Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
(09-11-2021, 08:52 PM)Baban Wrote: আপনি তো অনেকদিন আমার ওই নন- ইরোটিক থ্রেড কিছু কথা ছিল মনে -তে আসেন না.... আমিও কয়েকটি গপ্পো আর ছড়া লেখার চেষ্টা করেছি এর মধ্যে. পারলে সেগুলি পড়ে দেখতে পারেন. আশা করি ভালোলাগবে.. যেমন আগের গুলো লেগেছে ❤
মানসিক ভাবে খুবই বিভ্রান্ত আছি ভাই ! তাই আসতে চাইলেও আসতে পারিনা ! নিজগুনে ক্ষমা করে দিও ! আসবো নিশ্চয় একদিন যেদিন নিজেকে প্রমান করতে পারব !
Posts: 6,161
Threads: 42
Likes Received: 12,437 in 4,169 posts
Likes Given: 5,340
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
09-11-2021, 09:17 PM
(This post was last modified: 09-11-2021, 09:30 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(09-11-2021, 09:01 PM)dada_of_india Wrote: মানসিক ভাবে খুবই বিভ্রান্ত আছি ভাই ! তাই আসতে চাইলেও আসতে পারিনা ! নিজগুনে ক্ষমা করে দিও ! আসবো নিশ্চয় একদিন যেদিন নিজেকে প্রমান করতে পারব !
ঠিকাছে দাদা... কোনো ব্যাপার নয়. আগে নিজে ঠিক থাকুন.... নিজে ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগেনা তা সে যতই ভালোলাগার জিনিস হোক. আপনার ব্যাক্তিগত সেই কারণ আমি মোটেও জানতে চাইনা... কিন্তু আশা করি সব ঠিক হয়ে যাক ❤
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
(09-11-2021, 08:46 PM)dada_of_india Wrote: ভালো লেগেছে জেনে আপ্লুত হলাম ! লেখা প্রায় ছেরে দিয়েছি ! তবুও মনের খেয়ালে কিছু কিছু লিখে ফেলি !
Love you Dada.
You only know it, what my words mean for you and me.
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
হেমন্তের দিন, শেষ হয় সহজেই
সন্ধ্যা আসে,ইচ্ছেগুলো রয়ে যায় মনের কাছে ।
তুলসী তলা নতুন করে সাজে,শঙ্খ বাজে
মানুষের মন ,মানুষ বোঝে ?
ওরা খবরের কাগজে,গল্প খোঁজে ।
মুখোশ কিন্ত সুযোগ বোঝে ।
শর্ত রেখেছো শত,রূঢ় শব্দে, হৃদয় করেছো ক্ষত ।
ভালোবাসার দিনে, ভালোবাসোনি কখনো ।
রঙের দিনে, রঙিন করোনি কখনো ।
বৃষ্টির দিনে,চোখের জলে বন্যা হয়েছিল,দেখোনি ।
অনেক কিছু দেখোনি ,বোঝনি,
তবুও পৃথিবী নতুন করে সাজে
দীর্ঘ বছর জেগে থাকে তারা ।
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
ছোটবেলায় ধাঁধা তৈরি ও ধাঁধা সলভ করার খেলা খেলতাম আমরা।
অনেক সময় অনেক বড়রাও, দাদু, ঠাকুমা, দিদি, দাদা গোছের লোকেরাও এই খেলায় যোগ দিত। তো এরকমই এক অফ পিরিয়ডে কলেজের এক স্যার চক দিয়ে বোর্ডে একটা লম্বামতো লাইন টানলেন তারপর আমাদের বললেন কোনভাবে এই লাইনটিকে স্পর্শ না করে এই লাইনটিকে ছোট করতে হবে। আমরা অনেকেই চেষ্টা করলাম, লাইন না স্পর্শ করে, না মুছে, কিভাবে ছোট করা যায়! কিন্তু না কোনওভাবে বিষয়টা মাথায় এল না! শেষে আমরা পারছি না দেখে স্যার নিজে ওটা সলভ করে দিলেন। উনি একটা চক দিয়ে ওই লম্বা লাইনটার পাশে আর একটা ওর চেয়েও লম্বা লাইন টানলেন আর বললেন দেখো এবার আগের লাইনটা ছোট হয়ে গেছে। আমরাও খেয়াল করে দেখলাম একদম ঠিক, আগের লাইনটার পাশে একটা বড় লাইন ড্র করে দেওয়াতে আগের লাইনটা ছোট লাগছে ওটার তুলনায়। সবাই ধন্য ধন্য করলাম স্যারের বুদ্ধির.......
শৈশবের সেই ধাঁধার ক্লাসে যখন আমরা সবাই স্যারের উইটের প্রশংসায় ফেটে পড়ছি, তখন হঠাৎ আমাদেরই মাঝ থেকে একটি বেঁটে করে গেঁড়েপাকা ছেলে উঠে দাঁড়িয়েছিল, ভীষন শান্ত কিন্তু দৃঢ়গলায় স্যারকে জিজ্ঞেস করেছিল,
-স্যার এটাতে তো পাশে একটা বড় লাইন টানা হল মাত্র, কিন্তু আগের লাইনটা ছোট হল না তো!
স্যার একটু থমকে গিয়ে বলেছিলেন,
-ইয়ে মানে, হ্যাঁ, মানে না, সে হয়নি বটে কিন্তু আগের লাইনটি ছোট তো লাগছে!
ছেলেটি আবার বলেছিল
-সে আমাদের চোখের ভুল স্যার।
আসলে ভুলটা শুধু চোখের নয়! মনেরও, যেটা সেদিন ওই বন্ধুটির চোখে পড়েছিল, আমাদের আজও পড়ে না। সেদিন স্যার চলে যাওয়ার পর সবাই মিলে সেই ছেলেটির যুক্তির খিল্লি উড়িয়েছিলাম। কিন্তু যোগাযোগ থাকার জন্য জানি সেই ছেলেটি তার আইডিওলজি নিয়ে আজও ভীষণ সুখী, আমাদের চেয়ে আজও ভীষণ কমপ্লিট ও। অনেক বছর হল জব পাচ্ছে না এক বন্ধু, কষ্টেই থাকে, এই কষ্টটা দ্বিগুন লম্বা হয়ে যায় যখন দেখে আশেপাশের বন্ধুরা চাকরি করছে। ভীষণ মনকষ্ট নিয়ে একদিন ভোরবেলা একা পার্কে হাঁটছিল এই বন্ধুটি হঠাৎ কলেজের সেই ছেলেটার সঙ্গে দেখা। কি রে অরিঘ্ন হেব্বি চাপে আছিস মনে হচ্ছে, কী কেস? পুরনো বন্ধুকে দেখতে পেয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় আমাদের কলেজের সেই পুরনো গেঁড়েপাকা ছেলেটি! এখনো সেই তরতাজা ছটফটে ভাবটা রয়ে গিয়েছে তার। অরিঘ্ন পুরো ব্যাপারটা নিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলে, বলে, সবাই চাকরি পাচ্ছে, আর আ..
