Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে  পাস করে ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে বিলেত গেলেন

সেখান থেকে এম আর সি পি হয়ে দেশে ফিরলেন 
তারপর দেশে ফিরে প্র্যাকটিশ শুরু করলেন 
আর এক গরীবের ভগবান!
 রোগীর ওষুধ কেনার পয়সা নেই ফি তো নিলেন না ওষুধের টাকাও দিলেন
 
এলো কলকাতায় সেই ভয়ংকর প্লেগ মহামারী  প্রচুর মানুষ প্রতিদিন মারা যেতে লাগল সব ভয় তুচ্ছ করে উত্তর কলকাতায় সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন এক ডাক্তার  রোগীর পরিবারকে সচেতন করছেন 
 
কাজে সঙ্গী আর একজন মহীয়সী নারী  তিনি হলেন সিস্টার নিবেদিতা নিবেদিতাও সারাদিন চান খাওয়া ভুলে গেছেন
 
আর সেই বিলেত ফেরত  ডাক্তার বাবু প্রখর রোদে সাইকলে চেপে পাড়ায় পাড়ায় রোগী দেখে যাচ্ছেন 
 
মানুষকে ভালবাসার এত নেশা! কই আমরা তো সবাই পারিনা? কি প্রয়োজন ছিল তখনকার দিনে একজন  এম আর সি পি ডাক্তারের এসব করার?  
 
যে বললাম কিছু মানুষ এই পৃথিবীতে আসেন যাঁরা অন্য ধাতুতে গড়া...নবজাগরণের আলোকবর্তিকা
 
তখন কলকাতা মেডিকেল কলেজ হয়েছে সেখানে ইউরোপীয় মানুষদেরই দাপট নেটিভদের ভাল চিকিৎসা করা হয় না
 
তিনি ভাবলেন, একটা মেডিকেল কলেজ যদি করা যায় তাহলে দেশের মানুষগুলো একটু চিকিৎসা পায় কিন্তু কে দেবে এত টাকা? নিজের সব দিয়েও তো কলেজ হাসপাতাল করা সম্ভব নয়!
 
তখন নিজে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ভিক্ষা করতে শুরু করলেন বড়লোকদের দ্বারে দ্বারে
 
বড়লোকের বাড়িতে বিবাহের অনুষ্ঠান  বিলেত ফেরত ডাক্তারবাবু দাঁড়িয়ে আছেন গেটের সামনে.. .  " কিছু অর্থ দান করুন না? হাসপাতাল করবো..  " 
 
চেনেনা কেউ ডাক্তারকে!   কপালে হাত ঠেকিয়ে( যেমন ট্রেনে ভিখারিদের অনেকে করে থাকে)  ... "যত্ত সব ফোর টুয়েন্টির দল!হাসপাতাল করবে!"...   হয়' এসব বলতে বলতে বিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যাচ্ছে 
আবার কেউ চিনতে পেরেডাক্তার বাবুআপনি? এই বলে নমস্কার করে  পকেট থেকে টাকা বার করে দিচ্ছেন এইভাবে নানাভাবে তিনি হাসপাতালের জন্য টাকা তুলতে লাগলেন
 
অবশেষে একদিন স্বপ্ন সফল হল
 
বেলগাছিয়ায় ভারতবর্ষে প্রথম বেসরকারি  আলবার্ট ভিক্টর কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করলেন 
এক বিস্ময়শুরু হল পথচলা...
 
এরপর কলেজের ছাত্রদের জন্য বাংলা ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্রের  বই লিখলেন  কারণ তিনি অনুভব করেছিলেন দেশিয় ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন অধ্যাপনা শুরু করতে পারলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে
 
এরপর একদিন আচমকা...
 
১৯১৮ সালে ১৯ ডিসেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জায় চলে গেলেন নবজাগরণের এই মহামানবটি!
 
মৃত্যুর আগে তাঁর সর্বস্ব দান করে গেলেন তাঁর মেডিকেল কলেজকে
রইল পড়ে শুধু বসতবাটিটুকু
 
১৯৪৮ সালে  তাঁর তৈরী সেই হাসপাতালেের নামকরণ করলেন আর এক ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়   
 
হাসপাতালটির নাম হল আজকের " আর জি কর মেডিকেল  কলেজ"
 
সেই ডাক্তারবাবুর পুরো নাম হল রাধাগোবিন্দ করসংক্ষেপে আর জি কর ( ১৮৫২, ২৩ অগাস্ট - ১৯১৮, ১৯ ডিসেম্বর) 
 
জীবনটা অন্যভাবে কাটিয়ে দিতে পারতেন না তখনকার দিনের একজন বিলেত ফেরত ডাক্তার?
 
কিন্তু ওরা যে শুধু দু'হাত ভরে উজাড় করে শুধু আমাদের বিলোতে  আসেন বিনিময়ে কিছুই চান না
 
ফুলেদের সৌরভ ছড়ানোতেই আনন্দ 
Namaskar Namaskar Namaskar Namaskar
তথ্য সূত্রঃ বাঙালির ভাষা সংস্কৃতি,  (ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান)
(সংগৃহীত)

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(07-10-2021, 09:37 AM)ddey333 Wrote: কাক-মা জানত তার বাসায় কোকিলের ডিম

 
সে চুপিসারে কোকিল-মাকে তার বাসা থেকে বেরোতে দেখেছিল বাসায় ফিরে সে গুণে দেখেছিল, তার বাসায় ডিমের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটেছে 
 
জানলেও সে কিচ্ছুটি বলল না কাউকে ধৈর্য ধরে ডিমে তা দিল, বাচ্চা হলে তাকে পোকাটা-মাকড়টা খাইয়ে বড় করল সে জানত, এই অবোধ শিশু একদিন ভিনস্বরে গেয়ে উঠবে গান, আলাদা করে নেবে নিজেকে
 
সবই জানত কাক-মা, কিন্তু বুঝতে দিল না কাউকে
 
সবাই ভাবল, তার মত বোকা আর কেউ হয় না, তাকে বারবার বোকা বানিয়ে যায় কোকিল-মা দুনিয়ার কাছে বোকা হয়েও সে চুপ করেই থাকল, নইলে কি হত কোকিলের ছানাগুলোর? জন্মই  যে হত না তাদের ! জন্ম না হলে কেই বা গাইত বসন্তদিনের অমন বন-মাতানো মন-মাতানো গান ? মা যে তাদের উড়নচণ্ডী ! বাসা বানানোর ধৈর্য নেই, সারাক্ষণ শুধু উড়ে-উড়ে সুরে-সুরে ঘুরে-ঘুরে বেড়াচ্ছে 
 
তাকে অবশ্য দোষ দেয় না কাক-মা সবাই কি আর একরকম হয় ? সে নিজে কি অমন গাইতে পারবে কোনদিন ? যে পারে সে নাহয় একটু কম সংসারী হলই ! তার ছানাদের বড় করে দিতে কোনও আপত্তি নেই কাক-মায়ের এক-একজন এক-এক ধারার বলেই না এত রঙ, এত রূপ, এত সুর এই জগতটায় !
 
