Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
28-12-2021, 09:52 AM
(This post was last modified: 28-12-2021, 10:05 AM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(28-12-2021, 09:43 AM)ambrox33 Wrote: বাবানদা, বুম্বাদা, আর বিচিত্রদা , তোমাদের তিন বন্ধুর জন্য আমার ছোট্র উপহার.
আমরা তিন বন্ধু ঘুরি, ফিরি, খাই
যখন যেখানে ইচ্ছে হয় তখন সেখানে যাই।
আমাদের ইচ্ছেটা নীল আকাশের মত
সাধন ছাড়া বাঁধন হারা বুকে আশা শত।
ইছে জাগে পাখির আগে উড়ে বেড়েই শূণ্যে
আমরা সবাই মরতে পারি একে অপরের জন্যে।
আমরা তিন বন্ধু থ্রি ইডিয়ট
শীতে পড়ি সেন্টু গেঞ্জি গরমে পড়ি কোট।
সারাসিন ঘুরি ফিরি করি শুধু হই চই
সন্ধে হলে খোজ পড়ে গেল কই গেল কই।
খুব ভালো লাগলো আমাদের নিয়ে লেখা তোমার এই কবিতা .. তবে আমরা ইডিয়েট হলেও কিন্তু বুদ্ধিতে মনে হয় খুব একটা খাটো নই .. আমাদের সৃষ্টিতেই তা স্পষ্ট।
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
কিছু কথা - বাবান
দিনগুলো কেটে যায় এক এক করে
কখনো আসে দুঃখ, আবার আসে হাসি ভোরে
এক এক করে পার হয় দিন মাস বছর
বাড়তে থাকে কাজ,দায়িত্ব, ভার মাথার ওপর
তবুও সেই দিনগুলো আজও মনে পড়ে
ঘুরতাম এদিক ওদিক বড়োদের পিঠে চড়ে
কখনো নদীর ধারে, কখনো জঙ্গলে
প্রজাপতি উড়ে বেড়াতো সেথায় দলে
পিঠ থেকে নেমে এলাম একদিন মোরা
হাঁটতে শিখলাম, শিখলাম কথা বলা
আজও পারি হাঁটতে বলতে যে কথা
তবুও আড়াল করি কত মনের ব্যাথা
থাক সে কথাগুলি গোপন বাক্সতে রাখা
নতুন বছর হোক খুশির ঘন রঙেতে মাখা
#baban
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
অসাধারণ লাগলো একেবারে বছরের শেষ দিনের এই লেখা .. অগ্রিম বছরের আগাম শুভেচ্ছা
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(31-12-2021, 09:16 PM)Bumba_1 Wrote: অসাধারণ লাগলো একেবারে বছরের শেষ দিনের এই লেখা .. অগ্রিম বছরের আগাম শুভেচ্ছা
ধন্যবাদ ❤❤
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
Happy New Year!!
Posts: 777
Threads: 0
Likes Received: 1,587 in 920 posts
Likes Given: 1,442
Joined: Jan 2021
Reputation:
187
(31-12-2021, 06:51 PM)Baban Wrote: কিছু কথা - বাবান
দিনগুলো কেটে যায় এক এক করে
কখনো আসে দুঃখ, আবার আসে হাসি ভোরে
এক এক করে পার হয় দিন মাস বছর
বাড়তে থাকে কাজ,দায়িত্ব, ভার মাথার ওপর
তবুও সেই দিনগুলো আজও মনে পড়ে
ঘুরতাম এদিক ওদিক বড়োদের পিঠে চড়ে
কখনো নদীর ধারে, কখনো জঙ্গলে
প্রজাপতি উড়ে বেড়াতো সেথায় দলে
পিঠ থেকে নেমে এলাম একদিন মোরা
হাঁটতে শিখলাম, শিখলাম কথা বলা
আজও পারি হাঁটতে বলতে যে কথা
তবুও আড়াল করি কত মনের ব্যাথা
থাক সে কথাগুলি গোপন বাক্সতে রাখা
নতুন বছর হোক খুশির ঘন রঙেতে মাখা
#baban
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলোনা
সেই যে আমার নানারঙের দিনগুলি..........
নতুন 2022 বছরের শুভেচ্ছা আপনাকেও
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
কিছু গল্প লিখে নিজের এমন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় যা ব্যাখ্যা করা যায়না. নন- ইরোটিক যে কটা লিখেছি তার মধ্যে কয়েকটা আজও যেন গেঁথে গেছে বুকে... লেখক ও পাঠক দুই দিক থেকেই সেগুলো আলাদা ইমোশান আজ. ঠিক তেমনই এই নতুন লেখার সাথে হলো.... লিখতে লিখতে যেন অন্য কোথাও হারিয়ে গেছিলাম. আপনারাও হয়তো পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবেন.
আসছে আমার নতুন ছোট গল্প - কাগজের নৌকো... কাল দুপুরে.
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
(01-01-2022, 09:57 PM)Baban Wrote: কিছু গল্প লিখে নিজের এমন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয় যা ব্যাখ্যা করা যায়না. নন- ইরোটিক যে কটা লিখেছি তার মধ্যে কয়েকটা আজও যেন গেঁথে গেছে বুকে... লেখক ও পাঠক দুই দিক থেকেই সেগুলো আলাদা ইমোশান আজ. ঠিক তেমনই এই নতুন লেখার সাথে হলো.... লিখতে লিখতে যেন অন্য কোথাও হারিয়ে গেছিলাম. আপনারাও হয়তো পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবেন.
আসছে আমার নতুন ছোট গল্প - কাগজের নৌকো... কাল দুপুরে.
