11-06-2022, 11:49 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Poll: এই গল্প টা আপনাদের ভালো লাগলে নীচের অপশন এ ক্লিক করে জানান কেন ভালো লাগছে You do not have permission to vote in this poll. |
|||
গল্পের কাহিনী | 2 | 10.00% | |
গল্পের গতি | 0 | 0% | |
গল্পের গতি এবং কাহিনী | 17 | 85.00% | |
গল্প টি ভালো লাগছে না | 1 | 5.00% | |
Total | 20 vote(s) | 100% |
* You voted for this item. | [Show Results] |
Fantasy বাঘমুড়োর আতঙ্ক - সমাপ্ত
|
11-06-2022, 11:52 PM
(11-06-2022, 11:37 PM)nextpage Wrote: এ বাব্বা এমন ভয় ধরানো আপডেট হবে জানলে রাতে পড়তামই না। অনেক ধন্যবাদ জানবেন আমার তরফ থেকে। ভালো লাগছে গল্প টা এই টাই অনেক আমার কাছে।
12-06-2022, 05:23 PM
12-06-2022, 08:12 PM
(11-06-2022, 10:40 PM)nandanadasnandana Wrote: আমি জানি তুমি আছ। পোকা গুলো কে ব্রাউনিয়ান চলন থেকে, ম্যাগনেট এর মতন সাজিয়ে ফেলো দেখি। তুমি ফিজিক্স এর প্রফেসর ... তবে আমিও ম্যাগনেট এর ওপরে অনেক পড়াশুনো করছি আজকাল চাকরির খাতিরে ... আর ব্রাউনিয়ান মোশন নিয়ে কিছু তথ্য পেয়েছি এখানে কয়েকজন লোক নিজে যারা প্রায় কুড়ি পঁচিশটা fake ID দিয়ে সবার থ্রেড derate করে যাচ্ছে ... কি করে জানলাম সেটা বলবো পরে
12-06-2022, 08:29 PM
(12-06-2022, 08:12 PM)ddey333 Wrote: তুমি ফিজিক্স এর প্রফেসর ... তবে আমিও ম্যাগনেট এর ওপরে অনেক পড়াশুনো করছি আজকাল চাকরির খাতিরে ... বেশ কয়েকটা নাম পেয়েছি এদের ... লোক একটাই কিন্তু বিভিন্ন নাম নিয়ে সে ঢোকে এখানে
13-06-2022, 01:03 AM
আরেকটি অসম্ভব রকমের ভালো গল্প পেতে চলেছি। Last update was so much thrilling
“What a slut time is. She screws everybody.”
13-06-2022, 12:14 PM
Durdanto hocche.
Aha pore anando pelam.
13-06-2022, 01:17 PM
আগের পর্বের কিছু অংশ...
মুড়ি খেতে খেতে ঘটনা টা বলল পরেশ লালি কে। লালির মুখের অভিব্যক্তি তেই বোঝা যাচ্ছিল কি মারাত্মক ভয় ও পেয়েছে। নিজেও একবার মধুসুদনের নামে কপালে হাত জোড় করে প্রণাম করে নিল সে বাবার অলক্ষ্যেই। পরেশ কে ঘটনা টা বলতে হবে সবাই কে। বেঁচে হয়ত সে ফিরেছে, কিন্তু ব্যাপার টা ভাবনার বেশ। হয়ত এই কয়েক সহস্র বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথম, বাঘমুড়োর কবল থেকে কেউ বেঁচে ফিরল। এটা ভালো না খারাপ, পরেশ নিজেই বুঝতে পারছে না। নগেন জ্যাঠা কে না বললে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। হয়ত জ্যাঠা কিছু বলতে পারবে এই সম্পর্কে। আজ পর্যন্ত, বাঘমুড়োর শিকার কেউ আটকাতে পারে নি। যদিও গত দশ বছর বাঘমুড়ো শিকার ধরেও নি। কিন্তু ব্যাপার টা চিন্তার। অতো বড় সাদা কুকুর ই বা কোথা থেকে এলো গ্রামে। কই কেউ তো দেখেনি কোনদিন? কি জানি রাধামাধবের কি লীলা। খেয়ে দেয়ে, পরেশ বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে। তখনো হাত পা কাঁপছিল পরেশের। লালি, রান্না ঘরের জানালা দিয়ে দেখল, ওর বাবা পড়তে পড়তে সামলে নিল নিজেকে সদর দরজার একটা কপাট ধরে নিয়ে। হালকা বলিরেখা ফুটে উঠল লালির ছোট্ট কপালে। পর্ব চার পরেশ সম্পন্ন চাষী। সাথে বেশ বড় সম্ভ্রান্ত গোয়ালা। একটিই মেয়ে ওর। পরেশের স্ত্রী মারা যাবার পরে আর দ্বিতীয় বিয়ে পরেশ করে নি। মেয়েকেই মানুষ করেছে মনের মতন করে। পড়াশোনায় মারাত্মক ভালো লালি। এখন শহরে পড়াতে যায় ও। এম এস সি পাশ করে একটা সরকারি হায়ার সেকেন্ডারী কলেজে পড়াচ্ছে। অমন মিষ্টি মেয়ে মনে হয় জগত খুঁড়ে ফেললেও আর পাওয়া যাবে না। লালির জীবনে পরেশ ছাড়া আর কেউ ই নেই। বাবাকে ভালবাসে পাগলের মতন। পরেশ যেমন মেয়ের হ্যাঁ তে হ্যাঁ আর না তে না , ঠিক তেমনি লালি ও বাবার একটু শান্তির জন্য, আনন্দের জন্য সব কিছু ত্যাগ করতে পারে। হ্যাঁ আর একজন কে ও মনে মনে মারাত্মক পছন্দ করে। সে হল হীরা। হীরা ওর থেকে ছয় বছরের ছোট। কিন্তু লালি ওকে পছন্দ করে। সেটা সে না তো হীরা কে বলতে পেরেছে কোনদিন, আর না তো বলতে পারবে । তবু মন সর্বদা হীরার কাছে যেতে ইচ্ছে করে। হীরার সাথে থাকতে ইচ্ছে করে। মনে হয় ইশ হীরা যদি সব সময়ে লালি দের বাড়িতে থাকত কি ভালই না হতো। যদিও শুধু ও নয়, হীরার জন্যে মনে হয় পুরো গ্রামের আর ওর কলেজের সব মেয়েই পাগল। হীরা দের তেমন কিছু অবস্থা নয়। আহা এতো ভালো পড়াশোনায় ছেলেটা, মহাদেব কাকা হয়ত তেমন কিছু ভালমন্দ খাওয়াতেও পারে না ছেলেটা কে। না না অভাব নেই ওদের। কিন্তু তবুও, লালির বাবার তো এতো আছে। আর লালি তার পছন্দের মানুষ কে একটু ভালো মন্দ খাওয়াতেও পারবে না নাকি? ও মাঝে মাঝেই হীরা কে বাড়িতে ডেকে আনে পড়ানোর ছলে। পুরু সর দেওয়া গ্লাস ভর্তি দুধ, বা ক্ষীর বানিয়ে রাখে হীরার জন্য।