কোনও এক বসন্তদিনে নিজের বাসায় বসে দূরে কোনও কোকিলের কুহুরব শুনে স্বরটা কেমন চেনা চেনা লাগে কাক-মায়ের খুশিতে তৃপ্তিতে চোখ বুজে আসে মনে মনে কত যে আশীর্বাদ সে করে তাদের! আহা, বাছারা ! বেঁচে থাকো কাক-মাকে নাই বা মনে করলে, মধুর গানে ভুবনখানি ভরে রাখো 
 
দুনিয়ার সবাই তাকে বোকা ভাবলেও একজন কিন্তু ঠিকই চিনেছে তাকে নইলে কেনই বা সে ডিম পাড়বার সময় হলেই বারবার সেই কাক-মায়ের বাসাতেই ফিরে ফিরে আসেকাক-মা আর কোকিল-মায়ের এক অদ্ভুত সম্পর্কের রসায়ন
 
Collected


❤ খুব সুন্দর ❤
Like Reply
(07-10-2021, 11:24 AM)ddey333 Wrote:  
১৯৪৮ সালে  তাঁর তৈরী সেই হাসপাতালেের নামকরণ করলেন আর এক ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়   
 
হাসপাতালটির নাম হল আজকের " আর জি কর মেডিকেল  কলেজ"
 
সেই ডাক্তারবাবুর পুরো নাম হল রাধাগোবিন্দ করসংক্ষেপে আর জি কর ( ১৮৫২, ২৩ অগাস্ট - ১৯১৮, ১৯ ডিসেম্বর) 
 
জীবনটা অন্যভাবে কাটিয়ে দিতে পারতেন না তখনকার দিনের একজন বিলেত ফেরত ডাক্তার?
 
কিন্তু ওরা যে শুধু দু'হাত ভরে উজাড় করে শুধু আমাদের বিলোতে  আসেন বিনিময়ে কিছুই চান না
 
ফুলেদের সৌরভ ছড়ানোতেই আনন্দ 
Namaskar Namaskar Namaskar Namaskar
তথ্য সূত্রঃ বাঙালির ভাষা সংস্কৃতি,  (ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান)
(সংগৃহীত)


অসাধারণ  Iex Namaskar
Like Reply
# সংগৃহীত হাসির গল্প


সক্কালবেলায় সবে আলু-কুমড়োর তরকারি দিয়ে রুটি খেয়ে দুটো বৃহৎ পরিমাণ ঢেকুর তুলেছে এমন সময় দীপন্করের ফোন বেজে উঠল
শ্বশুরমশাই এই সকালে আবার কী হল!
ফোন ধরতেই বললেন, "দীপু, আমাকে বাঁচাও কিছু সিগারেট যেখান থেকে পারো জোগাড় করে আমায় দিয়ে যাও নইলে মরে যাব"
দীপু বললা, "এই লকডাউনে এখন কোথায় পাব সিগারেট?  তার চেয়ে এই সুযোগে সিগারেট ছেড়ে দিন"
কাঁদো কাঁদো হয়ে শ্বশুরমশাই বললেন, "চুল্লীতে ঢোকার পর আর খাব না গ্যারান্টি দিচ্ছি কিন্তু এখন না পেলে জাস্ট মরে যাব দুদিন আগে সব শেষ হয়ে গেছে টয়লেট হচ্ছে না অন্তত সকালে একটা আর দুপুর আর রাত্রে খাওয়ার পর একটা করে, মোট তিনটে লাগবেই তুমি প্লিজ একটু দয়া করো আমাকে প্লিজ! আর হ্যাঁ সোমাকে বোলো না, অন্য যাহোক কিছু বলে দিও কিন্তু সিগারেটের কথা বোলো না"
দীপুর খুব মায়া হল বুড়োর ওপর একটা মুদি দোকানে সিগারেট বিক্রি করে জানে সেখানেই ট্রাই করা যাক 
জামা-প্যান্ট ছাড়া শুরু করেছিলসোমা এসে বলল, "কোথায় বেরোচ্ছ?"
গম্ভীর গলায় দীপু বলল, "তোমার বাবার একটা ওষুধ কিনে দিতে হবে ফোন করেছিলেন"
সোমা অবাক হয়ে বলল, "বাবার ওষুধ মানে? ইয়ার্কি নাকি? আমি এক মাসের সমস্ত ওষুধ মায় ইসবগুল পর্যন্ত কিনে দিয়ে এসেছি কী ওষুধ?"
বেশ ফেচাংয়ে পড়া গেল তো! এদিকে আবার সিগারেটের কথাও বলা যাবে না দীপু বলল, "সে অন্য ওষুধ ওই কিট"
সোমা ভুরু ব্যাপক ভাবে কুঁচকে বললেন, "কিট মানে? কিসের কিট?"
দীপু জলে ডুবে যাচ্ছিল ওহ্ এই মহিলা যে কেন উকিল হলেন না, প্রতিভার কী বিপুল অপচয়!
এইসময় দেওয়ালে একটা ফুটফুটে বাচ্চার ছবি দেখে মনে হল ভেসে ওঠার জন্য খড়কুটো পেয়ে গেছি 
বললাম, "ওই প্রেগনেন্সি টেস্টের কিট"
ঘরে অ্যাটম বোমা পড়ল সোমার চোখ গোল হয়ে স্থির হয়ে গেল তারপর অনেকক্ষণ পরে বহুকষ্টে বলল, "বাবা চেয়েছে? বাবার কী হবে?"
দীপু গম্ভীর গলায় বলল, "দরকার আছে নিশ্চই"
ততক্ষণে ফোনে শ্বশুরমশাইকে ধরা হয়ে গেছে লাউডস্পীকার অন করে সোমা বলল, "তুমি ওকে কী আনতে দিয়েছ? তোমার লজ্জা করে না? এত বয়স হল!"
শ্বশুরমশাই তখন চুরি করে ধরা পড়া বাচ্চার মতো বলছেন, "তুই রাগ করিস না ওহ্ এত করে জামাইকে বলতে বারণ করলাম তাও বলে দিল? ট্রেটার!"
--" তুমি চাও তোমার জামাই আমাকে মিথ্যে কথা বলুক? ছিঃ বাবা সত্যিটাই আমাকে বলে দিয়েছে কিন্তু কেন বাবা? এত বয়সে এসব কী?"
শ্বশুরমশাই বোঝানোর ভঙ্গিতে বললেন, "দ্যাখ সোমা, আমি ডাক্তারবাবুকে জিগ্যেস করেছি ডাক্তারবাবুর পারমিশান নিয়েই..."
-- "তুমি এসব ডাক্তারবাবুকে জিগ্যেস করেছ! আচ্ছা বাবা তোমার কী বুড়ো বয়সে ভিমরতি হল! আমার তো পা ছড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে এখন লোকের কাছে মুখ দেখাব কেমন করে?"
শ্বশুরমশাই বললেন, "ঠিক আছে তুই যখন এত কষ্ট পাচ্ছিস তখন এবার থেকে ছেড়ে দেব আমি প্রমিস"
কাঁদো কাঁদো স্বরে তাঁর মেয়ে বলল, "কিন্তু এখন কী হবে বাবা! যদি পজিটিভ হয়? উফ লজ্জায় মরে যাই মরে যাই! আমাকে নির্ঘাত আত্মহত্যা করতে হবে তুমি এক্ষুনি মাকে ডাকো মায়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে"
আমি বুঝলাম এবার আমাকে বেরোতে হবে এখন এখানে থাকা নিরাপদ নয় বললাম, "তুমি কথা বলো আমি বেরোচ্ছি হ্যাঁ দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে যাও"
নিজের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের এই কাণ্ডকারখানায় বউ লজ্জায় আমার মুখের দিকে তাকাতে পারল না 


Big Grin Big Grin
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(07-10-2021, 11:24 AM)ddey333 Wrote: কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে  পাস করে ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে বিলেত গেলেন

