Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
(03-02-2022, 01:11 PM)ddey333 Wrote:  " তিস্তা তুমি যে অপাপবিদ্ধা "  যতটা লেখা হয়েছিল তার প্রায় ৯০ শতাংশের মতো আজ মেইল করে দেব ...

শুধু শেষের ওই হায়দরাবাদ যাওয়ার অংশটা পাওয়া গেলো না ..

দয়া করে শেষটা লিখবে রৌনকদা ....

Please ... Please ... Please ... Namaskar Namaskar

রৌনকদা ব্যক্তিগত জীবনে কিছু ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন ... তাই ...

কিন্তু ফিরে আসবেনই আসবেন , আমাকে উনি কথা দিয়েছেন 



Namaskar Namaskar Heart Heart
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
আমাকে আরো নিবিড় করে বুকে টেনে নেবার বৃথা চেস্টা করে বলল... তুমি এতো দুরে কেন তিস্তা? আস্তে করে উত্তর দিলাম...আমি তো তোমার বুকের ভেতরে রিজ...বুঝতে পারছো না? বিড় বিড় করে বলল...কি জানি, মনে হচ্ছে তুমি কতো দুরে... তারপরে একটু সময় চুপ করে থেকে বলল... রাজকুমারীর ঘুম হয়েছে? ওর ঘুমের ঘোর না কাটলেও আমি স্বপ্নের ভেতরে থেকে ভাবছিলামজানি না সোনা ঘুমিয়েছি কিনা কিন্তু এটা জানি তুমি আমাকে এত আদর...এত আদর করেছো যে আমি হয়তো কোনোদিন ভুলতে পারবো না এই রাতটার কথা। আমার সারা শরীর মন দিয়ে আরো একবার অনুভব করেছি তুমি আমাকে কতো ভালোবাসো, কতো সম্মান করো। মন প্রান দিয়ে বুঝেছি আমার শরীরটা তোমার কাছে নিছক ভোগের বস্তু নয়... আমার শরীরটা যেন এক মন্দীর আর তুমি সেই মন্দীরের পুজারী যে একনিষ্ঠ ভাবে ভগবানের সেবা ছাড়া আর কিছু বোঝে না। তুমি শুধু নিজের সুখের কথা ভাবোনি, তোমার রাজকুমারীকে নিয়ে গেছো এক স্বপ্ন রাজ্যে... তোমার কুঁড়িসম রাজকুমারীকে একটু একটু করে আধ ফোটা গোলাপে পরিনত করেছো... শিখিয়েছো কিভাবে সুখ পেতে আর সুখ দিতে হয়...
হঠাৎ মনে পড়ে গেল...আরে, তুমি যে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছিলে আর আমি উত্তর না দিয়ে কি সব ভেবে যাচ্ছি। এই, তুমি রাগ করোনি তো? আবারও ভুল করলাম নীরবে তোমাকে প্রশ্নটা করে। তোমার দিকে তাকিয়ে দেখবো যে তারও কি উপায় আছে, তুমি আমাকে এমন ভাবে বুকের ভেতরে আগলে রেখেছো যেন তুমি ভয় পেয়েছো এই ভেবে যে আমি হারিয়ে যেতে পারি। আস্তে করে তোমাকে বললাম...এই... তুমি কোনো সাড়া দিলে না। আবার ডাকলাম তোমায়, এবারেও কোনো সাড়া নেই। বুঝেছি, তুমি আবার ঘুমিয়ে পড়েছো। ঘুমোও সোনা... আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। কাল রাতে তুমি দেখতে চেয়েছিলে আমায়, ভীষন লজ্জা পেয়েছিলাম, নিজেকে দেখতে দিই নি। তখন কি আর জানতাম তুমি ওই অন্ধকারের ভেতরে আমাকে ছুঁয়ে যেতে যেতে মনের ক্যামেরায় তুলে রাখবে তোমার আদরের রাজকুমারীর নগ্নতার প্রতিচ্ছবি। তোমার অস্ফুট স্বরে বলা ... তিস্তা, কি সুন্দর তুমি... শুনে মনে মনে ভাবছিলাম...ইস, কেন ওকে বললাম আলো নিভিয়ে দিতে, কেন ওকে নিজের চোখে দেখতে দিলাম না... একটু না হয় লজ্জা পেতাম...না হয় চোখ বুজে থাকতাম। তারপরেই মনে হয়েছিল...ভালোই তো হয়েছে... তুমি আমাকে যেভাবে আলতো ভাবে ছুঁয়ে যাচ্ছো আর আমি শিউরে শিউরে উঠছি সেই অনুভুতির কি কোনো তুলনা আছে? ভীষন ইচ্ছে করছে আজ তুমি আমাকে দেখো মন প্রান ভরে...ইস, ভাবতেই পারছি না...তুমি অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছো...আমি লাজুক মুখে মুখ নিচু করে পা ভাঁজ করে এক হাতে ভর দিয়ে বসে আছি...আমার খোলা চুলে ঢাকা আধো উন্মুক্ত নগ্ন বুকের দিকে তুমি মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছো... নিজের অজান্তেই হাত বাড়িয়েছো আলতো ভাবে ছুঁয়ে দেখার জন্য...তোমার ছোঁয়া পেয়ে আমি আবার শিউরে উঠেছি...অনেক সময় পরে কি মনে করে মুখটা একটু তুলে তোমার দিকে তাকিয়েছি...দেখলাম, তুমি এক দৃষ্টে আমার দিকে তাকিয়ে আছো। পারলাম না চোখ সরাতে... বুঝতে পারছি কিছু যেন তুমি বলতে চাইছো... একটু একটু করে পড়তে পারছি তোমার চোখের ভাষায় বলতে চাওয়া মনের কথা। আস্তে আস্তে চোখ নামিয়ে নিয়েছি। কয়েক মুহুর্ত নিশ্চল ভাবে বসে থেকে ভেবেছি, তুমি কি ভাবছো এখন...তুমি কি ভাবছো আমি তোমার মনের কথা বুঝতে পারিনি? হয়তো তা নয়...তুমি ভাবছো যে আমি মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করছি। ঠিকই তো, তুমি আমাকে দেখতে চাইলে আমি কেন না করবো বলো? আমি তো শুধু তোমার-...আমার সবকিছু তো তোমার। আস্তে আস্তে আমার ভাঁজ করে রাখা পা দুটো সরাতে শুরু করেছি...তোমার দিকে না তাকালেও আমি জানি তুমি চোখের পলক না ফেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছো। শুধু তোমারই জন্য তোমার আধফোটা গোলাপ আরো একটু প্রস্ফুটিত করেছে নিজেকে। এক একটা মুহুর্ত কেটে যাচ্ছে... বুঝতে পারছি তুমি আমার নগ্নতার রুপে অভিভুত কিন্তু আমি যে আর পারছি না সোনা, আমার শরীর আমার কথা শুনতে চাইছে না। যেন বলতে চাইছে কেন তুমি ওকে দুর থেকে শুধু দেখে যেতে দিচ্ছো...ওকে কাছে ডাকো, আবার নিজেকে উজ়াড় করে দাও। হয়তো তুমিও বুঝেছো আমি কি চাই... কখন আমার কাছে এসেছো হয়তো বুঝিনি। কখন যেন আমি তোমার বুকের উপরে এলিয়ে পড়েছি লতার মতো। তোমার হাত সেই আগের মতো আমার শরীরে খেলে বেড়াচ্ছে। ছুঁতে চেয়েও যেন ছুঁয়ে যাচ্ছো না... আমার মুখে তোমার উষ্ণ শ্বাস প্রশ্বাসের ছোঁয়া আমাকে একটু একটু করে গ্রাস করছে। আমার ঠোঁট দুটো কেঁপে কেঁপে চেয়েছে তোমার স্পর্শ পেতে। তুমি তাদেরকে নিরাশ করোনি... ভুল বললাম যে... শুধু আমার ঠোঁট নয়, আমার সারা শরীর চেয়েছে তোমাকে। বুঝিনি তুমি কখন তোমার বক্ষলগ্না রাজকুমারীকে শুইয়ে দিয়ে সারা শরীরে চুমু দিতে শুরু করেছো। আমার পায়ের পাতাও পেয়েছে তোমার ঠোঁটের স্পর্শ। তোমার হাত আর ঠোঁট আমাকে যেন পাগল করে দিচ্ছে... নিজের অজান্তে বেরিয়ে আসা আমার অস্ফুট শিৎকার তোমাকে করে তুলেছে আরো দুষ্টু... মাঝে মাঝে তুমি মুখ তুলে দুষ্টুমি ভরা হাসির সাথে আমার দিকে তাকিয়ে দেখছিলে আমি কেমন ভাবে অসহায় হরিন শিশুর মতো তোমার দিকে তাকিয়ে আছি... তাতেও তোমার মন গলেনি...তুমি আবার শুরু করেছো তোমার দুষ্টুমি... তোমার মাথা দুহাতে চেপে ধরে ছটপট করেছি...বলতে চেয়েছি আমাকে মেরে ফেল রিজ, আর পারছি না... তবুও তুমি আমাকে রেহাই দাওনি...আমি এক সদ্য ফোটা কুঁড়ি যে জানে না নিজেকে কি করে আটকাতে হয়, পারিনি সেই অসহ্য সুখ সয়ে যেতে...অস্ফুট আর্তনাদের সাথে সাথে আমি নিজেকে উজ়াড় করে দিয়েছি...


Like Reply
কি অসহ্য ... অসাধারণ লেখা ...

