Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
(05-01-2022, 11:33 AM)Bichitravirya Wrote:
আজ একটা স্বপ্ন দেখলাম আপনাকে নিয়ে Big Grin    ....

স্বপ্নটা এরকম --- দেখি আমাকে আপনি ফোন করেছেন। স্ক্রিনে দেবু দা নাম উঠেছে। কিছুক্ষণ ভেবে কলটা রিসিভ করলাম। দেখি হচ্ছে না। বারবার চেষ্টা করলাম তবুও রিসিভ হচ্ছে না। এদিকে রিং হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল। দেখি আমার এলার্ম বাজছে  Tongue 

❤❤❤ 

যেদিন সত্যি সত্যি ফোন করবো সেদিন বিচিকে দৌড় করিয়ে ছাড়বো একেবারে ....

horseride fight Big Grin
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(05-01-2022, 05:33 PM)ddey333 Wrote: যেদিন সত্যি সত্যি ফোন করবো সেদিন বিচিকে দৌড় করিয়ে ছাড়বো একেবারে ....

horseride fight Big Grin

আমি কি তোমাকে ওর নম্বরটা দেবো নাকি?
Like Reply
তুমি তৃষ্ণা হয়ে যাও !

চাতকের মতো আমি 
ফটিক জল ফটিক জল 
বলে জানাবো আমার তৃষ্ণা !
তুমি মেঘ হয়ে যাও !
ফোঁটা ফোঁটা জলের ধারায় 
তৃষ্ণা আমার মেটাও !
তুমি চাইলে নদীও হতে পারো 
নিরন্তর তোমার চলার ছন্দে 
আমার মনকে মাতাও !
তোমার কুলুকুলু শব্দে 
ভাঙ্গুক আমার নীরবতার ঘুম 
তোমার মিষ্টি বাণীতে 
আমার জীবন সুর সাজাও ! 
তুমি পাহাড়ও হতে পারো !
তোমার মৌন মোহনতায় 
আমার হৃদয় হরিতে পারো !
তোমার চোখের কঠিন তারায় 
আমার জীবন সাজাও !
যদি তুমি হয় গভীর সাগর 
তোমার নীল চোখের গভীরতায় 
আমায় ডুবে যেতে দিও 
তোমার উচ্ছল জলধির 
প্রবল ঢেউয়ে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যাও

তুমি যাই হও না কেন 
আমার প্রেয়সী হয়োনা যেন !
তোমার সকল স্বজিব কে 
আমি ধরে রাখতে পারবোনা জেনো !
আমার ভালোবাসা ক্ষণস্থায়ী !
দীর্ঘ চুম্বন আমার জন্য নয় !
তুমি নারী ! অধরা থেকো শুধু আমার জন্য !

Kuntal Kumar Roy 
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(05-01-2022, 05:33 PM)ddey333 Wrote: যেদিন সত্যি সত্যি ফোন করবো সেদিন বিচিকে দৌড় করিয়ে ছাড়বো একেবারে ....

horseride fight Big Grin

ও মা ... হঠাৎ আমাকে খামখা দৌড় করাবেন কেন!  Huh

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(05-01-2022, 07:34 PM)dada_of_india Wrote: আমি কি তোমাকে ওর নম্বরটা দেবো নাকি?

আপনাদের সবার বয়স অনুযায়ী আপনাদের কি বলে ডাকবো সেটা ভেবেছি। 
শুনুন তাহলে .... কামদেব দাদু , তুমি যে আমার বড়ো জেঠু , দাদা অফ ইন্ডিয়া মেজ জেঠু , দেবু কাকা , বুম্বা মামা, বাবান দা, জুপিটার দা, কাকসন ভাই  devil2 Big Grin 

কেমন হলো বলুন  Big Grin 

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 2 users Like Bichitro's post
Like Reply
(06-01-2022, 11:33 AM)Bichitravirya Wrote: আপনাদের সবার বয়স অনুযায়ী আপনাদের কি বলে ডাকবো সেটা ভেবেছি। 
শুনুন তাহলে .... কামদেব দাদু , তুমি যে আমার বড়ো জেঠু , দাদা অফ ইন্ডিয়া মেজ জেঠু , দেবু কাকা , বুম্বা মামা, বাবান দা, জুপিটার দা, কাকসন ভাই  devil2 Big Grin 

কেমন হলো বলুন  Big Grin 

❤❤❤

দে বাবু চির যুবক তাঁকে দেখতে অনেকটা হলিউড সেলিব্রিটি Willem Dafoe র মতো।



Like Reply
(06-01-2022, 02:10 PM)Jupiter10 Wrote:
দে বাবু চির যুবক তাঁকে দেখতে অনেকটা হলিউড সেলিব্রিটি Willem Dafoe র মতো।

তাই কি ?

পিনুদা তো বলে একদম Leonardo Dicaprio !! Smile

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(06-01-2022, 02:35 PM)ddey333 Wrote: তাই কি ?