থাকবো অপেক্ষায়
•
Posts: 1,242
Threads: 2
Likes Received: 2,215 in 1,012 posts
Likes Given: 1,615
Joined: Jul 2021
Reputation:
654
দারুন খবর তার মানে একদিনে ডাবল ধামাকা
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
02-01-2022, 02:18 PM
গল্প - কাগজের নৌকো
লেখক- বাবান
স্রোতের টানে ভেসে চলা কাগজের নৌকোটা ভেসে যেতে দেখে সমরেশ নিজের মনেই হেসে ফেললো. বৃষ্টির জলে ভিজতে থাকা বাচ্চা দুটো যেন জলের বিন্দুগুলোর পরোয়া না করে একের পর এক নৌকো ছেড়ে চলেছে. ভাসমান ভিজে নৌকোগুলো যেন হাতের বন্ধন মুক্ত হয়ে নিজস্ব গতিতে নির্দিষ্ট লক্ষে এগিয়ে চলেছে. যেন কোন প্রাচীন গ্রামে গিয়ে নিজের গতি মন্থর করবে সেগুলো.
- এই.... ঐটা আমায় দে.. ওটা আমি ছাড়বো.. দে না
দুই বাচ্চার একজন সেই লালঝুটি বাঁধা বাচ্চা মেয়েটি বড়ো কাগজের নৌকার দিকে দেখিয়ে বললো. কিন্তু ছেলেটি বললো - না... ওটা আমি ছাড়বো... কত কষ্ট করে বানিয়েছি জানিস... মায়ের বকা খেয়েছি বাবার খবরের কাগজে হাত দিয়েছিলাম বলে.
হাসি পেলো সমরেশের. অতীত বড্ড মায়া জড়ানো. এক অদ্ভুত আকর্ষণ আর গন্ধ বয়ে নিয়ে চলে. যা বর্ণহীন, যা ব্যাখ্যা করা যায়না, যা অদৃশ্য কিন্তু তাও এক অজানা স্নিগ্ধ স্পর্শ মাখা যেন সেই স্মৃতির রূপের ছোঁয়া. অতীত হয়তো কখনো নিষ্পাপ হাসির ঝলক, আবার হয়তো তিক্ততার ক্রমবর্ধমান স্বাদে মাখা গরল. যা পান করাই লেখা ছিল জন্ম পূর্বেই. অলীক কাগজে টিপ সই দিয়ে তবেই ছোট্ট হয়ে এক নারীর গর্ভে আশ্রয় নেওয়া আর একদিন সেই আশ্রয়দাতাকে ভুলে নিজস্ব স্বার্থ লাভ ও ভোগের পথে গমন.
- দে না সোমু... ওটা আমায়.... দেনা.... কি সুন্দর ওটা.... তোকে কালকে লঙ্কার আচার খাওয়াবো.. ঠাম্মি বানিয়েছে.. কাল নিয়ে আসবো.
- তাই! উফফফ দারুন! এই ঠিক তো? কাল আনবি তো? না আনলে কিন্তু খুব খারাপ হবে.. কথাই বলবোনা তোর সাথে
- বলছি তো আনবো... এবার দে ওটা....
এক হাত আরেক হাতে তুলে দিলো কাগজের নৌকাটা. এও এক দেওয়া নেওয়া, এও এক চুক্তি. ঠিক যেমন আজও কাগজে কাগজে কত চুক্তির প্রমান লুকিয়ে বিশ্বে. কিন্তু টাই কোট আর দামি চশমা ঘড়ি পড়া হাতে কাগজের আদান প্রদান বিনিময়ের থেকে এই কচি হাত গুলোর বিনিময় যেন অনেক শান্তির, অনেক সুখের, অনেক মহৎ. স্বার্থ এখানেও হয়তো আছে তবে তা যেন খিদের নয়...... আনন্দের. ইচ্ছাপূরণ আর হাতে ওই নৌকো দেখে বাচ্চা মেয়েটির মুখে ফুটে ওঠা হাসি ততটাই পবিত্র যতটা ওই কানাইয়ের মুখে দেখতে পাচ্ছি. ঐযে বাঁশি হাতে রাখাল ছেলেটা স্থির দাঁড়িয়ে মন্দিরের ভেতর.
- মা আমায় বকবে জানিস.... কলেজ থেকে বাড়ি পৌঁছে যাবার কথা অনেক আগে.. কিন্তু দেখ এখানে দাঁড়িয়ে তোর সাথে নৌকো নিয়ে খেলছি.
- আরে তুই কি বোকা রে সোমু... কাকিমা কিচ্ছুটি বলবে না তোকে.. দেখছিস না কি বৃষ্টি হচ্ছে.....কাকিমাকে বলিস বৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম কলেজের মধ্যেই.
- এই হিহিহিহি... তুই আমাকে মিথ্যে বলতে শেখাচ্ছিস? তুই জানিস বাবা মাকে মিথ্যে বলতে নেই?
- ও! আমি মিথ্যে বলতে শেখাচ্ছি? তাহলে যে সেইবার ভোলা, উত্তম, রিন্টুদের সাথে খেলার সময় কলেজের জামা নোংরা মাখিয়ে ফিরলি আর নিজের মাকে বলেছিলি ধাক্কা লেগে কাদায় পড়ে গেছিলি.. ওটা কি তোকে আমি শিখিয়ে দিয়েছিলাম? হুমমম?
- হিহিহিহি.
