Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
(18-10-2021, 11:36 PM)ddey333 Wrote: দাদা তুমি তো কোনোদিন পুরুষ হতে পারোনি , ঝর্ণার জন্য এখনো কাঁদো... আমি নিজেই দেখেছি ...

কিন্তু আমার পাল্লায় পড়ে, মানে আমার এই থ্রেডে তোমাকে টেনে এনে ... মহাপুরুষ বানিয়ে দিয়েছি আমি ...

তোমার আবৃতি করা কবিতা গুলো আবার কবে শুনতে পাবো ??  

Namaskar Heart Namaskar Heart

তোমার যেদিন ইচ্ছা করবে চলে এসো ! আমি শোনাবো !
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
পুরোহিতের জীবন

অবশেষে অবসন্ন শরীর নিয়ে দুর্গা পুজো সেরে পুরোহিত বাড়ি ফিরল । সবার একটাই কথা পুজোয় পুরোহিতের প্রচুর ইনকাম।  সাথে ফল মিষ্টি শাড়ি । কিন্ত কে বোঝাবে কুড়ি লাখ টাকার বাজেটে কমিটি থেকে পুরোহিতের বরাদ্দ চারটে লাল পাড় সাদা শাড়ি । সেটাও যতটা জ্যালজ্যালে হয় । গামছার সাইজ রুমালকেও লজ্জা দেবে । এর মধ্যে আবার যেসব শাড়ি আসে তার মধ্যে কমিটির নির্দেশ কিছুগুলো রেখে দেবেন ।
  সব কমিটিতে দু একজন মাতব্বর থাকে । এসে নিয়ে পুরোহিতের খুঁত ধরার জন্য বসে থাকে । মাঝে মধ্যে জ্ঞান দেন তিনি দক্ষিণেশ্বর , পুরীর পুরোহিতের সঙ্গে তর্ক করে নাকি কাছা খোলার অবস্থা করেছিলেন। এরপর দক্ষিণা । অষ্টমীর দিন দক্ষিণা কমিটি নিয়ন্ত্রণ করবে । এইভাবে পাঁচ দিনের পুজো শেষ করে শর্ত অনুযায়ী টাকা আর রাজ্য সরকারের দেওয়া রেশনের নিম্নমানের চাল রুমালের থেকেও ছোট গামছা আর গোটা চারেক ভালো শাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরা ।
    ততক্ষণে গলার স্বর বসে গেছে । যখন সবাই পুজোয় বৌ ছেলে মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করছে তখন পুরোহিত মন্দিরে উচ্চ কন্ঠে খালি পেটে মন্ত্রোচ্চারণ করছেন । যাঁরা ভাবেন অ বং করেই ইনকাম তাদের বলব ঐ তিন ঘন্টা করেই পাঁচদিন খালি পেটে অং বং করেই দেখান । করে দেখান দেড় ঘন্টার মহা হোম । খুব উচ্চ কন্ঠে নয় স্বাভাবিক গলাতেই চণ্ডীপাঠ করে দেখিয়ে দিন ।
   তাই এসব মেনে নিয়েও পুরোহিতের মা , বৌ মনোকষ্ট বুকে চেপে প্রত্যাশায় থাকে পুজোর পর বাড়ি ফেরার দিকে । ফিরতেই পাড়ার কথা ভালোই কামাই হল । কেউ বলবে নারকোল খাওয়ালি না , কেউ বলবে দুটো গামছা দিস বা শাড়ি দিস ।
    পুরোহিতের জীবনের এই শারীরিক ও মানসিক কষ্ট এদের চোখে পড়ে না । যখন কেউ রেলে মোটা বোনাস পায় বা অনান্য পেশায় প্রচুর টাকা আয় করে তখন বলে না ভালোই তো টাকা কামালি । কিছু দে । বা এরাই কখনও পুরোহিতকে বলে না এই নিন পুজোর সময় কিছু রাখুন ।
     এরা সবসময়ই উদাহরণ দেয় কালীঘাট, তিরুপতি বা জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিতের আয়ের সাথে তুলনা করে । কিন্ত অধিকাংশ পুরোহিতের জীবন কত কষ্টের সে তারাই জানে । পুরোহিত সবার মঙ্গল কামনা করে অথচ উপবাসে চিৎকারে লিভার ও হার্টের অকালেই বারোটা বাজায় । এমনও দেখেছি বাড়িতে মাসিক আয় দেড় লাখের উপর । নারায়ণ পুজোর দক্ষিণা একান্ন টাকা । বাড়াতে বললেই একটা পরিচিত শব্দ "পুরোহিত লোভী" । পুরোহিতকে এক টাকাতেও সন্তুষ্ট হওয়া উচিত । হ্যাঁ পুরোহিদের পেট , পিঠ , রোগ, পোশাক কোন কিছুই নেই । এইসব দেঁড়েল গুলো যখন কোন নার্সিংহোম অতিরিক্ত টাকা নেয় তখন কিছু বলতে পারে না । কলেজে ডোনেশান নিলেও চুপ । ওগুলো লোভ নয় ।
   হ্যাঁ এটাই সমাজ । আর এটাই বিচার । আর লজ্জা কখন হয় জানেন ? যখন কোন ', পদবীধারী এসব কথা গুলো বলেন । এখন আবার শুনতে হচ্ছে পুরোহিত ভাতা মারছিস তো ? কে বোঝাবে ওই এক হাজার টাকা পেতে গেলে একটা অতি মূর্খ নেতার পায়ে তেল দিতে হবে । তাই আমার মতো অধিকাংশ পুরোহিতের আজও সেটুকু জোটেনি । এসব শুনলে সত্যিই পুরোহিত হিসেবে নিজের লজ্জা লাগে । পুরোহিত,  আপনার অভিজ্ঞতা কি বলে ?
সংগৃহীত,,,
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(19-10-2021, 12:15 PM)dada_of_india Wrote: তোমার যেদিন ইচ্ছা করবে চলে এসো ! আমি শোনাবো !

তুমি তো ', , কাল আমার বাড়ির লক্ষি পুজোটা করে দিয়ে যাবে ??? Smile Namaskar


ভালো স্কচ খাওয়াবো তাহলে পরে ... Big Grin

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
শিক্ষক

 
- কানের নীচে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দেবো , শুয়ার .... কতবার বলেছি ? সমূল চক্রবৃদ্ধি আর চক্রবৃদ্ধি সুদের সূত্রের মধ্যে শুধু আসলটা বিয়োগের অন্তর , গুলিয়ে যেন না যায় ... কিরে বলিনি ?
- হ্যাঁ স্যার বলেছিলেন , কিন্তু ..
- কিন্তু , আবার কিসের কিন্তু
- স্যার ওই বিকাশটা পিছন থেকে খোঁচা দিচ্ছিলো পিঠে , উপপাদ্যটা দেখানোর জন্য , তাই আসলটা বিয়োগ দিতে ভুলে গিয়েছি , আর হবে না স্যার ...
- তুই ওই কর , বেয়াদপ ছেলে , কান ধরে বেঞ্চের উপর দাঁড়া গিয়ে , ... এই বিকাশ , শুয়ার , এদিকে শোন , শোন তারা তারি ...আজ তোর একদিন কি আমার একদিন ...
বৈকুণ্ঠপুর কলেজের কর্ণ স্যারের অঙ্কের ক্লাসের এক রোজকার চিত্র যে ছাত্রটি সদ্য সদ্য শাস্তিপ্রাপ্ত হয়ে , বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে নিজের আসন অলংকৃত করবে , তার নাম পার্থ এই কলেজের দশম শ্রেণীতে তারই ক্রমিক নং এক শুধু এই বছর নয় , পঞ্চম শ্রেণী থেকে এই আসনটিতে আর কারো বসার সৌভাগ্য হয়নি সারা কলেজ পার্থর প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ শুধু অঙ্কের শিক্ষক কর্ণ চক্রবর্তী বাদে বাকি সকল শিক্ষকদের এক্কেবারে চোখের মণি এই পার্থ এবার মাধ্যমিকে সারা রাজ্যের মধ্যে তার একটা স্থান আসবে বলে ,সকলে তাকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছে  
কিন্তু কর্ণ স্যারের ওই এক কথা ...
- বুঝলি পার্থ , তুই অঙ্কে ভালো কিন্তু অর্জুনের মতো না ... ওর একটা আলাদা ব্যাপার ছিলো তুইতো কিছু অঙ্ক , যেগুলো বুঝিস টুজিস না , ওগুলো মুখস্থ করিস ...
- স্যার আপনি এটা বলতে পারলেন ?আমি কোনোদিন অঙ্ক মুখস্থ করি না  , আপনি যত অঙ্ক বলেন আমি সব করে এনে দি , এত প্র্যাকটিস করি , তবু আপনি বলেন আমি অর্জুন দার মতো না ... আমিতো অর্জুন দা কে চিনিও না ... 
- সে তোর চিনে কাজ নেই ... আরো প্র্যাকটিস করতে হবে , বুঝলি ? একটা অঙ্ক তিনটে চারটে নিয়মে যদি না করতে পারলি তবে , কিসের অঙ্কে ভালো ? একটা নিয়মেতো সবাই পারে ...
- স্যার আপনি দেখবেন , আমি মাধ্যমিকে অঙ্কে একশোতে একশো পাবো
- হ্যাঁ , এই হলো আসল কথা , যদি পাস , তবে বুঝবো তুই অঙ্ক পারিস
সারাদিন পার্থ ভাবে , কিভাবে ? কোন নিয়মে ? অঙ্ক করলে কর্ণ স্যারকে খুশি করা যায় বহু অঙ্ক বহু নিয়মে করে নিয়ে গিয়ে স্যারকে দেখায় পার্থ , কিন্তু প্রত্যেক বারই মুখ হাঁড়ি করে ব্যর্থ সৈনিকের মতো তাকে ফিরে আসতে হয় একটি একটি করে দিন এগোলো , মাধ্যমিক সুষ্ট ভাবে সম্পন্ন হলো মাঝে তিন মাসের লম্বা ছুটি কাটিয়ে , ঘনিয়ে এলো সেই ভয়ঙ্কর দিন , ফল বেরোলো সকাল এগারোটায়  
সারা কলেজে হৈ চৈ পরে গিয়েছে , পার্থ সারা রাজ্যে নবম স্থান অধিকার করেছে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়ে , মাথায় বরফ ব্যাগ চাপিয়ে বসে আছেন  , কলেজের প্রধান শিক্ষক সবাই পিঠ চাপড়িয়ে , প্রশংসা করছে , পার্থর কিন্তু এতো ভালো ফল করেও মুখে হাসি নেই পার্থর , সাথে হাসি নেই আরেকজনের মুখেও , সে হলো কর্ণ চক্রবর্তী দুজনের অখুশি হবার কারণ যদিও ভিন্ন কর্ণ স্যার অখুশি কারণ , পার্থ দুই নম্বরের জন্য অঙ্কে একশো পায়নি আর পার্থ অখুশি কারণ , সে কর্ণ স্যারকে খুশি করতে পারেনি
পার্থর বাবা , সুভাষ বাবুর চাকরি কলকাতায় , প্রতি সপ্তাহে শনিবার তিনি বাড়ি আসতেন আবার সোমবার ভোর ভোর কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হতেন  মাধ্যমিকে ছেলের এতো ভালো রেজাল্টের পর , আর এই গ্রামে পরে থাকতে চাইলেন না , ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় চলে গেলেন , বরাবরের মতো  ওখানে পার্থ ভর্তি হলো , এক মস্ত বড়ো কলেজে , অনেক বড়ো বড়ো শিক্ষককে কাছ থেকে দেখার সুযোগ  পেলো , পার্থ কিন্তু সেই কর্ণ চক্রবর্তীকে খুঁজে পায়নি সে কারোর মধ্যেই কেউ কান মূলে দিয়ে বলেনি ...
- শুয়ার , এই সোজা অঙ্কটা তুই ভুল করলি ? যা চল্লিশ বার কান ধরে উঠবস কর , এক্ষুনি ... 
তারপর আবার নিজেই টিফিন টাইমে অফিস ঘরে ডেকে , নতুন নতুন অঙ্কের পদ্ধতি দেখাতেন , কর্ণ স্যার পরবর্তীতে পার্থ দেখতো , এই শহরের স্যারেরা কেমন যেন , ঘড়ির কাটা মেনে অঙ্ক করায় , একটা অঙ্ক মাঝপথেই ছেড়ে দিয়ে বলে ...
- আজকে সময় হয়ে গেছে , বাকিটা পরের দিন হবে  
কিছুই ভালোলাগে না পার্থর এই কলকাতায় সবাই এখানে ভীষণ ব্যস্ত , কারোর দু দন্ড সময় নেই , নতুন কিছু শেখার ... 
তারপর প্রায় ত্রিশ বত্রিশ বছর কেটে গেলো সেই দিনের সেই পার্থ আজ মস্ত বড়ো বিজ্ঞানী হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই বয়সের সাথে সাথে কর্ণ স্যার , গ্রামের কলেজ প্রায় সবকিছুই ভুলে গিয়েছে সে স্ত্রী বৈশাখী , ছেলে তাতান , বৃদ্ধ বাবা , মা ,বন্ধু বান্ধব , গবেষনা এসব নিয়ে বেশ কাটছিলো তার দিন গুলো একেবারে যেন ছকে বাঁধা সবটা

