Thread Rating:
  • 51 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL কিছু কথা ছিল মনে
(03-11-2021, 09:15 PM)Jupiter10 Wrote:
একজনের ভূতুড়ে অভিজ্ঞতাকে কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।তাও আবার ছন্দ নিয়ে। নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখেন কবি মশাই। ভুতের গল্প পড়ে থাকলেও কবিতা এই প্রথম তাও আবার সিরিয়াস ভূতের কবিতা। বিশেষ করে দাদুর অংশটা দুবার পড়লাম। দ্বিতীয়বার ভয় পাওয়াবে বৈকি।



                                                                       "ধুর ছাই কেন এলাম একা?
                                                       আমি সত্যিই আস্ত বোকা"


                                                      "[b]তবু একটা কথা মানতেই হয়
                                                    সবচেয়ে সেরা হলো ভুতেরই ভয়!"
[/b]
                                                                    সেরা লাইন


অনেক ধন্যবাদ জুপিটার দা..... গপ্প তো লিখলাম বেশ কিছু.... তাই এবারে নতুন কিছু ট্রাই করলাম  Tongue
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(03-11-2021, 08:34 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ ❤ তোমাদের ভাল লাগছে জেনে আমার ভালো লাগছে  Shy
ভুত এমনই একটা বিষয় এটাকে এড়িয়ে যাওয়া সহজ নয়... ছোটবেলায় হোক বা বড়োবেলায়... একটু কেমন কেমন করেই  Tongue

তা কেমন অভিজ্ঞতা? আড্ডা থ্রেডে গল্পকারে লিখতে পারো.... অবশ্য কোনো সমস্যা না থাকলে.

সমস্যা তো আছে মশাই.... আমার জীবনের বেশিরভাগ অভিজ্ঞতায় কোন না কোন হারামীচো_ , পাগলাচো_ , বোকাচো_, বন্ধু আছে  Dodgy banghead

তাই চাইলেও লিখতে পারবো না  Dodgy

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(03-11-2021, 09:22 PM)Bichitravirya Wrote: সমস্যা তো আছে মশাই.... আমার জীবনের বেশিরভাগ অভিজ্ঞতায় কোন না কোন হারামীচো_ , পাগলাচো_ , বোকাচো_, বন্ধু আছে  Dodgy banghead

তাই চাইলেও লিখতে পারবো না  Dodgy

❤❤❤

মানে তুমি এই ভয় পাচ্ছ যে ওই দা দা রা   Big Grin এখানে এসব পড়ে তোমায় চিনিয়া ফেলিতে পারেন..... তাহলে তুমি চাইলে ব্যাক্তিগত ভাবে জানাতে পারো. মানে বুঝতেই পারছো....... আসলে ভুতের কাহিনীর আলাদাই একটা ইয়ে আছে  Big Grin
অবশ্য তাতেও অসুবিধা হলে কোনো ব্যাপার নয়..... আমি পার্সোনাল ব্যাপারে জানতেও চাইনা তুমি জানো.
Like Reply
(03-11-2021, 09:21 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ জুপিটার দা..... গপ্প তো লিখলাম বেশ কিছু.... তাই এবারে নতুন কিছু ট্রাই করলাম  Tongue

বাস্তব জীবনের ভূতুড়ে গল্প শুনতে চাইছিলাম। Sleepy



Like Reply
(03-11-2021, 09:41 PM)Jupiter10 Wrote: বাস্তব জীবনের ভূতুড়ে গল্প শুনতে চাইছিলাম। Sleepy

যদি অভিজ্ঞতা হয় কোনোদিন
না হয় গল্প বলবো সেদিন  Big Grin
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(03-11-2021, 09:07 PM)ddey333 Wrote: ডেকেছিলাম একটু আগে , বাকি কথা বলা ঠিক হবে না ... Big Grin

তা সেই ভুত কি আমার গল্প আজও পড়ছে? নাকি সাথে অন্য কারোর শরীরে ঢুকে তার মাধ্যমে কমেন্টও করছে? Big Grin ভুত তো অনেক কিছুই করতে পারে তাইনা  Tongue
Like Reply
সাহস কবিতাটা পড়লাম। এটা কিন্তু সম্পূর্ণ বাস্তব যে একলা রাত্রে ঘরে ফিরলে ঠিক এই রকমই অনুভূতি হয়।অন্ধকার তখন নানান রূপ নেয়। প্রেতাত্মা তখন সজাগ হয়। পড়ে বেশ গা গরম ভাব অনুভব করলাম :D । সত্যিই বেশি সাহস ভালো নয়।



