Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
(28-08-2021, 01:16 PM)ddey333 Wrote: ঠিক আড়াইটার সময় পড়বো... কোন থ্রেডে যেন ছিল !! Smile

দেখেছো.... যে থ্রেড পড়ে আমায় বললো আমার একলা আকাশ নাকি খুব সুন্দর একটা গল্প... সেই থ্রেডের নামটাই ভুলে গেলো  Angry  Big Grin

কিছু কথা ছিল মনে থ্রেড

অনেকদিন আগের লেখা হিন্দি শর্ট স্টোরি... তাই আগের গুলোর মতো অতটা ম্যাচুরড লেখা নয় কিন্তু বিষয় টা ভালো তাই পড়তে বললাম
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
অর্পণ

 
#রূপান্বিতা
 
মাসেও হলো না!
প্রেগন্যান্সি কিটের দিকে হতাশ চোখে তাকিয়ে শুয়ে পড়ে নন্দিনী। আজ অনেক আশা নিয়ে উঠেছিল ঘুম থেকে, এত ভোরে, ফার্স্ট ইউরিনের জন্য। ভেবেছিল এবার হয়ত...
চোখে জল আর মনে ব্যথা নিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থেকেই উঠে পড়ল নন্দিনী। আজ মেলা কাজ। ভাগ্যিস ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে, তাই সুবিধা। নইলে যতই অনাড়ম্বর ভাবে হোক, ছোট্ট গোপাল ঠাকুর আছেন বাড়িতে, তাঁকে তো ভোগ দিতেই হবে।
ভারী মন নিয়েই কাজ করছিল নন্দিনী। অফিসে আজ অনেকেই ছুটি নিয়েছে। তাই ছুটি নিতে পারে নি। তবে, এইচ আর ম্যানেজারকে বলে কিছুক্ষণের ব্রেক নিয়েছে।
আয়োজন সামান্যই। তবে, পায়েস টা করতে গিয়েই চোখে আবার জল এলো ওর। যদি ওর কোল জুড়ে আসত 'সে'? এমনিভাবে পায়েস, মিষ্টি... আরও কত কী রান্না করে দিত! বিকেলে বার্থডে পার্টি হতো! 'ওর' বন্ধুরা ছোটাছুটি করত আর তাদের মায়েরা বলে উঠত "আস্তে আস্তে! পড়ে যেও না যেন!" আর অত ব্যস্ততাতেও হাসিমুখে সব সামলাতো...
তার বদলে এখন কি আছে ওর জীবনে? খালি কাজ কাজ আর কাজ। আর দায়িত্ব। অর্ণবের সাথে দিনে পাঁচটা কথাও হয় কিনা সন্দেহ। দেড় বছর ধরে বাড়ি থেকে অফিস করছে। কোথাও বেড়াতে যাওয়া নেই, আনন্দ নেই, মজা নেই... এমনকি.. বাবা মা নেই! এটা একটা জীবন!
"ধ্যাত্তেরি!" বলে পায়েসের বাটির পাশে হাতাটা নামিয়ে রাখে ও।
কিচ্ছু ভাল লাগে না।
এর চেয়ে মরে গেলেই বেশি ভাল হত।
মরে যাওয়া কি খুব খারাপ কিছু নাকি? খারাপ হলে কি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ লিখতেন, "মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান?"
আর এই হাসিখুশি জীবন, নিত্য নতুন শাড়ি কেনা, জাঙ্ক জুয়েলারি কেনা... আর পারছে না ও। এই অভিনয়... কোনো অস্কার বিজয়িনীর চেয়ে কি কম কিছু?
জীবন রেখে লাভ কি?
ভাবতে ভাবতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় ও। 'কিভাবে', সেটা না ভেবেই।
ভেবেছিল মন হাল্কা হবে, কিন্তু আরও যেন ভারী লাগছে। চলে যেতে হবে বলেই কি?
শাশুড়ি মায়ের আমলের কাঁসার থালা, গেলাস বের করে ভোগ সাজায় সুন্দর করে নন্দিনী। তারপর নিবেদন করে।
আহা! কী সুন্দর লাগছে সিংহাসনে আসীন গোপালকে! গোপু সোনা কে!
আর দেখা হবে না!
আবার হতেও পারে। হয়ত তাঁর কাছেই যাবে ও। সবাই তো তাই যায়, শুনেছে!
চোখে জল নিয়েই পুজো সারে নন্দিনী। তারপর সোফাটায় বসে।
সামান্য কিছু কাজ আছে আজ অফিসের। কিন্তু করে কি লাভ? তারচেয়ে রেজিগনেশান দিয়ে দেবে আজ? নাঃ, তাহলেই এইচ আরের ফোন আসবে। বলবে "এই তো সব ঠিক ছিল, তুমি ব্রেক নিলে.. কি হল?"
কি উত্তর দেবে ও।
আর পারছে না? জীবন থেকে খুব ক্লান্ত? এটাই বলবে?
সত্যি বলতে কি, তো কাউন্সেলিং ট্রাই করেছে। কিন্তু কন্টিনিউ করে নি। চিকিৎসা চলাকালীন এভাবে পিছিয়ে আসা ঠিক নয় জেনেও কন্টিনিউ করেনি। শুধু মিউজিক থেরাপির জন্য দেওয়া গানগুলো এখনও শোনে ...
আজকাল খুব রাগ হয়। খুব, খুব রাগ! ভেঙেচুরে দিতে ইচ্ছে করে সব। অর্ণব বেশ কয়েকবার অ্যাডাপশানের কথা বলেছে, কিন্তু গা করেনি। বারবার মনে হয়েছে, কেন পারবে না , বায়োলজিক্যাল মাদার হতে? ওর মধ্যে কি নেই?
কি মা হবার যোগ্য না?
এই কথা গুলো মনে পড়তেই যেন আরও ক্লান্ত লাগে ওর। আজ উপোস করে আছে ও। খেতেই ইচ্ছে করছে না!
মাথাটা এলিয়ে দেয় সোফায়। আইস স্কেটিং রিংক থেকে কেনা সোফা! ভেবেছিল ভাল হবে না.. কিন্তু বড্ড নরম গদি। চোখ বুজে আসে যেন, আবেশে।
হয়ত এইই শেষ শোওয়া এখানে...
"তোমার কাছে আমি নেই বলেই তুমি কাঁদছ? তুমি জানো, আমাকে কত কী সহ্য করতে হয়েছে? জন্মের সাথে সাথেই বোনের মৃত্যু... তার দায় আমার কাছে আসেনি? পরেও... নিজের মামাকে হত্যা করেছি আমি, বাধ্য হয়েই। কিন্তু বালক মাত্র ছিলাম আমি, কষ্ট কি হয়নি? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ভাইতে ভাইতে যুদ্ধ, সব দেখেছি, লড়েওছি! প্রেম ভেঙেছে, মন ভেঙেছিল, কিন্তু সেখবর রেখেছে 'জন? আমার নামেও কি কুকথা হয়নি? কিন্তু আমি কি হেরে গেছিলাম, মা? হারলে কি আজ আমাকে পেতে? তুমি তো জানো, আমি সবার মধ্যে আছি, তবে কি আমি তোমার মধ্যেও নেই?"
ধড়মড়িয়ে ওঠে নন্দিনী... কথা 'টি কানে লেগে আছে এখনও।
কে বলল এত কথা?
তিনিই কি... যিনি সব শিশুর মধ্যে ননীচোরা রূপে, সব কিশোরের প্রেমে মদনমোহন হয়ে, সব যুবকের মনে শ্রীকৃষ্ণ রূপে আর প্রৌঢ় মনে জীবন সারথি রূপে বিরাজমান? যিনি প্রেমময় এবং সাক্ষাৎ প্রেম?
তিনিই বললেন ওর মাঝে তিনি আছেন? তবে কি তাঁর মাঝেও আছে?
ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিল ও।
'দিন আগেই একটি বলিউডের সিনেমায় দেখেছিল প্রায় আঠেরো মিলিয়ন শিশু এই মুহূর্তে অনাথ সারা বিশ্বে। তার থেকে একজনকে যদি কোলে পায় ? যেমনি যশোদা মা পেয়েছিলেন তাঁকে?
তাড়াতাড়ি ঘরে গিয়ে প্রণাম করে গোপালকে। তারপর, ল্যাপটপে সার্চ করতে থাকে দত্তক নেবার সরকারী ওয়েবসাইটটি। মুখে হাসি, চোখ জল নিয়ে।
স্বয়ং বিদ্যাপতি বলেছেন -
"তুহুঁ জগন্নাথ জগতে কহায়সি
জগ বাহির নহ মুঞি ছার।
কিএ মানুস পসু পাখিয়ে জনমিয়ে
অথবা কীট পতঙ্গ।"
যিনি কীট পতঙ্গ, সব্বার প্রতি দয়াশীল, ক্ষমাশীল, যিনি জগতের নাথ... তিনি ওঁকে ক্ষমা করবেন না? আশীর্বাদ করবেন না? তা কি হয়?
অন্তর থেকে টইটুম্বুর মনে হাসে নন্দিনী, অনেকদিন পর।
তিনি আসছেন যে...
"মাধব বহুত মিনতি করি তোয়..."

