02-04-2022, 08:30 PM
![[Image: 277669760_152939670519015_23298077578369...e=624D3A38]](https://scontent.fdel48-1.fna.fbcdn.net/v/t39.30808-6/277669760_152939670519015_2329807757836923256_n.jpg?stp=dst-jpg_s720x720&_nc_cat=103&ccb=1-5&_nc_sid=5cd70e&_nc_ohc=K8r1ltTW4vwAX9_Aisf&tn=lF_pY_RIbRl2D740&_nc_ht=scontent.fdel48-1.fna&oh=00_AT_0eW7pxIFyx884xcAtG5vxGJc8IxZ1nAq-gld9iuGICw&oe=624D3A38)
কিছু মনের সত্যি কথা
|
02-04-2022, 08:30 PM
![]()
02-04-2022, 08:31 PM
পাড়ার কীর্তন
************ সেদিন পাড়ার কীর্তন-এর আসরে বসে কীর্তন শুনছি। একাই এসেছি। গিন্নি পরে আসবে। হঠাৎ শুনি মাইকে ঘোষণা হচ্ছে- ' দীপু দা, আপনি যদি এখানে থাকেন বাড়ি চলে যান। আপনাকে বাড়ির লোক খুঁজছে। ' আমি তরিঘরি করে উঠে দাঁড়ালাম বাড়ির দিকে রওনা দেবো বলে। দেখি উল্টো প্রান্ত থেকে গিন্নি উঠে দাঁড়িয়ে বলছে --- *বসে পরো, বাড়ি যেতে হবেনা। দেখছিলাম তুমি এই কীর্তন-এর আসরেই আছো নাকি অন্য কোথাও কীর্তন করতে গিয়েছো।* শালা কি অবিশ্বাস মাইরি ![]() ![]() ![]()
03-04-2022, 09:07 AM
#কথোপকথন
-"কি গো?" -"হুম!" -"কখন থেকে ডাকছি, সাড়াই নেই!" -"ডাকছিলে? হ্যাঁ, বলো, গিন্নি?" -"উফ! এখন 'বলো গিন্নি', এদিকে অন্যসময় টিকির দেখা পাওয়া যায় না।" -"কী যে বলো! এদিকে দুনিয়াসুদ্ধু লোক বলে আমি নাকি তোমাকে চোখে হারাই!" -"যত বাজে কথা!" -"বললেই হল? সেই দেখেই তো প্রেমে পড়েছিলে!" -"ওই আনন্দেই থাকো!" -"প্রেম বলে প্রেম! অমন দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাপের কথাও শোনোনি!" -"আহা, তখন তো অল্পবয়স..." -"খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে... এক্কেবারে নাকানিচোবানি কান্ড..." -"এক কথা আর কতবার বলবে?" -"তাহলে স্বীকার করলে তো গিন্নি, যে প্রেমে তুমিই আগে পড়েছিলে? ওই একটা গান আছে না, 'কে প্রথম চেয়ে দেখেছি, তুমি না আমি' তার কিন্তু যো নেই!" -"থামো তুমি। এই কথা ছেলে-মেয়েগুলোকেও বলে দিয়েছ সব।" -"তাতে কি হয়েছে?" -"সবাই এখনও বলাবলি করে যে.." -"আহা, তাতেই বা কি হলো?" -"আমার লজ্জা করে না বুঝি!" -'এতে লজ্জারই বা কি হলো? ভালবেসেছ, অন্যায় তো কিছু করনি!" -"আমার লজ্জা করে বাপু। মনে হয়, বাচ্চাগুলো কি ভাবে..." -"কি আবার ভাবে, ভাবে যে বাবা-মা কে, আর মা বাবাকে কত্ত ভালবাসে!" -"ইস! আমার বয়ে গেছে!" -"যাই হোক, তুমি কি বলছিলে আমাকে গিন্নি?" -"তোমার কি ঠান্ডা লেগেছে? তখন মনে হল যেন.." -"তা একটু লেগেছে..." -"হবে না? ঠিক জানতাম। একে এই ঠান্ডা এই গরম আবহাওয়া, তারপরে এতবার করে স্নান!" - "সে তো শুধু কালকের দিনটাই.." -"প্রতিবছর ঠান্ডা লেগে যায়, তবু কথা শোনো না" -"আর কি করা যাবে!" -"সেই তো, আমার কথা তো মনে পড়ে না এইদিনে..." -"আর তুমিও যে আমাকে ছেড়ে বাবা-মা র কাছে চলে যাও!" -"আহা, সে তো মাত্তর কদিন।" -"আমার মনখারাপ হয় তো!" -"তাই বুঝি?" -"তোমার বোঝার বাইরে যেন কিছু আছে!" -"পরের মাসেও যাব তিনদিনের জন্য..." -"আমিও যাব!" -"ইস...আমার লজ্জা করবে...এই কদিনের জন্য যাচ্ছি, তাও যদি তুমি যাও..." -"আহা, আমি উস্কোখুস্কো চেহারা নিয়ে তোমার সামনে ঠিক দুপুরবেলা দাঁড়াব, বলব খেতে দাও, তুমি 'না' বলতে পারবে...?" -"এমনি করে কেউ? তারচেয়ে আমার সঙ্গেই যেও!" -"থ্যাংকইউ, থ্যাংকইউ, এইজন্যই তো তোমাকে এত ভালবাসি গো অন্নপূর্ণা! " -"ওইখানেই তো বাঁধা পড়েছি, ভাল যে আমিও বাসি বড্ড..."
04-04-2022, 12:50 PM
(This post was last modified: 04-04-2022, 05:58 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
-----
07-04-2022, 11:37 AM
*প্রশ্ন :* বউ-এর মুখ ঝামটা থেকে বাঁচার জন্য কোনও ঘরোয়া উপায় আছে কি?