রৌনকদা আবার লিখবেন , বলেছেন উনি



Namaskar Namaskar yourock
Like Reply
# নানা_রঙের_প্রেম



-"গুড মর্নিং"
-"মর্নিং"
-"কিরে, উইকএন্ড কেমন কাটল?"
-"ভালোই। তোর?"
-"জাস্ট ল্যাদ খেয়ে কাটালাম। তোর বাড়িতে পুজো হয়?"
-"হ্যাঁ রে... ওই নিয়েই কেটে গেল..."
-"জ্জিও! খিচুড়ি এনেছিস? প্রসাদ?"
-"না তো!"
-"কোনো কাজের না তুই! একটু তো আনতে পারতিস... ভাবতেই পারতিস, বেচারা ছেলেটা কাজের জন্য বাড়ির বাইরে পড়ে আছে... ভাল-মন্দ সেভাবে খেতে পায় না... কোনো দয়া-মায়া নেই তোর, সত্যি!"
-"ভাল-মন্দ খাস না বলিস না, এই তো শুক্রবার অফিস থেকে ফেরার পথে বিরিয়ানি সাঁটিয়েছিস! ফেসবুকে দেখেছি আমি।"
-"তাও, সরস্বতী পুজোর প্রসাদ কা আনন্দ তুম ক্যায়া জানো রিমি বাবু!"
-"উফফফ! নাটক! এই নে, তোর জন্য এনেছি। কিন্তু আর কাউকে বলিস না প্লিজ... অফিসে শুধু তোর জন্যই এনেছি।"
-"এনেছিস? লাভলি! এইজন্যই তো তোকে এত ভা... মানে এত ভাল তুই!"
-"পেটুক কোথাকার!"
-"আমিও তোর জন্য একটা জিনিস এনেছি।"
-"আমার জন্য? কি?"
-"মেলিন্ডা রোজের নাম শুনেছিস?"
-"মেলিন্ডা রোজ? ঠিক মনে পড়ছে না রে..."
-" কানাডার একটি ১২ বছরের মেয়ে এই মেলিন্ডা রোজ। দুর্লভ একধরণের ব্লাড ক্যানসার হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি হাল ছাড়েনি, জানিস? প্রতিদিন অনেক মানুষকে, ক্যানসার পেশেন্টদের উদ্বুদ্ধ করত। হাসি ছড়াত। সেই মেয়েটির কথা ভেবেই প্রতিবছর ২২শে সেপ্টেম্বর 'ওয়ার্ল্ড রোজ ডে' পালন করা হয়। "
-"বাহ্... কত কি জানার আছে..."
-"হ্যাঁ, আর তাই তো তোর জন্য এই গোলাপটা আনলাম..."
-"কিন্তু আজ তো ২২শে সেপ্টেম্বর না!"
-"তাতে কি? তুই ও তো হাসি ছড়াস চারিদিকে। অতিমারির সময় যখন আমরা ভাবতাম সব শেষ হয়ে যাবে, তুই আমাদের অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রোজ কতভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করতিস। সত্যি বলতে কি, তোর জন্যই নতুন করে বাঁচতে পেরেছি। তাই এটা তোর জন্য রিমি।"
-"ও... আই অ্যাম ফ্লাটার্ড, রাতুল। থ্যাংকইউ। আমি কিন্তু কিছু ভেবে করিনি। মানে... জাস্ট যেটা বিশ্বাস করি, সেটাই লিখতাম গ্রুপে।"
-"জানি...তাই তো তুই সবার থেকে আলাদা। কাঁটা নিয়েও আলো ছড়াতে পারিস।"
-"আচ্ছা! খুব ভাল ভাল কথা বলছিস! কি ব্যাপার রে?"
-"গভীর ব্যাপার হ্যাজ! কাল জানতে পারবি... এখন কাজে বসি।"
-"কাল... কাল... এই হনুমান রাতুল... কাল তো প্রোপোজ ডে...উফ, কানে হেডফোন লাগিয়ে হাসছিস... দাঁড়া, দেখ আমি কি করি..."
-"ছোটবেলায় পড়িস নি? পুষ্প নিজের জন্য ফোটে না, পরের জন্য নিজের হৃদয়-কুসুম প্রস্ফুটিত করিও? তুই হৃদয় প্রস্ফুটন কর...বাকিটা কাল বলব.."
-"ধ্যাত!"

Like Reply
(08-02-2022, 09:50 AM)ddey333 Wrote: # নানা_রঙের_প্রেম



-"গুড মর্নিং"
-"মর্নিং"
-"কিরে, উইকএন্ড কেমন কাটল?"
-"ভালোই। তোর?"
-"জাস্ট ল্যাদ খেয়ে কাটালাম। তোর বাড়িতে পুজো হয়?"
-"হ্যাঁ রে... ওই নিয়েই কেটে গেল..."
-"জ্জিও! খিচুড়ি এনেছিস? প্রসাদ?"
-"না তো!"
-"কোনো কাজের না তুই! একটু তো আনতে পারতিস... ভাবতেই পারতিস, বেচারা ছেলেটা কাজের জন্য বাড়ির বাইরে পড়ে আছে... ভাল-মন্দ সেভাবে খেতে পায় না... কোনো দয়া-মায়া নেই তোর, সত্যি!"
-"ভাল-মন্দ খাস না বলিস না, এই তো শুক্রবার অফিস থেকে ফেরার পথে বিরিয়ানি সাঁটিয়েছিস! ফেসবুকে দেখেছি আমি।"
-"তাও, সরস্বতী পুজোর প্রসাদ কা আনন্দ তুম ক্যায়া জানো রিমি বাবু!"
-"উফফফ! নাটক! এই নে, তোর জন্য এনেছি। কিন্তু আর কাউকে বলিস না প্লিজ... অফিসে শুধু তোর জন্যই এনেছি।"
-"এনেছিস? লাভলি! এইজন্যই তো তোকে এত ভা... মানে এত ভাল তুই!"
-"পেটুক কোথাকার!"
-"আমিও তোর জন্য একটা জিনিস এনেছি।"
-"আমার জন্য? কি?"
-"মেলিন্ডা রোজের নাম শুনেছিস?"
-"মেলিন্ডা রোজ? ঠিক মনে পড়ছে না রে..."
-" কানাডার একটি ১২ বছরের মেয়ে এই মেলিন্ডা রোজ। দুর্লভ একধরণের ব্লাড ক্যানসার হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি হাল ছাড়েনি, জানিস? প্রতিদিন অনেক মানুষকে, ক্যানসার পেশেন্টদের উদ্বুদ্ধ করত। হাসি ছড়াত। সেই মেয়েটির কথা ভেবেই প্রতিবছর ২২শে সেপ্টেম্বর 'ওয়ার্ল্ড রোজ ডে' পালন করা হয়। "
-"বাহ্... কত কি জানার আছে..."
-"হ্যাঁ, আর তাই তো তোর জন্য এই গোলাপটা আনলাম..."
-"কিন্তু আজ তো ২২শে সেপ্টেম্বর না!"
-"তাতে কি? তুই ও তো হাসি ছড়াস চারিদিকে। অতিমারির সময় যখন আমরা ভাবতাম সব শেষ হয়ে যাবে, তুই আমাদের অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রোজ কতভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করতিস। সত্যি বলতে কি, তোর জন্যই নতুন করে বাঁচতে পেরেছি। তাই এটা তোর জন্য রিমি।"
-"ও... আই অ্যাম ফ্লাটার্ড, রাতুল। থ্যাংকইউ। আমি কিন্তু কিছু ভেবে করিনি। মানে... জাস্ট যেটা বিশ্বাস করি, সেটাই লিখতাম গ্রুপে।"
-"জানি...তাই তো তুই সবার থেকে আলাদা। কাঁটা নিয়েও আলো ছড়াতে পারিস।"
-"আচ্ছা! খুব ভাল ভাল কথা বলছিস! কি ব্যাপার রে?"
-"গভীর ব্যাপার হ্যাজ! কাল জানতে পারবি... এখন কাজে বসি।"
-"কাল... কাল... এই হনুমান রাতুল... কাল তো প্রোপোজ ডে...উফ, কানে হেডফোন লাগিয়ে হাসছিস... দাঁড়া, দেখ আমি কি করি..."
-"ছোটবেলায় পড়িস নি? পুষ্প নিজের জন্য ফোটে না, পরের জন্য নিজের হৃদয়-কুসুম প্রস্ফুটিত করিও? তুই হৃদয় প্রস্ফুটন কর...বাকিটা কাল বলব.."
-"ধ্যাত!"


ধ্যাত... খুব ভালো লাগলো
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
বৌমাআআ! 

আসছি মা।

বলুন। 
বোসো এখানে।

আপনি বলুন না। 
বোসো আগে।

হুম। বলুন। 
তোমার সাথে কটা কথা আছে। বলি?

হ্যাঁ হ্যাঁ। নিশ্চয়ই মা। 
থাক্ আর অত মা মা করোনা। মন থেকে তো আর বলছো না। কানে লাগে।
 
তাহলে কি বলবো? 
মামণি বলো। আমার জায়ের মেয়েরা তাই বলে। 
আচ্ছা।
 
তোমাকে যা যা বলবো সেসব আবার রূপের কানে তুলোনা। বাড়িতে অনেক কথা হয়। সব ছেলেদের বলতে নেই। 
ওহ্! বলবো না? আচ্ছা।
 
শোনো আমি পরিস্কার কথার মানুষ। স্পষ্ট কথায় কষ্ট নেই। 
বলুন মা.. ওহ্ সরি মামণি।
 
তোমাদের এই কথায় কথায় সরি আর থ্যাঙ্কু! ন্যাকামির শেষ নেই। 
আপনার ছেলেও তো বলে।
 
হ্যাঁ হ্যাঁ জানি। তোমাকে মনে করাতে হবেনা। 
আপনি কি বলবেন বলছিলেন.... 

শোনো ঋতু..এতো বেলা অবধি শুয়ে থাকবেনা। আমার ছেলের শরীর খারাপ হবে। 
মানে ? 

মানেটা কি তোমাকে বুঝিয়ে বলতে হবে মা?স্বামীর সাথে অত বেশি মেলামেশা করলে....বোঝো তো সবই! ছেলেদের শরীর খারাপ হয়ে যায়। আমার শাশুড়ি মা বলতেন।

এসব কি বলছেন? 
ঠিকই বলছি। বেলা আটটা অবধি শুয়ে থাকলে সংসারে অলক্ষী লাগে। নতুন বৌ...উঠে সবাইকে চা দেবে। তা না! বরকে জড়িয়ে শুয়ে আছে! 

চা তো বেলা মাসী দেয় সবাইকে। 
বেলা মাসী আর তুমি কি এক হলে??

আপনার জায়ের মেয়েরা আর আমি তো এক আপনার কাছে মামণি! 
নতুন বৌয়ের এতো চোপা ভালোনা ঋতু!

নতুন বৌয়ের কিছুই তো আপনাদের ভালো লাগছে না মামণি!

