Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
এমন একটা প্রেম হোক

 
তোমার সাথে আমার প্রেম হবে শব্দ বিহীন তুমি সারাদিন আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে ভূগোল চোখ নিয়ে, আর তোমার অপলক দৃষ্টিতে সৃষ্টি হবে হাজার খানেক কবিতা, যে কবিতা কোনো বিচ্ছেদের না, সে কবিতা মন গড়ার, সে কবিতা আমাদের ভালোবাসার।।
আমাদের প্রেমে কোনো রাগ থাকবে না, থাকবে অজস্র অভিমান, থাকবে অনুরাগ, থাকবে কষ্ট কিন্তু সে কষ্ট হবে অহংকারের প্রতিটা চুমুতে আমাকে তুমি সহজ করে তুলবে আরো..,আমার বুকে থাকবে প্রশান্তের ঢেউ, তোমার বুকে জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ড 
 
এমন একটা প্রেম হোক আমাদের...
যে প্রেমে নিয়ম করে দেখা করতে হয় না, যে প্রেমে নিয়ম করে খবর নিতে হয় না আমাদের প্রেমটা তেমনই হোক দুটো শরীর থাকবে দুটো বালিশে, কিন্তু দুটো মন থাকবে এক বিছানায় তুমি ব্যালকনিতে দাঁড়াবে, আর আমি বেডরুমে বসে এক নিমেষে বলে দিতে পারব তোমার চোখ 'টা তারা গুনলো
পৌষালী বৃষ্টি দিনে তুমি ঘুমিয়ে থাকবে আর আমি স্বপ্নে তোমার চোখের পাতায় টানবো কাজল, ঠোঁটে লিখে দেবো অর্ধ চন্দ্রের গল্প, তোমার চিবুক বেয়ে গড়িয়ে পড়বে অভিসার, আমার বুকে তখন ফল্গু  ধারা
তারপর বৃষ্টি থামবে...
বাইরের আকাশে  উড়বে তখন অগুন্তি বিহান ফানুস
অষ্টমী কিংবা পঞ্চমী তুমি শাড়ি নাই বা পড়লে, ইচ্ছে হলে পড়তে পারো মনের মতো টপ-স্কার্ট, আমি জিন্স-ব্লু শার্ট! বিনুনি করে চুল নাই বা বাঁধলে, তোমার খোলা চুলেই থাকবে আদম সুখ 
আমাদের প্রেম টা একটু অগোছালো হোক
ঠিক যতটা অগোছালো মোনালিসার মুখ...।।
 
Collected....