উত্তরঃ..... তোমাদের প্রশ্ন শুনেই বুঝেছি বিয়ের আগে তোমরা আমার সেই জগৎখ্যাত ক্র্যাশ কোর্সটি করোনি। কত পিছিয়ে আছে এই বাঙালি স্বামীরা!! এই ভুলগুলো যে কেন করো তোমরা ? ঠিক আছে আমি অল্প করে, হালকা করে বলে দিচ্ছি । বিনে পয়সায় বেশী উপায় বলা যাবে না। 1 . উপায়গুলো ভীষণ সোজা। একদম সিম্পল। নিয়মবিধি গুলো যদি মেনে চল তাহলে তোমার সংসারে মৃদুমন্দ মলয় পবন বইবে সর্বক্ষণ । 2. বিয়ের দিন থেকেই মনে এই বিশ্বাসটা রাখবে যে তোমার সাথে লেতিপেতি কোন মেয়ের বিয়ে হয়নি। একজন দেবীর সাথে তোমার বিয়ে হয়েছে। ওনার মধ্যে লক্ষী সরস্বতী একত্রে বাস করছেন। 3. মনে রাখবে প্রজাপতি ব্রহ্মার নজর যখন তোমার ওপর পড়েছে তাহলে সেটা তোমার মঙ্গলের জন্যই পড়েছে। উনি চাইছেন তুমি একজন উৎকৃষ্ট মানবে পরিণত হও। তোমার খামতিগুলো ঠিক করার জন্য বিশেষ একজনকে স্ত্রী হিসেবে তোমার কাছে উনি পাঠিয়েছেন। 4. তোমার শিক্ষাদীক্ষা যাই হোক না কেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সামনে একখানা হাবাচন্ডী হয়ে থাকবে। দেখাবে যেন তুমি কিছুই জানো না, কিছুই শেখোনি। স্ত্রীর অপেক্ষায় ছিলে ........... কবে সে এসে তোমাকে শিখিয়ে পড়িয়ে নেবে। 5. বিভিন্ন বিষয়ে স্ত্রী তোমার চক্ষু উন্মোচন করবে। তুমি সেগুলো দেখে, শুনে, জেনে আনন্দ প্রকাশ করবে। তোমার রাগ তুমি একটা সিন্দুকে ঢুকিয়ে তালা মেরে চাবিখানাকে দরিয়া মে ফেক দো। 6. প্রশংসা করতে শেখো … মানে অন্য কারো না, শুধু নিজের বৌয়ের। শব্দ ভান্ডার তৈরী কর। বৌকে সারাক্ষণ সুন্দর লাগছে, ভাল লাগছে , দুর্দান্ত রান্না বলতে থাকলে বৌয়েরা বোর হয়ে যায়। তাই বিভিন্ন ভাষা থেকে প্রশংসা সুলভ শব্দগুলো চয়ন করে একটা খাতায় লিখে রেখে মুখস্থ করো। 7. অফিস থেকে বা কাজ থেকে ফিরে কখনও বলবে না যে তুমি পরিশ্রান্ত। বরং বৌকে জিজ্ঞাসা করব, "তুমি খুব পরিশ্রান্ত না গো ? আমি আর অফিসে কি কাজ করি ? আমি তো শুয়ে বসে কাটিয়ে দিই। কাজ তো করো তুমি। 8. বৌয়ের ভুল ধরতে যেও না। "ওরা ভুল করতে পারেনা" এই দৃঢ় বিশ্বাসটা মনে গেঁথে রাখবে। 9. 'শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ' .. স্নান করে পবিত্র হয়ে এটা একশ আটবার জপ করবে। 10. বৌয়ের মুখে মুখে কক্ষনো তর্ক করতে যাবে না। তুমি লাস্টে সেইতো হেরেই যাবে। তারচেয়ে মুখে সেলোটেপ আটকে চুপটি করে বসে থাকো। ঝড়কে বইতে দাও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে কি কোন মানুষ আটকাতে পারে ? আমার এই পয়েন্টগুলো যদি তুমি মেনে চল তাহলে বৌয়ের মুখ ঝামটা শোনার তোমার প্রয়োজনই পড়বে না। তোমার সংসার সুখে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে। শুভকামনা থাকলো । আরো গভীর ভাবে জানতে হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন.......দক্ষিনা আবশ্যক| (সংগৃহীত)
08-04-2022, 11:44 AM
কিছু কিছু মানুষ থাকে যাদের আপনি কোনো ক্যাটাগরিতেই ফেলতে পারবেন না। এরা যদি ২+২=২২ বলে তো চমকানোর কিছুই নেই। মানে তার লজিক এমনই। ষাঁড় সব রং ছেড়ে দিয়ে লাল দেখলে কেন দৌড়ায় তার যেমন কোনো লজিক নেই, নেতা হলেই চোর কেন হতে হবে তারও যেমন কোনো লজিক নেই তেমনই এরাও কেন ২+২=২২ বলবেন তারও কোনো লজিক নেই।
তো লোকাল ট্রেনের লেডিসে যাচ্ছি। একজন ভদ্রমহিলা উঠলেন। পরনে ব্লু কালারের খাদির শাড়ি। চুলটা একটা হাতখোপা করা। মধ্যবয়সেও তিনি রীতিমত সুন্দরী। ছিপছিপে ফিগার, কপালে চোখে পড়ার মত বড় টিপ। মহিলা আমার কম্পার্টমেন্টেই উঠলেন। ভাবখানা এমন যেন, আমার পারসোনাল ড্রয়িংরুমে এমন ভিড় কেন? উফ, কে এদের অ্যালাও করল! ভদ্রমহিলা নিজের বড় ব্যাগটা বাংকে তুলে দিলেন। একটা ঠান্ডা জলের আরেকটা গ্লুকোজের বোতল পাশের ফাঁকা সিটটাতে রাখলেন। তার পাশের সিটটাতে নিজে বেশ আরাম করে বসলেন। তারপরেই সামনে বসে থাকা আমারই মত কয়েকজন অতি অকিঞ্চিতকর মানুষের দিকে একটা অবজ্ঞার দৃষ্টি ফেলে তাকালেন। মনে হল, আবার এরা কেন আমার জমিদারিতে! যতসব দখলবাজ লোকজন। লেঠেল ডেকে এদের তুলে দেওয়াই উচিত। পরের স্টেশনে ট্রেনে আরও বেশ কিছু অর্বাচীন মানুষ উঠলেন। এর মধ্যে একটি শান্ত শান্ত স্বভাবের মেয়ে এসে খুব স্বাভাবিক গলায় বলল, দিদিভাই আপনার জলের বোতল আর ভ্যানিটি ব্যাগটা একটু সরাবেন ? তাহলে ফোর্থ সিটে আমি বসতে পারি। মহিলা যেন শুনতেই পাননি এমনভাবে অন্যদিকে তাকালেন। এসব মশা, মাছিসম মানুষকে উনি যে দেখতে পান না সেটাও বুঝিয়ে দিলেন। মেয়েটি আবারও বলল, দিদিভাই প্লিজ বোতলগুলো তুলে নেবেন একটু ? মহিলা অত্যন্ত বিরক্তির গলায় বললেন, অদ্ভুত মেয়ে তো তুমি! আরে আমি যদি মোটা হতাম তাহলে তুমি এখানে বসতে পারতে? পারতে না। ওই যে ঐ সিটে তিনজন বসে আছে। পারবে ওখানে বসতে? কারণ ওরা তিনজনেই মোটা। আমি না খেয়ে খেয়ে নিজেকে রোগা রেখেছি। নিজের বসার জায়গাটুকুর মধ্যেই বোতল দুটো আর ভ্যানটি ব্যাগ রেখেছি। অন্যের জায়গা নিইনি। তাই সরাতে পারব না। মেয়েটা কী বলবে বুঝতে পারছিল না। মানে ওই ২+২=২২ উনি বুঝিয়ে দিলেন এভাবে। ধৈর্য্য আমার কোনো কালেই খুব বেশি নয়। আমার কাছের মানুষরা ভাল করেই জানেন। মেয়েটা মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পাশে