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
বিয়ের চার বছর হয়েছে এখনো মা হতে পারিনি।
পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিলো আমাদের।প্রথম প্রথম আমি আর তুষার খুব সুখের সময় কাটিয়েছি। শশুড় শাশুড়ীও খুব আদর করতো আমাকে নিজের মেয়ের মতই ভালবাসে। দুই ননদের তো আমার সাথে খুব ভাব।


কিন্তু গত ছয় মাস ধরে শশুড় শাশুড়ী ননদেরা উঠে পরে লেগেছে কেন আমার বাচ্চা হয়না।তুষারও এতোদিন বাচ্চা না হওয়ায় তেমন কিছুই বলতো না, কিন্তু আজকাল তুষারও ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে বলে চার বছর কেটে গেলো এখনো কেন বাচ্চা হয় না, ওর মা বাবা নাতির মুখ দেখতে চায়।
গতকাল রাতে শাশুড়ী এসে বললো আর কত দিন অপেক্ষা করবো, বাড়িতে একটা বাচ্চাও নেই, বাচ্চা টাচ্ছা ছাড়া কি বাড়ি ভাল লাগে, নাকি শান্তি লাগে, পাশের বাড়ির শেফালির ছেলেকে তুষারের এক বছর পরে বিয়ে দিয়েছে, ছয় মাস হয়েছে বাচ্চা হয়েছে আর আমার ছেলের বৌয়ের ঘরে এখনো কোন বাচ্চা হলো না, আমরা কি ঠাকুমা দাদু হবো না...?
আরো অনেক গুলো কথা শুনিয়ে গেলো, বাচ্চা না হলে আমি কি করবো, আমি ও তো চাই আমার একটা সন্তান হোক, যে আমাকে মা মা বলে ডাকবে।
ননদ রিমি এসে বলল, বৌদি এক কাজ করলে কেমন হয় তোমরা বরং ডাক্তারের কাছে যাও, গিয়ে দেখো কারো কোন সমস্যা আছে কিনা।
রাতে তুষারকে রিমি কথাটা বলতেই তুষার বলল ও কোন ডাক্তারের কাছে যাবে না, পারবে না যেতে, অফিসে কাজের অনেক চাপ। অনেক জোরাজুরি করে তুষারকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম, দুজনেই পরীক্ষা করালাম। যত রকমের টেষ্ট আছে সব গুলোই টেষ্টই করলাম। ডাক্তার বললেন রিপোর্ট আসতে দেরি হবে, দুজনেই অপেক্ষা করছি আর মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকছি, যেনো কোন দুর্সংবাদ না শুনতে হয়। আধ ঘন্টা পরেই তুষারের মোবাইলে ফোন আসলো তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়া জন্য, আর্জেন্ট মিটিং আছে। তুষার আমাকে বলল, খুশি তুমি রিপোর্ট দেখে ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাড়ি চলে যেও, আমাকে এক্ষুনি অফিসে যেতে হবে, বস ডাকছেন। আমি বাড়িতে এসে রিপোর্ট দেখবো, বলেই হনহন করে হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে গেলো।
আমার হাতে ডাক্তারের দেওয়া রিপোর্ট আর সেই রিপোর্টে কিছু কঠিন সত্যি কথা লেখা আছে, যা মেনে নিতে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। বাড়িতে আসবার পর থেকে শ্বশুর শাশুড়ী ননদেরা বার বার জিজ্ঞেস করছে রিপোর্টে কি আসছে ডাক্তার কি বলেছে। চোখের জলের জন্য কথা বলতে পারছি না, ওদেরকে কি উত্তর দেবো। শাশুড়ী কঠিন সুরে বলল কি ব্যাপার বলছো না কেন কি হয়েছে।
বললাম ডাক্তার বলেছে সমস্যা টা আমার আমি কোনদিন মা হতে পারবো না, সেই ক্ষমতা নাকি আমার নেই।
কথা টা বলার সাথে সবাই কেমন করে জেনো আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। শাশুড়ীতো রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিলো, আমার ছেলে এই জন্মে কি আর সন্তানের মুখ দেখবে না, আমাদের বংশ কি এখানে শেষ হয়ে যাবে, কি কুলাঙ্গার অপয়া মেয়ে এনে সংসারে ঢুকিয়েছে মা হতে পারবে না, শাশুড়ীর সাথে শ্বশুরও সুর মিলিয়ে বকে যাচ্ছে। ননদেরাও যা তা বলছে একটা বন্ধ্যা মেয়ে আমার ভাইয়ের কপালে জুটেছে।
রাতে তুষার বাড়িতে এলে সবাই মিলে ওকে বোঝালো যাতে আমাকে ডিভোর্স  দিয়ে দেয়।আমাকে দিয়ে আর সংসার করা হবেনা।

ফল বিহীন গাছ রেখে লাভ কি, উপরে ফেলে দিয়ে সেখানে নতুন গাছ লাগাতে চাই, আরো অনেক কথাই বলে যাচ্ছে। আমি শুধু দেখছি তুষার কি বলে, কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভেঙ্গে তুষার বলল তোমরা যা ইচ্ছে তাই করো আমার আর এইসব ভাল লাগে না।
রাতে তুষার আমার সাথে একটা কথাও বলেনি, সারাটা রাত কেঁদে বুক ভাসিয়েছি আর ভাবছি চেনা মানুষগুলো এতো তাড়াতাড়িই অচেনা হয়ে গেলো, আমি এখন ওদের কাছে হয়ে গেলাম অপয়া বন্ধ্যা।
সকালে আমাকে ডাকা হলো শ্বশুরের  ঘরে, ডেকে নিয়ে বলল তুষারকে যেন ছেড়ে দি, ওরা তুষারকে আবার বিয়ে দিবে, ওদের বংশের প্রদীপ চাই , আর সেটা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, তাই আমি যেনো ডিভোর্সের ব্যপারটা মেনে নিয়ে তুষারকে চিরদিনের জন্য মুক্ত করে দিই।তুষারের ও নাকি তাইই মত।
তুষারের দিকে তাকাতেই ও বলল মা বাবা যা বলবে তাই হবে, তুমি এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি কোরো না খুশি প্লিজ, আর কোন টেনশন আমি আর নিতে পারছি না
ভাবতেই কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে কি করে মানুষ এতোটা বদলে যায়। আজ আমি সন্তান দিতে পারবো না বলে আমাকে ওরা তাড়িয়ে দিচ্ছে, কতোটা স্বার্থপর মানুষ।
দুই দিন হয়ে গেলো কেউ আমার সাথে তেমন একটা কথা বলে না, সবাই এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।খাবারের সময়ও কেউ ডাকে না। সন্ধ্যার পর শ্বশুর  শাশুড়ী এসে বলল তুমি কবে আমার ছেলেকে মুক্তি দিচ্ছো বলো, আমি তুষারের জন্য অন্য মেয়ে পছন্দ করেছি।
মেয়ে পছন্দ করেছেন মানে?
হ্যা করেছি তো আমার ছোট বোনের মেয়ে রেশমির সাথে আমি তুষারের বিয়ে দেবো। এখন তুমি বলো তুমি কখন চলে যাচ্ছো। আর আমি তুষারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি ওর কোন আপত্তি নেই, তোমার কাছে আমি আমার ছেলের একটা সুন্দর স্বাভাবিক জীবন চাইছি, আশা করি তুমি এটা নিয়ে কোন রকম ঝামেলা করবে না।তুষারের দিকে তাকায়ে দেখি ও ওর মায়ের কথায় সায় দিচ্ছে, আমার সাথে সংসার করতে চাইছে না।
সবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম ঠিক আছে, তাড়িয়ে দিতে চাইছেন চলে যাব, তবে এখন নয় যেদিন তুষারের বিয়ে হবে সেদিনই সবাইকে মুক্ত করে চলে যাব, আর ফিরবো না, কখনো জ্বালাতে আসবো না। তুষার আমার দিকে তাকিয়ে বলল সত্যি তো? হ্যা সত্যি চলে যাব।
আজ তুষারের বিয়ে, মহা ধুমধামে না হলেও বেশ আয়োজনই করেছে, একটু আগে তুষারকে দেখলাম শেরোয়ানি পড়ছে, আমিও বেশ সেজেছি, আমার স্বামীর বিয়ে বলে কথা সেই সাথে আজ যে ওর মুক্তির দিন আর নতুন খুশির দিন। তুষার বরযাত্রীসহ বের হবে আমিও ব্যাগ এ কাপড় গুছিয়ে চলে যাচ্ছি এমন সময় দেখি তুষার বর বেশে সেজেগুজে রেডি হয়ে আছে, খুব হাসিখুশি লাগছে, ওকে ছেড়ে যেতে মন টা মানছিলো না, তবুও যে যেতে হবে। যাবার আগে একবার দুচোখ ভরে তুষারকে দেখে নিলাম, তুষার আমার থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিলো।তুষারের কাছে গিয়ে বললাম, তোমার নতুন জীবন অনেক সুখের হোক, বিয়েতে তোমাকে দেবার মত আমার কাছে কিছুই নেই, তবে এই ছোট্ট একটা উপহার তোমার জন্য, নাও। কাগজ টা তুষারের হাতে দিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম, কেউ আটকালো না। চোখ দুটো বাধ মানছে না অশ্রু  অঝরে পড়েই যাচ্ছে।
খুশি চলে যাওয়ার পর তুষার ওর দেওয়া উপহারের কাগজটা খুলে যা দেখলো তাতে ওর সারা শরীর কাঁপছে, চোখ দিয়ে জল পড়ছে। ঘরের সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে তুষারের মুখের দিকে, কি হয়েছে জানার জন্য। কাগজটা পড়ার পর তুষার দাঁড়ানো থেকে বসে পড়লো, শরীরটা যেনো অবশ নিথর দেহের মত লাগছে।কাগজটা অার কিছু নয়, এটা সেই রিপোর্ট যেটাতে লেখা আছে বন্ধ্যা খুশি নয় বন্ধ্যা তুষার, ওই দিন ডাক্তারের রিপোর্টে রেজাল্ট এসেছিলো তুষার কোন দিন বাবা হতে পারবে না, সেই ক্ষমতা তার নেই, আর খুশি সম্পূর্ণ সুস্থ ওর কোন শারীরিক অক্ষমতা নেই।
রিপোর্টের ভিতরে খুশির একটা চিঠি আছে তাতে লেখা আছেঃ
তুষার,
আমি চাইলেই প্রথম দিনই সত্যিটা বলতে পারতাম, আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম রিপোর্টে আমার দোষ আছে জানলে তুমি কি বলো, তুমি যদি একবার আমাকে বুকে টেনে নিয়ে বলতে তুমি আমাকে ভালবাসো সন্তান না হওয়ায় তোমার কোন আক্ষেপ নেই, আমার কপাল ছুয়ে একটু শান্তনা দিতে তাহলে আমি সারা জীবন তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে জীবনটা পার করে দিতাম, সন্তান সুখ বিসর্জন দিতাম, কিন্তু তুমি তা করো নি, তুমি আমাকে ত্যাগ করেছো, তোমার থেকে আলাদা করেছো, ছিঁড়ে ফেলেছো ভালবাসার বন্ধন। রিপোর্টের ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে তোমাকে পরীক্ষা করতে চাইনি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি আমাকে কতটা ভালাবাসো।তুমি হেরে গেছো।
চলে যাচ্ছি পৃথিবীর যেখানেই থাকি প্রার্থনা করি তুমি ভাল থেকো, সুখী হও।
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
(03-09-2021, 09:52 PM)dada_of_india Wrote: বিয়ের চার বছর হয়েছে এখনো মা হতে পারিনি।
পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিলো আমাদের।প্রথম প্রথম আমি আর তুষার খুব সুখের সময় কাটিয়েছি। শশুড় শাশুড়ীও খুব আদর করতো আমাকে নিজের মেয়ের মতই ভালবাসে। দুই ননদের তো আমার সাথে খুব ভাব।