পিনুদা তো বলে একদম Leonardo Dicaprio !! Smile


হ্যাঁ তাই। এটাই ওনার ভালবাসা আপনার প্রতি। Smile



Like Reply
রাখী বন্ধন



উনুনে মাংসটা কষাতে কষাতে চম্পা চেঁচালো,
--ভাই... এই ভাই করছিস কি সেই সকাল থেকে? খাবি না? আয়...
--হ্যাঁ দিদি আসছি রে আর একটু...
    চম্পা আজ মাংস রাঁধছে ভাইয়ের জন্য। ভাইটা মাংস খেতে বড্ডো ভালোবাসে। চার পাঁচ বাড়ি ঠিকে ঝিয়ের কাজ করে পেটে ডাল-ভাত জোটানোই মুশকিল। মাংস কিনবে কোত্থেকে। আজ জমানো টাকা থেকে একটু কিনতে হলো। আজ যে রাখী।
দু কামরার ভাঙা টালির ঘর চম্পার। বৃষ্টি এলেই ঘরে জল ঢোকে, বিছানা ভিজে যায়। হাতে কিছু টাকার খুব দরকার। চিন্তায় ঘুম আসেনা রাতে।
   ভাইটা ছোট, ইকলেজে পড়ে। চম্পারই বা কতো বয়স ! কেলাস ফোর এ পড়ে তখন মা মারা গেলো। ভাইয়ের জন্মের কয় মাস আগেই বাপটা অন্য মেয়েকে বিয়ে করে পালালো। ভাই জন্মানোর পরেই মা বিছানা নিলো। সেই থেকে চম্পা ঝিয়ের কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে।তারপর বছরখানেক বেঁচে ছিলো মা, ভাইকে দেখাশোনা করতো। মা মরতে চম্পাই ভাইকে সামলাতো,  কখনো কোলে চাপিয়ে কাজে নিয়ে যেত, কখনো পাশের বাড়ির পিসির কাছে রেখে যেত। পিসি বলেছিলো ভাইকে কাজে পাঠাতে। অনেকেই নাকি বাড়ির বাচ্চাকে ধার দেয়। ওরা নাকি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেবে বাচ্চাকে, তারপর কোলে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে নয়তো রাস্তার ধারে ফেলে রেখে ভিক্ষে চাইবে। সারাদিন শেষে বাচ্চাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেবে। দৈনিক পঞ্চাশ টাকাও দেবে বলেছিলো। তবে চম্পা রাজি হয়নি। ওর স্বপ্ন ভাইকে পড়ালেখা শিখিয়ে বড়ো মানুষ করবে।

        ভাইটা প্রতি বছর ক্লাসে পাশ দেয়। চম্পা ঠাকুরের থানে মানত করে, "ভাইটাকে দেখো ঠাকুর, যেন ভালো  মানুষ বানাতে পারি। " তবে ইদানিং পাড়ায় লোকের মুখে শুনেছে ভাইকে নাকি এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। কোনো বদ সঙ্গে পড়লো কিনা চম্পা ভয় পায়। তবে ও খুঁটিয়ে দেখেছে ভাইটা একটুও বদলায় নি। দিদি বাড়িতে এলেই ক্ষেপিয়ে তোলে ছড়া শুনিয়ে, " চম্পা চম্পা, বেনুনীটা লম্বা "। দিদি লাঠি হাতে তেড়ে এলেই দৌড়ে  পালায়।
  চম্পা কাজের বাড়িগুলো থেকে ছুটি নিয়েছে আজ। ভাইয়ের জন্য পুজো দিয়ে এসেছে মন্দিরে। ফেরার পথে অল্প মাংস নিয়ে এসেছে। ভাইটা কি যে ভীষণ খুশি হবে...
    কিন্তু ভাই সেই সকাল থেকে দরজা দিয়ে কি করছে কে জানে ! চম্পা আবার ডাকে,
--কিরে ভাই? কি করছিস? বেরো বলছি নয়তো...
   দরজাটা জোরে ধাক্কা দিতেই খুলে গেলো।  চম্পা ঘরে ঢুকেই  আঁতকে ওঠে  !
--এতো রক্ত !! কি করে? হাত কেটেছিস কেন? এসব কি?
রাগে, ভয়ে, দুঃখে চড় বসালো ভাই-এর গালে। ছি ছি কি করছিস তুই এসব? এইজন্যই পাড়ার লোক তাহলে...
--বকিস না দিদি, আমি তোর জন্যই...

বেশ ক'ঘা পিটিয়ে তারপর ভাইয়ের হাতে গাঁদা ফুলের পাতা ডলে কাপড় বেঁধে দিলো চম্পা। তারপর গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো,
--এবার বল কি করছিলিস তুই?কোনোদিন আমি বাড়িতে থাকি না টের পাইনা... বল...
      ভাই কাঁদতে কাঁদতে এগিয়ে গেলো পড়ার টেবিলের কাছে। তারপর দিদির হাতটা টেনে পরিয়ে দিলো রাখী।
--এটা দিদি তোর জন্য, আমি বানিয়েছি। এটা বানাতেই তাড়াহুড়োতে বেলেড দিয়ে...

চম্পা অবাক!
--এতো সুন্দর রাখী তুই...কি করে !!
--হ্যা দিদি। আমাদের ইকলেজে আমাদের কর্মশিক্ষার কেলাসে মাস্টারমশাই শেখালো। আমি দু মাস ধরে  জমানো টিফিনের টাকা দিয়ে পুঁতি, ফিতে, জরি এই সব কিনে অনেক রাখী বানিয়েছি। ইকলেজের বন্ধুরা আমার থেকে কিনলো। কেষ্ট কাকার দোকানে অনেকগুলো দিয়ে এসেছি বিক্রি করতে।  কাকা পাঁচশো টাকা দিয়েছে দেখ। ইকলেজ থেকে আরও দুশো টাকা উঠেছে। সব টাকা তোর দিদি, এই নে...  
      চোখে জল আসতেই চম্পা গর্বে বুকে টেনে নিলো ভাইকে। ভাঙা টালির ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো ঠিকরে এসে পড়েছে রাখীর জড়ির ওপর। চম্পা দেখলো সমস্ত ঘরটা যেন আলোতে ঝলমল করছে।


