Posts: 446
Threads: 3
Likes Received: 11,694 in 2,466 posts
Likes Given: 4,988
Joined: Jan 2019
Reputation:
2,925
(03-12-2021, 09:27 AM)ddey333 Wrote: (বাংলাদেশের কবি আবরার শাহরিয়ারের একটি কবিতা। ফেসবুকের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত।)
'.রা গরু খায়, প্রিয় মাংস।
* রা গরুর পুজো করে, পবিত্র মাংস;
মনে মনে ধিক্কার দেয়,"শালারা ধর্ম করলো নাশ"!
* রা পাঁঠা ছাগল খায়।
'.রা নাক সিঁটকায়;
মনে মনে ধিক্কার দেয়, "পাঁঠার বিশ্রী গন্ধে দেশটাই শ্যাষ"!
বৌদ্ধরা শুকর খায়।
'.রা ঘেন্নাভরে চায়;
মনে মনে ধিক্কার দেয়,কাছে ঘেঁষলেও ঈমান থাকবে না লেশ"!
মাংসেও বিভাজন টানে ধর্ম।
মাংস নিয়ে কখনো-সখনো রক্তারক্তিও
হয় -- চলে দা, ছুরি, বর্ম; হরহামেশা যায় প্রাণও।
নারী মাংসের অবশ্য ধর্ম নেই, সবার প্রিয়,জাতীয় মাংস;
ধার্মিক, অ-ধার্মিক, নাস্তিক সবার কাছেই।
মিলেমিশে এমনকি জোর করে খেতেও আপত্তি নেই!
সত্য বড়ই অপ্রিয় - মেয়েদের মাংস ভক্ষণে কোন মতভেদ নেই।
\\ জাতীয় মাংস \\
আপনার এই কবিতা পড়ে আমার জীবনে ঘটা একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেলো। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। এতো কিছু বুঝতাম না। সবাই মানুষ এই বিশ্বাসেই এখনও বিশ্বাসী। তো পরীক্ষার ছুটিতে আমরা বন্ধুরা মিলে পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম। খাঁসির মাংস ছিল মুখ্য আইটেম। তার মধ্যে আমার দুই বন্ধু শাহরুখ খান এবং অক্ষয় কুমার দ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন। একজন জবাই ছাড়া মাংস খাবেন না। আর ওপর জন বলি দেওয়া ছাড়া। খুব সমস্যায় পড়েছিলাম সেদিন।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
# অন্য_রূপকথা
হাওড়া স্টেশানের ভিড়ে, অসুস্থ একটি মেয়ে।
কাঁধে ব্যাগ, সঙ্গে একটি ছোট্ট ট্রলি ব্যাগ।
কোনোরকমে একটি নালা খুঁজে পেয়ে মেয়েটি বমনরত। এতটাই অসুস্থ যে, ব্যাগ তো বটেই, নিজের পোষাকও যে ঈষৎ অসংবৃত, সেদিকে খেয়ালই নেই মেয়েটির।
কিন্তু, মেয়ে তো! হঠাৎ মনে হল পিছনে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে।
একটু সামলে নিয়ে তাকালো মেয়েটা সেইদিকে। মুখে কষাটে স্বাদ... মাথা ঘুরছে বড্ড...
মধ্যবয়সের একজন মানুষ। হাতে একটা জলের বোতল।
"দিদি, এই যে জল নিন... মুখে চোখে জল দিয়ে নিন। একটু ভাল লাগবে। আমি ওই সামনের দোকানে কাজ করি। আপনাকে অসুস্থ দেখে এলাম।"
কথাটার মধ্যে কিছু একটা ছিল।
ভরসা।
বিশ্বাস।
আস্থা।
যে দেশে প্রতি মিনিটে সাতাত্তর জন মহিলা ধর্ষিতা হন, একশোর বেশি মহিলা মলেস্টেড, এবং গননাহীন মহিলা শ্লীলতাহানি এবং কটুক্তির শিকার হন, সেই দেশ এবং সমাজের ক্ষেত্রে এমনি ব্যবহার একটিই জিনিস বোঝায়, অন্য অনেকবারের মতো - আমাদের চারপাশেই আছেন অনেক মানুষ... যাঁরা জানেন, কিভাবে পাশে দাঁড়াতে হয়। হাত বাড়াতে হয়।
কিভাবে জানলাম? আমিই যে সেই টলমলে মেয়েটি, যে সারারাত অসুস্থতার পরেও, বন্ধুদের মনখারাপ করাবে না বলে, আগে থেকে ঠিক করে রাখা ট্রিপের জন্য ট্রেন ধরতে ভোররাতে পৌঁছে গেছিল হাওড়া স্টেশানে... আর দেখা পেয়ে গেছিলাম একজন মানুষের।
মানুষের মতো একজন মানুষের।
এই ছোট্ট ছোট্ট ঘটনাই যে বুঝিয়ে দেয় রূপকথা আছে... শুধু চোখ মেলে দেখার অপেক্ষায়... হাতটি বাড়াবার অপেক্ষায়...
(একটু সুস্থ হয়ে জানতে পারলাম উনি ২৩ নাম্বার প্ল্যাটফর্মের ওষুধের দোকানে কাজ করেন, যিনি, অসুস্থ একজনকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। নিজের দোকান ছেড়ে। শুধুই সাহায্য করার জন্য।)
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
জীবন এখানেই !
দাদা
গত তিন বছর আমি কলকাতায় আসি নি। আসলে কলকাতায় আর কেউ নেই আমার। বাবা আর মা দুজনেই মারা যাবার পর কলকাতার ওপর টানও নেই আর। তিন বছর আগে যখন ফিরছিলাম তখন ট্রেনেই পরিচয় হয়েছিল এক পারিবারের সাথে। স্বামী, স্ত্রী আর একটি মেয়ে। প্রথম দুজন মধ্যবয়স্ক আর মেয়েটির বছর কুড়ি বয়েস। থ্রি টায়ারে যাতায়াত করেন যারা তারা জানেন, বেশ কিছুক্ষন কেউ পরস্পরের সাথে কথা বলেন না। তার পর আসতে আসতে জড়তা কাটে। আমি সাধারণত কারুর সাথেই নিজে থেকে কথা বলি না। এরা দেখলাম একটু অন্যরকম। ট্রেন চলতে শুরু করতেই কথা বলা শুরু করলেন। কি করি, কোথায় থাকি। বললাম সব। বাবা, মা নেই। কলকাতায় এসেছিলাম এমনিই। কলকাতাতেই থাকতাম। বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছিলাম। এখন থাকি কন্যাকুমারী যাওয়ার পথে এক আধা শহরে। ব্যবসা করি একটা ছোটখাট। এসব শুনেই রণে ভঙ্গ দেন অনেকেই। কিন্তু এরা দুজনই বেশ মনযোগ দিয়ে শুনছিলেন আমার কথা। মেয়েটি জানলার ধারে বসে বাইরে তাকিয়ে বসে ছিল। আমাদের কথা শুনছিল বলে মনে হচ্ছিল না আমার।
কিছুক্ষন পর কথাবার্তা বন্ধ হল স্বাভাবিক নিয়মে। আমি একটা বই বার করে পড়তে শুরু করলাম। বাইরে তখন মেঘ করেছে বেশ। তাকিয়ে দেখি মেয়েটি তখনও বাইরেই তাকিয়ে আছে। শান্ত,স্নিগ্ধ চেহারার মেয়ে। ওর মা বললেন - জানলার ধার থেকে সরে আয় মাটি। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। মেয়েটি মুখ ফেরালো। হাসলো একটু। এই প্রথম চাইলো আমার দিকে। বড় স্নিগ্ধ সেই চাহনি। কত বয়েস হবে মেয়েটির? বছর কুড়ি বাইশ। আর তক্ষুনি আমার বড় ভাল লেগে গেল মেয়েটিকে। আমার তখন তেত্রিশ বছর বয়েস। সেই অর্থে কোন মেয়েকেই ভাল লাগেনি আমার কখনো। প্রায় বছর পনেরো আমি ইন্ডিপেন্ডেন্টলি থাকি তখনই। অনেক ঝড় ঝাপ্টা সামনে এখন থিতু হয়েছি একটু। মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো - বাড়ি থেকে আজকাল কেউ পালায়? সত্যি পালিয়েছিলেন আপনি? কেন পালিয়েছিলেন? মনে হল যেন কতদিনের চেনা। আকাশে আর মেঘ নেই। বাইরে সন্ধে নামছে ছুটন্ত কামরার মধ্যে আলো জ্বলে উঠেছে। বললাম - সে অনেক লম্বা গল্প।
ট্রেন চলেছে। এই দক্ষিণগামী ট্রেনগুলোয় হকার প্রায় ওঠে না বললেই চলে। ক্যাটারিং এর লোকজন খাবারের অর্ডার নিচ্ছিল। মেয়েটি বললো সে বাথরুমে যাবে। ভদ্রমহিলা ভদ্রলোককে বললেন যে একটু নিয়ে যাও না মাটিকে।
ওরা চলে গেলে উনি আমায় বললেন - বাবা, আমরা চলেছি ভেলোর। মাটি আমার মেয়ে ওর মাঠায় একটা টিউমার আছে। কলকাতায় অপারেশন করাতে ভয় হল। আর অনেকে বললেন ভেলোরে নাকি অনেক কম পয়সায় খুব ভাল চিকিৎসা হয়। তাই নিয়ে যাচ্ছি।
মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই ফুলের মত মেয়েটার ব্রেন টিউমার।আমাদের সংগে এক দক্ষিণ ভারতীয় দম্পতি ছিলেন আর দুটি সিটে। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন তামিলে।
মেয়েটি ফিরে এল
দেখলাম ওর বাবা ধরে নিয়ে আসছেন ওকে। বললেন -আবার অজ্ঞান হয়ে গেছিল। আমি ধরে নিয়েছিলাম বলে কিছু হয় নি।নীচের দুটি বার্থই ওদের ছিল। একটা খুলে মেয়েটিকে শুইয়ে দিলেন ওর বাবা। ক্লান্ত লাগছিল মেয়েটিকে ভীষন। একটু জল খেয়ে শুয়ে পড়লো সেই মেয়ে।
রাতের খাবার খেয়ে আমিও শুয়ে পড়লাম ওপরের বার্থে। ওরা স্বামী স্ত্রী কিছু কথা বলছিলেন নিজেদের মধ্যে ট্রেনের শব্দে আমি তা শুনতে পাচ্ছিলাম না। অনেক রাত অবধি জেগে ছিলাম আমি। মেয়েটি আমায় টানছিল। মাঝে মাঝেই দেখছিলাম ওর দিকে চেয়ে। সামান্য কিছু খেয়েছে মেয়েটি।বেশ কয়েকটা ওষুধও। জোরে ছুটে চলা রাতের ট্রেনের আধো অন্ধকারে অপরূপ লাগছিল সেই মেয়েকে। ট্রেনের কামরার দুলুনি তে ট্রেন ছুটে চলছিল তার নির্দিষ্ট গন্তব্যপথে। কখন আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল নেই আমার।
ঘুম ভাঙলো যখন তখন দেখি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে এক স্টেশনে। আলো ফোটেনি তখনো।ঘড়িতে দেখি সাড়ে চারটে। বুঝলাম ভাইঝাক এসে গেল। নেমে একবার বাথরুম থেকে ঘুরে এলাম। প্রায় সবাই ঘুমোচ্ছে কামরায়। বিভিন্ন রকম নাকডাকা শুনতে পাওয়া যায় এই সময়। যিনি সবচেয়ে জোরে নাক ডাকছেন তিনিই হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে বলেন - বাপরে, কি নাক ডাকার বহর! দেখলাম ওরা তিনজনই ঘুমোচ্ছেন। মেয়েটির মুখ ঘোরানো উল্টো দিকে তাই তার মুখ দেখতে পেলাম না।
ট্রেন ছাড়লো। আমার চোখ লেগে এল একটু। তারপর চোখ তাকিয়ে দেখি আলোয় কামরা ভরে গিয়েছে। আমায় উঠে বসতে দেখে মেয়েটি বললো একটু হেসে - গুড মর্নিং। সত্যিই, মর্নিংটা গুড হয়ে গেল আমার। নীচে নামতেই যে প্রশ্নটা আসবে ভেবেছিলাম সেটাই এল। মেয়েটি বললো - ট্রেনটা আবার হাওড়ার দিকে যাচ্ছে কেন?? বললাম - না, ঠিকই যাচ্ছে।
ট্রেন চলেছে। রাত্রে ঘুমিয়ে মেয়েটিকে অনেক ফ্রেশ লাগছিল।
অনেক কথা বলছিল আমার সংগে। আমার সাথে কোন মেয়ে এর আগে এত কথা বলে নি কোনদিন। ভাল লাগছিল আমার। মেয়েটির বাবা মা খুব কম কথা বলছিলেন। বুঝতে পারছিলাম খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন। আমায় বললেন - তুমি ভেলোরে গেছো আগে। বললাম - মাকে নিয়ে গিয়েছিলাম একবার। ওরা বললেন - কোন চেনাজানা নেই। কি যে হবে! সাড়ে দশটা নাগাদ বিজয়ওয়াড়া এল। আমি এখান থেকে চিকেন বিরিয়ানী কিনে খাই আর ফ্রুট জুস। ওরা মিলের অর্ডার দিয়ে দিয়েছিলেন। আমি বললাম - ফলের রস খাবেন? খুব ভাল সামনে বানিয়ে দেয়। ওরা নিমরাজী হলেন। নিয়ে এলাম আঙ্গুরের রস। কেমন যেন আত্মীয়তা হয়ে গেল ওঁদের সাথে। পিতৃমাতৃহীন এই যুবকের কি জানি কেন মনে হচ্ছিল এদের সাহায্য করি। আর মেয়েটিকে যে আমার ভাল লাগছিল সে কথা তো আগেই লিখেছি। মনে মনে ঠিক করলাম যাবো ওদের সাথে কাটপাটি। আমার তো স্বাধীন ব্যবসা। আরো কিছুদিন বন্ধ থাকলে কি আর হবে! কিন্তু ওঁদের বলি কি করে? বিজয়ওয়াড়া থেকে চেন্নাই অনেকটা পথ। অনেকেই শুয়ে পড়ছেন। আমি ভদ্রলোককে বলেই ফেললাম - আমার যাওয়ার পথেই পড়বে কাটপাটি। আপনারা রাজী থাকলে আমি আপনাদের সংগে নেমে যেতে পারি কাটপাটিতে।
ভদ্রলোক হাতে চাঁদ পেলেন। বললেন - বাঁচালে বাবা। তোমার মাসীমাকে আমি বলছিলাম যে এই ছেলেটিকে বলবো আমাদের সংগে যদি ভেলোর যায়? ওদের টিকিট বললেন চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে। আমার টিকিট ছিল পরের দিন এগমোর থেকে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে। চেন্নাইতে নেমে আমার টিকিট ক্যান্সেল করে ম্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেসের একটা জেনারেল কামরার টিকিট কাটলাম। ওদেরও ওই ট্রেনেই টিকিট কাটা ছিল। ওঁরা ট্রেন যাত্রা এবং দুশ্চিন্তায় কাবু হয়ে পড়েছিলেন। সাড়ে দশটায় ট্রেন ছাড়লো চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে। সাড়ে বারোটা নাগাদ পোঁছবে কাটপাটিতে। ওঁদের কামরায় তুলে দিয়ে আমি টিটি কে বললাম ওঁদের কথা। কাটপাটিতে নেবে যাবো বলাতে টিটি রাজী হয়ে গেলেন। ওঁদের বললাম - আপনারা একটু শুয়ে নিন আমি ডেকে দেবো আপনাদের।এর মধ্যে মেয়েটির দিকে তাকানোর সময় পাই নি আমি।
কাটপাটিতে নেমে অটো ধরে পৌঁছে গেলাম সি এম সি কাছেই একটা লজে। মাকে নিয়ে এসে এখানেই উঠেছিলাম। ওদের একটা ঘর দিয়ে আমি একটা সিঙ্গল রুম নিলাম। নিজের ঘরে এসে শুলাম যখন তখন ঘড়িতে দেখি প্রায় রাত দুটো।
সকাল দশটার মধ্যেই মাটিকে দেখে নিলেন ডাক্তারেরা। রিপোর্ট দেখলেন সব। একজন বাঙালি ডাক্তার ছিলেন।তিনিই বুঝিয়ে দিলেন মাটির বাবা মা কে কি করতে হবে। ওঁরাও খানিকটা চিন্তামুক্ত হলেন। পরের দিন বেশ কিছু টেস্ট। সিটি স্কান,এসব করে সেই বাঙালি ডাক্তার বললেন অপারেশন করবেন ওরা। মাটির ডান কানের ওপরে একটা ছোট্ট টিউমার আছে। সেটাই অপারেট করবেন ওরা। ওরা অবশ্য জানতেন এই টিউমারটির কথা।
আমার সাথে রোজই কথা হয় মাটির।অনেক কথা। জানলাম ওর ভাল নাম চিরন্তনী। তেইশ বছর বয়েস ওর। আর ওর এক প্রেমিক আছে। কেমন যেন ধাক্কা খেলাম একটা। বললো- ওর বাবা মা জানেন না সেই প্রেমিকের কথা।
আমি বললাম- ভয় করছেনা তোমার? সেই সুন্দর হাসিটা হাসলো মেয়েটা, বললো - আপনি আছেন তো। কিচ্ছু হবে না আমার দেখবেন। ঈশ্বর আপনাকে পাঠিয়েছে আমাদের কাছে বা বলা যায় আপনিই আমাদের ঈশ্বর।মা বলছিল বাবাকে, - এমন ছেলে আজকের দিনে হয়? ঈশ্বর পাঠিয়েছেন ওকে আমাদের কাছে। কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না আমি। তবে চিরন্তনীর প্রেমিক আছে শুনে মনে মনে ভীষণ ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমি।।
অপারেশনের আগে ওর মাথা নেড়া করে দেওয়া হল। আমি কখনোই ওদের দুজনের সংগে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে যাই নি। সেদিনও ভাবছিলাম যাবো না কিন্তু ওর বাবা মা দুজনেই বললেন যে আমাকে যেতেই হবে। মাটি বলেছে আমাকে দেখেই নাকী ও অপারেশন থিয়েটারে ঢুকবে। গেলাম। আমার দিকে বললো - আমার কপালে একটু হাত রাখবেন? রাখলাম হাত। কপালটা ঠান্ডা। আমি ভাবছিলাম কেন ওর একটা প্রেমিক আছে? কেন?
