Thread Rating:
  • 51 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL কিছু কথা ছিল মনে
বাবান দা অসম্ভব সুন্দর লাগলো আপনার খোকন গল্প টি। অসম্ভব সুন্দর আপনার লিখনী। খুব নিখুঁত ভাবে সব কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন।
[+] 1 user Likes Prasenjit's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(26-01-2022, 09:12 PM)Prasenjit Wrote: বাবান দা অসম্ভব সুন্দর লাগলো আপনার খোকন গল্প টি। অসম্ভব সুন্দর আপনার লিখনী। খুব নিখুঁত ভাবে সব কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন।

অনেক ধন্যবাদ দাদা ❤❤
আপনার ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম।

বাকি আরও অনেকগুলো আছে এমন... সেগুলো ধীরে ধীরে সময় পেলে পড়ে ফেলুন। আশা করি এটার মতো ওগুলোও পছন্দ হবে  Smile

নন্দনাদি... আপনিও সময় পেলে পড়তে পারেন আমার বাকি গপ্পো গুলো.... ছোট ছোট গপ্পো... আমার মনের কিছু কথা ❤
Like Reply
(26-01-2022, 09:16 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ দাদা ❤❤
আপনার ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম।

বাকি আরও অনেকগুলো আছে এমন... সেগুলো ধীরে ধীরে সময় পেলে পড়ে ফেলুন। আশা করি এটার মতো ওগুলোও পছন্দ হবে  Smile

নন্দনাদি... আপনিও সময় পেলে পড়তে পারেন আমার বাকি গপ্পো গুলো.... ছোট ছোট গপ্পো... আমার মনের কিছু কথা ❤

অবশ্যই দাদা পড়ব। আপনার ছোট গল্প আগেও পড়েছি অনেক ভালো লেগেছিল। হয়ত সময়ের অভাবে কমেন্ট করা হয়নি। তার জন্য দুঃখিত।
[+] 1 user Likes Prasenjit's post
Like Reply
(26-01-2022, 09:28 PM)Prasenjit Wrote: অবশ্যই দাদা পড়ব। আপনার ছোট গল্প আগেও পড়েছি অনেক ভালো লেগেছিল। হয়ত সময়ের অভাবে কমেন্ট করা হয়নি। তার জন্য দুঃখিত।

কোনো ব্যাপার না... আগে নিজের কাজ তারপরে সব। আপনার সময় মতোই পড়ুন ❤
Like Reply
অনেক কথা বলার ছিল - বাবান 

তারপর? কেমন চলছে রঙিন দিন? বয়ফ্রেন্ড কেমন মাল বললিনা তো?

ভালো.... তবে....

তবে আবার কি? কোনো প্রব্লেম?

না... প্রব্লেম তেমন কিছু নয়... ওর আবার কুকুর বেড়াল একদমই ভালো লাগেনা.. মানে এনিম্যাল লাভার নয়

সেতো যার যার ব্যাপার... কিন্তু তুই বলিসনি যে তোর কত পছন্দ?

বলেছি তো... আই লাভ ডগস ক্যাটস সো মাচ... বলে আই জাস্ট হেট্... সেদিন একটা পাপ্পি কে দেখে এগিয়ে যাচ্ছিলাম... আমার হাত ধরে বলে যেওনা.... নোংরা কোথা থেকে এসেছে... ভাব একবার.... যা রাগ হচ্ছিলো... সামলে নিয়েছিলাম....

হুমম... বুঝলাম.... তুই ওকে বোঝা যে ওরা কতটা সুইট... যেমন আমায় জোর করে কুকুরের মাথায় হাত বোলাতে বাধ্য করেছিলি।

মনে আছে কিভাবে ভয় কাঁপছিলি তুই? আমার যা হাসি পাচ্ছিলো না... উফফফ তোর মুখটা দেখার মতো ছিল... হিহিহিহি

হ্যা সেতো পাবেই.. তোমার হাসি পাচ্ছিলো আর আমার গাঁড়... ইয়ে মানে ফাটছিলো

ইশ.....তোর মুখের ভাষা আর ঠিক হলোনা

উহ....আমিই যেন গালি বার করি.. আর বাকি পুরুষেরা ভদ্দর সবাই... তোর বি এফ মালটাও দেখবি দেয়

মোটেও না... অরিন্দমকে কোনোদিন স্ল্যাং ইউস করতে দেখিনি

ওরে আমার সোনামুনিরে..... সে তুই থাকিস বলে দেয়না... এমনিতে সিওর দেয়... আরে গালি না দিলে কেমন মরদ সে?

তুই চুপ করবি?

করলাম... বলেন ম্যাডাম

সেদিন বললাম চলো সানাম রে টা দেখে আসি... বাবুর নাকি সময়ই নেই....

ওহ হো হো... তাই বলি! আমায় কেন ম্যাডাম ফোন করে ফিল্ম দেখার রিকোয়েস্ট করছিলেন সেদিন.... আমি শালা ভাবছি ডেডপুল দেখবো তা না ম্যাডাম জোর করে বন্ধুত্বের কসম দিয়ে ওই ফালতু ফিল্ম দেখতে বাধ্য করলো...

হিহিহিহি

হাসবিনা একদম... এখন হাসছো... সেদিন তো ক্লাইমাক্সে ভেউ ভেউ করে কাঁদছিলে মা...... আমি ভাবলাম কোথায় ডেডপুল দেখে আসবো... তা না ... দিদিমনির কান্না থামাও..... শালা.... আমি কি সেকেন্ডহ্যান্ড মাল নাকিবে... যে বিএফ এর বদলে আমি তোমায় নিয়ে ঘুরবো.... প্রটেকশন দেবো.... শালা বডিগার্ড বডিগার্ড ফিল আসছে

হিহিহিহি... তুই তো তাই... যা একখানা বডি বানিয়েছিস

হুমমম কিন্তু বানিয়েও কোনো লাভ হলোনা তো

কেন? তুই যে বলেছিলি চান্স আছে? বলিসনি ওকে?