[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
# অণুগল্প


উফ, আজ যেন বাকি দিনগুলোর থেকেও বেশি গরম! গলাটা এক্কেবারে শুকিয়ে গেছে অসীম বাবুর।
অবিশ্যি শুধু বাইরের গরম তো না, পকেটও গরম আছে যে!
মানে, ছিল!
গেল হপ্তায় তিনদিন 'নবীন সংঘ' ক্লাবের অন্নপূর্ণা মায়ের পুজোয় ঢাক বাজিয়েছেন উনি। সেই করোনা আসার পর থেকে এই প্রথম এইভাবে ঢাক বাজানোর বরাত পাওয়া গেছিল। ওর সঙ্গে ছোটুয়াও গেছিল, কাঁসর বাজাতে। তা, বেশ ভালোই টাকা দিয়েছে কেলাবের বাবুরা তারপরেও, পাড়ার মা জননীরা কিছু বখশিস দিয়েছেন। পুজো শেষ হয়ে যাবার পরে বাপ-ব্যাটা মিলে তাই আজ একটা বাজার থেকে কিছু কেনাকাটা করেছে। বেশি কিছু না, ছেলের একটা গেঞ্জি, দুটো প্যান্ট, যেটা কেনার সময় ছোটুয়া বলেছিল "বাবা, খালি গায়েও তো থাকা যায়, কিন্তু প্যান্ট না পরলে..."। এছাড়া ওনার জন্য একটা লুঙ্গি। ছেলের মায়ের জন্য একজোড়া সূতি শাড়ি। একটা নতুন বিছানার চাদর। তাতেই কত টাকা শেষ হয়ে গেল! তাও, বেশ খুশি খুশি মন আছে আজ দুজনেরই। ছোটুয়া খুব খুশি, সোমবার থেকে ইকলেজে যাবে, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে। অসীমও খুশি... ছেলের মা খুশি হবে ভেবে - একসাথে দু' দু'খান শাড়ি - কতদিন পরে যে পাবে!
ভাবতে ভাবতেই হাতে টান লাগে অসীমের। তাকিয়ে দেখেন ছোটুয়া দাঁড়িয়ে গেছে। চোখে জল আসব আসব করছে।
"একি বাপ, দাঁড়্যে পল্লে কেন?" বলেই নজর পড়ল নীচের দিকে। পায়ের চটিটা বুড়ো আঙুলের পাশ দিয়ে ছিঁড়ে গেছে!
"যাহ! এবার মুচি খুঁজতে হবে..." বলতে বলতে এদিক ওদিক তাকান উনি। ইস! এই অচেনা জায়গায় কোথায় মুচি বসেন কে জানে!
"দাদা, এখেনে জুতো সেলাই কোতায় হয় বলতি পারেন?" জিজ্ঞেস করে একজন পথচারীকে।
"উইদিকে দেখেন" বলে এগিয়ে যান তিনি।
আর কী করা! খোঁড়াতে থাকা ছেলেকে নিয়ে সেইদিকে যান। বেশ খানিকটা যাবার পরে জুতো সেলাইয়ের দোকান পাওয়া যায়। 'দোকান' বলতে রাস্তার মধ্যেই জুতো সেলাইয়ের সরঞ্জাম রাখা। তবে সামনে রাখা পিঁড়িতে কেউ নেই!
"কোতায় গ্যালো রে বাবা.." নিজের মনেই বিড়বড় করে বলেন অসীম। ট্রেন টা না চলে যায়! তাহলে হাসনাবাদ যাবার গাড়ি আরও একঘন্টা পরে...
"একটু দাঁড়াতে হবে বাবু..." শুনে চমকে তাকান উনি।
মলিন পোষাক আর ফেজ টুপি পরা একজন মানুষ সামনে দাঁড়িয়ে। হাত পায়ে জল লাগা। ওহ, এখন তো রোজা চলছে... হয়ত এখন ওঁর রোজা ভাঙার সময়। কিন্তু দাঁড়াতে গেলে তো...
সেকথা বলার আগেই ছোটুয়া বলে ওঠে "বাবা, গলা শুক্যে গেচে - জল খাব।"
আর, সামনের মানুষটি বলে ওঠেন "এই তো বাবা, জল। এই নাও।" আর একটা বোতল বাড়িয়ে দেন ছেলেটির দিকে। তারপর কি মনে হওয়াতে অসীমকে বলে ওঠেন "আমি ইফতারি করতে যাচ্ছিলাম, তা দ্যান, সারিয়েই দিই জুতোটা... এই যে বাবা পা টা এই জুতোটার ওপর রাখো..." আর তারপর জুতোটার অবস্থা দেখে বলে ওঠেন "হায় আল্লা! জুতোর তো কিছুই নেই দেখছি। আঠা লাগিয়ে সেলাই দিতে হবে।"
"দেরি হবে?" আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করে ছোটুয়া।
আহা রে, খিদে পেয়েছে বেচারার। সেই কোন সকালেই খাওয়া সেরে কেনাকাটি করতে শুরু করেছিল। তাতেই এত দেরি হয়ে গেল... এত খরচ হয়ে গেল...
"ক্ষুধা পেয়েছে, বাবা? এই যে, এই পেয়ারাখান খাও ততখন... এখুনি হয়ে যাবে..." পলকে মুচিভাই পেয়ারা বের করে দেন কোঁচর থেকে।
"তা দাদার বাড়ি কই?"
"হাসনানাদ লাইনে। আপনি এখেনেই থাকেন?"
"হ্যাঁ... ক'মাস পর পর বাড়ি যাই... মেদনিপুরের দিকে বাড়ি..."
"কে কে আছে বাড়িতে? "
"আম্মু, আছে, পোলাপান আছে, আপনার ভাবী আছে..."
"মন টানে না?" আহা, এই কদিনেই বাড়ি ছেড়ে থাকতে মনখারাপ হয়েছে ওঁর... আর এই মানুষটি...
"টানে তো... কী আর করা!" আঠা শুকিয়ে গেছে, বড় একটা সূচে সুতো পরিয়ে সেলাই করতে করতে বলেন উনি। তারপর বলে ওঠেন "ওই পাটিটাও দাও বাপজান... ইয়ে, বাবা... ওটাও সেলাই মেরে দিই।"
"পেয়ারাখান খুব ভাল" বলে ওঠা ছোটুয়া।
"খাও বাবা, খাও। তোমার ভাল লাগলেই ভাল!"
কী যে হল অসীমের... চোখটা ঝাপসা ঝাপসা লাগছে যেন।
কার খাবার, কার ভোগে লাগে!
রোজার পরে ইফতারির জন্য রাখা খাবার খাচ্ছে এক বালক, যার কাঁধের ব্যাগে তখন পুজোয় বাজানো কাঁসর - ঘন্টা!
হঠাৎ কী যে হয়ে গেল অসীমের! তাড়াতাড়ি ফতুয়ার বুকের ভেতরের পকেট থেকে একটা একশো টাকার নোট বার করে দিলেন নাম না জানা এই মুচিভাইকে। আর বলে উঠলেন "ভাই, খেয়ে নিন কিছু... আমরা চলি? আবার দেখা হবে..."
"আরে এত টাকা না..." প্রতিবাদ করেন মুচিভাই।
"ও কিছু না... একটু জল-মিষ্টি খাবেন। সুস্থ থাকবেন ভাই... টেরেন চলে যাবে... আসি..." বলে ছোটুয়ার হাত ধরে হাঁটতে থাকেন অসীম।
এই তো, এই 'দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে...' এর মাঝেই তো আছে একটা আস্ত তীর্থক্ষেত্র, যার নাম 'ভারততীর্থ!'
[+] 5 users Like ddey333's post
Like Reply
just awesome  clps clps