অরিকে থামিয়ে দিয়ে ও বলল
-তোর প্রবলেমটা কি? তোর চাকরি না পাওয়া! নাকি বন্ধুদের চাকরি পাওয়া! যা মনে হচ্ছে
আজ যদি সব বন্ধুদের চাকরি চলে যায় তুই এতটা কষ্ট পাবি না আর? বলেই হা হা হা করে হেসে উঠল! আমরাও ভেবে দেখলাম অনেকটাই ঠিক! আমার বন্ধুরা যখন বেকার ছিল তখন অরিঘ্নর এতটা খারাপ লাগত না! অরি ওকে বলল,
- আচ্ছা তুইও তো বেসরকারি ফার্মে লিখিস টিখিস শুনলাম তা তুই এত রিল্যাক্স কি করে?
আবার হাসতে হাসতে বলল,
-নিজের পাশে লম্বা আর একটা লাইন দেখে নিজেকে ছোট ভাবা বন্ধ করে দে, দেখবি তুইও পুরো কুল।
আমার সেই ছোটবেলার কলেজের স্যারের করা ধাঁধার প্রশ্ন আর তার উত্তরের সঙ্গে আমাদের জীবনের কী মিল! আমরা প্রথমে কোন কিছু অর্জন করি নিজের চেষ্টায়, তারপর সেটা নিয়ে প্রথমে কিছুটা খুশিও হই, দেন কামস দ্য কম্পারিজন, তুলনা, ব্যস গল্প শেষ। যেই আমরা নিজের অবস্থার সাথে অন্যদের অবস্থার তুলনা শুরু করে বড় হতে চাই অমনি নিজেকে ছোট, অসম্পূর্ণ মনে হতে থাকে আমাদের। আমাদের পাশের লম্বা লাইনটা আমরাই সব সময় টানি। হয়ত আমার বাড়িতে ২১ ইঞ্চির একটা টিভি আছে, বেশ বড়, দারুণ ছবি আমার এতেই বেশ ভালোভালো বিনোদন হচ্ছে কিন্তু যেই পাশের ফ্ল্যাটে রবীনদা ৩২ এর একটা এল ই ডি কিনে আনলেন অমনি আমার টিভিটা আমার কাছে ছোট মনে হতে শুরু করল...
পাশে একটা লম্বা লাইন টানলেই আগের লাইনটা ছোট হয় না, ছোট মনে হয় মাত্র! নিজের নিজের সফলতা ও বিফলতাগুলোকে কারও সঙ্গে তুলনা না করে নিজে উপভোগ করুন নিজে শোধরান, ব্যস দেখবেন ভালো আছেন, খুব ভালো আছেন।
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
*বাবা সবসময় পিছিয়ে থাকে,*
*জানিনা কেন* ![[Image: 1f914.png]](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t34/1/16/1f914.png)
১. মা ১০ মাস বহন করেন, বাবা 25 বছর ধরে বহন করেন, উভয়ই সমান, তবুও কেন বাবা পিছিয়ে আছেন তা জানি না।
২। মা বিনা বেতনে সংসার চালায়, বাবা তার সমস্ত বেতন সংসারের জন্য ব্যয় করেন, উভয়ের প্রচেষ্টাই সমান, তবুও কেন বাবা পিছিয়ে আছেন তা জানি না।
৩. মা আপনার যা ইচ্ছা তাই রান্না করেন, বাবা প্রয়োজনীয় যা চাই তা কিনে দেন, তাদের উভয়ের ভালবাসা ই সমান, তবে মায়ের ভালবাসা উচ্চতর হিসাবে দেখানো হয়েছে। জানিনা কেন বাবা পিছিয়ে।
4. ফোনে কথা বললে প্রথমে মায়ের সাথে কথা বলতে চাই, কষ্ট পেলে ‘মা’ বলে কাঁদি। আপনার প্রয়োজন হলেই আপনি বাবাকে মনে রাখবেন, কিন্তু বাবার কি কখনও খারাপ লাগেনি যে আপনি তাকে অন্য সময় মনে করেন না? ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে ভালবাসা পাওয়ার ক্ষেত্রে, প্রজন্মের জন্য, বাবা কেন পিছিয়ে আছে জানি না।
5. আলমারি ভরে যাবে রঙিন শাড়ি আর বাচ্চাদের অনেক জামা-কাপড় দিয়ে। কিন্তু বাবার জামা খুব কম, নিজের প্রয়োজনের তোয়াক্কা করে না, তারপরও জানি না কেন বাবা পিছিয়ে আছে।
6. মায়ের অনেক সোনার অলঙ্কার আছে, কিন্তু বাবার একটাই আংটি আছে যেটা তার বিয়ের সময় দেওয়া হয়েছিল। তবুও মা কম গহনা নিয়ে অভিযোগ করতে পারে আর বাবা করেন না। তারপরও জানি না কেন বাবা পিছিয়ে।
7. বাবা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেন পরিবারের যত্ন নেওয়ার জন্য, কিন্তু যখন স্বীকৃতি পাওয়ার কথা আসে, কেন জানি না তিনি সবসময় পিছিয়ে থাকে।
8। মা বলে, আমাদের এই মাসে কলেজের টিউশন দিতে হবে, দয়া করে আমার জন্য উৎসবের জন্য একটির বেশি শাড়ি কিনবে না, অথচ বাবা নতুন জামাকাপড়ের কথাও ভাবেননি। দুজনেরই ভালোবাসা সমান, তবুও কেন বাবা পিছিয়ে আছে জানি না।
9. বাবা-মা যখন বুড়ো হয়ে যায়, তখন বাচ্চারা বলে, মা ঘরের কাজ দেখাশোনা করার জন্য অন্তত উপকারী, কিন্তু তারা বলে, বাবা অকেজো।
বাবা পিছনে কারণ তিনি পরিবারের মেরুদণ্ড। তার কারণেই আমরা নিজেদের মতো করে দাঁড়াতে পারছি। সম্ভবত, এই কারণেই তিনি পিছিয়ে আছে । ...!!!!
একজন বাবা হিসাবে সমস্ত বাবাদেরকে উৎসর্গ করছি ![[Image: 2764.png]](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t6c/1/16/2764.png) ![[Image: 1f64f.png]](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t80/1/16/1f64f.png) ![[Image: 1f64f.png]](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t80/1/16/1f64f.png) ![[Image: 1f64f.png]](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t80/1/16/1f64f.png)
Posts: 1,402
Threads: 12
Likes Received: 2,481 in 829 posts
Likes Given: 1,054
Joined: Nov 2019
Reputation:
387
(11-11-2021, 10:19 AM)ddey333 Wrote: আমার সেই ছোটবেলার কলেজের স্যারের করা ধাঁধার প্রশ্ন আর তার উত্তরের সঙ্গে আমাদের জীবনের কী মিল! আমরা প্রথমে কোন কিছু অর্জন করি নিজের চেষ্টায়, তারপর সেটা নিয়ে প্রথমে কিছুটা খুশিও হই, দেন কামস দ্য কম্পারিজন, তুলনা, ব্যস গল্প শেষ। যেই আমরা নিজের অবস্থার সাথে অন্যদের অবস্থার তুলনা শুরু করে বড় হতে চাই অমনি নিজেকে ছোট, অসম্পূর্ণ মনে হতে থাকে আমাদের। আমাদের পাশের লম্বা লাইনটা আমরাই সব সময় টানি। হয়ত আমার বাড়িতে ২১ ইঞ্চির একটা টিভি আছে, বেশ বড়, দারুণ ছবি আমার এতেই বেশ ভালোভালো বিনোদন হচ্ছে কিন্তু যেই পাশের ফ্ল্যাটে রবীনদা ৩২ এর একটা এল ই ডি কিনে আনলেন অমনি আমার টিভিটা আমার কাছে ছোট মনে হতে শুরু করল...