সোমাশ্রী পাল চন্দ
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
না বলা কথা
 
মালিকা ঘোষাল ব্যানার্জী



বাবাকে আজকাল রাত্রির অসহ্য লাগে। তবে সে কোনোদিনই সেভাবে বাবা-ঘেঁষা নয়।  মাঝেমধ্যে ভাবে তৃষার বাবার মতো তার বাবারও দূরে কোথাও চাকরির পোস্টিং হলে খুব ভালো হতো। ন'মাসে ছ'মাসে একবার বাড়ি আসতো, কোনো ঝামেলাই থাকতো না। বাড়িতে যতক্ষণ বাবা থাকে কেমন একটা গুমোট ভাব থাকে যেন।
অথচ তার বন্ধুদের বাবারা এমন নয়। সৌপ্তিকা সেদিন বলছিল, "জানিস, কাল আমার বার্থ ডে ছিল বলে বাপি দ্য ক্যালকাটা ক্লাবে আমাদের ডিনারের জন্য নিয়ে গিয়েছিল। আমি তো ভাবতেই পারিনি যে এতো বড়ো সারপ্রাইজ দেবে। উফ্, কী যে খুশি হয়েছি কী বলবো।"
সুপ্রীতি হাসতে হাসতে বলে, "আর আমার বাবা তো ঘুরতে নিয়ে যাওয়ায় এক্সপার্ট। ছুটি পেলেই জিজ্ঞাসা করবে কোথায় বেড়াতে যেতে চাই, ঠিক নিয়ে যাবে। মা তো বলে বাবা নাকি আমাকে তোল্লাই দিচ্ছে।"
হাসি হাসি মুখ করে শুনে গেলেও মনের ভেতরে কেমন একটা কষ্ট হচ্ছিল রাত্রির। টাকাপয়সার অভাব নেই তাদের। কিন্তু তাও তার বাবা কোনোদিন কোনো বড়ো জায়গায় তাকে খাওয়াতে নিয়ে যায়নি, বেড়াতেও নিয়ে যায় খুব কম। আর সবসময় এমন গম্ভীর হয়ে ঘুরে বেড়ায় যে ভালো করে এনজয় করা হয় না। আবার রাত্রির যদি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ফিরতে রাত হয় সেই নিয়ে রাগারাগি করে। তার সাথে দু'দণ্ড বসে হাসি ঠাট্টা গল্প করা তো বহুদূরের ব্যাপার।
...................................................................................
ক'দিন পরেই রাত্রির বিয়ে, তার পছন্দের মানুষ শুভায়ুর সঙ্গে। শ্বশুরবাড়ি নিয়ে খুবই খুশি, আশাবাদী ও উত্তেজিত রাত্রি। তার হবু শ্বাশুড়ি মা যেমন ভালো, হবু শ্বশুরমশাইও তেমন হাসিখুশি মানুষ। সর্বক্ষণ হইহই করছেন। রাত্রি ভাবে, বিয়েটা হলে বাঁচবে সে। মায়ের জন্য মনকেমন করবে ঠিকই, কিন্তু এই গুমোট পরিবেশ থেকে সে বেরোতে পারবে।
বিয়ের দিন সন্ধ্যেবেলায় সেজেগুজে রাত্রি তৈরি। ক্যামেরাম্যান হাজির, বান্ধবীদের সঙ্গে ফটোশ্যুট চলছে। বিয়ের লগ্ন দেরিতে, বরযাত্রী এসে পৌঁছায়নি এখনও। চিকেন পকোড়া আর কফি পরিবেশন করা হলে রাত্রির বান্ধবীরা সেসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শুভায়ুকে মেসেজ পাঠায় রাত্রি, রওনা হয়েছে কিনা জানতে চায়।
হঠাৎ কী মনে হতে সামনে তাকিয়ে দেখে তার বাবা নিজের পুরোনো হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটা তার দিকে তাক করে দাঁড়িয়ে আছেন। মনোযোগ সহকারে ফটো তুলছেন তার। এমন দৃশ্য দেখে রাত্রি এতটাই অবাক হয়ে যায় যে হাঁ করে চেয়ে থাকে। একজন অতিথি এসে তাঁকে ডাকতে তিনি চলে যান। রাত্রি মনে মনে ভাবে, এভাবে তার ফটো তোলার এতো ঘটা কেন কেজানে! ক্যামেরাম্যান তো রয়েইছে। সেইতো ঝাপসা ফটো তুলবে, আর ওই ফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটিও ভালো নয়। কিছুক্ষণ পর বর আর বরযাত্রী এসে পড়ে, রাত্রিও ব্যস্ত হয়ে যায়।
পরেরদিন সকালে বিদায়ের পর সারাটা রাস্তা মায়ের কথা ভেবে চোখ ছলছল করতে থাকে রাত্রির। তবে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে সকলের স্নেহ ভালোবাসা আর বিয়ের আচার অনুষ্ঠান পালনের ব্যস্ততায় কিছুটা কষ্ট সে কাটিয়ে ওঠে। শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলোকে ভালো লাগতে শুরু করে। কতো প্রাণখোলা সবাই।
দেখতে দেখতে অষ্টমঙ্গলা এসে যায়। শুভায়ুর সঙ্গে রাত্রি বাড়ি যাচ্ছে। গাড়ি করে যেতে যেতে জিজ্ঞাসা করে, "কী কী মিষ্টি কিনলে?"
শুভায়ু হেসে বলে, "গিয়ে দেখতে পাবে।"
"এতো রহস্য করার কী আছে! নেহাত আমার রেডি হতে একটু দেরি হলো বলে আগে গিয়ে মিষ্টিটা কিনে আনলে.."
"একটু দেরি?" শুভায়ু হাসতে থাকে, "সেই কখন থেকে তৈরি হয়ে বসে আছি, তোমার আর হয় না। অগত্যা মিষ্টিগুলো কিনে আনলাম।"
বাড়ি পৌঁছে রাত্রি তার মায়ের সঙ্গে হইহই করে গল্প শুরু করে দেয়। শুভায়ু জিজ্ঞাসা করে, "বাবা কোথায়?"
রাত্রির মা বলেন, "কেজানে কোথায় বেরোলো! দই আর মিষ্টিটা রেখে দিয়ে বেরিয়ে গেলো। রান্নায় ব্যস্ত ছিলাম বলে আর জিজ্ঞাসা করে উঠতে পারিনি।"
শুভায়ুর আনা মিষ্টির ব্যাগটা বার করে একটু অবাক হয় রাত্রি।
"তোমাকে তো বলেছিলাম রাজভোগ আর মিহিদানা নিতে। এই বাক্সটা কীসের? সন্দেশ আছে? কিন্তু সন্দেশ তো এবাড়ির কেউ খায় না!"

