Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(07-06-2022, 11:50 AM)nandanadasnandana Wrote: আগামী কাল থেকে শুরু হচ্ছে বাঘমুড়োর আতঙ্ক। আতঙ্ক থাকলে তার নিরসণ ও আছে। ঘটনা তৈরি হয়, জীবনের কম্পন থেকে , অসীম সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষী তে তৈরি হয় অনন্ত নিরসণ পথ। দেখা যাক কি হয়।
আবার না মোচড় লাগে
তিনটে গল্পই (including রূপান্তরিতা) যা মোচড় দিয়েছে উফফফফফ!! তবে লেখিকার সেই ক্ষমতা আছে বলেই না সেটা করতে পেরেছে অপেক্ষায় ♥️
Posts: 188
Threads: 0
Likes Received: 205 in 133 posts
Likes Given: 460
Joined: Feb 2021
Reputation:
11
দশটা ভালো মন্তব্যের মাঝে দু-একটা খারাপ মন্তব্য হয়তো থাকতেই পারে।আমরা সেগুলোকে গুরুত্ব না দিলেই হয়।এদেরকে গুরুত্ব দিলে এরা আরো বেশি করার চেষ্টা করে,যখন দেখবে কেউ ওদেরকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তখন নিজেই লজ্জা পেয়ে যদি এইসব একটু কম করে ক্ষতি কি।
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(07-06-2022, 12:07 PM)Baban Wrote: আবার না মোচড় লাগে
তিনটে গল্পই (including রূপান্তরিতা) যা মোচড় দিয়েছে উফফফফফ!! তবে লেখিকার সেই ক্ষমতা আছে বলেই না সেটা করতে পেরেছে অপেক্ষায় ♥️
না না মোচড়ের কাহিনী নয় এটা। একটু ভিন্ন স্বাদের গল্প। আশা করি ভালো লাগাতে পারব
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(07-06-2022, 12:31 PM)muntasir0102 Wrote: দশটা ভালো মন্তব্যের মাঝে দু-একটা খারাপ মন্তব্য হয়তো থাকতেই পারে।আমরা সেগুলোকে গুরুত্ব না দিলেই হয়।এদেরকে গুরুত্ব দিলে এরা আরো বেশি করার চেষ্টা করে,যখন দেখবে কেউ ওদেরকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তখন নিজেই লজ্জা পেয়ে যদি এইসব একটু কম করে ক্ষতি কি।
হ্যাঁ ভাই ঠিক বলেছ। আমি আর ওই সব ভাবতেও চাই না। কেউ যেন সব কমেন্ট গুলো কে মুছে দিয়েছে।
Posts: 188
Threads: 0
Likes Received: 205 in 133 posts
Likes Given: 460
Joined: Feb 2021
Reputation:
11
(07-06-2022, 02:03 PM)nandanadasnandana Wrote: না না মোচড়ের কাহিনী নয় এটা। একটু ভিন্ন স্বাদের গল্প। আশা করি ভালো লাগাতে পারব রোমান্স আর কিছু দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি থাকবে তো?
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 12:55 AM)muntasir0102 Wrote: রোমান্স আর কিছু দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি থাকবে তো?
দেখা যাক। কি হয়। হে হে
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
বাঘমুড়োর আতঙ্ক
(এই গল্পের বেশ কিছু রেফারেন্স মহাভারত থেকে নেওয়া। নানা পুরাণ ইতিহাস থেকে নেওয়া। মিল আছে। সেটা এই কাহিনীকে প্রতিষ্ঠা করতে করা। নিছক কাহিনী হিসাবে নেওয়াই ভাল। এর সাথে সত্যতার কোন সম্পর্ক নেই। )
অনেক সময়, বহু কাহিনী বা গল্প আমাদের ভিতর দিয়ে চোরা স্রোতের মতন , প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলে। হয়ত কোন সত্যি ঘটনা, কোন নায়ক, অন্তর্মুখী স্রোতের টানে, কল্পকাহিনী হয়ে বা সেই নায়ক মহানায়ক হয়ে আমাদের মধ্যে বিরাজ করে। আমি চিরকাল ই ভেবেছি, আমরা কোন প্রতিমা বা মূর্তি কে পুজো করি না। সেই প্রতিমা বা মূর্তির ভিতরে যে ত্যাগ, সাহস, ভালোবাসা ইত্যাদি নানান গুণের কাহিনী লুকিয়ে আছে, আমরা তার পুজো করি। হয়ত না জেনেই করি পুজো। কিন্তু তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে সেটাই যেটা আমি উল্লেখ করলাম। সেই কাহিনীর ভিতরে যে সব নায়ক বা নায়িকা থাকেন, তাদের নানান গুণাবলী কে আমরা পুজো করি। নায়কের বীরত্ব কে নয়, পুজো করি সেই বীর হবার জন্য তার অধ্যাবসায় কে। বা সেই বীর এর জগতের কল্যানে নিজেকে ব্রতী করার সিদ্ধান্ত কে। নায়িকার সৌন্দর্য্য কে নয়, তাঁর সন্তান বা স্বামীর ভিতরে আগুন জ্বালিয়ে দেবার মাহাত্ব্য কে পুজো করি। কোন বৃদ্ধের জ্ঞান কে নয়, সেই বৃদ্ধের সংসাররূপ বিশাল ঘানি কে ক্ষমা ও মানসিক শক্তির মাধ্যমে , সেই সংসার কে টিকিয়ে রাখার প্রক্রিয়া কে পুজো করি। শিব কে নয় পুজো করি তাঁর সংহারতার উদ্দেশ্য কে। ব্রহ্মা কে নয় পুজো করি তাঁর সৃজনশীলতা কে। নারায়ন কে নয়, পুজো করি বিশাল সৃজন কে রক্ষা করা এবং ভালবাসায় নত হবার বিশেষ গুণ কে। সরস্বতী কে নয়, পুজো করি তাঁর শিক্ষা নেবার এবং দেবার গুণ কে। লক্ষী নয়, পুজো করি তাঁর সম্পদ স্বরূপ কে। যাতে করে আমরা ভাবতে পারি , সম্পত্তি নয় সম্পদ হলো জীবনের আসল।