পরবর্তী দু ঘন্টা মনে হল যেন কাটতেই চাইছিল না। দু ঘন্টা নয় প্রায় তিন ঘন্টা পরে বেরোলেন ডাক্তারেরা। বললেন - এখনি কিছু বলবেন না। বায়োপ্সি করতে পাঠিয়েছেন দু দিন পর বলবেন। তবে অপারেশন সাক্সেসফুল।
দেখলাম চিরন্তনীকে। মাথায় ব্যান্ডেজ করা। জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে। ওর মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। প্রায় সদ্য কয়েকদিনের পরিচিত এক পরিবারের জন্যে তখন আমার গলার কাছেও কিছু যেন আটকে আছে মনে হচ্ছিল।
পরের দিনই জ্ঞান এল চিরন্তনীর।
আমি ঢুকি নি ঘরে। কিছু বাদে ওর বাবা বেরিয়ে এসে বললেন - তোমাকে ভেতরে যেতে বলছে মাটি। ভাল আছে ও।
ঢুকলাম ভেতরে দরজার দিকে চেয়ে ছিল ও। আমাকে দেখেই আবার হাসলো। চোখ দুটো ক্লান্ত।ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলো। আমি ধরলাম সেই হাত। হাতটা গরম। কথা বললাম না।
তারপর সময় কাটতে লাগলো দ্রুতগতি তে। বায়োপ্সি রিপোর্ট দেখে ডাক্তারেরা বললেন, -না ভয়ের কিছু নেই। ম্যালিগ্যান্ট নয়। ফলে জীবন সংশয় নেই। দশ দিনে ছেড়ে দেবেন। ওর বাবা মায়ের মুখে হাসি। ও আমায় বললো - কি মশাই? বলেছিলাম না আমার কিছু হবে না? আপনি ঈশ্বরপ্রেরিত।।
দশ নয় পনেরো দিন পর ওদের নিয়ে আমি আবার গেলাম চেন্নাই। চেনাশোনা লোক ধরে এ সি থ্রী টায়ারের টিকিট কেটে দিলাম। সকালে করমন্ডলে তুলে দেবার সময় চিরন্তনীকে বললাম - বিয়ের সময় খবর দিও। ও হেসে বললো - অবশ্যই। আপনি না থাকলে বিয়েই করবো না আমি। ওর বাবা মা দুজনেই আমায় জড়িয়ে ধরলেন।চোখে জল।আমি অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালাম। ওর মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন - সত্যিই তোমার কেউ নেই বাবা? আমি বললাম - না নেই মাসিমা। তবে এই তো আপনারা রইলেন। করমন্ডল ছেড়ে দিল।
সন্ধেবেলা এগমোর থেকে ট্রেন ধরে নাগেরকয়েলে নামলাম ভোর রাত্তিরে । তারপর বাসে আরো দু ঘন্টা জার্ণি করে বাড়ি।
সেদিন আর দোকান খুলি নি। টেনে ঘুমোলাম। তারপর উঠে গেলাম বাজারে। বেশ কিছু বছর আছি এখানে। অনেকদিন বাদে দেখে অনেকেই খুশি হলেন। একটি দোকানে বসে জিনিস কিনছিলাম মোবাইল বাজলো। পিকেট থেকে বের করে দেখি চিরন্তনীর বাবা। বললেন ঠিক ঠাক পোঁছেছো তো বাবা? তোমার ঋণ আমরা জীবনে শোধ করতে পারবো না। ওঁর স্ত্রীও সেই একই কথা বললেন।তারপর বললেন - নাও মাটির সাথে কথা বলো।আমার কেম বুক ধড়পড় করতে শুরু করলো। চিরন্তনী বললো - কি মশাই। ঠিকঠাক পৌঁছেছেন তো?বললাম - তুমি ঠিক আছ তো? রাস্তায় কোন অসুবিধে হয়নি তো? বললো - না না। এখন একটু মাথার যন্ত্রনা হচ্ছে। আজ রাত্রে ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে। বললো, ওর নিজের একটা মোবাইল আছে। সেটা থেকে পরেরদিন ফোন করবে।
পরেরদিন করেছিল ফোন। তারপর থেকে এই তিন বছর প্রায় রোজই কথা বলি আমরা।ও বেশ কিছুদিন হল আমায় তুমি বলে। ওকে জিজ্ঞাসা করি -তোমার প্রেমিক কেমন আছে? ও বলে - ফোনে কথা হয়। ও তো বাড়িতে আসতে পারে না। ও আসতে আসতে সুস্থ হয়। বলে দেখা হয় এখন ওর প্রেমিকের সাথে। আমি কয়েকদিন ফোন ধরি না। করিও না।ও মেসেজ করে - কি হল,ফোন ধরছো না কেন? শরীর ঠিক আছে তো।এমন করেই দিন কাটে। ও এস এস সি পাস করে কলেজে চাকরী পায়। বলি - এবার বিয়েটা করো। বলে- হবে,হবে দাঁড়াও। মাকে বলেছি। মা বলেছে বাবাকে।তুমি কিন্তু এসো বিয়েতে।আমি একটু কথা বলে ফোন রেখে দিই।
মাসখানেক আগে একদিন চিরন্তনী আমায় একটা মেসেজ করে।তাতে লেখা - তুমি একটা হাঁদারাম। আমার কোন প্রেমিক নেই। বাংলাদেশে যে মেয়ে থেকে থেকে অজ্ঞান হয়ে যায় তার কোন প্রেমিক থাকতে পারে না।তবে আমার এক ঈশ্বর আছে। সেই ঈশ্বর কী একসময় অজ্ঞান হয়ে যেত এমন মেয়েকে বিয়ে করবে। উত্তর হ্যাঁ হলে যেন সেই মেয়েটির বাবাকে ফোন করে বলে যে সে তার মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। তিনি ফোনের অপেক্ষায় আছেন।
চারিদিকে যেন লক্ষ রঙমশাল জ্বলে উঠলো।
সেই ইশ্বর যাচ্ছে জানুয়ারীতে বিয়ে করতে কলকাতায়।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এই গল্পটা অনেক পুরোনো , Xossip এও ছিল , এখানে আবার দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ .... লেখকের নাম মনে নেই ..
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
। মিনিট।
আরেকখানা মিনিট পাবি
এমনটা কে বললো তোকে ?
বাঁচতে হলে নে বেঁচে নে,
নিংড়ে নিয়ে মুহূর্তকে।
কাঁদার হলে নে না কেঁদে
হৃৎপিন্ড উজাড় করে
একটা ফোঁটা চোখের জলও
না রয়ে যায় কান্নাঘরে।
হাসিস যদি সবটুকু দে,
মন ভালো কর এক মিনিটে
জীবন বলে ভাবিস যেটা,
গড়া সেটা মিনিট ইঁটে।
এক লহমায় প্রেম করে নে
তুচ্ছ করে সময়শাসন
অতীত এবং আগামীকে
খামোখা দিস উচ্চ আসন।
ইতিহাসকে টেরিয়ে দেখিস,
মুহূর্তরা যায় যে বয়ে
এই মিনিটে করিস যে কাজ,
উঠুক সেটাই জীবন হয়ে।
লাভ কি হবে আগাম ভেবে,
পরের দিনের প্ল্যানটা করে
কেউ জানেনা থাকবি কিনা
রাত পোহালে কালকে ভোরে।
একটা করে মিনিট বাঁচুক
সেই মিনিটেই তীব্রভাবে
পরের মিনিট এলে তখন
সেটাও নিয়ে ভাবা যাবে।
আগের মিনিট চলে গেছে
ঠিক বা ভুলের হিসেব দিয়ে
খামোখা আর এই মিনিটে
করবি কি সে ভাবনা নিয়ে ?
ইচ্ছে হলে নাচ না এখন
ভাবার হলে খুব নে ভেবে
ষাটটা সেকেন্ড মাত্র শুধু
মিনিটটা তোর সঙ্গ দেবে।
কেউ জানেনা ব্যাংকে আছে
আর কখানা মিনিট পড়ে
একটা গোটা জীবন নিয়ে
এক মিনিটে দে না ভরে।
লেখা : ভারতীয় দাদা
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(07-12-2021, 10:01 AM)ddey333 Wrote: । মিনিট।
আরেকখানা মিনিট পাবি
এমনটা কে বললো তোকে ?
বাঁচতে হলে নে বেঁচে নে,
নিংড়ে নিয়ে মুহূর্তকে।
কাঁদার হলে নে না কেঁদে
হৃৎপিন্ড উজাড় করে
একটা ফোঁটা চোখের জলও
না রয়ে যায় কান্নাঘরে।
হাসিস যদি সবটুকু দে,
মন ভালো কর এক মিনিটে
জীবন বলে ভাবিস যেটা,
গড়া সেটা মিনিট ইঁটে।
এক লহমায় প্রেম করে নে
তুচ্ছ করে সময়শাসন
অতীত এবং আগামীকে
খামোখা দিস উচ্চ আসন।
ইতিহাসকে টেরিয়ে দেখিস,
মুহূর্তরা যায় যে বয়ে
এই মিনিটে করিস যে কাজ,
উঠুক সেটাই জীবন হয়ে।
লাভ কি হবে আগাম ভেবে,
পরের দিনের প্ল্যানটা করে
কেউ জানেনা থাকবি কিনা
রাত পোহালে কালকে ভোরে।
একটা করে মিনিট বাঁচুক
সেই মিনিটেই তীব্রভাবে
পরের মিনিট এলে তখন
সেটাও নিয়ে ভাবা যাবে।
আগের মিনিট চলে গেছে
ঠিক বা ভুলের হিসেব দিয়ে
খামোখা আর এই মিনিটে
করবি কি সে ভাবনা নিয়ে ?
ইচ্ছে হলে নাচ না এখন
ভাবার হলে খুব নে ভেবে
ষাটটা সেকেন্ড মাত্র শুধু
মিনিটটা তোর সঙ্গ দেবে।
কেউ জানেনা ব্যাংকে আছে
আর কখানা মিনিট পড়ে
একটা গোটা জীবন নিয়ে
এক মিনিটে দে না ভরে।
লেখা : ভারতীয় দাদা
ক্যা বাত..... দারুন লিখেছেন ভারতীয় দাদা.....
কালকের চিন্তায় আজটা নষ্ট
যখন পড়বে মনে পাবে শুধুই কষ্ট
তার চেয়ে বাঁচো আজকেটাকে
বুক ফুলিয়ে আনন্দেতে
হাসি খুশির হোক জীবন...
জীবন বাঁচো খুশিতে মেতে
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(07-12-2021, 10:20 AM)Baban Wrote: ক্যা বাত..... দারুন লিখেছেন ভারতীয় দাদা.....
কালকের চিন্তায় আজটা নষ্ট
যখন পড়বে মনে পাবে শুধুই কষ্ট
তার চেয়ে বাঁচো আজকেটাকে
বুক ফুলিয়ে আনন্দেতে
হাসি খুশির হোক জীবন...