সেখান থেকে এম আর সি পি হয়ে দেশে ফিরলেন 
তারপর দেশে ফিরে প্র্যাকটিশ শুরু করলেন 
আর এক গরীবের ভগবান!
 রোগীর ওষুধ কেনার পয়সা নেই ফি তো নিলেন না ওষুধের টাকাও দিলেন
 
এলো কলকাতায় সেই ভয়ংকর প্লেগ মহামারী  প্রচুর মানুষ প্রতিদিন মারা যেতে লাগল সব ভয় তুচ্ছ করে উত্তর কলকাতায় সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন এক ডাক্তার  রোগীর পরিবারকে সচেতন করছেন 
 
কাজে সঙ্গী আর একজন মহীয়সী নারী  তিনি হলেন সিস্টার নিবেদিতা নিবেদিতাও সারাদিন চান খাওয়া ভুলে গেছেন
 
আর সেই বিলেত ফেরত  ডাক্তার বাবু প্রখর রোদে সাইকলে চেপে পাড়ায় পাড়ায় রোগী দেখে যাচ্ছেন 
 
মানুষকে ভালবাসার এত নেশা! কই আমরা তো সবাই পারিনা? কি প্রয়োজন ছিল তখনকার দিনে একজন  এম আর সি পি ডাক্তারের এসব করার?  
 
যে বললাম কিছু মানুষ এই পৃথিবীতে আসেন যাঁরা অন্য ধাতুতে গড়া...নবজাগরণের আলোকবর্তিকা
 
তখন কলকাতা মেডিকেল কলেজ হয়েছে সেখানে ইউরোপীয় মানুষদেরই দাপট নেটিভদের ভাল চিকিৎসা করা হয় না
 
তিনি ভাবলেন, একটা মেডিকেল কলেজ যদি করা যায় তাহলে দেশের মানুষগুলো একটু চিকিৎসা পায় কিন্তু কে দেবে এত টাকা? নিজের সব দিয়েও তো কলেজ হাসপাতাল করা সম্ভব নয়!
 
তখন নিজে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ভিক্ষা করতে শুরু করলেন বড়লোকদের দ্বারে দ্বারে
 
বড়লোকের বাড়িতে বিবাহের অনুষ্ঠান  বিলেত ফেরত ডাক্তারবাবু দাঁড়িয়ে আছেন গেটের সামনে.. .  " কিছু অর্থ দান করুন না? হাসপাতাল করবো..  " 
 
চেনেনা কেউ ডাক্তারকে!   কপালে হাত ঠেকিয়ে( যেমন ট্রেনে ভিখারিদের অনেকে করে থাকে)  ... "যত্ত সব ফোর টুয়েন্টির দল!হাসপাতাল করবে!"...   হয়' এসব বলতে বলতে বিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যাচ্ছে 
আবার কেউ চিনতে পেরেডাক্তার বাবুআপনি? এই বলে নমস্কার করে  পকেট থেকে টাকা বার করে দিচ্ছেন এইভাবে নানাভাবে তিনি হাসপাতালের জন্য টাকা তুলতে লাগলেন
 
অবশেষে একদিন স্বপ্ন সফল হল
 
বেলগাছিয়ায় ভারতবর্ষে প্রথম বেসরকারি  আলবার্ট ভিক্টর কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করলেন 
এক বিস্ময়শুরু হল পথচলা...
 
এরপর কলেজের ছাত্রদের জন্য বাংলা ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্রের  বই লিখলেন  কারণ তিনি অনুভব করেছিলেন দেশিয় ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন অধ্যাপনা শুরু করতে পারলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে
 
এরপর একদিন আচমকা...
 
১৯১৮ সালে ১৯ ডিসেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জায় চলে গেলেন নবজাগরণের এই মহামানবটি!
 
মৃত্যুর আগে তাঁর সর্বস্ব দান করে গেলেন তাঁর মেডিকেল কলেজকে
রইল পড়ে শুধু বসতবাটিটুকু
 
১৯৪৮ সালে  তাঁর তৈরী সেই হাসপাতালেের নামকরণ করলেন আর এক ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়   
 
হাসপাতালটির নাম হল আজকের " আর জি কর মেডিকেল  কলেজ"
 
সেই ডাক্তারবাবুর পুরো নাম হল রাধাগোবিন্দ করসংক্ষেপে আর জি কর ( ১৮৫২, ২৩ অগাস্ট - ১৯১৮, ১৯ ডিসেম্বর) 
 
জীবনটা অন্যভাবে কাটিয়ে দিতে পারতেন না তখনকার দিনের একজন বিলেত ফেরত ডাক্তার?
 
কিন্তু ওরা যে শুধু দু'হাত ভরে উজাড় করে শুধু আমাদের বিলোতে  আসেন বিনিময়ে কিছুই চান না
 
ফুলেদের সৌরভ ছড়ানোতেই আনন্দ 
Namaskar Namaskar Namaskar Namaskar
তথ্য সূত্রঃ বাঙালির ভাষা সংস্কৃতি,  (ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান)
(সংগৃহীত)


সুনিল গাঙ্গুলির 'প্রথম আলো' বইতে ইনি ছাড়া আরও দু তিন জনের কথা আছে, এই রকমের। কিন্তু সবার থেকে কম আছে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের। থাকা উচিৎ ছিল সবার বেশি কেননা ওই রকম পুরুষ আর  কেউ আসে নি।
[+] 1 user Likes dimpuch's post
Like Reply
বাসে উঠে একটি খালি সিট পেলাম জানালার পাশে, আমি বসলাম