যাই হোক এই গল্প বিশাল কিছু না। তেমন ই এক নায়ক কে নিয়ে লেখা যে বঞ্চিত হয়েও কাঁদে নি। নিজের কাছে যা পেয়েছে সেই নিয়েই বড় হয়েছে। লৌকিক আলৌকিকের মিশেলে বানানো এই গল্প কাল্পনিক। কোন মিল নেই বাস্তবের সাথে। কিন্তু কাল্পনিক কাহিনী ও বাস্তবের রাস্তায় চলে। বা উলটো টা। কখনো কখনো বাস্তব কল্পনার থেকেও অতিলৌকিক হয়। কাল্পনিক চরিত্র কে ও হাঁটতে চলতে হয়। তাকেও ফিজিক্স মেনে চলতে হয়। কারন জ্ঞান তো শ্বাশত। কেউ যদি উড়তেও পারে তাকেও, গ্রাভিটি কে মেনেই উড়তে হবে। তাতে তার শক্তিক্ষয় হবে মারাত্মক, তাতে সে সুপারম্যান ই হোক না কেন? এখন তো দেখি প্রতিটা সুপারম্যান গল্পেও ব্যাখ্যা দেওয়া হয় কেন সুপারম্যান আমাদের পৃথিবী তে উড়তে পারে। সেটা শ্বাশততা মেনেই জ্ঞান দেয় আমাদের ওরা। তাই কাল্পনিক নায়ক কেও ভালবাসতে হয়, খেতে হয়, প্রাত্যহিক কাজ ও করতে হয়। কাজেই গল্প যতই কাল্পনিক হোক না কেন, তাঁর ক্রিয়া এবং ক্রীড়া কোন টাই জ্ঞান এর বাইরে হয় না। এ গল্প ও তেমন ই এক গল্প। আমাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা নানান গুণের গল্প, যাদের আমরা পুজো করি আর দূর থেকে ভাবি, ইশ যদি আমিও পেতাম এমন ক্ষমতা। শুরু হয় অধ্যাবসায়। মানুষ ভগবানে পর্যবাসিত হয় সেই অধ্যাবসায়ের পরে। এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি আছে আমাদের চারিপাশে। কেন, আমরা মহাপ্রভু কে দেখিনি? দেখিনি, কেমন কিশোর বয়সেই, সেই সময়ের বিশাল বিশাল পন্ডিত দের তর্ক যুদ্ধে ধরাশায়ী করে এক অমিত প্রকান্ডতায় নিজের আত্মপ্রকাশ করেছিলেন? তৎকালীন নবাব হুসেন শাহ, নিজের প্রাসাদে কাউকে দেখতে না পেয়ে, ছাদে উঠে দেখেন, কি বিশাল মানুষের মেলা নিয়ে এগিয়ে চলেছেন মহাপ্রভু মানুষের গান গাইতে গাইতে, কৃষ্ণ প্রেমে বিভোর হয়ে। এ তো গেলো মধ্যযুগীয় কথা। তারপরে মুঘল দের সময়ের তানসেন? ইতিহাস সাক্ষী আছে তার গুণের মাহাত্ব্যে সমগ্র ভারত কেমন করে মগ্ন হয়েছিল। বা আধুনিক যুগের উস্তাদ বিসমিল্লাহ খান। কে না তার সানাই শুনে চোখের জল না ফেলেন নি? খেলায় মারাদোনা, মেসি, পেলে ,শচীন, ব্র্যাডম্যান, পকেট হারকিউলিস, টাইসন, রবি ঠাকুর, নজরুল, সুকান্ত আর কত নাম করব? এঁরা সবাই ভগবান তূল্য গুণ নিয়েই জগতে বেশ কিছু সময় কাটিয়েছেন বা কাটাচ্ছেন।
এখানে বিতর্ক আসবে অনেক, তাই বলে রাখি, ভগবান মানে আমরা ভাবি সর্বগুণসম্পন্ন একজন কেউ। কিন্তু বেসিক পার্থক্য হলো, গুণ মানুষের কাজে না এলে, তখন ভগবান না হয়ে তাকে অসুর গোত্রে আমরা ফেলে দি। বস্তুত দেখতে গেলে সাধারণ মানুষ ই ভগবান আর অসুরের মধ্যেকার একটা লাইন। সম গুণসম্পন্ন রাবণ আর হনুমান। একজনের শক্তি অসীম অন্যজন বরপ্রাপ্ত ছিলেন কারোর বধ্য হবেন না। একজনের প্রাণ কাঁদত অন্যের দুঃখে, আর অন্যজন অন্যের দুঃখ কেই নিজের শক্তি বানিয়েছিলেন। একজনের শক্তি বাঁধা ছিল করুণার বাঁধ দিয়ে আর একজনের শক্তি স্বর্গ মর্ত্য পাতাল এক সাথে গেঁথে ফেলেছিল। দুজনাই এক প্রকার অমর। তথাপি একজন অসুর অন্য জন আমাদের কাছে ভগবান। কারণ, একজন মানুষের কল্যানে ব্রতী ছিলেন অন্যজন নিজের সমৃদ্ধি দেখেছেন শুধু। অদ্ভুত লাগে। সম ভাবে পারদর্শী হয়েও একজন আমাদের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর, নিজের কপিধ্বজে চড়ে অঞ্জলীক কে ধনুকে জুড়ে আকর্ণ ছিলা টেনে অপেক্ষা করছেন শত্রুর, আর অন্য জন কে চোখের জল নিয়ে, নিজের পূর্ব কর্ম মনে করতে করতে ভয়ঙ্কর অঞ্জলীক অস্ত্রের প্রহর গুনতে হচ্ছে। বেশী পারদর্শী হয়েও একজন ভাঙ্গা উরু নিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনলেন আর অন্য জন , পাঁচ ভাই আর স্ত্রী কে নিয়ে মহাপ্রস্থানে রওনা দিলেন।