উহু

আজব ছেলে তুই মাইরি.... এতদিন দেখছিস মেয়েটাকে.... একবার সাহস করে এগিয়ে দুটো কথা বলতে পারলিনা.... হাটু কাঁপে?

হুমম

ইডিয়ট! ছবিও তুলিসনি... অন্তত দেখতাম কেমন দেখতে....

ভালোই... তোর থেকে একশো গুন সুন্দরী

বাব্বাহ!! পারিনা

হুহু বাওয়া... আমার চোখ কি যার তার ওপর পড়ে নাকি?

ছবি দেখাবি কিন্তু আমায়... যেভাবেই হোক

দেখেছিস তো... রোজই তো দেখিস (বিড়বিড়)

কি? কি বললি?

কিচ্ছুনা... বললাম নিজের বাবুর দিকে মন দাও মামনি

আমাকে নিয়ে ভাবতে হবেনা খোকাবাবু... নিজের খুকি কে আগে বলো নিজের মনের কথা

তা তো আর সম্ভব নয়...... সে তো অন্য একজনের (বিড়বিড়)

আরে কি আস্তে বলছিস কিসব?

কিচ্ছুনা.... রাখ এবার... মা খেতে ডাকছে..

আচ্ছা..... শোন...... চিন্তা করিস না.... তুই পারবি... দেখবি.... ওর একদিন তোর কাছেই আসবে

বলছিস?

একদম... মিলিয়ে নিস্

থ্যাংকস.... আমারও তাই মনে হয় রে.... বাই ঋতু

বাই রে... খেয়েনে

হুমম.... বাই 

# বাবান
[Image: 20240716-212831.jpg]
[+] 7 users Like Baban's post
Like Reply
সারাদিনের এই কংক্রিটের সাদাকালো কথাবার্তার মাঝে তোমার এই উপহার আমার কাছে রঙিন বার্তা নিয়ে এলো।  yourock  
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
নতুনত্ব কিছু পেলাম , খুব ভালো লাগলো  clps  

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
মনে কি হয় আর সে আসবে? সে তো কখনো তার কথা মাথায়ই রাখেনি। তার নতুন bf এনিম্যাল লাভার নয়, স্বভাবেও হয়তোবা বিপরীত, তাই মানে ব্রেকাপ হতেও পারে কখনো...........
[+] 1 user Likes a-man's post
Like Reply
(28-01-2022, 04:02 PM)Bumba_1 Wrote: সারাদিনের এই কংক্রিটের সাদাকালো কথাবার্তার মাঝে তোমার এই উপহার আমার কাছে রঙিন বার্তা নিয়ে এলো।  yourock  

জীবনের শক্ত রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে বিশ্রাম প্রয়োজন.... সেটা নিয়েও যদি কাড়াকাড়ি শুরু হয় তো মানব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে যে।

(28-01-2022, 04:16 PM)Sanjay Sen Wrote:
নতুনত্ব কিছু পেলাম , খুব ভালো লাগলো  clps  

অনেক ধন্যবাদ ❤

(28-01-2022, 05:40 PM)a-man Wrote: মনে কি হয় আর সে আসবে? সে তো কখনো তার কথা মাথায়ই রাখেনি। তার নতুন bf এনিম্যাল লাভার নয়, স্বভাবেও হয়তোবা বিপরীত, তাই মানে ব্রেকাপ হতেও পারে কখনো...........

সেতো সময়ই জানে... তবে একটা ক্ষীণ আশা রেখেই শেষ করেছি... বাকিটা ওরাই জানুক।
Like Reply
কবিতার নাম

শালা আমিতো অবাক
______ ______ _____ _____
নিশিরাতে জেগে দেখি,?
গাছের ডালে কাক,
শালা আমিতো অবাক!!?
 
চোর ঢুকেছে ঘরের
ভেতর,?
দরজা ছিলো ফাঁক??
শালা আমিতো অবাক!?
 
মোবাইল
নিলো,টিভি নিলো,
রিমোট না হয় থাক???️
শালা আমিতো অবাক!!?
 
পাচ্ছে যা তা নিচ্ছে ভরে, দুই
হাতেরই
মুঠোয়
করে,??
চোরটা তো নির্বাক,
শালা আমিতো অবাক!!?
 
সব মালামাল
বস্তা ভরে,
চোর
পালালো চুরি করে,
যাক না চলে যাক,?‍
শালা আমিতো অবাক!!?
 
মধ্যরাতে অন্ধকারে,
কুত্তা ডাকে জোরে জোরে,
শিয়ালরা
দেয়
হাক??‍??
শালা আমিতো অবাক!!?
 
ভয়ে শরীর
শিউরে ওঠে,
না জানি আজ
কি যে ঘটে??
আবার ডাকে কাক?
শালা আমিতো অবাক!!?
 
হয়নি রাতে তেমন
কিছু,
কোন ভূতই
নেয়নি পিছু,
বেঁচে গেছি যাক......?
শালা আমিতো অবাক!!?
 
সকালে দেখি পুরো পাড়া, মারছে
সবাই
বেরেক
ছাড়া,
মানুষ যে ঝাঁক ঝাঁক!
শালা আমিতো অবাক!!?
 
দেখলাম
আমি মারছে তারা,
চোরটা নাকি পড়ছে ধরা, চোরের
মাথায়
টাক,?
শালা এবারতো আমি পুরাই অবাক...!!??
 