[+] 1 user Likes Jupiter10's post
Like Reply
(03-11-2021, 10:58 PM)Jupiter10 Wrote: সাহস কবিতাটা পড়লাম। এটা কিন্তু সম্পূর্ণ বাস্তব যে একলা রাত্রে ঘরে ফিরলে ঠিক এই রকমই অনুভূতি হয়।অন্ধকার তখন নানান রূপ নেয়। প্রেতাত্মা তখন সজাগ হয়। পড়ে বেশ গা গরম ভাব অনুভব করলাম :D । সত্যিই বেশি সাহস ভালো নয়।

আবারো ধন্যবাদ জুপিটার দা ❤
আপনি ও আপনাদের মতন পাঠক পাশে থাকলেই ব্যাস... আর কি চাই  happy

আপনি যে রোমান্টিক গল্প নিয়ে ভাবছিলেন তার কি হলো? আমি মোটেও তাড়াহুড়ো করতে বলবোনা..... যখন মন চাইবে ও সময় পক্ষে থাকবে তখনি নিয়ে আসুন নতুন গল্প. অপেক্ষায় থাকবো ❤
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(03-11-2021, 11:30 PM)Baban Wrote: আবারো ধন্যবাদ জুপিটার দা ❤
আপনি ও আপনাদের মতন পাঠক পাশে থাকলেই ব্যাস... আর কি চাই  happy

আপনি যে রোমান্টিক গল্প নিয়ে ভাবছিলেন তার কি হলো? আমি মোটেও তাড়াহুড়ো করতে বলবোনা..... যখন মন চাইবে ও সময় পক্ষে থাকবে তখনি নিয়ে আসুন নতুন গল্প. অপেক্ষায় থাকবো ❤

অশেষ ধন্যবাদ বাবান দা। রোম্যান্টিক গল্প আসবে যথা সময়ে। এগুলো শেষ করে নতুন গল্প লিখবো। Shy



[+] 1 user Likes Jupiter10's post
Like Reply
(04-11-2021, 11:22 AM)Jupiter10 Wrote: অশেষ ধন্যবাদ বাবান দা। রোম্যান্টিক গল্প আসবে যথা সময়ে। এগুলো শেষ করে নতুন গল্প লিখবো। Shy

একদম.... কোনো তাড়াহুড়ো নেই..... নিজের ব্যাক্তিগত কাজ ও চলতে থাকা গল্প শেষ করে তবেই নতুন গল্প লিখুন.  গল্পের একটা আইডিয়া আগের থেকে ঠিক করে রাখবেন তারপরে সেই অনুযায়ী এগোনো আর নতুনত্ব সংযোজন. অপেক্ষায় থাকবো  Heart
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
[Image: 20211103-013902.jpg]


মনে আছে সেই দিনগুলো
চাদর চাপিয়ে গায়ে


ঘিরে বসতাম ভাই বোনেরা
শান্ত শীতল সন্ধেটায়


কখনো জেঠু কখনো বাবা
কখনো বা ঠাকুমা


আবার কখনো মেসো মাসি
কিংবা প্রিয় ছোটমামা........

(বাকিটা পড়তে আগের পৃষ্ঠায় যান)
ভুত চতুর্দশী স্পেশাল 
Like Reply
(03-11-2021, 09:27 PM)Baban Wrote: মানে তুমি এই ভয় পাচ্ছ যে ওই দা দা রা   Big Grin এখানে এসব পড়ে তোমায় চিনিয়া ফেলিতে পারেন..... তাহলে তুমি চাইলে ব্যাক্তিগত ভাবে জানাতে পারো. মানে বুঝতেই পারছো....... আসলে ভুতের কাহিনীর আলাদাই একটা ইয়ে আছে  Big Grin
অবশ্য তাতেও অসুবিধা হলে কোনো ব্যাপার নয়..... আমি পার্সোনাল ব্যাপারে জানতেও চাইনা তুমি জানো.