জীবন বাঁচো খুশিতে মেতে
একদম আমার জীবনের কথা এটা !!!
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
।। এমন একটা সময় ছিল ।।
একান্নবর্তী সংসারেতে
মোটা রুটির দিস্তে ছিল,
ফাটা কাপে চা ছিল ,
কাঠের পিঁড়িতে বসা ছিল।
মাছের ছোট পিস্ ছিল,
সুতোয় কাটা ডিম ছিল,
মাসে দু দিন মাংস ছিল,
এঁটো হাতে আড্ডা ছিল।
মাটির তৈরি উনুন ছিল,
ঘুটে কয়লার আঁচ ছিল,
বাটা মসলার ঝাঁজ ছিল,
ধুলো ঝাড়তে কুলো ছিল,
কাঁসার থালা-বাটি গেলাস ছিল।
তালপাতার পাখা ছিল,
মাটির কলসির জল ছিল,
রকে বসে আড্ডা ছিল,
নিত্য ঝগড়াঝাঁটি ছিল,
কিন্তু সব শেষে সুখ ছিল,
তৃপ্তি ছিল, শান্তি ছিল,
আহা ! সে এক সময় ছিল।
সকালবেলা ঘুম ভাঙা চোখে
আকাশবাণীর টিউন ছিল,
চিত্রহার চিত্রমালায়
টিভিতে সন্ধ্যা সাজানো ছিল।
উত্তম, সুচিত্রা, সৌমিত্র ছিল,
হেমন্ত, সন্ধ্যা, মান্না দে ছিল।
সন্ধ্যেবেলায় লোডশেডিং ছিল,
লাল গামছায় চান ছিল,
মুখ মুছতে মায়ের আঁচল ছিল,
দুপুরবেলায় শীতলপাটিতে শুয়ে
ঠাম্মির মুখে গল্প ছিল,
হরেক হকারের হাক ছিল,
আহা ! সে এক সময় ছিল।
বিজয়াতে কোলাকুলি,
নিমকি, ঘুগনি,নাড়ু ছিল,
নববর্ষের প্রণাম ছিল।
বিয়েতে কোমরে গামছা বেঁধে
পরিবেশনে আনন্দ ছিল।
বিকেল বেলায় বৃষ্টি হলে
ভিজে ভিজে খেলা ছিল,
আম, জাম, পেয়ারা গাছে
চড়তে বড় সুখ ছিল,
পুকুরেতে কজন মিলে
হ্যাঁপাইঝোড়ার মজা ছিল।
ভাইফোঁটায় এক বাড়িতে
তুতো ভাইবোনেরা জড়ো ছিল।
চক, ডাস্টার, ব্ল্যাক বোর্ড ছিল,
বেঞ্চির উপর দাঁড়ানো ছিল,
স্যারের মারের দুঃখ ভোলাতে
ভালোবাসার প্রলেপ ছিল।
কাটা ঘুড়ির পেছন পেছন
দৌড়ে চলার সঙ্গী ছিল।
আহা! সে এক সময় ছিল।
ছোটবেলার সেসব ছবি
কবে কোথায় হারিয়ে গেল,
রোমন্থনে ভাবতে থাকি
সে একটা সময় ছিল।
(COLLECTED)
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
মাত্র কয়েক মিনিট আগে আমি আমার স্ত্রী পূজাকে হত্যা করলাম। নিজের হাতে বিষ মিশানো দুধ খাইয়েছি ওকে।
অবাক করা বিষয় কি জানেন? পূজা জানতো আজ আমি ওকে খুন করবো। এমনকি ও এটাও জানতো যে দুধে বিষ আছে। তারপরও ও আমার হাত থেকে
দুধটা হাসি মুখে খেয়ে নিলো। দুধ খেয়ে বললো আমি তোমাকে শেষ বারের মত জড়িয়ে ধরে তোমার চোখে একটা চুমো খাবো? আমি কিছু বলতে পারিনি। কি বলবো? শুধু ওকে শক্ত করে বুকের মাঝে জড়িয়ে
ধরেছিলাম। ও আমার চোখে একটা চুমো দিলো। তারপর আমার বুকে ঘুমিয়ে পরলো। আমি ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আসলাম।
এখন আমি লিখছি। কি লিখছি জানেন?
জীবনের কিছু কথা লিখছি। পূজাকে খুন করার কোন কারন আমার কাছে নাই। কারন পূজার মত স্ত্রী পাওয়া যে কোন পুরুষের জন্য ভাগ্যের বিষয়। যে মেয়ে
তার সবটা দিয়ে তার স্বামীকে
ভালোবাসে, শ্বশুর শ্বাশুরির সম্মান করে , নিজের সংসারটা কে মন্দিরের ন্যায় পুজ্যনীয় মানে সে মেয়েকে পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। তাহলে কি পূজার কোন পরকিয়া ছিলো ?
ছিঃ এ কথা মুখে আনাও পাঁপ। কারন পূজা ছিলো যথেষ্ট ধার্মিক মেয়ে। ওর পুরো পৃথিবী জুড়ে ছিলাম শুধু আমি আর আমাদের সংসার।
তাহলে আমি পূজা কে মারলাম কেন? হুম শুনলে আপনাদের বুক কেঁপে উঠবে।
পূজা কে মেরেছি কারন আমার মা বলেছে। এখন আপনারা বলবেন মা বলেছে বলে আমি পূজা কে মেরে কেন ফেললাম? কারন মা পূজা কে ঘৃনা করতো আর আমি আমার মাকে খুব
ভালোবাসি। মা কখনোই পূজা কে
পছন্দ করতেন না। তার একমাত্র কারন হচ্ছে পূজা অনাথ। ওর জন্ম পরিচয়ের ঠিক নাই। ছোট বেলা থেকে অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছে। নিজের অভিজ্ঞতা আর কঠিন প্রচেষ্টায় পূজা অনার্স
কমপ্লিট করেছে।ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম আমরা। আমাদের ভালোবাসাটা বাবা মা কখনোই মেনে নেয়নি। তবুও তাদের অমতে জোড় করে আমি পূজা কে বিয়ে করি। পূজাও তাদের অমতে বিয়ে করতে
চায়নি কিন্তু আমার জেদের কাছে হার মানতে হলো।
আমাদের বিয়ের পর পূজা আমাদের বাড়ির সবার খুব খেয়াল রাখতো। বিশেষ করে বাবা মায়ের। কিন্তু তবুও
মা পান থেকে চুন খসলেই পূজা কে যা তা বলে গালি দিতো। মাঝে মাঝে পূজাকে অবৈধ পাঁপও বলতো। পূজা কখনোই তাদের মুখের উপর কোন কথা
বলতো না। চুপচাপ নিচের দিকে
তাকিয়ে থাকতো। ওর কষ্টটা আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে ভুলাতে চেষ্টা করতাম। পূজাকে আমি কয়েকবার বলেছিলাম চলো আমরা আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে উঠি! কিন্তু ও বলতো বাবা মা যতই বকা দিক তারা কিন্তু বাবা মাই। জন্মের পর থেকে পূজা কখনো বাবা
মায়ের স্নেহ ভালোবাসা পায়নি।
ভেবেছিলো বিয়ের পর সেটা পুরন হবে। কিন্তু কথায় আছে না তৃষ্নার্ত যেখানেই যায় সাগর শুকিয়ে যায়।
তখন যদি পূজা আমার কথামত আলাদা বাড়িতে যেতে রাজি হতো তাহলে ওর মৃত্যু হতো না।
কিছুদিন থেকে মা খুব অসুস্থ ছিলেন। পূজা মাকে খুব সেবা যত্ন করতো। সেদিন মা আমায় রুমে একা ডাকলেন। আমি যাওয়ার পর মা বললো
মাঃ= বাবা তোর কাছে কিছু চাইবো দিবি? আমার শেষ চাওয়া। শেষ ইচ্ছা। মায়ের কথায় খুব কষ্ট হচ্ছিলো। শত
হলেও নিজের মা তো?