Collected
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(31-01-2022, 12:01 PM)ddey333 Wrote: কবিতার নাম

শালা আমিতো অবাক
______ ______ _____ _____
নিশিরাতে জেগে দেখি,?
গাছের ডালে কাক,
শালা আমিতো অবাক!!?
 
চোর ঢুকেছে ঘরের
ভেতর,?
দরজা ছিলো ফাঁক??
শালা আমিতো অবাক!?
 
মোবাইল
নিলো,টিভি নিলো,
রিমোট না হয় থাক???️
শালা আমিতো অবাক!!?
 
পাচ্ছে যা তা নিচ্ছে ভরে, দুই
হাতেরই
মুঠোয়
করে,??
চোরটা তো নির্বাক,
শালা আমিতো অবাক!!?
 
সব মালামাল
বস্তা ভরে,
চোর
পালালো চুরি করে,
যাক না চলে যাক,?‍
শালা আমিতো অবাক!!?
 
মধ্যরাতে অন্ধকারে,
কুত্তা ডাকে জোরে জোরে,
শিয়ালরা
দেয়
হাক??‍??
শালা আমিতো অবাক!!?
 
ভয়ে শরীর
শিউরে ওঠে,
না জানি আজ
কি যে ঘটে??
আবার ডাকে কাক?
শালা আমিতো অবাক!!?
 
হয়নি রাতে তেমন
কিছু,
কোন ভূতই
নেয়নি পিছু,
বেঁচে গেছি যাক......?
শালা আমিতো অবাক!!?
 
সকালে দেখি পুরো পাড়া, মারছে
সবাই
বেরেক
ছাড়া,
মানুষ যে ঝাঁক ঝাঁক!
শালা আমিতো অবাক!!?
 
দেখলাম
আমি মারছে তারা,
চোরটা নাকি পড়ছে ধরা, চোরের
মাথায়
টাক,?
শালা এবারতো আমি পুরাই অবাক...!!??
 
Collected

আরিব্বাস...দারুন তো
Like Reply
অনেক কথা বলার ছিল পড়লাম । এটা আপনি ছেড়েছেন 28 তারিখ । আমি পড়লাম 31 তারিখ । দেখতে পাই নি এতদিন  Iex Iex

এরকম কথোপকথন দিয়েই তো আমার মিষ্টি মূহুর্ত ..... কান্না পাচ্ছে এখন  Sad Sad

হুহু বাওয়া শব্দটা আপনার ট্রেডমার্ক করা শব্দ হয়ে যাচ্ছে  Big Grin

❤️❤️❤️
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(31-01-2022, 04:14 PM)Bichitravirya Wrote: অনেক কথা বলার ছিল পড়লাম । এটা আপনি ছেড়েছেন 28 তারিখ । আমি পড়লাম 31 তারিখ । দেখতে পাই নি এতদিন  Iex Iex

এরকম কথোপকথন দিয়েই তো আমার মিষ্টি মূহুর্ত ..... কান্না পাচ্ছে এখন  Sad Sad

হুহু বাওয়া শব্দটা আপনার ট্রেডমার্ক করা শব্দ হয়ে যাচ্ছে  Big Grin

❤️❤️❤️

ধন্যবাদ ❤
নানা ট্রেডমার্ক নয়... এমনই পরিস্থিতি উৎপন্ন হচ্ছে যে ওটা ছাড়া অন্য কিছু মাথায় আসছেনা.... নিজের কেদ্দারী বোঝাতে ওটাই মূলত ব্যবহার করা হয়  Big Grin
Like Reply
দেবীর সামনে কলেজের বই রাখা মনে আছে? বইয়ের ওপর রাখা পেন পেন্সিল গুলো?
মনে আছে সেই হাত জোর করে চোখ বুজে মনে মনে প্রার্থনা? মনে আছে দাদা দিদির সাথে বসে রঙিন কাগজ কেটে কেটে দেয়ালে লাগানো? আলোর ঝাড়বাতি নয়, কাগজের ঝালোর? মন পরে মন্ত্রপাঠ? হাতে করে ফুল নিয়ে মায়ের পায়ে অর্পণ আর মনে একটা অদ্ভুত বিশ্বাসের জাগরণ...... সকালবেলার সেই দিনটা, কলেজকে অন্যভাবে আবিষ্কার করা সেদিন, নতুন চোখে দেখা চারিদিক, প্রতিটা মুহুর্ত আজও আছে মনের অন্তরে...... সেই দেবী আজও আছেন, আমাদের জন্য... সকল সন্তানের জন্য।

- বাবান
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
(05-02-2022, 03:25 PM)Baban Wrote: দেবীর সামনে কলেজের বই রাখা মনে আছে? বইয়ের ওপর রাখা পেন পেন্সিল গুলো?
মনে আছে সেই হাত জোর করে চোখ বুজে মনে মনে প্রার্থনা? মনে আছে দাদা দিদির সাথে বসে রঙিন কাগজ কেটে কেটে দেয়ালে লাগানো? আলোর ঝাড়বাতি নয়, কাগজের ঝালোর? মন পরে মন্ত্রপাঠ? হাতে করে ফুল নিয়ে মায়ের পায়ে অর্পণ আর মনে একটা অদ্ভুত বিশ্বাসের জাগরণ...... সকালবেলার সেই দিনটা, কলেজকে অন্যভাবে আবিষ্কার করা সেদিন, নতুন চোখে দেখা চারিদিক, প্রতিটা মুহুর্ত আজও আছে মনের অন্তরে...... সেই দেবী আজও আছেন, আমাদের জন্য... সকল সন্তানের জন্য।

- বাবান

আমরা কলেজের সরস্বতী পুজোর বাজার করতে গিয়ে লুকিয়ে কচুরি খেতাম , হিসেবে একটু উপর নিচ করে বাকি টাকা ফেরত দিতাম হেডুকে ...
Tongue Big Grin
Like Reply
Heart 
[Image: images-36.jpg]

MERI AWAAZ HI PEHCHAAN HAI.....