অবশ্যই বলবো, আপনাদের না বললে আমি আর কাদের বলবো.... তবে pm করে বলবো ( মানে পুরো সত্যি ঘটনা কয়েক বাক্যে) ? নাকি বন্ধুর পার্ট কেটে একটু রঙ মিশিয়ে গল্পের আকারে বলবো?  Shy

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(04-11-2021, 05:44 PM)Bichitravirya Wrote: অবশ্যই বলবো, আপনাদের না বললে আমি আর কাদের বলবো.... তবে pm করে বলবো ( মানে পুরো সত্যি ঘটনা কয়েক বাক্যে) ? নাকি বন্ধুর পার্ট কেটে একটু রঙ মিশিয়ে গল্পের আকারে বলবো?  Shy

❤❤❤

অবশ্যই pm করেই বলো.... আর যখন ব্যাক্তিগত ভাবে জানাচ্ছ.. তখন আর রঙ মেশানোর কি দরকার? সত্যিটাই একদম বলো. No color only real Big Grin
Like Reply
[Image: 20211104-112702.jpg]
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(04-11-2021, 05:52 PM)Baban Wrote: অবশ্যই pm করেই বলো.... আর যখন ব্যাক্তিগত ভাবে জানাচ্ছ.. তখন আর রঙ মেশানোর কি দরকার? সত্যিটাই একদম বলো. No color only real Big Grin

তাহলে মিষ্টি মূহুর্তের আপডেট টার একটা গতি করে নিই তারপর pm করে বলবো চার পাঁচ জন কে  Shy

(04-11-2021, 06:18 PM)Baban Wrote:
[Image: 20211104-112702.jpg]

শুভ দীপাবলি এই ফোরামের সকলকে  Heart

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(04-11-2021, 06:39 PM)Bichitravirya Wrote: তাহলে মিষ্টি মূহুর্তের আপডেট টার একটা গতি করে নিই তারপর pm করে বলবো চার পাঁচ জন কে  Shy


শুভ দীপাবলি এই ফোরামের সকলকে  Heart

❤❤❤

ওকে..... একদম জমিয়ে রসিয়ে বলো ইয়ে মানে লিখো. আসল ঘটনার মজাই আলাদা... যদিও যার সাথে হয় সেই জানে মজা না সাজা  Big Grin

Wishing u and every readers a happy and prosperous Diwali
Like Reply
এখানে একটা ভূতের গল্প আপলোড করতে চাই বাবান দা যদি অনুমতি দেন তো।



[+] 1 user Likes Jupiter10's post
Like Reply
(04-11-2021, 10:46 PM)Jupiter10 Wrote: এখানে একটা ভূতের গল্প আপলোড করতে চাই বাবান দা যদি অনুমতি দেন তো।

অবশ্যই...... একশো বার!!❤ এটা কি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে নাকি আপনার লেখা?
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
                                                                                                                                     কালী পুজোর অমাবস্যা রাত
                                                                                                                                             by- Jupiter10
                                                                                                                                     (বাস্তব অভিজ্ঞতা অবলম্বনে)


বীরভূম জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে কালীপূজো দেখতে এসেছে সমরেশ। সুদূর কলকাতা শহর থেকে। এখানে তার এক দূর সম্পর্কের জ্যাঠা মশাই থাকেন। বাবাকে তিনি বহুবার অনুরোধ করে ছিলেন তাদের এই গ্রামে আসবার জন্য। তা বাবার উপযুক্ত সময় না হওয়ার কারণে সমরেশ একাই এখানে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। সে শুনেছে এই গ্রামে কালীপূজো নাকি খুব ধূমধামে হয়।