পাশে একটা লম্বা লাইন টানলেই আগের লাইনটা ছোট হয় না, ছোট মনে হয় মাত্র! নিজের নিজের সফলতা ও বিফলতাগুলোকে কারও সঙ্গে তুলনা না করে নিজে উপভোগ করুন নিজে শোধরান, ব্যস দেখবেন ভালো আছেন, খুব ভালো আছেন।
ওয়াও , দারুন একটা লেখা , আমার মনে হয় আমরা প্রায় সবাই এই কথা জানি কিন্তু মানি না । ভবিষ্যতে মেনে চলার চেষ্টা করবো ।
Posts: 390
Threads: 3
Likes Received: 899 in 319 posts
Likes Given: 115
Joined: Jan 2019
Reputation:
119
অণু গল্প – পরিবর্তন
স্বপন কুণ্ডু
তমাল আর তমালিকার বিয়ে হয়ে গেলো। খুব ধুমধাম করেই বিয়ে হল। অনেক আত্মীয় বন্ধু এসেছিলো। তমালকে সুন্দর করে সাজা সাধারণ ছেলের মতোই লাগছিলো। আর তমালিকাকে বেগুনি রঙের বেনারসী শাড়িতে সুন্দর মোহময়ী লাগছিলো। সবাই ওদের দুজনকে বার বার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল আর ওদের ভালবাসা দেখে অবাক হচ্ছিলো।
বিয়ের কয়েক মাস পরে, তমালিকা একটি প্রস্তাব নিয়ে স্বামীর কাছে আসে। ও বলে যে ও কয়েকদিন আগে একটি ম্যাগাজিনে পড়েছিলো, কীভাবে ওরা ওদের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পারে। তমাল আগ্রহ প্রকাশ করলে তমালিকা বলে, ওরা দুজনেই একটা করে তালিকা বানাবে যাতে অন্য জনের যেসব ব্যবহার পছন্দ হয় না সেসব লেখা থাকবে। দুজনেই এই তালিকা বানাবে। তারপরে দুজনে আলোচনা করবে কীভাবে তাদের ব্যবহার বদলাতে পারে যাতে অন্যের সেই ব্যবহার পছন্দ হয়। এই কাজ দুজনে সততার সাথে করলে দুজনের জীবন আরও সুখী হবে।”
তমাল রাজি হয়। দুজনে দুটো আলাদা ঘরে বসে। দুজনেই সারাদিন ধরে চিন্তা করে আর লেখে। পরদিন ব্রেকফাস্টের টেবিলে তমালিকা বলে, এবার সময় হয়েছে ওদের আলোচনা করার। তমাল নির্লিপ্ত ভাবে সায় দেয়। তমালিকা শুরু করে। ও একটা তিন পাতার লিস্ট বের করে। তাতে তমালের যত দোষ গুণ সব লেখা। এর সব কিছু তমাল নিজেও জানতো না। স্ত্রীর মনের কথা শুনতে শুনতে ওর চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। তমালিকা থেমে যায় আর জিজ্ঞাসা করে যে তমালের ছখে জল কেন। তমাল উত্তর দেয় যে ওর এই বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগছে আর তমালিকা যেন পুরোটা পড়ে ।
তমালিকা আরও কিছুখন পরে নিজের লেখা পড়া শেষ করে আর তমালকে বলে ওর কাগজ টা পড়তে। তমাল নিঃশব্দে ওর কাগজটা তমালিকার দিকে এগিয়ে দেয় আর ওকেই পড়তে বলে।
তমালিকা পড়তে শুরু করে। ওতে লেখা ছিল,
তোমাকে বলার মত আমার কিছুই নেই। আমার কাছে তুমি একদম পারফেক্ট মানুষ। এই তুমিকেই আমি ভালো বেসেছি। আর আমি চাই এই তুমিই যেন সারাজীবন আমার সাথে থাকো। তোমার কোন পরিবর্তন হলে সেই তুমি এই তুমি থাকবে না। তাই আমি তোমার কিছুই বদলাতে চাই না।
তমালিকা দু মিনিট চুপ করে থাকে। তারপরে নিজের তিন পাতার লিস্ট কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলে আর তমালের বুকে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকে।
সংগৃহীত ও অনুবাদ করা।
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(12-11-2021, 09:07 PM)TumiJeAmar Wrote: অণু গল্প – পরিবর্তন
স্বপন কুণ্ডু
তমাল আর তমালিকার বিয়ে হয়ে গেলো। খুব ধুমধাম করেই বিয়ে হল। অনেক আত্মীয় বন্ধু এসেছিলো। তমালকে সুন্দর করে সাজা সাধারণ ছেলের মতোই লাগছিলো। আর তমালিকাকে বেগুনি রঙের বেনারসী শাড়িতে সুন্দর মোহময়ী লাগছিলো। সবাই ওদের দুজনকে বার বার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল আর ওদের ভালবাসা দেখে অবাক হচ্ছিলো।
বিয়ের কয়েক মাস পরে, তমালিকা একটি প্রস্তাব নিয়ে স্বামীর কাছে আসে। ও বলে যে ও কয়েকদিন আগে একটি ম্যাগাজিনে পড়েছিলো, কীভাবে ওরা ওদের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পারে। তমাল আগ্রহ প্রকাশ করলে তমালিকা বলে, ওরা দুজনেই একটা করে তালিকা বানাবে যাতে অন্য জনের যেসব ব্যবহার পছন্দ হয় না সেসব লেখা থাকবে। দুজনেই এই তালিকা বানাবে। তারপরে দুজনে আলোচনা করবে কীভাবে তাদের ব্যবহার বদলাতে পারে যাতে অন্যের সেই ব্যবহার পছন্দ হয়। এই কাজ দুজনে সততার সাথে করলে দুজনের জীবন আরও সুখী হবে।”
তমাল রাজি হয়। দুজনে দুটো আলাদা ঘরে বসে। দুজনেই সারাদিন ধরে চিন্তা করে আর লেখে। পরদিন ব্রেকফাস্টের টেবিলে তমালিকা বলে, এবার সময় হয়েছে ওদের আলোচনা করার। তমাল নির্লিপ্ত ভাবে সায় দেয়। তমালিকা শুরু করে। ও একটা তিন পাতার লিস্ট বের করে। তাতে তমালের যত দোষ গুণ সব লেখা। এর সব কিছু তমাল নিজেও জানতো না। স্ত্রীর মনের কথা শুনতে শুনতে ওর চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। তমালিকা থেমে যায় আর জিজ্ঞাসা করে যে তমালের ছখে জল কেন। তমাল উত্তর দেয় যে ওর এই বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগছে আর তমালিকা যেন পুরোটা পড়ে ।
তমালিকা আরও কিছুখন পরে নিজের লেখা পড়া শেষ করে আর তমালকে বলে ওর কাগজ টা পড়তে। তমাল নিঃশব্দে ওর কাগজটা তমালিকার দিকে এগিয়ে দেয় আর ওকেই পড়তে বলে।
তমালিকা পড়তে শুরু করে। ওতে লেখা ছিল,
তোমাকে বলার মত আমার কিছুই নেই। আমার কাছে তুমি একদম পারফেক্ট মানুষ। এই তুমিকেই আমি ভালো বেসেছি। আর আমি চাই এই তুমিই যেন সারাজীবন আমার সাথে থাকো। তোমার কোন পরিবর্তন হলে সেই তুমি এই তুমি থাকবে না। তাই আমি তোমার কিছুই বদলাতে চাই না।
তমালিকা দু মিনিট চুপ করে থাকে। তারপরে নিজের তিন পাতার লিস্ট কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলে আর তমালের বুকে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকে।
সংগৃহীত ও অনুবাদ করা।
খুব ছোট আকারে বলে দিলেন যে যাকে ভালোবাসো তার দোষ গুন নিয়েই তাকে ভালোবাসা উচিত।
আপনি কি তাহলে লেখা শুরু করলেন?