এনার কণ্ঠ ... এনার পরিচয়
এনার স্থান... মোদের হৃদয়ে
Namaskar
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
(10-04-2021, 04:38 PM)Baban Wrote:
[Image: 20210322-010036.jpg]


চায়ের কাপটা নিয়ে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ঘরে ঢুকলাম. ঘড়ির দিকে তাকালাম. বিকেল সাড়ে পাঁচটা বাজে. বাইরে ভয়ানক না হলেও বেশ জোরেই বৃষ্টি হচ্ছে. সেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে. কি মনে হতে জানলার সামনে এসে পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকালাম. আকাশ কালো করে বৃষ্টি হচ্ছে. দূরের ফ্লাটটা পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছেনা আজ. ওই ফ্ল্যাটের তিনতলায় অংকিতা থাকে. আমার ছাত্রী. বড্ডো মিষ্টি বাচ্চাটা. পড়াশোনায় মন নেই খালি দুস্টুমি. ক্লাসে যা বদমাইশি করে... বকতে যাই কিন্তু কান ধরে এমন করে সরি ম্যাম বলে একটা হাসি দেয়.... আর বকতেও পারিনা. মাঝে মাঝে আসে আমার কাছে পড়ার ব্যাপারে. ওর মা-ই নিয়ে আসে. ওকে পড়া বুঝিয়ে দি.


চায়ে প্রথম চুমুক দিয়ে নিচে তাকালাম. নিচের দোকান গুলো সব বন্ধ. রাস্তা পুরো ফাঁকা. না...... ঐযে দুজন দৌড়ে ওদিক রাস্তা পার করে বড়ো দোকানটার শেডের নিচে গিয়ে আশ্রয় নিলো. ঠিক এরকমই একদিন আমি আর সেও গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম একটা দোকানের নিচে. বুধবার ছিল সেদিন. কোথায় যেন গেছিলাম আমরা? হ্যা মনে পড়েছে.....শপিং. বলেছিলাম আজ বেরোবো না... কিন্তু তার কথার ওপর আমার কথা চলে? তাই বেরোতেই হয়েছিল. ফেরার সময়ই হটাৎ ঝমঝমিয়ে নেমেছিল এরকমই বৃষ্টি . আমাদেরকেও বাইক থামিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিল একটি বন্ধ দোকানের সামনে. খুব বকেছিলাম ওকে.... আর সে আমার সব কথা শুনে খালি দুস্টু হাসি হাসছিল. পাগল একটা. আর তারপরেই হটাৎ আমার বকাবকির মাঝেই সে আমার ঠোঁটে........

দ্বিতীয় চুমুক দিলাম কাপে. একটু বেশি চিনি দিয়ে ফেলেছি আজ. আজকে ভাগ্গিস রবিবার নইলে আমার কলেজ মাটি হতো আজ. চম্পাদিও আর আজকে আসতে পারবেনা..... সকালে যদিও ঘর পরিষ্কার করে গেছে. চোখ গেল পাশের ছোট মাঠটায়. দেখেছো কান্ড!! এই ভয়ানক বৃষ্টিতেও ছেলে গুলো ফুটবল খেলছে.. উফফফ... পারেও বটে এরা. তবে এটাও ঠিক যে যাই হোক.... ওদের প্রত্যেকের মুখে হাসি. যেন কোনোকিছুর পরোয়া না করেই খেলে চলেছে ওরা. এরকম খেলতে গিয়েই তো ওর একবার পায়ে প্রচন্ড জোর লেগেছিলো. তিনদিন বাড়ি থেকে বেরোতে পারেনি ও.  ফোনে কি বকাটাই না বলেছিলাম ওকে. ফোনের ওপারের মানুষটা শুধু আমার রাগের কথা গুলোই সেদিন শুনেছিল... কিন্তু জানতেও পারেনি এপারের মানুষটা ওকে বকছিল ঠিকই কিন্তু চোখের কোনে সামান্য জল ছিল তার.

কি সুন্দর একটা হাওয়া ঢুকে এলো ঘরে খোলা জানলা দিয়ে. আমার শরীর স্পর্শ করে ভেতরে ঢুকে গেলো. আমার খোলা চুল এলোমেলো করে দিয়ে গেল অস্থির হাওয়াটা. কিছু কি মনে করিয়ে দিয়ে গেলো? হ্যা...... এইভাবেই সেওতো আমার চুলে ফুঁ দিতো আর আমি যেই রাগী চোখে তাকাতাম খিলখিল করে হাসতো দুস্টুটা. ওর ওই হাসি দেখে ইচ্ছে করে তখুনি কাছে টেনে দুই গালে আমার ঠোঁট দিয়ে চুম্বন এঁকে দি...ওর ওই নাকে নিজের নাকটা ঘষে দি... কিন্তু নিজেকে সামলে নিতাম. বড্ডো ভাল লাগতো ওর ওই দুস্টুমি.