বৌমা! 
ঠিকই তো বলছি মামণি। আমাদের বাড়ির দেওয়া সব জিনিসেই তো আপনি আর আপনার আত্মীয়রা খুঁত ধরছেন।

জিনিসপত্র তেমন ভালো দেননি তোমার বাবা মা। তাই বলেছি। এতে দোষের কিছু নেই। 
আপনারাই তো বলেছিলেন কিছু লাগবেনা। শুধু মেয়েটিকে দেবেন।

ওরকম সবাই বলে! তা বলে কি...! একটা হীরের আংটি অবধি দিলোনা তোমার বাবা আমার রূপকে!

এত বড় চাকরি করে আপনার রূপ! একটা আংটির জন্যে তাকে বাইরের লোকের উপর নির্ভর করতে হবে সেটা আমার বাবা বোঝেননি। বুঝলে দিতেন।

বড়দের সাথে এভাবে কথা বলছো? সম্মান দিতে শেখোনি? 
সম্মান আদায় করে নিতে হয় মামণি। আর বেলা অবধি আমি একা শুয়ে থাকিনা।আপনার ছেলেও থাকে। তাকেই বলুন তার শরীরের খেয়াল রাখতে! 

এসব আমি ছেলেকে বলবো? মা হয়ে? তোমার কি বুদ্ধিভ্রংশ হয়েছে?

কেন? আমাকে আশীর্বাদ করতে গিয়ে যে বলেছিলেন আমি আর আপনার ছেলে আপনাদের কাছে এক।কোনো পার্থক্য নেই! আমাকে বলতে পারলে ওকেও বলতে পারবেন। 
তুমি এতো মুখরা জানলে....!
 
জানলে কি করতেন? সম্বন্ধ করতেন না? 
তোমার বাবা মা কি কোনো শিক্ষাই দেননি তোমাকে?

দুজনেই তো শিক্ষা জগতে...
হ্যাঁ। দিয়েছেন তো শিক্ষা। বিজ্ঞান পড়িয়েছেন।আর বিজ্ঞান বলে আপনার ওই মেলামেশা করলে স্বামী স্ত্রী দুজনেরই শরীর ভালো থাকে।

ছি ছি! আমার সামনে এসব বলছো তুমি! একটুও লজ্জা শরম নেই তোমার?

আপনিই তো বল্লেন বেলা আটটা অবধি বরকে জড়িয়ে শুয়ে থাকবেনা! তখন তো আপনার লজ্জা করেনি! আর বরকে ছাড়া এই বাড়িতে কাকেই বা জড়াবো মামণি?

তোমাকে বোঝাতে যাওয়াই দোষ হয়েছে আমার! মুখের কোনো লাগাম নেই তোমার! 
ঠিক। আমি একদম বে-লাগাম! হিহি!

তুমি কি পাগল হয়ে গেলে? ও বৌমা! 
আমি পাগল এবং সেয়ানা।সেই বুঝে কথা বলবেন এবার থেকে।

এ কি মেয়ে আনলাম ঘরে! হায়! হায়! 
আপনি আনেননি। রূপ আমাকে দেখে জেদ ধরেছিল এই মেয়েকেই বিয়ে করবে। তাই বাধ্য হয়েই....! 

ঠিকই বলেছ বৌমা। এইসব টিচার ফিচারদের সাথে আমরা সম্বন্ধ করিনা। আমরা হলাম বনেদি ... 

আপনার বাবা তো কেরানি ছিলেন মামণি। 
এত্ত বড় সাহস তোর! আমার বাপ তুলিস! 
আপনিই আগে আমার ফ্যামিলি নিয়ে..আপনার প্রব্লেমটা কি মিসেস সেনরায়? 

তুই এইভাবেএএএ! 
প্রেসার বেড়ে যাবে। চেঁচামেচি করবেন না। চা খাবেন? 
আমার ছেলে অফিস যাওয়ার সময় তুই চুমু খাস কেন? নির্লজ্জ মেয়েমানুষ! 

আপনার ছেলে আমাকে খায়। আমিও খাই। বর বৌকে চুমু খাবেনা? 
তুই চলে যা আমার সামনে থেকে। ধিঙ্গী মেয়েছেলে! জিন্স পরে আমার সামনে আসবিনা! 

আপনার মেয়েও কিন্তু জিন্স পরে। 
বেশ করে! 
ঠিক। বেশই তো করে। আমিও বেশ করি, পরি।

তোকে আমিইইই ! 
কি করবেন? শুনুন মামণি আপনার ছেলে অলরেডি নতুন ফ্ল্যাট বুক করে ফেলেছে। বিয়ের পরেই চলে যেতে চেয়েছিল আপনার রূপ। আমি আটকেছি। গেলে আপনারা কষ্ট পাবেন তাই! 

কিককককই বলছো তুমি ?? 
ছেলেকে জিজ্ঞেস করে নেবেন। বিয়ের আগেই ও বলেছিল আমার মা সাংঘাতিক। তুমি পারবেনা। তাই আলাদা থাকাই ভালো। 

রূপ বলেছে একথা? 
হ্যাঁ। বলেছে। কারণ আমার থেকে অনেক ভালো করে ও আপনাকে চেনে। 

আমার রূপ....! ফ্ল্যাট কিনেছে! 
এই নিন। জল খান। 
এসিটা বাড়িয়ে দাও তো! 

এতো আপসেট হবেন না। আমি বুঝতে পারছি আপনার কষ্টটা। আমার দাদা বৌদি যেদিন চলে গেল....!
তোমরা যেওনা বৌমা! আমাকে ক্ষমা করে দাও। 

এসব থাক এখন। আপনি শুয়ে থাকুন একটু। চুপ করে। 
তোমরা যাবেনা তো? 
না। যাবোনা। তবে আপাতত হনিমুনে যাবো। আপনি ব্যাগড়া দিচ্ছিলেন বলে বারবার ওটা পিছিয়ে যাচ্ছে। 

হ্যাঁ... হ্যাঁ.... নিশ্চয়ই যাবে। আমারই ভুল হয়েছে! 
আর রূপকে বলেছি আপনার আর বাবার জন্যে পুরীর   টি কিট কাটতে। আপনি তো সমুদ্র ভালোবাসেন!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
# নানা_রঙের_প্রেম


-"হাই রাতুল!"
-"হেই, হাই রিমি!"
-"আজ খুব বিজি নাকি তুই? দেখাই নেই যে!"
-"হ্যাঁ রে, একটা কাজের ডেডলাইন আজ। যেভাবেই হোক শেষ করতে হবে।"
-"ও হো! কোনো সাহায্য লাগবে? বলতে পারিস..."
-"না না, আমার প্রায় হয়েই গেছে... একটু ব্রাশ আপ করতে হবে জাস্ট!"
-"আচ্ছা! তাই ভাবি, এত খাইখাই করিস সবসময়, তোকে লাঞ্চরুমেও দেখলাম না..."
-"আমি আজ প্যান্ট্রিতে যাইনি রে... ডেস্কেই বসে খেয়ে নিয়েছি।"
-"চা খাবি?"
-"না রে... এই একটু আগেই তো লাঞ্চ করলাম। এখন চা খেলে যদি অম্বল হয়ে যায়?"
-"রাতুল? একটা সত্যি কথা বলবি?"
-"যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বই মিথ্যা বলিব না!"
-"তুই কি আজ আমাকে অ্যাভয়েড করছিস?"
-"তুই একটা পাগলি!"
-"না, সত্যি বল। আজ সকাল থেকে একবারও আসিস নি ডেস্কে! রোজ অন্ততপক্ষে গুড মর্নিং টুকু তো করিস? লাঞ্চে এলি না... তোকে একবার হোয়াটসঅ্যাপে 'হাই' পাঠালাম, দেখলিও না!"
-"হুহ্, আমার মতো ঠ্যালার নাম বাবাজী হলে বুঝতিস!"
-"ঠ্যালার নাম বাবাজী? মানে? ও হ্যাঁ... তোর অনেক কাজ... তাই না?"
-"কাজকে রাতুল পাত্তা দেয় না, বুঝলি? অন্য একটা ব্যাপার আমাকে পাগল করে দিয়েছে।"
-"অন্য একটা ব্যাপার? ওহ্... আমি ভাবলাম ওয়ার্কলোড..."
-"বিশ্বাস করছিস না, তাই না?"
-"না না, অবিশ্বাস কেন করব?"
-"গলা শুনেই বুঝতে পারছি!"
-"তোর মুন্ডু!"
-"আচ্ছা আচ্ছা... এই যে, আমার ডেডলাইনের আপডেট হোয়া তে পাঠালাম... সেন্ট... দ্যাখ...তবেই বুঝবি!"
-"রাতুল...এটা কি... আংটি..."
-"মেমসাব হামি গরীব আদমী আছি!"
-"মানে?"
-"আপাতত আংটির ছবি পাঠালাম...কাজ চালিয়ে নে, প্লিজ!"
-"আংটির ছবি? তুই একটা আংটির ইমোজি পাঠিয়েছিস!"
-"রাগ করলি নাকি, পাগলি?"
-"ইস! পাগলি নাকি!"
-"পাগলী, তোমার সঙ্গে ভয়াবহ জীবন কাটাব
পাগলী, তোমার সঙ্গে ধুলোবালি কাটাব জীবন
এর চোখে ধাঁধা করব, ওর জল করে দেব কাদা
পাগলী, তোমার সঙ্গে ঢেউ খেলতে যাব দু’কদম।
অশান্তি চরমে তুলব, কাকচিল বসবে না বাড়িতে
তুমি ছুঁড়বে থালা বাটি, আমি ভাঙব কাঁচের বাসন
পাগলী, তোমার সঙ্গে বঙ্গভঙ্গ জীবন কাটাব
পাগলী, তোমার সঙ্গে ৪২ কাটাব জীবন।"
-"রাতুল!"
-"রিমি!"
-"তুই...এটা..."
-"সারাদিন ধরে মুখস্ত করছি, বুঝলি? চুপিচুপি বলি... একবার বাথরুমে গিয়ে মহড়াও দিয়ে দিয়েছি! বাইরে কে যেন ঠকঠক করছিল, দরজা খুলিনি!"
-"তুই একটা আস্ত পাগল!"
-"গিল্টি অ্যাজ চার্জড! পাগলি তোমার জন্যে..."
-"এভাবে কেউ বলে...?"
-"কিভাবে? ওহ্! চকোলেট দেওয়া উচিৎ ছিল, তাই না? কিন্তু ইতনা মেঁ ইতনা হি মিলেগা!"
-"তো চকোলেট কব মিলেগা?"
-"হা হা! ওয়েট আর ওয়াচ!"
-"পাগল একটা!"
-"সবার কাছে সেন্সিবল, একজনের কাছেই পাগল...
ওরে মেয়ে, কখনও তো মনের দরজা খোল.."
-"উফ!"
-" Heart "