শুভায়ু বলে, "আছেন আছেন, তোমাদের বাড়িতে সন্দেশপ্রেমী মানুষ আছেন।"
"কে?"
"তোমার বাবা।"
রাত্রি আশ্চর্য হয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করে, "বাবা সন্দেশ খেতে ভালোবাসে?"
রাত্রির মা বলেন, "হ্যাঁ।"
"কই কখনও তো আনেনি?"
"আমি আর তুই তো সন্দেশ তেমন খেতাম না, তাই নিজের জন্য আর আলাদা করে কোনোদিন আনেনি।"
কথাটা অদ্ভুত লাগে রাত্রির। নিজের পছন্দটা পছন্দ নয়! শুভায়ুকে বলে, "তুমি কীকরে জানলে?"
শুভায়ু হেসে বলে, "একবার কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলেন।"
কিছুক্ষণ পর হন্তদন্ত হয়ে রাত্রির বাবা বাড়ি ফেরেন। শুভায়ুকে "কী, ভালো আছো তো?" বলে রান্নাঘরে চলে যান। রাত্রি কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়, ঘরে এসে একটু কথা বলতে পারলো না!
মায়ের হাতে হাতে সাহায্য করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রান্নাঘরে যেতে গিয়ে রাত্রি শুনতে পায় তার মাকে তার বাবা বলছেন, "চট করে দু'খানা ভেটকি মাছ একটু রেঁধে দিতে পারবে?"
রাত্রির মা অবাক হয়ে বলেন, "এতক্ষণ তাহলে খুঁজে খুঁজে ভেটকি মাছ আনতে গিয়েছিল? কী দরকার ছিল! ইলিশ তো রাঁধলাম। চিংড়ি আছে, মাটন আছে।"
বিস্মিত রাত্রি শোনে তার চিরগম্ভীর বাবা ইতস্তত করে বলছেন, "না, মেয়েটা তো ভেটকি মাছ খেতে ভালোবাসে। ইলিশের কাঁটা বেছে তেমন খেতে পারে না।"
রান্নাঘরের পাশ থেকে সরে আসে রাত্রি। হঠাৎই মনের মধ্যে কেমন ঝুপ করে একটা মনখারাপ নেমে আসে।
বাড়িতে দু'দিন কাটিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাবে রাত্রিরা, জামাকাপড় পরে তৈরি। গাড়ি এসে গেছে। মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে বাবার ঘরে যেতে যায়, দেখে মোবাইল ফোনে বাবার দৃষ্টি নিবদ্ধ। পাড়ার একজন লোক এসে হাঁক দিতে ফোনটা বিছানায় রেখে দিয়ে উনি কথা বলতে চলে যান। রাত্রি কৌতূহলী হয়ে দেখতে আসে ফোনটা।
অবাক হয়ে দেখে বাবার পুরোনো হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনে সাদামাটা ভাবে তোলা তার বিয়ের দিনের সেই ফটোটা। তেমন ঝকঝকে আসেনি। ফোনটা চুপচাপ বিছানায় রেখে দিয়ে চলে আসে রাত্রি।
বাইরে গিয়ে গাড়িতে ওঠার আগে পেছন ফিরে তাকায় সে। মায়ের সঙ্গে শুভায়ু কীসব বকবক করছে। ধীরপায়ে বাবার কাছে গিয়ে এই প্রথম বাবাকে জড়িয়ে ধরে তাঁর বুকে রাত্রি মাথা রাখে। বাবা পরম স্নেহে মেয়ের মাথায় হাত রাখেন। মেয়ের প্রতি বাবার না বলা কথাগুলো বুঝে নিতে আর ভুল হয় না রাত্রির।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
[Image: 270206891_1116896555732464_7619773467360...e=61DB7D54]
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(06-01-2022, 11:33 AM)Bichitravirya Wrote: আপনাদের সবার বয়স অনুযায়ী আপনাদের কি বলে ডাকবো সেটা ভেবেছি। 
শুনুন তাহলে .... কামদেব দাদু , তুমি যে আমার বড়ো জেঠু , দাদা অফ ইন্ডিয়া মেজ জেঠু , দেবু কাকা , বুম্বা মামা, বাবান দা, জুপিটার দা, কাকসন ভাই  devil2 Big Grin 