ঝমঝম করে বৃষ্টি হচ্ছে. কি মনে হতে জানলা দিয়ে দান হাতটা বাইরে বার করে দিলাম. হাতটা ভিজে যেতে লাগলো ঠান্ডা জলের অসংখ্য ফোঁটায়. ছোটবেলায় এরকম করতাম...আরও কতকি.. তারপর বড়ো হলাম যখন তখন ছেলেমানুষি গুলো যেন হারিয়ে গেছিল. কিন্তু কিছুই হারিয়ে যায়না..... আমাদের মধ্যেকার সেই ছোট্ট বাচ্চাটা কোথাও লুকিয়ে থাকে. সময় মতো কখনো বেরিয়ে আসে সে. আগে না বুঝলেও আজ বুঝি. অনুভব করি সেই ছোট্ট রুমকিকে..... সেই রুমকি যে বাবা মায়ের আদরের মামনি ছিল........ তাই কি? ছিলাম কি? তাহলে কেন মা সেদিন বাবাকে বলসেছিলো একটা ছেলে হলে কত ভালো হতো আমাদের বলো?মেয়ে তো একদিন বড়ো হয়ে চলে যাবে.  আর বাবা মাকে কাছে টেনে মায়ের পিঠে হাত বুলিয়ে বলেছিলো - হ্যা...হয়তো ভালোই হতো... তোমার তো খুব ইচ্ছে ছিল ছেলের তাইনা? মা বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলো - হুমম খুব... 

কেন বলেছিলো বাবা? কেন মা বলেছিলো এরকম? ওরা আজও জানেনা যে আমি জানি সেদিনের সেই কথা. ওনারা ভেবেছিল আমি বোধহয় ঘুমের দেশে হারিয়ে গেছি. আর তারপরে বাবা মায়ের সেই অন্তরঙ্গ...... না থাক.... সেসব নাই বা মনে করলাম.

আবারো চুমুক দিলাম কাপে. সত্যি.... মানুষ বড়ো আজব. একদিন যা দেখে বুক ঢিপ ঢিপ করতো....একটা কৌতূহল ও ভয় কাজ করতো..... তা যে নিজের সাথেই একদিন হবে তা কে জানতো? না ভুল বললাম..... জানতাম তো.... যত বড়ো হয়েছি, ততো বুঝেছি যা ঐদিন বাবা মা করছিলো তা একদিন আমাকেও করতে হবে..... হবেই. জেনেও হয়তো না জানার ভান করতাম, বা বলা উচিত জেনেও ভুলে ছিলাম. আসলে অনেক কিছু আমরা এই বুকে জমিয়ে রাখি. জেনেও ভুলে থাকতে চাই. কিন্তু যতই তাকে লুকিয়ে রাখতে চাই... একদিন তো তার সম্মুখীন হতেই হয়. আমাকেও হয়েছিল. আমার আর ওর সেই প্রথম সুখ . সেদিন আমি বুঝেছিলাম শরীরের চাহিদা, পেয়েছিলাম ভালোবাসার স্বাদ, প্রতিটা মুহুর্ত উপভোগ করেছিলাম আমি . বুঝেছিলাম এই সুখের জন্য পুরুষ নারী কেন এতো পাগল. হাতের নাগালে থাকা স্মার্টফোনের ৬ইঞ্চি স্ক্রিনে এইসব চোখ দিয়ে দেখা আর নিজে অনুভব করার মধ্যে পার্থক্য কতটা সেদিন বুঝেছিলাম. ওর প্রতিটা চুম্বন আমাকে  আরও পাগল করে তুলেছিল সেদিন. সেদিন আমি পূর্ণিতা পেয়েছিলাম. মেয়ে থেকে নারী হয়ে উঠেছিলাম হয়তো সেদিন.

আজও মনে পড়ে... সেদিন বাড়ি ফিরে অনেক্ষন আয়নায় নিজেকে দেখিনি. বিনা কারণেই সেদিন আয়নায় নিজের প্রতিফলন দেখতে চাইছিলাম না. লজ্জা? কে জানে... হবে হয়তো. 

হটাৎ একটা বাজ পড়লো. জোরে আওয়াজ হলোনা.  হয়তো অনেক দূরে কোথাও. আগে এইতেই জানলা বন্ধ করে কানে আঙ্গুল দিয়ে বসে থাকতাম.... আর আজ.... একটুও ভয় লাগলোনা. এরকম কত বাজ পড়তে দেখেছি নিজের ব্যাক্তিগত জীবনে তার সামনে এটা আর কি?

জীবন..... ভারী অদ্ভুত.... খুবই পাশবিক. কখনো এতো সুখ দিয়ে ভরিয়ে দেয় যে দুহাতও কম পড়ে যায় আবার কখনো এতো জোর ধাক্কা দেয় যে ঘুম ভেঙে উঠে বসতে হয়. আচ্ছা কেন এই ঘুম ভেঙে যায়? যদি সারাজীবন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা যেত. একটা অবাস্তব মিথ্যে স্বপ্ন. তাও তো সেই মিথ্যেতে সুখ ছিল. জীবন খাতার প্রতি পাতার যদি হিসেব করি তাতে হয়তো দেখবো সুখের পাল্লা ভারী... হ্যা সংখ্যায় সুখের পাল্লা ভারী......... কিন্তু দুখঃ জীবনে কম পরিমানে এলেও তার প্রভাব বড়োই কষ্ট দিয়েছে. সুখকে টক্কর দিয়েছে প্রতিবার.

সুখের অনেক মুহুর্ত আছে. যেমন ছোটবেলা, বাবা মায়ের সাথে কাটানো সময়, ঐযে ক্লাসে প্রথম বন্ধু সুচিস্মিতার সাথে বন্ধুত্ব. সেই ছোট্টবেলার বন্ধুত্ব আজও একই রকম আছে, প্রথম কাশ্মীর ভ্রমণ..... নিজের চোখে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ, সেইবার যখন পুরো ক্লাসে আমি প্রথম হয়েছিলাম.... মিথ্যা বলবোনা.. কোথাও যেন সামান্য অহংকার ওই মুহূর্তে এসেছিলো, আর........... কলেজে ওর সাথে পরিচয়.
পুরো ফিল্মি কায়দায় প্রথম ধাক্কা আর ওর সেই ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকা... হাসি পায় ওই মুখটা ভাবলে আজও. তবে ওই মুখে হয়তো কিছু ব্যাপার ছিল যে আমিও নিজেকে বেঁধে রাখতে পারিনি. সেই প্রেম নামক মায়াজালে ফাঁসতেই হয়েছিল.