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
কোন তীর্থের কথা বলছেন ? সবই আজ "আমার" রাজত্ব । এ বলছে আমার , তো অন্য একজন বলছে "চোপ রও মুচি চামার, এ আমার"। আমার আমার করে হচ্ছে ভাগ । ভাগ ভাগ ভাগ , ঠোঁট ফাক করে চেয়ে আছে তীর্থের কাক। বেচারা কাক আহ চুক চুক চুক...।
Like Reply
(18-04-2022, 07:44 PM)cuck son Wrote: কোন তীর্থের কথা বলছেন ? সবই আজ "আমার" রাজত্ব । এ বলছে আমার , তো অন্য একজন বলছে "চোপ রও মুচি চামার, এ আমার"। আমার আমার করে হচ্ছে ভাগ । ভাগ ভাগ ভাগ , ঠোঁট ফাক করে চেয়ে আছে তীর্থের কাক। বেচারা কাক আহ চুক চুক চুক...।

কাক , কাকসন ...

 সৌরভ এর কি হবে !!
Like Reply
(18-04-2022, 08:23 PM)ddey333 Wrote: কাক , কাকসন ...

 সৌরভ এর কি হবে !!

এ বড় অন্যায় দাদা , এত মাথা খটিয়ে একটু ভাবের কথা বললাম । কই বলবেন বাহ বেশ তো , এত in depth চিন্তা ভাবনা তোমার !!! তা না করে সৌরভ নামক এক ফিট এর ব্যারামে আক্রান্ত লোকের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন।

ওই ব্যাটা ফিটের ব্যারামে ভুগুক কিছুদিন আমি এই ফাকে আমার গাড়ি চড়ার পথ ক্লিয়ার করে রাখি । Big Grin   

আসলে আমি বড় লেখক তো , তাই তিন চার ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে না বসলে লেখা বেরুয় না। বুঝতেই তো পারছেন বড় লেখক দের বড় সমস্যা Big Grin
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
(18-04-2022, 10:02 PM)cuck son Wrote: এ বড় অন্যায় দাদা , এত মাথা খটিয়ে একটু ভাবের কথা বললাম । কই বলবেন বাহ বেশ তো , এত in depth চিন্তা ভাবনা তোমার !!! তা না করে সৌরভ নামক এক ফিট এর ব্যারামে আক্রান্ত লোকের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন।

ওই ব্যাটা ফিটের ব্যারামে ভুগুক কিছুদিন আমি এই ফাকে আমার গাড়ি চড়ার পথ ক্লিয়ার করে রাখি । Big Grin   

আসলে আমি বড় লেখক তো , তাই তিন চার ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে না বসলে লেখা বেরুয় না। বুঝতেই তো পারছেন বড় লেখক দের বড় সমস্যা Big Grin

তোমার উদোম বন্ধু ওই ব্যাটা বিচি আজকাল কোথায় যেন ঘাপটি মেরে আছে !!

একটু ডাকাডাকি করে দেখতো দেখি আসে কিনা ... Smile
Like Reply
[Image: IMG-20220419-WA0008.jpg]
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(19-04-2022, 09:59 AM)ddey333 Wrote: তোমার উদোম বন্ধু ওই ব্যাটা বিচি আজকাল কোথায় যেন ঘাপটি মেরে আছে !!

একটু ডাকাডাকি করে দেখতো দেখি আসে কিনা ... Smile

উদোম শব্দ উচ্চারনে সাবধানতা অবলম্বন করুন দাদা , যদি না আপনার হসপিটালে রোগি দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে । কারো কারো নাকি উদোম শরীর দেখলে বমি পায় , কে জানে কবে থেকে আবার উদোম শব্দটা শুনেই হরহরিয়ে দেবে , হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন , আমাদের বিচিত্র বাবুর কথাই বলছি । উনার ছাড়া এই বিচিত্র সমস্যা আর কারইবা হতে পারে।