যারা বসে আছেন তারা অন্যের ঝামেলায় কেন ঢুকবেন ভেবে চুপ করে আছেন। আরেকজন ভদ্রমহিলা সামান্য প্রতিবাদ করে বললেন, আপনার জিনিসগুলো আমি ধরছি, ওকে বসতে দিন। উনি হিটলারি মেজাজে বললেন, এত দরদ হলে নিজের সিটটা ছেড়ে দিন। আমি তখন ব্যাগ হাতড়ে চলেছি। এই এক রোগ আমার। সময়ের জিনিস সময়ে পাই না। যাইহোক ব্যাগের চারটে গেব খুঁজে অবশেষে পেনটা পেলাম। ওনার সামনে ধরে বললাম, ম্যাডাম একটা অটোগ্রাফ প্লিজ। উনি অবাক হয়ে বললেন, কেন? অটোগ্রাফ কেন? আমি তো কোনো সেলিব্রিটি নই। আমি এক মুখ হেসে বললাম, এমন অদ্ভুত আজব লজিকের গোঁয়ার মানুষের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করাটা আমার নেশা বলতে পারেন। আসলে আপনাদের সংখ্যা তো খুবই কম। রোজকার যাতায়াতের পথে এমন পাই কোথায়! আজ যখন পেয়েছি একটা অটোগ্রাফ নেবই। ভদ্রমহিলা কিছু না বলে জলের বোতল দুটো নিজের কোলে নিয়ে সরে বসলেন। মেয়েটা ফোর্থ সিটে বসে মুচকে মুচকে হেসেই যাচ্ছিল। আমি গম্ভীর। ভদ্রমহিলা জানালার দিকে তাকিয়ে বাইরের লু বওয়া ওয়েদারে মনোনিবেশ করলেন। ©️ এক চিলতে রোদ্দুর-কলমে-অর্পিতা সরকার সত্য ঘটনা ![]()
08-04-2022, 11:48 AM
দারুন দারুন
![]() ![]()
08-04-2022, 06:31 PM
একটা সত্যি ঘটনা বলি। সল্টলেকে থাকার সময়কার ঘটনা। আমাদের পাশের ব্লকে শীলবাবু বলে এক ভদ্রলোক থাকতেন। লোকটা ভালো। কিন্তু সন্দেহবাতিক। বউ বিষ খাইয়ে দিতে পারে, এই সন্দেহে বাড়িতে না খেয়ে বাসস্ট্যান্ডে চায়ের দোকানে চা-পাউরুটি খেত। ওখানেই দেখা হত আমার সঙ্গে। বেঞ্চের ওপর নোংরা পাজামা পরা এক পা তুলে ভারি অশ্লীল ভঙ্গিতে বসত। আমরা বলতাম - শীলবাবুর বাইরে পঞ্চশীল আর ভেতরে হাইড্রোসিল।
এমনই এক সকালে রোজকারের মোলাকাত হল। আগের দিন পাড়ার একজন মারা গেছেন। দাহ করে ফিরেছি অনেক রাতে। পরদিন সকালে দেখা হতেই প্রথম প্রশ্ন - আজকাল দাহ করতে খরচ কেমন? বললাম - সব মিলিয়ে একশো তিরিশ টাকা। শুনে শীলবাবু আঁতকে উঠলেন - বলেন কি? এত বেড়ে গেছে? আমার বাবার সময় বেশ মনে আছে, খরচ হয়েছিল বারো টাকা আশি পয়সা! আমি যখন মরব, তখন কত লাগবে কে জানে? আমার চিরসাথী হারামি মন নেচে উঠল। গম্ভীরভাবে বললাম - এখন থেকে বুকিং করে রাখলে খরচা একই লাগবে। নতুন নিয়ম হয়েছে। শোনেন নি? শুনে শীলবাবুর চা চলকে পড়ে যায় আর কী! "মাইরি বলছেন? আমি তাহলে আজই নিমতলা যাব!" এরপর দিন দুয়েক আর চা-দোকান মুখো হইনি। পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কিন্তু ছোট এলাকা। কত আর গা-ঢাকা দেওয়া যায়। দেখা হয়েই গেল। আমি যেন কিছু মনে নেই এমন ভাব দেখিয়ে হাসলাম কেবল। শীলবাবু বললেন - গেছিলাম। কোথায়? নিমতলা। সেকি? কেন? আবার কেউ ...? মুখের প্রশ্ন রয়ে গেল মুখে। শীলবাবু বললেন, আপনার কথা শুনে বুকিং করতে। শুনেই গালমন্দ শোনার জন্য প্রস্তুত হল আমার হারামি মন। তবু বেশ উৎসাহ নিয়ে বললাম - কাজ হল? উত্তর এল - ওরা বলেছে সে নিয়ম সিরাজদ্দৌলার আমলে ছিল। আরো অনেক কথা বলেছে। কি বলল? বলল, যে বানচোতের কথায় খোঁজ নিতে চলে এসেছেন, তাকে কাঁধে করে যদি আনতে পারেন, আপনাকে এমনি ফ্রি করে দেব। ![]()
09-04-2022, 02:49 AM
(This post was last modified: 09-04-2022, 02:51 AM by kublai. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
[quote defaultattr='']
![]() ![]() ![]() [/quote]
10-04-2022, 06:44 AM
কে ইনি? কে উনি?
ইনি ফোনে কথা বলছেন, উনি পাশে এসে দাঁড়ালেন। কেন, জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন 'সারাজীবন তো গুছিয়ে কথা বলা শিখলে না! কাকে কি হড়বড় করে বলছ, তাই দাঁড়াতে হলো।' এবার উনি ফোনে কথা বলছেন, প্রায় ঘন্টাখানেক হলো। ইনি কোনও একটা কাজে ওখানে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এবার উনি ফোন শেষ করে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই 'একটু পরে আবার করছি' বলে ফোনটা রেখে, "তোমার জন্য কী শান্তিতে ফোনে একটু কথাও বলতে পারব না? কী বলছি তাও শুনতে চলে এলে? তোমার বা তোমার গুষ্টির শ্রাদ্ধ করছিলাম না! তাহলে কী ভাবছ প্রেমালাপ করছিলাম? অতই যদি সন্দেহ, তাহলে সারাদিন বাড়িতেই বসে থাকো না কেন? তোমার যখন কাজের থেকে ফিরতে দেরী হয়, আমি কোনোদিন কিছু বলেছি?...ইত্যাদি, ইত্যাদি এবং ইত্যাদি!!!" এবার আবার ওপরে যান। শিরোনামটি পড়ুন। এবং নিজের দায়িত্বে উত্তর দিন। দাম্পত্য কলহ বাধলে আমি দায়ী নই ।। ![]() ![]()
10-04-2022, 07:48 AM
(07-04-2022, 11:37 AM)ddey333 Wrote: *প্রশ্ন :* বউ-এর মুখ ঝামটা থেকে বাঁচার জন্য কোনও ঘরোয়া উপায় আছে কি? ![]()
10-04-2022, 07:53 AM
(08-04-2022, 06:31 PM)ddey333 Wrote: একটা সত্যি ঘটনা বলি। সল্টলেকে থাকার সময়কার ঘটনা। আমাদের পাশের ব্লকে শীলবাবু বলে এক ভদ্রলোক থাকতেন। লোকটা ভালো। কিন্তু সন্দেহবাতিক। বউ বিষ খাইয়ে দিতে পারে, এই সন্দেহে বাড়িতে না খেয়ে বাসস্ট্যান্ডে চায়ের দোকানে চা-পাউরুটি খেত। ওখানেই দেখা হত আমার সঙ্গে। বেঞ্চের ওপর নোংরা পাজামা পরা এক পা তুলে ভারি অশ্লীল ভঙ্গিতে বসত। আমরা বলতাম - শীলবাবুর বাইরে পঞ্চশীল আর ভেতরে হাইড্রোসিল। হাহাহাহা ! ![]() ![]() ![]()