Like Reply
[Image: 273475371-10159712883066815-6585829530978844044-n.jpg]
Like Reply
#নানা_রঙের_প্রেম



-"রাতুল?"
-"হুম... ওহ! রিমি, হাই!"
-"কি হলো? চমকে গেলি কেন?"
-"না... সেরকম কিছু না..."
-"কিছু না বললেই হবে? কি ভাবছিলি এত?"
-"বললে যদি রেগে যাস?"
-"আচ্ছা, আমি বুঝি খুব রাগী?"
-"তা তো জানি না!"
-"তাহলে বলছিস কেন?"
-"আসলে তুই মাঝেমাঝে লাল হয়ে যাস তো, তাই মনে হয় তুই খুব রাগী..."
-"আমি লাল হয়ে যাই!!!"
-"হয়ে যাস তো! এই তো এখনও..."
-"উফ! ভগবান! এটাকে ব্লাশ বলে! হাঁদারাম কোথাকার!"
-"অত তো জানিনা! তবে... তোর গালে চোখ আটকে থাকে তখন.."
-"নেকু!"
-"পুষু!"
-"কিইইই?"
-"না না, কিছু না..."
-"আচ্ছা, বাদ দে, কি থেকে কি কথা চলে এলো! বল, কি ভাবছিলি? যা শুনলে আমি রেগে যাব?"
-"জানিস, তোকে তো কোনোদিন কিছু দিই নি... প্রায় আড়াইবছর ধরে এক অফিসে কাজ করছি... তোর জন্মদিনেও কিছু দিই নি..."
-"সে তো আমিও দিই নি!"
-" আহ্, শোন না, আজ খুব একটা কিছু দিতে ইচ্ছে করছিল...কিন্তু..."
-"কিন্তু?"
-"আমাদের এলগিন রোডের মলটা থেকে কিনেওছিলাম, জানিস? কিন্তু..."
-"তারপর?"
-"বেরিয়েই দেখি, বেলুন হাতে একটা বাচ্চা... ওই যেমন বাচ্চারা বেলুন আর ধূপকাঠি নিয়ে বিক্রি করে আর কি..."
-"হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমিও দেখেছি ওদের..."
-"মাটি-মাটি গায়ের রোগা একটা বাচ্চা, জানিস। কতই বা বয়স হবে? বছর পাঁচ-ছয়? গায়ে একটা ঠিকঠাক জামাও নেই জানিস..."
-"তাই তো.."
-"একটা ছোট্ট ভালুকছানা কিনেছিলাম রে... দিয়ে দিলাম বাচ্চাটাকে... রিমি...তোর জন্যই কিনেছিলাম, কিন্তু ওর হয়ত বেশি দরকার ছিল..."
-"রাতুল?"
-"হুঁউ?"
-"বাচ্চাটা হেসেছিল? তোর দিকে তাকিয়ে?"
-"প্রথমে অবাক হয়েছিল। বড় বড় চোখ করে তাকাল। তারপর... কী সুন্দর একটা হাসি..."
-"ওটাই...ওই হাসিতেই আলোর ছটা লেগে আছে..."
-"রিমি..."
-"তুই খুব ভাল রে রাতুল। খুব, খুব ভাল। এমনি থাকিস সবসময়। থাকবি তো?"
-"প্রমিস!"
-"থ্যাংকইউ! আমিও তোকে কিছু প্রমিস করতে চাই, কালকে..."
-"আমি অপেক্ষায় থাকব, রিমি।"
-"আমিও... 'বলব' ভাবার মধ্যেও তো অপেক্ষা আছে!"
-"কাল?"
-"কাল।"

Like Reply
#কথোপকথন



-"কি গো?"
-"হুম!"
-"কখন থেকে ডাকছি, সাড়াই নেই!"
-"ডাকছিলে? হ্যাঁ, বলো, গিন্নি?"
-"উফ! এখন 'বলো গিন্নি', এদিকে অন্যসময় টিকির দেখা পাওয়া যায় না।"
-"কী যে বলো! এদিকে দুনিয়াসুদ্ধু লোক বলে আমি নাকি তোমাকে চোখে হারাই!"
-"যত বাজে কথা!"
-"বললেই হল? সেই দেখেই তো প্রেমে পড়েছিলে!"
-"ওই আনন্দেই থাকো!"
-"প্রেম বলে প্রেম! অমন দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাপের কথাও শোনোনি!"
-"আহা, তখন তো অল্পবয়স..."
-"খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে... এক্কেবারে নাকানিচোবানি কান্ড..."
-"এক কথা আর কতবার বলবে?"
-"তাহলে স্বীকার করলে তো গিন্নি, যে প্রেমে তুমিই আগে পড়েছিলে? ওই একটা গান আছে না, 'কে প্রথম চেয়ে দেখেছি, তুমি না আমি' তার কিন্তু যো নেই!"
-"থামো তুমি। এই কথা ছেলে-মেয়েগুলোকেও বলে দিয়েছ সব।"
-"তাতে কি হয়েছে?"
-"সবাই এখনও বলাবলি করে যে.."
-"আহা, তাতেই বা কি হলো?"
-"আমার লজ্জা করে না বুঝি!"
-'এতে লজ্জারই বা কি হলো? ভালবেসেছ, অন্যায় তো কিছু করনি!"
-"আমার লজ্জা করে বাপু। মনে হয়, বাচ্চাগুলো কি ভাবে..."
-"কি আবার ভাবে, ভাবে যে বাবা-মা কে, আর মা বাবাকে কত্ত ভালবাসে!"
-"ইস! আমার বয়ে গেছে!"
-"যাই হোক, তুমি কি বলছিলে আমাকে গিন্নি?"
-"তোমার কি ঠান্ডা লেগেছে? তখন মনে হল যেন.."
-"তা একটু লেগেছে..."
-"হবে না? ঠিক জানতাম। একে এই ঠান্ডা এই গরম আবহাওয়া, তারপরে এতবার করে স্নান!"
- "সে তো শুধু কালকের দিনটাই.."
-"প্রতিবছর ঠান্ডা লেগে যায়, তবু কথা শোনো না"
-"আর কি করা যাবে!"
-"সেই তো, আমার কথা তো মনে পড়ে না এইদিনে..."
-"আর তুমিও যে আমাকে ছেড়ে বাবা-মা র কাছে চলে যাও!"
-"আহা, সে তো মাত্তর কদিন।"
-"আমার মনখারাপ হয় তো!"
-"তাই বুঝি?"
-"তোমার বোঝার বাইরে যেন কিছু আছে!"
-"পরের মাসেও যাব তিনদিনের জন্য..."
-"আমিও যাব!"
-"ইস...আমার লজ্জা করবে...এই কদিনের জন্য যাচ্ছি, তাও যদি তুমি যাও..."
-"আহা, আমি উস্কোখুস্কো চেহারা নিয়ে তোমার সামনে ঠিক দুপুরবেলা দাঁড়াব, বলব খেতে দাও, তুমি 'না' বলতে পারবে...?"
-"এমনি করে কেউ? তারচেয়ে আমার সঙ্গেই যেও!"
-"থ্যাংকইউ, থ্যাংকইউ, এইজন্যই তো তোমাকে এত ভালবাসি গো অন্নপূর্ণা! "
-"ওইখানেই তো বাঁধা পড়েছি, ভাল যে আমিও বাসি বড্ড..."
Like Reply
অপার