আপনার খবর পৌঁছে দিয়েছি , এবার পয়সা দেন । যদিও গেইম অফ থ্রন্স এর কাঁকেরা পয়সা নিত না , তবে এই কাঁক পয়সা নেয় । বাকির কাম ফাঁকি
Like Reply
অসম হে ইয়ার
Shy হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
 দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।। Shy
Like Reply
সত্যি কত লেখক কবি লুকিয়ে আছে অন্তরে মোদের। তবু তাদেরকে তোয়াক্কা না করে মানব সমাজ এমন কি তারা নিজেরাও ছুটে চলেছে অর্থর পেছন। সাফল্যের উচ্চ পর্যায় পৌঁছনোর প্রবল চাহিদা মোদের। নানা ভুল নেই মোটেও তাতে। কিন্তু ঠিক কতটা জানি কি আমরা? জেতার নেশা নিয়ে হাত বাড়িয়ে অলীক সুখের পথে। কিন্তু আমরা ভুলেই যাই মরা অনেক আগেই সফলতা পেয়ে গেছি। নিজের ভেতরের সেই সত্তাটাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছি তাও। কারণ ঐযে আরও আরও সাফল্য চাই। তবেই না মোরা মানুষ।

এক পাহাড় ভালোবাসা অনুগল্পটা সত্যিই অসাধারণ। ♥️
Like Reply
(19-04-2022, 09:59 AM)ddey333 Wrote: তোমার উদোম বন্ধু ওই ব্যাটা বিচি আজকাল কোথায় যেন ঘাপটি মেরে আছে !!

একটু ডাকাডাকি করে দেখতো দেখি আসে কিনা ... Smile

(19-04-2022, 12:22 PM)cuck son Wrote: উদোম শব্দ উচ্চারনে সাবধানতা অবলম্বন করুন দাদা , যদি না আপনার হসপিটালে রোগি দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে । কারো কারো নাকি উদোম শরীর দেখলে বমি পায় , কে জানে কবে থেকে আবার উদোম শব্দটা শুনেই হরহরিয়ে দেবে , হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন , আমাদের বিচিত্র বাবুর কথাই বলছি । উনার ছাড়া এই বিচিত্র সমস্যা আর কারইবা হতে পারে।

আপনার খবর পৌঁছে দিয়েছি , এবার পয়সা দেন । যদিও গেইম অফ থ্রন্স এর কাঁকেরা পয়সা নিত না , তবে এই কাঁক পয়সা নেয় । বাকির কাম ফাঁকি

Dodgy Dodgy Dodgy  Armyman Angryfire আমাকে নিয়ে টানাটানি কেন  fishing Huh

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(19-04-2022, 01:28 PM)Bichitro Wrote: Dodgy Dodgy Dodgy  Armyman Angryfire আমাকে নিয়ে টানাটানি কেন  fishing Huh