এমনিতেই ছোট থেকে কলকাতা শহরের জাঁকজমক পূর্ণ কালীপূজো দেখে এসেছে সে। তাই গ্রামের পুজো দেখবার ইচ্ছা জেগেছে তার। ছোট বেলা থেকেই গ্রাম ভালো লাগেলেও সেভাবে গ্রাম বেড়ানোর সুযোগ হয়ে ওঠেনি কখনও। এখন পড়াশোনা শেষ করে মনমত চাকরি পাওয়ার আশায় বসে রয়েছে। তাই গ্রাম বেড়ানোর সুযোগ হাত ছাড়া করেনি সে।
বিকেলবেলায় গ্রামে ফেরা থেকে জ্যাঠা মশাইয়ের ছোট ছেলে রাজেশ কে সঙ্গে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেরিয়েছে সে। অজ পাড়া গ্রাম যাকে বলে। প্রচুর গাছপালা,ধান ক্ষেত, পুকুর দিয়ে ঘেরা এই গ্রাম। গরু,ছাগল,ভেড়ার ডাক সর্বত্র শুনতে পাওয়া যায়। গ্রামের বাতাসও বিশুদ্ধ।কলকাতা শহরের মতো দূষণ নেই এখানে। গ্রামের মানুষজনও খুব সাদাসিধে এবং মিশুকে। রাজেশের দুই বন্ধু অনিল আর প্রহ্লাদও খুব ভালো ছেলে। তারাও সমরেশের গ্রাম ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছে।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা নেমে এলেও গ্রাম ঘোরার আশ মেটেনা সমরেশের। দাদা রাজেশ বলেছে আগামীকাল সকাল বেলা তাকে সাইকেলে করে বাকী গ্রাম গুলো ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে।
সে দেখছে, কলকাতা শহরের থেকে এখানে সন্ধ্যা নামে খুব দ্রুত। এখন ঘড়িতে প্রায় সাড়ে ছয়টা বাজলেও চারিদিক কেমন অসিত অন্ধকার নেমে এসেছে। কলকাতার মতো চারিদিক ঝিকিমিক আলো নেই এখানে। আধুনিকতার ছোঁয়াও নেই এখানে বলতে গেলে। তবে সিমেন্টের ঢালাই রাস্তা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক পোলের উপরে ফিলামেন্টের বাল্ব লাগানো রয়েছে ওতেই রাতের অন্ধকার খানিকটা প্রশমিত হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ সংযোগ কেবলমাত্র অবস্থাপন্ন মানুষদের বাড়িতেই রয়েছে। গরিব মানুষদের বাড়িতে হ্যারিকেন বাতি জ্বলছে।
সন্ধ্যা নামার পর গ্রামের নীরব অন্ধকার দেখে সমরেশের খানিকটা মন খারাপ তৈরি হলেও রাজেশের কালীমন্দিরের উৎসবের কথা শুনে সেটা দূর হয়ে যায়। কালীপুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামের মানুষদের উচ্ছাস তাদের মুখ দেখলেই বোঝা যায়। তাদের উৎসাহের মধ্যেই বোঝা যায় যে গ্রামের লোকেদের আনন্দ উৎসবের মুহূর্ত কেবলমাত্র পুজো পার্বণের দিন গুলিতেই। দুর্গাপুজো অনেক ব্যয়বহুল বলে এই গ্রামে হয়না। তবে কালীপুজোর জৌলুশ খুব। পাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকেও লোকের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকে। বর্ণ জাতি নির্বিশেষে এই পুজো হয় এখানে। গ্রামের সব ধরণের মানুষই অংশ নেয় এতে।
 