বড়ঠাম্মুর বানানো মাখন হীরা খুব খেতে ভালবাসে। মাখনের লোভেই চলে আসে দুষ্টু টা। ব্যস ও মাখন খায় বসে বসে, আর লালি ওকে দেখে, আর এটা সেটা বকবক করে ওর সাথে। যখন মাখন খায় কোন দিকে খেয়াল থাকে না ওর। কেমন গভীর কালো চোখের মনি দুটো। দেখলেই ছ্যাঁত করে বুক টা। মনে হয় ওই চোখে ডুব দিলেই আর উঠতে পারা যাবে না। কালো গায়ের রং। না না কালো না। সবাই বলে বটে হীরা কালো। কিন্তু লালির মনে হয় কেমন একটা উজ্জ্বল রং। সূর্যের মতন তপ্ত কাঞ্চনবর্ণ না, চাঁদের শীতল জ্যোৎস্নার মতন উজ্জ্বল গায়ের রং ওর। মনে হয় আলো পিছলে পরবে ওই রঙের জেল্লায়। কি মিষ্টি মুখ টা। আর তার থেকেও মিষ্টি ওর হাসি। ভুবন মোহন একেবারে। লম্বা বেশ। লালির থেকে ঢের বেশী লম্বা। আর ঠোঁট দুটো গোলাপি। হাতের চেটো দুটো ও গোলাপি। মাঝে মাঝে ওদের বাড়িতে গিয়েও হীরা কে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে লালি, উমা কাকিমার সাথে বকবক করার সময়ে। গ্রামের মেয়ে গুলো ও কম না। সব যেন ওর জন্য পাগল। অমন একটা শান্ত ছেলে, তাকেও কেউ ছেড়ে কথা বলে না। ও বাড়ি থেকে বের হলেই হলো একবার। সব সময়েই ওর পিছনে। ছেলেটা কলেজে যায় তখন ও পিছনে পিছনে যায় মেয়ে গুলো। কি অবস্থা। লালি ভাবে মেয়ে গুলো সবে কিশোরী, এখন থেকেই ছেলে পেলেই হলো। ওকে পড়াতেও হয় না। যেন সব জেনেই এসেছে ছেলেটা এই পৃথিবীতে। এমন এমন অদ্ভুত কথা বলে ছেলেটা, লালির মনে হয় তার পড়াশোনা বৃথা। এই তো সেদিনেই ওকে লালি বলছিল, কি ভাবে ব্ল্যাক-হোল তৈরি হয়। হীরা শুনে মাখন খেতেই ভুলে গেল। হেসে উঠল এমন জোরে বলার না। উঠোনে ওদের কুকুর টা শুয়ে ঘুমোচ্ছিল। আচমকা ঘুম ভেঙ্গে হাসির দমকে ভয় পেয়ে, এমন বেমক্কা দৌড় দিল, যে বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যে বেলায় বাড়ি ঢুকেছিল সে। বিড়াল টা মাচার উপরে শুয়েছিল একটা ছোট লাউ এর পাশেই। হাসির দমকে মাচা থেকে পড়তে পড়তে লাউ ধরে টান দিতেই লাউ সুদ্দু উঠোনে। দোষের মধ্যে লালি বলেছিল, - বুঝলি হীরা, স্পেসে কোন টেন্ডিং ইনফাইনাইট মাস সেখান কার স্পেস কেও নিজের দিকে টেনে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। হীরা মাখন খাচ্ছিল মন দিয়ে। তাও বলল, - হুম তারপর? - তারপর আবার কি, এতোটাই নিজের দিকে টানে যে স্পেস টা ঢুকে আসে নিজের ভিতরে। তাই আলো ও সেই স্পেস বরাবর চলতে চলতে ঢুকে পরে তার ভিতরে। আর বের হতে পারে না কারন সেখানে আর কোন সোজা রাস্তা পায় না। আর ব্যস আলো বের হতে না পারলে আমরা সেই বস্তু কে দেখব কেমন করে? তাই সেই বস্তু আমাদের কাছে অদৃশ্য থেকে যায়। আর তাকেই ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণ গহ্বর বলে। বুঝলি?? ব্যস এই কথায় অতো হাসি? লালি সেদিনে, হীরার হাসির কথা ভাবতে ভাবতে নিজেই হেসে ফেলল। হাসির দমকে চারপাশ কে খানিক এদিক ওদিক করে দিয়ে, যখন কথা বলল হীরা লালির সব গুলিয়ে গেল। ও বলল, - তার মানে তুমি বলছ যে, একটা ইনফাইনাইট টেন্ডিং মাস প্রলম্বিত অবস্থায় স্পেসে থাকে, আর নিজের ভারে ফানেলের মতন করে ফেলে চারদিকের স্পেস কে তাই তো? - হ্যাঁ। এতে হাসির কি হলো? এই তো তুই একটা পুচকে ছেলে। সবে কলেজে ভর্তি হয়েছিস। না জেনেই খ্যালখ্যাল করে হেঁসে উঠলি। যত্তসব! - উফ শোনই না । এতো আন্ডারেস্টিমেট করছ কেন? মানে ধর, একটা রাবারের চাদর, আর সেখানে একটা হাই মাস কে ছেড়ে দিলে সে যা বিহেভ করবে, স্পেসেও একটা অলমোস্ট ইনফাইনাইট মাস সেই বিহেভ করে। ঠিক? - হ্যাঁ - তবে তো বলতে হয় তুমি ভেবেই নিচ্ছ , তোমার স্পেস, একটা বই এর পাতার তলের মতন সিংগেল ডাইমেনশন মাত্র। - অ্যাঁ? - হ্যাঁ ভেবে দেখ, তুমি তো তাই বললে। - হুম তাই তো!!! - আসলেই