আজ সকাল থেকেই চোখ জুড়ে জল আসছে ধীমানের।
কাল রাত থেকেই বারবার মনে হচ্ছে হয়ত সত্যিইই ঈশ্বর আছেন। তাই তো, এই ভাবে তিনি দয়া করলেন ওকে। না না, শুধু ওকে না, ওদের দুজনকে। না না, শুধু দুজনকেই না, দুটো পরিবারকেও।
কম ঝক্কি গেল?
বিয়ের আটবছর পরেও যখন কেউ এলো না ওর আর সীমার মাঝে, এদিকে সব মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট ঠিক... আস্তে আস্তে দিনগুলো আর রাতগুলো কেমন যেন এক হয়ে যাচ্ছিল। ও আরও বেশি করে কাজের মধ্যে ডুবে যাচ্ছিল, আর সীমা আরও বেশি করে একা হয়ে যাচ্ছিল। মাঝে তো মনে হচ্ছিল, বোধহয় সম্পর্কটা টিকলই না আর।
কিন্তু তারপরেই মোড় ঘুরল একটু একটু করে। আই ভি এফ করার পর সীমা কনসিভ করল। তারপরের মাসগুলোও খুব কঠিন গেছে। প্রখ্যাত চিকিৎসকের অধীনে, তাঁর পরামর্শ মতো সীমা প্রায় বেডরেস্টেই ছিল প্রথম তিনমাস। তারপর একটু একটু করে ছন্দে ফিরলেও মোটের ওপর একটু টালমাটালই গেছে দিনগুলো। মাঝেমাঝেই পা ফুলে যাওয়া, অম্বল হওয়া, তারপর হঠাৎ করে সুগার ধরা পড়া, হাই প্রেশার হয়ে যাওয়া... লড়াই ছিল অনেকটাই। টেনশান ছিল। আর ছিল অপেক্ষা। এমনকি শনিবার যখন সীমাকে ভর্তি করা হল অপারেশন করা হবে বলে... ধীমানের মনে হচ্ছিল ওর বুকের লাবডুব বোধহয় সারা হাসপাতালের লোক শুনতে পাচ্ছে! ওর মামাতো দাদা, বুকাইদা, লিপিদি, কতকিছু বলছিল... সব ঠিক আছে, কিচ্ছু হবে না... তাও ভয়... বড্ড ভয় করছিল ওর।
বারবার মনে হচ্ছিল... সীমা ঠিক থাকবে তো?
এত কষ্টের, এত অপেক্ষার পর যে আসছে, সে ঠিকভাবে আসবে তো?
আর তারপরের মুহূর্ত গুলো যেন স্বপ্নের মতো! প্রায় চব্বিশ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না ওর! ওর বাড়ি লেকটাউন থেকে এই উল্টোডাঙার নার্সিংহোম পর্যন্ত যতগুলো মন্দির পড়েছে, সবগুলোতে প্রণাম করেছে ও। বারবার বলেছে "থ্যাংকইউ ঠাকুর, থ্যাংকইউ!"
"আপনি ভিজিটার তো? যান, দেখে আসুন।" সিস্টার-দিদির কথা শুনে পায়ে পায়ে সীমার কেবিনটার দিকে এগিয়ে যায় ধীমান। কাল সীমা ঘোরের মধ্যে ছিল... এখন জেগে আছে। হাল্কা গোলাপী রঙের হাসপাতালের গাউন পরা, দুদিকে বিনুনি বাঁধা সীমাকে ছোট্ট মেয়ে লাগছে যেন! প্রসাধনহীন, তবু কী যে সুন্দর!
পলক পড়ছিল না ধীমানের।
কে বলবে, প্রায় দশবছরের পুরোনো বৌ!
"কি গো, কি দেখছ?" লাজুক গলায় প্রশ্ন শুনে তাকাল ধীমান।
সম্বিত ফিরে পেয়ে বলল "কেমন আছো?"
"আছি!" বলে হাসল সীমা। এক্কেবারে মালিন্যহীন সেই হাসি।
"ও নার্সারিতে আছে। একটু আগেই নিয়ে গেল।"
"হ্যাঁ, সিস্টার -দিদি বললেন।" ধীমান যেন কথা খুঁজে পাচ্ছে না। নতুন বর নাকি ও!
ভাবনাটা আসতেই, নিজের মনে একটু হেসে নিয়ে বলল "এতদিন তো ছেলে না মেয়ে হবে ভেবে নাম ঠিক করতে দাও নি... এবার তো একটা নাম দিতেই হবে, তাই না?"
"আমি নাম ঠিক করে ফেলেছি।"
"ওমা, সেকি! কি নাম শুনি?" একটু ক্ষুন্ন, আর অনেকটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ধীমান।
"আনিস!" লাজুক মুখে বলল সীমা।
"আনিস!" শুনে অবাক হয়ে যায় ধীমান। তারপর বলে "যে ছেলেটা মারা গেল... ইয়ে... মানে খুন... যাই হোক, তার নামে নাম দেবে? কোনো বাঙালী নাম পেলে না? . নাম রাখবে?" অজান্তেই যেন গলার আওয়াজ বেড়ে গেল ওর।
"হ্যাঁ। ওই নামটাই পেলাম।"
"অন্তত একটা বাঙালী নাম..."
ধীমানের কথা শেষ হবার আগেই সীমা বলে ওঠে "কেন, '.েরা বাঙালী নন বুঝি? এই... আজ একুশে ফেব্রুয়ারি না? ভাষাদিবস? আজকের দিনে এটা বললে?"
"শোনো, বাংলার দিদিমণি, এসব কথা পরে হবে, কেমন?" হাসপাতালে কি ঝগড়া করা যায়, সদ্যমায়ের সাথে?
"ধীমান, বাংলার দিদিমণির কাছে শুনে নাও। আনিস মানে সহৃদয় বা বন্ধু। এর কাছাকাছি একটা নাম আছে। শুধু উচ্চারণের সামান্য পার্থক্য - 'অনীশ', যা শ্রীকৃষ্ণের আরেক নাম। ইংরাজি বানান দুটোরই এক। এবার বলো, কি বলবে?"
কি বলবে ধীমান?
এত যে গর্ব করে বলে "দরকার ছাড়া আমি ইংলিশ বলিনা! রেস্তোরাঁয় গিয়েও শুধুই বাংলা বলি" - সে ও ভুলে গেছিল, বাংলার জন্য লড়াই আসলে বাঙালীর লড়াই। তারই ফল মাতৃভাষা দিবস। গর্বের একুশে। অমর একুশে। আর ও কিনা... বোকার মতো...
"আমি স্যরি, সীমা। তুমি আর পুচু বাড়ি এসো আগে... আনিস হোক বা অনীশ... মেরুদণ্ডটা যেন সোজা থাকে...এটাই তো চাই, তাই না?"
শুনে, সীমার ক্লান্ত মুখে হাসি ফুটে উঠল।
সেদিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল ধীমান।
আহা, মায়ের মুখ, মায়ের হাসি আর মায়ের ভাষা - সবেতেই যে অপার ভালবাসা...
Like Reply
স্যার, এটা বাস না এরোপ্লেন?

 
সহযাত্রীর কাছে এরকম প্রশ্ন শুনেছেন কখনো?
 
প্রশ্ন টা শুনেই আমার একটা অদ্ভুত অনুভূতি হলো, অটোমেটিক্যালি একটু অদ্ভুত হাসি পেলো, একটু হেসেই বললাম এটা বাস
 
 জরুরী কাজে আসছিলাম ফ্লাইটে, টার্মিনাল গেট থেকেই দেখছিলাম একদল কমবয়েসী মেয়ে খুব হুল্লোড় করছে, দেখেই বোঝা যাচ্ছিল প্রথমবার প্লেনে চাপার আনন্দ একটা পুরো গ্রুপ যাচ্ছে ভালই লাগছিল
 
গেট থেকে বেরিয়ে প্লেন পর্যন্ত যাবার কানেক্টর বাস ছিল, সেটা তেই চেপে বসেছিলাম, পাশে ওই গ্রুপ এর একটা মেয়ে বসেছিল আমি জানলার দিকে তাকিয়ে বসে ছিলাম, সময় ভোর 5 টা 
 
বাস চলছিল, হটাৎ পাশের মেয়েটা জিজ্ঞেস করলো, " স্যার এটা বাস না প্লেন?"(হিন্দি তে), আমি একটু হেসেই উত্তর দিলাম "এটা বাস, এটা আমাদের প্লেন পর্যন্ত নিয়ে যাবে", বাসের বাকি লোকজন দের মধ্যেও একটা হালকা হাসির রোল উঠলো মেয়ে টা চুপ করে গেলো কম বয়েসী হলেও প্রায় ২০-২২ বছরের মানুষ এই টুকু জানবে সেটা হয়তো সবাই এক্সপেক্ট করেছিল
 
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো তখন, যখন প্লেনে উঠে মেয়ে টাকে আবার দেখলাম ভোর বেলায় আলো আঁধারি তে কারোর মুখের দিকে তাকানো হয়নি এর আগে দেখলাম মেয়েদের পুরো গ্রুপ টাকে air hostess হাত ধরে নিয়ে আসছে নিজেদের সিট পর্যন্ত মুখের দিকে তাকাতেই বুঝলাম ওরা সবাই অন্ধ, বাস উঠে সিটে বসেছিল কিন্তু কিসের সিটে বসলো সেটা বোঝার ক্ষমতা ওদের হয়তো ছিল না(প্রথম বার প্লেন যাত্রা বলে হয়তো তুলনা করতে পারেনি)
 
রোজ নতুন কিছু শিখি সেইদিন শিখেছিলাম আমার দুনিয়া আর সবার দুনিয়া এক নয়, আমার কাছে খুব সহজ কোনো জিনিসও , অন্য কারো কাছে দুর্বোধ্য, প্রকৃতির নিয়মেই সব মানুষের পৃথিবী আলাদা, সব কটা পৃথিবী নিয়েই আমাদের এই নীল গ্রহ 
অস্ফুটে হলেও হাসা টা আমার উচিত হয়নি
 
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দিল্লি থেকে দুর্গাপুর via হায়দ্রাবাদ ইন্ডিগো ফ্লাইটে
কলমে -অরূপ রতন ঘোষ

Like Reply
দাম্পত্য ---



এক ছুটির সন্ধ্যায় স্ত্রী বলছিল স্বামী কে,
আমার অনেক কিছু
বলার থাকে তোমাকে
হয়ে ওঠেনা বলা তোমাকে,
আর সব কিছু থাকেও না মনে
আসলে তুমি ফেরো অফিস থেকে
ক্লান্ত হয়ে,
আমিও ক্লান্ত সারাদিন ঘর সামলে
আমাদের বিয়ের বয়স পনেরো বছর  হয়ে গেছে
এখন থেকে আমি তুমি 
দুজনে মিলে লিখব ,
আমাদের অভিযোগের কথা এক  ডায়েরীতে
এখন থেকে ঠিক একটা বছর পরে,
তোমার ডায়েরী পড়ব আমি,
আমার ভুল জানতে
আমার ডায়েরী পড়বে তুমি,
তোমার ভুল জানতে
এরপর দুজনে দুজনের ভুল নেবো শুধরে 
স্বামী হেসে , মত দেয়  তাতে
ঠিক এক বছর পরে এক সন্ধ্যাতে,
স্ত্রী দেয় তুলে ডায়েরী স্বামীর হাতে
লেখা আছে তাতে----
সিনেমায় নিয়ে যাবে বলেও,
ফেরোনি সঠিক সময়ে
আমার জন্মদিনে যে শাড়ি টা এনেছিলে,
তার ডিজাইনটা ছিল পুরানো দিনের
বাপের বাড়ি থেকে যখন এসেছিল ভাইয়েরা 
তোমার আচরণ ছিল না ঠিক তাদের সাথে
সেদিন রাতে মাথাটা ধরেছিল বলে,
বলেছিলাম একটু টিপে দিতে,
ক্লান্ত বলে দাওনি টিপে
এমনি নানা ছোটো ছোটো
অভিযোগ ডায়েরীতে পড়ে,
স্বামীর চোখ জলে ভরে ওঠে
সে স্ত্রীকে বলে,
করবো চেষ্টা ভুল না করতে
এবার স্ত্রী স্বামীর লেখা
ডায়েরী পড়া শুরু করে
প্রথম থেকে একশ পাতা,
কিছুই লেখা নেই সেখানে
স্ত্রী রেগে গিয়ে বলে,
একটা কাজ বলেছিলাম এত বছরে,
সেটাও করোনি তুমি একটু ধৈর্য্য ধরে
স্বামী হেসে বলে,
শেষ পাতাতে সব লেখা আছে
স্ত্রী শেষ পাতা পড়া শুরু করে
তাতে লেখা আছে,
রাগ হলে বকাবকি করি তোমাকে,
কিন্তু তোমার বিরুদ্ধে কিছু লিখতে,
হাত আমার কাঁপছে 
তুমি যে আমারই ছায়া 
তোমার ভুল যা আছে,
তা অনেক অনেক ছোটো,
যা দিয়েছ আমাকে তার থেকে
আজ সংসার আছে দাঁড়িয়ে
তোমারই ত্যাগে
ছেলে মেয়ে থেকে আমাকে,
এমনকি আমার বাবা মাকে
তুমিই তো রেখেছ দেখে,
সাজিয়ে তুলেছ সুন্দর এই সংসারকে ,
নিজের ত্যাগের রাস্তা তে
ক্ষমা করো আমাকে,
পারবনা লিখতে একটাও শব্দ
তোমার বিরুদ্ধে
ডায়েরী পড়া শেষে,
স্ত্রী  কেঁদে ফেলে
স্বামীর বুকে মাথা রেখে

Like Reply
ওপরের লেখাটা " দাম্পত্য " ..