❤️❤️❤️

banana banana Big Grin
Like Reply
অগ্নিবাণ


এই এত্ত গরমের মধ্যেও শাড়ি পরে অফিস গেছিল সুমি। স্মোকি আইজ, লাল টুকটুকে লিপস্টিক এঁকেছিল। কিন্তু কোনো কাজেই এলো না! ধ্যাত!
এমনিতে প্রতিবছরই "পরব না, পারব না, যা গরম, এপ্রিল মাসেই এই, মে জুন মাসে কি হবে" - এইসব ডায়ালগ দিয়েও পয়লা বৈশাখে শাড়িই পরে সুমি। বছরের কিছু কিছু দিন ট্রাডিশনাল সাজ ছাড়া মানায় না, এমনটাই মনে হয় ওর। কিন্তু এইবছর এত ইউটিউব ভিডিও আর ইন্সটাগ্রাম রিলস দেখে স্মোকি আই বানাতে শিখল, আবার খরচা করে চিক টিন্ট কিনে গাল রাঙা করল, কিন্তু ওই কথায় বলে না, "অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকায়?" নইলে এত্তগুলো বছর পরে যে মর্কটটাকে একটু একটু মনে ধরেছিল ওর, সে কিনা সেদিন হাফ ডে লিভ নিয়ে ভাগলবা হবার প্ল্যান বানিয়ে রেখেছিল! আর তাই, বাকি অর্ধেক দিন জুড়ে কাজের পাহাড় নিয়ে বসেছিল!
ভেবেই নিজের ওপরেই রাগ হচ্ছে সুমির!
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ফাইনান্স ডিপার্টমেন্টে জয়েন করেছে ময়াঙ্ক নামের ছেলেটি। এমনিতে খুব সাধারণ দেখতে হলেও ইয়ার এন্ডের কাজের সময় দেখেছে ছেলেটির যেমন ঠান্ডা মাথা, তেমনি কাজে দক্ষতা। আর "আমি সি এ, আমি যা বলব তাই ঠিক" মার্কা ইগো নেই। আর সবসময় মুখে হাসি। একত্রিশে মার্চ, ইয়ার এন্ডের সব ডকুমেন্টের সাবমিশান হয়ে যাবার পর সবাই যখন হাল্কা মেজাজে তখন উনিও গুনগুন করে মোবাইল দেখতে দেখতে গান করছিলেন। সেই গান, যেটা ইন্সটাগ্রামে অনেক রিলেই শুনেছে সুমি। কানের দুল নিয়ে এত সুন্দর গান শুনে মুগ্ধ ও হয়েছে, কিন্তু ময়াঙ্কের গুনগুন শুনেই বেশ একটা "ওয়াও" ফিল এসেছে ওর।
তা, সেই ময়াঙ্ককে একটু মুগ্ধ করবে ভেবেছিল পয়লা বৈশাখে। আর একটু জানার চেষ্টা করবে ছেলেটা কেমন... কিন্তু চান্সই পেল না। অফিসের সবাই সবাইকে "শুভ নববর্ষ" "কী সুন্দর লাগছে!" "আয়, একটা সেলফি তুলি" নিয়ে যখন ব্যস্ত, তখন একবার "হ্যাপি বেঙ্গলি নিউ ইয়ার" বলেই কাজে বসে গেছিল ও।
ময়াঙ্ক, না আস্ত মর্কট!
ছুটি নিলেই ভাল হতো তারচেয়ে!
যাই হোক, সেদিন এমনি অফিসে মজা হয়েছে বেশ। সবাই মিলে অনেক ছবি তোলা হয়েছে। লেগ পুলিং হয়েছে। পারচেজের অনীকদা "তোকে তো একদম নতুন বৌ লাগছে, শুধু সিঁদুরটাই নেই" বলে পেছনে লেগেছে।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যেই মর্কটটাকেও মিস করেছে সুমি।
তবে শুক্রবার ওই হুটোপুটির পরে খুব ক্লান্ত ছিল। তাই শনিবারটা মোটামুটি ঘুমিয়ে আর জাস্ট ল্যাদ খেয়েই কাটিয়েছে ও। একটা সুপারহিট দক্ষিণী ছবির সিকোয়েল এসেছে, সেটাও দেখতে যেতে ইচ্ছে করেনি। আজও সকালে উঠে ফেসবুকের নিউজফিড স্ক্রোল করছে অলস হাতে, হঠাৎ একটা 'টুং' আওয়াজ। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ।
আর সেন্ডারের নাম দেখেই হাত থেকে প্রায় ফোনটা পড়ে যাচ্ছিল সুমির।
সেই হনুমানটা।
অর্থহীন একটা রাগ তাড়া করে বেড়াচ্ছে ওকে। তাই প্রথমেই মনে হল "আমার পারসোনাল নাম্বারে মেসেজ করল কেন? অফিসের নাম্বারে না করে?" তারপর তড়িঘড়ি মেসেজটা খুলল।
"হাই। ইউ দেয়ার?"
"হ্যাঁ, আছি।"
"সেন্ডিং আ ফাইল। উইল লুক ফরোয়ার্ড টু ইয়োর ফিডব্যাক।"
নির্ঘাত কোনো কাজ দেবে। ওদের ইন্টার-ডিপার্টমেন্টাল কাজ হয় কিছু।
তাও না তো করা যায় না। তাই বেজার মুখে "শিওর" লিখল ও। আর তারপরেই অফলাইন হয়ে গেল। ব্যাটা বুঝুক, ও সবসময় অ্যাভেলেবেল থাকে না ছুটির দিনে।
এক্কেবারে স্নান-টান সেরে, লাঞ্চ করে আবার মোবাইলটা হাতে নিল ও। নোটিফিকেশন এ দেখে যা ভেবেছে তাই। প্রায় আট -ন'টা মেসেজ নোটিফিকেশন এসেছে উজবুকটার কাছ থেকে। একটা ভয়েজ নোট ও আছে। হয়ত যে কাজটা দিয়েছে সেটা কিভাবে করতে হবে তার নির্দেশিকা আছে।
বিরক্ত হয়েই খুলল হোয়াটসঅ্যাপ টা।
"হাই, সুমি। স্যরি তোমাকে সানডে তে মেসেজ করছি।" প্রথম মেসেজ।
উঃ! নেকু! মনে মনে ভাবল ও!
"বাই দ্য ওয়ে, দ্যাট ডে, তোমাকে র‍্যাভিশিং লাগছিল!"
"মানে ইউ লুক গুড এভরি ডে। কিন্তু সেইদিন... ওয়াজ স্পেশ্যাল।"
"আমি জানতাম না সেদিন বেঙ্গলি নিউ ইয়ার। একটা কাজে হাফ ডে নিয়েছিলাম। স্যরি!"
বাব্বা, এ কী ফ্লার্ট করছে নাকি! মেসেজ ঘাঁটতে ঘাঁটতে ভাবছিল সুমি। এরপরেই আছে ভয়েজ নোট টা। কাজ দেবার আগে মাখন লাগিয়েছে আরকি!
ভয়েজ নোটটা খোলে সুমি।
আর গান বেজে ওঠে "এসোওও হে বৈশাখ এসো এসো..."
ময়াঙ্কের গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত! তাও সেই গান, যেটা দিয়েই নববর্ষের শুরু হয়। আর একটু অবাঙালি টান থাকলেও মোটের ওপর সুন্দর গেয়েছে।
ওর জন্যেই গেয়েছে কি?
একটু একটু করে গলে যাচ্ছিল সুমি।
"থ্যাংকইউ। তুমি খুব ভাল গান করো।" মেসেজ করল ও।
"রিয়্যালি? থ্যাংকইউ! " সাথে সাথে মেসেজ ঢুকল প্রায়।
"একদম।"
"তবে..."
"কি?"
"সেদিনের গানটা বেশি ভাল গেয়েছিলাম, তাই না?"
"সত্যি বলব? হুম! তবে, এটাও ভাল।"
"এটা কাল সারাদিন প্র‍্যাকটিশ করে তুলেছি। তাও সেভাবে পারিনি।"
"একদিনে? তাহলে তো খুব ভাল হয়েছে।"
"সেদিনেরটা বেশি ভাল কেন হয়েছিল জানো?"
"কেন?"
"তুমি সেদিন চান্দ-বালিয়া পরা চাঁদ হয়ে ছিলে যে!"
"ধ্যাত!"
"আরে, সাচ্চি-মুচ্চি!"
হঠাৎ করে খুউউউউব আনন্দ হচ্ছে সুমির।
উজবুক, হনুমান, মর্কটটার পেটে পেটে এত!
ধ্যাত! ধ্যাত! ধ্যাত!
খুব হাসছিল সুমি।
আয়না দেখেনি ও... দেখলে বুঝতে পারত, ওর গালদুটো লাল টুকটুকে হয়ে আছে - এর সামনে কোথায় লাগে কেমিক্যাল প্রোডাক্ট!
দারুণ অগ্নিবাণেও কিউপিড নিজের কাজ করেই যাচ্ছেন যে!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
পয়লা