❤❤❤
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
12-11-2021, 09:35 PM
(This post was last modified: 13-11-2021, 09:54 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(12-11-2021, 09:07 PM)TumiJeAmar Wrote: অণু গল্প – পরিবর্তন
স্বপন কুণ্ডু
তমাল আর তমালিকার বিয়ে হয়ে গেলো। খুব ধুমধাম করেই বিয়ে হল। অনেক আত্মীয় বন্ধু এসেছিলো। তমালকে সুন্দর করে সাজা সাধারণ ছেলের মতোই লাগছিলো। আর তমালিকাকে বেগুনি রঙের বেনারসী শাড়িতে সুন্দর মোহময়ী লাগছিলো। সবাই ওদের দুজনকে বার বার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল আর ওদের ভালবাসা দেখে অবাক হচ্ছিলো।
বিয়ের কয়েক মাস পরে, তমালিকা একটি প্রস্তাব নিয়ে স্বামীর কাছে আসে। ও বলে যে ও কয়েকদিন আগে একটি ম্যাগাজিনে পড়েছিলো, কীভাবে ওরা ওদের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পারে। তমাল আগ্রহ প্রকাশ করলে তমালিকা বলে, ওরা দুজনেই একটা করে তালিকা বানাবে যাতে অন্য জনের যেসব ব্যবহার পছন্দ হয় না সেসব লেখা থাকবে। দুজনেই এই তালিকা বানাবে। তারপরে দুজনে আলোচনা করবে কীভাবে তাদের ব্যবহার বদলাতে পারে যাতে অন্যের সেই ব্যবহার পছন্দ হয়। এই কাজ দুজনে সততার সাথে করলে দুজনের জীবন আরও সুখী হবে।”
তমাল রাজি হয়। দুজনে দুটো আলাদা ঘরে বসে। দুজনেই সারাদিন ধরে চিন্তা করে আর লেখে। পরদিন ব্রেকফাস্টের টেবিলে তমালিকা বলে, এবার সময় হয়েছে ওদের আলোচনা করার। তমাল নির্লিপ্ত ভাবে সায় দেয়। তমালিকা শুরু করে। ও একটা তিন পাতার লিস্ট বের করে। তাতে তমালের যত দোষ গুণ সব লেখা। এর সব কিছু তমাল নিজেও জানতো না। স্ত্রীর মনের কথা শুনতে শুনতে ওর চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। তমালিকা থেমে যায় আর জিজ্ঞাসা করে যে তমালের ছখে জল কেন। তমাল উত্তর দেয় যে ওর এই বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগছে আর তমালিকা যেন পুরোটা পড়ে ।
তমালিকা আরও কিছুখন পরে নিজের লেখা পড়া শেষ করে আর তমালকে বলে ওর কাগজ টা পড়তে। তমাল নিঃশব্দে ওর কাগজটা তমালিকার দিকে এগিয়ে দেয় আর ওকেই পড়তে বলে।
তমালিকা পড়তে শুরু করে। ওতে লেখা ছিল,
তোমাকে বলার মত আমার কিছুই নেই। আমার কাছে তুমি একদম পারফেক্ট মানুষ। এই তুমিকেই আমি ভালো বেসেছি। আর আমি চাই এই তুমিই যেন সারাজীবন আমার সাথে থাকো। তোমার কোন পরিবর্তন হলে সেই তুমি এই তুমি থাকবে না। তাই আমি তোমার কিছুই বদলাতে চাই না।
তমালিকা দু মিনিট চুপ করে থাকে। তারপরে নিজের তিন পাতার লিস্ট কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলে আর তমালের বুকে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকে।
সংগৃহীত ও অনুবাদ করা।
খুব সুন্দর !!
•
Posts: 390
Threads: 3
Likes Received: 899 in 319 posts
Likes Given: 115
Joined: Jan 2019
Reputation:
119
আমরা সেই ছোটবেলা থেকে খরগোশ আর কচ্ছপের গল্প পড়ে আসছি। দৌড় প্রতিযোগিতায় খরগোশ মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার কথা ভেবেছিলো আর বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ফলে সে হেরে যায়।
মরাল -
1. Slow but steady wins the race.
2. Never underestimate the weakest opponent.
তবে গল্প এখানেই শেষ হয়নি।
বাড়ি ফিরে খরগোশ অনেক চিন্তা করে (Self introspection)। আর বুঝতে পারে ও ওভার কনফিডেন্ট ছিলো আর ব্যাপারটাকে ভীষণ হালকা ভাবে নিয়েছিলো। খরগোশ আবার কচ্ছপকে ডাকে আর বলে দ্বিতীয়বার প্রতিযোগিতার জন্য। কচ্ছপ রাজী হয়ে যায়। এবার দৌড়ানোর সময় খরগোশ আর ঘুমায় না আর সহজেই রেস জিতে যায়।
মরাল - Fast and consistent will always beat the slow and steady.
গল্প এখানেও শেষ হয় না।
এবার কচ্ছপ কিছু চিন্তা করে আর বোঝে যে সাধারণ ভাবে সে কখনও খরগোশকে হারাতে পারবে না। আরও একদিন চিন্তা করে কচ্ছপ খরগোশকে আর একবার রেসের জন্য বলে। খরগোশ মহানন্দে রাজী হয়ে যায়। কচ্ছপ শুধু বলে দৌড়ের রাস্তা ও ঠিক করবে। খরগোশ তাতেও রাজী হয়।
যথাসময়ে রেস শুরু হয়। খরগোশ পূর্ন গতিতে দৌড়াতে শুরু করে। হঠাৎ খরগোশ দৌড় থামিয়ে দেয় কারণ ওর সামনে একটা নদী। ফিনিসিং পয়েন্ট নদীর ওপারে। খরগোশ মাথায় হাত দিয়ে নদীর ধারে বসে থাকে। কচ্ছপ ধীরে ধীরে আসে, সাঁতরে নদী পার হয়ে যায় আর আস্তে আস্তে লক্ষে পৌঁছে যায়।
মরাল - First identify your core competency and then change the playing field accordingly.
