করবে কি না জানি না।(হঠাৎ নিজের কপালে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়তে দেখে উপরের দিকে তাকায়, ছুটকির দুচোখ বেয়ে জলের ধারা গাল বেয়ে টপটপ করে রুদ্রের কপালে পড়ছে) কিরে বোকা মেয়ে কাঁদছিস কেন।

-এমনি রে দাদা, তুই নিজেকে এমন করে আড়াল করে রাখিস কেন। নিজেকে খারাপ ভাবিস কেন? আমার দাদা দুনিয়ার সবচেয়ে ভালো দাদা, কেউ তোকে খারাপ বললে তাকে আমি মেরেই ফেলবো। তুই একা হবি কেন আমি আছি মা-বাবা আছে।

-না না কাউকে মারতে হবে না। আর কেউ তোর দাদাকে খারাপ বলবে না তুই আছিস যে। যা এখন পড়তে বস গিয়ে।

-আচ্ছা,(রুদ্রের কপালের জলের ফোটা গুলো মুছে দিয়ে, গালে চুমো দিয়ে ছুটকি নাচার ভঙ্গিতে নিজের রুমের দিকে যেতে থাকে।




ঘরে গিয়েই ছুটকি তনুকে ফোন করে, ওদিকে তনুও ছুটকিকে ফোন করবে বলেই মোবাইলটা হাতে নিয়েছিল ওমনি ছুটকির ফোন পেয়ে হাসির রেখা ফুটে উঠে ঠোঁটের কিনারায়। দুজনেই আজকের প্ল্যান অনুযায়ী কি কি জানতে পেরেছে সেটা শেয়ার করে। রাই কি কি বলেছে সেটা সবটাই সে ছুটকি কে জানায় ওদিকে রুদ্র কি কি বলেছে সেটাও ছুটকি তনু কে জানায়। বিশদ আলোচনা শেষে দুজনেই বুঝতে পারে রুদ্র আর রাইয়ের মাঝে কিছু তো একটা ঘটনা আছে আর সেটা জানতে হলে একজন কে খুঁজে বের করতে হবে সেটা হলো জয় দা। রুদ্রের যেহেতু জয়ের সাথে যোগাযোগ নেই তাই রাই হলো শেষ ভরসা৷ ওর মোবাইল থেকেই জয়ের নাম্বার টা কালেক্ট করাই হলো ওদের নেক্সট মিশন আর সেটার দায়িত্ব পড়েছে তনুর উপর। তনুও তৈরী সেই কাজটা করার জন্য এই জয় দা তপসে হয়ে সাহায্য করবে বাকি রহস্যের সমাধান করতে।




সন্ধ্যা পূজা শেষে অঞ্জলি দেবী ঘরে এসে কাপড় পাল্টে  ছুটকি পড়তে বসলো কিনা সেটা একবার দেখে যায়, নিজের ঘরে গিয়ে মোবাইল টা হাতে নিয়ে একটা নাম্বারে ফোন করে। তনু চলে যাবার পর রাই কানে হেডফোন গুজে গান শুনছিলো শুয়ে শুয়ে, হঠাৎ একটা ফোন আসতেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে নাম টা দেখে কল টা রিসিভ করে,

-হা আন্টি, কেমন আছো?

-আমি ভালো আছি তুই কেমন আছিস? কি করছিস?

-ভালোই আছি, অফিস থেকে এসে রেস্ট নিচ্ছিলাম। বাকিরা সবাই ভালো আছে?

-হুম তোর আঙ্কেল ছুটকি ভালোই আছে, আরেকজনের টা তুই নিজেই ফোন করে জেনে নে।

-(নিঃশব্দের চওড়া হাসিতে মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠে) তুমিও না আন্টি, দরকার নেই ফোন করার। কখন কোন মোডে থাকে বুঝা মুশকিল। আর আমি ফোন করেছি জানতে পারলে হয়তো ফোনেই ধরে আছাড় মারতে চাইবে আমাকে।

-(হা হা করে হাসতে থাকে অঞ্জলি দেবী) তোর আর বাবুর মাঝে কি যে হয়েছে সেটাই আজ পর্যন্ত বললি না। তোর উপর ওর রাগ করবে কেন সেটাই বুঝি না, এরপরও আবার ওকে বিয়ে করতে চাস। তোদের ভাবস্রোত কোন দিকে বহে বুঝা মুশকিল। তা কিরে তোর বাড়িতে কথা বলেছিস? তোর আঙ্কেল তো আজও জানতে চাইলো, তোর কথা বলা হলে তোর আঙ্কেল বাবুর সাথে কথা বলবে।