 
আচ্ছা, শোনো,
দুপুরে দই-কাতলা করেছিলাম।
আর, রাতের জন্য গন্ধরাজ মুরগি।
ফ্রিজে রেখে গেলাম, কেমন?
খেয়ে নিও মনে করে।
জানোই তো, খাবার নষ্ট করতে নেই।
আমাদের দেশে কতমানুষ না খেয়ে থাকেন!
ভাবছ, তোমার কথাই তোমাকে
কেন ফিরিয়ে দিচ্ছি?
আসলে, কতদিন নিজের মতো করে
ভাবিনি, বলিনি...
তাই অভ্যাস চলে গেছে আর কি!
নইলে, এতদিন সব জেনেও চুপ থাকি!
"কোথায় যে যাই!" ভেবে
অপমানের অশ্রু মাখা ভাত খাই?
ওহ্, হ্যাঁ
আমি তো আবার অনেক খাই
তাই পৃথুলা।
না না, 'মুটকি'!
সেদিনই বিয়েবাড়িতে বললে কাকে যেন।
যেন আমার শারীরিক অসুবিধাগুলো
শুধুই আরও সুস্বাদু ওষুধ খাবার বাহানা!
আর, তার 'দিন আগেই বলেছিলে
অফিস থেকে ফিরে আমাকে
দেখেই, 'মুড অফ' হয়ে যায় তোমার
ঘামে জবজবে নাইটি পরে থাকি
লেপ্টে যাওয়া কাজল নিয়ে...
কিছু বলিনি,
কি বলতাম?
অফিস থেকে ফিরেই রান্নাঘরে ঢুকেছি,
মুখটা পরিষ্কার করার সময়ই পাইনি!
থাক!
কতকিছুই তো বলেছি এতদিন ধরে
করেছি, এতদিন ধরে
ওসব বাদ দাও।
কী লাভ চর্বিতচর্বণ করে।
তারচেয়ে শুনে নাও
চলেই যাচ্ছি আমি
নিজের মতো বাঁচব বলে।
চাবিটা পাপোষের নিচে রইল
কি বলছ?
"কোন চুলোয় যাব?"
সে একটা ব্যবস্থা করেছি।
"একলা মেয়েছেলে?"
আরে না! একলা কেন হব!
একলা নয়, পয়লা...
প্রথম কদম রাখছি নিজের জন্যে
নিজের সাথে।
কারণ,
আমার একটা আস্ত আমি আছি যে...
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
অনেকদিন পরে একটা বিয়েবাড়ি...