Like Reply
হটাৎই এক শীতের সকালে , খবরের কাগজ হাতে নিয়ে চায়ের কাপে প্রথম চুমুক দিতে যাবে এমন সময়, পাশের টেবিলে রাখা ফোনটা বেজে উঠলো   ফোনটা হাতে নিয়ে পার্থ দেখলো , অচেনা নম্বর ...

- হ্যালো 
- হ্যালো , সুপ্রভাত , আমি  বৈকুণ্ঠপুর ভারত সেবাশ্রম থেকে বলছি 
- বৈকুন্টপুর ? হ্যাঁ বলুন ...
- আমি কি পার্থ বসুর সাথে একটু কথা বলতে পারি ?
- বলছি , বলুন ...
- পার্থ বাবু , এতো সকালে আপনাকে বিরক্ত করার জন্যে ভীষণ দুঃখিত
- না না ঠিক আছে , বলুন
- আসলে , আপনার বিদ্যালয়ের শিক্ষক , কর্ণ চক্রবর্তী ...
- ..কর্ণ চক্রবর্তী ... হ্যাঁ কর্ণ স্যার ... 
- হ্যাঁ আসলে , খুবই দুঃখের সংবাদ , উনি কাল রাতে গত হয়েছেন  
- মাই গড ... 
- আসলে , আমিই এই আশ্রমের প্রধান পুরোহিত এবং কর্ণ বাবুর শেষ বয়সের একমাত্র বন্ধুও বলতে পারেন  , কাল সন্ধ্যে বেলা থেকেই ওনার শরীরটা খারাপ হতে শুরু করে আবার , তারপর রাতের দিকে প্রায় আচ্ছন্ন অবস্থাতেই , উনি আমার হাত ধরে বলেন , ওনার মুখাগ্নি যেন শুধু আপনার হাতেই করা হয় ....আর ভোরের দিকেই ...
- কিন্তু , মানে ... ওনার ছেলে .. বা পরিবার ..
- সে অনেক কাহিনী আছে , ফোনে বলাতো সম্ভব নয় আপনি যদি একটু তারাতারি আসতে পারেন , তাহলে খুবই ভালো হয়  
- হ্যাঁ আমি আসছি , কিন্তু এখান থেকে পৌঁছতেতো তাও ঘন্টা পাঁচেক মতোন লেগে যাবে
- তাতে অসুবিধা নেই , আপনি যতো তাড়াতাড়ি পারেন চলে আসুন
ফোনটা কেটে দিতেই যেন একরাশ বিষণ্নতা ঘিরে ধরলো পার্থকে সকালের ফুর ফুরে মেজাজটা যেন কোথায় হারিয়ে গেলো নিমেষেই , চায়ের কাপ টেবিলেই বসে থেকে আকাশের বুকে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে একসময় ঠান্ডা হয়ে গেলো  
ট্রেনের জানালা দিয়ে দ্রুত গতিতে হারিয়ে যাওয়া গাছপালা বাড়িঘর গুলো , পেছনের ফেলে আসা কলকাতার ক্যানভাসে জায়গা করে নিচ্ছিলো , আর রেখে যাচ্ছিলো অসংখ্য প্রশ্ন পার্থর মনে কর্ণ স্যারের বাড়ি বর্ধমান , তাহলে স্যার চাকরি থেকে অবসর নেবার পর বৈকুণ্ঠপুরের আশ্রমে কেন ? আশ্রম কতৃপক্ষ তার ফোন নম্বর কোথা থেকে পেলো ? আর সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন , স্যারের মুখাগ্নি করতে , তাকে কেন ডাকা হচ্ছে ? পার্থ যতদূর শুনেছিলো কর্ণ স্যার বিয়ে করেছেন , তাহলে কি স্যার নিঃসন্তান ? তবে তার স্ত্রী কোথায় ? হাজারো প্রশ্ন ভিড় করছিলো পার্থর মাথায় ,যার একটিরও উত্তর তার জানা নেই  
বৈকুণ্ঠপুর পৌঁছতে প্রায় দুপুর হয়ে গেলো , তারপর সেখান থেকে একটা টোটো গাড়িকে গন্তব্যের ঠিকানা বলে , পেছেনের সিটে গা এলিয়ে দিলো পার্থ রাস্তাঘাট , বাড়িঘর সব বদলে গিয়েছে , দেখতে দেখতে কলেজের বিল্ডিংটাও পেরিয়ে গেলো চোখের সামনে দিয়ে সেই ছোট্ট কলেজটা আজ অনেক বড়ো হয়েছে , কলেজের পাশের পুকুরটা খোঁজার চেষ্টা করলো সে , কিন্তু সেটি পাওয়া গেলো না হয়তো বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে , তার উপর বাড়ি উঠেছে সেই পুকুরের পাশের কুল গাছ থেকে কুল পারতে গিয়ে ঝুপ করে পুকুরে পরে গিয়েছিলো শৈবাল , তারপর তাকে তুলতে গিয়ে সবাই ভিজে স্নান এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে আশ্রমের সামনে চলে এসেছে টেরই পায়নি সে টোটো ভাড়া মিটিয়ে , আশ্রমের দিকে পা বাড়ালো পার্থ , আশ্রমের সামনে গুটি কতক লোক দাঁড়িয়ে , মুখগুলি সবই অচেনা  
একটু এগিয়ে যেতেই , একজন মোটা মতোন লোক পার্থর দিকে এগিয়ে এসে বললো ...
- তুই আসবি আমি ঠিক জানতাম স্যারের প্রিয় ছাত্র ছিলি তুই , স্যার শেষ বেলায় তোকে ডেকেছেন তুই আসবি না .. হতেই পারে না ..
- সরি .. আপনাকে ঠিক ...
- আরে ... বিশ্বরূপ রে ... তোদের বিশু ...মনে নেই , তাই না ?
- আরে বিশু মস্তান ... শিয়ালদহ স্টেশনে সেবার ...
তারপর ধীরে ধীরে সব জট পরিষ্কার হতে লাগলো পার্থর বছর দশেক আগে একবার শিয়ালদহ স্টেশনে এই বিশুর সাথে দেখা হয়েছিলো , তখন তাড়াহুড়োতে ফোন নম্বরটা আদান প্রদানও হয়েছিলো , ব্যস্ত জীবনের চাকা ঘুরতে ঘুরতে ব্যাপারটা একেবারেই মাথা থেকে উড়ে গিয়েছিলো পার্থর তারপর বিখ্যাত বিজ্ঞানী বন্ধুকে ফোন করে বিরক্ত করা উচিত হবে , কিনা , সেই ভেবে বিরত থেকেছে বিশ্বরূপ , তাই পরে আর তেমন যোগাযোগ হয়নি , ফোন নম্বর থেকে গিয়েছে কনট্যাক্টস লিস্টে

Like Reply
ধীরে এগিয়ে গেছে পার্থ সামনের ইটে বাঁধানো বড়ো উঠনের মাঝখানে শুইয়ে রাখা কর্ণ স্যারের মৃত দেহের দিকে চোখের উপর দুটো ভিজে তুলসি পাতা , নাকে তুলো গোজা সেই অমায়িক চেহারার অধিকারী সুপুরুষ ব্যক্তির এক কালচে শীর্ণ দেহ , পার্থর সামনে কিছু প্রশ্নের সমাধান তখনও হয়নি , তবু পার্থ আসার কিছুক্ষনের মধ্যেই মৃতদেহ  নিয়ে শশ্বানের দিকে যাত্রা শুরু হলো পথেই লোকে মুখে কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর পেলো পার্থ