আমিঃ হ্যা বলো মা।
মাঃ আগে আমাকে ছুয়ে প্রতিজ্ঞা কর যে আমি যা বলবো তাই শুনবি।
আমিঃ ঠিক আছে মা প্রতিজ্ঞা
করলাম। ( মাকে ওয়াদা করাটাই আমার জীবনের চড়ম কাল হয়ে দাড়ালো। )
মাঃ তুই ঐ পাঁপকে বিদায় কর। নয়তো মেরে ফেল। ও যতদিন থাকবে আমি মরেও শান্তি পাবো না।
মাকে কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু মাবলতে দিলো না। মা বললেন দেখ তুই আমাকে ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করছিস। এখন
বল তোর মা বড় না বৌ।
আমি কোন কথা না বলে ঘর থেকে চলে আসছিলাম।
দেখলাম পূজা জল হাতে দাড়িয়ে আছে। ওর চোখ থেকে জল পড়ছে। মানে ও সবটা শুনেছে।
আমি কোন কথা না বলে ঘরে চলে আসলাম। সেদিন রাতে পূজা নিজে থেকেই আমায় অনেক আদর করলো।
ভালোবাসায় ভরিয়ে দিলো আমার মনটাকে। আমায় পরিপূর্ন করলো ওর রাঙানো ভালোবাসায়। শেষ রাতে আমায় বললো
পূজা : তোমার জায়গায় আমি থাকলে আমি আমার মায়ের কথা মানতাম।
আমি অবাক দৃষ্টিতে পূজার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার চোখ দুটো দিয়ে জল পড়ছিলো।
পূজা আমার চোখের নিচে চুমো দিয়ে আমার চোখের জল গুলোকে মুছে দিলো। গত দুদিন পূজা আমায় এত ভালোবাসা
দিয়েছে যা কল্পনার বাইরে। হয়তো এটাই ওর শেষ ভালোবাসা। আর আজ আমি পূজাকে মারলাম।
পূজা এটাতো জানতো যে আমি ওকে মারবো কিন্তু ও কি এটা বুঝতে পারেনি যে আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না। ও কি ভেবেছে আমি মায়ের কথা শুনবো আর আমার ভালোবাসার মান রাখবো না? হুমমম তা কি হয়? আমি মায়ের কথায় যেমন পূজাকে মেরে ফেললাম। তেমনি পূজার ভালোবাসার মান রাখতে পূজার সাথে এক হয়ে এক সাথে দুজন পরপারে পাড়ি জমাবো।
জানি উপরওয়ালা আমায় মাফ করবে না। পূজাকে খেতে দেয়া অর্ধেক পরিমান দুধ আমি নিজের জন্য রেখেছিলাম। সেটা এইমাত্র খেলাম।
মাকে কিছু কথা বলার আছে-----
মা তুমি জানো, মায়ের স্থান কাউকে দেয়া যায় না। ঈশ্বরের পর মায়ের স্থান। কিন্তু মা , মা যদি বক্ষ্য হয়, স্ত্রী তবে হৃদয়। বক্ষ্য ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচতে পারে না তেমনি হৃদয়
ছাড়াও বাঁচতে পারে না। দুজনই
জীবনের অবিছেদ্দ অংশ। আমি
তোমার কথা রাখলাম। সাথে আমার ভালোবাসার মর্যাদাও রাখলাম। মা তোমার শেষ ইচ্ছা তো আমি পূরন করলাম। এবার তুমি আমার শেষ ইচ্ছা পূরন করবে মা? মা আমাকে আর তুলিকে এক জায়গাই পাশাপাশি একই চিতা তে দাহ কোরো।
আর হ্যাঁ মা তিনজনের শ্রাদ্ধ কোরো। তিন জন কে সেটা ভাবছো তো? আমি,পূজা আর আমাদের অনাগত সন্তান।
হ্যাঁ মা পূজা সেদিন তোমায়
বলেছিলো না মা আপনাদের নাতি নাতনি থাকলে কেমন হতো? সেদিন তুমি পূজাকে বলেছিলে তোর সন্তান তোর মতই পাঁপ হবে।
না মা আমাদের সন্তান পাঁপ না।
ও আমার নিজের সন্তান। আমার রক্ত ছিলো।
মা আমি জানি কাল তুমি খুব কাঁদবে। তোমার আর্তনাতে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠবে। কিন্তু মা তোমার সন্তান মরেছে বলে তুমি এত কষ্ট পাবে, তাহলে আমার সন্তানের জন্য আমার ঠিক কতটা কষ্ট হচ্ছে তা তুমি বুঝতে
পারছো?
জানো মা আজ পূজাকে মারার পর আমি বিছানার নিচ থেকে
একটা কাগজ পাই। সেটা থেকেই আমি জানতে পারি আমি বাবা হতে চলেছি।
"না বাবা হতে চলেছিলাম।"
রিপোর্ট টা দুদিন পুরোনো। মানে
তুলি জানতো বেবির কথা বললে ওকে আমি মারতে পারবো না।
মা জানো
তুলি মরার সময় কি বলেছে?
মায়ের খেয়াল রেখো। পাগলিটা
জানতেও পারবে না যে , মায়ের
খেয়াল রাখার জন্য আমি থাকবো না।
মা জানো আজ শুধু তিনটা মানুষের মৃত্যু হলো না মৃত্যু হলো ভালোবাসার, বিশ্বাসের, ভরশার,
স্নেহের , মমতার, মায়ার বাঁধনের আর সম্পর্কের। মা তুমি ভালো থেকো নিজের খেয়াল রেখো। আমার ঘুম পাচ্ছে। খুব ঘুম পাচ্ছে। যাই পূজার পেটে একটা চুমো দেবো। কারন এতক্ষনে ওর
ভিতরে থাকা আমাদের ছোট্ট
সোনার হয়তো হ্যার্টবিট বন্ধ হয়ে
গেছে। তারপর পূজাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরবো। শান্তির ঘুম।
আর হ্যাঁ।। আমার আর পূজার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমরা নিজেদের ইচ্ছায়
দুনিয়া ছাড়লাম।
লেখা ~ Animesh Roy
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
বড়ো মর্মান্তিক গল্পটা ....
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
আমরাই শেষ জেনারেশন, যাঁরা স্বর্গ দেখেছি। কোনোও জেনারেশনই আর তা দেখতে পাবে না।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন,* যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপার সনিক কনকর্ড জেট দেখেছি। পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার থেকে শুরু করে আজকের হোয়াটস্যাপ চ্যাটিং, ই-মেইল পর্যন্তও করছি। অসম্ভব মনে হওয়া অনেক জিনিসই সম্ভব হতে দেখেছি।
আমরা সেই জেনারেশন,* যারা টেলিগ্রাম এসেছে শুনলেই ঘরগুষ্টির মুখ শুকিয়ে যেতে দেখেছি.. আবার কোম্পানির চাকরি করতে গিয়ে ফি মাসে ম্যানেজারের টেলিগ্রাম পেয়ে ওটাকে বক্সেই নেতিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা মাটিতে বসে ভাত খেয়েছি আর প্লেটে ঢেলে চা খেয়েছি সুরুৎ শব্দে, পরে জেনেছি ওটা বদ-অভ্যাস । বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানে বাড়ির ভিয়েন থেকে বিজলী গ্রিল ক্যাটারিং দেখেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে লুকোচুরি, গাছের পাতা হাতে আইস-বাইশ, গাদী, গোল ইঁটের বাট্টুল সাজিয়ে টেনিস বল ছুঁড়ে- পিট্টু, বাঘবন্দি কুমীরডাঙ্গা, ডাঙ্গুলি, কবাড্ডি, মার্বেল খেলেছি, বিশ্বকর্মা-১৫ আগস্টের আগের দিন মাঞ্জা মেরে পরদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভো-কা-ট্টা..হাত- ফেত্যি এড়িয়ে সুতোকেটে আকাশের বুকে উড়ে যাচ্ছে রং বেরঙের নানান নামের ঘুড়ি....সেলিব্রেশন অন রুফ-টপ।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা হ্যারিকেন আর বাল্বের হলুদ আলোতে পড়াশুনা করেছি, বেত থেকে পাখার ডাঁটির চাপকানি খেয়েছি আর চাদরে হাফ বডি ঢুকিয়ে উপুড় হয়ে লুকিয়ে পড়েছি শুকতারার পাণ্ডব-গোয়েন্দা, স্বপন কুমারের 'কালনাগিনীর ছোবল' ।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা ফ্যান, এসি, হিটার, ফ্রীজ, গ্যাস, মাইক্রোওভেনের অস্থাবর সুখ ছাড়াই কাটিয়েছি ছোটবেলা।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা রাইটার্স পেন থেকে বমি করা সুলেখা কালি হাতে মেখে মাথায় মুছে 'বাবরের যুদ্ধবৃত্তান্ত' লিখেছি, হিরো পেনে লিখেছি, বড়দের পকেটে বড় নিবের উইংসাঙ দেখেছি আর নতুন বই-খাতার একটা আলাদা গন্ধ আর আনন্দ উপভোগ করেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা বিনা টিফিনে কলেজে গেছি, জিভে 'কারেন্ট নুন' ঠেকিয়ে কারেন্ট উপভোগ করেছি। ইকলেজে টিচারের হাতে মার খেয়ে, বাড়ি এসে নালিশ করাতে সেকেন্ড-রাউন্ড বেদম ফ্রি-ষ্টাইল ওয়ান-ওয়ে ফাইট সহ্য করেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা বড়দের সন্মান করেছি এবং করেও যাচ্ছি। আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা জোৎস্না রাতে ছাদে ট্রানজিস্টরে বিবিসি'র খবর, আমিন সাহানির বিনাকা গীতমালা , শ্রাবন্তীর বোরোলিনের সংসার, শনিবারের বারবেলার শেষ সাক্ষী।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা টেলিভিশনে প্রথম সোপ-অপেরা বুনিয়াদ, নুক্কর, প্রিয়া তেন্ডুলকারের 'রজনী', শেখর সুমনের প্রথম সিরিয়াল 'বাহ্ জানাব', রাতের দিকে ওম পুরীর ভারত ভাগের 'তমস্' সঙ্গে চিত্র-হার এরপর রামায়ণ , মহাভারত ঘুরে রাত জেগে খেলা দেখার জন্য ছাদে উঠে এ্যন্টেনা এডজাস্ট করে স্যিগনাল ধরার চেষ্টা করেছি । বড়লোকদের ছিল মই মার্কা পাঁচলাঠির এন্টেনা, ডান্ডায় বাঁধা বুষ্টার। আমাদের ছিল তিন লাঠির, আর ছিল টিভি স্ক্রিনে পার্মানেন্ট ঝিলমিলানি, তাতে কোনও প্রব্লেমই হোত না, ওটা জীবনের অঙ্গ ধরাই ছিল। গন্ডগোল পাকাতো ঐ লোডশেডিং। পয়েন্ট ধরে ধরে ভাড়ার জেনারেটর তখনও পাড়ায় আসেনি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা আত্মীয় স্বজন বাড়িতে আসার জন্য অপেক্ষা করতাম। ইচ্ছে করে বৃষ্টি ভিজে ইকলেজ থেকে বাড়ি ঢুকেছি। আমরা সেই শেষ জেনারেশন যাঁরা রাস্তার হলুদ বাল্ব জ্বলার আগেই বাড়ি ঢুকেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা পূজোর সময় শুধু একটা নুতন জামার জন্য অপারগ বাবার দিকে চেয়ে থেকেছি।
আমরা সেই শেষ প্রজন্ম, যারা রাস্তাঘাটে কলেজের স্যারকে দেখামাত্র রাস্তাতেই নির্দ্বিধায় প্রনাম করেছি।
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, এখনও বন্ধু খুঁজি।
জীবনের চলার স্রোতে হারিয়েছি জীবনের স্বর্গ, লষ্ট প্যারাডাইস।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
# কথোপকথন
-"এত নিয়ম কেন? অ্যাঁ?"