আর পাশের সিটটি খালি !
একটু পরেই দেখি ১৮/২০ বয়সী একটি সুন্দরী মেয়ে উঠলো
মেয়েটিকে এক নজর দেখলেই
বোঝা যায় খুবই ভদ্র অবস্থা সম্পন্ন ঘরের মেয়ে
এদিক ওদিক সিট খুঁজে না পেয়ে শেষে আমার পাশে এসে বসলো
হাতে একটি মোবাইল
দেখে বোঝা যায় অনেক দামী মোবাইল কিছুদূর যাবার পর বাস জ্যামে থামলো মেয়েটি বলে উঠলো, অসহ্য জ্যাম !
আমিও হুম বলে সম্মতি জানালাম এরপর টুকটাক কথা হতে লাগলো
বাসও চলতে শুরু করলো !
কথায় কথায় জানলাম, মেয়েটি ইংরেজিতে অনার্স করছে
খুবই ফ্রী ভাবে কথা বলছিলাম আমরা !
কিছুদূর যাবার পর আবারও জ্যামে পড়লো বাস বিরক্তিকর জ্যাম ! জ্যামের মধ্যেই বাসে উঠলো সাদা শার্ট পড়া কালো চেহারার মধ্যে বয়সী এক ভদ্রলোক
পরনে তার পুরনো পুরোনো একটি শার্ট ! ময়লা হয়ে আছে
তার হাতে অনেক গুলো বই
কাধে লাল রঙের একটি ব্যাগ
লোকটি সাধারণ জ্ঞান,পৃথিবীর অজানা কথা,ইংরেজি শেখ এরকম শিক্ষণীয় নানাধরণের বই বিক্রি করছে !
লোকটি অনেকক্ষণ যাবৎ, বইতে কি কি
গুরুত্বপূর্ণ আছে তা বর্ননা করলো কিন্তু বাসের কেউ একটি বইও কিনলো না ! আমার খুব খারাপ লাগলো
ইচ্ছে করছিল লোকটিকে কিছু টাকা
দিয়ে সাহায্য করি !
কিন্তু, লোকটিকে টাকা দিতে
চাইলে যদি কিছু মনে করে
তাই দিলাম না !
একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, লোকটি বাসে ওঠার পর থেকে
মেয়েটি আমার সাথে একটি কথাও বলেনি মাথা নিচু করে মোবাইল দেখছিল ! বাড়িতে ঐরূপ বই থাকা সত্বেও শুধু মাত্র লোকটিকে সাহায্য করার ইচ্ছায় ২০ টাকা দিয়ে দুটি বই কিনলাম
লোকটিকে পঞ্চাশ টাকার নোট দিলে সে
ত্রিশ টাকা ফেরত দিল !
টাকা ফেরত দেবার পরেও দেখি
সে পকেট থেকে আরও টাকা বের করছে একটি একশ টাকার নোট আর কয়েকটা দশ টাকার নোট !
আমার দিকে এগিয়ে ধরলো !
আমি তো অবাক আমাকে টাকা দেবেন
কেন উনি ?
আমার ভুল ভাঙলো তার ডাক শুনে !
তিনি আমাকে না মেয়েটিকে টাকা দিচ্ছেন ! তিনি বললেন,
সোমা টাকাটা রাখো কিছু কিনে খেয়ে নিও! তোমার মা বললো,তুমি সকালে না খেয়েই বাড়ি থেকে বেড়িয়েছো
মেয়েটি লজ্জায় মরে যাচ্ছিল
সে অত্যন্ত রেগে লোকটার দিকে তাকালো !
বললো,লাগবে না ! লোকটি জোর করে টাকা গুলো তার হাতে দিয়ে বাস থেকে নেমে গেল !
মেয়েটির দিকে তাকানো যাচ্ছিল না !
রেগে টং হয়ে আছে ! আমি কৌতুহল সামলাতে পারলাম না জিজ্ঞেস
করলাম, আপনাকে টাকা দিল উনি কে ? মেয়েটা বললো, আমাদের বাড়ির পাশে থাকে !
আমি বললাম, কিছু মনে করবেন না একটা কথা বলি, উনি কি আপনার বাবা ?
মেয়েটি রেগে তাকালো আমার দিকে ! জবাব দিলো না ! এমন ভাব করলো যেন আমি মহা অপরাধ করে ফেলেছি ! আমি বুঝতে পারলাম তার রাগের কারন
তার বাবা একজন ভ্রাম্যমাণ হকার
বাসে বাসে ঘুরে বই বিক্রি করে আর সে দামী পোশাক পড়ে কলেজে বা দরকারি কাজে এদিক সেদিক যায় ! সে একজন শিক্ষিত মানুষ !
এজন্য সে বাবার পরিচয় দিতে লজ্জা পায় ! এই ময়লা শার্ট পড়া লোকটিকে বাবা
বলে স্বীকার করাটাকে সে ঘৃনার চোখে দেখে !
সে চায় না পৃথিবীর কেউ জানুক এই হকার তার বাবা ! কত বড় বিবেক সম্পন্ন মানুষ সে ! যে লোকটি রাত দিন পরিশ্রম করে বাসে বাসে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বই
বিক্রি করে মেয়েটিকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছে তাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছে নিজে কয়েক বছরের পুরনো একটা শার্ট পড়ে অথচ মেয়েটিকে দামী পোশাক,
ব্যাগ, দামী মোবাইল কিনে দিয়ে তার সমস্ত চাওয়া পূরন করেছেন
সেই মানুষটিকে বাবা বলে পরিচয় দিতে
লজ্জা করছে মেয়েটির !
কত বড় নির্লজ্জ ! যে মানুষটা
তাকে লালন পালন করে এত বড় করলো, যারটা খেয়ে বেঁচে আছে তাকে বাবা বলে পরিচয় দিতে সমস্যা !
মেয়েটি হয়তো শিক্ষিত হচ্ছে,
কিন্তু তার ভেতরে
বিবেক মানুষত্ব তৈরি হয়নি !
হকার লোকটির প্রতি শ্রদ্ধায় মনটা ভরে উঠলো ! লোকটা হাজার কষ্টের
মাঝেও পরম মমতায় নিজের মেয়েটিকে উচ্চশিক্ষিত করে তুলছেন !
আদর্শ বাবা মনে হয় একেই বলে
যেই শিক্ষা আমাদের মধ্যে বিবেক মনুষত্ব তৈরী
করেনা, কি লাভ সেই শিক্ষা গ্রহন করে ?
 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
প্রেম এসেছিল নিঃশব্দ চরণে...

 
কিশোর রবীন্দ্রনাথের মনে প্রথম প্রেমের জোয়ার এনে দিয়েছিল বোম্বের এক মেয়ে, নাম আন্না তড়খড়; রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম দিয়েছিলেননলিনী ঘটনা ১৮৭৮ সালের এই প্রেমের গল্প বলেছেন কবি নিজেই কৈশোরে বোম্বাইয়ের এক বাড়িতে কিছু দিন ছিলেন কবি সেই বাড়ির এক শিক্ষিতা আধুনিকা তখনই বিলেত ঘুরে এসেছিলেন তখন কবি নেহাতই অল্পবয়সি, পুঁথিগত বিদ্যার পুঁজি ছিল না, তাই সুবিধে পেলেই জানিয়ে দিতেন যে, তাঁর কবিতা লেখার হাত আছে যার কাছে নিজের এই কবিত্বের কথা প্রকাশ করেছিলেন, তিনিও মেনে নিয়েছিলেন কবির কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন একটা ডাকনাম, ভাল লেগেছিল আন্নার আন্না বলেছিলেন, “কবি, তোমার গান শুনলে আমি বোধ হয় আমার মরণদিনের থেকেও প্ৰাণ পেয়ে জেগে উঠতে পারিকবি লিখেছেন— ‘মনে পড়ছে তার মুখেই প্ৰথম শুনেছিলুম আমার চেহারার তারিফ ...একবার আমাকে বিশেষ করে বলেছিলেন, ‘একটা কথা আমার রাখতেই হবে, তুমি কোনোদিন দাড়ি রেখো না, তোমার মুখের সীমানা যেন কিছুতেই ঢাকা না পড়ে
 
১৯২৭ সালের জানুয়ারি অতুলপ্রসাদ সেন দিলীপকুমার রায়ের সঙ্গে আলাপে রবীন্দ্রনাথ তরুণী আন্নার কথা স্মরণ করেছেন, ‘তখন আমার বয়স বছর ষোলো আমাকে ইংরেজি কথা বলা শেখানোর জন্যে পাঠানো হলো বম্বেতে একটি মারাঠি পরিবারে... সে পরিবারের নায়িকা একটি মারাঠি ষোড়শী... যেমন শিক্ষিতা, তেমনি চালাক-চতুর, তেমনি মিশুক... আমার সঙ্গে সে প্রায়ই যেচে মিশতে আসত কত ছুতো করেই সে ঘুরত আমার আনাচে কানাচে আমাকে বিমর্ষ দেখলে দিতো সান্ত্বনা, প্রফুল্ল দেখলে পিছন থেকে ধরত চোখ টিপে
 
এক চাঁদনি রাতে সে হঠাৎই এসে হাজির হয়েছিল কবির ঘরে কবি তখন নিজের বাড়ির চিন্তায়, কলকাতার গঙ্গার চিন্তায় বিভোর
 
কবি কী ভাবছে, জিজ্ঞেস করে সে বসে পড়ে কবির পাশে, কবির নেয়ারের খাটিয়াতেই চিন্তামগ্ন কবির সঙ্গে কথাবার্তায় জুত না পেয়ে তরুণী আন্না প্রস্তাব দিয়েছিল, ‘আচ্ছা, আমার হাত ধরে টানো তোটাগ্-অফ-ওয়ারে দেখি কে জেতে?’
 