ক্ষমতা থাকা গুরুত্ব পূর্ণ নয়। বা ক্ষমতা করায়ত্ব করাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, সেই ক্ষমতার ব্যবহার। সেই ক্ষমতা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত। একটা সিদ্ধান্ত সাধারণ নর কে নারায়ণ মানায় আর সেই নর কে অসুর বানায় সেই সিদ্ধান্তই। যাই হোক গল্পের উপজীব্য এই সব কথা নয়। বা এটা একটা নেহাত ই গল্প। কিছুই হয়ত নেই এই গল্পে। আপনাদের যদি ভালো লাগে তবে তো সোনায় সোহাগা আমার কাছে।
শুরু প্রথম পর্ব
জঙ্গল শেষ হলেই গ্রামের রাস্তা শুরু। রাস্তা মানে কোন পাকা রাস্তা নয়। আবার পায়ে চলা সামান্য সুতো ও নয়। মোটামুটি গরুরগাড়ি চলতে পারে এমন রাস্তা। রাস্তার দুই দিকে ধুলো বালি আর মাঝে ঘাসের লম্বা রেখা চলে গেছে যতদুর রাস্তা দেখা যায়। দুই দিকে জমা করা কুচো পাথরের ছোট ছোট ঢিপি। হয়ত পাকা করার প্রচেষ্টা হয়েছিল কোন এক কালে। রাস্তার দুই ধারে ছোট ছোট গুল্ম বা একটু বড় গাছের সারি। কুল ,বাতাবী লেবু, ছোট ছোট ফুল গাছ এর সারি। দেখতে গেলে কাঁটা জাতীয় গুল্মের সংখ্যাই বেশী। দুই ধারে ছোট ছোট পুকুরের মেলা। পদ্ম শালুকে ভর্তি থাকে। বর্ষাকালে কুল ছাপিয়ে পুকুরের জল রাস্তায় উঠে পরে। রাস্তা টা জঙ্গলের শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে চলে গিয়েছে প্রায় গ্রামের শুরু অব্দি। আর জঙ্গলের ভিতরে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। শীতে ন্যাড়া ,বর্ষায় কর্দমাক্ত আর অন্য সময়ে ঘন ঘাসে ঢাকা। বাঘমুড়োর জঙ্গল নামে কুখ্যাত এই জঙ্গল। আর গ্রামের নাম বাঘমুড়ো। এখন গ্রামের নামে জঙ্গলের নাম হয়েছিল নাকি, জঙ্গলের নামে গ্রামের নাম বলা মুশকিল। তবে ঐতিহাসিক রা বলেন গ্রামের নামে জঙ্গলের নাম হয়েছিল। সেও না জানি কত পুরোন ইতিহাস তা কেউ বলতেও পারে না।
কথিত আছে এই দুইশত বর্গ কিমি জুড়ে থাকা জঙ্গলে এক কালে বাঘের উৎপাত বেশ ছিল। তবে কালের থাবায় বাঘ এখন আর নেই। তাও আছে কিনা কেউ বলতে পারে না।জঙ্গলের মাঝ বরাবর গরুর গাড়ি চলা রাস্তা দিয়ে দিনের বেলায় ভয়ে ভয়ে মানুষ চলাচল করলেও সুজ্জি মামা একটু ঢলে পরলেই কেউ আর ওই দিক মাড়ায় না। এই জঙ্গল কুখ্যাত কেন, তা এই পথিক দের জিজ্ঞেস করলেই ভাল হয়। ভয়ের পরিমাপ টা বোধকরি ভাল বোঝা যায়। কিন্তু আমি যা জানি সেটা বললেও খুব কম কিছু হবে না। জঙ্গলের ভিতরে খুব ঘন গাছের সারি নেই। বরং একটু ফাঁকা ফাঁকা। মাঝে মাঝেই বিশাল বিশাল জলা। সেই জলায় জল বেশী থাকে না। হয়ত কোমর সমান জল। কিন্তু সমস্যা হলো এই জলার পাঁক। সে এক ভয়ানক দলদল। একবার পরলে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসা অসম্ভব। জলার মধ্যে দুই মানুষ সমান উঁচু ঘাসের ঘন পর্দা। যতই গভীরে যাওয়া যায় ঘাসের ঘনত্ব বাড়তে থাকে। তখন তলায় পাঁক আর গায়ে তলোয়ারের মতন ঘাসের ধারালো গা। জলে কুমীর ডাঙ্গায় বাঘের মতন, ক্ষতবিক্ষত হয়ে পাঁকে আটকে মৃত্যু হয় ওখানে আটকে পরা মানুষ বা জীব জন্তুর।
এ এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। কথায় বলে যদি আমরা কোন জায়গার মাহাত্ব্য আগে থেকে জেনে গিয়ে থাকি, তবে ভয় বা ভক্তি আসা টা স্বাভাবিক। যেমন আমরা যদি জানি, অমুক জায়গায় অমাবস্যায় রাতে গেলে গা ছম ছম করে। সেইটা জানার পরে সাধারণ সময়েও লোকের গা ছমছম করা স্বাভাবিক। কারন সেই জায়গা এবং সেই জায়গার মাহাত্ব্য আমাদের মন কে অনেকাংশে অধিকার করে রাখে। ভারী পরিবেশ সাধারণ সময়েও মানুষের মনের মধ্যে অলীক কল্পনার জন্ম দেয় আর পরিস্থিতির গুরুত্ব মাথার মধ্যে আঁকা হয়ে থাকে। কিন্তু অজানা মানুষ অজানা জায়গায় গিয়ে এই ভয় টা কম ই পায়। গা ছমছমানি টা থাকে না। কিন্তু এই জলার ব্যাপার হলো দিনের বেলাতে কোন অঘটন না ঘটলেও , একটা দম বন্ধ করা ভয় চেপে বসে থাকে পরিবেশে।কেমন একটা অজানা শূন্যতা। চমচমে রোদ্দুরেও মনে হয় বড় বড় ঘাসের ঘন পর্দার ওপার থেকে এক জোড়া চোখ যেন অনবরত দেখে চলেছে পথিক কে। বার বার ঘাড় ঘুরিয়ে পথিক তখন দেখে। দুইদিকের জলার জলে কার যেন , অতি ধীরে জল কেটে কেটে, পথিকের পাশে পাশে সমান্তরালে যাবার শব্দ। খুব ধীরে যেন কেউ নজরে রাখছে পথিক কে। তাকিয়ে দেখলে পথিক দেখে, কেউ যেন আসছিল সন্তপর্নে , কিন্তু সহসা সে অদৃশ্য হয়ে গেছে। দেখে বোঝাই যায় জলের মধ্যে দিয়ে কোন ভারী কিছু এগিয়ে আসার পরে জলের আলপনা, জলার পাড়ে রাস্তায় এসে শনৈঃ শনৈঃ ধাক্কা মারছে। তখন প্রচন্ড গরমেও, জ্বর আসার মতন, শরীরে ঠাণ্ডার কাঁপুনি আসে। শিরশির করে ওঠে ব্রহ্মতালু। উফ সে এক ভয়ানক ব্যাপার। এখানকার লোকেরা জানে, তাই একলা নয়, দল বেঁধে জলা আর জঙ্গল পার করে। এতো খানি ভয় নিয়ে এই রাস্তা কেউ পার করে না।