চায় আবার চুমুক দিলাম. বর্মন সাহেব ঠিকই গেয়ে গেছিলেন- দিনে কাজ, রাতে ঘুম কেড়ে নেবে এই পিরিতি...  আমারও তো তাই হয়েছিল. পড়াশুনা মাথায় উঠেছিল. নতুন প্রেমের স্বাদেই ডুবেছিলাম তখন. কিন্তু যখন প্রথমবার আমার অবনতি হয়েছিল...... মা হয়তো কিছু সন্দেহ করেছিল মনেহয়. আজও মনে পড়ে. আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলো মা - রুমি মা... জীবনে অনেক কিছু দেখবি, শিখবি বুঝবি... কি বা বয়স তোর? কিন্তু এখনই একটা কথা জেনে রাখ... জীবনে পড়াশুনার প্রয়োজন খুবই, নিজেকে সত্যিকারের মানুষ তৈরী করতে শিক্ষার প্রয়োজন মা, নিজেকে সাবলম্বী করতে এই পড়াশুনার গুরুত্ব অপরিসীম. এই সময় নানা  রকম প্রলোভন আসবে তোর সামনে, কিন্তু তোর সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ হল এই প্রলোভনকে দূরে ঠেলে নিজের লক্ষে এগিয়ে যাওয়া. নিজের লক্ষে পৌঁছে পেছন ফিরে আপনজনের যখন হাসি মুখ গুলো দেখবি.... দেখবি একটা গর্ব হবে নিজের ওপর. তোকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন মা....তাই এমন কিছু করিসনা যাতে আমাদের মাথা নিচে নেমে যায়.

সত্যি বলছি... সেদিন মাকে জড়িয়ে বলতে ইচ্ছে করছিল- না মা  না.... তোমাদের মেয়ে কোনোদিন তোমাদের মাথা নিচু হতে দেবেনা.... তোমাদের যে সে খুব ভালোবাসে মা.

আবার চুমুক দিলাম..... হটাৎ বৃষ্টির বেগটা যেন আরও বেড়ে গেল. সেদিনের পর থেকে আবার সেই আগের সিরিয়াস ছাত্রী হয়ে গেছিলাম আমি. নিজের চারপাশে একটা কঠিন দেয়াল তৈরী করে নিয়েছিলাম.... সেই দেয়াল এতটাই কঠিন ছিল যে ও সেটা টপকাতে পারেনি. অবাক হয়ে দেখতো সে আমাকে তখন. হয়তো ভাবতো.... এই কি সেই মেয়ে যাকে সে ভালোবেসেছিলো? হয়তো ও ভাবতো কত স্বার্থপর আমি.... কিন্তু ওই কঠিন দেয়াল ভেদ করে সেও হয়তো দেখতে পেতোনা... সেই মেয়েটার চোখের জল. যেটাকে প্রতি মুহূর্তে মুছে সে নিজের লক্ষে পৌঁছানোর রাস্তায় একটু একটু করে এগিয়ে চলেছে.

সেবার পরীক্ষার সময় একমনে পরীক্ষা দিচ্ছি. ক্লাসের সবাই সেই কাজেই ব্যাস্ত. সুদীপ্তা ম্যাম এদিক থেকে ওদিক হাটছেন. কি কারণে একবার লেখা থামিয়ে এদিক ওদিক দেখতে দেখতে চোখ পড়লো দূরে বসে ছেলেটার দিকে. সে একটা অদ্ভুত নয়নে আমার দিকেই তাকিয়ে. ওর চোখে চোখ রাখতে পারিনি, সরিয়ে নিয়েছিলাম. আমার খুব কষ্ট হতো, নিজের ওপর রাগ হতো... মনে হতো একি করছি আমি? কেন কষ্ট দিচ্ছি ছেলেটাকে? ওর কি দোষ? এইভাবে তো ও নিজের লক্ষ্য থেকে হারিয়ে যাবে... ওরও তো ভবিষ্যত আছে.

একদিন সকলের আড়ালে ওর হাত টেনে তিনতলার সিঁড়ির কাছে নিয়ে গেলাম ওকে. কঠিন চাহুনিতে রাগী চোখে বোঝাতে লাগলাম আমাকে ভুলে যেতে. নিজেকে ওর কাছে খলনায়িকা হিসেবে প্রতিস্থাপন করে ওকে বলতে লাগলাম এসব যা আমরা করেছি সব ভুল, আমি এসব থেকে বেরিয়ে এসেছি... আমি আর এই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবোনা. আমিই জানি কি অবস্থা ছিল আমার ওই মুহূর্তে. কোনো রকমে নিজেকে সামলে ওকে বলেছিলাম আমায় ভুলে যেতে. আর যেন আমার কাছে আসার চেষ্টা না করে. আমার কথা চুপচাপ মন দিয়ে শুনছিলো. ওর ঠোঁটে একটা কেমন হাসি ছিল. বিদ্রুপর হাসি? কে জানে? কিন্তু আমার কথার মাঝেই যে হটাৎ ছেলেটা আমায় জড়িয়ে ধরবে ভাবতেও পারিনি. আমার কানের কাছে মুখ এনে বলেছিলো সে - পালিয়ে যেতে দেবোনা তোকে আমি.... তুই আমার.

ব্যাস...  সব গোলমাল হয়ে গেছিল. সেই রাগী বদমেজাজি মেয়েটা  হেরে গেছিলো ছেলেটার কাছে. হয়তো এইজন্যই হেরে গেছিলো সে কারণ সেই মেয়েটা যে ভেতর থেকে বদমেজাজি রাগী একটুও ছিলোনা. সবই তো অভিনয় ছিল. নিজের হাতে গড়ে তোলা কঠিন দেয়াল হুড়মুড় করে ভেঙে গেছিল সেদিন এক পলকে.