সমরেশের দাদা, তাকে বলেছে বাড়ি ফিরে কিছু খেয়ে পোশাক বদলে তারা সেই কালী মন্দিরে যাবে।
সেই মতো অন্ধকার নামার পর তারা বাড়ি ফিরে সন্ধ্যাহার করে মন্দিরের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। গ্রামের উত্তর দিকে একটা খোলা প্রাঙ্গণের পাশে বিশাল কালী মন্দির। মন্দিরের দুইপাশে এবং পেছনে সারিসারি গাছপালা। শাল শিশু ইত্যাদি।
সমরেশ,দাদা রাজেশ এবং তার দুই সহচর অনিল এবং প্রহ্লাদকে নিয়ে মন্দিরের সামনে এসে হাজির হয়। মন্দিরের পরিবেশ দেখলেই কেমন দুঃসাহসিক অভিযানের অনুভূতি জাগে মনে। ভীষণ ভিড়ের মধেও কেমন একটা অজানা ভয় তৈরি হয়। আর মা কালীর মূর্তিও তেমনি প্রচণ্ডা। কালী মায়ের উচ্চতা প্রায় তিরিশ ফুট এবং বিশাল তার রক্তিম চোখ এবং লম্বা জিহ্বা। চুল খোলা। মাথার উপর সোনার মুকুট। নাকের নথ সোনার। মায়ের দুই ধারে রক্ত পিপাসু ডাকিনী যোগিনী। আর একটা শৃগাল ঊর্ধ্ব গগণে মুখ হাঁ করে জিভ বের করে মায়ের হাতের কাটা মুণ্ডু থেকে টপকে পড়া রক্ত পান করার জন্য লালায়িত ভঙ্গীতে চেয়ে রয়েছে।
মায়ের এই রূপ দেখে সমরেশ জোড় হাত করে তাকে প্রণাম করে নেয়। এবং সেখানে তারা কিছুক্ষণ থাকার পর গ্রামে ফিরে আসে।
গ্রামের রাস্তার মধ্য দিয়ে যাবার সময় সে দেখে তার দাদা রাজেশ,অনিল এবং প্রহ্লাদ নিজেদের মধ্যে কি যেন বলাবলি করছে।
সমরেশ তা জানতে চাওয়ায় রাজশে তাকে জিজ্ঞাসা করে, সে মদ ভাং খায় কি না। সমরেশ তাতে সাফ মানা করে দেয়। কারণ সে জীবনে কোনদিন মদ্যপান করেনি।
তাতে রাজেশ তাকে বলে যে তারা এই পুজো পার্বণে একটু নেশা ভাং করে থাকে। তো সে যদি এগুলো পছন্দ না করে তাহলে তারা মদ পান করবে না। অথবা সমরেশ কে বাড়িতে দিয়ে এসে একান্তে নেশা করবে।
সমরেশ বলে, তাদের সঙ্গে ওর থাকতে কোন অসুবিধা নেই। সে কেবলমাত্র তাদের সঙ্গে থাকবে। মদ্যপান করবে না। এবং তারাও তাকে মদ্যপান করার জন্য জোর না করে।
এই শর্ত তারা মেনে নেয়।
গ্রামের মধ্যে মদের দোকান থেকে তারা মদ এবং ছোলা ভাজা  কিনে নেয়। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় বসে খাবার মতো উপযুক্ত জায়গার অভাব নিয়ে। কারণ মন্দির চত্বরে মদ পান কঠোর রূপে  নিষিদ্ধ। এবং বাড়িতে বসেও খাওয়া যাবে না।
সুতরাং তারা সিদ্ধান্ত নিল যে গ্রামের পূর্ব দিকে একটা ক্লাব ঘরের চাতালে বসে মদ্যপান করবে।
কিন্তু অনিল সেখানে যেতে মানা করে দেয়। কারণ সেদিকে দাস পাড়া। এবং সেই দাস পাড়ারই এক মহিলা নাকি ওই ক্লাব ঘরের সামনেই একটা পুকুর পাড়ে গত তিন মাস আগে কেরোসিন ঢেলে নিজের গায়ে আগুল লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এবং তার ভূত নাকি সবসময় ওই চত্বরেই ঘুরে বেড়ায়।
তা শুনে সমরেশ মনে মনে হাসল। ভূত প্রেতের একদমই বিশ্বাসী নয় সে। ভূত কে সে ভয় পায়না। ভূতের গল্প শুনলে বরং হাসি পায় তার। বিজ্ঞান চেতনায় বড় হয়েছে সে। বিজ্ঞানে বিশ্বাসী। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একলা রাতে বেড়িয়েছে সে। হোস্টেলে কতবার একলা থেকেছে। কিন্তু ভূতের ভয় তো কি? মানুষেরও ভয় পায়নি সে বিন্দুমাত্র।
ভূতের সিনেমা দেখলে  হাসি পায়। বিচিত্র ভূতের মেকআপ দেখে হাসে সে।
আজও অনিলের কথা শুনে মুচকি হাসল সমরেশ। মনে মনে বলল, “এই টিপিক্যাল গ্রাম্য বাসিরা ভূতের ফ্যান্টাসি থেকে এখনও বেরতে পারলো না”।
সে বলল, “ধুর। ভূত টুত আবার হয় নাকি! ওসব কুসংস্কার। মনের ভুল”।
অনিল বলল, “নাগো ভাই। তোমরা শহরের মানুষ রা ভূতে বিশ্বাস করো না। আমারা গ্রামের লোক ভূত দেখেছি বলে ভূতে বিশ্বাস করি”।
সেটা শুনে সমরেশ হো হো করে হেসে ফেলল, “তুমি ভূত দেখেছো নাকি অনিল দা?”
অনিল সভয়ে বলল, “হ্যাঁ আমি নিজের চোখে কোনদিন দেখিনি তবে লোকের মুখে শুনছি। ওই যে মদন দাসের বউ যেদিন গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে মরল, তার পর থেকেই গাঁয়ে ভূতের উপদ্রব শুরু”।
“আচ্ছা”!
“হ্যাঁ গো ভাই। কিশোরী মরার পর থেকেই ওই পুকুরে কেউ চান করতে যেতো না। বলতো নাকি জলের তলায় কেউ আছে। মেয়ের ডাক শুনতে পাওয়া যায়”।
“ধুর”
“হেই নাগো ভাই সত্যি। সেখানে অনেকেই কিশোরীর কান্নার আওয়াজ পেয়েছে।সেদিন গায়ে আগুন লাগার পর যন্ত্রণায় যেমন ছটফট করে কাঁদছিল আর লাফিয়ে বেড়াচ্ছিল, অবিকল সেই রকম গলার আওয়াজ করে কেউ কাঁদে ওখানে মাঝে মাঝে। বিশেষ করে বুধবার দিন। যেদিন ও আত্মহত্যা করেছিলো”।
অনিলের গল্প হাস্যকর হলেও বেশ মজাদার মনে করলো সমরেশ। তাই শুনতেও খুব ভালোই লাগছিলো ওর। সে উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলো এবং কিশোরীর ভূতের গল্প শুনতে লাগলো।
“ওহ আচ্ছা তারপর?”
“তারপর আর কি ভাই সে অনেক কাণ্ড। সেই পুকুরের ধারে কাছে যাদের বাড়ি। সেই বাড়ির মানুষ জনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। ভাতের মধ্যে পায়খানা মিশিয়ে দেওয়া, ভাঙ্গা চুড়ি মিশিয়ে দেওয়া। তারপর গরু ছাগল দের উপর উৎপাত আরও কত কি”।
“আর? আর কি করে ছিল সে?”
“আরও অনেক কিছু করেছিলো ভাই বেশ কয়েক দিন। মদন দাসে সঙ্গে ঝগড়া করে মরেছিল বলে মদন দাস কে তো প্রায় পাগল করে তুলেছিল। মদন দাসের সঙ্গে যেই মেয়ের সম্পর্ক ছিল সেই মেয়ের রক্ত বমি হতে লাগলো। তারপর কিশোরী মরার কয়েকদিন পর মদন দাসের ঘর থেকে নাকি কিশোরীর ভূত এসে ওর শাড়ি কাপড় বের করে নিয়ে চলে গিয়েছিলো। সেগুলো পরে গ্রামের উত্তর পূর্ব দিকের বাবলা গাছের ডালে ঝোলানো অবস্থায় পাওয়া যায়”।
 