কেমন হলো বলুন  Big Grin 

❤❤❤

বোকাচোদা  Flame আমি মামা আর বাবান দাদা? একবার পাই সামনে কোনোদিন  Armyman  
Like Reply
(07-01-2022, 11:24 AM)Bumba_1 Wrote:
বোকাচোদা  Flame আমি মামা আর বাবান দাদা? একবার পাই সামনে কোনোদিন  Armyman  

Blush Blush Blush Blush Blush
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(07-01-2022, 11:24 AM)Bumba_1 Wrote:
বোকাচোদা  Flame আমি মামা আর বাবান দাদা? একবার পাই সামনে কোনোদিন  Armyman  

BC আমাকে বলে কিনা কাকা  !! Angry Angry

এবারের মতো মাপ করে দিলাম , এমনিতেই একজন ওকে দাদু বলে ডেকেছে বলে মুষড়ে পড়েছে বেচারা .... Tongue Big Grin
Like Reply
(08-01-2022, 08:24 AM)ddey333 Wrote: BC আমাকে বলে কিনা কাকা  !! Angry Angry

এবারের মতো মাপ করে দিলাম , এমনিতেই একজন ওকে দাদু বলে ডেকেছে বলে মুষড়ে পড়েছে বেচারা .... Tongue Big Grin

কি আর বলি বলুন ! কর্মের ফল পেতে হয়। সেটাই পচ্ছি হয়তো। আপনাদের কে মামা কাকা ডাকার ফল নিজেকে দাদু শুনতে হলো  Sad
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(06-01-2022, 07:15 PM)dada_of_india Wrote: রাখী বন্ধন


সোমাশ্রী পাল চন্দ

ভালো লাগলো গল্পটা। মন শীতল করার জন্য পার্ফেক্ট Heart । এই রকম বাবা মা হীন ভাই বোন দের কাছে একসময় বড় দিদি বা দাদা ই হয়ে ওঠে বাবা মা। অবশ্য নিজের সব স্বপ্ন , ইচ্ছা , শখ গঙ্গার জলে বিসর্জন দিয়ে এই পদে বসতে হয়  Shy Heart Shy 

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
# ফোবিয়া 

 
আলো আসবে
"এই তোমার মেয়ে কোথায়?"
"মেয়ে আসেনি গো। "
"ওমা, সেকি! কেন?"
"ইয়ে... আসলে চারিদিকে কোভিড ছড়াচ্ছে তো, তাই এল না।"
"এখন তো অনেক কমে গেছে গো কোভিড....এমনিতেই তো এখন করোনা করোনা করে ওদের কলেজও বন্ধ। কলেজ লাইফ, মজা, কিছুই তো পেল না এখনও। আর আমরা এই ফার্স্ট ইয়ার-টিয়ারে কী কী সব করেছি ভাবো! আমারটাকে দেখো না, রোজ ঘ্যানঘ্যান করছে বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য!"
গোপার কথাগুলো শুনে কষ্ট হচ্ছিল সুনীতার। কিন্তু, কিচ্ছু করার নেই। আবাসনের মধ্যে বিয়ে, প্রায় একসাথে খেলে বড় হওয়া দিদির বিয়ে... তাও এলোই না। সেই নিয়েই তো আজ কত ঝগড়া - অশান্তি হল। কিন্তু মেয়ের একটাই কথা - "যাব না!"
শুধু এই বিয়েবাড়ি কেন... কোত্থাও যেতে চায় না। বাড়ির বাইরেই বেরোয় না! সারাদিন ইন্টারনেট নিয়ে বসে থাকে। কোনো বন্ধু নেই... কিচ্ছু না... শুধু ওদের কলেজ, মানে 'স্বর্ণরেখা বালিকা বিদ্যালয়ের' কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ আছে। তাদের সঙ্গে হা হা হি হি চলে। কিন্তু, বেরোতে চায় না কিছুতেই।
কথাটা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ 'খচ' করে উঠল মন
মেয়েটা... শুধু মেয়েদেরই পছন্দ করে, এমন না তো?
আজকাল তো এমন কতই হয়।
কিন্তু... ওঁদের বাড়িতে... সমাজ মেনে নেবে?
নভেম্বর মাস, গরম নেই এখন একেবারেই, তাও ঘেমে যাচ্ছিলেন সুনীতা। নিজের মনেই ঠিক করে নিলেন, মেয়ে যদি লেসবিয়ান হয়... মেয়েকে বোঝাবেন "লাভ ইজ লাভ" আর পাশে থাকবেন। এই যে বয়ঃসন্ধির সময়... এখনই তো নিজেকে চেনার, জানার সময়।
কিন্তু, মেয়েকে তো মনের কথা বলতে হবে মন খুলে!
বাড়ি ফিরে স্নান টান সেরে সোজা মেয়ের ঘরে গেলেন সুনীতা।
"বান্টি, আজ তুই পাতুরিটা যা মিস করলি না..." ইচ্ছে করেই প্রগলভ হলেন উনি।
"মা, আমার কিছু ভাল লাগে না।" একটু যেন ক্লান্ত স্বর বান্টির।
"কি ভাল লাগে না বান্টি?"
"কাউকেই, মা।"
"বান্টি, একটা কথা জিজ্ঞেস করছি, বন্ধুর মতো করে... তোর কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে? একটা সিঁড়িঙ্গেপানা ছেলেকে যেন দেখলাম বাড়ির সামনে দিয়ে ঘোরাঘুরি করতে!"
এতক্ষণে হাসল বান্টি।
"ধ্যাত! যত তোমার ভুল কথা!"
"আচ্ছা... তবে কোনো গার্লফ্রেন্ড?" হাসিমুখে, কিন্তু বুকে উৎকন্ঠা নিয়ে জিজ্ঞেস করেন সুনীতা।
একমুহূর্ত চুপ করে থাকে মেয়ে। তাকায় ওঁর দিকে।
তীক্ষ্ণ সে দৃষ্টি।
তারপর বলে "মা... আমার সব ছেলেদের ভয় লাগে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়... ঘামতে থাকি।"
"কিন্তু কেন? সোনা মা?"
"জানি না মা... আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি অনেক। আমার মেয়েদের বন্ধু হিসেবেই ভাল লাগে। আলাদা কোনো আকর্ষণ নেই। তাই আমি আরও বুঝতে পারছি না, কেন এমন হচ্ছে.."
বড্ড ভেঙে পড়া স্বর বান্টির।
জড়িয়ে ধরেন মেয়েকে সুনীতা।
'দিন আগেই ইন্টারনেট স্ক্রল করার ফাঁকে দেখেছিলেন পুরুষদের প্রতি একটি ভয় বা ফোবিয়া আছে, যার নাম 'অ্যান্ড্রোফোবিয়া' কখনও কোনো বিশেষ ঘটনা, পরিস্থিতি, বা ডি এন এর কোনো কারণেও ঘটতে পারে। এবং, সঠিক চিকিৎসা, ওষুধ এবং কাউন্সেলিং এর সাহায্যে ফোবিয়া আক্রান্ত মানুষটি ঠিক হয়ে যান।
বুক ভরে শ্বাস নেন সুনীতা।
সামনে অনেক লড়াই... তাও দিনের শেষে জয় হবেই।
ওই বলে না... "ডর কে আগে জিত হ্যায়!"
 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(08-01-2022, 08:24 AM)ddey333 Wrote: BC আমাকে বলে কিনা কাকা  !! Angry Angry