কি তাই? স্পেস কি ভাবে সিংগেল বা ডাবল ডাইমেনশনের হবে? মিনিমাম ভ্যল্যুমাইজড তো হবেই। বই এর পাতার মতন নয় তো? তোমার কথা সত্যি হলে এমন তো ইনফাইনাইট তল থাকতে পারে। ইনফাইনাইট স্পেস, ইনফাইনাইট ডাইমেনশন বা বই এর পাতা। যার হাইট নেগলিজিবল কিন্তু দুটো প্রান্ত ইনফাইনাইট। ভাবো যখন প্রলম্বিত হয়, একটা ডাইমেনশন অন্য টার সাথে ধাক্কা খেয়ে যায় না? ধর সূর্য আমাদের, আর আলো দিচ্ছে অন্য পৃথিবী কে। বা আমাদের সুর্য খানা আমাদের না, অন্য ডাইমেনশনের। হা হা হা হা। অবাক হয়ে গেছিল লালি। বলেছিল, - কিন্তু বিজ্ঞানী রা তো বলছে এটাই এখনো অব্দি সঠিক। - বা রে, আজ থেকে চারশ বছর আগে এরিস্টটল যা বলেছিল, সেটাই কি তুমি মানো নাকি? কাজেই আজকের বিজ্ঞানী রা যে ভুল নয় তুমি শিওর হচ্ছ কি করে? - হুম। হুম টা বেশ ভারিক্কী ভাবে বলে লালি বলল, - এতো তুই জানলি কি করে রে? তোকে আমি দেখিনি কোনদিন ও তুই কোন অঙ্ক ভুল করলি। তোকে আমি খুঁজে খুঁজে এনে অঙ্ক দি। যত কঠিন হোক তুই করে দিস। অথচ পরীক্ষা তে সবার মতই নাম্বার পাস। একেবারে সাধারণ। হীরা কি বলল তাতে লালি গুলিয়ে গেলেও, হীরা যে সামনে বসে কথা বলছে এতাই লালির কাছে অনেক। কিন্তু লালির কথা শেষ হতে না হতেই আবার সেই দিগবিদিক কাঁপিয়ে হাসি পাগল টার। - হাহাহাহা। পরীক্ষা তে বেশী পেয়ে হবেই বা কি? সবাই কাজ করতে আসি বুঝলে? কাজ শেষ হলেই আমরা চলে যাই। উই আর জাস্ট প্লেয়িং আওয়ার রোলস। লালি শুনে অবাক হয়, হীরার এই সব কথা বার্তা। বোঝে না তেমন। কিন্তু এমন এমন কথা বলে দেয় হীরা যে লালি কে স্তব্ধ হয়ে যেতে হয়। মনে হয় বয়েস টা ওর অল্প কিন্তু ভিতরে কোন সহস্র বছরের পুরোন জ্ঞানী কেউ বাসা বেঁধেছে। জ্ঞানী ই বটে তো? নাকি পাগল? কিন্তু এমন অনেক ব্যাপার এতো তাড়াতাড়ি সল্ভ করে দেয় যে লালি নিজেও অবাক হয়ে যায়। এই তো সেদিনেই, তুহিন কাকা, কলেজের প্রোফেসর, বলছিলেন যে, অন্ধকার হলো আলোর অনুপস্থিতি। সবাই চুপ ছিল। শুনছিল তুহিন কাকার কথা। দুম করে হীরা বলে উঠল, - জেঠু, একটা কথা বলো, সত্যি ই কি আলো, আলো? আর কালো মহাশূন্য? সাতটা বেসিক কালারের বাইরে তুমি আলো দেখাও আমাকে কাকা? কালো আলো দেখেছ? তাই যদি দেখনি, আর সাত টা বেসিক কালারের বাইরে তুমি আলো ও দেখনি, তবে বলছ কি করে যে যেখানে আলো নেই সেখান টাই ডার্ক। বরং উলটো টা ভাব কাকা, যেখানে কালো নেই সেখানে অন্য কালার সুযোগ পায় মাত্র। হে হে, এই মহাবিশ্বের ৯৯.৯৯ শতাংশই যে ডার্ক কাকা। আর অন্ধকার মানেই ডার্ক নয়। আর ডার্ক মানেই, সেটা আলোর অনুপস্থিতি নয়। কারন কালো যে সব কালার খেয়ে ফ্যালে গো। একমাত্র আইন্সটাইন ব্যাটা খানিক পড়াশোনা করেছিল। বাকিরা ধারে কাছেও যেতে পারল না এখনো? আরো কিছু বলত কিন্তু ততক্ষনে লালি একটা রাম চিমটি দিয়েছিল হীরার পেটে। ব্যস চুপ করে গেছিল হীরা। কিন্তু তুহিন কাকা ব্যোমকে গেছিল বেশ। - আমি পরে আলোচনা করব। এই বলে কাকা নেহাত মাথা নাড়তে নাড়তে ধীর পায়ে চলে গেছিল সেই সন্ধ্যে বেলায়। এমনি ই করে হীরা, সব সময়ে। মাস্টার রা পড়াচ্ছেন হয়ত। উঠে দাঁড়িয়ে এমন প্রশ্ন করে দেবে, খুব বেসিক প্রশ্ন, কিন্তু উত্তর দিতে কাল ঘাম ছুটে যায় মাস্টার দের। কিন্তু হীরা কে নিয়ে ভাবার সময় এটা নয়। ওর বাবার সাথে বাঘমুড়োর কথা মনে পরতেই লালির চোয়াল একটু শক্ত হয়ে গেল। বড় ঠাকুমা কে চিৎকার করে বলে দিল, - ঠাম্মা, আমি আসছি উমা কাকির কাছ থেকে। তরকারি টা কোর না। ওটা আমি এসে করবো ও ও ও । ততক্ষনে ও হীরা দের বাড়ির দোরে পৌঁছে গেছে প্রায়। লালিদের বাড়ি থেকে হীরাদের বাড়ি বেশী দূরে নয়। মাঝে একটা পুকুর আছে মাত্র। রাস্তা দিয়ে গেলে একটু ঘুর হয় বলে লালি পুকুরের ধার ধরে লাফিয়ে পৌঁছে যায় হীরাদের বাড়ি। হীরাদের বাড়ি পৌঁছে দেখল, হীরা মাটির ঘরের বারান্দায় বসে পড়ছে আর উমা কাকিমা রান্না ঘরে রান্না করছে। আর মহাদেব কাকা নেই বাড়িতে। বুঝল, সন্ধ্যে বেলায় চন্ডীতলায় বসে বড় রা গল্প করছে। সেখানে লালির বাবা ও আছে। আজকের ঘটনা সবাই কে বলছে। আজকের ঘটনা নতুন তো নয়। কিন্তু সাদা নেকড়ে এসে, বাঘমুড়োর থেকে প্রাণ বাঁচানো এই প্রথম। লালি বাড়িতে ঢুকতেই হীরা একটু চঞ্চল হলো। লালি হীরার মায়ের সাথে রান্না ঘরে আছে। একটা অন্য রকম গন্ধে যেন বাড়িটা ভরে গেছে। গত বছর দুয়েক হীরা এই ব্যাপার টা উপলব্ধি করতে পারে। নিজেও বোঝে না। বাবা মা কে হীরা কিছু বলেনি। ভয় পাবে দুজনেই। হীরার কাছে সব কিছু এখন কেমন একটা সহজ হয়ে গেছে।