গ্রামের লোকের মস্তিষ্ক যে উর্বর তা এই গল্পের মাধ্যমেই বোঝা যায়। মনে মনে বলে সমরেশ।
অনিল বলল, “এতো কিছু শোনার পরেও তুমি হাসছ ভাই……। তোমার সাহস বলিহারি”।
সমরেশ বলল, “এই না না। আসলে তোমার গল্পটা বেশ মজাদার তাই শুনছিলাম আরকি”।
অনিলের কথায় বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হয়না সমরেশের। সে তার জেঠতুতো দাদাকে জিজ্ঞাসা করে এই বিষয় নিয়ে।
“হ্যাঁ গো দাদা……।অনিলদা যেগুলো বলছে সেগুলো কি সত্যি?”
রাজেশ বলল, “আমারও শোনা কথা ভাই। আমিও নিজের চোখে দেখিনি। তবে পরে নাকি তান্ত্রিক দেখিয়ে সেটার নিবারণ করা হয়।তাই এখন আর ওই উপদ্রব হয়না”।
সমরেশের এবার সম্পূর্ণ বিশ্বাস হয়ে গেলো যে এটা নিছক গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। সে মহিলা আত্মহত্যা করে নিজের প্রান দিয়েছে ঠিকই কিন্তু ভূত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এটা মানা নিরর্থক। মানুষ মরার পর আবার তার কোন জীবন হয় নাকি!! ইহলোক পরলোক বলে কিছুই হয়না। ভূত প্রেত বলেও কিছু হয়না।
এই ঘটনার ব্যাখ্যা কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক বেকার যুবক লোকের কর্মকাণ্ড। যাদের এই সব করে লোককে ভয় দেখিয়ে হয়তো মোটা টাকা ইনকাম। আর ওই তান্ত্রিকও হয়তো এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার।
 