খুব সেজেছে মেয়েটা।
দিদির লাল চকমকি শাড়ি,
পাশের বাড়ির বৌদির থেকে নেওয়া
ঝুটো মালার সেট।
কাজল-কালো চোখে
বড় মায়াবী লাগছে তাকে আজ!
বন্ধুর বিয়ে বলে কথা,
সাজবে না!
ঝলমল করে হাসছে...
স্টলে দাঁড়িয়ে ফুচকা খেল আটটা-দশটা...
ঝালের চোটে চোখ দিয়ে জল পড়ছে!
খুব আনন্দ করছে মেয়েটা আজ!
শুধু তো বন্ধুর না,
কলেজের সিনিয়ার দাদা ই যে পাত্র।
আনন্দ করবে না!
শালীপক্ষের সাথে মিশে
খানিক কলকল ও তো করে এলো।
খুশিতে মাতোয়ারা মেয়েটা আজ!
এত ঝাল লেগেছে মেয়ের,
আর কিছু খেতেই পারল না!
বেশি ঝাল খেলে যা হয়,
অম্বল -টম্বল হয়ে শরীর খারাপ!
বিয়েটাও পুরো দেখতে পারল না
সিঁদুরদানের আগেই বাড়ি চলে গেল...
একটা সেলফিও তুলল না ঠিকমতো।
ইস!
কী সুন্দর সেজেছিল মেয়েটা আজ
আনন্দে, খুশিতে, হাসিতে প্রাণবন্ত...
আহা,
ওই মায়াবী চোখে
কাঁদছিল মেয়েটা আজ।
সারাদিন ধরে পুড়ছিল যে বড্ড...
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
# অন্য_রূপকথা

 
 
এই তো, একটু আগের ঘটনা।
এক বন্ধুর সঙ্গে নাগেরবাজারের কাছের মলটায় গেছিলাম। শনিবার, তাই বেশ ভিড় ছিল। আর বেরোনোর মুখেই একজন ভদ্রমহিলা আমাকে বেশ জোরে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে গেলেন। সেই রামধাক্কার চোটে কিঞ্চিৎ টলোমলো হয়ে গেছি - আর তখনই চোখে পড়লেন তিনি।
একজন নিপাট ভদ্রলোক। হাতে শ্যাম্পুর শ্যাসের মতো কিছু একটা! আর, মলের বাইরের অনেক বিক্রেতার মাঝে তেমন কিছুই বলে উঠতে পারছেন না। শুধু তাকিয়ে লোকজনের আসা- যাওয়া দেখছেন।
হঠাৎ কি যে হলো, এগিয়ে গেলাম ওনার দিকে। আমাকে দেখে যেন হাজার ওয়াটের বিদ্যুৎ খেলে গেল ওনার মুখে। অত্যন্ত মার্জিত স্বরে বলে উঠলেন "নেবেন, মা? আনারদানা এগুলো। ভাল খেতে খুব। আমি খেয়ে দেখেছি। দেব, মা?"
একেই আমি 'মা' বলে কেউ আমাকে ডাকলে এক্কেবারে গলে যাই, আর তারমধ্যে এমনি সুভদ্র কণ্ঠ! অবাক হয়েছিলাম খুব। তাই জিজ্ঞেস করে উঠলাম "কাকু, আপনি কোথায় থাকেন?"
"বনগাঁয় থাকি মা। এই গতবছরের লকডাউনে কাজ চলে গেল। কত চেষ্টা করলাম... আর কোনো কাজ পেলাম না। ছেলের সখ ছিল ফটো তোলা শিখবে, এখন সেসব ভুলে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। তাই... ভেবে দেখলাম, কোনো কাজই তো ছোট না। অন্য কিছু না পেয়ে, এই হকারি করছি মা। নেবেন? ভাল জিনিস।"
"তাহলে এত আস্তে আস্তে কথা বলেন কেন কাকু? কেউ তো শুনতেই পাবেন না!" জিজ্ঞেস করলাম আমি।
উনি বলে উঠলেন "এখনও শিখে উঠতে পারিনি মাগো! শিখে যাব জোরে কথা বলা... আসলে আমার স্বর্গত বাবা পছন্দ করতেন না... তাই অভ্যাসটা নেই আর কি..."
চোখ উপচে জল আসছিল। তাও জিজ্ঞেস করলাম "বনগাঁ থেকে রোজ আসেন এতদূরে?"
"হ্যাঁ মা, দুপুরে আসি, রাত এগারোটা পর্যন্ত থাকি। কেউ যদি কেনেন... তারপর হাঁটতে হাঁটতে দমদম স্টেশান যাই, সাড়ে এগারোটার বনগাঁ লোকাল ধরে দেড়টায় নামি... দুটো বাজে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে..."
"এতটা হাঁটেন, কষ্ট হয় তো খুব!" বোকার মতো বলে উঠেছিলাম।
উনি একটু হাসলেন। তারপর বললেন "কষ্ট আর কি! পেটের ভাত জুটছে বাড়ির সবার... এইটুকু পায়ের কষ্ট আর এমন কি..."
পনেরোটাকার প্যাকেট আনারদানা। কতগুলোই বা দিনে বিক্রি হয়! তাও, একটা পরিবারের অন্ন আসে সেখান থেকে... আর হয়ত তাঁরা স্বপ্ন দেখেন, আবার সবকিছু 'আগের মতো' হয়ে যাবে?
যদি কেউ এইদিকে আসেন, কিনবেন এই কাকুর কাছ থেকে, প্লিজ? ওনার নাম অরিজিৎ মুখোপাধ্যায়। ঠিক ডায়মন্ড প্লাজা মলের সামনেই থাকেন, সপ্তাহের প্রতিদিন। কারণ, ওই যে... পেট চালাতে হবে! আর কে না জানে, এই পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সুগন্ধ হলো গরম ভাতের গন্ধ... কোনো পারফিউমের সাধ্যি কি, তার সাথে পাল্লা দেয়!
 