পার্থ ঠিকই খবর পেয়েছিলো , কর্ণ স্যার বিয়ে করেছেন , এমন কি এও জানতে পারলো সে , স্যারের একটি মেয়েও ছিলো তার নাম সাঁঝবাতি বছর চারেক আগে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে , সাঁঝবাতির বিয়ে দিয়েছিলেন কর্ণ বাবু তার বছর খানেক পরে সাঁঝবাতি আরেকটি ফুটফুটে সাঁঝবাতির জন্ম দেয় , কিন্তু সেটি মেনে নিতে পারেনি তার শশুর বাড়ির লোক ,শুরু করে তার উপর অত্যাচার , শেষে আর অত্যাচার সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সাঁঝবাতি পড়ে থাকে তার ফুটফুটে মেয়েটি কর্ণ বাবু নাতনিকে নিয়ে আসেন নিজের কাছে তার মাস ছয়েক পর তার স্ত্রীও দেহ রাখেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তারপর জীবনের সব মায়া ত্যাগ করে , নিজের বর্ধমানের সব ভিটে মাটি বিক্রি করে , এসে ওঠেন নিজের কলেজের পাশের এই বৈকুন্টপুর ভারত সেবাশ্রমে চাকরি সূত্রে এই বৈকন্টপুরে তার পরিচিত লোকের অভাব নেই ...
কলেজে পড়ানোর সময় থেকেই এই আশ্রমের প্রধান পুরোহিতের সাথে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ত্ব , সেই সুবাদে নিজের সমস্ত শেষ বয়সের সম্বল আশ্রমকে দান করে দিয়ে , দাদু নাতনি এখানেই থাকা শুরু করেছিলেন মাস তিনেক আগে থেকেই শরীর হঠাৎই ভাঙতে শুরু করে কর্ণ বাবুর তারপর ধীরে ধীরে আজ এই পরিণতি শশ্বানের মাটিতে দাঁড়িয়েই একটা কথা বেশ ভাবিয়ে তুলেছিলো পার্থকে তবে কি স্যার এই নাতনির দায়িত্ব নিতেই তাকে ডেকে পাঠালেন
আশ্রমে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যে হয়ে গেলো , তারপর স্নান সেরে , আশ্রমের বারান্দায় বসলো পার্থ পাশে এসে বসলো বিশ্বরূপ একটা দুটো কথা হচ্ছিলো  তার সাথে , কথার মূল বিষয় বলতে পুরোনো স্মৃতির পাতা উল্টে পাল্টে দেখা কিন্তু চোখটা এদিক ওদিক খুঁজেছিলো পার্থর , ওই বাচ্চা মেয়েটিকে কিছুক্ষন পরে আশ্রমের ওই মূল পুরোহিত , হাতে একটা সাদা খাম নিয়ে এগিয়ে এলেন পার্থর দিকে   আঠা দিয়ে আটকানো খামটা পার্থর হাতে দিয়ে উনি বললেন ....
- কর্ণ বাবু আপনাকে এটা দিতে বলে গিয়েছেন আমাদের কারোর এই চিঠি খোলার অনুমতি নেই বলেছিলেন , আপনি যদি তার মুখাগ্নি করতে আসেন , তাহলে যেন এটা আপনার হাতে এটি তুলে দেওয়া হয়
খামের একপাশ খুলে চিঠিটা বার করলো পার্থ , সেই জেল পেনের কালির গন্ধ ঠিক যেমনটা পার্থ পেতো তার কলেজের অঙ্ক খাতা গুলি থেকে , যেন কর্ণ স্যারের শরীরের গন্ধ চিঠিটা পড়তে শুরু করলো পার্থ ...

প্রিয় অর্জুন ,
হ্যাঁ ভুল পড়িসনি , পার্থ নয় তুইই অর্জুন পার্থর অপর নামইতো অর্জুন অর্জুন নামের কোনো ছাত্র আমার ছিলো না , ছিলো একটি মাত্র পার্থ যাকে অর্জুন বানানোর সংকল্প নিয়েছিলাম আমি তোর মাধ্যমে সব অঙ্কের হিসেব জীবনে মেলে না জানিস ? আমারটাও মেলেনি এতক্ষনে হয়তো সবটাই জেনেছিস জেনেছিস আমার নাতনি ঝিলমিলের কথাও , হয়তো ভাবছিস ঝিলমিলের দায়িত্ত্ব নেবার জন্য তোকে ডেকে পাঠিয়েছি নারে তা নয় , ওই আশ্রমেই বড়ো হবে , তার সমস্ত ব্যবস্থা আমি করে রেখে এসেছি তবু চিন্তা হয় , আমি ছাড়া আর কেউই নেই ওই খুদে প্রাণটার আমি চলে গেলে কে কিভাবে রাখবে ? মানুষ কে বদলে যেতে দেখেছি রাতারাতি তাই ভরসা হয় না , তাছাড়া আশ্রমের গোসাইএরও বয়স হয়েছে সেই বা কতদিন ? তোকে শুধু এইটুকু কাজ দিলাম মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে ফাঁকে পারলে বৈকন্টপুর আসিস , মেয়েটাকে একটু দেখে যাস নিজের ছেলে বলতে কেউই নেই আমার , শেষ বয়সে এসেও তাও ছেলের হাতে মুখাগ্নির লোভটা এই ', সন্তান কর্ণ চক্রবর্তী ত্যাগ করতে পারলো না তাই তোকে ডেকে পাঠালাম বৃদ্ধ মাস্টারের পাগলামি ভেবেই মেনে নিস , এক সময় তোদের কত পাগলামিতো আমি মুখ বুজে সয়েছি খুব ইচ্ছে ছিলো জীবনে বিজ্ঞানী হবো, জানিস ? কোনোদিন কাউকে বলিনি , এই তোকে আজ বললাম পারিনি হতে , কিন্তু চেয়েছিলাম নিজে হতে না পারলেও একখানি বিজ্ঞানী রেখে যাবো এই পৃথিবীতে তারপর যেদিন বাজারে গিয়ে শুনলাম তুই বিজ্ঞানী হয়েছিস , বাজারের মধ্যে এই বুড়ো হাঁটুতে লাফিয়ে উঠে , হাঁটুতে চোট নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়ি এসেছিলাম সেদিন গিন্নি কি বকা বকিই করেছিলেন যাইহোক , বলতে গেলে সে অনেক কথা , ইচ্ছে ছিলো শেষ কালে একদিন তোকে পেলে , জমিয়ে গপ্পো দেবো , যাক সেসব হয়তো আর হবে না ভালো থাকিস , ঝিলমিলটাকে একটু দেখিস

Like Reply
চিঠিটা যেন হঠাৎই শেষ হয়ে গেলো , পার্থ বুঝতেই পারেনি কখন যে তার চোখ বেয়ে জল অঝোরে বইতে শুরু করেছে একটু স্তম্ভিত ফিরতেই , সে চেঁচিয়ে উঠলো...

- ঝিলমিল ...
 তার চিৎকারে পুরো আশ্রমের প্রতিধ্বনি হচ্ছিলো , প্রথম ডাকে কোনো সাড়া না পেয়ে আবার চেঁচিয়ে উঠলো পার্থ ...
- ঝিলমিল ... 
তৃতীয় বার ডাকতে যাবে এমন সময় , পেছন থেকে কে একটা এসে প্যান্ট টানছে , দেখে সে পেছন ঘুরতেই , দেখলো একটি ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ে , এক হাতে একটা পেনসিল আরেক হাতে একটা খাতা নিয়ে দাড়িয়ে আছে  
পার্থ নীচু হয়ে কোলে তুলে নিলো ঝিলমিলকে , কপালে গালে চুমু খেলো ঝিলমিল একটুও আটকালো না পার্থকে , শুধু চুমু খাবার পর , হাত দিয়ে গালটা মুছতে লাগলো সেই দেখে হেসে উঠলো পার্থ , তার ছেলে তাতানও ঠিক এমনি করে , কেউ তার গালে চুমু খাবার পর , পৃথিবীর সব শিশুরাই কেমন একই ছাঁচে তৈরি পার্থর মুখে হাসি দেখে খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো ঝিলমিল তারপর মহা আগ্রহে কোলে বসেই হাতের খাতাটা পার্থকে দেখাতে লাগলো পার্থ দেখলো তাতে এক থেকে একশো অবধি দশ বার করে লেখা শুধু শেষ বারের টাতে তিরাশি অবধি রয়েছে পার্থ বুঝলো ঝিলমিলের সন্ধ্যের পড়াশুনায় বিরক্ত করেছে সে , এই অসময়ে তাকে ডাকাডাকি করে   
পরে পার্থ জানতে পারলো , কর্ণ বাবু বলে দিয়ে গেছেন , যাই হয়ে যাক , পড়াশুনায় যেন কোনো কামাই না হয় এই ছোট্ট মেয়েটি এই অনুশাসনের মধ্যেই বড়ো হচ্ছে আজ এই রকম একটা দিনেও , কেউ বলেনি তাকে , তবু সে অঙ্কের খাতা নিয়ে প্রতিদিনের কাজে বসে পড়েছে , সন্ধ্যে হতেই হয়তো সে বুঝতেই পারেনি কি হারিয়ে  গেলো তার জীবনে  
যদিও সেই বোঝার সুযোগটুকুও দেয়নি পার্থ পরদিন সকালেই ঝিলমিলকে নিয়ে রওনা হয়েছে কলকাতার দিকে এক আকাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে , বিজ্ঞানী হবে ঝিলমিল ......... কর্ন চক্রবর্ত্তীর নাতনী
ডক্টর ঝিলমিল চক্রবর্ত্তী এখন ইসরোর একজন বড়ো বিঞ্জানী ।।।।।।
 
# সত্য ঘটনা ঝিলমিল নাম পরিবর্তিত ।।।

Like Reply
(19-10-2021, 12:30 PM)ddey333 Wrote: তুমি তো ', , কাল আমার বাড়ির লক্ষি পুজোটা করে দিয়ে যাবে ??? Smile  Namaskar


ভালো স্কচ খাওয়াবো তাহলে পরে ... Big Grin


সেই অর্থে পুজ করিনা কোনোদিন ! স্কচ খাওয়াতে হলে এমনিই খাইয়ে দাও !
Like Reply
(19-10-2021, 07:02 PM)dada_of_india Wrote: সেই অর্থে পুজ করিনা কোনোদিন ! স্কচ খাওয়াতে হলে এমনিই খাইয়ে দাও !

সে আমি জানি , পুজো আর্চা করবে আর তুমি !!!

সারা জীবন এদিক ওদিক মাগি চুদে বেড়িয়েছো, এখন এই বুড়ো বয়েসে আর কি প্রায়শ্চিত্ত করবে ,

তবে একটা Glenfidich এর বোতল পেয়েছি , নিয়ে আসবো রবিবারে ... Heart Heart  
Like Reply
?

আরবি-ফারসি বাদ দিলে
বাংলা ভাষা হয়ে যাবে
একেবারে কাঠখোট্টা

*******************
*******************
সন্ধেবেলা আরামকেদারায় বসে খবরের কাগজে নজর বোলাচ্ছিলাম। এমন সময় সদর দরজা থেকে জোরালো আওয়াজ এলো, কলমচি বাবু, বাড়ি আছো নাকি?

জবাবে বললাম, হ্যাঁ, মামা, আসুন।

অন্দরমহল থেকে চা পাঠানো হলো। আয়েশ করে চা-নাশতা খেতে খেতে জমে উঠল দুজনের আসর। কথায় কথায় বললাম, আচ্ছা, মামা, আপনি যে ওকালতি পেশার সঙ্গে যুক্ত, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আরবি-ফারসি শব্দ। জানেন তো?

তাই নাকি ! যেমন?

আদালত দিয়ে শুরু করি?

মানে?

মানে 'আদালত' আরবি। 'শুরু'ও আরবি।

আদালত আরবি, জানতাম। কিন্তু, শুরুটাও আরবি?

জি হ্যাঁ। তারপর ধরুন, আপনি উকিল। ওকালতি আপনার পেশা। এখানে 'উকিল', 'ওকালতি' আরবি। আর 'পেশা'টা ফারসি।

জানতাম না তো !

তারপর দেখুন, 'মামলা', 'মোকদ্দমা' দুটোই আরবি। এতে যারা আপনাদের সাহায্য নেয়, তাদের আপনারা বলেন মক্কেল। এই 'মক্কেল'ও আরবি। 'হাকিম', 'হুকুম', 'এজাহার', 'বয়ান', 'ফরমান', 'ফয়সালা' এমনকি বিচারপতির 'রায়' পর্যন্ত আরবি। আচ্ছা, আসামি শব্দটা কোন্ ভাষা থেকে এসেছে বলুন তো?