এবারের মতো মাপ করে দিলাম , এমনিতেই একজন ওকে দাদু বলে ডেকেছে বলে মুষড়ে পড়েছে বেচারা .... Tongue Big Grin

(08-01-2022, 11:38 AM)Bichitravirya Wrote: কি আর বলি বলুন ! কর্মের ফল পেতে হয়। সেটাই পচ্ছি হয়তো। আপনাদের কে মামা কাকা ডাকার ফল নিজেকে দাদু শুনতে হলো  Sad

পরস্পরের বয়সের মাপকাঠি যাই হোক না কেনো .. এই ফোরামে আমরা সকলে সকলের বন্ধুস্বরূপ। তাই সম্বোধনসূচক বিশেষণ (মামা, কাকা, জেঠু, দাদু) ব্যবহার করা অপ্রয়োজনীয়। 
তবে কাউকে রাগানোর জন্য মাঝেমধ্যে বলা যেতেই পারে  Big Grin
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
(08-01-2022, 12:13 PM)ddey333 Wrote: # ফোবিয়া 

 
আলো আসবে
"এই তোমার মেয়ে কোথায়?"
"মেয়ে আসেনি গো। "
"ওমা, সেকি! কেন?"
"ইয়ে... আসলে চারিদিকে কোভিড ছড়াচ্ছে তো, তাই এল না।"
"এখন তো অনেক কমে গেছে গো কোভিড....এমনিতেই তো এখন করোনা করোনা করে ওদের কলেজও বন্ধ। কলেজ লাইফ, মজা, কিছুই তো পেল না এখনও। আর আমরা এই ফার্স্ট ইয়ার-টিয়ারে কী কী সব করেছি ভাবো! আমারটাকে দেখো না, রোজ ঘ্যানঘ্যান করছে বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য!"
গোপার কথাগুলো শুনে কষ্ট হচ্ছিল সুনীতার। কিন্তু, কিচ্ছু করার নেই। আবাসনের মধ্যে বিয়ে, প্রায় একসাথে খেলে বড় হওয়া দিদির বিয়ে... তাও এলোই না। সেই নিয়েই তো আজ কত ঝগড়া - অশান্তি হল। কিন্তু মেয়ের একটাই কথা - "যাব না!"
শুধু এই বিয়েবাড়ি কেন... কোত্থাও যেতে চায় না। বাড়ির বাইরেই বেরোয় না! সারাদিন ইন্টারনেট নিয়ে বসে থাকে। কোনো বন্ধু নেই... কিচ্ছু না... শুধু ওদের কলেজ, মানে 'স্বর্ণরেখা বালিকা বিদ্যালয়ের' কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ আছে। তাদের সঙ্গে হা হা হি হি চলে। কিন্তু, বেরোতে চায় না কিছুতেই।
কথাটা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ 'খচ' করে উঠল মন
মেয়েটা... শুধু মেয়েদেরই পছন্দ করে, এমন না তো?
আজকাল তো এমন কতই হয়।
কিন্তু... ওঁদের বাড়িতে... সমাজ মেনে নেবে?
নভেম্বর মাস, গরম নেই এখন একেবারেই, তাও ঘেমে যাচ্ছিলেন সুনীতা। নিজের মনেই ঠিক করে নিলেন, মেয়ে যদি লেসবিয়ান হয়... মেয়েকে বোঝাবেন "লাভ ইজ লাভ" আর পাশে থাকবেন। এই যে বয়ঃসন্ধির সময়... এখনই তো নিজেকে চেনার, জানার সময়।
কিন্তু, মেয়েকে তো মনের কথা বলতে হবে মন খুলে!
বাড়ি ফিরে স্নান টান সেরে সোজা মেয়ের ঘরে গেলেন সুনীতা।
"বান্টি, আজ তুই পাতুরিটা যা মিস করলি না..." ইচ্ছে করেই প্রগলভ হলেন উনি।
"মা, আমার কিছু ভাল লাগে না।" একটু যেন ক্লান্ত স্বর বান্টির।
"কি ভাল লাগে না বান্টি?"
"কাউকেই, মা।"
"বান্টি, একটা কথা জিজ্ঞেস করছি, বন্ধুর মতো করে... তোর কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে? একটা সিঁড়িঙ্গেপানা ছেলেকে যেন দেখলাম বাড়ির সামনে দিয়ে ঘোরাঘুরি করতে!"
এতক্ষণে হাসল বান্টি।
"ধ্যাত! যত তোমার ভুল কথা!"
"আচ্ছা... তবে কোনো গার্লফ্রেন্ড?" হাসিমুখে, কিন্তু বুকে উৎকন্ঠা নিয়ে জিজ্ঞেস করেন সুনীতা।