গল্প এখানেও শেষ হয় না।
এতদিনে খরগোশ আর কচ্ছপ বন্ধু হয়ে গিয়েছে। খরগোশ আর ওর ক্ষমতার বড়াই করে না। অনেক গল্প হয় দুজনের মধ্যে। দুজনেই ভাবে শেষ প্রতিযোগিতা যদি অন্য ভাবে করা যায়। দুজনে আবার দৌড় শুরু করে। তবে এবার খরগোশ কচ্ছপ কে পিঠে নিয়ে নদীর ধার পর্যন্ত দৌড়ায়। এবার কচ্ছপের পালা। ও নদীতে নেমে পড়ে আর খরগোশকে পিঠে নিয়ে সাঁতার কাটে। ওপারে পৌঁছে খরগোশ আবার কচ্ছপকে পিঠে নিয়ে দৌড়ায়। এবার ওরা দুজনেই রেকর্ড সময়ে লক্ষে পৌঁছে যায়।
মরাল - It's good to be individualy briliant, however teamwork gives better result.
নোট - অবশ্যই এটা আমার লেখা নয়। 1998 সালে একটা ট্রেনিং এর সময় Teamwork আর Complimentary Skill বোঝানোর জন্য আমাদের এই গল্প শোনানো হয়েছিলো।
আর রেস এখনও শেষ হয়নি......
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
*সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে৷*
এক পত্রিকা দপ্তরে চিঠি এসেছে ৷ মোহনলাল বললেন, 'আমাকে চিঠিগুলো দাও, আমি ওই কোণের টেবিলে গিয়ে বসি ৷ মোহনলাল পড়ছেন আর চটপট উত্তর লিখছেন :
প্র: কম খরচে সংসার চালাবার উপায় কি ?
উ: ঠেলে ৷
প্র: আমি যখনই যা খাই ঢেউ ঢেউ করে ঢেঁকুর ৷ ভদ্র সমাজে লজ্জার ৷ ওষুধেও হচ্চে না কিছু ৷
উ: খাওয়ার পর এক পেপার ওয়েট গিলে ফেলবেন ৷ চিরশান্তি ৷
প্র: আমার মা, আমার পছন্দের মেয়েটিকে কিছুতেই বিয়ে করতে দিচ্ছে না ৷ আমার কি করা উচিত ?
উ: বিয়ে করে ঘরে ভরে দিন, মা যথাসময়ে কেটে পড়বেন ৷ অটোমেটিক ৷ শীত গ্রীষ্ম এক জায়গায় থাকতে পারে না ৷ অসম্ভব ৷
প্র: মানুষ এত নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে কেন ?
উ: বাঘ-ভাল্লুকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে ৷
প্র: হাড়ে দুব্বো গজানো কাকে বলে ?
উ: বিয়ে করাকে ৷
প্র: আচ্ছা প্রেমের সাথে কার তুলনা করব ? গোলাপ না পদ্মের ?
উ: প্যাঁকাটির ৷
প্র: আয়ু বাড়াতে গেলে কি করতে হবে ?
উ: হাঁপানি বাড়াতে হবে ৷
প্র:হিন্দিগান শুনলে আমার চুল খাড়া হয়ে ওঠে ৷
উ: কামিয়ে ফেলুন ৷
প্র:আমগাছ থেকে আম পাড়ার সহজ উপায় কি ?
উ: গাছটাকে কেটে মাটিতে শুইয়ে দিন ৷
প্র: লোকে টিভি দেখে কেন ?
উ: দেখে না তো! সামনে বসে থাকে!
প্র: ভালোবাসা কাকে বলে ?
উ: ভালো বাসা বলে দুটো ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম, ডাইনিং স্পেশ, ঝুল বারান্দা ৷
প্র: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরটা খুব ঢিস ঢিস করে, কি করা যায় ?
উ: বিকেলে উঠবেন ৷ আপনি সূর্য নন, নক্ষত্র ৷ নক্ষত্ররা সব রাতেই ওঠে ৷
প্র: জলের বদলে কি খাওয়া যায়? জলে ভীষন জার্মস ৷
উ: মেঘ ধরে খান ৷
প্র: আমার এমন অম্বলের রোগ যে চুমু খেলেও অম্বল হয়ে যাচ্ছে৷
উ: ঠোঁটে এন্টাসিড মাখিয়ে খান৷
প্র: বৃদ্ধবয়েসে মানুষের কি নিয়ে থাকা উচিত, ধর্ম ?
উ: না, শৈশব নিয়ে ৷
প্র: মারা যাওয়াটা কী খুব কষ্টের?
উ: বেঁচে থাকার চেয়ে আরামের ৷
প্র: মরার সময় মুখে গঙ্গাজল দেওয়া হয় কেন ?
উ: যাতে পরের বার আমাশা নিয়ে জন্মাতে পারে ৷
প্র: সহজ কথা সহজ ভাবে বলতে পারেন না কেন ?
উ: জিলিপি খাই বলে ৷
*"এর নাম সংসার" থেকে সংগৃহীত*
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
short story: ফরোয়ার্ড-পাসে গোল
বিতান সিকদার
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
অশান্তিটা পাকল রানামামা লাঞ্চ করে অফিসে নিজের টার্মিনালে ফেরার পর। মেলের ইনবক্স খোলা। সাতষট্টিটা নতুন মেল। ঢেকুরটা তুলতে গিয়ে গিলে ফেললেন। আসার কথা পঞ্চাশটা, চলে এল সাতষট্টিটা! কিছু ক্ষণ হাঁ করে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আরও দুটো ঢুকে এল। এ কী! রানামামা ভাগ্নে আবিরকে ফোন লাগালেন, “কী রে, এ তো এসেই চলেছে।”
“আসতে দাও।”
“ফাজলামি মারিস না।”
বহু দিন ধরেই রানামামার মেলবক্স ভর্তি হয়ে নোটিফিকেশন এসে চলেছে— হয় খালি করুন, না হয় পয়সা দিয়ে আরও জায়গা কিনুন। খালি করা অসম্ভব। রানামামার যাবতীয় তথ্য ও নথি মেলে ঠাসা। তার মধ্যে এলআইসি-র প্রিমিয়াম সার্টিফিকেটও যেমন আছে, তেমনই পনেরো বছর আগের আদিসপ্তগ্রাম ভ্রমণের ছবিও আছে। কম্পিউটারে ভাইরাস ধরতে পারে, হার্ড ডিস্ক বা পেনড্রাইভ বিগড়োতে পারে এবং সিডি হারাতে পারে ধরে নিয়ে রানামামা মেলেই ভরসা রাখেন।
এখন, ভর্তি হয়ে গেলে কী করণীয় জানতে চাওয়ায় আবির বলেছিল— “অন্য মেল আইডি ক্রিয়েট করে এগুলো সেখানে ফরোয়ার্ড করে দাও।”
ভাল বুদ্ধি! কিন্তু কাঁহাতক ধরে ধরে পাঁচ হাজার মেল ফরোয়ার্ড করা যায়। এক সঙ্গে অনেকগুলো কী করে পাঠানো যায় জানতে চাওয়ায় লায়েক ভাগ্নে ‘গেঁড়িগুগলি’ বলে একটা সফট্ওয়্যারের খোঁজ দেয়। তাতে বিনা খরচে রোজ পঞ্চাশটা করে মেল একবারে ফরোয়ার্ড করা যাবে। আর তার বেশি চাইলে পয়সা দিতে হবে।
পঞ্চাশটাই যথেষ্ট ভেবে ইনস্টল করা হল। একেবারে প্রথম থেকে পঞ্চাশটা সিলেক্ট করে নতুন মেলের ঠিকানা টাইপ করা হল। অতঃপর ‘গো’। দিব্যি গুটিগুটি চলে যাচ্ছে দেখে সন্তুষ্ট হয়ে লাঞ্চে যাওয়া হল, এবং ফিরে এসে সাতষট্টিটা নতুন মেল দেখে হতবাক হওয়া হল!