আসাম থেকে?

নাহ্। 'আসামি' আরবি। এই আসামি বা সাক্ষীদের আপনারা তো জেরা বা সওয়াল করেন, 'জেরা' আর 'সওয়াল'ও আরবি।

আজব ব্যাপার তো !

'আজব'টাও আরবি। আপনি যে ভিতরে আসার আগে সদর দরজায় দাঁড়িয়ে, 'কলমচি বাবু, বাড়ি আছো নাকি' বলে আওয়াজ দিয়েছিলেন। এখানে 'আওয়াজ' ফারসি। 'সদর' আরবি। 'দরজা' ফারসি। কলমচির 'কলম' আরবি, 'চি' তুর্কি। আর 'বাবু' হলো ফারসি।

বেশ আজিব ব্যাপার তো !

এই 'বেশ'টা ফারসি। 'আজিব' আরবি। আর আমি জবাব দিয়েছিলাম, হ্যাঁ মামা, আসুন। এখানে 'জবাব' আরবি, 'মামা' ফারসি। তারপর, আপনি এসে দেখলেন যে, আমি আরামকেদারায় বসে খবরকাগজে নজর বোলাচ্ছিলাম। এখানে 'আরাম' ও 'কেদারা' ফারসি এবং 'খবর', 'কাগজ' ও 'নজর' আরবি।

তার মানে, আমরা রোজকার জীবনে যেসব কথা বলি, বেশিরভাগই আরবি, ফারসি?

আলবত। এই 'আলবত'টাও আরবি। এক্ষুনি আপনি যে বললেন, রোজকার জীবনে... বেশিরভাগই... এখানে 'রোজকার' ফারসি, বেশিভাগের 'বেশি'টা ফারসি।

কী মুশকিল ! এতদিন জানতাম না তো !

'মুশকিল' আরবি হলেও শুধু শুধু মুশকিল হবে কেন ! একটু অভিধান ঘাঁটলেই মুশকিল আসান হয়ে যাবে। তখন জানতে পারবেন 'আসান'ও আরবি। আচ্ছা, মনে করে দেখুন তো, আপনি আসার পর অন্দরমহল থেকে চা-নাশতা পাঠানো হলো। এখানে 'অন্দর' ফারসি, 'মহল' আরবি। আর নাশতাটা?

নিশ্চয়ই ফারসি।

বিলকুল ঠিকই বলেছেন। 'নাশতা' ফারসি। দেখুন এই 'বিলকুল' হলো আরবি। আচ্ছা, এরপর আমরা আয়েশ করে নাশতা খেতে খেতে আসর জমিয়ে দিলাম। তাই না?

তাই তো, এর মধ্যেও আরবি-ফারসি আছে নাকি?

অবশ্যই আছে। আরবি-ফারসি বাদ দিলে বাংলা ভাষা সাবলীল গতিতে চলতেই পারবে না যে ! দেখুন আরাম শব্দটা ফারসি, আগেই আমরা জেনেছি। এর জুড়ি যে 'আয়েশ', এটা আরবি। আসর জমানোর মধ্যে 'আসর' ও জমা দুটোই আরবি। আরবিতে 'আশর' মানে দশ। দশজন মিলে যে মজলিস হয়, সেটাই হয়েছে আসর। এক্ষুনি যে 'মজলিস' বললাম, এটাও আরবি। 'জলসা', 'মহফিল' এগুলোও আরবি। অবশ্য কলকাতার বাবুরা মহফিলকে 'মাইফেল' (গানবাজনার আসর) বানিয়ে নিয়েছে !

তার মানে, আরবি-ফারসি বাদ দিলে বাংলা অচল হয়ে যাবে !

তা আর বলতে ! এই যে আপনি বললেন, মানে, এই 'মানে' শব্দটাও আরবি। বাদ দিলে বললেন তো ! 'বাদ'ও আরবি। বাদ না বলে 'বাতিল' বললে সেটাও আরবি। 'রদ' করলেও আরবি। আচ্ছা মামা, আমরা আবার আদালতের রাস্তা ধরি চলুন। আসামিকে মাঝে মাঝে তো পুলিশের হেফাজতে রাখতে হয়। তারপর জামিন, খালাস ইত্যাদি থাকে। এখানে 'হেফাজত', 'জামিন', 'খালাস'—তিনটিই আরবি। আর হ্যাঁ, এক্ষুনি যে রাস্তা ধরার কথা বললাম, এই 'রাস্তা' শব্দটা ফারসি।

রাস্তাও ফারসি ! এখন তো দেখছি, আরবি-ফারসি ছাড়া কদম ফেলাই যাবে না !

কী করে যাবে ! 'কদম' শব্দটাও তো আরবি।

বাংলা ভাষায় এত বেশি এবং এমন অপরিহার্য সব আরবি-ফারসি শব্দের স্বচ্ছন্দ ব্যবহার থেকে কী বোঝা যায়?

এটাই বোঝায় যে, বাংলা ভাষার পুষ্টিসাধন ও সৌন্দর্যায়নে .দের অনেক বেশি অবদান আছে। কারণ .রাও এই ভাষাকে গভীরভাবে ভালোবেসেছে।

অনেক কিছু জানলাম, বাবা !

'বাবা' তুর্কি। 'কাকা' ফারসি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বইতে আরবির 'আব্বা' থাকলেই আপত্তি ! যাইহোক, আজান হয়ে গেছে। এবার মসজিদে গিয়ে ইশার নামাজটা জামাতে পড়ে আসা যাক, মামা !

হ্যাঁ চলো। যেতে যেতে একটা প্রশ্ন করি—বাবা কাকা মামা-য় সমস্যা নেই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সরকারি পাঠ্যবইতে 'আব্বা' থাকলে আপত্তি ওঠে কেন?

বলছি শুনুন : আমরা, মানে বাংলাভাষীরা, জাতিধর্ম শিক্ষিত নিরক্ষর নির্বিশেষে হাজার হাজার আরবি-ফারসি শব্দ অহরহ ব্যবহার করছি। ('হাজার' ফারসি) এগুলো আমাদের মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ ও পুষ্ট করার পাশাপাশি মোলায়েমও করেছে ('মোলায়েম' ফারসি)। এসব শব্দকে আমরা বাংলা করেই নিয়েছি। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো ('আফসোস' ফারসি), বাংলাভাষীদের মধ্যে ধর্মপরিচয়ে যারা সংখ্যাগুরু তাদের ব্যবহৃত কিছু শব্দ—যেমন : 'আব্বা', 'গোসল', 'ফজর', 'জোহর', 'আজান', 'জামাত', 'নামাজ' ইত্যাদি—পশ্চিমবঙ্গের একশ্রেণির শিক্ষিত বাঙালির কাছে এখনও বাংলা হয়ে উঠতে পারেনি। বাংলা অভিধানের কাগজে ঠাঁই পেয়েছে বটে কিন্তু জায়গা পায়নি মনের মগজে ('জায়গা' ও 'মগজ' ফারসি) ! তাঁদের কাছে এই শব্দগুলো এখনও থেকে গেছে 'বহিরাগত' বা 'বিদেশি' হয়ে !

****** মজফফর হোসেন ******
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
১৭৪ রাসবিহারী এভিনিউতে জর্জ বিশ্বাসের বাড়ি এখন  'দেবব্রত কাফে'...

*****************************************************
 
একটা ইলেকট্রিক বিল কিনা গেয়ে উঠল রবীন্দ্রসঙ্গীত, তা- জর্জ বিশ্বাসের গলায়!
এমনই এক গল্পের শুরু একটা বন্ধকী  বাড়ি আর তার প্রাগৈতিহাসিক ভাড়াটের ইলেকট্রিক বিলকে নিয়ে বলি তাহলে
বছর দশেক আগে খবরের কাগজে একটা বিজ্ঞাপন চোখে পড়ল একদা যাদবপুরের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র অর্ণব মিত্রের ব্যাঙ্কে মর্টগেজ দেওয়া হয়েছিল বাড়ি আর ছাড়ানো যায়নি তাই ব্যাঙ্ক ওই বাড়ি বিক্রি করে দিচ্ছে ঠিকানায় রাস্তার নাম রাসবিহারী এভিনিউ দেখে বেশ উৎসাহ পেলেন অর্ণববাবু কারণ, তাঁর ঠাকুরদার তৈরি বাড়িটিও রাসবিহারী এভিনিউয়ের ওপরেই পড়ে যেখানে তিনি নিজে থাকেন তাই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে শেষ অবধি  বাড়িটি কিনেই ফেললেন তিনি এরপর?
কেনার কিছুদিনের মধ্যেই হাতে এল একখানা ইলেকট্রিক বিল সেখানে স্পষ্ট ততোধিক স্পষ্ট করে লেখা একজনের নাম-- দেবব্রত বিশ্বাস! অর্ণববাবুর কথায়, "আমি তো প্রথমে কিছু বুঝতেই পারিনি খানিক্ষণপর ঘোর কাটল বুঝতে পারলাম পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম এই বাড়িতেই মৃত্যুর আগে অবধি ভাড়া ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস!"
এরপর বাকিটা শুধু ইতিহাস
উন্নততর কলকাতায় তখন রাসবিহারী এভিনিউয়ের ওপরে, ট্রাঙ্গুলার পার্কে একেবারে রাস্তার ওপরে একখানা তিনতলা বাড়ি পেলে কোদাল-গাঁইতির হাত ধরে প্রোমোটারের লোভ সামলানো ভয়ানক কঠিন ব্যাপার ছিল কিন্তু সেই অসাধ্যই সাধন করলেন বাড়ির নতুন মালিক বাড়ি ভেঙে অতিকায় ফ্ল্যাট বানানো তো দূরের কথা, এমনকি সেই বাড়িতে ভাড়া পর্যন্ত দিলেন না নিজেও থাকলেন না সেখানে তৈরি করলেন একটা ছোট্ট কাফে নাম দিলেন--মাড ১৭৪- রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে, জর্জ বিশ্বাসের বাড়িতে লোকে আবার আনাগোনা শুরু করল, প্রায় তিনদশক পর
আপনি যদি কোনওদিন ওই কাফেতে যান, দেখবেন, একতলার যে ঘর থেকে ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত ভেসে আসত একদা, সেই ঘরেই এখন তৈরি হচ্ছে কফি-স্যান্ডউইচ আর আপনি সেখানে বসে কফিতে চুমুক দিতে-দিতে শুনছেন, 'দিন পরে যায় দিন, বসি পথপাশে' চাইলে বইয়ের তাক থেকে একখানা বই পেড়ে নিয়ে পাতা ওল্টাতেও  পারেন আবার ইচ্ছে হলে, লাল মেঝের সিঁড়ি দিয়ে সোজা দোতলায় উঠে গিয়ে বসতে পারেন সেখানেও তিষ্ঠোতে পারেন ক্ষণকালের জন্য কানে আসতে পারে, কেউ একজন ওপরতলায় গান শেখাচ্ছেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের কৌতূহল মেটাতে সিঁড়ি বেয়ে সেখানে উঠে যেতে পারেন তারপর, জর্জ বিশ্বাসের বাড়িতে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের এক পুনরাবৃত্তির সাক্ষী হতে পারেন দেখতে পারেন, সেখানে হারমোনিয়াম বাজিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাচ্ছেন এই প্রজন্মের এক শিল্পী, মনোজ মুরলী নায়ার আর, চৌকিতে পা মুড়ে বসে রয়েছেন আগামী প্রজন্মের হবু শিল্পীরা আর অলক্ষ্যে, অলৌকিকভাবে, জর্জ বিশ্বাস গেয়ে চলেছেন, "তুমি খুশি থাকো, আমার পানে চেয়ে চেয়ে..."
সম্প্রতি ওপার বাংলায় সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণালের জন্মভিটে সংরক্ষণের দাবি উঠেছে শোনা যাচ্ছে, ঋত্বিকের বাড়ি ভেঙে তৈরি হচ্ছে গ্যারেজ এদিকে এপার বাংলাতেও চলছে প্রবলভাবে ভাঙাভাঙির কাজ হয় ভগ্নদশা নয় প্রোমোট-দশা এর মাঝে কোথাও "কেউ নেই কিছু নেই সূর্য নিভে গেছে" এমতাবস্থায়, কি কাকতলীয়ভাবেই-না ব্রাত্যজনের বাড়ি পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠল, "গানের সুরে"  যেন অতিপ্রাকৃত গাথা, এক রাবীন্দ্রিক পুনর্জন্ম  না-কোনও সরকারি উদ্যোগ, না-কোনও বেসরকারি উদ্যোগ, কেউই যখন এগিয়ে এল না জর্জ বিশ্বাসের স্মৃতিকে বাঁচাতে, তখন অজান্তেই নীলামে ওঠা বাড়ির মালিক হয়ে পুনরায় তার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করলেন যাদবপুরের এক প্রাক্তনী জিজ্ঞেস করলাম, ওই বাড়ি ভেঙে প্রোমোটিংয়ের কথা ভাবেননি একবারও? প্রশ্নটা শুনে কী যেন একটা ভাবলেন বাড়ির বর্তমান মালিক অর্ণব মিত্র তারপর বললেন, "আসলে কী জানেন, মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে দেবব্রত বিশ্বাসকে যে সম্বর্ধনা দিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্য়ায়, রবীন্দ্রসদনে, সেখানে আমি ছিলাম ক্লাস সিক্সে বোধহয় পড়তাম তখন একজন বাঙালি হিসেবে দেবব্রত বিশ্বাস আমার আমার পরিবারের ধমনী শিরায় বইছেন তাঁর বাড়ি যখন কাকতালীয়ভাবে আমার হাতে এসেইছে, তখন সেই বাড়ি ভেঙে প্রোমোটারের হাতে দেওয়ার কথা  স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি"
উঠে আসার সময়ে শুধু একটাই কথা বলে এলাম, "দেখুন, আপনার কাফের নাম যা- হোক না কেন, আমি কিন্তু আমার স্টোরিতে এর নাম দেব, 'দেবব্রত কাফে'"
 