লেখক হলেন " ভারতীয় দাদা " , বলতে ভুলে গেছিলাম ....



Namaskar
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
প্রত্যেকেই চেয়ে আছে ভবিষ্যতের দিকে !

ভাবছে হয়তো  তাদের জীবনে আসবে নতুন সূর্যোদয় !
নতুন লাল আলো ভরিয়ে দেবে সকল ক্ষত !
সূর্যের তাপে হারবে সকল শীত
 
কিন্তু মৃত্যু নাকি সময় মানেনা 
মানেনা ক্যালেন্ডারের তারিখ !
হুট্ করে এসে বলবে "চলো তোমার সময় শেষ !"
 
পর্ণমোচী বৃক্ষের ফেলে দেওয়া পাতায় থাকবে জিজ্ঞাসা !
কি অপরাধ তাদের ? ভবিষ্যতের দিন গোনা 
নাকি অমরত্ব কামনা ?
 
চিরকাল তারা  মাথা হেঁট  ঘাড় কুঁজো করে থাকবে !
জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতন আর ভাববে ! তাদেরও  প্রশ্নের উত্তর 
আসবে একদিন ভবিষ্যতের কাছ থেকে !


লেখাতে : ভারতীয় দাদা
Like Reply
আজ প্রায় দশবছর, আমার ডির্ভোস হয়েছে,আমি বাবার বাড়িতেই থাকি, না বাবা নেই আমার,
ভাই আর ভাইয়ের বৌয়ের সাথেই থাকতে হয় আমাকে,
তারা আমায় আগে অবজ্ঞা করত, শোনাত কথা,
কিন্তু আজকাল তারা বড্ড ভালোবাসে আমায়,
আসলে আমি গত সাতবছর হল নিজের পায়ে দাড়িয়েছি,
আমার ডির্ভোসের কারণটা বড্ড অদ্ভূত ছিল,
আমার গায়ের রঙ নাকি ছিল আমার ডির্ভোসের কারণ,
না না আমি কালো নই কিন্তু, আমার গায়ের রঙ দুধ সাদা,
কি ভাবছেন? তাহলে কি মুখশ্রী ভালো না আমার
ভুল ভাবছেন, সবাই বলে আমায় দূর্গা প্রতিমা,
তাহলে ভাবছেন আমার চরিত্র ভালো না
ধুর মশাই, ওটা আপনার ভুল ধারণা মাত্র
তাহলে আসুন আজ শোনাই আমার জীবনের গল্প,
আমার তখন বয়স মাত্র একুশ, সবে শেষ হয়েছে কলেজ,
সুন্দরী ছিলাম তাই চারপাশ থেকে আসতে শুরু করল 
একের পর এক ভালো ভালো সম্বন্ধ,
আমার ইচ্ছে ছিল পড়ব আরো, কিন্তু আর পড়া হল না,
বাবা বলেছিলেন অত পড়ে কি লাভ, সেই তো হাতপুড়িয়ে করতে হবে রান্না,
এম সি তে ভর্তি না করে বসালেন তাই বিয়ের পিড়িতে,
স্বামীটি আমার ইঞ্জিনিয়ার মোটা মাইনের চাকরী করে,
বাবা বলেছিল মেয়েদের আসল কেরিয়ার নাকি বিয়ে,
কি জানি কথাটা কখনো মানতে পারি নি মন থেকে,
মা বলেছিল মেয়েদের উপার্জন নাকি স্বামীর ভালোবাসা,
আচ্ছা শুধু স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যেই কি হয়েছিলাম ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ইউনিভার্সিটিতে
কি জানি আমার প্রশ্নের কেউ উত্তর দিল না
বাবা বললেন মেয়েদের নাকি যুক্তিবাদী হওয়া ভালো না,
তাই বিনা প্রশ্নে মাথা পেতে মেনে নিলাম সব কথা,
মা বাবাকে কনকাঞ্জলি দিয়ে অচেনা লোকটির হাত ধরে গাড়িতে ওঠার সময় কয়েকটা প্রশ্ন আবার এল মনে
মা বাবা সারাজীবন অচেনাদের সাথে কথা বলতে বারণ করে, অচেনা মানুষের থেকে কিছু খেতে না করে,
আজ কেন অচেনা লোকের সাথে পাততে বলছে সংসার
আজ কেন অচেনা লোকটি দায় নেবে আমার ভরপোষণের
না তো আমি , না তো সে , আমায় ভালো করে চেনে
এমন অচেনা বাড়ি কি করে আমার হবে
সিঁথিতে পরানো এক চিলতে সিঁদুর কেন দূর করবে আমার মা বাবার থেকে
ভাবলাম মাকে জিজ্ঞেস করি এসব কথা,
কিন্তু পারলাম না, কারণ ছোট থেকে শুনে এসেছি বাপের বাড়ি আমার না,
চললাম তাই অচেনা লোকটির সাথে
বিদায় জানালাম ছোট বেলার সেই আস্তানাটিকে
চোখে আমার জল ভরা, আমার কষ্ট কে বা বোঝে
তার বাড়িতে উঠলাম আমি, না যত্নের অভাব হয় নি,
শাশুড়ি আমার ভীষণ ভালো সন্দেহ নেই তাতে,
ভাবলাম সহজ হবে সবাইকে আপন করে নেওয়া,
সত্যিই আমার পণ লাগে নি বিয়েতে
শাশুড়ি মাকে বলছিলেন তার এক আত্মীয়া,
"বৌমা তো ভীষণ সুন্দরী যেন অপ্সরা
শাশুড়ি মা হেসে বলেছিলেন, " জন্যেই তো পণ নিই নি
অবাক হলাম, তার মানে গায়ের রঙ টাই সব ছিল কি
যাই হোক ফুলশয্যার রাত এল, নিজেকে উন্মুক্ত করলাম তার কাছে,
নিয়ম রক্ষার্থে হল সবটাই, কারো মনেই তখন ভালোবাসা ছিল না একবিন্দু,
ভেবেছিলাম হয়ত ভালোবাসার শুরু হবে ধীরে ধীরে,
কিন্তু তা আর হয় নি, তার মনে আমার জন্যে আর স্থান হয় নি,
একদিন আমি গর্ভবতী হলাম, হয়ত বা হতে বাধ্য হলাম,
শাশুড়ি মায়ের যে নাতি নাতনির মুখ দেখার খুব শখ,
সন্তান এল আমার পৃথিবীতে, ছেলে হয়েছিল আমার,
সন্তান ধারণের কারণে আমার রূপ গেল অস্তাচলে,
আমার গায়ের রঙেও পরল ভাটা, আমার শরীরও দুর্বল হল,
আমার রূপের কারণে যে বিয়ে, সে সত্যি আজ পরিবর্তিত,
আমার স্বামী মেতে উঠল এক শ্যামবর্ণা নারীর প্রেমে,
খবরটি যখন কানে এল আমার ছেলের তখন তিনবছর,
আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন প্রতারণা?
সে হেসে বলেছিল, মেয়েটি নাকি ভীষণ স্মার্ট
আমি তার পায়ের নখের যোগ্য না
সে নাকি বিয়ের আগেই ভালোবাসত মেয়েটিকে,
শুধু তার মায়ের শ্যামলা পছন্দ নয় তাই বিয়ে করতে হয়েছিল্প আমাকে,
তাই সে আমাকে নাকি কখনো ভালোবাসতেই পারে নি,
তার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে নাকি রাগ মেটাতেই বিয়ে করেছিল আমাকে,
কিন্তু তার শ্যামবর্ণা প্রেমিকার ডির্ভোস হয়ে গিয়েছে,
সে তাই তার জীবনে ফিরে আসতে চাইছে,
হ্যা সে তাকে বিয়ে করবে না
কারন আমার শাশুড়ি কন্যাসম ভালোবাসে আমাকে,
তাই আমি যেন আপোষ করে নি সবটা,
তার সমস্ত কিছুতে অধিকার থাকবে আমার
তার ঘর বাড়ি, তার উপার্জন সব কিছুতে
কিন্তু শুধু অধিকার থাকবে না তার মনের ওপর
অধিকার থাকবে না তার ওপর, অধিকার থাকবে না তার অনুভূতির ওপর
সে হেসে বলেছিল সে নাকি আমায় কষ্টে রাখবে না,
সে আমায় কিনে দেবে সব দামী দামী জিনিস
সে করেছিলও তাই, প্রতিমাসে দামী গয়না দামী শড়িতে ভরিয়ে রাখত আমাকে,
কথাটা শুনে অবাক হয়েছিলাম, জিজ্ঞেস করেছিলাম টাকাটাই কি সব
সে বলেছিল স্ত্রী নাকি সন্তুষ্ট টাকাতে, স্ত্রীর আবার কি চাই? সে তো প্রেমিকা না,
কোথাও যেন সেদিন আঘাত লেগেছিল আত্মসম্মানে,
মানুষটা যে স্ত্রী আর পতিতার পার্থক্য বোঝে না,
আমি যে তার টাকা না , তার ভালোবাসা চেয়েছিলাম একটু খানি,
আমি তার বুকে মাথা রেখে ঘুমোতে চেয়েছিলাম
আমার মন খারাপের দিনে তার হাত ধরতে চেয়েছিলাম শক্ত করে,
আমার অপ্রাপ্তির জন্যে কাঁদতে চেয়েছিলাম তার কোলে মাথা রেখে,
কিন্তু সে বোঝে নি সে সব, কারণ সে ভালোবাসে নি আমায়,
আমি ফর্সা না কালো তাতে তার কি বা যায় আসে,
সে প্রতিরাতে হয়ত আমায় শারীরিক সুখ দেয়, নিজেও উপভোগ করে,
ভালোবাসার অভাব টাকা দিয়ে মেটানোর চেষ্টা করে
তবে তাতে কি আমি সত্যিই ভালো আছি
তাই সেদিন বেড়িয়ে এসেছিলাম বাড়ি থেকে এক কাপড়ে,
মা বাবা গত হওয়ায় স্থান হল তাই দাদার সংসারে,
ডির্ভোস কেস ফাইল করলাম আমি, কিন্তু ওরা শাস্তি স্বরূপ বাচ্চাটি কেড়ে নিল আমার
আমিও আর বাচ্চাটি চাই নি আমার কাছে
কি লাভ চেয়ে? আমার নিজেরই তো থাকার জায়গা নেই,
তাই আর ভাবি নি সেদিন বাচ্চাটা কি ভাববে বড় হলে,
অনেক কষ্টে ডির্ভোস পেলাম, খোরপোষ চাইতে বলেছিল উকিল,
কিন্তু আমিই চাইলাম না, ওর টাকাতে ঘৃণা ধরে গিয়েছিল আমার
তাই ওর টাকায় জীবন কাটানোর ইচ্ছেটাই মরে গিয়েছিল,
উকিলকে হেসে বললাম, "ওর টাকায় বাঁচতে চাইলে কি আর ডির্ভোস নিতাম?" 
উকিল হাসল আমার কথা শুনে
অনেক কষ্টে অনেক সাধ্য সাধনা করে অনেক পরিশ্রমের পর একটা কলেজের চাকরী জোটালাম,
অনেকেই বলে একটা সামান্য প্রাইমারি কলেজ টিচারই তো, কি এমন সম্মান তার
তা অবশ্য বটে, কিন্তু অনেকটা যুদ্ধের পরে পেয়েছি তো তাই সে বড্ড দামী আমার কাছে,
হোক না প্রাইমারি কলেজ, তাতে কি যায় আসে, আজকাল তো উপার্জন বেশ ভালোই করি,
নিজে টাকা জমিয়েও ভাইকে সাহায্য করি
আসলে আমি জানি টাকা না জমালে বুড়ো বয়সে ভাই দেখবে না আমায়,
এই ভালোবাসা অর্থকেন্দ্রিক , তাই আর ঝুঁকি নিই নি কোনো মতে
তবে আমি ভালো আছি, হ্যা আমি ডির্ভোসী, অনেকের হাসির পাত্রী,
অনেকে ব্যঙ্গ করে বলে কি লাভ হল এত রূপ দিয়ে , যখন সংসার টিকল না
কিন্তু আমার কি যায় আসে? যে সংসারের ভীত প্রতারণা দিয়ে তৈরী, সে সংসার যে আর করা যায় না,
আত্মসম্মান ভূলুণ্ঠিত করে কি আদৌ ঘর বাধা যায়
তার থেকে আমি ডির্ভোসীই ভালো, কে কি বলে তাতে কি বা আসে যায়
মাঝে মাঝে ছেলের জন্যে কষ্ট হয়, ভাবি কি জানি কত বড় হল
তারপর ভাবি থাক একা যেমন চলছে তেমনটাই চলুক
ডির্ভোসী মায়ের কাছ থেকে যে ডির্ভোসী চরিত্রহীন বাবার কাছে থাকা ভালো
প্রশ্নের মুখোমুখি কম হতে হবে ওকে, আসলে সমাজ পুরুষের নয় কেবল নারীদেরই দোষ খোঁজে একচোখে