কিন্তু গত ছয় মাস ধরে শশুড় শাশুড়ী ননদেরা উঠে পরে লেগেছে কেন আমার বাচ্চা হয়না।তুষারও এতোদিন বাচ্চা না হওয়ায় তেমন কিছুই বলতো না, কিন্তু আজকাল তুষারও ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে বলে চার বছর কেটে গেলো এখনো কেন বাচ্চা হয় না, ওর মা বাবা নাতির মুখ দেখতে চায়।
গতকাল রাতে শাশুড়ী এসে বললো আর কত দিন অপেক্ষা করবো, বাড়িতে একটা বাচ্চাও নেই, বাচ্চা টাচ্ছা ছাড়া কি বাড়ি ভাল লাগে, নাকি শান্তি লাগে, পাশের বাড়ির শেফালির ছেলেকে তুষারের এক বছর পরে বিয়ে দিয়েছে, ছয় মাস হয়েছে বাচ্চা হয়েছে আর আমার ছেলের বৌয়ের ঘরে এখনো কোন বাচ্চা হলো না, আমরা কি ঠাকুমা দাদু হবো না...?
আরো অনেক গুলো কথা শুনিয়ে গেলো, বাচ্চা না হলে আমি কি করবো, আমি ও তো চাই আমার একটা সন্তান হোক, যে আমাকে মা মা বলে ডাকবে।
ননদ রিমি এসে বলল, বৌদি এক কাজ করলে কেমন হয় তোমরা বরং ডাক্তারের কাছে যাও, গিয়ে দেখো কারো কোন সমস্যা আছে কিনা।
রাতে তুষারকে রিমি কথাটা বলতেই তুষার বলল ও কোন ডাক্তারের কাছে যাবে না, পারবে না যেতে, অফিসে কাজের অনেক চাপ। অনেক জোরাজুরি করে তুষারকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম, দুজনেই পরীক্ষা করালাম। যত রকমের টেষ্ট আছে সব গুলোই টেষ্টই করলাম। ডাক্তার বললেন রিপোর্ট আসতে দেরি হবে, দুজনেই অপেক্ষা করছি আর মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকছি, যেনো কোন দুর্সংবাদ না শুনতে হয়। আধ ঘন্টা পরেই তুষারের মোবাইলে ফোন আসলো তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়া জন্য, আর্জেন্ট মিটিং আছে। তুষার আমাকে বলল, খুশি তুমি রিপোর্ট দেখে ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাড়ি চলে যেও, আমাকে এক্ষুনি অফিসে যেতে হবে, বস ডাকছেন। আমি বাড়িতে এসে রিপোর্ট দেখবো, বলেই হনহন করে হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে গেলো।
আমার হাতে ডাক্তারের দেওয়া রিপোর্ট আর সেই রিপোর্টে কিছু কঠিন সত্যি কথা লেখা আছে, যা মেনে নিতে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। বাড়িতে আসবার পর থেকে শ্বশুর শাশুড়ী ননদেরা বার বার জিজ্ঞেস করছে রিপোর্টে কি আসছে ডাক্তার কি বলেছে। চোখের জলের জন্য কথা বলতে পারছি না, ওদেরকে কি উত্তর দেবো। শাশুড়ী কঠিন সুরে বলল কি ব্যাপার বলছো না কেন কি হয়েছে।
বললাম ডাক্তার বলেছে সমস্যা টা আমার আমি কোনদিন মা হতে পারবো না, সেই ক্ষমতা নাকি আমার নেই।
কথা টা বলার সাথে সবাই কেমন করে জেনো আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। শাশুড়ীতো রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিলো, আমার ছেলে এই জন্মে কি আর সন্তানের মুখ দেখবে না, আমাদের বংশ কি এখানে শেষ হয়ে যাবে, কি কুলাঙ্গার অপয়া মেয়ে এনে সংসারে ঢুকিয়েছে মা হতে পারবে না, শাশুড়ীর সাথে শ্বশুরও সুর মিলিয়ে বকে যাচ্ছে। ননদেরাও যা তা বলছে একটা বন্ধ্যা মেয়ে আমার ভাইয়ের কপালে জুটেছে।
রাতে তুষার বাড়িতে এলে সবাই মিলে ওকে বোঝালো যাতে আমাকে ডিভোর্স  দিয়ে দেয়।আমাকে দিয়ে আর সংসার করা হবেনা।