আর রাতের বেলায় তো কথাই নেই। কোন বিশেষ তিথি না। এই জলার আবহাওয়া রাত হলেই বদলে যায়। অসম্ভব শীতলতা বিরাজ করে জলা আর জলা চিরে যে রাস্তা বয়ে গেছে তার উপরে। জলার উপরে পুরু কুয়াশার আস্তরণ পরে যায়। ঠান্ডার ধোঁয়া রাস্তা অব্দি উঠে আসে। এতো গাছ পালা, কিন্তু সকলেই যেন স্থির হয়ে থাকে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় কোন পটে আঁকা সাদা কালো ছবি। চাঁদ থাকলে মনে হয়, কেউ লাল রঙ করে দিয়েছে চাঁদের গায়ে। রক্তপিপাসু পিশাচের মতন লাগে তখন আমাদের প্রিয় চাঁদ খানা কে। মনে হয় রাস্তার দুই ধারে অন্ধকারে ওঁত পেতে আছে অগনিত বিপদ। জলার জল চাঁদের আলোয় লাল প্রতীত হয়। মনে হয় হাজার হাজার বছরের, হত্যার সব রক্ত জলের সাথে মিশে এমন লাল রঙ ধারণ করেছে। কিছু হবার দরকার পরে না, ওই হেন পরিস্থিতি তে কোন অভাগা পথিক এমনিতেই মৃত্যু বরণ করে। নরক তো কেউ দেখিনি আমরা, কিন্তু পৃথিবীর বুকে এই ছোট্ট নরকের ভয়াভহতা কম কিছু না।
এই জঙ্গলের নাম বাঘমুড়ো হবার কারন হিসাবে অনেকে অনেক কথা বলে। আমিও জানি কিছু কিছু। আমি তো আজ থেকে না, এই গ্রামের সেই শুরু থেকে আছি। এই গ্রামের ধুলোকনায়, এই গ্রামের মানুষের মনে, এই গ্রামের গাছে গাছে, পাখীদের কলতানে, বাচ্চাদের কান্নায়, মায়ের আদরে আমি আছি। আমি আছি শ্মশানে, আমি আছি বুড়োগাছে ভালো আত্মা দের সাথে, আমি আছি, প্রতিটা মায়ের চিন্তায়, বাপের শ্রমের মধ্যে লুকিয়ে। যাই হোক আমার কথা থাক, বরং এই গ্রামের কথা বলি।
মহাভারতের সময়ে রাজসূয় যজ্ঞ করেছিলেন সম্রাট যুধিষ্ঠির। সেই সময়ের এক মর্মান্তিক কাহিনীর দায় ভার বয়ে নিয়ে চলেছে এই গ্রাম। তবে সে এক দেখার মতন যজ্ঞ ছিল বটে। যারা জানেন না তাদের বলি, এই ঘটনা পান্ডব দের জতুগৃহের পর, বক রাক্ষস কে বধ করে , পাঞ্চাল এ গিয়ে পাঞ্চালী কে বিয়ে করার পরে হস্তীনাপুরে ফিরে এসে, রাজ্য দুই ভাগ হয়ে যাবার পরের ঘটনা। পান্ডব রা , বিশেষ করে অর্জুন, কৃষ্ণের সহায়তায় খান্ডব বন দহন করে সেই ছাই এর উপরে ইন্দ্রপ্রস্থ স্থাপনা করে। এই যজ্ঞ তার সমসাময়িক ঘটনা। ভারতবর্ষের যেন কোন রাজ্য বাদ ছিল না, যেখান থেকে রাজা, রানী এবং পরিষদ রা আসেন নি ইন্দ্রপ্রস্থে। যদদূর খবর পৌঁছেছিল, তত দূর থেকেই ভিক্ষুক দের আগমন হয়েছিল সেই যজ্ঞে। হিমালয় থেকে শুরু করে , সমুদ্রের অতলতলে তপস্যারত প্রায় সকল মুনি ঋষি দের আগমন হয়েছিল। স্বয়ং ব্যাসদেব এসেছিলেন বহু মুনিঋষি সহ যজ্ঞের পূন্য অর্জন করতে। আকাশ থেকে দেবতারা দেখছিলেন এই যজ্ঞ, সাক্ষী হতে চাইছিলেন সেই মহাযজ্ঞের। আর ভারতের সমগ্র বীর এক ডাকে উপস্থিত হয়েছিল সেই যজ্ঞ সামনে থেকে দেখতে।
এই মহাযজ্ঞ পান্ডব দের স্বর্গীয় পিতার ইচ্ছানুসারে হয়েছিল। যজ্ঞের প্রাক কালে কম ঝঞ্ঝাট পোয়াতে হয় নি পান্ডব দের। সব থেকে বড় কাঁটা ছিল মহারাজ জরাসন্ধ। কংসের শশুরমশাই ছিলেন উনি। তখন ভারতের একমাত্র হস্তীনাপুর ছাড়া অমন সাগরসম সেনার বিপক্ষে দাঁড়ানোর ক্ষমতা, কারোর ছিল না। জতুগৃহ ঘটনার পরে, পান্ডবহীন হস্তীনাপুরের বুক ও বুঝি কাঁপত জরাসন্ধের সাথে সমুখ সমরের কথায়। এই হেন জরাসন্ধ কে সমুখ সমরে পরাস্ত করা সম্ভব নয় বুঝেই, ছলে, দ্বৈত যুদ্ধে ডেকে পঞ্চদশ দিনে জরাসন্ধ কে বধ করেছিলেন ভীমসেন। আর রিষভের কৃপা তে মুক্তি পেয়েছিল অগুনতি রাজা, যারা বন্দী ছিলেন জরাসন্ধের কারাগার এ। কাজেই সেদিনে পান্ডব দের ভালোবাসা এবং বশ্যতা স্বীকার করেছিল সমগ্র ভারত। স্বয়ং দানরাজ কর্ণ ও ভীমের পরাক্রমে , ভালোবেসে অনেকানেক উপঢৌকন দিয়েছিলেন যজ্ঞের প্রয়োজনে। দেব, দানব, দৈত্য, রাক্ষস, যক্ষ, নাগ কেউ ই বাকী ছিলেন না আসতে। রাক্ষস কূল এবং নাগেরা তো আত্মীয় ছিলেন পাণ্ডবদের।