বাচ্চা মেয়েটির প্রশ্নবানে ছেলেটার নির্দোষ হাসির সাথে সমরেশও বাচ্চাটার মতো হেসে উঠলো. দুই হাসি মিলে গেলো তাই বোধহয় মেয়েটি অন্য হাসি শুনতে পেলোনা. এরাও এক মিথ্যে নিয়ে আলোচনা করছে... সমরেশও এক মিথ্যে বয়ে নিয়ে এসেছে বহুদিন. মিথ্যে বড়ো নিষ্ঠুর কিন্তু দারুন উত্তেজক. এক আলাদাই নেশায় মুহূর্তে ডুবে যায় মিথ্যেবাদী মানুষ. সম্মুখে মানুষটিকে সত্যের থেকে আড়াল করায় এক তীক্ষ্ণ ও তীব্র উত্তেজনা লুকিয়ে. সত্য ও মিথ্যের লড়াইয়ের থেকে বৃহৎ লড়াই আর কিছু আছে নাকি? সমাজের মধ্যে বসবাসকারী জীব যাদের মানুষ বলে কারণ তাদের নাকি মান আর হুঁশ দুই থাকে সেই মানুষ এর প্রিয় খেলা যেন এই মিথ্যে. নিজের কাছে,অন্যের কাছে, প্রয়োজনে সকলের কাছে নিজের চরিত্র, আসল দানবীয় রূপটা লুকিয়ে মুখোশ টুকু দেখিয়ে কার্যসিদ্ধিই একমাত্র লক্ষ. তার থেকে সমরেশও আলাদা নয়.... সেই খেলা থেকে নয় সেও বঞ্চিত আজ.
- আহ্হ্হঃ জ্বালিও নাতো... কাজ আছে সকালে.... ঘুমোতে দাও... আর নিজের এই সন্দেহ বাতিকটা পাল্টাও সুমি...... এটা তোমারই ক্ষতি করছে. সমরেশ ওপাশে ফিরে শোবার আগে বলেছিলো ত্রিধাকে. শুধু চুড়ি পড়া হাতের রুনঝুন আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলো কিছুক্ষন. জোজোকে ঘুম পড়াচ্ছে সে... ব্যাস আর কিছু মনে নেই সমরেশের. মনে রাখতে চায়না সে যে. মনে স্থান দিতেও চায়না ঐসব প্রশ্নবানের. স্ত্রী কর্তব্য পালনে ফুল মার্ক্স পাওয়া নারীর প্রশ্নের জবাব সে দিতে পারবেনা... সে অক্ষম, সে নিরুপায়, সে বিফল.
- এই দেখ দেখ সোমু....ঐটা কেমন দুলছে... এই পড়ে যাবে না তো.... ঠিক মতো বানাসনি নাকি রে.. কিভাবে দুলছে
- কি হাদারাম রে তুই? আরে ওটা বৃষ্টির জন্য অমন দুলছে.... দেখছিস না কি বেগ বাড়লো... ওটার ভেতরও জল ভোরে গেছে.. তাই অমন এদিক ওদিক দুলছে.. বুঝলি বুদ্ধু? সোমু কোনোদিন ভুল নৌকা বানাতেই পারেনা.... হুহু বাবা
- হিহিহি... এই যে মহান সোমু বাবু... ঐদিকে দেখুন.. আপনার বিরাট নৌকো যে দুলতে দুলতে... ধপাস হয়ে গেলো.. হিহিহি..... সোমু বাবু আবার নাকি ভুল নৌকা বানাতেই জানেনা.... হিহিহিহি ঠিক হয়েছে
- ও.... ওটা.. ওটা বললাম না বৃষ্টির জন্য অমন হলো.. আর তুই নিশ্চই ঠিক করে ছাড়িসনি..... ওই জন্যই বললাম আমি ছাড়ছি.... আমি ছাড়লে দেখ্তিস কতদূর যেত....
এক্সকিউস... দারুন জিনিস কিন্তু এটা.. অক্ষমতা ঢাকতে সবাই এটার আশ্রয় নিতে এক মুহুর্ত অপেক্ষা করেনা কেউ. নিজের সাফল্য নিজের গর্ব, নিজের হেরে যাওয়াটা লজ্জার, নিজের অক্ষমতা আরও লজ্জার. কেন? কিসের লজ্জা? উত্তর জানেনা কেউ. দুই আপন হলেও একজন খুব পর... যেন অচ্ছুৎ. সেই মানুসিকতা যেন মানব নিয়মেই জন্মদিন নেয় দেহে আর শেষ পর্যন্ত বিরাজমান থাকে. কেউ হারতে চায়না... কেন চায়না? কে জানে? হয়তো 'হেরো হেরো' ডাকটা শুনতে অক্ষম দুই কান আর মন. আর তাও যদি জোর জোরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তবে নিজস্ব অস্তিত্ব অসহ্য হয়ে ওঠে যেন নিজের কাছে. মাংস ভেদ করে ভেতরের কঙ্কাল বলে ওঠে - নানানানা! কিচ্ছুতেই হারতে পারিনা আমি, আমি মানব... আমি সেরা! আমিই সেরা!
- বললেই হলো? ওই দেখ আমি আগের নৌকো গুলো কি সুন্দর ছেড়েছি.... ওই দেখ কি সুন্দর কতদূর ভেসে গেছে ওগুলো.... তোর বানানোতেই ভুল ছিল... আর দোষ সব আমার না?