একমুহূর্ত চুপ করে থাকে মেয়ে। তাকায় ওঁর দিকে।
তীক্ষ্ণ সে দৃষ্টি।
তারপর বলে "মা... আমার সব ছেলেদের ভয় লাগে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়... ঘামতে থাকি।"
"কিন্তু কেন? সোনা মা?"
"জানি না মা... আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি অনেক। আমার মেয়েদের বন্ধু হিসেবেই ভাল লাগে। আলাদা কোনো আকর্ষণ নেই। তাই আমি আরও বুঝতে পারছি না, কেন এমন হচ্ছে.."
বড্ড ভেঙে পড়া স্বর বান্টির।
জড়িয়ে ধরেন মেয়েকে সুনীতা।
'দিন আগেই ইন্টারনেট স্ক্রল করার ফাঁকে দেখেছিলেন পুরুষদের প্রতি একটি ভয় বা ফোবিয়া আছে, যার নাম 'অ্যান্ড্রোফোবিয়া' কখনও কোনো বিশেষ ঘটনা, পরিস্থিতি, বা ডি এন এর কোনো কারণেও ঘটতে পারে। এবং, সঠিক চিকিৎসা, ওষুধ এবং কাউন্সেলিং এর সাহায্যে ফোবিয়া আক্রান্ত মানুষটি ঠিক হয়ে যান।
বুক ভরে শ্বাস নেন সুনীতা।
সামনে অনেক লড়াই... তাও দিনের শেষে জয় হবেই।
ওই বলে না... "ডর কে আগে জিত হ্যায়!"
 


একদমই তাই .. এগিয়ে যেতে হবে  horseride
Like Reply
বিয়ের রাত, মাস্টারদা এসেছেন বিয়ে করতে। বিয়ের মন্ত্র পড়া হবে ,এমন সময় হঠাৎ পাশ থেকে একজন মাস্টারদার হাতে গুঁজে দিল একটু চিরকুট। চিরকুট পড়ে খুবই চিন্তিত ও গম্ভীর হয়ে গেলেন মাস্টারদা। গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ এসেছে কলকাতার দলের উচ্চমহল থেকে। ফুলশয্যার রাতে নির্জন কক্ষে সহধর্মিণী পুস্পকে বললেন " তোমার কাছে আমার অপরাধের সীমা নেই। তুমি আমার অগ্নি সাক্ষী করা স্ত্রী। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তুমিই আমার স্ত্রী থাকবে। দলের গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমার বাকি এসেছে।আজ ই তোমার কাছ থেকে আমাকে বিদায় নিতে হবে।" অশ্রুসিক্ত নয়নে মাস্টারদাকে বিদায়  দিয়েছিলেন নব বিবাহিতা স্ত্রী পুস্প। শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন মাস্টারদার চিঠি পাবে কিনা।                                         কথা রেখেছিলেন মাস্টারদা। চিঠি আসতো পুস্পর কাছে, খুব গোপনে।সে চিঠি শুরু হতো " স্নেহের পুস্প" দিয়ে আর শেষ হতো  " তোমার ই সূর্য " দিয়ে।                                                   আর দেখা হয়নি স্বামী স্ত্রীর? হয়েছিল,পুস্প যখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত, মৃত্যু পথযাত্রী, সূর্য তখন জেলে। প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য ছাড়া পেয়ে স্নেহের পূস্পকে দেখতে এসেছিলেন মাস্টারদা। কিন্তু তার আগেই জীবনদীপ নিভে গেছে পূস্পর।

২রা ফেব্রুয়ারী ১৯৩৩ ....
পলাতক সূর্য সেনকে গৈরালা গ্রামে নিয়ে এসেছেন বিপ্লবী ব্রজেন সেন । মাষ্টারদার সাথে রয়েছেন তার একান্ত অনুগত শান্তি, কল্পনা দত্ত,  সুশীল ও মণি দত্ত । তাঁরা ছিলেন গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে, পরম যত্নে আগলে রেখেছিলেন সে বাড়ির বড়বধূ ক্ষিরোদপ্রভা ।