10-04-2022, 08:37 PM
[প্রথমেই বলে রাখি এটা আমার লেখা নয়। এত (কু)বুদ্ধি আমার নেই। আদ্যোপান্ত কপি করা। আমার ওপর রাগ করবেন না।]
রবিবার ******* জানি, আপনার বয়স হয়েছে এবং আপনি বেশ কয়েকবার চেক আপ করিয়েছেন। ইউরিক অ্যাসিড, সুগার, কোলেস্টেরল সবকিছুর ভয় দেখিয়েছেন ডাক্তারবাবু। এতএব ডায়েটিং। খাবেন না ডিমের কুসুম, বড় মাছ, খাসীর মাংস, সন্দেশ, ঘী, বাটার, বাঁধাকপি, টমেটো, পনীর ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে খাবেন কী? চিনি ছাড়া লিকার চা, ক্রীম ক্র্যাকার বিস্কুট, তেল ছাড়া পেঁপের তরকারী, সাদাটে ব্রয়লার মাংস আর টক দৈ??? এর থেকে মরে গেলেই বা ক্ষতি কী? ছাড়ুন মশাই!! সপ্তাহের আর ছ'টা দিন অখাদ্য ক্রীম ক্র্যাকার বিস্কুট, পেঁপের তরকারী আর চারাপোনার ঝোল খেতে পারেন কিন্তু রোববার টা আপোষ করবেন না। ঈশ্বর এই একটা দিন আপনাকে উপহার দিয়েছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে লুঙ্গি ফতুয়া বা পাজামা পাঞ্জাবী পরে বাজার চলুন। প্যান্ট শার্ট পরে বাজার যাবেন না, ওটা অসভ্যতা। মোড়ের চায়ের দোকানের বেঞ্চে আরাম করে বসে খবরের কাগজটা খুলুন।সঙ্গে একটা লেড়ো বিস্কুট আর ঘন লিকারে দুধ চিনি মেশানো চায়ে আওয়াজ করে চুমুক। গিন্নি ফোনে তাড়া দেবে, পাত্তা দেবেন না। এবার গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলুন। সামনে ঝোলানো খাসীর সামনের পা থেকে কিছুটা আর সিনা বা গর্দান থেকে কিছুটা... বাড়ি গিয়ে হাঁক দেবেন...কই গো, চা দাও। মনে রাখবেন বাকীদিন গুলো বিড়াল হলেও রোববার কিন্তু আপনি বাঘ। খাসীর মাংস দেখে বউ যদি আপনাকে ডাক্তারের উপদেশের কথা মনে করিয়ে দেয়...দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বলবেন, বেশি জ্ঞান দিওনা, যা বলছি তাই কর। মনে রাখবেন, "শের ভুখা মর যাতা লেকিন ঘাস নেহি খাতা..!" জলখাবারে ফুলকো লুচি, লঙ্কা ফোড়ন দেওয়া সাদা আলুর চচ্চড়ি সঙ্গে মুচমুচে জিলিপি। এরপর আবার এক কাপ চা, একদম মালাই মার কে... এবার পাড়ার মোড়ে বসে রাজা উজির মেরে যখন বাড়ি ফিরবেন, গন্ধে ম ম করছে গোটা বাড়ি। বাথরুমে ঢুকে স্নান করতে করতে গলা ছেড়ে গাইতে থাকুন, "ঠান্ডা ঠান্ডা পানিমে নাহানা চাহিয়ে...." চিন্তা নেই, আজকে আপনি গানকে সুরের বাঁধন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এবার মেঝেতে পাত পেড়ে খাওয়া। কাঁসার থালায় সাদা ঝরঝরে সরু চালের ভাত, ঝিরিঝিরি আলুভাজা আর বড় জামবাটিতে ধোঁয়া ওঠা মাংস। শেষ পাতে ঘনযৌবনা চাটনি আর লাল দই। যদি সাহসে কুলোয় তাহলে বউ কে বলবেন হাতপাখা দিয়ে হাওয়া করতে। ওটা প্রয়োজনীয় নয়, আলংকারিক, জাস্ট পুরনো মেজাজটা একটু ফিরিয়ে আনা (মেজাজটাই আসল রাজা....)। খাওয়ার পর একটা মিঠাপাতি মুখে পুরে সিগারেট ধরিয়ে মোবাইল টা খুটখাট করুন। চোখের পাতা ঘন হয়ে আসছে...ঘুম আসছে...ঘুম আসছে "মিলন কি মসতি /ভারী আঁখো মে/ হাজারো সপনে/ সুহানে লিয়ে..."!!! পাশবালিশ জড়িয়ে বিছানায় লম্বা ঘুম । এরপর বিকেলে যদি আর ঘুম থেকে সারাজীবন না ও ওঠেন...কোন আফসোস নেই। এই তো জীবন !!! পড়ুন কিন্তু follow করবেন চিন্তা ভাবনা করে, just মজা করার জন্য দেওয়া। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ![]() ![]() ![]() ![]()
12-04-2022, 10:25 AM
#######*সেল সেল সেল*
---------------######### *(প্রাপ্তবয়স্কের স্বাদ পেলে তার দায় সম্পূর্ণ রূপে পাঠকের ?)* পরশুদিন ছুটি নিয়ে ল্যাদ খাচ্ছি,কিচেনে বৌ মনে হলো যেন আমাকে শুনিয়ে গান গাইছিল, দিন আসে দিন যায় তোমার আশায় দিন গোনে আমার মন স্বপ্নের দিন এই জীবনে আসবে কখন??... বলে কি পাগলি!!!হুপ হুপ করে তিন লাফে বৌ এর সামনে গিয়ে জাপটে ধরে বললাম,ধূর পাগলি,দিন গোনার কি দরকার, তুমি চাইলেই এখুনি ইয়ে মানে ইয়ে... বৌ বললো, তোমার শরীর আজ ভালো আছে তো? শিকারের গন্ধ পেয়ে উৎসাহিত হয়ে বললাম, ভালো কি! খুব ভালো.. চাঙ্গা.. বৌ বললো,চলো আজ তাহলে সেলের কেনাকাটা করে আসি!! বলে কি!সব পানি পানি রে.. ও তাহলে এই দিনের গান শোনাচ্ছিলে তুমি!!করুনস্বরে বললাম, শরীরটা জানো তো কেমন খারাপ খারাপ লাগছে। বৌ বললো, অসভ্য,ছোটোলোক, ওসব চালাকি সব বুঝি, তুমি যাবে কিনা বলো!! যদিও এইসব হুংকারে আমি খুব একটা পাত্তা দিই না, পুরুষ সিংহ তো তাই, তবে ঘাড়ে হাত দিয়ে দেখলাম মাথা আমার একটা ই,অগত্যা বেরোনোর সিদ্ধান্ত ই নিলাম.. ছোটোবেলার কথা মনে পড়ে,মা প্রতিবার চৈত্র সেলে গেঞ্জি আর হাফ প্যান্ট কিনে দিতো (সত্যি বলছি ওই বয়সে আমাদের জাঙ্গিয়া কনসেপ্ট আসেনি)..নরকঙ্কাল মার্কা চেহারায় সানি দেওল মার্কা গেঞ্জি পড়লে যা হয় তাই হয়েছিল,বড় হাফ হাতার মধ্যে থেকে লিকলিক করে দুটো হাত ঝুলে থাকতো! কাকতাড়ুয়া র ভায়রা ভাই মনে হতো নিজেকে!সেলের প্যান্টের চরিত্র মেনে প্যান্টের চেন গড়বড় করতো..মা হেঁইয়ো মারো হেঁইয়ো বলে একবার টান মেরে তুলতে গিয়ে ইয়েতে বাঁধিয়ে দিয়েছিল! যদি ও দুর্ঘটনা তেমন কিছু ঘটেনি, ঘটলে ধনসম্পদ হারিয়ে কি যে হতো কে জানে!! সেলের বাজারে গড়িয়াহাটের মজাই আলাদা! আমি দেখেছি সেলে মূলত যে জিনিসগুলো মহিলারা টার্গেট করে তাদের মধ্যে নাইটি,সায়া ,ব্লাউজ ,ইনার গার্মেন্টস,বেডকভার আর বরের একটা বারমুডা থাকবেই! শুরু করা যাক নাইটি,সায়া বিক্রেতা কে দিয়ে !