লেখিকা:অনিতা সেন
Like Reply
#কথোপকথন

-"বিয়ে করতে তোর প্রবলেম টা কি বলবি?"
-"না!"
-"না মানে?"
-"বলব না!"
-"দ্যাখ তিন্নি, তুই জানিস আমি তোকে ভালোবাসি। তাহলে কেন 'না' করছিস, বল?"
-"শুভ, আমার ভাল লাগছে না... আমি ফোন রাখছি।"
-"তুই আমাকে ভালবাসিস না?"
-"আমি কি সেটা বলেছি?"
-"উফ! আর পারছি না আমি এক প্রশ্ন করে করে! প্রতিবার এক উত্তর - 'না!"
-"তাহলে জিজ্ঞেস করিস কেন?"
-"এই তোর শেষ কথা?"
-"হুম!"
-"ওকে... ভেবেছিলাম তোকে এইদিনটা দেখাব না... কিন্তু বাধ্য হলাম... তোর পাঠানো একটা ফটোতে একটু কারিকুরি করেছি। পাঠালাম, দেখে নিস।"
-"কারিকুরি মানে?"
-"সেন্ট... দেখে নে.."
-"শুভ... তুই আমার ছবিতে... আমি কিন্তু পুলিশে কমপ্লেইন করব... সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টে যাব..."
-"ম্যায় ঝুকেগা নেহি!"
-"শু... শুভ..."
-"শুনছি"
-"এটা তুই কি করেছিস?"
-"যেটা ঠিক মনে হয়েছে..."
-"তাবলে তুই... মানে এমনি..."
-"কাঁদছিস কেন?"
-"শুভ..."
-"হুম..."
-"এত পুরোনো একটা ছবিকে তুই..."
-"মাত্র একটা গোটা দিন দিতে হয়েছে..."
-"তুই...তুই..."
-"উফ, খুকুমণির চোখে কত জল!"
-"তুই এত ভাল কেন?"
-"তা তুই ঠিক বলেছিস..."
-"বাবা মায়ের এই একমাত্র একসঙ্গে, আমাকে কোলে নেওয়া ছবি... নষ্ট হয়ে গেছিল... তোকে সেই কবে পাঠিয়েছিলাম...কিভাবে পারলি, শুভ?"
-"ওই যে বললাম, সামান্য কারিকুরি..."
-"আমাকে বিয়ে করবি?"
-"এ্যাঁ!"
-"আমি পুরোনো হয়ে গেলে, অবুঝ হলে একটু কারিকুরি করে নিস..."
-"পাগলি একটা তুই..."
-"তোর জন্য শুভ। তোর জন্য..."
-"বাবা মা কে বলছি তোর কাকুর সঙ্গে কথা বলতে... বৈশাখ মাসেই..."
-"ধ্যাত!"
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
হারিয়েছি সময় যত
ফিরে পেতে চাই একটু আবার
এগিয়ে চলার পথের মাঝে
ঘুরে আমি তাকাই একটু আবার
ছোট্ট কিছু মুখের সহিত
দাঁড়িয়ে কিছু চেনা হাসিমুখ
তাদের হাসিটা আজও মোহিত
দেখে ওগো যেন পাই কত সুখ
হাঁটতে চলতে শেখার পরে
বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে
পৃষ্ঠায় যেন আটকে গেছি
দায়িত্বর ঝোলা কাঁধে চাপিয়ে
লিখতে শেখা হাত দুটো
আজ যতই হোক মজবুত
যতই আজ বাইরে গুণী
ভেতরে ঠিক লুকিয়ে যে খুঁত
থাকুক পৃষ্ঠা পড়া শেষ কাহিনীর
আর যত সব ইচ্ছা গুলো
নায়ক হোও সেই সেনাবাহিনীর
ঝেড়ে সব গায়ের ধুলো

- বাবান
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
লেখক- অলোক রায়

 
কাঠকুড়ুনি*
 
     পোস্তর বড়া খেয়ে সেদিন একবার করে আঙুল চাটে রমেন আর একবার করে বলে, 'ওয়ান্ডারফুল !'
     'সে কি ? এর আগে পোস্তর বড়া খাও নি তুমি ?' আশালতা অত্যন্ত অবাক
     'আমি হবার সময় মা মারা গেল দুধে দাঁত পড়ার আগে সৎমা হোস্টেলে পাঠিয়ে দিলো সেখান থেকে চালান করে দিলো বিদেশে ধন্য ধন্য পড়ে গেল সৎমার সতীনের ছেলের জন্যে এতো খরচ করে কেউ ? বিদেশে বসেই ভালো চাকরি পেয়ে সোজা আপনাদের শহরে সঙ্গী রত্নেশ্বর রত্ন বিশেষ হালুয়াতে জলের মাপটা পর্যন্ত ঠিক পরিমাপে দিতে শিখলো না, সে রাঁধবে পোস্তর বড়া ?'
     'আহা রে ! এই তো খাবার বয়েস বাবা কিসের যে তোমার লুকোচুরি বুঝি না বাপু এক অফিসে কাজ করো ভালোও বাসো বলছো দুজন দুজনকে তবে রুবুকে বিয়ে করে উঠে এসো না এই বাড়িতে ! মেয়েটা তো আমার খাবারের ভালো মন্দ বোঝে না জামাইকে দশ পদ রেঁধে খাইয়ে একটু রাঁধাবাড়ার সুখ করে নেই '
     'মা যদি তাড়াহুড়ো করেন আর রুবী যদি জানতে পারে রোজ টিফিনে আমি লুকিয়ে এসে এখানে ভরপেট খেয়ে যাই তাহলে বিয়ে তো দূরের কথা ্যাংলা বলে ঘেন্নায় আমার মুখের দিকেই আর তাকাবে না সে এখনো ওর দিক থেকে প্রেমটা পাকা হয়নি তো ! প্লিজ এখনই বলবেন না ওকে !'
 