তারা হাঁটতে থাকে। গ্রামের পূর্ব দিকের ওই ক্লাবের সামনেই তারা বসে মদপান করবে।
যাওয়ার পথে অনিলের আবার বাধা দেয়, “এই যাসনা ভাই। বললাম না যে ওখানে প্রেত্নির ভয় আছে”।
রাজেশ বলল, “ধুর ছাই! তান্ত্রিক দেখিয়েছে তো। ভূত টুত আর নেই ওখানে। আর তাছাড়া কালী পুজোর দিন আজকে। মা কালী সঙ্গে থাকতে ভয় কিসের রে?”
প্রহ্লাদ বলল, “ভয় তো ওইখানেই ভাই। অমাবস্যার রাত আজকে। মায়ের আহ্বানে সব ভূত প্রেত একত্রিত হয়। নানা রকম অপদেবতা, অপশক্তির উদয় হয় আজ। তান্ত্রিক রা আজ সাধন করে তারাপীঠে। জানিস না”।
তা শুনে সমরেশ বলল, “ ধুর চলো না ভাই। আমি ভূতে ভয় পাই না। কিছু হলে আমি আছি তোমাদের সঙ্গে। চলো তো”।
সমরেশের কথা শুনে তারা সাহস জুগিয়ে সেখানে এগিয়ে যায়।
চারজন মিলে গিয়ে বসে ক্লাবের সামনে চাতালের উপরে। ক্লাবের বাইরে ফিলামেন্ট বাতির আলো আসছিল তাদের সামনে। সেহেতু মদ খেতে কোন অসুবিধা হচ্ছিলো না।
সারা গ্রাম এখন মন্দিরের সামনে। নির্জন গ্রাম এখন। নিস্তব্ধ। শুধু কালী মন্দিরের হই হুল্লোড় দূর থেকে কানে আসছে তাদের।
মদ খেতে খেতে রাজেশ সমরেশ কে বলল, “ভাই তুমি মদ না খাও, ছোলা ভাজা তো খেতে পারো। আমরা খাচ্ছি আর তুমি বসে রয়েছ”।
“না দাদা সে ঠিক আছে। তোমাদের মদ খাওয়া হয়ে গেলে আমরা আবার মন্দিরে যাবো তো?”
“হ্যাঁ ভাই নিশ্চয়ই”।
রাজেশ এবার প্রহ্লাদের দিকে তাকিয়ে বলল, “পুকুর পাড়ের দিকে তাকাস না ভাই। ওদিকে কিছুই নেই। ভূত আসবে না তোকে ধরতে”।
প্রহ্লাদ মুখে মদের গ্লাস তুলে বলল, “ না রে ভাই আমি ওই পুকুর পাড়ের বাড়িটার দিকে তাকিয়ে আছি। ঘরের সামনে বাল্বটা কেমন জ্বলছে আবার নিভছে দ্যাখ”।
“ধুর ওদিকে তাকিয়ে কাজ নেই। কালীপুজোর সঙ্গে দীপাবলিও আজকে। তাই ওইরকম লাইট লাগিয়েছে”।
“না রে ভাই। বাল্ব লাইট এমন করে জ্বলে না”।
“লাইট খারাপ হয়েছে তাহলে! সাফ কথা।  তুই এদিকে নজর দে”।
 