-না গো আন্টি এখনো তো বলতেই পারলাম না। বাবার সামনে গিয়ে কি বলবো সেটাই তো ভুলে যাই। একবার ভাবছি মা কে দিয়ে বলাবো আবার ভাবি আমার জন্য শুধু শুধু মা বকা খাবে কেন এর চেয়ে আমিই বলে ফেলি কিন্তু সাহস হচ্ছে না৷ আমার বাবা তো সবসময়ই যেন রেগে থাকে।

-তাহলে আমিই না হয় কথা বলি৷ তোর হয়ে আমি কথা বললেই তো হলো। আমি ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষ দুটোই।

-না না আন্টি, বাবা কেমন রগচটা আর কড়া মানুষ তুমি তো জানে না। তোমাকে কি না কি বলে আবার অপমান করে জানে, তার চেয়ে আমিই কথা বলবো সেটাই ভালো হবে৷

-আচ্ছা ঠিক আছে, তুই রেস্ট নে এখন রাখি পরে কথা হবে।

-ওকে আন্টি।





★★★★★



সকালের নাস্তার টেবিলে পত্রিকা হাতে বিজয় চৌধুরী বসে আছে, দেবীকা দেবী রান্নাঘর থেকে নাস্তার প্লেট গুলো একে একে টেবিলে এনে রাখছেন। তনু রাই ওদের ঘরে রেডি হচ্ছে স্কুল আর অফিসের জন্য। একটা প্লেটে পরোটা আর ভাজি দিয়ে স্বামীর দিকে এগিয়ে দেয় দেবীকা চৌধুরী

-তোমার নাস্তাটা, খেয়ে নাও ঠান্ডা হয়ে যাবে।

-জানো যেহেতু ঠান্ডা হয়ে যাবে তাহলে পত্রিকা টা পড়া শেষ হওয়ার পরেই দিতে পারতে (খেঁকিয়ে উঠে কথা গুলো বলে)

-তখন তো আবার চেচামেচি শুরু করতে যে এখনো নাস্তা দিচ্ছি না কেন। তুমি তো সবটাতেই দোষ ধরতে ব্যস্ত।

-(একটু উচ্চস্বরে) থাক, সব কথায় উত্তর দেয়া শুরু করেছো আজকাল। মেয়েরা কই এখনো নাস্তা করতে আসলো না কেন?

-ওরা রেডি হচ্ছে, এখনি চলে আসবে।

-রাই কে ডাকো ওর সাথে কথা আছে।
দেবীকা দেবী এগিয়ে গিয়ে রাই কে ডাক দিয়ে আসে।

-(একটা চেয়ার টেনে বসতে বসতে) বাবা ডাকছিলে।

-হুম, তোমার সাথে একটা কথা আছে। এমনিতেও আমি মনে করি না তোমার সাথে ডিসকাস করার দরকার আছে তবুও একবার বলছি।

-কি কথা? আমারও একটা কথা ছিল তোমার সাথে আবার মায়ের সাথেও(মায়ের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে, মায়ের মুখ দেখেই বুঝতে পারে সকাল সকালই বাবা আবার রাগরাগি করেছে মায়ের সাথে)।

-আগে আমি আমার টা শেষ করি তারপর না হয় তোমার টা শোনা যাবে।

-ঠিক আছে।

-আমার এক কলিগের ছেলে ইউকে তে একটা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানিতে চাকরি করে ও গত সপ্তাহে দেশে এসেছে। আমার কলিগ চায় তার ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দিতে, আগামী শুক্রবার দেখতে আসতে চায় তোমাকে সেদিনই হয়তো বিয়ের ডেট ফিক্সড করবে। সেদিন কোন প্ল্যান থাকলে ক্যানসেল করে দাও।

-(বাবার কথাটা শুনার পর হঠাৎ যেন চোখে মুখে অন্ধকার হয়ে আসে, মূহুর্তেই যেন নিজেকে কেমন অসার মনে হচ্ছে। বাবা যে একরোখা মানুষ তাতে করে আর নিজের মনের কথা আর হয়তো বলা হবে না কখনো। তাহলে কি নিজের সব ভালোলাগা ভালোবাসা আবারও সেই আগের মতই মাটি চাপা দিতে হবে?? না এবার আর সেটা হবে না আগে ছোট ছিল তাই কিছু বলতে পারে নি কিন্তু আজ সময় আছে নিজের টা নিজের করে নেবার, যেভাবেই হোক বাবার বিরুদ্ধে না গেলেও বুঝাতে তো হবে) বাবা আমাকে না জানিয়ে ওদের আসতে বলে দিলে। আমারও তো একটা মতামত আছে নাকি। একদম বিয়ের ডেটও ফিক্সড মানে কি আমার কি পছন্দ ও পছন্দ কিছু নেই?