আপাতত বাহাত্তর নম্বর ঢুকছে।
একটু ইতস্তত করলেন রানামামা। নিজে নিজেই… যাই হোক, যেহেতু তারই পুরনো মেল থেকে নতুন মেলে এসে ঢুকছে, ফলে শাপে বর। শুধু ব্যাপারটাকে কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না, এই যা। এক বার ক্যানসেল করার অপশনও খুঁজলেন। পেলেন না।
যাকগে, দ্বিপ্রাহরিক কাজে মন দিলেন রানামামা— এবং সেই কাজ মাথায় উঠল বিকেল চারটে তেত্রিশে। অ্যাকাউন্টসের নরোত্তম দাস এসে রীতিমতো বাজখাঁই গলায় বললেন, “শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম পাঠিয়েছেন? তাও আমায়? হঠাৎ কৃষ্ণ আপনাকে এ মতি দিলেন কেন?”
নরোত্তম একে কড়াপাকের নাস্তিক, তায় ঠোঁটকাটা! রানামামা “হা মধুসূদন!” বলার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। বহু প্রাচীন এক পুঁথি থেকে এই একশো আট নাম প্রায় আট বছর আগে ছবি তুলে মেলে সেভ করে রেখেছিলেন। গন্ডগোলটা ঠিক কোথায় পেকেছে, সেটা আন্দাজ করে তড়িৎ গতিতে পুরনো মেলটা খুলেই মামার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেল।
মেল শুধু রানামামার সিলেক্ট করা নতুন অ্যাকাউন্টেই যাচ্ছে না— যত্র তত্র সর্বত্র ফরোয়ার্ড হয়ে চলেছে।
আশু বিপদ আঁচ করে আমতা আমতা করলেন, “না মানে ঠিক…”
“মানে-টানে আপনি বুঝুন। ওই কেষ্টই হোক আর বিষ্টুই হোক, আমার ঠিকানায় দয়া করে পাঠাবেন না। যত সব বস্তাপচা বিষয় নিয়ে— এই জন্যই দেশটার আর কিছু…”
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
রানামামার কান গরম হয়ে গেলেও চুপ করে রইলেন। বৈষ্ণবের রাগতে নেই। কিন্তু পরিস্থিতি রাগরাগিণীর ধারকাছ দিয়েও না গিয়ে সোজা বিরক্তিতে চলে গেল। তখন ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা। রানামামার সেজমাসি অর্থাৎ কিনা আবিরের সেজদিদু তাঁর মোবাইলে রঘুরাজপুরে তৈরি ‘একলাখি’ পটচিত্রের ছবি পেয়ে ফোন করে জিজ্ঞেস করছেন, “হ্যাঁ লা, ওই কী বলে বুটিক না কী যেন— ওই সব খুললি না কি?”
বিরক্তি পর্যবসিত হল ভয়ে যখন একতলার ফ্ল্যাটের অঘোর বড়াল ফোন করে জানতে চাইলেন, “আপনার রেডিফ মেইলের ইউজ়ার আইডি আর পাসওয়ার্ড আমায় পাঠাচ্ছেন কেন মশাই? টুকে রাখব?”
জরুরি তলবে সবাই পৌনে ছ’টাতেই বাগবাজার ঘাটে এসে জুটেছে। রানামামা হাঁ করে গঙ্গার দিকে তাকিয়ে বসে আছেন। আবির কাঁচুমাচু। পল্লব রানামামার ফোনটা নিয়ে দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল, “এ সফ্টওয়্যার পেলে কোথায়?”
রানামামার চটকা ভাঙল। আবিরের দিকে তাকিয়ে ফুঁসে উঠলেন, “এই যে, গুণধর! পেয়ারের ভাগ্নে আমার। দ্বাপরে চিমটি কেটেছিলাম। তখন আমায় শেষ করেও আশ মেটেনি। কলিতেও বাঁশ দিয়ে চলেছে।”
বংশী আবিরকে একটা মৃদু ধমক দিয়ে বলল, “কোত্থেকে যে এ সব আপদ… যাক গে, পুলু আগে ওটা ডিঅ্যাক্টিভেট কর।”
পল্লব কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে বলল, “পারছি না।”
“ও কী কথা!”
ফটিক বলল, “দাঁড়া দাঁড়া, হিসেব ছিল পঞ্চাশটা যাওয়ার— তাই তো?”
“হ্যাঁ।”
“বেশি গেলে?”
“পয়সা কাটবে?”
“সব্বোনাশ! তা হলে এই যে একশো সাতচল্লিশ নম্বর যাচ্ছে, এতে কাটছে না কিছু?”
“কী ভাবে?” রানামামার মাথায় বাজ পড়ল।
আবির ঢোঁক গিলে বলল, “তাই তো! আচ্ছা, তুমি কোনও ব্যাঙ্ক ডিটেলস কিছু…”
“কই না তো।”
“কখনও অনলাইন ট্রানজ়্যাকশন করেছ ফোনে? মানে কার্ড দিয়ে…”
“হ্যাঁ, তা তো… মানে হামেশাই…”
“সে সব এরা কোনও ভাবে রিড করে টাকা কেটে নিচ্ছে না তো?”
মামা শিউরে উঠলেন, “এটাই বাকি ছিল!” তার পর ফের গঙ্গার দিকে তাকিয়ে হাল ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, “গেল… প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, সব চলে গেল!”
পল্লব আরও কষে মেল থামানোর উপায় খোঁজা শুরু করল এবং সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রায় লুকিয়ে থাকা ডিঅ্যাক্টিভেট বোতামটা খুঁজে পেয়ে, সেটা টিপে দিয়ে তার পর নিঃশ্বাস নিল। পৌনে আটটায় নিকুঞ্জর দোকান থেকে চা খেয়ে সবাই বাড়ি চলে গেল…
আর সোয়া আটটায় রানামামা দেখলেন— দুশো তেরো নম্বর মেল নতুন অ্যাকাউন্টে এসে ঢুকছে।
সাড়ে আটটায় ফোনে কনফারেন্স। রানামামা চেঁচাচ্ছেন, “অশৈলী ব্যাপার। থামেনি! পুলু, থামেনি।”
আবার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। পল্লব বলল, “তুমি কম্পিউটারে বসে রিমোট ডেস্কটপ অন করো শিগগিরি। ওহ্, কী যে পাকিয়ে বসলে…”
ফটিক, আবির, বংশী যে যার বাড়িতে স্ট্যান্ডবাই মোডে মেশিন অন করে বসে। ডিনার মাথায়।
প্রায় সোয়া ঘণ্টা গরু খোঁজার পর সবেধন নীলমণি ‘রিমুভ’ বোতামটা পাওয়া গেল। পল্লব সেটা টিপে দিতেই স্ক্রিনে দেখা গেল – ‘গেঁড়িগুগলি রিমুভড’। ঘরে তখন শুধু টেবিল ঘড়ির টিকটিক। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি। রানামামা ভয়ে ভয়ে বললেন, “আবার কিছু হবে না তো?”