স্বয়ং রিষভ, আমার কৃষ্ণ, পদ সেবা করে দিয়েছিলেন অভ্যাগত মুনি ঋষি দের। তার সেই সেবক মুর্তি দেখে গলে গিয়েছিলেন তৎকালীন বুদ্ধিজীবি রা। ঢের ঢের আশীর্ব্বাদে ভরিয়ে দিয়েছিলেন পান্ডব এবং রিশভ কে। যজ্ঞের জন্য উপস্থিত শত সহস্র পুরোহিত এবং ঋষি রা ক্রমাগত মন্ত্রোচ্চারণে সমগ্র রাজ্য কে যেন এক দিব্য আবহাওয়ায় ঢেকে দিচ্ছিলেন। খান্ডবপ্রস্থের গহীন জঙ্গল কে কেটে তৈরি ইন্দ্রপ্রস্থের উর্বর জমির স্বাদ নিতে, সেখানে বসবাস করতে, ভারতের বহু জায়গা থেকেই সাধারণ মানুষ ভিড় করছিলেন ইন্দ্রপ্রস্থে। বহুদিন খান্ডবপ্রস্থের জঙ্গলে একাকী থেকে,পান্ডব রা জেনে গেছিলেন, রাজ্যে, মানুষের কত প্রয়োজন। স্বাগত জানাচ্ছিলেন সেই সকল ব্যক্তি বর্গ কে নিজের রাজ্যে স্বয়ং কনিষ্ঠ পান্ডব। হ্যাঁ সে এক দেখার মতন যজ্ঞ ছিল বটে।
সেদিনে, পিতামহ ভীষ্মের পরামর্শে , আর ধর্মরাজের আদেশে, শ্রী কৃষ্ণ কে নির্বাচিত করা হয়েছিল, উপস্থিত সকল মহারাজার মধ্যে প্রধান পুরুষ হিসাবে অর্ঘ্য দেবার উদ্দেশ্যে। না না আমার আপত্তি ছিল না। অমন যুগপুরুষ, প্রধান হবেন না তো কে হবেন। কমনীয় হয়েও যিনি ছিলেন অজেয়। দেব, দানব, আদিত্য, মানব, রুদ্র কেউ তাকে কোন দিন পরাজিত করতে পারে নি। না জ্ঞানে পরাস্ত করতে পেরেছিল না পেরেছিল সামর্থ্যে। জ্ঞানের আধার হওয়া সত্ত্বেও যিনি ছিলেন নব্য বালকের মতন সরল। সবাই কে ভালোবেসেও যিনি ছিলেন ভালবাসা থেকে অনেক দূরে। মায়ের সর্বাধিক আদরের হয়েও যিনি ছিলেন সবার আদরের। রাজা না হয়েও যিনি সম্রাটের প্রণাম-যোগ্য ছিলেন। মধুর মতন বচন দিয়েও যিনি মহাবিশ্ব শাসনে রাখতেন। যার সামান্য আঙ্গুলের চাপে ধরা বিদীর্ন হয়ে যেত।সামান্য মাথার বলিরেখা সহস্র আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের মতন ক্রোধের জন্ম দিত। যার বুদ্ধিতে , কৃপা তে মরুভূমি তেও সবুজ সোনা ফলত, যার কৃপাদৃষ্টি তে খান্ডবপ্রস্থের মতন গহীন জঙ্গল ও আজকে বিশাল অভিজাত জনপদে পরিনত হয়েছে, সেই সকল গুনের আধার যিনি সেই পুরুষ প্রধান হবেন না তো কে হবেন। আমার কেন ওখানে উপস্থিত কারোর তো আপত্তি ছিল না।
আপত্তি ছিল শুধু একজনের। তার নাম ছিল শিশুপাল। শিশুপালের আপত্তি ছিল। বড় অহংকার ছিল শিশুপালের। শার্দুলের মতন গর্দান ছিল তার। ভরসা ছিল নিজের উপরে। আজীবন অজেয় শিশুপাল অহংকারের বশে শুধু মোহন কেই অপমান করল না, করল সেখানে উপস্থিত সকল বিজ্ঞজন কে। ভীষ্ম কে অপমান করল নপুংসক বলে। পঞ্চপাণ্ডব কে শাপিত বলে অপমান করল। সতী কুন্তী কে বাজারের বলতেও দ্বিধা করল না শিশুপাল। মহারানী পাঞ্চালী কে বেশ্যা বলে ফেলল শিশুপাল। আর রিষভ কে তো অপমানের উপরে অপমান করতে ছাড়ল না।চোর, কুচক্রী, শয়তান, কৃতঘ্ন কত কিছুই না বলে ফেলল নিমেষেই শিশুপাল। অথচ এই শিশুপাল হলেন কৃষ্ণের পিসির ছেলে। কম বীর ছিল না শিশুপাল। জরাসন্ধের মতন বিশাল রাজা , শিশুপালের মতন রাজা কে নিজের সেনাপতি রাখতে পেরে ধন্য ছিলেন। চেদী রাজ শিশুপাল আক্ষরিক অর্থেই মহান বীর দের মধ্যে একজন ছিলেন সেই সময়ে।
বারংবার মানা সত্ত্বেও যখন শুনল না মানা তখন পদ্মনাভ তাকে সাবধান করেছিলেন। কিন্তু সে অহংকারী শুনবে কেন? সে তো শুধু মোহনের বাঁশী দেখেছিল। শুনেছিল কেমন করে সে গোকুলে বাঁশী বাজিয়ে গোপাল হয়েছিল। যে আঙ্গুল বাঁশী তে মোহন সুরের ঝংকার তুলত, সেই আঙ্গুল যে সুদর্শনের মতন ভয়ানক অস্ত্র কেও বাগ মানায় সে খবর সেই দুষ্ট জানত না। মানত না বালক অবস্থাতেই গোবর্দ্ধন পর্বত কে কড়ি আঙুলে, সামান্য তৃণর মতন তুলে সমগ্র বৃন্দাবন কে রক্ষা করেছিলেন আমার মধুসূদন। বিশাল রাজসভা। সেই সভামধ্যে বাঘের মতন গর্জন করছিল শিশুপাল। আর আমার কৃষ্ণ খুঁজছিলেন চাকা। এক খানা বিশাল চাকা। ভেবেই নিয়েছিলেন, চাকা সমগ্র মানব সভ্যতা কে প্রাচীন কাল থেকে এই সভ্য কালে নিয়ে এসেছে। চাকাই সেই জিনিস যা মানুষ কে স্থির থেকে গতিবান করেছে। কাল এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে চাকাই মানুষ কে সভ্য করেছে, তাই এই চক্রের ফাঁদেই, এই শিশুপাল নামক অসভ্য দৈত্য কে চিরকালের জন্য শুইয়ে দিতে হবে। চাকাই পারে এই অসভ্যতা কে সভ্যতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিতে।