তা সে পড়াশোনা হোক বা অন্য কিছু। গন্ধটার খোঁজে চারিদিক ঘুরে এলো। কিন্তু বাইরে কিছুর হদিশ পেল না হীরা। বুঝতে পারল গন্ধটা ওদের বাড়িতেই আছে। আর রান্না ঘরে বেশী।খারাপ না গন্ধ টা। কিন্তু একটা বুনো গন্ধ। কোন ভয় নেই গন্ধটার মধ্যে। কিন্তু একটা লাগাম ছাড়া ভাব। লালির থেকে আসছে? কিছুদিন ধরেই ও লালির মধ্যে একটা অন্যরকম অস্থিরতা লক্ষ্য করছে। আজকেও বুঝতে পারল গন্ধ টা লালি আসার পর থেকেই একেবারে মারাত্মক রকম সারা বাড়ি ময় ছড়িয়ে গেছে। মা কি বুঝতে পারছে না? নাকি হীরা একাই টের পাচ্ছে? কাউকে কিছু না বলে বারান্দায় পড়তে বসল হীরা। জানে লালি আসবে ওর কাছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই লালি এলো রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে। কাছে আসতেই গন্ধটা একেবারে হীরা কে যেন স্থির থাকতে দিল না। প্রায় নাক সিটিয়ে উঠল। বলল, - উঁহু দূরে …দূরে লালির এটাই রাগ ধরে। ছেলেটা এতো রিপালসিভ যে বলার নয়। হীরা কাছে থাকলেই মনে হয় সমস্ত জগত টা কত সুন্দর।কিন্তু ইদানিং এমন রিপালসিভ হয়েছে যে বলার নয়। আগে যখন ছো ট ছিল কি সুন্দর কোলে চলে আসত। কত চটকাতো লালি , হীরা কে। কিচ্ছু বলত না। এখন একেবারে সামনে দেখেলেই পালানোর তোড়জোড় করে। যাই হোক তাতে লালির কিছুই যায় আসে না। লালি হীরার এই রিপালসিভ ব্যাপার টা কে পাত্তাই দিল না এবারে। সোজা চলে গেল হীরার কাছে। গিয়েই হীরার গাল দুটো কে টিপে দিল। উমা কাকিমা কে বাবার কথা টা বলে এসে আরেকবার হীরা কেও বলল। হীরা শুনে ভয় পেয়েছে মনে হলো না। হয়ত ছোত বলে হীরার কল্পনাতেও নেই বাঘমুড়োর আতঙ্ক কি ভয়ানক ব্যাপার। হীরা লালির দিকে তাকিয়ে থেকে ছোট্ট একটা হাসি হেসে, একটা গভীর শ্বাস নিয়ে আবার পড়ায় মনোযোগ দিল। লালি হাঁ করে তাকিয়েছিল। উমা কাকীমা ও ছিল সামনেই। কিন্তু বড় অস্ফুট স্বরে বলল হীরা কিছু কথা। ঠিক যেন বই পড়ছে। বই এর দিকে তাকিয়ে বলল, - সবার ভিতরেই কালো আর সাদা থাকে। মনের ভিতরে সেই কোন গহীনে লুকিয়ে থাকে। দরকারে বের হয় ওরা। কালো টা ভয় দেখায়। খারাপ ভাবায়। নিজেকে সবার থেকে দূরে করে রাখতে চায়। বাঁচতে আর বাঁচতে দিতে চায় না সেই কালো। মনের ভিতর খানা ক্ষতবিক্ষত করে অনবরত। কিন্তু সাদা!! সাহস দেয়। বল দেয়। সামনে এগিয়ে যাবার রসদ দেয়। বাঁচতে শেখায়। একজন বেঁচে থাকে, মনের মধ্যেকার দুঃখ, দুর্দশা, শ্লেষ, মৃত্যু, কষ্ট আর জটিলতা দিয়ে মাখানো মুখরোচক খাবার খেয়ে। আরেক জনের খাবার হচ্ছে, ভালোবাসা, মমতা, সরলতা দিয়ে বানানো সামান্য কিন্তু পুষ্টিকর খাবার। বড্ড মমতাময়ী সেই সাদা কুকুর টা। দেখলেই মনে হয় জড়িয়ে ধরি। তাই না? কথা গুলো বলে লালির দিকে তাকাল হীরা। বড্ড গভীর চোখ। লালির মনে হলো, ডুবে গেছে প্রায় ওই চোখে। গুম গুম করে লালির মনের ভিতরে বাজতে লাগল। ভয়ে জিজ্ঞাসা করল হীরা কে, - কি বলছিস তুই? আমাকে বলছিস না পড়াশোনা করছিস? এবারে হীরা তাকালোই না আর লালির দিকে। বই এর দিকে তাকিয়েই খুব আস্তে করে বলল, - ভাল, ভাল। সাদা টা বেড়িয়ে এসেছে। কালো টা বের হলে না জানি কি হতো! - কিই??? লালির প্রশ্নের জবাব তো দিলোই না হীরা উপরন্তু, উমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাব করল যেন, লালি আসায় পড়াশোনার বড্ড ব্যাঘাত ঘটছে। তাতে উমা কিছু না বললেও, লালি দুম দুম করে পা ফেলে রাগ করে চলে গেল উমার রান্না ঘরে। উমা ছেলের দিকে কড়া দৃষ্টি তে তাকিয়ে নিজেও রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। আর হীরা তাকিয়ে রইল লালির চলে যাওয়ার দিকে, ঠোঁটের কোনে হাসি টা ধরে রেখে। সারা রাত ভেবেও লালি বুঝতে পারল না, হীরা কি বলছিল তখন সাদা আর কালো দিয়ে? আর কেনই বা বলল? আদৌ কি ওকে বলছিল না কি ও নিজের পড়াশোনা করছিল? নাহ অতো বুদ্ধি লালির নেই। যবে থেকে এই ছোঁড়া বড় হয়েছে একটু, তবে থেকে এই সব হেঁয়ালি করে বেড়ায়। লালি আর বেশী ভাবে না আজকাল হীরার কোন কথা। কিন্তু কিছু ঘটনায় বার বার ফিরে