চায় চুমুক দিলাম. হেসে উঠলাম. যতই করো বাহানা.... পিরিতি কাঁঠালের আঠা..... লাগলে পরে যে ছাড়েনা. আমাকেও ছাড়েনি.

তবে এবারে আগের থেকে অনেক সামলে নিয়েছিলাম নিজেকে. ভালোবাসা ও পড়াশুনা দুটোকেই একসাথে নিয়ে চলছিলাম.  না.... মোটেও কঠিন কাজ না কিন্তু... তাহলে আগে কেন পারিনি সামলে চলতে? হয়তো জীবনের দারিপাল্লার একদিকে ভার বেশি দিয়ে দিয়েছিলাম তখন.

কররর করর করাত!! শব্দে বেশ জোরে একটা বাজ পড়লো. হাসি পেলো আমার নিজেরই.  আগে হলে ও মা গো, বাবাগো বলে চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় তুলতাম. কিন্তু এখন.... ঐযে আগেই বললাম সেই আমি নই এই আমি. পাল্টে গেছি.... পাল্টাতে হয়েছে..... সবাইকেই পাল্টে যেতে হয়... পাল্টে যায় একদিন সবাই. এটাই নাকি নিয়ম.

সেও তো একদিন পাল্টে গেছিলো. সেই চঞ্চল দুস্টু ছেলেটা একদিন পাল্টে পুরুষ হয়ে উঠেছিল. হয়ে উঠেছিল সফল ব্যাবসায়ী. ওর সাফল্যে ওর থেকেও বেশি হয়তো আমিই খুশি হয়েছিলাম. সেই দুস্টু বদমাইশ কলেজের ছেলেটা আজ সফল জীবনে. সফল হবার পথে হাঁটতে হাঁটতে পাশে টেনে নিয়েছিল আমায়. আমি হয়ে উঠলাম তার চিরজীবনের সঙ্গিনী.

না..... সেদিন আর বাবা মা বাঁধা দেয়নি. মেয়ের ভবিষ্যত সুরক্ষিত দেখেই বোধহয়. আমিও নিজের মতো কর্ম জীবনে পা দিলাম. বেশ ভালোই তো সব চলছিল. তাহলে.......একদিন কি হলো? আবার সব পাল্টে গেলো কেন?

ওহ.. হ্যা.... পরিবর্তনই তো নিয়ম তাইনা? তাই সেই নিয়মের সম্মান বজায় রেখেই সেও আবার পাল্টে গেলো.  নিজের সামনে সেই আগের চেনা মানুষটাকে পাল্টে যেতে দেখলাম. সেই আগের মতো কিছুই যেন রইলোনা. আসলে জীবনে একটু বেশিই সফল হয়ে গেছিলো সে. সফল হতে গেলে অনেক কিছুই করতে হয়, অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়. অনেক কষ্ট করতে হয়. নিজেকে কখনো পাল্টে ফেলতেও হয়. ও এই সবকটা মন দিয়ে পালন করেছিল. ওর চেষ্টা,কষ্ট আমি নিজের চোখে দেখেছি. দেখেছি ওর  পরিশ্রম. আর সফলতার এক একটা সিঁড়িতে পা দিয়ে এগিয়ে যাওয়া.

আর এসবের মাঝে বুঝতেও পারিনি ও এতটাই এগিয়ে গেছে...যে  আমি বোকা মেয়ে কত পেছনে রয়ে গেছি. সফলতার সব পরীক্ষা পাস করে সে আজ সফল. কিন্তু আমি আজ অসফল. সফলতার যুদ্ধে আমি আমার সেই কলেজের চঞ্চল বন্ধু ও প্রেমিককে আজ হারিয়ে ফেলেছি. হারিয়ে ফেলেছি তার ছেলেমানুষি, তার বন্ধুত্ব, তার স্পর্শ, তার ভালোবাসা.

আজও মনে আছে আমার তার সেই প্রথম স্পর্শ. সেই স্পর্শে আমি নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছিলাম. তার স্পর্শ করা স্থানে পরে নিজে হাত বুলিয়ে হেসে ফেলেছিলাম. আর আজও মনে আছে তার শেষ স্পর্শ.... সেটাও কোনোদিন ভুলবোনা. আয়নায় নিজের গালে সেই পাঁচ আঙুলের দাগ দেখে সেখানেও হাত বুলিয়ে ছিলাম.

দুই স্পর্শের তফাৎ ছিল এই যে প্রথম স্পর্শ ছিল একটি কলেজে পড়া ছেলের যাতে ছিল পবিত্র ভালোবাসা... আর শেষ স্পর্শ ছিল এক সফল ব্যাবসায়ী স্বামীর .

ঐযে বলেছি সফল হতে গেলে অনেক কিছু পাল্টাতে হয়. অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়.... আমিও করেছি. হারিয়েছি আমার সেই প্রেমিককে, হারিয়েছি তার ভালোবাসা, হারিয়েছি তার সংসর্গ, হারিয়েছি সেই কলেজের চঞ্চল দুস্টু ছেলেটাকে, হারিয়েছি তার ছেলেমানুষিকে..... তার বদলে একদিন দেখি আমি ভাগে রয়েছে এক সফল ব্যাস্ত স্বামী, এক মদ্যপ অচেনা মানুষ আর শেষে এক দুশ্চরিত্র পশুকে. এই না হলে সফল পুরুষ!