কবি তাঁর খেয়ালিপনার সঙ্গী হয়েছিলেন, পরে বলেছিলেন— ‘আমি সত্যিই ধরতে পারি নি, কেন হঠাৎ তাঁর এতরকম খেলা থাকতে টাগ্-অফ-ওয়ারের কথাই মনে পড়ে গেল এমনকি আমি শক্তি পরীক্ষায় সম্মত হতে না হতে সে হঠাৎ শ্লথভাবে হার মানা সত্বেও আমার না হল পুলক-রোমাঞ্চ, না খুলল রসজ্ঞ দৃষ্টিশক্তি এতে সে নিশ্চয়ই আমার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বিশেষ রকম সন্দিহান হয়ে পড়েছিল
শেষে একদিন বলল, তেমনি আচমকা: “জানো কোনো মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে যদি তার দস্তানা কেউ চুরি করতে পারে তবে তার অধিকার জন্মায় মেয়েটিকে চুমো খাওয়ার?” বলে খানিক বাদে আমার আরাম কেদারায় নেতিয়ে পড়ল নিদ্রাবেশে ঘুম ভাঙতেই সেই চাইল পাশে তার দস্তানার দিকে একটিও কেউ চুরি করে নি
 
রসশাস্ত্রের বিচারে আন্নাকে অনেকটা প্রগল্ভা নায়িকার পর্যায়ে ফেলা যেতে পারে, কিন্তু তরুণ রবীন্দ্রনাথের কাছে না হলেও পরিণত রবীন্দ্রনাথের কাছে সে প্রেম যথেষ্ট গুরুত্ব লাভ করেছে
 
আন্নার প্রেমকে রবীন্দ্রনাথ স্বীকৃতি দিয়েছেন শেষ বয়সে উপরোক্ত কথোপকথনের সূত্রেই তিনি বলেছিলেন, ‘কিন্তু সে মেয়েটিকে আমি ভুলিনি বা তার সে আকর্ষণকে কোনো লঘু লেবেল মেরে খাটো করে দেখিনি কোনো দিন... একটা কথা বলতে পারি গৌরব করে যে, কোনো মেয়ের ভালোবাসাকে আমি কখনো ভুলেও অবজ্ঞার চোখে দেখিনি- তা সে ভালোবাসা যেরকমই হোক না কেন... আমি বরাবরই উপলব্ধি করেছি যে প্রতি মেয়ের ভালোবাসা তা সে যে-রকমের ভালোবাসাই হোক না কেনআমার মনের বনে কিছু না কিছু আফোটা ফুল ফুটিয়ে রেখে যায়সে ফুল হয়ত পরে ঝরে যায়, কিন্তু তার গন্ধ যায় না মিলিয়ে
 
১৮৭৯ সালের ১১ নভেম্বর বরোদা কলেজের উপাধ্যক্ষ হ্যারন্ড লিটেল্ডলের সঙ্গে আন্নার বিয়ে হয় আন্নার মৃত্যু হয় ১৮৯১ সালের জুলাই এডিনবরা শহরে লক্ষণীয়, বিবাহিত জীবনেও আন্না রবীন্দ্রনাথকে ভোলেননি সেই কিশোর-কবির প্রদত্ত আদরের ডাকনামনলিনীস্বাক্ষরেই তিনি প্রবন্ধাদি প্রকাশ করতেন এই তথ্যটিও উল্লেখ্য, তাঁর এক ভ্রাতুষ্পুত্রের নাম রাখা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
এই লেখাটা আগেও একবার পড়েছিলাম। এখন আবার পড়লাম

এই ধরনের লেখা পড়লে মনে হয় আমি রুপকথা পড়ছি কিংবা কোন মিথ্যা বানানো ঘটনা পড়ছি। জানিনা এমন কেন মনে হয়...

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(08-10-2021, 02:20 PM)Bichitravirya Wrote: এই লেখাটা আগেও একবার পড়েছিলাম। এখন আবার পড়লাম

এই ধরনের লেখা পড়লে মনে হয় আমি রুপকথা পড়ছি কিংবা কোন মিথ্যা বানানো ঘটনা পড়ছি। জানিনা এমন কেন মনে হয়...

❤❤❤

দাদা, আমি কলকাতায় আমার মাকে নিয়ে বেড়াতে আসতে পারি?
Like Reply
(08-10-2021, 09:55 AM)ddey333 Wrote: প্রেম এসেছিল নিঃশব্দ চরণে...

 

প্রেম একবার আইসেছিলো জুইত করে......... আমারে ফেলে গেসে কাইত করে...... সেকি হায় ... নিরুপায় ...... প্রেম একবার আইসেছিলো জুইত করে......   Sad
Like Reply
(08-10-2021, 05:18 PM)cuck son Wrote: প্রেম একবার আইসেছিলো জুইত করে......... আমারে ফেলে গেসে কাইত করে...... সেকি হায় ... নিরুপায় ...... প্রেম একবার আইসেছিলো জুইত করে......   Sad