আসে হীরার বলা কথা গুলো। এদিকে পরেশের ব্যাপার টা গ্রামের সবাই জানলেও, সাদা নেকড়ে বাঘ বা কুকুর যাই হোক না কেন, ব্যাপার টা সবাই কে একটু নাড়া দিল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেউ পরেশ কে বিশ্বাস করল কেউ বা অবিশ্বাস। বাঘমুড়ো কে সবাই জানে। কিন্তু পরেশের বেলাতেই কেন সাদা নেকড়ে এসে বাঁচালো সেই নিয়ে প্রশ্ন ওঠা টাই স্বাভাবিক। বস্তুত সময় এবং জায়গা, যেখানে পরেশের সাথে এই ঘটনা ঘটেছিল, পূর্বের ঘটনায়, কেউ বেঁচে ফেরেনি। প্রথমবার বাঘমুড়োর মুড়ো থেকে মুড়ো বের করে এনে , গ্রামে সেই গল্প পরিবেশিত হচ্ছে। বাস্তবিক সে বর্ণনা শুনে, মুহুর্তে পরিবেশ বদলে গেল। না চাইতেও সকলের শীত করতে শুরু করল। খানিক খানিক পরেই, পিছনে সামান্য আওয়াজেও চকিত ফিরে দেখা টা যেন অভ্যেসে পরিনত হলো। সব থেকে বড় কথা সকাল সকাল বাড়ী ফিরে যেতে সবার মনেই ব্যাকুলতা। পরেশের ফিরে আসায় সবাই খুশী খুব, কিন্তু অনেকের ই মনে কোণায় কেমন একটা খটকা। কি ভাবে? আজ পর্যন্ত যা হয় নি তা হলো কি ভাবে? যেমন নগেন জ্যাঠা, মানে সত্যি ই সবার জ্যাঠা নয় নগেন। কিন্তু গ্রামে গঞ্জে যা হয়, একজনের জ্যাঠা সে ধীরে ধীরে পুরো গ্রামের জ্যাঠায় পরিনত হয়েছিল। বয়েস নেহাত কম নয় নগেনের। তা হবে নব্বই এর কোঠায়। কিন্তু তার মানে এই না যে নগেনের দাঁত পড়ে গেছে বা নগেন অথর্ব হয়ে শুয়ে থাকে। ইংরেজ আমলে বিপ্লবী ছিল সে। ঘুষি তে নারকেল ভাঙ্গা মানুষ। এখনো দিব্বি টগবগ করে ঘুরে বেড়ায়। খটকা টা তার ই বেশী। পরেশের বেঁচে ফিরে আসাটা বাঘমুড়ো কে বেশী উত্তেজিত করে দেবে না তো? নিজের ইচ্ছেয় শিকার করা বাঘমুড়ো কোন দিন ও বাধা পায় নি। আজকে বাধা পেল। কি জানি কি হয়? ক্রোধে গ্রামের ভিতরেই ঢুকে এলো হয়ত। পরপর এই রকম বেশ কিছু ঘটনায় গ্রামবাসী ভীত হয়ে পড়ল বৈকি। পরেশের ঘটনার পরে প্রথম ঘটনা খানা ঘটল বামুনপাড়ার তরুনের বাবা সিদ্ধেশ্বর এর উপরে। সিদ্ধেশ্বর ভট্টাচার্য্য। গ্রামের সবাই ওকে সিধু কাকা বলেই জানে। সিধুবাবু সেদিন রাতে গেছিলেন বাড়ির পিছনে মাঠের ঘাই কাটতে। ও ঘাই কাকে বলে জানেন না? আরে বাবা, যখন চাষের জমি তে আল দিয়ে আলাদা করা থাকে জলের গতি, তখন এক জমি তে অন্য জমিতে জল ঢোকাতে মাটির আল মানে ঘাই কেটে দিতে হয়। না হলে জমিতে জল বেশী হয়ে গেলে বীজ সব নষ্ট হয়ে যাবে যে!! চাষি বাসি মানুষ দের জমির খেয়াল ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও রাখতে হয় বুঝলেন! বাড়ি থেকে বেড়িয়ে খানিক এক দেড়শ গজ দূরে তালগাছে ঘেরা বিশাল পুকুর থেকে জলের ধারা অনুসরন করে, ঘাই কেটে জল অন্য জমিতে ঢুকিয়ে, উবু হয়ে কাদা হাত ধোবার সময়েই সিধুবাবুর মনে হলো চারিদিক টা কেমন যেন থম্থম । এই গরমে সুন্দর একটা হাওয়া চলছিল, সেটা যেন একেবারে থেমে গেছে। রাতের নানান সময়ের এক এক টা সুর থাকে। কি জানি সেই সুর কি ভাবে আসে। কিন্তু থাকে। নতুন ছেলে পুলে রা বুঝবে না। কিন্তু পুরোনো মানুষ গুল সুর টা চেনে। যেমন সন্ধ্যে রাতে সব ঘরে ফেরার আওয়াজ, অনবরত সাইকেলের ক্যাঁচক্যাঁচ, গরুর গাড়ীর চাকার আওয়াজ, কোন দূরে বাড়ি ফেরার তাগিদে বারংবার বাসের হর্ন, পাখীগুনো খেয়ে দেয়ে পেট ভরে যাবার পরে শোবার তোড়জোড়, ডানা ঝাপটানি, দাওয়ায় বসে পড়তে থাকা কচিকাঁচা গুলোর কলরব, রান্না ঘরে সন্ধ্যে বেলায় মা ঠাকুমাদের শাঁখের আওয়াজ, রান্নার তোড়জোড়ের হাতা খুন্তীর ঝনঝনানি, কত বলব? এই সব মিলিয়ে একটা সুর তৈরি হয়। সেই রকম ই এই মাঝরাতের ও একটা সুর থাকে। যেমন সবার ই নিশ্চিন্তে ঘুমনোর একটা শান্তি, তখন খুব ধীরে প্রশ্বাস এর শব্দ। প্রহর ভুল করা নব্যযুবা পাখীদের কিচমিচ, দু একটা বাচ্চার হাত বাড়িয়ে মা কে না পাবার ফোঁপানি, হাঁস হীন পুকুরে বাধা না পাওয়া জলের ঢেউ এর বয়ে যাওয়ার শব্দ, রাত থাকতে থাকতে জেলেদের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কথা বলার শব্দ। জমির আল দিয়ে নির্ভীক ভাবে চলতে থাকা আল কেউটের সড়সড় আওয়াজ। সর্বোপরী নতুন দিনের সূচনার একটা সুর, সব মিলিয়ে কেমন একটা গান হয়ে চলে আমাদের পিছনে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের মতন। এমনি বোঝা যায় না, কিন্তু একটু কান খাড়া করে শুনলে গান টা