সমরেশ দেখলো সেদিকে. সত্যিই তো! ছোট্ট মেয়েটির হাতে বানানো আর ছাড়া অন্য নৌকো গুলো কি সুন্দর নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে অলীক লক্ষে. এই বৃষ্টির প্রতি বিন্দুর ক্রমশ আক্রমণেও তারা হার মানতে নারাজ. কিন্তু ওই সবচেয়ে বড়ো সুন্দর নৌকাটা প্রায় দুবন্ত হয়ে তলিয়ে যাচ্ছে যেন. এখনো দৃশ্যমান... কিন্তু কতক্ষন আর?
ঠিক এইভাবেই নিজের..... হ্যা নিজের একান্ত সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি আর সংসার গড়ে তুলেছিল না সমরেশ? আর তার মতো মানব সমাজ এর অন্তর্গত প্রতিটা মানব. ওই বাচ্চা ছেলেটার মতোই. সমরেশ পাশে পেয়েছিলো আরও দুটো হাত তার নৌকো বানানোর সহযোগী হিসেবে. এক এক করে একটার পর একটা সফল নৌকো বানিয়েছিল চার হাত. আজও বাকি দুই হাত নিজের নৌকো বানিয়েছে চলেছে, তবে সেই নৌকো বানানোর নিয়ম আরও কঠিন, প্রতিটা পদক্ষেপ নিতে হয় সামলে নইলে নৌকাল যে জলে ভাসবে না, এই নৌকো যে খুব দামি... এই নৌকা বানাতে যে ওই হাত দুটোর অধিকারিণী কে ভয়ানক যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়েছিল একদা, সেই নৌকো একমাত্র সুখের কারণ, মুখে হাসি ফোটাবার কারণ ওই দুই হাতের মালকিনের কাছে. কারণ ওপর দুই হাতের ভুলে বেশ কিছু নৌকো যে ঠিক ওই নৌকোটার মতোই দয়াবে গেছে জলে. নানা.......তাতে অবশ্য কাগজের টুকরোগুলো ফুরিয়ে যায়নি. অনেক আছে কাগজ... তা দিয়ে অনেক নৌকা বানাতে পারে পুরুষ হাত জোড়া. কিন্তু সেই নৌকা যে একটাও বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবেনা. স্রোতের মাঝে, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারবেনা. তাই প্রয়োজন বাকি দুটো হাতের... কিন্তু নিজের ভুলেই যে সমরেশ হারিয়েছে ওই স্ত্রী হাত.
- এইতো এইটা দেখ..... কি সুন্দর এগিয়ে যাচ্ছে দেখ...এটা আমি কালকে বানিয়েছিলাম.... দেখছিস কেমন সুন্দর এগিয়ে যাচ্ছে... সমুর বানানো নৌকো ওতো সহজে ডুবেনা বুঝলি বুদ্ধু? নিজে ভুলভাল ছাড়বি আর দোষ দিবি আমার বানানোর ওপর? নিজে পারেনা কিছু.. আমায় বলছে হুহ.
- আহ্হ্হঃ ত্রিধা!! কেন জ্বালাতন করছো? বলছিতো ও জাস্ট আমার ভালো বন্ধু.... তোমরা মেয়েরা এতো জেলাস কেন গো? ওর সঙ্গে ফটো তুলেছি তো কি হয়েছে? তুমি ভুল বুঝবে তাই তোমায় দেখায়নি.... নইলে তো এমন বিহেব করতেই..... তোমার কাছ থেকে এটা আশা করিনি ত্রিধা.... দেখো নিজেকে... আজকের নারী তুমি... এসব আলতুফালতু ব্যাপারে প্রশ্ন করা বন্ধ করো. আজকে কোথায় প্রায়ুড ফিল করবে হাসবেন্ড এতো দূর একা এগিয়েছে, নিজের যোগ্যতায়... আর তুমি কিনা ফালতু কি না কি দেখে... যত্তসব জোজো কে নিয়ে আছো.... থাকোনা... আমার ব্যাপারে নজর দিওনা... যাও যাও ছেলেকে খেতে দাও... কাঁদছে ও.
ছোট্ট মেয়েটার মতোই ত্রিধাও যেন তাকিয়েছিল সম্মুখে দাঁড়ানো ছেলেটার দিকে, পুরুষটার দিকে. ছোট্ট মেয়েটা হয়তো কিছু মুহূর্তের মধ্যেই সব ঝেড়ে ফেলতে পেরেছিলো, ত্রিধা পারেনি. স্বামীর পিঠের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে নিজের ছেলের কাছে ফিরে গেছিলো. তার কান্না থামাতে..... কিন্তু সেই স্বামী কি লক্ষ করেছিল যে সন্তানের মায়ের চোখও ঝাপসা ছিল সেদিন? হয়তো হ্যা, হয়তো না... কিন্তু সেদিন সরাসরি ওই নারীর চোখে তাকাতে অক্ষম ছিল সমরেশ. হয়তো ছোট্ট দুটো হাত যখন কোলে ওঠার বায়না করছিলো তখনো ওই হালকা শরীরটা তুলতে অক্ষম ছিল পুরুষটি. যেন ওই নিষ্পাপ ছোট্ট দেহের অনেক ওজন.... তাকে তুলতে গেলে যেন নিজেকেই মাটিতে মিশে যেতে হবে.
- উফফফ ভেবেছিলাম বৃষ্টিটা থেমে যাবে... ধুর পুরো ভিজে কাক হচ্ছি... এই জ্বর হবে নাতো রে? সে হলে হোক গে......এই তিন্নি? এবারের পিকনিকে কিন্তু আমরা একসাথে ঘুরতে যাবো.... কাম্মিকে বলে দিবি আমরা মানে বাবা মা , কাকু কাকিমা ঠাম্মি তুই আর আমি দারুন মজা হবে.....