হয়ত বা দেখেও ফেলেছিলেন তিনি, স্ফটিকের বিশাল সভার গাত্রে প্রথিত আছে প্রভুত বিশাল বিশাল রথচক্রের কেন্দ্র। কেই বা বলতে পারে, হয়ত ময় দানব এই দিনের জন্যেই সভায় সৌন্দর্য্যের জন্য সেই সুবিশাল চক্র গুলি কে সুসজ্জিত রেখেছিল। পলক ফেলার আগেই গরুড়ের থেকেও দ্রুত লাফ দিয়ে, স্ফটিকের মসৃণ সভাগাত্রে কোন আলৌকিক বলে যেন আটকে গেলেন কৃষ্ণ। তার পদভারে যেন অমন শক্তিশালী সভা ও কাঁপতে শুরু করেছিল। কে বলবে কৃষ্ণের, অমন সুন্দর দুই পদযুগলের এমন ক্ষমতা? বেচারী শিশুপাল। ধারনাতেও আসে নি, কৃষ্ণ জগতের ভালর জন্য সব কিছু করতে পারেন। যেমন পারেন, উন্নতির জন্য, রণছোড় বদনাম নিয়ে মথুরা ত্যাগ করতে, ঠিক তেমন ভাবেই পারেন, জগতের ভালর জন্য নিজের পিসির ছেলে শিশুপাল কে বধ করতে। তারপরে ওই অবস্থাতেই, শ্রী কৃষ্ণ, সভা গাত্রে ঝুলিয়ে রাখা বিশাল রথচক্র বাম হাতে দেওয়াল থেকে নামিয়েই ছুঁড়ে দিলেন শিশুপালের দিকে তীব্র গতিতে। শত শত বাজের মতন হুহুংকারে সেই চাকা গর্জন করতে করতে, শিশুপালের দিকে ছুটে গেল কালের রূপক সেই বিশাল চাকা। যেন স্বয়ং মহাকাল বিনাশের জন্য গর্জন করতে করতে ছুটে যাচ্ছে শত্রুর দিকে। বিশাল চাকা, শিশুপালের বাঘের মতন শক্তিশালী গ্রীবা কে , সামান্য কলাপাতার মতন কুচ করে কেটে শিশুপাল কে মস্তকহীন করে দিল পলকেই। তারপরে সজোরে গিয়ে ময় দানবের বানানো কঠিন সভাগাত্র কেটে গেঁথে গেল রক্ত মাখা সেই বিশাল চাকা। আগুন ছিটকে বেরিয়ে এলো স্ফটিকের সভাগাত্রে কেটে বসার সময়ে। শিশুপালের কাটা আর থেঁতো হয়ে যাওয়া মাথা কোথায় উড়ে গেল কে জানে। সভামধ্যে পরে রইল মস্তকহীন দেহ। সভামধ্যে একটা কালহীন নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিল তখন।
মজার ব্যাপার, একটাই সমুদ্র থাকে। সেখানে কেউ স্নান করে মজা নেয়, কেউ গভীরে ডুব দিয়ে, তো কেউ মনিমুক্তা খুঁজে। তেমন ই একটাই ঘটনা। নানান জনের মধ্যে নানান ভাবে দাগ কেটে গেল। অর্জুন ছাড়া চার পান্ডব সহ কুন্তী, পাঞ্চালী, সুভদ্রা শিশুপালের শাস্তি তে, কাটা দেহ দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ল একেবারে। ভীষ্ম, দ্রোন,কৃপ, ব্যাসদেব সহ মুনি ঋষি রা হাত জোর করে মহাকালের সামনে দাঁড়িয়ে রইলেন ভক্তি তে। শকুনি দুর্যোধনের চোখে ভয়ের আভাস। শিশুপালের মতন একটা মহারথী কে যে কৃষ্ণ চোখের পলকে হত্যা করতে পারে, সেই কৃষ্ণ পান্ডব দের বন্ধু? ভয় হওয়াই স্বাভাবিক। কর্ণ প্রায় কিংকর্তব্য হয়ে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে। উপস্থিত রাজা মহারাজাদের চোখে সম্ভ্রম। অর্জুনের চোখে ভালবাসা নিজের সব থেকে কাছের সখার জন্য। মুখে সরল হাসি তার। সভার মধ্যে সেই অসীম নীরবতাই প্রমাণ করে দিয়েছিল, সেই সময়ের অবিসংবাদিত নায়ক টি হলেন শ্রী কৃষ্ণ।
আজকের এই গল্পের শুরু এখান থেকেই। সেই দেহ দাহ সৎকার করার যোগ্য রইল না আর। সুদর্শন চক্রের ক্রোধে পতিত শিশুপালের দেহ কে সৎকার করতে বাড়ির লোকেও রাজী হলো না। ভাসিয়ে দেওয়া হলো গঙ্গায়। মহাবীর শিশুপালের সেই মস্তকহীন দেহ কে মা গঙ্গা ও শোধন করতে পারলেন না। গলিয়ে পচিয়ে মিশিয়ে নিতে পারলেন না পাপী শিশুপালের দেহ কে নিজের অতূল জলরাশির মধ্যে। গঙ্গার জলরাশি কোন নিয়তির টানে এই দেহ কে নিয়ে চলে গেল এই শান্তিপ্রিয় গ্রাম বাংলার দিকে। বিশাল দেহ আটকে গেলো নদীর উপরে প্রায় শুয়ে পরা বিশাল বৃক্ষের জল-নিমজ্জিত ডালে। অপ্রাপ্তি, লোভ, হিংস্রতা, আর অনেক জিঘাংসা নিয়ে শিশুপালের মাথা হীন দেহ রয়ে গেল এই জঙ্গলেই। খুঁজে বেরাতে লাগল একটা মাথা।
The following 20 users Like nandanadasnandana's post:20 users Like nandanadasnandana's post
• Aanwar, ajrabanu, Atonu Barmon, Baban, boro bara, Boti babu, bourses, Bumba_1, ddey333, Jupiter10, LajukDudh, nandini20002022, nextpage, ray.rowdy, samael, sarkarrumkisarkar, Somnaath, sudipto-ray, Tiger, WrickSarkar2020
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,458 in 929 posts
Likes Given: 2,453
Joined: Mar 2022
Reputation:
512
গল্পের শুরুতেই যে বয়ান রেখেছেন সেটাতেই মজে গিয়েছিলাম।
তারপরে গল্পশুরু করে আবার সাথে নিয়ে চলেগেলেন সহস্রাধিক বছর আগের সময়ে।