Smile Smile
Like Reply
তর্পণ

 
'দিন ধরেই মায়ের সঙ্গে সরাসরি একবার কথা বলবে ভাবছিল তিন্নি।
সত্যি বলতে কি, "বলব বলব" করেও বলা হয়ে ওঠে নি ওর। যতবার ভেবেছে, ততবার দোনামোনা করে পিছিয়ে এসেছে। ভেবেছে "আমিই হয়ত ভুল ভাবছি!"
আর, যেমন তেমন মা না। ওর দুর্গাঠাকুরের মতো মা কে! যে মাকে ওর জ্ঞান হওয়া ইস্তক লড়াই করতে দেখে আসছে।
দেড়বছর আগের তিন্নি হলেও হয়ত ভাবতেই পারত না। সত্যি বলতে কি, করোনা অতিমারি আসার আগে তিন্নি আর পাঁচটা টিনএজারের মতোই নিজের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ওর এমনিতেই খুন ইচ্ছে, এডভোকেট হবে! নামী ওয়েব সিরিজের উকিলদের মতো ক্ষুরধার সওয়াল -জবাবে সত্যি খুঁজে আনবে। আসল অপরাধীকে শাস্তি দেবে। আর অনেক, অনেক টাকা হবে ওর। ওর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাবার জন্য সেলিব্রিটিরাও অপেক্ষা করে থাকবেন। আর মা কে নিয়ে দেশে-বিদেশে ছুটি কাটাতে যাবে!
তবে, কেরিয়ারের পাশাপাশি অর্ক -ঈশানদের চোরা চাউনিও যে ভাল লাগত না, তা কিন্তু নয়! কিন্তু, ওই অব্দিই। কিন্তু এই বাড়িতে থাকতে থাকতে বুঝেছে মা কত একা! তাই মা রাগটাগ করলেও মেজাজ হারায় না ও।
ভাবতে ভাবতেই চাবি খোকার আওয়াজ কানে এলো তিন্নির। মা এসেছেন! আজ মহালয়া হলেও মায়ের অফিস ছুটি ছিল না। এমনিতেই এইবছর লকডাউনের জন্য অনেকদিন অফিস বন্ধ ছিল, তাই ছুটির সংখ্যা কমে গেছে। ছোট্ট একটি বেসরকারী অফিসে মায়ের কাজ, তাই আজ ইচ্ছে না থাকলেও মা কে অফিসে যেতেই হয়েছে। সকালে উঠে রেডিওতে 'মহিষাসুর মর্দিনী' শুনেছিল ওরা মা -মেয়ে। তারপর চোখ লেগে গেছিল দুজনের ই। যথারীতি মায়ের দেরি হয়ে গেছিল ঘুম থেকে উঠতে উঠতে। সেজন্য তো এক্কেবারে উসেইন বোল্টের মতো করে কাজ সারতে হয়েছিল মা কে! আর এইসবের ফাঁকে ফোনটা একদম টেবিলের ওপর রেখে চলে গেছিলেন মা। আর তিন্নির এমন ঘুম চোখ তখন, সামনে থাকা সত্ত্বেও নজরে পড়েনি! কী যে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল তখন! তারপর বুদ্ধি খাটিয়ে ভাবল ওদের এই বেলেঘাটার বাড়ি থেকে এলগিন রোডে, মায়ের অফিসে যেতে মোটামুটি এক ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগে। তাই মা বাড়ি থেকে বেরোবার ঘন্টা দেড়েক পরে মায়ের অফিসে ফোন করে মা ঠিকমতো পৌঁছেছেন কিনা খোঁজ নেবে ভেবেছিল ও।
আর ভাগ্যিস ভেবেছিল!
ঘরে ঢোকার পরে একঝলক মাকে দেখেই ক্লান্তিটা বুঝতে পারল তিন্নি। ঘামছেন মা খুব, চোখেমুখ কেমন কালো হয়ে আছে।
"মা, বসো তুমি, তোমাকে একটু নুন-চিনির জল করে দিই..." বলে ওঠে ও।
"নাহ্, এখন আর সরবত খাব না। চা খাব। মাথাটা খুব ধরেছে" বলে উঠলেন মা।
" বাবা! তুমি হাত পা ধোও, আমি চা বসাচ্ছি" বলে চলে গেল ও। পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও চা করা, দু এক পদ রান্না করা শিখেছে ও। মন্দিরা, মানে ওর মা বরাবর বলে এসেছেন যে নিজের কাজ নিজে করে নিতে পারাই স্বাধীনতা।
স্নান করে এসে মন্দিরা দেখেন চা আর পাঁপড়ভাজা রেখেছে মেয়ে। নিজে কুড়মুড় করে পাঁপড় চিবোচ্ছে একটা।
"আবার পাঁপড় কেন ভাজতে গেলি?" চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বলেন উনি।
"তেল বেশি পোড়াইনি মা, একটু বেশি হয়েছে, সেটা একটা পরিষ্কার বাটিতে রেখে দিয়েছি!"
"পোড়া তেল খাওয়া কি ঠিক?" বলেন মা।
"তা জানি না... তেল ফেলে দেব? তুমিই না বলো, জিনিসপত্রের এত্ত এত্ত দাম এখন?"
"উফ! তিন্নি! তোর সাথে কথায় কে পারবে!" বলতে বলতে হেসে ওঠেন মন্দিরা। আজ বেশ একটু সময় আছে হাতে। সকালে একেবারে দুইবেলার মতো খিচুড়ি করে রেখেছেন। নইলে এই সময় ফিরে, একটু ফ্রেশ হয়েই রান্নাঘরে ঢুকে পড়তে হয়। তিন্নি নিজের মতো পড়াশোনা করে। সাড়ে দশটার মধ্যে ডিনার। তারপর শুয়ে শুয়ে একটু ফেসবুক ঘাঁটা - আবার সকাল থেকে শুরু দৌড়! ব্যস, এইই তো জীবন।
খুব, খুব, খুউউউব ক্লান্ত লাগে মাঝে মাঝে! মনে হয়, এত লোক থাকতে আমিই কেন! আমার মতো অসুখী আর কে আছে! বিরক্ত লাগে! ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে যান অল্পেতেই। তখন মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। পান থেকে চুন খসলেই ঝাড় দেন চারপাশের লোকেদের। যে সামনে থাকে সেই বকা খায় তখন। অফিসে ব্যবহার ভাল রাখতেই হয়, তাই কলিগেরা বেঁচে যান। তবে তিন্নি মাঝেমাঝেই... আর আর... আরেকজনের ওপরেও। রাগ হয়। ঘৃণা হয়। আবার ইচ্ছেও হয়...
"মা, মা... একটা কথা বলব তোমাকে? রাগ করবে না তো?" আদুরে গলায় বলে ওঠে মেয়ে।
Like Reply
পুজোর জন্য কিছু একটা চাইবে বোধহয়।

আহা রে! সারাজীবন অভাবেই বড় হলো মেয়েটা। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে... সেই মানুষটা থাকলে একটু হলেও তো অন্যরকম হতো জীবনটা...
"কি চাই রে? ওহ! কোন এক ওয়েবসাইটে সেল দিচ্ছে, তাই না? কিছু কিনবি?"
"আঃ, না মা। তোমার থেকে একটা অন্য জিনিস চাইব। আমার পুজোর গিফট সেটা।"
"কি, তিন্নি? আমার কিন্তু হাত একদম খালি..." একটু বিপন্ন গলায় বলেন মন্দিরা। যদিও জানেন, তিন্নি উল্টোপাল্টা কিছু চাইবার মেয়ে নয়! দেখেছে তো মায়ের লড়াই এতগুলো বছর ধরে। তাড়াতাড়ি ম্যাচিওরড হয়ে গেছে তাই!
"মা... আমার... আসলে আমার..."
"বল..?"
"আজ তোমার ফোনটা ধরেছিলাম তোমার অফিসের কারো নাম্বার সেভ করা আছে কিনা খুঁজতে গিয়ে পেলাম না। তাই পরে নেট থেকে খুঁজে ফোন করেছিলাম ল্যান্ডলাইন নাম্বারে। "
"কি বলছিস তিন্নি? আমি এখন ফোন কিনতে পারব না কিন্তু। আমার ফোন ঠিক আছে!"
"ওফ, মা! ফোন কিনতে হবে না। আসলে... আমি নাম্বার খুঁজতে গিয়ে 'অমিত এফ বি' লেখা একজনের মেসেজ দেখেছি মা। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছিলাম তুমি রাতে শুয়ে শুয়েও অনেকক্ষণ মোবাইলে খুটুরখাটুর করো... ভেবেছিলাম তোমাকে জিজ্ঞেস করব... করা হয় নি..."
"তিন্নিইইই" চিৎকার করে ওঠেন মন্দিরা...
এগিয়ে আসে তিন্নি। মায়ের সামনে মেঝেতে বসে পড়ে, মায়ের হাঁটুতে দুটো হাত রেখে...
"তোমার প্রাইভেসি নষ্ট করতে চাইনি মা। খুব চিন্তায় ছিলাম। তোমার অফিসের নাম দিয়ে কোনো নাম সেভ করা নেই দেখে মেসেজ বক্স খুলেছিলাম। তখন দেখলাম এই 'অমিত এফ বি' তোমাকে অনেক মেসেজ করেছেন। ওনার প্রোফাইল দেখলাম আমার ফেসবুক থেকে। ওনার মেসেজ গুলো কিছু পড়েছি মা। উনি তোমাকে নতুন করে জীবন শুরু করতে বলেছেন..."
"তিন্নি, প্লিজ চুপ করো। আমি এই নিয়ে কথা বলতে বা শুনতে চাই না..."
"মা, প্লিজ শোনো। তুমি জানো, তুমিই আমার পৃথিবী। আর উনি ঠিক বলেছেন। বাবা মারা যাবার সময় আমি সবে ক্লাস থ্রি! মেরেকেটে আটবছর বয়স তখন আমার। নভেম্বরে আমি আঠেরোয় পড়ব মা। দশ দশটা বছর ধরে তুমি একা লড়াই করছ... লোন নিয়ে এই বাড়িটা কিনেছ...আমাকে পড়াচ্ছ...দুজনের খাওয়া খরচ... সে তো অনেক মা... তারপর তোমার যাতায়াত... বাকি সবকিছু... কিভাবে সব সামলাচ্ছ তুমি, ভেবেই আমার ভয় লাগে... তুমি কতদিন হাসো না মা! হাসার সময়ই পাও না! তোমার তো অধিকার আছে নিজের কথা ভাবার! আমার মা হবার পাশাপাশি তুমি তো 'মন্দিরা ভট্টাচার্য' ,তাই না?"
অনেক কিছু বলবেন ভাবছিলেন মন্দিরা... কিন্তু পারছেন না।
এইকথা গুলোই তো কতবার ভেবেছেন নিজে। একা থাকার দিনে আর রাতেও।
কিন্তু পেরেছেন কোথায়? পারেন কই!
"এই 'অমিত এফ বি' হোন বা অন্য কেউ... কে কেমন, কি চাইছে, আমার থেকে অনেক ভাল বুঝবে তুমি... আমার তো সবাইকেই ভাল লাগে! তোমার তো তা না! তুমি ভাবো মা... কথা বলো, আড্ডা মারো... প্রেম যে করতে হবে, তার কি মানে আছে? জাস্ট, সুযোগ দাও... নিজেকে.."
তিন্নি না... যেন অন্য কেউ বলছে কথা গুলো। কেমন অমোঘ... সত্য শোনাচ্ছে!
"তুই কবে এত বড় হয়ে গেলি মা..." রুদ্ধস্বরে এটুকুই শুধু বলতে পারলেন মন্দিরা
"এঃ, তোমার কাছে তো সবসময় ছোট্ট!" বলে মা কে জড়িয়ে ধরে তিন্নি।
মন্দিরাও জড়িয়ে ধরেন মেয়েকে।
দুই নারীর হৃদয় যেন অতলান্ত মোহনা তখন!
মাকে জড়িয়ে রেখেই দেওয়ালের দিকে তাকায় তিন্নি। দেওয়ালে বাবার ছবি টাঙানো। সেদিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে "বাবা, তোমার স্মৃতি আমার কাছে ঝাপসা হয়ে আসছে। শুধু মা কে ভাল রাখতে চাই সারাজীবন... এটাই আমার তর্পণ... তুমি আশীর্বাদ করো.."
চোখ বুজে ফেলেছিল তখন তিন্নি... নইলে দেখত... ছবির মধ্যে বাবার হাসিমুখ...
 