-"পাগল হয়ে গেলি নাকি? কিসের নিয়ম?"
-"মোবাইলটাও নাকি ঘরে রেখে যেতে হবে? কেন র্যা?"
-"কী যে বকছিস পাগলের মতো!...এই শোন? মোবাইল হারিয়েছিস নাকি তুই? তাহলে এটা কোথা থেকে কথা বলছিস?"
-"আরে না রে উজবুক! দিনকাল কি পড়ল তাই ভাবছি! অতিথিদের কোনো সম্মান নেই!"
-"উজবুক আমি, না তুই? তখন থেকে বাজে বকছিস?"
-"ভাব একবার... মামার বাড়ির আবদার এক্কেবারে... "
-"দীপ! এনাফ! আমি অফলাইন হচ্ছি, কাল অফিস আছে!"
-"আর ম্যেনুর তো ওই ছিরি! বিরিয়ানি নেই। নলেন গুড়ের রসগোল্লা নেই!"
-"মাথাটা গেছে!"
-"আমাদের বিয়েতে কিন্তু আমরা এরকম করব না! বরং গেস্টদের বলব বেশি বেশি করে ছবি তুলতে। বলব, আমার বৌ ছবি তুলতে খুব ভালবাসে..."
-"এই দাঁড়া, দাঁড়া, আমাদের বিয়ে মানে?"
-"ব্রিয়ানি কিন্তু মাস্ট, হ্যাঁ? আর যাই বল, ফুচকা, কফি, আর চিকেন পকোড়া ছাড়া বিয়েবাড়ি হয় নাকি?"
-"কার বিয়ের মেনু?"
-"কেন? বুঝতে পারছিস না?"
-"না, পারছি না!"
-"তোর আর আমার, আবার কার! সাধে উজবুক বলি!"
-"মানেটা কি?"
-"দ্যাখ ভাই, ভিকি তোর ক্রাশ ছিল জানি, কিন্তু ও তো তোর মন ভেঙে দিল... তাই আমি ফেভিকল হয়ে জোড়া লাগাতে চাই!"
-"দীইইইপ!"
-"ভাব, কি কোইন্সিডেন্স... ভিকি নামেও দু অক্ষর, দীপ নামেও তাই!"
-"রেলগাড়ি ছোটাস না! ভাবতে দে।"
-"ভাবাভাবির কি আছে? আমার মতো পাবি কাউকে আর?"
-"আচ্ছা! ওভার কনফিডেন্স!"
-"শোন না, চারলাইন কবিতা লিখেছি...
বিরাটের আছে অনুষ্কা
দীপিকার রণবীর
তুলি আর দীপের প্রেমটাও
জমে হবে ক্ষীর!"
-" যা তা! "
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(09-12-2021, 10:35 AM)ddey333 Wrote:
আমরাই সেই শেষ জেনারেশন, যারা বিনা টিফিনে কলেজে গেছি, জিভে 'কারেন্ট নুন' ঠেকিয়ে কারেন্ট উপভোগ করেছি। ইকলেজে টিচারের হাতে মার খেয়ে, বাড়ি এসে নালিশ করাতে সেকেন্ড-রাউন্ড বেদম ফ্রি-ষ্টাইল ওয়ান-ওয়ে ফাইট সহ্য করেছি।
আহ্হ্হঃ কারেন্ট নুন..... মনে পড়ে গেলো মাইরি... জিভের ডগায় ঠেকানো মাত্র ঝটকা.. উফফফ
(09-12-2021, 05:58 PM)ddey333 Wrote: # কথোপকথন
-"শোন না, চারলাইন কবিতা লিখেছি...
বিরাটের আছে অনুষ্কা
দীপিকার রণবীর
তুলি আর দীপের প্রেমটাও
জমে হবে ক্ষীর!"
-" যা তা! "
ক্যা বাত......
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
হুমায়ূন আহমেদের ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি নিয়ে কিছু করলে তার স্ত্রী ও আমাদের চার ভাই-বোনদের অনুমতি নিতে হবে: নুহাশ আহমেদ
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
আমি নিশ্চিত অনেকই ‘দেবী’ মুক্তির জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। মানুষের আগ্রহের কারণ, এই সিনেমাটি নির্মাণের জন্য ক্যামেরার সামনে আর পেছনে খুব মেধাবী কিছু মানুষ কাজ করেছেন। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে ‘দেবী’ নিয়ে মানুষের আগ্রহের বড় এবং অন্যতম আরেকটা কারণ, এর চরিত্রগুলো, গল্প আর এর সাথে জড়ানো কিংবদন্তি মানুষটির নাম।
অনেকেই হয়তো জানেন ‘দেবী’ নির্মাণ হয়েছে আমার বাবা হুমায়ূন আহমেদের লেখা উপন্যাস থেকে আর এখানে ‘মিসির আলী’ চরিত্রটি আছে। ‘মিসির আলী’-হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি করা এমন একটা
চরিত্র, যাকে আমরা সবাই ভালবাসি। কিন্তু যা অনেকেই জানেন না তা হল, এই সিনেমাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে আমার এবং আমার তিন বোনের (নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ) অনুমতি ছাড়াই।
হুমায়ূন আহমেদের সমস্ত সৃষ্টি এখন তার উত্তরাধিকারদের স্বত্বাধিকারে। আমাদের চার ভাইবোনের অনুমতি ছাড়া যে এই সিনেমাটি মুক্তি দেয়ার কাজ চলছিলো, সেটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত ছিল। যখন এই সিনেমার প্রযোজক জয়া আহসান এই বিষয়ে জানালেন, তিনি সাথে সাথেই আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেন এবং আমাদের চারজনের অনুমতি নেয়ার জন্য আইনগত সব ব্যবস্থা নিলেন। তিনি এই সিনেমার মার্কেটিংসহ বাকি কাজ বন্ধ রাখলেন আমাদের চার ভাইবোনের চুক্তিপত্রে সাইন হওয়া পর্যন্ত।
নিয়ম অনুযায়ী আমাদের অনুমতি ছাড়া দেবী সিনেমার কোন কাজই শুরু হতে পারে না। তারপরও হয়েছে। কিন্তু যখন জয়া আহসান আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং আমাদেরকে তার দিকের ব্যাখ্যা দিলেন, তখন আমাদের মনে হয়েছে -এটা তার দিক থেকে একটা অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। আর তিনি যে এটা সংশোধন করতে চাচ্ছেন এটা একটা দায়িত্বশীল আচরণের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু বেশিরভাগ নির্মাতারা (যারা আমার বাবার সৃষ্টি নিয়ে কাজ করেছেন/করতে যাচ্ছেন) এতটা দায়িত্বশীল আচরণের পরিচয় দেননি অথবা দিচ্ছেন না, তাই আমি কিছু জিনিস স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই- যেন এই জাতীয় ভুল বারবার না হয়।
অনেক নির্মাতাই আমাদেরকে জানিয়েছেন তারা আমার বাবার স্ত্রী-মেহের আফরোজ শাওনকে এককালীন কিছু টাকা দিয়ে অনুমতি নিয়েছেন এবং নাটক নির্মাণ করেছেন। শাওন আমার বাবার ‘ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টির’(গল্প, উপন্যাস, তার সৃষ্ট যেকোনো কিছু ) একমাত্র উত্তরাধিকার না। তাই আমাদের চার ভাইবোনের অনুমতি ছাড়া, শুধুমাত্র শাওনের অনুমতি নিয়ে, হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি নিয়ে কাজ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
কিছু নির্মাতার অজুহাত হল, ‘আপনাদেরকে পাওয়া কঠিন’– আসলেই কি তাই? সিনেমা নির্মাণ করা একটা কঠিন কাজ হতে পারে, কিন্তু ঢাকা শহরে কোন মানুষের সাথে যোগাযোগের উপায় বের করা বেশ সহজ। আমার ফেইসবুক পেইজটা পর্যন্ত ভ্যারিফাইড, তাহলে আর কত সহজ উপায়ে আমার বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চান?