সূত্র- এশিয়া নেট নিউজ বাংলা
৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তে প্রকাশিত প্রতিবেদন

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
এক অল্পবয়সী সুন্দরী মোহময়ী যুবতী মোবাইলে কথা বলতে বলতে লিফ্ট প্রবেশ করলো তার একটু আগেই আমিও লিফ্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলাম

আমার দিকে তার পটল চেরা চাউনির এক ঝলক সামান্য তীর্যক আঘাত দিয়ে সে তার বান্ধবীর সাথে কথাবার্তায় মগ্ন হয়ে পরল, "ছাড়, আমি এখন মোবাইল রাখছি এখন আমি লিফ্টের মধ্যে আছি লিফ্টে এক দূর্দান্ত, হ্যান্ডসাম, মেয়েদের ক্রাস্ হওয়ার মত একজনকে পেয়েছি তাকে একটু বাজিয়ে দেখতে হবে তোকে আপডেট্ পরে জানাবোবাই... সি ইউ " এই বলে সে মোবাইল রেখে দিল
এর আগে আমি কিছু বলি, মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল......
"সরি আঙ্কল, আমার বান্ধবী কখন থেকে জোঁকের মত মোবাইলের সাথে চিপকে রয়েছে এবং আমার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে তো বলেই যাচ্ছে, তাই পেছন ছাড়ানোর জন্যে এই মিথ্যেটুকু বলতেই হোলো কিছু মনে করবেন না"
সত্যি কথা বলতে কি...
আজ পর্যন্ত এইরকম ইজ্জতের সাথে বেইজ্জত কখনও হতে হয়নি
সেই জন্যেই লোকে বলে  চল্লিশের পরে শান্ত থাকুন, সুস্থ থাকুন, আর সব সময় সিড়ির ব্যবহার করে ফিট্ থাকুন, লিফ্ট ব্যবহার করবেন না
সমগ্র চল্লিশোর্ধ বন্ধু দের জন্য

(Collected)
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(23-10-2021, 01:49 PM)ddey333 Wrote: এক অল্পবয়সী সুন্দরী মোহময়ী যুবতী মোবাইলে কথা বলতে বলতে লিফ্ট প্রবেশ করলো তার একটু আগেই আমিও লিফ্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলাম

আমার দিকে তার পটল চেরা চাউনির এক ঝলক সামান্য তীর্যক আঘাত দিয়ে সে তার বান্ধবীর সাথে কথাবার্তায় মগ্ন হয়ে পরল, "ছাড়, আমি এখন মোবাইল রাখছি এখন আমি লিফ্টের মধ্যে আছি লিফ্টে এক দূর্দান্ত, হ্যান্ডসাম, মেয়েদের ক্রাস্ হওয়ার মত একজনকে পেয়েছি তাকে একটু বাজিয়ে দেখতে হবে তোকে আপডেট্ পরে জানাবোবাই... সি ইউ " এই বলে সে মোবাইল রেখে দিল
এর আগে আমি কিছু বলি, মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল......
"সরি আঙ্কল, আমার বান্ধবী কখন থেকে জোঁকের মত মোবাইলের সাথে চিপকে রয়েছে এবং আমার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে তো বলেই যাচ্ছে, তাই পেছন ছাড়ানোর জন্যে এই মিথ্যেটুকু বলতেই হোলো কিছু মনে করবেন না"
সত্যি কথা বলতে কি...
আজ পর্যন্ত এইরকম ইজ্জতের সাথে বেইজ্জত কখনও হতে হয়নি
সেই জন্যেই লোকে বলে  চল্লিশের পরে শান্ত থাকুন, সুস্থ থাকুন, আর সব সময় সিড়ির ব্যবহার করে ফিট্ থাকুন, লিফ্ট ব্যবহার করবেন না
সমগ্র চল্লিশোর্ধ বন্ধু দের জন্য

(Collected)
 
মনে থাকবে  Smile
Like Reply
*পৌনে তেরোর নামতা*

 
এতক্ষণ ধরে বোকার মত বসে ছিলি কেন? ঢেউ গুনতে পারিস নি? প্রতি ঢেঊয়ে সাত পয়সা করে হলে এতক্ষণে তুই লাখপতি হয়ে যেতিস, জানিস?”
আমি বললুম, বোকার মত বসে থাকিনি তো আমি তো ইলিশ মাছের নৌকো গুনছিলাম
ছোটোকাকা ছেড়ে দেবার লোক নন বলল, সেটা অবশ্য ঠিকই করছিলি তা কী করে বুঝলি কোন্জেলেডিঙ্গি ইলিশের আর কোন্টা চিংড়ির?
ওই যে, যে নৌকোর মেছোরা মাথায় গামছা পেঁচিয়েছিল সেগুলো ইলিশের, আমি জানি জালে বাধা পেয়ে ইলিশেরা যখন উড়ুক্কু মাছের মত সাঁই সাঁই করে লাফিয়ে নৌকোয় ওঠে তখন ওদের ধারালো পেটির ঘায়ে মেছোদের মাথা কেটে যায় কিনা, তাই গামছা পেঁচিয়ে রাখে আমি দেখেছি
ছোটোকাকা বলল, তা যখন এতোই জানিস, তাহলে মুখটা সবসময় অমন সাড়ে পাঁচের মত করে রাখিস কেন? পৌনে তেরোর নামতা জানিস?
আমি ম্লান হয়ে বললাম, পৌনে তেরো কেন ছোটকা? তেরো কি উনিশ বলো, আমি ঠিক পারব
ছোটোকাকা আমার কানে একটা প্যাঁচ দিয়ে বলল, না পৌনে তেরোর ঘরের নামতাই বলতে হবে আমি অখন অতিকষ্টে পৌনে তেরো দুগুনে, ইয়ে মানে সাড়ে পঁচিশ, পৌনে তেরোত্তিনে (আবার ঢোঁক গিলে) সওয়া আটচল্লিশ এই করতে করতে যখন পৌনে তেরোদ্দশে একশ সাড়ে সাতাশে থেমেছি, ছোটকাকা কিছু না বলে আমার নড়া ধরে টানতে টানতে বাবার কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, দাদা, বুকুন এখন সাত বছরেরটি হয়েছে আপনি মত করুন ওকে কলকাতায় নিয়ে যাই আমার বাসাবাড়িতে থাকবে, ইশকুলে পড়বে
বাবা বলল, তুই আর হাসাস নি ফণী তুই পড়িস ডাক্তারি সময় কোথায় পাবি বুকুনকে দেখার? এমনিতেই বয়ে যাচ্ছে ওখানে গিয়ে আরও তা ছাড়া, যা ভ্যাব্লা প্রকৃতির ছেলে, কলকাতায় গিয়ে রাস্তায় ট্রামের তলায় গিয়ে মরবে
ছোটকা গলা খাটো করে কী যেন বলল বাবা একসময় রাজি হয়ে গেল মা আঁচলে চোখ মুছল
কিষাণগঞ্জ থেকে কলকাতা, নৌকো তারপর স্টীমার তারপর ট্রেন শিয়ালদায় নেমে ট্যাক্সি
*****
বাগবাজারের ঘাটে নৌকো চুক্তি করছে একজন ফড়ে মতন লোক সঙ্গে এক আড়তদার বাঘের মত চেহারা
- মনকরা কতোয় দিবি রে ?
নৌকো ভিড়তে না ভিড়তে দরদস্তুর শুরু হয়ে যায়, খুচরো ক্রেতারা ধারেই ঘেঁষতে পায় না
জেলে বলছে, মনপিছু দেড়শোর কমে হবেনিকো
ফড়ে আর আড়তদারে চোখাচুখি করে জেলেকে বলল, দেড় শো? তাহলে বল দিনি একটা আড়াই সেরি ইলিশের দর পাইকিরিতে কতো পড়ছে?
আমি বাগবাজারের ঘাটে মাঝে মাঝেই গিয়ে চুপ্টি করে বসি আমার মুখে নিশ্পিশ করতে লাগল উত্তরটা
চট করে বলে দিলুম, নয় টাকা আনা
দুজনেই আমার দিকে প্রশ্নসুচক চোখে তাকালো
আমি বিস্তারিত করে বললাম, শুভঙ্করী আর্যা আমার জানা আছে কিনা মণ প্রতি যত টঙ্কা হইবেক দর/ আড়াই সেরেতে তত আনা করে ধর তা দেড়শো আনা কে ষোলো দিয়ে ভাগ করলে নয় টাকা আনাই দাঁড়ায় তো
আড়তদার বললেন, বাপা, তোমার কথায় বার্তায় মনে হচ্ছে তুমি গ্রাম দেশের ছেলে পড়াশুনা কিছু করো?
অপরিচিত লোকেদের আজ্ঞে করে বলতে হয় অবশ্য ধুতি খাটো হলে আজ্ঞেমাজ্ঞে না করলেও চলে ইনি খাটো ধুতি, পকেটওয়ালা হাফ শার্ট তেল চুপ্চুপে মাথা, মাঝে সিঁথি, ঝোলা গোঁপ আমার এদিককার ঘটি ভাষা তো বেশ রপ্ত- তবু এই আড়তদার বাবু ধরে ফেলল আমি গাঁ-ঘরের ছেলে 'নয় টাকা' বলে ফেলছি টাকার বদলে, সে তো আর শোধরাবার উপায় নেই
এত দুঃখ হচ্ছিল তাই আরও কষে খাঁটি কলকাতার জবানে উত্তর দিলাম বললাম, আজ্ঞে, আমি কলকেতায় লতুন এয়েচি ইকলেজে যাই বৈকি সামনের বারে বৃত্তি পরীক্ষে দোবো
- কোন ইকলেজ?
- কাশী মিত্র প্রাইমারি
- থাকো কোথায়?
- আজ্ঞে, ছকু খানসামার গলিতে কাকা আছেন, কারমাইকেলে ডাক্তারি পড়েন তাঁর কাছে আছি
তা যাও বাপু, তোমাদের ইকলেজের হেডমাস্টার বর্ধন মশাইকে আমার নাম করে বোলো, তোমার পড়তে পয়সা লাগবে নাকো খাতা বইপত্তরও মাগনা পাবে
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু আজ্ঞে আপনার নামটা?
গুঁপো আড়তদার বাবুটি কিছু বলবার আগেই আর এক ফড়ে বলে উঠল, বলচ কী হে ছোকরা, এঁকে জানো নি? ইনি হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, স্যার আশুতোষ মুকুজ্জে
তা ভাইসও বুঝলুম না, চ্যান্সেলরও মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেল তাও মুকুজ্জে শুনে পা ছুঁয়ে পেন্নাম করে ফেললুম ইনি মাছের আড়তদার মানুষ নন তবে
আমি ফ্রীতে পড়তে পাবো সেটা বোঝা গেল
লাফাতে লাফাতে ছোটোকাকার বাসার দিকে রওনা দিতে আশুবাবু পেছন থেকে হেঁকে বললেন, তোমার নামটি তো জানা হল না ছোকরা !
আমি বলুম, আজ্ঞে, আমার নাম কেশব কেশবচন্দ্র নাগ
উনি বললেন, অঙ্কটা ছেড়ো না বাপু