বেশ ছিলেন কিন্ত বিপদ এলো অন্য দিক দিয়ে । প্রতিবেশী নেত্র সেনের সন্দেহ হলো কারা আছে বিশ্বাস বাড়িতে ? কিসের এত ফিসফাস গুঞ্জন । খবর লাগাতে বললেন নিজের গিন্নিকে ।
গ্রাম্য বধূটি সরল মনে এসে বললো ও বাড়িতে সূর্য সেন লুকিয়ে আছে গো ! অমন লোককে খাওয়ালেও যে পূণ্যি লাভ !
শুনে লাফ দিয়ে উঠলো নেত্র । খবর দিলেই যে কড়কড়ে দশ হাজার টাকা ! বউকে আশ্বস্ত করে
ব্যাগ হাতে তখনই বেরিয়ে পড়লো, সোজা উঠলো গিয়ে থানায় ।

সেদিন রাতে ঘুম ভাঙতে চমকে উঠলো ব্রজেন , জানলা দিয়ে লণ্ঠন দেখিয়ে কি করছে দাদা নেত্রীর সেন ? এক মিনিটও লাগলো না বুঝতে, ছুট লাগালেন বিশ্বাস বাড়ির দিকে । দেরী হয়ে গেছে ততক্ষনে, ক্যাপ্টেন ওয়ামসলের নেতৃত্বে গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেছে গোর্খা সেনার দল।রকেট বোমার আলোতে সবকিছু দিনের মতো স্পষ্ট ।
পরদিন সমস্ত সংবাদপত্রের হেডলাইন..... গৈরালা নামক গ্রামে সূর্য সেন গ্রেফতার । এনাকে ধরবার জন্য সরকার দশহাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়াছিলেন ।( অমৃতবাজার পত্রিকা ১৭.২.১৯৩৩)
তিনদিন পর.........
সন্ধে বেলায় জলখাবার খেতে বসেছে নেত্র সেন,পাশে স্ত্রী । দরজায় শব্দ হতে উঠে গিয়ে খুলে দিলেন। পাড়ারই চেনা ছেলে দেখা করতে এসেছে স্বামীর সঙ্গে । সবে উনি ভাবছেন সেখান থেকে সরে যাবেন কিনা, আচমকা পাড়ার সেই ছেলের হাতের ভোজালির কোপে স্বামীর মুণ্ডু ছিটকে পড়লো!

থরথর কাঁপছেন গ্রাম্য বধূ । ঘাতক যাওয়ার আগে বলে গেলেন, মাস্টার দার সঙ্গে বেইমানি করার উপযুক্ত শাস্তি ।
বৃটিশ পুলিশ কতবার কতভাবে জেরা করেছে সাধারণ আটপৌরে ঐ বধূটিকে। একবার তিনি বলুন স্বামীর ঘাতকের নাম। মুখ খোলেননি নেত্র সেনের বিধবা |
শুধু বলেছিলেন চোখের সামনে তিনি স্বামীকে লুটিয়ে পড়তে দেখে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত । স্বামী হারানোর যন্ত্রণায় এখন কষ্ট পাচ্ছেন, আর কিছুই বলার নেই। কিন্তু যে মানসিক যন্ত্রণায় তিনি সবথেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন তা হল এই জেনে যে তাঁর স্বামী নেত্র সেন একজন বিশ্বাসঘাতক, যিনি  পুলিশের পুরস্কারের লোভে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মাস্টার দার মতো ব্যক্তির সঙ্গে । তাই তাঁকে হত্যা করে ঠিকই করেছেন মাস্টার দার সহযোগী ঐ তরুণ। মেরে ফেললেও তিনি ওই বিপ্লবীর নাম ফাঁস করবেন না ।

হয়রানির বেশি আর কিছু নেত্র সেনের স্ত্রীকে করেনি ব্রিটিশ পুলিশ | ততদিনে তাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়ে গেছে | কারাগারে নির্মম অত্যাচার করা হচ্ছে মাস্টার দার উপরে |
অনেকদিন পর জানা গেছিল হত্যাকারী আর কেউ নয়, ..... .....সেন বংশের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল ঐ বাড়িরই ছোট ছেলে কিরন সেন । মাষ্টারদা মরার আগে জেনে গেছিলেন দেশদ্রোহীকে চরম দন্ড দিতে তাঁর মন্ত্রশিষ্যরা এতটুকু দয়া দেখায়নি ।
মুক্তির মন্দিরের সোপান তলে এরকম কত কিরণ নিঃশব্দে দিয়েছে বলিদান ......আমরা মনে রাখিনি।

বাঙালির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ  সেনাপতি মাস্টারদার জন্মদিনে আজ স্মরণ করি স্বাধীনতার সেই অনামী সেনানীকে,আর প্রণাম জানাই সেই গ্রাম্য বধুকে শত প্রলোভনেও যিনি উচ্চারণ করেননি তার বিশ্বাসঘাতক স্বামীর হত্যাকারীর নাম।
"তোমাকে ভুলে গেলে নিজেকে ভুলে যাওয়া।
তোমার বিপ্লব আজও উদিয়মান সূর্যের আলোর মতো।
যতোদিন এই পৃথিবীতে সূর্য উঠবে, ততোদিন তুমিও থাকবে মাস্টারদা সমগ্ৰ ভারতবাসীর অন্তরের অন্তঃস্থলে।"
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 22 Guest(s)