ফল বিহীন গাছ রেখে লাভ কি, উপরে ফেলে দিয়ে সেখানে নতুন গাছ লাগাতে চাই, আরো অনেক কথাই বলে যাচ্ছে। আমি শুধু দেখছি তুষার কি বলে, কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভেঙ্গে তুষার বলল তোমরা যা ইচ্ছে তাই করো আমার আর এইসব ভাল লাগে না।
রাতে তুষার আমার সাথে একটা কথাও বলেনি, সারাটা রাত কেঁদে বুক ভাসিয়েছি আর ভাবছি চেনা মানুষগুলো এতো তাড়াতাড়িই অচেনা হয়ে গেলো, আমি এখন ওদের কাছে হয়ে গেলাম অপয়া বন্ধ্যা।
সকালে আমাকে ডাকা হলো শ্বশুরের  ঘরে, ডেকে নিয়ে বলল তুষারকে যেন ছেড়ে দি, ওরা তুষারকে আবার বিয়ে দিবে, ওদের বংশের প্রদীপ চাই , আর সেটা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, তাই আমি যেনো ডিভোর্সের ব্যপারটা মেনে নিয়ে তুষারকে চিরদিনের জন্য মুক্ত করে দিই।তুষারের ও নাকি তাইই মত।
তুষারের দিকে তাকাতেই ও বলল মা বাবা যা বলবে তাই হবে, তুমি এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি কোরো না খুশি প্লিজ, আর কোন টেনশন আমি আর নিতে পারছি না
ভাবতেই কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে কি করে মানুষ এতোটা বদলে যায়। আজ আমি সন্তান দিতে পারবো না বলে আমাকে ওরা তাড়িয়ে দিচ্ছে, কতোটা স্বার্থপর মানুষ।
দুই দিন হয়ে গেলো কেউ আমার সাথে তেমন একটা কথা বলে না, সবাই এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।খাবারের সময়ও কেউ ডাকে না। সন্ধ্যার পর শ্বশুর  শাশুড়ী এসে বলল তুমি কবে আমার ছেলেকে মুক্তি দিচ্ছো বলো, আমি তুষারের জন্য অন্য মেয়ে পছন্দ করেছি।
মেয়ে পছন্দ করেছেন মানে?
হ্যা করেছি তো আমার ছোট বোনের মেয়ে রেশমির সাথে আমি তুষারের বিয়ে দেবো। এখন তুমি বলো তুমি কখন চলে যাচ্ছো। আর আমি তুষারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি ওর কোন আপত্তি নেই, তোমার কাছে আমি আমার ছেলের একটা সুন্দর স্বাভাবিক জীবন চাইছি, আশা করি তুমি এটা নিয়ে কোন রকম ঝামেলা করবে না।তুষারের দিকে তাকায়ে দেখি ও ওর মায়ের কথায় সায় দিচ্ছে, আমার সাথে সংসার করতে চাইছে না।
সবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম ঠিক আছে, তাড়িয়ে দিতে চাইছেন চলে যাব, তবে এখন নয় যেদিন তুষারের বিয়ে হবে সেদিনই সবাইকে মুক্ত করে চলে যাব, আর ফিরবো না, কখনো জ্বালাতে আসবো না। তুষার আমার দিকে তাকিয়ে বলল সত্যি তো? হ্যা সত্যি চলে যাব।
আজ তুষারের বিয়ে, মহা ধুমধামে না হলেও বেশ আয়োজনই করেছে, একটু আগে তুষারকে দেখলাম শেরোয়ানি পড়ছে, আমিও বেশ সেজেছি, আমার স্বামীর বিয়ে বলে কথা সেই সাথে আজ যে ওর মুক্তির দিন আর নতুন খুশির দিন। তুষার বরযাত্রীসহ বের হবে আমিও ব্যাগ এ কাপড় গুছিয়ে চলে যাচ্ছি এমন সময় দেখি তুষার বর বেশে সেজেগুজে রেডি হয়ে আছে, খুব হাসিখুশি লাগছে, ওকে ছেড়ে যেতে মন টা মানছিলো না, তবুও যে যেতে হবে। যাবার আগে একবার দুচোখ ভরে তুষারকে দেখে নিলাম, তুষার আমার থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিলো।তুষারের কাছে গিয়ে বললাম, তোমার নতুন জীবন অনেক সুখের হোক, বিয়েতে তোমাকে দেবার মত আমার কাছে কিছুই নেই, তবে এই ছোট্ট একটা উপহার তোমার জন্য, নাও। কাগজ টা তুষারের হাতে দিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম, কেউ আটকালো না। চোখ দুটো বাধ মানছে না অশ্রু  অঝরে পড়েই যাচ্ছে।
খুশি চলে যাওয়ার পর তুষার ওর দেওয়া উপহারের কাগজটা খুলে যা দেখলো তাতে ওর সারা শরীর কাঁপছে, চোখ দিয়ে জল পড়ছে। ঘরের সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে তুষারের মুখের দিকে, কি হয়েছে জানার জন্য। কাগজটা পড়ার পর তুষার দাঁড়ানো থেকে বসে পড়লো, শরীরটা যেনো অবশ নিথর দেহের মত লাগছে।কাগজটা অার কিছু নয়, এটা সেই রিপোর্ট যেটাতে লেখা আছে বন্ধ্যা খুশি নয় বন্ধ্যা তুষার, ওই দিন ডাক্তারের রিপোর্টে রেজাল্ট এসেছিলো তুষার কোন দিন বাবা হতে পারবে না, সেই ক্ষমতা তার নেই, আর খুশি সম্পূর্ণ সুস্থ ওর কোন শারীরিক অক্ষমতা নেই।
রিপোর্টের ভিতরে খুশির একটা চিঠি আছে তাতে লেখা আছেঃ
তুষার,
আমি চাইলেই প্রথম দিনই সত্যিটা বলতে পারতাম, আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম রিপোর্টে আমার দোষ আছে জানলে তুমি কি বলো, তুমি যদি একবার আমাকে বুকে টেনে নিয়ে বলতে তুমি আমাকে ভালবাসো সন্তান না হওয়ায় তোমার কোন আক্ষেপ নেই, আমার কপাল ছুয়ে একটু শান্তনা দিতে তাহলে আমি সারা জীবন তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে জীবনটা পার করে দিতাম, সন্তান সুখ বিসর্জন দিতাম, কিন্তু তুমি তা করো নি, তুমি আমাকে ত্যাগ করেছো, তোমার থেকে আলাদা করেছো, ছিঁড়ে ফেলেছো ভালবাসার বন্ধন। রিপোর্টের ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে তোমাকে পরীক্ষা করতে চাইনি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি আমাকে কতটা ভালাবাসো।তুমি হেরে গেছো।
চলে যাচ্ছি পৃথিবীর যেখানেই থাকি প্রার্থনা করি তুমি ভাল থেকো, সুখী হও।

এই গল্পটা পড়ে সেই গানটা মনে পড়লো -

কি আশায় বাঁধি খেলাঘর
বেদনার বালুচরে......

অসাধারণ একটা গল্প.... না... বাস্তব
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(03-09-2021, 09:52 PM)dada_of_india Wrote:
চলে যাচ্ছি পৃথিবীর যেখানেই থাকি প্রার্থনা করি তুমি ভাল থেকো, সুখী হও।

এটা আমি আগেও কোথাও একটা পড়েছি।
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(03-09-2021, 09:52 PM)dada_of_india Wrote: বিয়ের চার বছর হয়েছে এখনো মা হতে পারিনি।
পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিলো আমাদের।প্রথম প্রথম আমি আর তুষার খুব সুখের সময় কাটিয়েছি। শশুড় শাশুড়ীও খুব আদর করতো আমাকে নিজের মেয়ের মতই ভালবাসে। দুই ননদের তো আমার সাথে খুব ভাব।


কিন্তু গত ছয় মাস ধরে শশুড় শাশুড়ী ননদেরা উঠে পরে লেগেছে কেন আমার বাচ্চা হয়না।তুষারও এতোদিন বাচ্চা না হওয়ায় তেমন কিছুই বলতো না, কিন্তু আজকাল তুষারও ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে বলে চার বছর কেটে গেলো এখনো কেন বাচ্চা হয় না, ওর মা বাবা নাতির মুখ দেখতে চায়।
গতকাল রাতে শাশুড়ী এসে বললো আর কত দিন অপেক্ষা করবো, বাড়িতে একটা বাচ্চাও নেই, বাচ্চা টাচ্ছা ছাড়া কি বাড়ি ভাল লাগে, নাকি শান্তি লাগে, পাশের বাড়ির শেফালির ছেলেকে তুষারের এক বছর পরে বিয়ে দিয়েছে, ছয় মাস হয়েছে বাচ্চা হয়েছে আর আমার ছেলের বৌয়ের ঘরে এখনো কোন বাচ্চা হলো না, আমরা কি ঠাকুমা দাদু হবো না...?
আরো অনেক গুলো কথা শুনিয়ে গেলো, বাচ্চা না হলে আমি কি করবো, আমি ও তো চাই আমার একটা সন্তান হোক, যে আমাকে মা মা বলে ডাকবে।
ননদ রিমি এসে বলল, বৌদি এক কাজ করলে কেমন হয় তোমরা বরং ডাক্তারের কাছে যাও, গিয়ে দেখো কারো কোন সমস্যা আছে কিনা।
রাতে তুষারকে রিমি কথাটা বলতেই তুষার বলল ও কোন ডাক্তারের কাছে যাবে না, পারবে না যেতে, অফিসে কাজের অনেক চাপ। অনেক জোরাজুরি করে তুষারকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম, দুজনেই পরীক্ষা করালাম। যত রকমের টেষ্ট আছে সব গুলোই টেষ্টই করলাম। ডাক্তার বললেন রিপোর্ট আসতে দেরি হবে, দুজনেই অপেক্ষা করছি আর মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকছি, যেনো কোন দুর্সংবাদ না শুনতে হয়। আধ ঘন্টা পরেই তুষারের মোবাইলে ফোন আসলো তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়া জন্য, আর্জেন্ট মিটিং আছে। তুষার আমাকে বলল, খুশি তুমি রিপোর্ট দেখে ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাড়ি চলে যেও, আমাকে এক্ষুনি অফিসে যেতে হবে, বস ডাকছেন। আমি বাড়িতে এসে রিপোর্ট দেখবো, বলেই হনহন করে হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে গেলো।
আমার হাতে ডাক্তারের দেওয়া রিপোর্ট আর সেই রিপোর্টে কিছু কঠিন সত্যি কথা লেখা আছে, যা মেনে নিতে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। বাড়িতে আসবার পর থেকে শ্বশুর শাশুড়ী ননদেরা বার বার জিজ্ঞেস করছে রিপোর্টে কি আসছে ডাক্তার কি বলেছে। চোখের জলের জন্য কথা বলতে পারছি না, ওদেরকে কি উত্তর দেবো। শাশুড়ী কঠিন সুরে বলল কি ব্যাপার বলছো না কেন কি হয়েছে।
বললাম ডাক্তার বলেছে সমস্যা টা আমার আমি কোনদিন মা হতে পারবো না, সেই ক্ষমতা নাকি আমার নেই।
কথা টা বলার সাথে সবাই কেমন করে জেনো আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। শাশুড়ীতো রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দিলো, আমার ছেলে এই জন্মে কি আর সন্তানের মুখ দেখবে না, আমাদের বংশ কি এখানে শেষ হয়ে যাবে, কি কুলাঙ্গার অপয়া মেয়ে এনে সংসারে ঢুকিয়েছে মা হতে পারবে না, শাশুড়ীর সাথে শ্বশুরও সুর মিলিয়ে বকে যাচ্ছে। ননদেরাও যা তা বলছে একটা বন্ধ্যা মেয়ে আমার ভাইয়ের কপালে জুটেছে।
রাতে তুষার বাড়িতে এলে সবাই মিলে ওকে বোঝালো যাতে আমাকে ডিভোর্স  দিয়ে দেয়।আমাকে দিয়ে আর সংসার করা হবেনা।