যতটুকু টের পাচ্ছি এমন টাইম ট্রাভেলেই কাটাতে হবে এই গল্পে।
দিদির লেখা আর মনে গাথবে না সে কি হয়।
তবে কথা একটাই বুকে মুচড় গুলো ঘনঘন দিও না বড্ড ব্যাথা হয়।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
কি দুর্দান্ত শুরু এই মহান কাহিনীর! খুবই উচ্চমানের লেখা তো অবশ্যই। যেভাবে জীবন ও প্রকৃতির মেল বন্ধন তুলে ধরা হয়েছে সাথে অহংকার ও রিপুর প্রকোপ ও মুক্তির পথ এর ঠিকানা তুলে ধরা হয়েছে। কখনো হোক সে মুক্তি স্বইচ্ছায় কিংবা যোগ্য জবাব দেবার জন্য কেউ না কেউ উপস্থিত হবেই। দোষ গুন মিলে মানব সভ্যতা কিন্তু সেটা বিকাশের পথে যাবে নাকি ধ্বংসের পথে সেটা যেন প্রকৃতিই বিচার করুক। তুচ্ছ মানব নয়।
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,216 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
08-06-2022, 03:24 PM
(This post was last modified: 08-06-2022, 03:25 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অন্যায় কুরুক্ষেত্রে ঝরলো কৌরবদের রক্ত
অধর্মের জয়গান গেয়ে ঘুমায় কুরুক্ষেত্র
দ্রৌপদীর ইন্ধন জুড়ে চাতুরির জমা ক্লেদ
যুধিষ্ঠির ভীম অর্জুন নকুল সহদেব
জাতিস্মরের ইস্তেহারে এবার লজ্জা মোচন
এক মহাকাশ ঘৃণা বুকে নিয়ে .. ইতি দুর্যোধন
এই কথাগুলো শুনে আমাকে ভিলেন মনে হচ্ছে তো? একবার দুর্যোধনের point of view থেকে মহাভারতের সমস্ত ঘটনা দেখার চেষ্টা করো .. তাহলে হয়তো বুঝতে পারবে।
প্রথম পর্বের জন্য এটাই আজকের review আমার তরফ থেকে।
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 03:24 PM)Bumba_1 Wrote: অন্যায় কুরুক্ষেত্রে ঝরলো কৌরবদের রক্ত
অধর্মের জয়গান গেয়ে ঘুমায় কুরুক্ষেত্র
দ্রৌপদীর ইন্ধন জুড়ে চাতুরির জমা ক্লেদ
যুধিষ্ঠির ভীম অর্জুন নকুল সহদেব
জাতিস্মরের ইস্তেহারে এবার লজ্জা মোচন
এক মহাকাশ ঘৃণা বুকে নিয়ে .. ইতি দুর্যোধন
এই কথাগুলো শুনে আমাকে ভিলেন মনে হচ্ছে তো? একবার দুর্যোধনের point of view থেকে মহাভারতের সমস্ত ঘটনা দেখার চেষ্টা করো .. তাহলে হয়তো বুঝতে পারবে।
প্রথম পর্বের জন্য এটাই আজকের review আমার তরফ থেকে।
দুর্যোধনের পয়েন্ট থেকে কি দেখার কোন দরকার আছে? আমরা কি কোনদিন ও ইংরেজ দের চোখে দেখেছি ওদের কে? কেন এতো অতাচার করেছিল ভারতবাসী সহ পৃথিবীর নানা দেশ কে। কেন দেখিনি? কারন সেখানে আমরা ছিলাম বঞ্চিত। মহাভারত একটা বিশাল মহাকাব্য। আমাদের সেই অধিকার আছে খারাপের চোখ দিয়েও পুরো মহাভারত কে দেখার বা পড়ার। কারন সেখানে আমরা কেউ বঞ্চিত হইনি। আমি জানিনা কোন যুক্তি তে রাবণের চোখে, কর্ণের চোখে বা দুর্যোধনের চোখে দেখব তাদের চারপাশ টা? বা তুমি ই বা কেন দেখছ? নিশ্চই কোন কারণ থাকবে। সেটা না জানলে কিছুই বক্তব্য রাখতে পারা যাবে না। নিশ্চই তোমার মনে হয়েছে দূর্যোধন কোন কারনে বঞ্চিত, তাই সহানুভূতি পাচ্ছে তোমার থেকে। কাজেই যুক্তি না পেলে কিছু বলা যাবে না। আমার ভালো লাগে এই সব যুক্তি রাখতে। অপেক্ষা করব।
তবে এই গল্প টা পড়ছ এটা খুব খুশীর আমার কাছে।
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 01:15 PM)nextpage Wrote: গল্পের শুরুতেই যে বয়ান রেখেছেন সেটাতেই মজে গিয়েছিলাম।
তারপরে গল্পশুরু করে আবার সাথে নিয়ে চলেগেলেন সহস্রাধিক বছর আগের সময়ে।
যতটুকু টের পাচ্ছি এমন টাইম ট্রাভেলেই কাটাতে হবে এই গল্পে।
দিদির লেখা আর মনে গাথবে না সে কি হয়।
তবে কথা একটাই বুকে মুচড় গুলো ঘনঘন দিও না বড্ড ব্যাথা হয়।
না না মোচড়ের গল্প নয় এটা তেমন ভাবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
•
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 01:30 PM)Baban Wrote: কি দুর্দান্ত শুরু এই মহান কাহিনীর! খুবই উচ্চমানের লেখা তো অবশ্যই। যেভাবে জীবন ও প্রকৃতির মেল বন্ধন তুলে ধরা হয়েছে সাথে অহংকার ও রিপুর প্রকোপ ও মুক্তির পথ এর ঠিকানা তুলে ধরা হয়েছে। কখনো হোক সে মুক্তি স্বইচ্ছায় কিংবা যোগ্য জবাব দেবার জন্য কেউ না কেউ উপস্থিত হবেই। দোষ গুন মিলে মানব সভ্যতা কিন্তু সেটা বিকাশের পথে যাবে নাকি ধ্বংসের পথে সেটা যেন প্রকৃতিই বিচার করুক। তুচ্ছ মানব নয়।