     'আচ্ছা মা, সব বাড়িতে ছুটির দিনে ভালো ভালো রান্না হয় আমাদের বাড়িতে উল্টো কেন ? শনি রোববারে যেমন তেমন সোম থেকে শুক্কুর চার পাঁচ পদ ?'
     'সপ্তাহে দুটো দিন একটু আরাম করি তাও তোর চোখ টাটায় ? তবু যদি একটা কিছু খেয়ে বলতিস ভালো হয়েছে ! ্যাঁরে রুবু অফিসে তোর এতো ছেলে কাজ করে, কাউকে পছন্দ হয়না তোর ?'
     'হয় মা এক রাজপুত্তুর আছে আমাদের ্যানেজিং ডিরেক্টর কিন্তু কোনদিন এই কাঠকুড়ুনির দিকে কি তার চোখ পড়বে ? বাদ দাও ওসব কথা বিলেত ফেরত দেখতে হিরো ওর কপালে মেম নাচছে '
     আশালতা গজগজ করেন, 'বিলেত ফেরত তো আরও কতই আছে দেখতেও তারা কিছু উনিশ নয় !'
 
     'বাবা আজ তাড়াহুড়োয় রুবু টিফিন নিয়ে যেতে ভুলে গেছে তুমি খেয়েদেয়ে যাবার পথে ওটা নিয়ে যাবে ?'
     'তাহলে যে ধরা পড়ে যাবো মা ! তাহলে আজই আমার এখানে আসার শেষ দিন '
     'থাক বাবা নিয়ে যেতে হবে না তুমি হাতটা ধুয়ে এসো আমি ভাত বেড়ে আনি '
     'এটা কি মাছ মা ?'
     'কৈ মাছ কাঁটাগুলো সাবধানে বেছে খেও বাবা !'
     ্যস্তহাতে কেউ বেল বাজাচ্ছে একবার দুবার তিনবার চিৎকার ভেসে এল, 'দরজা খোল মা টিফিন কৌটো নিয়ে দৌড়ে ফিরে যেতে হবে এম.ডি. টিফিন সেরে ফিরে আসার আগে অফিসে পৌঁছে যেতে হবে আমাকে '
     আশালতাকে ঠেলে সরিয়ে দ্রুতপায়ে রান্নাঘরের দিকে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো রুবী '্যার আপনি ?'
     গালভরা ভাত নিয়ে হাসার চেষ্টা করলো রমেন পায়েস চুরি করা ডায়াবেটিক বাড়ির লোকের মতো 'বসুন টিফিন কৌটো নিয়ে দৌড়োদৌড়ি করতে হবে না আপনাকে এখানে বসেই শান্তিতে খেয়ে নিন '
     আশালতা বললেন, 'সে কি বাবা ? তুমি যে বললে তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসো তবে আপনি আজ্ঞে করছো কেন ?'
     রমেন বললো, 'ঐটুকু মিথ্যে না বললে কি আপনি জামাই আদরে রোজ রোজ খাওয়াতেন আমাকে ? আর বললাম যে ওর তরফে প্রেমটা এখনো পাকা হয়নি !'
     রুবীর জড়তা কাটতে চায় না সহজে 'আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ্যার আপনি আমার বাড়ি চিনলেন কি করে ? আর মার সঙ্গে পরিচয় ' কি করে ?'
     রমেন দু'দাঁতের ফাঁক থেকে কৈয়ের কাঁটা বাছতে বাছতে বললো,  'আপনার জন্মদিনে একঝুড়ি কুচো চিংড়ির বড়া নিয়ে গিয়ে বিলি করলেন সবাইকে কিন্তু আমাকে তো দিলেন না তবু ঘুরেফিরে কার হাত থেকে যেন আমার ঘরেও গোটা তিনেক পৌঁছেছিলো খেয়েই আপনার পার্সোনাল ফাইল চেয়ে পাঠালাম ঠিকানা নোট করে নিলাম তারপর থেকে আপনার অন্নে প্রতিপালিত হচ্ছি রাগ করলেন ?'
     'কাঠকুড়ুনি বর্তে গেল ্যার !'

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
লেখক - অলোক রায়

 
*সম্পর্ক/সম্বন্ধ*
 
     চোদ্দ বছর বয়েস ' মেয়ের এখন আর সৎ বাবার কাছে তাকে ফেলে রাখা ঠিক না মনে দ্বিধা, মেয়ে চিনতে পারবে তো বাবাকে ? মেয়ের সাত বছর বয়েসে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল বাবা মা' বছরখানিকের মধ্যে আবার বিয়ে করেছিলো অতসী তারপর কাকে না কাকে বাবা বলতে শিখিয়েছিলো মেয়েকে, খোঁজ রাখতে যায়নি রজত কিন্তু খবরটা পাবার পর আর নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না সে
     গতকাল ভূতপূর্ব শালা এসে সংবাদটা শুনিয়ে বললো, 'বাবা বলেছেন মেয়েটাকে আর কায়স্থ ঘরে ফেলে রাখা ঠিক না আপনি গিয়ে তাকে নিয়ে আসুন '
 
     রজত পথে নেমেও সাহস পেলো না মেয়ের সামনে একা গিয়ে দাঁড়াবার যদি অমান্য করে তার পিতৃত্বকে ? ভুলে যাওয়াই তো স্বাভাবিক সাতটা বছর তো কম নয়
     ট্যাক্সিওয়ালাকে আগে বলেছিলো টালিগঞ্জে যেতে এখন বললো, 'আগে একটু বেহালা যাবো একজনকে নিয়ে তারপরে টালিগঞ্জে ফিরে আসবো '
     সাত বছরের উপর এদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই এখানেও যেতে সংকোচ তবে নিজে থেকেই যখন এঁরা যোগাযোগ করেছেন গতকাল, তখন নিশ্চয় অভ্যর্থনা না করলেও অপমান করবেন না আজ তাকে
 
     রজতের শ্বশুরমশাই বললেন, 'বলছো যখন যাচ্ছি কিন্তু আমাকেই কি চিনতে পারবে সেই মেয়ে ? কোনদিন তো যাইনি তাদের খবর নিতে তবে চলো, অবিনাশকে দুটো ধমক দেবার সাধ আমার অনেকদিনের '
     দুই ভীতচিত্ত ব্যক্তি একটি কিশোরীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো বৃদ্ধ বললেন, 'অবিনাশকে ডেকে দাও !'
     'না বাবাকে ডাকবো না মা মারা যাবার পর বাবা একেবারে ভেঙে পড়েছেন আপনারা কে ? যা বলার আমাকে বলুন '
     রজত অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছে তার সামনে মেয়ে অন্য একজনকে বাবা সম্বোধন করছে কি পরিচয় দেবে সে নিজের ?
     বৃদ্ধ বিরক্ত হয়ে বললেন, 'কাকে বাবা বাবা করছো ? সে তোমার কেউ নয় ইনি তোমার আসল বাবা আর আমি তোমার দাদু মায়ের বাবা '
     মেয়েটি হাতজোড় করে বললো, ' আচ্ছা ! পরিচয় হোলো ! ভালো লাগলো এবার আপনারা আসুন ' আপদ বিদায় করে দরজা বন্ধ করতে চাইলো সেই মেয়ে
     দরজার ফাঁকে তাড়াতাড়ি পা গলিয়ে দিয়ে রজত বললো, 'আমরা তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি পরের বাড়িতে আর তোমাকে ফেলে রাখবো না '
     ঐটুকু মেয়ের বাঁকা ঠোঁটে ব্যঙ্গের হাসি ঘৃণার উচ্চারণ 'কষ্টের দাগ ছোটবেলাতেই মনে আঁচড় কেটে বসে যায় মা সেখানে প্রত্যেক রাতে আমাকে বুকে চেপে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতো সেটা নাকি আমার নিজের বাড়ি আর যে আমার মায়ের জন্যে সমানে কাঁদছে তার বাড়িটা নাকি আমার পরের বাড়ি ? বাবার শরীরটা ভালো নেই বিরক্ত করবেন না আপনারা যান '
     'কার সঙ্গে এতো কথা বলছিস মা ?' বেরিয়ে এলো অবিনাশ চমকে উঠলো ' কি ! বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিস কেন ? এঁরা তোর আপন জন লতা আসুন বাবা ভিতরে আসুন '
     'তোমার শরীরটা হঠাৎ এমন ভেঙে গেল কেন অবিনাশ ?' 
     ক্লান্ত একটু হাসলো অবিনাশ উত্তর দিলো না
     'তুমি ভিতরে যাও বাবা আমি আমার আপনজনদের সামলাচ্ছি '
     ক্ষেপে গেলেন বৃদ্ধ, 'ডি.এন.. টেস্ট করালে প্রমাণ হয়ে যাবে কে তোর আসল বাবা যেতে না চাইলে কোর্টের অর্ডারে তখন তোকে জোর করে তুলে নিয়ে যেতে পারি এখান থেকে, তা জানিস?'
     প্রত্যেককে চমকে দিয়ে কি অদ্ভুত রকমের হাসি হাসলো ঐটুকু একটা মেয়ে, 'ডি.এন.. টেস্ট ? শরীরের মিলের খবর দেবে কিন্তু মনের অমিলের খবর দিতে পারবে ?'
     লতার দাদু খুব রেগে গেছেন 'তোমা পাপের ভয় নেই অবিনাশ ? ', ঘরের মেয়েটাকে তোমার কায়েত ঘরে ধরে রাখবে ?'
     অবিনাশ ভেঙে পড়েছে ঝগড়া করার শক্তি নেই তার থেমে থেমে বললো, 'ধরে কি রাখা যায় ? অতসীকে ধরে রাখতে চেয়েছিলাম পারলাম ? মেয়ে যদি চলে যেতে চায়, যাবে মা গিয়ে অর্ধেক মেরে রেখে গেছে মেয়ে গেলে পুরো মেরে রেখে যাবে '
     ছোট্ট মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে বাবার মাথাটা বুকে টেনে নিয়ে তার অবিন্যস্ত চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে পরম মমতায় উচ্চারণ করলো, 'আমি কোত্থাও যাবো না বাবা '
     'মাগো !' মেয়েকে কাছে টেনে শেষ আশ্রয়টুকু আঁকড়ে ধরলো অবিনাশ  
     দীর্ঘশ্বাস ফেলে রজত বললো, 'ফিরে চলুন বাবা !' বুঝতে পেরেছে সে, সম্পর্ক ডি.এন.. দিয়ে হতে পারে সম্বন্ধ হয় ভালোবাসা দিয়ে

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 25 Guest(s)