ফল বিহীন গাছ রেখে লাভ কি, উপরে ফেলে দিয়ে সেখানে নতুন গাছ লাগাতে চাই, আরো অনেক কথাই বলে যাচ্ছে। আমি শুধু দেখছি তুষার কি বলে, কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভেঙ্গে তুষার বলল তোমরা যা ইচ্ছে তাই করো আমার আর এইসব ভাল লাগে না।
রাতে তুষার আমার সাথে একটা কথাও বলেনি, সারাটা রাত কেঁদে বুক ভাসিয়েছি আর ভাবছি চেনা মানুষগুলো এতো তাড়াতাড়িই অচেনা হয়ে গেলো, আমি এখন ওদের কাছে হয়ে গেলাম অপয়া বন্ধ্যা।
সকালে আমাকে ডাকা হলো শ্বশুরের  ঘরে, ডেকে নিয়ে বলল তুষারকে যেন ছেড়ে দি, ওরা তুষারকে আবার বিয়ে দিবে, ওদের বংশের প্রদীপ চাই , আর সেটা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, তাই আমি যেনো ডিভোর্সের ব্যপারটা মেনে নিয়ে তুষারকে চিরদিনের জন্য মুক্ত করে দিই।তুষারের ও নাকি তাইই মত।
তুষারের দিকে তাকাতেই ও বলল মা বাবা যা বলবে তাই হবে, তুমি এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি কোরো না খুশি প্লিজ, আর কোন টেনশন আমি আর নিতে পারছি না
ভাবতেই কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে কি করে মানুষ এতোটা বদলে যায়। আজ আমি সন্তান দিতে পারবো না বলে আমাকে ওরা তাড়িয়ে দিচ্ছে, কতোটা স্বার্থপর মানুষ।
দুই দিন হয়ে গেলো কেউ আমার সাথে তেমন একটা কথা বলে না, সবাই এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।খাবারের সময়ও কেউ ডাকে না। সন্ধ্যার পর শ্বশুর  শাশুড়ী এসে বলল তুমি কবে আমার ছেলেকে মুক্তি দিচ্ছো বলো, আমি তুষারের জন্য অন্য মেয়ে পছন্দ করেছি।
মেয়ে পছন্দ করেছেন মানে?
হ্যা করেছি তো আমার ছোট বোনের মেয়ে রেশমির সাথে আমি তুষারের বিয়ে দেবো। এখন তুমি বলো তুমি কখন চলে যাচ্ছো। আর আমি তুষারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি ওর কোন আপত্তি নেই, তোমার কাছে আমি আমার ছেলের একটা সুন্দর স্বাভাবিক জীবন চাইছি, আশা করি তুমি এটা নিয়ে কোন রকম ঝামেলা করবে না।তুষারের দিকে তাকায়ে দেখি ও ওর মায়ের কথায় সায় দিচ্ছে, আমার সাথে সংসার করতে চাইছে না।
সবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম ঠিক আছে, তাড়িয়ে দিতে চাইছেন চলে যাব, তবে এখন নয় যেদিন তুষারের বিয়ে হবে সেদিনই সবাইকে মুক্ত করে চলে যাব, আর ফিরবো না, কখনো জ্বালাতে আসবো না। তুষার আমার দিকে তাকিয়ে বলল সত্যি তো? হ্যা সত্যি চলে যাব।
আজ তুষারের বিয়ে, মহা ধুমধামে না হলেও বেশ আয়োজনই করেছে, একটু আগে তুষারকে দেখলাম শেরোয়ানি পড়ছে, আমিও বেশ সেজেছি, আমার স্বামীর বিয়ে বলে কথা সেই সাথে আজ যে ওর মুক্তির দিন আর নতুন খুশির দিন। তুষার বরযাত্রীসহ বের হবে আমিও ব্যাগ এ কাপড় গুছিয়ে চলে যাচ্ছি এমন সময় দেখি তুষার বর বেশে সেজেগুজে রেডি হয়ে আছে, খুব হাসিখুশি লাগছে, ওকে ছেড়ে যেতে মন টা মানছিলো না, তবুও যে যেতে হবে। যাবার আগে একবার দুচোখ ভরে তুষারকে দেখে নিলাম, তুষার আমার থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিলো।তুষারের কাছে গিয়ে বললাম, তোমার নতুন জীবন অনেক সুখের হোক, বিয়েতে তোমাকে দেবার মত আমার কাছে কিছুই নেই, তবে এই ছোট্ট একটা উপহার তোমার জন্য, নাও। কাগজ টা তুষারের হাতে দিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম, কেউ আটকালো না। চোখ দুটো বাধ মানছে না অশ্রু  অঝরে পড়েই যাচ্ছে।
খুশি চলে যাওয়ার পর তুষার ওর দেওয়া উপহারের কাগজটা খুলে যা দেখলো তাতে ওর সারা শরীর কাঁপছে, চোখ দিয়ে জল পড়ছে। ঘরের সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে তুষারের মুখের দিকে, কি হয়েছে জানার জন্য। কাগজটা পড়ার পর তুষার দাঁড়ানো থেকে বসে পড়লো, শরীরটা যেনো অবশ নিথর দেহের মত লাগছে।কাগজটা অার কিছু নয়, এটা সেই রিপোর্ট যেটাতে লেখা আছে বন্ধ্যা খুশি নয় বন্ধ্যা তুষার, ওই দিন ডাক্তারের রিপোর্টে রেজাল্ট এসেছিলো তুষার কোন দিন বাবা হতে পারবে না, সেই ক্ষমতা তার নেই, আর খুশি সম্পূর্ণ সুস্থ ওর কোন শারীরিক অক্ষমতা নেই।
রিপোর্টের ভিতরে খুশির একটা চিঠি আছে তাতে লেখা আছেঃ
তুষার,
আমি চাইলেই প্রথম দিনই সত্যিটা বলতে পারতাম, আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম রিপোর্টে আমার দোষ আছে জানলে তুমি কি বলো, তুমি যদি একবার আমাকে বুকে টেনে নিয়ে বলতে তুমি আমাকে ভালবাসো সন্তান না হওয়ায় তোমার কোন আক্ষেপ নেই, আমার কপাল ছুয়ে একটু শান্তনা দিতে তাহলে আমি সারা জীবন তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে জীবনটা পার করে দিতাম, সন্তান সুখ বিসর্জন দিতাম, কিন্তু তুমি তা করো নি, তুমি আমাকে ত্যাগ করেছো, তোমার থেকে আলাদা করেছো, ছিঁড়ে ফেলেছো ভালবাসার বন্ধন। রিপোর্টের ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে তোমাকে পরীক্ষা করতে চাইনি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি আমাকে কতটা ভালাবাসো।তুমি হেরে গেছো।
চলে যাচ্ছি পৃথিবীর যেখানেই থাকি প্রার্থনা করি তুমি ভাল থেকো, সুখী হও।

So you are alive.
Keeping alive, listen to the famous song of the bee gees. 
Let me complete my travel, just took off  Smile
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
আরও একবার

 
 