-তোমার আবার কিসের মতামত? আমি সব দেখাশোনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তোমাকে জানাবার কি আছে। যা বললাম সেরকমই সেদিন বাসায় থাকবে। তোমার যেটাতে ভালো হবে এত বছর সেটাই করে এসেছি আর আগামীতেও সেটাই করবো।

-মেয়েটার কথাটাও তো একবার শুনতে পারতে, ও তো বড় হয়েছে(দেবীকা দেবী পাশ থেকে কম্পিত স্বরে কথা গুলো বলে উঠে)

-তুমি চুপ করো তোমাকে কে কথা বলতে বলেছে, তোমার আশকারাতেই ও এতগুলো কথক বলার সাহস পেয়েছে (শাসিয়ে উঠে বিজয় চৌধুরী)

-বাবা তুমি মা কে ধমকাবে না, মা তো ভুল কিছু বলে নি। আমি জানি তুমি সবসময় আমাদের ভালোর জন্যই সব করেছো, কিন্তু বিয়েটা তো আমাকে করতে হবে সারাটা জীবন কাটাতে হবে। আমার নিজের মত ছাড়া তুমি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারো না, এ বিয়ে আমি করতে পারবো না।(সশব্দে চেয়ার সরিয়ে উঠে পড়ে রাই)


আড়াল দাড়িয়ে থাকা তনু সবটাই শুনতে থাকে। দিদি কে এমন করে বাবার কথার বিরুদ্ধে গিয়ে  প্রতিবাদ করতে আগে দেখ নি সে। তবে কি দিদি অন্য কাউকে পছন্দ করে....
[+] 11 users Like nextpage's post
Like Reply
পাশার দান যখন তখন উল্টে যেতে পারে .. তবে বিজয় চৌধুরী লোকটা শুধু রগচটাই নয়, তার সঙ্গে ইতর .. যে বাড়ির মহিলাদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে পারে না, সে বাইরের মানুষকে সম্মান করবে কি করে? 

রুদ্র আর রাইয়ের মধুরেণ সমাপয়েৎ এর পথ যে সরল এবং সোজা হবে না সেটা বেশ বুঝতে পারছি।  Smile
[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
বাহ!! অসাধারণ লেখায় দাদা
[+] 1 user Likes Jibon Ahmed's post
Like Reply
গোয়েন্দাগিরি, দাদা বোন, দিদি বোনেদের ইয়ার্কি দুস্টুমি আর ইমোশনাল মোমেন্ট সাথে আবার অতীতের সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষটার অপেক্ষায় বসে থাকা। নিজের কাছে নিজের ছোট হবার জেদ, ছেলেমানুষি, ছেলেখেলা সব কিছু নিয়ে জমজমাট পর্ব। সাথে আবার পুরানো ফিল্মের বাবা নামক ভিলেন। যদিও পুরোটাই গল্পের স্বার্থে এমন বাবা চরিত্র আনতে হয়েছে কিন্তু এমন বাবা দেখলে মটকা গরম হয়ে যায়। রাগী হওয়া ভালো। পরিবারের বন্ধন বজায় থাকে কিন্তু রাই এর ভাবার এটা নিম্ন মানের চিন্তাধারা। মেয়েকে ভালোবাসেন ঠিক কতটা সেটা জানিনা কিন্তু নারীদের উনি শক্তি হিসাবে বোধহয় দেখেন না, বিপরীতটাই হবে।

আর শেষে বলি.... ওই উপরের ছড়া আমি লিখলেও আমাকে রাই ম্যাডাম এর জন্য লিখতে বলেছিলো রূদ্র বাবু।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(10-07-2022, 09:53 PM)Bumba_1 Wrote: পাশার দান যখন তখন উল্টে যেতে পারে .. তবে বিজয় চৌধুরী লোকটা শুধু রগচটাই নয়, তার সঙ্গে ইতর .. যে বাড়ির মহিলাদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে পারে না, সে বাইরের মানুষকে সম্মান করবে কি করে? 

রুদ্র আর রাইয়ের মধুরেণ সমাপয়েৎ এর পথ যে সরল এবং সোজা হবে না সেটা বেশ বুঝতে পারছি।  Smile

এমন মানুষ আমার কাছে জঘন্য মনে হয়। কড়া হওয়া আর অসম্মান করা দুটো ভিন্ন বিষয়। 

সরল আর সোজা তো ঐ বক্ররেখারই অংশ তাই একটু শক্ত হাতে টানতে হবে।
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
(10-07-2022, 10:03 PM)Jibon Ahmed Wrote: বাহ!! অসাধারণ লেখায় দাদা

ধন্যবাদ
Heart Heart
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply




Users browsing this thread: 4 Guest(s)