পল্লব বলল, “লক্ষ রাখছি।”
এক মিনিট, দু’মিনিট, পাঁচ মিনিট, পনেরো মিনিট— নাহ্, আর কোনও মেল কোথাও যাচ্ছে না।
নিশ্চিন্ত!
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
তবে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়া গেল না। আপদ যেতে যেতেও ছোবল মেরে গেছে। ন’টা দশে রানামামার বসের ফোন। ওপারে বজ্রপাত, “ছি ছি, আপনি এতটা ভিন্ডিকটিভ? না হয়, মোহনবাগান হেরেইছে এ বার। তাই বলে সাত বছর আগের ম্যাচের কথা তুলে সেই সংক্রান্ত এই জঘন্য গালিগালাজ দেওয়া লেখাটা পাঠিয়ে এ বারের জয় উদযাপন করছেন? ড্যাম ইট বোস, ড্যাম ইট…”
“স্যর…আমি…”
“কী আমি? একটা কথা প্লিজ় জেনে রাখুন। অফিশিয়াল মেল চালাচালির একটা ডেকোরাম আছে। আপনি সেখানে…”
“শুনুন স্যর…দয়া করে…”
“আপনি শুনুন। যে নিম্নরুচির পরিচয় আপনি দিয়েছেন…”
বাকিটা রানামামা স্রেফ নীরবে শুনে গেলেন।
রাত সাড়ে এগারোটাতেও সব ঠিকঠাক আছে কি না জানার জন্য ভাগ্নেরা মিলে মামাকে ফোন লাগাল। ডেভলপমেন্ট শুনে সবাই চুপ।
আবিরের প্রতি সম্ভাষণে ফটিকের মুখে তখন শ-কার ব-কার চলে আসছিল। নেহাত রানামামা লাইনে ছিলেন বলে…
শেষমেশ বংশী বলল, “যাকগে, আপদ বিদেয় করা গেছে। কাল রোববার। তুমি পরশু অফিসে ঢুকেই আগে মিটিয়ে নিয়ো।”
ফটিক রাগটা গিলে ফেললেও পল্লব আবিরের ওপর চেঁচিয়ে চলেছে, “দেখেছিস আপদ, কী জুটিয়েছিলি? তোর কাছে রাস্তা জানতে চাইল। তুইও আগুপিছু না দেখে এই দিকে ঠেলে দিলি…” আর ‘এই দিক’ যে আসলে কোন দিক, সেটা জানার জন্য রাত একটা চল্লিশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল।
তুলকালাম কাণ্ড!
রানামামি অর্থাৎ কি না রানামামার স্ত্রী রঙ্কিণী কালী হয়ে গেছেন। খাঁড়া খুঁজছেন! পারলে মামারই বুকের ওপর উঠে দাঁড়ান।
মামি উঠেছিলেন জল খেতে। হঠাৎ দেখতে পান, টেবিলে রাখা রানামামার ফোনে আলো জ্বলে উঠছে। কী ব্যাপার দেখতে গিয়ে দেখেন হোয়াটস্অ্যাপ। প্রেরক কোনও এক নিরুপমা। লিখছেন— “অরিন্দম, আপনার মেল পেয়ে মনটা ভরে গেল। সেই গান, ‘হৃদয়ের এ কূল ও কূল’। সত্যি, এখনও মনে আছে আপনার? স্বরলিপিটা এখনও অত যত্নে রেখে দিয়েছেন?”
ব্যস! নিমেষে আগুন!
রাত দুটোর সময় রানামামা মামিকে বোঝাচ্ছেন, “আমি না…আমি কিছু করিনি…”
“আমি কাল সকালেই চলে যাব। ছি ছি, তোমার লজ্জা করে না? আমার শ্যাম-কুল ভাসিয়ে তুমি ও দিকে দু-কূল সামলাচ্ছ?”
“আরে শোনো শোনো। আগে পুরো ব্যাপারটা…”
“আমি আর কিচ্ছু শুনতে চাই না।”
•
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 65,964 in 27,777 posts
Likes Given: 23,840
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
সকাল থেকে মামির মুখ গোমড়া। মেল ট্রেনের মতো ফ্ল্যাট জুড়ে হাঁটাহাঁটি করছেন। পিছনে মামা। পরনে তোয়ালে। মুখে সাবান।
দাড়িটা এখনও কেটে উঠতে পারেননি। বলে চলেছেন, “লক্ষ্মীটি, একটু বোঝার চেষ্টা করো। সব ওই আবিরের জন্য…”
“খবরদার,” বাজ পড়ল, “ওর ওপর একদম দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে না।”
সাড়ে নটার মধ্যে ভাগ্নেমণ্ডলী ফোন পেয়ে চলে এল। এসেই পল্লব কম্পিউটারে বসে গিয়েছে। বংশী বলছে, “আশ্চর্য! আবার শুরু?”
ফটিক পাদপূরণ করছে, “হ্যাঁ, তিনশো তিয়াত্তর নম্বর মেল যাচ্ছে।”
আবির মাথা চুলকে বলছে, “এ ভাবে হবে না। সাইবার সেলে জানাতে হবে। পরিস্থিতি খুবই বিচ্ছিরি জায়গায় চলে যাচ্ছে।”
মামা তখন বিলাপ করছেন, “সঞ্চয় গেল, চাকরি গেল, সংসার গেল। আমায় কেউ একটা ল্যাঙট দে… ওরে কেউ আমায়…”
মামি ব্যাগ গুছোচ্ছেন। মামা কাতর কণ্ঠে বলতে চেষ্টা করছেন, “আরে উত্তরপাড়া সঙ্গীত সম্মেলনে আলাপ। তুমিও তো ছিলে। এ স্বরলিপি ওই-ই তো পাঠিয়েছিল, আমি চেয়েছিলাম বলে। সেটা মেলে রয়ে গেছে। আবার কাল রাত্তিরে ওর কাছেই চলে গেছে। তা, এতে আমি কী করতে পারি বলো…”
“কোনও কৈফিয়ত...” মামির কথায় বাধা পড়ল।
বেল বাজছে। মামা খুলে দেখলেন একটি যুবক। বললেন, “আরে অতনু, এসো এসো।”
ছোকরার হাতে মিষ্টির প্যাকেট। ঢুকেই ঢিপ করে একটা প্রণাম। রানামামা অপ্রস্তুত, “আরে আরে…”
পাড়ার ছেলে। ক্লাস টুয়েলভে তাকে পলিটিক্যাল সায়েন্সটা মামা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে ছোকরা রানামামাকে ‘মাস্টারমশাই’ বলে ডাকে। বলল, “কাল রাতে গঙ্গায় গেছিলাম, মাস্টারমশাই।”
“কেন বাবা?”
“ফেলে দেব বলে।”
“কাকে… না মানে কী?”
“কবিতার ডায়রিগুলো…” মামা জানেন অতনু কবিতা লেখে। আঁতকে উঠে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন?”