এদের দেখলেই আমার কেমন যেন দুপুর ঠাকুরপো র কথা মনে পড়ে!এদের বলার ভঙ্গিমাটা দেখুন একবার.."এই সেল সেল সেল, নাইটি তুলুন একশো,সায়া তুলুন ষাট!!!" শালা বলিস কি রে পাগলা,তোর বৌ শুনলে তোকে জুতোপেটা করবে রে!? এবার তাকান ব্লাউজ আর ইনার গার্মেন্টস যারা বিক্রি করে তাদের দিকে..এক নববিবাহিতা বৌদির দিকেই তাকিয়েই এক দোকানীকে বলতে শুনেছিলাম,কালু ৩৪ দে তো!! বৌদি লাজুক মুখে বলেছিলেন, না না আমার ৩৬ লাগে! কি যে বলেন বৌদি, এতদিন ঘাঁটছি এটুকু বলতে পারবো না!! পাশে দাঁড়ানো তার পতিদেবতার মুখটা ছিল দেখার মতো!সে ব্যাটা ঘাঁটার কথা শুনে বোঝার চেষ্টা করছিল কবে? কোথায়? কিভাবে?? একবার এক ইনার গার্মেন্টস এর দোকানে গেছি বৌ কে নিয়ে, থুড়ি ..বৌ আমাকে বগলদাবা করে নিয়ে গেছে,দোকানী একটা লাল রং এর ইয়ে বার করে বৌ কে বললো , আপনাকে এটাতে হেভি মানাবে বৌদি, ফিটিং ও ঠিকঠাক হবে!!শাআআলা,তোর বৌকে তোর পছন্দের ইয়ে পড়া গিয়ে, আমি এতদিনেও বৌকে ব্লাউজের রং বলার সাহস দেখাতে পারলাম না,আর তুই ইয়ের কালার পছন্দের কথা বলছিস ,তোকে শালা সেলের চিকেনের ললিপপ বানিয়ে ছিবড়ে করে ফেলবো!? সেলের বেডকভারের কদরই আলাদা!! একবার বৌ এর শত নিষেধ থোড়াই কেয়ার করে এরকমই এক বেডকভার কিনেছিলাম আমি!হেব্বি কালার.. পাতার পড় বৌ কে বললাম, তোমার ভাগ্য দেখে নিজের ও হিংসে হয় !কত ভালো কাজ করলে আমার মতো স্বামী পাওয়া যায় বলো তো!জহুরীর চোখ আমার, সেরাটা তুলে এনেছি!পরের দিন সকালে গান গেয়েছিলাম,মেরে রং মে রঙনেবালি,পরী হো ইয়া হো পরীও কি রাণী!!..আরে ধূর মশাই যা ভাবছেন তা নয়,ধোয়ার পর কি হয়েছিল ভেবে নিন,ধোয়ার আগেই যা রং বেরিয়েছিল, পাড়াপড়শি ভাবতে শুরু করেছিল, হঠাৎ অকাল হোলিতে কেন মেতেছি আমরা!!? মনে পড়ে একবার সেলের মার্কেট থেকে একটা বারমুডা কিনে এনেছিল বৌ! সামান্য রাত্রি টুকু কাটাতে পারেনি বেচারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল! সকালে এমনভাবে হাঁ করেছিল যেন বহুদিন ওর খাওয়া জোটেনি!তবে ওই হাঁ এর পিছন থেকে আমার ধনসম্পদকে উঁকি মারতে দেখে সঙ্গী এমনভাবে হা হা করে হেসেছিল পিত্তি জ্বলে গেছিল ? অনেক হয়েছে এবারে খতম করি, একবার সস্তায় সেলে জকির জাঙ্গিয়া কিনেছিলাম! তবে ও জকি আমার "ঘোড়ার" উপর এমনভাবে জাঁকিয়ে বসেছিল যে দু পা হাঁটতে গেলেই খচখচ করে!নাগিন নাগিন ড্যান্সের ছন্দে সেবার যা হেঁটেছিলাম অনায়াসে র্যাম্পে নামিয়ে দেওয়া যেতো!!? তবে আম বাঙালির কাছে এও যেন এক উৎসব! সামান্য হলেও মনের মানুষটির জন্য ,বাড়ির প্রিয় মানুষগুলোর জন্য কিছু কেনার মধ্যে যে আনন্দ পাওয়া যায় , মূল্য দিয়ে তার বিচার করার সাধ্যি কার!!তাই বেঁচে থাক চৈত্র সেল... এই সেল সেল সেল...সায়া তুলুন পঞ্চাশ,নাইটি একশো..সেল সেল সেল সংগৃহীত
14-04-2022, 11:15 AM
*মূল্যায়ন- ইংলিশ মিডিয়াম কলেজ*
আজ একটি খ্যাতনামা ইংলিশ মিডিয়াম কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠান। গেটের চারিধারে নামীদামী সারীবদ্ধ গাড়ী। তারই মাঝদিয়ে একটি নীলবাতিওলা গাড়ী সোজা কলেজে প্রবেশ করলো। গেটকিপাররা স্যালুট জানালো। বডিগার্ড কারের গেটটা খুলতেই নেমে এলেন ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবা মিস অনুপমা সেন। আজকের আমন্ত্রিত চিফ গেস্ট। অতিথি আপ্যায়নে খামতি না রেখে সোজা নিয়ে যাওয়া হলো স্টেজে। স্টেজে আরও বিশিষ্ট অতিথিরা আছেন। সামনের সারিবদ্ধ চেয়ারগুলোতে সকল অভিভাবক সমেত ছাত্রছাত্রীরা এবং সকল কলেজ স্টাফেরা বসে। সরগরম কলেজ প্রাঙ্গন। প্রিন্সিপাল ম্যাডাম কিছু উদ্বোধনী ভাষন দেওয়ার পরই ঘোষক প্রধান অতিথিকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করলেন। পুষ্পস্তবকটি টেবিলে রেখে পোডিয়ামের লাউড স্পিকারের সামনে দাঁড়ালেন অনুপমাদেবী, অনুপমা সেন, ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট। বহু সম্বোর্ধনা সভা বা প্রশাসনিক কাজে স্পিচ দিয়েছেন। ভাষন দেওয়াটা তার কাছে নিত্যকার ব্যাপার । কিন্তু আজ তাকে কেমন যেন একটু অন্যমনস্ক দেখালো। সামান্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপনপূর্বক কথা বলেই বললেন, আজ আপনাদের একটি গল্প বলতে চাই.... "ভবেশবাবু একজন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন।ভবেশবাবু ও তার স্ত্রীর একটি মাত্র কন্যা সন্তান ছিল। অনেক আদরের একমাত্র কন্যাকে যথোপযুক্ত উচ্চ শিক্ষিত করে যথাসময়ে একটি উপযুক্ত ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। অবসরের কয়েক বছর আগেই বিপত্নীক হন। তাঁর বাড়িতেই এক মহিলা মালতীদেবী, মালতী দাস তার একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে ওনার বাড়িতে কাজ করতেন। একা ভবেশবাবুর রান্নাবান্না বাড়ির কাজ এককথায় ভবেশবাবুর দেখভালের কাজ করতেন। ক্রমেই স্বামীহারা মালতীদেবীও ঐ বাড়ির মেয়ে হয়ে গিয়েছিলেন। ভবেশবাবুও মালতীদেবীকে ও ওনার কচি কন্যা সন্তানকে মেয়ে ও নাতনির মতোই দেখতেন। মালতীদেবীও পিতৃতুল্য ভবেশবাবুকে বাবা বলে সম্মোধন করতেন। তার ছোট্ট মেয়েটি ওনাকে দাদু বলতে অজ্ঞান। ঘরে সাজানো বইগুলো থেকে দাদু ছোট্ট মেয়েটিকে ছোট ছোট নীতিমুলক গল্প, কবিতা শোনাতেন। বেশ আনন্দেই কাটে। নাতনিটির পড়ার আগ্রহ দেখে দাদু তাকে বড় কলেজে ভর্তি করার মনস্থ করলেন। একদিন এলো সেই ভর্তির দিন। মালতীদেবী সকাল সকাল রান্নাবান্না সেরে মেয়েকে সাজিয়ে গুছিয়ে দিলেন। আজ তার কি আনন্দের দিন তা বলে বোঝানো মুশকিল। দাদুকেও একটি সাদা ধুতি পাঞ্জাবি আলমারি থেকে বার করে দিলেন। গলি পেরিয়ে বড় রাস্তার মাইল খানেক দূরেই ইকলেজটি। তাই দাদু নাতনি মিলে গল্প করতে করতে পায়ে হেঁটেই গেল কলেজে। কলেজের গেটের সামনে বড় বড় গাড়ী। সুট টাই পরা অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে কলেজে ঢুকছেন। দাদু নাতনিও ঢুকলেন। এক বড় অডিটোরিয়াম হলে সবাই বসে। তারাও বসলেন। এক এক করে নাম কল হতে লাগলো। এক এক করে যাচ্ছে। এক সময় তাদেরও ডাক পড়লো। দাদু নাতনি আনন্দে ঢুকলেন সেই ইন্টারভিউ নেওয়ার ঘরে। এসি ঘরে বিশাল গোল টেবিলে বেশ কয়েকজন ম্যাডামের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দাদু নাতনির দিকে। হয়তো তাদের সাধারন পোশাক দেখে। দাদুও হয়তো মনে মনে ভেবেছিলেন এই টুকু টুকু বাচ্ছাদের ভর্তির জন্য এতো আয়োজন কেন! দুজনেই দুটি চেয়ারে বসলেন। প্রিন্সিপাল ম্যাম প্রশ্ন করলেন মেয়েটির দিকে তাকিয়ে......... তোমার নাম কি? মেয়েটি নাম বললো। কিসে করে এলে কলেজে? পায়ে হেঁটে। এরপর দাদুর দিকে তাকিয়...... আপনি কে হন মেয়েটির? দাদু। ওর ফাদার মাদার আসেনি কেন? আমার নাতনিটির বাবা ইহজগতে নেই। মা ঘরের কাজে ব্যাস্ত। তাই আমিই নিয়ে এলাম। আমিই তার অভিবাবক। কিন্তু বাবা মায়ের আর্থিক সঙ্গতি তো আমাদের জানা দরকার। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানা দরকার। তাই... আমার নাতনির মা গৃহকর্ত্তী। আমি তার অভিবাবক। আমিই তাকে বাড়িতে পড়াবো। এটা একটা ইংলিশ মিডিয়াম কলেজ। বৃটিশ ইংলিশে পড়ানো হয়। অনেক বড় বড় পোষ্টের ব্যক্তিরা এখানে বড় বড় এ্যমাউন্টের ডোনেশান দিয়েও তাদের চিল্ড্রেনদের ভর্তি করাতে চায়। বাচ্ছাদের পড়ানোর জন্যও বাড়িতে টিউটর দিতে হবে। পারবেন তো সামলাতে। আমি একাই ওকে পড়াবো। সামলে নেবো ঠিক। একা সামলানো আপনার পক্ষে মুশকিল হবে। তার ওপর আপনি রিটায়ার করেছেন। তাই বলছি আপনি অন্য কলেজে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। বলেই প্রিন্সিপাল ম্যাডাম বক্রচাউনি চেয়ে চোখ ঘোরাতে যাবে, এমন সময় দাদু প্রশ্ন করলেন ম্যাডামকে...... আপনার এখানে কোনো মন্তেসরি কোর্স পাস করা শিক্ষক বা শিক্ষিকা আছেন? ম্যাডাম একটু ইতঃস্ততঃ বোধ করে....না নেই। তবে ডঃ পারমিতা সেন ম্যাডামের বই ফলো করি। ওনার ভিডিও লেকচার দেখানো হয়। ডঃ পারমিতা সেনকে চেনেন আপনারা? হ্যাঁ, উনি রাষ্ট্রপতি এওয়ার্ড প্রাপ্ত অধ্যাপিকা। উনি মন্তেসরি কোর্সে পি.এইচ.ডি করেছেন। ওনার লেখা অনেক বই আমাদের লাইব্রেরীতে আছে। ওনাকে আমাদের কলেজে আনা হয়েছিল স্পিচ দিতে। স্পিচ দিয়ে অমূল্য সময় ব্যায় করে আমাদের ধন্য করেছেন। ওনাকেই আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা ফলো করেন। ও আচ্ছা.....। ডঃ পারমিতা সেন আমারই মেয়ে। আমিই তাকে কলেজ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছি। এই কথা শুনে সকল শিক্ষক শিক্ষিকারা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন....স্যরি স্যার!!!! দাদু তখন বললেন.....কোনো মানুষকে দেখে তার মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। বিদ্যালয়কে কখনো বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করাও ঠিক নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রদানের জন্যই হওয়া উচিত। দাদু নাতনীর দিকে তাকিয়ে বললেন......চল, অনু। আমি তোকে সাদামাটা কলেজেই ভর্তি করে পড়াবো। দাদু নাতনীর হাত ধরে বাড়ীর পথে রওনা দিলেন।" গল্পটা বলে গ্লাসের জলটায় একটু চুমুক দিয়ে বললেন....... আমিই সেই অনু, অনুপমা সেন। *সেদিনের পর আজ দ্বিতীয় বার এই কলেজে এলাম ! সেদিন আপনারা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন আর আজ আমাকে বক্তৃতা করতে ডেকেছেন। দাদু নেই, তিনি নিশ্চয়ই উপর থেকে হাসছেন* এখন সবাই প্রশ্ন করবেন..... আমার পদবী দাস হওয়া উচিত। সেন হল কি করে। উনি আমার অভিভাবক হয়ে সকল সময় আমার পাশে আপনজন হয়ে ছিলেন। উনিই আমাকে অনুপমা সেন(I.A.S) বানিয়েছেন। আজ উনি নেই। কিন্তু সকল সময় ওনাকে স্মরণ করে আমি কাজ শুরু করি। প্রনাম দাদু? আজ আমিও তাই বলবো....প্রকৃত শিক্ষায় কোনো চাকচিক্যর দরকার হয় না। সৎ ইচ্ছাটাই বড় কথা। সকল শিক্ষক শিক্ষিকা ও আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের বলবো কলেজ বা শিক্ষা যেন অহংকার না হয়। শিক্ষায় নম্রতা ও সৎ ইচ্ছার দরকার। তবেই প্রকৃত শিক্ষালাভ হয়। তবেই একটা বিদ্যালয় বড় হয়। বড় মাপের মানুষ হওয়া যায়। ঠিক আমার দাদু শ্রী ভবেশ সেনের মতো। সকলকে নমষ্কার জানিয়ে বক্তব্য শেষ করলাম।
15-04-2022, 09:59 AM
15-04-2022, 02:43 PM
-------------- জোয়ার - ভাঁটা --------------