সমরেশও তো ছোটবেলায় বন্ধুর সাথে গেছিলো পিকনিকে... মনে পড়ে গেলো ওর. বড়োরা সবাই গাছের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আর সে নিজের বন্ধুর সাথে একটু দূরেই খেলছিল আর বলছিলো... ধর.. ধর.. আমায় ধরতে পারেনা... আমায় ধরতে পারেনা... তুই পারবোনা রে... আর এই বলতে বলতে কেরামতি দেখাতে গিয়ে বাবাজীবন নিজেই হোঁচট খেয়ে চিৎপটাং. বাবা মা কাকু কাকিমারা এগিয়ে এসেছিলেন দৌড়ে তবে সবার আগে কিন্তু সেই ধরতে না পারা মানুষটার হাতই এগিয়ে এসেছিলো সমরেশের দিকে, হাতে হাত নিয়ে ভবিষ্যতের পুরুষকে তুলে দাঁড় করিয়েছিলো সেই বাচ্চা মেয়েটির হাত. পুরুষ কে নাকি কাঁদতে নেই? তবে সমরশের চোখে সেদিন একটু জল এসেছিলো. না....... লুকোয়নি সেদিন সে সেই অশ্রু. বোধহয় তখনো পুরুষ হয়ে ওঠেনি বলেই মনের ব্যাথা মুখে প্রকাশ পেয়েছিলো. কিন্তু আজ যে সেই অশ্রু নিজেকেও দেখায়না সে. একটা নকল সমাজের উপযুক্ত মুখোশ পড়ে থাকে সে. ঘুমের মধ্যে মাঝে মাঝে অবশ্য একটা ছোট্ট বাচ্চাকে দেখতে পায় সে.... এক ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে সমরেশের দিকে. খুব চেনা এই বাচ্চাটা... কিন্তু কেন যেন চিনতে পারেনা সমরেশ. কবে যেন ত্রিধার সাথে বসে এই বাচ্চাটাকে কোনো এক এলবামে দেখেছিলো সে. সাদাকালো ছবিটা, কিন্তু হাসিটা কত রঙিন ছিল. জোজোর মুখেও মাঝে মাঝে ওই হাসিটা ফুটে ওঠে.
আচ্ছা? যৌবন কি? কি তার অর্থ? কি তার কর্তব্য? বিশ্বাস কাকে বলে? জানে কি সমরেশ? জানে কি সমরেশের মতো শিক্ষিত জ্ঞানী সফল ব্যাক্তিত্ব অর্জনকারী মানুষেরা? সত্যিই কি জানতে আছে ওসব? নাকি শুধু সংজ্ঞার সামান্য অংশটুকু পড়ে এসেছে এতদিন? হয়তোবা পড়েছে পুরোটাই... কিন্তু নিজের স্বার্থে নিজের মতন ভেঙে চুরে ছোট করে নিয়েছে সংজ্ঞা গুলো. কর্তব্য পালন করতে করতে সমাজের একজন প্রমান করতে করতে কবে যেন সমরেশ ও সমজাতির জীবন্ত শক্তিগুলো সততার পতাকা ছিঁড়ে এক কালো পতাকা উত্তোলন করেছে প্রতি স্থানে. বুকে হাত রেখে জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে বলে....... তবে সত্যিই কি মন থেকে বিশ্বাস করে ভারত ভাগ্য বিধাতা? নাকি আবারো মুখোশ এর কেরামতি?
- এটা দেখ...... আমার যে রঙিন কাগজ গুলো ছিল সেগুলো দিয়ে এই কটা বানিয়েছি. এই দেখ... লালটা তুই ছাড় আর নীল টা আমি... একসাথে ছাড়ি চল.. দেখি কোনটা আগে ওই পচা কলাপাতাটার কাছে যায়. চল.. এক.. দুই... তিন...
আশ্চর্য!! এই বাচ্চাগুলো একটু আগেও কে সেরা আর কে নির্ভুল নিয়ে কথা কাটাকাটি করছিলো... কিন্তু এখন দেখো...... আবারো একসাথে জলে নৌকা ছাড়ছে! এদের ভেতরে কি আছে? জানতে বড্ড ইচ্ছা জাগে সমরেশের. কিন্তু সত্যিই কি এদের ভেতরের আত্মার সম্মুখীন হবার যোগ্যতা আছে এই শিক্ষিত সমাজে খ্যাত সফল পুরুষের? জোজো যখন বাবাব্বা বাবাব্বা করে দু হাত বাড়িয়ে দেয় তখন কেমন যেন করে উঠে ভেতরটা..... নিজের গোপন খেলা গুলোর জন্য একটা সামান্য শিশুর সামনে অনুতপ্ত হতে হয় তাকে. নিষ্পাপ ওই শিশুর মাথায় হাত বোলাতে গেলেও ভাবতে হয় পিতাকে... স্পর্শ করবে সে ওই হাত দিয়ে সন্তানকে যে হাত দিয়ে সমাজের একজন হতে বর্তমান শক্তিকে দুহাতে গ্রহণ করেছে সে, শক্তি উপাসকদের একজন হয়ে বিশেষ কাউকে কাউকে নিয়ে সময় কাটিয়েছে, অনুভব করেছে ওই শরীর এই হাতেই.... সেই হাত দিয়ে কি ছোঁবে নিজের শিশুকে?