তোমার ভয়ের গল্প থেকে একটু ইন্সপায়ার্ড। তোমাদের ভাল লাগলে, আমার খুব আনন্দ হবে।
•
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,216 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
08-06-2022, 04:18 PM
(08-06-2022, 04:00 PM)nandanadasnandana Wrote: দুর্যোধনের পয়েন্ট থেকে কি দেখার কোন দরকার আছে? আমরা কি কোনদিন ও ইংরেজ দের চোখে দেখেছি ওদের কে? কেন এতো অতাচার করেছিল ভারতবাসী সহ পৃথিবীর নানা দেশ কে। কেন দেখিনি? কারন সেখানে আমরা ছিলাম বঞ্চিত। মহাভারত একটা বিশাল মহাকাব্য। আমাদের সেই অধিকার আছে খারাপের চোখ দিয়েও পুরো মহাভারত কে দেখার বা পড়ার। কারন সেখানে আমরা কেউ বঞ্চিত হইনি। আমি জানিনা কোন যুক্তি তে রাবণের চোখে, কর্ণের চোখে বা দুর্যোধনের চোখে দেখব তাদের চারপাশ টা? বা তুমি ই বা কেন দেখছ? নিশ্চই কোন কারণ থাকবে। সেটা না জানলে কিছুই বক্তব্য রাখতে পারা যাবে না। নিশ্চই তোমার মনে হয়েছে দূর্যোধন কোন কারনে বঞ্চিত, তাই সহানুভূতি পাচ্ছে তোমার থেকে। কাজেই যুক্তি না পেলে কিছু বলা যাবে না। আমার ভালো লাগে এই সব যুক্তি রাখতে। অপেক্ষা করব।
তবে এই গল্প টা পড়ছ এটা খুব খুশীর আমার কাছে।
তুমি যখন দূর্যোধনকে খলনায়ক ভেবেই নিয়েছো .. তখন আর কোনো যুক্তি দিতে চাই না .. কিচ্ছু বলতে চাই না আমার বক্তব্যের স্বপক্ষে .. মুখবন্ধটা অসাধারণ ছিলো .. প্রতি পর্বে এসে মতামত দিয়ে যাবো।
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 04:18 PM)Bumba_1 Wrote: তুমি যখন দূর্যোধনকে খলনায়ক ভেবেই নিয়েছো .. তখন আর কোনো যুক্তি দিতে চাই না .. কিচ্ছু বলতে চাই না আমার বক্তব্যের স্বপক্ষে .. মুখবন্ধটা অসাধারণ ছিলো .. প্রতি পর্বে এসে মতামত দিয়ে যাবো।
না গো ভাবিনি। আমার তেমন কোন আদর্শ নেই জীবনে। হতে পারে আমি যেমন ভেবেছি তুমি অন্য ভাবে ভেবেছ। তাই জানতে চাইছি তোমার ভাবনা টা কি? খল বলে তো কিছু হয় না। সবাই নিজের জায়গা থেকে ঠিক থাকে তার কর্মের সাপেক্ষে। কাজেই আমি জানতে চাইছি ঠিক কি ভাব তুমি।
গল্পের জন্য তোমাদের প্রশংসা পেলে যে কি ভালো লাগে বলে বোঝাতে পারব না।
Posts: 1,375
Threads: 2
Likes Received: 1,407 in 974 posts
Likes Given: 1,714
Joined: Mar 2022
Reputation:
81
(08-06-2022, 03:24 PM)Bumba_1 Wrote: অন্যায় কুরুক্ষেত্রে ঝরলো কৌরবদের রক্ত
অধর্মের জয়গান গেয়ে ঘুমায় কুরুক্ষেত্র
দ্রৌপদীর ইন্ধন জুড়ে চাতুরির জমা ক্লেদ
যুধিষ্ঠির ভীম অর্জুন নকুল সহদেব
জাতিস্মরের ইস্তেহারে এবার লজ্জা মোচন
এক মহাকাশ ঘৃণা বুকে নিয়ে .. ইতি দুর্যোধন
এই কথাগুলো শুনে আমাকে ভিলেন মনে হচ্ছে তো? একবার দুর্যোধনের point of view থেকে মহাভারতের সমস্ত ঘটনা দেখার চেষ্টা করো .. তাহলে হয়তো বুঝতে পারবে।
প্রথম পর্বের জন্য এটাই আজকের review আমার তরফ থেকে।
what happened? কিছু বুঝতে পারছিনা, কি হয়েছে তোমার?
Posts: 1,375
Threads: 2
Likes Received: 1,407 in 974 posts
Likes Given: 1,714
Joined: Mar 2022
Reputation:
81
(08-06-2022, 12:00 PM)nandanadasnandana Wrote: বাঘমুড়োর আতঙ্ক
(এই গল্পের বেশ কিছু রেফারেন্স মহাভারত থেকে নেওয়া। নানা পুরাণ ইতিহাস থেকে নেওয়া। মিল আছে। সেটা এই কাহিনীকে প্রতিষ্ঠা করতে করা। নিছক কাহিনী হিসাবে নেওয়াই ভাল। এর সাথে সত্যতার কোন সম্পর্ক নেই। ) অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ
Posts: 1,538
Threads: 5
Likes Received: 2,632 in 909 posts
Likes Given: 1,512
Joined: Dec 2018
Reputation:
578
আপনি শুরু করে দিলেন, কিন্তু আমি কাজের চাপে এখনও একটা পৃষ্ঠাও পড়া শুরু করতে পারলাম না... তবে ছাড়বো তো না কিছুতেই... আজ নয় তো কাল, পড়তে তো হবেই... তবে টিজারটুকু পড়েই একেবারে ফিদা হয়ে গেলাম... মানতেই হবে... একটা দুর্দান্ত গল্প আবার আমরা পেতে চলেছি...
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
Posts: 717
Threads: 5
Likes Received: 2,153 in 475 posts
Likes Given: 730
Joined: Dec 2021
Reputation:
666
(08-06-2022, 04:27 PM)Somnaath Wrote: অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ
অনেক অনেক ভালোবাসা রইল।
|