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
আমরা সবাই জানতুম 'রতন' ফেল করবে কারণ সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতো
মুশকিল হলো সৌম্যও সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতো কিন্তু পরীক্ষায় ফার্স্ট হতো.....!!!
 আমরা, যারা গড়ে ৩৫ থেকে ৫৫ নম্বর পেতুম, তারা কিছুতেই বুঝতে পারতুম না........সরস্বতী পুজোর আগে কুল খাওয়া ঠিক না ভুল, পাপ না পুণ্য......!!!
এমতাবস্থায় পুজোর আগে কুল স্পর্শে বিরত থাকাই শ্রেয় ছিল 
রতন কিন্তু বলতো.. "তোরা ভাবিস কুল খাই বলে ফেল করি....., তা নয় রে বোকা 
বাবা বিছানায় তিন বছর, হাত পায়ে সাড় নেই 
লেখাপড়ার সময় কই......গ্যারেজে রাতদিন কাজ না করলে খাব কী.....!!!" 
সৌম্যও বলতো একই কথা...., কুল খাওয়া না খাওয়ার সঙ্গে নাকি রেজাল্টের কোন সম্পর্ক নেই 
কিন্তু আমরা মন থেকে একথা কখনও মেনে নিতে পারিনি
সৌম্য এখন খুব বড় ডাক্তার ভাল পসার খুব নামডাক 
আর রতনের বিশাল ব্যবসা, চারটে জেলায় মারুতির ডিলার
- 'কুল' তালে কোন ফ্যাক্টর নয় মানছো.....???
" ফ্যাক্টর বৈকি, এই যে আমি হরিপদ কেরানী........আজ এই বয়সে এসেও সরস্বতী পুজোর আগে 'কুল' খাই না কারণ ভয়........ছেলেটা যদি "নাইন থেকে টেনে" উঠতে গিয়ে ফেল করে যায়......!!! 
কুল হলো গিয়ে আদতে 'মধ্যবিত্ত' ফ্যাক্টর......!!! "
 
Like Reply
#অণুগল্প

 
বেজার মুখে স্ট্যান্ডে বসেছিল ঝন্টু।
আজ বাজার খুব খারাপ। অবশ্য শুধু আজ না, এই গোটা হপ্তা জুড়েই বাজার খুব খারাপ। পুজোতে 'এদিক যাওয়া যাবে না, ওদিক যাওয়া যাবে না' চলল 'দিন, নো এন্ট্রির চক্করে, তারপর বিষ্টি শুরু হলো তো হলোই। আর এই দু'দিন ধরে চলছে লক্ষ্মীপুজো! লোকজন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেই না! আর স্ট্যান্ডে শাটল গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে ওদের।
এমনিতেও এবার পুজোতে ওদের রুটে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। কি, না - লোকজনের হাতে এখন টাকাপয়সা বাড়ন্ত। যেন ওদের বাড়িতে পয়সার গাছ লাগানো আছে! ওদের বাড়িতেও তো অভাবের হাঁ মুখ আছে! কিন্তু, বলে আর কি হবে! আর স্ট্যান্ডের সবাইকে দিয়ে ঝন্টুকে বিচার করলে হবে? স্ট্যান্ডের আর কারো কি বাবার করোনা হয়েছিল? অক্সিজেনের অভাবে মর মর হয়েছিল? আর দামী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল? যাক, টাকা গেছে জলের মতো, কিন্তু তাও মানুষটা ঘরে ফিরেছে... এটা কি কম শান্তির কথা?
তবে হ্যাঁ, লোন হয়ে গেছে অনেক। প্রতি সপ্তাহে লোন নিতে পাড়ায় লোক আসে, গুনেগেঁথে দিতে হয় বকেয়া টাকা। আর তাই আজকাল মেজাজ সবসময় চড়ে থাকে ওর। আর রাগ হলেই মাথার ঠিক থাকেনা। তখন সবাইকে গালাগাল দিয়ে ফেলে ও। প্যাসেঞ্জারদের দেয় না, কিন্তু লাইনের সবাই ঝন্টুর মুখকে ভয় পায়। সেদিন বিশু একটা ভাল কথা বলতে এসেছিল ইয়ার্কির ছলে... সেই নিয়ে এমন করে কথা শুনিয়েছে যে বেচারা মুখ কালো করে সরে গেছিল। পরে খারাপ লেগেছিল ওর... কিন্তু ততক্ষণে যা হবার তো হয়েই গেছে! ওর সাথে সেভাবে কেউ কথা বলছে না স্ট্যান্ডের। খারাপ লেগেছে, তবে তারপরেই মনে হয়েছে, "ঠিকই আছে! আমি তো বাজে ! আমি কি ভাল ছেলে নাকি, যে ভাল ছেলেদের মতো ভাল ভাল কথা বলব? হুঁহ!"
নিজের মনে এসব এতাল বেতাল ভাবছে, হঠাৎ দেখে লাল শাড়ি পরা একটা মেয়ে এসেছে স্ট্যান্ডে। যাক, এতক্ষণে কেউ এলো, এরপর যদি আরও কয়েকজন আসেন, গাড়ি না ভরলেও ট্রিপ মেরে দেবে ও। দরকারে রাস্তা থেকে কাউকে তুলে নেবে।
দেখে, মেয়েটি লাইনের প্রথমে থাকা ওর গাড়ির দিকে না গিয়ে রেলিং এর কাছে চলে এলো।
"সেক্টর ফাইভ যাবেন তো? ওই যে, প্রথম গাড়িটা... ২৪৩৯, ওটা যাবে।" বলে উঠল ঝন্টু।
"না দাদা, আমার আজ অফিস ছুটি। আমি তো আপনাদের কাছেই এসেছি। ভালোই হলো, আপনার সাথেও দেখা হয়ে গেল!" বলল মেয়েটি।
বলে কি! এমনি হুরী পরী মার্কা একটা মেয়ে নাকি ওর কাছে এসেছে!
কোঁত করে একটা ঢোঁক গিলল ও। তারপর আমতা আমতা করে বলল "-আমার কাছে মানে..."
"আসলে দাদা, আমি থ্যাংকইউ বলতে এসেছি। এই 'দিন আগে আমার একটা ইন্টারভিউ ছিল। এদিকে ক্যাবের ভাড়া অনেক দেখাচ্ছিল। শেষমেষ স্ট্যান্ডে এসে দেখি ওই দুর্যোগের মধ্যেও আপনারা গাড়ি চালাচ্ছেন। এই আপনার গাড়িতেই গেছিলাম আমি। চাকরিটা হয়ে গেছে। কোভিডের জন্য আগের চাকরিটা চলে গেছিল... ইইন্টারভিউ দিচ্ছিলাম, কিন্তু হচ্ছিল না কিছুতেই! তাই ভাবলাম স্ট্যন্ডে আসি, একটু থ্যাংকইউ বলে যাই! আপনার গাড়ির এই 'মায়ের আশীর্বাদ' লেখা স্টিকারটা মনে ছিল... আর এখানে এসে আপনাকেও চিনতে পেরে গেলাম..."
"... বাহ্! খুব খুশি হলাম..." সত্যিই খুব ভাল লাগছিল ঝন্টুর। এতদিন ধরে গাড়ি চালাচ্ছে, এমনি দেখেনি কখনও!
"খুশি তো হবেন দাদা। আপনি, আপনারা সবাই খুব ভাল তো! এই যে দাদা, একটু প্রসাদ এনেছি আমাদের বাড়ির মা লক্ষ্মীর পুজোর। ওই নাড়ু-টাড়ু আর কি... একটু ভাগ করে নেবেন!" মাস্কের আড়ালে হেসে বলে মেয়েটি। তারপর ওর হাতে বেশ বড় একটা প্যাকেট দিয়ে চলে যায়
ঘোর কাটছিল না ঝন্টুর।
ধন্যবাদ জানালো স্ট্যান্ডে এসে একজন প্যাসেঞ্জার!
প্রসাদ দিয়ে গেল!
আবার কি যেন বলল... হ্যাঁ খুব ভাল!
ওকে...ওকে ভাল বলল!
একটু চুপ করে রইল ঝন্টু। তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল।
ভাল ছেলে হবে এবার। বিশুকে গিয়ে এক্ষুণি স্যরি বলবে। মন থেকে ক্ষমা চাইলে বিশু ক্ষমা না করে পারবেই না!
আরও একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল ও।
মেয়েটি ওকে গাল ভরে 'দাদা' ডেকে গেল!
আর ওদের গালাগাল বেশিরভাগ কিনা মা আর বোনের নামে!
ইস! ছিঃ!
আগে কেন মনে আসেনি?
নাঃ, এরকম কোনো গালাগাল... ধুত্তোর... কোনো গালাগাল আর দেবে না ঝন্টু।
এবার ভাল ছেলে হবে।
নিজের মনেই হাসতে হাসতে প্রসাদের প্যাকেটটা নিয়ে বিশুর দিকে এগিয়ে গেল ঝন্টু...