শুনতে পাওয়া যায়। সিধু বাবুর মনে হলো, সেই সুর টা আর বাজছে না। হাত ধুতে ধুতেই কান খাড়া করে শুনলেন সিধুবাবু। শুধু মাত্র হাত থেকে জল নীচে পরার শব্দ। নাহ এতো ক্লান্ত হয়ে থেমে যাবার লক্ষণ না! এতো মহাতঙ্কে মায়ের কোলে বাচ্চার চুপ হয়ে যাবার মতন নিস্তব্ধতা। বুকে যেন ভয় টা চেপে ধরল সিধু বাবুর। পুকুরের চারিদিকে তাকিয়ে দেখলেন সিধুবাবু। তালগাছ গুলো যেন আঁকা ছবির মতন নিশ্চল। পুকুরের জলে ঢেউ গুলো সব থেমে গিয়ে মনে হচ্ছে, কোন সান বাধানো বিশাল ফাঁকা জায়গা। আচমকা শীত করতে শুরু করল সিধুবাবুর। বাঘমুড়ো? গ্রামের ভিতরে? অনেক পুরোন লোক উনি। এয়ো ভয়, এতো স্তব্ধতা বাঘমুড়োর ভয়েই সে ব্যাপারে নিশ্চিত উনি। প্রকৃতি ও ভয় পেয়ে যায় যে। বাঘমুড়োর পিছনের কাহিনী তো আর ছোটখাটো কিছু না। শ্রীকৃষ্ণ খুব কম মানুষ এর জন্যে অস্ত্র তুলেছিলেন। আর বধ করেছিলেন হাতে গোনা এক দুজন কে। তার মধ্যে বাঘমুড়োর দেহধারী একজন। পরেশের ঘটনা খানা মনে করে, মনের ভিতরে দামামা বাজাতে লাগল সিধুবাবুর । বুঝে গেলেন, ইংরেজ রা অনেক চেষ্টা করেও যে প্রাণ নিতে পারে নি, সেই প্রাণ আজকে বাঘমুড়োর মুড়োতেই ঢুকবে। কিন্তু শেষ চেষ্টা তো করতেই হবে। তবে কি নগেনের কথাই ঠিক হবে? বাঘমুড়ো নিজের জায়গা বাড়াচ্চে? এতো দিনের কৃষ্ণ নামের কোন ফল ই নেই? মনে কু ডেকে উঠল। কেমন একটা বিষাদ। তীব্র শীতের সাথে গায়ে একটা অবশের ভাব। মনে হলো বয়েস তো হলো, কিসের জন্য আর বাঁচা? থাক রোজের এই বেঁচে থাকার ঝঞ্ঝাট এর থেকে মরে যাওয়াই ভাল। তবে কি এখন শুধুই অপেক্ষা মাত্র? সামনে পুকুরের উল্টো দিকে তাকিয়ে দেখতেই যেন মনে হলো হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেবে এবারে। বয়েস হয়েছে তো এতো চাপ সহ্য করতে পারবে কেন আর? দেখলেন প্রায় দুই মানুষ সমান উঁচু বিশাল কায়া নিয়ে বাঘমুড়ো দাঁড়িয়ে। রাতের বেলায় বোঝা যাচ্ছে শুধু কায়ার আকারে। আর দেরী করলেন না সিধুবাবু, বাড়ির দিকে পিছন করে কম্পিত পায়ে পিছিয়ে আসাবার তাগিদে গজ দশেক পিছিয়েছেন মাত্র। খুব বেশী হলে পাঁচ সেকেন্ড সময়। কিন্তু ওই সময়ে মনে হলো, দিগবিদিক কাঁপিয়ে ঝড় আসছে। যে তালগাছ গুলো ছবির মতন নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছিল মনে হলো সেগুলো যেন কোন বিশাল ঝড়ে নুইয়ে পরল একেবারে। সিধু বাবু হুমড়ি খেয়ে পরে যাচ্ছিলেন সামনে। সহসা তালগাছ গুলো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরল একেবারে। পুকুরে যে ঢেউ উঠেছিল, ছলাত করে ঘাটের সিঁড়ি তে ধাক্কার আওয়াজ টাও পেলেন সিধুবাবু। ঘাটের উপর অব্দি ঢেউ এর ছিটে এসে সিধুবাবুর ফতুয়ার সামনের অনেকখানি ভিজিয়ে দিল। পরক্ষণেই ঝড় থামার লক্ষন হিসাবে দেখলেন সামনে বাঘমুড়ো কে। পুকুরের ঘাট থেকে লাফ দিয়ে সামনে এসে পড়ল দুই মানুষ সমান বিশাল কায়ার অধিকারী বাঘমুড়ো। দুই মানুষ সমান লম্বা সেই জীব এর দর্শন মাত্র সৎবিত খোয়া যায় এমন টা কথিত ছিল। আর প্রমাণ পাওয়া গেল হাতে নাতেই। কাঁপতে কাঁপতে হাঁটু মুড়ে বসে পড়লেন সিধু বাবু। মনের মধ্যে ঝড় থেমে গেছে মনে হলো। মারাত্মক আতঙ্কে শুধু মৃত্যু কামনা ই বেঁচে আছে মনের ভিতরে। মৃত্যু হতাশায় চোখের জল বেড়িয়ে এলো সিধুবাবুর। ইশ কত কিছু দেখা হলো না। মেয়ের বাড়ি, নাতির শৈশব, ছেলের ব্যবসায় উন্নতি কিছুই দেখা হলো না আর। কিন্তু বাঁচার ইচ্ছে তো আর নেই। এদিকে নিশ্চিত শিকারের লোভে সেই বিশাল শয়তান একপা একপা করে এগিয়ে আসতে লাগল সিধুবাবুর দিকে। আর মাত্র কয়েক লহমা, ব্যস তারপরেই সব শেষ। ঠিক সেই সময়ে দুটো তীব্র শিষের শব্দ হতেই দেখা গেল তাল গাছে সিধুবাবু আর বাঘমুড়োর মাঝে দুটো তীর এসে বিধে গেল। বেশ লম্বা তীর। তালগাছ কে ফুঁড়ে দিয়ে তীরের ফলা টা বেড়িয়ে গেছে উল্টো দিকে। যেন বাঘমুড়ো কে বলা হলো ,ব্যস আর এগিও না। এই তীর গুলো কিন্তু সাধারণ তীর নয়। বাস্তবিক, তালগাছ টা কে একেবারে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে তীর দুটো। বাঘমুড়ো যেন আসন্ন বিপদ বুঝতে পারল। বুঝতে পারল এই তীর ওকে সাবধান করে দেওয়া মাত্র। পরের মারা তীর গুলো বুকে বিঁধতে সময় নেবে না। তীরগুলোর মধ্যে যেন কিছু ছিল। চঞ্চল হলো বাঘমুড়ো। আতঙ্ক মনের বাইরে না এলে শরীরে যে চঞ্চলতা দেখা দেয় সেই রকম চঞ্চলতা। আর এদিকে শিকার হারানোর ক্রোধ। দুবার পা দুটো কে মাটিতে ঠুকে ,আতঙ্ক আর ক্রোধ মিলিয়ে পুকুরের জল কাঁপিয়ে ব্যাঘ্রনাদ করে উঠল বাঘমুড়ো। আর সেই নাদে, পুকুরের জলে অব্দি ঢেউ উঠল তির তির করে। ওই ভয়ানক আওয়াজে, সিদুবাবু অজ্ঞান হয়ে যাবার আগে অন্ধকারে বুঝলে পারলেন , পুকুরের ধারে খানিক দূরে , একটা কচু বনের পিছনে কোন অল্পবয়সী বালক, তীরধনুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