আমি তাকে কোনোদিন বাঁধা দিইনি. পারিইনি আটকাতে. তার ওই চোখ আমাকে বাধ্য করতো তার সব কথা মেনে নিতে. তাইতো তাকে আটকাতে পারিনি আমার ঠোঁটে প্রথমবার চুমু খাবার সময়, পারিনি আটকাতে আমাকে কাছে টেনে নেবার সময়, পারিনি যখন দুটো শরীর মিলেমিশে এক হয়ে গেছিলো,  দুজনে মিলে এক হয়ে গেছিলাম,  কলেজে রেজাল্ট খারাপ হবার পর নিজের স্বার্থে আলাদা হয়ে যাবার কথা ভেবে মন শক্ত করেও তার একবার জড়িয়ে ধরায় পারিনি আটকাতে নিজেকে. তাকে কষ্ট দিতে মন চায়নি কখনো.

তার প্রথম আবদারেও না করতে পারিনি......  আর শেষেও নয়. এতদিনের সঞ্চিত সুখ দুঃখের স্মৃতিকে সাথে নিয়ে কাগজে সই করে তাকে মুক্ত করে দিয়েছিলাম. কারণ সেই মুহূর্তে যে ব্যাক্তি আমার পাশে শুতো সে আর আমার ছিলোনা... অন্যকারো হয়ে গেছিলো.

সে আজ অন্যকারোর. ভালো থাকুক..... সে ভালো থাকুক. কেন জানি আজও রাগ করতে পারিনা ওর ওপর..... রাগ আসলেই সেই দুস্টু ছেলেটার হাসিভরা মুখটা মনে পরে. আমি তো সেই ছেলেটাকেই ভালোবেসেছিলাম..  এই বর্তমান অচেনা লোকটিকে নয়.

চায় শেষ চুমুক দিলাম. ভালো থেকো...... তুমিই না হয় জীবন যুদ্ধে সফল হলে... আমিই অসফল হয়েই সুখী.

হটাৎ আমার কাপড়ে টান পড়ল. পেছন ঘুরে দেখি আকাশ দাঁড়িয়ে. আমায় বলল - মা...... ভয় করছে... কি জোর আওয়াজ হচ্ছে দেখো!!

আমার ভুল ভাঙল. কে বলল আমি জীবন যুদ্ধে অসফল? এইতো আমার আকাশ আমার কাছে. এর থেকে বড়ো সফলতা আর কি কিছু আছে পৃথিবীতে? 

আমি আকাশকে কোলে তুলে নিয়ে বললাম - ভয় কিসের সোনা? এইতো মা তোমার সাথে... আমি থাকতে ভয়ের কিচ্ছু নেই... এই নাও হাত বাড়াও বাইরে.. দেখো জল পড়ছে কেমন ....

আকাশ জানলা দিয়ে হাত বাড়ালো. ওর হাত জলে ভিজে যেতে লাগল. খিল খিল করে হেসে উঠলো আমার আকাশ. সেই হাসি...একদম সেই কলেজের চঞ্চল ছেলেটার মতো.

আমার আকাশও নিশ্চই জীবনে সফল হবে... কিন্তু এই আকাশের বুকে কোনো কালো মেঘ জমতে দেবোনা.. এই আকাশ হবে ওর মায়ের মতো.


সমাপ্ত

মন ছুঁয়ে গেলো গো। অসাধারন।
[+] 1 user Likes nandanadasnandana's post
Like Reply
(12-02-2022, 04:32 PM)nandanadasnandana Wrote: মন ছুঁয়ে গেলো গো। অসাধারন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য ❤ Namaskar
Like Reply
Star 
স্মৃতি- বাবান 

এই পড়ে গেলি কিকরে? ওঠ ওঠ....

বাচ্চা মেয়েটা বাচ্চা ছেলেটাকে তুলে নিজেই ওর গাঁ ঝেড়ে দিতে লাগলো। পড়ে যাবার চমক এখনো কাটেনি বাচ্চা ছেলেটার.... ড্যাব ড্যাব করে মেয়েটাকে দেখছে সে। ওকে বকছে মেয়েটা..... আর গা থেকে মাটি ধুলো ঝেড়ে দিচ্ছে। ছেলেটা কিছুই বলতে পারছেনা.... না.. চমক কেটে গেছে... তাও কিচ্ছু ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা.... নিজের বন্ধুটার এই গুরুজন মার্কা হাব ভাব দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে...... হটাৎ খুব ভালো লাগছে নিজের এই বন্ধুটাকে..... এটা কেমন অনুভূতি রে বাবা?

হেসে ফেললো অনিকেত.... ছোটবেলার এই স্মৃতি মনে করে। সুদীপ্তা ঘরে ঢুকে স্বামীর আনমনে এই হাসি দেখে বললো - বাহ্... বাহ্... বাবু এখানে হাসছে.. আর ওদিকে আমি রান্না করতে করতে দুটো শয়তানকে সামলাচ্ছি.... যা শয়তান হয়েছে তোমার ছেলে আর মেয়ে... একদম তোমার গুন পেয়েছে.... বাবারে.. একটুও পড়বেনা... শুধুই খেলবে.... তুমিও তো ও দুটোর বাপ... বকতে পারোনা ওদের... এতো তল্লাই দাও না... দেখবে এই প্রশ্রয় পেতে পেতে বাঁদর তৈরী হবে...

অনিকেত এখনো হাসছে.. বৌয়ের বকুনি শুনে যাচ্ছে আর হাসছে.... আর মনে মনে নিজেকেই বলছে - এ মেয়ে আজকেও পাল্টালোনা....

#বাবান 
[Image: 20240716-212831.jpg]
[+] 6 users Like Baban's post
Like Reply
মুছে যাওয়া দিনগুলি .. আসলে স্মৃতি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুখের বার্তা নিয়ে আসে ‌ clps
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply




Users browsing this thread: 22 Guest(s)