“কেউ তো আজ অবধি একটাও ছাপল না। আর কাল একটা লিটল ম্যাগাজ়িনের সম্পাদক যে ভাষায় রিফিউজ় করল, তাই আর লিখব না ভেবেছিলাম…”
ঘরে সবাই চুপ। অতনু বলে চলেছে, “এমন সময় আপনার একটা মেল ঢুকল ফোনে। তাতে দেখি ড্রাইভে একটা সিনেমা পাঠিয়েছেন। লাভিং ভিনসেন্ট।”
রান্নাঘরে কাপ-ডিশের খটখটানি বন্ধ হয়ে গেছে। অতনু বলে চলেছে, “ভ্যান গঘের জীবন নিয়ে সেই অসাধারণ অ্যানিমেটেড ছবি। কী মনে করে জানি না, গঙ্গার ঘাটে বসেই পুরো সিনেমাটা মোবাইলে দেখে ফেললাম। জানেন মাস্টারমশাই, এর পর আর কবিতার ডায়রিগুলো ফেলা হল না। আপনি বাঁচিয়ে দিলেন…”
ছেলেটার গলা কাঁপছে, “অত বড় এক জন শিল্পীর সারা জীবনে একটা মাত্র ছবি বিক্রি হয়েছিল। তাও তো সে এঁকে গিয়েছে…”
রানামামার চোখ ছলছলে। অতনু বলছে, “যে সময়টা, ঠিক যে সময়টা আমি হেরে যাচ্ছিলাম, পড়ে যাচ্ছিলাম— আপনি হাত ধরে হ্যাঁচকা টানে আমায় তুলে দাঁড় করিয়ে দিলেন।”
মামির মুখ ঢলঢলে। পুরো ফ্ল্যাট নিশ্চুপ। শুধু ভিতরের ঘর থেকে পল্লবের কি-বোর্ডে খটখট করার আওয়াজ আসছে।
অতনু ‘হা কৃষ্ণ’ গোছের মুখ করে রানামামার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। বলছে, “কর্মেই আমাদের অধিকার, ফলে নয়— এ কথা আপনার মতো করে আর কে বোঝাতে পারত? হলামই না হয় অ্যাপার্টমেন্টের সিকিয়োরিটি। দেখবেন, আমার কবিতা এক দিন ছেপে বেরোবেই। মানুষ এক দিন…” অতনুর গলা ধরে আসছে, “আর আমার প্রথম কবিতার বই আমি আপনাকে…”
বাকি কথাটা শেষ করতে না দিয়েই রানামামা অতনুকে জড়িয়ে ধরলেন। দাড়িটা কোনও মতে কেটে উঠতে পারলেও তোয়ালেটা এখনও ছাড়তে পারেননি। এক হাতে সেটার গিঁট চেপে ধরে আর-এক হাতে অতনুকে ধরে রয়েছেন। কাঁপা গলায় বিড়বিড় করছেন, “চা খেয়ে যাবে, চা খেয়ে যাবে।”
রান্নাঘরের দরজায় মামি আঁচল দিয়ে চোখ মুছছেন।
ফটিক বলছে, “ব্র্যাভো!”
আবির বলছে, “সাবাশ!”
বাইরের রাস্তায় রোববার সকালের কোলাহল বাড়ছে। রোদ্দুর কমলা হয়ে উঠছে।
ভিতরের ঘর থেকে পল্লবের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, “পেয়েছি…পেয়ে গেছি…”
++++++++++++++++++
•
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
16-11-2021, 05:55 PM
(This post was last modified: 16-11-2021, 05:56 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(13-11-2021, 04:24 AM)TumiJeAmar Wrote: আমরা সেই ছোটবেলা থেকে খরগোশ আর কচ্ছপের গল্প পড়ে আসছি। দৌড় প্রতিযোগিতায় খরগোশ মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার কথা ভেবেছিলো আর বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ফলে সে হেরে যায়।
মরাল -
1. Slow but steady wins the race.
2. Never underestimate the weakest opponent.
তবে গল্প এখানেই শেষ হয়নি।
বাড়ি ফিরে খরগোশ অনেক চিন্তা করে (Self introspection)। আর বুঝতে পারে ও ওভার কনফিডেন্ট ছিলো আর ব্যাপারটাকে ভীষণ হালকা ভাবে নিয়েছিলো। খরগোশ আবার কচ্ছপকে ডাকে আর বলে দ্বিতীয়বার প্রতিযোগিতার জন্য। কচ্ছপ রাজী হয়ে যায়। এবার দৌড়ানোর সময় খরগোশ আর ঘুমায় না আর সহজেই রেস জিতে যায়।
মরাল - Fast and consistent will always beat the slow and steady.
গল্প এখানেও শেষ হয় না।
এবার কচ্ছপ কিছু চিন্তা করে আর বোঝে যে সাধারণ ভাবে সে কখনও খরগোশকে হারাতে পারবে না। আরও একদিন চিন্তা করে কচ্ছপ খরগোশকে আর একবার রেসের জন্য বলে। খরগোশ মহানন্দে রাজী হয়ে যায়। কচ্ছপ শুধু বলে দৌড়ের রাস্তা ও ঠিক করবে। খরগোশ তাতেও রাজী হয়।
যথাসময়ে রেস শুরু হয়। খরগোশ পূর্ন গতিতে দৌড়াতে শুরু করে। হঠাৎ খরগোশ দৌড় থামিয়ে দেয় কারণ ওর সামনে একটা নদী। ফিনিসিং পয়েন্ট নদীর ওপারে। খরগোশ মাথায় হাত দিয়ে নদীর ধারে বসে থাকে। কচ্ছপ ধীরে ধীরে আসে, সাঁতরে নদী পার হয়ে যায় আর আস্তে আস্তে লক্ষে পৌঁছে যায়।
মরাল - First identify your core competency and then change the playing field accordingly.
গল্প এখানেও শেষ হয় না।
এতদিনে খরগোশ আর কচ্ছপ বন্ধু হয়ে গিয়েছে। খরগোশ আর ওর ক্ষমতার বড়াই করে না। অনেক গল্প হয় দুজনের মধ্যে। দুজনেই ভাবে শেষ প্রতিযোগিতা যদি অন্য ভাবে করা যায়। দুজনে আবার দৌড় শুরু করে। তবে এবার খরগোশ কচ্ছপ কে পিঠে নিয়ে নদীর ধার পর্যন্ত দৌড়ায়। এবার কচ্ছপের পালা। ও নদীতে নেমে পড়ে আর খরগোশকে পিঠে নিয়ে সাঁতার কাটে। ওপারে পৌঁছে খরগোশ আবার কচ্ছপকে পিঠে নিয়ে দৌড়ায়। এবার ওরা দুজনেই রেকর্ড সময়ে লক্ষে পৌঁছে যায়।
মরাল - It's good to be individualy briliant, however teamwork gives better result.
নোট - অবশ্যই এটা আমার লেখা নয়। 1998 সালে একটা ট্রেনিং এর সময় Teamwork আর Complimentary Skill বোঝানোর জন্য আমাদের এই গল্প শোনানো হয়েছিলো।
আর রেস এখনও শেষ হয়নি......
অসাধারণ লাগলো... . লক্ষ্যে পৌছানো পর্যন্ত থেমো না তো বললেন কিন্তু লক্ষ্যে পৌছাবো কেমনে সেটাই বলেননি
❤❤❤
•
|