জ্বলন্ত নিভন্ত লাইটের বাড়ি তাদের থেকে কেবলমাত্র পঞ্চাশ ফুট দূরে। খুব একটা অন্ধকার নেই সেখানে।
রাজেশের কথা শুনে প্রহ্লাদ সেদিকে তাকানো বন্ধ করে দেয়। তারা আবার নতুন গল্পে মশগুল হয়। সমরেশ কলকাতার গল্প শোনাতে থাকে।
কিন্তু তার চোখ মাঝে মধ্যেই বাকী তিনজনের দিকে চলে যাচ্ছিলো। মদের নেশায় তাদের চোখ এবং গলা কেমন জড়িয়ে আসছিলো।
সমরেশ দেখে অনিলের স্থির নজর এবার পুকুর পাড়ের ওই বাড়িটার ওপর। সে একটু অবাক হল। তারপর আচমকায় অনিল সেদিকে আঙ্গুল দেখিয়ে থতমত খেয়ে প্যাঁচানো গলায় বলে উঠল, “ভাই…ভু ভু ভু ভূত ভূত!!!!!!!!!!”
সঙ্গে সঙ্গে তারাও সেদিকে চোখ তুলে তাকাল।
সমরেশও দেখল, “একটা কুচকুচে কালো নারী অবয়ব। সম্পূর্ণ উলঙ্গ। চুল খোলা তার। সেই বাড়ির দরজার সামনে উঁকি দিচ্ছে”।
ক্ষণিকের জন্য চোখকে  বিশ্বাস হলনা তার। একি দেখছে সে!
কিছু বুঝবার আগেই রাজেশ এবং প্রহ্লাদ হই হই করে চেঁচিয়ে উঠল। এবং দৌড়ে সেদিকে চলে গেলো।
“হেই হেই  ধর ধর কে তুই কে তুই। আসছি আমরা দাঁড়া।দাঁড়া” বলতে বলতে।
সেটা শুনতে পেয়েই সেই নিগূঢ় কালো নগ্ন নারী তাদের দিকে চোখ দেখিয়ে ঘরের পেছন দিকে দৌড়ে পালাল।
আলোর গতিতে তারাও ছুটে গেলো ওর পেছনে ধাওয়া করতে।
নিমেষের মধ্যেই সেই অজ্ঞাত নারী মূর্তি পুকুর ওপারের ঝোপ জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে গেলো।
তা দেখে সমরেশের রক্ত হীম হয়ে আসল। মাথা শূন্য হয়ে গেলো তার। শরীর অসাড়। যা দেখল তাতে বিশ্বাস করবে কি করবে না বুঝে উঠতে পারল না সে। সারা গা নিজের থেকেই থরথর করে কাঁপতে শুরু করলো। জিভ অসাড় হয়ে গেলো।বুক ধড়ফড় করতে লাগলো। এই যেন সে অজ্ঞান হয়ে পড়বে।  তার চোখের সামনে  সে সেই বস্ত্রহীন কালো নারী কে দেখতে পাচ্ছে। তার খোলা চুল, তার উন্মুক্ত বক্ষ। তার উজ্জ্বল চোখ দুটো কেমন রাতের অন্ধকারে জ্বল জ্বল করছিলো। কি ভয়ঙ্কর তার অভিব্যাক্তি।
সে ভাবল। হয়তো এটা কোন লোকের দুষ্টুমি। অথবা চোর। কিন্তু! কিন্তু এভাবে নিমেষের মধ্যে কি কেউ এতো বড় পুকুর লাফ দিয়ে যেতে পারে?
আর এই পুকুর পাড়ে কেমন একটা বিচিত্র গন্ধ পাচ্ছে সে তখন থেকে। কেমন পোড়া মাংসের মতো গন্ধ। আঙ্গুনে পুড়লে মাংসের যেমন গন্ধ হয় ঠিক সেই রকম।
মন প্রশ্ন করলেও তার উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলো না সে।  
 
এই ঘটনার পর রাজেশ এবং অনিলের সহায়তায় রাস্তার মধ্যে দাঁড়াতে পারে সে। তাদেরকে ছাড়িয়ে রাজেশের দিকে তাকিয়ে ভীত গলায় বলে, “দাদা তুমি আজ রাতে আমার সঙ্গে শুতে পারবে তো?”
 
 
 




[+] 9 users Like Jupiter10's post
Like Reply
(04-11-2021, 11:22 PM)Baban Wrote: অবশ্যই...... একশো বার!!❤ এটা কি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে নাকি আপনার লেখা?

অশেষ ধন্যবাদ বাবান দা। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য Heart



[+] 1 user Likes Jupiter10's post
Like Reply




Users browsing this thread: 22 Guest(s)