নিজের বেডরুমের দরজা টা ভালো করে বন্ধ করে ছিটকিনি টা আটকে দিল নিলয়। মা চলে যাবার পর থেকে দরজা বন্ধ করে শোয় না ও। বাবার বয়স হয়েছে, যদি রাত বিরেতে দরকার হয়, এই ভেবে।
কিন্তু, আজ কিচ্ছু করার নেই!
আজ একদম আলাদা একটা দিন... আর সবকিছু শেষ করে দেবার দিন!
এতবছর ধরে চলে আসা কষ্ট,বঞ্চনা, অপমান...অ্যাবিউজ...আজ সব শেষ করে দেবার দিন!
আজ নিলয় নিজেকে শেষ করে দেবে! সব ল্যাটা চুকে যাবে। এই কেন্নোর জীবন নিয়ে আর বাঁচতে হবে না তাহলে।
কয়েকদিন ধরেই শরীরটা খারাপ ছিল ওর। জ্বর-মাথা ব্যথা...সারা শরীরে ব্যথা। আর এই উপসর্গ নিয়ে ডাক্তার কাকুকে দেখিয়েছিল ও। আর ওর খোঁচা খোঁচা দাড়ি, চোখের কোনের ডিপ ডার্ক সার্কেল দেখে ডাক্তারকাকু নিজেই জিজ্ঞেস করেছিলেন
'কি রে বাপ্পা? ঘুমোস না নাকি ঠিক মতো? কি চেহারা বানিয়েছিস? চোখ তো পুরো রাস্তার গাড্ডার মতো!' বলে, হা হা করে হেসেছিলেন কাকু।
নিলয় হেসেছিল, প্রানখোলা হাসি। তারপর বলেছিল 'কাকু, ঘুমোতে গেলেই তো বসের গরিলার মতো মুখ টা মনে পড়ে! জানোই তো সেলসে আছি। সারাক্ষণ টার্গেটের পেছনের দৌড়তে হয়! বড্ড টায়ার্ড হয়ে আছি জানো...'
'কিন্তু বাবা, সে তো জীবনের পার্ট একট! পারসোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ আলাদা করতে হবে। শোন, তোকে খুব মাইল্ড একটা ওষুধ দিচ্ছি যেটা রাতে খাবার আধ ঘন্টা আগে খাবি, কেমন? সাতদিনের জন্য লিখে দিলাম। তার বেশি খাবি না। আর স্ট্রেস থাকবেই, বুঝলি। ওভারকাম করতে হবে। ফোন দূরে রেখে শুবি। এই সোশ্যাল মিডিয়াই তোদের সর্বনাশ করল।' খসখস করে প্রেসক্রিপশান লিখতে লিখতে বলেছিলেন কাকু।
আর, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল নিলয়।
দ্যাট ইজ ইট!
রোজ রোজ এরিয়া ম্যানেজারের বকা খাওয়া, 'তুমি একটি ওয়ার্থলেস!' শোনা আর সহকর্মীদের মুখ টিপে হাসা...দিনের পর দিনের এই এক জিনিস আর নিতে পারছে না ও।
কবে থেকে অন্য চাকরির চেষ্টা করছে, কিন্তু কোনো ওপেনিং আসছে না!
যদি ওর ওপর বাবার দায়িত্ব না থাকত...তবে কবেই কুইট করে যেত! আফটার অল, যার বৌ বিয়ের পর এই ভাবে চলে যেতে পারে, তার বেঁচে থাকার কি কোনো দরকার আছে?
'মাস ধরেই চলে আসা ভাবনা টা... কেমন যেন পেড়ে ফেলছিল ওকে। ব্যাকপ্যাকের ভেতর থেকে নিরীহ প্রেসক্রিপশন টা যেন হাতছানি দিচ্ছিল ওকে। বারবার বলছিল 'আমি তো আছি...কোল পেতে...এসো আমার কাছে...'
আজ অফিসে যাবার পর থেকেই ওদের টিমের সবাই কেমন নিজেদের মধ্যে চোখে চোখে কথা বলছিল, মিটিমিটি হাসছিল, কারণ টা বুঝতে পারেনি নিলয়। পরে, বাঁধাধরা মর্নিং মিটিং এরিয়া ম্যানেজার যখন ওর হাতে একটা 'পারফরম্যান্স ওয়ার্নিং' এর চিঠি ধরালেন তখনই বুঝতে পারল এত হাসাহাসির কারণ কি ছিল! সবাই সব জানত! ছিঃ! কি লজ্জা! কি অপমান!
আর তখন সিদ্ধান্ত টা নিয়ে নিয়েছিল ও। নিজেকে শেষ করে দেবে। ব্যাংকে অনেক কষ্ট করে লাখ খানেক জমিয়েছে, লাইফ ইন্সিওরেন্স আছে, সামান্য কিছু ইনভেস্টমেন্ট...বাবার নিজের পেনসান আছে...চলে যাবে ঠিক ...
রি ভেবেই অনেক গুলো দোকান ঘুরে ঘুরে ঘুমের ওষুধ সংগ্রহ করে এনেছে ও।
কোথায় যেন পড়েছিল, খালি পেটে ঘুমের ওষুধ খেলে মৃ্ত্যু নিশ্চিত! তাই 'পেট খারাপ আছে' এই অজুহাতে ডিনার করেনি ও। বাবার খাওয়া দাওয়া হয়ে যাবার পর নিজের ঘরে এসে দরজা আটকে দিয়েছে। এমনিতেই কাল রবিবার। দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। বাবা ডাকেন না কখনো। সারা সপ্তাহের ক্লেদ ঘুমের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, ভাবেন হয়ত। এক এক রবিবার তো সাড়ে এগারোটা বারোটাতেও ওঠে ও। উঠে আর ব্রেকফাস্ট করে না, সোজা রান্নার মাসির বানানো খাবার দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে ফেলে। তাই, বাবা কাল হয়ত বারোটা বেজে গেছে ছেলে উঠছে দেখেও চিন্তা করবেন না তেমন... আর তারপর যখন ডাকবেন...তখন তো কতদূরে....

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
ভাবতে ভাবতেই ব্যাকপ্যাক টা খুলে ওষুধের স্ট্রিপ টা বের করল ও। আটটা স্ট্রিপ, দশটা করে আছে... আশিটা ওষুধ... তারপর অপার শান্তি।