আরেকটা সাধারণ ভুল ধারণা হলো- আমাদের চাচা মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এর অনুমতি নেয়া আর আমাদের চার ভাইবোনের অনুমতি নেয়া একই কথা। আমার মনে হয় এটা খুব স্পষ্ট করা দরকার- মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আমাদের চাচা এবং আমাদের প্রিয়জন, কিন্তু তিনি আমাদের কোন মুখপাত্র অথবা অভিভাবক না এবং হুমায়ূন আহমেদের ‘ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টির রাইট’ নিয়ে আমাদের চার ভাইবোনের হয়ে তিনি কিছু বলার অধিকার রাখেন না।
আশা করি আমার এই লেখাটি কিছু সাধারণ ভুল ধারণা দূর করবে, আর যেই সব নির্মাতারা আমার বাবার সাহিত্য নিয়ে কাজ করতে চান, তারাও নির্মাণের আগে প্রয়োজনীয় আইনগত ধাপগুলো ভাল করে জেনে নিবেন। এটা হতে পারে মিসির আলী, হিমু অথবা আমার বাবার অন্য যেকোনো অনবদ্য সৃষ্টি – সেটা যাই হোক, এইসবই এখন অমূল্য সম্পদ আর তার উত্তরাধিকার (এবং তার সব ধরনের সৃষ্টির বিশাল ভক্ত) হিসেবে আমাদের দায়িত্ব খেয়াল রাখা এইসব যেন সঠিক আর মেধাবী নির্মাতার হাতে পড়ে।
আমার মনে হয়, মাঝে মাঝে ‘না’ বলতে পারাটাও এখন আমাদের জন্য খুব জরুরি। আমি নিশ্চিত হুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা তার কাহিনী নিয়ে তৈরি হাতে গোনা কয়েকটা অসাধারণ কাজই পছন্দ করবে, একশোটা মাঝারি মানের কাজের চেয়ে। আর আসলেই কি প্রত্যেকটা সাহিত্যকর্মকে সিনেমা অথবা নাটক বানানোর প্রয়োজন আছে? আমার বাবাতো এমনিই আমাদের বুকের মধ্যে বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টির জন্য- তার কাহিনী নিয়ে নাটক বা সিনেমা নির্মাণ তো তার অবস্থান পরিবর্তন করছে না আমাদের কাছে।
জয়া আহসানের জন্য শুভ কামনা থাকল। আর আশা করছি অন্য নির্মাতারাও এটাকে সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখবেন, কিভাবে সবার জন্য সম্মানজনকভাবে আমার বাবার ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি নিয়ে কাজ করা যায়। এটা কিন্তু কোন আর্জি না বা অনুরোধ না- ভালোভাবে ‘ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি’ আইন পড়ে দেখলেই বিষয়টি বোঝা যাবে।
( সংগৃহীত)
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
টোটকা
নতুন পাড়ায় আসার পর থেকেই মনটা বড্ড খারাপ শ্রীরূপার। আগের বাড়িটা বেশ অন্ধকার অন্ধকার ছিল। দিনের বেলাতেও জানলা খুলে রাখতে হতো। একতলাতে ঘর হওয়ায় মশাও ছিল খুব। বিশেষ করে এই শীতকালে বড্ড কষ্ট হতো। সারাদিন বাড়ি স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকত...
সে তুলনায় এই বাড়িতে অনেক ভাল আছে ওরা। ওয়ান বি এইচ কে ফ্ল্যাট হলেও একটা সুন্দর ব্যালকনি আছে, সেখানে হুটোপুটি করে রোদ্দুর আসে। ক'টা গাছ ও লাগিয়েছে শ্রীরূপা ওই একচিলতে বারান্দাতে। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর একটা মোড়া নিয়ে ওখানে বসে খবরের কাগজ বা ম্যাগাজিন পড়তে ভাল লাগে।
কিন্তু, ওই কয়েক মুহূর্তই।
তারপর ই কেমন ফাঁকা লাগে সবকিছু! এই মেরেকেটে সাড়ে চারশো স্কোয়ারফিটের বাড়িটাকেই মনে হয় কত্ত বড়! আর কত বেশি সাজানো গোছানো! বড্ড বেশি সাজানো গোছানো!
বছর দুয়েক ধরেই ফ্ল্যাট খুঁজছিল অনীক। ওর মনে হচ্ছিল আগের বাড়িতে থেকেই যেন শ্রীরূপা আরও বেশি একা, শীতল আর সাদাটে হয়ে যাচ্ছে! কিন্তু তারমধ্যেই অতিমারি শুরু হলো আর কথা ওইখানেই চাপা পড়ে গেল। তবে অনীক হাল ছাড়েনি। এইবছর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হবার পরেই ফ্ল্যাট দেখা শুরু করেছিল। তবে পছন্দ হচ্ছিল না কিছু সেভাবে। শেষ পর্যন্ত ওর এক ছোটবেলার বন্ধু, যে কিনা কাছাকাছিই থাকে, সে সন্ধান দিয়েছিল এই ফ্ল্যাটটির। দেখেই পছন্দ হয়ে গেছিল ওদের দুজনেরই।
শ্রীরূপা ভেবেছিল এখানে ও ভাল থাকবে। কিন্তু এখানে এসে আরও একা মনে হচ্ছে নিজেকে। যেন কেউ খোঁজ নেবার নেই! সারাটাদিন একা একা! দুজনের সংসারে আর কতই বা কাজ থাকে! মাসখানেক ধরে ঘর সাজিয়েছে প্রাণভরে।মানে যতটা সম্ভব আর কি! মাসে মাসে লোন কাটে অনীকের... খুব বেশি তো খরচাও করা যায় না!
এমন ফ্ল্যাট - বেশিরভাগ মানুষই কিনে রেখে দিয়েছেন, বাড়ি তালাবন্ধ থাকে। ওরা ছাড়া মাত্র কয়েকটি পরিবার ই এখানে থাকে, যাদের মধ্যে খুব বেশি যাতায়াত নেই। তাই, এখানে এসে নিঃসঙ্গ লাগে খুব। অনীককে ওর সেই ছোটবেলার বন্ধুর কথা জিজ্ঞেস করেছিল ও। বলেছিল একদিন ফ্যামিলি নিয়ে নিমন্ত্রণ করতে। কিন্তু অনীক হেসে বলেছিল "আরে ও পাগলা খুব ব্যস্ত। একটা বিজ্ঞান ক্লাবের সাথে যুক্ত। সোম থেকে শনি অফিস, রবিবার রবিবার বিজ্ঞান নিয়ে সচেতনামূলক শো করে বেড়ায়..."।
চুপ করে গেছিল শ্রীরূপা।
আগের পাড়ার কাকিমা-জ্যেঠিমারা "বৌমা তোমার যে কবে একটা ছেলেপুলে হবে" বলে বলে কানের পোকা খেয়ে নিলেও... এখন তাঁদের কথা মনে পড়ে খুব। ওনারা তো ভালোই চাইতেন। এই যে নিজেরাই গরজ করে অমুক বাবা, তমুক বাবার কাছে নিয়ে যাওয়া, তাবিজ-কবজ... সব করেছেন। শ্রীরূপাও তো মেনেছে সব। ডাক্তার -বদ্যি... জ্যোতিষ... টোটকা... কি হলো?
অনীক দত্তক নেবার কথা বলেছে... ও শোনেনি। শুনতে ইচ্ছে করেনি।
মনে পড়লেই দীর্ঘশ্বাস আসে!
যখন 'সে' এসেছিল, মাত্র কয়েকমাস হল বিয়ে হয়েছে। ভেবেছিল "এখন নয়, ক'দিন পরে আসুক... খুব যত্ন করবে তখন"। কিন্তু সেই 'পরে'টা আর এলোই না! আর ধীরে ধীরে কেমন স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেল শ্রীরূপাও।
স্যাঁতসেঁতে। অচেনা। প্রাণহীন।
আজকাল আবার খুব মরে যাবার ইচ্ছে হয়। সেই আগের মতো। একবার উল্টোপাল্টা ওষুধ খেয়েও ফেলেছিল পাড়ার একজনের একটা অপলকা কথায়। তারপর থেকেই তো অনীক মরিয়া হয়ে পাড়া ছাড়তে চেয়েছিল।
এবারও খুব ইচ্ছে করছে।
তবে ওষুধ না... অন্যকিছু যদি উপায় থাকত...
ফ্যান? পুকুর? আগুন?
না না... আগুন না...
কিন্তু কিছু একটা তো বটেই...
ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ। চমকে উঠল শ্রীরূপা। এই দুপ্পুরবেলা... কে আবার?
"মা, কিছু সাহায্য হবে?" গেট খুলতেই শুনল রূপা। দড়ি পাকানো চেহারার একজন মানুষ। গেরুয়া পোষাক পরা। বয়স বেশি না - চল্লিশ টল্লিশ হবে। মুখ ভর্তি দাড়ি। জটা। একনজরে যেন 'মছলীবাবা'র মতো লাগে।
"না" বলতে সাহস হল না শ্রীরূপার।
কোনোরকমে ফ্রিজের মাথায় রাখা টাকা থেকে দুটো দশটাকার নোট নিয়ে দিল ওনাকে।
"মা, একটা কথা বলি? সন্তান পেটে নয়, মনে ধারণ করতে হয়। মাদার টেরেসাও তো নিঃসন্তান ছিলেন। তাও কি উনি অনেকের মা নন? আর মা সারদা? উনিও কি 'মা' নন? ভেবে দেখো মা। ভেবে দেখো..."
কথা ক'টি বলেই চলে গেলেন উনি।
স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল শ্রীরূপা।
কি বললেন উনি! কিভাবে জানলেন ওর মনের কথা? মনের ব্যথা?
উনি কে?
দৌড়ে বারান্দার কাছে চলে এলো ও। যদি আরেকটিবার দেখা যায় ওনাকে! তাহলে প্রণাম করবে। বলবে, "আপনি ঠিক বলেছেন... মনে ধারণ করতে হয়..."।
কিন্তু, কোত্থাও দেখতে পায়না ওনাকে।
পায়ে পায়ে ঘরে ঢোকে শ্রীরূপা।
অনীককে ফোন করতে হবে। একজন সায়কিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিল অনীক। ও যায় নি। অশান্তি করেছে। ঝগড়াঝাঁটি করেছে। আহত হয়েছে, আঘাত করেছে।
কিন্তু আজ হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে ও পারবে... পারবেই... ভাল থাকতে...
মনে ধারণ করতে হবে...
মনে...
মনে এখন ঝকঝকে রোদ্দুর শ্রীরূপার।
ঘরে চলে এসেছিল ও... বারান্দায় থাকলে দেখতে পেত হাতের বড় ঝোলায় নকল জটা আর গোঁফদাড়ি ঢোকাতে ঢোকাতে ফোন করছেন কেউ, তাঁর বন্ধুকে - এটা বলার জন্য যে "ভাই, আজ একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়... বৌদির বোধহয় মনখারাপ! ওই ইস্যু নিয়েই হয়ত, যেটা তুই বলেছিলি। আমি একটা টোটকা দিয়ে এসেছি, এখন তোর সাপোর্ট লাগবে..."।।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(13-12-2021, 02:00 PM)ddey333 Wrote: টোটকা
নতুন পাড়ায় আসার পর থেকেই মনটা বড্ড খারাপ শ্রীরূপার। আগের বাড়িটা বেশ অন্ধকার অন্ধকার ছিল। দিনের বেলাতেও জানলা খুলে রাখতে হতো। একতলাতে ঘর হওয়ায় মশাও ছিল খুব।.........