তবুও ছুঁয়েছে... ছ্যাকা খেয়েছে.... তাও কোলে তুলেছে নিজের অংশকে. আশ্চর্য..... তারই তো সৃষ্টির প্রমান এই শিশু.... তাহলে? কেন এই ছ্যাকা? দুটো ছোট্ট ছোট্ট হাত যখন বাবার গাল, নাক, চোখ কপাল হাতে স্পর্শ করে অবাক চোখে দেখেছে তখন প্রতিবার সেই পুরুষের পৌরুষে লাথি মেরেছে অদৃশ্য কেউ. অবাক চোখে সন্তান দেখেছে পিতার ভেজা চোখ কিন্তু........ ছেলেদের নাকি কাঁদতে নেই? জামার হাতায় মুছেছে চোখ, আবারো সব ভোলার চেষ্টা, আবারো পিতার দায়িত্ব পালন, আবারো ফোনে কথা, আবারো হারিয়ে যাওয়া সমাজের একজন হয়ে থাকার অস্তিত্ব বজয়ের যুদ্ধে. আবারো যুদ্ধ জয়ের আনন্দ, আবারো জয়ের উৎসব, সুরাপন, রাজা রানীর খেলা...... আবারো সব বর্তমানকে লুকোনো সিন্দুকের মধ্যে রেখে নতুন বর্তমান সৃষ্টি করে ফিরেছে গৃহে. আবারো সম্মুখীন হতে হয়েছে স্ত্রীয়ের, সন্তানের. আবারো ছেলের আহ্বান হাত বাড়িয়েও পিছিয়ে নিয়েছে হাত.
অবশ্য একদিন ওই লুকোনো সিন্দুকের খোঁজ পেয়ে গেছিলো সন্তান জননী. তারপরে সমরেশ যতই দৃঢ়তা দেখিয়েছে ততই ছোট হয়েছে ওর পায়ের নিচের ছায়া. ছোট হয়েছে সেই পুরুষ,ছোট হয়েছে তার শ্রেষ্ঠ হবার অহংকার. লেগেছে তীব্র ধাক্কা... চলে গেছে সেই সঙ্গিনী তাকে ছেড়ে... সাথে নিয়ে দুজনের শ্রেষ্ঠ নৌকটা. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সফলতা, শ্রেষ্ট উপহারটা আর নেই সমরেশের ঘরে. আজ সে একা. নিঃশ্ব...... না অর্থের দিক থেকে নয়, তা আছে অনেক তার কাছে, আছে মান যশ খ্যাতি একেবারে আগের মতোই. না... হয়তো আরও বেড়েছে তা. কিন্তু তাও সে ভিক্ষুক আজ. দুটো হাত বাড়িয়ে ভিক্ষা চায় সে আজ..... সেই সঙ্গীনির হাত দুটো ছুঁতে চায় সে, চায় ধরতে ওই ছোট্ট হাত দুটো. শুনতে চায় বাব্বাব্বা ডাক... কিন্তু আজ যে সেই দুজন তার থেকে দূরে. তারই ভুলে... তারই মুখোশ মুখোশ খেলার প্রতিফলন রূপে.
আজ হটাৎ এতদিন পর হটাৎ মনে পড়লো সমরেশের দুটো বাচ্চাকে... আর অমনি বৃষ্টি নামলো আকাশ থেকে. সমরেশ এ কোথায় দাঁড়িয়ে? এটা ওর ছোটবেলার কলেজের রাস্তাটা না? ঐতো রাখাল ছেলের মন্দির. মা বলেছিলো ওর নাম নাকি কানাই. বাবা বলেছিলো গোবিন্দ, দাদু বলতো ও আমাদের নন্দলাল. সমরেশ ওই রাস্তা ধরে দু পা এগোতেই দেখতে পেয়েছিলো এই বাচ্চা দুটোকে. বৃষ্টির তোয়াক্কা না করে পুকুরটাতে নৌকা ছাড়ছে. দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটাই দেখছে সমরেশ ওদের. চোখের কোনায় কি জল? নাকি বৃষ্টির ঝাপ্টা?
সমুর সাথে নৌকা নিয়ে খেলতে খেলতে সামনে তাকালো বাচ্চা মেয়েটা. হাসি ফুটে উঠলো ওর. হাত নেড়ে কাকে ডাকছে বাচ্চাটা? সমরেশ এদিক ওদিক তাকালো... না আর কেউ তো নেই... তাহলে কি ওকেই? বাচ্চাটা হটাৎ কি একটা নিয়ে দৌড়ে এলো ওর কাছে.... কি মিষ্টি দেখতে.. একদম সেই.... না থাক... সে তো আজ আর তার সাথে নেই... চলে গেছে ছেড়ে.
বাচ্চা মেয়েটা এগিয়ে এসে দাঁড়ালো সমরেশের সামনে. শুধু হাসি মাখা মুখে তাকিয়ে ওর দিকে. সমাজের সফল প্রমাণিত সমরেশ সবকিছু ভুলে ওই ধুলো মাখা রাস্তাতেই হাটু মুড়ে বসলো মেয়েটার সামনে. বাচ্চা মেয়েটা আরেকটু এগিয়ে এসে নিজের ছোট্ট হাত দিয়ে সমরেশের চোখের জল মুছিয়ে দিলো. তারপরে হাতে নিয়ে আসা জিনিসটা দিলো সমরেশের হাতে. ও দেখলো একটা কাগজের নৌকো. সামনে তাকালো সমরেশ. বাচ্চাটা দৌড়ে চলে যাচ্ছে বন্ধুর কাছে. ঐভাবেই বসে সমরেশ. হাতে ধরা একটা নৌকো তার. আজ যে জন্মদিন তার... এটাই কি তাহলে ওর উপহার.