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
[Image: IMG-20211010-105312.jpg]

Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Mast Mast Mast
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
তর্পণ - অসাধারণ লাগলো 
Like Reply
তর্পণ ---- ভালো লাগলো গল্পটা

এরকম মেয়ে কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না। বেশিরভাগ সমাজের কাছে লজ্জায় এসব সহ্য করবে না

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(09-10-2021, 11:18 AM)ddey333 Wrote: "তোমার প্রাইভেসি নষ্ট করতে চাইনি মা। খুব চিন্তায় ছিলাম। তোমার অফিসের নাম দিয়ে কোনো নাম সেভ করা নেই দেখে মেসেজ বক্স
"মা, প্লিজ শোনো। তুমি জানো, তুমিই আমার পৃথিবী। আর উনি ঠিক বলেছেন। বাবা মারা যাবার সময় আমি সবে ক্লাস থ্রি! মেরেকেটে আটবছর বয়স তখন আমার। নভেম্বরে আমি আঠেরোয় পড়ব মা। দশ দশটা বছর ধরে তুমি একা লড়াই করছ... লোন নিয়ে এই বাড়িটা কিনেছ...আমাকে পড়াচ্ছ...দুজনের খাওয়া খরচ... সে তো অনেক মা... তারপর তোমার যাতায়াত... বাকি সবকিছু... কিভাবে সব সামলাচ্ছ তুমি, ভেবেই আমার ভয় লাগে... তুমি কতদিন হাসো না মা! হাসার সময়ই পাও না! তোমার তো অধিকার আছে নিজের কথা ভাবার! আমার মা হবার পাশাপাশি তুমি তো 'মন্দিরা ভট্টাচার্য' ,তাই না?"
অনেক কিছু বলবেন ভাবছিলেন মন্দিরা... কিন্তু পারছেন না।
এইকথা গুলোই তো কতবার ভেবেছেন নিজে। একা থাকার দিনে আর রাতেও।
কিন্তু পেরেছেন কোথায়? পারেন কই!
"এই 'অমিত এফ বি' হোন বা অন্য কেউ... কে কেমন, কি চাইছে, আমার থেকে অনেক ভাল বুঝবে তুমি... আমার তো সবাইকেই ভাল লাগে! তোমার তো তা না! তুমি ভাবো মা... কথা বলো, আড্ডা মারো... প্রেম যে করতে হবে, তার কি মানে আছে? জাস্ট, সুযোগ দাও... নিজেকে.."
তিন্নি না... যেন অন্য কেউ বলছে কথা গুলো। কেমন অমোঘ... সত্য শোনাচ্ছে!
"তুই কবে এত বড় হয়ে গেলি মা..." রুদ্ধস্বরে এটুকুই শুধু বলতে পারলেন মন্দিরা
"এঃ, তোমার কাছে তো সবসময় ছোট্ট!" বলে মা কে জড়িয়ে ধরে তিন্নি।
মন্দিরাও জড়িয়ে ধরেন মেয়েকে।
দুই নারীর হৃদয় যেন অতলান্ত মোহনা তখন!
মাকে জড়িয়ে রেখেই দেওয়ালের দিকে তাকায় তিন্নি। দেওয়ালে বাবার ছবি টাঙানো। সেদিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে "বাবা, তোমার স্মৃতি আমার কাছে ঝাপসা হয়ে আসছে। শুধু মা কে ভাল রাখতে চাই সারাজীবন... এটাই আমার তর্পণ... তুমি আশীর্বাদ করো.."
চোখ বুজে ফেলেছিল তখন তিন্নি... নইলে দেখত... ছবির মধ্যে বাবার হাসিমুখ...
 

আমার সুরভী ( ব্যাগেজ) ঠিক এই রকম
[+] 1 user Likes dimpuch's post
Like Reply
(10-10-2021, 06:34 PM)dimpuch Wrote: আমার সুরভী ( ব্যাগেজ) ঠিক এই রকম

হ্যাঁ , একদম ঠিক ... মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ..