"মা, বাবা কখন আসবে? আমার খিদে পেয়ে গেছে।" বুকানের অস্থির প্রশ্নের উত্তরে মল্লিকা কী বলবে ভেবে না পেয়ে একটু শুষ্ক হাসিই ফিরিয়ে দেয়। মনে মনে ভাবে, খিদের আর কী দোষ! ওইটুকু ছ'বছরের বাচ্চা, এই বয়সেই তো খিদে পাবে। আজ আবার তার উপর জন্মদিন বলে কথা, ভালোমন্দ দুটো পদ বাড়তিই হয়েছে রান্না। সেই দেখে বুকান কী আর স্থির থাকতে পারে! আজকের দিনে বাকিদের মত জন্মদিন মানেই ঢাউস একটা কেক এনে দশটা লোক নেমন্তন্ন করে, ফটো তুলে, হই-হুল্লোর করার মানসিক ও আর্থিক বিলাসিতা আজ আর মল্লিকার অন্তর থেকে আসেনা। ওই পাড়ায় থাকতে প্রথম কয়েকটা বছর করেছিল সাধ্যমত আশেপাশের ক'টা বাচ্চা আর তাদের মায়েদের নিয়ে। বিগত দু'বছরে জীবনটাকে একটু বেশীই দেখেছে। ওই পাড়াও ছেড়ে দিয়ে এই ঠাকুর কলোনীতে বাসা নিয়েছে ওঁরা। - "কী গো?" বুকানের তাড়ায় মল্লিকার সম্বিৎ ফেরে। - "জানিস তো, রবিবার নাইট করে সোমবার ফিরতে তোর বাবার একটু দেরীই হয়। এসে যাবে এক্ষুণি, বারোটা তো বাজতে চলল।" বলতে বলতেই দরজায় রুপমের আওয়াজ পাওয়া গেল, "এসে গেছি। আর এই দেখো কী এনেছি।" মল্লিকা দেখে রুপম একটা প্যাকেট হাতে এসেছে। বের করতে দেখে একটা কেকের বাক্স। - "তুমি আবার শুরু করলে!" মল্লিকা কিছুটা বিরক্তি সহকারেই বলে। - "আরে, ঠিক আছে। ছোট দেখেই এনেছি। সন্ধ্যেবেলায় কাটবে।এখন তো পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল। তাই ভাবলাম নিয়েই আসি।" - "আজ স্থিতিশীল, অস্থির হতে কতক্ষণ! যাক গে, তাড়াতাড়ি স্নান করে এসো। আরেকজনের খাবারের গন্ধ পেয়েই খিদে পেয়ে গেছে আজ।" - "হ্যাঁ, বাবি, এসো তাড়াতাড়ি।" রুপম হেসে চলে যায়। স্নান করে এসে দেখে দু'টো আসন পাতা রয়েছে, বুকান একটায় বসে আছে। দু'টো থালায় ভাত আর কয়েকটা বাটিতে অনেকরকম পদ সাজানো। মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, পাঁচ রকম ভাজা, আলু-পটলের তরকারি, কাতলা মাছের ঝোল, খাসির মাংস, চাটনি আর পায়েস। বুকানের আর দোষ কী, রুপমেরই দেখে খিদে পেয়ে গেল। - "মলি, তুমিও নিয়ে এসো। আবার বসে থাকবে কেন!" - "নিচ্ছি, নিচ্ছি। তোমরা শুরু করো। ভাত লাগবে, দিয়ে আমি নিয়ে আসব।" বাপ-বেটা পরম তৃপ্তিতে খেতে লাগল। মল্লিকা একদৃষ্টিতে সেটাই মনের মণিকোঠায় ফ্রেমবন্দি করছে, এতে একটা আলাদা সুখ আছে। রোজকার একরাশ না পাওয়ার মাঝে এই পড়ে পাওয়া চোদ্দআনা সুখটা যে অমূল্য। একসাথে খেতে বসলে এই মূহুর্তগুলো কোথা দিয়ে পালিয়ে যেত টেরও পেত না। স্মৃতির সরণী বেয়ে মল্লিকা আপন খেয়ালে এক'পা দু'পা করে পিছিয়ে চলল। রুপম আর বুকানকে নিয়ে একটা দিব্যি সাজানো সংসার ছিল। শহরের এক নামকরা রেঁস্তোরায় রুপমের চাকরিটাও বেশ স্থিতিশীল ছিল। আর পাঁচটা সচ্ছল মধ্যবিত্ত পরিবারের মতই ওদের জীবনেও ছিল ছোট ছোট নানা খুশির সমাহার, এদিক সেদিক ঘুরতে যাওয়া, উৎসবের আবেশ, উপহার, কেনাকাটি। হঠাৎ করেই বিশ্বজুড়ে মহামারীর প্রকোপ আর একে একে তার করাল গ্রাসে পড়ল হোটেল - রেঁস্তোরা ব্যবসাতেও। একের পর এক ব্যবসা বন্ধ আর সাথে রুপমের মত লক্ষ মানুষের নতুন করে বেকার হওয়ার খবর অনেকাংশেই ঢাকা পড়ল মহামারীর প্রকোপ আর তা সুরাহার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের খবরে। চারপাশের চেনা-জানা হিসেব ওলোট-পালোট করে ভীষণ অচেনা হয়ে যাওয়া সেইসব দিনগুলো মনে পড়লে অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে। বেশ কয়েক মাস বেকারত্বের পর অবশেষে একদিন রুপম জানালো এই নতুন চাকরিটার কথা। একটা সফটওয়্যার কোম্পানীর ক্যান্টিনে। মাইনে মোটামুটি ভালোই হলেও দুটো বিষয় একটু আলাদা, চাকরিটা রাত্রিকালীন আর সাপ্তাহিক ছুটি সোমবার। তারপর থেকে আস্তে আস্তে সংসারটা আবার স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। - "মা, মাংসটা খুব ভালো খেতে হয়েছে।" বুকানের গলার আওয়াজে মল্লিকা বর্তমানে ফিরে আসে। - "এই দাঁড়া, ভাত নিয়ে আসি।" - "তোমারটাও নিয়েই এসো।" পাশ থেকে রুপম বলে ওঠে। মল্লিকা মাথা নাড়িয়ে আনতে যায় বাকি সব একসাথেই। আরো আধঘন্টা যাবৎ খাওয়া-দাওয়া পর্ব চলার পরে শেষ হলে বুকান শুতে যায়, রুপম খবরের কাগজটা নিয়ে বসে আর মল্লিকা রান্নাঘরে সব পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সন্ধ্যেবেলা তিনজন মিলে মোমবাতি জ্বালায়, কিনে আনা কেকটা কাটে, নিজেদের মত করে ছেলের জন্মদিনটা পালন করে। অনেকদিন পর যেন সবকিছু আগের মত লাগছিল মল্লিকার। মনে মনে প্রার্থনা করে এই চাকরিটায় যেন কারোর নজর না লাগে। পরদিন আর পাঁচটা দিনের মতই বেশ চলছিল। এগারোটা নাগাদ তিনটে লোক এসে জিজ্ঞাসা করল যে রুপম সরকার এখানেই থাকে কিনা। মল্লিকা হ্যাঁ বলতেই ওনারা নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে রুপমকে ডেকে দিতে বলে। পুলিশ। রুপম ভিতর থেকে মল্লিকার ডাকে বেরিয়ে আসলে ওনাদের মধ্যে একজন এগিয়ে গিয়ে বলেন, "আপনিই রুপম সরকার, স্যরি, অ্যান্থনি?" রুপমের মুখটা এইটুকু হয়ে গেছে মল্লিকার নজর এড়ায় না। কিন্তু অ্যান্থনি কথাটার মানে ও কিছুই বুঝতে পারে না। - "চলুন আমাদের সাথে।" - "কিন্তু ওঁর দোষটা কী আমাকে বলুন। চুরি, ডাকাতি, স্মাগলিং