Like Reply
*চলুন পিছিয়ে যাই একশো বছর গল্পটা ষোলো জনের*


1. সাল ১৯১৬, দীর্ঘ তেইশ বছর পর বার্মা থেকে কলকাতায় ফিরলেন এক মধ্যবয়সী বেকার লোক সাথে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, যাঁর নাম মোক্ষদা থেকে পাল্টিয়ে রেখেছেন হিরন্ময়ী প্রথম স্ত্রী আর প্রথম সন্তানকে বার্মাতেই খুইয়ে এসেছেন তিনি, মরণঘাতী প্লেগে এই কর্মঠ মানুষটির নাম শরৎচন্দ্র অল্প 'বছরেই যিনি হয়ে উঠবেন অমর কথাশিল্পী
 
2. একই সময়ে শান্তিনিকেতনের গোড়াপত্তন করেছেন তেরোতে নোবেলজয়ী এক কবি মাত্র এক বছর আগে পেয়েছেন নাইট উপাধিও এই কবির নাম রবীন্দ্রনাথ আমাদের রবিঠাকুর যদিও সামনেই হতে চলা জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকান্ডে সেই উপাধি ত্যাগ করবেন তিনি*
 
3. প্রায় একই সময়ে, ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিয়ামপুর হাই কলেজে পড়ছে বাবা মাকে ছেড়ে আসা এক ভবঘুরে যুবক পড়াশোনায় তেমন মন নেই তার ক্লাস টেনে উঠলেও, ম্যাট্রিক পরীক্ষা না দিয়েই আর এক বছরের মাথায় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে সে, ছন্নছাড়া এই কিশোরের নাম নজরুল বিদ্রোহ অল্প অল্প করে জন্ম নিচ্ছে যার চিন্তাভাবনায়*
 
 
4. ফরিদপুর জিলা কলেজে তখন পড়াশোনা করছে নজরুলেরই সমবয়সী আরেক ভাবুক কিশোর লুকিয়ে লুকিয়ে কবিতা লেখা তার শখ, বিশেষ করে পল্লী আর পল্লীর মানুষদের নিয়ে আর 'বছরের মাথায় কবর কবিতা লিখে নিজের জাত চেনাতে যাওয়া এই কিশোরের নাম জসীমউদ্দিন, পল্লীকবি নামে খ্যাত হবে যে*
 
5. বহরমপুরে কলেজে পড়া অবস্থাতেই অনুশীলন সমিতি নামের এক সংগঠনে বিপ্লবের হাতেখড়ি নেয়া শুরু করেছে আরেক ছাত্র এই সাধারণ চেহারার ছাত্রটির নাম সূর্য সেন, আমাদের মাস্টারদা ব্রিটিশদের কাঁপাতে হাতেখড়ি চলছে যাঁর*
 
6. কলকাতায় তখন আসন পেতেছেন এক স্বামী হারা নারী মেয়েদের সুশিক্ষিত করা যার রাত দিনের ব্রত স্বামীর নামেই একটা কলেজ খুলেছেন তিনি, নাম সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাই কলেজ বাড়ি ঘুরে ঘুরে ছাত্রী সংগ্রহ করেন এই উদয়াস্ত পরিশ্রম করে চলা মহিয়সীর নাম বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন*
 
7. ঠিক একই সময়ে হরিহর বন্দোপাধ্যায় নীরদাদেবীর সংসারে ফুলের মতো বেড়ে উঠছে এক বালক বয়স তার 'দিন আগেই আট পেরুলো গায়ের রঙ কালো বলে সবাই আদর করে ডাকে কালো মানিক এই কালো মানিকটিই ভবিষ্যতে লেখক মহলে পরিচিত হবে মানিক বন্দোপাধ্যায় নামে সরল গরিব মানুষগুলোর গল্প উঠে আসবে যাঁর কলম বেয়ে*
 
8. এদিকে হরিদাস তাঁর ছেলের অল্পবয়সেই বিয়ের তোড়জোড় চালাচ্ছেন ছেলে যদিও ম্যাট্রিক পাস করেছে, তবুও তার লেখাপড়ায় বা গেরস্থালী কোনোটাতেই মন নেই, কেবল উড়ুউড়ু ভাব তাই সুযোগ বুঝে উমাশশী দেবী নামে এক বালিকার সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন ছেলের! এই সদ্য জামাই সাজা ছেলেটির নাম তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়*
 
9. ঠিক একই সময়ে একজন যখন বউকে ঘরে তুলছেন, আরেক কলেজমাস্টার তখন স্ত্রীকে কলেরায় হারিয়ে শোকে কাতর স্ত্রী তারাদেবীকে হারিয়ে কাতর হুগলির জাঙ্গীপাড়া কলেজের এই শিক্ষকটির নাম বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় সামনেই পথের পাঁচালী খুলতে ভারতের পথে প্রান্তরে নামছেন যিনি*
 
10. এদিকে বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকার হাল ধরেছেন সুকুমার রায় একের পর এক গল্প আঁকিবুকি ছড়া দিয়ে প্রাণ মাতাচ্ছেন শিশু থেকে বুড়ো সবার আর 'বছর পরেই স্ত্রী সুপ্রভা রায়ের কোলে আসতে চলেছে এক ক্ষণজন্মা ছেলে, তাঁর নাম সত্যজিত রায়*
 
11. সত্যজিতের জন্মের বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সংস্কৃতের প্রফেসর হিসাবে জয়েন করবেন এক প্রৌঢ় ব্যক্তি বয়স বাড়লেও তাঁর জ্ঞানের ধার কমেনি এখনো নিয়মিত লেকচার দিয়ে বেড়ান ভাষা আর সাহিত্য বিষয়ে এই জ্ঞানী ব্যক্তিটি ভাষাবিদ . মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্*
 
 12. তাঁর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেওয়ার ঠিক এক বছর আগেই গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুতফর রহমান আর সায়রা খাতুনের ঘর আলো করে জন্মাতে চলেছেন এক বলিষ্ঠ নেতৃত্বের শিশু সামনে হতে চলা রক্তক্ষয়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেবে, হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান*
 
13. কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তখন অবসর নিতে চলেছেন আজীবন বিজ্ঞানের সাথে বন্ধুত্ব রেখে চলা এক সহজ সরল অহংকারহীন মানুষ জীবনযুদ্ধের অনেকটুকু পাড়ি দিয়েই আজ এই সম্মানের জায়গায় দাঁড়িয়েছেন তিনি তাঁর নাম আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বসু বাংলার বিজ্ঞানী মহলের গর্ব*
 
 14. এদিকে ঘটেছে আরেক কান্ড কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রফেসর নাকউঁচুু ইংরেজ ওটেনকে উত্তম মধ্যম দেওয়ার দায়ে কলেজ থেকে রাসটিকেট করা হয়েছে এক বাঙালি ছাত্রকে অ্যান্টি ভারতীয় কথা বলায় প্রফেসরকে পেটানোর মত সাহসী সেই ছাত্রটির নাম সুভাষ বসু ভবিষ্যতে নেতাজী নামে সমগ্র ভারতবর্ষের ব্রিটিশত্রাস হতে চলেছে যে
 
 15. এই প্রেসিডেন্সি কলেজেই আর দু'বছর পর ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হতে চলেছে আরেক ছাত্র এখন ব্রজমোহন কলেজে ইন্টারের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে সে সর্বদা চুপচাপ থাকা লাজুক ইন্ট্রোভার্ট থাকা এই ছেলেটির নাম জীবনানন্দ রূপসী বাংলা ধরা দিতে চলেছে যার কলমে অদূর ভবিষ্যতে*
 
16. ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে কিশোরগঞ্জে তমিজউদ্দীন দারোগার ঘরে তখন সবে জন্ম নিয়েছে এক পুত্রশিশু বয়স এই ষোলো সালের শেষে এসে দুইয়ে পড়লো তার এই শিশুটিই বড় হয়ে হাতে তুলে নিবে তুলি ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে কৈশোর কাটানো শিশুটি বড় হয়ে তাই তুলি চালিয়ে যাবে ঠিক নদীর ঢেউয়ের মতই এই শিশুটির নাম জয়নুল আবেদিন শিল্পের আচার্য শিল্পাচার্য উপাধিতে খ্যাত হবে যে*
******************************

*আজ, আজকের এই দিনে, এই মাসে, এই বছরে, ঠিক 'জন ক্ষণজন্মা মানুষ আমাদের বাংলায় চলাফেরা করছেন? বড়জোর পাঁচ? দশ? কুড়ি? অথচ ঠিক একশো বছর আগে, বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, এই বাংলা গমগম করেছে সব বাঘা বাঘা সাহিত্যিক, রাজনৈতিক শিল্পী আর বিজ্ঞানীর পায়ের আওয়াজে এত এত রথী মহারথীর ভীড়ে কুরুক্ষেত্রের ময়দানও কম পড়ে যায়! আমাদের বাংলা মা যে কতটা রত্নগর্ভা, এই লেখাটা সেটা চেনানোর এক ক্ষুদ্র প্রয়াস*
Like Reply
ঘরবন্দি হয়ে থাকার জন্যই কিনা কে জানে আমার লোভ সাংঘাতিক বেড়ে গেছে ঘরে খাবার অপ্রতুল অথচ মনটা সর্বক্ষণ "কী খাই কী খাই" করছে