দরজায় কলিং বেল বাজলো. নৌকো হাতে এগিয়ে গেলো সে দরজা খুলতে. দরজা খুলতেই আরও কান্নায় চোখ ভোরে গেলো তার. কিছু ভালো মতো দেখতে পাচ্ছেনা সমরেশ. দুটো বাচ্চা দাঁড়িয়ে কি ওপারে? মনে হলো যেন সেই বাচ্চা মেয়েটা আর তার হাত ধরে আরও ছোট একটা শিশু.
ভাসতে ভাসতে চলেছে ওরা
জানেনা ঠিকানা কোনো
জীবন জোয়ারে জন্ম ওদের
স্রোতে ভাসার জন্য
লড়তে লড়তে ভুলেই গেলো
হাঁটি হাঁটি পা পা
আজকে ওদের সকিছুই
দাঁড়িপল্লায় মাপা
তবুও আজও আছে বেঁচে
একটি করে কাগজ
হাতের জাদুতে রূপ বদলে
নৌকো গড়া সহজ
|| সমাপ্ত ||
Posts: 4,428
Threads: 6
Likes Received: 9,218 in 2,849 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,225
মুছে যাওয়া দিনগুলি .. অসাধারণ .. আর কি বলবো ভাই .. বলার কিছু ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না .. সবশেষে কবিগুরুর লেখা কয়েক লাইন তোমার এই গল্পের জন্য ..
ছুটি হলে রোজ ভাসাই জলে
কাগজ-নৌকাখানি।
লিখে রাখি তাতে আপনার নাম,
লিখি আমাদের বাড়ি কোন গ্রাম
বড়ো বড়ো ক’রে মোটা অক্ষরে
যতনে লাইন টানি।
যদি সে নৌকা আর-কোনো দেশে
আর-কারো হাতে পড়ে গিয়ে শেষে
আমার লিখন পড়িয়া তখন
বুঝিবে সে অনুমানি
কার কাছ হতে ভেসে এল স্রোতে
কাগজ-নৌকাখানি ।।
আমার নৌকা সাজাই যতনে
শিউলি বকুলে ভরি।
বাড়ির বাগানে গাছের তলায়
ছেয়ে থাকে ফুল সকাল বেলায়,
শিশিরের জল করে ঝলমল্
প্রভাতের আলো পড়ি।
সেই কুসুমের অতি ছোটো বোঝা
কোন্ দিক-পানে চলে যায় সোজা,
বেলাশেষে যদি পার হয়ে নদী
ঠেকে কোনোখানে যেয়ে –
প্রভাতের ফুল সাঁঝে পাবে কূল
কাগজের তরী বেয়ে ।।
আমার নৌকা ভাসাইয়া জলে
চেয়ে থাকি বসি তীরে।
ছোটো ছোটো ঢেউ উঠে আর পড়ে,
রবির কিরণে ঝিকিমিকি করে,
আকাশেতে পাখি চলে যায় ডাকি,
বায়ু বহে ধীরে ধীরে ।
গগনের তলে মেঘ ভাসে কত
আমারি সে ছোটো নৌকার মতো –
কে ভাসালে তায়, কোথা ভেসে যায়,
কোন দেশে গিয়ে লাগে।
ঐ মেঘ আর তরণী আমার
কে যাবে কাহার আগে ।।
বেলা হলে শেষে বাড়ি থেকে এসে
নিয়ে যায় মোরে টানি
আমি ঘরে ফিরি, থাকি কোনে মিশি,
যেথা কাটে দিন সেথা কাটে নিশি,
কোথা কোন্ গাঁয় ভেসে চলে যায়
আমার নৌকাখানি ।
কোন্ পথে যাবে কিছু নাই জানা,
কেহ তারে কভু নাহি করে মানা,
ধ’রে নাহি রাখে, ফিরে নাহি ডাকে –
ধায় নব নব দেশে।
কাগজের তরী, তারি ‘পরে চড়ি
মন যায় ভেসে ভেসে ।।
রাত হয়ে আসে, শুই বিছানায়,
মুখ ঢাকি দুই হাতে –
চোখ বুঁজে ভাবি এমন আঁধার,
কালী দিয়ে ঢালা নদীর দুধার –
তারি মাঝখানে কোথায় কে জানে
নৌকা চলেছে রাতে।
আকাশের তারা মিটি মিটি করে,
শিয়াল ডাকিছে প্রহরে প্রহরে,
তরীখানি বুঝি ঘর খুঁজি খুঁজি
তীরে তীরে ফিরে ভাসি।
ঘুম লয়ে সাথে চড়েছে তাহাতে
[b]ঘুম-পাড়ানিয়া মাসি ।।[/b]
Posts: 777
Threads: 0
Likes Received: 1,587 in 920 posts
Likes Given: 1,442
Joined: Jan 2021
Reputation:
187
"অতীত বড্ড মায়া জড়ানো"
হ্যাঁ সেইসাথে nostalgic এবং নিষ্ঠূর। কারণ অতীতের স্মৃতি এমনভাবে হুঁল ফুটায় মনের ভেতরে যে বর্তমান সময়কে অনেক অনেক ভয়াবহ মনে হয়। মনে হয় যে কেনই বা বড় হলাম? সেই তো ভালো ছিলাম তথ্য প্রযুক্তিহীন এক দুনিয়ায় যখন গায়ে লাগতো তাজা বিশুদ্ধ বাতাস, সামান্য একটু গান শুনে কিংবা টিভিতে কার্টুন দেখে সিনেমা দেখেই সন্তুষ্ট থাকতাম। আজ সারা পৃথিবী পকেটের ভেতরে ছোট্ট একটা ফোনে, কিন্তু শান্তি আর দিতে পারলো কই?