কিছু করেছে নাকি? দয়া করে আমাকে বলুন।" মল্লিকা কাতরকণ্ঠে অনুরোধ করে। রুপম চুপচাপ ওদের সাথে বেরোনোর জন্য এগোয়। - "কি গো, তুমি তো বলো, কী করেছো।" মল্লিকার কাতরতা দেখে ওই তিনজনের একজন কিছু বলতে গিয়ে দেখে বাচ্চাটা ভিতরের ঘরের দরজায় পরদাটা আঙ্গুলে নিয়ে পেঁচাচ্ছে। - "আমাদের ওখানে পরে আসুন, সবটা জানানো হবে।" মল্লিকার উদ্দেশ্যে এটুকুই বলে উনি বাকিদেরকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় মল্লিকা আকাশ-পাতাল ভেবেও কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পেল না। বুকানকে ঘরে শান্ত হয়ে থাকতে বলে পোষাক পাল্টে কিছুক্ষণ পরে মল্লিকা বেরোল থানার উদ্দেশ্যে। ঢুকে দেখল রুপমকে একটা কোণায় বসিয়ে রেখেছে। থানার অফিসারের কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দিতেই ভারী গলায় উনি বলে ওঠেন, "উনি যা করেছেন তা ভারতীয় দণ্ডবিধান অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিছুদিন জেলের হাওয়া খেলেই সব শখ মিটে যাবে। আপনি চলে যান ম্যাডাম।" - "কী করেছে তো বলুন।" - "স্যার তো বলল আপনাকে চলে যেতে, কানে গেলো না!" পাশ থেকে এক উর্দিধারী বলে ওঠে। - "আমাকে জানতে তো হবে আমার স্বামী কী করেছে!" - "শুনতে চান? শুনুন তাহলে, আপনার স্বামী একটা জিগোলো।" - "কী যা তা বলছেন!" মল্লিকা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না। - "হ্যাঁ, বহুদিন যাবৎ অ্যান্থনি নামের আড়ালে উনিই জিগোলো হিসেবে কাজ করছেন। আমাদের কাছে খবর ছিল একটা বাগানবাড়িতে মাঝেমাঝেই অন্যরকম আসর বসাতো কয়েকজন বিত্তশালী মহিলা। অনেকদিন ধরে রেইকি করার পরে আমরা গিয়ে চার্জ করলে সব সত্যিই প্রকাশ হয়, তখন আরো দুজন সমেত ওনার নাম হাতে আসে। ওনার এটাই পেশা, শহরের বিভিন্ন তথাকথিত আধুনিকা, বিত্তশালী, নিঃসঙ্গ মহিলাদের দরকার মত চাহিদা পূরণ করা। রীতিমতো এজেন্ট মারফত যোগাযোগ করে দরাদরি হয় এবং এজেন্ট একটা অংশ নেওয়ার পরে উনি বাকি টাকাটা পান প্রতি রাতের মূল্য হিসেবে। আপনি জিজ্ঞাসা করে দেখুন ওনাকে।" মল্লিকা ধীর পায়ে এগিয়ে যায় রুপমের কাছে। কী বলবে বুঝে পায় না, নিষ্পলকে তাকিয়ে থাকে রুপমের দিকে। দুজনের মাঝের একহাত দূরত্ব যেন কয়েকশো যোজনের ন্যায় এই মূহুর্তে। রুপম অধোবদনে মৃদুস্বরে বলতে শুরু করে, "দীর্ঘদিন বেকার বসে থাকার পরে ওই রেঁস্তোরাতেই নিয়মিত আসতেন এমন একজন যখন প্রস্তাব দিলেন যে মনোরঞ্জনের বিনিময়েও টাকা উপার্জন সম্ভব, আমার কাছে আর কোনো পথ ছিল না। পারলে ক্ষমা করো।" - "তুমি একটাবার জিজ্ঞাসা অবধি করলে না এইরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে!" - "জিজ্ঞাসা করলেও কিছুই লাভ হত না। তুমি কখনোই রাজি হতে না আর আমাকেও করতেই হত। না খেয়ে মরতে তো দিতে পারতাম না!" মল্লিকা চুপ করে দাড়িয়েই থাকে। একটা মহামারী যে এভাবে একের পর এক নানা উপায়ে ওর সমস্ত আকাশটাকে ছিঁড়েখুড়ে ফর্দাফাই করতে পারে, কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেনি। রুপমের কথাগুলো শুনে ও পরবর্তী কিছু কর্মকাণ্ড ঠিক করে নেয়। এগিয়ে যায় অফিসারের সাথে কথা বলতে। - "স্যার, আমি সবটাই জানি এখন। গর্হিত অপরাধ জেনেও আমি এটুকুই বলতে চাই যে, ও যা করেছে পরিস্থিতির শিকার হয়ে করেছে। যা করেছে পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালনের জন্য করেছে। সংশোধনের একটা সুযোগ তো দেওয়া উচিত। নারী বা পুরুষ কেউই সচরাচর স্বেচ্ছায় কারো লোলুপতার ভোগ্যপণ্য হতে চায় না। নারীদের যারা এই পেশায় আছেন, তাদের সমস্যাটা আজ বহুল প্রচারিত হওয়ার সুবাদে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে আসে তাদের প্রয়োজনে। কিন্তু কোনো পুরুষ আর এই পেশা, তা তো ভাবতেও পারে না সমাজ। সেখানে সমস্যা, তার সমাধান, সে সব তো দূরস্ত।" থানার অফিসার এক দৃষ্টিতে মল্লিকার দিকে চেয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর শান্তভাবে বললেন, "ম্যাডাম, আপনার ভাবনা-চিন্তার প্রশংসা না করে পারছি না। সংশোধনই আমাদেরও লক্ষ্য, লাঠিপেটা করে ক্ষমতা প্রদর্শন না। কিন্তু, একেবারেই ছেড়ে দেওয়া তো যায় না এভাবে।" - "আর এরকম হবে না, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলে যাচ্ছি। আমাদের একটা ছ'বছরের ছেলে আছে। আমি চাইনা এই ঘটনাটার কথা জানতে পেরে সারাজীবনের জন্য বুকানের চোখে ওর বাবা এতটুকুও ছোট হয়ে যাক।" - "আমি বুঝতে পারছি। আপনি এক কাজ করুন। একজন উকিল নিয়ে কালকে আসুন, আমি বাকিটা দেখছি।" মল্লিকা অফিসারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুপমের কাছে যায়। রুপম বাকরুদ্ধ অবস্থায় মল্লিকার দিকে তাকিয়ে থাকে। - "চিন্তা করো না। কাল সব হয়ে যাবে। আর একটা কথা, আমার কাছে তুমি আজও আগের রুপমই আছো। কিচ্ছু বদলায়নি।" বলে মল্লিকা ওর গালটা আলতো ছুঁয়ে বেরিয়ে গেল। প্রাথমিক খারাপ লাগার মেঘটা কেটে গিয়ে কখন যে একটা স্বস্তির রোদ্দুর উঁকি মেরেছে, এতক্ষণে টের পেল মল্লিকা। কিছু কিছু হেরে যাওয়া অনেক গোপন জিতের সুলুক সন্ধান দেয়, আজও। -------- (সমাপ্ত) -------- Collected |
« Next Oldest | Next Newest »
|