এই আজই যেমন আমার চান হয়ে গেছে বউ চান করতে গেছে এই সময় মনটা 'খাইখাই' করে উঠল অথচ আর একটু পরেই ভাত খাব এখন কিছু খাওয়ার কোনও দরকারই নেই 
.রান্নাঘরে গিয়ে জিনিসপত্র হাঁটকানো শুরু করলাম খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলাম বেশ বড় এক টুকরো আমসত্ত্ব আহা! জিভে সুড়ুৎ করে জল চলে এল ঘরে নিয়ে এসে টিভি দেখতে দেখতে আয়েশ করে খেলাম
.বউ আরও কিছুটা পরে বাথরুম থেকে বেরিয়ে বলল, "তোমাকে কি এক্ষুনি খেতে দিয়ে দেব? আমার একটু কাজ আছে আমি পরে খাব"
আমি বললাম, "না না কোনও তাড়া নেই তোমার হাতের কাজ সেরে নাও তারপর একসঙ্গে খাব আরে এখন খিদে-টিদেকে একটুও গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়, তাই না?"
বউ বলল, "বলো কী? উফ্ ভাবা যায় না!"
.একটু পরে রান্নাঘর থেকে বউ চেঁচাল, "আচ্ছা তুমি কি আমসত্ত্বটা দেখেছ? অতটা আমসত্ত্ব কী হল?"
খেয়েছি বলে দিলেই ল্যাঠা চুকে যেত কিন্তু হেব্বি লজ্জা করল চুরি করে খেয়েছি বলতে পারলাম না উল্টে রান্নাঘরে গিয়ে আকাশ থেকে পড়লাম, "আমি? আমসত্ত্ব? কই না তো!"
বউ বলল, "চানাচুরের কৌটোর পাশে রাখা ছিল, তাহলে কোথায় গেল?"
আমি বললাম,"তোমার বাবা কাল এসেছিলেন, তাঁকে একবার রান্নাঘরে ঢুকতেও দেখেছিলাম তিনিই হয়তো লোভ সামলাতে পারেননি, খেয়ে নিয়েছেন! উফফ যা লোভ বেড়েছে ওঁর!"
বউ আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলল, "আমসত্ত্বটা আজই আমি ফ্রিজ থেকে বের করে রেখেছিলাম"
আমি মাথা চুলকে বললাম, "তাহলে ইঁদুরেই হয়তো খেয়ে নিয়েছে"
বউ বলল,"হতে পারে ইঁদুর যা বেড়েছে রান্নাঘরে! কবেকার আমসত্ত্ব ফ্রিজের এক কোণে পড়েছিল ওদের মারার জন্যই ওতে বিষ দিয়ে রেখেছিলাম"
ইঁদুরের বিষ!!!! 
আমার সামনের সবকিছু ব্যাপক ভাবে দুলে উঠল পা থরথর করে কাঁপতে লাগল ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে মানুষ মরে যায় শুনেছি শেষ পর্যন্ত  গোলদার কেমিকেলের ্যাট কিলারে আমার মৃত্যু হবে
আর অন্য সময় হলে যদি বা বাঁচার চান্স ছিল কিন্তু এই লকডাউনের সময় তো কোনও হাসপাতালেও ভর্তি নেবে না হয়তো বলবে ইঁদুরের বিষ খেয়েছে? তাহলে পশু-হাসপাতালে ভর্তি করে দিন
আমি দৌড়ে বেসিনে গিয়ে গলায় আঙুল দিয়ে বমি করার চেষ্টা করলাম কয়েকবার চেষ্টা করেও বমি হল না একটুও 
গা মাথা কেমন ঝিমঝিম করছে! সেটা ইঁদুরের বিষের প্রভাবে নাকি ভয়ে বুঝতে পারলাম না
.
.
বউ নির্বিকার হয়ে থালা ধুয়ে যাচ্ছে হায়রে নারী! বুঝতেও পারছে না কী হতে চলেছে! ফ্যাসফ্যাসে গলায় বললাম, "অনেকটা বিষ ছিল?"
বউ শীতল গলায় বলল, "আমসত্ত্বটা তুমি খেয়েছ সে আমি বুঝতেই পেরেছিলাম স্বীকার তো করলেই না উল্টে আমার বাবার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করলে, তাই ইচ্ছে করেই ইঁদুরের বিষের কথাটা বললাম আমসত্ত্বটা ঠিকই ছিল যাও আর বমি-টমি করতে হবে না, মুখ ধুয়ে নাও, ভাত বাড়ছি"
আমি প্রচণ্ড অপমানিত বোধ করে ভাত একটু কম খেলাম বউ অবশ্য বলল, "অনেকটা আমসত্ত্ব সাঁটিয়েছ! ভাত একটু কম খাওয়াই ভাল"
## বাসু মুখোপাধ্যায় ##

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#স্বামীজীর_ভবিষ্যৎবাণী

স্বামীজি যখন বস্টনে স্যানবর্নের বাড়িতে ছিলেন, তখন হাভার্ড বিশ্বিবিদ্যালয়ের গ্রীক ভাষার অধ্যাপক শ্রীযুক্ত জন হেনিরি রাইট তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান কিন্তু দেখা না হওয়ায় অধ্যাপক তাঁর অ্যানিস্কোয়াম গ্রামের গৃহে স্বামীজিকে আমন্ত্রণ জানান স্বামীজি তাঁর আমন্ত্রণ স্বীকার করে বস্টন থেকে ৩০মাইল উত্তরপূর্বে অতলান্তিক মহাসাগরের তীরবর্তী ক্ষুদ্র এই অ্যানিস্কোয়াম গ্রামে গিয়েছিলেন স্বামীজিকে দেখে গ্রামের জনগণ অবাক, তাঁকে দেখার জন্য এলাকায় যেন 'আগ্রহের আগুন' লেগে যায় সবাই উল্লাসে আত্মহারা হয় 
 
স্বামীজি এখানে বক্তৃতা দেন ভারতের সহনশীল জনগণের উপর ইংরেজ জাতির উৎপীড়ন বিষয়ে তিনি নানা কথা বলেছিলেন কিন্তু ভগবানের বিচারে হেন ইংরেজ জাতিকেও যে হার মানতে হবে চীনাদের কাছে --সে কথাও স্বামীজির মুখ থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারিত হয়েছিল অধ্যাপকপত্নীর পত্র থেকে ঘটনার বিবরণটি নিম্নরূপ--
 
"ক্রমে তাঁহার কথাগুলি মন্থরতর হইল, তাঁহার মিষ্ট স্বর গম্ভীর হইতে হইতে যেন ঘন্টারাবের ন্যায় শুনাইতে লাগিল এবং তিনি বলিলেন, 'কিন্তু ভগবানের বিচার তাদের উপর নেমে আসবে--প্রভু বলেছেন, 'প্রতিশোধ আমি নেব, প্রতিদান আমি দেব'... কোটি কোটি চীনাদের দিকে চেয়ে দেখ--ওরাই হচ্ছে প্রভুর প্রতিশোধ, যা তোমাদের উপর নেমে আসবে'... আর একটু মুচকি মুচকি হাসিয়া বলিলেন, 'তারা ইউরোপ ছেয়ে ফেলবে, তারা ইটের উপর ইট খাড়া থাকতে দেবে না নারী, পুরুষ, শিশু--সব যাবে, আবার অন্ধকার যুগ ফিরে আসবে... কেহ যদি ভগবানের প্রতিশোধে বিশ্বাস নাও করে, ইতিহাসের প্রতিশোধে বিশ্বাস করতেই হবে আর -প্রতিশোধ ইংরেজদের উপর নেমে আসবেই তারা পা দিয়ে আমাদের ঘাড় চেপে রেখেছে তারা নিজেদের স্ফূর্তির জন্য আমাদের শেষ রক্তবিন্দু চুষে খেয়েছে তারা আমাদের কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছে আর আমাদের গ্রামের পর গ্রাম প্রদেশের পর প্রদেশ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে! এখন চিনেরা পড়বে তাদের উপর প্রতিশোধরূপে..."
 
ভগিনী কৃস্টিনের স্মৃতিচারণেও আমরা এই উক্তির সমর্থন পাই স্বামীজি সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, "তাঁকে মনে হতো, তিনি যেন ভবিষ্যদ্দ্রষ্টা ঋষিরূপে বিরাজমান;... আমাদের চমকে দিয়েছিলেন--এরপর যে বিরাট অভ্যুত্থানের ফলে নবযুগের সূত্রপাত হবে, তা আসবে রাশিয়া বা চীন দেশ থেকে" বিবেকানন্দ আরও একবার আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, "ইংরেজরা চলিয়া যাইবার পর চীনদেশ হইতে ভারতাক্রমণের একটা বড় আশঙ্কা রহিয়াছে"
 
*যুগাচার্যের ভবিষ্যৎবাণী মিথ্যা হবার নয়* 
*তথ্যসূত্রঃ*
 'যুগনায়ক বিবেকানন্দ'(২য় খণ্ড)--স্বামী গম্ভীরানন্দ
অগ্রহায়ণ ১৪২৩, উদ্বোধন কার্যালয়, পৃষ্ঠা--১০-১২
Namaskar
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
*তখন কলিং বেল ছিল না হঠাৎ শোনা যেত কড়া নাড়ার আওয়াজ*


*- কে?*

*- আমি*
 
*বিশ্বজুড়ে সবাই তো আমি ! তবু এরমধ্যে গলার স্বর চিনতে পারা
 
*‘মেজো মাসি এসেছে’, বলে ছুটে দরজা খুলতে যাওয়া, অথবাবাবা, ছোট পিসি এসেছে’*
 
*_তারা সঙ্গে করে নিয়ে আসত একরাশ খুশীর হাওয়া_যে হাওয়া জানান না দিয়েই চলে আসত হঠাৎ*
 
     *ছিল না দূরভাষ দূর থেকে আভাষ দিয়ে আসার ব্যাপার ছিল না ছিল না তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্হা করার প্রয়োজন অফুরন্ত সময় ছিল, ছিল না ব্যস্ততা জীবন ছিল সহজ, সরল,অন্তরঙ্গ*
 
*_ওদের বাড়ি এখন যাওয়া উচিত কি নাএমন চিন্তা মাথায় আসত না কারো পৌঁছে গেলে এমন মনে হতো যেন তারা সাত রাজার ধন মানিক হাতে পেলো
 
*_তিথি না মেনে যে আসে সেই অতিথি_*
*অতিথি এলে বাড়িতে যেন আনন্দের হাট বসতো
 
*টিভি,ফেসবুক,* *ওয়াটসআ্যপের কৃত্রিম ব্যস্ততা, ছিল না ছিল না চলমান দূরভাষে ডুবে থাকা
*মানুষকে কাছে পাবার আকাঙ্ক্ষাই ছিল প্রবল*
 
*আর আজ, ব্যস্ততার চাপে, কৃত্রিম জীবন যাপনে মানুষের মন যেন কোথায় হারিয়ে গেছে মনের মানুষগুলোও কোথাও চাপা পড়ে গেছে যেখানে মনের খবর রাখার সময় নেই,* 
  *নিজের মনটাই যেখানে অধরা, সেখানে মনের মানুষ কোথা থেকে আসবে!*
*আমরা ক্রমশ হয়ে পড়ছি  একা বড়ো একা আজ আমরা*
*বিনোদন হচ্ছে উইক এন্ড পার্টি বা গেট টুগেদার সেখানে মনের খোরাক ছাড়া আর সবকিছু থাকে*
 
*আবার কি পারি না ফিরে যেতে সেই হঠাৎ আলোর ঝলকানি পাওয়া দিনগুলোতে! পারি না - না জানিয়ে হৈ হৈ করে কারো বাড়ি ঢুকে পড়তে ! না আজ আর সেই সাহস আর মানসিকতা নেই মনে মনে যেটা বেড়েছে তা হলো, পরশ্রীকাতরতা, নিন্দা !*
 
*আসলে বাড়ির দরজা নয়, মনের দরজার চাবি হারিয়ে ফেলেছি আমরা বন্ধ ঘরে অন্ধকার, বন্ধ দরজার তালায় জং ধরেছে*
 
*যে ভাবেই হোক সে দরজাটা খুলতে হবে আবার হাট করে খুলে রাখব কপাট ঢুকবে রোদ, আলো হাওয়া মানুষের যাতায়াতে আনন্দের ধূলো উড়বে সেথায়*
 
*মানুষ ছাড়া মানুষের মন আর কে ছুঁতে পারে?

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 4 Guest(s)