ওষুধ গুলো বের করে ঘরে রাখা প্লাস্টিকের টেবিল টায় রাখল নিলয়। আর তখন সামনের ড্রেসিং টেবিলের আয়নাটায় চোখ গেল ওর। বাবা মায়ের বিয়ের ড্রেসিং টেবিল! মা চলে যাবার পর বাবা ছোট ঘর টায় শিফট করেছেন, আর বাবা মায়ের ঘরে। তাই মায়ের ড্রেসিং টেবিল, কাঠের আলমারি...সব রয়ে গেছে এই ঘরেই।
আলমারির কথা মনে পড়তেই আরো একবার নিজের প্রতিবিম্ব টা দেখে নিলয়। আর দেখেই কেমন একটা ঝটকা লাগল ওর। ইস! কি বিচ্ছিরি লাগছে ওকে! দাড়ি বেড়ে বেড়ে জঙ্গল হয়ে গেছে। চোখের কোলে গাঢ় কালি। কোঁকড়ানো চুল ঘাড় ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রায়! আর জামা টা! একটা হাত কাটা স্যান্ডো গেঞ্জি তাতে আবার বুকের কাছে দুটো ফুটো আর চেক চেক বারমুডা। ইস! কাল যখন ওর মরে যাবার খবর পেয়ে বাড়িতে লোকজন দেখতে আসবে, ওকে দেখেই তো ঘেন্না পাবে। না না, জীবনের শেষ কটা মুহুর্ত এভাবে কাটানো যাবে না।
আলমারি থেকে একটা লাল টি শার্ট আর একটা নীল রঙের ট্র্যাক প্যান্ট বের করে পরল ও। তারপর কি মনে হতে ট্রিমার টা বের করে দাড়ি টা কেটে ফেলল। হ্যাঁ এবার একটু ভদ্র ভদ্র লাগছে! তারপর, আবার, কি মনে হতে কোনে রাখা ক্রিমের কৌটো থেকে একটু ক্রিম নিয়ে লাগালো মুখে।
যদি বাই চান্স মিডিয়া আসে, 'মানসিক অবসাদে ভোগা যুবকের মৃত্যু' লেখা নিউজের সাথে ওর ছবি বের হয়, নিছক খারাপ লাগবে না ওকে। আর এই কথাটা ভাবতেই একটু হাসি পেল ওর। ধুর! ওর মতো কীটপতঙ্গ তো রোজ কতই মরছে! তার আবার মিডিয়া! পেপারে ছবি! সখ কম না!
পায়ে পায়ে সেই প্লাস্টিকের টেবিলের সামনে এলো ও। ওষুধের স্ট্রিপ 'টা...এবার ডাকছে ওকে।
একটা স্ট্রিপ হাতে তুলে নিল।
আহ্! আর মাত্র কিছুক্ষণ! তারপর মুক্তি!
আর এটা ভাবতেই দেখে জল আনা হয়নি। জল রয়ে গেছে ফ্রিজে। আর জল...অনেক অনেক জল লাগবে আজ। এতগুলো ওষুধ...চাট্টিখানি কথা তো নয়!
দরজা খুলে ড্রায়িং রুমে রাখা ফ্রিজের দিকে এগিয়ে গেল ও। ওদের পুরোনো আমলের ফ্ল্যাট বাড়ি। দুটো ঘর, মাঝে এক চিলতে জায়গা, যার বাহারের নাম 'ড্রয়িং রুম'! আসলে একটা সোফা আর দুটো প্লাস্টিকের চেয়ারেই ভর্তি। আর এক কোনে এক ফালি রান্নাঘর আর এক কোনে বাথরুম। কোনো বারান্দা নেই। এই ঘরেই তো কেটে গেল আশৈশব! কত ইচ্ছে ছিল বড় বাড়ি হবে...থ্রি বি এইচ কে! বাবা মা, , শর্মিলা...সবাই মিলে...ধুর! সব শেষ হয়ে গেল! এইভাবে! আজ !
ফ্রিজ থেকে জলের দুটো বোতল বের করে একবার চোখ বুলিয়ে নিল পুরো ঘরে। মায়ের স্মৃতি মাখা ঘর...ঠাম্মাকেও আবছা মনে আছে... ওর যখন বছর দশেক তখন ঠাম্মা মারা গেছিলেন... কত ভালবাসতেন ওকে। 'দাদুভাই দাদুভাই' বলে অস্থির হতেন!
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরে ফিরে এলো ও। দরজা আটকাতে যাবে, শোনে বাবার কাশির আওয়াজ। একটানা খকখক করে কেশেই চলেছেন। ঠান্ডা লাগান বড্ড! এই ওয়েদার চেঞ্জের সময়েও মর্নিং ওয়াক ছাড়েন নি। এখন ভোগো!
জলের বোতল দুটো টেবিলে রাখে নিলয়। দেখে, টেবিলের এক কোনে একটা কাশির সিরাপ। ডাক্তারকাকু ওকে দিয়েছিলেন। কি মনে হতে সিরাপ টা নিয়ে বাবার ঘরে যায় ও। বাবাকে একটু খাইয়ে দেওয়া দরকার।
'বাবা, বাবা' বলে ডেকে ওঠে ও।
বাবা সাড়া দেন না। গভীর ঘুম বাবার চোখে।
হাল্কা নীল লাইট জ্বলা ঘরে নিলয় দেখে বাবা ঘড়ঘড় করর শ্বাস নিচ্ছেন। আর কন্ঠার হাড়গুলো দেখা যাচ্ছে একেবারে। নিঃশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে বলেই হয়ত, একটু হাঁ করে আছেন বাবা। কি অদ্ভুত অসহায় লাগছে বাবাকে!
কেন জানি চোখে জল এলো ওর।
বাবা! বাবা! বাবা!
কি অসহায় একজন মানুষ!
মা নেই, আর পালিয়ে যাচ্ছে। এই মানুষ টাও কি আর বাঁঁচবেন তাহলে!
সেতো একদিন যেতে হবে সব্বাইকে... তা বলে...সন্তান হারানোর কষ্ট নিয়ে? আর... ঘুমিয়ে আছে ভেবে বিরক্ত না করা বাবা...যখন... হয়ত ওর সাড়া না পেয়ে, পাশাপাশির বাড়ির লোকেদের ডেকে দরজা খুলবেন...দেখবেন আর নেই...
আর ভাবতে পারল না নিলয়!
প্রায় ছুটে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। বসার ঘরের চেয়ারে বসে রইল খানিকক্ষণ।
নাহ্! এটা ঠিক না!
আবার বাবার কাশির দমক উঠল একবার।
গা ঝাড়া দিয়ে উঠল নিলয়। স্যুইচ টিপে আলো জ্বালিয়ে দিল। দেখে, কাশির চোটে উঠে বসেছেন বাবা...
'বাবা? এই যে একটু জল খাও। তারপর এই ওষুধ টা খাও।' বাবার হাতে একটা বোতল ধরিয়ে পিঠ টা ধরে ওর।
হাড় গুলো উঁচু হয়ে আছে একেবারে!
আহা রে!
বাবার জল খাওয়া শেষ হলে ওষুধ মেপে দেয় ও।
বাবা শোবার আগে বলেন 'তুই তো রাতে না খেয়ে ঘুমোতে পারিস না...ভাত তো খেলি না...এক কাজ কর না...কটা জয়নগরের মোয়া এনেছিলাম...পাড়ার মোড়ে দোকান দিয়েছে...তুই ভালবাসিস...দুটো খেয়ে জল খেয়ে তারপর শো...'
বাবার এই কথায় একটু জল আসে ওর চোখে। এই মানুষ টাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল ?
'হ্যাঁ বাবা, খেয়ে নিচ্ছি। তুমি একটু ঘুমোবার চেষ্টা করো। কাল ডাক্তারকাকুর কাছে নিয়ে যাব। "না" বললে শুনব না..' বলে আবার ফ্রিজের কাছে এসে, ফ্রিজটা খোলে
খুব, খুব ক্ষিধে পেয়েছে!
শুধু জয়নগরের মোয়ার ক্ষিধে না! ভাল থাকার ক্ষিধে! বেঁচে থাকার ক্ষিধে!
ভাল ভাবে বেঁচে থাকার ক্ষিধে!
শর্মিলা, ওর ম্যানেজার- চুলোয় যাক! দরকার পড়লে এই বিচ্ছিরি চাকরি ছেড়ে দেবে ও। আরেকটু ছোট ব্র্যান্ড, হয়ত একটু কম মাইনে পাবে।
কিন্তু এবার, আরো একবার ভাল থাকবে।
থাকবেই।
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
আরও একবার -

উফফফ... কি লেখনী, কি সুন্দর ভাবে চরম বাস্তব ও  দুঃখের  মাঝেই খুঁজে পাওয়া সুখকে ফুটিয়ে তুললেন লেখক. একদিক থেকে দেখলে জীবনের মতো কঠিন আর কিছুই নেই, আবার আরেকদিক থেকে দেখলে জীবনের মতো উপহার আর কিছুই নেই. ❤❤❤❤
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#কথোপকথন  

 
-"দাদা, তাড়াতাড়ি দেবেন, এক কিলো আলু, পাঁচশো পেঁয়াজ, একশো কাঁচা লঙ্কা, পাঁচটা লেবু..."
-"এক্সকিউজ মি! আপনি কি দেবযানী? মানে দেবু?"
-"হ্যাঁ...কিন্তু আপনাকে তো ঠিক..."
-"চিনতে পারলি না? বুড়ো হয়ে গেছি...আমি অনীক.."
-"অনীক! কেমন আছিস, কোথায় আছিস তুই?"
-"হা হা! ভালোই আছি, অফিস যাই, খাই আর শুই!"
-"উফ! কত্ত, কত্তবছর পর..."
-"হ্যাঁ রে, আর এখনও কমেনি তোর তাড়ার বহর"
-"দূর পাগল! তখন এক্সটেম্পোরের জন্য থাকত তাড়া...আর এখন দেরি করলেই যাব মারা.."
-"বালাই ষাট! মরবি কেন!আছি না আমরা!"
-আমরা! হতভাগা হনুমান! এতবছর ছিলি কোথা.."
-"আহ্, সেসব জিজ্ঞেস করে মনে দিস না ব্যথা!"
-"নৌটঙ্কি রাখ, এখানে বাড়ি না কাজে.."
-"কোনোটাই না, দিদি ফ্ল্যাট নিয়েছে, আসি মাঝেসাঝে.."
-"দিদি মানে? ঝিমলি দি? তাই! ওয়াও!"
-"তবে আর কি, পুরোনো পাড়ার দুই পেত্নীতে এবার দেখা করে গান গাও!"
-"আমরা পেত্নী!আর তুই কী, আস্ত একটা শয়তান!"
-"একটু আগে যে বললি, আমি হনুমান?"
-"হাহা! এই, আমার বাড়ি আয় না, এই তো পাশেই, কত গল্প বাকি আছে!"
-"না রে, তুই নিশ্চয়ই অফিস থেকে এলি, বাড়ি যা, এবার থেকে থাকব তো টাচে!"
-"আরে, চা খেয়ে যা...আমার তো কেউ নেই, শুধুই মা...তোকে দেখলে যা খুশি হবে না!"
-"এখানেই কাকিমা আছেন? বাহ্, কেমন আছেন কাকিমা?"
-"মা ভালো...শুধু হাঁটু ভোগায় আজকাল...আর কাকিমাই তো আছেন, নইলে তো আমি একাই.."
-"আর, তোর বর? বাট, ইটস ওকে, তুই বলতে না চাইলে বলিস না ভাই!"
-"বর ফেল আউট অফ লাভ! লম্বা গপ্পো, ছাড়...তোর বৌ, কেমন আছে?"
-"আমার আবার বৌ!শালা একেই বলে গল্পের গরু গাছে!"
-"বৌ নেই, মানে?"
-"আমি তো বিয়েই করি নি আজ্ঞে!"
-"দেখেছিস এটাও জানি না...আজ দেখা হলো কতবছর পর?"
-"দশের বেশি, তোর বিয়ে ঠিক হবার পরেই তো ছেড়েছিলাম শহর.."
-"হ্যাঁ রে হনুমান, আসিস নি বিয়েতে.."
-"সত্যি বলব...দেখতে পারতাম না তোকে অন্য কারোর জন্য কনের সাজেতে..."
-"অনীক! ছাগল! ইয়ার্কি মারতে শিখেছিস খুব!"
-"ইয়ার্কি! তাই তো ভেবে এলি! কিন্তু আজও তোর স্মৃতিতেই দিই ডুব!"
-"মার খাবি তুই আজেবাজে বকলে!"
-"আজেবাজে! বেশ! স্যরি রে, ভুল হলো মন মেলে..."
-"অনীক, আমি তোকে হার্ট করতে চাই নি, এমনিই জাস্ট.."
-"আরে না না, একতরফা ভালোবাসলে আঘাত পাওয়া মাস্ট!"
-"ভালোবাসা! আজকাল ভয় লাগে কথাটা শুনলে.."
-"ভয়? ছোটবেলার বন্ধু বললে?"
-"খারাপ হতে হতে, ভালোর নেই আশা.."
-"দেবু, এতবছরেও আমার কমে নি ভালোবাসা!"
-"তখন কেন বলিসনি? শয়তান, জানোয়ার!"
-"এই একই কথা, নিজেকে প্রশ্ন আমার!"
-"অনীক...আমি কী বলব বুঝতে পারছি না.."
-"একটা প্রমিস কর, পাশে থাকিস, ছেড়ে যাস না.."
-"ভয় লাগে...খুব, খুব ভয়.."
-"ধ্যাত, বিজ্ঞাপনে বলে না, ভয়ের আগে আছে জয়?"
-"হনুমান একটা তুই! আস্ত একটা হাঁদা.."
-"তোর এইসব কথাতেই যে আজও আছি বাঁধা.."
-"বাড়ি চল, চা টা খা আগে..."
-"চল, সাথে কাকিমা কে বলে আসি, 'মা গো, এই ছেলেটা আজ তোমার আশিষ মাগে'..."