দারুন লাগলো... শেষের ব্যাপারটা নাজুক
আহা মছলি বাবা! মনে পড়ে গেলো সেই ডায়লগ - এক হি ব্রম্ভন্ড,এক হি সুরিয়া, এক হি চন্দ্রমা!!
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
সিঙ্গাড়া
ঠাণ্ডা লুচি বারংবার ফেরত পাঠানোয় রাজবাড়ির হালুইকর অনুমতি চেয়েছিলেন রাজসভায় মিষ্টান্ন পাঠাতে। রাজচিকিৎসকের পরামর্শে মধুমেহ রোগাক্রান্ত রাজা অগ্নিশর্মা হয়ে শূলে চড়ানোর হুকুম দিয়েছিলেন হালুইকরকে। অনেক অনুনয় বিনয় করে নিজের প্রাণ রক্ষা করেছেন হালুইকর। রাজা আদেশ দিয়েছেন - হালুইকরকে তিনরাত্রের মধ্যে দেশত্যাগ করতে।
দ্বিতীয় রাত্রে হালুইকরের স্ত্রী ঠিক করেছে দেশত্যাগের আগে একবার দেখা করবে রাজার সাথে। সেইমতো তৃতীয়দিন সকাল বেলা রাজদরবারে এসে প্রণাম জানালো স্বয়ং রাজামশাইকে। রাজসভায় আসার কারণ জিজ্ঞেস করায়, রাজাকে জানায় - সে নাকি এমনভাবে লুচি তরকারি করতে পারে, যা রাজা আধঘন্টা বাদে খেলেও গরম পাবেন। এজাতীয় লুচি এবং তরকারি নাকি কিছুক্ষণ বাদে খাওয়াই দস্তুর।
সন্দিহান রাজা কিঞ্চিৎ কৌতূহলী হয়ে হালুইকরের স্ত্রীকে পাঠালেন পাকশালে। জানিয়ে দিলেন যখন রাজসভা থেকে খবর যাবে তৎক্ষণাৎ পাকশাল থেকে খাবার পৌঁছনো চাই। হালুইকরের স্ত্রী মৃদু হেসে মহারাজকে জানিয়েছিলো - খাদ্যদ্রব্য রাজসভায় তৎক্ষণাৎই পৌঁছবে, কিন্তু অনুগ্রহ করে তিনি যেন কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে খান - অন্যথায় মহামান্য রাজকীয় জিহ্বা পুড়ে যেতে পারে। বিস্মিত মহারাজের সামনে দিয়ে হাস্যমুখে হালুইকরের স্ত্রী চলে গেল পাকশালে।
রাজ-পাচক আলুর তরকারি তৈরি করে পাকশালে দাঁড়িয়ে কাঁপছেন, হুকুম এলেই লুচি ভাজতে হবে। ময়দার তাল মাখা রয়েছে হাতের সামনে। হালুইকরের স্ত্রী পাচককে কটাক্ষ করে বসলো ময়দার তাল নিয়ে। লেচি কেটে লুচি বেলে, কাঁচা ময়দার ভেতর লুচির জন্য তৈরি সাধারণ তরকারি ভরে দিয়ে, সমভুজাকৃতি ত্রিভুজের গড়ন বানিয়ে আড়ষ্ঠ রাজ পাচকের সামনে নিজের আঁচল সামলে শুরু করলো চটুল গল্প।
রাজাজ্ঞা আসতেই তরকারির পুর ভর্তি দশটি ত্রিভুজাকৃতির লুচির ময়দা ফুটন্ত ঘি ভর্তি কড়ায় ফেলে দিয়ে, নিমেষের মধ্যে সোনালী রঙের ত্রিভুজগুলি তুলে নিয়ে স্বর্ণথালায় সাজিয়ে নিজেই চললো রাজসভায়।
মহারাজ এরূপ অদ্ভুত দর্শন খাদ্যবস্তু দেখে স্তম্ভিত। হালুইকরের স্ত্রী অত্যন্ত বিনীতভাবে জানালো - খাদ্যদ্রব্যটির নাম সমভুজা। মহারাজ যেন সম্পূর্ণ বস্তুটি মুখে না ঢুকিয়ে একটি কামড় দিয়ে দেখেন - ঠাণ্ডা না গরম এবং অনুগ্রহ করে স্বাদটি জানান।
মহারাজ স্বাদ জানাননি। তিনি তিনছড়া মুক্তো মালা খুলে হালুইকরের স্ত্রীয়ের হাতে দিয়েছিলেন। রাজবাড়ির হালুইকরের দণ্ডাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিলেন। প্রায় ছ'মাস পর হেসে উঠেছিলেন মহারাজ, শান্তি পেয়েছিলো তামাম প্রজাকুল।
মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। ১৭৬৬ সালে কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভার রাজ-হালুইকর, কলিঙ্গ তথা বর্তমান ওড়িষ্যা থেকে আগত গুণীনাথ হালুইকরের ষষ্ঠপুত্র গিরীধারী হালুইকরের স্ত্রী ধরিত্রী দেবী আবিষ্কার করেছিলেন সিঙ্গাড়া।
শাক্ত সাধক, পরবর্তিকালে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি রামপ্রসাদ, স্বয়ং সন্ধ্যাহ্নিক সেরে প্রতিসন্ধ্যায় বসতেন একথালা সিঙ্গাড়া নিয়ে।
দোলপূর্ণিমার সন্ধ্যায়, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দরবার থেকে বাইশটি সুসজ্জিত হস্তী ভেট নিয়ে গিয়েছিলো উমিচাঁদের কাছে - বাইশটি স্বর্ণথালা ভর্তি বাইশশোটি সিঙ্গাড়া।
ভারতীয় খাদ্য হিসেবে সিঙ্গাড়ার সাথে রবার্ট ক্লাইভের প্রথম সাক্ষাৎ হয়, এই মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রেরই সৌজন্যে।
সিঙ্গাড়ার জন্য ইতিহাস স্বীকৃতি দিয়েছে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে। নাম ভুলে গেছে তাঁর প্রধান হালুইকরের স্ত্রী ধরিত্রী বেহারার।
ইংরিজিতে বলে, কমন সেন্স মেকস্ আ ম্যান আনকমন। ধরিত্রীদেবী সাধারণ বুদ্ধি খাটিয়ে আবিষ্কার করেছিলেন এই অসাধারণ খাদ্যদ্রব্যটির, যেটি সেই ১৭৬৬ সাল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বাংলা তথা সারা ভারতে।
ঐতিহাসিকদের মতে, এর বহু আগে, নবম শতাব্দীতে পারস্যের অধিবাসীরা যব এবং ময়দার তালের সঙ্গে গাজর কড়াইশুঁটি রসুন ও মাংস মেখে সেঁকে খেতো, যাকে বর্তমান সিঙ্গাড়ার জনক হিসাবে ধরা হলেও, সুদূর পারস্য থেকে ভারতবর্ষে এসেও তাঁরা ময়দার তালে মাংসের কুঁচি ঢুকিয়ে সেঁকেই খেতেন। এরও বহুপরে তাঁরা ভারতবর্ষের উত্তরপূর্ব উপকূলে বিভিন্ন মশলা সহযোগে তৈরি আলুর তরকারি, ময়দার ভেতর ঢুকিয়ে ঘিয়ে ভাজার পদ্ধতিতে চমৎকৃত হ'ন।
ডায়বেটিক পেশেন্টদের ঘন ঘন খিদে পায়। চিকিৎসাবিজ্ঞান উন্নত হয়েছে। ডাক্তাররা বলছেন, অনেকক্ষণ অন্তর একসাথে প্রচুর পরিমানে না খেয়ে, ক্যালোরি মেপে কিছুক্ষণ অন্তর অল্পসল্প খাবার খেতে। কিন্তু সেযুগে ডাক্তারবাবুদের হৃদয় ছিলো বিশাল। মধুমেহ রোগীরা তখন তেল ঘি মশলা, ভাজা খেলেও তাঁরা রাগ করতেন না। নিশ্চিতভাবেই আজকের যুগে ডাক্তার বাবুরা আঁতকে উঠবেন যদি দেখেন কোনো ডায়াবেটিক পেশেন্ট প্রতিঘন্টায় সিঙ্গাড়া ওড়াচ্ছেন, তবু, আঁটকানো যায়নি সিঙ্গাড়াকে।
শহুরে অভিজাত পরিবারের বৈঠকখানায় মোটা গদির সোফায় বসা অতিথির থালাই হোক বা প্রত্যন্ত গ্রামের জরাজীর্ণ চায়ের দোকানের সামনে নড়বড়ে বাঁশের বেঞ্চে রাখা তেলচিটে কালো ভাঙ্গা বেতের চুবড়ি - বিকেল সাড়ে চারটেই হোক বা সকাল পৌনে দশটা, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রধান হালুইকরের স্ত্রীর উদ্ভাবনটি সর্বত্র সর্বদা সর্বগামী।
যা রাজসভায় রাজ-সম্মুখে পরিবেশিত হয়, তার কৌলীন্য প্রশ্নাতীত হবে - এই তো স্বাভাবিক।
ভাষাবিদদের মতে, সমভুজা--> সম্ভোজা--> সাম্ভোসা--> সামোসা।
মতান্তরে, সমভুজা--> সম্ভোজা--> সিভুসা--> সিঁঙুরা(নদীয়ার কথ্যভাষার প্রভাবে)--> সিঙ্গাড়া।
(Collected)
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
সিঙ্গাড়া বাঙালী আবিষ্কৃত খাবার!!! সত্যি???
❤❤❤
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(15-12-2021, 12:49 PM)Bichitravirya Wrote: সিঙ্গাড়া বাঙালী আবিষ্কৃত খাবার!!! সত্যি???
❤❤❤
হুমম ..
•
|