অতীতের সেই দুই পয়সার লজেন্সের স্বাদ কেন যেন বিশ্বের নামি দামি চকোলেট ব্র্যান্ড Mars, Snickers, Kitkat কোথাওই পাইনি আর..........
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(02-01-2022, 02:32 PM)Bumba_1 Wrote: মুছে যাওয়া দিনগুলি .. অসাধারণ .. আর কি বলবো ভাই .. বলার কিছু ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না .. সবশেষে কবিগুরুর লেখা কয়েক লাইন তোমার এই গল্পের জন্য .. অনেক ধন্যবাদ বুম্বাদা ❤
কবিগুরুর ওই প্রতিটা লাইন এই গল্পের সাথে জড়িয়ে যেন. আর সেখানেই লুকিয়ে এই লেখার সার্থকতা
(02-01-2022, 03:23 PM)a-man Wrote: "অতীত বড্ড মায়া জড়ানো"
হ্যাঁ সেইসাথে nostalgic এবং নিষ্ঠূর। কারণ অতীতের স্মৃতি এমনভাবে হুঁল ফুটায় মনের ভেতরে যে বর্তমান সময়কে অনেক অনেক ভয়াবহ মনে হয়। মনে হয় যে কেনই বা বড় হলাম? সেই তো ভালো ছিলাম তথ্য প্রযুক্তিহীন এক দুনিয়ায় যখন গায়ে লাগতো তাজা বিশুদ্ধ বাতাস, সামান্য একটু গান শুনে কিংবা টিভিতে কার্টুন দেখে সিনেমা দেখেই সন্তুষ্ট থাকতাম। আজ সারা পৃথিবী পকেটের ভেতরে ছোট্ট একটা ফোনে, কিন্তু শান্তি আর দিতে পারলো কই?
অতীতের সেই দুই পয়সার লজেন্সের স্বাদ কেন যেন বিশ্বের নামি দামি চকোলেট ব্র্যান্ড Mars, Snickers, Kitkat কোথাওই পাইনি আর..........
খুব সুন্দর বললেন. অনুন্নত অতীত জীবন আধুকীকতার থেকেও অনেক সুন্দর, শান্তির, আনন্দের আর নতুনত্বে ভরা.
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,442 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
কি লেখা দিলে তুমি আজ গুরুদেব ....
গল্পের কথায় বা বিশ্লেষণে আর যেতে ইচ্ছে করছে না .... শুধু একটা জিনিস ...
আজ রোববার , ঠিক মনে হলো যেন শীতের দুপুরে ব্যালকনির রোদে গা সেঁকতে সেঁকতে কোনো পত্রিকার রবিবাসরের একটা ছোট গল্প পড়লাম ... অতীন বন্দোপাধ্যায়ের লেখা !!!!!!
Posts: 1,242
Threads: 2
Likes Received: 2,215 in 1,012 posts
Likes Given: 1,615
Joined: Jul 2021
Reputation:
654
02-01-2022, 04:43 PM
(This post was last modified: 02-01-2022, 04:44 PM by Sanjay Sen. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আপনার গল্প পড়তে পড়তে স্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছিলাম। অনেক ধন্যবাদ এই গল্পটি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
দুটো বাচ্চা কাগজের নৌকা নিয়ে খেলছে আর সেই বাচ্চাদের ঘটনার মধ্যে বিভিন্ন সংলাপের মাধ্যমে কথক নিজের জীবনের ভুল বুঝতে পারছে ... আবার শেষে মিলনও হচ্ছে।
WooooW এটা বাচ্চাদের জন্য নয় মোটেই ... গল্পটা অনেকটা আপনার ভূমি গল্পের মতো ম্যাচিউর
এই ধরনের গল্প উপহার দিতে থাকুন
❤❤❤
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(02-01-2022, 04:43 PM)Sanjay Sen Wrote: আপনার গল্প পড়তে পড়তে স্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছিলাম। অনেক ধন্যবাদ এই গল্পটি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ দাদা ❤
আপনার/ আপনাদের ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম
(02-01-2022, 06:02 PM)Bichitravirya Wrote: দুটো বাচ্চা কাগজের নৌকা নিয়ে খেলছে আর সেই বাচ্চাদের ঘটনার মধ্যে বিভিন্ন সংলাপের মাধ্যমে কথক নিজের জীবনের ভুল বুঝতে পারছে ... আবার শেষে মিলনও হচ্ছে।
WooooW এটা বাচ্চাদের জন্য নয় মোটেই ... গল্পটা অনেকটা আপনার ভূমি গল্পের মতো ম্যাচিউর
এই ধরনের গল্প উপহার দিতে থাকুন
অনেক ধন্যবাদ ❤
ভূমির মতোই যে যেমন ভাবে বুঝতে চাইবে এই গল্পকে, চরিত্রকে সেটাই জাদু এই গল্পের.
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,073 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
•
Posts: 422
Threads: 0
Likes Received: 381 in 294 posts
Likes Given: 1,202
Joined: Aug 2019
Reputation:
28
গল্পটার announcement দেখেছিলাম কিন্তু পড়া হয়নি কাল|আজকে পড়লাম| এই সেদিন উপহার লিখলেন আজকে এটা. একেবারে সম্পূর্ণ অন্য ভঙ্গিতে, অন্য ভাবে পরিবেশন করা একটি সুন্দর কাহিনী|খুব ম্যাচিউরড একটা লেখা, এইটুকুর মধ্যে প্রায় সবকিছু বর্ণিত, এই থ্রেড এর প্রতিটা গল্প একে অপরকে টক্কর দেয়|
|