Smile
Like Reply
পরকীয়া 

""""""""""""""

বাইশে মে লকডাউনের সন্ধ্যায় ডাইনিং রুমে বউ সুমনার পাশে বসে  সিরিয়াল দেখার সাথে সাথে সমীর ফেসবুকের নিউজ ফিড খুলে খুলে দেখছে ফেসবুক জুড়ে সব পোস্টই এখন করোনা সংক্রান্ত একটা পোস্ট নজর কাড়তেই সুমনাকে বলল দেখ দেখ বেশ মজার সুমনা ঝুঁকে পড়ে দেখা শেষ করতেই অমনি টুং করে ম্যাসেঞ্জারে একটা ম্যাসেজ ঢুকল-- "কল করো" সমীরের অবস্থা তখন রাস্তা পার হতে গিয়ে অসাবধানে চলন্ত দশ চাকার লরির তলায় চাপা পড়ার আতঙ্ক হার্টবিট ধরাক ধরাক করে যেন বেসুরো তাসা বাজচ্ছে তাড়াতাড়ি ম্যসেজটা লুকিয়ে ফেলল সুমনা বলল, "কে ম্যাসেজ করল?"  সমীর,  "এখন লকডাউনে অনেকের খেয়ে দেয়ে কোনও  কাজকর্ম নেই সারাদিন কেবল এটা সেটা খেজুরে আলাপ আর কিসমীর অনুভব করছে গেঞ্জিটা অল্প ভিজে গেছে টেনশনে মনে মনে ভাবছে শ্লা করোনা আসার আর সময় পেল না সবে প্রেমটা জমছে তখনই কথা নেই বার্তা নেই কোথা থেকে দুম করে করোনা এসে হাজির দেশ জুড়ে লক ডাউন বাইরে বের হওয়া বারণ ঘরে বন্দি থাকো যত্তসব সুমনা এমনিতেই সন্দেহ করে এই সুযোগে আর বাইরেই যেতে দিচ্ছে না এদিকে ভয় পাচ্ছে এখন যদি হঠাৎ ম্যাসেঞ্জারে ওদিক থেকে কল করে বসে তাহলেই শেষ সুমনা নির্ঘাত শিলে বেটে থেঁতলে দেবে যা ডেঞ্জার  মেয়ে , এই ভেবেই নেট টা অফ করে দিল সুমনা আবার টিভিতে মনোযোগ দিতেই সমীর মনে মনে লোকনাথ বাবকে স্মরণ করল কিন্তু ভীষণ কনফিউজড লোকনাথ বাবা তো রণে বনে জলে জঙ্গলে বিপদ থেকে বাঁচায় শুনেছে ঘরের ভেতর বউয়ের পাশে এই রকম পরকীয়া কেসে হাতেনাতে ধরা পড়লে তাকে কতটা সাপোর্ট দেবে যথেষ্ট সন্দেহ এই সময়ে ওনার স্মরণাপন্ন হওয়া মানে ধুম জ্বরে হোমিওপ্যাথি ওষুধের খাওয়ার মতন রিক্স হয়ে যাচ্ছে শ্লো অ্যাকশন সিওর না না কুইক অ্যাকশন হবে এমন কিছু ভাবতে হবে ওসবে ভরসা করা যাচ্ছে না কিছুক্ষণ পরে সুমনাকে বলল সিগারেট একদম শেষ একবার বাইরে যেতেই হবে শুনেই সুমনা বলল, "একদম না, দরজার বাইরে পা দিয়ে দেখ তোমার একদিন কি আমার এক দিন" সমীর মনে মনে ভাবছে উফ! কী জ্বালায় পড়লাম রে বাবা, ফোনে প্রেমের হাতছানি ঘরে লাদেন বউয়ের হুমকি কোন দিকে যে যাই উসখুস উসখুস করছে দুবার ড্রইং রুমে গিয়ে জল খেয়ে এল টিভিতে বিজ্ঞাপন শুরু হতেই সুমনা উঠে রান্না ঘরের দিকে গেল সমীর ভাবল এই সুযোগ এখন ফোন করা যে সম্ভব না জানিয়ে দিই যেই নেট অন করেছে অমনি ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ "খুব দরকার আছে কল করো না হলে আমিই করব" ম্যাসেজটা দেখেই তো হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাবার যোগাড় চুল খাড়া হয়ে যাচ্ছে  ব্যচেলর বলাটা ভীষণ ভুল হয়েছে দেখছি এদিক বাড়িতে বউ আছে জানলে  প্রেমটাই তো হত না উফ কী সমস্যায় পড়লাম রে বাবা কী করে ম্যানেজ  করব বুঝতে পারছি না তখনই সুমনা পিছনে এসে বলল, তরকারিটা একটু কম কম মনে হচ্ছে একটু আলু সেদ্ধ দিয়ে দেব? সমীর বলল আচ্ছা এই সব জিজ্ঞেস করার কি আছে? দিলে দাও এখন তো দেখছি তরকারিতে কতটা নুন দেবে সেটাও বলে দিতে হবে সুমনা চলে গেলে আবার ম্যাসেজ করতে যাবে অমনি বাজ পড়ার মতন আওয়াজ করে সুমনা ধপাস করে পাশে বসে পড়ল সমীর মনে মনে বলল, " সমীর আজ তোর নির্ঘাত কালশর্প যোগ রে! শিহরে শনি নাচাচ্ছে সিওর" ভয়ে ভয়ে সমীর ফোনটাই সুইচ অফ করে দিল সমীরের শরীরে তখন অস্থির অস্থির ভাব কিছুক্ষণ পরেই পাশে থাকা সুমনার ফোন বেজে উঠল সুমনা ধরেই বলল , "কেমন আছো? আমরা ভালো আছিনা তো, দেখছিবলেই কেটে দিয়ে সমীরকে বলল, "তোমার ফোন সুইচ অফ?"  সমীর, "না তো" সুবিমলদা ফোন করছে পাচ্ছে না সমীর - বাবা অফ হয়ে গেছে তা'হলে" সুমনা বলল, " নতুন ফোন এমনি এমনি অফ হয়ে গেল? সমীর, "তাই তো দেখছিসুমনা বলল,  " কোনও দিন অফ হয় না আজ অফ হয়ে গেল? আমি তো দেখলাম তুমি অফ করলে ম্যাসেঞ্জারে মেসেজটা আসার পর থেকেই তো দেখছি তোমার নাটক ভাবছ কিছুই বুঝি না?" চেনো তো আমাকেযদি উল্টেপাল্টা কিছু দেখেছি ঝেঁটিয়ে ঝাল ঝেড়ে দেব" সমীর বলল,, "কী আবোলতাবোল  বলছো কিছু বুঝছি না "সুমনা বলল, "আমি আবোল তাবোল বলছি? তুমি ওদিকে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছো আর ভাবছো আমি কিছু বুঝতে পারছি না? সমীর - "খবরদার যা তা বলবে না বলছি একে সিগারেট নেই মাথা কাজ করছে না তারপর আবার আনাপসানাপ বকছো মাথা খারাপ কোরো না"   সুমনা বলল, "আমি যা তা বলছি? মাথা খারাপ করছিতুমি পিয়ালী নামে একটা মেয়ের সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করছ সেটা আমার জানতে বাকি নেই বুঝলে? সমীর মনে মনে বলল আবার গোয়েন্দা হল কবে থেকে রেসমীর একটু সামলে, "এবাবা তো আমার কলিগ কাজের স্বার্থে  ম্যাসেজ চালাচালি তো করতেই হয়" সুমনা, "আহা কি দারুণ, ম্যাসেজ চালাচালি করতেই হয়!" কান খুলে শোনো  সুবিমলদার বউকে আমি একটা ফেক একাউন্ট খুলে তোমার চরিত্র পরীক্ষা করতে বলেছিলাম তোমার স্বভাব চরিত্র যে সুবিধার না সেটা আমি বিয়ের পর থেকেই বুঝেছি মেয়ে দেখলেই হামলে পড়া স্বভাব ওই পিয়ালী হল সুবিমলদার বউয়ের ফেক আই ডি বুঝলে? এরপর যদি কোনও দিন দেখি এই সব ছোঁকছোকানিতাহলে শিলের ওই নোড়া দিয়ে তোমার হাড়মাশ সব এক করে দেব বলে দিলাম অসভ্য কোথাকার

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
[Image: IMG-20211011-133604.jpg]
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)