13-06-2022, 02:14 PM
হীরা হীরা হীরা .. আজকের পুরো পর্ব জুড়ে হীরার উপস্থিতি যেন এখনো বিরাজ করছে আমার মনে। লালির সঙ্গে হীরার মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে কথোপকথন পড়ে সমৃদ্ধ হলাম।
সিদ্ধেশ্বর ভট্টাচার্য প্রাণে বেঁচে গেলেন ঠিকই। কিন্তু রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন। পুকুরের ধারে, খানিক দূরে, কচুবনের পিছনে তীর-ধনুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা বালকটি সম্ভবত হীরা .. যার সঙ্গে সেই শ্বেতশুভ্র নেকড়ের হয়তো কোনো সাদৃশ্য থাকলেও থাকতে পারে .. কারণ নেকড়েদের ঘ্রাণশক্তি প্রবল হয়, যেমন হীরার। এর বেশি বিশ্লেষণ করলে অন্যান্য পাঠকদের পড়ার মজাটাই চলে যাবে। অসাধারণ লাগলো অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকবো পরবর্তী পর্বের জন্য।
13-06-2022, 02:32 PM
(This post was last modified: 13-06-2022, 02:33 PM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
নরপিশাচের কবলে সিধুবাবু স্তব্ধ
হীরার হাতে বাখমুড়ো জব্দ
এই ধরনের গল্পের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত এই ফোরামের সেরা writer আপনি নন্দনা দি , প্রতিটা পর্ব পড়ছি আর মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি।
13-06-2022, 02:34 PM
(13-06-2022, 02:14 PM)Bumba_1 Wrote: হীরা হীরা হীরা .. আজকের পুরো পর্ব জুড়ে হীরার উপস্থিতি যেন এখনো বিরাজ করছে আমার মনে। লালির সঙ্গে হীরার মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে কথোপকথন পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। তোমাকে এত বিশ্লেষণ করতে কে বলেছে? তোমার review পড়লে গল্প পড়াটা চাপ হয়ে যায়। এবার থেকে চুপচাপ গল্প পড়বে, তারপর ভালো হয়েছে এইটুকু বলে, লাইক আর রেপু দিয়ে চলে যাবে, বুঝেছ?
13-06-2022, 02:46 PM
13-06-2022, 03:19 PM
অসাধারণ। এই লেভেলের গল্প পাওয়া একটা বিশাল পাওনা এই ফোরাম। ভাবি আপনি সেক্স এর গল্প লিখলে কি দাঁড়াবে? নাহ এই সব গল্প মেইন স্ট্রীমের গল্প। জানিনা বাকি রা কি বলবেন। তবে আমার মনে হয় এই সব গল্পের জন্যে ফোরামের নাম বাড়বে বই কমবে না । দিদি অপেক্ষা পরবর্তী পার্টের জন্য। মজার ব্যাপার, গল্প টির রেটিং দেখছি কমে গেছে। দিদি দয়া করে এই রেটিং নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাবেন না। আপনি লিখে যান দয়া করে।
আমি আগের একটা গল্প পরে বুঝেচি যেটা , সেটা হলো দিদির গল্পের, গ্রাফ টা ধীরে ধীরে ওঠে। আগে জাল বোনেন। পিক অব্দি কিচ্ছু বোঝা যায় না কি হতে চলেছে। আসতে আসতে জাল গুটিয়ে আনেন দিদি। তখন অনেক টাই পরিষ্কার হয়ে যায় , শেষে কি দাঁড়াবে। মনে হয় না গল্পটির কিছু বোঝার সময় এসেছে বলে। ভালো লেখকের এটাই গুন। যখন সামনে টা আবছা থাকে তখন ঘটনার ঘনঘটায়, পাঠক বোর ফিল করতে পারে না। এই গল্প যদি পূর্ণমাত্রা পায় তবে এটাও ইতিহাস তৈরি করবে বলেই মনে হয়।
13-06-2022, 03:27 PM
(This post was last modified: 13-06-2022, 03:28 PM by boro bara. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(13-06-2022, 01:17 PM)nandanadasnandana Wrote: - সবার ভিতরেই কালো আর সাদা থাকে। মনের ভিতরে সেই কোন গহীনে লুকিয়ে থাকে। দরকারে বের হয় ওরা। কালো টা ভয় দেখায়। খারাপ ভাবায়। নিজেকে সবার থেকে দূরে করে রাখতে চায়। বাঁচতে আর বাঁচতে দিতে চায় না সেই কালো। মনের ভিতর খানা ক্ষতবিক্ষত করে অনবরত। কিন্তু সাদা!! সাহস দেয়। বল দেয়। সামনে এগিয়ে যাবার রসদ দেয়। বাঁচতে শেখায়। একজন বেঁচে থাকে, মনের মধ্যেকার দুঃখ, দুর্দশা, শ্লেষ, মৃত্যু, কষ্ট আর জটিলতা দিয়ে মাখানো মুখরোচক খাবার খেয়ে। আরেক জনের খাবার হচ্ছে, ভালোবাসা, মমতা, সরলতা দিয়ে বানানো সামান্য কিন্তু পুষ্টিকর খাবার। বড্ড মমতাময়ী সেই সাদা কুকুর টা। দেখলেই মনে হয় জড়িয়ে ধরি। তাই না? কি ভাবে লেখেন এই সব কথা জানিনা । আমি বুঝতে পারছি ব্যাপার টা হয়ত। যদি বুঝি তবে আপনার এই গল্প বেশ গভীর। হয়ত আমার বিশ্লেষণ সবার মনোমত হবে না , কিন্তু আজকে না হলেও পরে এই গল্প অনেক অনেক লোকে পড়বেন।