[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
(07-09-2021, 10:54 AM)ddey333 Wrote: #কথোপকথন  

 

-"তখন কেন বলিসনি? শয়তান, জানোয়ার!"

এটা পড়ে একটা মিম মনে পড়লো। মিমটা এমন.....

Girls--- কিছু কথা বলতে নেই। বুঝে নিতে হয়
Also girls--- তুই না বললে আমি জানবো কি করে ?
  Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 2 users Like Bichitro's post
Like Reply
(07-09-2021, 09:24 PM)Bichitravirya Wrote: এটা পড়ে একটা মিম মনে পড়লো। মিমটা এমন.....

Girls--- কিছু কথা বলতে নেই। বুঝে নিতে হয়
Also girls--- তুই না বললে আমি জানবো কি করে ?
  Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot Lotpot

Boys be like- oye.. Maaro mujhe maaro... Saley  Big Grin

কিন্তু কি সুন্দর মিলিয়ে মিলিয়ে লেখা গপ্পোটা ❤
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
(29-08-2021, 08:33 PM)ddey333 Wrote: তোমার RESPECT  গল্পটা বাংলায় অনুবাদ করবো , খুব ভালো লেগেছে আর মনে হলো আমি হয়তো সঠিক ভাবে ফুটিয়ে ওঠাতে পারবো ... গল্পের আবেদনটা ... 

তোমার এই অনুবাদের অপেক্ষায় রইলাম.... সময় করে লিখো... তোমার ওই অতীতের ঘটনা জানার পর তোমার হাতে কিভাবে দুর্দান্ত ভাবে আমার গল্প আরও সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে তার অপেক্ষায় আছি  Heart
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(09-09-2021, 02:49 PM)Baban Wrote: তোমার এই অনুবাদের অপেক্ষায় রইলাম.... সময় করে লিখো... তোমার ওই অতীতের ঘটনা জানার পর তোমার হাতে কিভাবে দুর্দান্ত ভাবে আমার গল্প আরও সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে তার অপেক্ষায় আছি  Heart

আশায় বাঁচে চাষা। আমাদের অবস্থা হয়েছে ঠিক তাই.... দাদা, পিনুরাম, রাজদীপ এই সব মহান ব্যাক্তি যা করতে পারলো না! আমি আপনি সেই অসাধ্য সাধন কিভাবে করবো?

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(09-09-2021, 03:11 PM)Bichitravirya Wrote: আশায় বাঁচে চাষা। আমাদের অবস্থা হয়েছে ঠিক তাই.... দাদা, পিনুরাম, রাজদীপ এই সব মহান ব্যাক্তি যা করতে পারলো না! আমি আপনি সেই অসাধ্য সাধন কিভাবে করবো?

❤❤❤

পিনুদা আর বোরসেস দাদা তো মনে হয় আর আসবে না !!! Sad


দাদা, লেখকদা আর রাজদীপদা হয়তো আসতে পারে , কি জানি .... Shy
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(09-09-2021, 02:49 PM)Baban Wrote: তোমার এই অনুবাদের অপেক্ষায় রইলাম.... সময় করে লিখো... তোমার ওই অতীতের ঘটনা জানার পর তোমার হাতে কিভাবে দুর্দান্ত ভাবে আমার গল্প আরও সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে তার অপেক্ষায় আছি  Heart

চেষ্টা করবো , গল্পটা ( হিন্দি ) কি আমায় মেইল করতে পারো  ??
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(09-09-2021, 03:44 PM)ddey333 Wrote: চেষ্টা করবো , গল্পটা ( হিন্দি ) কি আমায় মেইল করতে পারো  ??

তুমি নিশ্চই পারবে..... হ্যা তোমায় মেইল করে দিয়েছি. চেক করে নাও ❤
অপেক্ষায় থাকবো  Rolleyes
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(09-09-2021, 03:41 PM)ddey333 Wrote: পিনুদা আর বোরসেস দাদা তো মনে হয় আর আসবে না !!! Sad


দাদা, লেখকদা আর রাজদীপদা হয়তো আসতে পারে , কি জানি .... Shy

যার না আসার তার বাড়িতে গিয়ে তার সামনে হাতে পায়ে ধরে তো আনা যাবে না। একসময় পিনুদার সাথে কথা বলার ইচ্ছা ছিল। এখন উনি আসছেন না তাই ওনার ইচ্ছা কে সম্মান করি  Iex

এদের সমস্যা কি বলুন তো  ! এরা সাহিত্যিক। পিনু দা আর বোরসেস দা খুব উচ্চ মানের সাহিত্যিক। আর এদের সাহিত্য কে বোঝার ক্ষমতা সবার নেই। আর গুনি লোকের কদর না হলে তার অসম্মান হয় বৈকি। এখানেও তাই হচ্ছে। তার থেকে ভালো না আসা। অন্তত অসম্মান তো আর হবে না।  Smile

দাদা আর লেখক দা তো মাঝেমধ্যে আসেন। কিন্তু রাজদীপ দা কখনোই এলেন না। আসলে ভালো। আপনি আছেন তো। এটাই অনেক। আপনি থাকুন। মাঝে মাঝে কথা হবে। একটু ইয়ার্কি মারবো। গায়ে মাখবেন না কিন্তু  Tongue

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 2 users Like Bichitro's post
Like Reply
(09-09-2021, 06:04 PM)Bichitravirya Wrote: যার না আসার তার বাড়িতে গিয়ে তার সামনে হাতে পায়ে ধরে তো আনা যাবে না। একসময় পিনুদার সাথে কথা বলার ইচ্ছা ছিল। এখন উনি আসছেন না তাই ওনার ইচ্ছা কে সম্মান করি  Iex

এদের সমস্যা কি বলুন তো  ! এরা সাহিত্যিক। পিনু দা আর বোরসেস দা খুব উচ্চ মানের সাহিত্যিক। আর এদের সাহিত্য কে বোঝার ক্ষমতা সবার নেই। আর গুনি লোকের কদর না হলে তার অসম্মান হয় বৈকি। এখানেও তাই হচ্ছে। তার থেকে ভালো না আসা। অন্তত অসম্মান তো আর হবে না।  Smile

দাদা আর লেখক দা তো মাঝেমধ্যে আসেন। কিন্তু রাজদীপ দা কখনোই এলেন না। আসলে ভালো। আপনি আছেন তো। এটাই অনেক। আপনি থাকুন। মাঝে মাঝে কথা হবে। একটু ইয়ার্কি মারবো। গায়ে মাখবেন না কিন্তু  Tongue

❤❤❤

devil2
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(09-09-2021, 04:42 PM)Baban Wrote: তুমি নিশ্চই পারবে..... হ্যা তোমায় মেইল করে দিয়েছি. চেক করে নাও ❤
অপেক্ষায় থাকবো  Rolleyes

Yes received,
Thanks
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 14 Guest(s)