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
[Image: 279031583-10159845876306815-5446774450279696631-n.jpg]
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
[Image: 279176461-10159845876841815-8871580915218221424-n.jpg]
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
অস্তরাগের ব্যথা

বুড়ি মরে গেল
বুড়োটা ভাঁজ হয়ে থাকা চামড়ার মাঝে ছোট্ট বসে যাওয়া চোখখানা দিয়ে দেখলো...
কিছু জল চোখের কোণ থেকে ঝরে পড়লো
চেয়ে চেয়ে দেখলো লোক দেখানো শোক' চললো কিছুদিন, তারপর যেন এক নাটকের সমাপ্তি ঘটলো...
তার ব্যবহৃত শাড়ি নিয়ে মেয়েদের ভাগাভাগি চললো কেউ বালিশের কভার বানাবে, কেউ বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করবে, কেউ কানের দুল নেবে, কেউ বালা জোড়া......
সংসার থেকে  যেন একটা বোঝা নেমে গেল.
বুড়ো একা বসে বসে দেখে তাদের কাণ্ডকারখানা
মনের বাজারে স্মৃতির দর'কষাকষি করতে করতে সেটাও একসময় বিক্রি হয়ে যায় মস্তিষ্কের কোন এক ফাঁক ফোকরে
সংসার চলে তার নিজের ছন্দে, যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়শুধু বুড়ো একা হয়ে পড়ে
হাতের লাঠিখানায় ভর করে এদিক সেদিক পায়চারী করে...
সেদিন ছোট নাতনী এসে বলে গেল  "দাদু দাদু, তুমি মরে গেলে কিন্তু এই লাঠিখানা আমার, আমি খেলবো.!"
এদিক থেকে বৌমা দৌড়ে আসে "দাঁড়া, তোকে আজ মেরে ফেলবো  এসব কথা বলতে নেই, বলেছি না.?”
বুড়ো হাসে...
যে বৌমার এমন শাসন সেও গোপনে প্রতিবেশীর কাছে গল্প করে বুড়োটার ভারি কষ্ট, মরে গেলেই বাঁচে
সেদিন নাতি তার বন্ধুদের নিয়ে তার ছোট ঘরে আড্ডা দিচ্ছে আর বলছে "দাদুর অবস্থাও বেশি ভাল না কিছুদিনের মধ্যে উইকেট পড়ে যেতে পারে তখন ওই ঘর আমার, তখন জমিয়ে আড্ডা হবে!"
বুড়ো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে.
দুই ছেলের মাঝে তো প্রায় দিন ঝগড়া লেগেই থাকে, বুড়ো কার কাছে 'দিন খাবে এই নিয়ে...
বুড়োটা আজ কারো বাবা নয়, আজ কারো শ্বশুর নয়, কারো দাদুও নয়, সে আজ শুধুই এক বোঝা.
আজ বুড়োর জন্মদিন গত বছর বুড়িটা বেঁচে ছিল, তাও একটু পায়েস রেঁধে খাইয়েছিলো...
আজ সারাটা দিন গেল, কেউ কিছুই বললো না...কিই বা বলবে !
যার মৃত্যুর জন্য সকলে মুখিয়ে আছে, কি বা দরকার তাকে সেই জন্মের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার! অথচ কিছুদিন আগে কত লোক খাইয়ে নাতনীর জন্মদিন পালন করা হলো
বুড়োর হিসেব টা জমা পড়ে আছে, কারণ তার মৃত্যুর পরেও তো অনেক মানুষকে খাওয়াতে হবে
সেখানেও দুই ভাইয়ের ঝগড়া হবে খরচ করা নিয়ে, বুড়িটার বেলা তে তো তাই হয়েছিল
বুড়ো ভাবে, কিসের জীবন.? কাদের জন্য এতকিছু.!
বুড়ো চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে একটু মুছে নেয়  কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে আকাশের দিকে তাকিয়ে বুড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো, মনে মনে এটাই বললো,
"পৃথিবীর সব বাবা যেন বাবা হয়েই বাঁচে, বোঝা হয়ে নয়

লেখা --- ভারতীয় দাদা
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 23 Guest(s)