13-06-2022, 04:05 PM
(13-06-2022, 01:17 PM)nandanadasnandana Wrote: রাতের নানান সময়ের এক এক টা সুর থাকে। কি জানি সেই সুর কি ভাবে আসে। কিন্তু থাকে। নতুন ছেলে পুলে রা বুঝবে না। কিন্তু পুরোনো মানুষ গুল সুর টা চেনে। যেমন সন্ধ্যে রাতে সব ঘরে ফেরার আওয়াজ, অনবরত সাইকেলের ক্যাঁচক্যাঁচ, গরুর গাড়ীর চাকার আওয়াজ, কোন দূরে বাড়ি ফেরার তাগিদে বারংবার বাসের হর্ন, পাখীগুনো খেয়ে দেয়ে পেট ভরে যাবার পরে শোবার তোড়জোড়, ডানা ঝাপটানি, দাওয়ায় বসে পড়তে থাকা কচিকাঁচা গুলোর কলরব, রান্না ঘরে সন্ধ্যে বেলায় মা ঠাকুমাদের শাঁখের আওয়াজ, রান্নার তোড়জোড়ের হাতা খুন্তীর ঝনঝনানি, কত বলব? এই সব মিলিয়ে একটা সুর তৈরি হয়। এই অংশটা জাস্ট অসাধারণ লাগলো। গ্রাম বাংলার রূপ, দিনের সবুজ রাতের মিউজিক সব মিলিয়ে যেন এক মায়াবী বাস্তব। যেখানে বাস্তবের কঠিন রূপের স্পর্শ আছে, সাথে আছে আধুনিকতার বেড়াজাল ভেঙে অনুন্নত কিন্তু অসাধারণ এক পরিবেশ। হয়তো ইহাই প্রকৃত উন্নতির সংজ্ঞা কিন্তু বর্তমানে নিজ স্বার্থে সেই সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। উঁচু বাড়ি, দামি গাড়ির আড়ালে ওই সবুজ রঙ যেন ধূসর হয়ে যাচ্ছে। যাইহোক এবারে আসি আজকের পর্বে - হীরা বাবু রহস্যময় চরিত্র। অনেক কিছু লুকিয়ে তাকে কেন্দ্র করে। ধীরে ধীরে প্রকাশিত হোক পদ্মের মতন। তবে এটা কিন্তু সত্যিই যে এই কাহিনীর মূল আকর্ষণ ওই ভয়ানক জীব। সে যতই হিংস্র অমানবিক পৈশাচিক বীভৎস আর ভুল হোক না কেন...... সেই এই গল্পের খলনায়ক হয়েও নায়ক। তাকে বাদ দিয়ে এই গল্প ভাবা সম্ভবই নয়।
13-06-2022, 06:22 PM
একটা চিন্তা মাথায় চলেই আসে ঘুরে ফিরে , এই সব মনি মুক্তোর জায়গা বোধয় এইসব ফোরাম নয়।
13-06-2022, 06:27 PM
(This post was last modified: 13-06-2022, 06:31 PM by nextpage. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
হীরের দর্শন দিয়ে গল্পের নতুন ফেজে প্রবেশ করালে আমাদের।
শুরুতেই লালির চোখ দিয়ে আমাদের হীরাকে দেখালে আর সেই সাথে লালির মুখ৷ থেকে যে প্রাঞ্জল বর্ণনায় হীরা কেন হীরা সেটার জানান দিলে সেটা দিল এফোঁড়ওফোঁড় করে দিলো। এমন করে বর্ণনা করতে গেলে নিশ্চয়ই নিজেকে ঐ লালির জায়গায় দাঁড় করাতে হয়েছে। অপূর্ব.... তবে ঐ স্পেস সাইন্স টা যখন এলো তখনি মাথাটা কেমন একটু ঘুরতে লাগলো, নিজেও সাইন্সের ছাত্র তাই এটার মারপ্যাঁচের দিকে যেতেই চাইছিলাম না। তবে হীরার সাদা কালোর বিশ্লেষণ টা সবকিছুর গন্ডি ছাড়িয়ে ভিতরের লুকানো সত্তা তে দাগ কেটেছে। হীরার প্রতি লালির টান টা গঁদ বাধা ছকে হবে না সেটা দিদির উপর আশ্বাস থেকেই বলছি। শেষে এসে সিধু বাবু তো সব হিসেব উল্টো করে দিলো, পরেশ বাবুকে না হয় সাদা নেকড়ে বাচিয়ে ছিল, কিন্তু এখানে তীর ধনুক হস্তে বালক??? হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
13-06-2022, 10:57 PM
(12-06-2022, 08:12 PM)ddey333 Wrote: তুমি ফিজিক্স এর প্রফেসর ... তবে আমিও ম্যাগনেট এর ওপরে অনেক পড়াশুনো করছি আজকাল চাকরির খাতিরে ... ছাড়ো। গল্পের রেটিং কমিয়ে দিলে দেবে। মানুষে পড়তে চাইলে পড়বে। কি আর করা?
13-06-2022, 10:58 PM
(13-06-2022, 02:14 PM)Bumba_1 Wrote: হীরা হীরা হীরা .. আজকের পুরো পর্ব জুড়ে হীরার উপস্থিতি যেন এখনো বিরাজ করছে আমার মনে। লালির সঙ্গে হীরার মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে কথোপকথন পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। হাহাহাহাহা। দেখা যাক কি হয় বুম্বা। সামনে আরো পনেরো টা পর্ব আছে। তোমরা পড়, ভালো বল বলেই লিখতে ভাল লাগে নানান বিষয়ে। |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 4 Guest(s)